হিসনুল মুসলিম
বইঃ হিসনুল মুসলিম
কুরআন-সুন্নাহ’র যিকির সংবলিত
হিসনুল মুসলিম [মুসলিমের দুর্গ]
ড. সাঈদ ইবন আলী ইবন ওয়াহফ আল-ক্বাহত্বানী
অনুবাদ ও সম্পাদনা:
ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া
islamhouse.com
হিসনুল মুসলিম সূচীপত্র
- ভূমিকা
- যিকিরের ফযীলত
- যিকির ও দো‘আসমূহ
ঘুম থেকে উঠার দোয়া ও জেগে উঠার সময়ের যিকিরসমূহ
- ঘুম থেকে জেগে উঠার সময়ের যিকিরসমূহ
কাপড় পরিধানের দোয়া , নতুন কাপড় ও কাপড় খুলে রাখার দুয়া
- কাপড় পরিধানের দো‘আ
- নতুন কাপড় পরিধানের দো‘আ
- অপরকে নতুন কাপড় পরিধান করতে দেখলে তার জন্য দো‘আ
- কাপড় খুলে রাখার সময় কী বলবে
পায়খানায় প্রবেশের দোয়া এবং বের হওয়ার দোয়া
- পায়খানায় প্রবেশের দো‘আ
- পায়খানা থেকে বের হওয়ার দো‘আ
অযুর দোয়া বাংলা । অযু শেষ করার পর যিকির
- অযুর পূর্বে যিকির
- অযু শেষ করার পর যিকির
ঘরে প্রবেশ ও বের হওয়ার দোয়া এবং জিকির সমূহ
- বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময়ের যিকির
- ঘরে প্রবেশের সময় যিকির
মসজিদে প্রবেশ ও বাহির হওয়ার দোয়া সমূহ
- মসজিদে যাওয়ার সময়ে পড়ার দো‘আ
- মসজিদে প্রবেশের দো‘আ
- মসজিদ থেকে বের হওয়ার দো‘আ
আযানের দোয়া জবাব ও জিকির আরবি উচ্চারন সহ
- আযানের যিকিরসমূহ
নামাজের শুরুতে দোয়া সমূহ – আরবি বাংলা উচ্চারন সহ
- সালাতের শুরুতে দো‘আ
রুকুর দোয়া । রুকু থেকে উঠার দোআ উচ্চারন সহ
- রুকু‘র দো‘আ
- রুকু থেকে উঠার দো‘আ
সিজদার দোয়া সমূহ, দুই সেজদার মাজখানে দুয়া
- সাজদার দো‘আ
- দুই সাজদার মধ্যবর্তী বৈঠকের দো‘আ
- সাজদার আয়াত তিলাওয়াতের পর সাজদায় দো‘আ
তাশাহুদ দরুদ দোয়া মাসুরা বাংলা আরবি উচ্চারন সহ
- তাশাহ্হুদ
- তাশাহ্হুদের পর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর সালাত (দুরূদ) পাঠ
- সালামের আগে শেষ তাশাহহুদের পরের দো‘আ
নামাজের পর জিকির সমূহ । সালাম ফিরানোর পর যিকিরসমূহ
- সালাম ফিরানোর পর যিকিরসমূহ
ইস্তেখারা নামাজের দোয়া বাংলা ও আরবি উচারন সহ
- ইসতিখারার সালাতের দো‘আ
সকাল সন্ধ্যার দোয়া ও জিকির বাংলা আরবি সহ
- সকাল ও বিকালের যিকিরসমূহ
ঘুমানোর দোয়া বাংলা । খারাপ স্বপ্ন বা দুুঃস্বপ্ন দেখলে দুয়া
- ঘুমানোর যিকিরসমূহ
- রাতে যখন পার্শ্ব পরিবর্তন করে তখন পড়ার দো‘আ
- ঘুমন্ত অবস্থায় ভয় এবং একাকিত্বের অস্বস্তিতে পড়ার দো‘আ
- খারাপ স্বপ্ন বা দুঃস্বপ্ন দেখে যা করবে
বিতর নামাজের দোয়া । কুনুত ও সালাম ফিরানোর পড় দুয়া
- বিত্রের কুনূতের দো‘আ
- বিত্রের সালাত থেকে সালাম ফিরানোর পরের যিকির
দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির দোয়া । দুর্দশাগ্রস্ত ব্যক্তির দোআ
- দুঃখ ও দুশ্চিন্তার সময় পড়ার দো‘আ
- দুর্দশাগ্রস্ত ব্যক্তির দো‘আ
শত্রু থেকে মুক্তির দোয়া ও শত্রুর ওপর বদ দোআ
- শত্রু এবং শক্তিধর ব্যক্তির সাক্ষাতকালে দো‘আ
- শাসকের অত্যাচারের ভয় করলে পড়ার দো‘আ
- শত্রুর ওপর বদ-দো‘আ
- কোনো সম্প্রদায়কে ভয় করলে যা বলবে
ঋণ মুক্তির দোয়া । ঈমানের মধ্যে সন্দেহে পতিত ব্যক্তির দো‘আ
- ঈমানের মধ্যে সন্দেহে পতিত ব্যক্তির দো‘আ
- ঋণ মুক্তির জন্য দো‘আ
শয়তান থেকে বাচার দোয়া । কঠিন কাজে পতিত ব্যক্তির দো‘আ
- সালাতে ও কিরাতে শয়তানের কুমন্ত্রণায় পতিত ব্যক্তির দো‘আ
- কঠিন কাজে পতিত ব্যক্তির দো‘আ
- পাপ করে ফেললে যা বলবে এবং যা করবে
- শয়তান ও তার কুমন্ত্রণা দূর করার দো‘আ
- যখন অনাকাঙ্খিত কিছু ঘটে বা যা করতে চায় তাতে বাধাপ্রাপ্ত হয়, তখন পড়ার দো‘আ
শিশু সন্তানের জন্য দোয়া । সন্তান লাভকারীকে অভিনন্দন
- সন্তান লাভকারীকে অভিনন্দন ও তার জবাব
- যা দ্বারা শিশুদের জন্য আশ্রয় প্রার্থনা করা হয়
রোগীকে দেখতে যাওয়ার দোয়া । মরণাপন্ন রোগীর দোআ
- রোগী দেখতে গিয়ে তার জন্য দো‘আ
- রোগী দেখতে যাওয়ার ফযীলত
- জীবনের আশা ছেড়ে দেওয়া রোগীর দো‘আ
- মরণাপন্ন ব্যক্তিকে তালক্বীন (কালেমা স্মরণ করিয়ে দেওয়া)
- কোনো মুসীবতে পতিত ব্যক্তির দো‘আ
মৃতের জন্য দোয়া । জানাযা, দাফন ও কবর যিয়ারতের দুয়া
- মৃত ব্যক্তির চোখ বন্ধ করানোর দো‘আ
- মৃত ব্যক্তির জন্য জানাযার সালাতে দো‘আ
- নাবালক শিশুদের জন্য জানাযার সালাতে দো‘আ
- শোকার্তদের সান্ত্বনা দেওয়ার দো‘আ
- মৃতকে কবরে প্রবেশ করানোর দো‘আ
- মৃতকে দাফন করার পর দো‘আ
- কবর যিয়ারতের দো‘আ
বৃষ্টি বন্ধের দোয়া । বৃষ্টি চাওয়া, বায়ূ ও মেঘের গর্জন শুনলে দুয়া
- বায়ূ প্রবাহিত হলে পড়ার দো‘আ
- মেঘের গর্জন শুনলে পড়ার দো‘আ
- বৃষ্টি চাওয়ার কিছু দো‘আ
- বৃষ্টি দেখলে দো‘আ
- বৃষ্টি বর্ষণের পর যিকির
- অতিবৃষ্টি বন্ধের জন্য কিছু দো‘আ
ইফতারের দোয়া । সাওম, নতুন চাঁদ ও খাওয়ার দুয়া
- নতুন চাঁদ দেখে পড়ার দো‘আ
- ইফতারের সময় সাওম পালনকারীর দো‘আ
- খাওয়ার পূর্বে দো‘আ
- আহার শেষ করার পর দো‘আ
- আহারের আয়োজনকারীর জন্য মেহমানের দো‘আ
- দো‘আর মাধ্যমে খাবার বা পানীয় চাওয়ার ইঙ্গিত করা
- কোনো পরিবারের কাছে ইফতার করলে তাদের জন্য দো‘আ
- সাওম পালনকারীর নিকট যদি খাবার উপস্থিত হয়, আর সে সাওম না ভাঙ্গে তখন তার দো‘আ করা
- সাওম পালনকারীকে কেউ গালি দিলে যা বলবে
- ফলের কলি দেখলে পড়ার দো‘আ
হাঁচির দোয়া । কাফির ব্যক্তি হাঁচি দিয়ে আল-হামদুলিল্লাহ বললে
- হাঁচির দো‘
- কাফির ব্যক্তি হাঁচি দিয়ে আলহামদুলিল্লাহ বললে তার জবাবে যা বলা হবে
স্ত্রী সহবাস করার দোয়া । নব বিবাহিতের জন্য দোআ
- নব বিবাহিতের জন্য দো‘আ
- বিবাহিত ব্যক্তির দো‘আ এবং বাহন ক্রয়ের পর দো‘আ
- স্ত্রী-সহবাসের পুর্বের দো‘আ
ক্রোধ কমানোর দোয়া ও বিপন্ন লোক দেখলে পড়ার দোআ
- ক্রোধ দমনের দো‘আ
- বিপন্ন লোক দেখলে পড়ার দো‘আ
মজলিসে বসার দোয়া । সদাচারণ করলে তার জন্য দোআ
- মজলিসে যা বলতে হয়
- বৈঠকের কাফ্ফারা (ক্ষতিপূরণ)
- কেউ যদি বলে, ‘আল্লাহ আপনাকে ক্ষমা করুন’, তার জন্য দো‘আ
- কেউ আপনার সাথে সদাচারণ করলে তার জন্য দো‘আ
দাজ্জাল থেকে বাঁচার দোয়া । সূরা কাহফের প্রথম দশটি আয়াত
- আল্লাহ যা দ্বারা দাজ্জাল থেকে হিফাযত করবেন
- যে ব্যক্তি বলবে, ‘আমি আপনাকে আল্লাহর জন্য ভালোবাসি’- তার জন্য দো‘আ
ঋণ পরিশোধের দোয়া । সম্পদ দান করলে তার জন্য দোআ
- আপনাকে কেউ তার সম্পদ দান করার জন্য পেশ করলে তার জন্য দো‘আ
- কেউ ঋণ দিলে তা পরিশোধের সময় দো‘আ
শিরক থেকে বাঁচার দোয়া । অশুভ লক্ষণ গ্রহণকে অপছন্দ করে দোআ
- শির্কের ভয়ে দো‘আ
- কেউ যদি বলে, ‘আল্লাহ আপনার ওপর বরকত দিন’, তার জন্য দো‘আ
- অশুভ লক্ষণ গ্রহণকে অপছন্দ করে দো‘আ
সফরের দোয়া । বাহনে উঠা, বাজারে প্রবেশ, মুক্বীম এর দুয়া
- বাহনে আরোহণের দো‘আ
- সফরের দো‘আ
- গ্রাম বা শহরে প্রবেশের দো‘আ
- বাজারে প্রবেশের দো‘আ
- বাহন হোঁচট খেলে পড়ার দো‘আ
- মুক্বীম বা অবস্থানকারীদের জন্য মুসাফিরের দো‘আ
- মুসাফিরের জন্য মুক্বীম বা অবস্থানকারীর দো‘আ
- সফরে চলার সময় তাকবীর ও তাসবীহ
- রাত্রির শেষ প্রহরে মুসাফিরের দো‘আ
- সফরে বা অন্য অবস্থায় কোনো ঘরে নামলে পড়ার দো‘আ
- সফর থেকে ফেরার যিকির
দরুদ পাঠের ফজিলত । আনন্দদায়ক কিছুর সম্মুখীন হলে
- আনন্দদায়ক অথবা অপছন্দনীয় কিছুর সম্মুখীন হলে যা বলবে
- নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর দুরূদ পাঠের ফযীলত
সালামের প্রসার । কাফির সালাম দিলে কীভাবে জবাব দিবে
- সালামের প্রসার
- কাফির সালাম দিলে কীভাবে জবাব দিবে
মোরগের ডাক শুনলে দোয়া । গাধার স্বর ও কুকুরের ডাক শুনলে দোআ
- মোরগের ডাক ও গাধার স্বর শুনলে পড়ার দো‘আ
- রাতের বেলায় কুকুরের ডাক শুনলে দো‘আ
গালি দেওয়া নিয়ে হাদিস । মুসলিমের প্রশংসা করা হলে যা বলবে
- যাকে আপনি গালি দিয়েছেন তার জন্য দো‘আ
- কোনো মুসলিম অপর মুসলিমকে প্রশংসা করলে যা বলবে
- কোনো মুসলিমের প্রশংসা করা হলে সে যা বলবে
হজ্জ, আরাফাত, হাজরে আসওয়াদ ও সাফা মারওয়া দোয়া
- হজ বা উমরায় মুহরিম ব্যক্তি কীভাবে তালবিয়াহ পড়বে
- হাজরে আসওয়াদের কাছে আসলে তাকবীর বলা
- রুকনে ইয়ামানী ও হাজরে আসওয়াদের মাঝে দো‘আ
- সাফা ও মারওয়ায় দাঁড়িয়ে যা পড়বে
- ‘আরাফাতের দিনে দো‘আ
- মাশ‘আরুল হারাম তথা মুযদালিফায় যিকির
- জামরাসমূহে প্রত্যেক কংকর নিক্ষেপকালে তাকবীর বলা
ভয় এর দোয়া । শরীরে কোনো ব্যথা অনুভব করলে বলবে
- আশ্চর্যজনক ও আনন্দজনক বিষয়ের পর দো‘আ
- আনন্দদায়ক কোনো সংবাদ আসলে যা করবে
- শরীরে কোনো ব্যথা অনুভব করলে যা করবে ও বলবে
- কোনো কিছুর উপর নিজের চোখ লাগার ভয় থাকলে দো‘আ
- ভীত অবস্থায় যা বলবে
পশু জবেহ করার দোয়া । নাহর করার সময় যা বলবে
- পশু যবেহ বা নাহর করার সময় যা বলবে
শয়তানের দোয়া । দুষ্ট শয়তানদের ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে যা বলবে
- দুষ্ট শয়তানদের ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে যা বলবে
- ক্ষমা প্রার্থনা ও তাওবা করা
তাসবিহ তাহলিল তাহমীদ ও তাকবীর -এর ফযীলত
- তাসবীহ, তাহমীদ, তাহলীল ও তাকবীর-এর ফযীলত
- কীভাবে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাসবীহ পাঠ করতেন?
- বিবিধ কল্যাণ ও সামষ্টিক কিছু আদব
ভূমিকা
بِسْمِ اللّٰهِ الرَّحْمٰنِ الرَّحِيْمِ
(দয়াময়, পরম দয়ালু আল্লাহর নামে)
সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য। আমরা তাঁরই প্রশংসা করি, তাঁর নিকটেই সাহায্য চাই, আর তাঁর কাছেই ক্ষমা চাই। আমরা আমাদের হৃদয়ের দুষ্ট প্রবৃত্তিসমূহ এবং আমাদের মন্দ আচরণ থেকে আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করি। আল্লাহ যাকে সৎপথে চালান, তাকে পথভ্রষ্ট করার কেই নেই, আর যাকে বিপথগামী করেন তাকে সৎপথে আনার কেউ নেই। আর আমি সাক্ষ্য দেই যে, একমাত্র আল্লাহ ছাড়া কোনো হক্ব ইলাহ নেই, তাঁর কোনো শরীক নেই। আমি আরো সাক্ষ্য দেই যে, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর বান্দা ও রাসূল। আল্লাহ তাঁর প্রতি এবং তাঁর বংশধর, তাঁর সাহাবীগণ ও কিয়ামত পর্যন্ত যতো লোক এ সৎ পথের অনসরণ করবে তাদের সকলের প্রতি অগণিত দুরূদ ও সালাম বর্ষণ করুন। তারপর,
এ বইটি আমারالذكر والدعاء والعلاج بالرقى من الكتاب والسنة -নামক কিতাব[1] থেকে সংক্ষেপিত। এতে আমি শুধুমাত্র যিকিরের অংশটি সংক্ষেপ করেছি, যাতে ভ্রমণপথে তা বহন করা সহজ হয়।
এখানে যিকিরের মূল অংশটি শুধু উল্লেখ করেছি। আর হাদীসগুলোর বরাত দেওয়ার ক্ষেত্রে মূল গ্রন্থের একটি বা দু’টি সূত্র উল্লেখ করাই যথেষ্ট মনে করেছি। যিনি সাহাবীগণ সম্পর্কে অবগত হতে চান অথবা হাদীসের অতিরিক্ত সূত্র জানতে চান, তিনি মূল গ্রন্থটি দেখে নিতে পারেন।
মহান আল্লাহর নিকট তাঁর উত্তম নামসমূহ এবং সর্বোচ্চ গুণাবলীর উসীলায় প্রার্থনা করি, তিনি যেন এ আমল তাঁরই সন্তুষ্টির জন্য একান্ত করে কবুল করে নেন, আর এর দ্বারা যেন তিনি আমাকে আমার জীবনে ও মরণের পরে উপকৃত করেন। আর যে ব্যক্তি এ বইটি পড়বে, ছাপাবে অথবা এর প্রচারের কারণ হবে তাকেও যেন তিনি উপকৃত করেন। নিশ্চয় পবিত্র মহান সত্তা এ কাজের অধিকারী এবং তার ওপর পূর্ণ ক্ষমতাবান। হিসনুল মুসলিম
আল্লাহ দুরূদ ও সালাম পেশ করুন আমাদের নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর; আর তাঁর বংশধর, তাঁর সাহাবীগণ এবং কিয়ামত পর্যন্ত যারা সুন্দরভাবে তাঁদের অনুসরণ করবে তাদের ওপরও।
হিসনুল মুসলিম লেখক
সফর, ১৪০৯ হিজরি
যিকিরের ফযীলত
মহান আল্লাহ বলেন,
﴿فَاذْكُرُوْنِيْٓ اَذْكُرْكُمْ وَاشْكُرُوْا لِيْ وَلَا تَكْفُرُوْنِ ١٥٢ۧ﴾
“অতএব তোমরা আমাকে স্মরণ কর, আমিও তোমাদেরকে স্মরণ করব। আর তোমরা আমার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর এবং আমার প্রতি অকৃতজ্ঞ হয়ো না।” [2]
﴿ يٰٓاَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوا اذْكُرُوا اللّٰهَ ذِكْرًا كَثِيْرًا 41ۙ﴾
“হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহকে অধিক পরিমাণে স্মরণ কর”।[3]
﴿وَالذّٰكِرِيْنَ اللّٰهَ كَثِيْرًا وَّالذّٰكِرٰتِ ۙ اَعَدَّ اللّٰهُ لَهُمْ مَّغْفِرَةً وَّاَجْرًا عَظِيْمًا 35﴾
“আর আল্লাহকে অধিক পরিমাণে স্মরণকারী পুরুষ ও নারী: আল্লাহ তাদের জন্য ক্ষমা ও বিরাট পুরস্কার প্রস্তুত করে রেখেছেন[4]।”
﴿وَاذْكُرْ رَّبَّكَ فِيْ نَفْسِكَ تَضَرُّعًا وَّخِيْفَةً وَّدُوْنَ الْجَــهْرِ مِنَ الْقَوْلِ بِالْغُدُوِّ وَالْاٰصَالِ وَلَا تَكُنْ مِّنَ الْغٰفِلِيْنَ ٢٠٥﴾
“আর আপনি আপনার রব্বকে স্মরণ করুন মনে মনে, মিনতি ও ভীতিসহকারে, অনুচ্চস্বরে; সকালে ও সন্ধ্যায়। আর উদাসীনদের অন্তর্ভুক্ত হবেন না।”[5]
তাছাড়া নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “যে ব্যক্তি তার রবের যিকির (স্মরণ) করে, আর যে ব্যক্তি তার রবের যিকির করে না- তারা যেন জীবিত আর মৃত”[6]।
রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেন, “আমি কি তোমাদেরকে তা জানাবো না- আমলের মধ্যে যা সর্বোত্তম, তোমাদের মালিক (আল্লাহর) কাছে যা অত্যন্ত পবিত্র, তোমাদের জন্য যা অধিক মর্যাদা বৃদ্ধিকারী, (আল্লাহর পথে) সোনা-রূপা ব্যয় করার তুলনায় যা তোমাদের জন্য উত্তম এবং তোমরা তোমাদের শত্রুদের মুখোমুখি হয়ে তাদেরকে হত্যা এবং তারা তোমাদের হত্যা করার চেয়েও অধিকতর শ্রেষ্ঠ?” সাহাবীগণ বললেন, অবশ্যই হ্যাঁ। তিনি বললেন, “আল্লাহ তা‘আলার যিকির”[7]।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেন, “আল্লাহ তা‘আলা বলেন, আমার বান্দা আমার সম্পর্কে যেরূপ ধারণা করে, আমাকে সে তদ্রূপই পাবে; আর যখন সে আমাকে স্মরণ করে, তখন আমি তার সাথে থাকি। সুতরাং যদি সে মনে মনে আমাকে স্মরণ করে, আমিও আমার মনে তাকে স্মরণ করি। আর যদি সে কোনো সমাবেশে আমাকে স্মরণ করে, তাহলে আমি তাকে এর চাইতে উত্তম সমাবেশে স্মরণ করি। আর সে যদি আমার দিকে এক বিঘত পরিমাণ নিকটবর্তী হয়, তাহলে আমি তার দিকে এক হাত পরিমাণ নিকটবর্তী হই। সে এক হাত পরিমাণ নিকটবর্তী হলে আমি তার দিকে এক বাহু পরিমাণ নিকটবর্তী হই। আর সে যদি আমার দিকে হেঁটে আসে, আমি তার দিকে দ্রুতবেগে যাই।[8]”
আব্দুল্লাহ ইবন বুসর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি আরয করল, হে আল্লাহর রাসূল! ইসলামের বিধিবিধান আমার জন্য বেশি হয়ে গেছে। কাজেই আপনি আমাকে এমন একটি বিষয়ের খবর দিন, যা আমি শক্ত করে আঁকড়ে ধরব। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “তোমরা জিহ্বা যেনো সর্বক্ষণ আল্লাহর যিকিরে সজীব থাকে”[9]।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেন, “যে ব্যক্তি আল্লাহর কিতাব (কুরআন) থেকে একটি হরফ পাঠ করে, সে তার বিনিময়ে একটি সাওয়াব পায়, আর একটি সাওয়াব হবে দশটি সাওয়াবের সমান। আমি আলিফ, লাম ও মীমকে একটি হরফ বলছি না। বরং ‘আলিফ’ একটি হরফ, ‘লাম’ একটি হরফ এবং ‘মীম’ একটি হরফ”[10]।
উকবা ইবন আমের রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, একবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বের হলেন। আমরা তখন সুফ্ফায় (মসজিদে নববীর আঙ্গিনায়) অবস্থান করছিলাম। তিনি বললেন, “তোমাদের মধ্যে কে আছে, যে প্রতিদিন সকালে বুতহান বা আকীক উপত্যকায় গিয়ে সেখান থেকে কোনো প্রকার পাপ বা আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন না করে উঁচু কুঁজবিশিষ্ট দু’টি উষ্ট্রী নিয়ে আসতে পছন্দ করে”? আমরা বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা তা পছন্দ করি। তিনি বললেন: “তোমাদের কেউ কি এরূপ করতে পার না যে, সকালে মসজিদে গিয়ে মহান আল্লাহর কিতাব থেকে দু’টি আয়াত জানবে অথবা পড়বে- এটা তার জন্য দু’টি উষ্ট্রীর তুলনায় উত্তম। আর তিনটি আয়াত তিনটি উষ্ট্রী থেকে উত্তম, চারটি আয়াত চারটি উষ্ট্রী থেকে উত্তম। আর (শুধু উষ্ট্রীই নয়, বরং একইসাথে) সমসংখ্যক উট লাভ করা থেকেও তা উত্তম হবে।”[11]
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেন, “যে ব্যক্তি এমন কোনো বৈঠকে (মজলিসে) বসেছে যেখানে সে আল্লাহর যিকির করে নি, তার সে বসাই আল্লাহর নিকট থেকে তার জন্য আফসোস ও নৈরাশ্যজনক হবে। আর যে ব্যক্তি এমন কোনো শয়নে শুয়েছে যেখানে সে আল্লাহর যিকির করে নি, তার সে শোয়াই আল্লাহর নিকট থেকে তার জন্য আফসোস ও নৈরাশ্যজনক হবে।”[12]
রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেন, “যদি কোনো দল কোনো বৈঠকে বসে আল্লাহর যিকির না করে এবং তাদের নবীর ওপর দুরূদও পাঠ না করে, তাহলে তাদের সেই বৈঠক তাদের জন্য কমতি ও আফসোসের কারণ হবে। আল্লাহ ইচ্ছা করলে তাদেরকে শাস্তি দেবেন, অথবা তিনি চাইলে তাদের ক্ষমা করবেন।”[13]
রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেন, “যদি কোনো একদল লোক এমন কোনো বৈঠক থেকে উঠল, যেখানে তারা আল্লাহর নাম স্মরণ করে নি, তবে তারা যেন গাধার লাশের কাছ থেকে উঠে আসল। আর এরূপ মজলিস তাদের জন্য আফসোসের কারণ হবে”।[14]
বইটির PDF/ মুল কপি পেতে হলে নিচে Comment/ কমেন্ট এর মাধ্যমে আমাদেরকে জানান, তাহলে আমরা আপনাদেরকে পাঠিয়ে দিতে পারব। ইনশাআল্লাহ।