নামাজে রুকুর দোয়া ও তাসবিহ । Dua Ruku in Salah

নামাজে রুকুর দোয়া ও তাসবিহ । Dua Ruku in Salah

নামাজে রুকুর দোয়া ও তাসবিহ । Dua Ruku in Salah << হিসনুল মুসলিম এর মুল সুচিপত্র দেখুন

এ বিষয়ে সরাসরি মুল হাদিস শরীফ থেকে পড়ুন >> সহীহ বুখারী >> সহীহ মুসলিম >> আবু দাউদ >> ইবনে মাজাহ >> তিরমিজি >> নাসাঈ >> মিশকাত >> বুলুগুল মারাম হাদীস শরীফ হতে

নামাজে রুকুর দোয়া ও তাসবিহ । Dua Ruku in Salah

  1. পরিচ্ছেদঃ নামাজে কখন তাকবীর বলতে হয়
  2. পরিচ্ছেদঃ রুকুতে যাওয়ার সময় তাসবিহ
  3. পরিচ্ছেদঃ রুকুতে যাওয়ার পর তাসবিহ
  4. পরিচ্ছেদঃ রুকু ও সিজদায় যাওয়ার পর তাসবিহ
  5. পরিচ্ছেদঃ রুকু ও সিজদায় যাওয়ার পর দোয়া
  6. পরিচ্ছেদঃ রুকু থেকে মাথা তুলার তাসবীহ
  7. পরিচ্ছেদঃ রুকূ থেকে মাথা ওঠাবার সময় ঈমাম কি বলবেন
  8. পরিচ্ছেদঃ রুকু হতে উঠার সময় ও পরে তাসবীহ
  9. পরিচ্ছেদঃ রুকু হতে উঠার পরে দোয়া
  10. পরিচ্ছেদঃ ইশা ও ফজরের সালাতের শেষ রাকআতে রুকুর পরে দোয়া কুনূত
  11. পরিচ্ছেদঃ সেজদা যাওয়া ও উঠার সময় পূর্বে ও পরে হাত রাখা
  12. পরিচ্ছেদঃ বিজোড় রাকাতে সোজা হয়ে না বসা পর্যন্ত দাঁড়াতেন না

1. পরিচ্ছেদঃ নামাজে কখন তাকবীর বলতে হয়

আবু সালামাহ্‌ ইবনি আবদুর রহমান [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

আবু হুরায়রা্[রাদি.] তাদের নামাজ আদায় করে দেখাতেন। তিনি প্রতিবার ঝুঁকে পড়ার সময় এবং সোজা হওয়ার সময়

اللَّهُ أَكْبَرُ

উচ্চারণঃ আল্লাহু আকবার, অর্থঃ আল্লাহ মহান

বলিতেন। তিনি নামাজ শেষে বলিতেন, আল্লাহর শপথ! আমি তোমাদের চেয়ে অধিক পরিমাণে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নামাজের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ নামাজ আদায় করিতে পারি।

[সহীহ মুসলিম ৭৫৩] [ইবনে মাজা ৮৩৬]

2. পরিচ্ছেদঃ রুকুতে যাওয়ার সময় তাসবিহ

মালিক ইবনি হুওয়াইরিস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যখন তাকবীর বলিতেন, কান পর্যন্ত উভয় হাত উত্তোলন করিতেন। তিনি যখন রুকূতে যেতেন উভয় হাত কান পর্যন্ত উত্তোলন করিতেন। তিনি যখন রুকূ থেকে মাথা তুলতেন তখন

سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ ‏

উচ্চারণঃ সামিআল্ল-হ লিমান হামিদাহ, অর্থঃ যে ব্যক্তি আল্লাহর প্রশংসা করেন আল্লাহ তার কথা শুনে থাকেন

বলিতেন এবং অনুরূপ [কান পর্যন্ত উভয় হাত উত্তোলন] করিতেন।

[সহীহ মুসলিম ৭৫১]
[সালিম আল-বার্‌রাদ হইতেও বর্ণিত, আবু দাউদ ৮৬৩]

আনাস ইবনি মালিক (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) যেমন সংক্ষেপে অথচ পূর্ণাঙ্গভাবে নামায আদায় করতেন, আমি এরূপ নামায অন্য কারো পিছনে আদায় করিনি। রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ)

 سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ 

সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ” বলার পর দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতেন, আমাদের মনে হতো যে, তিনি ভুলে গেছেন। অতঃপর তিনি তাকবীর বলে সাজদাহ্ করতেন এবং দু সাজদাহ্র মধ্যবরতী সময়ে এতো দীর্ঘক্ষণ বসতেন যে, আমাদের মনে হতো তিনি দ্বিতীয় সাজদাহ্র কথা হয়তো ভুলে গেছেন।

[ইবনে মাজা ৮৫৩, সহিহ হাদিস] [আবু দাউদ ৮৭০, সহীহ]

আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) সালাত আরম্ভ করার সময় দাঁড়িয়ে তাকবীর বলিতেন। অতঃপর রুকূতে যাওয়ার সময় তাকবীর বলিতেন, আবার যখন রুকূ হইতে পিঠ সোজা করে উঠতেন তখন

سَمِعَ اللهُ لِمَن حَمِدَه

উচ্চারণঃ সামি আল্লা-হু লিমান হামিদাহ, অর্থঃ যে আল্লাহর হামদ-প্রশংসা করে, আল্লাহ তার প্রশংসা শোনেন

اللهُ سَمِعَ
আল্লাহর যে প্রশংসা করে
حَمِدَه لِمَن
প্রশংসা শোনেনতার

বলিতেন, অতঃপর দাঁড়িয়ে

رَبَّناَ وَلَكَ الحَمدُ 

উচ্চারণঃ রব্বানা ওয়া লাকাল হামদ, অর্থঃ হে আমাদের রব্ব! আর আপনার জন্যই সমস্ত প্রশংসা

الحَمدُ  وَلَكَ رَبَّناَ
সমস্ত প্রশংসাআর আপনার জন্যইহে আমাদের রব্ব

বলিতেন। অতঃপর সিজদায় যাওয়ার সময় তাকবীর বলিতেন। এবং যখন মাথা উঠাতেন তখনও তাকবীর বলিতেন। আবার (দ্বিতীয়) সিজদায় যেতে তাকবীর বলিতেন এবং পুনরায় মাথা উঠাতেন তখনও তাকবীর বলিতেন। এভাবেই তিনি পুরো সালাত শেষ করিতেন। আর দ্বিতীয় রাকআতের বৈঠক শেষে যখন (তৃতীয় রাকআতের জন্য) দাঁড়াতেন তখনও তাকবীর বলিতেন। আবদুল্লাহ ইবনু সালিহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) লাইস (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) সূত্রে হাদীসটি বর্ণনা করিতে وَلَكَ الحَمدُ উল্লেখ করিয়াছেন।

[সহীহ বুখারী ৭৮৯, ৮০৩, ৮০৫], [বুলুগুল মারাম ২৯৫]

3. পরিচ্ছেদঃ রুকুতে যাওয়ার পর তাসবিহ

ওয়ায়িল ইবনি হুজর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেনঃ আমি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর পেছনে নামাজ আদায় করেছি। আমি তাঁকে দেখেছি তিনি হাত উঠাতেন যখন নামাজ আরম্ভ করিতেন আর যখন রুকূ করিতেন এবং যখন

سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ

সামিয়াল্লাহু লিমান হামিদা

বলিতেন, এরূপে। [এ বলে হাদিসের অন্যতম রাবী] কায়স ইঙ্গিত করিলেন উভয় কানের দিকে।

[নাসাঈ ১০৫৫, সহীহ হাদিস]

আলী ইবন আবু তালিব [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

যে, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যখন রুকূ করিতেন তখন বলিতেনঃ

اللَّهُمَّ لَكَ رَكَعْتُ، وَلَكَ أَسْلَمْتُ، وَبِكَ آمَنْتُ، خَشَعَ لَكَ سَمْعِي وَبَصَرِي وَعِظَامِي وَمُخِّي وَعَصَبِي

আল্ল-হুম্মা লাকা রকা তু ওয়ালাকা আসলামতু ওয়াবিকা আ-মানতু খশা’আ লাকা সাম’ঈ ওয়া বাসারী ওয়া ‘ইযা-মী ওয়া মুখখী ওয়া আসাবী

(হে আল্লাহ! তোমার উদ্দেশে রুকু করেছি, তোমার নিকট আত্মসমর্পণ করেছি, তোমার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করেছি এবং আমার শ্রবণশক্তি, দৃষ্টিশক্তি, হাড়সমূহ, স্মৃতিশক্তি ও শিরা তোমার প্রতি বিনয়ী)

[নাসাঈ ১০৫০, সহীহ হাদিস]

জাবির ইবনি আব্দুল্লাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

নাবী [সাঃআঃ] থেকে বর্ণিত যে, তিনি যখন রুকূ করিতেন তখন বলিতেন –

اللَّهُمَّ لَكَ رَكَعْتُ، وَبِكَ آمَنْتُ، وَلَكَ أَسْلَمْتُ، وَعَلَيْكَ تَوَكَّلْتُ، أَنْتَ رَبِّي، خَشَعَ سَمْعِي وَبَصَرِي، وَدَمِي وَلَحْمِي، وَعَظْمِي وَعَصَبِي لِلَّهِ رَبِّ الْعَالِمِينَ

আল্ল-হুম্মা লাকা রকা’তু ওয়াবিকা আ-মানতু ওয়ালাকা আসালামতু ওয়া আলায়কা তাওয়াক্কালতু আনতা রব্বী খশা’আ সাম্’ঈ ওয়া বাসারী ওয়াদামী ওয়া লাহমী ওয়া ‘আযমী ওয়া আসাবী লিল্লা-হি রব্বিল ‘আলামীন” (হে আল্লাহ! আমি তোমারই জন্য রুকূ করলাম, আমি তোমারই প্রতি ঈমান এনেছি, তোমারই প্রতি আমি আত্মসমর্পণ করেছি, আমি তোমারই ওপর ভরসা করেছি, তুমিই আমার প্রভু। আমার কর্ণ, চক্ষু, রক্ত, মাংস, অস্থি ও ধমনী বিশ্বজাহানের প্রতিপালক আল্লাহর জন্য বিনয়াবনত হল।)

[নাসাঈ ১০৫১, সহীহ হাদিস],
মুহাম্মদ ইবনি মাসলামা [রাঃআঃ] হইতেও বর্ণীত ভিন্ন শব্দে
اللَّهُمَّ لَكَ رَكَعْتُ، وَبِكَ آمَنْتُ، وَلَكَ أَسْلَمْتُ، وَعَلَيْكَ تَوَكَّلْتُ أَنْتَ رَبِّي، خَشَعَ سَمْعِي وَبَصَرِي، وَلَحْمِي وَدَمِي، وَمُخِّي وَعَصَبِي لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ [নাসাঈ ১০৫২, সহীহ হাদিস]

4. পরিচ্ছেদঃ রুকু ও সিজদায় যাওয়ার পর তাসবিহ

আবদুল্লা ইবনি মাসঊদ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ যখন তোমাদের কেউ রুকূতে গিয়ে যেন কমপক্ষে তিনবার বলেঃ

سُبْحَانَ رَبِّيَ الْعَظِيمِ

“সুবহানা রব্বিয়াল আযীম” আমি আমার মহান রবের পবিত্রতা বর্ণনা করছি

الْعَظِيمِرَبِّيَسُبْحَانَ
মহানআমার রবেরপবিত্রতা বর্ণনা করছি
الأَعْلَىرَبِّيَسُبْحَانَ
যিনি সবার উপরেআমার রবেরপবিত্রতা ও মহিমা বর্ণনা করছি

এবং সাজদাহ্তে গিয়ে যেন তিনবার বলেঃ

 سُبْحَانَ رَبِّيَ الأَعْلَى

“সুবহানা রব্বিয়াল আলা” আমার রবের পবিত্রতা ও মহিমা বর্ণনা করছি, যিনি সবার উপরে

আর এটাই সর্বনিম্ম পরিমাণ।

[আবু দাউদ ৮৮৬, দূর্বল], [তিরমিজি ২৬১, দূর্বল]
আওন ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতেও বর্ণীত [আবু দাউদ ৮৮০, দূর্বল]

হুযাইফাহ ইবনিল ইয়ামান [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে রুকূতে

 سُبْحَانَ رَبِّيَ الْعَظِيمِ

সুবহানা রব্বিয়াল আযীমতিনবার বলিতে এবং সাজদা্‌হয়

الْعَظِيمِرَبِّيَ سُبْحَانَ
মহান আমার রবের পবিত্রতা বর্ণনা করছি

এবং সাজদা হইতে

 سُبْحَانَ رَبِّيَ الأَعْلَى

সুবহানা রব্বিয়াল আলাতিনবার বলিতে শুনেছেন।

الأَعْلَىرَبِّيَ سُبْحَانَ
যিনি সবার উপরেআমার রবের পবিত্রতা ও মহিমা বর্ণনা করছি

 سُبْحَانَ رَبِّيَ الأَعْلَى

[ইবনে মাজা ৮৮৮, সহিহ] [ইবনে মাজা ৮৯০] , [তিরমিজি ২৬২, সহিহ, এখানে ১ বার করে উল্লেখ করেছেন]
আবদুল্লা ইবনি মাসঊদ (রাঃআঃ) হইতেও বর্ণিত, ৩ বার করে উল্লেখ করেছেন, [আবু দাউদ ৮৮৬ দুর্বল ] [নাসাঈ ১০৪৬] [আবু দাউদ ৮৭১, সহিহ]
আবু হুরাইরাহ (রাঃআঃ) হইতেও বর্ণিত [তিরমিজি ২৬৭]

হুযায়ফাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি নবী [সাঃআঃ] -এর সাথে সলাত আদায় করিলেন । তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] রুকূতে

 سُبْحَانَ رَبِّيَ الْعَظِيمِ

“সুবহা-না রব্বিয়াল আযীম” ও সেজদায়

سُبْحَانَ رَبِّيَ الْأَعْلى

“সুবহা-না রব্বিয়াল আলা-” পড়তেন । আর যখনই তিনি ক্বিরাআতের সময় রহমতের আয়াতে পৌঁছতেন, ওখানে থেমে যেতেন, রাহমাত তলবের দুআ পাঠ করিতেন । আবার যখন আযাবের আয়াত পৌঁছতেন, সেখানে থেমে গিয়ে আযাব থেকে বাঁচার জন্য দুআ করিতেন। {১} এ হাদিসটিকে “সুবহা-না রব্বিয়াল আলা-” পর্যন্ত নকল করিয়াছেন ।

[আবু দাউদ ৮৮১, সহীহ হাদিস]

উক্ববাহ ইবনি আমির (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

পূর্বোক্ত হাদিসের অনুরূপ বর্ণিত। তাতে আরো রয়েছেঃ রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) রুকুতে

‏ سُبْحَانَ رَبِّيَ الْعَظِيمِ وَبِحَمْدِهِ

সুবহানা রব্বিয়াল আযীম ওয়া বিহামদিহী

তিনবার বলিতেন এবং সাজদাহইতে

 سُبْحَانَ رَبِّيَ الأَعْلَى وَبِحَمْدِهِ

সুবহানা রব্বিয়াল আলা ওয়া বিহামদিহী

তিনবার বলিতেন।

[আবু দাউদ ৮৭০, দুর্বল হাদিস]

ইবনি জুরায়য [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি আতাকে জিজ্ঞেস করলাম, আপনি রুকুতে কি পড়েন? তিনি বলেন,

 سُبْحَانَكَ وَبِحَمْدِكَ لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ 

সুবহা-নাকা ওয়াবি হামদিকা লা-ইলা-হা ইল্লা- আনতা”। অর্থাৎ, “হে আল্লাহ! আমরা তোমার প্রশংসার সাথে তোমার পবিত্রতা বর্ননা করছি। তুমি ব্যতীত কোন মাবূদ নেই।”

কেননা ইবনি আবু মুলাইকাহ্ আমাকে আয়িশার সুত্রে অবহিত করিয়াছেন যে, তিনি {আয়িশাহ্ রাদি.] } বলেছেন, একরাতে আমি ঘুম থেকে জেগে নবী [সাঃআঃ] -কে আমার কাছে পেলাম না। আমি ধারনা করলাম, তিনি হয়ত তাহাঁর অপর কোন স্ত্রীর কাছে গেছেন। আমি তাহাঁর খোঁজে বের হলাম, কিন্তু না পেয়ে ফিরে আসলাম। দেখি, তিনি রুকু অথবা [রাবীর সন্দেহ] সেজদাহ আছেন এবং বলছেন

 سُبْحَانَكَ وَبِحَمْدِكَ لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ 

সুবহা-নাকা ওয়াবি হামদিকা লা-ইলা-হা ইল্লা- আনতা”। আমি বললাম, আমার পিতা-মাতা আপনার জন্য উৎসর্গ হোক। আমি কি ধারনায় নিমজ্জিত হয়েছি, আর আপনি কি কাজে মগ্ন আছেন।

[সহীহ মুসলিম ৯৭৬]

আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] রুকু ও সেজদাহ এ দুয়া পড়তেনঃ

‏ سُبُّوحٌ قُدُّوسٌ رَبُّ الْمَلاَئِكَةِ وَالرُّوحِ

সুব্বুহুন কুদ্দূসুন্ রাব্বুল্‌ মালা-ইকাতি ওয়ার্‌ রূহ”। অর্থাৎ(আল্লাহ তাআলা) পবিত্র, ত্রুটিমুক্ত; (তিনি) সব ফেরেশতা ও জিবরিলের প্রভু.

رَبُّ قُدُّوسٌ سُبُّوحٌ
প্রভুআল্লাহ তাআলাঅতিপবিত্র
وَالرُّوحِ الْمَلاَئِكَةِ
ও জিবরিলেরসব ফেরেশতা

[সহীহ মুসলিম ৯৭৮, ৯৭৯], [আবু দাউদ ৮৭২, সহীহ] [নাসাঈ ১০৪৮, সহীহ]

5. পরিচ্ছেদঃ রুকু ও সিজদায় যাওয়ার পর দোয়া

6. পরিচ্ছেদঃ রুকু থেকে মাথা তুলার তাসবীহ

সালিম [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, আমরা আবু মাসঊদের নিকট আসলাম। তাঁকে বললাম, আমাদেরকে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নামাজ সম্বন্ধে বর্ণনা করুন। তখন তিনি আমাদের সামনে দাঁড়ালেন এবং তাকবীর বলিলেন, যখন তিনি রুকূ করিলেন তখন তাহাঁর উভয় হাতের তালু হাঁটুদ্বয়ের উপর স্থাপন করিলেন। আর তাহাঁর আঙ্গুলগুলো তার নিচে রাখলেন এবং তাহাঁর উভয় কনুই পার্শ্বদেশ থেকে দূরে রাখলেন। যাতে তাহাঁর সকল অঙ্গ সোজা হয়ে গেল। তারপর বলিলেন,

سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ

সামিয়াল্লাহু লিমান হামিদাহ

তখন দাঁড়িয়ে গেলেন। তখন তাহাঁর সকল অঙ্গ সোজা হয়ে গেল।

[নাসাঈ ১০৩৬]

7. পরিচ্ছেদঃ রুকূ থেকে মাথা ওঠাবার সময় ঈমাম কি বলবেন

বিন আবু আওফা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] যখন রুকূ থেকে মাথা তুলতেন তখন বলিতেন

سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ اللَّهُمَّ رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ

সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ, আল্লাহুম্মা রব্বানা লাকাল হাম্‌দ।,

“ যে ব্যক্তি আল্লাহ্‌র প্রশংসা করে আল্লাহ তা শুনেন। আমাদের প্রতিপালক! তোমার জন্য সমস্ত প্রশংসা, আকাশমণ্ডলী, যমীন ও এতদুভয়ের মধ্যে যা কিছু আছে এবং তুমি যা চাও সব কিছুই তোমার প্রশংসায় পূর্ণ”।

[ইবনে মাজা ৮৭৮, সহিহ হাদিস]

আবদুল্লাহ ইবনি উমর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

যে, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] যখন নামাজ আরম্ভ করিতেন তখন কাঁধ পর্যন্ত তাহাঁর উভয় হাত উঠাতেন। আর যখন তিনি রুকূ থেকে মাথা উঠাতেন তখনও এরূপ করিতেন। যখন তিনি

سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ

সামিয়াল্লাহু লিমান হামিদাহ

বলিতেন, তখন

رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ

রাব্বানা লাকাল হামদ

বলিতেন। আর তিনি দুসিজদার মধ্যে হাত উঠাতেন না।

[নাসাঈ ১০৫৯, সহীহ হাদিস, আলাদা শব্দে سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ رَبَّنَا وَلَكَ الْحَمْدُ ]

আবু হুরাইরাহ [রাঃআঃ] হইতেও বর্ণিত, [ইবনে মাজা ৮৭৫, সহিহ হাদিস]

আবু বাক্‌র ইবনি আবদুর রহমান [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি আবু হুরায়রা্[রাদি.]-কে বলিতে শুনেছেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যখন সলাতে দাঁড়াতেন

اللَّهُ أَكْبَرُ

উচ্চারণঃ আল্লাহু আকবার, অর্থঃ আল্লাহ মহান

বলে নামাজ শুরু করিতেন। তিনি তাকবীর اللَّهُ أَكْبَرُ বলে রুকূতে যেতেন। তিনি রুকূ থেকে পিঠ সোজা করে দাঁড়ানোর সময়

سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ

সামিয়াল্লাহু লিমান হামিদাহ [যে ব্যক্তি আল্লাহর প্রশংসা করেন আল্লাহ তার কথা শুনে থাকেন]

বলিতেন। অতঃপর দাঁড়ানো অবস্থায়

رَبَّنَا وَلَكَ الْحَمْدُ

রব্বানা ওয়া লাকাল হামদ [হে আল্লাহ! তোমার জন্য সমস্ত প্রশংসা] বলিতেন।

তিনি তাকবীর সাজদাহ থেকে মাথা তোলার সময়ও তাকবীর বলিতেন। প্রত্যেক রাকআতে নামাজ শেষ করা পর্যন্ত তিনি এরূপই করিতেন। দ্বিতীয় রাকআতের বসার পর ওঠার সময়ও তিনি তাকবীর বলিতেন।

অতঃপর আবু হুরায়রা্[রাদি.] বলিলেন, আমি তোমাদের সবার তুলনায় অধিক পরিমাণে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর অনুরূপ নামাজ আদায় করিতে পারি।

[সহীহ মুসলিম ৭৫৪], [নাসাঈ ১০২৩, সহীহ], [নাসাঈ ১০৫৭]

আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

যে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যখন রুকূ থেকে মাথা উঠাতেন, তখন বলিতেন

اللَّهُمَّ رَبَّنَا وَلَكَ الْحَمْدُ

আল্লাহুম্মা রাব্বানা ওয়া লাকাল হামদ

[নাসাঈ ১০৬০, সহীহ হাদিস]

8. পরিচ্ছেদঃ রুকু হতে উঠার সময় ও পরে তাসবীহ

আমির (রাঃআঃ) সূত্র হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, মুক্তাদীগণ ইমামের পিছনে

سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ 

সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ্” বলবে না, বরং বলবে

 رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ

“রব্বানা লাকাল হামদ”

[ইবনে মাজা ৮৪৯, হাসান মাকতু]

আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) বলেছেনঃ ইমাম যখন

سَمِعَ اللهُ لِمَن حَمِدَه

উচ্চারণঃ সামি আল্লা-হু লিমান হামিদাহ, অর্থঃ যে আল্লাহর হামদ-প্রশংসা করে, আল্লাহ তার প্রশংসা শুনুন

বলেন, তখন তোমরা

اللَّهُمَّ رَبَّناَ وَلَكَ الحَمدُ

উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা রব্বানা ওয়া লাকাল হামদ, অর্থঃ হে আমাদের রব্ব! আল্লাহ, আর আপনার জন্যই সমস্ত প্রশংসা

বলবে। কেননা, যার এ উক্তি ফেরেশতাগণের উক্তির সঙ্গে একই সময়ে উচ্চারিত হয়, তার পূর্ববর্তী সকল গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়।

[সহীহ বুখারী ৭৯৫, ৭৯৬], [ইবনে মাজা ৮৪৮], [আবু দাউদ ৮৭৪] [নাসাঈ ১০৬৩ رَبَّنَا وَلَكَ الْحَمْدُ ]
আবু মুসা আশআরী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত [নাসাঈ ১০৬৪]

আবু সাঈদ আল-খুদরী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে বলিতে শুনেছেনঃ ইমাম যখন

سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ

সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ

বলে তখন তোমরা বলবে,

اللَّهُمَّ رَبَّنَا وَلَكَ الْحَمْدُ

আল্লাহুম্মা রব্বানা ওয়া লাকাল হাম্‌দ।

[ইবনে মাজা ৮৭৭, হাসান হাদিস]
আনাস বিন মালিক [রাঃআঃ] হইতেও বর্ণিত [আবু দাউদ ৮৭৬ সহিহ] [নাসাঈ ১০৬১]

রিফাআ ইবনু রাফি যুরাকী (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একবার আমরা নাবী (সাঃআঃ)-এর পিছনে সালাত আদায় করলাম। তিনি যখন রুকূ থেকে মাথা উঠিয়ে

سَمِعَ اللهُ لِمَن حَمِدَه

উচ্চারণঃ সামি আল্লা-হু লিমান হামিদাহ, অর্থঃ যে আল্লাহর হামদ-প্রশংসা করে, আল্লাহ তার প্রশংসা শুনুন

বলিলেন, তখন পিছন থেকে এক সাহাবী

رَبَّناَ وَلَكَ الحَمدُ حَمداً كَثيراً طَيِّباً مُبارَكاً فيِهِ

উচ্চারণঃ রব্বানা ওয়া লাকাল হামদু, হামদান কাছীরান ত্বায়্যিবান মুবা–রাকান ফীহি, অর্থঃ হে আমাদের রব্ব! আর আপনার জন্যই সমস্ত প্রশংসা; অঢেল, পবিত্র ও বরকত-রয়েছে-এমন প্রশংসা

الحَمدُ وَلَكَ رَبَّناَ
সমস্ত প্রশংসাআর আপনার জন্যইহে আমাদের রব্ব
طَيِّباًكَثيراًحَمداً
পবিত্রঅঢেলপ্রশংসা
فيِهِمُبارَكاً
এমনও বরকত

বলিলেন। সালাত শেষ করে তিনি জিজ্ঞেস করিলেন, কে এরূপ বলেছিল? সে সাহাবী বলিলেন, আমি। তখন তিনি বললেনঃ আমি দেখলাম ত্রিশ জনের অধিক মালাইকা এর সওয়াব কে পূর্বে লিখবেন তা নিয়ে নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতা করছেন। [১]

[সহীহ বুখারী ৭৯৯] [নাসাঈ ১০৬২], [আবু দাউদ ৮৭৭]
আনাস (রাদি.) হইতেও বর্ণিত [সহীহ বুখারী ৭৯৮]

ইবনি আবু আওফা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] রুকু থেকে পিঠ উঠানোর সময় বলিতেনঃ

 سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ اللَّهُمَّ رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ مِلْءَ السَّمَوَاتِ وَمِلْءَ الأَرْضِ وَمِلْءَ مَا شِئْتَ مِنْ شَىْءٍ بَعْدُ

“সামিআল্লা-হু লিমান হামিদাহ, আল্লা-হুম্মা রব্বানা-লাকাল হামদু মিলআস সামা-ওয়া-তি ওয়ামিল আল আরযি ওয়ামিল্আ মা-শিতা মিন্ শাইয়িন্ বাদু।” অর্থাৎ, “প্রশংসাকারীর প্রশংসা আল্লাহ শুনেন। হে আল্লাহ! আমাদের প্রতিপালক সকল প্রশংসা আপনারই জন্য-যা আসমান ও জমিন পরিপূর্ণ এবং পরিপূর্ণতা ছাড়াও যতটুকু আপনি ইচ্ছা পোষণ করেন।”

[সহীহ মুসলিম ৯৫৪, ৯৫৫], [ইবনে মাজা ৮৪৬], [আবু দাউদ ৮৭৫]

আলী ইবনি আবু তালিব [রাদি.] হইতে বর্ণীত, আলাদা শব্দে
سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ رَبَّنَا وَلَكَ الْحَمْدُ مِلْءَ السَّمَوَاتِ وَمِلْءَ الأَرْضِ وَمِلْءَ مَا بَيْنَهُمَا وَمِلْءَ مَا شِئْتَ مِنْ شَيْءٍ بَعْدُ [তিরমিজি ২৬৬, সহিহ]

ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
اللَّهُمَّ لَكَ الْحَمْدُ مِلْءَ السَّمَوَاتِ، وَمِلْءَ الْأَرْضِ، وَمِلْءَ مَا شِئْتَ مِنْ شَيْءٍ بَعْدُ নাসাঈ ১০৬৬

ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
اللَّهُمَّ رَبَّنَا وَلَكَ الْحَمْدُ مِلْءَ السَّمَوَاتِ وَمِلْءَ الْأَرْضِ وَمِلْءَ مَا شِئْتَ مِنْ شَيْءٍ بَعْدُ নাসাঈ ১০৬৭

আবু সাঈদ আল খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যখন রুকু থেকে মাথা উঠাতেন তখন বলিতেনঃ

رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ مِلْءَ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضِ وَمِلْءَ مَا شِئْتَ مِنْ شَىْءٍ بَعْدُ أَهْلَ الثَّنَاءِ وَالْمَجْدِ أَحَقُّ مَا قَالَ الْعَبْدُ وَكُلُّنَا لَكَ عَبْدٌ اللَّهُمَّ لاَ مَانِعَ لِمَا أَعْطَيْتَ وَلاَ مُعْطِيَ لِمَا مَنَعْتَ وَلاَ يَنْفَعُ ذَا الْجَدِّ مِنْكَ الْجَدُّ

“রব্বানা- লাকাল্ হামদু মিল্আস্ সামা-ওয়া-তি ওয়ামিল্আ মা-শিতা মিন্ শাইয়িন্ বাদু আহলাস্ সানা-য়ি ওয়াল্ মাজদি আহাক্কু মা- কা-লাল আবদু ওয়া কুল্লুনা- লাকা আবদুন, আল্ল-হুম্মা লা-মা-নিআ লিমা-আতাইতা ওয়ালা-মুতিয়া লিমা- মানাতা ওয়ালা ইয়ানফাউ যাল্ জাদ্দি মিনকাল্ জাদ্দ।“ অর্থাৎ “আমাদের প্রতিপালক! তুমি আসমান-জমিন সম পরিপুর্ন প্রশংসার অধিকারী, অতঃপর তুমি যা চাও তাও পুর্ন করে প্রশংসা। তুমি প্রশংসা ও সম্মানের অধিকারী। তোমার প্রশংসায় বান্দা যা কিছু বলে তুমি তার চাইতে বেশি হকদার। আমরা সবাই তোমার বান্দা; হে আল্লাহ! তুমি যা দান করো তা প্রতিরোধ করার ক্ষমতা কারো নেই এবং তুমি যা দেয়া বন্ধ করো, তা দান করার শক্তি কারো নেই। ধনবানদের ধন তোমার সামনে কোন কাজে আসে না।

[সহীহ মুসলিম ৯৫৮], [ইবনে মাজা ৮৭৬], [বুলুগুল মারাম ২৯৫] [সহীহ মুসলিম ৯৫৯, ৯৬০ ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীত,

 اللَّهُمَّ رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ مِلْءَ السَّمَوَاتِ وَمِلْءَ الأَرْضِ وَمَا بَيْنَهُمَا وَمِلْءَ مَا شِئْتَ مِنْ شَىْءٍ بَعْدُ أَهْلَ الثَّنَاءِ وَالْمَجْدِ لاَ مَانِعَ لِمَا أَعْطَيْتَ وَلاَ مُعْطِيَ لِمَا مَنَعْتَ وَلاَ يَنْفَعُ ذَا الْجَدِّ مِنْكَ الْجَدُّ ‏

নাসাঈ ১০৬৮. আবু সাঈদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ مِلْءَ السَّمَوَاتِ وَمِلْءَ الْأَرْضِ وَمِلْءَ مَا شِئْتَ مِنْ شَيْءٍ بَعْدُ أَهْلَ الثَّنَاءِ وَالْمَجْدِ خَيْرُ، مَا قَالَ الْعَبْدُ وَكُلُّنَا لَكَ عَبْدٌ، لَا مَانِعَ لَمَا أَعْطَيْتَ وَلَا يَنْفَعُ ذَا الْجَدِّ مِنْكَ الْجَدُّ

আবু সাঈদ আল-খুদরী (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ)

 سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ 

সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ্” বলার পর বলিতেন

اللَّهُمَّ رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ مِلْءَ السَّمَاءِ 

আল্লাহুম্মা রব্বানা লাকাল হামদ মিলউস-সামায়ি”।

(বর্ণনাকারী মুআম্মালের বর্ণনা মতে)

 مِلْءَ السَّمَوَاتِ وَمِلْءَ الأَرْضِ وَمِلْءَ مَا شِئْتَ مِنْ شَىْءٍ بَعْدُ أَهْلَ الثَّنَاءِ وَالْمَجْدِ أَحَقُّ مَا قَالَ الْعَبْدُ وَكُلُّنَا لَكَ عَبْدٌ لاَ مَانِعَ لِمَا أَعْطَيْتَ 

“মিলউস সামাওয়াতি ওয়া মিলউল আরদি ওয়া মিলউ মা শিতা মিন শাইয়িন বাদু, আহলুস সানায়ি ওয়াল মাজদি আহাক্কু মা ক্বলালআবদু, ওয়া কুল্লুনা লাকাআবদুন লা মা-নিআ লিমা আত্বাইতা”

বর্ণনাকারী মাহমুদের বর্ণনায় এ বাক্যটিও রয়েছেঃ

‏ وَلاَ مُعْطِيَ لِمَا مَنَعْتَ

ওয়ালা মুত্বিয়া লিমা মানাতা”

অতঃপর সমস্ত বর্ণনাকারী এ বাক্যটি বলার বিষয়ে একমতঃ

 وَلاَ يَنْفَعُ ذَا الْجَدِّ مِنْكَ الْجَدُّ 

ওয়ালা ইয়ানফাউ যাল-জাদ্দি মিনকাল জাদ্দু।”

সহীহঃ মুসলিম।

বর্ণনাকারী বিশর বলেন, নাবী (সাঃআঃ) কেবল “রব্বানা লাকাল হামদ” বলিতেন। মাহমুদের বর্ণনায় “আল্লাহুম্মা” শব্দটি নেই। তিনি শুধু “রব্বানা লাকাল হামদ” এর কথা উল্লেখ করিয়াছেন।

[ইবনে মাজা ৮৪৭, সহিহ হাদিস]

9. পরিচ্ছেদঃ রুকু হতে উঠার পরে দোয়া

আবদুল্লাহ ইবনি আবু আওফা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] বলিতেন :

 اللَّهُمَّ لَكَ الْحَمْدُ مِلْءَ السَّمَاءِ وَمِلْءَ الأَرْضِ وَمِلْءَ مَا شِئْتَ مِنْ شَىْءٍ بَعْدُ اللَّهُمَّ طَهِّرْنِي بِالثَّلْجِ وَالْبَرَدِ وَالْمَاءِ الْبَارِدِ اللَّهُمَّ طَهِّرْنِي مِنَ الذُّنُوبِ وَالْخَطَايَا كَمَا يُنَقَّى الثَّوْبُ الأَبْيَضُ مِنَ الْوَسَخِ 

“আল্লা-হুম্মা লাকাল্ হামদু মিল্আস সামা-ওয়া-তি ওয়ামিল্ আল আরযি ওয়ামিল্আ মা-শিতা মিন্ শাইয়িন বাদু , আল্লা-হুম্মা তাহহিরনী বিসসালজি ওয়াল্ বারাদ ওয়াল্ মা-য়িল বা-রিদি আল্লা-হুম্মা তাহহিরনী মিনায্ যুনূবি ওয়াল্ খাতা-য়া-কামা- ইউনাক্কাস্ সাওবুল্ আবইয়াযু মিনাল্ ওয়াসাখ।” অর্থাৎ, “হে আল্লাহ! তোমার জন্য ঐ পরিমাণ প্রশংসা-যা আসমান ও জমিনকে পরিপূর্ণ করে দেয়। অতঃপর তুমি যা চাও তা দিয়ে পরিপূর্ণ করো। হে আল্লাহ! আমাকে বরফ, কুয়াশা, ঠাণ্ডা পানি দিয়ে পবিত্র করে দাও। হে আল্লাহ! সাদা কাপড় যেভাবে ময়লা থেকে পরিষ্কার হয়ে ধবধবে সাদা হয়ে যায়, আমাকেও তদ্রুপ যাবতীয় গুনাহ থেকে পবিত্র করে দাও।”

[সহীহ মুসলিম ৯৫৬],
শুবাহ [র.] -এর সুত্রে মুআয [রাদি.] হইতে বর্ণীত, [সহীহ মুসলিম ৯৫৭],
আবু জুহাইফা [রাঃআঃ] হইতেও বর্ণিতঃ
اللَّهُمَّ رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ مِلْءَ السَّمَوَاتِ وَمِلْءَ الأَرْضِ وَمِلْءَ مَا شِئْتَ مِنْ شَىْءٍ بَعْدُ اللَّهُمَّ لاَ مَانِعَ لِمَا أَعْطَيْتَ وَلاَ مُعْطِيَ لِمَا مَنَعْتَ وَلاَ يَنْفَعُ ذَا الْجَدِّ مِنْكَ الْجَدُّ [ইবনে মাজা ৮৭৯]

আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) যখন রুকূ হইতে মাথা উঠাতেন তখন

سَمِعَ اللهُ لِمَن حَمِدَه رَبَّناَ وَلَكَ الحَمدُ 

সামি আল্লা-হু লিমান হামিদাহ, রব্বানা ওয়া লাকাল হামদ, অর্থঃ যে আল্লাহর হামদ-প্রশংসা করে, আল্লাহ তার প্রশংসা শোনেন, হে আমাদের রব্ব! আর আপনার জন্যই সমস্ত প্রশংসা

বলিতেন। আর কতিপয় লোকের নাম উল্লেখ করে তাঁদের জন্য দুআ করিতেন। দুআয় তিনি বলিতেন,

اللَّهُمَّ اشْدُدْ وَطْأَتَكَ عَلَى مُضَرَ، وَاجْعَلْهَا عَلَيْهِمْ سِنِينَ كَسِنِي يُوسُفَ

হে আল্লাহ! ওয়ালীদ ইবনু ওয়ালীদ, সালামা ইবনু হিশাম, আইয়্যাস ইবনু আবু রাবীআ (রাদি.) এবং অপরাপর দুর্বল মুসলিমদেরকে রক্ষা করুন। হে আল্লাহ! মুদার গোত্রের উপর আপনার পাকড়াও কঠোর করুন, ইউসুফ (আঃ)–এর যুগে যেমন খাদ্য সংকট ছিল তাঁদের জন্যও তেমন খাদ্য সংকট সৃষ্টি করে দিন।

(রাবী বলেন) এ যুগে পূর্বাঞ্চলের অধিবাসী মুদার গোত্রের লোকেরা নাবী (সাঃআঃ)–এর বিরোধী ছিল।

[সহীহ বুখারী ৮০৪]

10. পরিচ্ছেদঃ ইশা ও ফজরের সালাতের শেষ রাকআতে রুকুর পরে দোয়া কুনূত

আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি অবশ্যই নাবী (সাঃআঃ)-এর সালাতের ন্যায় সালাত আদায় করব। আবু হুরাইরা (রাদি.) যুহর, ইশা ও ফজরের সালাতের শেষ রাকআতেঃ

سَمِعَ اللهُ لِمَن حَمِدَه

উচ্চারণঃ সামি আল্লা-হু লিমান হামিদাহ, অর্থঃ যে আল্লাহর হামদ-প্রশংসা করে, আল্লাহ তার প্রশংসা শুনুন

বলার পর কুনূত পড়তেন। এতে তিনি মুমিনগণের জন্য দুআ করিতেন এবং কাফিরদের প্রতি অভিসম্পাত করিতেন।

11. পরিচ্ছেদঃ সেজদা যাওয়া ও উঠার সময় পূর্বে ও পরে হাত রাখা

ইবনে মাজা ৮৩৮. ওয়ায়িল ইবনি হুজর (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি দেখেছি নাবী (সাঃআঃ) নামায সাজদাহয় গমনকালে (জমিনে) হাত রাখার পূর্বে হাঁটু রাখতেন এবং সাজদাহ হইতে দাঁড়নোর সময় হাঁটুর পূর্বে হাত উঠাতেন। {৮৩৮}

রুকু ও সিজদার তাসবিহ – এই হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

ইবনে মাজা ৮৩৯. আবদুল জাব্বার ইবনি ওয়ায়িল হইতে তাহাঁর পিতার হইতে বর্ণিতঃ

তিনি নাবী (সাঃআঃ) এর নামায সম্পর্কে হাদিস বর্ণনা করেন যে, নাবী (সাঃআঃ) সাজদাহকালে স্বীয় হস্তদ্বয় মাটিতে রাখার পূর্বে হাঁটুদ্বয় মাটিতে স্থিরভাবে রাখতেন। বর্ণনাকারী হাম্মাম (রাঃআঃ) শাক্বীক্ব সূত্রে বর্ণনা করেন যে,আসিম ইবনি কুলায়ির তাহাঁর পিতার হইতে নাবী (সাঃআঃ) এর সূত্রে উপরোক্ত হাদিসের অনুরূপ হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন। উল্লিখিত বর্ণনাকারীদ্বয়ের মধ্যে আমার জানামতে সম্ভাব্য মুহাম্মাদ ইবনি জুহাদা বর্ণিত হাদীসে রয়েছেঃ তিনি (সাঃআঃ) সাজদাহর পর উঠে দাঁড়ানোর সময় হাঁটু ও রানের উপর ভর করে দাঁড়াতেন। {৮৩৯}

রুকু ও সিজদার তাসবিহ – এই হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

ইবনে মাজা ৮৪০. আবু হুরাইরাহ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যেন সাজদাহর সময় উটের ন্যায় না বসে এবং সাজদাহকালে যেন মাটিতে হাঁটু রাখার পূর্বে হাত রাখে

রুকু ও সিজদার তাসবিহ – এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

ইবনে মাজা ৮৪১. আবু হুরাইরাহ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ তোমাদের কেউ কেউ নামায উটের বসার ন্যায় বসে থাকে।

রুকু ও সিজদার তাসবিহ – এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

ইবনে মাজা ৮৪২. আবু ক্বিলাবাহ হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একদা আবু সুলায়মান মালিক ইবনিল হুওয়াইরিস (রাঃআঃ) আমাদের মাসজিদে এসে বলিলেন, আল্লাহর শপথ! আমি তোমাদেরকে নিয়ে নামায আদায়ের মাধ্যমে রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) যে পদ্ধতিতে নামায আদায় করতেন তা তোমাদেরকে দেখাতে চাই।

বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর আমি আবু ক্বিলাবাহকে বললাম, তিনি কিভাবে নামায আদায় করতেন? জবাবে তিনি বলিলেন, আমাদের শায়খআমর ইবনি সালামাহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি)- এর নামাজের অনুরূপ, যিনি তাহাঁদের ঈমাম ছিলেন। বর্ণনাকারী আরো বলেন, তিনি প্রথম রাকআতের শেষ সাজদাহ্ হইতে মাথা উঠানোর পর একটু বসতেন, অতঃপর উঠে দাঁড়াতেন।

সহীহঃ বোখারি।

রুকু ও সিজদার তাসবিহ – এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

ইবনে মাজা ৮৪৩. আবু ক্বিলাবাহ হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একদা আবু সুলায়মান মালিক ইবনিল হুওয়াইরিস (রাঃআঃ) আমাদের মাসজিদে এসে বলিলেন, আল্লাহর শপথ! আমি এখন নামায আদায় করবো, কিন্তু নামায আদায়ের উদ্দেশে নয়। বরং রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) কে যেভাবে নামায আদায় করতে দেখেছি তা তোমাদেরকে দেখাতে চাই।

বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর তিনি প্রথম রাকআতের দ্বিতীয় সাজদাহ হইতে মাথা উঠানোর পর একটু বসতেন

রুকু ও সিজদার তাসবিহ – এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

12. পরিচ্ছেদঃ বিজোড় রাকাতে সোজা হয়ে না বসা পর্যন্ত দাঁড়াতেন না

ইবনে মাজা ৮৪৪. মালিক ইবনিল হুওয়াইরিস (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি দেখেছেন যে, নাবী (সাঃআঃ) নামাজের বিজোড় রাকআত সমূহে সোজা হয়ে না বসা পর্যন্ত দাঁড়াতেন না।

সহীহঃ বোখারি।

রুকু ও সিজদার তাসবিহ – এই হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস


Posted

in

by

Comments

One response to “নামাজে রুকুর দোয়া ও তাসবিহ । Dua Ruku in Salah”

Leave a Reply