নামাজের শেষ সময় – ইসতিসকার সলাতুল খাওফ ও কুসুফ

নামাজের শেষ সময় – ইসতিসকার সলাতুল খাওফ ও কুসুফ

নামাজের শেষ সময় – ইসতিসকার সলাতুল খাওফ ও কুসুফ >> সুনানে ইবনে মাজাহ হাদিস এর মুল সুচিপত্র পড়ুন

এ বিষয়ে আরও পড়ুন >> মুয়াত্তা মালিক >> সহীহ বুখারী >> সহীহ মুসলিম >> আবু দাউদ >> তিরমিজি >> নাসাঈ >> মিশকাত >> বুলুগুল মারাম হাদীস হতে

পর্বঃ ৫, অধ্যায়ঃ (১৪৭-১৫৪)=৮টি

৫/১৪৭. অধ্যায়ঃ ফাজর ও আসর নামাজের পর কোন নামাজ পড়া নিষিদ্ধ।
৫/১৪৮. অধ্যায়ঃ যে সকল সময় নামাজ পড়া মাকরূহ।
৫/১৪৯. অধ্যায়ঃ যে কোন সময়ে মাক্কাহ শরীফে নামাজ পড়ার অনুমতি আছে।
৫/১৫০. অধ্যায়ঃ নির্দিষ্ট ওয়াক্ত থেকে বিলম্ব করে নামাজ পড়া সর্ম্পকে।
৫/১৫১. অধ্যায়ঃ সলাতুল খাওফ বা [শংকাকালীন] নামাজ।
৫/১৫২. অধ্যায়ঃ সলাতুল কুসূফ [সূর্যগ্রহণের নামাজ]
৫/১৫৩. অধ্যায়ঃ ইস্‌তিস্‌কার [বৃষ্টি প্রার্থনার] নামাজ
৫/১৫৪. অধ্যায়ঃ ইসতিসকার নামাজের দুআ।

৫/১৪৭. অধ্যায়ঃ ফাজর ও আসর নামাজের পর কোন নামাজ পড়া নিষিদ্ধ।

১২৪৮. আবু হুরায়রা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] দু সময়ে নামাজ আদায় করিতে নিষেধ করিয়াছেন ঃ ফজরের নামাজের পর সূর্য উঠার পূর্ব পর্যন্ত এবং আসরের নামাজের পর সূর্য অস্ত যাওয়ার পূর্ব পর্যন্ত। {১২৪৮}

{১২৪৮} মুসলিম ৮২৫, নাসায়ি ৫৬১, আহমাদ ৯৬৩৭, ১০০৬৪, ১০২৪৫, ১০৪৬৫; মুওয়াত্ত্বা মালিক ৫১৪, ইবনি মাজাহ ১২৫২। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। নামাজের শেষ সময় – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১২৪৯. আবু সাঈদ আল-খুদরি [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

নবী [সাঃআঃ] বলেন, আসরের নামাজের পর সূর্য অস্তমিত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত কোন নামাজ নাই এবং ফজরের নামাজের পর সূর্য উদিত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত কোন নামাজ নাই। {১২৪৯}

{১২৪৯} বোখারি ৫৮৬, ১১৯৭, ১৮৬৪, ১৯৯৬; মুসলিম ৮২৭, নাসায়ি ৫৬৬-৬৭, আহমাদ ১০৬৩৯, ১০৯৫৫, ১১১১৩, ১১১৮০, ১১২৩৭, ১১৩০৫, ১১৪৮৯, ২৭৯৫১, ২৭৯৪৬। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ৪৭৯, সহিহ আবু দাউদ ১১৫৭। নামাজের শেষ সময় – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১২৫০. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

আমাকে কয়েকজন সন্তোষভাজন ব্যক্তি বলেছেন, উমার [রাঃআঃ]-ও তাহাদের অন্তর্ভুক্ত এবং উমার [রাঃআঃ]-ই আমার অধিক সন্তোষভাজন ব্যক্তি। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, ফজরের নামাজের পড় থেকে সূর্য উঠার পূর্ব পর্যন্ত কোন নামাজ নাই এবং আসরের নামাজের পর থেকে সূর্যাস্তের পূর্ব পর্যন্ত কোন নামাজ নাই। {১২৫০}

{১২৫০} বোখারি ৫৮১, মুসলিম ৮২৬, তিরমিজি ১৮৩, নাসায়ি ৫৬২, ৫৬৯; আবু দাউদ ১২৭৬, আহমাদ ১০২, ১৩১, ২৭২, ৩৬৬, ১৪৩৩। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ১১৫৭। নামাজের শেষ সময় – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৫/১৪৮. অধ্যায়ঃ যে সকল সময় নামাজ পড়া মাকরূহ।

১২৫১. আম্‌র বিন আবাসাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট এসে জিজ্ঞেস করলাম, এমন কোন সময় আছে কি, যা আল্লাহর নিকট অন্য সময়ের তুলনায় অধিক প্রিয়? তিনি বলেন, হাঁ, মধ্যরাত। অতএব তুমি পারলে তখন থেকে ভোর হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত সময়ের মধ্যে নামাজ পড়ো; অতঃপর [ফজরের নামাজ পড়ে] সূর্য উদিত হয়ে তা কিছুটা উপরে না উঠা পর্যন্ত বিরত থাক। অতপর তুমি পারলে খুঁটি তার ছায়ার উপর স্থির হওয়ার পূর্ব [দ্বিপ্রহর]পর্যন্ত নামাজ আদায় করিতে পার। অতঃপর সূর্য ঢলে না পড়া পর্যন্ত [নামাজ পড়া থেকে] বিরত থাক। কেননা ঠিক দুপুরে জাহান্নামকে উত্তপ্ত করা হয়। অতঃপর তুমি পারলে তোমার আসরের নামাজ পড়ার পূর্ব পর্যন্ত নামাজ আদায় করিতে পারো। অতঃপর সূর্যাস্তের পূর্ব পর্যন্ত বিরত থাকো। কেননা তা শয়তানের দু শিং-এর মধ্য দিয়ে অস্ত যায় এবং উদিত হয়। {১২৫১}

তাহকীক আলবানি ঃ মধ্য রাতের কথা কথাটি ছাড়া সহিহ, কারন মুনকার।{১২৫১} মুসলিম ৮৩২, তিরমিজি ৩৫৭৯, নাসায়ি ৫৭২, ৫৮৪; আহমাদ ১৬৫৬৬, ১৬৫৭১, ১৮৯৪০; ইবনি মাজাহ ১৩৬৪। তাহকিক আলবানিঃ মধ্য রাতের কথা কথাটি ছাড়া সহিহ, কারণ মুনকার। আর সহিহ হচ্ছে মধ্য রাতের কথা। তাখরিজ আলবানিঃ নাসায়ি ৫৮৪ সহিহ, ইবনি খুযাইমাহ ১১৪৭ সহিহ, সহিহ আবু দাউদ ১১৫৮। উক্ত হাদিসের রাবি ১. ইয়াযীদ বিন তালক সম্পর্কে ইমাম যাহাবী তাকে দুর্বল বলেছেন। ২. আব্দুর রহমান ইবনিল মায়লামানী সম্পর্কে আবু হাতিম আর-রাযী তাকে দুর্বল বলেছেন। সালিহ জাযারাহ বলেন, তার হাদিস মুনকার। ইমাম দারাকুতনী বলেন, তিনি দুর্বল তার হাদিস দ্বারা দলীল গ্রহণযোগ্য হইবে না। আল আযদী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় মুনকার।হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য

১২৫২. আবু হুরায়রা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, সাফওয়ান বিন মুআত্তাল [রাঃআঃ] রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট জিজ্ঞাসা সুরে বলেন, ইয়া রসূলুল্লাহ! আমি এমন একটি বিষয় আপনার নিকট জিজ্ঞেস করিতে চাই যে সম্পর্কে আপনি জ্ঞাত কিন্তু আমি অজ্ঞ। তিনি বলেন, তা কি? তিনি বলেন, রাত ও দিনের সময়সমূহের মধ্যে এমন সময়ও কি আছে যখন নামাজ পড়া মাকরূহ? তিনি বলেন, হাঁ। তুমি ফজরের নামাজ পড়ার পর থেকে সূর্য উদিত না হওয়া পর্য্ন্ত [নফল] নামাজ পড়া ত্যাগ করো। কারণ তা শয়তানের দু শিং-এর মধ্যখান দিয়ে উদিত হয়। অতঃপর তুমি নামাজ পড়ো। এই সলাতে [ফেরেশতাগণ] উপস্থিত হয় এবং [ইবাদাত] কবূল করা হয়, [তা পড়তে পারো] যাবত না সূর্য তীরের মত তোমার মাথার উপরে এসে সোজা হয়। যখন সূর্য তীরের মত তোমার মাথার উপর স্থির হয় তখন নামাজ পড়া ত্যাগ করো। কারন এসময় জাহান্নামকে উত্তপ্ত করা হয় এবং দরজা সমূহ খুলে দেয়া হয়, যাবত না সূর্য তোমার ডান ভ্রূ দিয়ে ঢলে পড়ে। তা ঢলে পড়ার পর থেকে তোমার আসরের নামাজ পড়ার পূর্ব পর্যন্ত [সময়ে নফল] সলাতে ফেরেশতাগণ উপস্থিত হন এবং তা কবূল করা হয়। অতঃপর তুমি সূর্যাস্ত না যাওয়া পর্য্ন্ত নামাজ ত্যাগ কর। {১২৫২}

{১২৫২} মুসলিম ৮২৫, নাসায়ি ৫৬১, আহমাদ ৯৬৩৭, ১০০৬৪, ১০২৪৫, ১০৪৬৫; মুওয়াত্ত্বা মালিক ৫১৪, ইবনি মাজাহ ১২৪৮। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহা ১৩৭১।নামাজের শেষ সময় – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১২৫৩. আবু আবদুল্লাহ আস-সুনাবিহী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, নিশ্চয় সূর্য শায়তানের দু শিং-এর মধ্যখান দিয়ে উদিত হয় অথবা তার সাথে শায়তানের দু শিং ও উদিত হয়। সূর্য উপরে উঠলে তা থেকে সে পৃথক হয়ে যায়। আবার সূর্য যখন আসমানের মধ্যখানে আসে তখন সে তার সামনে আসে। সূর্য যখন ঢলে যায় তখন সে পৃথক হয়ে যায়। আবার যখন তা অস্ত যাওয়ার কাছাকাছি আসে তখন সে তার সামনে এসে যায়। অতঃপর তা অস্তমিত হলে সে আবার পৃথক হয়ে যায়। অতএব তোমরা এ তিন সময়ে [নফল] নামাজ পড়ো না। {১২৫৩}

{১২৫৩} নাসায়ি ৫৫৯, আহমাদ ১৮৫৮৪, ১৮৫৯১; মুওয়াত্ত্বা মালিক ৫১০। তাহকিক আলবানিঃ জইফ। তাখরিজ আলবানিঃ জামি সগীর ৬৬৩ জইফ, ৭১১৫ সহিহ, আহমাদ ১২৫১, ১২৫২ সহিহ, নাসায়ি ৫৭২ সহিহ, মিশকাত ১০৩৯ মুত্তাফাকুন আলাইহি, জইফ জামে ১৪৭২। উক্ত হাদিসের রাবি আব্দুর রাযযাক সম্পর্কে ইবনি হিব্বান বলেন, তিনি সিকাহ তবে হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। ইবনি আদী বলেন, আমি আশা করি তার মাঝে কোন সমস্যা নেই।হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৫/১৪৯. অধ্যায়ঃ যে কোন সময়ে মাক্কাহ শরীফে নামাজ পড়ার অনুমতি আছে।

১২৫৪. যুবায়র বিন মুতইম [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ হে আবদে মানাফের বংশধর! কোন ব্যক্তি দিনের অথবা রাতের যে কোন সময় ইচ্ছা এই ঘর তাওয়াফ করলে বা এখানে নামাজ পড়লে তোমরা তাকে বাধা দিও না। {১২৫৪}

{১২৫৪} তিরমিজি ৮৬৮, নাসায়ি ২২৪, আবু দাউদ ১৮৯৪, আহমাদ ১৬৩০১, ১৬৩২৮, ১৬৩৩৩; দারিমি ১৯২৬। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ৪৮১।নামাজের শেষ সময় – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৫/১৫০. অধ্যায়ঃ নির্দিষ্ট ওয়াক্ত থেকে বিলম্ব করে নামাজ পড়া সর্ম্পকে।

১২৫৫. আবদুল্লাহ বিন মাসউদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, অচিরেই হয়ত তোমরা এমন সব লোকের সাক্ষাত পাবে যারা নির্দিষ্ট ওয়াক্‌তে নামাজ না পড়ে ভিন্ন ওয়াক্‌তে তা পড়বে। তোমরা তাহাদের সাক্ষাৎ পেলে নিজেদের ঘরে তোমাদের প্রসিদ্ধ ওয়াক্‌তে নামাজ পড়ে নিও, অতঃপর তাহাদের সাথে [জামাআতে] তা পড়ে নিও এবং একে নফলরূপে গণ্য করো। {১২৫৫}

{১২৫৫} আবু দাউদ ৪৩২, আহমাদ ৩৮৭৯, ৪০২০, ৪৩৩৪। তাহকিক আলবানিঃ হাসান সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ৪৫৮। আবু বকর বিন আবু আয়্যাশ সম্পর্কে আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি সিকাহ তবে হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ করেন। আল-আজালী বলেন, তিনি সিকাহ তবে হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। আস-সাজী বলেন, তিনি সত্যবাদী কিন্তু হাদিস বর্ণনায় সন্দেহ করেন। ইবনি হিব্বান বলেন হাদিস বিশারদগণ তার থেকে বেঁচে থেকেছেন।হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ

১২৫৬. আবু যার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

নবী [সাঃআঃ] বলেন, তুমি নামাজের নির্দিষ্ট ওয়াক্‌তে তা পড়ে নাও। অতঃপর ইমামকে লোকেদের নিয়ে নামাজরত পেলে তুমিও তাহাদের সাথে নামাজ পড়ো। তুমি আগে নামাজ না পড়ে থাকলে এটা তোমার সেই নামাজ হইবে, অন্যথায় তা হইবে তোমার জন্য নফল। {১২৫৬}

{১২৫৬} মুসলিম ৬৪১-৪, তিরমিজি ১৭৬, নাসায়ি ৭৭৮, আবু দাউদ ৪৩১, আহমাদ ২০৯০৮, ২০৯৭৯; দারিমি ১২২৭-২৮। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ৪৫৯।নামাজের শেষ সময় – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১২৫৭. উবাদাহ ইবনিস সামিত [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

নবী [সাঃআঃ] বলেন, অচিরেই এমন সব শাসকের আবির্ভাব হইবে যারা বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকার কারণে নামাজকে তার ওয়াক্ত থেকে বিলম্বিত করিবে। অতএব তোমরা তাহাদের সাথে [জামাআতে] তোমাদের নফল নামাজ পড়ো। {১২৫৭}

{১২৫৭} আবু দাউদ ৪৩৩ তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ৪৫৯। নামাজের শেষ সময় – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৫/১৫১. অধ্যায়ঃ সলাতুল খাওফ বা [শংকাকালীন] নামাজ।

১২৫৮. ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] খাওফ [শংকাকালীন নামাজ] সম্পর্কে বলেছেন, ইমাম তার সাথের একদল লোকসহ নামাজ পড়বে, তারা [তার সাথে] এক রাকআত নামাজ পড়বে এবং অপর দল তাহাদের ও তাহাদের শত্রুদের মধ্যে প্রতিরোধ বজায় রাখবে। অতঃপর আমীরের সাথে এক রাকআত পড়া দলটি [প্রতিরক্ষা ব্যূহে] চলে যাবে এবং যে দলটি নামাজ পড়েনি তাহাদের স্থানে অবস্থান নিবে এবং নামাজ না পড়া দলটি অগ্রসর হয়ে তাহাদের আমীরের সাথে এক রাকআত নামাজ পড়বে। অতঃপর তাহাদের আমীর তার নামাজ পূর্ণ করে চলে যাবে এবং পূর্বোক্ত দুটি দল পৃথক পৃথকভাবে আরো এক রাকআত নামাজ পড়ে নিবে। যদি অধিক সন্ত্রস্ত অবস্থা বিরাজ করে তবে পদাতিক অবস্থায় বা অশ্বারোহী অবস্থায় [যেভাবে সম্ভব] নামাজ পড়ে নিবে। রাবি বলেন, এখানে সাজদাহ দ্বারা রাকআত বুঝানো হয়েছে। {১২৫৮}

{১২৫৮} বোখারি ৯৪২-৪৩, ৪১৩২, ৪১৩৪, ৪৫৩৫; মুসলিম ৮৩১-২, নাসায়ি ৫৬৪, ১৫৩৮-৪২; আবু দাউদ ১২৪৩, আহমাদ ৬৩৪১, মুওয়াত্ত্বা মালিক ৪৪২, দারিমি ১৫২১। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ৫৮৮।নামাজের শেষ সময় – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১২৫৯. সাহল বিন আবু হাসমা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি সলাতুল খাওফ সম্পর্কে বলেন, ইমাম কিবলামুখী হয়ে দাঁড়াবেন, তাহাদের একদলও তার সাথে [সলাতে] দাঁড়াবে এবং অপর দল শত্রুর প্রতিরোধে থাকিবে এবং তাহাদের দৃষ্টি থাকিবে কাতারের দিকে। তিনি তাহাদেরকে নিয়ে এক রাকআত পড়বেন, অতঃপর তারা স্বতন্ত্রভাবে দু সাজদাহয় এক রাকআত পড়বেন তাহাদের স্থানে। অতঃপর তারা পূর্বোক্ত দলের স্থানে ফিরে যাবে এবং তারা এসে গেলে তিনি তাহাদেরকে নিয়ে দু সাজদাহয় আরো এক রাকআত পড়বেন। এতে তার হইবে দু রাকআত আর লোকেদের হইবে এক রাকআত। অতঃপর তারা দু সাজদাহয় এক রাকআত পড়বেন।

২/১২৫৯ [১]. সাহল বিন আবু হাসমা [রাঃআঃ], নবী [সাঃআঃ] সূত্রে ইয়াহইয়া বিন সাঈদের হাদিসের অনুরূপ বর্ণনা করিয়াছেন। রাবি [মুহাম্মাদ বিন বাশ্‌শার] বলেন, ইয়াহইয়া বিন সাঈদ আমাকে বলিলেন, এ হাদীস ও এক কোণায় লিখে নাও। আমি হাদীসটি মুখস্ত রাখতে পারিনি কিন্তু তা ইয়াহইয়া বিন সাঈদ আল-আনসারীর হাদীসের অনুরূপ। {১২৫৯}

তাহকীক আলবানি ঃ সহিহ।{১২৫৯} বোখারি ৪১৩০-৩১, মুসলিম ৮৪১-৪২, তিরমিজি ৫৬৫, নাসায়ি ১৫৩৬-৩৭, ১৫৫৩; আবু দাউদ ১২৩৭-৩৯, আহমাদ ১৫২৮৩, মুওয়াত্ত্বা মালিক ৪৪০-৪১, দারিমি ১৫২২। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ১১২৬। নামাজের শেষ সময় – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১২৬০. জাবির বিন আবদুল্লাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

নবী [সাঃআঃ] তাহাঁর সাহাবীগণকে নিয়ে সলাতুল খাওফ আদায় করেন। তিনি তাহাঁর নিকটস্থ সকলকে নিয়ে রুকূ করেন এবং অন্যরা দাঁড়িয়ে থাকে। প্রথম দল সাজদাহ করে অবসর হলে দ্বিতীয় দল স্বতন্ত্রভাবে দু টি সাজদাহ করে। অতঃপর প্রথম দল পিছনে সরে গিয়ে পূর্বোক্ত দলের স্থানে অবস্থান নেয় এবং শেষোক্ত দল সামনে অগ্রসর হয়ে [জামাআতে] প্রথম দলের স্থানে এসে দাঁড়ায়। নবী [সাঃআঃ] তাহাদের নিকটস্থ সকলকে নিয়ে রুকূ করেন এবং সাজদাহ করেন। তারা সাজদাহ থেকে অবসর হলে দ্বিতীয় দল দুটি সাজদাহ করে। তাহাদের প্রতিটি দল নবী [সাঃআঃ]-এর সাথে এক রাকআত নামাজ পড়ে এবং পৃথকভাবে এক রাকআত পড়ে, তখন শত্রুবাহিনী তাহাদের সম্মুখভাগে ছিল। {১২৬০}

{১২৬০} বোখারি ৪১৩৭, মুসলিম ৮৪০/১-২, নাসায়ি ১৫৪৫-৪৮, আহমাদ ১৪৫১১। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ১১১২। নামাজের শেষ সময় – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৫/১৫২. অধ্যায়ঃ সলাতুল কুসূফ [সূর্যগ্রহণের নামাজ]

১২৬১. আবু মাসউদ [উকবাহ বিন আমর বিন সালাবাহ] [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, মানবজাতির মধ্যে কারো মৃত্যুর কারণে সূর্যগ্রহণ ও চন্দ্রগ্রহণ হয় না। অতএব তোমরা তা দেখলে সলাতে দাঁড়িয়ে যাও। {১২৬১}

{১২৬১} বোখারি ১০৪১, ১০৫৭, ৩২০৪; মুসলিম ৯১১-২, নাসায়ি ১৪৬২, আহমাদ ১৬৬৫২, দারিমি ১৫২৫। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। নামাজের শেষ সময় – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১২৬২. নুমান বিন বাশীর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর যুগে সূর্যগ্রহণ হয়। তিনি ভীত-সন্ত্রস্ত অবস্থায় তাহাঁর পরিধেয় বস্ত্র হেঁচড়াতে হেঁচড়াতে মাসজিদে এসে পৌঁছেন। গ্রহণ শেষ না হওয়া পর্যন্ত তিনি সলাতে রত থাকেন অতঃপর তিনি বলেন, এক দল লোক ধারণা করে যে, কোন মহান নেতার মৃত্যুর কারণে সূর্যগ্রহণ ও চন্দ্রগ্রহণ হয়ে থাকে। আসলে তা নয়। কারো মৃত্যু অথবা জীবিত থাকার কারণে সূর্যগ্রহণ বা চন্দ্রগ্রহণ হয় না। আল্লাহ তাআলা যখন তাহাঁর কোন সৃষ্টির উপর তাজাল্লী বিস্তার করেন তখন তা তাহাঁর ভয়ে ভীত হয়। {১২৬২}

{১২৬২} নাসায়ি ১৪৮৫, ১৪৮৮-৯০; আবু দাউদ ১১৯৩। তাহকিক আলবানিঃ জইফ। তাখরিজ আলবানিঃ মিশকাত ১৪৯৩, ইরওয়াহ ১৩১, তালীক সহিহ ইবনি খুযাইমাহ ১৪০২। উক্ত হাদিসের রাবি জামিল ইবনিল হাসান বিন জামিল আল আতাকী সম্পর্কে ইবনি হিব্বান বলেন, তিনি সিকাহ তবে অপরিচিত। ইবনি আদী বলেন, আমি আশা করি তিনি ভাল। ২. আবদুল ওয়াহহাব সম্পর্কে মুহাম্মাদ বিন সাদ বলেন, তিনি সিকাহ তবে তার মাঝে দুর্বলতা রয়েছে। ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তিনি শেষ বয়সে হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ করিয়াছেন।হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

১২৬৩. আয়িশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর জীবদ্দশায় সূর্যগ্রহণ হলে তিনি বের হয়ে মাসজিদে চলে যান। তিনি দাঁড়িয়ে তাকবীরে তাহরীমা বলেন এবং লোকজন তাহাঁর পিছনে কাতারবন্দী হয়ে দাঁড়ায়। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] দীর্ঘ কিরাআত পড়েন, অতঃপর তাকবীর বলে দীর্ঘ রুকূ করেন, অতঃপর মাথা তুলে

 سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ رَبَّنَا وَلَكَ الْحَمْدُ

“সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ রব্বানা ওয়ালাকাল হাম্‌দ”

বলেন। অতঃপর দাঁড়িয়ে দীর্ঘ কিরাআত পড়েন, তবে তা ছিল পূর্বের কিরাআতের তুলনায় কম দীর্ঘ। অতঃপর তাকবীর বলে রুকূতে গিয়ে দীর্ঘ রুকূ করেন, তবে তা পূর্বের রুকূর চেয়ে কম দীর্ঘ ছিল। অতঃপর

 سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ رَبَّنَا وَلَكَ الْحَمْدُ

“সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ রব্বানা ওয়ালাকাল হাম্‌দ”

বলেন। তিনি দ্বিতীয় রাকআতেও তাই করেন। তিনি মোট চার রাকআত নামাজ পড়েন এবং তাহাঁর নামাজ শেষ করার পূর্বেই সূর্যগ্রহণ সমাপ্ত হয়। অতঃপর তিনি দাঁড়িয়ে লোকেদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন। তিনি আল্লাহ তাআলার যথোপযুক্ত প্রশংসা করার পর বলেন, সূর্য ও চন্দ্র আল্লাহর নির্দেশসমূহের অন্তর্ভূক্ত দুটি নিদর্শন। কারো জীবন-মৃত্যুতে সূর্যগ্রহণ বা চন্দ্রগ্রহণ হয় না। তোমরা তা দেখলে ভীত-সম্ভস্ত হয়ে সলাতে রত হও। {১২৬৩}

{১২৬৩} বোখারি ১০৪৪, ১০৪৬-৪৭, ১০৫০, ১০৫৬, ১০৫৮, ১০৬৪, ১০৬৬, ১২১২, ৩২০৩; মুসলিম ৯০১-৫, ৯০২-৩; তিরমিজি ৫৬১, ৫৬৩; নাসায়ি ১৪৬৫-৬৬, ১৪৭০, ১৪৭২-৭৭, ১৪৮১, ১৪৯৪, ১৪৯৭, ১৪৯৯, ১৫০০; আহমাদ ১১৭৭, ১১৮০, ১১৮৭-৮৮, ১১৯০; আহমাদ ২৩৭৪৭, ২৩৯৫২, ২৪৭৮৪, ২৪৮২৩; মুওয়াত্ত্বা মালিক ৪৪৪, ৪৪৬; দারিমি ১৫২৭, ১৫২৯। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ৬৫৮, সহিহ আবু দাউদ ১০৬৮, ১০৭১। নামাজের শেষ সময় – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১২৬৪. সামুরাহ বিন জুনদুব [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদের সাথে নিয়ে সূর্যগ্রহণের নামাজ পড়লেন। আমরা তাহাঁর [কিরাআতের] কোন শব্দ শুনতে পাইনি। {১২৬৪}

{১২৬৪} তিরমিজি ৫৬২, নাসায়ি ১৪৮৪, আবু দাউদ ১১৮৪। তাহকিক আলবানিঃ জইফ। তাখরিজ আলবানিঃ মিশকাত ১৪৯০, জইফ আবু দাউদ ২১৬, তালীক সহিহ ইবনিু, খুযাইমাহ ১৩৯৭। উক্ত হাদিসের রাবি সালাবাহ বিন ইবাদ সম্পর্কে ইবনি হিব্বান বলেন, তিনি সিকাহ। আলী ইবনিল মাদীনী বলেন, তার ব্যাপারটি অজ্ঞাত। ইবনি হাজার ও ইবনিল কাত্তান বলেন, তিনি মাজহুল বা অপরিচিত।হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

১২৬৫. আসমা বিনতু আবু বাক্‌র [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] সূর্যগ্রহণের নামাজ পড়েন। তাতে তিনি দীর্ঘ কিয়াম করেন, দীর্ঘ রুকূ করেন, রুকূ থেকে উঠেও দীর্ঘ কিয়াম করেন, পুনরায় দীর্ঘ রুকূ করেন, অতঃপর মাথা তোলেন, অতঃপর সাজদাহয় গিয়ে দীর্ঘ সাজদাহ করেন, অতঃপর মাথা তোলেন, আবার দীর্ঘ সাজদাহ করেন, অতঃপর উঠে দীর্ঘ কিয়াম করেন, অতঃপর রুকূতে গিয়েও দীর্ঘক্ষণ রুকূতে থাকেন, অতঃপর মাথা তুলে পুনরায় সাজদাহ্‌য় গিয়ে দীর্ঘক্ষণ সাজদাহ্‌য় থাকেন। অতঃপর নামাজ শেষ করে বলেন, জান্নাত আমার নিকটবর্তী হলো, এমনকি আমি ইচ্ছা করলে হাত বাড়িয়ে তার ফলগুচ্ছ আহরণ করে তোমাদের জন্য নিয়ে আসতে পারতাম। অনুরূপভাবে জাহান্নাম আমার নিকটবর্তী হলো, এমনকি আমি বললাম, হে প্রভু! আমি তাহাদের মধ্যে থাকতেও [কি তাহাদের শাস্তি দেয়া হইবে]? নাফি [রাঃআঃ] বলেন, আমার মনে হয় তিনি একথাও বলেছেন, আমি এক নারীকে দেখলাম যে, তার একটি বিড়াল তাকে নখর দ্বার আঁচড় কাটছে। আমি জিজ্ঞেস করলাম, তার এ অবস্থা কেন? ফেরেশতারা বলেন, সে একে আটক করে রেখেছিল, অবশেষে অনাহারে এটি মারা যায়। সে একে আহারও দেয়নি এবং ছেড়েও দেয়নি, যাতে জমিনের কীট-পত্যঙ্গ খেতে পারতো। {১২৬৫}

{১২৬৫} বোখারি ৭৪৫, মুসলিম ৯০৫, নাসায়ি ১৪৯৮, আহমাদ ২৬৪২৩-২৪, ২৬৪৫২; মুওয়াত্ত্বা মালিক ৪৪৭। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ।নামাজের শেষ সময় – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৫/১৫৩. অধ্যায়ঃ ইস্‌তিস্‌কার [বৃষ্টি প্রার্থনার] নামাজ

১২৬৬. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

[ইসহাক] বলেন, কোন এক শাসক ইসতিসকার নামাজ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করার জন্য আমাকে ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ]-এর নিকট পাঠান। ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] বলেন,  আমার নিকট জিজ্ঞেস করিতে তাকে কিসে বাধা দিলো। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বিনয়ী ও নম্রভাবে, সাধারণ পোশাক পরে ভীত বিহাল হয়ে রওয়ানা করে ধীর পদে [মাঠে] পৌঁছে দু রাকআত নামাজ পড়লনে, যে ভাবে তিনি ঈদের নামাজ পড়েন। কিন্তু তিনি তোমাদের এই খুতবাহ্‌র ন্যায় খুতবাহ দেননি। {১২৬৬}

{১২৬৬} তিরমিজি ৫৫৮, ১৫০৮; নাসায়ি ১৫০৬, ১৫২১; আবু দাউদ ১১৬৫। তাহকিক আলবানিঃ হাসান। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ৬৬৫, ৬৬৯; মিশকাত ১৫০৫, তাবলীক ইবনি খুযাইম ১৪০১।হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

১২৬৭. আবদুল্লাহ বিন যায়দ বিন আসিম [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি নবী [সাঃআঃ] সম্পর্কে সাক্ষ্য দেন যে, তিনি ইসতিসকার নামাজ পড়ার জন্য মাঠে রওয়ানা হলেন। তিনি [মাঠে পৌঁছে] কিবলামুখী হন, তাহাঁর চাদর উল্টিয়ে পরেন এবং দু রাকআত নামাজ পড়েন।

২/১২৬৭ [১]. আবদুল্লাহ বিন যায়দ বিন আসিম [রাঃআঃ], নবী [সাঃআঃ] সূত্রে পূর্বোক্ত হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে। সুফ্‌ইয়ান মাসঊদী [রাঃআঃ] বলেন, আমি আবু বাক্‌র বিন মুহাম্মাদকে জিজ্ঞেস করলাম, তিনি কি তাহাঁর পোশাকের উপরিভাগ নিচে করেছিলেন, না ডান দিক বাঁ দিকে করেছিলেন? তিনি বলেন, না, বরং ডান দিক বাঁ দিকে করেছিলেন। {১২৬৭}

তাহকীক আলবানি ঃ মাসঊদীর [আরবী] কথা ব্যতীত সহিহ। {১২৬৭} বোখারি ১০০৫, ১০১১-১২, ১০২৩-৩০, ৬৩৪৩; মুসলিম ৮৯১-৪, তিরমিজি ৫৫৬, নাসায়ি ১৫০৫, ১৫০৭, ১৫০৯-১২, ১৫১৯-২০, ১৫২২; আবু দাউদ ১১৬১-৬২, ১১৬৪, ১১৬৬-৬৭; আহমাদ ১৫৯৯৭, ১৫৯৯৯, ১৬০১৩, ১৬০২৫, ১৬০৩৮; মুওয়াত্ত্বা মালিক ৪৪৮, দারিমি ১৫৩৩-৩৪। তাহকিক আলবানিঃ قَالَ سَأَلْتُ أَبَا بَكْرِ بْنَ مُحَمَّدِ بْنِ عَمْرٍو أَجَعَلَ أَعْلاَهُ أَسْفَلَهُ أَوِ الْيَمِينَ عَلَى الشِّمَالِ قَالَ لاَ بَلِ الْيَمِينَ عَلَى الشِّمَالِ কথা ব্যাতিত সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ নাসায়ি ১৫০৫ সহিহ, সহিহ আবু দাউদ ১০৫৩।হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য

১২৬৮. আবু হুরায়রা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এক দিন বৃষ্টি প্রার্থনার জন্য রওয়ানা হলেন। তিনি আমাদেরকে সাথে নিয়ে আযান ও ইকামাত ব্যতীত দু রাকআত নামাজ পড়েন, অতঃপর আমাদের উদ্দেশ্যে খুতবাহ দিলেন, তাহাঁর মুখমণ্ডল কিবলামুখী করে তাহাঁর উভয় হাত উপরে তুলে আল্লাহর নিকট দুআ করেন এবং তাহাঁর চাদর উলোটপালট করে পরেন, চাদরের ডান দিক বামে এবং বাম দিন ডানে আনেন। {১২৬৮}

{১২৬৮} আহমাদ ৮১২৮ তাহকিক আলবানিঃ জইফ। তাখরিজ আলবানিঃ ইবনি খুযাইমাহ ১৪০৯ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি নুমান বিন রাশীদ সম্পর্কে ইবনি হিব্বান বলেন, তিনি সিকাহ। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি একাধিক মুনকার হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন। তিনি হাদিস বর্ণনায় ইদতিরাব করেন। ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। ইমাম বোখারি ও আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তার হাদিসের মধ্যে অধিক সন্দেহ থাকে। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, তিনি দুর্বল।হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৫/১৫৪. অধ্যায়ঃ ইসতিসকার নামাজের দুআ।

১২৬৯. শুরাহবীল ইবনিস সিমত হইতে বর্ণিতঃ

তিনি কাব বিন মুররাহ [রাঃআঃ]-কে বলেন, হে কাব বিন মুররাহ! আমাদের নিকট রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর হাদীস বর্ণনা করুন এবং সতর্কতা অবলম্বন করুন। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নবী [সাঃআঃ]-এর নিকট এসে বললো, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আল্লাহ্‌র নিকট বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা করুন। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর দুহাত তুলে দুআ করেন ঃ

 اللَّهُمَّ اسْقِنَا غَيْثًا مَرِيئًا مَرِيعًا طَبَقًا عَاجِلاً غَيْرَ رَائِثٍ نَافِعًا غَيْرَ ضَارٍّ

আল্লাহুম্মা আসকিনা গাইছান মারীআন মারীআন তবাকান আজিলান গাইরা রাইছিন নাফিআন গাইরা দাররিন” [হে আল্লাহ! আমাদেরকে এমন বৃষ্টির পানি দান করুন যা সুপেয়, ফসল উৎপাদক, পর্যাপ্ত, বিলম্ব নয়, অবিলম্বে, উপকারী এবং ক্ষতিকর নয়]।

কাব [রাঃআঃ] বলেন, জুমুআর নামাজ শেষ না হইতেই বৃষ্টি হয়ে গেলো। পড়ে লোকেরা তাহাঁর নিকট এসে অতিবৃষ্টির অভিযোগ করলো এবং বললো, হে আল্লাহ্‌র রসূল! বাড়িঘর ধ্বসে যাচ্ছে। তিনি বলেন, হে আল্লাহ! আমাদের উপর নয়, আমাদের আশেপাশে বর্ষিত হোক। রাবি বলেন, তৎক্ষণাৎ মেঘমালা টুকরা টুকরা হয়ে ডানে-বামে সরে গেলো। {১২৬৯}

{১২৬৯} আহমাদ ২৭৬৮৯ তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ১৪৫। নামাজের শেষ সময় – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১২৭০. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, এক বেদুইন নবী [সাঃআঃ]-এর নিকট এসে বললো, ইয়া রসূলাল্লাহ! আমি অবশ্যি এমন এক সম্প্রদায়ের নিকট থেকে আপনার নিকট উপস্থিত হয়েছি যাদের রাখালদের পর্যাপ্ত আহারের সংস্থান নেই, এমনকি তারা তাহাদের চতুস্পদ জন্তুর বেঁচে থাকার আশাও ত্যাগ করেছে। তিনি নামাজ পড়লেন অতঃপর মিম্বারে উঠে আল্লাহ্‌র প্রশংসা করিলেন, অতঃপর দুআ বললেনঃ arbi

اللَّهُمَّ اسْقِنَا غَيْثًا مُغِيثًا مَرِيئًا طَبَقًا مَرِيعًا غَدَقًا عَاجِلاً غَيْرَ رَائِثٍ

আল্লাহুম্মাস কিনা গইসান মুগিসান মারিয়ান তাবিকান মারিয়ান গাদাকান আজিলান গয়রা রয়েছিন, “হে আল্লাহ! আমাদেরকে সাহায্যকারী বৃষ্টির পানি দান করুন যা সুপেয়, পর্যাপ্ত, ফসল উৎপাদক, প্রচুর, অবিলম্বে, বিলম্বে নয়”।

অতঃপর তিনি মিম্বার থেকে নামলেন। অতঃপর যে সকল লোকই তাহাঁর নিকট এসেছে তারাই বলেছেন, আমাদের এখানে পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত হয়েছে। {১২৭০}

{১২৭০} যইফ। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ১/১৪৫-১৪৬।হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

১২৭১. আবু হুরায়রা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

নবী [সাঃআঃ] বৃষ্টিপাতের জন্য দুআ করিলেন, এমনি আমি তাহাঁর বগলের শুভ্রতা [উপরে হাত তোলার কারণে] দেখিতে পাই। অধস্তন রাবি মুতামির [রাঃআঃ] বলেন, আমার মতে তিনি ইসতিসকার সলাতে এভাবে দুআ করেন।

{১২৭১} আহমাদ ৭১৭২, ৮৬১২। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ তালীক ইবনি খুয়াইমাহ ১৪১৩।নামাজের শেষ সময় – হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১২৭২. আবদুল্লাহ বিন উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, কখনও কখনও আমার কবির কবিতা স্মরণ হতো এবং আমি মিম্বারের উপর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর চেহারা মোবারকের দিকে লক্ষ্য নিবদ্ধ করে রাখতাম। তিনি মিম্বার থেকে অবতরণ না করিতেই মাদীনাহ্‌র বাড়িঘরের ছাদের পানিবাহী নল দিয়ে [বৃষ্টির] পানি পড়তে শুরু করে [পানি অপসারী নালা দিয়ে পানি বয়ে যেতে শুরু করতো]। তখন কবির কবিতা আমার মনে পড়ে যেতো ঃ “কত সুন্দর সৌন্দর্যময় সত্তা, যাঁর উসীলায় বৃষ্টি বর্ষণের প্রার্থনা করা যায়, যিনি ইয়াতীম ও বিধবাদের আশ্রয়স্থল”। এটা আবু তালিবের কবিতা। {১২৭২}

{১২৭২} বোখারি ১০০৯, আহমাদ ৫৬৪০। তাহকিক আলবানিঃ হাসান। তাখরিজ আলবানিঃ বোখারিতে তালীক ও মাওদূদ রূপে। উক্ত হাদিসের রাবি উমার বিন হামাযাহ সম্পর্কে ইবনি হিব্বান সিকাহ বললেও অন্যত্রে বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, মুনকারুল হাদিস। ইমাম নাসাঈ তাকে দুর্বল বলেছেন। ইবনি আদী তার থেকে হাদিস গ্রহন করিয়াছেন।হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস


Posted

in

by

Comments

Leave a Reply