বৃষ্টি চাওয়ার দোয়া – দাঁড়িয়ে ইস্তিস্কার দুআ করা।
বৃষ্টি চাওয়ার দোয়া দাঁড়িয়ে ইস্তিস্কার দুআ করা। >> বুখারী শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন >> এ বিষয়ে আরও পড়ুন >> মুয়াত্তা মালিক >> সহীহ মুসলিম >> আবু দাউদ >> ইবনে মাজাহ >> তিরমিজি >> নাসাঈ >> মিশকাত >> বুলুগুল মারাম হাদীস হতে
পর্বঃ ১৫, বৃষ্টির জন্য দোয়া, অধ্যায়ঃ (১-২৯)=২৯টি
১৫/১. অধ্যায়ঃ ইসতিস্কা (পানি প্রার্থনা) ও ইসতিস্কার জন্য নাবী (সাঃআঃ) এর বের হওয়া।
১৫/২. অধ্যায়ঃ নাবী (সাঃআঃ) এর দুআ ইউসুফ (আ)-এর যমানার দুর্ভিক্ষের বছরগুলোর মত (এদের উপরেও) কয়েক বছর দুর্ভিক্ষ দিন।
১৫/৩. অধ্যায়ঃ অনাবৃষ্টির সময় ইমামের নিকট বৃষ্টির জন্য লোকদের দুআর আবেদন।
১৫/৪. অধ্যায়ঃ বৃষ্টির পানি প্রার্থনায় নামাযের চাদর উল্টানো।
১৫/৫. অধ্যায়ঃ আল্লাহর সৃষ্টজীবের মধ্য হইতে কেউ তাহাঁর হারামকৃত বিধানসমূহের সীমা অতিক্রম করলে মহিমাময় প্রতিপালক কর্তৃক দুর্ভিক্ষ দ্বারা শাস্তি প্রদান।
১৫/৬. অধ্যায়ঃ জামে মসজিদে বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা।
১৫/৭. অধ্যায়ঃ ক্বিবলার দিকে মুখ না করে জুমুআর খুতবায় বৃষ্টির জন্য দুআ করা।
১৫/৮. অধ্যায়ঃ মিম্বরে দাঁড়ানো অবস্থায় বৃষ্টির জন্য দুআ।
১৫/৯. অধ্যায়ঃ বৃষ্টি প্রার্থনার জন্য জুমুআর সালাতকে যথেষ্ট মনে করা।
১৫/১০. অধ্যায়ঃ অধিক বৃষ্টির ফলে রাস্তার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলে দুআ করা।
১৫/১১. অধ্যায়ঃ বলা হয়েছে, জুমুআর দিবসে বৃষ্টির জন্য দুআ করার সময় নাবী (সাঃআঃ) তাহাঁর চাদর উল্টাননি।
১৫/১২. অধ্যায়ঃ বৃষ্টির জন্য ইমামকে দুআ করার অনুরোধ করা হলে তা প্রত্যাখ্যান না করা।
১৫/১৩. অধ্যায়ঃ দুর্ভিক্ষের মুহূর্তে মুশরিক্রা মুসলিমদের নিকট বৃষ্টির জন্য দুআর নিবেদন জানালে।
১৫/১৪. অধ্যায়ঃ অধিক বর্ষণের সময় এরূপ দুআ করা “যেন পাশের এলাকায় বৃষ্টি হয় আমাদের এলাকায় নয়।”
১৫/১৫. অধ্যায়ঃ দাঁড়িয়ে ইস্তিস্কার দুআ করা।
১৫/১৬. অধ্যায়ঃ বৃষ্টি প্রার্থনার সালাতে শব্দ সহকারে কিরআত পাঠ।
১৫/১৭. অধ্যায়ঃ নাবী (সাঃআঃ) কিভাবে মানুষের দিকে তাহাঁর পিঠ ফিরিয়েছেন।
১৫/১৮. অধ্যায়ঃ বৃষ্টি প্রার্থনার সালাত দুরাকআত।
১৫/১৯. অধ্যায়ঃ ঈদগাহে বৃষ্টির প্রার্থনা।
১৫/২০. অধ্যায়ঃ বৃষ্টির জন্য দুআর মুহূর্তে ক্বিবলামুখী হওয়া।
১৫/২১. অধ্যায়ঃ বৃষ্টির পানি প্রার্থনায় ইমামের সাথে লোকদের হাত উত্তোলন করা।
১৫/২২. অধ্যায়ঃ বৃষ্টির পানি প্রার্থনায় ইমামের হাত উত্তোলন করা।
১৫/২৩. অধ্যায়ঃ বৃষ্টিপাতের সময় কী বলিতে হয়।
১৫/২৪. অধ্যায়ঃ বৃষ্টিতে কেউ এমনভাবে ভিজে যাওয়া যে, দাড়ি বেয়ে পানি ঝরলো।
১৫/২৫. অধ্যায়ঃ যখন বাতাস প্রবাহিত হয়।
১৫/২৬. অধ্যায়ঃ নাবী (সাঃআঃ)-এর উক্তি, “আমাকে পূর্ব দিক হইতে আগত হাওয়ার মাধ্যমে সাহায্য করা হয়েছে”।
১৫/২৭. অধ্যায়ঃ ভূমিকম্প ও কিয়ামতের নিদর্শন সম্পর্কে যা বর্ণিত হয়েছে।
১৫/২৮. অধ্যায়ঃ আল্লাহ তাআলার বাণীঃ “এবং তোমরা মিথ্যারোপকেই তোমাদের উপজীব্য করেছ”। (সুরা আল-ওয়াকিয়াহ ৫৬/৮২)
১৫/২৯. অধ্যায়ঃ কখন বৃষ্টি হইবে তা মহান আল্লাহ ছাড়া কেউ অবগত নয়।
১৫/১. অধ্যায়ঃ ইসতিস্কা (পানি প্রার্থনা) ও ইসতিস্কার জন্য নাবী (সাঃআঃ) এর বের হওয়া।
১০০৫. আব্বাদ ইবনু তামীম (রহমাতুল্লাহি আলাইহি)-এর চাচা আবদুল্লাহ ইবনু যায়দ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) বৃষ্টির জন্য দুআয় বের হলেন এবং তিনি স্বীয় চাদর পরিবর্তন করিলেন।
১৫/২. অধ্যায়ঃ নাবী (সাঃআঃ) এর দুআ ইউসুফ (আ)-এর যমানার দুর্ভিক্ষের বছরগুলোর মত (এদের উপরেও) কয়েক বছর দুর্ভিক্ষ দিন।
১০০৬. আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃআঃ) যখন শেষ রাকআত হইতে মাথা উঠালেন, তখন বলিলেন, হে আল্লাহ! আইয়্যাশ ইবনু আবু রাবীআহকে মুক্তি দাও। হে আল্লাহ! সালামাহ ইবনু হিশামকে মুক্তি দাও। হে আল্লাহ! ওয়ালীদ ইবনু ওয়ালীদকে রক্ষা কর। হে আল্লাহ! দূর্বল মুমিনদেরকে মুক্তি কর। হে আল্লাহ! মুযার গোত্রের উপর তোমার শাস্তি কঠোর করে দাও। হে আল্লাহ! ইউসুফ (আ)-এর সময়ের দুর্ভিক্ষের বছরগুলোর মত (এদের উপরে) ও কয়েক বছর দুর্ভিক্ষ দাও। নাবী (সাঃআঃ) আরো বলিলেন, গিফার গোত্র, আল্লাহ তাদেরকে ক্ষমা কর। আর আসলাম গোত্র, আল্লাহ তাদেরকে নিরাপদ রাখ। ইবনু আবু যিনাদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) তাহাঁর পিতা হইতে বলেন, এ সমস্ত দুআ ফজরের সালাতে ছিলো।
১০০৭. আবদুল্লাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) যখন লোকদেরকে ইসলাম বিমুখ ভূমিকায় দেখলেন, তখন দুআ করিলেন, হে আল্লাহ! ইউসুফ (আ.)-এর সময়ের সাত বছরের (দুর্ভিক্ষের) ন্যায় তাদের উপর সাতটি বছর দুর্ভিক্ষ দাও। ফলে তাদের উপর এমন দুর্ভিক্ষ আপতিত হল যে, তা সব কিছু্ই ধ্বংস করে দিল। এমন কি মানুষ তখন চামড়া, মৃতদেহ এবং পচা ও গলিত জানোয়ারও খেতে লাগল। ক্ষুধার তাড়নায় অবস্থা এতদূর চরম আকার ধারণ করিল যে, কেউ যখন আকাশের দিকে তাকাত তখন সে ধোঁয়া দেখিতে পেত। এমতাবস্থায় আবু সুফিয়ান (ইসলাম গ্রহণের পূর্বে) নাবী (সাঃআঃ)-এর নিকট এসে বলিল, হে মুহাম্মাদ! তুমি তো আল্লাহর আদেশ মেনে চল এবং আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখার আদেশ দান কর। কিন্তু তোমার কওমের লোকেরা তো মরে যাচ্ছে। তুমি তাদের জন্য আল্লাহর নিকট দুআ কর। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা বলেছেনঃ
عَائِدُونَ * يَوْمَ نَبْطِشُ الْبَطْشَةَ الْكُبْرَى
“তুমি সে দিনটির অপেক্ষায় থাক যখন আকাশ সুস্পষ্ট ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে যাবে…সেদিন আমি প্রবলভাবে তোমাদের পাকড়াও করব”-
(সুরা দুখান ৪৪/১০-১৬)। আবদুল্লাহ (রাদি.) বলেন, সে কঠিন আঘাতের দিন ছিল বদরের যুদ্ধের দিন। ধোঁয়াও দেখা গেছে, আঘাতও এসেছে। আর মক্কার মুশ্রিকদের নিহত ও গ্রেফতার হওয়ার যে ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছে, তাও সত্য হয়েছে। সত্য হয়েছে সুরা রূম-এর এ আয়াতও (রুমবাসী দশ বছরের মধ্যে পারসিকদের উপর আবার বিজয়ী হইবে)।
১৫/৩. অধ্যায়ঃ অনাবৃষ্টির সময় ইমামের নিকট বৃষ্টির জন্য লোকদের দুআর আবেদন।
১০০৮. আবদুল্লাহ ইবনু দীনার (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি ইবনু উমর (রাদি.)-কে আবু ত্বালিব-এর এই কবিতা পাঠ করিতে শুনেছিঃ
তিনি শুভ্র, তাহাঁর চেহারার অসীলাহ দিয়ে বৃষ্টি প্রার্থনা করা হতো।
তিনি ইয়াতীমদের খাবার পরিবেশনকারী আর বিধবাদের তত্ত্বাবধায়ক।
১০০৯. See previous Hadith. সালিমের পিতা আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ)-এর বৃষ্টির জন্য দুআরত অবস্থায় আমি তাহাঁর পবিত্র চেহারার দিকে তাকালাম এবং কবির এ কবিতাটি আমার মনে পড়লো। আর তাহাঁর (মিম্বার হইতে) নামতে না নামতেই প্রবলবেগে মীযাব [১] হইতে পানি প্রবাহিত হইতে দেখলাম।
তিনি শুভ্র, তাহাঁর চেহারার অসীলাহ দিয়ে বৃষ্টি প্রার্থনা করা হতো।
তিনি ইয়াতীমদের খাবার পরিবেশনকারী আর বিধবাদের তত্ত্ববধায়ক।
আর এটা হলো আবু ত্বালিবের বাণী (কবিতা)।
[১] পানি প্রবাহিত হওয়ার নালা- আল-কাওসার আধুনিক আরবী বাংলা অভিধান দ্রঃ। হাদীসে মীযাব বলিতে কাবা ঘরের ছাদের পানি নামার স্থানকে বুঝানো হয়েছে।
১০১০. আনাস ইবনু মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
উমর ইবনু খাত্তাব (রাদি.) অনাবৃষ্টির সময় আব্বাস ইবনু আবদুল মুত্তালিব (রাদি.)-এর ওয়াসীলাহ দিয়ে বৃষ্টির জন্য দুআ করিতেন এবং বলিতেন, হে আল্লাহ! (আগে) আমরা আমাদের নাবী (সাঃআঃ)-এর ওয়াসীলাহ দিয়ে দুআ করতাম এবং আপনি বৃষ্টি দান করিতেন। এখন আমরা আমাদের নাবী (সাঃআঃ)-এর চাচার ওয়াসীলাহ দিয়ে দুআ করছি, আপনি আমাদেরকে বৃষ্টি দান করুন। বর্ণনাকারী বলেন, দুআর সাথে সাথেই বৃষ্টি বর্ষিত হত।
১৫/৪. অধ্যায়ঃ বৃষ্টির পানি প্রার্থনায় নামাযের চাদর উল্টানো।
১০১১. আবদুল্লাহ ইবনু যায়িদ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃআঃ) বৃষ্টির জন্য দুআ করেন এবং নিজের চাদর উল্টিয়ে দেন।
১০১২. আবদুল্লাহ ইবনু যায়দ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃআঃ) ঈদগাহে গেলেন এবং বৃষ্টির জন্য দুআ করিলেন। অতঃপর কিবলামুখী হয়ে নিজের চাদরখানি উল্টিয়ে নিলেন এবং দু রাকআত সালাত আদায় করিলেন। ইমাম বুখারী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, ইবনু উয়াইনাহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলিতেন, এ হাদীসের বর্ণনাকরী আবদুল্লাহ ইবনু যায়দ (রাদি.) হলেন আযানের ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্ট সাহাবী। কিন্তু তা ঠিক নয়। কারণ ইনি হলেন, সেই আবদুল্লাহ ইবনু যায়দ ইবনু আসিম মাযিনী, যিনি আনসারের মাযিন গোত্রের লোক।
১৫/৫. অধ্যায়ঃ আল্লাহর সৃষ্টজীবের মধ্য হইতে কেউ তাহাঁর হারামকৃত বিধানসমূহের সীমা অতিক্রম করলে মহিমাময় প্রতিপালক কর্তৃক দুর্ভিক্ষ দ্বারা শাস্তি প্রদান।
১৫/৬. অধ্যায়ঃ জামে মসজিদে বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা।
১০১৩. আনাস ইবনু মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক ব্যক্তি জুমুআহর দিন মিম্বরের সোজাসুজি দরজা দিয়ে (মসজিদে) প্রবেশ করিল। আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) তখন দাঁড়িয়ে খুতবা দিচ্ছিলেন। সে আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-এর সম্মুখে দাঁড়িয়ে বলিল, হে আল্লাহর রাসুল! গবাদি পশু ধ্বংস হয়ে গেল এবং রাস্তাগুলোর চলাচল বন্ধ হয়ে গেল। সুতরাং আপনি আল্লাহর কাছে দুআ করুন, যেন তিনি আমাদের বৃষ্টি দেন। বর্ণনাকারী বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) তখন তাহাঁর উভয় হাত তুলে দুআ করিলেন,
اللَّهُمَّ اسْقِنَا، اللَّهُمَّ اسْقِنَا، اللَّهُمَّ اسْقِنَا
আল্লাহুম্মাসক্বিনা, আল্লাহুম্মাসক্বিনা, আল্লাহুম্মাসক্বিনা, হে আল্লাহ! বৃষ্টি দিন, হে আল্লাহ! বৃষ্টি দিন, হে আল্লাহ! বৃষ্টি দিন।
আনাস (রাদি.) বলেন, আল্লাহর কসম! আমরা তখন আকাশে মেঘমালা, মেঘের চিহ্ন বা কিছুই দেখিতে পাইনি। অথচ সালআ (মদীনার একটি পাহাড়) পর্বত ও আমাদের মধ্যে কোন ঘর-বাড়ি ছিল না। আনাস (রাদি.) বলেন, হঠাৎ সালআ পর্বতের পিছন হইতে ঢালের মত মেঘ বেরিয়ে এল এবং তা মধ্য আকাশে পৌঁছে বিস্তৃত হয়ে পড়ল। অতঃপর বর্ষণ শুরু হল। তিনি বলেন, আল্লাহর কসম! আমরা ছয়দিন সূর্য দেখিতে পাইনি। অতঃপর এক ব্যক্তি পরবর্তী জুমুআর দিন সে দরজা দিয়ে (মসজিদে) প্রবেশ করিল। আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) তখন দাঁড়িয়ে খুতবা দিচ্ছিলেন। লোকটি দাঁড়িয়ে বলিল, হে আল্লাহর রাসুল! ধন-সম্পদ ধ্বংস হয়ে গেল এবং রাস্তাঘাটও বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল। কাজেই আপনি আল্লাহর নিকট বৃষ্টি বন্ধের জন্য দুআ করুন। আনাস (রাদি.) বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) তাহাঁর উভয় হাত তুলে দুআ করিলেন,
اللَّهُمَّ حَوَالَيْنَا وَلاَ عَلَيْنَا، اللَّهُمَّ عَلَى الآكَامِ وَالْجِبَالِ وَالآجَامِ وَالظِّرَابِ وَالأَوْدِيَةِ وَمَنَابِتِ الشَّجَرِ
আল্লাহুম্মা হাওয়ালাইনা ওয়া লা আলাইনা; আল্লাহুম্মা আলাল আকামি ওয়াল ঝিবালি ওয়াল আঝামি ওয়াজ জিরাবি ওয়াল আওদিয়াতি ওয়া মানাবিতিশ শাঝারি।’ হে আল্লাহ! আমাদের আশেপাশে, আমাদের উপর নয়; টিলা, পাহাড়, উচ্চভূমি, মালভূমি, উপত্যকা এবং বনভূমিতে বর্ষণ করুন।
নাস (রাদি.) বলেন, এতে বৃষ্টি বন্ধ হয়ে গেল এবং আমরা (মসজিদ হইতে বেরিয়ে) রোদে চলতে লাগলাম। শরীক (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) (বর্ণনাকারী) বলেন, আমি আনাস (রাদি.)-কে জিজ্ঞেস করলাম, এ লোকটি কি আগের সেই লোকটি? তিনি বলিলেন, আমি জানি না।
১৫/৭. অধ্যায়ঃ ক্বিবলার দিকে মুখ না করে জুমুআর খুতবায় বৃষ্টির জন্য দুআ করা।
১০১৪. আনাস ইবনু মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
এক ব্যক্তি জুমুআর দিন দারুল কাযা (বিচার করার স্থান)-এর দিকের দরজা দিয়ে মসজিদে প্রবেশ করিল। এ সময় আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) দাঁড়িয়ে খুতবা দিচ্ছিলেন। লোকটি আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-এর দিকে মুখ করে দাঁড়িয়ে বলিল, হে আল্লাহর রাসুল! ধন-সম্পদ নষ্ট হয়ে গেল এবং রাস্তাঘাট বন্ধ হয়ে গেল। আপনি আল্লাহর নিকট দুআ করুন যেন তিনি আমাদের বৃষ্টি দান করেন। তখন আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) দুহাত তুলে দুআ করিলেন,
اللَّهُمَّ أَغِثْنَا، اللَّهُمَّ أَغِثْنَا، اللَّهُمَّ أَغِثْنَا
আল্লা-হুম্মা আগিসনা, আল্লা-হুম্মা আগিসনা, আল্লা-হুম্মা আগিসনা, হে আল্লাহ! আমাদের বৃষ্টি দান করুন। হে আল্লাহ! আমাদের বৃষ্টি দান করুন। হে আল্লাহ! আমাদের বৃষ্টি দান করুন।
আনাস (রাদি.) বলেন, আল্লাহর কসম! আমরা তখন আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখলাম, মেঘ নেই, মেঘের সামান্য টুক্রাও নেই। অথচ সালআ পর্বত ও আমাদের মধ্যে কোন ঘরবাড়ি ছিল না। তিনি বলিলেন, হঠাৎ সালআর ওপাশ হইতে ঢালের মত মেঘ উঠে এল এবং মধ্য আকাশে এসে ছড়িয়ে পড়লো। অতঃপর প্রচুর বর্ষণ হইতে লাগল। আল্লাহর কসম! আমরা ছয়দিন সূর্য দেখিতে পাইনি। এর পরের জুমুআয় সে দরজা দিয়ে এক ব্যক্তি প্রবেশ করিল। আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) তখন দাঁড়িয়ে খুতবা দিচ্ছিলেন। লোকটি তাহাঁর সম্মুখে দাঁড়িয়ে বলিল, হে আল্লাহর রাসুল! ধন-সম্পদ ধ্বংস হয়ে গেল এবং রাস্তাঘাট বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল। কাজেই আপনি বৃষ্টি বন্ধের জন্য আল্লাহর নিকট দুআ করুন। আনাস (রাদি.) বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) তখন দুহাত তুলে দুআ করিলেন,
اللَّهُمَّ حَوَالَيْنَا وَلاَ عَلَيْنَا، اللَّهُمَّ عَلَى الآكَامِ وَالظِّرَابِ وَبُطُونِ الأَوْدِيَةِ وَمَنَابِتِ الشَّجَرِ
আল্লাহুম্মা হাওয়ালাইনা ওয়া লা আলাইনা; আল্লাহুম্মা আলাল আকামি ওয়াল ঝিবালি ওয়া বুতুনিল আওদিয়াতি ওয়া মানাবিতিশ শাঝারি।’ হে আল্লাহ! আমাদের আশে পাশে, আমাদের উপর নয়। হে আল্লাহ! টিলা, মালভূমি, উপত্যকায় এবং বনভূমিতে বর্ষণ করুন।
আনাস (রাদি.) বলেন, তখন বৃষ্টি বন্ধ হয়ে গেল এবং আমরা বেরিয়ে রোদে চলতে লাগলাম। (রাবী) শরীক (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, আমি আনাস (রাদি.)-কে জিজ্ঞেস করলাম, এ লোকটি কি আগের সেই লোক? তিনি বলিলেন, আমি জানি না।
১৫/৮. অধ্যায়ঃ মিম্বরে দাঁড়ানো অবস্থায় বৃষ্টির জন্য দুআ।
১০১৫. আনাস ইবনু মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) জুমুআর দিন খুতবা দিচ্ছিলেন। এ সময় এক ব্যক্তি এসে বলিলেন, হে আল্লাহর রাসুল! বৃষ্টি বন্ধ হয়ে গেছে। আপনি আল্লাহর নিকট দুআ করুন। তিনি যেন আমাদেরকে বৃষ্টি দান করেন। তিনি তখন দুআ করিলেন। ফলে এত অধিক বৃষ্টি হল যে, আমাদের নিজ নিজ ঘরে পৌঁছতে পারছিলাম না। এমনকি পরের জুমুআ পর্যন্ত বৃষ্টি হইতে থাকল। আনাস (রাদি.) বলেন, তখন সে লোকটি অথবা অন্য একটি লোক দাঁড়িয়ে বলিল, হে আল্লাহর রাসুল! আপনি দুআ করুন, আল্লাহ যেন আমাদের উপর হইতে বৃষ্টি সরিয়ে দেন। তখন আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) বললেনঃ
اللَّهُمَّ حَوَالَيْنَا وَلاَ عَلَيْنَا
আল্লাহুম্মা হাওয়ালাইনা ওয়া লা আলাইনা, হে আল্লাহ! আমাদের আশে পাশে, আমাদের উপর নয়।
আনাস (রাদি.) বলেন, আমি দেখিতে পেলাম, মেঘ ডানে ও বামে পৃথক হয়ে বৃষ্টি হইতে লাগল, মদীনাবাসীর উপর বর্ষণ হচ্ছিল না।
১৫/৯. অধ্যায়ঃ বৃষ্টি প্রার্থনার জন্য জুমুআর সালাতকে যথেষ্ট মনে করা।
১০১৬. আনাস ইবনু মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-এর নিকট এক ব্যক্তি এসে বলিল, গৃহপালিত পশুগুলো মরে যাচ্ছে এবং রাস্তাগুলোও বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। তখন তিনি দুআ করিলেন। ফলে সে জুমুআ হইতে পরবর্তী জুমুআ পর্যন্ত আমাদের উপর বৃষ্টি হইতে থাকল। অতঃপর সে ব্যক্তি আবার এসে বলিল, (অতি বৃষ্টির ফলে) ঘরবাড়ী ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে, রাস্তা অচল হয়ে যাচ্ছে এবং পশুগুলোও মরে যাচ্ছে। তখন আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) দাঁড়িয়ে বললেনঃ
اللَّهُمَّ عَلَى الآكَامِ وَالظِّرَابِ وَالأَوْدِيَةِ وَمَنَابِتِ الشَّجَرِ
আল্লাহুম্মা আলাল আকামি ওয়াল ঝিবালি ওয়া বুতুনিল আওদিয়াতি ওয়া মানাবিতিশ শাঝারি।’ হে আল্লাহ! টিলা, মালভূমি, উপত্যকা এবং বনভূমিতে বর্ষণ করুন।
তখন মদীনা হইতে মেঘ এমনভাবে কেটে গেল, যেমন কাপড় ছিঁড়ে ফাঁক হয়ে যায়।
১৫/১০. অধ্যায়ঃ অধিক বৃষ্টির ফলে রাস্তার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলে দুআ করা।
১০১৭. আনাস ইবনু মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক ব্যক্তি আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-এর নিকট এসে বলিল, হে আল্লাহর রাসুল! পশুগুলো মারা যাচ্ছে, এবং রাস্তাগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। কাজেই আপনি আল্লাহর নিকট দুআ করুন। তখন আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) দুআ করিলেন। ফলে সে জুমুআ হইতে পরবর্তী জুমুআ পর্যন্ত তাদের উপর বৃষ্টি বর্ষিত হইতে থাকল। অতঃপর এক ব্যক্তি আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-এর নিকট এসে বলিল, হে আল্লাহর রাসুল! ঘরবাড়ি ধ্বসে পড়েছে, রাস্তাঘাট বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে এবং পশুগুলোও মরে যাচ্ছে। আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) তখন বললেনঃ
اللَّهُمَّ عَلَى رُءُوسِ الْجِبَالِ وَالآكَامِ وَبُطُونِ الأَوْدِيَةِ وَمَنَابِتِ الشَّجَرِ
আল্লাহুম্মা আলা রুউসিল জিবালি ওয়াল আকামি ওয়া বুতুনিল আওদিয়াতি ওয়া মানাবিতিশ শাঝারি।’ হে আল্লাহ! পাহাড়ের চূড়ায়, টিলায়, উপত্যকায় এবং বনভূমিতে বৃষ্টি বর্ষণ করুন।
অতঃপর মদীনার আকাশ হইতে মেঘ সরে গেল, যেমন কাপড় ছিঁড়ে ফাঁক হয়ে যায়।
১৫/১১. অধ্যায়ঃ বলা হয়েছে, জুমুআর দিবসে বৃষ্টির জন্য দুআ করার সময় নাবী (সাঃআঃ) তাহাঁর চাদর উল্টাননি।
১০১৮. আনাস ইবনু মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
এক ব্যক্তি নাবী (সাঃআঃ)-এর নিকট সম্পদ বিনষ্ট হবার এবং পরিবার-পরিজনের দুঃখ-কষ্টের অভিযোগ জানান। তখন তিনি আল্লাহর নিকট বৃষ্টির জন্য দুআ করিলেন। বর্ণনাকারী এ কথা বলেননি, তিনি (আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) ) তাহাঁর চাদর উল্টিয়ে ছিলেন এবং এও বলেননি তিনি ক্বিবলামুখী হয়েছিলেন।
১৫/১২. অধ্যায়ঃ বৃষ্টির জন্য ইমামকে দুআ করার অনুরোধ করা হলে তা প্রত্যাখ্যান না করা।
১০১৯. আনাস ইবনু মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-এর নিকট এক ব্যক্তি এসে বলিল, হে আল্লাহর রাসুল! পশুগুলো মরে যাচ্ছে এবং রাস্তাগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। তাই আপনি আল্লাহর নিকট (বৃষ্টির জন্য) দুআ করুন। তখন তিনি দুআ করিলেন। ফলে এক জুমুআ হইতে পরের জুমুআ পর্যন্ত আমাদের উপর বৃষ্টিপাত হইতে থাকল। অতঃপর এক ব্যক্তি আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-এর নিকট এসে বলিল, হে আল্লাহর রাসুল! ঘরবাড়ি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে এবং রাস্তাঘাট বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে এবং পশুগুলোও মরে যাচ্ছে। আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) তখন দুআ করিলেন,
اللَّهُمَّ عَلَى ظُهُورِ الْجِبَالِ وَالآكَامِ وَبُطُونِ الأَوْدِيَةِ وَمَنَابِتِ الشَّجَرِ
আল্লাহুম্মা আলা জুহুরিল জিবালি ওয়াল আকামি ওয়া বুতুনিল আওদিয়াতি ওয়া মানাবিতিশ শাঝারি।’ হে আল্লাহ! পাহাড়ের উপর, টিলার উপর, উপত্যকায় এবং বনভূমিতে বর্ষণ করুন।
ফলে মদীনা হইতে মেঘ এমনভাবে কেটে গেল যেমন কাপড় ছিড়ে ফাঁক হয়ে যায়।
১৫/১৩. অধ্যায়ঃ দুর্ভিক্ষের মুহূর্তে মুশরিক্রা মুসলিমদের নিকট বৃষ্টির জন্য দুআর নিবেদন জানালে।
১০২০. ইবনু মাসঊদ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, কুরাশইরা যখন ইসলাম গ্রহণে দেরি করছিল, তখন নাবী (সাঃআঃ) তাদের বিরুদ্ধে দুআ করিলেন। পরিণামে তাদেরকে দুর্ভিক্ষ এমনভাবে গ্রাস করিল যে, তারা ধ্বংস হইতে লাগল এবং মৃত দেহ ও হাড়গোড় খেতে লাগল। তখন আবু সুফিয়ান (ইসলাম গ্রহণের পূর্বে) নাবী (সাঃআঃ)-এর নিকট এসে বলিল, হে মুহাম্মাদ! তুমি তো আত্মীয়দের সাথে সদ্ব্যবহার করার নির্দেশ দিয়ে থাক। অথচ তোমার জাতি ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। তুমি মহান আল্লাহর নিকট দুআ কর। তখন তিনি তিলাওয়াত করিলেন,
فَارْتَقِبْ يَوْمَ تَأْتِي السَّمَاءُ بِدُخَانٍ مُبِينٍ
“তুমি অপেক্ষা কর সে দিনের যে দিন আসমানে প্রকাশ্য ধোঁয়া দেখা দিবে” (সুরা দুখান ৪৪/১০)। অতঃপর (আল্লাহ যখন তাদের বিপদমুক্ত করিলেন তখন) তারা আবার কুফরীর দিকে ফিরে গেল। এর পরিণতি স্বরূপ আল্লাহর এ বাণী:
يَوْمَ نَبْطِشُ الْبَطْشَةَ الْكُبْرَى
“যেদিন আমি কঠোরভাবে পাকড়াও করব”- (সুরা দুখান ৪৪/১৬) অর্থাৎ বদরের দিন। মানসূর (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে (বর্ণনাকারী) আসবাত (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) আরো বলেছেন, আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) দুআ করেন। ফলে লোকজনের উপর বৃষ্টিপাত হয় এবং অবিরাম সাতদিন পর্যন্ত বর্ষিত হইতে থাকে। লোকেরা অতিবৃষ্টির বিষয়টি পেশ করিল। তখন নাবী (সাঃআঃ) দুআ করে বলেন,
اللَّهُمَّ حَوَالَيْنَا وَلاَ عَلَيْنَا
আল্লাহুম্মা হাওয়ালাইনা ওয়া লা আলাইনা, হে আল্লাহ! আমাদের আশে পাশে, আমাদের উপর নয়।
অতঃপর তাহাঁর মাথার উপর হইতে মেঘ সরে গেল। তাঁদের পার্শ্ববর্তী লোকদের উপর বর্ষিত হল।
১৫/১৪. অধ্যায়ঃ অধিক বর্ষণের সময় এরূপ দুআ করা “যেন পাশের এলাকায় বৃষ্টি হয় আমাদের এলাকায় নয়।”
১০২১. আনাস ইবনু মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, জুমুআর দিন আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) খুতবা দিচ্ছিলেন। তখন লোকেরা দাঁড়িয়ে উচ্চৈঃস্বরে বলিতে লাগল, হে আল্লাহর রাসুল! বৃষ্টি বন্ধ হয়ে গেছে, গাছপালা লাল হয়ে গেছে এবং পশুগুলো মারা যাচ্ছে। তাই আপনি আল্লাহর নিকট দুআ করুন, যেন তিনি আমাদের উপর বৃষ্টি বর্ষণ করেন। তখন তিনি বলিলেন,
اللَّهُمَّ اسْقِنَا
আল্লাহুম্মাস কিনা, হে আল্লাহ! আমাদের উপর বৃষ্টি বর্ষণ করুন।
এভাবে দুবার বলিলেন। (বর্ণনাকারী বলেন,) আল্লাহর কসম! আমরা তখন আকাশে এক খণ্ড মেঘও দেখিতে পাচ্ছিলাম না। হঠাৎ মেঘ দেখা দিল এবং বর্ষণ হলো। তিনি (রাসুলুল্লাহ) মিম্বার হইতে নেমে সালাত আদায় করিলেন। অতঃপর যখন তিনি চলে গেলেন, তখন হইতে পরবর্তী জুমুআ পর্যন্ত বৃষ্টি হইতে থাকে। অতঃপর যখন তিনি (দাঁড়িয়ে) জুমুআর খুতবা দিচ্ছিলেন, তখন লোকেরা উচ্চৈঃস্বরে তাহাঁর নিকট নিবেদন করিল, ঘরবাড়ী বিধ্বস্ত হচ্ছে, রাস্তা বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে। তাই আপনি আল্লাহর নিকট দুআ করুন যেন আমাদের হইতে তিনি বৃষ্টি বন্ধ করেন। তখন নাবী (সাঃআঃ) মৃদু হেসে বললেনঃ
اللَّهُمَّ حَوَالَيْنَا وَلاَ عَلَيْنَا
আল্লাহুম্মা হাওয়ালাইনা ওয়া লা আলাইনা, হে আল্লাহ! আমাদের আশে পাশে, আমাদের উপর নয়।
তখন মদীনার আকাশ মুক্ত হলো আর এর আশে পাশে বৃষ্টি হইতে লাগল। মদীনায় তখন এক ফোঁটা বৃষ্টিও হচ্ছিল না। আমি মদীনার দিকে তাকিয়ে দেখলাম, মদীনা যেন মুকুটের ন্যায় শোভা পাচ্ছিল।
১৫/১৫. অধ্যায়ঃ দাঁড়িয়ে ইস্তিস্কার দুআ করা।
১০২২. আবু ইসহাক (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
আবদুল্লাহ ইবনু ইয়াযীদ আনসারী (রাদি.) বের হলেন এবং, বারাআ ইবনু আযিব ও যায়দ ইবনু আরকাম (রাদি.) ও তাহাঁর সঙ্গে বের হলেন। তিনি মিম্বার ছাড়াই পায়ের উপর দাঁড়িয়ে তাঁদের সঙ্গে নিয়ে বৃষ্টির জন্য দুআ করিলেন। অতঃপর ইস্তিগফার করে আযান ও ইকামাত ব্যতীত সশব্দে কিরআত পড়ে দু রাকআত সালাত আদায় করেন। (রাবী) আবু ইসহাক (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, আবদুল্লাহ ইবনু ইয়াযীদ (আনসারী) (রাদি.) নাবী (সাঃআঃ)-কে দেখেছেন। (সুতরাং তিনি সাহাবী)।
১০২৩. আব্বাদ ইবনু তামীম (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তাহাঁর চাচা নাবী (সাঃআঃ)-এর একজন সাহাবী ছিলেন, তিনি তার নিকট বর্ণনা করিয়াছেন যে নাবী (সাঃআঃ) সাহাবীগণকে নিয়ে তাঁদের জন্য বৃষ্টির দুআর উদ্দেশ্যে বের হলেন। তিনি দাঁড়ালেন এবং দাঁড়িয়েই আল্লাহর নিকট দুআ করিলেন। অতঃপর ক্বিবলামুখী হয়ে নিজ চাদর উল্টিয়ে দিলেন। অতঃপর তাদের উপর বৃষ্টি বর্ষিত হল।
১৫/১৬. অধ্যায়ঃ বৃষ্টি প্রার্থনার সালাতে শব্দ সহকারে কিরআত পাঠ।
১০২৪. আব্বাদ ইবনু তামীম (রাদি.) তাহাঁর চাচা হইতে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃআঃ) বৃষ্টির দুআর জন্য বের হলেন, ক্বিবলামুখী হয়ে দুআ করিলেন এবং নিজের চাদরখানি উল্টে দিলেন। অতঃপর দুরাকআত সালাত আদায় করিলেন। তিনি উভয় রাকআতে সশব্দে কিরআত পাঠ করিলেন।
১৫/১৭. অধ্যায়ঃ নাবী (সাঃআঃ) কিভাবে মানুষের দিকে তাহাঁর পিঠ ফিরিয়েছেন।
১০২৫. আব্বাদ ইবনু তামীম (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) তাহাঁর চাচা হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) যেদিন বৃষ্টির দুআর উদ্দেশ্যে বের হয়েছিলেন, আমি তা দেখেছি। বর্ণনাকারী বলেন, তিনি লোকদের দিকে তাহাঁর পিঠ ফিরালেন এবং ক্বিবলামুখী হয়ে দুআ করিলেন। অতঃপর তিনি তাহাঁর চাদর উল্টে দিলেন। আমাদের নিয়ে দুরাকআত সালাত আদায় করিলেন। তিনি উভয় রাকআতে সশব্দে কিরআত পাঠ করেন।
১৫/১৮. অধ্যায়ঃ বৃষ্টি প্রার্থনার সালাত দুরাকআত।
১০২৬. আব্বাদ ইবনু তামীম (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) তাহাঁর চাচা হইতে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃআঃ) বৃষ্টির জন্য দুআ করিলেন। অতঃপর তিনি দুরাকআত সালাত আদায় করিলেন এবং চাদর উল্টিয়ে নিলেন।
১৫/১৯. অধ্যায়ঃ ঈদগাহে বৃষ্টির প্রার্থনা।
১০২৭. আব্বাদ ইবনু তামীম (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) তাহাঁর চাচা হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) ইসতিস্কার জন্য ঈদগাহের ময়দানে গমন করেন। তিনি কিবলামুখী হলেন, অতঃপর দুরাকআত সালাত আদায় করিলেন এবং তাহাঁর চাদর উল্টিয়ে নিলেন। সুফিয়ান (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, আবু বকর (রাদি.) হইতে মাসঊদ (রাদি.) আমাদের বলেছেন, তিনি (চাদর পাল্টানোর ব্যাপারে) বলেন, ডান পাশ বাঁ পাশে দিলেন।
১৫/২০. অধ্যায়ঃ বৃষ্টির জন্য দুআর মুহূর্তে ক্বিবলামুখী হওয়া।
১০২৮. আবদুল্লাহ ইবনু যায়দ আনসারী (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) সালাতের জন্য ঈদগাহের উদ্দেশে বের হলেন। তিনি যখন দুআ করিলেন অথবা দুআ করার ইচ্ছা করিলেন তখন কিবলামুখী হলেন এবং তাহাঁর চাদর উল্টিয়ে নিলেন। ইমাম বুখারী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, এ (হাদীসের বর্ণনাকারী) আবদুল্লাহ ইবনু যায়দ মাযিন গোত্রীয়। পূর্বের হাদীসের বর্ণনাকারী হলেন কুফী এবং তিনি ইবনু ইয়াযীদ।
১৫/২১. অধ্যায়ঃ বৃষ্টির পানি প্রার্থনায় ইমামের সাথে লোকদের হাত উত্তোলন করা।
১০২৯. আনাস ইবনু মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক বেদুঈন জুমুআর দিন রসূলূল্লাহ (সাঃআঃ)-এর নিকট উপস্থিত হয়ে বলিল, হে আল্লাহর রাসুল! (অনাবৃষ্টিতে) পশুগুলো মরে যাচ্ছে, পরিবার-পরিজন মারা যাচ্ছে, মানুষ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। তখন আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) দুআর জন্য দুহাত উঠালেন। লোকজনও দুআর জন্য আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-এর সঙ্গে হাত উঠিয়ে দুআ করিতে লাগলেন। বর্ণনাকারী বলেন, আমরা মসজিদ হইতে বের হবার পূর্বেই বৃষ্টি আরম্ভ হয়ে গেল, এমন কি পরবর্তী জুমুআ পর্যন্ত আমাদের উপর বৃষ্টি হইতে থাকল। তখন লোকটি আল্লাহর নাবী (সাঃআঃ)-এর নিকট এসে বলিল, হে আল্লাহর রাসুল! মুসাফির ক্লান্ত হয়ে যাচ্ছে, রাস্তাঘাট বন্ধ হয়ে গেছে। (بَشِقَ) – এর অর্থ ক্লান্ত হয়ে যাচ্ছে।
১০৩০. আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃআঃ) তাহাঁর উভয় হাত উঠিয়েছিলেন, এমন কি আমরা তাহাঁর বগলের শুভ্রতা দেখিতে পেয়েছি।
১৫/২২. অধ্যায়ঃ বৃষ্টির পানি প্রার্থনায় ইমামের হাত উত্তোলন করা।
১০৩১. আনাস ইবনু মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) ইসতিস্কা ছাড়া অন্য কোথাও দুআর মধ্যে হাত উঠাতেন না। তিনি হাত এতটুকু উপরে উঠাতেন যে, তাহাঁর বগলের শুভ্রতা দেখা যেত।
১৫/২৩. অধ্যায়ঃ বৃষ্টিপাতের সময় কী বলিতে হয়।
ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিত। কুরআনের আয়াত (كَصَيِّب) অর্থ বৃষ্টি (সুরা আল-বাকারাহ ১৯)। অন্যরা বলেছেন (كَصَيِّب) শব্দটি (صاب واصابَ يَصيبُ) এর মূল ধাতু হইতে উৎপন্ন।
১০৩২. আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) বৃষ্টি দেখলে বলিতেন,
صَيِّبًا نَافِعًا
সায়্যিবান নাফি‘আন, হে আল্লাহ! মুষলধারায় কল্যাণকর বৃষ্টি দাও।
ক্বাসিম ইবনু ইয়াহইয়া (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) উবাইদুল্লাহর সূত্রে তার বর্ণনায় আবদুল্লাহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি)-এর অনুসরণ করিয়াছেন এবং উকায়ল ও আওযায়ী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) নাফি (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে তা বর্ণনা করিয়াছেন।
১৫/২৪. অধ্যায়ঃ বৃষ্টিতে কেউ এমনভাবে ভিজে যাওয়া যে, দাড়ি বেয়ে পানি ঝরলো।
১০৩৩. আনাস ইবনু মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ)-এর যুগে একবার লোকেরা অনাবৃষ্টিতে পতিত হল। সে সময় আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) একবার মিম্বারে দাঁড়িয়ে জুমুআর খুতবা দিচ্ছিলেন। তখন এক বেদুঈন দাঁড়িয়ে বলিল, হে আল্লাহর রাসুল! (অনাবৃষ্টিতে) ধন-সম্পদ বিনষ্ট হয়ে যাচ্ছে। পরিবার-পরিজন ক্ষুধার্ত। আপনি আল্লাহর নিকট দুআ করুন, তিনি যেন আমাদের বৃষ্টি দান করেন। তখন আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) তাহাঁর দুহাত তুললেন। সে সময় আকাশে একখণ্ড মেঘও ছিল না। বর্ণনাকারী বলেন, হঠাৎ পাহাড়ের মত বহু মেঘ একত্রিত হল। আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) মিম্বার হইতে নামার আগেই বৃষ্টি শুরু হলো। এমনকি আমি দেখলাম, নাবী (সাঃআঃ)-এর দাড়ি বেয়ে বৃষ্টির পানি ঝরছে। বর্ণনাকারী আরো বলেন, সেদিন, তার পরের দিন, তার পরের দিন এবং পরবর্তী জুমুআ পর্যন্ত বৃষ্টি হল। অতঃপর সে বেদুঈন বা অন্য কেউ দাঁড়িয়ে বলিল, হে আল্লাহর রাসুল! ঘর-বাড়ি বিধ্বস্ত হয়ে গেল, সম্পদ ডুবে গেল, আপনি আল্লাহর নিকট আমাদের জন্য দুআ করুন। আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) তখন তাহাঁর দুহাত তুলে বললেনঃ
اللَّهُمَّ حَوَالَيْنَا وَلاَ عَلَيْنَا
আল্লাহুম্মা হাওয়ালাইনা ওয়া লা আলাইনা, হে আল্লাহ! আমাদের আশে পাশে, আমাদের উপর নয়।
অতঃপর তিনি হাত দিয়ে আকাশের যে দিকে ইশারা করিলেন, সে দিকের মেঘ কেটে গেল। এতে সমগ্র মদীনার আকাশ মেঘ মুক্ত চালের মত হয়ে গেল এবং কানাত উপত্যকায় এক মাস ধরে বৃষ্টি প্রবাহিত হইতে থাকে। বর্ণনাকারী বলেন, তখন যে এলাকা হইতে লোক আসত, কেবল এ প্রবল বর্ষণের কথাই বলাবলি করত।
১৫/২৫. অধ্যায়ঃ যখন বাতাস প্রবাহিত হয়।
১০৩৪. আনাস ইবনু মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যখন প্রবল গতিতে বায়ু প্রবাহিত হত তখন নাবী (সাঃআঃ)-এর চেহারায় তার প্রতিক্রিয়া দেখা দিত। (ভয়ের চিহ্ন দেখা দিত)।
১৫/২৬. অধ্যায়ঃ নাবী (সাঃআঃ)-এর উক্তি, “আমাকে পূর্ব দিক হইতে আগত হাওয়ার মাধ্যমে সাহায্য করা হয়েছে”।
১০৩৫. ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃআঃ) বলেন, আমাকে পূর্বের হাওয়া দিয়ে সাহায্য করা হয়েছে। আর আদ জাতিকে পশ্চিমা হাওয়া দিয়ে ধ্বংস করা হয়েছে।
১৫/২৭. অধ্যায়ঃ ভূমিকম্প ও কিয়ামতের নিদর্শন সম্পর্কে যা বর্ণিত হয়েছে।
১০৩৬. আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ ক্বিয়ামাত কায়িম হইবে না, যে পর্যন্ত না ইল্ম উঠিয়ে নেয়া হইবে, অধিক পরিমাণে ভূমিকম্প হইবে, সময় সংকুচিত হয়ে আসবে, ফিতনা প্রকাশ পাবে এবং হারজ বৃদ্ধি পাবে। হারজ খুন-খারাবী। তোমাদের ধন-সম্পদ এত বৃদ্ধি পাবে যে, উপচে পড়বে।
১০৩৭. ইবনু উমর (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃআঃ) বলেন, হে আল্লাহ! আমাদের শামে (সিরিয়া) ও ইয়ামনে বরকত দান করুন। লোকেরা বলিল, আমাদের নজদেও। নাবী (সাঃআঃ) বললেনঃ
হে আল্লাহ! আমাদের শামদেশে ও ইয়ামনে বরকত দান করুন। লোকেরা তখন বলিল, আমাদের নজদেও। রাবী বলেন, নাবী (সাঃআঃ) তখন বললেনঃ সেখানে তো রয়েছে ভূমিকম্প ও ফিতনা-ফাসাদ আর শয়তানের শিং সেখান হইতেই বের হইবে (তার উত্থান ঘটবে)।
১৫/২৮. অধ্যায়ঃ আল্লাহ তাআলার বাণীঃ “এবং তোমরা মিথ্যারোপকেই তোমাদের উপজীব্য করেছ”। (সুরা আল-ওয়াকিয়াহ ৫৬/৮২)
ইবনু আব্বাস (রাদি.) বলেন, রিয্ক দ্বারা এখানে কৃতজ্ঞতা বুঝানো হয়েছে।
১০৩৮. যায়দ ইবনু খালিদ জুহানী (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল (সাঃআঃ) রাতে বৃষ্টিপাতের পরে আমাদের নিয়ে হুদাইবিয়ায় ফজরের সালাত আদায় করেন। অতঃপর নাবী (সাঃআঃ) সালাম ফিরিয়ে লোকদের দিকে মুখ করে বললেনঃ তোমরা কি জান, তোমাদের রব কী বলেছেন? তাঁরা বলিলেন, আল্লাহ এবং তাহাঁর রাসুলই ভাল জানেন। তিনি তখন বলিলেন, (আল্লাহ বলেছেন) আমার কিছু সংখ্যক বান্দা বিশ্বাসী এবং অবিশ্বাসী হয়ে গেল। যে ব্যক্তি বলে, আল্লাহর ফযল ও রহমতে আমাদের উপর বৃষ্টি বর্ষিত হয়েছে, সে আমার প্রতি বিশ্বাসী এবং নক্ষত্রের প্রতি অবিশ্বাসী। আর যে ব্যক্তি বলে, অমুক অমুক নক্ষত্রে উদয়ের ফলে (বৃষ্টি হয়েছে) সে ব্যক্তি আমার প্রতি অবিশ্বাসী এবং নক্ষত্রের প্রতি বিশ্বাসী।
১৫/২৯. অধ্যায়ঃ কখন বৃষ্টি হইবে তা মহান আল্লাহ ছাড়া কেউ অবগত নয়।
আবু হুরাইরা (রাদি.) নাবী (সাঃআঃ) হইতে বর্ণনা করিয়াছেন, পাঁচটি এমন বিষয় রয়েছে, যে সম্পর্কে আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না।
১০৩৯. ইবনু উমর (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ গায়েবের চাবি হল পাঁচটি, যা আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না। (১) কেউ জানে না যে, আগামীকাল কী ঘটবে। (২) কেউ জানে না যে, আগামীকাল সে কী অর্জন করিবে। (৩) কেউ জানে না যে, মায়ের গর্ভে কী আছে। (৪) কেউ জানে না যে, সে কোথায় মারা যাবে। (৫) কেউ জানে না যে, কখন বৃষ্টি হইবে।
Leave a Reply