ইস্‌তিস্‌ক্বার সলাত ও পানি প্রার্থনায় দুআ

ইস্‌তিস্‌ক্বার সলাত ও পানি প্রার্থনায় দুআ

পানি প্রার্থনায় দুআ প্রসঙ্গে

পানি প্রার্থনায় দুআ প্রসঙ্গে >> সহীহ মুসলিম শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন >> নিম্নে মুসলিম শরীফ এর একটি অধ্যায়ের হাদিস পড়ুন

এ বিষয়ে আরও পড়ুন >> মুয়াত্তা মালিক >> সহীহ বুখারী >> আবু দাউদ >> ইবনে মাজাহ >> তিরমিজি >> নাসাঈ >> মিশকাত >> বুলুগুল মারাম হাদীস হতে

ইস্‌তিস্‌ক্বার সলাত ও পানি প্রার্থনায় দুআ

১. অধ্যায়ঃ পানি প্রার্থনার দুআয় হাত উত্তোলন প্রসঙ্গে
২. অধ্যায়ঃ পানি প্রার্থনায় দুআ প্রসঙ্গে
৩. অধ্যায়ঃ ঝঞ্ঝাবায়ু ও মেঘ দেখে আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা আর বৃষ্টি বর্ষনে খুশি হওয়া
৪. অধ্যায়ঃ সকাল সন্ধ্যায় প্রবাহিত বায়ু প্রসঙ্গে

১. অধ্যায়ঃ পানি প্রার্থনার দুআয় হাত উত্তোলন প্রসঙ্গে

১৯৫৫. আব্বাদ ইবনি তামীম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

আবদুল্লাহ ইবনি যায়দ আল মাযিনী [রাদি.]-কে বলিতে শুনেছি, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] নামাজের নির্ধারিত স্থানে চলে গেলেন এবং তথায় পৌঁছে ইস্‌তিস্‌ক্বার নামাজ আদায় করিলেন। যখন ক্বিবলামুখী হলেন, তিনি তাহাঁর চাদরটা উল্টিয়ে নিলেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৯৪০, ইসলামিক সেন্টার- ১৯৪৭]

১৯৫৬. আব্বাদ ইবনি তামীম [রাদি.] থেকে তাহাঁর চাচার সূত্রে হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] নামাজের নির্ধারিত স্থানে গিয়ে ইস্‌তিস্‌ক্বার দুআ করিলেন এবং ক্বিবলামুখী হয়ে তাহাঁর চাদরটা উল্টিয়ে দিলেন। অতঃপর দু রাকআত নামাজ আদায় করিলেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৯৪১, ইসলামিক সেন্টার- ১৯৪৮]

১৯৫৭. আবদুল্লাহ ইবনি যায়দ আল আনসারী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ইস্‌তিস্‌ক্বার উদ্দেশ্যে মাঠের দিকে বের হয়ে গেলেন। যখন তিনি [সাঃআঃ] দুআ করার ইচ্ছা করিলেন, ক্বিবলামুখী হলেন এবং নিজের চাদর উল্টিয়ে দিলেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৯৪২, ইসলামিক সেন্টার- ১৯৪৯]

১৯৫৮. আব্বাদ ইবনি তামীম আল মাযিনী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] থেকে তাহাঁর চাচার সূত্রে হইতে বর্ণীতঃ

যিনি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সাহাবীগণের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] একদিন ইস্‌তিস্‌ক্বার উদ্দেশে বের হলেন। তিনি লোকদের দিকে পিঠ রেখে আল্লাহর নিকট দুআ করিতে লাগলেন এবং ক্বিবলার দিকে মুখ করে তাহাঁর চাদরটা উল্টিয়ে দিলেন। অতঃপর তিনি দু রাকআত নামাজ আদায় করিলেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৯৪৩, ইসলামিক সেন্টার- ১৯৫০]

১৯৫৯. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে দুআ করার সময় উভয় হাত উপরে উঠাতে দেখেছি। এতে তাহাঁর বগলের শুভ্রতা পরিদৃষ্ট হচ্ছিল।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৯৪৪, ইসলামিক সেন্টার- ১৯৫১]

১৯৬০. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] ইস্‌তিস্‌ক্বার দুআ করিয়াছেন এবং দুআর সময় তিনি উভয় হাতের পিঠ দ্বারা আকাশের দিকে ইশারা করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৯৪৭, ইসলামিক সেন্টার- ১৯৫৪]

১৯৬১. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] তাহাঁর কোন দুআয় হাত উঠাতেন না; কেবল ইস্তিস্ক্বার হাত উঠাতেন। এমনকি এতে তাহাঁর বগলের শুভ্রতা পরিদৃষ্ট হতো। তবে আবদুল আলা তাহাঁর বর্ণনায় বলেছেন, বগলের শুভ্রতা বা উভয় বগলের শুভ্রতা।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৯৪৫, ইসলামিক সেন্টার- ১৯৫২]

১৯৬২. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] নবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণীতঃ

অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করে শুনিয়েছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৯৪৬, ইসলামিক সেন্টার- ১৯৫৩]

২. অধ্যায়ঃ পানি প্রার্থনায় দুআ প্রসঙ্গে

১৯৬৩. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

জনৈক ব্যক্তি জুমুআর দিন মাসজিদে নাবাবীতে দারুল ক্বাযার দিকে স্থাপিত দরজা দিয়ে প্রবেশ করিল। এ সময় রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] দাঁড়িয়ে খুত্‌বাহ্‌ দিচ্ছিলেন। সে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর দিকে মুখ করে দাঁড়িয়ে বলিল, হে আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]! [অনাবৃষ্টির ফলে] মাল সম্পদ বিনষ্ট হয়ে যাচ্ছে। জীবিকার পথ রুদ্ধ হয়ে যাচ্ছে। অতএব আল্লাহ্‌র কাছে দুআ করুন যেন তিনি আমাদেরকে বৃষ্টি দান করেন। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] দুহাত উঠিয়ে দুআ করিলেন,

اللَّهُمَّ أَغِثْنَا اللَّهُمَّ أَغِثْنَا اللَّهُمَّ أَغِثْنَا 

“আল্ল-হুম্মা আগিস্‌না-, আল্ল-হুম্মা আগিস্‌না, আল্ল-হুম্মা আগিস্‌না-, [অর্থাৎ- হে আল্লাহ! আমাদের ওপর বৃষ্টি বর্ষণ করুন, আমাদেরকে বৃষ্টি দান করুন।]। {৩ বার}

আনাস [রাদি.] বলেন, আল্লাহর শপথ! এ সময় আসমানে কোন মেঘ বা মেঘের চিহ্নও ছিল না। আর আমাদের ও সাল্‌ই পাহাড়ের মাঝে কোন ঘর-বাড়ী কিছুই ছিল না। [ক্ষণিকের মধ্যে] তাহাঁর পেছন থেকে ঢালের ন্যায় অখণ্ড মেঘ উদিত হলো। একটু পর তা মাঝ আকাশে এলে চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়ল এবং বৃষ্টি শুরু হলো। বর্ণনাকারী বলেন, এরপর আল্লাহর শপথ! আমরা সপ্তাহকাল যাবৎ আর সূর্যের মুখ দেখিনি। অতঃপর পরবর্তী জুমুআয় আবার এক ব্যক্তি ঐ দরজা দিয়ে প্রবেশ করিল। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] দাঁড়িয়ে খুত্‌বাহ্‌ দিচ্ছিলেন। সে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সামনে দাঁড়িয়ে বলিল, হে আল্লাহর রসূল! মাল সম্পদ সব বিনষ্ট হয়ে যাচ্ছে, পথ রুদ্ধ হয়ে যাচ্ছে। অতএব, আল্লাহর কাছে দুআ করুন যেন বৃষ্টিপাত বন্ধ করে দেন। বর্ণনাকারী বলেন, তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আবার হাত উঠিয়ে দুআ করিলেন,

اللَّهُمَّ حَوْلَنَا وَلاَ عَلَيْنَا اللَّهُمَّ عَلَى الآكَامِ وَالظِّرَابِ وَبُطُونِ الأَوْدِيَةِ وَمَنَابِتِ الشَّجَرِ

আল্ল-হুম্মা হাওলানা- ওয়ালা- আলায়না-, আল্ল-হুম্মা আলাল আ-কা-মি ওয়ায্‌ যিরা-বি ওয়া বুতূনিল আওদিয়াতি ওয়া মানা-বিতিশ্‌ শাজার” , অর্থাৎ- হে আল্লাহ! আমাদের অবস্থা পাল্টে দাও আমাদের ওপর এ অবস্থা চাপিয়ে দিও না। হে আল্লাহ! পাহাড়ী এলাকায়, মালভূমিতে মাঠের অভ্যন্তরে ও গাছ-পালা গজানো স্থলে তা ফিরিয়ে নিয়ে যাও।]।

এরপর বৃষ্টিপাত বন্ধ হয়ে গেল। আমরা বের হয়ে সূর্য তাপের মধ্যে চলাচল করিতে লাগলাম। শারীক বলেন, আমি আনাস ইবনি মালিককে জিজ্ঞেস করলাম, এ ব্যক্তি কি প্রথম ব্যক্তি? আনাস বলিলেন, আমার জানা নেই।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৯৪৮, ইসলামিক সেন্টার- ১৯৫৫]

১৯৬৪. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর যামানায় মানুষ দুর্ভিক্ষের শিকার হল। ঐ সময় একদিন জুমুআর দিনে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] মিম্বারে উপবিষ্ট হয়ে লোকদের সামনে জুমুআর খুত্‌বাহ্‌ দিচ্ছিলেন। এক বিদূঈন দাঁড়িয়ে বলিল, হে আল্লাহর রসূল! ধন-সম্পদ বরবাদ হয়ে গেল, সন্তান-সন্ততি ক্ষুধায় কাতর হয়ে পড়ছে। অবশিষ্ট হাদীস পূর্বোক্ত হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে। এ বর্ণনায় আরো আছে: রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন:

اللَّهُمَّ حَوَالَيْنَا وَلاَ عَلَيْنَا

আল্ল-হুম্মা হাওলানা- ওয়ালা- আলায়না, হে আল্লাহ! আমাদের চতুস্পার্শ্বে, আমাদের উপরে নয়।

বর্ণনাকারী বলেন, এরপর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] হাত দিয়ে যেদিকেই ইশারা করিয়াছেন, সঙ্গে সঙ্গে সেদিকেই ফর্সা হয়ে গেছে। এমনকি আমি মাদীনাকে আয়নার ন্যায় পরিষ্কার দেখিতে পেলাম। এদিকে ক্বানাত নামক প্রান্তরে একমাস যাবৎ পানির ধারা বয়ে গেল। যে কোন প্রান্ত থেকে যে কেউই এসেছে সে-ই অতি বৃষ্টির সংবাদ দিয়েছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৯৪৯, ইসলামিক সেন্টার- ১৯৫৬]

১৯৬৫. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] জুমুআর দিন খুত্‌বাহ্‌ দিচ্ছিলেন, এমন সময় কিছু লোক দাঁড়িয়ে চিৎকার করে বলিল, হে আল্লাহ্‌র নবী! বৃষ্টিপাত বন্ধ হয়ে গেছে। গাছপালা লোহিত বর্ণ ধারণ করেছে। পশুরা মৃত্যুমুখে পতিত হয়েছে। এরপর অবশিষ্ট হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন, পশুরা মৃত্যুমুখে পতিত হয়েছে মেঘ মাদীনাহ্‌ থেকে সরে গেছে। এরপর মাদীনার চতুষ্পার্শ্বে বৃষ্টিপাত হইতে লাগল, মাদীনায় একবিন্দু বৃষ্টিও বর্ষিত হচ্ছে না। আমি মদীনার দিকে তাকিয়ে দেখলাম তা যেন পট্টির ন্যয় চতুর্দিকে পরিবেষ্টিত বা মুকুটের ন্যায় শোভা পাচ্ছে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৯৫০, ইসলামিক সেন্টার- ১৯৫৭]

১৯৬৬. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে তবে এতে এ কথাও আছে যে, আল্লাহ তাআলা মেঘরাশিকে পুঞ্জীভূত করে দিয়েছেন আর তা আমাদেরকে প্লাবিত করে দিয়েছে। এমনকি দেখলাম বেশ শক্তিশালী ব্যক্তিও তার বাড়িতে ফিরে আসতে চিন্তায় পড়ে গেল।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৯৫১, ইসলামিক সেন্টার- ১৯৫৮]

১৯৬৭. হাফ্‌সাহ্‌ ইবনি উবায়দুল্লাহ ইবনি আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি আনাস ইবনি মালিক [রাদি.]-কে বলিতে শুনেছেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] জুমুআর দিন মিম্বারে উপবিষ্ট অবস্থায় তাহাঁর নিকট একজন বিদুঈন আসল ….. বাকী হাদীস পূর্ববৎ বর্ণনা করেন। তবে এ কথাটুকু বাড়িয়ে বলেছেন- আমি দেখলাম মেঘমালা ছড়িয়ে পড়েছে, যেন গোছানো চাদরকে প্রসারিত করা হয়েছে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৯৫২, ইসলামিক সেন্টার- ১৯৫৯]

১৯৬৮. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমরা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে ছিলাম এমন সময় বৃষ্টি নামল। তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর কাপড় খুলে দিলেন। ফলে এতে বৃষ্টির পানি পৌঁছল। আমরা জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রসূল! এরূপ কেন করিলেন? তিনি [সাঃআঃ] বলিলেন, কেননা এটা মহান আল্লাহর নিকট থেকে আসার সময় খুবই অল্প।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৯৫৩, ইসলামিক সেন্টার- ১৯৬০]

৩. অধ্যায়ঃ ঝঞ্ঝাবায়ু ও মেঘ দেখে আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা আর বৃষ্টি বর্ষনে খুশি হওয়া

১৯৬৯. আত্বা ইবনি আবু রবাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি নবী [সাঃআঃ]-এর স্ত্রী আয়িশা [রাদি.]-কে বলিতে শুনেছেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর অবস্থা এরূপ ছিল যে, যখন কোন সময় দমকা হাওয়া ও মেঘের ঘনঘটা দেখা দিত, তাহাঁর চেহারায় একটা আতঙ্কের ভাব ফুটে উঠত এবং তিনি আগে পিছনে উদ্বিগ্ন হয়ে চলাফেরা করিতেন। এরপর যখন বৃষ্টি হতো খুশি হয়ে যেতেন, আর তাহাঁর থেকে এ অস্থিরতা দূর হয়ে যেত। আয়িশা [রাদি.] বলেন, আমি এ বিষয়ে তাঁকে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, আমার আশঙ্কা হয় যে, আমার উম্মাতের ওপর কোন আযাব এসে পতিত হয় নাকি। তিনি বৃষ্টি দেখলে বলিতেন, এটা [আল্লাহর] রহমাত।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৯৫৪, ইসলামিক সেন্টার- ১৯৬১]

১৯৭০. আয়েশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

যখন বাতাস প্রবল আকার ধারণ করত, তখন নবী [সাঃআঃ] এভাবে দুআ করিতেন :

اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ خَيْرَهَا وَخَيْرَ مَا فِيهَا وَخَيْرَ مَا أُرْسِلَتْ بِهِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّهَا وَشَرِّ مَا فِيهَا وَشَرِّ مَا أُرْسِلَتْ بِهِ

“আল্ল-হুম্মা ইন্নী আস্‌আলুকা খয়রাহা- ওয়া খয়রা মা- ফীহা- ওয়া খয়রা মা- উর্‌সিলাত বিহী, ওয়া আঊযুবিকা মিন্‌ শার্‌রিহা- ওয়া শার্‌রি মা- ফীহা- ওয়া শার্‌রি মা- উর্‌সিলাত বিহী”, [অর্থাৎ- হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে মেঘের কল্যাণ কামনা করছি ও এর মধ্যে যে কল্যাণ নিহিত আছে এবং যে কল্যাণের সাথে প্রেরিত হয়েছে তাও এবং তোমার কাছে এর অকল্যাণ ও এর মধ্যে যে অকল্যাণ নিহিত আছে এবং যে অকল্যাণ নিয়ে এসেছে তা থেকে আশ্রয় চাই।]

আয়িশা [রাদি.] বলেন, যখন আসমানে মেঘ বিদ্যুৎ ছেয়ে যেত তাহাঁর চেহারা বিবর্ণ হয়ে যেত এবং তিনি ভিতরে বাইরে আগে পিছনে ইতস্ততঃ চলাফেরা শুরু করে দিতেন। এরপর যখন বৃষ্টি হতো তাহাঁর এ অবস্থা দূর হয়ে যেত। আয়িশা [রাদি.] বলেনঃ এ অবস্থা বুঝতে পেরে আমি তাঁকে এর কারণ জিজ্ঞেস করলে তিনি বলিতেন, হে আয়েশাহ ! আমার আশঙ্কা এরূপ হয় নাকি যেরূপ আদ সম্প্রদায় বলেছিল। যেমন কুরআনে উদ্ধৃত হয়েছে, “যখন তারা এটাকে তাদের প্রান্তর অভিমুখে মেঘের আকারে এগিয়ে আসতে দেখল, তারা বলিল, এ মেঘ আমাদের ওপর বৃষ্টি বর্ষাবে [পক্ষান্তরে তা ছিল আসমানী গজব]”- [সুরা আল আহ্‌ক্বা-ফ ৪৬:২৪]।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৯৫৫, ইসলামিক সেন্টার- ১৯৬২]

১৯৭১. আয়েশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

আমি কখনও নবী [সাঃআঃ] কে এরূপ পুরোপুরি হাসতে দেখিনি যাতে কণ্ঠনালী দেখা যায়। বরং তিনি [সাঃআঃ] মুচ্‌কী হাসতেন। আয়িশা [রাদি.] বলেন, যখন কালোমেঘ বা দমকা হাওয়া দেখিতেন, তাহাঁর চেহারায় অস্থির ভাব ফুটে উঠত। আয়েশাহ [রাদি.] বলিলেন, হে আল্লাহ্‌র রাসূল! আমি দেখি লোকেরা মেঘ দেখে বেশ খুশী হয়ে যায় এ আশায় যে এতে বৃষ্টি হইবে। আর আপনাকে দেখি, আপনি যখন মেঘ দেখেন, আপনার চেহারায় আশঙ্কার ছাপ পরিলক্ষিত হয়। উত্তরে তিনি বলেন, হে আয়েশাহ! আমি এ কারণে নিরাপদ ও নিশ্চিন্তবোধ করি না যে, হইতে পারে এর মধ্যে কোন আযাব থাকতে পারে। এক সম্প্রদায়কে দমকা হাওয়ার মাধ্যমে আযাব দেয়া হয়েছে। আরেক সম্প্রদায় আসমানী আযাব দেখে বলেছিল- এই যে মেঘ তা আমাদের ওপর বর্ষিত হইবে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৯৫৬, ইসলামিক সেন্টার- ১৯৬৩]

৪. অধ্যায়ঃ সকাল সন্ধ্যায় প্রবাহিত বায়ু প্রসঙ্গে

১৯৭২. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আমাকে পূবালী হাওয়ার সাহায্যে বিজয়ী করা হয়েছে অথচ আদ সম্প্রদায়কে পশ্চিমা বাতাসের মাধ্যমে ধ্বংস করা হয়েছে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৯৫৭, ইসলামিক সেন্টার- ১৯৬৪]

১৯৭৩. ইবনি আব্বাস [রাদি.] নবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণীতঃ

অনুরূপ বর্ণনা করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ১৯৫৮, ইসলামিক সেন্টার- ১৯৬৫]


Posted

in

by

Comments

Leave a Reply