শিকার ও জবেহ কৃত জন্তু এবং যেসব পশুর গোশত খাওয়া হালাল

শিকার ও জবেহ কৃত জন্তু এবং যেসব পশুর গোশত খাওয়া হালাল

শিকার ও জবেহ কৃত জন্তু এবং যেসব পশুর গোশত খাওয়া হালাল >> সহীহ মুসলিম শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন >> নিম্নে মুসলিম শরীফ এর একটি অধ্যায়ের হাদিস পড়ুন

১. অধ্যায়ঃ প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত কুকুর দ্বারা শিকার
২. অধ্যায়ঃ হারিয়ে যাওয়া শিকার পাওয়া গেলে
৩. অধ্যায়ঃ হিংস্র পশু ও নখরওয়ালা পাখি খাওয়া হারাম
৪. অধ্যায়ঃ সাগরের মৃত হালাল
৫. অধ্যায়ঃ গৃহপালিত গাধা খাওয়া হারাম
৬. অধ্যায়ঃ ঘোড়ার গোশ্‌ত আহার করা
৭. অধ্যায়ঃ গুই সাপের গোশ্‌ত হালাল
৮. অধ্যায়ঃ টিড্‌ডি খাওয়ার বৈধতা
৯. অধ্যায়ঃ খরগোশ খাওয়ার বৈধতা
১০. অধ্যায়ঃ যা দ্বারা শিকার করা ও শত্রুর বিরুদ্ধে সহায়তা লাভ করা যায় তার বৈধতা এবং পাথর নিক্ষেপ নিষিদ্ধ হওয়া
১১. অধ্যায়ঃ যাবাহ ও হত্যায় দয়াশীল হওয়া ও ছুরিধার করার নির্দেশ
১২. অধ্যায়ঃ জীব-জন্তু বেঁধে তীরের লক্ষ্যবস্তু বানানোর নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কে

১. অধ্যায়ঃ প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত কুকুর দ্বারা শিকার

৪৮৬৬. আদী ইবনি হাতিম [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম]! আমি শিকারের উদ্দেশে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুর ছেড়ে দেই এবং সেগুলো শিকার ধরে আমার জন্য রেখে দেয়, [নিজেরা খায় না] আমি কুকুরগুলোকে ছাড়ার সময় বিসমিল্লাহ বলে ছাড়ি। তিনি বললেনঃ যখন তুমি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুর আল্লাহর নাম নিয়ে ছেড়ে থাকো তাহলে তুমি তা খেতে পার। আমি বললাম, যদি এরা শিকারকে হত্যা করে? তিনি বললেনঃ যদিও হত্যা করে ফেলে তবে তার সাথে যদি অন্য কুকুর শারীক না হয়। আমি তাঁকে বললাম, আমি শিকারের উদ্দেশে মিরায [কাঠ বা তীক্ষ্ণ ছড়ি] নিক্ষেপ করে থাকি এবং শিকার পেয়েও থাকি? তিনি বললেনঃ তুমি মিরায নিক্ষেপ করার পর তাতে শিকারের সম্মুখভাগ প্রবিষ্ট হয়ে শিকার মারা গেলে তবে তুমি তা খেতে পারো। আর যদি নিক্ষিপ্ত ফলকের চ্যাপ্টা [বিপরীত] দিকের আঘাতে শিকার মারা যায়, তবে তুমি তা খেও না।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫ম খণ্ড-৪৮১৯, ইসলামিক সেন্টার- ৬ষ্ঠ খণ্ড -৪৮২০]

৪৮৬৭. আদী ইবনি হাতিম [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি রসূ্লুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] কে জিজ্ঞাসা করলাম, আমরা এমন এক সম্প্রদায় যারা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুর দ্বারা শিকার করে থাকি। তখন তিনি বললেনঃ তুমি তোমার প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুর আল্লাহর নাম নিয়ে ছাড়লে তাদের শিকার করা পশু খেতে পারো, যদিও তারা তা মেরে ফেলে। তবে কুকুর তার কিছু অংশ খেয়ে ফেললে তা খাবে না। কেননা আমার আশঙ্কা হচ্ছে,সে হয়তো এ শিকার নিজের জন্যই ধরেছে। আর যদি এ শিকারে অন্য কুকুর শারীক হয়ে থাকে তাহলে তুমি তা খাবে না।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮২০, ইসলামিক সেন্টার- ৪৮২১]

৪৮৬৮. আদী ইবনি হাতিম [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি রসূ্লুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম]- কে মিরায সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেনঃ এর ধারালো অংশ দ্বারা শিকার মারা গেলে তুমি তা খেতে পারবে, আর যদি এর পাশের অংশের আঘাতে শিকার মারা যায় তবে তা [কুরআনে বর্ণিত] ওয়াকীয বা পিটিয়ে নিহত করার অন্তর্ভুক্ত। কাজেই তুমি তা খাবে না। আমি রসূ্লুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম]- কে কুকুর সম্পর্কে প্রশ্ন করলে তিনি বলেনঃ তুমি আল্লাহর নাম নিয়ে তোমার কুকুর ছেড়ে থাকলে তুমি তা খেতে পারো। যদি কুকুর শিকারের কিছু অংশ খেয়ে ফেলে তবে তুমি তা খাবে না। কেননা সেটা সে তার নিজের জন্যই ধরেছে। আমি বললাম, যদি আমার কুকুরের সাথে অন্য কুকুর দেখি এবং কে শিকার ধরেছে তা ঠিক করিতে না পারি? তিনি বললেনঃ তাহলে তুমি তা খাবে না। কেননা তুমি শুধু তোমার কুকুর ছাড়ার সময় আল্লাহ্‌র নাম নিয়েছ, অন্যটির উপর নাওনি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮২১, ইসলামিক সেন্টার- ৪৮২২]

৪৮৬৯. আদী ইবনি হাতিম [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি রসূ্লুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] কে মিরায সম্পর্কে জিজ্ঞেস

করলাম। অতঃপর তিনি অনুরূপ বর্ণনা করেন।

[ ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮২২, ইসলামিক সেন্টার- ৪৮২৩]

৪৮৭০. আদী ইবনি হাতিম [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেনঃ আমি রসূ্লুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম]- কে মিরায সম্পর্কে প্রশ্ন করলাম…… [অবশিষ্ট অংশ] পূর্বের হাদীসের অনুরূপ।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮২৩, ইসলামিক সেন্টার- ৪৮২৪]

৪৮৭১. আদী ইবনি হাতিম [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম]-কে মিরায দ্বারা শিকার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করি, তখন তিনি বললেনঃ ধারালো অংশ দ্বারা নিহত হলে খেতে পারো। আর যদি তীরের পার্শ্ব ভাগ লেগে নিহত হয় তাহলে সেটা ওয়াকীয শ্রেণীভুক্ত। আমি তাঁকে কুকুরের শিকার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেনঃ সে তোমার জন্য যে শিকার ধরে রাখবে এবং তা থেকে সে না খায়, তাহলে তুমি তা খেতে পার। কারণ তার শিকার করাই ছিল যাবাহ গণ্য হইবে। তবে যদি তুমি তার পাশে অন্য কুকুর দেখ এবং তোমার আশঙ্কা হয় যে, শিকার ধরায় সেটাও শামিল ছিল এবং সে কুকুরই হয়তো শিকার হত্যা করেছে, তবে তুমি তা খেও না। কেননা তুমি তো শুধু তোমার কুকুর ছাড়ার সময় বিস্মিল্লা-হ বলেছ, অন্য কুকুরের উপর তা বলনি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮২৪, ইসলামিক সেন্টার- ৪৮২৫]

৪৮৭২. যাকারিয়্যা ইবনি আবু যায়িদাহ্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

এ সানাদে বর্ণনা করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮২৫, ইসলামিক সেন্টার- ৪৮২৬]

৪৮৭৩. শাবী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আদী ইবনি হাতিম [রাদি.] ছিলেন আমাদের প্রতিবেশী, ব্যবসায়ের অংশীদার এবং নাহ্রাইন-এ আমাদের সহকর্মী। আমি তাঁকে বলিতে শুনেছি, তিনি নবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম]-কে প্রশ্ন করেছিলেন যে, আমি আমার কুকুরকে [শিকারের উদ্দেশে] ছেড়ে থাকি এবং পরে আমার কুকুরের সাথে অন্য কুকুরও দেখিতে পাই, সেটির সাথে শিকারও দেখিতে পাই। আমি অবহিত নই কোন্ কুকুরটি শিকার ধরেছে। রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বললেনঃ তুমি তা খাবে না। কেননা তুমি কেবল তোমার কুকুর ছাড়ার সময়ই আল্লাহ্‌র নাম নিয়েছ; অন্যটির উপরে আল্লাহ্‌র নাম নাওনি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮২৬, ইসলামিক সেন্টার- ৪৮২৭]

৪৮৭৪. আদী ইবনি হাতিম [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

আদী ইবনি হাতিম [রাদি.] হইতে নবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] থেকে অনুরূপ হাদীস বর্ণিত।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮২৭, ইসলামিক সেন্টার- ৪৮২৮]

৪৮৭৫. আদী ইবনি হাতিম [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] আমাকে বলেছেনঃ তুমি তোমার কুকুর ছাড়ার সময় আল্লাহ্‌র নাম নেবে। তারপর যদি সে তোমার জন্য শিকার ধরে রাখে এবং তুমি তা জীবিত পাও, তবে তুমি তাকে যবহ করিবে। আর যদি মৃত পাও অথচ সে এর কোন অংশ খায়নি, তাহলে তুমি তা খেতে পার। আর যদি তোমার কুকুরের সাথে অন্য কুকুর দেখ আর শিকারও মৃত, তবে তা খাবে না। কেননা তুমি তো অবহিত নও, কোন্‌ কুকুরটি শিকার হত্যা করেছে। আর তুমি তীর ছোঁড়ার সময় আল্লাহ্‌র নাম নিয়েই ছুঁড়বে। অতঃপর শিকার একদিন পর্যন্ত নিরুদ্দেশ থাকার পর তা পেলে, তাতে যদি তোমার তীরের ক্ষত আঘাত ব্যতীত অন্য চিহ্ন না দেখ, তবে ইচ্ছে হলে তা খেতে পারো। তবে পানিতে ডুবন্ত অবস্থায় পেলে তা খেও না।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮২৮, ইসলামিক সেন্টার- ৪৮২৯]

৪৮৭৬. আদী ইবনি হাতিম [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম]-কে শিকার সম্পর্কে প্রশ্ন করলে জবাবে তিনি বললেনঃ যখন তুমি তোমার তীর নিক্ষেপ করিবে তখন

بِسْمِ ٱللَّٰهِ 

বিসমিল্লাহ বলবে। যদি শিকার মৃত পাও, তবে তা খেতে পার। কিন্তু যদি তা পানিতে পাও তবে খেও না। কারণ তুমি তো অবহিত নও যে, পানিই তাকে হত্যা করেছে, নাকি তোমার তীর।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮২৯, ইসলামিক সেন্টার- ৪৮৩০]

৪৮৭৭. আবু সালাবাহ্‌ খুশানী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম]-এর নিকট এসে বলি, হে আল্লাহ্‌র রসূল [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম]! আমরা আহ্‌লে কিতাবের এলাকায় থাকি, আমরা তাদের পাত্রে আহার করে থাকি এবং আমরা শিকারের এলাকায় থাকি। আমি আমার ধনুক ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুর দ্বারা শিকার করি, পাশাপাশি অপ্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুর দ্বারাও শিকার করে থাকি। অতএব আমার জন্য কোন্‌টি হালাল তা আমাকে বলে দিন। তিনি বললেনঃ তুমি যে বললে তোমরা কিতাবধারীদের এলাকায় বাস করো এবং তাদের পাত্রে আহার করো; যদি তাদের পাত্র ছাড়া অন্য পাত্র পাও তবে তাদের পাত্রে আহার করো না। আর যদি অন্য পাত্র না পাও, তবে তা ধুয়ে নেয়ার পর খাবে। তুমি যে বললে, তোমরা শিকারের এলাকায় বসবাস করো। এর বিধান হলো, তোমার ধনুক দ্বারা শিকার হত্যা করার সময় আল্লাহ্‌র নাম নিয়ে ধনুক ছুঁড়বে, তারপর তা খাবে। আর তোমার প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুর দ্বারা যা শিকার করিবে তাও প্রেরেণের সময় আল্লাহ্‌র নাম নিবে, অতঃপর তা খাবে। আর তোমার অপ্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুর দ্বারা শিকার করিবে তা যাবাহ করার সুযোগ পেলে তা খাবে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৩০, ইসলামিক সেন্টার- ৪৮৩১]

৪৮৭৮. হাইওয়াহ্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

এ সানাদে এ হাদীসটি ইবনি মুবারাক [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]– এর হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করিয়াছেন। ইবনি ওয়াহ্ব তার হাদীসে ধনুক দ্বারা শিকারের কথা উল্লেখ করেননি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৩২, ইসলামিক সেন্টার-]

২. অধ্যায়ঃ হারিয়ে যাওয়া শিকার পাওয়া গেলে

৪৮৭৯. আবু সালাবাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেনঃ তুমি তীর নিক্ষেপের পর শিকার যদি নিরুদ্দেশ হয়ে যায় এবং পরে তা পেয়ে যাও, তাহলে শিকার দুর্গন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তুমি তা খেতে পারো।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৩২, ইসলামিক সেন্টার- ৪৮৩৩]

৪৮৮০. আবু সালাবাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেনঃ যে কেউ তার শিকার তিনদিন পরে পেলে তা দুর্গন্ধ না হওয়া পর্যন্ত খেতে পারবে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৩৩, ইসলামিক সেন্টার- ৪৮৩৪]

৪৮৮১. আবু সালাবাহ্ খুশানী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেনঃ তাতে তিনি দুর্গন্ধ হওয়ার কথা উল্লেখ করেননি। আর তিনি কুকুর [এর শিকার] সম্পর্কে বলেছেনঃ তিন দিন পরেও তা খেতে পারবে- তবে পচে গেলে তা ফেলে দাও।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৩৪, ইসলামিক সেন্টার- ৪৮৩৫]

৩. অধ্যায়ঃ হিংস্র পশু ও নখরওয়ালা পাখি খাওয়া হারাম

৪৮৮২. আবুসালাবাহ্‌ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, নবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] হিংস্র পশু খেতে নিষেধ করিয়াছেন। ইসহাক্‌ এবং ইবনি আবু উমর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বর্ণিত হাদীসে আরো রয়েছে, যুহ্‌রী বলেছেন, আমরা এ হাদীসটি সিরিয়ায় আসার পূর্বে শুনিনি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৩৫, ইসলামিক সেন্টার- ৪৮৩৬]

৪৮৮৩. আবু সালাবাহ্‌ খুশানী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] সব ধরনের হিংস্র জন্তু খেতে বারণ করিয়াছেন।

ইবনি শিহাব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, আমি এ হাদীসটি হিজাযে আমাদের আলিমদের কাছে শুনিনি। শেষ পর্যন্ত আবু ইদ্‌রীস [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] তা আমার কাছে বর্ণনা করেন। আর তিনি ছিলেন সিরিয়ার ফিকাহ্‌বিদদের অন্তর্ভৃক্ত।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৩৬, ইসলামিক সেন্টার- ৪৮৩৭]

৪৮৮৪. আবু সালাবাহ্‌ খুশানী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] সব ধরনের হিংস্র পশু খেতে নিষেধ করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৩৭, ইসলামিক সেন্টার- ৪৮৩৮]

৪৮৮৫. আবু তাহির, মুহাম্মাদ ইবনি রাফি, ইয়াহ্ইয়া ইবনি ইয়াহ্ইয়া, হুলওয়ানী ও আব্দ ইবনি হুমায়দ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] যুহরী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

এ সানাদে ইউনুস ও আমর বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করিয়াছেন। তাঁরা সকলেই খাওয়ার কথা উল্লেখ করিয়াছেন, কিন্তু সালিহ্ ও ইউসুফ-এর বর্ণনায় খাওয়ার কথা উল্লেখ নেই। তাদের বর্ণনায় রয়েছে, তিনি হিংস্র পশু থেকে নিষেধ করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৩৭, ইসলামিক সেন্টার- ৪৮৩৯]

৪৮৮৬. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেছেনঃ সকল প্রকার হিংস্র জন্তুই খাওয়া হারাম।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৩৮, ইসলামিক সেন্টার- ৪৮৪০]

৪৮৮৭. আবু তাহির [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] মালিক ইবনি আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

এ সানাদে অনুরূপ বর্ণনা করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৩৮, ইসলামিক সেন্টার- ৪৮৪১]

৪৮৮৮. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] সব ধরনের হিংস্র জন্তু এবং সব ধরনের নখরধারী পাখি খেতে বারণ করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৩৯, ইসলামিক সেন্টার- ৪৮৪২]

৪৮৮৯. শুবাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

এ সানাদে অনুরূপ বর্ণনা করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৪০, ইসলামিক সেন্টার- নেই]

৪৮৯০. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] সকল প্রকার হিংস্র জন্তু এবং নখরধারী শিকারী পাখি [খেতে] নিষেধ করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৪১, ইসলামিক সেন্টার- নেই]

৪৮৯১. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] নিষেধ করিয়াছেন…। অবশিষ্ট অংশ শুবাহ হইতে হাকাম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর মাধ্যমে বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৪২, ইসলামিক সেন্টার- ৪৮৪৩]

৪. অধ্যায়ঃ সাগরের মৃত হালাল

৪৮৯২. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] আবু উবাইদাহ্‌কে আমাদের আমীর বানিয়ে আমাদেরকে একটি অভিযানে পাঠালেন কুরায়শদের একটি কাফিলাকে রোধ করার জন্য। তিনি আমাদের সাথে এক থলে খেজুর দিয়ে দিলেন। এছাড়া আমাদের অন্য কিছু দেয়ার মত পেলেন না। আবু উবাইদাহ্‌ [রাদি.] আমাদেরকে একটি করে খেজুর দিতেন। বর্ণনাকারী বলেন, আমি বললাম, এই একটি মাত্র খেজুর দিয়ে আপনারা কিভাবে কী করিতেন? আমি বললাম, আমরা তা চুষতাম- যেভাবে শিশুরা চুষে থাকে। তারপর পানি পান করতাম, আর এটাই আমাদের দিবারাত্রের জন্য যথেষ্ট হতো। এছাড়া এমরা আমাদের লাঠি দিয়ে গাছের পাতা পেড়ে পানিতে তা ভিজিয়ে নিয়ে তা খেতাম। বর্ণনাকারী বলেন, তারপর আমরা সাগর উপকূল দিয়ে চলতে লাগলাম। হঠাৎ সমুদ্রোপকূলে উঁচু ঢিবির মতো কী যেন একটি আমাদের সামনে ভেসে উঠলো। আমরা সেটির কাছে গিয়ে দেখলাম, তা একটি জন্তু, যাকে আম্বর বলে অভিহিত করা হয়। বর্ণনাকারী বলেন, আবু উবাইদাহ্‌ [রাদি.] বলিলেন, এতো মৃত জন্তু। তারপর বলিলেন, না, বরং আমরা রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম]-এর প্রেরিত দূত এবং আমরা আল্লাহর পথেই আছি। এখন তো তোমরা প্রাণান্তকর অবস্থায় রয়েছ , সুতরাং তোমরা তা খেতে পারো। বর্ণনাকারী বলেন, তারপর দীর্ঘ একমাস আমরা তিনশ লোক তা খেয়েই কাটালাম এবং আমরা মোটাতাজা হয়ে উঠলাম। রাবী বলেন, আমি দেখেছি, কিভাবে কলসীর পর কলসী ভরে তৈল [চর্বি] আমরা তার চক্ষুর কোটর থেকে বের করি এবং তার দেহ থেকে এক একটি ষাঁড় পরিমাণ গোশ্‌তের টুকরা কেটে নেই। তারপর আবু উবাইদাহ্‌ [রাদি.] আমাদের মধ্যকার তের জনকে ডেকে নিলেন এবং ঐ জন্তুটির চোখের কোটরে বসিলে দিলেন। তিনি জন্তুটির পাঁজরের একটি অস্থি তুলে দাঁড় করিয়ে আমাদের সর্বাধিক বড় উটটির উপর হাওদা চড়ালেন আর সে উটটি দিব্যি তার নিচ দিয়ে অতিক্রম করে গেল। তারপর অবশিষ্ট গোশত আমরা সিদ্ধ করে আমাদের পাথেয় রূপে নিয়ে আসলাম। যখন আমরা মাদীনায় ফিরে এলাম তখন রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম]-এর কাছে উপস্থিত হয়ে ঘটনাটি তাঁকে জানালাম। তখন তিনি বরলেন, এটা হচ্ছে রিয্‌ক যা আল্লাহ তোমাদের জন্যই বের করেছিলেন। তোমাদের কাছে তার অবিশিষ্ট কিছু গোশ্‌ত আছে কি আমাকে তা থেকে দিতে পারবে? বর্ণনাকারী বলেন, আমরা তখন রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম]-এর কাছে তার কিছু অংশ পাঠালাম এবং তিনি তা খেলেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৪৩, ইসলামিক সেন্টার- ৪৮৪৪]

৪৮৯৩. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] আমাদেরকে একটি অভিযানে পাঠালেন। আমরা তিনশ আরোহী ছিলাম এবং আবু উবাইদাহ্‌ ইবনি জাররাহ্‌ [রাদি.] ছিলেন আমাদের দলনেতা। আমরা কুরায়শের একটি কাফেলার জন্য ওৎ পেতে ছিলাম। অর্ধমাস পর্যন্ত আমরা সমুদ্রোপকূলে অবস্থান করলাম। তখন আমরা খুবই খাদ্যাভাবে পড়লাম এবং আমরা [বাধ্য হয়ে] গাছের পাতা খেলাম। তাই এ বাহিনীর নাম দেয়া হলো জাইশুল খাবাত বা লতা-পাতার বাহিনী। এ সময় সমুদ্রে আমাদের জন্য একটি জন্তু [বিরাট মাছ] নিক্ষেপ করলো- যাকে আম্বর বলা হয়। আমরা অর্ধমাস পর্যন্ত তা খেলাম এবং তার তেল আমাদের গায়ে মালিশ করলাম, তাতে আমাদের দেহ মোটাতাজা হয়ে উঠলো। বর্ণনাকারী বলেন, আবু উবাইদাহ্‌ [রাদি.] জন্তুটির পাঁজরের একটি হাড় নিয়ে খাড়া করিলেন, তারপর বাহিনীর সবচেয়ে লম্বা লোকটি এবং উচ্চতর উটটির উপরে তুলে ধরলেন। তারপর ঐ ব্যক্তিটিকে ঐ উটের উপর চড়িয়ে দিলেন। আর সে অনায়াসে এর নিচ দিয়ে অতিক্রম করে গেল। ঐ জন্তুটির চোখের কোটরে অনেকগুলো লোক একত্রে বসলেন। রাবী বলেন, আর আমরা তার চোখ থেকে এত এত কলস ভর্তি চর্বি বের করি। বর্ণনাকারী আরও বলেন, তখন আমাদের নিকট এক বস্তা খেজুর ছিল। আবু উবাইদাহ্‌ [রাদি.] প্রথমে আমাদের প্রত্যেককে এক মুষ্ঠি করে খেজুর দিলেন। তারপর শেষদিকে তিনি আমাদের জনপ্রতি একটি করে খেজুর দিতেন। যখন তাও শেষ হয়ে গেল তখন আমরা অভাব অনুভব করলাম।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৪৪, ইসলামিক সেন্টার- ৪৮৪৫]

৪৮৯৪. আমর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

আমর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-কে জাইশুল খাবাত সম্পর্কে বলিতে শুনেছেনঃ এক ব্যক্তি প্রথমে তিনটি উট যবাহ্ করিল, তারপর আরও তিনটি, অতঃপর আরও তিনটি। তারপর আবু উবাইদাহ্ [রাদি.] তাঁকে এরূপ করিতে নিষেধ করেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৪৫, ইসলামিক সেন্টার- ৪৮৪৬]

৪৮৯৫. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, নবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] একদা আমাদেরকে একটি অভিযানে পাঠালেন। বাহিনীতে আমরা ছিলাম তিনশ জন। আমরা আমাদের রসদপত্র আমাদের কাঁধে বহন করেছিলাম।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৪৬, ইসলামিক সেন্টার- ৪৮৪৭]

৪৮৯৬. জাবির ইবন আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] আবু উবাইদাহ্‌ ইবনি জাররাহ্‌ [রাদি.]-কে তাঁদের আমীর নিযুক্ত করে তিনশ লোকের একটি বাহিনী পাঠালেন। তাঁদের পাথেয় প্রায় শেষ হয়ে গেলে আবু উবাইদাহ্‌ [রাদি.] সকলের পাথেয় একই পাত্র জমা করে আমাদের প্রত্যেকের দৈনন্দিন খাদ্য সববরাহ করিতেন। তখন আমাদের প্রত্যেকের ভাগে দৈনিক একটি করে খেজুর পড়তো।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৪৭, ইসলামিক সেন্টার- ৪৮৪৮]

৪৮৯৭. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] একটি বাহিনীকে সমুদ্রোপকূলে প্রেরণ করেন। আমি সে দলেই ছিলাম। হাদীসের অবশিষ্ট অংশ আম্‌র ইবনি দীনার ও আবু যুবায়র [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত। তবে ওয়াহ্‌ব ইবনি কায়সান [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] এর হাদীসে রয়েছে যে, সেনাবাহিনী আঠার দিন পর্যন্ত মাছটি খেয়েছিল।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৪৮, ইসলামিক সেন্টার- ৪৮৪৯]

৪৯৯৮. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] একটি বাহিনীকে জুহাইনাহ্‌ গোত্রের এলাকায় পাঠালেন এবং এক লোককে তার সেনাপতি নিযুক্ত করিলেন। অবশিষ্ট অংশ পূর্ববর্তী হাদীসের অনুরূপ।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৪৯, ইসলামিক সেন্টার- ৪৮৫০]

৫. অধ্যায়ঃ গৃহপালিত গাধা খাওয়া হারাম

৪৮৯৯. আলী ইবনি আবু তালিব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

খাইবার যুদ্ধের দিন রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] মহিলাদের সাথে মুতআহ্‌ বিবাহ করিতে এবং গৃহপালিত গাধার গোশ্‌ত খেতে নিষেধ করিয়াছেন। {দ্রষ্টব্য হাদীস ৩৪৩১}

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৫০, ইসলামিক সেন্টার- ৪৮৫১]

৪৯০০. আবু বাকর ইবনি আবু শাইবাহ্, ইবনি নুমায়র, যুহায়র ইবনি হারব, ইবনি নুমায়র [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] ভিন্ন সানাদ হইতে বর্ণীতঃ

অনুরূপ বর্ণনা করিয়াছেন। আবু তাহির, হারমালাহ্, ইসহাক্ ও আব্দ ইবনি হুমায়দ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]… যুহরী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে এ সানাদে বর্ণনা করিয়াছেন। তবে ইউনুস-এর বর্ণনায় রয়েছে, গৃহপালিত গাধার গোশ্ত খেতে নিষেধ করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৫১, ইসলামিক সেন্টার- ৪৮৫২]

৪৯০১. আবু সালাবাহ্‌ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] গৃহপালিত গাধার গোশ্‌ত [খাওয়া] হারাম করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৫২, ইসলামিক সেন্টার- ৪৮৫৩]

৪৯০২. ইবনি উমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] গৃহপালিত গাধার গোশ্‌ত খেতে বারণ করিয়াছেন। {দ্রষ্টব্য হাদীস ১২৪৮}

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৫৩, ইসলামিক সেন্টার- ৪৮৫৪]

৪৯০৩. উমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] খাইবার যুদ্ধের দিন গৃহপালিত গাধা খেতে নিষেধ করেন অথচ সেদিন লোকদের খাদ্যাভাব ছিল।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৫৪, ইসলামিক সেন্টার- ৪৮৫৫]

৪৯০৪. আলী ইবনি মুসহির শাইবানী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি আবদুল্লাহ ইবনি আবু আওফা [রাদি.]-কে গৃহপালিত গাধার গোশ্‌ত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলিলেন, খাইবারের দিন আমাদের ভীষণ ক্ষুধা পেয়েছিল। এখন আমরা রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম]-এর সঙ্গেই ছিলাম। শহরের বাইরে আমরা কিছু গৃহপালিত গাধা পেলাম। সুতরাং আমরা সেগুলো যাবাহ করলাম। আমাদের ডেগ্‌চীসমূহ যখন টগবগ করছিল তখন রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম]-এর ঘোষক ঘোষণা করিল, ডেগ্‌চীগুলো উল্টিয়ে ফেলে দাও এবগ গাধার গোশ্‌তের সামান্য অংশও খেয়ো না। আমি বললাম, কোন্‌ ধরনের গাধার গোশ্‌ত হারাম? রাবী বলেন, আমরা নিজেরা এ বিষয়ে আলোচনা করলাম এবং বললাম, একেবারেই হারাম অথবা গনীমাতের এক পঞ্চমাংশ বাদ না দিয়ে রান্না করার কারণেই তা হারাম করা হয়েছে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৫৫, ইসলামিক সেন্টার- ৪৮৫৬]

৪৯০৫. সুলাইমান শাইবানী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

আমি আবদুল্লাহ ইবনি আবু আওফা [রাদি.]-কে বলিতে শুনেছি, খাইবারের রাতগুলোতে আমরা ভীষণ ক্ষুধার্ত হই। অতঃপর খাইবারের দিন আমরা গৃহপালিত গাধা পেয়ে তাতে ঝাঁপিয়ে পড়লাম এবং সেগুলো যাবাহ করলাম। যখন এর গোশ্‌ত ডেগচীতে টগবগ করছিল তখন রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম]-এর ঘোষক ঘোষণা করিল যে, ডেগ্‌চীগুলো উল্টিয়ে ফেলে দাও এবং গাধাগুলোর গোশ্‌ত একটুও খেয়ো না। রাবী বলেন, তখান কিছু লোক বললো, যেহেতু গনীমাতের এক পঞ্চমাংশ বের করা হয়নি তাই রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] তা হারাম করিয়াছেন। অন্যরা বলিল, না, তা চিরকালের জন্যই নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৫৬, ইসলামিক সেন্টার- ৪৮৫৭]

৪৯০৬. আদী ইবনি সাবিত [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

আমি বারা এবং আবদুল্লাহ ইবনি আবু আওফা [রাদি.]-কে বলিতে শুনেছি, আমরা কিছু গৃহপালিত গাধা পেলাম। যখন আমরা তা রান্না করছি তখন রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম]-এর ঘোষক ঘোষণা করলো, তোমাদের ডেগচীগুলো উল্টিয়ে ফেলে দাও।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৫৭, ইসলামিক সেন্টার- ৪৮৫৮]

৪৯০৭. বারা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

খাইবার যুদ্ধের দিন আমরা কিছু গৃহপালিত গাধা পেলাম। এমন সময় রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম]-এর ঘোষক ঘোষণা করলো, ডেগ্চীগুলো উল্টে ফেলে দাও।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৫৮, ইসলামিক সেন্টার- নেই]

৪৯০৮. সাবিত ইবনি উবায়দ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি বারা [রাদি.]-কে বলিতে শুনেছি, আমাদেরকে গৃহপালিত গাধার গোশ্‌ত খেতে নিষেধ করা হয়েছে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৫৯, ইসলামিক সেন্টার- ৪৮৫৯]

৪৯০৯. বারা ইবনি আযিব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] আমাদেরকে গৃহপালিত গাধার গোশ্‌ত কাঁচা বা রান্না করা যাই হোক তা ফেলে দিতে নির্দেশ দিয়েছেন। এরপর তিনি কখনো তা খেতে নির্দেশ দেননি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৬০, ইসলামিক সেন্টার- ৪৮৬০]

৪৯১০. আসিম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

এ সানাদে উক্ত হাদীসে অনুরূপ বর্ণিত।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৬০, ইসলামিক সেন্টার- ৪৮৬১]

৪৯১১. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি অবহিত নই, রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম]-এর নিষেধ করার কারণ কি এটা ছিল কিনা যে, এগুলো লোকের সওয়ারী হিসেবে ব্যবহৃত হতো। তাই সওয়ারী নিঃশেষ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় তিনি এরূপ অপছন্দ করিলেন। অথবা খাইবার যুদ্ধের দিন গৃহপালিত গাধার গোশ্‌ত তিনি চিরদিনের জন্য হারাম করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৬১, ইসলামিক সেন্টার- ৪৮৬২]

৪৯১২. সালামাহ্‌ ইবনি আকওয়া [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমরা রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম]-এর সঙ্গে খাইবার অভিমুখে রওনা হলাম। আল্লাহ তাদেরকে বিজয়ী করিলেন। বিজয় দিবসের সন্ধ্যা বেলায় অনেক [চুলায়] আগুন জ্বালানো হয়। ফলে রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] প্রশ্ন করিলেন, এসব কিসের আগুন? কি রান্না হচ্ছে? কোন জিনেসের উপর তোমরা আগুন জ্বালিয়েছ? লোকেরা বললো, গোশ্‌ত রান্না করা হচ্ছে। তিনি পুনরায় জিজ্ঞেস করিলেন, কিসের গোশ্‌ত? জবাবে লোকেরা বললো, গৃহপালিত গাধার গোশ্‌ত। রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বললেনঃ এগুলো ফেলে দাও এবং হাঁড়ি-পাতিলগুলো ভেঙ্গে ফেল। তখন এক ব্যক্তি বলিল, আমরা এগুলো ফেলে দিয়ে হাঁড়ি-পাতিলগুলো ধুয়ে নিব কি? তিনি বলিলেন, এটাও করিতে পারো। {দ্রষ্টব্য হাদীস ৪৬৬৮}

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৬২, ইসলামিক সেন্টার- ৪৮৬৩]

৪৯১৩. ইয়াযীদ ইবনি আবু উবায়দ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

এ সানাদে [অনুরূপ] হাদীস বর্ণিত।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৬৩, ইসলামিক সেন্টার- ৪৮৬৪]

৪৯১৪. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] যখন খাইবার জয় করেন তখন আমরা শহরের বাইরে কিছু গাধা পেলাম। আমরা কিছু গাধা [যাবাহ করে] রান্না করছিলাম। এমন সময় রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম]-এর ঘোষক ঘোষণা করলোঃ জেনে রাখো, আল্লাহ ও তাহাঁর রসূল তোমাদেরকে গাধার গোশ্‌ত খেতে নিষেধ করিয়াছেন। কেননা তা শাইতানের ঘৃণ্য কাজ। রাবী বলেন, তারপর ডেগ্‌চীগুলো গোশ্‌তসহ উল্টিয়ে ফেলা হলো।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৬৪, ইসলামিক সেন্টার- ৪৮৬৫]

৪৯১৫. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, খাইবার বিজয়ের দিন এক আগন্তুক এসে বললোঃ হে আল্লাহর রসূল! গাধাগুলো যাবাহ করে খাওয়া হচ্ছে। অতঃপর আরেক ব্যক্তি এসে বললো, হে আল্লাহর রসূল! গাধাগুলো শেষ হয়ে যাচ্ছে। তখন রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] আবু তালহাহ্‌ [রাদি.]-কে নির্দেশ দিলেন তদনুযায়ী তিনি ঘোষণা করলেনঃ আল্লাহ এবং তাহাঁর রসূল উভয়েই তোমাদেরকে গাধার গোশ্‌ত খেতে নিষেধ করিয়াছেন। কারণ তা ঘৃণ্যবস্তু বা অপবিত্র।

বর্ণনাকারী বলেন, এরপর পাতিলগুলো গোশ্‌তসহ উল্টে ফেলে দেয়া হল।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৬৫, ইসলামিক সেন্টার- ৪৮৬৬]

৬. অধ্যায়ঃ ঘোড়ার গোশ্ত আহার করা

৪৯১৬. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] খাইবার দিন গৃহপালিত গাধার গোশ্ত খেতে নিষেধ করেন এবং ঘোড়ার গোশ্ত খাওয়ার অনুমতি দেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৬৬, ইসলামিক সেন্টার- ৪৮৬৭]

৪৯১৭. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

খাইবারে আমরা ঘোড়া এবং বন্য গাধার গোশ্ত খেয়েছি। পক্ষান্তরে নবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] আমাদেরকে গৃহপালিত গাধার গোশ্ত খেতে নিষেধ করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৬৭, ইসলামিক সেন্টার- ৪৮৬৮]

৪৯১৮. আবু তাহির, ইয়াকূব দাওরাকী ও আহমাদ ইবনি উসমান নাওফালী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] ইবনি জুরায়জ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

এ সানাদে অনুরূপ হাদীস বর্ণিত।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৬৭, ইসলামিক সেন্টার- ৪৮৬৮/ক]

৪৯১৯. আসমা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম]-এর যুগে আমরা ঘোড়া যাবাহ করে খেয়েছি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৬৮, ইসলামিক সেন্টার- ৪৮৬৯]

৪৯২০. হিশাম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে এ সানাদ হইতে বর্ণীতঃ

[অনুরূপ] হাদীস বর্ণিত।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৬৯, ইসলামিক সেন্টার- ৪৮৭০]

৭. অধ্যায়ঃ গুই সাপের গোশ্ত হালাল

৪৯২১. ইবনি উমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম]-কে গুইসাপ সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেনঃ আমি তা খাই না, এবং তা হারামও বলি না।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৭০, ইসলামিক সেন্টার- ৪৮৭১]

৪৯২২

ইবনি উমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

একদা এক লোক রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম]-কে গুইসাপ খাওয়া সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেনঃ আমি তা খাই না এবং তা [খাওয়া] হারামও বলি না।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৭১, ইসলামিক সেন্টার- ৪৮৭২]

৪৯২৩. ইবনি উমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

একদা এক ব্যক্তি রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম]-কে মিম্বারে বসা অবস্থায় গুইসাপ খাওয়া সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, আমি তা খাই না এবং তা [খাওয়াকে] হারামও বলি না।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৭২, ইসলামিক সেন্টার- ৪৮৭৩]

৪৯২৪. উবাইদুল্লাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

এ সানাদে অনুরূপ হাদীস বর্ণিত।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৭৩, ইসলামিক সেন্টার- ৪৮৭৪]

৪৯২৫. নাফি [রাদি.] সূত্র হইতে বর্ণীতঃ

নাফি [রাদি.] সূত্রে ও ইবনি উমর [রাদি.] কর্তৃক নবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] থেকে গুইসাপ সম্পর্কে লায়স কর্তৃক নাফির মাধ্যমে বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত। তবে আইয়ূব বর্ণিত হাদীসে আরো রয়েছে, রসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম]-এর কাছে গুইসাপের গোশ্ত নিয়ে আসা হলো। তিনি তা খাননি এবং হারামও বলেননি। আর উসামাহ্ [রাদি.]-এর এক হাদীসে রয়েছে, এক লোক মাসজিদে দাঁড়ালো, তখন রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] মিম্বারে বসা ছিলেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৭৪, ইসলামিক সেন্টার- ৪৮৭৫]

৪৯২৬. বনি উমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

একদা নবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম]-এর সঙ্গে তাহাঁর কতিপয় সাহাবী ছিলেন। যাদের মধ্যে সাদ [রাদি.]-ও ছিলেন। তাঁদের সম্মুখে গুইসাপের গোশ্ত আনা হলে নবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম]-এর এক স্ত্রী উচ্চৈঃস্বরে বলিলেন, এটা কিন্তু গুইসাপের গোশ্ত! তখন রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বললেনঃ তোমরা খেয়ে নাও, কারণ এটা হালাল, তবে এটা আমার খাদ্য নয়।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৭৫, ইসলামিক সেন্টার- ৪৮৭৬]

৪৯২৭. তাওবাহ্‌ আম্‌বরী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, শাবী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] আমাকে বলেছেনঃ আপনি কি নবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] হইতে বর্ণিত হাসান [রাদি.]-এর হাদীসটি শুনেছেন? আমি তো প্রায় দুবছর কিংবা দেড় বছর ইবনি উমর [রাদি.]-এর সাথে ছিলাম, কিন্তু তাঁকে এ হাদীসটি ছাড়া নবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] থেকে অন্য কিছু বর্ণনা করিতে শুনিনি। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম]-এর কতিপয় সাহাবীর মধ্যে সাদ [রাদি.]-ও ছিলেন, অতঃপর [বাকী অংশ] মুআয [রাদি.] বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৭৬, ইসলামিক সেন্টার- ৪৮৭৭]

৪৯২৮. আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি এবং খালিদ ইবনি ওয়ালীদ [রাদি.] রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম]-এর সাথে মাইমূনাহ্‌ [রাদি.]-এর নিকট গেলাম। তখন ভুনা গুইসাপ পরিবেশন করা হলো। রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] তা নেয়ার জন্য হাত বাড়ালেন। তখন মাইমূনাহ্‌ [রাদি.]-এর বাড়িতে উপস্থিত জনৈকা মহিলা বলিলেন, রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] যা খেতে চাইছেন সে সম্বন্ধে তোমরা তাঁকে জানাও। তখন রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] [খাবার থেকে] তাহাঁর হাত তুলে নিলেন। আমি বলিলম, হে আল্লাহর রসূল [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম]! এটা কি হারাম? তিনি বলিলেন,না। যেহেতু এটা আমাদের এলাকার প্রাণী নয়, তাই আমি তা অপছন্দ করি।

খালিদ [রাদি.] বলেন, এরপর আমি তা টেনে নিয়ে খেলাম। রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এ দৃশ্য দেখছিলেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৭৭, ইসলামিক সেন্টার- ৪৮৭৮]

৪৯২৯. খালিদ ইবনি ওয়ালীদ [রাদি.]- যাঁকে সাইফুল্লাহ বলা হয় হইতে বর্ণীতঃ

তিনি রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম]-এর সাথে নবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম]-এর স্ত্রী মাইমূনাহ্‌ [রাদি.]-এর ঘরে ঢুকলেন। তিনি ছিলেন তাহাঁর ও ইবনি আব্বাস [রাদি.]-এর খালা। এ সময় রসূল [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] তাহাঁর নিকট ভূনা গুইসাপ দেখিতে পান, যা তাহাঁর [মাইমূনাহ্‌র] বোন হুফাইদাহ্‌ বিনতু হারিস নাজ্‌দ থেকে এনেছিল। তিনি গুইসাপটি রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম]-এর কাছে পরিবেশন করিলেন। তাহাঁর অভ্যাস ছিল কোন খাদ্যের বিবরণ ও তার নাম উল্লেখ না করা পর্যন্ত তিনি সে দিকে কম-ই হাত বাড়াতেন। রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] গুইসাপটির দিকে হাত বাড়ালে উপস্থিত জনৈকা মহিলা বলিলেন, তোমরা রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম]-এর সামনে যা পেশ করছো তাঁকে জানিয়ে দাও। তারা বলিলেন, হে আল্লাহর রসূল [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম]! এটা কি গুইসাপ। তখন রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] তাহাঁর হাত তুলে নিলেন। খালিদ ইবনি ওয়ালীদ [রাদি.] বলিলেন, হে আল্লাহ রসূল [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম]! এটা কি হারাম? তিনি বলিলেন, না। তবে যেহেতু এটা আমার এলাকাতে নেই তাই আমি এটা পছন্দ করি না।

খালিদ [রাদি.] বলেন, অতঃপর আমি ওটা টেনে নিয়ে খাচ্ছিলাম। আর রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] তা দেখছিলেন। তবে তিনি আমাকে নিষেধ করেননি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৭৮, ইসলামিক সেন্টার- ৪৮৭৯]

৪৯৩০. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

খালিদ ইবনি ওয়ালীদ [রাদি.] তাকে বলেছেন যে, তিনি রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম]-এর সঙ্গে তাহাঁর খালা মাইমূনাহ্ বিন্তু হারিস [রাদি.]- এর ঘরে যান। তখন রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর সামনে গুইসাপের গোশ্ত পরিবেশন করা হয়, যা উম্মু হুফায়দ বিনতু হারিস নাজ্দ থেকে নিয়ে এনেছিলেন। তিনি ছিলেন বানূ জাফার গোত্রের এক ব্যক্তির সহধর্মিণী। রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] কোন বস্তুর বিবরণ না জানা পর্যন্ত তা খেতের না। বাকী অংশ বর্ণনাকারী ইউনুস [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর হাদীসের অনুরূপ। তবে হাদীসের শেষাংশে তিনি অতিরিক্ত বর্ণনা করেন যে, ইবনি আসাম মাইমূনাহ্ [রাদি.] সূত্রে তাঁকে বর্ণনা করিয়াছেন, তিনি [রসূলুল্লাহ] তখন তাহাঁর ঘরেই ছিলেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৭৯, ইসলামিক সেন্টার- ৪৮৮০]

৪৯৩১. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমরা মাইমূনাহ্‌ [রাদি.]-এর ঘরে ছিলাম। তখন নবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম]-এর সামনে দুটি ভুনা গুইসাপ পেশ করা হলো। বাকী অংশ উক্ত হাদীসসমূহের অনুরূপ। তবে বর্ণনাকারী [মামার] “মাইমূনাহ্‌ [রাদি.] থেকে ইয়াযীদ ইবনি আসাম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর সূত্র” কথাটি উল্লেখ করেননি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৮০, ইসলামিক সেন্টার- ৪৮৮১]

৪৯৩২. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] মাইমূনাহ্‌ [রাদি.]-এর ঘরে থাকা অবস্থায় তাহাঁর নিকটে গুইসাপের গোশ্ত পরিবেশন করা হয়। তখন খালিদ ইবনি ওয়ালীদ [রাদি.] তাহাঁর সাথেই ছিলেন। ইবনি মুন্‌কাদির বাকী অংশ যুহ্‌রী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর সমার্থক হাদীস বর্ণনা করেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৮১, ইসলামিক সেন্টার- ৪৮৮২]

৪৯৩৩. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমার খালা উম্মু হুফায়দ [রাদি.] রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম]-এর কাছে কিছু ঘি, পনির এবং কয়েকটি গুইসাপ হাদিয়া স্বরূপ পাঠালেন। তিনি ঘি ও পনির থেকে কিছু খেলেন এবং গুইসাপ নোংরা হওয়ার দরুন খাওয়া বর্জন করিলেন। কিন্তু রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম]-এর দস্তরখানে তা খাওয়া হয়। তা হারাম হলে রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম]-এর দস্তরখানে তা খাওয়া হতো না।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৮২, ইসলামিক সেন্টার- ৪৮৮৩]

৪৯৩৪. ইয়াযীদ ইবনি আসাম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, মাদীনার এক নববিবাহিত ব্যক্তি আমাদেরকে দাওয়াত করলো এবং আমাদের সামনে তেরটি গুইসাপ পরিবেশন করা হলো। কিছু লোক তা খেল আর কিছু লোক তা বর্জন করলো। পরদিন আমি ইবনি আব্বাস [রাদি.]-এর সাথে সাক্ষাৎ করে বিষয়টি তাঁকে জানালাম। তখন তাহাঁর পাশের লোকজন নানা উক্তি করিতে লাগলো, এমনকি তাদের একজন বললোঃ রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেছেনঃ আমি এটি খাইও না, নিষেধও করি না এবং হারামও বলি না। ইবনি আব্বাস [রাদি.] বলিলেন, তোমরা যা বলছ তা সঠিক নয়। নবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম]-কে হালাল ও হারাম নির্ণয় করার জন্যই পাঠানো হয়েছিল। রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] একদা মাইমূনাহ্‌ [রাদি.]-এর ঘরে ছিলেন। তাহাঁর সাথে ফায্‌ল ইবনি আব্বাস, খালিদ ইবনি ওয়ালিদ ও অন্য এক মহিলা উপস্থিত ছিলেন। তখন তাঁদের কাছে একটি পাত্র পেশ করা হলো। রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] যখন খাওয়ার ইচ্ছা করিলেন তখন মাইমূনাহ্‌ [রাদি.] তাঁকে বলিলেন, এটা গুইসাপের গোশ্ত। রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] তাহাঁর হাত গুটিয়ে নিয়ে বলিলেন, এ গোশ্ত আমি কখনোও খাইনি। তিনি তাঁদের বলিলেন, তোমরা খেতে পারো। ফায্‌ল, খালিদ ইবনি ওয়ালীদ [রাদি.] এবং ঐ মহিলা তাত্থেকে খেলেন।

মাইমূনাহ্‌ [রাদি.] বললেনঃ রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] যা খান, তাছাড়া অন্য কিছু আমি খাব না।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৮৩, ইসলামিক সেন্টার- ৪৮৮৪]

৪৯৩৫. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম]-এর নিকট গুইসাপ আনা হলে তিনি তা খেতে অস্বীকার করে বলিলেন, জানি না হয়তো এটা ঐসব উম্মাত থেকে হইতে পারে, যাদের বিকৃত করা হয়েছিল।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৮৮, ইসলামিক সেন্টার- ৪৮৮৫]

৪৯৩৬. আবু যুবায়র [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি জাবির [রাদি.]-কে গুইসাপ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, এটি তোমরা খেও না। তিনি তা নোংরা হিসেবে অবহিত করিলেন। তিনি আরও বলেন, উমর ইবনি খাত্তাব [রাদি.] বলেছেন, নবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এটিকে হারাম করেননি। মহান আল্লাহ এর দ্বারা অনেক লোককে উপকৃত করিয়াছেন। কেননা, জনসাধারণের খাদ্য এ থেকে আসে। আমার নিকট থাকলে আমিও তা খেতাম।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৮৫, ইসলামিক সেন্টার- ৪৮৮৬]

৪৯৩৭. আবু সাঈদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, এক ব্যক্তি বলিল, হে আল্লাহর রসূল [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম]! আমরা এমন এলাকায় থাকি, যেখানে গুইসাপ পাওয়া যায়। সুতরাং এ ব্যাপারে আপনি আমাদের কী আদেশ করেন? অথবা বলিলেন, আপনি এ ব্যাপারে আমাদের কী ফাতাওয়া দেন? তিনি বললেনঃ আমাকে জানানো হয়েছে যে, বানী ইস্‌রাঈলের একটি সম্প্রদায়কে বিকৃত করে দেয়া হয়েছিল। এরপর তিনি আদেশও করেননি, নিষেধও করেননি।

আবু সাঈদ [রাদি.] বলেন, পরবর্তী সময়ে উমর [রাদি.] বলেন, আল্লাহর দ্বারা অনেক লোককে উপকৃত করবেন। কারণ এটা এ উম্মাতের অধিকাংশের খাবার। আমার নিকট থাকলে আমি অবশ্যই তা খেতাম। তবে রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এটি কেবল অপছন্দ করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৮৬, ইসলামিক সেন্টার- ৪৮৮৭]

৪৯৩৮. আবু সাঈদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, একদা রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম]-এর কাছে এক বেদূইন এসে বলিল, আমি এমন নিম্নাঞ্চলে বাস করি যেখানে প্রচুর গুইসাপ পাওয়া যায়। এটা আমার পরিবারের সাধারণ খাদ্য। বর্ণনাকারী বলেন, তিনি কোন জবাব দিলেন না। আমরা তাঁকে বললাম, আবার জিজ্ঞেস করো। লোকটি আবার জিজ্ঞেস করলে তিনি এবারও কোন জবাব দিলেন না। অতঃপর তৃতীয়বারে রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] তাকে ডেকে বললেনঃ হে বেদূঈন! মহান আল্লাহ বানী ইসরাঈলের একটি সম্প্রদায়ের প্রতি অভিসম্পাত করেন, অথবা ক্রোধান্বিত হয়ে তাদের আকৃতি বিকৃত করে স্থলচর প্রাণীতে রূপান্তরিত করে দেন। আমি অবহিত নই যে, এটা তাদেরই অন্তর্ভূক্ত কিনা। সুতরাং আমি তা খাইও না এবং এ থেকে নিষেধও করি না।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৮৭, ইসলামিক সেন্টার- ৪৮৮৮]

৮. অধ্যায়ঃ টিডডি খাওয়ার বৈধতা

৪৯৩৯. আবদুল্লাহ ইবনি আবু আওফা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমরা রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম]-এর সাথে সাতটি যুদ্ধে যোগদান করেছি, তখন আমরা টিডডি খেয়েছি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৮৮,, ইসলামিক সেন্টার- ৪৮৮৯]

৪৯৪০. আবু বাকর ইবনি আবু শাইবাহ্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] ইসহাক্ ইবনি ইব্রাহীম ও ইবনি আবু উমর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] সকলেই ইবনি উয়ায়নাহ্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর সূত্র হইতে বর্ণীতঃ

আবু ইয়াফূর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে উল্লিখিত সানাদে হাদীসটি রিওয়ায়াত করিয়াছেন।

আবু বকর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] তাহাঁর বর্ণনায় সাতটি যুদ্ধের কথা উল্লেখ করিয়াছেন। ইসহাক্ বলেছেন, ছয়টি এবং ইবনি আবু উমর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেছেন, ছয়টি কিংবা সাতটি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৮৯,, ইসলামিক সেন্টার- ৪৮৯০]

৪৯৪১. মুহাম্মাদ ইবনি মুসান্না ও ইবনি বাশ্শার [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] আবু ইয়াকূব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

এ সানাদে হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। তিনি বলেছেন, সাতটি যুদ্ধ।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৯০, ইসলামিক সেন্টার- ৪৮৯১]

৯. অধ্যায়ঃ খরগোশ খাওয়া র বৈধতা

৪৯৪২. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমরা চলতে চলতে মার্‌রুয যাহ্‌রান নামক স্থানে পৌঁছলে সেখানে একটি খরগোশকে ধাওয়া করলাম। লোকজনও সেটাকে ধাওয়া করলো এবং তারা ক্লান্ত হয়ে পড়লো। তিনি বলেন, অবশেষে আমি ধাওয়া করে ওটা ধরে ফেলি এবং আবু তালহার কাছে নিয়ে আসি। তিনি এটাকে যাবাহ করিলেন এবং পেছনের অংশ ও উভয় রান রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম]-এর কাছে পাঠালেন। আমি এগুলো রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম]-এর কাছে নিয়ে এলে তিনি তা গ্রহণ করেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৯১, ইসলামিক সেন্টার- ৪৮৯২]

৪৯৪৩. শুবাহ্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

এ সানাদে হাদীসটি বর্ণিত। তবে ইয়াহ্ইয়া [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বর্ণিত হাদীসে রয়েছে, এর পিছনের অংশ কিংবা উভয় রান।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৯১, ইসলামিক সেন্টার- ৪৮৯৩]

১০. অধ্যায়ঃ যা দ্বারা শিকার করা ও শত্রুর বিরুদ্ধে সহায়তা লাভ করা যায় তার বৈধতা এবং পাথর নিক্ষেপ নিষিদ্ধ হওয়া

৪৯৪৪. ইবনি বুরাইদাহ্‌ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আবদুল্লাহ ইবনি মুগাফ্‌ফাল [রাদি.] তাহাঁর সঙ্গীদের একজনকে পাথর নিক্ষেপ করিতে দেখে তাকে বলিলেন, পাথর মারবে না। কারণ রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] পাথর মারা অপছন্দ করিতেন। অথবা বলেছেন, নিষেধ করিতেন। কারণ এর দ্বারা শিকার করাও যায় না এবং শত্রুকে ঘায়েল করাও যায় না; বরং এটি দাঁত ভাঙ্গে এবং চক্ষুতে ক্ষত করে। পরবর্তীতে তাকে আবারো পাথর ছুড়তে দেখে তিনি বলিলেন, আমি তোমাকে জানালাম রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] পাথর নিক্ষেপ পছন্দ করিতেন না, অথবা তা নিষেধ করিতেন। তবুও তোমাকে পাথর ছুঁড়তে দেখছি? আমি তোমার সাথে এত এত দিন কথা বলব না।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৯২, ইসলামিক সেন্টার- ৪৮৯৪]

৪৯৪৫. উসমান ইবনি আমর বলেন, কাহমাস [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

এ সানাদে আমাদের কাছে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৯৩, ইসলামিক সেন্টার- ৪৮৯৫]

৪৯৪৬. আবদুল্লাহ ইবনি মুগাফ্‌ফাল [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] ছোট ছোট পাথর ছুঁড়তে বারণ করিয়াছেন।

ইবনি জাফার [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] তাহাঁর বর্ণনাতে বলেছেন, রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] আরও বলেছেনঃ এটা শত্রুকে পরাভূত করে না, শিকারও মারতে পারে না বরং এটা দাঁত ভাঙ্গে এবং চোখে আঘাত করে। ইবনি মাহ্‌দী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] উল্লেখ করিয়াছেন, এটা শত্রুকে আঘাত করে না। তিনি “চোখে আঘাত করার কথা” উল্লেখ করেননি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৯৪, ইসলামিক সেন্টার- ৪৮৯৬]

৪৯৪৭. সাঈদ ইবনি জুবায়র [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

আবদুল্লাহ ইবনি মুগাফ্‌ফাল [রাদি.]-এর একজন নিজের লোক ছোট ছোট পাথর ছুঁড়লে তিনি তাকে তা করিতে বারণ করেন এবং বলিলেন, রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] ছোট ছোট পাথর নিক্ষেপ বারণ করিয়াছেন। তিনি বলেছেন যে, এটা না শিকার করিতে পারে আর না শত্রুকে পরাভূত করিতে পারে; বরং এটি দাঁত ভাঙ্গে আর চোখে আঘাত করে। সাঈদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, লোকটি যখন পূণরায় এ কাজ করিল তখন তিনি বলিলেন, আমি তোমাকে হাদীস শোনাচ্ছি যে, রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] থেকে নিষেধ করিয়াছেন, এরপরও তুমি কঙ্কর নিক্ষেপ করছো? তোমার সঙ্গে আমি কখনো কথা বলবো না।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৯৫,, ইসলামিক সেন্টার- ৪৮৯৭]

৪৯৪৮. আইয়ূব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

উল্লেখিত সূত্রে হুবহু রিওয়ায়াত করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৯৬, ইসলামিক সেন্টার- ৪৮৯৮]

১১. অধ্যায়ঃ জবেহ ও হত্যায় দয়াশীল হওয়া ও ছুরিধার করার নির্দেশ

৪৯৪৯. শাদ্দাদ ইবনি আওস [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] হইতে আমি দুটি কথা মনে রেখেছি, তিনি বলেছেনঃ আল্লাহ তাআলা প্রত্যেক বিষয়ে তোমাদের উপর ইহসান অত্যাবশ্যক করিয়াছেন। অতএব তোমরা যখন হত্যা করিবে, দয়ার্দ্রতার সঙ্গে হত্যা করিবে; আর যখন জবেহ করিবে তখন দয়ার সঙ্গে জবেহ করিবে। তোমাদের সবাই যেন ছুরি ধারালো করে নেয় এবং তার জবেহকৃত জন্তুকে কষ্টে না ফেলে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৯৭, ইসলামিক সেন্টার- ৪৮৯৯]

৪৯৫০. ইয়াহ্ইয়া ইবনি ইয়াহ্ইয়া [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হুশায়ম, ইসহাক্ ইবনি ইব্রাহীম, আবদুল ওয়াহ্হাব আস্-সাক্বাফী, আবু বাকর ইবনি নাফি গুনদার, শুবাহ্, আবদুল্লাহ ইবনি আবদুর রহমান দারিমী, মুহাম্মাদ ইবনি ইউসুফ সুফ্ইয়ান থেকে, ইসহাক্ ইবনি ইব্রাহীম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] জারীর মানসূর হইতে বর্ণীতঃ

তাঁরা সকলে খালিদ হায্যা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে ইবনি উলাইয়্যাহ্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বর্ণিত হাদীসের সানাদ ও অর্থের অনুরূপ বর্ণনা করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৯৮,, ইসলামিক সেন্টার- ৪৯০০]

১২. অধ্যায়ঃ জীব-জন্তু বেঁধে তীরের লক্ষ্যবস্তু বানানোর নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কে

৪৯৫১. শুবাহ্‌ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি হিশাম ইবনি যায়দ ইবনিন আনাস ইবনি মালিক [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর নিকট শুনেছি। তিনি বলেন, আমি আমার দাদা আনাস ইবনি মালিক [রাদি.]-এর সাথে হাকাম ইবনি আইয়ূব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর গৃহে গেলাম। সেখানে স্থানীয় কতিপয় ব্যক্তি একটি মুরগী বেঁধে তার দিকে তীর নিক্ষেপ করছিল। তিনি বলেন, তখন আনাস [রাদি.] বলিলেন, রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] কোন জন্তু বেঁধে সেটিকে তীরের লক্ষ্য বানাতে বারণ করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৯৯, ইসলামিক সেন্টার- ৪৯০১]

৪৯৫২. যুহায়র ইবনি হারব, ইয়াহ্ইয়া ইবনি হাবীব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি], আবু কুরায়ব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] প্রমুখ সকলেই শুবাহ্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

উল্লেখিত সূত্রে হাদীসটি বর্ণনা করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৮৯৯, ইসলামিক সেন্টার- ৪৯০২]

৪৯৫৩. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেছেনঃ তোমরা এমন কোন বস্তুকে [তীর বা বন্দুকের] লক্ষ্যবস্তু বানিও না যার মধ্যে প্রাণ আছে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯০০, ইসলামিক সেন্টার- ৪৯০৩]

৪৯৫৪. মুহাম্মাদ ইবনি জাফার ও আবদুর রহমান ইবনি মাহ্দী উভয়ে শুবাহ্ হইতে বর্ণীতঃ

উল্লেখিত ধারাবাহিকতায় উপরের হাদীসের অবিকল রিওয়ায়াত করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- নেই, ইসলামিক সেন্টার- ৪৯০৪]

৪৯৫৫. সাঈদ ইবনি জুবায়র [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, ইবনি উমর [রাদি.] একদল লোকের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন যারা একটি মুরগী বেঁধে সেটির প্রতি তীর নিক্ষেপ করছিল। তারা ইবনি উমরকে দেখে মুরগীটি ছেড়ে দিয়ে চলে গেল। ইবনি উমর [রাদি.] বলিলেন, কে এ কাজ করলো? যে এমন কাজ করে রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] তাকে লানাত করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯০১, ইসলামিক সেন্টার- ৪৯০৫]

৪৯৫৬. সাঈদ ইবনি জুবায়র [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, ইবনি উমর [রাদি.] কতিপয় কুরায়শ যুবকের নিকট দিয়ে যাচ্ছিলেন। তারা একটি পাখি বেঁধে সেটির দিকে তীর নিক্ষেপ করছিল। আর প্রত্যেকটি নিশানা ব্যর্থ হওয়ার কারণে তারা পাখির মালিকের জন্য একটি করে তীর নির্ধারণ করছিল। তারপর তারা ইবনি উমর [রাদি.]-কে দেখে আলাদা হয়ে গেল। ইবনি উমর [রাদি.] বলিলেন, কে এ কাজ করলো? যে ব্যক্তি এরূপ করেছে তার প্রতি আল্লাহর লানাত। রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] লানাত করিয়াছেন, যে কোন জীব-জন্তুকে লক্ষ্যস্থল বানায়।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯০২, ইসলামিক সেন্টার- ৪৯০৬]

৪৯৫৭. মুহাম্মাদ ইবনি হাতিম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] ইবনি জুরায়জ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে, ভিন্ন সূত্রে আব্দ ইবনি হুমায়দ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] ইবনি জুরায়জ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে, আর একটি সূত্রে হারূন ইবনি আবদুল্লাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] ইবনি জুরায়জ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আবু যুবায়র [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] আমাকে বলেছেন যে, তিনি জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.]-কে বলিতে শুনেছেন যে, রসূলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] কোন প্রাণীকে বেঁধে হত্যা করিতে বারণ করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪৯০৩, ইসলামিক সেন্টার- ৪৯০৭]

Comments

One response to “শিকার ও জবেহ কৃত জন্তু এবং যেসব পশুর গোশত খাওয়া হালাল”

  1. HadisQuran Online Madrasa Shop Avatar
    HadisQuran Online Madrasa Shop

    12 done

Leave a Reply to HadisQuran Online Madrasa ShopCancel reply