ইসলামে রোগের চিকিৎসা বিষয়ক হাদিস

ইসলামে রোগের চিকিৎসা বিষয়ক হাদিস

ইসলামে রোগের চিকিৎসা বিষয়ক হাদিস>> সুনান তিরমিজি শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন

এ বিষয়ে আরও পড়ুন >> মুয়াত্তা মালিক >> সহীহ বুখারী >> সহীহ বুখারী >> আদাবুল মুফরাদ >> আবু দাউদ >> ইবনে মাজাহ >>  মিশকাত >> রিয়াদুস সালেহীন হাদীস শরীফ হতে

অধ্যায়-২৬ চিকিৎসা

১. অনুচ্ছেদঃ রুগ্ন অবস্থায় সংযত পানাহার
২. অনুচ্ছেদঃ চিকিৎসা গ্রহণে উৎসাহ প্রদান করা
৩. অনুচ্ছেদঃ রোগীর পথ্য
৪. অনুচ্ছেদঃ রোগীকে জোর করে পানাহার করানো নিষেধ
৫. অনুচ্ছেদঃ কালোজিরার বিবরণ
৬. অনুচ্ছেদঃ উটের প্রসাব পান করা প্রসঙ্গে
৭. অনুচ্ছেদঃ বিষপানে বা অন্যকিছু প্রয়োগে আত্মহত্যা করলে
৮. অনুচ্ছেদঃ নেশা জাতীয় দ্রব্য দিয়ে চিকিৎসা করা নিষেধ
৯. অনুচ্ছেদঃ নস্য (নাক দিয়ে ব্যবহার্য ঔষধ) ইত্যাদি প্রসঙ্গে
১০. অনুচ্ছেদঃ দাগ লাগানো (উত্তপ্ত লোহার মাধ্যমে শরীর দগ্ধ করা) নিষেধ
১১. অনুচ্ছেদঃ উত্তপ্ত লৌহ দ্বারা দগ্ধ করার অনুমতি প্রসঙ্গে
১২. অনুচ্ছেদঃ রক্তক্ষরণ প্রসঙ্গে
১৩. অনুচ্ছেদঃ ঔষধ হিসাবে মেহেদীর প্রয়োগ
১৪. অনুচ্ছেদঃ ঝাড়ফুঁক ইত্যাদি মাকরূহ্
১৫. অনুচ্ছেদঃ ঝাড়ফুঁক ইত্যাদির অনুমতি প্রসঙ্গে
১৬. অনুচ্ছেদঃ সূরা ফালাক ও সূরা নাস-এর মাধ্যমে ঝাড়ফুঁক করা
১৭. অনুচ্ছেদঃ কু-দৃষ্টিতে ঝাড়ফুঁক করা
১৮. অনুচ্ছেদঃ (হাসান-হুসাইন (রাদি.)-কে ঝাড়ফুঁক)
১৯. অনুচ্ছেদঃ বদ নজর সত্য এবং এজন্য গোসল করা
২০. অনুচ্ছেদঃ ঝাড়ফুঁকের বিনিময় গ্রহণ করা
২১. অনুচ্ছেদঃ ঝাড়ফুঁক ও ঔষধের বর্ণনা
২২. অনুচ্ছেদঃ আজওয়া খেজুর ও ছত্রাক (ব্যাঙের ছাতা) প্রসঙ্গে
২৩. অনুচ্ছেদঃ গণকের পারিশ্রমিক
২৪. অনুচ্ছেদঃ তাবিজ ইত্যাদি ঝুলানো মাকরূহ্
২৫. অনুচ্ছেদঃ পানি ঢেলে জ্বর ঠান্ডা করা
২৬. অনুচ্ছেদঃ জ্বর ও বেদনা উপশমের দু‘আ
২৭. অনুচ্ছেদঃ দুগ্ধবতী স্ত্রীর সাথে সহবাস করা
২৮. অনুচ্ছেদঃ নিউমোনিয়া বা ফুসফুসের প্রদাহের ঔষধ
২৯. অনুচ্ছেদঃ দু’আ পাঠ করে ব্যথার উপর হাত বুলানো
৩০. অনুচ্ছেদঃ সোনামুখী গাছ ও এর পাতা
৩১. অনুচ্ছেদঃ মধু দ্বারা চিকিৎসা প্রসঙ্গে
৩২. অনুচ্ছেদঃ রোগীর জন্য দু’আ তাঁর সুস্থতার কারণ হয়
৩৩. অনুচ্ছেদঃ জ্বরের তদবীর
৩৪. অনুচ্ছেদঃ ছাই দিয়ে চিকিৎসা করা
৩৫. অনুচ্ছেদঃ (জ্বর পৃথিবীতে মু’মিন গুনাহগানের শাস্তি)

১. অনুচ্ছেদঃ রুগ্ন অবস্থায় সংযত পানাহার

২০৩৬. কাতাদা ইবনিন নু’মান (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ্ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ আল্লাহ্ তা’আলা যখন কোন বান্দাহকে ভালবাসেন তাকে দুনিয়া হইতে বাঁচিয়ে রাখেন, যেমন তোমাদের কেউ তার রোগীকে পানি হইতে বাঁচিয়ে রাখে।

সহীহ, মিশকাত তাহকীক ছানী (৫২৫০)। আবু ঈসা বলেন, সুহাইব এবং উম্মুল মুনয়ির (রাদি.) হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি হাসান গারীব। এ হাদীসটি মুরসালরূপেও মাহমূদ ইবনি লাবীদের সূত্রে রাসূলুল্লাহ্ (সাঃআঃ) হইতে বর্নিত হয়েছে। আলী ইবনি হুজর-ইসমাঈল ইবনি জা’ফর হইতে, তিনি আমর ইবনি আবী আমর হইতে, তিনি আসিম ইবনি উমার ইবনি কাতাদা হইতে, তিনি মাহমূদ ইবনি লাবীদ (রাদি.) হইতে, তিনি রাসূলুল্লাহ্ (সাঃআঃ) হইতে (উপরের হাদীসের) অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। এই সূত্রে কাতাদার উল্লেখ নেই। আবু ঈসা বলেন, কাতাদা (রাদি.) আবু সাঈদ আল-খুদরীর বৈপিত্রেয় ভাই। মাহমূদ ইবনি লাবীদ (রাদি.) রাসূলুল্লাহ্ (সাঃআঃ) এর সাক্ষাৎ পেয়েছেন। তিনি তখন ছোট বালক ছিলেন। এই হাদিসটির মানঃ সহীহ হাদিস

২০৩৭. উম্মুল মনিযির (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) আমার বাসায় আসলেন। আলী (রাদি.)-ও তাঁর সাথে ছিলেন। আমাদের খেজুরের ছড়া ঝুলিয়ে রাখা ছিল। বর্ণনাকারী বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) তা থেকে খেতে আরম্ভ করলেন। তাঁর সাথে আলী (রাদি.)- ও খেতে লাগলেন। রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) আলী (রাদি.) কে বললেনঃ হে আলী! থাম, থাম, তুমি তো অসুস্থতাজনিত দুর্বল। বর্ণনাকারী বলেন, আলী (রাদি.) বসে গেলেন এবং রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) খেতে থাকলেন। আমি (উম্মুল মুনযির) তাদের জন্য বীট এবং বার্লি বানিয়ে আনলাম। রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বললেনঃ হে আলী! তুমি এটা খেতে পার, তোমার জন্য এটা বেশি উপযোগী।

হাসান, দেখুন পরবর্তী হাদীস। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব। আমরা এ হাপদীসটি শুধুমাত্র ফুলাইহ্-এর সূত্রেই জেনেছি। এটি ফুলাইহ্ হইতে আইয়্যূব ইবনি আবদুর রাহমানের সূত্রেও বর্ণিত আছে। উম্মুল মুনযির আল-আনসারিইয়া (রাদি.) হইতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) আমাদের বাড়ীতে আসলেন…….. উপরের হাদীসের অনুরূপ। এই বর্ণনার শেষে আছেঃ রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বললেনঃ তোমার জন্য এটা বেশি উপকারী। হাসান, ইবনি মাজাহ (৩৪৪২) । মুহাম্মাদ ইবনি বাশশার বলেন, এ হাদীসটি আইয়্যূব ইবনি আবদুর রাহমান আমার নিকট বর্ণনা করেছেন। এ হাদীসটি উত্তম গারীব। এই হাদিসটির মানঃ হাসান হাদিস

২. অনুচ্ছেদঃ চিকিৎসা গ্রহণে উৎসাহ প্রদান করা

২০৩৮. উসামা ইবনি শারীক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, মফস্বলের লোকেরা বলল, হে আল্লাহর রাসূল (সাঃআঃ)! আমরা কি (রোগীর) চিকিৎসা করব না? তিনি বললেন, হ্যাঁ, হে আল্লাহর বান্দাগণ! তোমরা চিকিৎসা কর। আল্লাহ তা‘আলা এমন কোন রোগ সৃষ্টি করেননি যার ঔষধ বা নিরাময়ের ব্যবস্থা রাখেননি (রোগও দিয়েছেন রোগ সারাবার ব্যবস্থাও করেছেন)। কিন্তু একটি রোগের কোন নিরাময় নেই। সাহাবীগণ বললেনঃ হে আল্লাহর রাসূল (সাঃআঃ) ! সে রোগটি কি? তিনি বললেনঃ বার্ধক্য।

সহীহ্, ইবনি মা-জাহ (৩৪৩৬)। আবু ঈসা বলেন, ইবনি মাসঊদ, আূ হুরাইরা, আবু খুযামা তার পিতার সূত্রে ও ইবনি আব্বাস (রাদি.) হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি হাসান সহীহ্। এই হাদিসটির মানঃ সহীহ হাদিস

৩. অনুচ্ছেদঃ রোগীর পথ্য

২০৩৯. আইশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর পরিবারের লোকদের জ্বর হলে তিনি দুধ ও ময়দা সহযোগে তরল পথ্য বানানোর নির্দেশ দিতেন। তা বানানো হলে তিনি পরিবারে লোকদের নির্দেশ দিতেন এটা হইতে রোগীকে পান করাতে। তিনি বলতেনঃ এটা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত মনে শক্তি যোগায় এবং রোগীর মনের ক্লেশ ও দুঃখ দূর করে। যেমন তোমাদের কোন মহিলা পানি দ্বারা তার মুখমন্ডলের ময়লা পরিষ্কার করে থাকে।

সহীহ ইবনি মাজাহ (৩৪৪৫) আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহীহ। এ হাদীসটি ইবনিল মুবারাক-ইউনুস হইতে তিনি যুহরী হইতে তিনি উরওয়া হইতে তিনি আইশা (রাদি.) হইতে তিনি রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) হইতে বর্ণনা করেছেন। এই হাদিসটির মানঃ দুর্বল হাদিস

৪. অনুচ্ছেদঃ রোগীকে জোর করে পানাহার করানো নিষেধ

২০৪০. উকবা ইবনি আমির (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ তোমরা তোমাদের রোগীদেরকে জোরপূর্বক পানাহারে বাধ্য করো না। কেননা, প্রাচুর্যময় আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে পানাহার করান।

সহীহ, ইবনি মাজাহ (৩৪৪৪)। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব । আমরা এ হাদিসটি শুধুমাত্র উপরোক্ত সূত্রেই পেয়েছি । এই হাদিসটির মানঃ সহীহ হাদিস

৫. অনুচ্ছেদঃ কালোজিরার বিবরণ

২০৪১. আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ তোমরা এই কালো বীজ (কালোজিরা) নিজেদের জন্য ব্যবহারকে বাধ্যতামূলক করে নাও। কেননা, মৃত্যু ব্যতীত সকল রোগের নিরাময় এর মধ্যে রয়েছে। ‘আস-সাম’ অর্থ ‘মৃত্যু’।

সহীহ, ইবনি মা-জাহ (৩৪৪৭), বুখারী, মুসলিম। আবু ঈসা বলেন, বুরাইদা, ইবনি উমার ও আইশা (রাদি.) হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি হাসান সহীহ্। এই হাদিসটির মানঃ সহীহ হাদিস

৬. অনুচ্ছেদঃ উটের প্রসাব পান করা প্রসঙ্গে

২০৪২. আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

উরাইনা বংশের কিছু লোক মাদীনায় আসলে এ অঞ্চলের আবহাওয়া তাদের জন্যে অনুকূল হয়নি। রাসূলুল্লা (সাঃআঃ) তাদেরকে সাদকার উটের নিকট পাঠিয়ে দেন এবং বলেনঃ তোমরা এর দুধ ও প্রসাব পান কর।

সহীহ, বুখারী, মুসলিম। আবু ঈসা বলেন, ইবনি আব্বাস (রাদি.) হইতেও এ অনু্চ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এ হাদীসটি হাসান সহীহ্। এই হাদিসটির মানঃ সহীহ হাদিস

৭. অনুচ্ছেদঃ বিষপানে বা অন্যকিছু প্রয়োগে আত্মহত্যা করলে

২০৪৩. আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

আবু হুরাইরা (রাদি.) মারফূভাবে বর্ননা করেনঃ যে লোক লোহার অস্ত্র দ্বারা আত্মহত্যা করবে, সে ঐ লৌহঅস্ত্র হাতে নিয়ে কিয়ামত দিবসে হাজির হবে। সে নিজের পেটে এতা অবিরত ভাবে বিদ্ধ করতে থাকবে এবং সে চিরকাল জাহান্নামে থাকবে। যে লোক বিষপান করে আত্মহত্যা করবে, সে ঐ বিষ হাতে নিয়ে কিয়ামত দিবসে হাযির হবে। সে চিরকাল জাহান্নামে থাকবে এবং সর্বদা এই বিষ গলাধঃকরণ করতে থাকবে। সহীহ, ইবনি মা-জাহ (৩৪৬০) বুখারী, মুসলিম। এই হাদিসটির মানঃ সহীহ হাদিস

২০৪৪. আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ লৌহ অস্ত্রের মাধ্যমে যে লোক আত্মহত্যা করবে, সে ঐ অস্ত্র হাতে নিয়ে কিয়ামত দিবসে হাযির হবে। জাহান্নামে সে এটা সর্বদাই তার পেটের মধ্যে বিদ্ধ করতে থাকবে এবং অনন্তকাল জাহান্নামে থাকবে। যে লোক বিষপানে আত্মহত্যা করবে, সে ঐ বিষ হাতে নিয়ে কিয়ামত দিবসে হাযির হবে জাহান্নামে। সে উহা সর্বদা পান করতে থাকবে এবং অনন্তকাল জাহান্নামে থাকবে। পাহাড়ের উপর থেকে ঝাঁপ দিয়ে যে লোক আত্মহত্যা করবে, সে সর্বদাই জাহান্নামের মধ্যে ঝাঁপ দিয়ে পড়তে থাকবে এবং চিরকাল জাহান্নামে থাকবে।

সহীহ, দেখুন পূর্বের হাদীস। উপরোক্ত হাদীসের মতো বর্ণনা করেছেন মুহাম্মদ ইবনিল আলা-ওয়াকী হইতে, তিনি আবু মুআবিয়া হইতে, তিনি আ’মাশ হইতে, তিনি আবু সালিহ হইতে, তিনি আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে, তিনি রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) হইতে। আবু ঈসা বলেন, এই হাদিসটি সহীহ । প্রথমোক্ত হাদিসের তুলনায় এটি অনেক বেশি সহীহ । এই হাদীসটি আরো অনেকে আ’মাশ হইতে আবু সালেহ এর বরাতে আবু হুরাইরার সূত্রে নবী (সাঃআঃ) হইতে বর্ণনা করেছেন। আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে একটি সূত্রে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ “বিষপানের মাধ্যমে যে লোক আত্মহত্যা করবে তাকে জাহান্নামের আগুনে শাস্তি দেয়া হবে।” এ সূত্রে, “অনন্তকাল জাহান্নামে থাকবে” এ কথার উল্লেখ নেই। আবুয যিনাদ তার শিক্ষক আ’রাজের সূত্রে আবু হুরাইরা (রাদি.) এর বরাতে রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) হইতে একইরকম বর্ণনা করেছেন। সকল বর্ণনার মধ্যে এটাই অনেক বেশি সহীহ্। কেননা, অসংখ্য হাদীসে বর্ণিত আছেঃ তৌহীদের উপর বিশ্বাসী অপরাধীরা জাহান্নামের আজাব ভোগ করবে । অবশেষে তারা জাহান্নাম থেকে মুক্তি পাবে । কিন্তু তাতে এ কথার উল্লেখ নেই যে, তারা অনন্তকাল জাহান্নামে থাকবে। এই হাদিসটির মানঃ সহীহ হাদিস

২০৪৫. আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, হারাম ঔষধ প্রয়োগ করতে রাসূল্লাহ (সাঃআঃ) নিষেধ করেছেন।

সহীহ, ইবনি মাজাহ (৩৪৫৯)। আবু ঈসা বলেন, হারাম ঔষধ। এর অর্থ বিষ। এই হাদিসটির মানঃ সহীহ হাদিস

৮. অনুচ্ছেদঃ নেশা জাতীয় দ্রব্য দিয়ে চিকিৎসা করা নিষেধ

২০৪৬. ওয়াইল (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি কোন একসময় রাসূল্লাহ (সাঃআঃ) এর সামনে উপস্থিত ছিলেন। এ সময় তাকে সুয়াইদ ইবনি তারিক অথবা তারিক ইবনি সুয়াইদ (রাদি.) মাদক দ্রব্য প্রসঙ্গে প্রশ্ন করেন। তিনি এটা ব্যবহার করতে তাকে নিষেধ করেন। তিনি (সুয়াইদ) বললেন, আমরা ঔষধ হিসাবে এটা ব্যবহার করব। রাসূল্লাহ (সাঃআঃ) বললেনঃ এটা কোন ঔষধ নয়, বরং এটা স্বয়ং একটা রোগ।

সহীহ, ইবনি মা-জাহ (৩৫০০), মুসলিম। মাহমুদ-নাযর ইবনি শুমাইল ও শাবাবা হইতে শুবা (রাহঃ)-এর সূত্রে একইরকম বর্ণনা করেছেন। নাযর (রাহঃ) বলেছেন প্রশ্নকারী সাহাবীর নাম তারিক ইবনি তারিক ইবনি সুয়াইদ এবং শাবাবা (রাহঃ) বলেছেন তার নাম সুয়াইদ ইবনি তারিক। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্। এই হাদিসটির মানঃ সহীহ হাদিস

৯. অনুচ্ছেদঃ নস্য (নাক দিয়ে ব্যবহার্য ঔষধ) ইত্যাদি প্রসঙ্গে

২০৪৭. ইবনি আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ যে সব ঔষধ তোমরা ব্যবহার কর তার মধ্যে উত্তম ঔষধ হচ্ছে নস্য, মুখ দিয়ে সেবন করার ঔষধ, রক্তমোক্ষণ ও জোলাপ (বিরেচক ঔষধ)। রাসূল্লাল্লাহ (সাঃআঃ) অসুস্থ হলে সাহাবীগণ তাঁকে মুখ দিয়ে ঔষধ সেবন করান। তারা অবসর হলে তিনি বলেনঃ এদের সবাইকে লাদু (মুখ দিয়ে সেব্য ঔষধ) সেবন করাও। রাবী বলেন, আব্বাস (রাদি.) ব্যতীত সবাইকে লাদু সেবন করানো হয়।

সহীহ মিশকাত, তাহকীক ছানী (৪৪৭৩)। এই হাদিসটির মানঃ দুর্বল হাদিস

২০৪৮. ইবনি আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ তোমরা যেসব ঔষধ ব্যবহার কর তার মধ্যে উত্তম ঔষধ হচ্ছে, লাদুদ, নস্য, রক্তমোক্ষণ ও জোলাপ। তোমরা যে সুরমা ব্যবহার কর তার মধ্যে উত্তম হচ্ছে ইসমিদ নামক সুরমা। কেননা এটা চোখের জ্যোতি বৃদ্ধি করে এবং চোখের পাতার পশম গজায়। রাবী বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর একটি সুরমাদানী ছিল। তিনি ঘুমানোর পূর্বে তা থেকে উভয় চোখে তিনবার করে সুরমা লাগাতেন।

সহীহ “ইসমিদ সুরমা লাগানো” অংশটুকু সহীহ। ইবনি মাজাহ (৩৪৯৫, ৩৪৯৭, ৩৪৯৯), আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব। এটি আব্বাস ইবনি মানসূর (রহঃ) বর্ণিত হাদীস। এই হাদিসটির মানঃ দুর্বল হাদিস

১০. অনুচ্ছেদঃ দাগ লাগানো (উত্তপ্ত লোহার মাধ্যমে শরীর দগ্ধ করা) নিষেধ

২০৪৯. ইমরান ইবনি হুসাইন (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

উত্তপ্ত লোহার মাধ্যমে শরীরে দাগ দিতে রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) নিষেধ করেছেন। বর্ণনাকারী বলেন, আমরা যখন রোগাক্রান্ত হয়ে উত্তপ্ত লোহা দ্বারা দাগ লাগিয়েছি তখন ব্যর্থতা ও বিফলতা ব্যতীত আর কিছুই পাইনি।

সহীহ, ইবনি মা-জাহ (৩৪৯০)। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্ । ইমরান ইবনি হুসাইন (রাদি.) হইতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, আমাদেরকে শরীরে উত্তপ্ত লোহার মাধ্যমে দাগ লাগাতে বারণ করা হয়েছে । আবু ঈসা বলেন, ইবনি মাসউদ, উকবা ইবনি আমির ও ইবনি আব্বাস (রাদি.) হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে । এ হাদীসটি হাসান সহীহ্। এই হাদিসটির মানঃ সহীহ হাদিস

১১. অনুচ্ছেদঃ উত্তপ্ত লৌহ দ্বারা দগ্ধ করার অনুমতি প্রসঙ্গে

২০৫০. আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নবী করীম (সাঃআঃ) সা’দ ইবনি যুরারাকে কাঁটা বিদ্ধ হওয়ার কারণে উত্তপ্ত লোহার মাধ্যমে দগ্ধ করেছিলেন।

সহীহ, মিশকাত তাহকীক ছানী (৩৫৩৪)। আবু ঈসা বলেন, উবাই ও জাবির (রাদি.) হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে । এ হাদীসটি হাসান গারীব । এই হাদিসটির মানঃ সহীহ হাদিস

১২. অনুচ্ছেদঃ রক্তক্ষরণ প্রসঙ্গে

২০৫১. আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) ঘাড়ের দুই পাশের শিরায় এবং ঘাড়ের কাছাকাছি পিঠের ফুলা অংশে রক্তক্ষরণ করাতেন। তিনি মাসের সতের, ঊনিশ ও একুশ তারিখে রক্তক্ষরণ করাতেন।

সহীহ, ইবনি মা-জাহ (৩৪৮৩)। আবু ঈসা বলেন, ইবনি আব্বাস ও মা’কিল ইবনি ইয়াসার (রাদি.) হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে । এ হাদীসটি হাসান গারীব । এই হাদিসটির মানঃ সহীহ হাদিস

২০৫২. ইবনি মাসঊদ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, মিরাজের রাত প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেন যে, এই রাতে ফেরেশতাদের যে দলের সম্মুখ দিয়েই তিনি যাচ্ছিলেন তারা বলেছেন, “আপনার উম্মাতকে রক্তক্ষরণের নির্দেশ দিন”।

সহীহ, ইবনি মা-জাহ (৩৪৭৭)। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান ও ইবনি মাসঊদ (রাদি.)-এর রিওয়ায়াত হিসাবে গারীব । এই হাদিসটির মানঃ সহীহ হাদিস

২০৫৩. ইকরিমা (রহঃ) হইতে বর্ণিতঃ

ইবনি আব্বাস (রাদি.)-এর তিনটি গোলাম ছিল। এরা রক্তমোক্ষণের কাজ করত। এদের মধ্যে দু’টি গোলাম তার ও পরিবারের উপার্জনের উদ্দেশ্যে অর্থের বিনিময়ে রক্তমোক্ষণ করত এবং অপরটি ইবনি আব্বাস (রাদি.) ও তার পরিবারের লোকদের রক্তমোক্ষণ করত।

-সনদ দুর্বল

রাবী বলেন, ইবনি আব্বাস (রাদি.) বলতেন, আল্লাহ্‌র রাসূল (সাঃআঃ) বলেছেনঃ রক্তমোক্ষণে অভিজ্ঞ দাস কতইনা ভাল! সে খারাপ রক্ত বের করে দিয়ে (উপার্জনের মাধ্যমে) পিঠের বোঝা হালকা করে এবং চোখের ময়লা দূর করে। যঈফ, ইবনি মাজাহ (৩৪৭৮)

ইবনি আব্বাস (রাদি.) আরো বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) মিরাজে যাবার সময় তিনি ফেরেশতাদের যে দলকেই অতিক্রম করেন তারা বলেন, “আপনি অবশ্যই রক্তমোক্ষণ করাবেন”। সহীহ

রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) আরো বলেছেনঃ সতের, ঊনিশ ও একুশ তারিখে তোমাদের রক্তমোক্ষণ করানো উত্তম। তিনি আরো বলেছেনঃ তোমরা যেসমস্ত ঔষধ ব্যবহার কর তার মধ্যে উত্তম ঔষধ হচ্ছে নস্য, লাদুদ, রক্তমোক্ষণ ও জোলাপ। সহীহ

আব্বাস (রাদি.) ও তার সঙ্গীগণ রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ)-কে মুখ দিয়ে ঔষধ সেবন করান। তারপর রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেনঃ কে আমাকে ঔষধ সেবন করিয়েছে? সবাই এ কথায় চুপ থাকলেন। তিনি বলেন, যারা ঘরের মধ্যে উপস্থিত আছে তাদের মধ্যে তাঁর চাচা আব্বাস (রাদি.) ব্যতীত আর সবাইকে লাদু পান করানো হবে। “তাঁকে আব্বাস (রাদি.) লাদুদ করেছেন” এই অংশ ব্যতীত সহীহ, আর ঐ অংশটুকু মুনকার। কেননা ঐ অংশটুকু আইশা (রাদি.) বর্ণিত হাদীস “আব্বাস ব্যতীত, কারণ তিনি তোমাদের নিকট উপস্থিত নেই”-এর বিপরীত।

নাসরের মতে লাদূদ ও ওয়াজূর সমার্থবোধক। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব। আব্বাস ইবনি মানসূরের সূত্রেই শুধুমাত্র আমরা এ হাদীস প্রসঙ্গে জেনেছি। এ অনুচ্ছেদে আইশা (রাদি.) হইতেও হাদীস বর্ণিত আছে। এই হাদিসটির মানঃ দুর্বল হাদিস

১৩. অনুচ্ছেদঃ ঔষধ হিসাবে মেহেদীর প্রয়োগ

২০৫৪. আলী ইবনি উবাইদুল্লাহ (রহঃ) হইতে তাঁর দাদী হইতে বর্ণিতঃ

তিনি রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) এর খাদিমা (সেবিকা) ছিলেন। তিনি বলেন, যখন রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) -এর দেহে কোন তলোয়ার বা দা-এর আঘাতে ক্ষত হতো, তিনি তাতে মেহেদী লাগানোর জন্য আমাকে নির্দেশ দিতেন।

সহীহ, ইবনি মা-জাহ (৩৫০)। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব । আমরা এ হাদীস প্রসঙ্গে শুধুমাত্র ফাইদের সূত্রে জেনেছি । এই হাদীসটি কেউ কেউ ফাইদের সূত্রে বর্ণনা করেছেন এবং বলেছেন, উবাইদুল্লাহ ইবনি আলী তাঁর দাদী সালমা হইতে বর্ণিত । সনদসূত্রে উবাইদুল্লাহ ইবনি আলী উল্লেখ করাই সহীহ্ । উপরোক্ত হাদীসের অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে মুহাম্মদ ইবনিল আলা হইতে, তিনি যাইদ ইবনিল হুবাব হইতে, তিনি উবাইদুল্লাহ ইবনি আলীর মুক্তদাস ফাইদ হইতে, তিনি তাঁর দাদী হইতে, তিনি রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) -এর সূত্রে । এই হাদিসটির মানঃ সহীহ হাদিস

১৪. অনুচ্ছেদঃ ঝাড়ফুঁক ইত্যাদি মাকরূহ্

২০৫৫. আক্কার ইবনিল মুগীরা (রহঃ) হইতে তাঁর বাবা হইতে বর্ণিতঃ

তিনি (মুগীরা) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ যে লোক (শরীরে) দাগ নেয় অথবা ঝাড়ফুঁক করায় সে তাওয়াক্বকুল (আল্লাহ তা’আলার উপর নির্ভরশীলতা) হইতে বিচ্যুত হয়েছে।

সহীহ, ইবনি মা-জাহ (৩৪৮৯)। আবু ঈসা বলেন, ইবনি মাসঊদ, ইবনি আব্বাস ও ইমরান ইবনি হুসাইন (রাদি.) হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে । এ হাদীসটি হাসান সহীহ্। এই হাদিসটির মানঃ সহীহ হাদিস

১৫. অনুচ্ছেদঃ ঝাড়ফুঁক ইত্যাদির অনুমতি প্রসঙ্গে

২০৫৬. আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

জ্বর, বদ-নজর ও ব্রণ-ফুসকুড়ি (ক্ষুদ্র ফোঁড়া) ইত্যাদি ক্ষেত্রে রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) ঝাড়ফুঁক দেয়ার সম্মতি প্রদান করেছেন।

সহীহ, মুসলিম। আনাস ইবনি মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিত আছে, জ্বর ও ফুসকুড়ির ক্ষেত্রে রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) ঝাড়ফুঁক দেয়ার সম্মতি প্রদান করেছেন। সহীহ, মুসলিম। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব। তিনি আরও বলেন, আমার মতে পূর্ববর্তী হাদীসের তুলনায় এ হাদীসটি অনেক বেশি সহীহ্। বুরাইদা, ইমরান ইবনি হুসাইন, জাবির, আইশা, তালক ইবনি আলী, আমর ইবনি হাযম ও আবু খিযামা (রাদি.) হইতে তাঁর বাবার সূত্রে এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এই হাদিসটির মানঃ সহীহ হাদিস

২০৫৭. ইমরান ইবনি হুসাইন (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ বদ-নজর ও জ্বর ব্যতীত আর অন্য কোন ক্ষেত্রে ঝাড়ফুঁক বৈধ নয়।

সহীহ, মিশকাত (৪৫৫৭), বুখারী মাওকুফরূপে বর্ণনা করেছেন। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হুসাইন-শাবী হইতে, তিনি বুরাইদা (রাদি.) হইতে, তিনি রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) হইতে একইরকম বর্ণনা করেছেন । এই হাদিসটির মানঃ সহীহ হাদিস

১৬. অনুচ্ছেদঃ সূরা ফালাক ও সূরা নাস-এর মাধ্যমে ঝাড়ফুঁক করা

২০৫৮. আবু সাঈদ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) জ্বিন ও মানুষের কু-দৃষ্টি হইতে আশ্রয় চাইতেন। তারপর সূরা ফালাক ও সূরা নাস নাযিল হলে তিনি এ সূরা দুটি গ্রহণ করেন এবং বাকীগুলো পরিত্যাগ করেন।

সহীহ, ইবনি মা-জাহ (৩৫১১)।

আবু ঈসা বলেন, আনাস (রাদি.) হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে । এ হাদীসটি হাসান গারীব ।

এই হাদিসটির মানঃ সহীহ হাদিস

১৭. অনুচ্ছেদঃ কু-দৃষ্টিতে ঝাড়ফুঁক করা

২০৫৯. ইবনি আবু উমার — সুফইয়ান — আমর ইবনি দিনার — উরওয়াহ –> আবু হাসিম ইবনু আমর –উবাইদ ইবনি রিফাআ আয-যুরাকী (রহঃ) হইতে বর্ণিতঃ

আসমা বিনতু উমাইস (রাদি.) বলেন, হে আল্লাহ্‌র রাসূল (সাঃআঃ), জাফরের সন্তানদের তাড়াতাড়ি বদ-নজর লেগে যায়। আমি কি তাদেরকে ঝাড়ফূঁক করতে পারি? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। কেননা, কোন জিনিস যদি ভাগ্যকে অতিক্রম করতে পারত তাহলে বদ-নজরই তা অতিক্রম করতে পারত।

সহীহ, ইবনি মা-জাহ (৩৫১০)। আবু ঈসা বলেন, ইমরান ইবনি হুসাইন ও বুরাইদা (রাদি.) হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে । এ হাদীসটি হাসান সহীহ্ । এ হাদীসটি আইয়্যূব-আমর ইবনি দীনার হইতে, তিনি উরওয়া ইবনি আমির হইতে, তিনি উবাইদ ইবনি রিফাআ হইতে, তিনি আসমা বিনতু উমাইস হইতে, তিনি রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) হইতে এই সূত্রে বর্ণিত হয়েছে । আমাদের কাছে এই হাদীসটি হাসান ইবনি আলী আল-খাল্লাল (রহঃ) আবদুর রায্যাক হইতে, তিনি মামার হইতে, তিনি আইয়্যূব (রহঃ)-এর সূত্রে বর্ণনা করেছেন । এই হাদিসটির মানঃ সহীহ হাদিস

১৮. অনুচ্ছেদঃ (হাসান-হুসাইন (রাদি.)-কে ঝাড়ফুঁক)

২০৬০. মাহমুদ ইবনু গইলান — আব্দুর রাজ্জাক — ওয়াইয়ালা — সুফইয়ান — মানসুর — মিনহাল ইবনি আমর — সাইদ ইবনু জুবাইর — ইবনি আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, হাসান ও হুসাইন (রাদি.)-এর জন্য রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) এই দু’আ পাঠ করে আশ্রয় প্রার্থনা করতেন :

 أُعِيذُكُمَا بِكَلِمَاتِ اللَّهِ التَّامَّةِ مِنْ كُلِّ شَيْطَانٍ وَهَامَّةٍ وَمِنْ كُلِّ عَيْنٍ لاَمَّةٍ

উ‘ইযুকুমা বিকালিমা-তিল্লা-হিত তা-ম্মাতি মিন কুল্লি শাইতানিওঁয়া হা-ম্মাহ্‌, ওয়ামিন কুল্লি আইনিল্লা-ম্মাহ্‌

“আমি তোমাদের উভয়ের উদ্দেশ্যে আল্লাহ তা’আলার পরিপূর্ণ কল্যাণময় কালামের মাধ্যমে প্রতিটি শাইতান, জীবননাশক বিষ ও অনিষ্টকারী কু-দৃষ্টি হইতে আশ্রয় প্রার্থনা করছি”।

তিনি বলতেন : এভাবে ইবরাহীম (আ:) তাঁর দুই ছেলে ইসহাক ও ইসমাঈলের জন্য আশ্রয় চাইতেন।

সহীহ, ইবনি মা-জাহ (৩৫২৫), বুখারী। উক্ত মর্মে একইরকম হাদীস হাসান ইবনি আলী আল-খাল্লাল-ইয়াযীদ ইবনি হারুন ও আবদুর রাযযাক হইতে, তিনি সুফিয়ান হইতে, তিনি মানসূর (রহঃ) হইতে এই সূত্রে বর্ণনা করেছেন । আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্ । এই হাদিসটির মানঃ সহীহ হাদিস

১৯. অনুচ্ছেদঃ বদ নজর সত্য এবং এজন্য গোসল করা

২০৬১. হাইয়্যা ইবনি হাবিস আত-তামীমী (রহঃ) হইতে তার পিতা হইতে বর্ণিতঃ

তিনি রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ)-কে বলতে শুনেছেনঃ হাম্ম বলতে কিছু নেই এবং বদনজর সত্য।

সহীহ যঈফা (৪৮০৪)। “আল-আইনু হাক্কুন” অংশটুকু সহীহ। সহীহা, (১২৪৮)। আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি গারীব। এই হাদিসটির মানঃ দুর্বল হাদিস

২০৬২. আহমাদ ইবনু হাসান ইবনু খিরাস আল বাগদাদি — আহমাদ ইবনু ইসহাক আল হাদ্রামি — উহাইব — ইবনি তাউস — আবিহ –ইবনি আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ ভাগ্যকে কোন জিনিস অতিক্রম করতে সমর্থ হলে কু-দৃষ্টিই তা অতিক্রম করতে পারত। যদি এ প্রসঙ্গে কেউ তোমাদেরকে গোসল করাতে চায় তাহলে তোমরা তাতে সম্মত হও।

সহীহ, সহীহাহ্ (১২৫১,১২৫২), আল-কালিমুত তাইয়্যিব (২৪২), মুসলিম , আবু ঈসা বলেন, আবদুল্লাহ ইবনি আমর (রাদি.) হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে । এ হাদীসটি হাসান সহীহ্ গারীব । হাইয়্যাহ ইবনি হাবিস হইতে বর্ণিত হাদীসটি গারীব । শাইবান ইয়াহইয়া ইবনি কাদীর হইতে, তিনি হাইয়্যাহ ইবনি হাবিস হইতে, তিনি তাঁর পিতা হইতে, তিনি আবু হুরাইরা হইতে, তিনি নবী করীম (সাঃআঃ) হইতে বর্ণনা করেছেন । আলী ইবনিল মুবারক এবং হারব ইবনি শাদ্দাদ আবু হুরাইরা (রাদি.)-এর উল্লেখ করেন নাই । এই হাদিসটির মানঃ সহীহ হাদিস

২০. অনুচ্ছেদঃ ঝাড়ফুঁকের বিনিময় গ্রহণ করা

২০৬৩. আবু সাঈদ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমাদেরকে রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) একটি সামরিক অভিযানে প্রেরণ করেন। আমরা একটি জনপদে আসার পর তাদের কাছে মেহমানদারী প্রার্থনা করলাম। কিন্তু তারা আমাদেরকে আপ্যায়ন করাল না। এরকম পরিস্থিতিতে তাদের বংশের প্রধানকে বিচ্ছু দংশন করে। তারা আমাদের নিকট এসে বলে, তোমাদের মধ্যে এমন কেউ আছে কি যে বিচ্ছু দংশনকারীকে ঝাড়ফুঁক করতে পারে? আমি বললাম, হ্যাঁ আমি নিজেই। কিন্তু তোমরা যদি আমাদেরকে এক পাল বকরী প্রদান না কর, তাহলে আমি ঝাড়ফুঁক করতে সম্মত নই। তারা বলল, আমরা তোমাদেরকে ত্রিশটি বকরী প্রদান করব। আমরা এ প্রস্তাবে রাজি হলাম। আমি সাতবার সূরা ফাতিহা পাঠ করে তাকে ঝাড়ফুঁক করলাম। ফলে সে রোগমুক্ত হলো এবং আমরা বকরীগুলো হস্তগত করলাম। বর্ণনাকারী বলেন, এই বিষয়ে আমাদের মনে সন্দেহের উদ্রেক হলো। আমরা বললাম, তোমরা রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) এর সামনে হাজির হওয়ার আগ পর্যন্ত (সিদ্ধান্তে পৌছতে) তাড়াহুড়া করবে না। বর্ণনাকারী বলেন, আমরা তাঁর নিকট উপস্থিত হওয়ার পর আমি যা করেছি তা তাকে অবহিত করলাম। তিনি বললেনঃ কিভাবে তুমি জানতে পারলে, এটা দিয়ে ঝাড়ফুঁক করা যায়? বকরীগুলো হস্তগত কর এবং তোমাদের সাথে আমার জন্যও একটি অংশ রেখ।

সহীহ, ইবনি মা-জাহ (২১৫৬), বুখারী, মুসলিম। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান । আবু নাযরার নাম আল-মুনযির ইবনি মালিক ইবনি কুতাআ । ইমাম শাফিঈ (রহঃ) এ হাদীসের ভিত্তিতে বলেন, কুরআন শিক্ষা দানের ফলে বিনিময় গ্রহণ বৈধ । উস্তাদ এই বিষয়ে চুক্তিও করতে পারবেন । জা’ফর ইবনি ইয়াস হলেন জা’ফর ইবনি আলী আবী ওয়াহসিইয়্যা আর তিনি আবু বিশর । এ হাদীসটি শুবা, আবু আওয়ানা, হিশাম, আরও অনেকে আবু বিশর হইতে, তিনি আবুল মুতা্ওয়াক্কিল হইতে, তিনি আবু সাঈদ (রাদি.) হইতে, তিনি রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) হইতে এই সূত্রে বর্ণনা করেছেন । এই হাদিসটির মানঃ সহীহ হাদিস

২০৬৪. আবু সাঈদ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

কোন এক আরব গোত্রের অঞ্চল দিয়ে রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) এর একদল সাহাবী পথ চলছিলেন। তারা তাদেরকে অতিথিসেবা করল না। ঘটনাক্রমে তাদের বংশের প্রধান ব্যক্তিটি অসুস্থ হয়ে যায়। তারা আমাদের নিকট এসে বলে, তোমাদের নিকট কি কোন ঔষধ আছে? আমরা বললাম, হ্যাঁ আছে কিন্তু তোমরা আমাদের মেহমানদারী করনি। অতএব, যে পর্যন্ত তোমরা আমাদের জন্য পারিশ্রমিক ঠিক না করবে আমরা চিকিৎসা করব না। আমাদেরকে একপাল ছাগল প্রদান করতে তারা রাজি হলো। আমাদের মধ্যেকার একজন সূরা ফাতিহা দ্বারা তাকে ঝাড়ফুঁক করল। ফলে সে রোগমুক্ত হয়ে গেল। আমরা রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) -এর নিকট এসে বিষয়টি তাকে খুলে বললাম। তিনি বললেনঃ তুমি কিভাবে জানতে পারলে যে, এর মাধ্যমে ঝাড়ফুঁক করা যায়? বর্ণনাকারী এ বিষয়ে তাঁর পক্ষ হইতে কোন নিষেধাজ্ঞা উল্লেখ করেননি। তিনি বললেনঃ এগুলো তোমরা ভাগ কর এবং তোমাদের সাথে আমার জন্যও একটা ভাগ রাখ।

সহীহ, দেখুন পূর্বের হাদীস। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি সহীহ্ । এটা পূর্ববর্তী জা’ফর ইবনি ইয়াস হইতে আ’মাশের রিওয়ায়াতের তুলনায় অনেক বেশি সহীহ্ । একাধিক বর্ণনাকারী আবু বিশর হইতে, তিনি আবুল মুতাওয়াক্কিল হইতে, তিনি আবু সাঈদ (রাদি.) হইতে এই সূত্রে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন । জাফর ইবনি ইয়াস বলেন জাফর ইবনি আবু ওয়াহ্শিইয়্যা । এই হাদিসটির মানঃ সহীহ হাদিস

২১. অনুচ্ছেদঃ ঝাড়ফুঁক ও ঔষধের বর্ণনা

২০৬৫. আবু খিযামা (রহঃ) হইতে তার পিতা হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ)-কে প্রশ্ন করলাম, হে আল্লাহ্‌র রাসূল! আমরা যে ঝাড়ফুঁক করি, ঔষধ ব্যবহার করি এবং বিভিন্ন রকম সাবধানতা অবলম্বন করে থাকি, এগুলো কি আল্লাহ্‌ তা’আলার নির্ধারিত ভাগ্যকে বাতিল করতে পারে? এ ব্যাপারে আপনার কি মত? তিনি বললেনঃ এগুলোও আল্লাহ্‌ তা’আলার নির্ধারিত ভাগ্যের অন্তর্ভুক্ত।

সহীহ ইবনি মাজাহ (৩৪৩৭) আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। এই হাদিসটির মানঃ দুর্বল হাদিস

২২. অনুচ্ছেদঃ আজওয়া খেজুর ও ছত্রাক (ব্যাঙের ছাতা) প্রসঙ্গে

২০৬৬. আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ আজওয়া হচ্ছে জান্নাতের খেজুরবিশেষ এবং এর মধ্যে বিষের প্রতিষেধক রয়েছে। ছত্রাক হলো মান নামক আসমানী খাবারের অন্তর্ভূক্ত এবং এর পানি চক্ষুরোগের প্রতিষেধক।

হাসান সহীহ, মিশকাত, তাহকীক ছানী (৪২৩৫)। আবু ঈসা বলেন, সাঈদ ইবনি যাইদ, আবু সাঈদ ও জাবির (রাদি.) হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে । এ হাদীসটি হাসান গারীব । আমরা এ হাদীস সম্বন্ধে শুধুমাত্র সাঈদ ইবনি আমির-মুহাম্মদ ইবনি আমরের সূত্রেই জেনেছি । এই হাদিসটির মানঃ হাসান সহীহ

২০৬৭. সাঈদ ইবনি যাইদ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ ‘ছত্রাক’ মান্নের অন্তর্ভুক্ত। এর পানি চোখের জন্য নিরাময়।

সহীহ, রাওযুন নাযীর (৪৪৪), বুখারী, মুসলিম। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্ । এই হাদিসটির মানঃ সহীহ হাদিস

২০৬৮. আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নবী করীম (সাঃআঃ)-এর কিছু সাহাবী বলেন, ছত্রাক হলো যমীনের বসন্ত রোগ। রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বললেনঃ ছত্রাক হলো মান্নের অন্তর্ভুক্ত এবং এর পানি চক্ষুরোগের প্রতিষেধক। আজওয়া হলো বেহেশতের খেজুরের অন্তর্ভুক্ত এবং এটা বিষের প্রতিষেধক।

পূর্বের হাদীসের সহায়তায় সহীহ। এই হাদিসটির মানঃ সহীহ হাদিস

২০৬৯. কাতাদাহ (রহঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আবু হুরায়রা্‌ (রাদি.) হইতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেনঃ আমি তিনটি অথবা ৫টি অথবা ৭টি ছত্রাক নিয়ে এর রস বের করলাম, তারপর রস টুকু বোতলে রেখে দিলাম, তারপর উহাদ্বারা আমার এক দাসীর চোখে সুরমা লাগালে তার চোখ ভালো হয়ে গেল।

সনদ দুর্বল, মাওকূফ, এই হাদিসটির মানঃ দুর্বল মাওকুফ

২০৭০. আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ কালো জিরা মৃত্যু ব্যতীত সকল রোগের ঔষধ।

সনদ দুর্বল, কাতাদাহ (রহঃ) বলেনঃ প্রত্যেক দিন (কালো জিরার) ২১ টি দানা নিবে। ঐগুলি একটি ন্যাকড়ায় নিয়ে তাহা ভিজিয়ে রাখবে। তারপর প্রত্যেকদিন নাকের ডান ছিদ্রে দুই ফোঁটা বাম ছিদ্রে এক ফোঁটা পানি দিবে। আবার ২য় দিন বামছিদ্রে দুই ফোঁটা এবং ডানছিদ্রে এক ফোঁটা পানি দিবে, ৩য় দিন ডান ছিদ্রে ২ ফোঁটা এবং বাম ছিদ্রে ১ ফোঁটা দিবে। সনদ দুর্বল, মাওকূফ। “ইয়া খুজু” এই শব্দ বাদে সহীহ মারফূ হাদীস রয়েছে। সহীহা (১৯০৫), এই হাদিসটির মানঃ দুর্বল হাদিস

২৩. অনুচ্ছেদঃ গণকের পারিশ্রমিক

২০৭১. আবু মাসঊদ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, কুকুরের বিক্রয় মূল্য, বেশ্যার পারিশ্রমিক এবং গণকের উপঢৌকনকে রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) নিষিদ্ধ করেছেন।

সহীহ, ইবনি মা-জাহ (২১৫৯)। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্ । এই হাদিসটির মানঃ সহীহ হাদিস

২৪. অনুচ্ছেদঃ তাবিজ ইত্যাদি ঝুলানো মাকরূহ্

২০৭২. ঈসা ইবনি আবদুর রাহমান ইবনি আবু লাইলা (রহঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি আবদুল্লাহ ইবনি উকাইম আবু মা’বাদ আল-জুহানীর অসুস্থ অবস্থায় তাকে দেখতে গেলাম। তিনি বিষাক্তি ফোঁড়ায় আক্রান্ত ছিলেন। আমি বললাম, কিছু তাবিজ-তুমার ঝুলিয়ে রাখছেন কেন? তিনি বললেন, মৃত্যু তো এর চেয়েও নিকটে। নবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ যে লোক কোনকিছু ঝুলিয়ে রাখে (তাবিজ-তুমার) তাকে তাঁর উপরই সোপর্দ করা হয়।

সহীহ, গাইয়াতুল মারাম (২৯৭)। আবু ঈসা বলেন, আমরা আবদুল্লাহ ইবনি উকাইমের হাদীসটি শুধুমাত্র মুহাম্মাদ ইবনি আব্দুর রহমান-এর সূত্রেই জেনেছি । আবদুল্লাহ ইবনি উকাইম রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) এর আমল পেলেও তাঁর কাছ থেকে হাদীস শ্রবণ করতে পারেননি । তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) আমাদের কাছে চিঠি লিখেন । মুহাম্মাদ ইবনি বাশশার-ইয়াহ্ইয়া ইবনি সাঈদ হইতে, তিনি ইবনি আবু লাইলা (রহঃ)-এর সূত্রে উক্ত মর্মে একইরকম হাদীস বর্ণনা করেছেন । আবু ঈসা বলেন : উকবা ইবনি আমির (রাদি.) হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে । এই হাদিসটির মানঃ সহীহ হাদিস

২৫. অনুচ্ছেদঃ পানি ঢেলে জ্বর ঠান্ডা করা

২০৭৩. রাফি ইবনি খাদীজ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ জ্বর হচ্ছে জাহান্নামের একটি উত্তাপ। তোমরা পানি ঢেলে তা ঠান্ডা কর।

সহীহ, ইবনি মা-জাহ (৩৪৭৩), বুখারী, মুসলিম। আবু ঈসা বলেন, আসমা বিনতু আবী বাক্র, ইবনি উমার, ইবনি আব্বাস, যুবাইরের স্ত্রী ও আইশা (রাদি.) হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। এই হাদিসটির মানঃ সহীহ হাদিস

২০৭৪. আইশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ জ্বর হলো জাহান্নামের উত্তাপের অংশবিশেষ। তোমরা পানি ঢেলে এটাকে ঠান্ডা কর।

সহীহ, বুখারী, মুসলিম।

হারুন ইবনি ইসহাক-আবদাহ হইতে, তিনি হিশাম ইবনি উরওয়া হইতে, তিনি ফাতিমা বিনতুল মুনযির হইতে, তিনি আসমা বিনতু আবী বাক্র (রাদি.) হইতে তিনি নবী (সাঃআঃ) হইতে একইরকম হাদীস বর্ণনা করেছেন ।

আবু ঈসা বলেন, এ সূত্রটিও সহীহ্ । আসমার হাদীসের আরও বক্তব্য আছে । এই হাদিসটির মানঃ সহীহ হাদিস

২৬. অনুচ্ছেদঃ জ্বর ও বেদনা উপশমের দু‘আ

২০৭৫. ইবনি আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নবী (সাঃআঃ) তাদেরকে জ্বর ও অন্যান্য সকল প্রকার ব্যথায় এই দু’আ পাঠের তালিম দিতেনঃ মহান

 بِسْمِ اللَّهِ الْكَبِيرِ أَعُوذُ بِاللَّهِ الْعَظِيمِ مِنْ شَرِّ كُلِّ عِرْقٍ نَعَّارٍ وَمِنْ شَرِّ حَرِّ النَّارِ

“আল্লাহ্‌ তা’আলার নামে, আমি মহান আল্লাহ্‌ তা’আলার নিকটে আশ্রয় প্রার্থনা করি রক্তচাপের আক্রমণ হইতে এবং জাহান্নামের উত্তপ্ত আগুনের ক্ষতি হইতে।

সহীহ মিশকাত (১৫৫৪), আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি গারীব। শুধুমাত্র ইবরাহীম ইবনি ইসমাঈল ইবনি আবু হাবীবার সূত্রেই আমরা এ হাদীস জেনেছি। ইবরাহীম ইবনি ইসমাঈলকে হাদীস শাস্ত্রে দুর্বল বলা হয়েছে। অপর এক বর্ণনায় আছে “ইরকিন ইয়াআর” (যে শিরা ফরকায় বা লাফায়)। এই হাদিসটির মানঃ দুর্বল হাদিস

২৭. অনুচ্ছেদঃ দুগ্ধবতী স্ত্রীর সাথে সহবাস করা

২০৭৬. আইশা (রাদি.) হইতে জুদামা বিনতু ওয়াহ্ব (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি (জুদামা) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) কে বলতে শুনেছি: আমি দুগ্ধদায়িনী স্ত্রীর সাথে সহবাস করাকে নিষিদ্ধ করতে ইচ্ছা করলাম। কিন্তু আমি অবহিত হলাম যে, পারস্য ও রোমের (এশিয়া মাইনর) জনগণ এটা করে থাকে (দুগ্ধপোষ্য শিশু থাকাকালীন সময়ে স্ত্রী সহবাস করে)। অথচ তাদের সন্তানদের তারা হত্যা করে না (উল্লেখিত সময়ে সহবাসের কারণে শিশুর কোন ক্ষতি হয় না)।

সহীহ, ইবনি মা-জাহ (২০১১), মুসলিম। আবু ঈসা বলেন, আসাম বিনতু ইয়াযীদ (রাদি.) হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে । এ হাদীসটি সহীহ্ । মালিক-আবুল আসওয়াদ হইতে, তিনি উরওয়া হইতে, তিনি আইশা হইতে, তিনি জুদামা বিনতু ওয়াহ্ব (রাদি.) হইতে, তিনি রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) হইতে একইরকম বর্ণনা করেছেন । ইমাম মালিক (রহঃ) বলেন, ‘গীলা’ অর্থ দুগ্ধপোষ্য শিশুর মায়ের সাথে সহবাস করা । এই হাদিসটির মানঃ সহীহ হাদিস

২০৭৭. জুদামা বিনতু ওয়াহ্ব আল-আসাদীয়্যাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) কে বলতে শুনেছেন: আমি সন্তানের দুধ পানের সময়সীমার মধ্যে স্ত্রীসহবাস করাকে নিষিদ্ধ করতে চাইলাম। অবশেষে আমি জানলাম যে, পারস্য ও রোমের জনগণ (এ সময়) স্ত্রীসহবাস করে থাকে। এর ফলে তাদের সন্তানদের কোন ক্ষতি হয় না।

সহীহ, দেখুন পূর্বের হাদীস। ঈসা ইবনি আহ্মাদ (রহঃ) ইসহাক ইবনি ঈসা হইতে, তিনি মালিক হইতে, তিন আবুল আসওয়াদ হইতে একইরকম বর্ণনা করেছেন । আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্ গারীব । এই হাদিসটির মানঃ সহীহ হাদিস

২৮. অনুচ্ছেদঃ নিউমোনিয়া বা ফুসফুসের প্রদাহের ঔষধ

২০৭৮. যাইদ ইবনি আরকাম (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) ফুসফুসের প্রদাহে যাইতূন ও ওয়ারসের (ওষধি বিশেষ) প্রশংসা করতেন। কাতাদা (রাহ:) বলেন, দেহের যে দিক আক্রান্ত, এ ঔষধ চামচ দিয়ে মুখের সেদিক দিয়ে ঢালতে হবে।

সহীহ ইবনি মাজাহ (৩৪৬৭) আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ। আবু আব্দুল্লাহ্‌র নাম মাইমূন, তিনি বসরার মুহাদ্দিস। এই হাদিসটির মানঃ দুর্বল হাদিস

২০৭৯. যাইদ ইবনি আরকাম (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) আমাদেরকে কুসতে বাহ্‌রী (চন্দন কাঠ) ও যাইতূনের তৈল দিয়ে নিউমোনিয়ার চিকিৎসা করার নির্দেশ (পরামর্শ) দিয়েছেন।

দুর্বল, দেখুন পূর্বের হাদীস, আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব সহীহ। মাইমূন হইতে যাইদ ইবনি আরকাম (রাদি.) সূত্রেই শুধুমাত্র আমরা এ হাদীস প্রসঙ্গে জেনেছি। মাইমূন হইতে একাধিক রাবী এ হাদীস বর্ণনা করেছেন। “যাতুল জানব” অর্থ “আস-সিল্লু” (ফুসফুসের প্রদাহ, যদ্দরুন রোগী দুর্বল হয়ে যায়)। এই হাদিসটির মানঃ দুর্বল হাদিস

২৯. অনুচ্ছেদঃ দু’আ পাঠ করে ব্যথার উপর হাত বুলানো

২০৮০. উসমান ইবনি আবুল আস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) আমার নিকট এলেন। আমি তখন ধ্বংসাত্মক ব্যথার কারণে অস্থির ছিলাম। রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বললেনঃ ব্যথার জায়গাতে তোমার ডানহাত দিয়ে সাতবার মর্দন কর এবং বল,

 أَعُوذُ بِعِزَّةِ اللَّهِ وَقُوَّتِهِ مِنْ شَرِّ مَا أَجِدُ 

আউজু বিল্লাহে ওয়া কুদরতি মিন সাররি মা আজিদু

“ আমি আল্লাহ তা’আলার ইজ্জাত ও সম্মান, তাঁর কুদরাত ও শক্তি এবং তাঁর রাজত্ব, সার্বভৌমত্ব ও কর্তৃত্বের নিকট আমার এই কষ্ট হইতে মুক্তি প্রার্থনা করছি”।

বর্ণনাকারী বলেন, আমি তা-ই করলাম। আমার সম্পূর্ণ ব্যথাই আল্লাহ তা’আলা সারিয়ে দিলেন। আমি এরপর হইতেই আমার পরিবারের লোকদেরকে এবং অন্যান্যদেরকে এরূপ করার জন্য নির্দেশ দিয়ে আসছি।

সহীহ, ইবনি মা-জাহ (৩৫২২), মুসলিম। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্ । এই হাদিসটির মানঃ সহীহ হাদিস

৩০. অনুচ্ছেদঃ সোনামুখী গাছ ও এর পাতা

২০৮১. আসমা বিনতু উমাইস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) তাকে প্রশ্ন করেন: তোমরা কি দিয়ে জোলাপ দাও? তিনি বললেন, শুবরুম (ছোলার মত এক প্রকার দানা) দিয়ে। রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বললেনঃএটা তো খুব গরম ঔষধ। আসমা (রাদি.) বলেন, অতঃপর আমি সোনামুখী গাছের পাতা দিয়ে জোলাপ দেই। রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেন: ‘মৃত্যু’ নামক রোগের নিরাময় যদি কোন জিনিস দিয়ে সম্ভব হত তবে সোনামুখী গাছ দিয়েই তা সম্ভব হত।

সহীহ মিশকাত (৪৫৩৭), আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব। এই হাদিসটির মানঃ দুর্বল হাদিস

৩১. অনুচ্ছেদঃ মধু দ্বারা চিকিৎসা প্রসঙ্গে

২০৮২. আবু সাঈদ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নবী (সাঃআঃ) এর নিকট একজন লোক এসে বলল, আমার ভাইয়ের পাতলা পায়খানা (উদরাময়) হচ্ছে। তিনি বললেনঃ তাকে মধু পান করাও। সে তাকে মধু পান করায়, তারপর এসে বলে, হে আল্লাহর রাসূল (সাঃআঃ) , আমি তাকে মধু পান করিয়েছি। কিন্তু তাতে দাস্ত আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বললেনঃ তাকে মধু পান করাও। বর্ণনাকারী বলেন, সে তাকে মধু পান করানোর পর এসে বলে, হে আল্লাহর রাসূল (সাঃআঃ) , আমি তাকে তা পান করিয়েছি। কিন্তু এর ফলে তাঁর দাস্ত আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্ণনাকারী বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বললেনঃ আল্লাহ তা’আলা সত্য বলেছেন (মধুতে নিরাময় আছে), কিন্তু তোমার ভাইয়ের পেটই মিথ্যা বলছে। আবার তাকে মধু পান করাও। অতএব, লোকটি তাকে মধু পান করায় এবং সে সুস্থ হয়ে উঠে।

সহীহ, বুখারী, মুসলিম। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্ । এই হাদিসটির মানঃ সহীহ হাদিস

৩২. অনুচ্ছেদঃ রোগীর জন্য দু’আ তাঁর সুস্থতার কারণ হয়

২০৮৩. ইবনি আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ কোন লোক যদি কোন রোগীকে দেখতে যায় যার মৃত্যুক্ষণ আসেনি, সে তাকে সাতবার এই দু’আ করলে :

أَسْأَلُ اللَّهَ الْعَظِيمَ رَبَّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ أَنْ يَشْفِيَكَ

আসআলুল্লা-হাল ‘আযীম, রব্বাল ‘আরশিল ‘আযীম, আঁই ইয়াশফিয়াকা

“আমি মহান আরশের রব (প্রভু) মহামহিম আল্লাহ তা’আলার নিকট দু’আ প্রার্থনা করছি, তিনি তোমাকে রোগ হইতে সুস্থতা দান করুন”,

তাকে রোগমুক্ত করা হবে।

সহীহ, মিশকাত (১৫৫৩), আল কালিমুত তাইয়্যিব (১৪৯)। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব । আমরা এ হাদীসটি শুধুমাত্র আবুল মিনহালের সূত্রে জেনেছি । এই হাদিসটির মানঃ সহীহ হাদিস

৩৩. অনুচ্ছেদঃ জ্বরের তদবীর

২০৮৪. সাওবান (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নবী (সাঃআঃ) বলেন: জ্বর হল জাহান্নামের একটি টুকরা। তোমাদের কারো জ্বর হলে সে যেন তা পানি ঢেলে নিভায়। (এর নিয়ম হচ্ছে) ফজরের নামাযের পর সূর্যোদয়ের পূর্বে প্রবাহমান ঝর্ণায় নেমে স্রোত প্রবাহের দিকে মুখ করে সে বলবে,

بِسْمِ اللَّهِ اللَّهُمَّ اشْفِ عَبْدَكَ وَصَدِّقْ رَسُولَكَ بَعْدَ صَلاَةِ الصُّبْحِ قَبْلَ طُلُوعِ الشَّمْسِ فَلْيَغْتَمِسْ فِيهِ ثَلاَثَ غَمَسَاتٍ

“আল্লাহ্‌ তা’আলার নামে, হে আল্লাহ্‌! তোমার বান্দাকে রোগমুক্ত করে দাও এবং তোমার রাসূলকে সত্যবাদী প্রমাণ কর”।

তারপর ঝর্ণার পানিতে তিনবার ডুব দিবে। তিনি দিন এরূপ করবে। তিন দিনেও যদি জ্বর না ছাড়ে তবে পাঁচ দিন এরকম করবে। পাঁচ দিনেও ভাল না হলে সাত দিন এরকম করবে। সাত দিনেও ভাল না হলে নয় দিন করবে। আল্লাহ্‌ তা’আলার হুকুমে জ্বর নয় দিনের বেশী অতিক্রম করতে পারবে না।

সহীহ যঈফা (২৩৩৯), আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি গারীব। এই হাদিসটির মানঃ দুর্বল হাদিস

৩৪. অনুচ্ছেদঃ ছাই দিয়ে চিকিৎসা করা

২০৮৫. আবু হাযিম (রহঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, সাহল ইবনি সা’দ (রাদি.)-কে প্রশ্ন করা হলো এবং আমিও তা শুনলাম, রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) এর জখমের মধ্যে কোন দ্রব্য প্রয়োগ করা হয়েছিল? তিনি বললেন, এ বিষয়ে আমার চেয়ে অধিক ভাল আর কোন ব্যক্তি জানে না। আলী (রাদি.) তাঁর ঢালে করে পানি নিয়ে আসছিলেন এবং ফাতিমা (রাদি.) তাঁর জখমের রক্ত ধুয়ে দিচ্ছিলেন। একটি মাদুর পুড়িয়ে তার ছাই তাঁর ক্ষত স্থানের ভিতরে ঢুকিয়ে দেয়া হয়।

সহীহ, বুখারী, মুসলিম। আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান সহীহ্ । এই হাদিসটির মানঃ সহীহ হাদিস

২০৮৬. আনাস ইবনি মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেন: অসুস্থ ব্যক্তি যখন সুস্থ্য হয়ে ভাল হয়ে যায় তার উদাহরণ হল আকাশ হইতে পতিত স্বচ্ছ পরিষ্কার শিশিরের মত।

-মাউযূ, এই হাদিসটির মানঃ জাল হাদিস

৩৫. অনুচ্ছেদঃ (জ্বর পৃথিবীতে মু’মিন গুনাহগানের শাস্তি)

২০৮৭. আবু সাঈদ আল-খুদরী (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেন: তোমরা কোন অসুস্থ ব্যক্তিকে দেখতে গেলে তাকে বেঁচে থাকারই আশান্বিত করবে। তা যদিও কোন কিছুকে (তাকদীরকে) রোধ করতে পারবে না তবুও তার মনটা এতে প্রফুল্ল হবে, শান্তি পাবে।

খুবই দুর্বল। যঈফা (১৮৪), আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি গারীব। এই হাদিসটির মানঃ খুবই দুর্বল

২০৮৮. আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ

নবী (সাঃআঃ) জ্বরে আক্রান্ত এক ব্যক্তিকে দেখতে গিয়ে বললেন, “তুমি সুসংবাদ গ্রহণ কর। আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ সেটা আমার অগ্নি, আমার গুনাহগার বান্দার উপর উহা চাপিয়ে দিয়ে থাকি, যাতে উহা তাঁর জাহান্নামের শাস্তির অংশ হয়ে যায়” অর্থাৎ পরকালের পরিবর্তে দুনিয়াতেই তাঁর শাস্তি হয়ে যায়।

সহীহ, সহীহাহ্ (২/৯৮)। এই হাদিসটির মানঃ সহীহ হাদিস

২০৮৯. হাসান (রহঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, গুনাহর কারণে তাদের মর্যাদার ঘাটতি পূরণের কাফ্ফারা স্বরূপ তারা রাতের বেলায় জ্বরের আকাঙ্খা করত।

এই হাদিসটির মানঃ সহীহ মাকতু


by

Comments

Leave a Reply