আযান ও ইকামতের বাক্যগুলো দুইবার একবার ও দোয়া
এ বিষয়ে আরও পড়ুন >> মুয়াত্তা মালিক >> সহীহ বুখারী >> সহীহ মুসলিম >> আবু দাউদ >> ইবনে মাজাহ >> তিরমিজি >> নাসাঈ >> মিশকাত >> রিয়াদুস সালেহীন >> বুলুগুল মারাম হাদীস শরীফ হতে
আযানের বাক্যগুলো
ইকামাতের বাক্যগুলো দুইবার
আযানের শব্দগুলো দু’বার করে এবং ইকামতের শব্দগুলো দু’বার করে
আযানের শব্দগুলো দু’বার করে এবং ইকামতের শব্দগুলো একবার করে
ইক্বামাতের জবাব
আযানের বাক্যগুলো
আবু মাহযূরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] তাকে এ আযান শিক্ষা দিয়েছেনঃ
اللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ
“আল্ল-হু আকবার, আল্ল-হু আকবার” [আল্লাহ মহান, আল্লাহ মহান]। পাঠে [চারবার]
أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ
“আশহাদু আল লা-ইলা-হা-ইল্লাল্ল-হ” [আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া প্রকৃতপক্ষে কোন ইলাহ নেই], [দুবার]
أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ
“আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রসূলুল্ল-হ” [আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ আল্লাহর রসূল] [দুবার]
حَىَّ عَلَى الصَّلاَةِ
“হাইয়্যা আলাস সলা-হ্” [নামাজের জন্য এসো] [দুবার]
حَىَّ عَلَى الْفَلاَحِ
“হাইয়্যা আলাল ফালা-হ্” [কল্যাণের জন্যে এসো] [দুবার]
ইসহাক্ তার বর্ণনায় আরও দুটি বাক্য উল্লেখ করিয়াছেন,
اللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ [একবার]
“আল্ল-হু আকবার, আল্ল-হু আকবার” এবং
لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ
“লা-ইলা-হা ইল্লাহ-হ” [একবার]
[সহীহ মুসলিম ৭২৮] [আবু দাউদ ৫০৩] [আবু দাউদ ৪৯৯, ইবনে মাজাহ ৭০৬, আবদুল্লা ইবনি যায়িদ হইতে বর্ণিত]
[আবু দাউদ ৫০০, মুহাম্মাদ ইবনি আবদুল মালিক ইবনি আবু মাহযূরাহ হইতে তার পিতা সূত্রে ও দাদার হইতে বর্ণিত, আবু দাউদ ফাযরের নামায হলে উল্লেখ করেছেন, যেমন] الصَّلاَةُ خَيْرٌ مِنَ النَّوْمِ الصَّلاَةُ خَيْرٌ مِنَ النَّوْمِ আসসলাতু খাইরুম মিনান নাউম, আসসলাতু খাইরুম মিনান নাউম (ঘুমের চেয়ে নামায উত্তম-দুবার)] [আবু দাউদ ৫০৪, ৫০৫ আবু মাহযুরাহ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিত]
ইবনে মাজাহ ৭০৭ আবদুল্লাহ বিন উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
নবী [সাঃআঃ] সালাতের জন্য সমবেত করার ব্যাপারে সহাবীদের সাথে পরামর্শ করেন। তারা শিঙ্গার কথা উল্লেখ করেন, কিন্তু এটি ইহুদীদের যন্ত্র বলে তিনি অপছন্দ করেন। অতঃপর তারা নাকূসের কথা উল্লেখ করেন। কিন্তু এটি খ্রিস্টানদের ঘণ্টা বলে তিনি অপছন্দ করেন। সেই রাতে আবদুল্লাহ বিন যায়দ নামে এক আনসারীকে স্বপ্নে আযানের পদ্ধতি দেখানো হলো এবং উমার ইবনিল খাত্তাব [রাঃআঃ] ও [রাতে একই স্বপ্ন দেখেন]। আনসারী সহাবী রাতেই রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর নিকট আসেন। রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বিলালকে আজান দেয়ার নির্দেশ দিলে তিনি আজান দেন। যুহরী [রাঃআঃ] বলেন, বিলাল [রাঃআঃ] ফজরের সলাতে
الصَّلاَةُ خَيْرٌ مِنَ النَّوْمِ
আসসলাতু খাইরুম মিনান-নাওম
[ঘুম থেকে নামাজ উত্তম]
বাক্যটি সংযোজন করেন এবং রাসূল তা বহাল রাখেন। উমার [রাঃআঃ] বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! নিশ্চয় আমিও এ ব্যাক্তির অনুরূপ স্বপ্ন দেখেছি, কিন্তু সে আমার আগেই পৌঁছে গেছে। {৭০৫}
তাহকিক আলবানীঃ দঈফ, এর কিছু অংশ সহিহ, যা বুখারি, মুসলিমে রয়েছে।{৭০৫} বোখারি ৬০৪, মুসলিম ৩৭৭, তিরমিজি ১৯০, নাসায়ি ৬২৬, আহমাদ ৬৩২১। তাহকিক আলবানিঃ জইফ, এর কিছু অংশ সহিহ যা বোখারি, মুসলিমে রয়েছে।হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য
আযানের জবাব
আবু সাঈদ আল খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ যখন তোমরা আযান শুনতে পাও তখন মুওয়ায্যিন যা বলে তোমরা তাই-ই বল।
[সহীহ মুসলিম ৭৩৪] [আবু দাউদ ৫২২, সহিহ ]
উমর ইবনিল খাত্তাব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ মুওয়ায্যিন যখন
اللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ
“আল্ল-হু আকবার, আল্ল-হু আকবার” বলে তখন তোমাদের কোন ব্যক্তি আন্তরিকতার সাথে তার জবাবে বলেঃ
اللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ
“আল্লহু আকবার, আল্ল-হু আকবার”। যখন মুওয়ায্যিন বলেঃ
أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ
“আশহাদু আল লা-ইলা-হা ইল্লাল্ল-হ” এর জবাবে সেও বলেঃ
أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ
“আশহাদু আল লা-ইলা-হা ইল্লাল্ল-হ”। অতঃপর মুওয়ায্যিন বলে:
أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ
আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান রসূলুল্লা-হ” এর জবাবে সে বলেঃ
أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ
“আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান রসূলুল্ল-হ্। অতঃপর মুওয়ায্যিন বলেঃ
حَىَّ عَلَى الصَّلاَةِ
“হাইয়্যা আলাস সলা-হ্” এর জবাবে সে বলেঃ
لاَ حَوْلَ وَلاَ قُوَّةَ إِلاَّ بِاللَّهِ
“লা-হাওলা ওয়ালা-কুও্ওয়াতা ইল্লা বিল্লা-হ”। অতঃপর মুওয়ায্যিন বলেঃ
حَىَّ عَلَى الْفَلاَحِ
“হাইয়্যা আলাল ফালা-হ্” এর জবাবে সে বলেঃ
لاَ حَوْلَ وَلاَ قُوَّةَ إِلاَّ بِاللَّهِ
““লা-হাওলা ওয়ালা-কুও্ওয়াতা ইল্লা বিল্লা-হ”। অতঃপর মুওয়ায্যিন বলেঃ
اللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ
“আল্ল-হু আকবার, আল্ল-হু আকবার”এর জবাবে সে বলেঃ
اللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ
“আল্ল-হু আকবর, আল্ল-হু আকবার”। অতঃপর মুওয়ায্যিন বলেঃ
لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ
“লা-ইলা-হা ইল্লাল-হ” এর জবাবে সে বলেঃ
لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ
“লা- ইলা-হা ইল্লাল্ল-হ”। আযানের এ জবাব দেয়ার কারণে সে বেহেশতে যাবে।
[সহীহ মুসলিম ৭৩৬] [আবু দাউদ ৫২৭, সহিহ]
আযানের দোয়া
অনুচ্ছেদ-৩৮ আযান শুনে যে দুআ পাঠ করিবে
আবু দাউদ ৫২৯. জাবির ইবনি আবদুল্লা (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আযান শুনার পর নিম্নোক্ত দুআ পড়বে তার জন্য ক্বিয়ামাতের দিন আমার শাফাআত অবশ্যম্ভাবী ঃ
اللَّهُمَّ رَبَّ هَذِهِ الدَّعْوَةِ التَّامَّةِ وَالصَّلاَةِ الْقَائِمَةِ آتِ مُحَمَّدًا الْوَسِيلَةَ وَالْفَضِيلَةَ وَابْعَثْهُ مَقَامًا مَحْمُودًا الَّذِي وَعَدْتَهُ
আল্লাহুম্মা রব্বি হাযিহিদ্ দাওয়াতিত্ তাম্মাতি ওয়াস্ সলাতিল ক্বায়িমাতি আতি মুহাম্মাদানিল্ ওয়াসিলাতা ওয়ালফাযীলাহ্ ওয়াবআসহু মাকামাম্ মাহমূদানিল্লাযী ওয়াআদ্তাহু। অর্থ ঃ হে আল্লাহ! এই পূর্ণাঙ্গ আহবান ও চিরন্তন নামাজের রব! আপনি মুহাম্মাদ (সাঃআঃ) -কে ওয়াসিলাহ ও শ্রেষ্ঠত্ব দান করুন এবং তাকে আপনার প্রতিশ্রুত প্রশংসিত স্থানে উন্নীত করুন।
সহীহঃ বোখারি। আজান ও ইকামত -হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৩৯ মাগরিবের আযানের সময় যা পড়তে হয়
আবু দাউদ ৫৩০. উম্মু সালামাহ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) আমাকে শিক্ষা দিয়েছেন আমি যেন মাগরিবের আযানের সময় এ দুআ পাঠ করি ঃ
اللَّهُمَّ إِنَّ هَذَا إِقْبَالُ لَيْلِكَ وَإِدْبَارُ نَهَارِكَ وَأَصْوَاتُ دُعَاتِكَ فَاغْفِرْ لِي
আল্লাহুম্মা ইন্না হাযা ইক্ববালু লাইলিকা ওয়া ইদবারু নাহারিকা ওয়া আসওয়াতু দুআয়িকা ফাগফিরলী। অর্থ ঃহে আল্লাহ! এটা হচ্ছে আপনার রাত আসার সময়, আপনার দিন বিদায়ের মুহূর্ত এবং আপনাকে আহবানকারীর ডাক শোনার সময়। অতএব আপনি আমাকে ক্ষমা করুন। {৫২৯}
দুর্বল ঃ মিশকাত ৬৬৯। ৫২৯ তিরমিযী (অধ্যায়ঃ দাওয়াত, অনুঃ উম্মু সালামাহ্র দুআ, হাঃ ৩৫৮৯, ঈমাম তিরমিযী বলেন, এ হাদিসটি গরীব), বায়হাক্বী (১/৪১০), হাকিম(১/১৯৯) তিনি বলেন, এর সানাদ সহিহ, তবে বোখারি ও মুসলিম তার থেকে বর্ণনা করেননি। ঈমাম যাহাবীও তার সাথে একমত। মিশকাতের তাহক্বীক্বে শায়খ আলবানী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেনঃ এর সানাদ দুর্বল। সানাদে আবু কাসীর অজ্ঞাত লোক। যেমনটি বলেছেন ঈমাম নাববী ও অন্যরা। হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
আবদুল্লাহ ইবনি আম্র ইবনিল আস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি নবী[সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছেনঃ তোমরা যখন মুওয়ায্যিনকে আযান দিতে শুন, তখন সে যা বলে তোমরা তাই বল। অতঃপর আমার উপর দুরূদ পাঠ কর। কেননা, যে ব্যক্তি আমার ওপর একবার দরূদ পাঠ করে আল্লাহ তাআলা এর বিনিময়ে তার উপর দশবার রহমাত বর্ষণ করেন। অতঃপর আমার জন্যে আল্লাহর কাছে ওয়াসীলাহ্ প্রার্থনা কর। কেননা, ওয়াসীলাহ্ জান্নাতের একটি সম্মানজনক স্থান। এটা আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে একজনকেই দেয়া হইবে। আমি আশা করি, আমিই হব সে বান্দা। যে ব্যক্তি আল্লাহর কাছে আমার জন্যে ওয়াসীলাহ্ প্রার্থনা করিবে তার জন্যে [আমার] শাফাআত ওয়াজিব হয়ে যাবে।
[সহীহ মুসলিম ৭৩৫] [আবু দাউদ ৫২৩, সহিহ]
সাদ ইবনি আবু ওয়াক্কাস (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আযান শুনে বলেঃ
وَأَنَا أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ رَضِيتُ بِاللَّهِ رَبًّا وَبِمُحَمَّدٍ رَسُولاً وَبِالإِسْلاَمِ دِينًا
ওয়া আনা আশ্হাদু আল্লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহ্দাহু লা শারীকা লাহু ওয়া আন্না মুহাম্মাদান ‘আবদুহূ ওয়া রাসূলুহু, রাদীতু বিল্লা-হি রব্বান, ওয়া বিমুহাম্মাদিন রাসূলান, ওয়া বিলইসলা-মি দীনান, “এবং আমিও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, এক আল্লাহ ব্যতীত অন্য কোন ইলাহ নেই। তাহাঁর কোন শারীক নেই, মুহাম্মাদ (সাঃআঃ) তাহাঁর বান্দা ও রসূল, আমি আল্লাহকে রব হিসেবে, মুহাম্মাদ (সাঃআঃ) -কে রসূল হিসেবে এবং ইসলামকে দ্বীন হিসেবে পেয়ে সন্তুষ্ট।” – তাকে ক্ষমা করে দেয়া হইবে।
[আবু দাউদ ৫২৫, সহিহ]
১৫. আযানের যিকিরসমূহ
২২-(১) মুয়াযযিন যা বলে শ্রোতাও তা বলবে, তবে ‘হাইয়্যা ‘আলাস্সালাহ’ এবং ‘হাইয়্যা ‘আলাল ফালাহ’ এর সময় বলবে,
لاَ حَوْلَ وَلاَ قُوَّةَ إِلاَّ بِاللَّهِ
(লা-হাওলা ওয়ালা ক্বুওয়াতা ইল্লা বিল্লা-হ)
“আল্লাহর সাহায্য ছাড়া (পাপ কাজ থেকে দূরে থাকার) কোনো উপায় এবং (সৎকাজ করার) কোনো শক্তি কারো নেই।”
বুখারী, ১/১৫২, নং ৬১১, ৬১৩; মুসলিম, ১/২৮৮, নং ৩৮৩।
২৩-(২) বলবে,
وَأَنَا أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ وَأَنَّ مُحَمَّداً عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ، رَضِيتُ بِاللَّهِ رَبَّاً، وَبِمُحَمَّدٍ رَسُولاً، وَبِالْإِسْلاَمِ دِينَاً
(ওয়া আনা আশ্হাদু আল্লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহ্দাহু লা শারীকা লাহু ওয়া আন্না মুহাম্মাদান ‘আবদুহূ ওয়া রাসূলুহু, রাদীতু বিল্লা-হি রব্বান, ওয়া বিমুহাম্মাদিন রাসূলান, ওয়া বিলইসলা-মি দীনান)।
“আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, একমাত্র আল্লাহ ছাড়া কোনো হক্ব ইলাহ নেই, তাঁর কোনো শরীক নেই। আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর বান্দাহ ও রাসূল। আমি আল্লাহকে রব্ব, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে রাসূল এবং ইসলামকে দীন হিসেবে গ্রহণ করে সন্তুষ্ট।”
মুসলিম ১/২৯০, নং ৩৮৬।
মুয়াযযিন তাশাহহুদ (তথা আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার…) উচ্চারণ করার পরই শ্রোতারা এ যিকিরটি বলবে।
ইবন খুযাইমা, ১/২২০।
২৪-(৩) মুয়াযযিনের কথার জবাব দেওয়া শেষ করার পর রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওপর দুরূদ পড়বে।
মুসলিম ১/২৮৮, নং ৩৮৪।
২৫-(৪) তারপর বলবে,
اللَّهُمَّ رَبَّ هَذِهِ الدَّعْوَةِ التَّامَّةِ، وَالصَّلاَةِ الْقَائِمَةِ، آتِ مُحَمَّداً الْوَسِيلَةَ وَالْفَضِيلَةَ، وَابْعَثْهُ مَقَامَاً مَحمُوداً الَّذِي وَعَدْتَهُ، [إِنَّكَ لَا تُخْلِفُ الْمِيعَادَ]
(আল্লা-হুম্মা রববা হা-যিহিদ্ দা‘ওয়াতিত্ তা-ম্মাতি ওয়াস সালা-তিল ক্বা-’ইমাতি আ-তি মুহাম্মাদানিল ওয়াসীলাতা ওয়াল ফাদীলাতা ওয়াব্‘আছহু মাক্বা-মাম মাহমূদানিল্লাযী ওয়া‘আদতাহ, ইন্নাকা লা তুখলিফুল মী‘আদ)।
“হে আল্লাহ! এই পরিপূর্ণ আহ্বান এবং প্রতিষ্ঠিত সালাতের রব্ব! মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে উসীলা তথা জান্নাতের একটি স্তর এবং ফযীলত তথা সকল সৃষ্টির ওপর অতিরিক্ত মর্যাদা দান করুন। আর তাঁকে মাকামে মাহমূদে (প্রশংসিত স্থানে) পৌঁছে দিন, যার প্রতিশ্রুতি আপনি তাঁকে দিয়েছেন। নিশ্চয় আপনি প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেন না।”
বুখারী ১/২৫২, নং ৬১৪; আর দুই ব্রাকেটের মাঝখানের অংশ উদ্ধৃত করেছেন, বায়হাকী ১/৪১০। আর আল্লামা আবদুল আযীয ইবন বায রাহেমাহুল্লাহ তার ‘তুহফাতুল আখইয়ার’ গ্রন্থে এটার সনদকে হাসান বলেছেন, পৃ. ৩৮।
২৬-(৫) “আযান ও ইকামতের মধ্যবর্তী সময়ে নিজের জন্য দো‘আ করবে। কেননা ঐ সময়ের দো‘আ প্রত্যাখ্যান করা হয় না।”
তিরমিযী, নং ৩৫৯৪; আবূ দাউদ, নং ৫২৫; আহমাদ, নং ১২২০০; আরও দেখুন, ইরওয়াউল গালীল, ১/২৬২।
৫০০. মুহাম্মাদ ইবনিআবদুল মালিক ইবনি আবু মাহযূরাহ হইতে তার পিতা সূত্রে ও দাদার হইতে বর্ণিতঃ
তিনি (আবু মাহযুরাহ (রাঃআঃ)) বলিলেন, হে আল্লাহর রসূল! আমাকে আযানের নিয়ম শিখিয়ে দিন। তিনি আমার মাথার সন্মুখ ভাগে হাত বুলিয়ে দিয়ে বলিলেন, তুমি বলবেঃ
اللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ
আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার
–উচ্চেঃস্বরে। এরপর কিছুটা নীঁচু স্বরে বলবেঃ
أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ
আশহাদু আল-লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আশহাদু আল-লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ।
أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ
আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রসূলুল্লাহ, আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রসূলুল্লাহ।
حَىَّ عَلَى الصَّلاَةِ حَىَّ عَلَى الصَّلاَةِ
হাইয়্যাআলাস সালাহ, হাইয়্যাআলাস সালাহ।
حَىَّ عَلَى الْفَلاَحِ حَىَّ عَلَى الْفَلاَحِ
হাইয়্যাআলাল ফালাহ, হাইয়্যাআলাল ফালাহ।
ফাযরের নামায হলে বলবেঃ
الصَّلاَةُ خَيْرٌ مِنَ النَّوْمِ الصَّلاَةُ خَيْرٌ مِنَ النَّوْمِ
আসসলাতু খাইরুম মিনান নাউম, আসসলাতু খাইরুম মিনান নাউম (ঘুমের চেয়ে নামায উত্তম-দুবার)
اللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ
আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার,
لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ
লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ।
আজান ও ইকামত -হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
আযানের শব্দগুলো দু’বার করে এবং ইকামতের শব্দগুলো দু’বার করে
আবু মাহযূরাহ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃআঃ) সূত্রে উপরোক্ত হাদিসের অনুরূপ বর্ণিত আছে। তাতে রয়েছেঃ
আসসলাতু খাইরুম মিনান-নাওম, আসসলাতু খাইরুম মিনান-নাওম
الصَّلاَةُ خَيْرٌ مِنَ النَّوْمِ الصَّلاَةُ خَيْرٌ مِنَ النَّوْمِ الصَّلاَةُ خَيْرٌ مِنَ النَّوْمِ الصَّلاَةُ خَيْرٌ مِنَ النَّوْمِ
-(এটা) ফাজরের প্রথম আযানে (বলবে)।
ঈমাম আবু দাউদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, মুসাদ্দাদের বর্ণনা এর চেয়ে বেশি স্পষ্ট। তাতে রয়েছেঃ তিনি আমাকে ইক্বামাতের শব্দগুলো দু দুবার করে শিখিয়েছেন।
اللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ
আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার,
أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ
আশহাদু আল-লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আশহাদু আল-লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ।
أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ أَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللَّهِ
আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রসূলুল্লাহ, আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রসূলুল্লাহ।
حَىَّ عَلَى الصَّلاَةِ حَىَّ عَلَى الصَّلاَةِ
হাইয়্যাআলাস-সালাহ, হাইয়্যাআলাস-সালাহ,
حَىَّ عَلَى الْفَلاَحِ حَىَّ عَلَى الْفَلاَحِ
হাইয়্যাআলাল ফালাহ, হাইয়্যাআলাল ফালাহ,
اللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ
আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার,
لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ
লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ।
আব্দুর রাযযাক্ব বলেন, নামাজের ইক্বামাত দেয়ার সময়
ক্বাদ ক্বামাতিস সালাতু , ক্বাদ ক্বামাতিস সালাহ
দুবার বলবে। নাবী (সাঃআঃ) আবু মাহযুরাহ (রাঃআঃ) কে বলিলেন, (আমি যেভাবে আযান ও ইক্বামাতের শব্দগুলো শিখালাম) তুমি কি তা ঠিকমতো শুনেছ? বর্ণনাকারী বলেন, আবু মাহযুরাহ তার কপালের চুলগুলা কাটতেন না এবং সেগুলোতে সিঁথিও কাটতেন না। কেননা নাবী (সাঃআঃ) তাহাঁর (এই চুলের উপর) হাত বুলিয়েছিলেন।
[আবু দাউদ ৫০১ সহিহ, তবে আবু মাহযুরাহ তার কপালের চুল কাটতেন না… এ কথাটি বাদে।] [আবু দাউদ ৫০২, আবু মাহযুরাহ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিত] [আবু দাউদ ৫০৭, মুআয ইবনি জাবাল (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিত]
আযানের শব্দগুলো দু’বার করে এবং ইকামতের শব্দগুলো একবার করে
আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, বিলাল [রাদি.]-কে আযানের শব্দ জোড় সংখ্যায় এবং ইকামাতের শব্দ বেজোড় বলার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
ইয়াহ্ইয়া তার বর্ণনায় ইবনি উলাইয়্যাহ্-এর সূত্রে বলেছেন, তিনি আইয়ূব [রাদি.]-এর কাছে এ হাদীস বর্ণনা করলে তিনি বলিলেন, কিন্তু কাদ্কা- মাতিস্ সলা-হ্ শব্দটি ব্যতীত [এটি দুবার বলবে] বাকী শব্দগুলো একবার করে বলবে
[সহীহ মুসলিম ৭২৪, ৭২৫, ৭২৭] [আবু দাউদ ৫০৮, ৫০৯] [আবু দাউদ ৪৯৯, আবদুল্লা ইবনি যায়িদ হইতে বর্ণিত] [আবু দাউদ৫১০, ইবনি উমার (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিত, হাসান]
ইক্বামাতের জবাব
আবু উমামাহ (রাঃআঃ) সূত্রে অথবা নাবী (সাঃআঃ) -এর কোন সাহাবী হইতে বর্ণিতঃ
বিলাল (রাঃআঃ) ইক্বামাত দিলেন। তিনি
قَدْ قَامَتِ الصَّلاَةُ
ক্বাদ ক্বমাতিস সলাহ বললে নাবী (সাঃআঃ) বললেনঃ
أَقَامَهَا اللَّهُ وَأَدَامَهَا
“আক্বামাহাল্লাহু ওয়া আদামাহ।”
আর নাবী (সাঃআঃ) ইক্বামাতের অবশিষ্ট শব্দগুলোর জওয়াব ঐরূপ দিলেন যেরূপ উমার (রাঃআঃ) বর্ণিত পূর্বোক্ত হাদীসে আযান সম্পর্কে বলা হয়েছে। {৫২৭}
[আবু দাউদ ৫২৮]
Leave a Reply