যাকাত দেয়া এবং সদাক্বাতুল ফিতর এর বর্ণনা

যাকাত দেয়া এবং যাকাত দেয়া হইতে নিবৃত থাকা সম্পর্কে

যাকাত দেয়া এবং যাকাত দেয়া হইতে নিবৃত থাকা সম্পর্কে  >> সহীহ মুসলিম শরীফ এর মুল সুচিপত্র দেখুন >> নিম্নে মুসলিম শরীফ এর একটি অধ্যায়ের হাদিস পড়ুন

২. অধ্যায়: মুসলিম ব্যক্তির ক্রীতদাস ও ঘোড়ার উপর কোন যাকাত নেই
৩. অধ্যায়ঃ যাকাত দেয়া এবং যাকাত দেয়া হইতে নিবৃত থাকা সম্পর্কে।
৪. অধ্যায়ঃ সদাক্বাতুল ফিত্‌র বা ফিত্‌রার বর্ণনা
৫. অধ্যায়ঃ ঈদুল ফিত্‌রের নামাজের পূর্বে যাকাতুল ফিত্‌র আদায়ের নির্দেশ
৬. অধ্যায়ঃ যাকাত আদায় করিতে বাধাদানকারীর অপরাধ
৭. অধ্যায়ঃ যাকাত আদায়কারীকে সন্তুষ্ট করা
৮. অধ্যায়ঃ যারা যাকাত আদায় করিবে না তাদেরকে কঠোর শাস্তি দেয়া

২. অধ্যায়: মুসলিম ব্যক্তির ক্রীতদাস ও ঘোড়ার উপর কোন যাকাত নেই

২১৬৩. আবু হুরায়রাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুলাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ মুসলিম ব্যক্তির ক্রীতদাস ও ঘোড়ার উপর কোন যাকাত নেই।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২১৪২,ইসলামিক সেন্টার- ২১৪৫]

২১৬৪. আবু হুরায়রাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] বলেন: মুসলিম ব্যক্তির ক্রীতদাস ও ঘোড়ার উপর কোন সদাক্বাহ্ [যাকাত] ধার্য হয় না।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২১৪৩, ইসলামিক সেন্টার-২১৪৬]

২১৬৫. আবু হুরায়রাহ্ [রাদি.] এর সূত্রে নবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণীতঃ

অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২১৪৪, ইসলামিক সেন্টার- ২১৪৬{ক} ]

২১৬৬. আবু হুরায়রাহ্ [রাদি.] এর সূত্রে রসূলুলাহ [সাঃআঃ] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, গোলামের জন্য [মনিবের উপর ] যাকাত নেই। তবে সদাক্বায়ে ফিতর আছে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২১৪৫, ইসলামিক সেন্টার- ২১৪৭]

৩. অধ্যায়ঃ যাকাত দেয়া এবং যাকাত দেয়া হইতে নিবৃত থাকা সম্পর্কে

২১৬৭. আবু হুরায়রাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] উমর [রাদি.]-কে যাকাত আদায়ের জন্য পাঠালেন। অতঃপর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলা হলো, ইবনি জামীল এবং খালিদ ইবনি ওয়ালীদ ও রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর চাচা আব্বাস [রাদি.] যাকাত দিতে অস্বীকার করিয়াছেন। এখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, ইবনি জামীল দরিদ্র ছিল আল্লাহ তাকে ধনী করে দিয়েছেন সে প্রতিশোধ সে নিচ্ছে। আর খালিদ ইবনি ওয়ালীদের কাছে তোমরা যাকাত চেয়ে অবিচার করেছো। কারণ সে তার বর্ম এবং সম্পদ আল্লাহর পথে ওয়াক্বফ করে রেখেছে। আমার চাচা আব্বাস, তার এ বছরের যাকাত ও তার সমপরিমাণ আরও আমার জিম্মায়। অতঃপর তিনি বলিলেন, হে উমর! তুমি কি উপলব্ধি করছ না যে, কোন ব্যক্তির চাচা তার পিতার সমতুল্য।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২১৪৬, ইসলামিক সেন্টার- ২১৪৮]

৪. অধ্যায়ঃ সদাক্বাতুল ফিতর বা ফিতরার বর্ণনা

২১৬৮. ইবনি উমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] মুসলিম দাস-দাসী এবং স্বাধীন পুরুষ ও মহিলা সকলের উপর এক সা হিসেবে খেজুর বা প্রত্যেক রমাযান মাসে সদাক্বায়ে ফিতর নির্ধারণ করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২১৪৭, ইসলামিক সেন্টার- ২১৪৯]

২১৬৯. ইবনি উমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] প্রত্যেক স্বাধীন বা ক্রীতদাস ব্যক্তি সে প্রাপ্তবয়স্ক হোক বা অপ্রাপ্তবয়স্ক- সকলের উপরই এক সা খেজুর বা সদাক্বায়ি ফিতর নির্ধারণ করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২১৪৮, ইসলামিক সেন্টার- ২১৫০]

২১৭০. ইবনি উমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] আযাদ গোলাম, পুরুষ, স্ত্রী সবার উপর রমাযান মাসের ফিতরা ফরয করে দিয়েছেন। রাবী বলেন, এরপর কতক লোক অর্ধ সা গমকে এর সমান করে নিয়েছে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২১৪৯, ইসলামিক সেন্টার- ২১৫১]

২১৭১. আবদুল্লাহ ইবনি উমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এক সা খেজুর বা যব দিয়ে সদাক্বায়ি ফিত্রা আদায় করার নির্দেশ দিয়েছেন। পরবর্তীতে লোকেরা দু মুদ্দ গমের মূল্য এক সা খেজুর বা যবের সমান ধরে নেয়।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২১৫০, ইসলামিক সেন্টার- ২১৫২]

২১৭২. আবদুল্লাহ ইবনি উমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এক সা খেজুর বা যব রমাযানের পরে সদাক্বায়ি ফিত্রা ধার্য করিয়াছেন- সে [মুসলিম ব্যক্তি] স্বাধীন হোক বা ক্রীতদাস, পুরুষ বা মহিলা, ছোট বা বড় [অর্থাৎ সকলকেই ফিত্রা দিতে হইবে]।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২১৫১, ইসলামিক সেন্টার- ২১৫৩]

২১৭৩. আবু সাঈদ আল খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

আমরা এক সা খাদ্য অর্থাৎ গম, অথবা এক সা খেজুর বা এক সা পনির বা এক সা শুষ্ক আঙ্গুর সদাক্বায়ি ফিত্রা হিসেবে বের করতাম।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২১৫২, ইসলামিক সেন্টার- ২১৫৪]

২১৭৪. আবু সাঈদ আল খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর জীবদ্দশায় আমরা ছোট, বড়, স্বাধীন, ক্রীতদাস- প্রত্যেকের পক্ষ থেকে এক সা খাদ্য [অর্থাৎ গম] বা এক সা পনির, বা এক সা যব বা এক সা খেজুর বা এক সা শুষ্ক আঙ্গুর ফিতরা হিসেবে বের করতাম। আমরা এভাবেই ফিতরা আদায় করে আসছিলাম। শেষ পর্যন্ত যখন মুআবিয়াহ্ [রাদি.] হাজ্জ বা উমরার উদ্দেশে আমাদের মাঝে গমন করিলেন, তিনি লোকদের উদ্দেশে ওয়ায করিলেন এবং বললেনঃ আমি জানি যে, সিরিয়ার দু মুদ্দ লাল গম এক সা খেজুরের সমান। সুতরাং লোকেরা তার এ অভিমত গ্রহণ করিল।

আবু সাঈদ বলেন, কিন্তু আমি যতদিন জীবিত থাকব ততদিন পূর্বের ন্যায় যে পরিমাণে ও যে নিয়মে দিচ্ছিলাম সেভাবেই দিতে থাকব।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২১৫৩, ইসলামিক সেন্টার- ২১৫৫]

২১৭৫. আবু সাঈদ আল খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদের মাঝে বর্তমান থাকা অবস্থায় আমরা ছোট-বড়, আযাদ-গোলাম প্রত্যেকের পক্ষ থেকে তিন ধরনের জিনিস যথা- এক সা খেজুর অথবা এক সা পনির অথবা এক সা বার্লি [যব] দিয়ে ফিত্রা আদায় করতাম। আমরা এভাবেই ফিত্রা আদায় করে আসছিলাম। অতঃপর মুআবিয়াহ্ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় এসে রায় দিলেন যে, দুমুদ্দ গম এক সা খেজুরের সমান [বিনিময়ের দিক থেকে]।

আবু সাঈদ [রাদি.] বলেন, কিন্তু আমি পূর্বের নিয়মেই ফিত্রা আদায় করে আসছি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২১৫৪, ইসলামিক সেন্টার- ২১৫৭]

২১৭৬. আবু সাঈদ আল খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমরা তিন প্রকারের জিনিস যথা- পনির, খেজুর ও বার্লি দিয়ে ফিতরা আদায় করতাম।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২১৫৫, ইসলামিক সেন্টার- ২১৫৮]

২১৭৭. আবু সাঈদ আল খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

মুআবিয়াহ্ [রাদি.] এক সা খেজুরের পরিবর্তে অর্ধ সা গম [ফিতরার জন্য] নির্ধারণ করলে আবু সাঈদ [রাদি.] এর বিরোধিতা করিলেন এবং বলিলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সময় যেভাবে এক সা খেজুর বা শুকনা আঙ্গুর বা যব বা পনির দিতাম এখনো আমি সে পরিমাণেই দিব।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২১৫৬, ইসলামিক সেন্টার- ২১৫৬]

৫. অধ্যায়ঃ ঈদুল ফিত্‌রের নামাজের পূর্বে যাকাতুল ফিতর আদায়ের নির্দেশ

২১৭৮. ইবনি উমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] লোকদেরকে [ঈদের] নামাজের উদ্দেশে বের হওয়ার পূর্বে ফিতরা আদায়ের নির্দেশ দিয়েছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২১৫৭, ইসলামিক সেন্টার- ২১৫৯]

২১৭৯. আবদুল্লাহ ইবনি উমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ঈদের নামাজের উদ্দেশে বের হওয়ার পূর্বেই সদাক্বায়ি ফিতর পরিশোধ করার নির্দেশ দিয়েছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২১৫৮, ইসলামিক সেন্টার- ২১৬০]

৬. অধ্যায়ঃ যাকাত আদায় করিতে বাধাদানকারীর অপরাধ

২১৮০. আবু হুরায়রাহ্‌ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ সোনা-রূপার অধিকারী যেসব লোক এ হাক্ব [যাকাত] আদায় করে না, ক্বিয়ামাতের দিন তার ঐ সোনা-রূপা দিয়ে তার জন্য আগুনের অনেক পাত তৈরী করা হইবে, অতঃপর তা জাহান্নামের আগুনে গরম করা হইবে। অতঃপর তা দিয়ে কপালদেশ ও পার্শ্বদেশ ও পিঠে দাগ দেয়া হইবে। যখনই ঠাণ্ডা হয়ে আসবে পুনরায় তা উত্তপ্ত করা হইবে। এরূপ করা হইবে এমন একদিন যার পরিমাণ হইবে পঞ্চাশ হাজার বছরের সমান। আর তার এরূপ শাস্তি লোকদের বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত চলতে থাকিবে। অতঃপর তাদের কেউ পথ ধরবে জান্নাতের আর জাহান্নামের দিকে। জিজ্ঞেস করা হলো, হে আল্লাহর রসূল! উটের [মালিকের] কী অবস্থা হইবে? তিনি বলিলেন, যে উটের মালিক তার উটের হাক্ব আদায় করিবে না তার উটের হাক্বগুলোর মধ্যে পানি পানের তারিখে তার দুধ দোহন করে অন্যদেরকে দান করাও একটি হাক্ব, যখন ক্বিয়ামাতের দিন আসবে তাকে এক সমতল ময়দানে উপুড় করে ফেলা হইবে। অতঃপর তার উটগুলো মোটাতাজা হয়ে আসবে। এর বাচ্চাগুলোও এদের অনুসরণ করিবে। এগুলো আপন আপন খুর দ্বারা তাকে পায়ে মাড়াতে থাকিবে এবং মুখ দ্বারা কামড়াতে থাকিবে। এভাবে যখন একটি পশু তাকে অতিক্রম করিবে অপরটি অগ্রসর হইবে। সারাদিন তাকে এরূপ শাস্তি দেয়া হইবে। এ দিনের পরিমাণ হইবে পঞ্চাশ হাজার বছরের সমান। অতঃপর বান্দাদের বিচার শেষ হইবে। তাদের কেউ জান্নাতের দিকে আর কেউ জাহান্নামের দিকে পথ ধরবে।

অতঃপর জিজ্ঞেস করা হলো- হে আল্লাহর রসূল! গরু-ছাগলের [মালিকদের] কী অবস্থা হইবে? উত্তরে তিনি বলিলেন, যেসব গরু ছাগলের মালিক এর হাক্ব আদায় করিবে না ক্বিয়ামাতের দিন তাকে এক সমতল ভূমিতে উপুর করে ফেলে রাখা হইবে। আর তার সে সব গরু ছাগল তাকে শিং দিয়ে আঘাত করিতে থাকিবে এবং খুর দিয়ে মাড়াতে থাকিবে। সেদিন তার একটি গরু বা ছাগলের শিং বাঁকা বা শিং ভাঙ্গা থাকিবে না এবং তাকে মাড়ানোর ব্যাপারে একটিও অনুপস্থিত দেখিতে পাবে না। যখন এদের প্রথমটি অতিক্রম করিবে দ্বিতীয়টা এর পিছে পিছে এসে যাবে। সারাদিন তাকে এভাবে পিষা হইবে। এ দিনের পরিমাণ হইবে পঞ্চাশ হাজার বছরের সমান। অতঃপর বান্দাদের বিচার শেষ হইবে এবং তাদের কেউ জান্নাতের দিকে আর কেউ জাহান্নামের দিকে পথ ধরবে।

অতঃপর জিজ্ঞেস করা হলো, হে আল্লাহর রসূল! ঘোড়ার [মালিকের] কী অবস্থা হইবে? তিনি [উত্তরে] বলিলেন, ঘোড়া তিন প্রকারের- [ক] যে ঘোড়া তার মালিকের জন্য গুনাহের কারণ হয়, [খ] যে ঘোড়া তার মালিকের পক্ষে আবরণ স্বরূপ এবং [গ] যে ঘোড়া মালিকের জন্য সাওয়াবের কারণ স্বরূপ। বস্তুতঃ সে ঘোড়াই তার মালিকের জন্য বোঝা বা গুনাহের কারণ হইবে, যা সে লোক দেখানোর জন্য অহংকার প্রকাশের জন্য এবং মুসলিমদের বিরুদ্ধে শত্রুতা করার উদ্দেশে পোষে। আর যে ব্যক্তি তার ঘোড়াকে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদের জন্য পোষে এবং এর পিঠে সওয়ার হওয়া এবং খাবার ও ঘাস দেয়ার ব্যাপারে আল্লাহর হাক্ব ভুলে না, এ ঘোড়া তার দোষ-ত্রুটি গোপন রাখার জন্য আবরণ হইবে।

আর যে ব্যক্তি মুসলিমদের সাহায্যের জন্য আল্লাহর রাস্তায় ঘোড়া পোষে এবং কোন চরণভূমি বা ঘাসের বাগানে লালন পালন করিতে দেয় তার এ ঘোড়া তার জন্য সাওয়াবের কারণ হইবে। তার ঘোড়া চারণভূমি অথবা বাগানে যা কিছু খাবে তার সমপরিমাণ তার জন্য সাওয়াব লেখা হইবে। এমনকি এর গোবর ও প্রস্রাবে সাওয়াব লেখা যাবে। আর যদি তা রশি ছিঁড়ে একটি বা দুটি মাঠেও বিচরণ করে তাহলে তার পদচিহ্ন ও গোবরের সমপরিমাণ নেকী তার জন্য লেখা হইবে। এছাড়া মালিক যদি কোন নদীর তীরে নিয়ে যায়- আর সে নদী থেকে পানি পান করে অথচ তাকে পানি পান করানোর ইচ্ছা মালিকের ছিল না তথাপি পানির পরিমাণ তার আমালনামায় সাওয়াব লেখা হইবে।

অতঃপর জিজ্ঞেস করা হলো, হে আল্লাহর রসূল! গাধা সম্পর্কে বলুন। তিনি বলিলেন, গাধা সম্পর্কে কোন আয়াত আমার কাছে অবতীর্ণ হয়নি। তবে ব্যাপক অর্থবোধক এ আয়াতটি আমার উপর অবতীর্ণ হয়েছে, যে ব্যক্তি অণু পরিমাণ একটি ভাল কাজ করিবে সে তার শুভ প্রতিফল পাবে আর যে এক অণু পরিমাণ মন্দ কাজ করিবে সে তার মন্দফল ভোগ করিবে [অর্থাৎ আলোচ্য আয়াত দ্বারা বুঝা যায় যে, গাধার যাকাত দিলে তারও সাওয়াব পাওয়া যাবে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২১৫৯, ইসলামিক সেন্টার- ২১৬১]

২১৮১. যায়দ ইবনি আসলাম [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি এ সূত্রে হাফস্ ইবনি মায়সারাহ্ কর্তৃক বর্ণিত [উপরের] হাদীসের অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন। মায়সারার হাদীসের সর্বশেষ মর্মানুযায়ী তিনি বলেছেন, [আরবী] কিন্তু তিনি [আরবী] বলেননি এবং এ হাদীসে [আরবী] উল্লেখ করিয়াছেন এবং [আরবী] বলেছেন। এতে আরো উল্লেখ আছে “উটের একটি দুধের বাচ্চাও যাকাতের হিসাব থেকে বাদ যাবে না।” এ সূত্রে আরো আছে, সঞ্চিত সোনা-রূপা গরম করে তা দিয়ে তার উভয় পার্শ্বদেশ, কপাল ও পিঠে দাগ দেয়া হইবে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২১৬০, ইসলামিক সেন্টার- ২১৬২]

২১৮২. আবু হুরায়রাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে সব ধনাঢ্য ব্যক্তি নিজেদের ধন-সম্পদের যাকাত আদায় করে না, ক্বিয়ামাতের দিন তাদের এ সম্পদ জাহান্নামের আগুনে গরম করে পাত তৈরী করা হইবে এবং তা দিয়ে তাদের দেহের উভয় পার্শ্ব ও ললাটে দাগ দেয়া হইবে। তার শাস্তি বান্দাদের বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত চলতে থাকিবে। এ সময়কার একটি দিনের পরিমাণ হইবে পঞ্চাশ হাজার বছরের সমান। অতঃপর কেউ তার পথ ধরবে জান্নাতের দিকে আর কেউ জাহান্নামের দিকে। আর যে সব উটের মালিকেরা যাকাত আদায় করিবে না তাদেরকে একটি মাঠে উপুড় করে শুইয়ে রাখা হইবে এবং ঐ সব উট স্থুলদেহ নিয়ে আসবে যেমনটি তারা পৃথিবীতে ছিল এবং এগুলো তাদের পা দিয়ে মাড়াতে মাড়াতে অগ্রসর হইবে। এভাবে যখনই সে দলটি অতিক্রম করিবে পুনরায় এর প্রথম দল এসে পৌঁছবে। এগুলো এভাবে তাদেরকে মাড়াতে থাকিবে যতক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহ তাআলা তাহাঁর বান্দাদের বিচার শেষ না করবেন। আর এ কাজ এমন একদিন করা হইবে, যা পঞ্চাশ হাজার বছরের সমান হইবে। অতঃপর কেউ তার পথ ধরবে- হয় জান্নাতের দিকে না হয় জাহান্নামের দিকে। আর যে সব ছাগলের মালিকরা তার যাকাত আদায় করিবে না, তাদেরকে একটি সমতল মাঠে উপুড় করে ফেলে রাখা হইবে এবং তার সে ছাগলগুলো যেমনটি পৃথিবীতে ছিল তার চেয়ে মোটা তাজা অবস্থায় এসে তাদের খুর দিয়ে দলিত করিতে এবং শিং দিয়ে আঘাত করিতে করিতে অগ্রসর হইবে। অথচ সেদিন কোন একটি শিং বাঁকা, শিংহীন বা শিং ভাঙ্গা হইবে না। যখন এদের শেষ দল অতিক্রম করিবে পুনরায় প্রথম দল এসে পৌঁছবে। আর এভাবে আযাব চলতে থাকিবে যতক্ষণ না আল্লাহ তাআলা তার বান্দাদের বিচার সমাপ্ত করেন। এ শাস্তি এমন দিনে হইবে যার পরিমাণ হইবে তোমাদের হিসাবানুসারে পঞ্চাশ হাজার বছরের সমান। অতঃপর কেউ তার পথ ধরবে জান্নাতের দিকে আর কেউ জাহান্নামের দিকে। বর্ণনাকারী সুহায়ল বলেন, তিনি গরুর কথা বলেছেন কিনা তা আমি জানি না। এবার সাহাবীগণ জিজ্ঞেস করিলেন, হে আল্লাহর রসূল! ঘোড়া সম্পর্কে কী হইবে? উত্তরে তিনি বলিলেন, [আরবী] ঘোড়ার ললাটে কল্যাণ রয়েছে; অথবা বলিলেন, [আরবী] ঘোড়া তার কপালের সাথে আবদ্ধ করা হয়েছে। বর্ণনাকারী সুহায়ল বলেন, আমার সন্দেহ হচ্ছে তিনি হয়ত বলেছেনঃ [আরবী] ঘোড়ার মধ্যে ক্বিয়ামাত পর্যন্ত কল্যাণ থাকিবে। অতঃপর তিনি বলেন, ঘোড়া তিন প্রকার। ঘোড়া কারো জন্য গুনাহের কারণ, কারো জন্য আবরণ, আবার কারো জন্য সাওয়াবের বিষয়। ঘোড়া সাওয়াবের কারণ হইবে সে ব্যক্তির জন্য যে আল্লাহর পথে জিহাদের উদ্দেশে পোষে এবং এজন্য প্রস্তুত রাখে। এ ঘোড়া যা কিছু খাবে বা পান করিবে তার মালিকের জন্য সাওয়াবের কারণ হইবে। যদি সে এটাকে কোন মাঠে চরায় তাহলে এ ঘোড়া যা খাবে তা তার আমালনামায় সাওয়াব হিসেবে লেখা হইবে। আর যদি কোন জলাশয়ে এ ঘোড়া পানি পান করে তবে এর প্রতি ফোঁটা পানির বিনিময়ে তার জন্য সাওয়াব লেখা হইবে। এমনকি এর প্রস্রাব ও পায়খানার পরিবর্তেও মালিক সাওয়াব পাবে বলে উল্লেখ করিয়াছেন। আর যদি এটি দু একটি টিলা অতিক্রম করে তাহলে প্রত্যেক কদম অতিক্রমের বিনিময়েও সাওয়াব লেখা হইবে। আর সেই ঘোড়া মালিকের জন্য আবরণ স্বরূপ যা সে অপরের উপকার করার জন্য এবং নিজের সৌন্দর্যের জন্য লালন পালন করেছে এবং সে সকল সময়ই এর পেট ও পিঠের হাক্ব আদায় করেছে [অর্থাৎ ঘোড়ার পানাহারের প্রতি যত্নবান ছিল এবং বন্ধু ও গরীবদেরকে মাঝে মাঝে চড়তে ও ব্যবহার করিতে দিয়েছে]। আর যে ঘোড়া তার মালিকের জন্য গুনাহের কারণ হইবে তা হলো- যে একে লোক দেখানো, গর্ব এবং অসৎ উদ্দেশ্য চরিতার্থের জন্য লালন পালন করেছে। অতঃপর সাহাবীগণ বলিলেন, হে আল্লাহর রসূল! গাধা সম্পর্কে কী হইবে? উত্তরে তিনি বলিলেন, গাধা সম্পর্কে আমার কাছে কোন আয়াত নাযিল হয়নি। তবে এ অতুলনীয় ও ব্যাপক অর্থবোধক আয়াতটি নাযিল হয়েছে,

 فَمَنْ يَعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ خَيْرًا يَرَهُ * وَمَنْ يَعْمَلْ مِثْقَالَ ذَرَّةٍ شَرًّا يَرَهُ‏

“যে ব্যক্তি অণু পরিমাণ ভাল কাজ করিবে সে তার প্রতিদান পাবে, আর যে ব্যক্তি এক অণু পরিমান মন্দ কাজ করিবে সেও তার প্রতিফল ভোগ করিবে”- [সূরাহ্ যিলযাল ৯৯: ৭-৮]।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২১৬১, ইসলামিক সেন্টার- ২১৬৩]

২১৮৩. সুহায়ল [রাদি.] থেকে এ সূত্র হইতে বর্ণীতঃ

অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২১৬২, ইসলামিক সেন্টার- ২১৬৪]

২১৮৪. সুহায়ল ইবনি আবু সালিহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] থেকে এ সূত্র হইতে বর্ণীতঃ

অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে। তবে তিনি [আরবী] এর স্থলে [আরবী] বলেছেন এবং ললাটে দাগ দেয়ার কথা উল্লেখ করা ছাড়া কেবল “পার্শ্ব এবং পার্শ্ব দাগ দেয়া হইবে” কথাটি উল্লেখ করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২১৬৩, ইসলামিক সেন্টার- ২১৬৫]

২১৮৫. আবু হুরায়রাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ “যখন কোন ব্যক্তি তার আল্লাহর হাক্ব অথবা তার উটের সদাক্বাহ্ [যাকাত] আদায় করবেন না ….. অবশিষ্ট বর্ণনা সুহায়ল থেকে তাহাঁর পিতার সূত্রে বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২১৬৪, ইসলামিক সেন্টার- ২১৬৬]

২১৮৬. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ আনসারী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছিঃ উটের যে কোন মালিক তার হাক্ব [যাকাত] আদায় করিবে না, ক্বিয়ামাতের দিন সে উপস্থিত হইবে এবং উটগুলোও কয়েকগুন বড় হয়ে আসবে। অতঃপর তাকে এক সমতল মাঠে উপুড় করে ফেলা হইবে। এসব পশু নিজ নিজ পা ও খুর দিয়ে তাকে পদদলিত করিতে থাকিবে। আর যে সব গরুর মালিক এর হাক্ব [যাকাত] আদায় করিবে না, ক্বিয়ামাতের দিন ঐ গরুগুলো অনেক মোটা তাজা হয়ে আসবে। তাকে এক সমতল মাঠে ফেলে এগুলো তাকে শিং দিয়ে আঘাত করিবে এবং পা দিয়ে মাড়াবে। আর যে সব ছাগলের মালিক এর হাক্ব আদায় করিবে না ক্বিয়ামাতের দিন এগুলো অনেক অনেকগুন বড় দেহ নিয়ে এসে তাকে এক সমতল ময়দানে ফেলে শিং মারতে থাকিবে এবং পা দিয়ে মারতে থাকিবে আর এগুলোর কোন একটিও শিংহীন বা শিং ভাঙ্গা হইবে না। যে সব ধনাগারের মালিক এর হাক্ব আদায় করিবে না ক্বিয়ামাতের দিন তার গচ্ছিত সম্পদ একটি টাক মাথার বিষধর অজগর সাপ হয়ে মুখ হাঁ করে তার পিছু ধাওয়া করিবে। মালিক পালাবার জন্য দৌড়াতে থাকিবে আর পিছন থেকে ঐ সাপ তাকে ডেকে ডেকে বলিতে থাকিবে- তোমার গচ্ছিত সম্পদ নিয়ে যাও। কারণ এগুলো আমার প্রয়োজন নেই। অতঃপর যখন সে [মালিক] দেখবে এ সাপ তাকে ছাড়ছে না, তখন সে এর মুখে নিজের হাত ঢুকিয়ে দিবে। সাপ তার হাত উটের মত চিবাতে থাকিবে। যুবায়র [রাদি.] বলেন, আমি উবায়দুল্লাহ ইবনি উমায়রকেও এই একই কথা বলিতে শুনেছি। অতঃপর আমরা জাবির ইবনি আবদুল্লাহকে এ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনিও উবায়দ বিন উমায়রর অনুরূপ কথা বলিলেন।

আবু যুবায়র বলেন, আমি উবায়দ ইবনি উমায়রকে বলিতে শুনেছি- এক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করিল, হে আল্লাহর রসূল! উটের হাক্ব কী? তিনি বললেনঃ পানির কাছে বসে দুধ দোহন করা, তার পানির বালতি ধার দেয়া, আর প্রয়োজনের জন্য উট চাইলে তাও ধার দেয়া, এর বীর্য [বীজ] দেয়া এবং আল্লাহর পথে এর পিঠে অপর লোকদেরকে [জিহাদের জন্য] আরোহণ করিতে দেয়া।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২১৬৫, ইসলামিক সেন্টার- ২১৬৭]

২১৮৭. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুলাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে সব উট, গরু ও ছাগলের মালিক এর হাক্ব আদায় করিবে না ক্বিয়ামাতের দিন তাকে এক সমতল মাঠে উপুড় করে ফেলে রাখা হইবে; অতঃপর খুর বিশিষ্ট জন্তু তাকে খুর দিয়ে দলিত মথিত করিবে এবং শিং বিশিষ্ট জন্তু তাকে শিং দিয়ে আঘাত করিবে। আর সে দিন এর কোন একটি জন্তুই শিং বিহীন বা শিং ভাঙ্গা হইবে না। আমরা [সাহাবীগন] বললাম, হে আল্লাহর রসূল! এদের হাক্ব কি? তিনি বললেনঃ এদের নরগুলো [মাদীগুলোর জন্য] বীর্য গ্রহনের জন্য দেয়া, পানি পানের জন্য বালতি চাইলে দেয়া, দুধ পান করিতে চাইলে পান করানো, পানি পান করার সময় দুধ দোহন করা এবং গরীব মিসকিনকে দেয়া, আর আল্লাহর পথে পিঠে অপরকে আরোহন করানো এবং যোদ্ধা বহনের জন্য চাইলে দেয়া। আর যে সম্পদের মালিক তার মালের যাকাত আদায় করিবে না, ক্বিয়ামাতের দিন তার এ মাল সম্পদকে একটি টাকপড়া বিষধর অজগর সাপে রুপান্তরিত করা হইবে এবং সে তার মালিকের পিছে ধাওয়া করিবে। মালিক পালানোর উদ্দেশ্যে যেখানে যাবে এটাও সেখানে গিয়ে উপস্থিত হইবে। তাকে বলা হইবে, এ হল তোমার সে সম্পদ যাতে তুমি কৃপনতার আশ্রয় নিয়েছিলে এবং যাকাত দেয়া থেকে বিরত ছিলে। অতঃপর যখন সে দেখবে যে সাপের কবল থেকে আর পালানোর কোন উপায় নেই তখন সে তার মুখে হাত ঢুকিয়ে দিবে এবং সাপ তার হাত উটের মত চিবাতে থাকিবে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২১৬৬, ইসলামিক সেন্টার- ২১৬৮]

৭. অধ্যায়ঃ যাকাত আদায়কারী কে সন্তুষ্ট করা

২১৮৮. জারীর ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, কয়েকজন গ্রাম্য লোক এসে রসূলুলাহ [সাঃআঃ] এর কাছে অভিযোগ করিলেন যে, কোন কোন যাকাত আদায়কারী আমাদের কাছে গিয়ে আমাদের উপরে যুলুম করে। [ভাল ভাল জন্তু ও মালামাল যাকাত হিসেবে নিয়ে আসে অথচ শারীআতের বিধানানুযায়ী মধ্যম ধরনের বস্তু যাকাত হিসেবে গ্রহন করা উচিৎ] বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর রসূলুলাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, “তোমরা যাকাত আদায়কারীদেরকে সন্তষ্ট করে দিবে [যদিও তার কিছু বাড়াবাড়ি করে]।

জারীর [রাদি.] বলেন, রসূলুলাহ [সাঃআঃ] – এর কাছে এ কথা শুনার পর যখনই কোন যাকাত আদায়কারী আমার কাছে আসত আমি তাকে সন্তষ্ট না করে ছাড়তাম না।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২১৬৭, ইসলামিক সেন্টার- ২১৬৯]

২১৮৯. মুহাম্মাদ ইবনি আবু ইসমাঈল [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] তারা সকলেই মুহাম্মাদ ইবনি ইসমাঈল [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

এ সানাদে অনুরূপ বর্ণনা করিয়াছেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২১৬৮, ইসলামিক সেন্টার- ২১৭০]

৮. অধ্যায়ঃ যারা যাকাত আদায় করিবে না তাদেরকে কঠোর শাস্তি দেয়া

২১৯০. আবু যার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুলাহ [সাঃআঃ] ক্বাবার ছায়ায় বসা ছিলেন। এমন সময় আমি গিয়ে তার কাছে উপস্থিত হলাম। তিনি আমাকে দেখে বলিলেন, কাবার প্রভুর শপথ! তারাই ক্ষতির মধ্যে নিমজ্জিত। বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর আমি গিয়ে তার কাছে বসলাম কিন্তু অনতিবিলম্বে দাঁড়িয়ে বললাম, “হে আল্লাহর রসূল! আমার মাতা-পিতা আপনার জন্য কুরবান হোক, সে ক্ষতিগ্রস্ত লোকেরা কারা?” তিনি বলেনঃ এরা হল সব ধনাঢ্য ব্যক্তি তবে তারা নয় এদিকে ওদিকে সামনে থেকে, পিছন থেকে, ডান দিক থেকে ও বাম দিক থেকে অকাতরে [আল্লাহর পথে] খরচ করে। তবে সংখ্যায় এরা খুব কম। আর যে সব উট, গরু ও ছাগলের মালিক এর যাকাত আদায় করিবে না, কিয়ামতের দিন উট, গরু, ছাগল মোটা-তাজা অবস্থায় মালিকের নিকট আসবে এবং তাকে [মালিককে] ওদের পা ও ক্ষুর দিয়ে দলিত মথিত করিবে এবং শিং দিয়ে আঘাত করিবে। এর শেষ পশুটি অতিক্রম করলে প্রথমটি পুনরায় এসে ঐরূপ করিতে আরম্ভ করিবে। আর এভাবে চলতে থাকিবে যতক্ষন না বান্দাদের বিচার শেষ হইবে।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২১৬৯, ইসলামিক সেন্টার- ২১৭১]

২১৯১. আবু যার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুলাহ [সাঃআঃ] কাবাহ শরীফের ছায়ায় বসে ছিলেন। এমন সময় আমি তাহাঁর কাছে গিয়ে হাজির হলাম। হাদীসটির বাকি অংশে বর্ণনাকারী ওয়াকী-এর বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ। পার্থক্য শুধু এতটুকু যে, তিনি বলেছেনঃ “সে মহান প্রভুর শপথ যাঁর হাতে আমার জীবন! যেসব লোক উট, গরু ও ছাগল রেখে মারা যায় এবং যাকাত আদায় করেনি ….।“

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২১৭০, ইসলামিক সেন্টার- ২১৭২]

২১৯২. আবু হুরায়রাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুলাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যদি উহুদ পাহাড় আমার জন্য স্বর্ণে পরিনত হয় এবং তিন দিনের বেশী আমার কাছে এক দীনারও অবশিষ্ট থাকুক-এটা আমি চাই না। তবে আমার উপর যে ঋণ রয়েছে তা পরিশোধ করার পরিমাণ অর্থ আমার কাছে থাকুক।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২১৭১, ইসলামিক সেন্টার- ২১৭৩]

২১৯৩. মুহাম্মাদ ইবনি যিয়াদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি আবু হুরায়রাহ [রাদি.] থেকে নবী [সাঃআঃ] -এর উপরের হাদীসের অনুরূপ হাদীস শুনেছি।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ২১৭২, ইসলামিক সেন্টার- ২১৭৪]


Posted

in

by

Comments

One response to “যাকাত দেয়া এবং সদাক্বাতুল ফিতর এর বর্ণনা”

Leave a Reply