Lu Lu Wal Marjan Pdf কাসামাহ অধ্যায়
Lu Lu Wal Marjan Pdf কাসামাহ অধ্যায় , এই পর্বের হাদীস =১২ টি (১০৮৫-১০৯৬) >> আল লুলু ওয়াল মারজান এর মুল সুচিপত্র দেখুন
পর্ব-২৮ঃ কাসামাহ
২৮/১. আল-কাসামাহ
২৮/২. ধর্মত্যাগী মুরতাদ ও যারা আল্লাহ ও তাহাঁর রসূলের বিরুদ্ধে লড়াই করে তাহাদের বিধান।
২৮/৩. পাথর বা কোন ভারী জিনিস দ্বারা কেউ নিহত হলে কিসাস নেয়ার প্রমাণ এবং মহিলাকে হত্যা করার অপরাধে পুরুষকে হত্যা করা।
২৮/৪. কোন আক্রান্ত ব্যক্তি কোন আক্রমণকারীকে প্রতিহত করিতে গিয়ে আক্রমণকারী যদি মারা যায় অথবা তার অঙ্গহানি হয় তাহলে কোন দায়-দায়িত্ব নেই।
২৮/৫. দাঁত ও এ জাতীয় ক্ষতি যাতে কিসাসের হুকুম বিদ্যমান।
২৮/৬. কোন্ কোন্ ক্ষেত্রে মুসলিমের রক্ত বৈধ।
২৮/৭. হত্যার প্রথম প্রচলনকারীর পাপের বর্ণনা।
২৮/৮. ক্বিয়ামাতের দিন রক্তের [বিনিময়ে] রক্ত দ্বারা প্রতিশোধ গ্রহণ এবং সেদিন মানুষের মাঝে সর্বপ্রথম রক্তের বিষয়ে ফায়সালা করা হইবে।
২৮/৯. মুসলিমদের রক্ত, সমভ্রম ও সম্পদ [বিনষ্ট করা] কঠোরভাবে নিষিদ্ধ।
২৮/১১. পেটের বাচ্চার রক্তপণ, অনিচ্ছাকৃত হত্যার জন্য রক্তপণ প্রদানের অপরিহার্যতা ও শিবহে আমদের দিয়াত বা রক্তপণ অপরাধীর অভিভাবকের উপর ওয়াজিব।
২৮/১. আল-কাসামাহ
১একটি হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে বাদীর পক্ষ হয়ে ৫০ জন লোকের শপথ গ্রহণে যখন কোন সাক্ষী পাওয়া যায় না।
১০৮৫. সাহ্ল ইবনি আবু হাস্মাহ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
একবার আবদুল্লাহ ইবনি সাহ্ল ও মুহাইসাহ্ ইবনি মাসউদ [রাদি.] খাইবারে পৌঁছে উভয়েই খেজুরের বাগানের ভিন্ন ভিন্ন পথে চলে গেলেন। সেখানে আবদুল্লাহ ইবনি সাহ্ল [রাদি.]-কে হত্যা করা হয়। এ ঘটনার পর আবদুর রহমান ইবনি সাহ্ল ও ইবনি মাসউদ [রাদি.]-এর দুই ছেলে হুওয়াইসাহ[রাদি.] ও মুহাইসাহ [রাদি.] নাবী [সাঃআঃ] -এর কাছে এলেন এবং তাহাঁর কাছে নিহত ব্যক্তির কথা বলিতে লাগলেন। আবদুর রহমান [রাদি.] কথা শুরু করিলেন। তিনি ছোট ছিলেন, নাবী [সাঃআঃ] তাহাদের বললেনঃ তুমি বড়দের সম্মান করিবে। বর্ণনাকারী ইয়াহ্ইয়া বলেনঃ কথা বলার দায়িত্ব যেন বড়রা পালন করে। তখন তারা তাহাদের লোক সম্পর্কে কথা বলিলেন। নাবী [সাঃআঃ] তাহাদের বললেনঃ তোমাদের পঞ্চাশ জন লোক কসমের মাধ্যমে তোমাদের নিহত ভাইয়ের হত্যার হক প্রমাণ কর। তাঁরা বললেনঃ হে আল্লাহ্র রসূল [সাঃআঃ]! ওরা তো কাফির সম্প্রদায়। তারপর নাবী [সাঃআঃ] নিজের তরফ থেকে তাহাদের নিহত ব্যক্তির ফিদ্ইয়া দিয়ে দিলেন।
সাহ্ল [রাদি.] বললেনঃ আমি সেই উটগুলো থেকে একটি উট পেলাম। সেটি নিয়ে আমি যখন আস্তাবলে গেলাম তখন উটনীটি তার পা দিয়ে আমাকে লাথি মারলো।
[বোখারী পর্ব ৭৮ অধ্যায় ৮৯ হাদীস নং ৬১৪২-৬১৪৩; মুসলিম ২৮/১, হাঃ ১৬৬৯] Lu lu wal marjan pdf -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
২৮/২. ধর্মত্যাগী মুরতাদ ও যারা আল্লাহ ও তাহাঁর রসূলের বিরুদ্ধে লড়াই করে তাহাদের বিধান।
১০৮৬. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
উক্ল গোত্রের আটজন লোক রসূলূল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর কাছে এল। তারা তাহাঁর হাতে ইসলামের বায়আত গ্রহণ করিল। কিন্তু সে এলাকার আবহাওয়া তাহাদের অনুকূলে হল না এবং তাহাদের শরীর অসুস্থ হয়ে পড়ল। তারা রসূলুল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম]-এর কাছে এর অভিযোগ করিল। তিনি তাহাদেরকে বলিলেন, তোমরা কি আমার রাখালের সঙ্গে তার উটপালের কাছে গিয়ে সেগুলোর দুধ ও পেশাব পান করিবে না? তারা বলিল, হ্যাঁ। তারপর তারা তথায় গিয়ে সেগুলোর দুধ ও পেশাব পান করিল। ফলে তারা সুস্থ হয়ে গেল। এরপর তারা রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর রাখালকে হত্যা করে উটগুলো হাঁকিয়ে নিয়ে চলল। এ সংবাদ রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর কাছে পৌঁছলে তিনি তাহাদের পশ্চাদ্ধাবনের লক্ষ্যে লোক পাঠালেন। তারা ধরা পড়ল এবং তাহাদেরকে নিয়ে আসা হল। তাহাদের সম্বন্ধে নির্দেশ প্রদান করা হল। তাহাদের হাত-পা কাটা হল, লৌহশলাকা দ্বারা তাহাদের চক্ষু ফুঁড়ে দেয়া হল। এরপর উত্তপ্ত রৌদ্রে তাহাদেরকে ফেলে রাখা হল। অবশেষে তারা মারা গেল।
[বোখারী পর্ব ৮৭ অধ্যায় ২২ হাদীস নং ৬৮৯৯; মুসলিম ২৮/২, হাঃ ১৬৭১] Lu lu wal marjan pdf -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ হাসান হাদীস
২৮/৩. পাথর বা কোন ভারী জিনিস দ্বারা কেউ নিহত হলে কিসাস নেয়ার প্রমাণ এবং মহিলাকে হত্যা করার অপরাধে পুরুষকে হত্যা করা।
১০৮৭. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর যুগে এক ইয়াহূদী একটি বালিকার উপর নির্যাতন করে তার অলঙ্কারাদি ছিনিয়ে নেয়। আর [পাথর দ্বারা] তার মস্তক চূর্ণ করে। সে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করার পূর্ব মুহূর্তে তার পরিবারের লোকেরা তাকে রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর কাছে নিয়ে আসে। তখন সে নিশ্চুপ ছিল। রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] [একজন নির্দোষ ব্যক্তির নাম উল্লেখ পূর্বক] তাকে জিজ্ঞেস করলেনঃ তোমাকে সে হত্যা করেছে? অমুক? সে মাথার ইশারায় বললঃ না। তিনি অন্য এক নিরপরাধ ব্যক্তির নাম ধরে বলিলেন, তবে কি অমুক? সে ইশারায় জানাল, না। এবার রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] হত্যাকারীর নাম উল্লেখ করে বললেনঃ তবে অমুক ব্যক্তি মেরেছে কি? সে মাথা নেড়ে বললঃ জি, হ্যাঁ। এরপর রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর আদেশ উক্ত ব্যক্তির মাথা দুপাথরের মাঝখানে রেখে চূর্ণ করা হলো।
[বোখারী পর্ব ৬৮ অধ্যায় ২৪ হাদীস নং ৫২৯৫; মুসলিম ২৮/৩,হাঃ ৮৫২] Lu lu wal marjan pdf -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
২৮/৪. কোন আক্রান্ত ব্যক্তি কোন আক্রমণকারীকে প্রতিহত করিতে গিয়ে আক্রমণকারী যদি মারা যায় অথবা তার অঙ্গহানি হয় তাহলে কোন দায়-দায়িত্ব নেই।
১০৮৮. ইমরান ইবনি হুসায়ন [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
এক ব্যক্তির হাত দাঁত দিয়ে কামড়ে ধরল। সে তার হাত ঐ ব্যক্তির মুখ থেকে টেনে বের করিল। ফলে তার দুটি দাঁত উপড়ে গেল। তারা নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট তাহাদের মুকাদ্দমা পেশ করিল। তখন তিনি বললেনঃ তোমাদের কেউ তার ভাইকে কি কামড়াবে যেমন উট কামড়ে থাকে? তোমার জন্য কোন রক্তপণ নেই।
[বোখারী পর্ব ৮৭ অধ্যায় ১৮ হাদীস নং ৬৮৯২; মুসলিম ২৮/৪, হাঃ ১৬৭৩] Lu lu wal marjan pdf -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১০৮৯. ইয়ালা ইবনি উমাইয়্যা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নাবী [সাঃআঃ] -এর সঙ্গে জাইশ্ল উসরাত অর্থাৎ তাবূকের যুদ্ধে লড়াই করেছিলাম। আমার ধারণায় এটাই ছিল আমার সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য আমাল। আমার একজন মজদুর ছিল। সে একজন লোকের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হয় এবং তাহাদের একজন আরেক জনের আঙ্গুল দাঁত দিয়ে কামড়ে ধরে। [বের করার জন্য] সে আঙ্গুল টান দেয়। এতে তার [প্রতিপক্ষের] একটি সামনের দাঁত পড়ে যায়। তখন লোকটি [অভিযোগ নিয়ে] নাবী [সাঃআঃ] -এর নিকট গেল। কিন্তু তিনি {নাবী [সাঃআঃ]} তার দাঁতের ক্ষতি পূরণের দাবী বাতিল করে দিলেন এবং বলিলেন সে কি তোমার মুখে তার আঙ্গুল ছেড়ে রাখবে, আর তুমি তা [দাঁত দিয়ে] চিবুতে থাকিবে? বর্ণনাকারী {ইয়ালা [রাদি.]} বলেন, আমার মনে পড়ে তিনি {নাবী [সাঃআঃ]} বলেছেন, যেমন উট চিবায়।
[বোখারী পর্ব ৩৭ অধ্যায় ৫ হাদীস নং ২২৬৫; মুসলিম ২৮/৪, হাঃ ১৬৭৪] Lu lu wal marjan pdf -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
২৮/৫. দাঁত ও এ জাতীয় ক্ষতি যাতে কিসাসের হুকুম বিদ্যমান।
১০৯০. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেন, রুবাঈ- যিনি আনাস [রাদি.]-এর ফুফু এক আনসার মহিলার সামনের একটি বড় দাঁত ভেঙ্গে ফেলেছিলেন। এরপর আহত মহিলার গোত্র এর কিসাস দাবী করে। তারা নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট এলো, নাবী [সাঃআঃ] কিসাসের নির্দেশ দিলেন, আনাস ইবনি মালিকের চাচা আনাস ইবনি নযর বলিলেন, হে আল্লাহ্র রসূল [সাঃআঃ]! আল্লাহ্র শপথ রুবাঈ-এর দাঁত ভাঙ্গা হইবে না। রসূল [সাঃআঃ] বলিলেন, হে আনাস! আল্লাহ্র কিতাব তো “বদলা”র বিধান দেয়। পরবর্তীতে বিরোধীপক্ষ রাযী হয়ে মুক্তিপণ বা দিয়ত গ্রহণ করিল। এরপর রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, আল্লাহ্র কতক বান্দা আছে যারা আল্লাহ্র নামে কসম করলে আল্লাহ তাআলা তাহাদের কসম সত্যে পরিণত করেন।
[বোখারী পর্ব ৬৫ অধ্যায় ৫ হাদীস নং ৪৬১১; মুসলিম ২৮/৫, হাঃ ১৯০৩] Lu lu wal marjan pdf -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
২৮/৬. কোন্ কোন্ ক্ষেত্রে মুসলিমের রক্ত বৈধ।
১০৯১. আবদুল্লাহ্ ইবনি মাসউদ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ.
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কোন মুসলিম ব্যক্তি যিনি সাক্ষ্য দেন যে আল্লাহ্ ব্যতীত আর কোন ইলাহ্ নেই এবং আমি আল্লাহ্র রসূল , তিন-তিনটি কারণ ব্যতীত তাকে হত্যা করা বৈধ নয়। [যথা] প্রাণের বদলে প্রাণ। বিবাহিত ব্যভিচারী। আর আপন দ্বীন পরিত্যাগকারী মুসলিম জামাআত থেকে বিচ্ছিন্ন ব্যক্তি।
[বোখারী পর্ব ৮৭ অধ্যায় ৬ হাদীস নং ৬৮৭৮; মুসলিম ২৮/৬, হাঃ ১৬৭৬] Lu lu wal marjan pdf -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
২৮/৭. হত্যার প্রথম প্রচলনকারীর পাপের বর্ণনা।
১০৯২. আবদুল্লাহ [ইবনি মাসউদ] [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, কোন ব্যক্তিকে অন্যায়ভাবে হত্যা করা হলে, তার এ খুনের পাপের অংশ আদাম [আ.]-এর প্রথম ছেলের [কাবিলের] উপর বর্তায়। কারণ সেই সর্বপ্রথম হত্যার প্রচলন ঘটায়।
[বোখারী পর্ব ৬০ অধ্যায় ১ হাদীস নং ৩৩৩৫; মুসলিম ২৮/৭ হাঃ ১৬৭৭] Lu lu wal marjan pdf -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
২৮/৮. ক্বিয়ামাতের দিন রক্তের [বিনিময়ে] রক্ত দ্বারা প্রতিশোধ গ্রহণ এবং সেদিন মানুষের মাঝে সর্বপ্রথম রক্তের বিষয়ে ফায়সালা করা হইবে।
১০৯৩. আবদুল্লাহ্ ইবনি মাসউদ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ ক্বিয়ামাতের দিন মানুষের মাঝে সর্বপ্রথম হত্যার বিচার করা হইবে।
[বোখারী পর্ব ৮১ অধ্যায় ৪৮ হাদীস নং ৬৫৩৩; মুসলিম ২৮/৮, হাঃ ১৬৭৮] Lu lu wal marjan pdf -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
২৮/৯. মুসলিমদের রক্ত, সমভ্রম ও সম্পদ [বিনষ্ট করা] কঠোরভাবে নিষিদ্ধ।
১০৯৪. আবু বাকরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেন, সময় ও কাল আবর্তিত হয় নিজ চক্রে যেদিন থেকে আল্লাহ আসমান ও যমীন সৃষ্টি করিয়াছেন। এক বছর হয় বার মাসে। এর মধ্যে চার মাস সম্মানিত। তিনমাস ক্রমান্বয়ে আসে যেমন যিলকদ, যিলহাজ্জ ও মুহার্রম এবং রজব মুদার বা জমাদিউল আখির ও শাবান মাসের মাঝে হয়ে থাকে। [এরপর তিনি প্রশ্ন করিলেন] এটি কোন্ মাস? আমরা বললাম, আল্লাহ ও তাহাঁর রসূল [সাঃআঃ]-ই অধিক জানেন। এরপর তিনি চুপ থাকলেন। এমনকি আমরা ধারণা করলাম যে, হয়তো তিনি এ মাসের অন্য কোন নাম রাখবেন। [তারপর] তিনি বলিলেন, এ কি যিলহাজ্জ মাস নয়? আমরা বললামঃ হ্যাঁ। তারপর তিনি জিজ্ঞেস করিলেন, এটি কোন্ শহর? আমরা বললাম, আল্লাহ ও তাহাঁর রসূল [সাঃআঃ]-ই অধিক জানেন। তারপর তিনি চুপ থাকলেন। আমরা ধারণা করলাম যে, হয়তো তিনি এ শহরের অন্য কোন নাম রাখবেন। তারপর তিনি বলিলেন, এটি কি [মাক্কাহ্] শহর নয়? আমরা বললাম, হ্যাঁ। তিনি আবার জিজ্ঞেস করিলেন, এটি কোন্ দিন? আমরা বললাম, আল্লাহ ও তাহাঁর রসূল [সাঃআঃ]-ই ভাল জানেন। তারপর তিনি চুপ থাকলেন। এতে আমরা মনে করলাম যে, তিনি এ দিনটির অন্য কোন নামকরণ করবেন। তারপর তিনি বলিলেন, এটি কি কুরবানীর দিন নয়? আমরা বললাম, হ্যাঁ। এরপর তিনি বলিলেন, তোমাদের রক্ত তোমাদের সম্পদ। রাবী মুহাম্মাদ বলেন, আমার ধারণা যে, তিনি আরও বলেছিলেন, তোমাদের মান-ইজ্জত- তোমাদের উপর পবিত্র, যেমন পবিত্র তোমাদের আজকের এই দিন, তোমাদের এই শহর ও তোমাদের এই মাস। তোমরা শীঘ্রই তোমাদের রবের সঙ্গে মিলিত হইবে। তখন তিনি তোমাদের কাজ-কর্ম সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করবেন। খবরদার! তোমরা আমার ইন্তিকালের পরে পথভ্রষ্ট হয়ে পড়ো না যে, একে অন্যের গর্দান উড়াবে। শোন, তোমাদের উপস্থিত ব্যক্তি অনুপস্থিত ব্যক্তিকে আমার পয়গাম পৌঁছে দেবে। অনেক সময় যে প্রত্যক্ষভাবে শ্রবণ করেছে তার থেকেও তার মাধ্যমে খবর-পাওয়া ব্যক্তি অধিকতর সংরক্ষণকারী হয়ে থাকে। রাবী মুহাম্মাদ {ইবনি সীরীন [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]} যখনই এ হাদীস বর্ণনা করিতেন তখন তিনি বলিতেন মুহাম্মাদ [সাঃআঃ] সত্যই বলেছেন। তারপর রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, তোমরা শোন, আমি কি [আল্লাহ্র পায়গাম] পৌঁছে দিয়েছি? এভাবে দুবার বলিলেন।
[বোখারী পর্ব ৬৪ অধ্যায় ৭৮ হাদীস নং ৪৪০৬; মুসলিম ২৮/৯, হাঃ ১৬৭৯] Lu lu wal marjan pdf -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
২৮/১১. পেটের বাচ্চার রক্তপণ, অনিচ্ছাকৃত হত্যার জন্য রক্তপণ প্রদানের অপরিহার্যতা ও শিবহে আমদের দিয়াত বা রক্তপণ অপরাধীর অভিভাবকের উপর ওয়াজিব।
১০৯৫. আবু হুরাইরাহ [রাযি] হইতে বর্ণিতঃ
বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] একবার হুযাইল গোত্রের দুজন মহিলার মধ্যে বিচার করেন। তারা উভয়ে মারামারি করেছিল। তাহাদের একজন অন্যজনের উপর পাথর নিক্ষেপ করে। পাথর গিয়ে তার পেটে লাগে। সে ছিল গর্ভবতী। ফলে তার পেটের বাচ্চাকে সে হত্যা করে। তারপর তারা নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট অভিযোগ দায়ের করে। তিনি ফায়সালা দেন যে, এর পেটের সন্তানের বদলে একটি পূর্ণ দাস অথবা দাসী দিতে হইবে। জরিমানা আরোপকৃত মহিলার অভিভাবক বললঃ হে আল্লাহ্র রসূল [সাঃআঃ]! এমন সন্তানের জন্য আমার উপর জরিমানা কেন হইবে, যে পান করেনি, খাদ্য খায়নি, কথা বলেনি এবং কান্নাকাটিও করেনি। এ অবস্থায় জরিমানা প্রত্যাখ্যানযোগ্য। তখন নাবী [সাঃআঃ] বল্লেনঃ এ তো [দেখছি] গণকদের ভাই।
[বোখারী পর্ব ৭৬ অধ্যায় ৪৬ হাদীস নং ৫৭৫৮; মুসলিম ২৮/১১, হাঃ ১৬৮১] Lu lu wal marjan pdf -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১০৯৬. উমার [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি মহিলাদের গর্ভপাত সম্পর্কে সহাবাদের সঙ্গে পরামর্শ করেন। তখন মুগীরাহ [রাদি.] বলিলেন, নাবী [সাঃআঃ] এরূপ ক্ষেত্রে অভিযুক্ত ব্যক্তির প্রতি ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিকে একটি গোলাম অথবা বাঁদী প্রদানের ফায়সালা করিয়াছেন। মুহাম্মাদ ইবনি মাসলামাহ [রাদি.] সাক্ষ্য দিলেন যে, তিনি নাবী [সাঃআঃ]-কে এ ফায়সালা করিতে দেখেছেন।
[বোখারী পর্ব ৮৭ অধ্যায় ২৫ হাদীস নং ৬৯০৫-৬৯০৬; মুসলিম হাঃ ২৮/১১, ১৬৮৩] Lu lu wal marjan pdf -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
Leave a Reply