Al Lulu Wal Marjan Bangla ইমারাত বা নেতৃত্ব
Al Lulu Wal Marjan Bangla ইমারাত বা নেতৃত্ব , এই পর্বের হাদীস =৬১ টি (১১৯৩-১২৫৩) >> আল লুলু ওয়াল মারজান এর মুল সুচিপত্র দেখুন
পর্ব-৩৩ঃ ইমারাত বা নেতৃত্ব
৩৩/১. মানুষদের উপর কুরাইশদের প্রাধান্য এবং খিলাফাত বা প্রতিনিধিত্ব হইবে কুরাইশদের মধ্যে থেকে।
৩৩/২. কাউকে খালীফা নিযুক্ত করা বা তা বাদ দেয়া।
৩৩/৩. নেতৃত্ব চাওয়া ও তার প্রতি লালায়িত হওয়া নিষিদ্ধ।
৩৩/৫. ন্যায়বিচারক ইমামের মর্যাদা ও স্বেচ্ছাচারী শাসকের অপকারিতা ও প্রজাদের প্রতি নম্রতার প্রতি উৎসাহ প্রদান এবং তাহাদেরকে [প্রজাদেরকে] কষ্টে ফেলা নিষিদ্ধ।
৩৩/৬. গুলুল বা বণ্টনের পূর্বে গানীমাতের মাল থেকে চুরি করা কঠোরভাবে হারাম।
৩৩/৭. কর্মচারীর হাদিয়া গ্রহণ হারাম।
৩৩/৮. পাপকর্ম ছাড়া আমীরের আনুগত্য করা ওয়াজিব ও পাপকর্মে আনুগত্য হারাম।
৩৩/১০. পর্যায়ক্রমে খালীফাদের আনুগত্য করা বা মান্য করার প্রতি নির্দেশ।
৩৩/১১. কর্তৃপক্ষের অত্যাচার ও অন্যায়ভাবে অন্যদেরকে প্রাধান্য দানের ক্ষেত্রে ধৈর্যধারণ।
৩৩/১৩. ফিত্না প্রকাশ পাওয়ার সময় [মুসলিমদের] জামাআতবদ্ধ থাকার অপরিহার্যতা এবং কুফুরীর প্রতি আহ্বান থেকে সতর্কীকরণ।
৩৩/১৮. যুদ্ধ করিতে ইচ্ছে করার পূর্বে সৈন্যদের নিকট হইতে সেনাপতির বাইআত গ্রহণ মুস্তাহাব এবং বৃক্ষের নিচে বাইআতে রিযওয়ানের বর্ণনা।
৩৩/১৯. মুহাজিরীনদের তাহাদের পূর্বের বাসস্থানে বসতি স্থাপন হারাম।
৩৩/২০. মাক্কাহ বিজয়ের পর ইসলাম, জিহাদ ও ভাল কাজ করার উপর বাইয়াত গ্রহণ এবং ফতহে মাক্কাহ্র পর আর কোন হিজরাত নেই- এর অর্থের বর্ণনা।
৩৩/২১. মহিলাদের বাইআতের পদ্ধতি।
৩৩/২২. সাধ্যানুযায়ী শোনা ও আনুগত্য করার উপর বাইআত।
৩৩/২৩. প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার বয়স।
৩৩/২৪. কাফিরদের ভূমিতে কুরআন মাজীদ নিয়ে সফর নিষিদ্ধ, যখন তাহাদের হস্তগত হওয়ার ভয় থাকে।
৩৩/২৫. ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা এবং প্রতিযোগিতার জন্য প্রশিক্ষণ দান।
৩৩/২৬. ক্বিয়ামাত পর্যন্ত ঘোড়ার কপালে মঙ্গল [লিখিত]।
৩৩/২৮. জিহাদ ও আল্লাহ্র রাস্তায় বের হওয়ার ফাযীলাত।
৩৩/২৯. আল্লাহ্ তাআলার রাস্তায় শাহাদাত লাভ করার ফাযীলাত।
৩৩/৩০. আল্লাহ্র রাস্তায় সকাল-সন্ধ্যা [অতিবাহিত] করার ফাযীলাত।
৩৩/৩৪. জিহাদের ও পাহারা দেয়ার ফাযীলাত।
৩৩/৩৫. ঐ দু লোকের বর্ণনা যাদের একজন অপরজনকে হত্যা করিল এবং দুজনই জান্নাতে প্রবেশ করিল।
৩৩/৩৮. আল্লাহ তাআলার রাস্তায় যোদ্ধাদেরকে যানবাহন ইত্যাদি দ্বারা সাহায্য করা ও যোদ্ধাদের অনুপস্থিতিতে উত্তমভাবে তাহাদের পরিবারের খবর নেয়া।
৩৩/৪০. অক্ষম ব্যক্তিদের উপর থেকে জিহাদের অপরিহার্যতা রহিত হওয়ার বিধান।
৩৩/৪১. শহীদ জান্নাতে যাবে তার প্রমাণ।
৩৩/৪২. যে আল্লাহ তাআলার বাণী সমুন্নত করার জন্য যুদ্ধ করে সে আল্লাহ্র রাস্তায় [যুদ্ধ করে]।
৩৩/৪৫. নাবী [সাঃআঃ]-এর বাণীঃ নিয়্যাত অনুযায়ী প্রতিফল এবং যুদ্ধ ও অন্যান্য কাজও এ কথার মধ্যে শামিল।
৩৩/৪৯. সাগরে যুদ্ধের ফাযীলাত।
৩৩/৫১. শাহীদদের বর্ণনা।
৩৩/৫৩. নাবী [সাঃআঃ]-এর বাণীঃ আমার উম্মাতের মধ্যে একটি দল সর্বদা সত্যের উপর বিজয়ী থাকিবে। যারা তাহাদের বিরোধিতা করিবে তারা তাহাদের কোন ক্ষতি সাধন করিতে পারবে না।
৩৩/৫৫. “সফর” শাস্তির একটি টুকরো এবং মুসাফিরের জন্য উত্তম হল তার কাজ সম্পন্ন করে তাড়াতাড়ি বাড়ি ফেরা।
৩৩/৫৬. তুরুক অপছন্দনীয় আর তা হচ্ছে সফর থেকে ফিরে রাতে বাড়িতে প্রবেশ করা।
৩৩/১. মানুষদের উপর কুরাইশদের প্রাধান্য এবং খিলাফাত বা প্রতিনিধিত্ব হইবে কুরাইশদের মধ্যে থেকে।
১১৯৩. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] বলেছেন, খিলাফত ও নেতৃত্বের ব্যাপারে সকলেই কুরাইশের অনুগত থাকিবে। মুসলিমগণ তাহাদের মুসলিমদের এবং কাফিররা তাহাদের কাফিরদের অনুগত।
[বোখারী পর্ব ৬১ অধ্যায় ১ হাদীস নং ৩৪৯৫; মুসলিম ৩৩/১, হাঃ ১৮১৮] Al lulu wal marjan bangla -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১১৯৪. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেন, এ বিষয় [খিলাফত ও শাসন ক্ষমতা] সর্বদাই কুরাইশদের হাতে থাকিবে, যতদিন তাহাদের দুজন লোকও বেঁচে থাকিবে।
[বোখারী পর্ব ৬১ অধ্যায় ২ হাদীস নং ৩৫০১; মুসলিম ৩৩/১, ১৮২০] Al lulu wal marjan bangla -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১১৯৫. জাবির ইবনি সামুরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নাবী [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনিয়াছি যে, বারজন আমীর হইবে। এরপর তিনি একটি কথা বলছিলেন যা আমি শুনতে পারিনি। তবে আমার পিতা বলেছেন যে, তিনি বলেছিলেন সকলেই কুরাইশ গোত্র থেকে হইবে।
[বোখারী পর্ব ৯৩ অধ্যায় ৫১ হাদীস নং ৭২২২-৭২২৩; মুসলিম ৩৩/১, হাঃ ১৮২১] Al lulu wal marjan bangla -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৩৩/২. কাউকে খালীফা নিযুক্ত করা বা তা বাদ দেয়া।
১১৯৬. আবদুল্লাহ্ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, উমার [রাদি.]-কে বলা হল, আপনি কি [আপনার পরবর্তী] খলীফা মনোনীত করে যাবেন না? তিনি বললেনঃ যদি আমি খলীফা মনোনীত করি, তাহলে আমার চেয়ে যিনি শ্রেষ্ঠ ছিলেন তিনি খলীফা মনোনীত করে গিয়েছিলেন, অর্থাৎ আবু বকর [রাদি.]। আর যদি মনোনীত না করি, তাহলে আমার চেয়ে যিনি শ্রেষ্ঠ ছিলেন তিনি খলীফা মনোনীত করে যাননি। অর্থাৎ রাসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]। এতে লোকেরা তাহাঁর প্রশংসা করিল। তারপর তিনি বলিলেন, কেউ এ ব্যাপারে আকাঙক্ষী আর কেউ ভীত। আর আমি পছন্দ করি আমি যেন এ থেকে মুক্তি পাই সমানে সমান, না পুরস্কার না শাস্তি। আমি জীবদ্দশায় ও মৃত্যুর পরে এর দায়িত্ব বহন করিতে পারব না।
[বোখারী পর্ব ৯৩ অধ্যায় ৫১ হাদীস নং ৭২১৮; মুসলিম ৩৩/২, হাঃ ১৮২৩] Al lulu wal marjan bangla -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৩৩/৩. নেতৃত্ব চাওয়া ও তার প্রতি লালায়িত হওয়া নিষিদ্ধ।
১১৯৭. আবদুর রহমান ইবনি সামুরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বললেনঃ হে আবদুর রহমান ইবনি সামুরাহ! তুমি নেতৃত্ব চেয়ো না। কেননা, চাওয়ার পর যদি নেতৃত্ব পাও তবে এর দিকে তোমাকে সোপর্দ করে দেয়া হইবে। আর যদি না চেয়ে তা পাও তবে তোমাকে এর জন্য সাহায্য করা হইবে।
[বোখারী পর্ব ৮৩ অধ্যায় ১ হাদীস নং ৬৬২২; মুসলিম ৩৩/৩, হাঃ ১৬৫২] Al lulu wal marjan bangla -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১১৯৮. আবু মূসা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নাবী [সাঃআঃ]-এর কাছে এলাম। আমার সঙ্গে আশআরী গোত্রের দুব্যক্তি ছিল। একজন আমার ডানদিকে, অপরজন আমার বামদিকে। আর রাসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] তখন মিস্ওয়াক করছিলেন। উভয়েই তাহাঁর কাছে আবদার জানাল। তখন তিনি বললেনঃ হে আবু মূসা! অথবা বলিলেন, হে আবদুল্লাহ্ ইবনি কায়স! রাবী বলেন, আমি বললামঃ ঐ সত্তার কসম! যিনি আপনাকে সত্য দীনসসহ পাঠিয়েছেন, তারা তাহাদের অন্তরে কী আছে তা আমাকে জানায়নি এবং তারা যে চাকরি প্রার্থনা করিবে তা আমি বুঝতে পারিনি। আমি যেন তখন তাহাঁর ঠোঁটের নিচে মিস্ওয়াকের প্রতি লক্ষ্য করছিলাম যে তা এক কোণে সরে গেছে। তখন তিনি বলিলেন, আমরা আমাদের কাজে এমন কাউকে নিয়োগ দিব না বা দেই না যে নিজেই তা চায়। বরং হে আবু মূসা! অথবা বলিলেন, হে আবদুল্লাহ্ ইবনি কায়স! তুমি ইয়ামনে যাও। এরপর তিনি তার পেছনে মুআয ইবনি জাবাল [রাদি.]-কে পাঠালেন। যখন তিনি তথায় পৌঁছলেন, তখন আবু মূসা [রাদি.] তার জন্য একটি গদি বিছালেন। আর বলিলেন, নেমে আসুন। ঘটনাক্রমে তার কাছে একজন লোক শৃঙক্ষলাবদ্ধ ছিল। তিনি জিজ্ঞেস করিলেন, ঐ লোকটি কে? আবু মূসা [রাদি.] বলিলেন, সে প্রথমে ইয়াহূদী ছিল এবং মুসলিম হয়েছিল। কিন্তু পুনরায় সে ইয়াহূদী হয়ে গেছে। আবু মূসা [রাদি.] বলিলেন, বসুন। মুআয [রাদি.] বলিলেন, না, বসব না, যতক্ষণ না তাকে হত্যা করা হইবে। এটাই আল্লাহ্ ও তাহাঁর রাসূলের ফায়সালা। কথাটি তিনি তিনবার বলিলেন। এরপর তার সম্পর্কে নির্দেশ দেয়া হল এবং তাকে হত্যা করা হল। তারপর তাঁরা উভয়েই কিয়ামুল্ লায়ল [রাত জাগরণ] সম্পর্কে আলোচনা করিলেন। তখন একজন বলিলেন, আমি কিন্তু ইবাদাতও করি, নিদ্রাও যাই। আর নিদ্রাবস্থায় ঐ আশা রাখি যা ইবাদাত অবস্থায় রাখি।
[বোখারী পর্ব ৮৮ অধ্যায় ২ হাদীস নং ৬৯২৩; মুসলিম ৩৩/৩, হাঃ ১৮২৪] Al lulu wal marjan bangla -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৩৩/৫. ন্যায়বিচারক ইমামের মর্যাদা ও স্বেচ্ছাচারী শাসকের অপকারিতা ও প্রজাদের প্রতি নম্রতার প্রতি উৎসাহ প্রদান এবং তাহাদেরকে [প্রজাদেরকে] কষ্টে ফেলা নিষিদ্ধ।
১১৯৯. আবদুল্লাহ ইবনি উমার[রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেছেন, তোমরা প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল। কাজেই প্রত্যেকেই নিজ অধীনস্থদের বিষয়ে জিজ্ঞাসার সম্মুখীন হইবে। যেমন- জনগণের শাসক তাহাদের দায়িত্বশীল, কাজেই সে তাহাদের বিষয়ে জিজ্ঞাসিত হইবে। একজন পুরুষ তার পরিবার পরিজনদের দায়িত্বশীল, কাজেই সে তাহাদের বিষয়ে জিজ্ঞাসিত হইবে। স্ত্রী স্বামীর ঘরের এবং তার সন্তানের দায়িত্বশীল, কাজেই সে তাহাদের বিষয়ে জিজ্ঞাসিত হইবে। আর ক্রীতদাস আপন মনিবের সম্পদের রক্ষণাবেক্ষণকারী। কাজেই সে বিষয়ে জিজ্ঞাসিত হইবে। শোন! তোমরা প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল। কাজেই প্রত্যেকেই আপন অধীনস্থদের বিষয়ে জিজ্ঞাসিত হইবে।
[বোখারী পর্ব ৪৯ অধ্যায় ১৭ হাদীস নং ২৫৫৪; মুসলিম ৩৩/৫, হাঃ ১৮২৯] Al lulu wal marjan bangla -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১২০০. হাসান বসরী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ
উবাইদুল্লাহ্ ইবনি যিয়াদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] মাকিল ইবনি ইয়াসারের মৃত্যুশয্যায় তাকে দেখিতে গেলেন। তখন মাকিল [রাদি.] তাকে বলিলেন, আমি তোমাকে এমন একটি হাদীস বর্ণনা করছি যা আমি নাবী [সাঃআঃ] থেকে শুনিয়াছি। আমি নাবী [সাঃআঃ] থেকে শুনিয়াছি যে, কোন বান্দাকে যদি আল্লাহ্ তাআলা জনগণের নেতৃত্ব প্রদান করেন, আর সে কল্যাণকামিতার সঙ্গে তাহাদের তত্ত্বাবধান না করে, তাহলে সে বেহেশ্তের ঘ্রাণও পাবে না।
[বোখারী পর্ব ৯৩ অধ্যায় ৮ হাদীস নং ৭১৫০; মুসলিম ৩৩/৫, হাঃ ১৪২] Al lulu wal marjan bangla -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৩৩/৬. গুলুল বা বণ্টনের পূর্বে গানীমাতের মাল থেকে চুরি করা কঠোরভাবে হারাম।
১২০১. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
নাবী [সাঃআঃ] আমাদের মাঝে দাঁড়ান এবং গনীমতের মাল আত্মসাৎ প্রসঙ্গে আলোচনা করেন। আর তিনি তার মারাত্মক অপরাধ ও তার ভয়াবহ পরিণতির কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলিলেন, আমি তোমাদের কাউকে যেন এ অবস্থায় ক্বিয়ামাতের দিন না পাই যে, তাহাঁর কাঁধে বকরী বয়ে বেড়াচ্ছে আর তা ভ্যাঁ ভ্যাঁ করে চিৎকার দিচ্ছে। অথবা তাহাঁর কাঁধে রয়েছে ঘোড়া আর তা হি হি করে আওয়াজ দিচ্ছে। ঐ ব্যক্তি আমাকে বলবে, হে আল্লাহ্র রসূল [সাঃআঃ]! আমাকে সাহায্য করুন। আমি বলব, আমি তোমার জন্য কিছু করিতে পারব না। আমি তো [দুনিয়ায়] তোমার নিকট পৌছে দিয়েছি। অথবা কেউ তার কাঁধে বয়ে বেড়াবে উট যা চিৎকার করিবে, সে আমাকে বলবে, হে আল্লাহ্র রসূল [সাঃআঃ]! একটু সাহায্য করুন। আমি বলব, আমি তোমার জন্য কিছু করিতে পারব না। আমি তো তোমার নিকট পৌঁছে দিয়েছি। অথবা কেউ তার কাঁধে বয়ে বেড়াবে ধন-দৌলত এবং আমাকে বলবে, হে আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]! আমাকে সাহায্য করুন। আমি বলব, আমি তোমার জন্য কিছু করিতে পারব না। আমি তো তোমার নিকট পৌঁছে দিয়েছি। অথবা কেউ তার কাঁধে বয়ে বেড়াবে কাপড়ের টুকরাসমূহ যা দুলতে থাকিবে। সে আমাকে বলবে, হে আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]! আমাকে সাহায্য করুন। আমি বলব, আমি তোমার জন্য কিছু করিতে পারব না; আমি তো তোমার নিকট পৌঁছে দিয়েছি।
[বোখারী পর্ব ৫৬ অধ্যায় ১৮৯ হাদীস নং ৩০৭৩; মুসলিম ৩৩/৬, হাঃ ১৮৩১] Al lulu wal marjan bangla -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৩৩/৭. কর্মচারীর হাদিয়া গ্রহণ হারাম।
১২০২. আবু হুমায়দ সাঈদী [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] এক ব্যক্তিকে রাজস্ব আদায়কারী নিযুক্ত করে পাঠালেন। সে কাজ শেষ করে তাহাঁর কাছে এসে বলিল, হে আল্লাহ্র রসূল [সাঃআঃ]! এটা আপনার জন্য আর এ জিনিসটি আমাকে হাদিয়া দেয়া হয়েছে। রাসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] তাকে বললেনঃ তুমি তোমার মা-বাবার ঘরে বসে রইলে না কেন? তা হলে তোমার জন্য হাদিয়া পাঠাত কিনা তা দেখিতে পেতে? এরপর রাসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] এশার ওয়াক্তের সালাতে দাঁড়িয়ে গেলেন এবং তাশাহ্হুদ পাঠ করিলেন ও আল্লাহ্ তাআলার যথোপযুক্ত প্রশংসা করিলেন। এরপর বললেনঃ রাজস্ব আদায়কারীর অবস্থা কি হল? আমি তাকে নিযুক্ত করে পাঠালাম আর সে আমাদের কাছে এসে বলছে, এটা সরকারী রাজস্ব আর এ জিনিস আমাকে হাদিয়া দেয়া হয়েছে। সে তার বাবা-মার ঘরে বসেই রইল না কেন? তাহলে দেখত তার জন্য হাদিয়া দেয়া হয় কি না? ঐ মহান সত্তার কসম! যাঁর হাতে মুহাম্মাদ [সাঃআঃ]-এর প্রাণ, তোমাদের মাঝে কেউ যদি কোন বস্তুতে সামান্যতম খিয়ানত করে, তা হলে ক্বিয়ামাতের দিন সে ঐ বস্তুটিকে তার কাঁধে বহন করা অবস্থায় আসবে। সে বস্তুটি যদি উট হয় তা হলে উট আওয়াজ করিতে থাকিবে। যদি গরু হয় তবে হাম্বা হাম্বা করিতে থাকিবে। আর যদি বকরী হয় তবে বকরী আওয়ায করিতে থাকিবে। আমি পৌঁছে দিলাম। রাবী আবু হুমায়দ বলেন, এরপর রাসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] তাহাঁর হস্ত মুবারক এতটুকু উত্তোলন করিলেন যে, আমরা তাহাঁর দুবগলের শুভ্রতা দেখিতে পেলাম।
[বোখারী পর্ব ৮৩ অধ্যায় ৩ হাদীস নং ৬৬৩৬; মুসলিম ৩৩/৭, হাঃ ১৮৩২] Al lulu wal marjan bangla -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৩৩/৮. পাপকর্ম ছাড়া আমীরের আনুগত্য করা ওয়াজিব ও পাপকর্মে আনুগত্য হারাম।
১২০৩. ইবনি আব্বাস হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেন যে, [আরবী] আয়াতটি অবতীর্ণ হয়েছে আবদুল্লাহ ইবনি হুযাফাহ ইবনি ক্বায়স ইবনি আদী সম্পর্কে যখন তাঁকে নাবী [সাঃআঃ] একটি সৈন্য দলের দলনায়ক করে প্রেরণ করেছিলেন।
[বোখারী পর্ব ৬৫ অধ্যায় ১১ হাদীস নং ৪৫৮৪, মুসলিম ৩৩/৮, হাঃ ১৮৩৪] Al lulu wal marjan bangla -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১২০৪. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আমার আনুগত্য করিল, সে আল্লাহ্রই আনুগত্য করিল। আর যে ব্যক্তি আমার নাফরমানী করিল, সে আল্লাহ্রই নাফরমানী করিল। এবং যে ব্যক্তি আমার [নির্বাচিত] আমীরের আনুগত্য করিল, সে আমারই আনুগত্য করিল। আর যে ব্যক্তি আমার [নির্বাচিত] আমীরের নাফরমানী করিল সে আমারই নাফরমানী করিল।
[বোখারী পর্ব ৯৩ অধ্যায় ১ হাদীস নং ৭১৩৭; মুসলিম ৩৩/৮, হাঃ ১৮৩৫] Al lulu wal marjan bangla -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১২০৫. আবদুল্লাহ্ বিন উমার [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যতক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহ্র নাফরমানীর নির্দেশ দেয়া না হয়, ততক্ষণ পছন্দনীয় ও অপছন্দনীয় সব বিষয়ে প্রত্যেক মুসলিমের জন্য তার মান্যতা ও আনুগত্য করা কর্তব্য। যখন নাফরমানীর নির্দেশ দেয়া হয়, তখন আর কোন মান্যতা ও আনুগত্য নেই।
[বোখারী পর্ব ৯৩ অধ্যায় ৪ হাদীস নং ৭১৪৪; মুসলিম ৩৩/৮, হাঃ ১৮৩৯] Al lulu wal marjan bangla -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১২০৬. আলী [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
নাবী [সাঃআঃ] একটি ক্ষুদ্র সৈন্যদল প্রেরণ করিলেন এবং একজন আনসারী ব্যক্তিকে তাঁদের আমীর নিযুক্ত করে সেনাবাহিনীকে তার আনুগত্য করার নির্দেশ দিলেন। এরপর তিনি [আমীর] তাহাদের উপর ক্ষুব্ধ হলেন এবং বললেনঃ নাবী [সাঃআঃ] কি তোমাদেরকে আমার আনুগত্য করার নির্দেশ দেননি? তাঁরা বলিলেন, হ্যাঁ। তখন তিনি বলিলেন, আমি তোমাদের দৃঢ়ভাবে বলছি যে, তোমরা কাঠ সংগ্রহ করিবে এবং তাতে আগুন প্রজ্বলিত করিবে। এরপর তোমরা তাতে প্রবেশ করিবে। তারা কাঠ সংগ্রহ করিল এবং তাতে আগুন প্রজ্জ্বলিত করিল। এরপর যখন তারা প্রবেশ করিতে ইচ্ছে করিল, তখন একে অপরের দিকে তাকাতে লাগল। তাঁদের কেউ কেউ বলিল, আগুন থেকে পরিত্রাণের জন্যই তো আমরা নাবী [সাঃআঃ]-এর অনুসরণ করেছি। তাহলে কি আমরা [অবশেষে] আগুনেই প্রবেশ করব? তাঁদের এসব কথোপকথনের মাঝে হঠাৎ আগুন নিভে যায়। আর তাহাঁর [আমীরের] ক্রোধও অবদমিত হয়ে পড়ে। এ ঘটনা নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট বর্ণনা করা হলে তিনি বললেনঃ যদি তারা তাতে প্রবেশ করত, তাহলে কোন দিন আর এত্থেকে বের হত না। জেনে রেখো! আনুগত্য কেবলমাত্র বিধিসঙ্গত কাজেই হয়ে থাকে।
[বোখারী পর্ব ৯৩ অধ্যায় ৪ হাদীস নং ৭১৪৫; মুসলিম ৩৩/৮, হাঃ ১৮৪০] Al lulu wal marjan bangla -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১২০৭. জুনাদাহ ইবনি আবু উমাইয়াহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা উবাদাহ ইবনি সামিত [রাদি.]-এর নিকট উপস্থিত হলাম। তখন তিনি অসুস্থ ছিলেন। আমরা বললাম, আল্লাহ্ আপনাকে সুস্থ করে দিন। আপনি আমাদের এরূপ একটি হাদীস বর্ণনা করুন, যা আপনাকে উপকৃত করিবে এবং যা আপনি নাবী [সাঃআঃ] থেকে শুনেছেন। তিনি বলিলেন, নাবী [সাঃআঃ] আমাদের আহ্বান করিলেন। আমরা তাহাঁর কাছে বাইআত করলাম।
এরপর তিনি [উবাদাহ] বলিলেন, আমাদের থেকে যে অঙ্গীকার তিনি গ্রহণ করেছিলেন তাতে ছিল যে, আমরা আমাদের সুখে-দুঃখে, বেদনায় ও আনন্দে এবং আমাদের উপর অন্যকে অগ্রাধিকার দিলেও পূর্ণাঙ্গরূপে শোনা ও মানার উপর বাইআত করলাম। আরও [বাইআত করলাম] যে আমরা ক্ষমতা সংক্রান্ত বিষয়ে ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হব না। কিন্তু যদি এমন স্পষ্ট কুফ্রী দেখ, তোমাদের নিকট আল্লাহ্র পক্ষ থেকে যে বিষয়ে সুস্পষ্ট প্রমাণ বিদ্যমান, তবে ভিন্ন কথা।
[বোখারী পর্ব ৯২ অধ্যায় ২ হাদীস নং ৭০৫৫-৭০৫৬; মুসলিম ২৯/৯, হাঃ ১৭০৯] Al lulu wal marjan bangla -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৩৩/১০. পর্যায়ক্রমে খালীফাদের আনুগত্য করা বা মান্য করার প্রতি নির্দেশ।
১২০৮. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেছেন, বানী ইসরাঈলের নাবীগণ তাঁদের উম্মাতকে শাসন করিতেন। যখন কোন একজন নাবী মারা যেতেন, তখন অন্য একজন নাবী তাহাঁর স্থলাভিসিক্ত হইতেন। আর আমার পরে কোন নাবী নেই। তবে অনেক খলীফাহ্ হইবে। সাহাবীগণ আরয করিলেন, হে আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]! আপনি আমাদেরকে কী নির্দেশ করছেন? তিনি বলিলেন, তোমরা একের পর এক করে তাহাদের বায়আতের হক আদায় করিবে। তোমাদের উপর তাহাদের যে হক রয়েছে তা আদায় করিবে। আর নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তাঁদেরকে জিজ্ঞেস করবেন ঐ সকল বিষয়ে যে সবের দায়িত্ব তাহাদের উপর অর্পণ করা হয়েছিল।
[বোখারী পর্ব ৬০ অধ্যায় ৫০ হাদীস নং ৩৪৫৫; মুসলিম ৩৩/১০, হাঃ ১৮৩২] Al lulu wal marjan bangla -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১২০৯. ইবনি মাসউদ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেছেন, শীঘ্রই স্বজনপ্রীতির বিস্তৃতি ঘটবে এবং এমন ব্যাপার ঘটবে যা তোমরা পছন্দ করিতে পারবে না। সহাবীগণ বলিলেন, হে আল্লাহ্র রসূল ! ঐ অবস্থায় আমাদের কী করিতে বলেন? নাবী [সাঃআঃ] বলিলেন, তোমাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করিবে আর তোমাদের প্রাপ্য আল্লাহ্র কাছে চাইবে।
[বোখারী পর্ব ৬১ অধ্যায় ২৫ হাদীস নং ৩৬০৩; মুসলিম ৩৩/১০, হাঃ ১৮৪৩] Al lulu wal marjan bangla -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৩৩/১১. কর্তৃপক্ষের অত্যাচার ও অন্যায়ভাবে অন্যদেরকে প্রাধান্য দানের ক্ষেত্রে ধৈর্যধারণ।
১২১০. উসায়দ ইবনি হুযায়র [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
একজন আনসারী বলিলেন, হে আল্লাহ্র রসূল [সাঃআঃ], আপনি কি আমাকে অমুকের ন্যায় দায়িত্বে নিয়োজিত করবেন না? তিনি [সাঃআঃ] বলিলেন, তোমরা আমার ওফাতের পর অপরকে অগ্রাধিকার দেওয়া দেখিতে পাবে, তখন তোমরা ধৈর্যধারণ করিবে অবশেষে আমার সাথে সাক্ষাৎ করিবে এবং তোমাদের সাথে সাক্ষাতের স্থান হল হাউয।
[বোখারী পর্ব ৬৩ অধ্যায় ৮ হাদীস নং ৩৭৯২; মুসলিম ৩৩/১১, হাঃ ১৮৪৫] Al lulu wal marjan bangla -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৩৩/১৩. ফিত্না প্রকাশ পাওয়ার সময় [মুসলিমদের] জামাআতবদ্ধ থাকার অপরিহার্যতা এবং কুফুরীর প্রতি আহ্বান থেকে সতর্কীকরণ।
১২১১. হুযাইসলামিক ফাউন্ডেশনহ ইবনি ইয়ামান [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
লোকজন নাবী [সাঃআঃ]-কে কল্যাণ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করিতেন আর আমি তাঁকে অকল্যাণ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতাম; এই ভয়ে যেন আমি ঐ সবের মধ্যে পড়ে না যাই। আমি বললাম, হে আল্লাহ্র রসূল [সাঃআঃ]! আমরা জাহিলীয়্যাতে অকল্যাণকর অবস্থায় জীবন যাপন করতাম অতঃপর আল্লাহ আমাদের এ কল্যাণ দান করিয়াছেন। এ কল্যাণকর অবস্থার পর আবার কোন অকল্যাণের আশঙ্কা আছে কি? তিনি বলিলেন, হাঁ, আছে। আমি জিজ্ঞেস করলাম, ঐ অকল্যাণের পর কোন কল্যাণ আছে কি? তিনি বলিলেন, হাঁ, আছে। তবে তা মন্দ মেশানো। আমি বললাম, মন্দ মেশানো কী? তিনি বলিলেন, এমন একদল লোক যারা আমার সুন্নাত ত্যাগ করে অন্যপথে পরিচালিত হইবে। তাহাদের কাজে ভাল-মন্দ সবই থাকিবে। আমি আবার জিজ্ঞেস করলাম, অতঃপর কি আরো অকল্যাণ আছে? তিনি বলিলেন, হাঁ তখন জাহান্নামের দিকে আহ্বানকারীদের উদ্ভব ঘটবে। যারা তাহাদের ডাকে সাড়া দিবে তাকেই তারা জাহান্নামে নিক্ষেপ করিবে। আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]! এদের পরিচয় বর্ণনা করুন। তিনি বলিলেন, তারা আমাদেরই সম্প্রদায়ভুক্ত এবং কথা বলবে আমাদেরই ভাষায়। আমি বললাম, আমি যদি এ অবস্থায় পড়ে যাই তাহলে আপনি আমাকে কী করিতে আদেশ দেন? তিনি বলিলেন, মুসলিমদের এমন দল ও তাঁদের ঈমামকে আঁকড়ে ধরবে। আমি বললাম, যদি মুসলিমদের এহেন দল ও ঈমাম না থাকে? তিনি বলেন, তখন তুমি তাহাদের সকল দল উপদলের সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ করিবে এবং মৃত্যু না আসা পর্যন্ত বৃক্ষমূল দাঁতে আঁকড়ে ধরে হলেও তোমার দ্বীনের উপর থাকিবে।
[বোখারী পর্ব ৬১ অধ্যায় ২৫ হাদীস নং ৩৬০৬; মুসলিম ৩৩/১৩, হাঃ ১৮৪৭]Al lulu wal marjan bangla -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১২১২. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কেউ যদি আমীরের কোন কিছু অপছন্দ করে, তাহলে সে যেন ধৈর্য ধারণ করে। কেননা, যে ব্যক্তি সুলতানের আনুগত্য থেকে এক বিঘত পরিমাণও সরে যাবে, তার মৃত্যু হইবে জাহিলি যুগের মুত্যুর ন্যায়।
[বোখারী পর্ব ৯২ অধ্যায় ২ হাদীস নং ৭০৫৩; মুসলি ম৩৩/১৩, হাঃ ১৮৪৯] Al lulu wal marjan bangla -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৩৩/১৮. যুদ্ধ করিতে ইচ্ছে করার পূর্বে সৈন্যদের নিকট হইতে সেনাপতির বাইআত গ্রহণ মুস্তাহাব এবং বৃক্ষের নিচে বাইআতে রিযওয়ানের বর্ণনা।
১২১৩. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] হুদাইবিয়াহ্র যুদ্ধের দিন আমাদেরকে বলেছেন, পৃথিবীবাসীদের মধ্যে তোমরাই সর্বোত্তম। সেদিন আমরা ছিলাম চৌদ্দশ। আজ আমি যদি দেখতাম, তাহলে আমি তোমাদেরকে সে গাছের জায়গাটি দেখিয়ে দিতাম।
[বোখারী পর্ব ৬৪ অধ্যায় ৩৬ হাদীস নং ৪১৫৪; মুসলিম ৩৩/১৮, হাঃ ১৮৫৬] Al lulu wal marjan bangla -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১২১৪. মুসাইয়্যাব [ইবনি হায্ন] [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, [যেটির নীচে বাইআত করা হয়েছিল] আমি সে গাছটি দেখেছিলাম। কিন্তু পরে যখন ওখানে আসলাম তখন আর সেটা চিনতে পারলাম না
[বোখারী পর্ব ৬৪ অধ্যায় ৩৬ হাদীস নং ৪১৬২; মুসলিম ৩৩/১৮, হাঃ ১৮৫৯] Al lulu wal marjan bangla -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১২১৫. ইয়াযীদ ইবনি আবু উবাইদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি সালামাহ ইবনি আকওয়া [রাদি.]-কে জিজ্ঞেস করলাম, হুদাইবিয়াহ্র দিন আপনারা কোন্ জিনিসের উপর রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট বাইআত করেছিলেন। তিনি বলিলেন, মৃত্যুর উপর।
[বোখারী পর্ব ৬৪ অধ্যায় ৩৬ হাদীস নং ৪১৬৯; মুসলিম ৩৩/১৮, হাঃ ১৮৬০] Al lulu wal marjan bangla -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১২১৬. আবদুল্লাহ্ ইবনি যায়দ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, হার্রা নামক যুদ্ধের সময়ে তাহাঁর নিকট এক ব্যক্তি এসে বললো, ইবনি হানযালা [রাদি.] মানুষের নিকট থেকে মৃত্যুর উপর বায়আত গ্রহণ করছেন। তিনি বলিলেন, আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]-এর পর আমি তো কারো নিকট এমন বায়আত করব না।
[বোখারী পর্ব ৫৬ অধ্যায় ১১০ হাদীস নং ২৯৫৯; মুসলিম ৩৩/১৮ হাঃ ১৮৬১] Al lulu wal marjan bangla -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৩৩/১৯. মুহাজিরীনদের তাহাদের পূর্বের বাসস্থানে বসতি স্থাপন হারাম।
১২১৭. সালামাহ ইবনিল আকওয়া [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
একবার হাজ্জাজ আমার কাছে আসলেন। তখন তিনি তাঁকে বলিলেন, হে ইবনি আক্ওয়া! আপনি সাবেক অবস্থায় প্রত্যাবর্তন করিলেন না কি যে বেদুঈন সুলভ জীবন যাপন করিতে শুরু করিয়াছেন? তিনি বলিলেন, না। বরং রাসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] আমাকে বেদুঈন সুলভ জীবন যাপনের অনুমতি প্রদান করিয়াছেন
। [বোখারী পর্ব ৯২ অধ্যায় ১৪ হাদীস নং ৭০৮৭; মুসলিম ৩৩/১৯, হাঃ ১৮৬২] Al lulu wal marjan bangla -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৩৩/২০. মাক্কাহ বিজয়ের পর ইসলাম, জিহাদ ও ভাল কাজ করার উপর বাইয়াত গ্রহণ এবং ফতহে মাক্কাহ্র পর আর কোন হিজরাত নেই- এর অর্থের বর্ণনা।
১২১৮. মুজাশি ইবনি মাসউদ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আবু মাবাদ [রাদি.] [মুজালিদ] কে নিয়ে নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট গেলাম যেন তিনি তাহাঁর নিকট হইতে হিজরাতের জন্য বাইআত গ্রহণ করেন। তখন তিনি [সাঃআঃ] বলিলেন, হিজরাতকারীদের জন্য হিজরাত অতিক্রান্ত হয়ে গেছে। আমি তার নিকট হইতে ইসলাম ও জিহাদের জন্য বাইআত গ্রহণ করব। {বর্ণনাকারী আবু উসমান নাহদী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]} বলেন, এরপর আমি আবু মাবাদ [রাদি.]-এর সাক্ষাৎ করে তাকে জিজ্ঞেস করলাম, তিনি বলিলেন, মুজাশি [রাদি.] সত্যি বলেছেন।
[বোখারী পর্ব ৬৪ অধ্যায় ৫৪ হাদীস নং ৪৩০৮; মুসলিম ৩৩/২০, হাঃ ১৮৬৩] Al lulu wal marjan bangla -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১২১৯. আবদুল্লাহ্ ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
নাবী [সাঃআঃ] মাক্কাহ বিজয়ের দিন বলেছেন, মক্কা বিজয়ের পর [মক্কা থেকে] হিজরাতের প্রয়োজন নেই। কিন্তু জিহাদ ও নেক কাজের নিয়্যাত বাকী আছে আর যখন তোমাদের জিহাদের ডাক দেয়া হইবে তখন তোমরা বেরিয়ে পড়বে।
[বোখারী পর্ব ৫৬ অধ্যায় ১৯৪ হাদীস নং ৩০৭৭; মুসলিম ৩৩/২০, হাঃ ১৩৫৩] Al lulu wal marjan bangla -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১২২০. আবু সাঈদ খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
এক বেদুঈন আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]-এর নিকট হিজরাত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেনঃ তোমার তো বড় সাহস! হিজরতের ব্যাপার কঠিন, বরং যাকাত দেয়ার মত তোমার কোন উট আছে কি? সে বলিল, জী হ্যাঁ, আছে। আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] বললেনঃ সাগরের ওপারে হলেও [যেখানেই থাক] তুমি আমাল করিবে। তোমার ন্যূনতম আমালও আল্লাহ বিনষ্ট করবেন না।
[বোখারী পর্ব ২৪ অধ্যায় ৩৬ হাদীস নং ১৪৫২; মুসলিম ৩৩/২০, হাঃ ১৮৬৫] Al lulu wal marjan bangla -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৩৩/২১. মহিলাদের বাইআতের পদ্ধতি।
১২২১. আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ঈমানদার মহিলারা যখন হিজরাত করে নাবী [সাঃআঃ]-এর কাছে আসত, তখন তিনি আল্লাহ্র নির্দেশ- “হে ঈমানদারগণ! কোন ঈমানদার মহিলা হিজরাত করে তোমাদের কাছে আসলে তোমরা তাহাদেরকে যাচাই কর”…… অনুসারে তাহাদেরকে যাচাই করিতেন। আয়েশা [রাযিঃ] বলেনঃ ঈমানদার মহিলাদের মধ্যে যারা [আয়াতে উল্লেখিত] শর্তাবলী মেনে নিত, তারা পরীক্ষায় কৃতকার্য হত। তাই যখনই তারা এ ব্যাপারে মৌখিক স্বীকারোক্তি প্রকাশ করত তখনই রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাদেরকে বলিতেন যাও, আমি তোমাদের বাইআত গ্রহণ করেছি। আল্লাহ্র কসম! কথার মাধ্যমে বাইআত গ্রহণ ব্যতীত রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর হাত কখনো কোন নারীর হাত স্পর্শ করেনি। আল্লাহ্র শপথ! তিনি শুধুমাত্র সেই সব বিষয়েই বাইআত গ্রহণ করিতেন, যে সব বিষয়ে বাইআত গ্রহণ করার জন্য আল্লাহ তাঁকে নির্দেশ দিয়েছেন। বাইআত গ্রহণ শেষে তিনি বলিতেনঃ আমি কথায় তোমাদের বাইআত গ্রহণ করলাম।
[বোখারী পর্ব ৬৮ অধ্যায় ২০ হাদীস নং ৫২৮৮; মুসলিম ৩৩/২১, হাঃ ১৮৬৬] Al lulu wal marjan bangla -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৩৩/২২. সাধ্যানুযায়ী শোনা ও আনুগত্য করার উপর বাইআত।
১২২২. আবদুল্লাহ্ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা যখন রাসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর কাছে তাহাঁর কথা শোনা ও তাহাঁর আনুগত্যের বায়আত গ্রহণ করতাম, তখন তিনি আমাদের বলিতেনঃ যা তোমার সাধ্যের মধ্যে।
[বোখারী পর্ব ৯৩ অধ্যায় ৪৩ হাদীস নং ৭২০২; মুসলিম ৩৩/২২, হাঃ ১৮৬৭] Al lulu wal marjan bangla -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৩৩/২৩. প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার বয়স।
১২২৩. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
উহুদ যুদ্ধের দিন রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট তাকে [ইবনি উমরকে] পেশ করিলেন, তখন তিনি চৌদ্দ বছরের বালক। [ইবনি উমার বলেন] তখন তিনি আমাকে [যুদ্ধে গমনের] অনুমতি দেননি। পরে খন্দকের যুদ্ধে তিনি আমাকে পেশ করিলেন এবং অনুমতি দিলেন। তখন আমি পনের বছরের যুবক।
[বোখারী পর্ব ৫২ অধ্যায় ১৮ হাদীস নং ২৬৬৪; মুসলিম ৩৩/৩২, হাঃ ১৮৬৮] Al lulu wal marjan bangla -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৩৩/২৪. কাফিরদের ভূমিতে কুরআন মাজীদ নিয়ে সফর নিষিদ্ধ, যখন তাহাদের হস্তগত হওয়ার ভয় থাকে।
১২২৪. আবদুল্লাহ্ ইবনি উমর [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] কুরআন সঙ্গে নিয়ে শত্রু-দেশে সফর করিতে নিষেধ করিয়াছেন
। [বোখারী পর্ব ৫৬ অধ্যায় ১২৯ হাদীস নং ২৯৯০; মুসলিম ৩৩/২৪, হাঃ ১৮৬৯] Al lulu wal marjan bangla -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৩৩/২৫. ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা এবং প্রতিযোগিতার জন্য প্রশিক্ষণ দান।
১২২৫. আবদুল্লাহ্ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] যুদ্ধের জন্যে তৈরি ঘোড়াকে হাফ্য়া [নামক স্থান] হইতে সানিয়াতুল ওয়াদা পর্যন্ত দৌড় প্রতিযোগিতা করিয়েছিলেন। আর যে ঘোড়া যুদ্ধের জন্যে তৈরি নয়, সে ঘোড়াকে সানিয়া হইতে যুরাইক গোত্রের মাসজিদ পর্যন্ত দৌঁড় প্রতিযোগিতা করিয়েছিলেন। আর এই প্রতিযোগিতায় আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.]। অগ্রগামী ছিলেন।
[বোখারী পর্ব ৮ অধ্যায় ৪১ হাদীস নং ৪২০; মুসলিম ৩৩/২৫, হাঃ ১৮৭০] Al lulu wal marjan bangla -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৩৩/২৬. ক্বিয়ামাত পর্যন্ত ঘোড়ার কপালে মঙ্গল [লিখিত]।
১২২৬. আবদুল্লাহ্ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] বলেছেন, ঘোড়ার কপালের কেশগুচ্ছে কল্যাণ আছে কিয়ামত অবধি
। [বোখারী পর্ব ৫৬ অধ্যায় ৪৩ হাদীস নং ২৮৪৯; মুসলিম ৩৩/২৬ হাঃ ১৮৭১] Al lulu wal marjan bangla -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১২২৭. উরওয়াহ বারিকী [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেছেন, ঘোড়ার কপালের কেশ গুচ্ছে কল্যাণ রয়েছে কিয়ামত পর্যন্ত। অর্থাৎ [আখিরাতের] পুরস্কার এবং গনীমতের মাল।
[বোখারী পর্ব ৫৬ অধ্যায় ৪৪ হাদীস নং ২৮৫২; মুসলিম ৩৩/২৬ হাঃ ১৮৭৩] Al lulu wal marjan bangla -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১২২৮. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] বলেছেন, ঘোড়ার কপালের কেশ দামে বরকত আছে।
[বোখারী পর্ব ৫৬ অধ্যায় ৪৩ হাদীস নং ২৮৫১; মুসলিম ৩৩/২৬ হাঃ ১৮৭৩] Al lulu wal marjan bangla -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৩৩/২৮. জিহাদ ও আল্লাহ্র রাস্তায় বের হওয়ার ফাযীলাত।
১২২৯. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আল্লাহ্র রাস্তায় বের হয়, যদি সে শুধু আল্লাহর উপর ঈমান এবং তাহাঁর রসূল গণের প্রতি ঈমানের কারণে বের হয়ে থাকে, তবে আল্লাহ্ তাআলা ঘোষণা দেন যে, আমি তাকে তার পুণ্য বা গনীমত [ও বাহন] সহ ঘরে ফিরিয়ে আনব কিংবা তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাব। আর আমার উম্মতের উপর কষ্টদায়ক হইবে বলে যদি মনে না করতাম তবে কোন সেনাদলের সঙ্গে না গিয়ে বসে থাকতাম না। আমি অবশ্যই এটা ভালবাসি যে, আল্লাহ্র রাস্তায় নিহত হই, পুনরায় জীবিত হই, পুনরায় নিহত হই, পুনরায় জীবিত হই, পুনরায় নিহত হই।
[বোখারী পর্ব ২ অধ্যায় ৩৬ হাদীস নং ৩৬; মুসলিম ৩৩/২৮ হাঃ ১৮৭৬] Al lulu wal marjan bangla -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১২৩০. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] বলেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহ্র পথে জিহাদ করে এবং তাহাঁরই বাণীর প্রতি দৃঢ় আস্থায় তাহাঁরই পথে জিহাদের উদ্দেশ্যে বের হয়, আল্লাহ তার দায়িত্ব গ্রহণ করিয়াছেন, হয় তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন অথবা সে যে সাওয়াব ও গনীমত লাভ করেছে তা সমেত তাকে ঘরে ফিরাবেন, যেখান হইতে সে জিহাদের উদ্দেশ্যে বের হয়েছিল।
[বোখারী পর্ব ৫৭ অধ্যায় ৮ হাদীস নং ৩১২৩; মুসলিম ৩৩/২৮ হাঃ ১৮৭৬] Al lulu wal marjan bangla -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১২৩১. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আল্লাহর রাস্তায় মুসলিমদের যে যখম হয়, কিয়ামতের দিন তার প্রতিটি যখম আঘাতকালীন সময়ে যে অবস্থায় ছিল সে অবস্থাতেই থাকিবে। রক্ত ছুটে বের হইতে থাকিবে। তার রং হইবে রক্তের রং কিন্তু গন্ধ হইবে মিশকের মত।
[বোখারী পর্ব ৪ অধ্যায় ৬৭ হাদীস নং ২৩৭; মুসলিম ৩৩/২৮, হাঃ ১৮৭৬] Al lulu wal marjan bangla -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৩৩/২৯. আল্লাহ্ তাআলার রাস্তায় শাহাদাত লাভ করার ফাযীলাত।
১২৩২. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেছেন, জান্নাতে প্রবেশের পর একমাত্র শহীদ ব্যতীত আর কেউ দুনিয়ায় ফিরে আসার আকাঙক্ষা করিবে না, যদিও দুনিয়ার সকল জিনিস তার নিকট থাকিবে। সে দুনিয়ায় ফিরে আসার আকাঙক্ষা করিবে যেন দশবার শহীদ হয়। কেননা সে শাহাদাতের মর্যাদা দেখেছে
। [বোখারী পর্ব ৫৬ অধ্যায় ২১ হাদীস নং ২৮১৭; মুসলিম ৩৩/২৯ হাঃ ১৮৭৭] Al lulu wal marjan bangla -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১২৩৩. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
এক ব্যক্তি আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]-এর নিকট এসে বলিল, আমাকে এমন কাজের কথা বলে দিন, যা জিহাদের সমতুল্য হয়। তিনি বলেন, আমি তা পাচ্ছি না। [অতঃপর বলিলেন] তুমি কি এতে সক্ষম হইবে যে, মুজাহিদ যখন বেরিয়ে যায়, তখন থেকে তুমি মাসজিদে প্রবেশ করিবে এবং দাঁড়িয়ে ইবাদাত করিবে এবং আলস্য করিবে না, আর সিয়াম পালন করিতে থাকিবে এবং সিয়াম ভাঙ্গবে না। লোকটি বলিল, এটা কে পারবে?
[বোখারী পর্ব ৫৬ অধ্যায় ১ হাদীস নং ২৭৮৫; মুসলিম ৩৩/২৯ হাঃ ১৮৭৮] Al lulu wal marjan bangla -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৩৩/৩০. আল্লাহ্র রাস্তায় সকাল-সন্ধ্যা [অতিবাহিত] করার ফাযীলাত।
১২৩৪. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেছেন, আল্লাহ্র রাস্তায় একটি সকাল কিংবা একটি বিকাল অতিবাহিত করা দুনিয়া ও তাতে যা কিছু আছে, তার চেয়ে উত্তম।
[বোখারী পর্ব ৫৬ অধ্যায় ৫ হাদীস নং ২৭৯২; মুসলিম ৩৩/৩০ হাঃ ১৮৮০] Al lulu wal marjan bangla -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১২৩৫. সাহ্ল ইবনি সাদ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেন, আল্লাহ্র রাস্তায় একটি সকাল কিংবা একটি বিকাল অতিবাহিত করা দুনিয়া ও তার ভিতরের সকল কিছু থেকে উত্তম।
[বোখারী পর্ব ৫৬ অধ্যায় ৫ হাদীস নং ২৭৯৪; মুসলিম ৩৩/৩০ হাঃ ১৮৮১] Al lulu wal marjan bangla -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১২৩৬. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেছেন, আল্লাহ্র রাস্তায় একটি সকাল বা একটি বিকাল অতিবাহিত করা তা থেকে উত্তম যেখানে সূর্যের উদয়াস্ত হয়।
[বোখারী পর্ব ৫৬ অধ্যায় ৫ হাদীস নং ২৭৯৩; মুসলিম ৩৩/৩০ হাঃ ১৮৮২] Al lulu wal marjan bangla -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৩৩/৩৪. জিহাদের ও পাহারা দেয়ার ফাযীলাত।
১২৩৭. আবু সাঈদ খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, জিজ্ঞেস করা হলো, হে আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]! মানুষের মধ্যে কে উত্তম? আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] বলেন, সেই মুমিন যে নিজ জান ও মাল দিয়ে আল্লাহ্র পথে জিহাদ করে। সাহাবীগণ বলিলেন, অতঃপর কে? তিনি বলিলেন, সেই মুমিন আল্লাহ্র ভয়ে যে পাহাড়ের কোন গুহায় অবস্থান নেয় এবং স্বীয় অনিষ্ট থেকে লোকদেরকে নিরাপদ রাখে।
[বোখারী পর্ব ৫৬ অধ্যায় ২ হাদীস নং ২৭৮৬; মুসলিম ৩৩/৩৪ হাঃ ১৮৮৮] Al lulu wal marjan bangla -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৩৩/৩৫. ঐ দু লোকের বর্ণনা যাদের একজন অপরজনকে হত্যা করিল এবং দুজনই জান্নাতে প্রবেশ করিল।
১২৩৮. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] বলেছেন, দুব্যক্তির প্রতি আল্লাহ্ সন্তুষ্ট থাকিবেন। তারা একে অপরকে হত্যা করে উভয়েই জান্নাতবাসী হইবে। একজন তো এ কারণে জান্নাতবাসী হইবে যে, সে আল্লাহ্র রাস্তায় জিহাদ করে শহীদ হয়েছে। অতঃপর আল্লাহ্ তাআলা হত্যাকারীর তাওবা কবুল করিয়াছেন। ফলে সেও আল্লাহ্র রাস্তায় শহীদ বলে গণ্য হয়েছে।
[বোখারী পর্ব ৫৬ অধ্যায় ২৮ হাদীস নং ২৮২৬; মুসলিম ৩৩/৩৫ হাঃ ১৮৯০] Al lulu wal marjan bangla -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৩৩/৩৮. আল্লাহ তাআলার রাস্তায় যোদ্ধাদেরকে যানবাহন ইত্যাদি দ্বারা সাহায্য করা ও যোদ্ধাদের অনুপস্থিতিতে উত্তমভাবে তাহাদের পরিবারের খবর নেয়া।
১২৩৯. যায়দ ইবনি খালিদ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] বলেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহ্র পথে জিহাদকারীর আসবাবপত্র সরবরাহ করিল সে যেন জিহাদ করিল। আর যে ব্যক্তি আল্লাহ্র পথে কোন জিহাদকারীর পরিবার-পরিজনকে উত্তমরূপে দেখাশোনা করিল, সেও যেন জিহাদ করিল।
[বোখারী পর্ব ৫৬ অধ্যায় ৩৮ হাদীস নং ২৮৪৩; মুসলিম ৩৩/৩৮ হাঃ ১৮৯৫] Al lulu wal marjan bangla -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৩৩/৪০. অক্ষম ব্যক্তিদের উপর থেকে জিহাদের অপরিহার্যতা রহিত হওয়ার বিধান।
১২৪০. বারা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, لاَ يَسْتَوِي الْقَاعِدُونَ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ আয়াতটি নাযিল হলে আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] যায়দ [রাদি.]-কে ডেকে আনলেন। তিনি কোন জন্তুর একটি চওড়া হাড় নিয়ে আসেন এবং তাতে উক্ত আয়াতটি লিখে রাখেন। ইবনি উম্মু মাকতুম জিহাদে শরীক হওয়ার ব্যাপারে তাহাঁর অক্ষমতা প্রকাশ করলে فَنَزَلَتْ لاَ يَسْتَوِي الْقَاعِدُونَ مِنَ الْمُؤْمِنِينَ غَيْرُ أُولِي الضَّرَرِ আয়াতটি নাযিল হল।
[বোখারী পর্ব ৫৬ অধ্যায় ৩১ হাদীস নং ২৮৩১; মুসলিম ৩৩/৪০ হাঃ ১৮৯৮] Al lulu wal marjan bangla -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৩৩/৪১. শহীদ জান্নাতে যাবে তার প্রমাণ।
১২৪১. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
এক ব্যক্তি উহুদের দিন রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিলেন, আমি যদি শহীদ হয়ে যাই তাহলে আমি কোথায় থাকব বলে আপনি মনে করেন? তিনি বলিলেন, জান্নাতে। তখন ঐ ব্যক্তি হাতের খেজুরগুলো ছুঁড়ে ফেললেন, এরপর তিনি লড়াই করিলেন, এমনকি শহীদ হয়ে গেলেন।
[বোখারী পর্ব ৬৪ অধ্যায় ১৭ হাদীস নং ৪০৪৬; মুসলিম ৩৩/৪১, হাঃ ১৮৯৯] Al lulu wal marjan bangla -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১২৪২. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বানূ সুলায়মের সত্তর জন লোকের একটি দলকে কুরআন শিক্ষা দেয়ার উদ্দেশে বানূ আমিরের নিকট পাঠান। দলটি সেখানে পৌঁছলে আমার মামা [হারাম ইবনি মিলহান] তাহাদেরকে বলিলেন, আমি সর্বাগ্রে বনূ আমিরের নিকট যাব। যদি তারা আমাকে নিরাপত্তা দেয় আর আমি তাহাদের নিকট আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]-এর বাণী পৌঁছাতে পারি, [তবে তো ভাল] অন্যথায় তোমরা আমার কাছেই থাকিবে। অতঃপর তিনি এগিয়ে গেলেন। কাফিররা তাঁকে নিরাপত্তা দিল, কিন্তু তিনি যখন আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]-এর বাণী শুনাতে লাগলেন, সেই সময় আমির গোত্রীয়রা এক ব্যক্তিকে ইঙ্গিত করলো। আর সেই ব্যক্তি তার প্রতি তীর মারল এবং তীর শরীর ভেদ করে বের হয়ে গেল। তখন তিনি বলিলেন আল্লাহু আকবার, কাবার রবের কসম! আমি সফলকাম হয়েছি। অতঃপর কাফিররা তার অন্যান্য সংগীদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ল এবং সকলকে শহীদ করিল, কিন্তু একজন খোঁড়া ব্যক্তি বেঁচে গেলেন, তিনি পাহাড়ে আরোহণ করেছিলেন। হাম্মাম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] অতিরিক্ত উল্লেখ করেন, আমার মনে হয় তার সঙ্গে অন্য একজন ছিলেন। অতঃপর জিব্রীল [আঃ] নাবী [সাঃআঃ]-কে খবর দিলেন যে, প্রেরিত দলটি তাহাদের রবের সঙ্গে মিলিত হয়েছে। তিনি [রব] তাহাদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন এবং তাহাদের সন্তুষ্ট করিয়াছেন। [রাবী বলেন] আমরা এ আয়াতটি পাঠ করতাম, আমাদের কাওমকে জানিয়ে দাও যে, আমরা আমাদের রবের সঙ্গে মিলিত হয়েছি। তিনি আমাদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন এবং আমাদেরও সন্তুষ্ট করিয়াছেন। পরে এ আয়াতটি মানসুখ হয়ে যায়। অতঃপর আল্লাহ্ ও রসূলের প্রতি বিরুদ্ধাচরণ করার কারণে আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] ক্রমাগত চল্লিশ দিন রিল, যাকওয়ান, বানূ লিহয়ান ও বানূ উসাইয়্যার বিরুদ্ধে দুআ করেন।
[বোখারী পর্ব ৫৬ অধ্যায় ৯ হাদীস নং ২৮০১; মুসলিম ৩৩/৪১, হাঃ ৬৭৭] Al lulu wal marjan bangla -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৩৩/৪২. যে আল্লাহ তাআলার বাণী সমুন্নত করার জন্য যুদ্ধ করে সে আল্লাহ্র রাস্তায় [যুদ্ধ করে]।
১২৪৩. আবু মূসা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
এক ব্যক্তি নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট এসে বলিল, এক ব্যক্তি গনীমতের জন্য, এক ব্যক্তি প্রসিদ্ধ হওয়ার জন্য এবং এক ব্যক্তি বীরত্ব দেখানোর জন্য জিহাদে শরীক হলো। তাহাদের মধ্যে কে আল্লাহ্র পথে জিহাদ করিল? তিনি বলিলেন, যে ব্যক্তি আল্লাহ্র কালিমা বুলন্দ থাকার উদ্দেশে যুদ্ধ করিল, সে-ই আল্লাহ্র পথে জিহাদ করিল।
[বোখারী পর্ব ৫৬ অধ্যায় ১৫ হাদীস নং ২৮১০; মুসলিম ৩৩/৪২ হাঃ ১৯০৪] Al lulu wal marjan bangla -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১২৪৪. আবু মূসা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
এক ব্যক্তি নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট এসে বলিল, হে আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]! আল্লাহ্র পথে যুদ্ধ কোন্টি, কেননা আমাদের কেউ লড়াই করে রাগের বশবর্তী হয়ে, আবার কেউ লড়াই করে প্রতিশোধ নেয়ার জন্য। তিনি তার দিকে মাথা তুলে তাকালেন। বর্ণনাকারী বলেন, তাহাঁর মাথা তোলার কারণ ছিল যে, সে ছিল দাঁড়ানো। অতঃপর তিনি বললেনঃ আল্লাহর বাণী বিজয়ী করার জন্য যে যুদ্ধ করে তার লড়াই আল্লাহ্র পথে হয়।
[বোখারী পর্ব ৩ অধ্যায় ৪৫ হাদীস নং ১২৩; মুসলিম ৩৩/৪২, হাঃ ১৯০৪] Al lulu wal marjan bangla -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৩৩/৪৫. নাবী [সাঃআঃ]-এর বাণীঃ নিয়্যাত অনুযায়ী প্রতিফল এবং যুদ্ধ ও অন্যান্য কাজও এ কথার মধ্যে শামিল।
১২৪৫. উমার ইবনি খাত্তাব [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনিয়াছি যে, নিশ্চয়ই প্রতিটি আমলের গ্রহণযোগ্যতা তার নিয়্যাতের উপর নির্ভরশীল। কোন ব্যক্তি তা-ই লাভ করিবে যা সে নিয়্যাত করে থাকে। যে ব্যক্তি আল্লাহ্ ও তাহাঁর রাসূলের সন্তুষ্টির জন্য হিজরাত করিবে তার হিজরাত আল্লাহ্ ও তাহাঁর রাসূলের সন্তুষ্টির জন্যই হইবে। আর যার হিজরাত দুনিয়াকে হাসিলের জন্য হইবে অথবা কোন রমণীকে বিয়ে করার জন্য হইবে তার হিজরাত সে উদ্দেশেই হইবে যে জন্য সে হিজরাত করেছে।
[বোখারী পর্ব ৮৩ অধ্যায় ২৩ হাদীস নং ৬৬৮৯; মুসলিম ৩৩/৪৫, হাঃ ১৯০৭] Al lulu wal marjan bangla -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৩৩/৪৯. সাগরে যুদ্ধের ফাযীলাত।
১২৪৬. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] উম্মু হারাম বিন্তু মিলহান [রাদি.]-এর নিকট যাতায়াত করিতেন এবং তিনি আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]-কে খেতে দিতেন। উম্মু হারাম [রাদি.] ছিলেন উবাদাহ ইবনি সামিত [রাদি.]-এর স্ত্রী। একদা আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] তাহাঁর ঘরে গেলে তিনি তাঁকে আহার করান এবং তাহাঁর মাথার উকুন বাছতে থাকেন। এক সময় আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] ঘুমিয়ে পড়েন। তিনি হাসতে হাসতে ঘুম থেকে জাগলেন। উম্মু হারাম [রাদি.] বলেন, আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]! হাসির কারণ কী? তিনি বলিলেন, আমার উম্মাতের কিছু ব্যক্তিকে আল্লাহ্র পথে জিহাদরত অবস্থায় আমার সামনে পেশ করা হয়। তারা এ সমুদ্রের মাঝে এমনভাবে আরোহী যেমন বাদশাহ তখতের উপর, অথবা বলেছেন, বাদশাহ্র মত তখ্তে উপবিষ্ট। এ শব্দ বর্ণনায় ইসহাক [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] সন্দেহ করিয়াছেন। উম্মু হারাম [রাদি.] বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]! আল্লাহ্র নিকট দুআ করুন যেন আমাকে তিনি তাহাদের অন্তর্ভুক্ত করেন। আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] তাহাঁর জন্য দুআ করিলেন। অতঃপর আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] আবার ঘুমিয়ে পড়েন। অতঃপর হাসতে হাসতে জেগে উঠলেন। আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]! আপনার হাসার কারণ কী? তিনি বলিলেন, আমার উম্মাতের মধ্য থেকে আল্লাহ্র পথে জিহাদরত কিছু ব্যক্তিকে আমার সামনে পেশ করা হয়। পরবর্তী অংশ প্রথম উক্তির মত। উম্মু হারাম [রাদি.] বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]! আপনি আল্লাহ্র নিকট দুআ করুন, যেন আমাকে তিনি তাঁদের অন্তর্ভুক্ত করেন। তিনি বলিলেন, তুমি তো প্রথম দলের মধ্যেই আছ। অতঃপর মুআবিয়াহ ইবনি আবু সুফ্ইয়ান [রাদি.]-এর সময় উম্মু হারাম [রাদি.] জিহাদের উদ্দেশে সামুদ্রিক সফরে যান এবং সমুদ্র থেকে যখন বের হন তখন তিনি তাহাঁর সওয়ারী থেকে ছিটকে পড়েন। এতে তিনি শাহাদাত লাভ করেন।
[বোখারী পর্ব ৫৬ অধ্যায় ৩ হাদীস নং ২৭৮৮-২৭৮৯; মুসলিম ৩৩/৪৯ হাঃ ১৯১২] Al lulu wal marjan bangla -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৩৩/৫১. শাহীদদের বর্ণনা।
১২৪৭. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] বলেছেন, এক ব্যক্তি রাস্তা দিয়ে চলার সময় রাস্তায় একটি কাঁটাযুক্ত ডাল দেখিতে পেয়ে তা সরিয়ে ফেলল। আল্লাহ তাআলা তার এ কাজ সাদরে কবুল করে তার গুনাহ ক্ষমা করে দিলেন। অতঃপর আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] বললেনঃ শহীদ পাঁচ প্রকার- ১. প্লেগে মৃত ব্যক্তি ২. কলেরায় মৃত ব্যক্তি ৩. পানিতে নিমজ্জিত ব্যক্তি ৪. চাপা পড়ে মৃত ব্যক্তি এবং ৫. আল্লাহ্র পথে [জিহাদে] শহীদ
[বোখারী পর্ব ১০ অধ্যায় ৩২ হাদীস নং ৬৫২-৬৫৩; মুসলিম ৩৩/৫১, হাঃ ১৯১৪] Al lulu wal marjan bangla -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১২৪৮. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] বলেছেন, মহামারীতে মৃত্যু হওয়া প্রতিটি মুসলিমের জন্য শাহাদাত
[বোখারী পর্ব ৬১ অধ্যায় ২৮ হাদীস নং ৩৬৪০; মুসলিম ৩৩/৫১ হাঃ ১৯২১] Al lulu wal marjan bangla -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৩৩/৫৩. নাবী [সাঃআঃ]-এর বাণীঃ আমার উম্মাতের মধ্যে একটি দল সর্বদা সত্যের উপর বিজয়ী থাকিবে। যারা তাহাদের বিরোধিতা করিবে তারা তাহাদের কোন ক্ষতি সাধন করিতে পারবে না।
১২৪৯. মুগীরাহ ইবনি শুবাহ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেছেন, আমার উম্মাতের একটি দল সর্বদা বিজয়ী থাকিবে। এমনকি যখন ক্বিয়ামাত আসবে তখনও তারা বিজয়ী থাকিবে।
[বোখারী পর্ব ৬১ অধ্যায় ২৮ হাদীস নং ৩৬৪০; মুসলিম ৩৩/৫৩, হাঃ ১৯২১] Al lulu wal marjan bangla -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১২৫০. মুআবীয়াহ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নাবী [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনিয়াছি, আমার উম্মাতের একটি দল সর্বদা আল্লাহ্র দ্বীনের উপর অটল থাকিবে। তাহাদেরকে যারা অপমান করিতে চাইবে অথবা তাহাদের বিরোধিতা করিবে, তারা তাহাদের কোন ক্ষতি করিতে পারবে না। এমনকি কিয়ামত আসা পর্যন্ত তাঁরা এ অবস্থার উপর থাকিবে
[বোখারী পর্ব ৬১ অধ্যায় ২৮ হাদীস নং ৩৬৪১; মুসলিম ৩৩/৫৩, হাঃ ১০৩৭] Al lulu wal marjan bangla -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৩৩/৫৫. “সফর” শাস্তির একটি টুকরো এবং মুসাফিরের জন্য উত্তম হল তার কাজ সম্পন্ন করে তাড়াতাড়ি বাড়ি ফেরা।
১২৫১. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
নাবী [সাঃআঃ] ইরশাদ করেন, সফর আযাবের অংশ বিশেষ। তা তোমাদের যথাসময় পানাহার ও নিদ্রায় ব্যঘাত ঘটায়। কাজেই সকলেই যেন নিজের প্রয়োজন মিটিয়ে অবিলম্বে আপন পরিজনের কাছে ফিরে যায়।
[বোখারী পর্ব ২৬ অধ্যায় ১৯ হাদীস নং ১৮০৪; মুসলিম ৩৩/৫৫, হাঃ ১৯২৭]Al lulu wal marjan bangla -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
৩৩/৫৬. তুরুক অপছন্দনীয় আর তা হচ্ছে সফর থেকে ফিরে রাতে বাড়িতে প্রবেশ করা।
১২৫২. আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] রাত্রে কখনো পরিবারের নিকট প্রবেশ করিতেন না। তিনি ভোরে কিংবা বিকেলে ছাড়া পরিবারের নিকট প্রবেশ করিতেন না।
[বোখারী পর্ব ২৬ অধ্যায় ১৫ হাদীস নং ১৮০০; মুসলিম ৩৩/৫৬, হাঃ ১৯২৮] Al lulu wal marjan bangla -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১২৫৩. জাবির ইবনি আবদুল্লাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা নাবী [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে এক জিহাদ থেকে ফিরছিলাম। যখন আমরা মাদীনায় প্রবেশ করব এমন সময় নাবী [সাঃআঃ] আমাকে বলিলেন, তুমি অপেক্ষা কর এবং রাতে প্রবেশ কর, যেন [তোমার স্ত্রী মহিলাটি] [যার স্বামী এতদিন কাছে ছিল না] নিজের অগোছালো কেশরাশি বিন্যাস করে নিতে পারে এবং ক্ষৌর কার্য করিতে পারে
। [বোখারী পর্ব ৬৭ অধ্যায় ১০ হাদীস নং ৫০৭৯; মুসলিম ৩৩/৫৬, হাঃ ১৯২৮] Al lulu wal marjan bangla -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
Leave a Reply