Al Lulu Wal Marjan Bangla কসম অধ্যায়ের হাদিস
Al Lulu Wal Marjan Bangla কসম অধ্যায়ের হাদিস , এই পর্বের হাদীস =১৯ টি (১০৬৬-১০৮৪) >> আল লুলু ওয়াল মারজান এর মুল সুচিপত্র দেখুন
পর্ব-২৭ঃ কসম
২৭/১. আল্লাহ তাআলার নাম ব্যতীত অন্যের নামে কসম করা নিষেধ।
২৭/২. যে লাত, উযযার নামে কসম করে সে যেন লা- ইলা-হা ইল্লাল্লাহ বলে।
২৭/৩. এটা [বৈধ] যে কেউ কোন কিছু করার কসম খেলো এবং পরেও অন্যটা করা ভাল দেখল তাহলে সে ভালটা করিবে এবং তার কসমের কাফ্ফারা দিবে।
২৭/৫. ইনশাআল্লাহ বলা।
২৭/৬. হারাম নয় এমন কোন বিষয়ে কোন ব্যক্তিকে কসম করিতে চাপ সৃষ্টি করা যার ফলে তার পরিবার কষ্টে পতিত হয়- এর নিষিদ্ধতা।
২৭/৭. কাফিরের নাযর এবং সে ইসলাম গ্রহণ করার পর এ ব্যাপারে সে কী করিবে।
২৭/৯. ঐ ব্যক্তির [প্রতি] কঠোরতা যে তার দাসকে যিনার অপবাদ দিল।
২৭/১০. দাসকে তা খাওয়ানো যা সে নিজে খায় এবং তা পরানো যা সে নিজে পরে এবং সাধ্যের অতিরিক্ত কাজ না দেয়া।
২৭/১১. গোলামের সওয়াব যখন সে মনিবের কল্যাণে ব্রতী হয় এবং আল্লাহ্র ইবাদাত উত্তমরূপে করে।
২৭/১২. যৌথ মালিকানাভুক্ত গোলামকে যে স্বীয় অংশ হইতে মুক্ত করে দেয়।
২৭/১৩. মুদাব্বার গোলাম বিক্রি করা।
২৭/১. আল্লাহ তাআলার নাম ব্যতীত অন্যের নামে কসম করা নিষেধ।
১০৬৬. উমার [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] আমাকে বলেছেনঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তাআলা তোমাদের পিতা-পিতামহের নামে কসম করিতে নিষেধ করিয়াছেন। উমার [রাদি.] বলেন, আল্লাহ্র কসম! যখন থেকে আমি রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-কে এ কথা বলিতে শুনিয়াছি, তখন থেকে আমি স্বেচ্ছায় বা ভুলক্রমে তাহাদের নামে কসম করিনি।
[বোখারী পর্ব ৮৩ অধ্যায় ৪ হাদীস নং ৬৬৪৭; মুসলিম ২৭/১, ১৬৪৬] Al lulu wal marjan bangla -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১০৬৭. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি উমার ইবনি খাত্তাব [রাদি.]-কে একদিন আরোহীর মাঝে এমন সময় পেলেন, যখন তিনি তাহাঁর পিতার নামে কসম খাচ্ছিলেন। তখন রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] উচ্চৈঃস্বরে তাহাদের বললেনঃ জেনে রেখ! আল্লাহ তোমাদের নিজের পিতার নামে কসম খেতে নিষেধ করিয়াছেন। যদি কাউকে খেতেই হয়, তবে সে যেন আল্লাহ্র নামেই কসম খায়, অন্যথায় সে যেন চুপ থাকে।
[বোখারী পর্ব ৭৮ অধ্যায় ৭৪ হাদীস নং ৬১০৮; মুসলিম ২৭/১, হাঃ ১৬৪৬] Al lulu wal marjan bangla -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
২৭/২. যে লাত, উযযার নামে কসম করে সে যেন লা- ইলা-হা ইল্লাল্লাহ বলে।
১০৬৮. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বলেছেন, যে ব্যক্তি কসম করে বলে যে, লাত ও উয্যার কসম, সে যেন লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলে। আর যে ব্যক্তি তার সাথীকে বলে, এসো, আমি তোমার সঙ্গে জুয়া খেলব, তার সদাকাহ দেয়া কর্তব্য।
[বোখারী পর্ব ৬৫ অধ্যায় ৫৩ হাদীস নং ৪৮৬০; মুসলিম ২৭/২, হাঃ ১৬৪৭] Al lulu wal marjan bangla -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
২৭/৩. এটা [বৈধ] যে কেউ কোন কিছু করার কসম খেলো এবং পরেও অন্যটা করা ভাল দেখল তাহলে সে ভালটা করিবে এবং তার কসমের কাফ্ফারা দিবে।
১০৬৯. আবু মূসা [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
আমার সাথীরা আমাকে রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর কাছে পাঠালেন তাহাদের জন্য পশুবাহন চাওয়ার জন্য। কারণ তাঁরা রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে কষ্টের যুদ্ধ অর্থাৎ তাবূকের যুদ্ধে যাচ্ছিলেন। অনন্তর আমি এসে বললাম, হে আল্লাহ্র নাবী [সাঃআঃ]! আমার সাথীরা আমাকে আপনার কাছে এজন্য পাঠিয়েছেন যে, আপনি যেন তাহাদের জন্য পশুবাহনের ব্যবস্থা করেন। তখন তিনি বলিলেন, আল্লাহ্র কসম! আমি তোমাদের জন্য কোন সওয়ারীর ব্যবস্থা করিতে পারব না। আমি লক্ষ্য করলাম, তিনি রাগান্বিত। [কিন্তু কী কারণে তিনি রাগান্বিত] তা বুঝলাম না। আর আমি নাবী [সাঃআঃ]-এর পশুবাহন না দেয়ার কারণে দুঃখিত মনে ফিরে আসি। আবার এ ভয়ও ছিল যে, নাবী [সাঃআঃ] না আমার উপরই অসন্তুষ্ট হন। তাই আমি সাথীদের কাছে ফিরে যাই এবং নাবী [সাঃআঃ] যা বলেছেন তা আমি তাহাদের জানাই। অল্পক্ষণ পরেই শুনতে পেলাম যে, বিলাল ডাকছেনঃ আবদুল্লাহ ইবনি কাইস কোথায়? তখন আমি তাহাঁর ডাকে সাড়া দিলাম। তখন তিনি বলিলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আপনাকে ডাকছেন, আপনি হাজির হোন। আমি যখন তাহাঁর কাছে হাজির হলাম তখন তিনি বলিলেন, এই জোড়া এবং ঐ জোড়া এমনি ছয়টি উটনী যা সাদ থেকে ক্রয় করা হয়েছে, তা গ্রহণ কর এবং সেগুলো তোমার সাথীদের কাছে নিয়ে যাও এবং বল যে, আল্লাহ তাআলা [রাবীর সন্দেহ] অথবা বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এগুলো তোমাদের যানবাহনের জন্য ব্যবস্থা করিয়াছেন, তোমরা এগুলোর উপর আরোহণ কর। আমি তখন সেগুলো নিয়ে তাহাদের নিকট গেলাম এবং বললাম যে, আল্লাহর নাবী [সাঃআঃ] এগুলোর উপর তোমাদের আরোহণের জন্য ব্যবস্থা করিয়াছেন। কিন্তু আমি তোমাদেরকে ছাড়বনা যতক্ষণ না তোমাদের কেউ আমার সঙ্গে তার কাছে যাবে সে রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর কথোপকথন শুনেছে। তোমরা এমন ধারণা যে, নাবী [সাঃআঃ] যা বলেননি আমি তা তোমাদের বর্ণনা করেছি। তখন তারা আমাকে বলিলেন, আল্লাহ্র কসম! আপনি আমাদের কাছে সত্যবাদী বলে পরিচিত। তবুও আপনি যা চান, আমরা অবশ্য করব। অনন্তর আবু মূসা [রাদি.] তাহাদের মধ্যেকার একদল লোককে সঙ্গে নিয়ে রওয়ানা হন এবং যারা রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কর্তৃক অপারগতা প্রকাশ এবং পরে তাহাদেরকে দেয়ার কথা শুনিয়াছিলেন, তাহাদের কাছে আসেন। তখন তারা সেরূপ কথাই বর্ণনা করিলেন যেমন আবু মূসা [রাদি.] বর্ণনা করেছিলেন।
[বোখারী পর্ব ৬৪ অধ্যায় ৭৮ হাদীস নং ৪৪১৫; মুসলিম হাঃ ২৭/৩, ১৬৪৯] Al lulu wal marjan bangla -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১০৭০. যাহদাম [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা আবু মূসা [রাদি.]-এর নিকট ছিলাম, এ সময় মুরগীর [গোশত] সম্বন্ধে আলোচনা উঠল। তথায় তাইমুল্লাহ গোত্রের এমন লাল বর্ণের এক ব্যক্তিও উপস্থিত ছিল, যেন সে মাওয়ালী [রোমক ক্রীতদাস]-দের একজন। তাকে খাওয়ার জন্য ডাকলেন। তখন সে বলিল, আমি মুরগীকে এমন বস্তু খেতে দেখেছি, যাতে আমার ঘৃণা জন্মেছে। তাই আমি শপথ করেছি যে, তা খাব না। আবু মূসা [রাদি.] বলিলেন, আস, আমি তোমাকে এ সম্পর্কে হাদীস শুনাচ্ছি। আমি কয়েকজন আশআরী ব্যক্তির পক্ষে আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]-এর নিকট সাওয়ারী চাইতে যাই। তখন আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] বলিলেন, আল্লাহ্র কসম! আমি তোমাদের সাওয়ারী দিব না এবং আমার নিকট তোমাদের দেয়ার মত কোন সাওয়ারীও নেই। এ সময় আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]-এর নিকট গনীমতের কয়েকটি উট আনা হলো। তখন তিনি আমাদের খোঁজ নিলেন এবং বলিলেন, সেই আশআরী লোকেরা কোথায়? অতঃপর আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] উঁচু সাদা চুলওয়ালা পাঁচটি উট আমাদের দিতে বলিলেন। যখন আমরা উট নিয়ে রওয়ানা দিলাম, বললাম, আমরা কী করলাম? আমাদের কল্যাণ হইবে না। আমরা আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]-এর নিকট ফিরে এলাম এবং বললাম, আমরা আপনার নিকট সাওয়ারীর জন্য আবেদন করেছিলাম, তখন আপনি শপথ করে বলেছিলেন, আমাদের সাওয়ারী দিবেন না। আপনি কি তা ভুলে গেছেন? আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] বলিলেন, আমি তোমাদের সাওয়ারী দেইনি বরং আল্লাহ তাআলা তোমাদের সাওয়ারী দান করিয়াছেন। আর আল্লাহ্র কসম, আমার অবস্থা এই যে, ইন্শাআল্লাহ্ কোন বিষয়ে আমি কসম করি এবং তার বিপরীতটি কল্যাণকর মনে করি, তখন সেই কল্যাণকর কাজটি আমি করি এবং কাফ্ফারা দিয়ে শপথ মুক্ত হই।
[বোখারী পর্ব ৫৮ অধ্যায় ১৫ হাদীস নং ৩১৩৩; মুসলিম ২৭/৩ হাঃ ১৬৩৯] Al lulu wal marjan bangla -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১০৭১. আবদুর রহমান ইবনি সামুরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] বললেনঃ হে আবদুর রহমান ইবনি সামুরাহ! তুমি নেতৃত্ব চেয়ো না। কেননা, চাওয়ার পর যদি নেতৃত্ব পাও তবে এর দিকে তোমাকে সোপর্দ করে দেয়া হইবে। আর যদি না চেয়ে তা পাও তবে তোমাকে এর জন্য সাহায্য করা হইবে। কোন কিছুর ব্যাপারে যদি কসম কর আর তা ব্যতীত অন্য কিছুর মাঝে কল্যাণ দেখিতে পাও; তবে কসমের কাফ্ফারা আদায় করে তার চেয়ে উত্তমটি অবলম্বন কর।
[বোখারী পর্ব ৮৩ অধ্যায় ১ হাদীস নং ৬৬২২; মুসলিম ২৭/৩, হাঃ ১৬৫২] Al lulu wal marjan bangla -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
২৭/৫. ইনশাআল্লাহ বলা।
১০৭২. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, দাউদ [আ.]-এর পুত্র সুলায়মান [আ.] একদা বলেছিলেন, নিশ্চয়ই আজ রাতে আমি আমার একশত স্ত্রীর সঙ্গে মিলিত হব এবং তাহাদের প্রত্যেকেই একটি করে পুত্র সন্তান প্রসব করিবে, যারা আল্লাহ্র পথে জিহাদ করিবে। এ কথা শুনে একজন ফেরেশতা বলেছিলেন, আপনি ইন্শাআল্লাহ বলুন; কিন্তু তিনি এ কথা ভুলক্রমে বলেননি। এরপর তিনি তার স্ত্রীগণের সঙ্গে মিলিত হলেন; কিন্তু তাহাদের কেউ কোন সন্তান প্রসব করিল না। শুধুমাত্র একজন স্ত্রী একটি অপূর্ণাঙ্গ সন্তান প্রসব করিল। নাবী [সাঃআঃ] বলেন, যদি সুলায়মান [আ.] ইন্শাআল্লাহ বলিতেন, তাহলে আল্লাহ্ তাহাঁর আশা পূর্ণ করিতেন। আর সেটাই ছিল তাহাঁর প্রয়োজন মেটানোর জন্য উত্তম।
[বোখারী পর্ব ৬৭ অধ্যায় ১২০ হাদীস নং ৫২৪২; মুসলিম ২৭/৫, হাঃ ১৬৫৪] Al lulu wal marjan bangla -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১০৭৩. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেন, সুলায়মান ইবনি দাউদ [আ.] বলেছিলেন, আজ রাতে আমি আমার সত্তর জন স্ত্রীর নিকট যাব। প্রত্যেক স্ত্রী একজন করে অশ্বারোহী যোদ্ধা গর্ভধারণ করিবে। এরা আল্লাহ্র পথে জিহাদ করিবে। তখন তাহাঁর সাথী বলিলেন, ইন্শা আল্লাহ্। কিন্তু তিনি মুখে তা বলিলেন না। অতঃপর একজন স্ত্রী ছাড়া কেউ গর্ভধারণ করিলেন না। আর তিনিও এমন এক [পুত্র] সন্তান প্রসব করিলেন যার এক অঙ্গ ছিল না। নাবী [সাঃআঃ] বলিলেন, তিনি যদি ইন্শা আল্লাহ্ মুখে বলিতেন, তাহলে তারা আল্লাহ্র পথে জিহাদ করতো।
[বোখারী পর্ব ৬০ অধ্যায় ৪০ হাদীস নং ৩৪২৪; মুসলিম ২৭/৫, হাঃ ১৬৫৪] Al lulu wal marjan bangla -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
২৭/৬. হারাম নয় এমন কোন বিষয়ে কোন ব্যক্তিকে কসম করিতে চাপ সৃষ্টি করা যার ফলে তার পরিবার কষ্টে পতিত হয়- এর নিষিদ্ধতা।
১০৭৪. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আল্লাহ্র কসম! তোমাদের মাঝে কেউ আপন পরিজনের ব্যাপারে শপথকারী হলে আল্লাহ্র নিকট সে গুনাহ্গার হইবে ঐ ব্যক্তির তুলনায়, যে কাফ্ফারা আদায় করে দেয় যা আল্লাহ্ তাআলা অপরিহার্য করে দিয়েছেন।
[বোখারী পর্ব ৮৩ অধ্যায় ১ হাদীস নং ৬৬২৫; মুসলিম ২৭/৬, হাঃ ১৬৫৫] Al lulu wal marjan bangla -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
২৭/৭. কাফিরের নাযর এবং সে ইসলাম গ্রহণ করার পর এ ব্যাপারে সে কী করিবে।
১০৭৫. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
উমার ইবনিল খাত্তাব [রাদি.] বলেন, হে আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]! জাহিলী যুগে আমার উপর একদিনের ইতিকাফ [মানৎ] ছিল। তখন আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] তাঁকে তা পূরণ করার আদেশ করেন। নাফি [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, উমার হুনায়নের যুদ্ধবন্দীদের নিকট হইতে দুটি দাসী লাভ করেন। তখন তিনি তাহাদেরকে মাক্কায় একটি গৃহে রেখে দেন। বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] হুনায়নের বন্দীদেরকে সৌজন্যমূলক মুক্ত করার আদেশ করিলেন। তারা মুক্ত হয়ে অলি-গলিতে ছুটতে লাগল। উমার [রাদি.] আবদুল্লাহ [রাদি.]-কে বলিলেন, দেখ তো ব্যাপার কী? তিনি বলিলেন, আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] বন্দীদের প্রতি অনুগ্রহ করিয়াছেন। উমার বলিলেন, তবে তুমি গিয়ে সে দাসী দুজনকে মুক্ত করে দাও।
[বোখারী পর্ব ৫৭ অধ্যায় ১৯ হাদীস নং ৩১৪৪; মুসলিম ২৭/৭ হাঃ ১৬৫৬] Al lulu wal marjan bangla -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
২৭/৯. ঐ ব্যক্তির [প্রতি] কঠোরতা যে তার দাসকে যিনার অপবাদ দিল।
১০৭৬. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আবুল কাসিম [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনিয়াছি যে, কেউ আপন ক্রীতদাসের প্রতি অপবাদ আরোপ করিল, অথচ সে তা থেকে পবিত্র যা সে বলেছে, ক্বিয়ামাত দিবসে তাকে কশাঘাত করা হইবে। তবে যদি এমনই হয় যেমন সে বলেছে [সে ক্ষেত্রে কশাঘাত করা হইবে না]।
[বোখারী পর্ব ৮৬ অধ্যায় ৪৫ হাদীস নং ৬৮৫৮; মুসলিম ২৭/৯, হাঃ ১৬৬০] Al lulu wal marjan bangla -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
২৭/১০. দাসকে তা খাওয়ানো যা সে নিজে খায় এবং তা পরানো যা সে নিজে পরে এবং সাধ্যের অতিরিক্ত কাজ না দেয়া।
১০৭৭. মারূর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আমি একবার রাবাযা নামক স্থানে আবু যর [রাদি.]-এর সঙ্গে দেখা করলাম। তখন তাহাঁর পরনে ছিল এক জোড়া কাপড় [লুঙ্গি ও চাদর] আর তাহাঁর ভৃত্যের পরনেও ছিল ঠিক একই ধরনের এক জোড়া কাপড়। আমি তাঁকে এর কারণ জিজ্ঞেস করলে তিনি বললেনঃ একবার আমি এক ব্যক্তিকে গালি দিয়েছিলাম এবং আমি তাকে তার মা সম্পর্কে লজ্জা দিয়েছিলাম। তখন আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] আমাকে বলিলেন, আবু যর! তুমি তাকে তার মা সম্পর্কে লজ্জা দিয়েছ? তুমি তো এমন ব্যক্তি, তোমার মধ্যে এখনো অন্ধকার যুগের স্বভাব বিদ্যমান। জেনে রেখো, তোমাদের দাস-দাসী তোমাদেরই ভাই। আল্লাহ্ তাআলা তাহাদের তোমাদের অধীনস্থ করে দিয়েছেন। তাই যার ভাই তার অধীনে থাকিবে, সে যেন তাকে নিজে যা খায় তাকে তা-ই খাওয়ায় এবং নিজে যা পরিধান করে, তাকেও তা-ই পরায়। তাহাদের উপর এমন কাজ চাপিয়ে দিও না, যা তাহাদের জন্য অধিক কষ্টদায়ক। যদি এমন কষ্টকর কাজ করিতে দাও, তাহলে তোমরাও তাহাদের সে কাজে সহযোগিতা করিবে।
[বোখারী পর্ব ২ অধ্যায় ২২ হাদীস নং ৩০; মুসলিম ২৭/১০ হাঃ ১৬৬১] Al lulu wal marjan bangla -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১০৭৮. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেছেন, তোমাদের কারো খাদিম খাবার নিয়ে উপস্থিত হলে তাকেও নিজের সাথে বসানো উচিত। তাকে সাথে না বসালেও দু এক লোকমা কিংবা দু এক গ্রাস তাকে দেয়া উচিত। কেননা, সে এর জন্য পরিশ্রম করেছে।
[বোখারী পর্ব ৪৯ অধ্যায় ১৮ হাদীস নং ২৫৫৭; মুসলিম ২৭/১০, হাঃ ৫৭৮] Al lulu wal marjan bangla -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
২৭/১১. গোলামের সওয়াব যখন সে মনিবের কল্যাণে ব্রতী হয় এবং আল্লাহ্র ইবাদাত উত্তমরূপে করে।
১০৭৯. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, ক্রীতদাস যদি তার মনিবের হিতাকাঙক্ষী হয় এবং তার প্রতিপালকের উত্তমরূপে ইবাদত করে, তাহলে তার সাওয়াব হইবে দ্বিগুণ।
[বোখারী পর্ব ৪৯ অধ্যায় ১৬ হাদীস নং ২৫৪৬; মুসলিম ২৭/১১, হাঃ ১৬৬৪] Al lulu wal marjan bangla -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১০৮০. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, সৎ ক্রীতদাসের সাওয়াব হইবে দ্বিগুণ। আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] বলেন, যাঁর হাতে আমার প্রাণ, তাহাঁর শপথ করে বলছি, আল্লাহর পথে জিহাদ, হাজ্জ এবং আমার মায়ের সেবার মতো উত্তম কাজ যদি না থাকত, তাহলে ক্রীতদাসরূপে মৃত্যুবরণ করাই আমি পছন্দ করতাম।
[বোখারী পর্ব ৪৯ অধ্যায় ১৬ হাদীস নং ২৫৪৮; মুসলিম ২৭/১১ হাঃ ১৬৬৫] Al lulu wal marjan bangla -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১০৮১. আবু হুরাইরাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] বলেছেন, কত ভাগ্যবান সে যে উত্তমরূপে আপন প্রতিপালকের ইবাদত করে এবং নিজ মনিবের হিতাকাঙক্ষী হয়।
[বোখারী পর্ব ৪৯ অধ্যায় ১৬ হাদীস নং ২৫৪৯] Al lulu wal marjan bangla -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
২৭/১২. যৌথ মালিকানাভুক্ত গোলামকে যে স্বীয় অংশ হইতে মুক্ত করে দেয়।
১০৮২. আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ বলেছেন, কেউ যদি কোন ক্রীতদাস হইতে নিজের অংশ মুক্ত করে আর ক্রীতদাসের মূল্য পরিমাণ অর্থ তার কাছে থাকে, তবে তার উপর দায়িত্ব হইবে ক্রীতদাসের ন্যায্য মূল্য নির্ণয় করা। তারপর সে শরীকদেরকে তাহাদের প্রাপ্য অংশ পরিশোধ করিবে এবং ক্রীতদাসটি তার পক্ষ হইতে মুক্ত হয়ে যাবে, কিন্তু [সে পরিমাণ অর্থ] না থাকলে তার পক্ষ হইতে ততটুকুই মুক্ত হইবে যতটুকু সে মুক্ত করেছে।
[বোখারী পর্ব ৪৯ অধ্যায় ৪ হাদীস নং ২৫২২; মুসলিম ২৭/১২, হাঃ ১৫০১] Al lulu wal marjan bangla -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
১০৮৩. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেছেন, কেউ তার [শরীক] গোলাম হইতে অংশ আযাদ করে দিলে তার দায়িত্ব হয়ে পড়ে নিজস্ব অর্থে সেই গোলামকে পূর্ণ আযাদ করা। যদি তার প্রয়োজনীয় অর্থ না থাকে, তাহলে গোলামের ন্যায্য মূল্য নির্ধারণ করিতে হইবে। তারপর [অন্য শরীকদের অংশ পরিশোধের জন্য] তাকে উপার্জনে যেতে হইবে, তবে তার উপর অতিরিক্ত কষ্ট চাপানো যাবে না
। [বোখারী পর্ব ৪৭ অধ্যায় ৫ হাদীস নং ২৪৯২; মুসলিম ২৭/১২,হাঃ ১৫০১] Al lulu wal marjan bangla -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
২৭/১৩. মুদাব্বার গোলাম বিক্রি করা।
১০৮৪. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণিতঃ
আনসার সম্প্রদায়ের এক ব্যক্তি তার গোলামকে মুদাব্বীর বানালো। ঐ গোলাম ব্যতীত তার আর কোন মাল ছিল না। খবরটি নাবী [সাঃআঃ]-এর কাছে পৌঁছল। তিনি বললেনঃ গোলামটিকে আমার নিকট হইতে কে ক্রয় করিবে? নুআয়ম ইবনি নাহ্হাম তাকে আটশ দিরহামের বিনিময়ে ক্রয় করে নিল
। [বোখারী পর্ব ৮৪ অধ্যায় ৭ হাদীস নং ৬৭১৬; মুসলিম ২৭/১৩, হাঃ ৯৯৭] Al lulu wal marjan bangla -এই হাদীসটির তাহক্কিকঃ সহীহ হাদীস
Leave a Reply