Abu Daud Sharif Bangla যুদ্ধ-সংঘর্ষ । ফুরাত নদী স্বর্ণের খনি

Abu Daud Sharif Bangla যুদ্ধ-সংঘর্ষ । ফুরাত নদী স্বর্ণের খনি

Abu Daud Sharif Bangla যুদ্ধ-সংঘর্ষ । ফুরাত নদী স্বর্ণের খনি >>আবুদ দাউদ শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন

অধ্যায় – ৩৯ঃ যুদ্ধ-সংঘর্ষ, অনুচ্ছেদঃ ১-১৮=১৮টি, হাদীসঃ (৪২৯১-৪৩৫০)=৬০টি

অনুচ্ছেদ-১ঃ এক শতাব্দী কালের বর্ণনা সম্পর্কে
অনুচ্ছেদ-২ঃ রোমীয়দের সঙ্গে যুদ্ধ
অনুচ্ছেদ-৩ঃ বিপর্যয়ের আলামাতসমূহ
অনুচ্ছেদ-৪ঃ ধারাবাহিক যুদ্ধ
অনুচ্ছেদ-৫ঃ বিভিন্ন জাতি পরস্পরকে মুসলিমদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করিতে আহ্বান জানাবে
অনুচ্ছেদ-৬ঃ তুমুল যুদ্ধে মুসলিমদের স্থান
অনুচ্ছেদ-৭ঃ যুদ্ধের ফলে ফিত্বনাহ ছড়াবে
অনুচ্ছেদ-৮ঃ তুর্কী ও আবিসিনীয়দের সঙ্গে অকারণে গোলযোগ বাঁধানো নিষেধ
অনুচ্ছেদ-৯ঃ তুর্কীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ
অনুচ্ছেদ-১০ঃ বাসরাহ সম্পর্কে
অনুচ্ছেদ-১১ঃ ইথিওপিয়া সম্পর্কে
অনুচ্ছেদ-১২ঃ ক্বিয়ামাতের আলামতসমূহ
অনুচ্ছেদ-১৩ঃ ফুরাতের খনিজ সম্পদ উন্মুক্ত হওয়া সম্পর্কে
অনুচ্ছেদ-১৪ঃ দাজ্জালের আবির্ভাব সম্পর্কে
অনুচ্ছেদ-১৫ঃ জাসসাস প্রসঙ্গে
অনুচ্ছেদ-১৬ঃ ইবনি সায়িদের ঘটনা সম্পর্কে
অনুচ্ছেদ-১৭ঃ আদেশ ও নিষেধ সম্পর্কে
অনুচ্ছেদ-১৮ঃ ক্বিয়ামাত সংঘটিত হওয়া সম্পর্কে

অনুচ্ছেদ-১ঃ এক শতাব্দী কালের বর্ণনা সম্পর্কে

৪২৯১. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ এই উম্মাতের জন্য প্রতি একশত বছরের শিরোভাগে এমন লোকের আবির্ভাব ঘটাবেন, যিনি এই উম্মাতের দীনকে তার জন্য সঞ্জীবিত করবেন। ঈমাম আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, আবদুর রহমান ইবনি শুরাইহ আল-ইসকান্দারানীও এ হাদিস বর্ণনা করেছেন, কিন্তু তিনি শারাহীল-এর অতিরিক্ত বর্ণনা করেননি।

Abu Daud Sharif Bangla –  হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-২ঃ রোমীয়দের সঙ্গে যুদ্ধ

৪২৯২. হাসসান ইবনি আত্বিয়্যাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, মাকহুল ও ইবনি আবু যাকারিয়া [রাদি.] খালিদ ইনবু মাদান-এর নিকট যেতে রওয়ানা হলে আমিও তাহাদের সঙ্গে গেলাম। তারা জুবাইর ইবনি নুফাইরের সূত্রে আমাদের নিকট হাদিস বর্ণনা করিলেন সন্ধি সম্পর্কে। তিনি বলেন, জুবাইর [রাদি.] বলিলেন, আপনি আমাদের সঙ্গে নাবী [সাঃআঃ]- এর সাহাবী যু-মিখবার [রাদি.]-র নিকট চলুন। সুতরাং আমরা তার নিকট উপস্থিত হলে জুবাইর [রাদি.] তাহাকে সন্ধি সম্পর্কে প্রশ্ন করেন। তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছিঃ অচিরেই তোমরা রোমানদের সঙ্গে সন্ধি করিবে। অতঃপর তোমরা ও তারা একত্র হয়ে তোমাদের পশ্চাৎবর্তী একদল শত্রুর মোকাবেলা করিবে। তোমরা বিজয়ী হইবে, গনীমাত অর্জন করিবে এবং নিরাপদে ফিরে আসবে। শেষে তোমরা টিলাযুক্ত একটি মাঠে যাত্রাবিরতি করিবে। অতঃপর খৃস্টানদের মধ্য হইতে এক ব্যক্তি ক্রুশ উপরে উত্তোলন করে বলবে, ক্রুশ বিজয়ী হয়েছে। এতে মুসলিমদের মধ্যকার এক ব্যক্তি উত্তেজিত হয়ে তাহাকে হত্যা করিবে। তখন রোমানরা চুক্তি ভঙ্গ করিবে এবং যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নিবে।

Abu Daud Sharif Bangla –  হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৪২৯৩. হাসসান ইবনি আত্বিয়্যাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

হাসসান ইবনি আত্বিয়্যাহ [রাদি.] সূত্রে এই সানাদে উপরোক্ত হাদিস বর্ণিত হয়েছে। তাতে আরও আছেঃ মুসলিমরা রাগের সাথে তাহাদের যুদ্ধাস্ত্রের দিকে ধাবিত হইবে এবং যুদ্ধে লিপ্ত হইবে। আল্লাহ তাহাদেরকে শহিদী মৃত্যু দিয়ে সম্মানিত করবেন।

Abu Daud Sharif Bangla –  হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-৩ঃ বিপর্যয়ের আলামাতসমূহ

৪২৯৪. মুআয ইবনি জাবাল [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ বাইতুল মাকদিসে বসতি স্থাপন ইয়াসরিবের বিপর্যয়ের কারণ হইবে এবং ইয়াসরিবের বিপর্যয় সংঘাতের কারণ হইবে। যুদ্ধের ফলে কুসতুনতীনিয়া বিজিত হইবে এবং কুসতুনতীনিয়া বিজয় দাজ্জালের আবির্ভাবের আলামত। অতঃপর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যার নিকট হাদিস বর্ণনা করেছেন তার উরুতে বা কাঁধে নিজের হাত দ্বারা মৃদু আঘাত করে বলেন, এটা নিশ্চিত সত্য, যেমন তুমি এখানে উপস্থিত, যেমন তুমি এখানে বসা আছো। অর্থাৎ তিনি মুআয ইবনি যাবাল [রাদি.]-কে লক্ষ্য করে বলেন।

Abu Daud Sharif Bangla –  হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

অনুচ্ছেদ-৪ঃ ধারাবাহিক যুদ্ধ

৪২৯৫. মুআয ইবনি জাবাল [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ ভয়ংকর যুদ্ধ ও কুসতুনতীনিয়া বিজয় এবং দাজ্জালের আবির্ভাব মাত্র সাত মাসের মধ্যে ঘটবে। {৪২৯৪}

{৪২৯৪} তিরমিজি, ইবনি মাজাহ, আহমাদ। সানাদে আবু বকর ইবনি আবু মারইয়াম রয়েছে। তার হাদিস দ্বারা দলীল করা যাবে না। অনুরূপ কথা বলিয়াছেন মুনযিরী। হাফিয বলেনঃ যয়ীফ। ঈমাম তিরমিজি বলেনঃ হাসান গরীব। Abu Daud Sharif Bangla –  হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৪২৯৬. আবদুল্লাহ ইবনি বুসর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ মহাযুদ্ধ এবং [কন্সটান্টিনোপল] শহর বিজয়ের মধ্যে ছয় বছরের ব্যবধান হইবে। আর সপ্তম বছরে মাসীহ দাজ্জাল আবির্ভূত হইবে। {৪২৯৫}

{৪২৯৫} ইবনি মাজাহ, আহমাদ। Abu Daud Sharif Bangla –  হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

অনুচ্ছেদ-৫ঃ বিভিন্ন জাতি পরস্পরকে মুসলিমদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করিতে আহ্বান জানাবে

৪২৯৭. সাওবান [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ খাদ্য গ্রহণকারীরা যেভাবে খাবারের পাত্রের চতুর্দিকে একত্র হয়, অচিরেই বিজাতিরা তোমাদের বিরুদ্ধে সেভাবেই একত্রিত হইবে। এক ব্যক্তি বললো, সেদিন আমাদের সংখ্যা কম হওয়ার কারণে কি এরূপ হইবে? তিনি বলিলেনঃ তোমরা বরং সেদিন সংখ্যাগরিষ্ঠ হইবে; কিন্তু তোমরা হইবে প্লাবনের স্রোতে ভেসে যাওয়া আবর্জনার মত। আর আল্লাহ তোমাদের শত্রুদের অন্তর হইতে তোমাদের পক্ষ হইতে আতঙ্ক দূর করে দিবেন, তিনি তোমাদের অন্তরে ভীরুতা ভরে দিবেন। এক ব্যক্তি বললো, হে আল্লাহর রাসূল! আল-ওয়াহ্‌ন কি? তিনি বলিলেনঃ দুনিয়ার মোহ এবং মৃত্যুকে অপছন্দ করা।

Abu Daud Sharif Bangla –  হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-৬ঃ তুমুল যুদ্ধে মুসলিমদের স্থান

৪২৯৮. আবু দারদা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ যুদ্ধের দিন মুসলিমদের শিবির স্থাপন করা হইবে গূতা নামক শহরে, যা সিরিয়ার সর্বোত্তম শহর দামিশকের পাশে অবস্থিত।

Abu Daud Sharif Bangla –  হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৪২৯৯. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ অচিরেই মুসলিমরা মদিনায় অবরুদ্ধ হইবে এবং তাহাদের দূরবর্তী সীমান্ত হইবে সালাহ নামক স্থান।

Abu Daud Sharif Bangla –  হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৪৩০০. যুহরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, খায়বারের নিকটবর্তী একটি স্থানের নাম হল সালাহ্‌।

Abu Daud Sharif Bangla –  হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ মাকতু

অনুচ্ছেদ-৭ঃ যুদ্ধের ফলে ফিত্বনাহ ছড়াবে

৪৩০১. আওফ ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ এই উম্মাতের তরবারি ও এর শত্রুর তরবারি দুটোকে আল্লাহ কখনো এ উম্মাতের উপর একত্র করবেন না।

Abu Daud Sharif Bangla –  হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-৮ঃ তুর্কী ও আবিসিনীয়দের সঙ্গে অকারণে গোলযোগ বাঁধানো নিষেধ

৪৩০২. আবু সুবাইনা নামক নাবী [সাঃআঃ]-এর জনৈক সাহাবী হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ]-এর সূত্রে বর্ণিত। তিনি [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ তোমরা হাবশীদের হইতে বিরত থাকো যে পর্যন্ত তারা তোমাদের থেকে বিরত থাকে এবং তুর্কিদেরও ত্যাগ করো যে পর্যন্ত তারা তোমাদের ত্যাগ করে। {৪৩০১}

{৪৩০১} নাসায়ী। Abu Daud Sharif Bangla –  হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

অনুচ্ছেদ-৯ঃ তুর্কীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ

৪৩০৩. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ যে পর্যন্ত না মুসলিমরা তুর্কী জাতির সঙ্গে যুদ্ধ করিবে, সে পর্যন্ত ক্বিয়ামাত হইবে না। সেই জাতির মুখমন্ডল হইবে বর্মের ন্যায় চওড়া আর মাংসল। তারা পশমী পোশাক পরে।

Abu Daud Sharif Bangla –  হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৪৩০৪. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ যে জাতি পশমযুক্ত জুতা পরবে সেই জাতির সঙ্গে যুদ্ধ না করা পর্যন্ত ক্বিয়ামাত হইবে না। আর তোমরা ছোট চোখ, চেপ্টা নাক ও বর্মের মতো চওড়া ও মাংসল মুখমন্ডলবিশিষ্ট জাতির সঙ্গে যুদ্ধ না করা পর্যন্ত ক্বিয়ামাত হইবে না।

Abu Daud Sharif Bangla –  হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৪৩০৫. আবদুল্লাহ ইবনি বুরাইদাহ [রাদি.] তার পিতা হইতে বর্ণীতঃ

তিনি নাবী [সাঃআঃ] হইতে হাদিস বর্ণনা করেন যেঃ তোমাদের সঙ্গে ছোট চোখবিশিষ্ট জাতি অর্থাৎ তুর্কীরা যুদ্ধ করিবে। তিনি বলেন, তোমরা তাহাদেরকে তিনবার তাড়িয়ে নিয়ে যাবে, অবশেষে আরব উপদ্বীপে তাহাদের নাগাল পাবে। প্রথম তাড়ানোতে যারা পালিয়ে যাবে, তারা রক্ষা পাবে, আর দ্বিতীয় তাড়ানোতে অনেকে রক্ষা পাবে আর অনেকে ধ্বংস হইবে; আর তৃতীয়বার তাহাদের মূলোৎপাটিত করা হইবে অথবা অনুরূপ কিছু বলিয়াছেন। {৪৩০৪}

{৪৩০৪} আবু দাউদ এটি এককভাবে বর্ণনা করেছেন। এর সনদ মুনকাতি। আবদুল্লাহ বিন বুরাইদাহ হাদিসটি তার পিতা হইতে শুনেননি। যা তাহযীব গ্রন্থে উল্লেখ আছে। এছাড়া সানাদে বাশীর ইবনি মুহাজির রয়েছে। তিনি সত্যবাদী কিন্তু হাদিস বর্ণনায় শিথিল। তাহাকে মুরযিয়া বলা হয়েছে। Abu Daud Sharif Bangla –  হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

অনুচ্ছেদ-১০ঃ বাসরাহ সম্পর্কে

৪৩০৬. মুসলিম ইবনূ আবু বাক্‌রাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি আমার পিতাহাকে বলিতে শুনিয়াছি, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ দাজ্‌লা [তাইগ্রিস] নদীর তীরবর্তী নিচু এলাকায় বাস্‌রাহ নামক স্থানে আমার উম্মাতের কিছু লোক বসতি স্থাপন করিবে। সেই নদীর উপরে সেতু থাকিবে আর নাগরিকের সংখ্যা হইবে প্রচুর। আর এটা হইবে মুহাজিরদের শহরসমূহের একটি। শেষ যামানায় চওড়া চেহারা ও ছোট চোখবিশিষ্ট কানতূরা গোত্র সেই নদীর অববাহিকায় ঘাঁটি স্থাপন করিবে এবং উক্ত শহরের বাসিন্দারা তিন দলে বিভক্ত হয়ে যাবে। এক দল গরুর লেজ ধরে মরুভূমিতে যাবে এবং ধ্বংস হইবে। দ্বিতীয় দল নিজেদের জন্য নিরাপদ স্থান খুজবে এবং কাফির হয়ে যাবে। তৃতীয় দল তাহাদের পিছনে পরিবার-পরিজন ও সন্তানাদি রেখে দুশমনদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হইবে এবং শহীদ হইবে।

Abu Daud Sharif Bangla –  হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

৪৩০৭. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাকে বলেনঃ হে আনাস! নিশ্চয়ই লোকেরা বিভিন্ন শহরের পত্তন করিবে। জেনে রাখো, তার মধ্যে বাসরাহ বা বুসাইরা নামক একটি শহরও হইবে। তুমি যদি এর পাশ দিয়ে যাও বা এতে প্রবেশ করো তাহলে সাবধান থাকিবে এর লবণাক্ত যমীন হইতে, এর কাল্ল নামক স্থান হইতে এবং বাজার ও নেতাহাদের দরজা হইতে এবং আশপাশ থেকে। কেননা এটা ধ্বসে যাবে, নিক্ষিপ্ত হইবে আর ভূমিকম্পে প্রকম্পিত হইবে। আর একদল লোক রাতের বেলা ঘুমিয়ে থাকিবে; কিন্তু প্রত্যুষে তারা বানর ও শূকরে পরিণত হইবে।

Abu Daud Sharif Bangla –  হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৪৩০৮. ইবরাহীম ইবনি দিরহাম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি আমার পিতাহাকে বলিতে শুনিয়াছি, আমরা হাজ্জ করিতে যাচ্ছিলাম। তখন এক লোক আমাদের জিজ্ঞাসা করলো, তোমাদের কাছাকাছি উবুল্লাহ নামে একটি শহর আছে কি? আমরা বলিলাম, হ্যাঁ। সে বলিল, তোমাদের মধ্যে কে এই দায়িত্ব নিবে যে, আমার পক্ষ হইতে আল-আশ্‌শার মসজিদে দুই বা চার রাকআত সালাত পড়বে? আর এ কথাটা তিনি আবু হুরায়রা্‌র জন্য বলিতেন যে, আমি আমার বন্ধু আবুল ক্বাসিম [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছিঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্বিয়ামাতের দিন মাসজিদুল আশ্‌শারে এমন কতক শহীদকে পাঠাবেন যাদের ব্যতীত অন্য কেউ বদরের শহীদদের সঙ্গে দাঁড়াতে পারবে না। ঈমাম আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, এই মাসজিদটি [ফুরাত] নদীর তীরে অবস্থিত। {৪৩০৭}

{৪৩০৭} আবু দাউদ এটি একক ভাবে বর্ণনা করেছেন। সানাদে ইবরাহীম ইবনি সালিহ রয়েছে। হাফিয বলেনঃ তার মাঝে দুর্বলতা আছে। আবু জাফার উক্বইলী বলেনঃ ইবরাহীম এবং তার পিতা প্রসিদ্ধ নন। আর হাদিসটি সংরক্ষিত নয়। Abu Daud Sharif Bangla –  হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

অনুচ্ছেদ-১১ঃ ইথিওপিয়া সম্পর্কে

৪৩০৯. আব্দুল্লাহ ইবনি আমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ যতদিন পর্যন্ত ইথিওপীয়রা তোমাদের ত্যাগ করিবে, তোমরাও তাহাদের ত্যাগ করো। কেননা ইথিওপিয় ছোট গোছাধারী এক ব্যক্তি ব্যতীত কেউ কাবার ভাণ্ডার লুণ্ঠন করিবে না।

Abu Daud Sharif Bangla –  হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

অনুচ্ছেদ-১২ঃ ক্বিয়ামাতের আলামতসমূহ

৪৩১০. আবু যুরআহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, মাদীনাহ্‌তে মারওয়ানের নিকট একদল লোক এসে শুনতে পেল যে, তিনি ক্বিয়ামাতের আলামত প্রসঙ্গে বর্ণনা করেছেন যে, দাজ্জালের আত্মপ্রকাশ এর প্রথম আলামত। বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর আমি আবদুল্লাহ ইবনি আমরের নিকট গিয়ে একথা আলোচনা করলে তিনি বলিলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে এ ব্যাপারে যা বলিতে শুনিয়াছি তিনি তার কিছুই বলেননি। নিঃসন্দেহে এর প্রথম আলামত হল পশ্চিম দিক থেকে সূর্য উদিত হওয়া অথবা মানব জাতির উপর পূর্বাহ্নে দাব্বাতুল আরদ নামক একটি জন্তুর আত্মপ্রকাশ। এই দুটির যে কোন একটি আগে এবং অপরটি এর পরপরই প্রকাশিত হইবে। আবদুল্লাহ [রাদি.] বলেন, এ সময় তিনি কিতাব পড়ছিলেন। আর আমার মনে হয় তাহাঁর বক্তব্যের মধ্যে পশ্চিম দিক থেকে সূর্য উদয়টাই প্রথম প্রকাশিত হইবে।

Abu Daud Sharif Bangla –  হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৪৩১১. হুযাইফাহ ইবনি আসীদ আল-গিফারী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমরা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর ঘরের ছায়ায় বসে ক্বিয়ামাত সম্পর্কে আলোচনা করছিলাম। আমাদের কণ্ঠস্বর চরমে উঠলে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেনঃ দশটি আলামত প্রকাশিত না হওয়া পর্যন্ত কখনো ক্বিয়ামাত হইবে না। সেগুলো হলঃ পশ্চিম দিক থেকে সূর্য উদয়, দাব্বাতুল আর্‌দ নামক জন্তুর আবির্ভাব, ইয়াজুজ-মাজুজ, দাজ্জাল ও ঈসা ইবনি মারইয়াম [আঃ] ও ধোঁয়ার প্রকাশ, আর তিনটি ভূমিধ্বসঃ পাশ্চাত্যে একটি, প্রাচ্যে একটি, আরব উপদ্বীপে একটি। এগুলোর পরেই ইয়ামানের আদান নামক স্থানের নীচু ভূমি হইতে আগুন বের হইবে, যা মানুষকে হাশরের [সিরিয়ার] দিকে তাড়িয়ে নিয়ে যাবে।

Abu Daud Sharif Bangla –  হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৪৩১২. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ সূর্য তার ডুবার স্থান [পশ্চিম দিক] হইতে উদয় না হওয়া পর্যন্ত ক্বিয়ামাত হইবে না। যখন তা উদয় হইবে এবং যত লোক তা দেখবে, তারা ঈমান আনবে। কিন্তু “সেদিন তার ঈমান কোন উপকারে আসবে না, যে ব্যক্তি পূর্বে ঈমান আনেনি অথবা যে ব্যক্তি ঈমানের মাধ্যমে কল্যাণ অর্জন করেনি” [সূরাহ আনআমঃ ১৫৮]।

Abu Daud Sharif Bangla –  হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-১৩ঃ ফুরাতের খনিজ সম্পদ উন্মুক্ত হওয়া সম্পর্কে

৪৩১৩. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ অচিরেই ফুরাত নদী স্বর্ণের খনি উন্মুক্ত করিবে। অতএব যে কেউ সেখানে উপস্থিত থাকিবে সে যেন তা হইতে কিছুই গ্রহণ না করে।

Abu Daud Sharif Bangla –  হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৪৩১৪. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ] সূত্রে উপরোক্ত হাদিসের অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। কিন্তু তিনি বলেনঃ ফুরাত নদী স্বর্ণের পাহাড় উন্মুক্ত করিবে।

Abu Daud Sharif Bangla –  হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-১৪ঃ দাজ্জালের আবির্ভাব সম্পর্কে

৪৩১৫. রিবঈ ইবনি হিরাশ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, হুযাইফাহ ও আবু মাসউদ [রাদি.] একত্র হলে হুযাইফাহ [রাদি.] বলিলেন, দাজ্জালের সঙ্গে যা কিছু থাকিবে, এ সম্বন্ধে আমি অবশ্যই তার চেয়ে ভাল জানি। নিশ্চয়ই তার সঙ্গে থাকিবে পানির নহর ও আগুনের কুন্ড। অতঃপর তোমরা যেটাকে দেখবে আগুন, মূলত সেটা পানি আর যেটাকে দেখবে পানি, মূলত সেটা আগুন। যে কেউ এর সাক্ষাত পাবে, সে যেটাকে আগুন দেখবে তা যেন পান করে, তাহলেই সে পানি পাবে। আবু মাসউদ আল-বাদ্‌রী [রাদি.] বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে এরূপ বলিতে শুনিয়াছি।

Abu Daud Sharif Bangla –  হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৪৩১৬. ক্বাতাদাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি আনাস ইবনি মালিক [রাদি.]-কে নাবী [সাঃআঃ] হইতে হাদিস বর্ণনা করিতে শুনিয়াছি যে, তিনি বলিয়াছেনঃ প্রত্যেক প্রেরিত নাবীই তাহাঁর উম্মাতদের মিথ্যাবাদী কানা দাজ্জাল সম্পর্কে সতর্ক করেছেন। জেনে রাখো, সে হইবে কানা, আর তোমাদের মহান রব কানা নন। আর তার দুচোখের মাঝে কাফির লেখা থাকিবে।

Abu Daud Sharif Bangla –  হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৪৩১৭. মুহাম্মাদ ইবনি মুসান্না-, মুহাম্মাদ ইবনি জাফার হইতে শুবাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] সূত্র হইতে বর্ণীতঃ

মুহাম্মাদ ইবনি মুসান্না-, মুহাম্মাদ ইবনি জাফার হইতে শুবাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] সূত্রে [ক্বাফ], [ফা], [রাদি.] এভাবে উল্লেখ আছে। {৪৩১৬}

আমি এটি সহিহ এবং যঈফেও পাইনি।

{৪৩১৬} এর পূর্বেরটি দেখুন। Abu Daud Sharif Bangla –  হাদিসের তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

৪৩১৮. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ]-এর সূত্রে এ হাদিসে বর্ণিত আছেঃ প্রত্যেক মুসলিম তা পড়তে পারবে।

Abu Daud Sharif Bangla –  হাদিসের তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

৪৩১৯. আবুদ-দাহমা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি ইমরান ইবনিল হুসাইন [রাদি.]-কে বলিতে শুনিয়াছি, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ কেউ দাজ্জালের আবির্ভাবের কথা শুনলে সে যেন তার থেকে দূরে চলে যায়। আল্লাহর কসম! যে কোন ব্যক্তি তার নিকট এলে সে অবশ্যই মনে করিবে যে, সে ইমানদার। অতঃপর সে তার দ্বারা তার মধ্যে জাগরিত সন্দেহপূর্ণ বিষয়ের অনুসরণ করিবে। তিনি এরূপই বলিয়াছেন।

Abu Daud Sharif Bangla –  হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৪৩২০. উবাদাহ ইবনিস সামিত [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি লোকদের নিকট হাদিস বর্ণনা করেন যে, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ নিশ্চয়ই আমি তোমাদের নিকট দাজ্জাল সম্পর্কে বহুবার বর্ণনা করেছি, কারণ আমি আশঙ্কা করছি, তোমরা বুঝতে পারছো কিনা? নিশ্চয়ই মাসীহ দাজ্জাল হইবে বেঁটে, মুরগীর পা বিশিষ্ট ও কুঞ্চিত কেশধারী, এক চোখবিশিষ্ট আলোহীন এক চোখধারী যা বাইরের দিকে ফোলাও নয়, আবার কোঠরাগতও নয়। যদি তোমাদের কোন সন্দেহ থাকে তবে জেনে রাখো, তোমাদের রব কানা নন।

Abu Daud Sharif Bangla –  হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৪৩২১. আন-নাওয়াস ইবনি সামআন আল-কিলাবী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, একদা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] দাজ্জাল সম্পর্কে আলোচনা করিলেন। তিনি বলেনঃ আমি তোমাদের মাঝে বিদ্যমান থাকতে যদি সে আবির্ভূত হয় তবে তোমাদের পক্ষ হইতে আমিই তার প্রতিপক্ষ হবো। আর আমি তোমাদের মাঝে বিদ্যমান না থাকা অবস্থায় যদি সে আবির্ভূত হয় তবে প্রত্যেক ব্যক্তিকে নিজেই তার প্রতিপক্ষ হইতে হইবে। আর আল্লাহ হইবেন প্রত্যেক মুসলিমের জন্য আমার পক্ষের দায়িত্বশীল। তোমাদের মাঝে যে কেউ তাহাকে পাবে, সে যেন সূরাহ আল-কাহ্‌ফের প্রথম কয়েকটি আয়াত পাঠ করে; কেননা এটাই হইবে ফিত্বনাহ থেকে তার নিরাপত্তার প্রধান উপায়। আমরা বলিলাম, সে পৃথিবীতে কতদিন থাকিবে? তিনি বলিলেনঃ চল্লিশ দিন। একদিন হইবে এক বছরের সমান, একদিন হইবে এক মাসের সমান ও একদিন হইবে এক সপ্তাহের সমান, আর বাকি দিনগুলো হইবে তোমাদের সাধারণ দিনগুলোর সমান। আমরা বলিলাম, হে আল্লাহর রাসুল! যে দিনটি এক বছরের সমান হইবে, সে দিনে এক দিন ও এক রাতের সলাত কি আমাদের জন্য যথেষ্ট হইবে? তিনি বলিলেনঃ না, তোমরা অনুমান করে দিনের পরিমাণ নির্ধারণ করে [সলাত পড়বে]। অতঃপর ঈসা ইবনি মারইয়াম [আঃ] দামেশকের পূর্ব প্রান্তে একটি সাদা মিনারে অবতরণ করবেন এবং লুদ্দ নামক স্থানের দ্বারপ্রান্তে দাজ্জালকে নাগালে পাবেন এবং হত্যা করবেন।

Abu Daud Sharif Bangla –  হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৪৩২২. আবু উমামাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ] সূত্রে উপরে বর্ণিত হাদিসের সমার্থবোধক হাদিস বর্ণনা করেন। আর অনুরূপ অর্থে সলাতের উল্লেখ করেন।

Abu Daud Sharif Bangla –  হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৪৩২৩. আবু দারদা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ যে ব্যক্তি সূরাহ আল-কাহ্‌ফের প্রথম দশ আয়াত মুখস্ত করিবে সে দাজ্জালের ফিত্বনাহ হইতে মুক্তি পাবে।

সহিহ।

ঈমাম আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, হিশাম আদ-দাস্তাওয়াঈ কাতাদার সূত্রে এরূপই বলিয়াছেন; কিন্তু তিনি একথাটি এভাবে বলিয়াছেনঃ যে ব্যক্তি সূরাহ কাহ্‌ফের শেষের কয়েকটি আয়াত হিফাযাত করিবে। আর শুবাহ বলেনঃ যে ব্যক্তি সূরাহ কাহ্‌ফের শেষাংশ মুখস্ত রাখবে।

এর পূর্বের বর্ণনাটি অধিক সহিহ এবং অধিক বর্ণিত।

Abu Daud Sharif Bangla –  হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৪৩২৪. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ আমার ও তাহাঁর অর্থাৎ ঈসা [আঃ] এর মাঝে কোন নাবী নেই। আর তিনি তো অবতরণ করবেন। তোমরা তাঁকে দেখে এভাবে চিনতে পারবে যে, তিনি মাঝারি উচ্চতার, লাল-সাদা ও গেরুয়া রঙের মাঝামাঝি অর্থাৎ দুধে আল্‌তা তাহাঁর দেহের রং হইবে এবং তাহাঁর মাথার চুল ভিজা না থাকলেও মনে হইবে চুল হইতে যেন বিন্দু বিন্দু পানি টপকাচ্ছে। তিনি ইসলামের জন্য মানুষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবেন, ক্রুশ ভেঙ্গে ফেলবেন, শুকর নিধন করবেন ও জিযিয়া রহিত করবেন। তিনি তাহাঁর যুগে ইসলাম ছাড়া সকল ধর্ম বিলুপ্ত করবেন এবং মাসীহ দাজ্জালকে হত্যা করবেন। তিনি পৃথিবীতে চল্লিশ বছর অবস্থান করবেন, অতঃপর মৃত্যুবরণ করবেন এবং মুসলিমরা তাহাঁর জানাযা পড়বে।

Abu Daud Sharif Bangla –  হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-১৫ঃ জাসসাস প্রসঙ্গে

৪৩২৫. ফাত্বিমাহ বিনতু ক্বাইস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এক রাতে ইশার সলাত পড়তে বিলম্ব করিলেন। তিনি [ঘর হইতে] বেরিয়ে এসে বলিলেনঃ তামীম আদ-দারী আমার নিকট যে ঘটনা বর্ণনা করেছে সেটিই আমাকে আটকে রেখেছে। সে সমুদ্রের উপদ্বীপের জনৈক ব্যক্তির সূত্রে আমাকে বলেছে, হঠাৎ আমি একটি স্ত্রীলোককে দেখিতে পেলাম যে, সে তার চুল টানছে। তিনি প্রশ্ন করিলেন, তুমি কে? সে বলিল, আমি গুপ্তচর, তুমি ওই প্রাসাদে যাও। অতঃপর আমি সেখানে গিয়ে দেখিতে পেলাম, জনৈক ব্যক্তি তার কুঞ্চিত কেশ টানছে, সে মজবুত শিকলে বাঁধা অবস্থায় আকাশ ও যমীনের মাঝখানে ছট্‌ফট করছে। আমি বলিলাম, তুমি কে? সে বলিল, আমি তো দাজ্জাল। নিরক্ষরদের নাবী এখন আবির্ভূত হয়েছেন কি? আমি বলিলাম, হ্যাঁ। সে বলিল, লোকেরা তাঁকে মান্য করছে নাকি অমান্য করছে? আমি বলিলাম, তারা বরং মান্য করছে। সে বললো, এটাই তাহাদের জন্য কল্যাণকর।

Abu Daud Sharif Bangla –  হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৪৩২৬. ফাত্বিমাহ বিনতু ক্বাইস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি শুনতে পেলাম, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ঘোষণা করছেন যে, সলাতের জন্য সমবেত হও। অতএব আমি বেরিয়ে এসে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সাথে সলাত আদায় করলাম। সলাত শেষে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] হাসতে হাসতে মিম্বারের উপর বসে বলিলেনঃ প্রত্যেকেই নিজ নিজ স্থানে বসে থাকো। পুনরায় বলিলেনঃ তোমরা কি জানো, কেন আমি তোমাদের একত্র করেছি? উপস্থিত সকলেই বললো, আল্লাহ ও তাহাঁর রাসূলই অধিক জানেন। তিনি বলিলেনঃ কোন ভয়-ভীতি বা কোন কাঙ্ক্ষিত বস্তুর জন্য আমি তোমাদের একত্র করিনি; বরং তোমাদের একত্র করেছি এজন্য যে, তামীম আদ-দারী খ্রিস্টান ছিলো। সে এসে বাইআত করে মুসলিম হয়েছে, আর আমাকে দাজ্জাল সম্পর্কে এরূপ একটি ঘটনা শুনিয়েছে, আমি তোমাদের নিকট সে সম্পর্কে যা বলেছি, তার অনুরূপ। সে বলেছে, একদা সে লাখ্‌ম ও জুযাম গোত্রের তিরিশজন লোকের সঙ্গে সমুদ্রযানে ভ্রমণ করছিলো। এসময় সমুদ্র তরঙ্গ তাহাদের নিয়ে একমাস পর্যন্ত খেলা করে সূর্যাস্তের সময় উপকূলের দ্বীপে ভিড়িয়ে দেয়। অতঃপর তারা জাহাজের নিকট কিছুক্ষণ বসে থেকে দ্বীপের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে। সেখানে তারা ঘন-লম্বা লোমবিশিষ্ট এক জন্তুর সাক্ষাৎ পেয়ে বললো, তোমার জন্য দুঃখ হয় তুমি কে? সে বললো, আমি জাস্‌সাসা, তোমরা এই মন্দিরের লোকটির নিকট যাও, কেননা সে তোমাদের সংবাদের জন্য খুবই আগ্রহী। তামীম আদ-দারী বলেন, যখন সে একটি লোকের নাম বলে দিলো, তখন সে শয়তান কিনা এই ভয়ে আমরা দ্রুতগতিতে চলতে লাগলাম। অতঃপর মন্দিরে প্রবেশ করে দেখলাম, বিরাট দেহের অধিকারী এক ব্যক্তি। এরূপ মজবুত গড়ন এবং কঠিন আকৃতির লোক ইতিপূর্বে আমরা কখনও দেখিনি। তার দুটি হাত ঘাড়ের সঙ্গে দৃঢ়ভাবে বাঁধা। অতঃপর তিনি হাদিস বর্ণনা করেন যে, সে তাহাদের নিকট বাইসান-এর খেজুর বাগান ও যুগার ঝর্না সম্পর্কে আর উম্মী নাবীর আবির্ভাব সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে বললো, আমিই মাসীহ [দাজ্জাল]। শীঘ্রই আমাকে বেরিয়ে আসার অনুমতি দেওয়া হইবে। নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ সেটা নিশ্চয়ই সিরিয়া বা ইয়ামান সাগরে হইবে, না বরং সেটা প্রাচ্যের দিকে হইবে। একথা তিনি দুবার বলেন এবং পূর্ব দিকে ইশারা করে দেখান। তিনি [ফাত্বিমাহ] বলেন, আমি এটা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর কাছ থেকে মুখস্ত করেছি।

Abu Daud Sharif Bangla –  হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৪৩২৭. আমির [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, ফাত্বিমাহ বিনতু ক্বাইস [রাদি.] আমাকে বলিয়াছেন যে, নাবী [সাঃআঃ] যুহরের সলাত পড়ে মিম্বারে উঠলেন। এ দিনের পূর্বে তিনি জুমুআহ্‌র দিন ছাড়া অন্য কোন সময় তাতে উঠেননি। অতঃপর বর্ণনাকারী উপরের ঘটনা বর্ণনা করিলেন। ঈমাম আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, ইবনি সুদ্‌রান বাসরী, ইবনি মিসওয়ারের সঙ্গে সমুদ্রে ডুবে মারা গেছেন। তিনি [তামীম আদ-দারী] ব্যতীত কেউ নিরাপদে ফিরে আসতে পারেনি। {৪৩২৬}

{৪৩২৬} এর পূর্বেরটি দেখুন। Abu Daud Sharif Bangla –  হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৪৩২৮.জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, একদিন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] মিম্বারে উঠে বলেনঃ একদা কিছু সংখ্যক লোক সমুদ্র ভ্রমণ করেছিল। এ সময় তাহাদের রসদ ফুরিয়ে গেলে একটি দ্বীপ দৃষ্টিগোচর হয়। অতঃপর তারা রুটির সন্ধানে বেরিয়ে পড়লে জাস্‌সার সাক্ষাত পেলো। আমি [ওয়ালীদ] আবু সালামাহ্‌কে বলিলাম, জাসসাস কি? তিনি বলিলেন, এমন নারী, যে তার দেহের ও মাথার চুল টেনে বেড়ায়। সে বললো, ওই দালানে যাও। অতঃপর উপরে বর্ণিত হাদিস বলেন। আর সে [দালানের লোকটি অর্থাৎ দাজ্জাল] নাখ্‌লে বাইসান ও আইনে যুগার সম্পর্কে জানতে চাইলো। তিনি [সাঃআঃ] বলেন, সে লোকটিই মাসীহ দাজ্জাল। অতঃপর ইবনি আবু সালামাহ্‌ আমাকে [ওয়ালীদকে] বলেন, নিশ্চয়ই এই হাদিসের কিছু অংশ আমি স্মরণ রাখতে পারিনি। তিনি বলেন, জাবির [রাদি.] সাক্ষ্য দিলেন যে, সে-ই ইবনি সাইয়াদ। আমি বলিলাম, সে তো মারা গেছে। তিনি বলিলেন, যদিও সে মারা গিয়ে থাকে। আমি বলিলাম, সে তো মুসলিম হয়েছিল। তিনি বলিলেন, যদিও সে মুসলিম হয়েছিল। আমি বলিলাম, সে তো মদিনায় প্রবেশ করেছিল। তিনি বলিলেন, যদিও সে মাদীনাহ্ প্রবেশ করেছিল। {৪৩২৭}

{৪৩২৭} আবু দাউদ এটি এককভাবে বর্ণনা করেছেন। এর সনদ দুর্বল। সানাদে ওয়ালীদ ইবনি আবদুল্লাহ রয়েছে। হাফিয বলেনঃ তাহাকে সন্দেহ করা হয়। Abu Daud Sharif Bangla –  হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

অনুচ্ছেদ-১৬ঃ ইবনি সায়িদের ঘটনা সম্পর্কে

৪৩২৯. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ] তাহাঁর একদল সাহাবীসহ ইবনি সাইয়াদের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তাহাদের সঙ্গে উমার ইবনিল খাত্তাব [রাদি.]-ও ছিলেন। এ সময় সে [ইবনি সায়িদ] কয়েকজন বালকের সঙ্গে মাগালা গোত্রের দুর্গের পাশে খেলা করছিল। সেও ছিল বালক বয়সী। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] হাত দিয়ে তার পিঠ স্পর্শ করার পূর্ব পর্যন্ত সে কিছুই টের পায়নি। তিনি তাহাকে প্রশ্ন করলেনঃ আমি যে রসূলুল্লাহ, তুমি কি এ কথার সাক্ষ্য দাও? বর্ণনাকারী বলেন, ইবনি সায়িদ তার দিকে তাকিয়ে বললো, আমি সাক্ষ্য দেই যে, আপনি নিরক্ষরদের নাবী। সে নাবী [সাঃআঃ]-কে বললো, আপনি কি সাক্ষ্য দেন যে, আমি আল্লাহর রাসূল? নাবী [সাঃআঃ] তাহাকে বলিলেনঃ আমি আল্লাহ ও তাহাঁর রাসূলদের প্রতি ঈমান এনেছি। পুনরায় নাবী [সাঃআঃ] তাহাকে প্রশ্ন করলেনঃ তোমার নিকট কে আসে? সে বললো, আমার নিকট সত্যবাদীও আসে, মিথ্যাবাদীও আসে। নাবী [সাঃআঃ] তাহাকে বলিলেনঃ তোমার ব্যাপারটা ঘোলাটে হয়ে গেলো। তারপর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ আমি তোমার জন্য একটি বিষয় গোপন রেখেছি। তিনি নিম্নোক্ত আয়াত তার জন্য গোপন রেখেছিলেনঃ “যেদিন আকাশ স্পষ্ট ধোঁয়াচ্ছন্ন হয়ে যাবে” [সূরাহ দুখান ঃ ১০]। ইবনি সাইয়াদ বললো, সেটা ধোঁয়া। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাকে বলিলেনঃ দূর হও! তুমি তোমার অনুমান হইতে কখনো অগ্রসর হইতে পারবে না। উমার [রাদি.] বলিলেন, হে আল্লাহর রাসূল! অনুমতি দিন, আমি ওর ঘাড়ে আঘাত হানি। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন! এ যদি সেই [দাজ্জাল] হয়ে থাকে, তবে তুমি তার অর্থাৎ দাজ্জালের উপর শক্তি খাটিয়েও কাবু করিতে পারবে নাঃ আর যদি সে তা না হয়ে থাকে, তবে তাহাকে হত্যা করায় কোন কল্যাণ নেই।

Abu Daud Sharif Bangla –  হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৪৩৩০. নাফি [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, ইবনি উমার [রাদি.] বলিতেন, ইবনি সাইয়াদই সে মাসীহে দাজ্জাল, এতে আমার কোন সন্দেহ নেই।

Abu Daud Sharif Bangla –  হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ মাওকুফ

৪৩৩১. মুহাম্মাদ ইবনিল মুনকাদির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি জাবির ইবনি আবদুল্লাহ [রাদি.]-কে দেখলাম, তিনি আল্লাহর কসম করেছেন! তিনি বলিলেন, আমি উমারকে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সামনে এ ব্যাপারে আল্লাহর কসম করিতে শুনিয়াছি; অথচ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তা অস্বীকার করেননি।

Abu Daud Sharif Bangla –  হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৪৩৩২. জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমরা ইবনি সাইয়াদকে হারাবার যুদ্ধের দিন হারিয়ে ফেলেছি।

Abu Daud Sharif Bangla –  হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৪৩৩৩. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ তিরিশ সংখ্যক দাজ্জাল অবির্ভূত না হওয়া পর্যন্ত ক্বিয়ামাত সংঘটিত হইবে না। তাহাদের প্রত্যেকেই নিজেকে আল্লাহর রাসূল বলে দাবি করিবে।

Abu Daud Sharif Bangla –  হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৪৩৩৪. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ তিরিশ জন মিথ্যাবাদী দাজ্জাল আবির্ভূত না হওয়া পর্যন্ত ক্বিয়ামাত সংঘটিত হইবে না। তদের প্রত্যেকেই আল্লাহ ও তাহাঁর রাসূলের উপর মিথ্যা আরোপ করিবে।

Abu Daud Sharif Bangla –  হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

৪৩৩৫. ইবরাহীম আন-নাখাঈ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি আবীদাহ আস-সালমানীর সূত্রে উপরোক্ত হাদিসের অনুরূপ বর্ণনা করেন। আমি আবীদাহ আস-সালামানীকে বলিলাম, আপনি কি মনে করেন যে, সে ওদের অর্থাৎ আল-মুখতার অন্তর্ভূক্ত? আবীহাদ বলেন, সে নেতৃস্থানীয় দাজ্জালদের অন্তর্ভূক্ত। {৪৩৩৪}

{৪৩৩৪} আবু দাউদ এটি এককভাবে বর্ণনা করেছেন। Abu Daud Sharif Bangla –  হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল মাকতু

অনুচ্ছেদ-১৭ঃ আদেশ ও নিষেধ সম্পর্কে

৪৩৩৬. আবদুল্লাহ ইবনি মাসউদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ বনী ইসরাঈলের মধ্যে সর্বপ্রথম ত্রুটি ঢুকেছে এভাবে যে, তাহাদের কেউ অপরজনের সাক্ষাতে বলতো, এই যে! তুমি আল্লাহ্‌কে ভয় করো এবং যা অপকর্ম করছো, তা পরিত্যাগ করো। কেননা এগুলো করা তোমার জন্য বৈধ নয়। পরের দিন আবার তার সঙ্গে সাক্ষাত হলে তার অপকর্ম তার সঙ্গে একত্রে পানাহার ও মেলামেশা করিতে তাহাকে বিরত রাখতো না। যখন তাহাদের অবস্থা এরূপ হলো, তখন আল্লাহ তাহাদের অন্তরকে পরস্পরের সাথে একাকার করে দিলেন। অতঃপর তিনি এ আয়াত তিলাওয়াত করেনঃ “বনী ইসরাঈলের মধ্যে যারা কুফরী করেছিল তারা দাউদ ও মারইয়াম পুত্র ঈসা কর্তৃক অভিশপ্ত হয়েছিল…. ফাসিকূন” পর্যন্ত [সূরাহ আল-মায়িদাহঃ ৭৮-৮১]। পুনরায় তিনি বলেনঃ কখনো নয়, আল্লাহর কসম! তোমরা অবশ্যই সৎকাজের আদেশ দিবে এবং মন্দ কাজে বাধা দিবে এবং অবশ্যই অত্যাচারীর দুই হাত ধরে তাহাকে সৎপথে ফিরে আসতে ও সত্যের উপর অবিচল থাকতে বাধ্য করিবে। {৪৩৩৫}

দুর্বলঃ মিশকাত হা/৫১৪৮। {৪৩৩৫} তিরমিজি, ইবনি মাজাহ। এর সনদ যয়ীফ। আবু উবাইদাহ হাদিসটি তার পিতা হইতে শুনেননি। সুতরাং এটি মুনকাতি। Abu Daud Sharif Bangla –  হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৪৩৩৭. ইবনি মাসউদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ]-এর সূত্রে উপরোক্ত হাদিসের সমার্থবোধক হাদিস বর্ণনা করেন। তবে এতে রয়েছেঃ অন্যথায় আল্লাহ তোমাদের পরস্পরের অন্তরকে একাকার করে দিবেন। অতঃপর তোমাদের অভিশম্পাত করবেন, যেমন তাহাদেরকে অভিশম্পাত করেছেন। {৪৩৩৬}

{৪৩৩৬} এর সনদ দুর্বল। এর পূর্বেরটি দেখুন। Abu Daud Sharif Bangla –  হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৪৩৩৮. ক্বাইস [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আবু বকর [রাদি.] আল্লাহর প্রশংসা ও গুণগান করার পর বলিলেন, হে জনসমাজ! তোমরা তো এ আয়াত পাঠ করে থাকো কিন্তু একে যথাস্থানে প্রয়োগ করো না। আল্লাহর বাণীঃ “তোমরা যদি সৎপথে পরিচালিত হও তবে যে পথভ্রষ্ট হয়েছে সে তোমাদের কোন ক্ষতি করিতে পারবে না” [সূরাহ আল-মায়িদাহঃ ১০৫]। তিনি খালিদ হইতে বর্ণনা করে বলেন, আমরা নাবী [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছিঃ মানুষ যখন কোন যালেমকে যুলুম করিতে দেখে তার দুহাত চেপে ধরে না অবিলম্বে আল্লাহ তাহাদের সবাইকে শাস্তি দিবেন। আমর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হুসাইম হইতে বর্ণনা করে বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছিঃ যে জাতির মধ্যে পাপ কাজ হইতে থাকে, এগুলো বন্ধ করার ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও তা বন্ধ করছে না, অচিরেই আল্লাহ তাহাদের সবাইকে চরম শাস্তি দিবেন। ঈমাম আবু দাউদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, খালিদ, আবু উসামাহ ও একদল বর্ণনাকারী যেরূপ বলিয়াছেন, এরূপ বর্ণনা তিনি করেছেন। এ বর্ণনায় শুবাহ বলেনঃ “যে সম্প্রদায়ে পাপ চলতে থাকে এবং পাপীদের চাইতে তাহাদের সংখ্যা বেশী হয়”।

আবু বকরের হাদিস সহিহ।

Abu Daud Sharif Bangla –  হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য

৪৩৩৯. জারীর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি নাবী [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছিঃ কোন ব্যক্তি কোন জাতির মধ্যে বাস করছে যাদের মাঝে পাপাচার হচ্ছে, তারা এ পাপাচার প্রতিরোধে সক্ষম হওয়া সত্ত্বেও প্রতিরোধ করছে না, তাহলে মৃত্যুর পূর্বেই আল্লাহ তাহাদের চরম শাস্তি দিবেন।

Abu Daud Sharif Bangla –  হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

৪৩৪০. আবু সাঈদ আল-খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]- কে বলিতে শুনেছিঃ কেউ কোন অন্যায় হইতে দেখলে, সে তা হাতের সাহায্যে দমন করিতে সক্ষম হলে তা দ্বারা যেন প্রতিরোধ করে। হান্নাদ এ হাদিসের বাকী অংশ উল্লেখ করেননি। তবে ইবনিল আলা তা পূর্ণ করেছেন। তা হলঃ যদি হাতের দ্বারা প্রতিরোধ করিতে সক্ষম না হয়, তবে জিহ্বা দ্বারা, আর যদি জিহ্বা দ্বারা প্রতিরোধ করিতে সক্ষম না হলে তবে অন্তর দ্বারা, তবে এটা দুর্বল ঈমানের স্তর।

Abu Daud Sharif Bangla –  হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৪৩৪১. আবু উমাইয়্যাহ আশ-শাবানী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

আবু সালাবাহকে আমি জিজ্ঞেস করলাম, হে আবু সালাবাহ! আপনি এ আয়াত আলাইকুম আনফুসাকুম [৫ঃ১০৫] সম্পর্কে কি বলেন? তিনি বলিলেন, আল্লাহর কসম! নিশ্চয়ই আপনি এ ব্যাপারে অবহিত ব্যক্তিকেই প্রশ্ন করেছেন। আমি এ আয়াত সম্পর্কে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে প্রশ্ন করলে তিনি বলিয়াছেনঃ তোমরা বরং পরস্পরকে ভালো কাজের আদেশ দাও এবং অন্যায় হইতে বিরত রাখো। এমনকি যখন দেখবে যে, কৃপণের আনুগত্য করা হচ্ছে, কুপ্রবৃত্তি তাড়িতকে অনুসরণ করা হচ্ছে ও পার্থিব স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে এবং প্রত্যেকে নিজের মতকেই প্রাধান্য দিচ্ছে, তখন তুমি নিজের ব্যাপারে যত্নবান হও এবং জনগণ যা করছে তা ত্যাগ করো। কেননা তোমাদের সামনে এরূপ যুগ আসছে, যখন ধৈর্য ধারণ করা জ্বলন্ত অঙ্গার মুষ্টিবন্ধ করে রাখার মতো কষ্টকর হইবে। এ সময় যথার্থ কাজ সম্পাদনকারীকে তার মতই পঞ্চাশজনের সমান পুরস্কার দেয়া হইবে। অপর বর্ণনায় রয়েছেঃ তিনি বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! তাহাকে কি সেই সময়কার পঞ্চাশজনের সমান সওয়াব দেয়া হইবে? তিনি বলিলেনঃ তোমাদের মধ্যকার পঞ্চাশজনের সমান সওয়াব দেয়া হইবে। {৪৩৪০}

দুর্বল, তবে ধৈর্য ধারণের যুগের বাক্যটি প্রমাণিত। ইবনি মাজাহ হা/৪০১৫, মিশকাত হা/৫১৪৪।{৪৩৪০} তিরমিজি। তিনি বলেন, এ হাদিসটি গরীব। ইবনি মাজাহ। সানাদে উতবাহ ইবনি আবু হাকিম সত্যবাদী কিন্তু ভুল প্রচুর। এছাড়া সানাদে আমর ইবনি জারিয়াহ এবং আবু উমাইয়্যাহ উভয়ের অবস্থা মাজহুল [অজ্ঞাত]। যেমন আত-তাক্বরীব গ্রন্থে রয়েছে। Abu Daud Sharif Bangla –  হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য

৪৩৪২. আবদুল্লাহ ইবনি আমর ইবনিল আস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ এমন এক যুগ সম্পর্কে তোমাদের কি ধারণা? অথবা তিনি বলেনঃ অচিরেই এমন এক যুগ আসবে, যখন মানুষকে চারূনির ন্যায় চালা হইবে এবং তাতে নিকৃষ্ট মানুষ অবশিষ্ট থাকিবে। তাহাদের ওয়াদা ও আমানতসমূহ বিনষ্ট হয়ে যাবে আর অনৈক্য দেখা দিবে, অতঃপর এরূপ হয়ে যাবে। এ বলে তিনি তাহাঁর আঙ্গুলসমূহ একটা আরেকটার ভেতর ঢুকিয়ে দেখালেন। উপস্থিত লোকেরা বললো, আমরা তাহলে কি করবো, হে আল্লাহর রাসূল! তিনি বলিলেনঃ যেগুলো সম্বন্ধে সঠিক জানো তা গ্রহণ করো এবং যেগুলোকে ভুল জানো তা ত্যাগ করো।

Abu Daud Sharif Bangla –  হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৪৩৪৩. আবদুল্লাহ ইবনি আমর ইবনিল আস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, একদা আমরা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর চারপাশে বসা ছিলাম। তখন তিনি ফিত্বনাহ্ সম্পর্কে আলোচনা করিতে গিয়ে বলেনঃ তোমরা যখন দেখবে, মানুষের ওয়াদা নষ্ট হয়ে গেছে, তাহাদের আমানতদারী কমে গেছে এবং তারা এরূপ হয়ে গেছে- এ বলে তিনি তাহাঁর হাতের আঙ্গুলসমূহ পরস্পরের মধ্যে মিলালেন। বর্ণনাকারী বলেন, একথা শুনে আমি দাঁড়িয়ে তাঁকে বলিলাম আল্লাহ আমাকে আপনার জন্যে উৎসর্গিত করুন! আমি তখন কি করবো? তিনি বলিলেনঃ তুমি অত্যন্ত দৃঢ়ভাবে তোমার ঘরে অবস্থান করো, তোমার জিহ্বা সংযত রাখো; যা জানাশুনা আছে তাই গ্রহণ করো এবং অজানাকে পরিত্যাগ করো। আর তোমাদের নিজের ব্যাপারে বিশেষভাবে সতর্ক হও এবং সাধারণের সম্পর্কে বিরত থাকো।

Abu Daud Sharif Bangla –  হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

৪৩৪৪. আবু সাঈদ আল-খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ স্বৈরাচারী বাদশা বা স্বৈরাচারী শাসকের সামনে ন্যায়সঙ্গত কথা বলা উত্তম জিহাদ।

Abu Daud Sharif Bangla –  হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৪৩৪৫. আল-উরস ইবনি আমীরাহ আল-কিন্‌দী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ কোন স্থানে যখন অন্যায় সংঘটিত হয়, তখন সেখানে উপস্থিত ব্যক্তি তাতে অসন্তুষ্ট হলে, সে অনুপস্থিতদের মতোই গণ্য হইবে [তার গুনাহ হইবে না]। আর যে ব্যক্তি অন্যায় কাজের স্থান থেকে অনুপস্থিত হয়েও তাতে সন্তুষ্ট হয়, সে অন্যায়ে উপস্থিতদের অন্তর্ভূক্ত।

Abu Daud Sharif Bangla –  হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

৪৩৪৬. আদী ইবনি আদী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ

আদী ইবনি আদী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে নাবী [সাঃআঃ] সূত্রে উপরে বর্ণিত হাদিসের সমার্থবোধক হাদিস বর্ণিত। তাতে রয়েছেঃ যে ব্যক্তি অন্যায়ের স্থানে উপস্থিত হয়েও তা অপছন্দ করলো, সে অনুপস্থিতের মতোই। {৪৩৪৫}

{৪৩৪৫} এর পূর্বেরটি দেখুন। Abu Daud Sharif Bangla –  হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

৪৩৪৭. নাবী [সাঃআঃ]-এর জনৈক সাহাবী হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ মানুষের ব্যক্তিগত পাপাচার ব্যাপক না করা পর্যন্ত এবং তাহাদের কোন ওজর পেশ করার সুযোগ থাকা পর্যন্ত তারা ধ্বংস হইবে না। {৪৩৪৬}

Abu Daud Sharif Bangla –  হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-১৮ঃ ক্বিয়ামাত সংঘটিত হওয়া সম্পর্কে

৪৩৪৮. আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর জীবনের শেষভাগে এক রাতে আমাদেরকে নিয়ে ইশার সলাত আদায় করিলেন। সালাম ফিরিয়ে তিনি দাঁড়িয়ে বলিলেনঃতোমরা আজকের এ রাতটি দেখিতে পাচ্ছো তো? নিশ্চয়ই আজ হইতে এক শতাব্দীর মাথায় বর্তমান পৃথিবীতে বসবাসরত কেউ জীবিত থাকিবে না। ইবনি উমার [রাদি.] বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর এই বক্তব্যে লোকদের মাঝে ভুল বুঝাবুঝির সৃষ্টি হল একশত বছর সংক্রান্ত যেসব হাদিস তারা বর্ণনা করেন তাহাকে কেন্দ্র করে। বস্তুত রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ যারা এখন পৃথিবীতে বেঁচে আছে তাহাদের কেউ শত বছর পর জীবিত থাকিবে না। তিনি এ কথা দ্বারা বুঝাতে চেয়েছেন যে, এ শতাব্দী শেষ হইবে [এবং নতুন শতাব্দী শুরু হইবে]।

Abu Daud Sharif Bangla –  হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৪৩৪৯. আবু সালাবাহ আল-খুশানী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ দিনের অর্ধেক সময়ের মধ্যে এ উম্মাতের হিসাব নিয়ে ফায়সালা করিতে আল্লাহ্‌ মোটেই অক্ষম নন।

Abu Daud Sharif Bangla –  হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৪৩৫০. সাদ ইবনি আবু ওয়াক্কাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ নিশ্চয়ই আমি দৃঢ়ভাবে এ কামনা করিতে পারি যে, আমার উম্মাত তার রবের নিকট মাত্র অর্ধদিনের অবকাশে [হিসাব-নিকাশ দিতে] অক্ষম হইবে না। সাদ [রাদি.]-কে প্রশ্ন করা হলো, অর্ধ দিন কতটুকু সময়ের? তিনি বলিলেন, পাঁচ শত বছরের সমান।

Abu Daud Sharif Bangla –  হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস


Posted

in

by

Tags:

Comments

One response to “Abu Daud Sharif Bangla যুদ্ধ-সংঘর্ষ । ফুরাত নদী স্বর্ণের খনি”

Leave a Reply