জ্ঞান সম্পর্কিত হাদিস । জ্ঞানার্জনের ফাযীলাত
জ্ঞান সম্পর্কিত হাদিস । জ্ঞানার্জনের ফাযীলাত , এই অধ্যায়ে হাদীস ২৮ টি (৩৬৪১ – ৩৬৬৮) >>আবুদ দাউদ শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন
অধ্যায় – ২৬ঃ জ্ঞান, অনুচ্ছেদঃ ১-১৩=১৩টি, হাদীসঃ (৩৬৪১-৩৬৬৮)=২৮টি
অনুচ্ছেদ-১: জ্ঞানার্জনের ফাযীলাত
অনুচ্ছেদ-২: আহলে কিতাবের হাদিস বর্ণনা করা
অনুচ্ছেদ-৩: জ্ঞানের কথা লিখে রাখা
অনুচ্ছেদ-৪: রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]- এর প্রতি মিথ্যারোপ করা সম্পর্কে কঠোর হুঁশিয়ারি
অনুচ্ছেদ-৫: না জেনে আল্লাহর কিতাব সম্পর্কে আলোচনা করা
অনুচ্ছেদ-৬: কথায় পুনরাবৃত্তি প্রসঙ্গ
অনুচ্ছেদ-৭: দ্রুত কথা বলা ঠিক নয়
অনুচ্ছেদ-৮: ফাতাওয়াহ প্রদানে সাবধানতা অবলম্বন
অনুচ্ছেদ-৯: জ্ঞানের কথা গোপন করা অপছন্দনীয়
অনুচ্ছেদ-১০ঃ জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দেয়ার ফাযীলাত
অনুচ্ছেদ-১১ঃ বনী ইসরাঈলীদের কাছ থেকে শোনা কথা বর্ণনা করা
অনুচ্ছেদ-১২ঃ মহান আল্লাহ ছাড়া অন্য উদ্দেশ্যে জ্ঞানার্জন করা।
অনুচ্ছেদ-১৩ঃ কিসসা-কাহিনী প্রসঙ্গ
অনুচ্ছেদ-১: জ্ঞানার্জনের ফাযীলাত
৩৬৪১. কাসীর ইবনি [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, একদা আমি আবু দারদার [রাদি.] সঙ্গে দামেশকের মাসজিদে বসা ছিলাম। তখন তার নিকট এক ব্যক্তি এসে বললো, হে আবু দারদা! আমি একটি হাদিসের জন্য সুদূর মাদীনাতুর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] হইতে এসেছি। জানতে পারলাম, আপনি রসূলুল্লাহর [সাঃআঃ] সূত্রে হাদিস বর্ণনা করেন। এ ছাড়া অন্য কোন উদ্দেশ্যে আমি আসিনি। আবু দারদা [রাদি.] বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে বলিতে শুনেছিঃ যে ব্যক্তি জ্ঞানার্জনের জন্য কোন পথ অবলম্বন করে, আল্লাহ্ তার পরিবর্তে তাহাকে জান্নাতের পথসমূহের মধ্যে কোন একটি পথে পৌঁছে দেন। ফেরেশতারা জ্ঞান অন্বেষণকারীর সন্তুষ্টির জন্য নিজেদের ডানা বিছিয়ে দেন। জ্ঞানীর জন্য আসমান ও যমীনের যারা আছে তারা আল্লাহর নিকট ক্ষমা ও দুআ প্রার্থনা করে, এমনকি পানির গভীরে বসবাসকারী মাছও। আবেদ [সাধারণ ইবাদাতগুজারী] ব্যক্তির উপর আলিমের ফাযীলাত হলো যেমন সমস্ত তারকার উপর পূর্ণিমার চাঁদের মর্যাদা। জ্ঞানীরা হলেন নাবীদের উত্তরসূরি। নাবীগণ কোন দীনার বা দিরহাম মীরাসরূপে রেখে যান না; তারা উত্তরাধিকার সূত্রে রেখে যান শুধু ইল্ম। সুতরাং যে ইল্ম অর্জন করেছে সে পূর্ণ অংশ গ্রহণ করেছে।
জ্ঞান সম্পর্কিত হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৩৬৪২. আবু দারদা [রাদি.] হইতে নাবী [সাঃআঃ]-এর সূত্র হইতে বর্ণীতঃ
উপরোল্লিখিত হাদিস বর্ণিত হয়েছে। {৩৬৪২}
আমি এটি সহিহ এবং যঈফেও পাইনি।
{৩৬৪২} এর পূর্বেরটি দেখুন । জ্ঞান সম্পর্কিত হাদিস এর তাহকিকঃ নির্ণীত নয়
৩৬৪৩. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ কোন ব্যক্তি ইল্ম অর্জনের জন্য কোন পথ অবলম্বন করলে তার বিনিময়ে আল্লাহ্ তার জান্নাতের পথ সুগম করে দেন। যার আমল তাহাকে পিছিয়ে রেখেছে, তার বংশগৌরব তাহাকে এগিয়ে দিতে পারে না।
জ্ঞান সম্পর্কিত হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-২: আহলে কিতাবের হাদিস বর্ণনা করা
৩৬৪৪. ইবনি আবু নামলাহ আল-আনসারী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে তার পিতার সূত্র হইতে বর্ণীতঃ
একদা আবু নাম্লাহ [রাদি.] রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট বসা ছিলেন। এ সময় এক ইয়াহুদীও তাহাঁর নিকট বসা ছিল। তাহাঁর সামনে দিয়ে একটি লাশ নিয়ে যাওয়া হলো। ইয়াহুদী বললো, হে মুহাম্মাদ! এই জানাযা [লাশ] কি কথা বলিতে পারে? নাবী [সাঃআঃ] বলিলেনঃ আল্লাহই অধিক জ্ঞাত। ইয়াহুদী বললো, সে [কবরে] কথা বলবে। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেনঃ কিতাবধারীরা তোমাদের যেসব কথাবার্তা বলে তা তোমরা বিশ্বাসও করো না এবং মিথ্যাও ভেবো না। তোমরা বলো, আমরা আল্লাহ্ ও তাহাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান এনেছি। তাহাদের কথা যদি বাতিল হয় তাহলে তা বিশ্বাস করলে না আর যদি সত্য হয়ে থাকে তাহলে তোমরা মিথ্যাও মনে করলে না। {৩৬৪৪}
দুর্বলঃ যঈফাহ [১৯৯১]। {৩৬৪৪} আহমাদ । এর সানাদে ইবনি আবু নামলাহ মাক্ববূল । জ্ঞান সম্পর্কিত হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৩৬৪৫. যায়িদ ইবনি সাবিত [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাকে ইয়াহুদীদের লেখা [ভাষা] শিখার আদেশ দিলেন। আমি তদনুযায়ী ইয়াহুদীদের লেখা শিখলাম। তিনি বলিলেনঃ আল্লাহ্র শপথ! ইয়াহুদীরা আমার পক্ষ হইতে সঠিক লিখবে বলে আমার বিশ্বাস হচ্ছে না। বর্ণনাকারী বলেন, পনের দিন যেতে না যেতেই আমি তাহাদের লেখা আয়ত্ত করে ফেললাম। তিনি চিঠিপত্র লেখানোর ইচ্ছা করলে আমি লিখে দিতাম এবং তার নিকট চিঠিপত্র এলে আমি তা তাঁকে পড়ে শুনাতাম।
জ্ঞান সম্পর্কিত হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান সহিহ
অনুচ্ছেদ-৩: জ্ঞানের কথা লিখে রাখা
৩৬৪৬.আবদুল্লাহ ইবনি আমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট যা কিছু শুনতাম লিখে রাখতাম। মনে রাখার জন্যই আমি এরূপ করতাম। কুরাইশরা আমাকে সবকিছু লিখতে বারণ করিলেন এবং বলিলেন, তুমি কি রসূলুল্লাহর [সাঃআঃ]-এর নিকট হইতে শোনা সবকিছুই লিখে রাখো? তিনি তো একজন মানুষ, রাগ ও শান্ত উভয় অবস্থায় কথা বলে থাকেন। সুতরাং আমি লেখা স্থগিত রাখলাম। আমি এটা রসূলুল্লাহর [সাঃআঃ]-এর নিকট উল্লেখ করলাম। তিনি আঙ্গুল দিয়ে তাহাঁর মুখের দিকে ইশারা করে বলিলেনঃ তুমি লিখে রাখো, সেই সত্তার শপথ, যাঁর হাতে আমার প্রাণ! এ মুখ হইতে সর্বাবস্থায় সত্য ব্যতীত অন্য কিছু বের হয় না।
জ্ঞান সম্পর্কিত হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৩৬৪৭. আল-মুত্তালিব ইবনি আবদুল্লাহ ইবনি হানতাব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, একদা যায়িদ ইবনি সাবিত [রাদি.] মুআবিয়াহ [রাদি.]-এর নিকট গেলেন। মুআবিয়াহ [রাদি.] তাহাকে একটি হাদিস সম্পর্কে প্রশ্ন করিলেন এবং এক ব্যক্তিকে তা লিখে রাখার আদেশ দিলেন। যায়িদ [রাদি.] তাহাকে বলিলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদেরকে হাদিস না লিখতে আদেশ দিয়েছেন এবং যা লেখা হয়েছিল তাও মুছে দিলেন। {৩৬৪৭}
{৩৬৪৭} আহমদ । সানাদে রয়েছে কাসীর ইবনি যাইদ । হাফিয বলেনঃ সত্যবাদী কিন্তু ভুল করে থাকেন । এবং সনদে রয়েছে মুত্তালিব ইবনি আবদুল্লাহ । তিনি সত্যবাদী কিন্তু তার হাদিস তাদলীস ও ইরসাল প্রচুর । জ্ঞান সম্পর্কিত হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৩৬৪৮. আবু সাইদ আল-খুদরী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
আমরা তাশাহুদ ও আল-কুরআন ছাড়া আর কিছু লিখতাম না। {৩৬৪৮}
{৩৬৪৮} আবু দাউদ এটি এককভাবে বর্ণনা করেছেন। এর সানাদে খালিদ আল-হাজ্জা ইরসাল করেছেন। জ্ঞান সম্পর্কিত হাদিস এর তাহকিকঃ শায
৩৬৪৯. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
মাক্কাহ বিজয় হলে নাবী [সাঃআঃ] দাঁড়ালেন। অতঃপর আবু হুরায়রা [রাদি.] নাবী [সাঃআঃ]-এর ভাষণ উল্লেখ করিলেন। বর্ণনাকারী বলেন, আবু শাহ নামক ইয়ামানের এক ব্যক্তি বলিলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনারা আমাকে লিখে দেয়ার ব্যবস্থা করে দিন। তিনি বলেনঃ তোমরা আবু শাহকে লিখে দাও।
জ্ঞান সম্পর্কিত হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৩৬৫০. আল-ওয়ালীদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
আমি আবু আমর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-কে প্রশ্ন করলাম, তারা কী লিখেছেন? তিনি বলেন, সে সময়ে তিনি তাহাঁর যে ভাষণ শুনিয়াছিলেন তা। {৩৬৫০}
{৩৬৫০} আবু দাউদ এটি এককভাবে বর্ণনা করেছেন । জ্ঞান সম্পর্কিত হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ মাকতু
অনুচ্ছেদ-৪: রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]- এর প্রতি মিথ্যারোপ করা সম্পর্কে কঠোর হুঁশিয়ারি
৩৬৫১. আবদুল্লাহ ইবনিয যুবাইর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, একদা আমি যুবাইর [রাদি.]-কে বলিলাম, আপনি অন্যান্য সাহাবীদের মতো রসূলুল্লাহর [সাঃআঃ] এর হাদিস বর্ণনা করেন না কেন? তিনি বলিলেন, আল্লাহ্র কসম! আমি তাহাঁর নৈকট্য লাভ করেছি, তাহাঁর সাহচর্যে থেকেছি। কিন্তু আমি তাঁকে বলিতে শুনেছিঃ যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে আমার প্রতি মিথ্যা আরোপ করলো, সে [জাহান্নামের] আগুনে তার বাসস্থান নির্দিষ্ট করে নিলো।
জ্ঞান সম্পর্কিত হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৫: না জেনে আল্লাহর কিতাব সম্পর্কে আলোচনা করা
৩৬৫২. জুনদুব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ যে ব্যক্তি কুরআনের ব্যাখ্যায় নিজ মনগড়া কথা বলে, তার কথা সঠিক হয়ে গেলেও সে ভুল করেছে। {৩৬৫২}
তিরমিজি । সনদের সুহাইল ইবনি মিহরান সম্পর্কে হাফিয বলেনঃ যয়ীফ ।
জ্ঞান সম্পর্কিত হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ-৬: কথায় পুনরাবৃত্তি প্রসঙ্গ
৩৬৫৩. আবু সাল্লাম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে নাবী [সাঃআঃ]-এর এক খাদেমের সূত্র হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] কোন কথা বললে তা তিনবার পুনরাবৃত্তি করিতেন। {৩৬৫৩}
{৩৬৫৩} আবু দাউদ এই সূত্রে এটি এককভাবে বর্ণনা করেছেন। হাদিসটির শাহিদ হাদিস রয়েছে তিরমিজি, হাকিম ও বুখারীতে । জ্ঞান সম্পর্কিত হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
অনুচ্ছেদ-৭: দ্রুত কথা বলা ঠিক নয়
৩৬৫৪. উরওয়াহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, একদা আবু হুরায়রা [রাদি.] আয়িশাহ [রাদি.]-এর ঘরের পাশে এসে বসলেন। তিনি তখন সলাত আদায় করছিলেন। আবু হুরায়রা [রাদি.] দুবার বলিলেন, হে ঘরেরবাসিনী! শুনুন। আয়িশাহ [রাদি.] সলাত শেষ করে উরওয়াহ্কে বলিলেন, তুমি কি এ ব্যক্তি ও তার কথায় অবাক হচ্ছো না? রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কোন কথা বললে এতো স্পষ্ট ও ধীরস্থিরভাবে বলিতেন যে, কোন গণনাকারী তা গণনা করিতে চাইলে অনায়াসেই তা গণনা করিতে পারতো।
জ্ঞান সম্পর্কিত হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৩৬৫৫. উরওয়াহ ইবনিয যুবাইর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ]-এর স্ত্রী আয়িশাহ [রাদি.] বলেন, আবু হুরায়রা্র আচরণ তোমাকে কি অবাক করে না? সে এসে আমার ঘরের এক পাশে বসে আমাকে রসূলুল্লাহর [সাঃআঃ]-এর একটি হাদিস পড়ে শুনাতে লাগলো। আমি তখন সলাতরত ছিলাম। আমার সলাত শেষ হওয়ার পূর্বেই সে উঠে চলে গেলো। আমি যদি তাহাকে পেতাম তবে তাহাকে বলতাম, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তোমাদের ন্যায় তাড়াহুড়া করে কথা বলিতেন না।
জ্ঞান সম্পর্কিত হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-৮: ফাতাওয়াহ প্রদানে সাবধানতা অবলম্বন
৩৬৫৬. মুআবিয়াহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বিভ্রান্তিকর প্রশ্ন করিতে আমাদের বারণ করেছেন। {৩৬৫৬}
দুর্বলঃ মিশকাত [২৪৩]। {৩৬৫৬} আহমাদ । এর সানাদে আবদুল্লাহ বিন সাদ মাজহুল । জ্ঞান সম্পর্কিত হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৩৬৫৭. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ যে ব্যক্তিকে ফাতাওয়াহ দেয়া হয়…। আবু হুরায়রা [রাদি.] সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ যে ব্যক্তিকে অজ্ঞাত প্রসূত ফাতাওয়াহ দেয়া হয় তার পাপ ফাতাওয়াদানকারীর উপর বর্তাবে। সুলাইমানের বর্ণনায় রয়েছেঃ যে ব্যক্তি তার ভাইকে ক্ষতিকর পরামর্শ দেয়, অথচ সে জানে যে, কল্যাণ তার বিপরীতে রয়েছে তাহলে সে তার ভাইয়ের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করলো।
জ্ঞান সম্পর্কিত হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান হাদিস
অনুচ্ছেদ-৯: জ্ঞানের কথা গোপন করা অপছন্দনীয়
৩৬৫৮. আবু হুয়াইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ যে ব্যক্তি জানা ইল্ম সম্পর্কে জিজ্ঞেসিত হয়ে তা গোপন করলো, ক্বিয়ামাতের দিন মহান আল্লাহ তাহাকে আগুনের লাগাম পরিয়ে দিবেন।
জ্ঞান সম্পর্কিত হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান সহিহ
অনুচ্ছেদ-১০ঃ জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দেয়ার ফাযীলাত
৩৬৫৯. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ তোমরা ভালভাবে জ্ঞানের কথা শুনে রাখো। কেননা লোকেরা তোমাদের কাছ থেকে তা শুনবে। অতঃপর তোমাদের কাছ থেকে যারা শুনবে, তাহাদের কাছ থেকেও পরবর্তীরা শুনবে।
জ্ঞান সম্পর্কিত হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৩৬৬০. যায়িদ ইবনি সাবিত [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছিঃ যে ব্যক্তি আমার নিকট হইতে হাদিস শুনে তা মুখস্থ রাখলো এবং অন্যের নিকটও তা পৌছে দিলো, আল্লাহ তাহাকে চিরউজ্জ্বল করে রাখবেন। জ্ঞানের অনেক বাহক তার চেয়ে অধিক সমঝদার লোকের নিকট তা বহন করে নিয়ে যায়; যদিও জ্ঞানের বহু বাহক নিজেরা জ্ঞানী নয়।
জ্ঞান সম্পর্কিত হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৩৬৬১. সাহল ইনবু সাদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ আল্লাহর শপথ! যদি তোমার চেষ্টার দ্বারা আল্লাহ একটি লোককেও হেদায়াত দেন, তবে তা হইবে তোমার জন্য একপাল লাল উটের চেয়েও উত্তম।
জ্ঞান সম্পর্কিত হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-১১ঃ বনী ইসরাঈলীদের কাছ থেকে শোনা কথা বর্ণনা করা
৩৬৬২. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ বনী ইসরাঈলের নিকট শোনা কথা বর্ণনা করিতে পারো, এতে কোন অসুবিধা নেই।
জ্ঞান সম্পর্কিত হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
৩৬৬৩. আবদুল্লাহ ইবনি আমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] আমাদের নিকট বনী ইসরাঈল সম্পর্কে [দীর্ঘক্ষণ] আলোচনা করিতেন, সকালে শুধু ফরয সলাত আদায়ের জন্যই আলোচনা বন্ধ করে উঠতেন।
জ্ঞান সম্পর্কিত হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-১২ঃ মহান আল্লাহ ছাড়া অন্য উদ্দেশ্যে জ্ঞানার্জন করা।
৩৬৬৪.আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ যে ইল্মের দ্বারা আল্লাহর সন্তুষ্টি অন্বেষণ করা যায়, কোন লোক যদি দুনিয়াবী স্বার্থ লাভের জন্য তা শিক্ষা করে, তবে সে ক্বিয়ামাতের দিন জান্নাতের সুগন্ধি পাবে না।
জ্ঞান সম্পর্কিত হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
অনুচ্ছেদ-১৩ঃ কিসসা-কাহিনী প্রসঙ্গ
৩৬৬৫. আওফ ইনবু মালিক আল-আশাজাঈ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]–কে বলিতে শুনেছিঃ শাসক, তার অধীনস্ত ব্যক্তি বা কোন অহংকারী ব্যতীত আর কেউই কিস্সা বর্ণনা করে না।
জ্ঞান সম্পর্কিত হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান সহিহ
৩৬৬৬. আবু সাঈদ আল-খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, একদা আমি একদল নিঃস্ব মুহাজিরের সঙ্গে বসলাম। তাহাদের অবস্থা এতোই শোচনীয় ছিলো যে, [পরিধেয় বস্ত্র খুবই ছোট হওয়ায়] পরস্পর পরস্পরের সতর আড়াল করে বসছিলেন। একজন পাঠক আমাকেরকে [কুরআন] পড়ে শুনাচ্ছিলেন। এ সময় রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এসে দাঁড়ালে পাঠক তার পাঠ বন্ধ করিলেন। নাবী [সাঃআঃ] সালাম করার পর প্রশ্ন করলেনঃ তোমারা কী করছিলে? আমরা বলিলাম, হে আল্লাহর রাসূল! ইনি আমাদের নিকট কুরআন পড়েন আর আমরা মহান আল্লাহর কিতাব মনোযোগ দিয়ে শুনি। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেনঃ সমস্থা প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যিনি আমার উম্মাতের মধ্যে এমন ধৈর্যশীল লোক রেখেছেন, যাদের সাথে আমাকেও ধৈর্য ধারণের আদেশ দিয়েছেন। আবু সাঈদ আল-খুদরী বলেন, অতঃপর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদের মাঝে এসে বসলেন এবং আমাদের জামাআতকে পূর্ণাঙ্গ করিলেন। অতঃপর তিনি উপস্থিত লোকদেরকে হাত দিয়ে ইশারা করে গোল হয়ে বসার আদেশ দিলেন। তারা গোলাকার হয়ে বসলেন এবং সবার চেহারা তাহাঁর দিকে উদ্ভাসিত হয়ে উঠলো। আবু সাঈদ আল-খুদরী [রাদি.] বলেন, আমার মনে হয় রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমি ছাড়া তাহাদের মধ্যে আর কাউকে চিনতে পারেননি। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেনঃ হে নিঃস্ব-দুর্বল মুহাজিরগণ! তোমাদের জন্য ক্বিয়ামাতের দিনের পরিপূর্ণ নূরের সুসংবাদ। তোমরা ধনীদের চেয়ে অর্ধ দিবস আগে জান্নাতে প্রবেশ করিবে। আর এই অর্ধ দিবসের পরিমাণ হলো পাঁচশো বছর। {৩৬৬৬}
দুর্বলঃ তবে জান্নাতে প্রবেশের বাক্যটি সহিহ। মিশকাত [২১৯৮]। {৩৬৬৬} আহমাদ, বাগাভী শারহুস সুন্নাহ। সনদের আলা ইবনি বাশীর সম্পর্কে হাফিয বলেনঃ মাজহুল । জ্ঞান সম্পর্কিত হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৩৬৬৭. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ আমি এমন একটি দলের সাথে বসবো যারা ফাজ্রের সলাত হইতে শুরু করে সূর্য উঠা পর্যন্ত মহান আল্লাহর যিকিরে মশগুল থাকে। এ কাজ আমার নিকট ইসমাঈলের [আঃ]-এর বংশের দাসী আযাদ করার চেয়ে অধিক প্রিয়। আমি এমন একটি দলের সাথে বসবো যারা আসরের সলাত হইতে সূর্যাস্ত পর্যন্ত আল্লাহর যিকিরে মশগুল থাকে। আমার নিকট এ কাজ চারটি দাসী আযাদ করার চেয়েও অধিক প্রিয়।
জ্ঞান সম্পর্কিত হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান হাদিস
৩৬৬৮. আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাকে বলিলেনঃ তুমি আমাকে সূরাহ আন-নিসা পড়ে শুনাও। আমি বলিলাম, আমি আপনাকে পড়ে শোনাবো, অথচ তা আপনার উপরই অবতীর্ণ হয়েছে! তিনি বলিলেনঃ আমি অন্যকে দিয়ে তা পড়িয়ে শুনতে চাই। আবদুল্লাহ [রাদি.] বলেন, আমি সূরাহ আন-নিসা পড়তে পড়তে [৪১ নং আয়াত] “আমি যখন প্রত্যেক উম্মাতের মধ্য হইতে একজন করে সাক্ষী উপস্থিত করবো এবং আপনাকে সাক্ষী হিসেবে পেশ করবো তখন কী অবস্থা হইবে!” এ পর্যন্ত পৌঁছে মাথা তুলে দেখলাম, তাহাঁর দুচোখ বেয়ে পানি ঝরছে।
জ্ঞান সম্পর্কিত হাদিস এর তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
Leave a Reply