কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি ইঃ
কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি ইঃ, এই অধ্যায়ে মোট =১৭৩ টি হাদীস (৩৯২৭ – ৪০৯৯) >> সুনানে ইবনে মাজাহ হাদিস এর মুল সুচিপত্র পড়ুন
পর্বঃ ৩৬-কলহ বিপর্যয়, অধ্যায়ঃ (১-৩৬)=৩৬টি, হাদীস (৩৯২৭ – ৪০৯৯)
১. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ ” বলে, তাহার উপর হস্তক্ষেপ থেকে বিরত থাকা
২. অধ্যায়ঃ মুমিন ব্যক্তির জান-মালের নিরাপত্তা
৩. অধ্যায়ঃ লুট-তরাজ ও ছিনতাই নিষিদ্ধ
৪. অধ্যায়ঃ মুসলমানকে গালি দেয়া ফাসেকী এবং তাহাকে হত্যা করা কুফরী
৫. অধ্যায়ঃ আমার পরে তোমরা পরস্পর হানাহানিতে লিপ্ত হয়ে কুফরীতে ফিরে যেও না
৬. অধ্যায়ঃ মুসলমানগণ মহামহিমান্বিত আল্লাহর যিম্মায় থাকে
৭. অধ্যায়ঃ গোত্রবাদ
৮. অধ্যায়ঃ সর্ববৃহৎ দল
৯. অধ্যায়ঃ যেসব বিপর্যয় সংঘটিত হইবে
১০. অধ্যায়ঃ নৈরাজ্য ও বিপর্যয় চলাকালে অবিচল থাকা
১১. অধ্যায়ঃ দু মুসলমান পরস্পর সংঘাতে লিপ্ত হলে
১২. অধ্যায়ঃ কলহ-বিপর্যয় চলাকালে রসনা সংযত রাখা
১৩. অধ্যায়ঃ নির্জনতা অবলম্বন
১৪. অধ্যায়ঃ সন্দেহজনক বিষয়সমূহ থেকে বিরত থাকা
১৫. অধ্যায়ঃ অপরিচিত অবস্থায় ইসলামের সূচনা হইয়াছে
১৬. অধ্যায়ঃ যাহার জন্য অনাচার থেকে নিরাপদ থাকার আশা করা যায়
১৭. অধ্যায়ঃ উম্মাতের বিচ্ছিন্নতা ও বিভেদ
১৮. অধ্যায়ঃ ধন-সম্পদ সৃষ্ট বিপর্যয়
১৯. অধ্যায়ঃ নারীদের সৃষ্ট বিপর্যয়
২০. অধ্যায়ঃ সৎকাজের নির্দেশদান এবং অসৎকাজে বাধাদান করা
২১. অধ্যায়ঃ আল্লাহর বানীঃ “আত্মসংশোধনই তোমাদের কর্তব্য”
২২. অধ্যায়ঃ অপরাধের শাস্তি
২৩. অধ্যায়ঃ বিপদে ধৈর্যধারণ
২৪. অধ্যায়ঃ যুগের কষ্টকাঠিন্য
২৫. অধ্যায়ঃ কিয়ামতের আলামত সমূহ
২৬. অধ্যায়ঃ কুরআনসহ দ্বীনের জ্ঞান লোপ পাবে
২৭. অধ্যায়ঃ [অন্তর থেকে] আমানত [বিশ্বস্ততা] তিরোহিত হইবে
২৮. অধ্যায়ঃ কিয়ামতের নিদর্শনাবলী
২৯. অধ্যায়ঃ ভূমিধ্বস
৩০. অধ্যায়ঃ বায়দা-এর সামরিক বাহিনী
৩১. অধ্যায়ঃ দাব্বাতুল আরদ [মাটির প্রাণী]
৩২. অধ্যায়ঃ পশ্চিমাকাশ থেকে সূর্যোদয়
৩৩. অধ্যায়ঃ দাজ্জালের ফেত্না, ঈসা বিন মরিয়ম [আঃ] এর অবতরন এবং ইয়াজূজ- মাজূজের আত্মপ্রকাশ
৩৪. অধ্যায়ঃ ঈমাম মাহদী [আঃ] এর আবির্ভাব
৩৫. অধ্যায়ঃ ভয়ংকর যুদ্ধ-সংঘর্ষ সম্পর্কে
৩৬. অধ্যায়ঃ তুর্কীজাতি
১. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ ” বলে, তাহার উপর হস্তক্ষেপ থেকে বিরত থাকা
৩৯২৭ আবু হুরায়রাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, আমি লোকেদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করিতে আদিষ্ট হয়েছি যাবত না তাহারা বলে,
لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ
“লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” [আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ নাই]।
তাহারা এটা বললে আমার থেকে তাহাদের জানমালের নিরাপত্তা লাভ করিল। কিন্তু দ্বীন ইসলামের অধিকারের বিষয়টি স্বতন্ত্র। তাহাদের চূড়ান্ত হিসাব গ্রহণের ভার আল্লাহর উপর ন্যস্ত। {৩২৫৯}
{৩২৫৯} বুখারী ১৪০০, ২৯৪৬, ৬৯২৪, ৭২৮৫; মুসলিম ২০, ২১/১-৩; তিরমিজি ২৬০৬-৭, নাসাঈ ২৪৪৩, ৩০৯০-৯৩, ৩০৯৫, ৩৯৭০-৭৮; আবু দাউদ ২৬৪০, আহমাদ ৬৮, ১১৮, ৩৩৭, ২৭৩৮০, ৮৩৩৯, ৮৬৮৭, ৯১৯০। কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩৯২৮ জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ মানুষ
لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ
“লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ”
না বলা পর্যন্ত আমি তাহার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করিতে আদিষ্ট হয়েছি। তাহারা “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” বললে আমার থেকে তাহাদের জান-মালের নিরাপত্তা লাভ করিল। কিন্তু দ্বীন ইসলামের অধিকারের বিষয়টি স্বতন্ত্র। তাহাদের চূড়ান্ত হিসাব গ্রহণের বিষয়টি আল্লাহর উপর ন্যস্ত। {৩২৬০}
{৩২৬০} মুসলিম ২১, নাসাঈ ৩৯৭৭, আহমাদ ১৩৭৯৭, ১৪৮১৯। কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩৯২৯ আওস বিন হুযায়ফাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
আমরা নবী [সাঃআঃ]-এর নিকট উপবিষ্ট ছিলাম। তিনি আমাদেরকে [অতীতের] ঘটনাবলী উল্লেখপূর্বক উপদেশ দিচ্ছিলেন। ইত্যবসরে এক ব্যক্তি তাহাঁর নিকট এসে তাহাঁর সাথে একান্তে কিছু বলল। নবী [সাঃআঃ] বললেনঃ তোমরা তাহাকে নিয়ে গিয়ে হত্যা করো। লোকটি ফিরে গেলে রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাকে ডেকে জিজ্ঞেস করিলেনঃ তুমি কি সাক্ষ্য দাও যে,
لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ
“আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ নাই”? সে বলল, হাঁ। তিনি বলেনঃ যাও, তোমরা তাহাকে তাহার পথে ছেড়ে দাও। কারণ লোকেরা
لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ
“লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ”
না বলা পর্যন্ত আমাকে তাহাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তাহারা তাই করিলে তাহাদের জান-মালে হস্তক্ষেপ আমার জন্য হারাম হয়ে গেলো। {৩২৬১}
{৩২৬১} নাসাঈ ৩৯৭৯, ৩৯৮২, ৩৯৮৩, আহমাদ ১৫৭২৭, দারেমী ২৪৪৬। কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩৯৩০ ইমরান বিন হুসায়ন [রাদি.], হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নাফে ইবনিল আযরাক [রাদি.] ও তাহার সাথীরা [আমার নিকট] এসে বলল, হে ইমরান! তুমি ধ্বংস হয়ে গেছো। তিনি বলেন, আমি ধ্বংস হইনি। তাহারা বলেন, আল্লাহ বলেছেনঃ
وَقَاتِلُوهُمْ حَتَّى لاَ تَكُونَ فِتْنَةٌ وَيَكُونَ الدِّينُ كُلُّهُ لِلَّهِ
“তোমরা তাহাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করিতে থাকো যতক্ষণ না ফেতনা দূরীভূত হয় এবং আল্লাহর দ্বীন সামগ্রিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়” [৮ঃ৩৯]।
তিনি বলেন, আমরা তাহাদের বিরুদ্ধে এতটা যুদ্ধ করেছি যে, তাহাদেরকে নির্বাসিত করেছি। ফলে আল্লাহর দ্বীন সামগ্রিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তোমরা চাইলে আমি তোমাদের নিকট একটি হাদিস বর্ণনা করিতে পারি, যা আমি রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট শুনিয়াছি। তাহারা বলেন, আপনি কি রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট তা শুনেছেন? তিনি বলেন, হা, আমি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট উপস্থিত ছিলাম। তিনি একটি সামরিক বাহিনী মুশরিকদের বিরুদ্ধে পাঠালেন। মুসলমানরা তাহাদের মোকাবিলায় অবতীর্ণ হয়ে ঘোরতর যুদ্ধে লিপ্ত হলো। মুশরিকরা পরাজিত হয়ে আত্মসমর্পণ করিল। আমার এক বন্ধু যুদ্ধে লিপ্ত হলো। মুশরিকের উপর বর্শা দ্বারা হামলা করিল, তিনি তাহাকে পাকড়াও করিলে সে বলিতে লাগলো, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ। নিশ্চয় আমি একজন মুসলিম। তিনি তাহাকে ভৎসনা করিলেন এবং তাহাকে হত্যা করিলেন। অতঃপর তিনি রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট এসে একবার বা দুবার বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমি ধ্বংস হয়ে গেছি। অতঃপর তিনি যা করিয়াছেন তা তাহার নিকট বর্ণনা করিলে রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাকে বলেনঃ তুমি তাহার পেট চিরে দেখলে না কেন? তাহলে তো তুমি তাহার অন্তরের খবর জানতে পারতে তিনি বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমি তাহার পেট চিরে ফেললেও তাহার অন্তরের খবর জানতে পারতাম না। তিনি বলেনঃ তাহলে তুমি তাহার উচ্চারিত স্বীকারোক্তি কেন কবুল করিলে না, অথচ তুমি তাহার অন্তরের খবর জানতে না? ইমরান [রাদি.] বলেন, অতঃপর রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] কিছুক্ষণ নীরব থাকলেন। অবশেষে লোকটি মারা গেলে আমরা তাহাকে দাফন করলাম। ভোরে উঠে আমরা দেখলাম যে, তাহার লাশ কবরের বাইরে যমীনের উপরে পড়ে আছে। তাহারা বলিলেন, হয়ত কোন শক্র কবর খুঁড়ে একে বের করে তুলে রেখেছে। অতঃপর আমরা তাহাকে আবার দাফন করলাম এবং আমাদের যুবকদের তাহার কবর পাহারা দিতে নির্দেশ দিলাম। আমরা পরদিন ভোরবেলা দেখিতে পেলাম যে, তাহার লাশ কবরের বাইরে যমীনের উপর পড়ে আছে। আমরা বললাম, হয়ত প্রহরীরা তন্দ্রাগ্রস্ত হয়ে পড়েছিল। আমরা পুনরায় তাহাকে দাফন করলাম এবং নিজেরাই প্রহরায় রত হলাম। প্রত্যুষে আমরা দেখলাম, সে কবরের বাইরে যমীনের উপর পড়ে আছে। অবশেষে আমরা তাহাকে এক গিরিসংকটে নিক্ষেপ করলাম।
উপরোক্ত হাদীসে মোট ২টি সানাদের ১টি বর্ণিত হয়েছে, অপর সানাদটি হলোঃ ৫/৩৯৩০[১] ইমরান বিন হুসায়ন [রাদি.] তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদেরকে এক ক্ষুদ্র সামরিক অভিযানে পাঠান, তাতে এক মুসলমান এক মুশরিকের উপর চড়াও হলো। অতঃপর তিনি পূর্ণ হাদিস বর্ণনা করেন ..। এ বর্ণনায় আরো আছেঃ যমীন তাহাকে উৎক্ষিপ্ত করিলে নবী [সাঃআঃ] কে খবর দেয়া হলো। তিনি বলেনঃ যমীন তো অবশ্যি তাহার চেয়ে নিকৃষ্ট ব্যক্তিকেও গ্রহণ করে। কিন্তু আল্লাহ তাআলা তোমাদের দেখাতে চান যে, “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ-এর মর্যাদা ও মাহাত্ন্য কত বেশী।{৩২৬২}তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ ইমরান এর {আরবী} কথাটি হাসান; যা পরবর্তী হাদিস ৩৯৩১ নং এর মাঝে আসবে। এবং ইমরান এর {আরবী} এ কথাটি ও হাসান যা পূর্ববর্তী হাদিস ৩৯২৯ নং হাদীসে অতিবাহিত হয়েছে।{৩২৬২} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য
২. অধ্যায়ঃ মুমিন ব্যক্তির জান-মালের নিরাপত্তা
৩৯৩১ আবু সাঈদ আল-খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বিদায় হাজে বলেছেনঃ সাবধান! তোমাদের এই দিন সর্বাপেক্ষা সম্মানিত দিন। সাবধান! তোমাদের এই মাস সর্বাপেক্ষা সম্মানিত মাস। সাবধান! তোমাদের এই শহর সর্বাপেক্ষা সম্মানিত শহর। সাবধান তোমাদের জীবন, তোমাদের ধনসম্পদ ও তোমাদের উজ্জত-আবরু তোমাদের পরস্পরের জন্য পবিত্র, যেমন এই দিন, এই মাস ও এই শহর। শোন! আমি কি [আল্লাহর পয়গাম] পৌছে দিয়েছি? সমবেত জনমণ্ডলী বলেন, হাঁ। তিনি বলেনঃ হে আল্লাহ! তুমি সাক্ষী থাকো। {৩২৬৩}
{৩২৬৩} আহমাদ ১১৩৫৩ । কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩৯৩২ আবদুল্লাহ বিন আমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে কাবা ঘর তাওয়াফ করিতে দেখলাম এবং তিনি বলছিলেনঃ কত উত্তম তুমি হে কাবা! আকর্ষণীয় তোমার খোশবু, কত উচ্চ মর্যাদা তোমার [হে কাবা]! কত মহান সম্মান তোমার। সেই সত্তার শপথ, যাঁর হাতে মুহাম্মাদের প্রাণ! আল্লাহর নিকট মুমিন ব্যক্তির জান-মাল ও ইজ্জতের মর্যাদা তোমার চেয়ে অনেক বেশী। আমরা মুমিন ব্যক্তি সম্পর্কে সুধারণাই পোষণ করি। {৩২৬৪}
{৩২৬৪} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। গায়াতুল মারাম ৪৩৫, দঈফাহ ৫৩০৯, দঈফ আল-জামি৫০০৬। কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৩৯৩৩ আবু হুরায়রাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-বলেনঃ প্রত্যেক মুসলামনের জান-মাল ও মান-সম্মানে হস্তক্ষেপ করা অপর মুসলামনের জন্য হারাম। {৩২৬৫}
৩২৬৫. মুসলিম ২৫৬৪। কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩৯৩৪ ফাদালাহ বিন উবায়দ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নবী [সাঃআঃ] বলেনঃ মুমিন সেই ব্যক্তি যাহার হস্তক্ষেপ থেকে মানুষের জান-মাল নিরাপদ থাকে এবং মুহাজির সেই ব্যক্তি, যে মন্দ কাজ ও গুনাহ ত্যাগ করেছে। {৩২৬৬}
{৩২৬৬} আহমাদ ২৩৪৪৫। সহীহাহ ৫৪৯। কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩. অধ্যায়ঃ লুট-তরাজ ও ছিনতাই নিষিদ্ধ
৩৯৩৫ জাবির বিন আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি প্রকাশ্যে লুটতরাজ ও ছিনতাই করিল সে আমাদের অন্তর্ভুক্ত নয়। {৩২৬৭}
{৩২৬৭} তিরমিজি ১৪৪৮, আবু দাউদ ৪৩৯১, ৪৩৯২। কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৩৯৩৬ আবু হুরায়রাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ যেনাকারী যখন যেনায় লিপ্ত হয় তখন সে মুমিন থাকে না। মদ্যপ যখন মদ পানে লিপ্ত হয় তখন সে মুমিন থাকে না। চোর যখন চৌর্যবৃত্তিতে লিপ্ত হয় তখন সে মুমিন থাকে না। আর লুটতরাজ ও ছিনতাইকারী যখন লুটতরাজ ও ছিনতাই করে এবং লোকজন তাহার দিকে চোখ তুলে তাকায়, তখন সে মুমিন থাকে না। {৩২৬৮}
{৩২৬৮} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ২৪৭৫, ৫৫৭৮, ৬৭৭২, ৬৮১০, মুসলিম ৫৭, তিরমিজি ২৬২৫, নাসাঈ ৪৮৭০, ৪৮৭১, ৪৮৭২, ৫৬৫৯, ৫৬৬০, আবু দাউদ ৪৬৮৯, আহমাদ ২৭৪১৯, ৮৬৮৭, ৮৭৮১, ৯৮৫৯, কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩৯৩৭ ইমরান ইবনিল হুসায়ন [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ যে ব্যক্তি ছিনতাই ও লুটতরাজ করে, সে আমাদের অন্তর্ভুক্ত নয়। {৩২৬৯}
{৩২৬৯} তিরমিজি ১১২৩। মিশকাত ২৯৪৭। কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩৯৩৮ সালাবাহ ইবনিল হাকাম [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমরা শক্রপক্ষের মেষপালের নাগাল পেয়ে তা লুট করলাম। অতঃপর আমরা সেগুলোর গোশত পাতিলে করে রান্না করছিলাম। এমতাবস্থায় নবী [সাঃআঃ] পাতিলগুলো অতিক্রমকালে [সেগুলো উল্টে] ফেলে দেয়ার নির্দেশ দিলে তা উল্টে ফেলে দেয়া হলো। অতঃপর তিনি বলেনঃ লুটতরাজ করা হালাল নয়। {৩২৭০}
{৩২৭০} হাদিসটি ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। সহীহাহ ১৬৭৩। কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪. অধ্যায়ঃ মুসলমানকে গালি দেয়া ফাসেকী এবং তাহাকে হত্যা করা কুফরী
৩৯৩৯ আবদুল্লাহ বিন মাসউদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ মুসলমানকে গালি দেয়া ফাসেকী এবং তাহাকে হত্যা করা কুফরী। {৩২৭১}
{৩২৭১} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ৪৮, মুসলিম ৬৪, তিরমিজি ১৯৮৩, ২৬৩৪, ২৬৩৫, নাসাঈ ৪১০৮, ৪১০৯, ৪১১০, ৪১১১, ৪১১২, ৪১১৩, আহমাদ ৩৬৩৯, ৩৮৯৩, ৩৯৪৭, ৪১১৫, ৪১৬৭, ৪২৫০, ৪৩৩২।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩৯৪০ আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নবী [সাঃআঃ] বলেনঃ মুসলমানকে গালি দেয়া ফাসেকী এবং তাহাকে হত্যা করা কুফরী। {৩২৭২}
{৩২৭২} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহীহ
৩৯৪১ সাদ [বিন আবু ওয়াক্কাস] [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ মুসলমানকে গালি দেয়া ফাসেকী এবং তাহাকে হত্যা করা কুফরী। {৩২৭৩}
{৩২৭৩} আহমাদ ১৫২২, ১৫৪০। কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৫. অধ্যায়ঃ আমার পরে তোমরা পরস্পর হানাহানিতে লিপ্ত হয়ে কুফরীতে ফিরে যেও না
৩৯৪২ জাবীর বিন আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]- বিদায় হাজ্জে লোকেদেরকে নীরব নিস্তব্ধ করিয়ে বলেনঃ আমার পরে তোমরা পরস্পর হানাহানিতে লিপ্ত হয়ে কুফরীতে ফিরে যেও না। {৩২৭৪}
কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩৯৪৩ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-বলেনঃ তোমাদের জন্য আপসোস! তোমাদের জন্য দুর্ভাগ্য! আমার পরে তোমরা পরস্পর হানাহানিতে লিপ্ত হয়ে কুফরীতে ফিরে যেও না। {৩২৭৫}
{৩২৭৫} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ৬১৬৬, ৬৮৬৮, ৭০৭৭, মুসলিম ৬৬, নাসাঈ ৪১২৫, ৪১২৬, ৪১২৭, আবু দাউদ ৪৬৮৬, আহমাদ ৫৫৫৩, ৫৫৭২, ৫৭৭৫। কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩৯৪৪ আস সুনাবিহ আল-আহমাসী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ সাবধান! আমি হাওযে কাওসারে তোমাদের আগেই উপস্থিত থকেবো এবং আমি অন্যান্য উম্মাতদের উপর তোমাদের সংখ্যাধিক্যের গৌরব প্রকাশ করিব। সুতরাং তোমরা আমার পরে পরস্পর হানাহানিতে লিপ্ত হয়ো না। {৩২৭৬}
{৩২৭৬} আহমাদ ১৮৫৯০। কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৬. অধ্যায়ঃ মুসলমানগণ মহামহিমান্বিত আল্লাহর যিম্মায় থাকে
৩৯৪৫ আবু বাক্র সিদ্দীক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি ফজরের নামায পড়লো, সে আল্লাহর যিম্মায় থাকলো। অতএব তোমরা আল্লাহর যিম্মাদারিকে নষ্ট করো না। যে ব্যক্তি তাহাকে হত্যা করিবে, আল্লাহ তাহাকে তলব করে এনে উল্টো মুখে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন। {৩২৭৭}
{৩২৭৭} হাদিসটি ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। আত তালীকুর রাগীব ১/১৫৫, ১৬৩, সহীহ আত তাহারগীব ওয়াত তাহারহীব ৪৬১। কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩৯৪৬ সামুরাহ বিন জুনদুব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি ফজরের নামাজ পড়লো সে মহান আল্লাহর যিম্মায় রইলো। {৩২৭৮}
{৩২৭৮} আহমাদ ১৯৬০৬।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩৯৪৭ আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ মুমিন ব্যক্তি মহান আল্লাহর নিকট তাহাঁর কোন কোন ফেরেশতাহার চেয়েও অধিক মর্যাদাবান। {৩২৭৯}
{৩২৭৯} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। মিশকাত ৫৭৩৩। কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৭. অধ্যায়ঃ গোত্রবাদ
৩৯৪৮ আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি লোকেদেরকে গোত্রবাদের দিকে আহবান করে অথবা গোত্রবাদে উন্মত্ত হয়ে ভ্রষ্টতাহার পতাকাতলে যুদ্ধ করে নিহত হলে সে জাহিলিয়াতের মৃত্যুবরণ করিল। {৩২৮০}
{৩২৮০} মুসলিম ১৮৪৮, নাসাঈ ৪১১৪, আহমাদ ৭৮৮৪, ৮০০০, ৯৯৬০। সহীহাহ ৪৩৩, ৯৮৩। কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩৯৪৯ ওয়াসিলাহ ইবনিল আসকা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
ফুসায়লাহ হইতে বর্ণীতঃ তিনি বলেন, আমি আমার পিতাহাকে [ওয়াসিলাহ ইবনিল আসকা`] বলিতে শুনিয়াছি, আমি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর নিকট জিজ্ঞাসা করলাম, হে আল্লাহর বাসূল! নিজ গোত্রের প্রতি ভালোবাসা কি গোত্রেবাদের অন্তর্ভুক্ত? তিনি বলেনঃ না। তবে নিজ গোত্রকে অন্যের উপর অত্যাচারে সহায়তা করা গোত্রবাদের অন্তর্ভুক্ত। {৩২৮১}
{৩২৮১} আবু দাউদ 5119। গায়াতুল মারাম 305।উক্ত হাদিসের রাবি আব্বাদ বিন কাসীর আশ-শামী সম্পর্কে আবু হাতিম আর রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। আবু হাতিম বিন হিব্বান বলেন, তাহার হাদিস বর্ণনায় আমার নিকট কোন সমস্যা নেই। আবু যুরআহ আর রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি দুর্বল। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং 3091, 14/150 নং পৃষ্ঠা] কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৮. অধ্যায়ঃ সর্ববৃহৎ দল
৩৯৫০ আনাস বিন মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে বলিতে শুনেছিঃ আমার উম্মাত পথভ্রষ্টতাহার উপর ঐক্যবদ্ধ হইবে না। তোমরা মতভেদ দেখিতে পেলে অবশ্যই সর্ববৃহৎ দলের সাথে থাকিবে। {৩২৮২}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ প্রথম বাক্যটি ব্যতীত খুবই দুর্বল কারণ প্রথম বাক্যটি সহীহ।{৩২৮২} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। মিশকাত ১৭৩-১৭৪, দঈফাহ ২৮৯৬, সহীহ আল-জামি১৮৪৮ । কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য
৯. অধ্যায়ঃ যেসব বিপর্যয় সংঘটিত হইবে
৩৯৫১ মুআয বিন জাবাল [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, এক দিন রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] সলাত আদায় করিলেন। তিনি অবসর হলে আমরা বললাম, বা তাহারা বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আজ আপনি নামায দীর্ঘায়িত করিয়াছেন। তিনি বলেনঃ আমি আশাব্যঞ্জক ও ভীতিজনক নামায পড়েছি। আমি মহামহিমান্বিত আল্লাহর নিকট আমার উম্মাতের জন্য তিনটি জিনিস প্রার্থনা করেছি। তিনি আমাকে দুটি দান করিয়াছেন এবং একটি প্রত্যাখ্যান করিয়াছেন। আমি তাহাঁর নিকট প্রার্থনা করলাম যে, তাহাদের ব্যতীত তাহাদের শত্রুপক্ষ যেন আধিপত্য বিস্তার করিতে না পারে। তিনি আমাকে এটা দান করিলেন। আমি তাহাঁর নিকট আরো প্রার্থনা করলাম যে, আমার গোটা উম্মাতকে যেন পানিতে ডুবিয়ে মারা না হয়। তিনি এটাও আমাকে দান করিয়াছেন। আমি তাহাঁর নিকট আরো প্রার্থনা করলাম যে, আমার উম্মাত যেন পরস্পর যুদ্ধে জড়িয়ে না পড়ে। তিনি আমার এ প্রার্থনা আমাকে ফেরত দিলেন। {৩২৮৩}
{৩২৮৩} আহমাদ ২১৫৭৭, ২১৬০৩, ২১৬২০। সহীহাহ ১৭২৪। কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩৯৫২ রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর মুক্তদাস সাওবান [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আমার জন্য পৃথিবীকে গুটিয়ে দেয়া হলো। ফলে আমি তাহার পূর্ব-পশ্চিম সবদিক দেখিতে পেলাম। আমাকে হরিদ্রাভ বা লাল এবং সাদা বর্ণের দুটি খনিজ ভাণ্ডার অর্থাৎ সোনা-রূপার ভাণ্ডার দেয়া হইয়াছে। আমাকে বলা হলো, পৃথিবীর যতখানি তোমার জন্য গুটানো হয়েছিল, তোমার রাজত্ব সেই সীমা পর্যন্ত বিস্তৃত হইবে। অতঃপর আমি মহান আল্লাহর নিকট তিনটি জিনিস প্রার্থনা করলামঃ আমার উম্মাত যেন ব্যাপকভাবে দুর্ভিক্ষের শিকার হয়ে তাহার দ্বারা ধ্বংস না হয়। তাহাদেরকে দলে উপদলে বিচ্ছিন্ন করে তাহাদের এক দলকে অপর দলের সশস্ত্র সংঘর্ষের স্বাদ আস্বাদন না করানোর আবেদন করলাম। আমাকে বলা হলো, “আমি কোন ফয়সালা করিলে তা মোটেও পরিবর্তিত হওয়ার নয়। তবে আমি তোমার উম্মাতকে দুর্ভিক্ষপীড়িত করে তাহাদের ধ্বংস করিব না এবং তাহাদের বিরুদ্ধে বিশ্বের সকল বিরোধী শক্তিকে যুগপৎ একত্র করিব না, যতক্ষণ না তাহারা পরস্পরকে ধ্বংস করে এবং একে অপরকে হত্যা করে”। আমার উম্মাতের মধ্যে সশস্ত্র সংঘাত শুরু হলে কিয়ামত পর্যন্ত আর অস্ত্রবিরতি হইবে না। আমি আমার উম্মাতের ব্যাপারে অধিক ভয় করছি পথভ্রষ্ট নেতৃবৃন্দের। অচিরেই আমার উম্মাতের কোন কোন গোত্র বা সম্প্রদায় প্রতিমা পূজায় লিপ্ত হইবে এবং আমার উম্মাতের কতক গোত্র মুশরিকদের সাথে যোগ দিবে। অচিরেই কিয়ামতের নিকটবর্তী সময়ে ত্রিশজন মিথ্যাবাদী দাজ্জালের আবির্ভাব হইবে। তাহাদের প্রত্যেকেই নিজেকে নবী দাবি করিবে। আমার উম্মাতের একটি দল সর্বদা সাহায্যপ্রাপ্ত হয়ে সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকিবে, মহান আল্লাহর চূড়ান্ত নির্দেশ [কিয়ামত] না আসা পর্যন্ত। তাহাদের বিরুদ্ধবাদীরা তাহাদের কোন ক্ষতি করিতে পারবে না। আবু হাসান [রাদি.] বলেন, অতঃপর আবু আবদুল্লাহ [রাদি.] এ হাদিস বর্ণনা শেষে বলিলেন, কতই না ভয়াবহ এ হাদিস। {৩২৮৪}
{৩২৮৪} মুসলিম ৩৫৪৪, ৫১৪৪, তিরমিজি ২১৭৬, ২২২৯, আবু দাঊদ ৪২৫২, আহমাদ ২১৮৮৮, ২১৮৯৭, ২১৯৪৬, দারেমী ২০৯। রাওদুন নাদীর ৬১, ১১৭০, সহীহাহ ৪/২৫২, ১৯৫৭।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩৯৫৩ যায়নাব বিনতু জাহশ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] রক্তিমাভ মুখমণ্ডল নিয়ে ঘুম থেকে জাগ্রত হলেন এবং তিনি বলছিলেনঃ
لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ
লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ [আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ নেই],
ঘনিয়ে আশা দুর্যোগে আরবের দুর্ভাগ্য। ইয়াজূজ-মাজূজের প্রাচীর এতোটুকু ফাঁক হয়ে গেছে। তিনি তাহাঁর হাতের আঙ্গুল দিয়ে দশ সংখ্যার বৃত্ত করে দেখান। যায়নাব [রাদি.] বলেন, আমি জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমাদের মধ্যে নেককার লোক থাকা অবস্থায় কি আমরা ধ্বংস হবো? তিনি বলেনঃ [হাঁ] যখন পাপাচারের বিস্তার ঘটবে। {৩২৮৫}
{৩২৮৫} সহীহুল বূখারী ৩৩৪৬, মুসলিম ২২৮০, তিরমিজি ২১৮৭, আহমাদ ২৬৮৬৭, ২৬৮৭০। সহীহাহ ৯৮৭।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩৯৫৪ আবু উমামাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ অচিরেই বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়বে যখন সকাল বেলা মানুষ মুমিন থাকিবে, বিকেল বেলা কাফের হয়ে যাবে। তবে আল্লাহ যাকে দ্বীনের জ্ঞানের বদৌলতে জীবিত রাখবেন তাহার কথা স্বতন্ত্র। {৩২৮৬}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ খুবই দুর্বল, তবে [আরবী] শব্দ ব্যতীত হাদিসটি সহীহ যা ৩৯৬১ নং হাদিসের মাঝে আসবে।{৩২৮৬} দারেমী 338। দঈফাহ 3696। কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য
৩৯৫৫ হুযায়ফাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমরা উমার [রাদি.]-এর নিকট উপবিষ্ট ছিলাম। তিনি জিজ্ঞেস করিলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বিপর্যয় সম্পর্কে যেসব কথা বলে গেছেন, তোমাদের মধ্যে কে সেগুলো অধিক স্মরণ রাখতে পেরেছে? হুযায়ফা [রাদি.] বলেন, আমি বললাম, আমি। উমার [রাদি.] বলেন, তুমি তো অবশ্যই বাহাদুর ছিলে। তিনি আরও বলেন, তা কিরূপ? তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে বলিতে শুনেছিঃ কোন ব্যক্তির পরিবার-পরিজনে, সন্তান ও প্রতিবেশীর ক্ষেত্রে যে বিপদ অর্থাৎ ত্রুটিবিচ্যুতি হয়, এগুলোর কাফফারা হলো নামায, রোযা, দান-খয়রাত, ভালো কাজের আদেশ ও মন্দ কাজে বাধা প্রদান। উমার [রাদি.] বলেন, আমি এ ফিতনা সম্পর্কে জানতে চাইনি। আমি সেই ফিতনা সম্পর্কে জানতে চাই যা সমুদ্রের তরঙ্গের ন্যায় মাথা তুলে আসবে। হুযায়ফা [রাদি.] বলেন, হে আমীরুল মুমিনীন! এই ফিতনা ও আপনার মধ্যে কী সম্পর্ক? আপনার ও সেই ফিতনার মাঝখানে একটি বন্ধ দরজা আছে। উমার [রাদি.] বলেন, সে দরজাটি কি ভাঙ্গা হইবে, না খুলে দেয়া হইবে? হুযায়ফা [রাদি.] বলেন, না, বরং তা ভাঙ্গা হইবে। উমার [রাদি.] বলেন, অতঃপর তা তো আর বন্ধ হওয়ার নয়। শাকীক [রাদি.] বলেন, আমরা হুযায়ফা [রাদি.]কে বললাম, উমার [রাদি.] কি সেই দরজা সম্পর্কে জানতেন? তিনি বলেন, হাঁ, এতটা জানতেন যেমনিভাবে আগামী কালকের দিন গত হওয়ার পর রাত আসা সম্পর্কে জানতেন। আমি তাহার নিকট একটি হাদিস বর্ণনা করেছি, যা ছিল নির্ভূল। অতঃপর আমরা হুযায়ফা [রাদি.] কে সেই দরজা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করিতে ভয় পাচ্ছিলাম। আমরা মাসরূক [রাদি.] কে বললাম, আপনি তাহাকে জিজ্ঞেস করুন। তিনি হুযায়ফা [রাদি.] কে জিজ্ঞেস করিলে তিনি বলেন, সেই দরজাটি ছিল উমার [রাদি.]। {৩২৮৭}
{৩২৮৭} সহীহুল বূখারী ৫২৫, মুসলিম ১৪৪, তিরমিজি ২২৫৮, আহমাদ ২২৭৬৯, ২২৯০৩, ২২৯৩০। তাখরীজু ফিকহুস সায়রাহ ৬৪৩। কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩৯৫৬ আবদুর রহমান বিন আবদে রব্বিল কাবাহ হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি আবদুল্লাহ বিন আমর ইবনিল আস [রাদি.]-এর নিকট পৌঁছে দেখলাম, তিনি কাবা ঘরের ছায়ায় উপবিষ্ট এবং তাহার চারপাশে জনতাহার ভীড়। আমি তাহাকে বলিতে শুনলাম, একদা আমরা রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সাথে সফরে ছিলাম। তিনি এক স্থানে যাত্রাবিরতি করিলেন। আমাদের কেউ তাঁবু টানাচ্ছিলাম, কেউ তীর-ধনুক ঠিক করছিলো এবং কেউ পশুপাল চরাতে গেলো। এই অবস্থায় তাহাঁর মুয়াজ্জিন সলাতের জন্য সমবেত হইতে ডাক দিলেন। আমরা সমবেত হলে রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ভাষণ দিতে দাঁড়িয়ে আমাদের উদ্দেশ্যে বলেনঃ আমার পূর্বে যে নবীই অতিক্রান্ত হইয়াছেন, তিনিই তাহাঁর উম্মাতের জন্য কল্যাণকর বিষয় বলে দিয়েছেন এবং তাহাদের জন্য ক্ষতিকর বিষয়ে লিপ্ত হইতে তাহাদের নিষেধ করিয়াছেন। আর তোমাদের এই উম্মাতের প্রথম পর্যায়ে রয়েছে নিরাপত্তা এবং শেষ পর্যায়ে বালা-মুসীবত আসতে থাকিবে এবং তোমাদের জ্ঞাত অন্যায় কার্যকলাপের প্রসার ঘটবে। তাহারপর এমনভাবে বিপদ আসতে থাকিবে যে, একটি অপরটির [পরেরটির] চেয়ে লঘুতর মনে হইবে। মুমিন ব্যক্তি বলিতে থাকিবে, এই বিপদে আমার ধ্বংস অনিবার্য। অতঃপর সে বিপদ কেটে যাবে এবং আরেকটি বিপদ এসে পতিত হইবে। তখন মুমিন ব্যাক্তি বলবে, হায়! এ বিপদে আমার ধ্বংস অনিবার্য। অতঃপর সেই বিপদও দূরীভূত হইবে। অতএব যে ব্যক্তি জাহান্নাম থেকে নাজাত পেয়ে এবং জান্নাতে প্রবেশ লাভ করে আনন্দিত হইতে চায় সে যেন আল্লাহর প্রতি ও আখেরাত দিবসের প্রতি ঈমানদার অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে এবং লোকেদের সাথে এমন ব্যবহার করে, যেমনটি সে নিজের জন্য কামনা করে। যে ব্যক্তি ইমামের নিকট আনুগত্যের বায়আত করিল এবং প্রতিশ্রুতি দিলো, সে যেন যথাসাধ্য তাহার আনুগত্য করে। পরে অপর কেউ নেতৃত্ব দখলে তাহার সাথে বিবাদে লিপ্ত হলে এই শেষোক্ত জনকে হত্যা করো। আবদুর রহমান [রাদি.] বলেন, আমি [একথা শুনে] লোকেদের ভীড় থেকে আমার মাথা বের করলাম এবং আবদুল্লাহ বিন আমর [রাদি.] কে বললাম, আমি আপনাকে আল্লাহর শপথ করে বলছি, আপনি কি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর নিকট এ হাদিস শুনেছেন? তিনি তাহার হাত দ্বারা তাহার দু কানের দিকে ইশারা করে বলেন, আমার দু কান তাহাঁর নিকট এ হাদিস শুনেছে এবং আমার অন্তর তা সংরক্ষণ করেছে। {৩২৮৮}
{৩২৮৮} মুসলিম ১৮৪৪, নাসাঈ ৪১৯১, আবু দাঊদ ৪২৪৮, আহমাদ ৬৪৬৫, ৬৭৫৪। সহীহাহ ২৪১। কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১০. অধ্যায়ঃ নৈরাজ্য ও বিপর্যয় চলাকালে অবিচল থাকা
৩৯৫৭ আবদুল্লাহ বিন আমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ অচিরেই এমন যুগ আসবে যখন উত্তম লোকেদেরকে ছাঁটাই করা হইবে এবং নিকৃষ্ট লোকেরা বহাল থাকিবে, তাহাদের অংগীকার, প্রতিশ্রুতি ও আমানত বিনষ্ট হয়ে যাবে এবং তাহারা মতবিরোধে লিপ্ত হইবে, তখন তোমাদের কী অবস্থা হইবে? তিনি এই বলে তাহার আঙ্গুলগুলো পরস্পরের ফাঁকে ঢুকালেন। সাহাবীগণ বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! যখন অবস্থা এরূপ হইবে তখন আমরা কী করিব? তিনি বলেনঃ যেসব বিষয় তোমরা উত্তম দেখবে তা গ্রহণ করিবে এবং যা কিছু কদর্য লক্ষ্য করিবে তা বর্জন করিবে, নিজেদের ব্যাপারে চিন্তা-ফিকির করিবে এবং সাধারণের কার্যকলাপ বর্জন করিবে। {৩২৮৯}
{৩২৮৯} আবু দাঊদ ৪৩৪২, সহীহাহ ২০৫। কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩৯৫৮ আবু যাহার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ হে আবু যাহার! যখন মানুষ মরতে থাকিবে, এমনকি একটি কবরের মূল্য হইবে এবং গোলামের মূল্যের সমান, তখন তোমার অবস্থা কী হইবে? আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আল্লাহ ও তাহাঁর রাসূল আমার জন্য যা পছন্দ করেন অথবা বলিলেন, আল্লাহ ও তাহাঁর রাসূলই অধিক অবগত। তিনি বলেনঃ তুমি ধৈর্য ধারণ করিবে। পুনরায় তুমি তোমার মসজিদে [নামাজ পড়তে] এসে [নামায শেষে] নিজের বিছানায় ফিরে আসার শক্তি হারিয়ে ফেলবে অথবা তুমি তোমার বিছানা থেকে উঠে মসজিদের যেতে সক্ষম হইবে না, তখন তোমার কী অবস্থা হইবে? তিনি বলেন, আমি বললাম, আল্লাহ ও তাহাঁর রাসূল অধিক অবগত অথবা আল্লাহ ও তাহাঁর রাসূল আমার জন্য যা ভালো মনে করেন। তিনি বলেনঃ তখন তুমি অবশ্যই হারাম থেকে দূরে থাকিবে। পুনরায় তিনি বলেনঃ যখন ব্যাপক গণহত্যা চলবে, এমনকি “হিজারাতুয যাইত” রক্তে প্লাবিত হইবে, তখন তোমার অবস্থা কী হইবে? আমি বললাম, আল্লাহ ও তাহাঁর রাসূল আমার জন্য যা পছন্দ করেন। তিনি বলেনঃ তুমি যাদের [মদীনাবাসী] সাথে আছো তাহাদের দলে যুক্ত থেকো। আবু যাহার [রাদি.] বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! যারা গণহত্যা করিবে, আমি কি তরবারির আঘাতে তাহাদের হত্যা করিব না? তিনি বলেনঃ তুমি যদি তাই করো, তাহলে তুমিও বিপর্যয়কারীদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে। বরং তুমি নিজের ঘরে আশ্রয় নিবে। আমি বললাম, যদি আমার ঘরে ঢুকে পড়ে? তিনি বলেনঃ যদি তুমি তরবারির চাকচিক্যে ভীত হও তবে তোমার চাদর নিয়ে তোমার মুখমণ্ডল ঢেকে রাখবে। [তুমি নিহত হলে হত্যাকারী তাহার ও তোমার গুনাহের বোঝা বহন করিবে এবং জাহান্নামের বাসিন্দা হইবে। {৩২৯০}
{৩২৯০} আবু দাঊদ ৪২৬১, আহমাদ ২১০৪৯। ইরওয়া ২৪৫১। কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩৯৫৯ আবু মূসা আল-আশআরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদেরকে বললেনঃ কিয়ামতের নিকটবর্তী সময়ে “হারজ” হইবে। রাবী বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! “হারজ” কী? তিনি বলেনঃ ব্যাপক গণহত্যা। কতক মুসলমান বলিলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা এখন এই এক বছরে এত মুশরিককে হত্যা করেছি। রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ তা মুশরিকদের হত্যা করা নয়, বরং তোমরা পরস্পরকে হত্যা করিবে; এমনকি কোন ব্যক্তি তাহার প্রতিবেশীকে, চাচাতো ভাইকে এবং নিকট আত্মীয়-স্বজনকে পর্যন্ত হত্যা করিবে। কতক লোক বলল, হে আল্লাহর রাসূল! তখন কি আমাদের বিবেক-বুদ্ধি লোপ পাবে? রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ অধিকাংশ লোকের জ্ঞান লোপ পাবে এবং অবশিষ্ট থাকিবে নির্বোধ ও মুর্খ। অতঃপর আবু মূসা আল-আশআরী [রাদি.] বলেন, আল্লাহর শপথ! আমি ধারণা করেছিলাম যে, হয়তো এ যুগ তোমাদেরকে ও আমাকে পেতো, তাহলে তা থেকে আমার ও তোমাদের বের হয়ে আসা মুশকিল হয়ে যেতো, যেমন নবী [সাঃআঃ] আমাদের জোর দিয়ে বলেছিলেন যে, আমরা ঐ অনাচারে যতো সহজে জড়িয়ে পড়বো তা থেকে আমাদের নিষ্ক্রমণ ততোধিক দুষ্কর হইবে। {৩২৯১}
{৩২৯১} আহমাদ ১৯২১৮। সহীহাহ ১৬৮২। কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩৯৬০ উহবান বিন সয়ফী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
[উদায়সাহ] বলেন, আলী বিন আবু তালিব [রাদি.] এখানে বসরায় আসেন এবং আমার পিতাহার সাথে সাক্ষাত করেন। তিনি বলেন, হে আবু মুসলিম! তুমি কি এই গোষ্ঠীর [সিরীয়দের] বিরুদ্ধে আমাকে সাহায্য করিবে না? আবু মুসলিম বলেন, হাঁ [করিব]। রাবী বলেন, অতঃপর তিনি তাহার এক দাসীকে ডেকে বলেন, হে দাসী! আমার তরবারিটা বের করো। রাবী বলেন, সে তরবারিটা বের করিল। আবু মুসলিম তা খাপের মধ্য থেকে এক বিঘত পরিমাণ বের করেলেন। দেখা গেলো যে, তা এক খণ্ড কাঠ। আবু মুসলিম বলেন, আমার অন্তরঙ্গ বন্ধু ও তোমার চাচাতো ভাই রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাকে এই উপদেশ দেন যে, “মুসলমানদের মধ্যে বিবাদ-বিশৃংখলা চলাকালে তুমি একটি কাঠের তরবারি ধারণ করিবে”। এখন আপনি চাইলে আমি আপনার সাথে রওয়ানা হইতে পারি। আলী [রাদি.] বলেন, তোমাকেও আমার প্রয়োজন নেই এবং তোমার তরবারিও নয়। {৩২৯২}
{৩২৯২} তিরমিজি ২২০৩। সহীহাহ ১৬৮০। কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহীহ
৩৯৬১ আবু মূসা আল-আশআরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কিয়ামতের নিকটবর্তী সময়ে অন্ধকার রাতের টুকরার ন্যায় চরম বিপর্যয় আসতে থাকিবে। ঐ সময় সকাল বেলা যে ব্যক্তি মুমিন থাকিবে সে সন্ধ্যাবেলা কাফের হয়ে যাবে এবং সন্ধ্যাবেলা যে ব্যক্তি মুমিন থাকিবে সে সকাল বেলা কাফের হয়ে যাবে। এ সময় উপবিষ্ট ব্যক্তি দণ্ডায়মান ব্যক্তির চেয়ে উত্তম হইবে, দণ্ডায়মান ব্যক্তি চলমান ব্যক্তির চেয়ে উত্তম হইবে এবং চলমান ব্যক্তি দ্রুত ধাবমান ব্যক্তির চেয়ে উত্তম হইবে। এ সময় তোমরা তোমাদের ধনুক ভেঙ্গে ফেলো, ধনুকের ছিলা কেটে ফেলো এবং তোমাদের তরবারিগুলো পাথরের উপর আঘাত করে ভেঙ্গে ফেলো। তোমাদের কারো ঘরে বিপর্য়য় ঢুকে পড়লে সে যেন আদম আলাইহি ওয়াসাল্লামের দু পুত্রের মধ্যে উত্তম জনের [হাবিল] ন্যায় হয়ে যায়। {৩২৯৩}
{৩২৯৩} আবু দাঊদ ৪২৫৯। ইরওয়া ২৪৫১, সহীহাহ ১৫৩৫। কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩৯৬২ মুহাম্মাদ বিন মাসলামাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
[আবু বুরদাহ] বলেন, আমি মুহাম্মাদ বিন মাসলামাহ [রাদি.] এর সাথে সাক্ষাত করিলে তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ অচিরেই কলহ, অনৈক্য, বিচ্ছিন্নতা ও বিরোধ ছড়িয়ে পড়বে। এ অবস্থা চলাকালে তুমি তোমার তরবারিসহ উহুদ পাহাড়ে আসো, তা তাতে আঘাত করো, যাতে তা ভেঙ্গে যায়। অতঃপর তুমি তোমার ঘরে বসে থাকো, যতক্ষণ না কোন বিদ্রোহী বা অনিষ্টকারী তোমাকে হত্যা করে বা তোমার স্বাভাবিক মৃত্যু হয়। মুহাম্মাদ বিন মাসলামা [রাদি.] বলেন, সেই বিপর্যয় এসে গেছে এবং রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যা বলেছেন আমি তাই করেছি। {৩২৯৪}
{৩২৯৪} আহমাদ ১৭৫২১। রাওদুন নাদীর ৮৫১, সহীহাহ ১৩৮০। কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১১. অধ্যায়ঃ দু মুসলমান পরস্পর সংঘাতে লিপ্ত হলে
৩৯৬৩ আনাস বিন মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নবী [সাঃআঃ] বলেনঃ দুজন মুসলমান পরস্পর সশস্ত্র সংঘর্ষে লিপ্ত হলে হত্যাকারী ও নিহত ব্যক্তি উভয়ে জাহান্নামে যাবে। {৩২৯৫}
{৩২৯৫} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। গায়াতুল মারাম ২৫৬ নং পৃষ্ঠা। কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩৯৬৪ আবু মূসা আল-আশআরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ দু মুসলমান তাহাদের তরবারিসহ পরস্পর সংঘাতে লিপ্ত হলে হত্যাকারী ও নিহত ব্যক্তি উভয়ে জাহান্নামে যাবে। সাহাবীগণ বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! সে তো হত্যাকারী, কিন্তু নিহত ব্যক্তির কী হলো? তিনি বলেনঃ সেও তাহার প্রতিদ্বন্দ্বীকে হত্যা করিতে উদ্যত ছিলো। {৩২৯৬}
{৩২৯৬} নাসাঈ ৪১১৮, ৪১১৯, ৪১২৪, আহমাদ ১৯১৭৭। কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩৯৬৫ আবু বাকরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নবী [সাঃআঃ] বলেনঃ দু মুসলমান পরস্পর সংঘর্ষে লিপ্ত হয়ে তাহাদের একজন অপরজনের বিরুদ্ধে অস্ত্র বহন [ধারণ] করিলে তাহারা উভয়ে জাহান্নামের পাদদেশে উপনীত হইবে। অতঃপর তাহাদের একজন তাহার প্রতিদ্বন্দ্বীকে হত্যা করিলে উভয়ে সম্পূর্ণরূপে জাহান্নামে যাবে। {৩২৯৭}
{৩২৯৭} মুসলিম ২৮৮৮, নাসাঈ ৪১১৭, আহমাদ ১৯৯১১ । সহীহাহ ১২৩১ ।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩৯৬৬ আবু উমামাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ যে ব্যক্তি অপরের পার্থিব স্বার্থে আখেরাত বরবাদ করেছে, কিয়ামতের দিন সে হইবে আল্লাহর নিকট সর্বপেক্ষা নিকৃষ্ট ব্যক্তি। {৩২৯৮}
{৩২৯৮} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। দঈফাহ ১৯১৫ । কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১২. অধ্যায়ঃ কলহ-বিপর্যয় চলাকালে রসনা সংযত রাখা
৩৯৬৭ আবদুল্লাহ বিন আমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ এমন এক ফিতনার উদ্ভব হইবে, যা সমগ্র আরবকে গ্রাস করিবে। এই ফিতনায় নিহত ব্যক্তিরা হইবে জাহান্নামী। তখন জিহ্বা হইবে তরবারির চেয়েও মারাত্মক। {৩২৯৯}
{৩২৯৯} তিরমিজি ২১৭৮, আবু দাউদ ৪২৬৫, আহমাদ ৬৯৪১। দঈফাহ ৩২২৯, দঈফ আল-জামি ২৪৭৫। কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৩৯৬৮ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমরা কলহ-বিপর্যয় থেকে অবশ্যই দূরে থাকিবে। কেননা তাতে রসনা হইবে তরবারির ন্যায় ধারালো। {৩৩০০}
{৩৩০০} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। দঈফাহ ২৪৭৯। কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ খুবই দুর্বল
৩৯৬৯ বিলাল ইবনিল হারিস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
[আলকামাহ] বলেন যে, তাহার নিকট দিয়ে একজন শরীফ লোক যাচ্ছিলেন। আলকামা [রাদি.] তাহাকে বলেন, তোমার সাথে আমার আত্মীয়তাহার সম্পর্ক আছে এবং অন্যবিধ অধিকারও আছে। আমি লক্ষ্য করছি যে, তুমি এসব আমীর-ওমরার নিকট যাতায়াত করো এবং তাহাদের সাথে তাহাদের মর্জিমাফিক কথাবার্তা বলো। আমি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সাহাবী বিলাল ইবনিল হারিস আল-মুযানী [রাদি.] কে বলিতে শুনিয়াছি, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, তোমাদের কেউ অবশ্যই আল্লাহর সন্তুষ্টিমূলক কথা বলে, অথচ তাহার প্রতিদিন সম্পর্কে সে জ্ঞাত নয়। আল্লাহ তায়ালা এই কথার বিনিময়ে তাহার জন্য কিয়ামত পর্যন্ত তাহাঁর সন্তোষ লিখে দেন। পক্ষান্তরে তোমাদের কেউ আল্লাহর অসন্তুষ্টিমূলক কথা বলে, যাহার পরিণতি সম্পর্কে সে বেখবর। আল্লাহ এই কথার বিনিময়ে তাহার জন্য কিয়ামত পর্যন্ত তাহাঁর অসন্তুষ্টি লিখে দেন। আলকামা [রাদি.] বলেন, লক্ষ্য করো, ভেবে দেখ, তুমি কি বলছো এবং মুখ থেকে কি কথা বের করছো। বিলাল ইবনিল হারিস [রাদি.]-র নিকট আমি যে হাদিস শুনিয়াছি তা আমাকে অনেক কথাই বলিতে বাধা দেয়। {৩৩০১}
{৩৩০১} তিরমিজি ২৩১৯, আহমাদ ১৫৪২৫, মুওয়াত্তা মালিক ১৮৪৮। সহীহাহ ৮৮৬, রাওদুন নাদীর ১৭২, আত তালীকুর রাগীব ৩/১৫১, ১৫২। কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩৯৭০ আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ মানুষ আল্লাহর অসন্তুষ্টিমূলক কথা বলে এবং তাহাকে দূষণীয় মনে করে না। অথচ এই কথার দরুন সত্তর বছর ধরে সে জাহান্নামে পতিত হইতে থাকিবে। {৩৩০২}
{৩৩০২} সহীহুল বূখারী ৬৪৭৭, মুসলিম ২৯৮৮, তিরমিজি ২৩১৪, আহমাদ ৭১৭৪, ৭৮৯৮, ৮২০৬, ৮৪৪৪, ৮৭০৩, ৮৯৬৭, ১০৫১৪, মুওয়াত্তা মালিক ১৮৪৯। সহীহাহ ৫৪০। কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩৯৭১ আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
বর্ণিতঃ তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আল্লাহ ও আখেরাতের উপর ঈমান রাখে, সে যেন ভালো কথা বলে অন্যথা নীরব থাকে। {৩৩০৩}
{৩৩০৩} সহীহুল বূখারী ৬০১৮, ৬১৩৬, ৬১৩৮, মুসলিম ৪৭, তিরমিজি ২৫০০, আবু দাঊদ ৫১৫৪, আহমাদ ৭৫৭১, ৯৩১২। কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩৯৭২ সুফইয়ান বিন আবদুল্লাহ আস-সাকাফী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমাকে এমন একটি বিষয় বলে দিন, যাকে আমি দৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরে থাকবো। তিনি বলেনঃ তুমি বলো, “আল্লাহ আমার প্রভু” এবং এর উপর অবিচল থাকো। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমার ব্যপারে আপনি কোন জিনিসের অধিক ভয় করেন? রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর নিজের জিহ্বা ধরে বলেনঃ এটির। {৩৩০৪}
{৩৩০৪} মুসলিম ৩৮, তিরমিজি ২৪১০. আহমাদ ১৪৯৯০, ১৮৯৩৮, দারেমী ২৭১০। আয যিলাল ২১-২২।উক্ত হাদিসের রাবি আবু মারওয়ান মুহাম্মাদ বিন উসমান আল-উলমানী সম্পর্কে আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি সিকাহ। আবু হাতিম বিন হিব্বান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভূল করেন ও সিকাহ রাবীর বিপরীত হাদিস বর্ণনা করেন। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় ভূল করেন। ঈমাম বুখারী তাহাকে সত্যবাদী বলেছেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৫৪৫৪, ২৬/৮১ নং পৃষ্ঠা] কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ নির্ণীত নয়
৩৯৭৩ মুআয বিন জাবাল [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি এক সফরে নবী রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর সাথে ছিলাম। একদিন ভোরবেলা আমি তাহাঁর সাথে পথ অতিক্রমকালে তাহাকে বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমাকে এমন একটি কাজের কথা বলে দিন, যা আমাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে এবং জাহান্নাম থেকে দুরে রাখবে। তিনি বলেনঃ তুমি এক কঠিন প্রশ্ন করিলে। তবে বিষয়টি যাহার জন্য আল্লাহ সহজ করেন তাহার জন্য সহজ। তুমি আল্লাহর ইবাদত করো, তাহার সাথে অন্য কিছু শরীক করিবে না। নামায কায়েম করো, যাকাত দাও, রমাদান মাসের রোযা রাখো এবং আল্লাহর ঘরের হাজ্জ করো। অতঃপর তিনি বলেনঃ আমি কি তোমাকে কল্যাণের পথসমূহ বলে দিবো না? [তাহলো] রোযা ঢালস্বরূপ, যাকাত পাপরাশি মুছে দেয়, যেমন পানি আগুন নিভিয়ে দেয় এবং মানুষের গভীর রাতের নামায। অতঃপর তিনি তিলাওয়াত করেনঃ
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا عَلَيْكُمْ أَنْفُسَكُمْ لاَ يَضُرُّكُمْ مَنْ ضَلَّ إِذَا اهْتَدَيْتُمْ
“তাহারা শয্যা ত্যাগ করে তাহাদের প্রতিপালককে ডাকে আশা ও ভয়ে এবং আমি তাহাদেরকে সে জীবনোপকরণ দান করেছি, তা থেকে তাহারা খরচ করে। কেউই জানে না তাহাদের জন্য নয়ন প্রীতিকর কী লুক্কায়িত রাখা হইয়াছে, তাহাদের কৃতকর্মের পুরষ্কার স্বরুপ” [সূরা আস-সাজদাঃ ১৬-১৭]। অতঃপর তিনি বলেনঃ আমি কি তোমাকে কাজের মূল, তাহার স্বম্ভ ও শীর্ষ চূড়া সম্পর্কে অবহিত করিব না? তা হলো জিহাদ। তাহারপর তিনি বলেনঃ আমি কি তোমাকে এই সব কাজের নির্যাস সম্পর্কে অবহিত করিব না? আমি বললাম, হাঁ। তিনি তাহাঁর জিহ্বা ধরে বলেনঃ তুমি এটা সংযত রাখো। আমি বললাম, হে আল্লাহর নবী! আমরা যা কিছু বলি সেজন্য কি পাকড়াও হবো? তিনি বলেনঃ হে মুআয! তোমার মা তোমার জন্য কাঁদুক। মানুষ তো তাহার অসংযত কথাবার্তার কারণেই অধোমুখে জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হইবে।{৩৩০৫}
{৩৩০৫} তিরমিজি ২৬১৬। ইরওয়া ৪১৩, আত তালীকুর রাগীব ৪/৫-৬, তাখরীজুল ঈমান লি ইবনি আবু শায়বাহ ১-২। কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩৯৭৪ নবী [সাঃআঃ]-এর স্ত্রী উম্মু হাবীবা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ সৎ কাজের আদেশ, অসৎ কাজের নিষেধ এবং মহান আল্লাহর যিকর ব্যতীত মানুষের প্রতিটি কথা তাহার জন্য ক্ষতির কারণ হইবে।{৩৩০৬}
{৩৩০৬} তিরমিজি ২৪১২। আত তালীকুর রাগীব ৪/১০। কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৩৯৭৫ আবুশ শাসা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
ইবনি উমার [রাদি.] কে বলা হলো, আমরা আমাদের শাসকবর্গের নিকট যাতায়াত করি এবং তাহাদের সাথে কথাবার্তা বলি, কিন্তু আমরা সেখান থেকে বের হয়ে এসে উল্টো কথা বলি। তিনি বলেন, আমরা তো রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর যুগে এরুপ আচরণকে মোনাফিকী গণ্য করতাম। {৩৩০৭}
{৩৩০৭} সহীহুল বূখারী ৭১৭৮, আহমাদ ৫৭৯৫। কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩৯৭৬ আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ মানুষের জন্য ইসলামের সৌন্দর্য হচ্ছে তাহার অনর্থক কথাবার্তা পরিহার করা। {৩৩০৮}
{৩৩০৮} তিরমিজি ২৩১৭। রাওদুন নাদীর ২৯৩, ৩২১। কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৩. অধ্যায়ঃ নির্জনতা অবলম্বন
৩৯৭৭ আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নবী [সাঃআঃ] বলেনঃ যে ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় জিহাদের উদ্দেশ্যে ঘোড়ার লাগাম ধরে প্রস্তুত থাকে তাহার জীবনযাত্রাই সর্বোত্তম। যখনই শত্রুর উপস্থিতি বা শত্রুর দিকে ধাবমান হওয়ার শব্দ শুনতে পায় তখন সে ঘোড়ার পিঠে আরোহন করে দ্রুত বের হয়ে পড়ে এবং যথাস্থানে পৌছে শত্রু নিধন ও শহীদ হওয়ার মর্যাদা সন্ধান করে। অথবা যে ব্যক্তি তাহার মেষপাল নিয়ে কোন পাহাড় চূড়ায় বা [নির্জন] উপত্যকায় বাস করে যথারীতি নামায কায়েম করে, যাকাত পরিশোধ করে এবং আমৃত্যু তাহার প্রভুর ইবাদতে লিপ্ত থাকে তাহার জীবেনযাত্রাই সর্বোত্তম। এই ধরনের লোক সর্বদা কল্যাণের মধ্যে থাকে। {৩৩০৯}
{৩৩০৯} মুসলিম ১৮৮৯, আহমাদ ৮৮৯৭, ৯৪৩০। কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩৯৭৮ আবু সাঈদ আল-খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
বর্ণিতঃ এক ব্যক্তি নবী [সাঃআঃ]-এর নিকট এসে বলল, কোন্ লোক অধিক উত্তম? তিনি বলেনঃ জান-মালসহ আল্লাহর পথে জিহাদকারী। সে বলল, তাহারপর কে? তিনি বলেনঃ যে ব্যক্তি কোন গিরিসংকটে অবস্থান করে মহান আল্লাহর ইবাদতে রত থাকে এবং মানুষের ক্ষতি করা থেকে বিরত থাকে। {৩৩১০}
{৩৩১০} সহীহুল বূখারী ২৭৮৬, ৬৪৯৪, মুসলিম ১৮৮৮, তিরমিজি ১৬৬০, নাসাঈ ৩১০৫, আবু দাঊদ ২৪৮৫, আহমাদ ১০৭৪১, ১০৯২৯, ১১১৪১, ১১৪২৮। ইরওয়া ১১৯৩, সহীহাহ ১৫৩১।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩৯৭৯ হুযায়ফা ইবনিল ইয়ামান [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ জাহান্নামের দরজাসমূহে আহবানকারী ফেরেশতাগণ থাকিবে। যারা তাহাদের আহবানে সাড়া দিবে তাহাদেরকে তাহারা জাহান্নামে নিক্ষেপ করিবে। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমাদের নিকট তাহাদের বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করুন। তিনি বলেনঃ তাহারা আমাদের মধ্য থেকে হইবে এবং আমাদের ভাষায় কথা বলবে। আমি বললাম, তাহারা যদি আমাকে পায় তবে আপনি আমাকে কী নির্দেশ দেন? তিনি বিলেনঃ তুমি অপরিহার্যরূপে মুসলমানদের সংঘভুক্ত থাকিবে এবং তাহাদের ইমামের আনুগত্য করিবে। যদি মুসলমানগণ ঐক্যবদ্ধ না থাকে এবং তাহাদের ঈমামও না থাকে তাহলে তুমি তাহাদের সকল বিচ্ছিন্ন দল থেকে দুরে থাকো এবং কোন গাছের কান্ড আঁকড়ে ধরো এবং সেই অবস্থায় যেন তোমার মৃত্যু হয়। {৩৩১১}
{৩৩১১} সহীহুল বূখারী ৩৬০৬, মুসলিম ১৮৪৭, আবু দাঊদ ৪২৪৪, আহমাদ ২২৯৩৯। সহীহাহ ২৭৩৯। কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩৯৮০ আবু সাঈদ আল-খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ অচিরেই মুসলমানদের সর্বাপেক্ষা উত্তম সম্পদ হইবে মেষ-বকরী। তাহারা ফিতনা-ফাসাদ থেকে তাহাদের দ্বীন ও জীবন বাঁচাতে সেগুলো নিয়ে পাহাড়ের পাদদেশে এবং পানির উৎস সমৃদ্ধ চারণভূমিতে পলায়ন করিবে। {৩৩১২}
{৩৩১২} সহীহুল বূখারী ১৯, ৩৩০০, ৩৬০০, ৬৪৯৫, ৭০৮৮, নাসাঈ ৫০৩৬, আবু দাঊদ ৪২৬৭, আহমাদ ১০৬৪৯, ১০৮৬১, ১০৯৯৮, ১১১৪৮, মুওয়াত্তা মালিক ১৮১১। কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩৯৮১ হুযায়ফা ইবনিল ইয়ামান [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ অচিরেই এমন কতক নৈরাজ্যকর বিপর্যয় সৃষ্ঠি হইবে, যাহার সম্মুখভাগে থাকিবে জাহান্নামের দিকে আহবানকারীরা। এমন পরিস্থিতিতে তুমি যদি বৃক্ষের কান্ড আঁকড়ে ধরে থাকা অবস্থায় মৃত্যুবরণ করিতে পারো তবে তা তোমার জন্য ওদের কারো আহবানে সাড়া দেওয়া থেকে উত্তম। {৩৩১৩}
{৩৩১৩} সহীহুল বূখারী ৩৬০৬, মুসলিম ১৮৪৭, আবু দাঊদ ৪২৪৪, আহমাদ ২২৯৩৯। সহীহাহ ১৭৯১।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩৯৮২ আবু হুরায়রাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ মুমিন ব্যক্তি একই গর্ত থেকে দুইবার দংশিত হয় না। {৩৩১৪}
{৩৩১৪} সহীহুল বূখারী ৬১৩৩, মুসলিম ৬৯৯৮, আবু দাঊদ ৪৯৬২, আহমাদ ৮৭০৯, দারেমী ২৭৮১। সহীহাহ ১১৭৫। কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩৯৮৩ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ মুমিন ব্যক্তি একই গর্ত থেকে দুবার দংশিত হয় না। {৩৩১৫}
{৩৩১৫} আহমাদ ৫৯২৮। কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৪. অধ্যায়ঃ সন্দেহজনক বিষয়সমূহ থেকে বিরত থাকা
৩৯৮৪ নুমান বিন বাশীর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
[শাবী] বলেন, আমি নুমান বিন বশীর [রাদি.] কে মিম্বারের উপর দাঁড়িয়ে তাহার হাতের দু আঙ্গুলে দু কানের দিকে ইশারা করে বলিতে শুনিয়াছি, আমি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে বলিতে শুনিয়াছিঃ হালালও সুস্পষ্ট, হারামও সুস্পষ্ট, এতদুভয়ের মাঝখানে কতক সন্দেহজনক বিষয় আছে, যে সম্পর্কে অধিকাংশ লোক অজ্ঞাত। যে ব্যেক্তি সন্দেহজনক বিষয় সমূহ থেকে বিরত থাকলো, সে তাহাঁর দ্বীন ও সম্ভ্রমকে পবিত্র রাখলো। আর যে ব্যেক্তি সন্দেহজনক বিষয়সমূহে জড়িয়ে পড়লো সে হারাম বিষয়ের মধ্যে পতিত হলো। যেমন কোন রাখাল রাষ্ট্রের সংরক্ষিত চারণভূমির আশেপাশে তাহার পশুপাল চড়ালে সেগুলো তাতে ঢুকে পড়ার আশংকা থাকে। জেনে রাখো, প্রত্যেক শাসকের একটি সংরক্ষিত চারণ ভূমি থাকে। জেনে রাখো, আল্লাহর চারণভূমি হচ্ছে তাহার হারামকৃত বিষয়সমূহ। জেনে রাখো! দেহের মধ্যে একখন্ড মাংসপিন্ড আছে। যখন তা সুস্থ থাকে তখন সারা দেহও সুস্থ থাকে। যখন তা নষ্ট হয় তখন সারা দেহই নষ্ট হয়ে যায়, জেনে রাখো! সেটাই হচ্ছে কলব [অন্তর] {৩৩১৬}
{৩৩১৬} সহীহুল বূখারী ৫২, ২০৫১, মুসলিম ১৫৯৯, তিরমিজি ১২০৫, নাসাঈ ৪৪৫৩, ৫৭১০, আবু দাঊদ ৩৩২৯, আহমাদ ১৭৮৮৩, ১৭৯০৩, ২৭৬৩৮, ১৭৯১৭, ১৭৯৫১, দারেমী ২৫৩১।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩৯৮৫ মাকিল বিন ইয়াসার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কলহ ও বিপর্যয়কর পরিস্থিতি বিরাজমান কালে ইবাদতে লিপ্ত থাকা আমার কাছে হিজরত করে চলে আসার সমতুল্য। {৩৩১৭}
{৩৩১৭} মুসলিম ২৯৪৮, তিরমিজি ২২০১, আহমাদ ১৯৭৮৭, ১৯৮০০। রাওদুন নাদীর ৮৬৯। কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৫. অধ্যায়ঃ অপরিচিত অবস্থায় ইসলামের সূচনা হইয়াছে
৩৯৮৬ আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ নিঃসঙ্গ ও অপরিচিত অবস্থায় ইসলামের অগ্রযাত্রা শুরু হইয়াছে। অচিরেই তা নিঃসঙ্গ ও অপরিচিত অবস্থায় প্রত্যাবর্তন করিবে। অতএব নিঃসঙ্গ ও অপরিচিতদের জন্য মোবারকবাদ [স্বাগতম]। {৩৩১৮}
{৩৩১৮} মুসলিম ১৪৫, আহমাদ ৮৮১২। রাওদুন নাদীর ৩৫০, সহিহাহ ১২৭৩।উক্ত হাদিসের রাবি ১. ইয়াকূব বিন হুমায়দ বিন কাসিব সম্পর্কে আবু জাফার আল-উকায়লী বলেন, তাহার হাদিসের অনুসরণ করা যাবে না। আবু হাতিম আর-রাবী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, [তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় ভূল করেন] [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৭০৮৬, ৩২/৩১৮ নং পৃষ্ঠা] ২. ইয়াযীদ বিন কায়সান সম্পর্কে আবু আহমাদ আল-হাকিম বলেন, তিনি আহলে ইলমের নিকট হাফিয নয়। আবু আহমাদ বিন আদী আল-জুরজানী বলেন,আমি আশা করি তাহার হাদিস বর্ণনায় কোন সমস্যা নেই। আহমাদ বিন শুআয়ব আন নাসাঈ বলেন, তিনি সিকাহ। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় ভূল করেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৭০৪১, ৩২/২৩০ নং পৃষ্ঠা] কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ নির্ণীত নয়
৩৯৮৭ আনাস বিন মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ নিঃসঙ্গ ও অপরিচিত অবসথায় ইসলামের অগ্রযাত্রা শুরু হইয়াছে। অচিরেই তা নিঃসঙ্গ ও অপরিচিত অবস্থায় প্রত্যাবর্তন করে। অতএব নিঃসঙ্গ ও অপরিচিতদের জন্য মোবারকবাদ [স্বাগতম]। {৩৩১৯}
{৩৩১৯} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহীহ
৩৯৮৮ আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ নিঃসঙ্গ ও অপরিচিত অবস্থায় ইসলামের অগ্রযাত্রা শুরু হইয়াছে। অচিরেই তা নিঃসঙ্গ ও অপরিচিত অবস্থায় প্রত্যাবর্তন করিবে। অতএব নিঃসঙ্গ ও অপরিচিতদের জন্য মোবারকবাদ [স্বাগতম]। {৩৩২০}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ [আরবী] শব্দ ব্যতীত সহীহ। সহীহাহ ৩/২৬৯। {৩৩২০} তিরমিজি ২৬২৯, আহমাদ ৩৭৭৫, দারেমী ২৭৫৫। উক্ত হাদিসের রাবি সুফইয়ান বিন ওয়াকী সম্পর্কে ঈমাম বুখারী মন্তব্য করিয়াছেন। ঈমাম নাসাঈ বলেন, তিনি সিকাহ নন। ইবনি হিব্বান বলেন, তিনি সত্যবাদী। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি যাচাই বাছাই ছাড়া হাদিস গ্রহণ করেন ও তা বর্ণনা করেন। আবু দাঊদ আস সাজিসতানী তাহার হাদিস বর্জন করিয়াছেন। ঈমাম যাহাবী তাহাকে দুর্বল বলেছেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ২৪১৮, ১১/২০০ নং পৃষ্ঠা] কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য
১৬. অধ্যায়ঃ যাহার জন্য অনাচার থেকে নিরাপদ থাকার আশা করা যায়
৩৯৮৯ মুআয বিন জাবাল [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
[উমার [রাদি.]] এক দিন রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর মসজিদে গিয়ে মুআয বিন জাবাল [রাদি.] কে মহানবী [সাঃআঃ] এর কবরের পাশে উপবিষ্ট অবস্থiয় কান্নারত দেখিতে পান। তিনি জিজ্ঞেস করেন, তুমি কাঁদছো কেন? তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] থেকে শ্রুত কিছু বিষয় আমাকে কাঁদাচ্ছে। আমি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছিঃ সামান্যতম কপটতাও শিরক। যে ব্যক্তি আল্লাহর কোন বন্ধুর [ওলী] সাথে শত্রুতা করিল, সে যেন আল্লাহর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করিল। নিশ্চয় আল্লাহ ভালোবাসেন সৎকর্মপরায়ণ আল্লাহভীরু আত্মগোপনকারী বান্দাদের, যারা দৃষ্টির অন্তরাল হলে কেউ তাহাদের খোঁজ করে না, সামনে উপস্থিত থাকলে কেউ তাহাদের আপ্যায়ন করে না এবং তাহাদের পরিচয়ও নেয় না। তাহাদের অন্তরসমূহ হেদায়াতের আলোকবর্তিকা। তাহারা সব ধরনের অন্ধকারাচ্ছন্ন কদর্যতা থেকে নিরাপদে বের হয়ে যাবে। {৩৩২১}
{৩৩২১} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। মিশকাত ৫৩২৮, রাওদুন নাদীর ৮৬৩, দঈফাহ ২৯৭৫। কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৩৯৯০ আবদুল্লাহ বিন উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ মানুষ শত উটের মত,যাহার মধ্যে তুমি হয়ত একটিও ভারবাহী [দায়িত্ব বহনে সক্ষম] লোক পাবে না। {৩৩২২}
{৩৩২২} সহীহুল বূখারী ৬৪৯৮, মুসলিম ২৫৪৭, তিরমিজি ২৮৭২, আহমাদ ৫০০৯, ৫৩৬৪, ৫৫৮৭, ৫৮৪৮, ৫৯৯৪, ৬০১৩, ৬২০১। রাওদুন নাদীর ৫০২।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৭. অধ্যায়ঃ উম্মাতের বিচ্ছিন্নতা ও বিভেদ
৩৯৯১আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ ইহূদী জাতি একাত্তর ফেরকায় [উপদলে] ভিক্ত হইয়াছে এবং আমার উম্মাত তিয়াত্তর ফেরকায় বিভক্ত হইবে। {৩৩২৩}
{৩৩২৩} তিরমিজি ২৪৬০, আবু দাঊদ ৪৫৯৬, আহমাদ ২৭৫১০। রাওদুন নাদীর ৫০, সহীহাহ ২০৩, আত তালীকু আলাত তানকীল ২/৫৩। কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহীহ
৩৯৯২ আওফ বিন মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ ইহূদী জাতি একাত্তর ফেরকায় বিভক্ত হইয়াছে। তাহার মধ্যে একটি ফেরকা জান্নাতী এবং অবশিষ্ট সত্তর ফেরকা জাহান্নামী। খৃস্টানরা বাহাত্তর ফেরকায় বিভক্ত হইয়াছে। তাহার মধ্যে একাত্তর ফেরকা জাহান্নামী এবং একটি ফেরকা জান্নাতী। সেই মহান সত্তার শপথ যাঁর হাতে মুহাম্মাদের প্রাণ! অবশ্যই আমার উম্মাত তিয়াত্তর ফেরকায় বিভক্ত হইবে। তাহার মধ্যে একটি মাত্র ফেরকা হইবে জান্নাতী এবং অবশিষ্ট বাহাত্তরটি হইবে জাহান্নামী। বলা হলো, হে আল্লাহর রাসূল! কোন ফেরকাটি জান্নাতী। তিনি বলেনঃ জামাআত [একতাবদ্ধ দলটি]। {৩৩২৪}
{৩৩২৪} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। আয যিলাল ৬৩, সহীহাহ ১৪৯২। কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩৯৯৩ আনাস মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ বনী ইসরাঈল একাত্তর ফেরকায় বিভক্ত হয়েছিল। আর আমার উম্মাত বাহাত্তর ফেরকায় বিভক্ত হইবে। একটি ফেরকা ব্যতীত সকলেই হইবে জাহান্নামী। সেটি হচ্ছে জামাআত। {৩৩২৫}
{৩৩২৫} আহমাদ ১১৭৯৮, ১২০৭০। আয যিলাল ৬৪, সহীহাহ ২০৪, ১৪৯২। কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩৯৯৪ আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমরা [পথভ্রষ্ট হয়ে] তোমাদের পূর্ববতীদের রীতিনীতি অনুসরণ করিবে বাহুতে বাহুতে, হাতে হাতে, বিঘতে বিঘতে। এমনটি তাহারা যদি গুই সাপের গর্তেও ঢোকে, তবে তোমরাও অবশ্যই তাতে ঢোকবে। সাহাবীগণ জিজ্ঞাসা করিলেন, হে আল্লাহর রাসূল! [পূর্ববর্তীগণ কি] ইহুদী-খৃস্টান জাতি? তিনি বলেনঃ তবে আর কারা! {৩৩২৬}
{৩৩২৬} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ৭৩১৯, আহমাদ ৮১০৯, ৮১৪০, ৮২২৮, ৮৫৮৭, ২৭২২৭, ১০২৬৩, ১০৪৪৬। আয যিলাল ৭২, ৭৪, ৭৫। তাখরীজু ইসলাহিল মাসাজিদ ৩৮। কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহীহ
১৮. অধ্যায়ঃ ধন-সম্পদ সৃষ্ট বিপর্যয়
৩৯৯৫ আবু সাঈদ আল-খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] দাঁড়িয়ে লোকেদের উদ্দেশে ভাষণ দিলেন। তিনি বলেনঃ না, আল্লাহর শপথ, হে জনগণ! আল্লাহ তোমাদের জন্য যে মোহনীয় পার্থিব ধন-সম্পদ নির্গত করবেন, তাহার অনিষ্ট ছাড়া তোমাদের ব্যাপারে আমি অন্য কিছুর আশংকা করি না। এক ব্যক্তি তাহাঁকে জিজ্ঞেস করিল, হে আল্লাহর রাসূল! সম্পদের প্রাচূর্য কি বিপর্যয় ডেকে আনবে? রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ক্ষণিক নীরব খাকলেন, অতঃপর বলেনঃ তুমি কী বলেছিলে? সে বলল, আমি বলেছিলাম যে, সম্পদের প্রাচূর্য কি বিপর্যয় ডেকে আনবে? রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ কল্যাণ তো কল্যাণই বয়ে আনে। কল্যাণ [মাল] কি সম্পূর্ণই কল্যাণকর? নিশ্চয় বসন্ত ঋতু যা কিছু [ঘাসপাতা] উৎপন্ন করে তা [অপরিমিত ভোজে] মৃত্যু ঘটায় বা মৃতপ্রায় করে দেয়। কিন্তু যে তৃণভোজী পশু তা ভক্ষণ করে এবং উদর পূর্ণ হলে সূর্যের দিকে মুখ করে [জাবর কাটে], মলমূত্র তাগ করে এবং পুনরায় চরতে শুরু করে [তাহার ক্ষতি করে না]। যে ব্যক্তি সঙ্গত পন্থায় সম্পদ অর্জন করে তাহাকে বরকত দান করা হয়। আর যে ব্যক্তি অসঙ্গত পন্থায় সম্পদ অর্জন করে সে এমন ব্যক্তির ন্যয় যে আহার করে কিন্তু তৃপ্ত হয় না। {৩৩২৭}
{৩৩২৭} সহীহুল বূখারী ৬৪২৭, মুসলিম ১০৫২, নাসাঈ ২৫৮১। কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩৯৯৬ আবদুল্লাহ বিন আমর ইবনিল আস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ যখন পারস্য ও রোমের ধনভাণ্ডার তোমাদের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হইবে, তখন তোমাদের কী অবস্থা হইবে! আবদুর রহমান বিন আওফ [রাদি.] বলেন, আল্লাহ আমাদের যেরূপ নির্দেশ দিবেন আমরা তদ্রুপ বলবো। রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ অন্য কিছু বলবে না? তখন তোমরা পরস্পরকে ঈর্ষা করিবে, তাহারপর হিংসা করিবে, তাহারপর সম্পর্ক ছিন্ন করিবে, তাহারপর শত্রুতা পোষণ করিবে অথবা অনুরূপ কিছু করিবে। অতঃপর তোমরা দরিদ্র মুহাজিরদের নিকট যাবে, তাহারপর তাহাদের কতককে কতকের উপর শাসক নিয়োগ করিবে। {৩৩২৮}
{৩৩২৮} মুসলিম ২৯৬২। সহীহাহ ২৬৬৫। কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩৯৯৭ আমর বিন আওফ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি আমির বিন লুয়াই-এর মিত্র ছিলেন এবং রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সাথে বদর যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আবু উবায়দা ইবনিল জাররাহ [রাদি.] কে বাহরাইনে জিয্য়া আদায় করার জন্য পাঠান। তিনি বাহরাইনবাসীদের সাথে সন্ধিচুক্তি করেছিলেন এবং আলা ইবনিল হাদরামী [রাদি.] কে তাহাদের শাসক নিযুক্ত করেছিলেন। আবু উবায়দা [রাদি.] বাহরাইন থেকে ধন-সম্পদ নিয়ে [মদীনায়] ফিরে আসেন। আনসারগণ তাহার আগমনের কথা শুনতে পেলেন। রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] নামাযান্তে ঘুরে বসলে তাহারা তাহাঁর সামনে হাযির হন। রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাদেরকে দেখে মুচকি হাসি দিয়ে বলেনঃ আমার মনে হয় তোমরা শুনতে পেয়েছো যে, আবু উবায়দা বাহরাইন থেকে কিছু নিয়ে ফিরে এসেছে। তাহারা বলেন, হাঁ, ইয়া রাসূলাল্লাহ! তিনি বলেনঃ তোমরা সুসংবাদ গ্রহণ করো এবং তা তোমাদেরকে আনন্দিত করিবে এই আশা রাখো। আল্লাহর শপথ! আমি তোমাদের ব্যাপারে দারিদ্র্যের ভয় করি না। আমি তোমাদের ব্যাপারে আশংকা করি যে, তোমাদের পূর্বকালের লোকেদের জন্য পৃথিবী যেমনিভাবে প্রশস্ত হয়ে গিয়েছিলো, তদ্রূপ তা তোমাদের জন্যও প্রশস্ত হইবে। অতঃপর তোমরাও তাহাদের মত [সম্পদের] প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়ে পড়বে। অবশেষে এই প্রতিযোগিতা তাহাদের মত তোমাদেরও ধ্বংস ডেকে আনবে। {৩৩২৯}
{৩৩২৯} সহীহুল বূখারী ৩১৫৮, মুসলিম ২৯৬১, তিরমিজি ২৪৬২, আহমাদ ১৬৭৮৩। ইরওয়া ৫/৮৯,৯০। কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৯. অধ্যায়ঃ নারীদের সৃষ্ট বিপর্যয়
৩৯৯৮ উসামাহ বিন যায়দ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আমি আমার পরে পুরুষদের জন্য নারীদের চেয়ে অধিক বিপর্যয়কর আর কিছু রেখে যাবো না। {৩৩৩০}
{৩৩৩০} সহীহুল বূখারী ৫০৯৬, মুসলিম ২৮৪০, ২৮৪১, তিরমিজি ২৮৮০, আহমাদ ২১২৩৯, ২১৩২২। সহীহাহ ২৭০১। কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩৯৯৯ আবু সাঈদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যখন ভোর হয় তখন দুজন ফেরেশতা ঘোষণা দেন যে, নারীদের কারণে পুরুষদের ধ্বংস অনিবার্য এবং পুরুষদের কারণে নারীদের ধ্বংস অনিবার্য। {৩৩৩১}
{৩৩৩১} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। দঈফাহ ২০১৮, দঈফ আল-জামি ৫১৮৬।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ খুবই দুর্বল
৪০০০ আবু সাঈদ আল-খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ভাষণ দিতে দাঁড়ালেন। তিনি তাহাঁর ভাষণে বলেনঃ নিশ্চয় দুনিয়া সবুজ-শ্যামল ও লোভনীয়। আল্লাহ তাআলা দুনিয়াতে তোমাদেরকে খলীফা [শাসক] বানিয়েছেন। তিনি দেখবেন যে, তোমরা কেমন কাজ করো। সাবধান! দুনিয়া সম্পর্কে সতর্ক হও এবং নারীদের সম্পর্কেও সতর্ক হও। {৩৩৩২}
{৩৩৩২} মুসলিম ২৭৪২, তিরমিজি ২১৯১, আহমাদ ১০৬৫১, ১০৭৫৯, ১০৭৮৫, ১১০৩৬, ১১১৯৩, ১১৩৮৪। আর রাদ্দু আলাল বালীক ৮৬।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৪০০১ আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, একদা নবী [সাঃআঃ] মসজিদে বসা ছিলেন। ইতোমধ্যে মুযায়না গোত্রের এক নারী মোহনীয় সাজে সজ্জিত অবস্থায় মসজিদে প্রবেশ করিল। নবী [সাঃআঃ] বলেনঃ হে লোকসকল! তোমরা তোমাদের স্ত্রীদের জৌলুসপূর্ণ ও চোখ ধাঁধানো পোশাক পরিহিত অবস্থায় মাসজিদে আসতে নিষেধ করো। কেননা বনী ইসরাঈলের নারীরা জৌলুসপূর্ণ সাজে সজ্জিত হয়ে মসজিদে না আসা পর্যন্ত তাহাদের উপর অভিশাপ বর্ষিত হয়নি। {৩৩৩৩}
{৩৩৩৩} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। দঈফাহ ৪৮২১, দঈফ আল-জামি ৬৩৮৫।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৪০০২ আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
এক নারীকে সুগন্ধি মেখে মসজিদে যেতে দেখলেন। তিনি বলিলেন, হে মহাপরাক্রমশালীর বান্দী! কোথায় যাচ্ছো? সে বলল, মসজিদে। তিনি বলিলেন, সেজন্য সুগন্ধি মেখেছ? সে বলল, হাঁ। তিনি বলিলেন, আমি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে বলিতে শুনেছিঃ যে নারী সুগন্ধি মেখে মসজিদে যায় তাহার নামায কবুল হয় না, যাবত না সে [তা] ধুয়ে ফেলে। {৩৩৩৪}
{৩৩৩৪} আবু দাঊদ ৪১৭৪, আত তালীকু আলা ইবনি খুযায়মাহ ১৬৮২, আত তালীকুর রাগীব ৩/৯৪, সহীহাহ ১০৩১।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহীহ
৪০০৩ আবদুল্লাহ বিন উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ হে নারী সমাজ! তোমরা অধিক পরিমাণে দান-খয়রাত করো এবং অধিক সংখ্যায় ক্ষমা প্রার্থনা করো। কেননা আমি তোমাদের বহু নারীকে জাহান্নামবাসী দেখেছি। তাহাদের মধ্যকার এক বুদ্ধিমতী নারী বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমাদের কী কসুর যে, আমাদের অধিক সংখ্যক দোযখবাসী হইবে? তিনি বলেনঃ তোমরা বেশী বেশী অভিশাপ দাও এবং স্বামীর প্রতি অকৃতজ্ঞ হয়ে থাকো। আমি তোমাদের স্বল্পবুদ্ধ ও দ্বীনের ব্যাপারে সংকীর্ণ হওয়া সত্ত্বেও বুদ্ধিমান বিচক্ষণ পুরুষদের উপর বিজয়ী হইতে পারঙ্গম আর কাউকে দেখিনি। মহিলা বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! বিবেক-বুদ্ধি ও দ্বীনের ব্যাপারে কমতি কী? তিনি বলেনঃ বুদ্ধির স্বল্পতা এই যে, তোমাদের দুজন নারীর সাক্ষ্য একজন পুরুষের সাক্ষ্যের সমান। আর তোমাদের দ্বীনের স্বল্পতা এই যে, তোমরা কয়েক দিন নামায থেকে বিরত থাকো এবং রমাদান মাসের কায়েক দিন রোযা থেকে বিরত থাকো। {৩৩৩৫}
{৩৩৩৫} মুসলিম ৮০, আবু দাঊদ ৪৬৭৯, আহমাদ ৫৩২১। ইরওয়া ১৯০, আয যিলাল ৯৫৫, ৯৫৬।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২০. অধ্যায়ঃ সৎকাজের নির্দেশদান এবং অসৎকাজে বাধাদান করা
৪০০৪ আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে বলিতে শুনেছিঃ তোমরা সৎকাজের আদেশ দিবে এবং মন্দ কাজে বাধা দিবে এমন সময় আসার পূর্বে যখন তোমরা দুআ করিবে কিন্তু তা কবূল হইবে না। {৩৩৩৬}
{৩৩৩৬} আহমাদ ২৪৭২৭। আত তালীকুর রাগীব ৩/১৭২, আর রাদ্দু আলাল বালীক ৩২১। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
৪০০৫ কায়স বিন আবু হাযিম হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আবু বকর [রাদি.] দাঁড়ালেন, আল্লাহর প্রশংসা ও গুণগান করিলেন, অতপর বলেন, হে লোকসকল! তোমরা তো এই আয়াত তিলাওয়াত করো [অনুবাদ]ঃ “হে ঈমানদারগণ! আত্মসংশোধন করাই তোমাদের কর্তব্য, তোমরা যদি সৎপথে পরিচালিত হও, তবে যে পথভ্রষ্ট হইয়াছে সে তোমাদের কোন ক্ষতি করিতে পারবে না” [সূরা মাইদাঃ ১০৫]। আমরা রাসূলূল্লাহ [সাঃআঃ] কে বলিতে শুনেছিঃ লোকেরা মন্দ কাজ করিতে দেখে তা পরিবর্তনের চেষ্ট না করিলে অচিরেই আল্লাহ তাহাদের উপর ব্যাপকভাবে শাস্তি পাঠান। আবু উসামা [রাদি.]-এর অপর সনদে এভাবে উক্ত হয়েছেঃ আমি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনিয়াছি। {৩৩৩৭}
{৩৩৩৭} তিরমিজি ২১৬৮। মিশকাত ৫১৪২, তাখরীজুল মুখতাহার ৫৪-৫৮। সহীহাহ ১৫৬৪।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪০০৬ আবু উবায়দাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ বনী ইসরাঈলের মধ্যে এভাবে পাপাচারের সূচনা হয় যে, কোন ব্যক্তি তাহার [মুসলিম] ভাইকে পাপাচারে লিপ্ত দেখলে সে তাহাকে তা থেকে বারন করতো। কিন্ত পরদিন সে তাহাকে পাপাচারে লিপ্ত দেখে নিষেধ করতো না, বরং তাহার সাথে মেলামেশা ও উঠাবসা করতো এবং তাহার সাথে পানাহারে অংশগ্রহণ করতো। ফলে আল্লাহ তাআলা তাহাদের পরস্পরের অন্তরকে মৃত্যুদান করেন। তাহাদের সম্পর্কে তিনি কুরআন মাজীদে আয়াত নাযিল করেন। তিনি বলেনঃ “বনী ইসররাঈলের মধ্যে যারা কুফরী করেছিল তাহারা দাউদ ও মরিয়ম-তনয় ঈসা কর্তৃক অভিশপ্ত হয়েছিল। তা এজন্য যে, তাহারা ছিল অবাধ্য ও সীমালংঘনকারী। তাহারা যেসব গর্হিত কাজ করতো তা থেকে তাহারা একে অপরকে বারণ করতো না। তাহারা যা করতো তা কতই না নিকৃষ্ট। তাহাদের অনেককে তুমি কাফেরদের সাথে বন্ধুত্ব করিতে দেখবে। কত নিকৃষ্ট তাহাদের কৃতকর্ম যে কারণে আল্লাহ তাহাদের প্রতি ক্রোধান্বিত হইয়াছেন। তাহাদের শাস্তি ভোগ স্থায়ী হইবে। তাহারা আল্লাহর প্রতি, নবীর প্রতি এবং যা তাহার প্রতি নাযিল হইয়াছে তাতে বিশ্বাসী হলে তাহাদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করতো না। কিন্তু তাহাদের অনেকেই সত্যত্যাগী” [সূরা মাইদাঃ ৭৮-৮১]। রাবী বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] হেলান দিয়ে বসা ছিলেন। তিনি সোজা হয়ে বসে বলেনঃ না! তোমরা জালেমের হাত ধরে তাহাকে জোরপূর্বক সত্যের উপর দাঁড় করিয়ে দিবে।
{উপরোক্ত হাদীসে মোট ২টি সনদের ১টি বর্ণত হইয়াছে, অপর সনদটি হলোঃ}৪/৪০০৬[১]. আবদুল্লাহ বিন মাসঊদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ নবী রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] সূত্রে উপরোক্ত হাদিসের অনুরূপ বর্ণিত আছে। {৩৩৩৮}{৩৩৩৮} তিরমিজি ৩০৪৭, আবু দাঊদ ৪৩৩৬। মিশকাত ৫১৪৮।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৪০০৭ আবু সাঈদ আল-খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] ভাষণ দিতে দাঁড়ালেন এবং তাহাঁর ভাষণে বলেনঃ সাবধান! মানুষের ভয় যেন কোন ব্যক্তিকে সজ্ঞানে সত্য কথা বলিতে বিরত না রাখে। রাবী বলেন [এ হাদিস বর্ণনাকালে] আবু সাঈদ [রাদি.] কেঁদে দিলেন এবং বলিলেন, আল্লাহর শপথ! আমরা বহু কিছু লক্ষ্য করেছি কিন্তু বলিতে ভয় পাচ্ছি। {৩৩৩৯}
{৩৩৩৯} তিরমিজি ২১৯১। রাওদুন নাদীর ১০০১, সহীহাহ ১৬৮।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪০০৮ আবু সাঈদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যেন নিজেকে অপমানিত না করে। সাহাবীগণ বলেন, হে আল্লাহর রাসুল! আমাদের কেউ নিজেকে কিভাবে অপমানিত করিতে পারে? তিনি বলেনঃ সে কোন বিষয়ে আল্লাহর বিধান অবহিত থাকা সত্ত্বেও তাহার পরিপন্থী কিছু হইতে দেখেও সে সম্পর্কে কিছুই বলল না। কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলা তাহাকে বলবেনঃ অমুক অমুক ব্যাপারে কথা বলিতে তোমাকে কিসে বাধা দিয়াছিলো? সে বলবে, মানুষের ভয়। তখন আল্লাহ বলবেনঃ আমাকেও তো তোমার ভয় করা উচিত ছিলো। {৩৩৪০}
{৩৩৪০} [আহমাদ ১১০৪৮,১১৩০২,১১৪৫৫। আত তালীকুর রাগীব ৩/১৬৯, দঈফ আল-জামি ৬৩৩২।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৪০০৯ জারীর বিন আব্দুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কোন জাতির মধ্যে প্রকাশ্যে পাপাচার হইতে থাকে এবং তাহাদের প্রভাবশালী ব্যাক্তিরা ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও তাহাদের পাপাচারীদের বাধা দেয় না, তখন আল্লাহ তাআলা তাহাদের উপর ব্যাপকভাবে শাস্তি পাঠান। {৩৩৪১}
{৩৩৪১} আবু দাউদ ৪৩৩৯, আহমাদ ১৮৭৩১,১৮৭৬৮। আত তালীকুর রাগীব ৩/১৭০। কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
৪০১০ জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, সমুদ্রের মুহাজিরগণ [হাবশায় হিজরতকারী প্রথম দল] রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর নিকট প্রত্যাবর্তন করিলে, তিনি বলেনঃ তোমার হাবশায় যেসব অনিষ্ঠজনক বিষয় প্রত্যক্ষ করেছো তা কি আমার নিকট ব্যক্ত করিবে না? তাহাদের মধ্য থেকে এক যুবক বলিলেন, হ্যাঁ, হে আল্লাহর রাসুল! একদা আমরা বসা ছিলাম, আমাদের সামনে দিয়ে সেখানকার এক বৃদ্ধা রমণী মাথায় পানি ভর্তি কলসসহ যাচ্ছিল। সে তাহাদের এক যুবককে অতিক্রমকালে সে তাহার কাঁধে তাহার এক হাত রেখে তাহাকে ধাক্কা দিলে সে উপুড় হয়ে মাটিতে পড়ে যায় এবং এর ফলে তাহার কলসটি ভেঙ্গে যায়। সে উঠে দাঁড়িয়ে যুবকের দিকে তাকিলে বলল, “হে দাগাবাজ! তুমি অচিরেই জানতে পারবে যখন আল্লাহ তাআলা ইনসাফের আসনে উপবিষ্ট হয়ে পূর্বাপর সকল মানুষকে সমবেত করবেন এবং হাত-পাগুলো তাহাদের কৃতকর্মের বিবরন দিবে তখন তুমিও জানতে পারবে সেদিন তোমার ও আমার অবস্থা কি হইবে। জাবির[রাদি.] বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, এই বৃদ্ধা সত্য কথাই বলেছে, সত্য কথাই বলেছে। আল্লাহ তাআলা সেই উম্মাতকে কিভাবে গুনাহ থেকে পবিত্র করবেন, যাদের সবলদের থেকে দুর্বলদের প্রাপ্য আদায় করে দেয়া হয় না।” {৩৩৪২}
{৩৩৪২} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। মুখতাসারুল উলু ৫৯/৪৬। কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
৪০১১ আবু সাঈদ আল-খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যালেম শাসকের সামনে সত্য কথা বলা অধিক উত্তম জিহাদ। {৩৩৪৩}
{৩৩৪৩} তিরমিজি ২১৭৪। মিশকাত ৩৭০৫-৩৭০৬, রাওদুন নাদীর ৯০৯, সহীহাহ ৪৯১।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪০১২ আবু উমামাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, জামরাতুল উলাতে এক ব্যাক্তি রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর নিকট জিজ্ঞাসা করিল, হে আল্লাহর রাসুল! কোন জিহাদ অধিক উত্তম? তিনি তাহাকে কিছু না বলে নীরব থাকলেন। অতঃপর তিনি দ্বিতীয় জামরায় কঙ্কর নিক্ষেপকালে সে পুনরায় একই প্রশ্ন করিল। তিনি এবারও নিশ্চুপ থাকলেন। তিনি জামরাতুল আকাবাতে কঙ্কর নিক্ষেপ করার পর বাহনে আরোহণের জন্য পাদানিতে পা রেখে জিজ্ঞাসা করিলেনঃ প্রশ্নকারী কোথায়? সে বলল, হে আল্লাহর রাসুল! এই যে আমি। তিনি বলেনঃ যালেম শাসকের সামনে সত্য কথা বলা[উত্তম জিহাদ]। {৩৩৪৪}
{৩৩৪৪} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। রাওদুন নাদীর ৯০৯, সহীহাহ ৪৯১।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহীহ
৪০১৩ আবু সাঈদ আল-খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, মারওয়ান ঈদের দিন ঈদের মাঠে মিম্বার বের [স্থাপন] করিল এবং ঈদের সালাতের পূর্বে খুতবা দিলো। এক ব্যাক্তি বলিল, হে মারওয়ান! তুমি সুন্নাতের বিপরীত করেছো, তুমি আজকের এই দিনে মিম্বার বের [স্থাপন] করছো, অথচ এই দিন তা বের করা [ঈদের মাঠে মিম্বার নেয়া] হতো না। উপরন্তু তুমি সালাতের আগে খুতবা শুরু করছো, অথচ সালাতের পূর্বে খুতবা দেয়া হতো না। আবু সাঈদ [রাদি.] বলেন, এই ব্যাক্তি তাহার দায়িত্ব পালন করেছে। আমি রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে বলিতে শুনেছিঃ তোমাদের মধ্যে কেউ অন্যায় কাজ হইতে দেখলে এবং তাহার দৈহিক শক্তি দিয়ে প্রতিহত করার সামর্থ্য থাকলে সে যেন তা সেভাবেই প্রতিহত করে। তাহার সেই সামর্থ্য না থাকলে সে যেন মুখের কথা দ্বারা তা প্রতিহত করে। তাহার সেই সামর্থ্য না থাকলে সে যেন মনে মনে ঘৃণা করে। তা হলো সবচেয়ে দুর্বল ঈমান। {৩৩৪৫}
{৩৩৪৫} সহীহুল বূখারী ৯৫৬, মুসলিম ৪৯, তিরমিজি ২১৭২, নাসাঈ ৫০০৮, ৫০০৯, আবু দাঊদ ১১৪০, ৪৩৪০, আহমাদ ১০৬৮৯, ১০৭৬৬, ১১০৬৮, ১১১০০, ১১১২২, ১১৪৬৬।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২১. অধ্যায়ঃ আল্লাহর বানীঃ “আত্মসংশোধনই তোমাদের কর্তব্য”
৪০১৪ আবু উমায়্যাহ আশ-শাবানী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি আবু সালাবাহ আল-খুশানী [রাদি.] এর নিকট এসে তাহাকে জিজ্ঞাসা করলাম, এই আয়াত সম্পর্কে আপনার অভিমত কী? তিনি বলেন, কোন আয়াত? আমি বললাম, এই আয়াত
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا عَلَيْكُمْ أَنْفُسَكُمْ لاَ يَضُرُّكُمْ مَنْ ضَلَّ إِذَا اهْتَدَيْتُمْ
[আনুবা-দ.]ঃ “হে মুমিনগণ! আত্মসংশোধন করাই তোমাদের কর্তব্য। তোমরা যদি সৎপথে পরিচালিত হও তবে যে পথভ্রষ্ট হইয়াছে সে তোমাদের কোন ক্ষতি করিতে পারবে না”[সুরা মাইদাঃ ১০৫]। তিনি বলেন, আমি এ আয়াত সম্পর্কে অধিক অবহিত ব্যক্তিকে জিজ্ঞেস করেছি। আমি এ সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে জিজ্ঞেস করেছি। তিনি বলেনঃ বরং তোমরা সৎ কাজের আদেশ ও অন্যায় কাজে নিষেধ করিতে থাকো। শেষে এমন এক যুগ আসবে যখন তুমি লোকদেরকে কৃপণতাহার আনুগত্য করিতে, প্রবৃত্তির অনুসরণ করিতে, পার্থিব স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিতে এবং প্রত্যেক বুদ্ধিমান ব্যক্তিকে নিজের বুদ্ধিমত্তা নিয়ে অহংকার করিতে দেখবে। আর তুমি এমন সব গর্হিত কাজ হইতে দেখবে যা প্রতিহত করার সামর্থ্য তোমার থাকিবে না। এরূপ পরিস্থিতিতে তুমি নিজের হেফাজত করো এবং সর্বসাধারণের চিন্তা ছেড়ে দাও। তোমাদের পরে আসবে কঠিন ধৈর্যের পরীক্ষার যুগ। তখন ধৈর্যধারণ করাটা জ্বলন্ত অঙ্গার হাতের মুঠোয় রাখার মত কঠিন হইবে। সে যুগে কেউ নেক আমল করিলে তাহার সমকক্ষ পঞ্ছাশ ব্যক্তির সওয়াব তাহাকে দান করা হইবে। {৩৩৪৬}
{৩৩৪৬} তিরমিজি ৩০৫৮, আবু দাউদ ৪৩৪১। মিশকাত ৫১৪৪, সহীহাহ ৪৯৪।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৪০১৫ আনাস বিন মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, জিজ্ঞাসা করা হলো, হে আল্লাহর রাসুল! আমরা সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজে নিষেধ করা কখন ত্যাগ করিব? তিনি বলেনঃ যখন তোমাদের মাঝে সেই সব বিষয় প্রকাশ পাবে, যা তোমাদের পূর্ববর্তী উম্মাতদের মাঝে প্রকাশ পেয়েছিলো। আমরা বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! আমাদের পূর্বেকার উম্মাতগনের যুগে কী কী বিষয় প্রকাশ পেয়েছিলো? তিনি বলেনঃ তোমাদের মধ্যকার নিকৃষ্ট তরুণদের হাতে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা চলে যাবে। বয়স্ক লোক অশ্লীল কার্যকলাপে লিপ্ত হইবে এবং নিকৃষ্ট লোক জ্ঞানের অধিকারী হইবে। রাবী যায়েদ [রাদি.] বলেন, নবী [সাঃআঃ] এর বাণীঃ “নিকৃষ্ট ও নীচ ব্যক্তিরা জ্ঞানের অধিকারী হইবে”, এর তাৎপর্য হলোঃ পাপাচারীরা জ্ঞানের বাহক হইবে।{৩৩৪৭}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ মাখহুলের আন আন সুত্রে বর্ণনার কারণে সানাদটি দুর্বল।{৩৩৪৭} আহমাদ ১২৫৩১।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৪০১৬ হুযায়ফাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ মুমিন ব্যাক্তির নিজেকে অপমান করা সমীচীন নয়। লোকেরা বলল, কিভাবে সে নিজেকে অপমানিত করিতে পারে? তিনি বলেনঃ যে বিপদ সহ্য করিতে সে সক্ষম নয় তাতে তাহার লিপ্ত হওয়া। {৩৩৪৮}
{৩৩৪৮} তিরমিজি ২২৫৪। সহীহাহ ৬১৩।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
৪০১৭ আবু সাঈদ আল-খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে বলিতে শুনেছিঃ আল্লাহ তাআলা কিয়ামতের দিন অবশ্যই বান্দাকে জিজ্ঞাসাবাদ করবেন, শেষে বলবেনঃ তুমি অন্যায় কাজ হইতে দেখে তা প্রতিহত করোনি কেন? [সে জবাব দানে অসমর্থ হলে] আল্লাহ তাহাকে তাহার যথাযথ উত্তর শিখিয়ে দিবেন। তখন বান্দা বলবে, হে প্রভু! আমি তোমার রহমাতের প্রত্যাশী হয়ে লোকেদেরকে তাহাদের অবস্থার উপর ছেড়ে দিয়াছি। {৩৩৪৯}
{৩৩৪৯} আহমাদ ১১৩২৬। সহীহাহ ৯২৯।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২২. অধ্যায়ঃ অপরাধের শাস্তি
৪০১৮ আবু মুসা আল-আশআরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আল্লাহ তাআলা যালেমকে অবকাশ দেন। কিন্তু যখন তিনি তাহাকে পাকড়াও করেন, তখন তাহাকে আর ছাড়েন না। অতঃপর তিনি এ আয়াত তিলাওয়াত করিলেন
وَكَذَلِكَ أَخْذُ رَبِّكَ إِذَا أَخَذَ الْقُرَى وَهِيَ ظَالِمَةٌ
[অনুবাদ]ঃ “এরূপই তোমার রবের পাকড়াও, তিনি যখন কোন অত্যাচারী জনবসতিকে পাকড়াও করেন” [১১ঃ১০২]{৩৩৫০}
{৩৩৫০} সহীহুল বূখারী ৪৬৮৬, মুসলিম ২৫৮৩, তিরমিজি ৩১১০।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪০১৯ আবদুল্লাহ বিন উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদের দিকে এগিয়ে এসে বলেনঃ হে মুহাজিরগণ! তোমরা পাঁচটি বিষয়ে পরীক্ষার সম্মুখীন হইবে। তবে আমি আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি যেন তোমরা তাহার সম্মুখীন না হও। যখন কোন জাতির মধ্যে প্রকাশ্যে অশ্লীলতা ছড়িয়ে পড়ে তখন সেখানে মহামারী আকারে প্লেগরোগের প্রাদুর্ভাব হয়। তাছাড়া এমন সব ব্যাধির উদ্ভব হয়, যা পূর্বেকার লোকদের মধ্যে কখনো দেখা যায়নি। যখন কোন জাতি ওজন ও পরিমাপে কারচুপি করে তখন তাহাদের উপর নেমে আসে দুর্ভিক্ষ, কঠিন বিপদ-মুসীবত এবং যাকাত আদায় করে না তখন আসমান থেকে বৃষ্টি বর্ষণ বন্ধ করে দেয়া হয়। যদি ভু-পৃষ্ঠে চতুষ্পদ জন্তু ও নির্বাক প্রাণী না থাকতো তাহলে আর কখনো বৃষ্টিপাত হতো না। যখন কোন জাতি আল্লাহ ও তাহাঁর রাসুলের অঙ্গীকার ভঙ্গ করে, তখন আল্লাহ তাহাদের উপর তাহাদের বিজাতীয় দুশমনকে ক্ষমতাসীন করেন এবং সে তাহাদের সহায়-সম্পদ সবকিছু কেড়ে নেয়। যখন তোমাদের শাসকবর্গ আল্লাহর কিতাব মোতাবেক মীমাংসা করে না এবং আল্লাহর নাযীলকৃত বিধানকে গ্রহণ করে না, তখন আল্লাহ তাহাদের পরস্পরের মধ্যে যুদ্ধ বাধিয়ে দেন। {৩৩৫১}
{৩৩৫১} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। সহীহাহ ১০৬।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
৪০২০ আবু মালিক আল-আশআরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আমার উম্মাতের কতক লোক মদের ভিন্নতর নামকরণ করে তা পান করিবে। [তাহাদের পাপাসক্ত অবস্থায়] তাহাদের সামনে বাদ্যবাজনা চলবে এবং গায়িকা নারীরা গীত পরিবেশন করিবে। আল্লাহ তাআলা এদেরকে মাটির নিচে ধ্বসিয়ে দিবেন এবং তাহাদের কতককে বানর ও শুকরে রুপান্তরিত করবেন। {৩৩৫২}
{৩৩৫২} আবু দাঊদ ৩৬৮৮, আহমাদ ২২৩৯৩। মিশকাত ৪২৯২, রাওদুন নাদীর ৪৫২, সহীহাহ ১/১৩৮-১৩৯।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪০২১ বারা বিন আযিব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ
يَلْعَنُهُمُ اللَّهُ وَيَلْعَنُهُمُ اللاَّعِنُونَ
“আল্লাহ তাহাদের অভিসম্পাত করেন এবং অভিশাপকারীরাও তাহাদের অভিসম্পাত করে”[সুরা বাকারাদি.১৫৯]।রাবী বলেন, জীব-জানোয়ারের অভিশাপের কথা বুঝানো হইয়াছে। {৩৩৫৩}
{৩৩৫৩} [হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৪০২২ সাওবান[রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ সৎকর্ম ব্যাতীত অন্য কিছু আয়ুস্কাল বাড়াতে পারে না এবং দুআ ব্যতীত অন্য কিছুতে তাকদীর রদ হয় না। মানুষ তাহার পাপকাজের দরুন তাহার প্রাপ্য রিযিক থেকে বঞ্চিত হয়। {৩৩৫৪}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ [আরবি] কথাটি ব্যতীত হাসান ।{৩৩৫৪} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য
২৩. অধ্যায়ঃ বিপদে ধৈর্যধারণ
৪০২৩ সাদ বিন আবু ওয়াককাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! কোন্ মানুষের সর্বাপেক্ষা কঠিন পরীক্ষা হয়? তিনি বলেনঃ নবীগণের। অতঃপর মর্যাদার দিক থেকে তাহাদের পরবর্তীদের, অতঃপর তাহাদের পরবর্তীগণের। বান্দাকে তাহার দীনদারির মাত্রা অনুসারে পরীক্ষা করা হয়। যদি সে তাহার দীনদারিতে অবিচল হয় তবে তাহার পরীক্ষাও হয় কঠিন। আর যদি সে তাহার দীনদারিতে নমনীয় হয় তবে তাহার পরীক্ষাও তদনুপাতে হয়। অতঃপর বান্দা অহরহ বিপদ-আপদ দ্বারা পরিবেষ্টিত থাকে। শেষে সে পৃথিবীর বুকে গুনাহমুক্ত হয়ে পাকসাফ অবস্থায় বিচরণ করে।{৩৩৫৫}
{৩৩৫৫} তিরমিজি ২৩৯৮, আহমাদ ১৪৮৪,১৪৯৭,১৫৫৮,১৬১০, দারেমী ২৭৮৩। মিশকাত ১৫৬২, সহীহাহ ১৪৩।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহীহ
৪০২৪ আবু সাঈদ আল-খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি নবী [সাঃআঃ] এর নিকট গেলাম, তখন তিনি ভীষণ জ্বরে আক্রান্ত ছিলেন। আমি তাহাঁর উপর আমার হাত রাখলে তাহাঁর গায়ের চাদরের উপর থেকেই তাহাঁর দেহের প্রচণ্ড তাপ অনুভব করলাম। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! কত তীব্র জ্বর আপনার। তিনি বলেনঃ আমাদের[নবী-রাসুলগণের] অবস্থা এমনই হয়ে থাকে। আমাদের উপর দ্বিগুণ বিপদ আসে এবং দ্বিগুণ পুরস্কারও দেয়া হয়। আমি বললাম হে আল্লাহর রাসুল! কার উপর সর্বাধিক কঠিন বিপদ আসে? তিনি বলেন, নবীগণের উপর। আমি বললাম, ইয়া রাসুলুল্লাহ! তাহারপর কার উপর? তিনি বলেন, তাহারপর নেককার বান্দাদের উপর। তাহাদের কেউ এতটা দারিদ্র পীড়িত হয় যে, শেষ পর্যন্ত তাহাঁর কাছে তাহাঁর পরিধানের কম্বলটি ছাড়া কিছুই থাকে না। তাহাদের কেউ বিপদে এত শান্ত ও উৎফুল্ল থাকে, যেমন তোমাদের কেউ ধন-সম্পদ প্রাপ্তিতে আনন্দিত হয়ে থাকে। {৩৩৫৬}
{৩৩৫৬} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন।সহীহাহ ১৪৪।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪০২৫ আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি যেন দেখিতে পাচ্ছি যে, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] কোন এক নবীর ঘটনা বর্ণনা করছেন। তাহাঁর জাতি তাহাঁকে বেদম প্রহার করছে এবং তিনি নিজের চেহারা থেকে রক্ত মুছছেন আর বলছেনঃ প্রভু! আমার জাতিকে ক্ষমা করুন। কেননা তাহারা জানে না। {৩৩৫৭}
{৩৩৫৭} সহীহুল বূখারী ৩৪৭৭, মুসলিম ১৭৯৬, আহমাদ ৩৬০০, ৪০৪৭, ৪০৯৬, ৪১৯১, ৪৩১৯, ৪৩৫৩।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪০২৬ আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ ইব্রাহীম [আঃ] এর তুলনায় আমি অধিক সংশয়ী হওয়ার যোগ্য। যখন তিনি বলেছিলেনঃ “প্রভু! আমাকে একটু দেখাও, তুমি কিভাবে মৃতকে জীবিত করো। তিনি বলেন, তবে কি তুমি বিশ্বাস করো না? তিনি বলেন, হাঁ, [নিশ্চয় আমি বিশ্বাস করি] তবে আমার হৃদয়ের প্রশান্তির জন্যে”[সুরা বাকারাদি.২৬০]। আল্লাহ লুত [আঃ] এর প্রতি অনুগ্রহ করুন। তিনি অত্যন্ত শক্তিশালী আশ্রয় কামনা করেছিলেন। ইউসুফ [আঃ] যত দীর্ঘকাল জেলখানায় অন্তরীণ ছিলেন, আমি তত কাল অন্তরীণ থাকলে অবশ্যই আহবানকারীর ডাকে সাড়া দিতাম। {৩৩৫৮}
{৩৩৫৮} সহীহুল বূখারী ৩৩৭২, মুসলিম ১৫১, আহমাদ ৮১২৯। সহীহাহ ১৮৬৭।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪০২৭ আনাস বিন মালিক[রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, উহুদ যুদ্ধের দিন রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর মুখের সামনের পাটির চারটি দাঁতের একটি ভেঙ্গে যাওয়ায় এবং তাহাঁর মাথায় আঘাত লাগায় তাহাঁর মুখমন্ডল বেয়ে রক্ত ঝরতে থাকে। তিনি তাহাঁর মুখমন্ডলের রক্ত মুছছিলেন আর বলছিলেনঃ যে জাতি তাহাদের নবীর মুখমন্ডল রক্তরঞ্জিত করে সেই জাতি কিভাবে মুক্তি পেতে পারে। অথচ তিনি তাহাদেরকে আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তনের আহবান জানাচ্ছেন। তখন মহান আল্লাহ এ আয়াত নাযিল করেন[অনুবাদ]ঃ “এই বিষয়ে তোমার কিছু করণীয় নাই” [সূরা আল ইমরানঃ১২৮]। {৩৩৫৯}
{৩৩৫৯} মুসলিম ১৭৯১, তিরমিজি ৩০০২, ৩০০৩, আহমাদ ১১৫৪৫, ১২৪২০, ১২৬৭০, ১২৭২৫, ১৩২৪৫, ১৩৬৫৮।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪০২৮ আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, একদিন জিবরাঈল আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর নিকট আসলেন। জনৈক মক্কাবাসী তাহাঁকে আঘাত করায় তিনি রক্তরঞ্জিত ছিলেন। জিবরাঈল [আঃ] বলিলেন, আপনার কী হইয়াছে? তিনি বলেন,এই দুর্বৃত্তরা আমার সাথে এই আচরন করেছে। জিবরাঈল [আঃ] বলিলেন ,আপনি চাইলে আমি আপনাকে একটি নিদর্শন দেখাতে পারি। তিনি বলেন, হাঁ দেখান। অতঃপর তিনি প্রান্তরের অপর পাশে একটি গাছের দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বলেন, আপনি গাছটিকে ডাকুন। তিনি গাছটিকে ডাক দিলেন। সেটি তাহাঁর সামনে এসে দাড়ালো। জিবরাঈল [আঃ] বলেন, একে স্বস্থানে ফিরে যেতে বলুন। তিনি গাছটিকে ফিরে যেতে বললে তা স্বস্থানে ফিরে গেলো। অতঃপর রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, এটাই আমার জন্য যথেষ্ট। {৩৩৬০}
{৩৩৬০} আহমাদ ১১৭০২।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪০২৯ হুযায়ফাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, তোমরা ইসলাম গ্রহনকারীদের আদমশুমারী করো। আমরা বললাম, ইয়া রাসূলুল্লাহ! আপনি কি আমাদের উপর কোন বিপদাশঙ্কা করছেন? অথচ [এখন] আমাদের সংখ্যা ছয় শত থেকে সাত শত। রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ তোমাদের জানা নেই যে, অচিরেই তোমরা বিপদে পতিত হইবে। রাবী বলেন, অতঃপর আমরা বিপদে পতিত হলাম, এমনকি আমাদের কেউ কেউ গোপনে নামায পড়তে বাধ্য হলো। {৩৩৬১}
{৩৩৬১} সহীহুল বূখারী ৩০৬০, মুসলিম ১৪৯, আহমাদ ২২৭৪৮। সহীহাহ ২৪৬।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪০৩০ উবাই বিন কাব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] মিরাজে গমনের রাতে পরিচ্ছন্ন সুবাস লাভ করেন। তিনি জিজ্ঞাসা করিলেনঃ হে জিবরাঈল! এই পরিচ্ছন্ন সুবাস কিসের? তিনি বলেন, এই সুগন্ধি এক কেশবিন্যাসকারিনী, তাহার পুত্রের ও তাহার স্বামীর কবর থেকে আসছে। রাবী বলেন, তিনি ঘটনার বর্ণনা এভাবে শুরু করেনঃ খিযির বনী ইসরাইলের অভিজাতবর্গের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। তিনি এক পাদ্রীর গীর্জার নিকট দিয়ে যাতায়াত করিতেন। পাদ্রী তাহার সম্পর্কে জানতে পেরে তাহাঁকে দ্বীন ইসলামের তালীম দিলেন। খিযির যৌবনে পদার্পন করিলে তাহার পিতা এক মহিলার সাথে তাহার বিবাহ দেন। খিযির এই মহিলাকে দ্বীন ইসলামের তালীম দিলেন। তিনি তাহার থেকে প্রতিশ্রুতি নেন যে, সে যেন কাউকে এই দ্বীনের শিক্ষা না দেয়। তিনি নারীসংগ পছন্দ করিতেন না। তাই তিনি তাহার স্ত্রীকে তালাক দেন। অতঃপর তাহার পিতা অপর এক নারীর সাথে তাহার বিবাহ দেন। তিনি তাহাকেও দ্বীন ইসলামের শিক্ষা দিলেন এবং তাহার থেকেও প্রতিশ্রুতি নিলেন যে, সে যেন কারো কাছে এ কথা প্রকাশ না করে। এক নারী বিষয়টি গোপন রাখলো এবং অপরজন তা প্রকাশ করে দিলে তিনি দেশ ত্যাগ করে সমুদ্রের এক দ্বীপে পালিয়ে গেলেন। সেখানে দুব্যাক্তি লাকড়ি সংগ্রহের জন্য এসে খিযিরকে দেখিতে পায়। তাহাদের একজন খিযিরের অবস্থানের বিষয় গোপন রাখলেন এবং অপরজন ফাঁস করে দিলো এবং বলিল, আমি খিযিরকে দেখেছি। তাহাঁকে জিজ্ঞেস করা হলো, তোমার সাথে তাহাঁকে আর কে দেখেছে? সে বলল, অমুক। তাহাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে সে বিষয়টি গোপন রাখলো। তাহাদের বিধানে মিথ্যাবাদীর শাস্তি ছিল মৃত্যুদন্ড। রাবী বলেন, অতঃপর সে দ্বীন গোপনকারিনী মহিলাকে বিবাহ করিল। সেই মহিলা ফিরআওন তনয়ার কেশ বিন্যাসকালে তাহার হাত থেকে চিরূনী পড়ে গেলো। আর তাহার মুখ থেকে বেরিয়ে আসে, ফিরআওন নিপাত যাক। ফিরআওন তনয়া এই কথা তাহার পিতাহাকে অবগিত করে। এই মহিলার ছিল দুপুত্র ও স্বামী। ফিরআওন তাহাদেরকে ডেকে এনে উক্ত মহিলা ও তাহার স্বামীকে তাহাদের দ্বীন প্রত্যাহারের জন্য চাপ দেয়। তাহারা উভয়ে প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করিলে ফিরআওন বলল, আমি তোমাদের দুজনকে হত্যা করিব। তাহারা বলল, আপনি আমাদেরকে হত্যা করিলে আমাদের উপর এতটুকু অনুগ্রহ করবেন যে, আমাদের দুজনকে একই কবরে দাফন করবেন। সে তাই করিল। অতঃপর যে রাতে নবী [সাঃআঃ]-এর মিরাজের ঘটনা সংঘটিত হয়, তখন তিনি পূত-পবিত্র সুঘ্রান পেয়ে জিবরাঈল [আঃ] কে জিজ্ঞাসা করিলেন। তিনি তাহাকে বিষয়টি অবহিত করেন। {৩৩৬২}
{৩৩৬২} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৪০৩১ আনাস বিন মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ বিপদ যত তীব্র হইবে, প্রতিদানও তদনুরূপ বিরাট হইবে। নিশ্চয় আল্লাহ কোন জাতিকে ভালোবাসলে তাহাদের পরীক্ষা করেন। যে কেউ তাতে সন্তুষ্ট থাকে তাহার জন্য রয়েছে আল্লাহর সন্তুষ্টি। আর যে কেউ তাতে অসন্তুষ্ট হয়, তাহার জন্য রয়েছে অসন্তুষ্টি। {৩৩৬৩}
{৩৩৬৩} তিরমিজি ২৩৯৬। মিশকাত ১৫৬৬, সহীহাহ ১৪৬।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
৪০৩২ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে মুমিন ব্যাক্তি মানুষের সাথে মেলামেশা করে এবং তাহাদের জ্বালাতনে ধৈর্যধারন করে সে এমন মুমিন ব্যাক্তির তুলনায় অধিক সওয়াবের অধিকারী হয়, যে জনগনের সাথে মেলামেশা করে না এবং তাহাদের জ্বালাতনে ধৈর্য ধারন করে না। {৩৩৬৪}
{৩৩৬৪} তিরমিজি ২৫০৭। মিশকাত ৫০৮৭, সহীহাহ ৯৩৯।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪০৩৩ আনাস বিন মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তিনটি জিনিস যাহার মধ্যে আছে সে-ই ঈমানের স্বাদ পেয়েছে। [এক] যে ব্যাক্তি শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় মানুষকে ভালোবাসে। [দুই] যে ব্যাক্তির নিকট অন্যসব কিছুর তুলনায় আল্লাহ ও তাহাঁর রাসূল [সাঃআঃ] অধিক প্রিয়। [তিন] কোন ব্যাক্তিকে আল্লাহ কুফুরী থেকে বের করে আনার পর পুনরায় তাতে ফিরে যাওয়ার তুলনায় সে আগুনে নিক্ষিপ্ত হওয়াকে অধিক পছন্দ করে। {৩৩৬৫}
{৩৩৬৫} সহীহুল বূখারী ১৬, মুসলিম ৪৩, তিরমিজি ২৬২৪, নাসাঈ ৪৯৮৭, ৪৯৮৮, ৪৯৮৯, আহমাদ ১১৫৯১, ১২৩৫৪, ১২৩৭২, ১২৯৯৪, ১৩১৮০, ১৩৬৫৬। ফিকহুস সায়রাহ ২১১, রাওদুন নাদীর ৫২।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪০৩৪ আবু দারদা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমার প্রিয় বন্ধু [রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাকে এই উপদেশ দিয়েছেনঃ তুমি আল্লাহর সাথে কোন কিছু শরীক করো না, যদি ও তোমাকে টুকরো টুকরো করে ছিন্নভিন্ন করা হয় অথবা আগুনে ভস্মীভূত করা হয়। তুমি স্বেচ্ছায় ফারদ নামাজ ত্যাগ করো না, যে ব্যাক্তি স্বেচ্ছায় তা ত্যাগ করে তাহাঁর থেকে [আল্লাহর] যিম্মাদারী উঠে যায়। তুমি মদ্যপান করো না। কেননা তা সর্বপ্রকার অনিষ্টের চাবিকাঠি। {৩৩৬৬}
{৩৩৬৬} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। মিশকাত ৫৪০, আত তালীকুর রাগীব ১/১৯৫, ইরওয়া২০৮৬।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
২৪. অধ্যায়ঃ যুগের কষ্টকাঠিন্য
৪০৩৫ মুআবিয়াহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি নবী [সাঃআঃ] কে বলিতে শুনেছিঃ দুনিয়াতে বালা-মুসীবত ও ফিতনা-ফাসাদ ছাড়া আর কিছুই অবশিষ্ট থাকিবে না। {৩৩৬৭}
{৩৩৬৭} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪০৩৬ আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ অচিরেই লোকেদের উপর প্রতাহারনা ও ধোঁকাবাজির যুগ আসবে। তখন মিথ্যাবাদীকে সত্যবাদী গন্য করা হইবে, আমানতের খিয়ানতকারীকে আমানতদার আমানতদারকে খিয়ানতকারী গন্য করা হইবে এবং রুওয়াইবিয়া হইবে বক্তা। জিজ্ঞাসা করা হলো, রুওয়াইবিয়া কী? তিনি বলেনঃ নীচ প্রকৃতির লোক সে জনগনের হর্তাকর্তা হইবে। {৩৩৬৮}
{৩৩৬৮} আহমাদ ৭৮৫২। সহীহাহ ১৮৮৭।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪০৩৭ আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ সেই মহান সত্তার শপথ, যাঁর হাতে আমার প্রাণ! দুনিয়া ধ্বংস হইবে না, যতক্ষন পর্যন্ত না এক ব্যাক্তি কবরের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় বলবে, হায়! আমি যদি এই কবরবাসীর পরিবর্তে এই স্থানে থাকতাম। তাহার ধর্মের কারনে এই কথা বলবে না, বরং বালা-মুসীবতের কারনে বলবে। {৩৩৬৯}
{৩৩৬৯} সহীহুল বূখারী ৭১১৫, ৭১২১, মুসলিম ১৫৭, আহমাদ ৭১৮৬, ১০৪৮৫, মুওয়াত্তা মালিক ৫৭০। সহীহাহ ৫৭৮।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪০৩৮ আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমাদের বাছাই করা হইবে, যেভাবে ভালো খেজুর মন্দ খেজুর থেকে আলাদা করা হয়। তোমাদের মধ্যকার নেককার লোকগুলো বিদায় নিবে এবং মন্দ লোকগুলো অবশিষ্ট থাকিবে। অতএব সম্ভব হলে তোমরাও মরে যাও। {৩৩৭০}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সমষ্টিগতভাবে হাদিসটি দুর্বল তবে “অতএব সম্ভব হলে তোমরাও মরে যাও” কথাটি সহীহ কারন এই কথাটি প্রমানিত। সহীহাহ ১৭৮১।{৩৩৭০} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য
৪০৩৯ আনাস বিন মালিক[রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ দিনে দিনে বিপদাপদ বৃদ্ধি পেতেই থাকিবে। দুনিয়াতে অভাবঅনটন ও দুর্ভিক্ষ বাড়তেই থাকিবে এবং কৃপণতা অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পাবে। নিকৃষ্ট লোকেদের উপরই কিয়ামত সংঘটিত হইবে। ঈসা বিন মারয়াম [আঃ]-ই মাহদী। {৩৩৭১}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ “…..আরবী ” বাক্যটি ব্যাতীত খুবই দুর্বল।{৩৩৭১} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। রাওদুন নাদীর ১৪৩,৬৪৭, দঈফাহ ৭৭।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য
২৫. অধ্যায়ঃ কিয়ামতের আলামত সমূহ
৪০৪০ আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আমি এবং কিয়ামত এমনভাবে প্রেরিত হয়েছি, এই বলে তিনি তাহাঁর দুটি আঙ্গুল একত্র করিলেন। {৩৩৭২}
{৩৩৭২} সহীহুল বূখারী ৬৫০৫।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪০৪১ হুযায়ফাহ বিন উসায়দ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নবী[সাঃআঃ] তাহাঁর হুজরা থেকে আমাদের পানে উকি দিয়ে তাকালেন। আমরা তখন কিয়ামত সম্পর্কে আলোচনা করছিলাম। তিনি বলেনঃ দশটি আলামত প্রকাশ না পাওয়া পর্যন্ত কিয়ামত হইবে না। তন্মধ্যে দাজ্জালের আবির্ভাব, ধোঁয়া নির্গত হওয়া এবং পশ্চিম দিক থেকে সূর্য উদিত হওয়া অন্তর্ভুক্ত। {৩৩৭৩}
{৩৩৭৩} মুসলিম ২৯০১, তিরমিজি ২১৮৩, আবু দাঊদ ৪৩১১, আহমাদ ১৫৭০৮, ১৫৭১০। কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪০৪২ আওফ বিন মালিক আল-আশজাঈ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, তাবূক যুদ্ধকালে আমি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর নিকট উপস্থিত ছিলাম। তিনি একটি চামড়ার তাঁবুর ভেতরে ছিলেন। আমি তাঁবুর আঙ্গিনায় বসে পড়লাম। রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ হে আওফ! ভেতরে এসো।আমি বললাম,হে আল্লাহর রাশুল! আমি কি সম্পুর্ন প্রবেশ করিব? তিনি বলেনঃ হাঁ, সম্পুর্নভাবে এসো। অতঃপর তিনি বললেনঃ হে আওফ! কিয়ামতের পূর্বকার ছয়টি আলামত স্বরন রাখবে। সেগুলোর একটি হচ্ছে আমার মৃত্যু। আওফ [রাদি.] বলেন, আমি একথায় অত্যন্ত মর্মাহত হলাম। তিনি বলেনঃ তুমি বলো, প্রথমটি। অতঃপর বাইতুল মুকাদ্দাস বিজয়। অতঃপর তোমাদের মধ্যে এক মহামারী ছড়িয়ে পড়বে, যাহার দ্বারা আল্লাহ তোমাদের বংশধরকে ও তোমাদেরকে শাহাদাত নসীব করবেন এবং তোমাদের আমলসমূহ পরিশুদ্ধ করবেন। এরপর তোমাদের সম্পদের প্রাচুর্য হইবে, এমনকি মাথাপিছু শত দীনার [স্বর্নমুদ্রা] পেয়েও মানুষ সন্তুষ্ট হইবে না। তোমাদের মধ্যে এমন বিপর্যয় সৃষ্টি হইবে, যা থেকে কোন মুসলমানের ঘরই রেহাই পাবেনা। এরপর বনু আসফার [রোমক খৃস্টান] এর সাথে তোমাদের সন্ধি হইবে। কিন্তু তাহারা তোমাদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করিবে এবং আশিটি পতাকাতলে সংঘবদ্ধ হয়ে তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করিবে। প্রতিটি পতাকার অধীনে থাকিবে বারো হাজার সৈন্য। {৩৩৭৪}
{৩৩৭৪} সহীহুল বূখারী ৩১৭৬, আবু দাঊদ ৫০০০, আহমাদ ২৩৪৫১, ২৩৪৫৯, ২৩৪৬৫, ২৩৪৭৬। ফাদাইলু আহলুশ শাম ৩০।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪০৪৩ হুযায়ফাহ ইবনিল ইয়ামান [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যতক্ষন না তোমরা তোমাদের ঈমামকে হত্যা করিবে, পরস্পর সশস্ত্র যুদ্ধে লিপ্ত হইবে এবং তোমাদের মধ্যকার সর্বাধিক দুষ্ট ব্যাক্তি তোমাদের পার্থিব বিষয়ের হর্তাকর্তা হইবে, ততক্ষন পর্যন্ত কিয়ামত সংঘটিত হইবে না। {৩৩৭৫}
{৩৩৭৫} আহমাদ ২২৭৯১। দঈফাহ ২০৪৬, দঈফ আল-জামী৬১১১।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৪০৪৪ আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, একদিন রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] লোকজনের সাথে বসা ছিলেন। তখন তাহাঁর নিকট এক ব্যাক্তি এসে বলল, ইয়া রাসূলুল্লাহ! কিয়ামত কখন সংঘটিত হইবে? তিনি বলেনঃ জিজ্ঞাসিত ব্যাক্তি এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাকারীর চেয়ে অধিক জ্ঞাত নয়। তবে আমি তোমাকে এর কতক আলামত সম্পর্কে অবহিত করিব। যখন দাসী তাহার মনিবকে প্রসব করিবে, এটি কিয়ামতের একটি আলামত। যখন নগ্নপদ ও নগ্ন দেহবিশিষ্ট লোকেরা জনগনের নেতা হইবে, এটি কিয়ামতের একটি আলামত। যখন মেষপালের রাখালেরা সুরম্য অট্টালিকায় বসবাস করিবে। এগুলো হলো কিয়ামতের আলামত। এমন পাঁচটি বিষয় আছে যে সম্পর্কে আল্লাহ ব্যাতীত আর কেউ জানে না। অতঃপর রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এই আয়াত তিলাওয়াত করেন
إِنَّ اللَّهَ عِنْدَهُ عِلْمُ السَّاعَةِ وَيُنَزِّلُ الْغَيْثَ وَيَعْلَمُ مَا فِي الأَرْحَامِ
[অনুবা-দ]ঃ “কিয়ামতের জ্ঞান কেবল আল্লাহর নিকট রয়েছে। তিনি বৃষ্টি বর্ষন করেন এবং তিনি জানেন যা জরায়ুতে রয়েছে। কেউ জানে না আগামীকাল সে কী উপার্জন করিবে এবং কেউ জানে না সে কোন স্থানে মারা যাবে। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সর্ববিষয়ে অবহিত”[সূরা লোকমানঃ৩৪]। {৩৩৭৬}
{৩৩৭৬} সহীহুল বূখারী ৫০, ৪৭৭৭, মুসলিম ৯, ১০, নাসাঈ ৪৯৯১, আহমাদ ৯২১৭।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪০৪৫ আনাস বিন মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি কি তোমাদের জন্য এমন একটি হাদিস বর্ণনা করিব না, যা আমি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর নিকট শুনিয়াছি? আমার পরে সেই হাদিস আর কেউ তোমাদের নিকট বর্ণনা করিবে না। আমি তাহাঁর কাছে শুনিয়াছি যে, কিয়ামতের কতক আলামত এই যে, এলেম উঠিয়ে নেয়া হইবে, অজ্ঞতাহার বিস্তার ঘটবে, যেনা-ব্যভিচার ছড়িয়ে পড়বে, মদ পান করা হইবে, পুরুষ লোকের অধিক হারে মৃত্যু হইবে, অধিক হারে নারীরা বেঁচে থাকিবে, এমনকি পঞ্চাশজন নারীর রক্ষণাবেক্ষণকারী হইবে একজনমাত্র পুরুষ। {৩৩৭৭}
{৩৩৭৭} সহীহুল বূখারী ৮০, ৬৮০৮, মুসলিম ২৬৭১, তিরমিজি ২২০৫, আহমাদ ১২১১৮, ১২৩৯৫, ১২৬৮২, ১২৮১৮, ১৩৪৭০, ১৩৬৬৪।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪০৪৬ আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ ফোরাত নদীতে সোনার পাহাড় জেগে না উঠা পর্যন্ত কিয়ামত সংঘটিত হইবে না এবং লোকজন সেখানে যুদ্ধ–সংঘাতে লিপ্ত হইবে। তাহাদের প্রতি দশ জনে নয় জন নিহত হইবে। {৩৩৭৮}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ [আরবী] কথাটি ব্যতীত হাসান সহীহ ; কারণ বাক্যটি শায। আর মাহফূয বাক্য হল [আরবী]।{৩৩৭৮} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ৭১১৯, মুসলিম ২৮৯৪, তিরমিজি ২৫৬৯, আবু দাউদ ৪৩১৩,আহমাদ ৭৫০১,৮০০১,৮১৮৮,৮৩৫৪,৯১০৩।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য
৪০৪৭ আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ ধন-সম্পদের প্রাচুর্য, কলহ-বিপর্যয়ের প্রকাশ ও হারাজ-এর আধিক্য না হওয়া পর্যন্ত কিয়ামত হইবে না। লোকজন বলিলেন, হে আল্লাহর রাসূল! হারাজ কী? তিঁনি বলেনঃ গণহত্যা, গণহত্যা, গণহত্যা [তিনবার একথা বলেন]। {৩৩৭৯}
{৩৩৭৯} মাজাহ ৪০৫২, সহীহুল বূখারী ৮৫, ১০৩৬, ১৪১২, ৭১২১, মুসলিম ১৫৭, আহমাদ ৭১৪৬, ৭৪৯৬, ৭৮১২, ৯১২৯, ৯৮১৭, ২৭৩৫১, ২৭৭৮৯, ১০৪৮১, ১০৪০৯।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২৬. অধ্যায়ঃ কুরআনসহ দ্বীনের জ্ঞান লোপ পাবে
৪০৪৮ যিয়াদ বিন লাবীদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] একটি বিষয় উল্লেখ করে বললেনঃ এটা এলেম বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ার সময়ের কথা। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! এলেম কিভাবে বিলুপ্ত হইবে? অথচ আমরা কুরআন পড়ি, আমাদের সন্তানদের তা পড়াই এবং আমাদের সন্তানরাও তাহাদের সন্তানদের কিয়ামত পর্যন্ত তা শিক্ষা দিবে। তিঁনি বললেনঃ হে যিয়াদ! তোমার মা তোমার জন্য বিলাপ করুক! আমি তোমাকে মদীনার শ্রেষ্ঠ বুদ্ধিমান ব্যক্তি মনে করতাম। এই যে ইহূদী ও খৃস্টানরা কি তাওরাত ইনজীল পড়ে না? কিন্তু তাহারা তো এই দুই কিতাবে যা আছে তদনুযায়ী কাজ করে না। {৩৩৮০}
{৩৩৮০} আহমাদ ১৭০১৯। মিশকাত ২৪৫, ২৭৭, তাখরীজুল ইলম লি আবু খায়সামাহ ৫২, তাখরজু ইকতিদা আল-ইলম ৮৯।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪০৪৯ হুযায়ফা ইবনিল ইয়ামান [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ ইসলাম পুরাতন হয়ে যাবে, যেমন কাপড়ের উপর কারুকার্য পুরাতন হয়ে যায়। শেষে এমন অবস্থা হইবে যে, কেউ জানবে না, রোজা কী, নামায কী, কোরবানী কী, যাকাত কী। এক রাতে পৃথিবী থেকে মহান আল্লাহর কিতাব বিলুপ্ত হয়ে যাবে এবং একটি আয়াতও অবশিষ্ট থাকিবে না। মানুষের [মুসলমানদের] কতক দল অবশিষ্ট থাকিবে তাহাদের বৃদ্ধ ও বৃদ্ধারা বলবে, আমরা আমাদের পূর্বপুরুষদেরকে “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু” [আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ নেই]- এর অনুসারী দেখিতে পেয়েছি। সুতরাং আমরাও সেই বাক্য বলিতে থাকবো। [তাবিঈ] সিলা [রাদি.] হুযায়ফা [রাদি.] কে বলিলেন, “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু” বলায় তাহাদের কি উপকার হইবে? অথচ তাহারা জানে না নামায কী, রোযা কী, হাজ্জ কী, কোরবানী কী এবং যাকাত কী। সিলা বিন যুফার [রাদি.] তিনবার কথাটির পুনরাবৃত্তি করিলে তিনি প্রতিবার তাহার দিক থেকে মুখ ঘুরিয়ে নেন। তৃতীয় বারের পর তিনি তাহার দিকে মুখ ফিরিয়ে বলিলেন, হে সিলা! এই কলেমা তাহাদেরকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিবে কথাটি তিনবার বলেন। {৩৩৮১}
{৩৩৮১} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। সহীহাহ ৮৭, তাখরীজু সিফাতিল ফাতওয়া ২৮।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪০৫০ আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কিয়ামতের কাছাকাছি সময়ে এলেম উঠিয়ে নেয়া হইবে, অজ্ঞতা ও মূর্খতাহার প্রসার ঘটবে এবং হারজ অর্থাৎ গণহত্যা ব্যাপক আকারে হইবে। {৩৩৮২}
{৩৩৮২} সহীহুল বূখারী ৭০৬৩, মুসলিম ২৬৭২, আহমাদ ৩৬৮৭, ৩৮০৭, ৩৮৩১, ৪২৯৪।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪০৫১ আবু মূসা আল-আশআরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, তোমাদের পরে এমন যুগ আসবে যখন অজ্ঞতা ও মূর্খতাহার বিস্তার ঘটবে, এলেম উঠিয়ে নেয়া হইবে এবং হারজ বৃদ্ধি পাবে। সাহাবীগণ বলিলেন, হে আল্লাহর রাসূল! হারজ কী? তিঁনি বললেনঃ গণহত্যা। {৩৩৮৩}
{৩৩৮৩} সহীহুল বূখারী ৭০৬৩, ৭০৬৫, মুসলিম ২৬৭২, তিরমিজি ২২০০, আহমাদ ৩৬৮৭, ৩৮০৭, ৩৮৩১, ৪২৯৪। সহীহ আল-জামি ২২৩৩।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪০৫২ আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যমানা সংক্ষিপ্ত হয়ে যাবে, এলেম হ্রাস পাবে এবং কৃপণতাহার বিস্তার ঘটবে, কলহ-বিপর্যয়ের বিস্তার ঘটবে এবং হারজ বৃদ্ধি পাবে। সাহাবীগণ বলিলেন, হে আল্লাহর রাসূল! হারজ কী? তিঁনি বলেনঃ গণহত্যা। {৩৩৮৪}
{৩৩৮৪} মাজাহ ৪০৪৭, সহীহুল বূখারী ৮৫, ১০৩৬, ১৪১২, ৭১২১, মুসলিম ১৫৭, আহমাদ ৭১৪৬, ৭৪৯৬, ৭৮১২, ৯১২৯, ৯৮৭১, ২৭৩৫১, ২৭৭৮৯, ১০৪৮১।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২৭. অধ্যায়ঃ [অন্তর থেকে] আমানত [বিশ্বস্ততা] তিরোহিত হইবে
৪০৫৩ হুযায়ফাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদের নিকট দুটি হাদিস বর্ণনা করিলেন, তাহার একটি আমি বাস্তবায়িত হইতে দেখেছি এবং অপরটির অপেক্ষায় আছি। তিনি বলেছেনঃ মানুষের হৃদয়মূলে আমানত [বিশ্বস্ততা] নাযিল হইয়াছে। অতঃপর কুরআন নাযিল হইয়াছে। আমরা কুরআন ও সুন্নাহ শিক্ষা করলাম। অতঃপর তিনি আমানত [বিশ্বস্ততা] তিরোহিত হওয়া সম্পর্কে আমাদের নিকট বর্ণনা করিলেন। তিনি বললেনঃ মানুষ ঘুমিয়ে যাবে এবং এই অবস্থায় তাহার অন্তর থেকে আমানত তুলে নেয়া হইবে। তাহার একটা চিহ্নমাত্র কালো বিন্দুর আকারে তাহার অন্তরে থেকে যাবে। অতঃপর সে গভীর ঘুমে থাকা অবস্থায় তাহার অন্তর থেকে আমানত তিরোহিত হয়ে যবে, ফোসকা সদৃশ তাহার চিহ্নমাত্র রয়ে যাবে, যেমন তোমার পায়ে জ্বলন্ত অঙ্গার রাখা হলে ফোসকা পড়ে। তুমি তা স্ফীত দেখিতে পাও কিন্তু তাহার ভিতরে কিছুই থাকে না। অতঃপর হুযায়ফা [রাদি.] হাতের মুঠ ভরে মাটি নিলেন এবং তা নিজের হাঁটুর নিচে ছড়িয়ে দিয়ে বলেন, লোকজন ক্রয়-বিক্রয় ও ব্যবসা-বাণিজ্য করিবে। কিন্তু তাহাদের মধ্যে কেউই আমানত রক্ষা করিবে না। এমনকি বলা হইবে যে, অমুক গোত্রে একজন বিশ্বস্ত ও আমানতদার লোক আছে। অবস্থা এমন হইবে যে, কোন ব্যক্তি সম্পর্কে বলা হইবে, সে কত বড় জ্ঞান, কত হুঁশিয়ার, কত সাহসী! অথচ তাহার অন্তরে সরিষা পরিমাণ ঈমানও থাকিবে না। আমার উপর দিয়ে এমন একটি সময় অতিবাহিত হইয়াছে, যখন আমি তোমাদের কারো সাথে ক্রয়-বিক্রয় করিতে চিন্তা করতাম না। কেননা, সে মুসলমান হলে তাহার দ্বীন ইসলাম তাহাকে আমার প্রাপ্য ফেরত দিতে বাধ্য করতো। আর সে ইহূদী বা খৃস্টান হলে তাহার শাসক তাহার থেকে আমার প্রাপ্য আদায় করে দিতো। কিন্তু আজ-কাল আমি অমুক অমুক ব্যক্তি ছাড়া তোমাদের কারো সাথে ক্রয়-বিক্রয় ও ব্যবসা করি না। {৩৩৮৫}
{৩৩৮৫} সহীহুল বূখারী ৬৪৯৭, মুসলিম ১৪৩, তিরমিজি ২১৭৯, আহমাদ ২২৭৪৪।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪০৫৪ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] বলেনঃ আল্লাহ যখন কোন বান্দাকে ধ্বংস করিতে চান, তখন তাহার লজ্জা-শরম কেড়ে নেন। যখন তিনি তাহার লজ্জা-শরম কেড়ে নেন তখন থেকে তাহার উপর অসন্তুষ্ট থাকেন। তাহার উপর আল্লাহর অসন্তোষ থাকার কারণে তাহার অন্তর থেকে আমানত তুলে নেয়া হয়। যখন তাহার থেকে আমানত তুলে নেয়া হয় তখন তুমি তাহাকে চরম বিশ্বাসঘাতকরূপেই পাবে। তুমি যখন তাহাকে চরম বিশ্বাসঘাতকরূপে পাবে তখন সে [আল্লাহর] দয়া বঞ্চিত হয়ে যায়। তুমি তাহাকে দয়া বঞ্চিত অবস্থায় পেলে তাহাকে সর্বদা অভিশপ্ত দেখিতে পাবে। তুমি তাহাকে অভিশপ্ত দেখিতে পেলে মনে করিবে, তাহার ঘাড় থেকে ইসলামের বন্ধন ছিন্ন হয়ে গেছে। {৩৩৮৬}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ বানোয়াট।{৩৩৮৬} {হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। দঈফাহ ৩০৪৪, দঈফ আল-জামি ১৫৪৩। ।১.উক্ত হাদিসের রাবি মুহাম্মাদ ইবনিল মুসাফফা আল হিমসী সম্পর্কে আবু হাতিম আর রাযী ও ঈমাম নাসাঈ বলেন, তিনি সত্যবাদী। ইবনি হিব্বান তাহাকে সিকাহ বললেও অন্যত্র বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় সন্দেহ ও তাদলীস করেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৫৬১৩, ২৬/৪৬৫ নং পৃষ্ঠা]২. সাঈদ বিন সিনান সম্পর্কে আবু আহমাদ আল-হাকিম বলেন, তাহার হাদিস নির্ভরযোগ্য নয়। আবু বাকর আল-বাযযাহার বলেন, তাহার স্মৃতিশক্তি দূর্বল। আবু বাকর আল বায়হাকী বলেন, তিনি আহলে ইলমগণের নিকট দুর্বল। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। আল ইবনিল মাদানী বলেন, তিনি দুর্বল।[তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ২২৯৫, ১০/৪৯৫ নং পৃষ্ঠা]}কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ জাল হাদিস
২৮. অধ্যায়ঃ কিয়ামতের নিদর্শনাবলী
৪০৫৫আবু সারীহাহ হুযায়ফাহ বিন আসীদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর এক হুজরা থেকে আমাদের দিকে উঁকি মেরে তাকালেন। আমরা তখন কিয়ামত সম্পর্কে আলোচনা করছিলাম। তিনি বলেনঃ দশটি নিদর্শন [আলামত] প্রকাশিত না হওয়া পর্যন্ত কিয়ামত হইবে না। পশ্চিম দিক থেকে সূর্যোদয়, মসীহ দাজ্জালের আবির্ভাব, ধোঁয়া নির্গত হওয়া, দাব্বাতুল আরদ প্রকাশ পাওয়া, ইয়াজূয-মাজূজের আবির্ভাব, ঈসা বিন মরিয়ম আলাইহিস সালামের [উর্দ্ধজগত থেকে] অবতরণ, তিনটি ভূমিধ্বস প্রাচ্যদেশে একটি, পাশ্চাত্যে একটি এবং আরব উপদ্বীপে একটি, এডেনের নিম্নভূমি আব্য়ান এর এক কূপ থেকে অগ্ন্যুৎপাত হইবে যা মানুষকে হাশরের ময়দানে হাঁকিয়ে নিয়ে যাবে। তাহারা রাতে নিদ্রা গেলে এই আগুন থেমে থাকিবে এবং তাহারা চলতে থাকলে আগুনও তাহাদের অনুসরণ করিবে [তাহারা দুপুরে বিশ্রাম নিলে, আগুনও তখন তাহাদের সাথে থেমে থাকিবে]। {৩৩৮৭}
{৩৩৮৭} মুসলিম ২৯০১, তিরমিজি ২১৮৩, আবু দাঊদ ৪৩১১, আহমাদ ১৫৭৮, ১৭১০।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪০৫৬ আনাস বিন মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, ছয়টি বিষয় প্রকাশিত হওয়ার পূর্বেই সৎ কাজে অগ্রবর্তী হও। পশ্চিম দিক থেকে সূর্যোদয়, ধোঁয়া নির্গত হওয়া, দাব্বাতুল আরদ এর আত্মপ্রকাশ, দাজ্জালের আবির্ভাব এবং বিশেষ বিপদ ও ব্যাপক বিপদ। {৩৩৮৮}
{৩৩৮৮} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। সহীহাহ ৭৫৯।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহীহ
৪০৫৭ আবু কাতাদাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ [কিয়ামতের ক্ষুদ্র] আলামতসমূহ দুশত বছর পর প্রকাশ পেতে থাকিবে। {৩৩৮৯}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ বানোয়াট।{৩৩৮৯} {হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। মিশকাত ৪৫৬০, দঈফাহ ১৯৬৬।উক্ত হাদিসের রাবি আওন বিন উমারাহ সম্পর্কে আবু বকর আল-বায়হাকী ও আবু দাউদ আস সাজিস্তানী বলেন, তিনি দুর্বল। যাকারিয়্যা বিন ইয়াহইয়া আস সাজী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় অমনোযোগী ও সন্দেহ করেন। ঈমাম যাহাবী তাহাকে দুর্বল বলেছেন। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি দুর্বল। [তাহজিবুল কালামঃ রাবী নং ৪৫৫৪, ২২/৪৬১ নং পৃষ্ঠা] ২. আবদুল্লাহ ইবনিল মুসান্না বিন সুমামাহ বিন আব্দুল্লাহ বিন আনাস সম্পর্কে আবুল ফাতহ আল-আযদী বলেন, তাহার মাঝে দুর্বলতা রয়েছে। আবু জাফার আল উকায়লী বলেন, তাহার হাদিসের অনুসরণ করা যাবে না। আবু হাতিম বিন হিব্বান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় কখনো কখনো ভুল করেন। আহমাদ বিন শুআয়ব আন নাসাঈ বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়।[তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৩৫২১, ১৬/২৫ নং পৃষ্ঠা }কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ জাল হাদিস
৪০৫৮ আনাস বিল মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, আমার উম্মাত পাঁচটি কাল পর্যায়ে বিভক্ত হইবে। [প্রথম] চল্লিশ বছর হইবে সৎকর্মপরায়ণ ও আল্লাহভীরু লোকেদের কাল পর্যায়। অতঃপর তাহাদের পরবর্তীদের পর্যায় হইবে একশত বিশ বছর পর্যন্ত ব্যাপ্ত। তাহারা হইবে পরষ্পরের এক শত ষাট বছর হইবে আত্মীয়তাহার সম্পর্ক ছেদকারী ও আত্মকেন্দ্রিক লোকেদের যুগ। তাহারা পরষ্পর থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবে। এরপর চলবে গণহত্যা আর গণহত্যা। তা থেকে আল্লাহর কাছে নাজাত চাও, নাজাত চাও।
{উপরোক্ত হাদীসে মোট ২টি সানাদের ১টি বর্ণিত হইয়াছে, অপর সানাদটি হলোঃ}৫/৪০৫৮[১]। আনাস বিন মালিক [রাদি.] তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আমার উম্মত পাঁচটি কাল পর্যায়ে বিভক্ত হইবে। প্রতিটি পর্যায় হইবে চল্লিশ বছরের। অতএব আমার ও আমার সাহাবীদের কাল হইবে জ্ঞানী-গুণী ঈমানদারদের কাল। আর দ্বিতীয় কাল পর্যায় হইবে চল্লিশ বছর থেকে আশি বছর পর্যন্ত সৎকর্মপরায়ণ ও মোত্তাকী লোকেদের কাল।……হাদিসের অবশিষ্ট বর্ণনা পূর্বোক্ত হাদিসের অনুরূপ। {৩৩৯০}{৩৩৯০} {হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। দঈফাহ ২৯৪০।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
২৯. অধ্যায়ঃ ভূমিধ্বস
৪০৫৯ আব্দুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নবী [সাঃআঃ] বলেনঃ কিয়ামতের পূর্বে চেহারা বিকৃতি, ভূমিধ্বস ও প্রস্তরবৃষ্টি হইবে। {৩৩৯১}
{৩৩৯১} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। রাওদুন নাদীর ১০০৪, সহীহাহ ১৭৮৭।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪০৬০ সাহল বিন সাদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি নবী [সাঃআঃ] কে বলিতে শুনেছেনঃ আমার উম্মতের শেষ যমানায় ভূমিধ্বস, চেহারা বিকৃতি ও প্রস্তরবৃষ্টি হইবে। {৩৩৯২}
{৩৩৯২} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। সহীহাহ ৪/৩৯৪।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪০৬১ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
এক ব্যক্তি ইবনি উমার [রাদি.] এর নিকট এসে বলল, অমুক ব্যক্তি আপনাকে সালাম জানিয়েছে। তিনি বলেন, আমি জানতে পেরেছি যে, সে নতুন জিনিস [বিদআত] উদ্ভাবন করেছে। যদি বাস্তবিকই সে নতুন কোন প্রথা উদ্ভাবন করে থাকে, তাহলে আমার পক্ষ থেকে তাহাকে সালাম দিও না। কেননা আমি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে বলিতে শুনেছিঃ আমার উম্মতের অথবা এই উম্মাতের মধ্যে চেহারা বিকৃতি, ভূমিধ্বস ও প্রস্তরবৃষ্টি হইবে। এটা কাদারিয়া সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘটিত হইবে। {৩৩৯৩}
{৩৩৯৩} {তিরমিজি ২১৫২, আবু দাউদ ৪৬১৩। মিশকাত ১০৬, ১১৬, রাওদুন নাদীর ১০০৪।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
৪০৬২ আবদুল্লাহ বিন আমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, আমার উম্মতের মধ্যে ভূমিধ্বস, চেহারা বিকৃতি ও প্রস্তরবৃষ্টি হইবে। {৩৩৯৪}
{৩৩৯৪} আহমাদ ৬৪৮৫। সহীহাহ ৪/৩৯৪, রাওদুন নাদীর ১০০৪।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩০. অধ্যায়ঃ বায়দা-এর সামরিক বাহিনী
৪০৬৩ হাফসাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে বলিতে শুনেছেনঃ এই কাবা ঘর ভূপাতিত করিতে একটি সামরিক বাহিনী উদ্যোগী হইবে। তাহারা বাইদা নামক স্থানে পৌঁছলে তাহাদের মধ্যবর্তী দলকে ভূতলে ধ্বসিয়ে দেয়া হইবে। তখন অগ্রবর্তী দল পশ্চাতবর্তী দলকে ডাক দিবে। কিন্তু তাহারা সকলে ধ্বসে যাবে এবং এক দূত ব্যতীত তাহাদের আর কেউ অবশিষ্ট থাকিবে না। সে গিয়ে জনপদকে খবর দিবে। আবদুল্লাহ বিন সফওয়ান [রাদি.] বলেন, স্বৈরাচারী হাজ্জাজ বাহিনী আগমন করিলে আমরা মনে করলাম, এই সেই বাহিনী। এক ব্যক্তি বলল, আমি তোমার সম্পর্কে সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, তুমি হাফসা [রাদি.] এর প্রতি মিথ্যারোপ করোনি এবং হাফসা [রাদি.] ও নবী [সাঃআঃ] এর প্রতি মিথ্যারোপ করেননি। {৩৩৯৫}
{৩৩৯৫} মুসলিম ২৮৮৩, নাসাঈ ২৮৭৯, ২৮৮০, আহমাদ ২৫৯০৫। সহীহাহ ২৪৩২ কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪০৬৪ সাফিয়্যাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ লোকেরা এই কাবা ঘর আক্রমণ করা থেকেও বিরত থাকিবে না, এমনকি একটি সেনাদল যুদ্ধে অবতীর্ণ হইবে। তাহারা বায়দা নামক স্থানে পৌঁছলে তাহাদের অগ্রবর্তী ও পশ্চাতবর্তী দল ভূগর্ভে ধ্বসে যাবে এবং তাহাদের মধ্যবর্তী দলও রেহাই পাবেনা। আমি বললাম, যদি কাউকে জোরপূর্বক এই বাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়? তিনি বলেনঃ কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাহাদেরকে তাহাদের স্ব স্ব নিয়াত অনুসারে উত্থিত করবেন। {৩৩৯৬}
{৩৩৯৬} তিরমিজি ২১৮৪।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪০৬৫ উম্মু সালামাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] সেই সামরিক বাহিনীর উল্লেখ করিলেন, যাদেরকে ভূগর্ভে ধ্বসিয়ে দেয়া হইবে। উম্মু সালাম [রাদি.] বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! হয়তো সেই বাহিনীতে জোরপূর্বক অন্তর্ভুক্ত করা লোকও থেকে থাকিবে। তিঁনি বলেনঃ তাহাদেরকে তাহাদের নিয়াত মোতাবেক উত্থিত করা হইবে। {৩৩৯৭}
{৩৩৯৭} তিরমিজি ২১৮৭।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩১. অধ্যায়ঃ দাব্বাতুল আরদ [মাটির প্রাণী]
৪০৬৬ আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ একটি পশু আবির্ভূত হইবে এবং তাহার সাথে থাকিবে দাউদ [আঃ] এর পুত্র সুলায়মান [আঃ] এর আংটি এবং মূসা বিন ইমরান [আঃ] এর লাঠি। সে লাঠি দিয়ে মূমিন ব্যক্তির চেহারা উজ্জ্বল করিবে এবং আংটি দিয়ে কাফের ব্যক্তির নাকে চিহ্ন এঁকে দিবে। শেষে মহল্লাবাসী জমায়েত হয়ে একজন বলবে, হে মুমিন এবং অপরজন বলবে, হে কাফের।
{উপরোক্ত হাদীসে মোট ২টি সানাদের ১টি বর্ণিত হইয়াছে, অপর সানাদটি হলোঃ}২/৪০৬৬[১]. আবু হুরাইরাহ [রাদি.]-এই বর্ণনায় আছেঃ এ বলবে, হে মুমিন এবং সে বলবে, হে কাফের! {৩৩৯৮}{৩৩৯৮} তিরমিজি ২১৮৭, আহমাদ ৭৮৭৭, ৯৯৮৮। দঈফাহ ১৬০৮, দঈফ আল-জামি ২৪১৩।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৪০৬৭ বুরায়দাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাকে মক্কার অদূরে এক জঙ্গলের একটি স্থানে নিয়ে গেলেন। স্থানটি ছিল শুষ্ক এবং তাহার চারপাশে ছিল বালু। রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ এই স্থান থেকে পশুটি আত্মপ্রকাশ করিবে। স্থানটি ছিল এক বিঘত পরিমাণ। আবদুল্লাহ বিন বুরায়দা [রাদি.] বলেন, এর কয়েক বছর পর আমি হজ্জে গেলাম। আমার পিতা আমাকে তাহার লাঠি দেখিয়ে বলেন, সেই পশুর লাঠি এতো মোটা ও এতো লম্বা হইবে। {৩৩৯৯}
{৩৩৯৯} {আহমাদ ২২৫১৪। কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ খুবই দুর্বল
৩২. অধ্যায়ঃ পশ্চিমাকাশ থেকে সূর্যোদয়
৪০৬৮ আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে বলিতে শুনেছিঃ পশ্চিম দিক থেকে সূর্য উদিত না হওয়া পর্যন্ত কিয়ামত হইবে না। তা উদিত হলে সমগ্র পৃথিবীবাসী তা দেখে ঈমান আনবে। কিন্তু পূর্বে যারা ঈমান আনেনি তাহাদের এই ঈমান তাহাদের কোন উপকারে আসবে না। {৩৪০০}
{৩৪০০} সহীহুল বূখারী ৪৬৩৫, ৪৬৩৬, ৬৫০৬, ৭১২১, মুসলিম ১৫৭, ১৫৮, তিরমিজি ৩০৭২, আবু দাঊদ ৪৩১২, আহমাদ ৭১২১, ২৭৩৫৫, ৮৩৯৩, ৮৬৩৩, ৮৯২১, ১০৪৭৬। রাওদুন নাদীর ১১২কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪০৬৯ আব্দুল্লাহ বিন আম্র [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, কিয়ামতের প্রথম আলামত হলো পশ্চিমাকাশ থেকে সূর্যোদয় এবং মধ্য দিনে মানুষের মাঝে দাব্বাতুল আরদ নামক পশুর আত্মপ্রকাশ। আব্দুল্লাহ [রাদি.] বলেন, এই দুটি আলামতের মধ্যে যেটিই সর্বপ্রথম প্রকাশ পাবে, অপরটিও তাহার কাছাকাছি সময়ে প্রকাশ পাবে। আব্দুল্লাহ [রাদি.] আরো বলেন, আমার মনে হয় সর্বপ্রথম পশ্চিমাকাশ থেকে সূর্য উদিত হইবে। {৩৪০১}
{৩৪০১} মুসলিম ২৯৪১। কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪০৭০ সাফ্ওয়ান বিন আস্সাল [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ পশ্চিম দিকে একটি খোলা দরজা আছে, যাহার প্রস্থ সত্তর বছরের পথ। পশ্চিম দিক থেকে সূর্য উদিত না হওয়া পর্যন্ত এই দরজা সর্বক্ষণ তওবার জন্য উন্মুক্ত থাকিবে। এই দিক থেকে সূর্য উদিত হওয়ার পূর্বে কোন ব্যক্তি ঈমান না আনলে অথবা ঈমান আনার পর সৎকর্ম না করে থাকলে, অতঃপর তাহার ঈমান আনায় কোন উপকার হইবে না। {৩৪০২}
{৩৪০২} তিরমিজি ৩৫৩৫,৩৫৩৬। আত তালীকুর রাগীব ৪/৭৩। কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
৩৩. অধ্যায়ঃ দাজ্জালের ফেত্না, ঈসা বিন মরিয়ম [আঃ] এর অবতরন এবং ইয়াজূজ- মাজূজের আত্মপ্রকাশ
৪০৭১ হুযায়ফাহ[রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ দাজ্জালের বাম চোখ হইবে অন্ধ এবং তাহার মাথায় থাকিবে পর্যাপ্ত চুল। তাহার সাথে থাকিবে [কৃত্রিম] জান্নাত ও জাহান্নাম। আসলে তাহার জাহান্নাম হইবে জান্নাত এবং জান্নাত হইবে জাহান্নাম। {৩৪০৩}
{৩৪০৩} মুসলিম ২৯৩৪, আহমাদ ২২৭৩৯, ২২৮৫৬। কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪০৭২ আবু বকর সিদ্দীক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদের নিকট বর্ণনা করিয়াছেন যে, দাজ্জাল প্রাচ্যের খোরাসান অঞ্চল থেকে বের হইবে। এমন সব জাতি তাহার অনুসরণ করিবে যাদের মুখাবয়ব হইবে ঢালের মত চ্যাপ্টা ও মাংসল। {৩৪০৪}
{৩৪০৪} তিরমিজি ২২৩৭। রাওদুন নাদীর ১১৮৪, তাখরীজুল মুখতাহার ৩৩-৩৭, সহীহাহ ১৫৯১। কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪০৭৩ মুগীরাহ বিন শুবাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ]–এর নিকট দাজ্জাল সম্পর্কে আমার চেয়ে অধিক কেউ জিজ্ঞা্সা করেনি। তিনি আমাকে বলেনঃ তুমি তাহার সম্পর্কে কী জানতে চাচ্ছো? আমি বল্লাম, লোকজন বলাবলি করে যে, তাহার সাথে অঢেল পানাহারের সামগ্রী থাকিবে। তিনি বলেনঃ আল্লাহর নিকট তা মামুলি ব্যাপার। {৩৪০৫}
{৩৪০৫} সহীহুল বূখারী ৭১২২, মুসলিম ২১৫২, ২৯৩৯, আহমাদ ১৭৬৯০, ১৭৭০২, ১৭৭৩৯।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪০৭৪ ফাতিমাহ বিনতু কায়স [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, একদিন রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] নামায পড়ার পর মিম্বারে আরোহণ করিলেন। ই্তোপূর্বে তিনি জুমুআর দিন ব্যতীত মিম্বারে আরোহণ করেননি। বিষয়টি লোকজনের নিকট গুরুতর মনে হলো। তাহাদের মধ্যে কতক দাঁড়ানো ছিলো এবং কতক উপবিষ্ট ছিলো। তিনি তাহাঁর হাত দ্বারা তাহাদের ইশারা করিলেনঃ তোমরা বসো। আল্লাহর শপথ! আমি আমার এ স্থানে তোমাদের কোন কাজে উদ্বুদ্ধ করিতে অথবা ভয় দেখাতে দাঁড়াইনি। তবে তামীমুদ দারী আমার নিকট এসে আমাকে একটি বিষয় অবহিত করেছে, যাহার আনন্দে আমি দুপুরের বিশ্রাম গ্রহণ করিনি। আমি তোমাদের নবীর সেই আনন্দের বিষয়টি তোমাদের জ্ঞাত করিতে চাই। তামীমুদ দারীর চাচাতো ভাই আমাকে অবহিত করেছে যে, প্রবল বায়ু তাহাদেরকে এক অপরিচিতি দ্বীপে নিয়ে গেলো। তাহারা জাহাজের ক্ষুদ্র নৌযানে চড়ে সেখান থেকে বেরিয়ে পড়লো। হঠাৎ তাহারা সেখানে ঘন কালো চুলধারী একটা কিছু দেখিতে পেলো। তাহারা তাহাকে জিজ্ঞেস করিল, তুমি কে? সে বলল, আমি জাসসাসা [অনুসন্ধানকারী]। তাহারা বলল, আমাদেরকে তাহার সম্পর্কে কিছু তথ্য দাও। সে বলল ,আমি তোমাদের নিকট কিছু বলবোও না, তোমাদের নিকট কিছু জানতেও চাইবো না। তোমরা তোমাদের দৃষ্টি সীমার ঐ ভূতখানায় যাও। সেখানে এমন ব্যক্তি আছে যে তোমাদের কিছু বলবে এবং তোমাদের নিকট কিছু জানতেও চাইবে। তাহারপর তাহারা সেখানে গেলো এবং তাহার নিকট উপস্থিত হলো। তাহারা সেখানে অতি বৃদ্ধ এক ব্যক্তিকে দেখিতে পেলো, যে বয়সের ভারে কাঁপছিল। সে তাহার দুঃখ- দুর্দশা ও দুশ্চিন্তার বিষয় ব্যক্ত করিল। সে তাহাদেরকে বলল, তোমরা কোথা থেকে এসেছ? তাহারা বলল, সিরিয়া থেকে। সে বলল, আরবরা কী করছে? তাহারা বলল, আমরাই আরববাসী, যাদের তুমি জিজ্ঞেস করছো। সে বলল, তোমাদের মধ্যে আবির্ভূত ব্যক্তি কী করছে? তাহারা বলল, ভালো কাজ করছেন। তিনি জাতির অবস্থা পরিবর্তন করে দিয়েছেন। আর আল্লাহ তাহাঁকে তাহাদের উপর জয়যুক্ত করিয়াছেন। আজ তাহারা একই মতাদর্শের উপর প্রতিষ্ঠিত। তাহাদের ইলাহ এক এবং দীনও এক। সে বলল, যুগার [নামক] ঝর্ণাধারার খবর কী? তাহারা বলল, ভালো। লোকজন সেখান থেকে ক্ষেত-খামারে পানি সেচ করছে এবং খাবার পানি সংগ্রহ করছে। সে বলল ,আম্মান ও বায়সানের মধ্যবর্তী খেজুর বাগানের অবস্থা কী? তাহারা বলল, প্রতি বছর সেই বাগানে প্রচুর ফল উৎপন্ন হয়। সে বলল, তাবারিয়া হ্রদের অবস্থা কী? তাহারা বলল, তাহার উভয় তীরে প্রচুর পানি প্রবাহিত হচ্ছে। রাবী বলেন, এতে সে তিনটি দীর্ঘশ্বাস ফেললো, অতঃপর বলল, আমি আমার এই বন্দীদশা থেকে মুক্তি পেলে তাইবা [মদীনা] ব্যতীত সর্বত্র আমার এই দু পায়ে বিচরণ করতাম। কিন্তু সেখানে প্রবেশের ক্ষমতা আমার নাই। নবী [সাঃআঃ] বলেনঃ এ কারণেই আমি অধিক আনন্দিত ও উৎফুল্ল হয়েছি। সেই সত্তার শপথ, যাঁর হাতে আমার প্রাণ! এটা সেই পবিত্র শহর। মদীনার গলিপথ হোক অথবা রাজপথ, নরম স্থান হোক অথবা কঙ্করময়, সর্বত্র একজন ফেরেশতা কিয়ামত পর্যন্ত উন্মুক্ত তরবারি হাতে মোতায়েন রয়েছেন। {৩৪০৬}
তাহকীক আল্বানীঃ [আবরী] বাক্যগূলো ব্যতীত সানাদটি দুর্বল।{৩৪০৬} {মুসলিম ২৯৪২, আহমাদ ২৭৮৩১,২৬৭৮০ । দঈফ আল-জামি২০৯৬, সহীহ আল-জামি২৫০৮ }কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য
৪০৭৫ নাওয়াস বিন সামআন অল-কিলাবী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন একদা, সকাল বেলা রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] দাজ্জাল সম্পর্কে আলোচনা করেন। তিনি তাহার ভয়াবহতা ও নিকৃষ্টতাহার কথা তুলে ধরেন। এমনকি আমরা ধারণা করলাম যে, সে হয়তো খেজুর বাগানের ওপাশেই অবস্থান করছে। আমরা বিকেল বেলা পুনরায় তাহাঁর নিকট উপস্থিত হলাম। তখন তিনি আমাদের মাঝে দাজ্জাল-ভীতির আলামত লক্ষ্য করে বলেনঃ তোমাদের কী হইয়াছে? আমরা বললাম, ইয়া রাসূলুল্লাহ! ভোরবেলা আপনি আমাদের সামনে দাজ্জাল সম্পর্কে আলোচনা করিয়াছেন এবং তাহার ভয়াবহতা ও নিকৃষ্টতাহার কথা এমন ভাষায় তুলে ধরেছেন যে, আমাদের মনে হলো যে, সে বোধহয় খেজুর বাগানের পাশেই উপস্থিত আছে। তিনি বলেনঃ আমার কাছে দাজ্জালই তোমাদের জন্য অধিক ভয়ংকর বিপদ। সে যদি আমার জীবদ্দশায় তোমাদের মাঝে আত্মপ্রকাশ করে তবে আমিই তোমাদের পক্ষে তাহার প্রতিপক্ষ হবো। আর আমার অবর্তমানে যদি সে আত্মপ্রকাশ করে তাহলে তোমরাই হইবে তাহার প্রতিপক্ষ। আর প্রত্যেক মুসলমানের জন্য আল্লাহই আমার পরিবর্তে সহায় হইবে। সে [দাজ্জাল] হইবে কুঞ্চিত চুলবিশিষ্ট, স্থির দৃষ্টিসম্পন্ন যুবক এবং আবদুল উযযা বিন কাতান সদৃশ। তোমাদের কেউ তাহাকে দেখলে সে যেন তাহার বিরুদ্ধে সূরা কাহফের প্রাথমিক আয়াতগুলো পাঠ করে। সে সিরিয়া ও ইরাকের মধ্যবর্তী খাল্লা নামক স্থান থেকে আত্মপ্রকাশ করিবে। অতঃপর সে ডানে-বামে ফেতনা-ফাসাদ ও বিপর্যয় ছড়িয়ে বেড়াবে। হে আল্লাহর বান্দাগণ! তোমরা দৃঢ়তাহার সাথে স্থির থাকিবে।
আমরা জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রাসুল! সে পৃথিবীতে কতো দিন অবস্থান করিবে? তিনি বলেনঃ চল্লিশ দিন। তবে এর এক দিন হইবে এক বছরের সমান, এক দিন হইবে এক মাসের সমান, এক দিন হইবে এক সপ্তাহের সমান এবং অবশিষ্ট দিনগুলো হইবে তোমাদের বর্তমান দিনগুলোর সমান। আমরা জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রাসুল! যে দিনটি এক বছরের সমান হইবে তাতে একদিনের নামায পড়লেই কি তা আমাদের জন্য যথেষ্ট হইবে? তিনি বলেনঃ তোমরা সে দিনের সঠিক অনুমান করে নিবে এবং তদনুযায়ী নামায পড়বে। রাবী বলেন, আমরা জিজ্ঞেস করলাম, সে পৃথিবীতে কতো দ্রুত গতিতে বিচরণ করিবে? তিনি বলেনঃ বায়ু চালিত মেঘমালার গতিতে।
অতঃপর সে কোন এক সম্প্রদায়ের নিকট এসে তাহাদেরকে নিজের দলে ডাকবে। তাহারা তাহার ডাকে সাড়া দিবে এবং তাহার উপর ঈমান আনবে। অতঃপর সে আসমানকে বৃষ্টি বর্ষণের আদেশ দিবে এবং তদনুযায়ী বৃষ্টি বর্ষিত হইবে। অতঃপর সে যমীনকে শস্য উৎপাদনের নির্দেশ দিবে এবং তদনুযায়ী ফসল উৎপাদিত হইবে। অতঃপর বিকেল বেলা তাহাদের পশুপাল পূর্বের চেয়ে উচুঁ কুঁজবিশিষ্ট, মাংসল নিতম্ববিশিষ্ট ও দুগ্ধপুষ্ট স্তনবিশিষ্ট হয়ে [খোঁয়াড়ে] ফিরে আসবে। কিন্তু তাহারা তাহার আহবান প্রত্যাখ্যান করিবে। ফলে সে তাহাদের কাছ থেকে ফিরে যাবে। পরদিন ভোরবেলা তাহারা নিজেদেরকে নিঃস্ব অবস্থায় পাবে এবং তাহাদের হাতে কিছুই থাকিবে না। অতঃপর সে এক নির্জন পতিত ভূমিতে গিয়ে বলবে, তোর ভেতরের ভাণ্ডার বের করে দে। অতঃপর সে সেখান থেকে প্রস্থান করিবে এবং তথাকার ধনভান্ডার তাহার অনুসরণ করিবে, যেভাবে মৌমাছিরা রাণী মৌমাছির অনুসরণ করে।
অতঃপর সে এক পূর্ণ যৌবন তরুণ যুবককে তাহার দিকে আহবান করিবে। তাহাকে সে তরবারির আঘাতে দ্বিখন্ডিত করে ফেলবে। তাহার দেহের প্রতিটি টুকরা দু ধনুকের ব্যবধানে গিয়ে পড়বে। অতঃপর সে তাহাকে ডাক দিবে, অমনি সে হাস্যোজ্জ্বল চেহারায় তাহার কাছে এসে দাঁড়াবে। এমতাবস্থায় আল্লাহ তাআলা ঈসা বিন মরিয়ম [আঃ] কে পাঠাবেন। তিনি হলুদ রং –এর দু, টি কাপড় পরিহিত অবস্থায় দু জন ফেরেশতাহার পাখায় ভর করে দামিশকের পূর্ব প্রান্তের এক মসজিদের সাদা মিনারে অবতরণ করবেন। তিনি তাহাঁর মাথা উত্তোলন করিলে বা নোয়ালে ফোঁটায় ফোঁটায় মণি– মুক্তার ন্যায় [ঘাম] পড়তে থাকিবে। তাহার নিঃশ্বাস যে কাফেরকেই স্পর্শ করিবে সে তৎক্ষণাৎ মারা যাবে। আর তিনি “লুদ্দ নামক স্থানের দ্বারদেশে দাজ্জালকে হত্যা করবেন।
অতঃপর আল্লাহর নবী ঈসা [আঃ] এমন এক সম্প্রদায়ে আসবেন যাদেরকে আল্লাহ তাআলা [দাজ্জালের অনিষ্ট থেকে] রক্ষা করিয়াছেন। তিনি তাহাদের মুখমণ্ডলে হাত বুলাবেন এবং জান্নাতে তাহাদের মর্যাদা সম্পর্কে বর্ণনা করবেন। তাহাদের এমতাবস্থায় আল্লাহ তাআলা তাহাঁর নিকট ওহী পাঠাবেন, হে ঈসা! আমি আমার এমন বান্দাদের পাঠাবো যাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার ক্ষমতা কারো নাই। অতএব তুমি আমার বান্দাদের তূর পাহাড়ে সরিয়ে নাও।
অতঃপর আল্লাহ তাআলা ইয়াজূজ-মাজূজের দল পাঠাবেন। আল্লাহ তাআলার বাণী অনুযায়ী তাহাদের অবস্থা হলোঃ “তাহারা প্রতিটি উচ্চভূমি থেকে ছুতটে আসবে” [ সূরা আম্বিয়াঃ ৯৬]। এদের প্রথম দলটি [সিরিয়ার] তাবারিয়া হ্রদ অতিক্রমকালে এর সমস্ত পানি পান করে শেষ করে ফেলবে। অতঃপর তাহাদের পরবর্তী দল এখান দিয়ে অতিক্রমকালে বলবে, নিশ্চয় কোন কালে এতে পানি ছিলো।
আল্লাহর নবী ঈসা [আঃ] তাহাঁর সঙ্গীগণসহ অবরুদ্ধ হয়ে পড়বেন। তাহারা [খাদ্যাভাবে] এমন এক কঠিন অবস্থায় পতিত হইবেন যে, তখন একটি গরুর মাথা তাহাদের একজনের জন্য তোমাদের আজকের দিনের একশত স্বর্ণ মুদ্রার চেয়েও মূল্যবান [উত্তম] মনে হইবে। তাহারপর আল্লাহর নবী ঈসা [আঃ] এবং তাহাঁর সাথীগণ আল্লাহর দিকে রুজু হয়ে দুআ করবেন। তখন আল্লাহ তাআলা তাহাদের [ইয়াজূজ-মাজূজ বাহিনীর] ঘাড়ে মহামারীরূপে নাগাফ নামক কীটের সৃষ্টি করবেন। ভোরবেলা তাহারা এমনভাবে ধ্বংস হইবে যেন একটি প্রাণের মৃত্যু হইয়াছে।
তখন আল্লাহর নবী ঈসা [আঃ] এবং তাহাঁর সাথীগণ [পাহাড় থেকে] নেমে আসবেন। তাহারা সেখানে এমন এক বিঘত জায়গাও পাবেন না, যেখানে সেগুলোর পচা দুর্গন্ধময় রক্ত-মাংস ছড়িয়ে নাই। তাহারা মহান আল্লাহর নিকট দুআ করবেন। তখন আল্লাহ তাআলা তাহাদের নিকট উটের ঘাড়ের ন্যায় লম্বা ঘাড়বিশিষ্ট এক প্রকার পাখি পাঠাবেন। সেই পাখিগুলো তাহাদের মৃতদেহগুলো তুলে নিয়ে আল্লাহর ইচ্ছামত স্থানে নিক্ষেপ করিবে। অতঃপর আল্লাহ তাআলা তাহাদের উপর এমন বৃষ্টি বর্ষণ করবেন যা সমস্ত ঘরবাড়ি ,স্থলভাগ ও কঠিন মাটির স্তরে গিয়ে পৌঁছবে এবং সমস্ত পৃথিবী ধুয়ে মুছে আয়নার মতো ঝকঝকে হয়ে উঠবে।
অতঃপর যমীনকে বলা হইবে, তোর ফল উৎপন্ন কর এবং তোর বরকত ফিরিয়ে দে। তখন অবস্থা এমন হইবে যে, একদল লোকের আহারের জন্য একটি ডালিম যথেষ্ট হইবে এবং একদল লোক এর খোসার ছায়াতলে আশ্রয় নিতে পারবে। আল্লাহ তাআলা দুধেও এতো বরকত দিবেন যে, একটি দুধেল উষ্ট্রীর দুধ একটি বৃহৎ দলের জন্য যথেষ্ট হইবে। একটি গাভীর দুধ একটি গোত্রের লোকেদের জন্য যথেষ্ট হইবে। একটি বকরীর দুধ একটি ক্ষুদ্র দলের জন্য যথেষ্ট হইবে।
তাহাদের এ অবস্থায় আচানক আল্লাহ তাআলা তাহাদের উপর দিয়ে মৃদুমন্দ বিশুদ্ধ বায়ু প্রবাহিত করবেন। এ বায়ু তাহাদের বগলের অভ্যন্তরভাগ স্পর্শ করে প্রত্যেক মুসলমানের জান কবয করিবে। তখন অবশিষ্ট নর-নারী গাধার ন্যায় প্রকাশ্যে যেনায় লিপ্ত হইবে। তাহাদের উপর কিয়ামত সংঘটিত হইবে। {৩৪০৭}
{৩৪০৭} মুসলিম ২৯৩৭, তিরমিজি ২২৪০, আবু দাঊদ ৪৩২১। তাখরীজু ফাদাইলুশ শাম ২৫, সহীহাহ ১৭৮০।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪০৭৬ নাওওয়াস বিন সামআন [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ মুসলমানগণ অচিরেই ইয়াজূজ ও মাজূজের তীর-ধনুক, বর্শাফলক এবং ঢালসমূহ সাত বছর ধরে জ্বালানী কাঠরূপে ভস্মীভূত করিবে। {৩৪০৮}
{৩৪০৮} মুসলিম ২৯৩৭, তিরমিজি ২২৪০, আবু দাঊদ ৪৩২১। সহীহাহ ১৯৪০।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪০৭৭ আবু উমামাহ আল-বাহিলী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দিলেন। আমাদের উদ্দেশে দেয়া তাহাঁর দীর্ঘ ভাষণের অধিকাংশ ছিলো দাজ্জাল প্রসঙ্গে। তিনি আমাদেরকে দাজ্জাল সম্পর্কে সতর্ক করেন। তাহার সম্পর্কে তিনি তাহাঁর ভাষণে বলেন, আল্লাহ আদমের বংশধর সৃষ্টি করার পর থেকে দাজ্জালের ফেতনার চেয়ে মারাত্মক কোনো ফেতনা পৃথিবীর বুকে সংঘটিত হইবে না। আল্লাহ এমন কোন নবী পাঠাননি যিনি তাহাঁর উম্মাতকে দাজ্জাল সম্পর্কে সতর্ক করেননি। আর আমি সর্বশেষ নবী এবং তোমরা সর্বশেষ উম্মাত। সে অবশ্যই তোমাদের মাঝে আত্মপ্রকাশ করিবে। আমি তোমাদের মধ্যে বর্তমান থাকতে যদি সে আবির্ভূত হয়, তবে আমিই প্রত্যেক মুসলমানের পক্ষ থেকে প্রতিরোধকারী হবো। আর যদি সে আমার পরে আবির্ভূত হয় তবে প্রত্যেক মুসলমানকে নিজের পক্ষ থেকে প্রতিরোধকারী হইতে হইবে। আল্লাহ তাআলা প্রত্যেক মুসলমানের জন্য আমার প্রতিনিধি।
নিশ্চয় সে সিরিয়া ও ইরাকের খাল্লা নামক স্থান থেকে বের হইবে। অতঃপর সে তাহার ডানে ও বামে সর্বত্র বিপর্যয় সৃষ্টি করিবে। আল্লাহর বান্দাগণ! তোমরা [দ্বীনের উপর] অবিচল থাকিবে। কেননা আমি এখনই তোমাদের নিকট এমন সব নিকৃষ্ট অবস্থা বর্ণনা করিব যা আমার পূর্বে, বিশেষভাবে কোন নবীই তাহাঁর উম্মাতের নিকট বলেননি।
সে তাহার দাবির সূচনায় বলবে, আমি নবী। অথচ আমার পরে কোন নবী নাই। অতঃপর সে দাবি করিবে, আমি তোমাদের রব। অথচ মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত তোমরা তোমাদের প্রভুকে দেখিতে পাবে না। সে হইবে অন্ধ। অথচ তোমাদের রব মোটেই অন্ধ নন। তাহার দু চোখের মাঝখানে লেখা থাকিবে “কাফের”। শিক্ষিত ও অশিক্ষিত প্রত্যেক মুমিন ব্যক্তিই এ লেখাটি পড়তে সক্ষম হইবে।
দাজ্জালের অনাসৃষ্টির মধ্যে একটি এই যে, তাহার সাথে জান্নাত ও জাহান্নাম থাকিবে। তবে তাহার জাহান্নাম হইবে জান্নাত এবং তাহার জান্নাত হইবে জাহান্নাম। যে ব্যক্তি তাহার জাহান্নামের বিপদে পতিত হইবে, সে যেন আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করে এবং সূরা কাহ্ফ-এর প্রথমাংশ তিলাওয়াত করে। তাহলে সেই জাহান্নাম হইবে তাহার জন্য শীতল আরামদায়ক, ইবরাহীম [আঃ]–এর বেলায় আগুন যেরূপ হয়েছিল।
দাজ্জালের আরেকটি অনাসৃষ্টি এই যে, সে এক বেদুঈনকে বলবে, আমি যদি তোমার পিতা-মাতাহাকে তোমার সামনে জীবিত করে তুলতে পারি তবে তুমি কি এই সাক্ষ্য দিবে যে, নিশ্চয় আমি তোমার রব? সে বলবে, হাঁ। তখন [দাজ্জালের নির্দেশে] দুটি শয়তান তাহার পিতা-মাতাহার অবয়ব ধারণ করে হাযির হইবে এবং বলবে, হে বৎস! তাহার আনুগত্য করো। সে-ই তোমার রব।
দাজ্জালের আরেকটি অনাসৃষ্টি এই যে, সে জনৈক ব্যক্তিকে পরাভূত করে হত্যা করিবে। অতঃপর করাত দ্বারা তাহাকে ফেড়ে দু টুকরা করে ছুঁড়ে মারবে। অতঃপর সে বলবে, তোমরা আমার এ বান্দার দিকে লক্ষ্য করো, আমি একে এখনই জীবিত করিব। তাহারপরও কেউ বলবে কি যে, আমি ব্যতীত তাহার অন্য কেউ রব আছে? এরপর আল্লাহ তাআলা সে লোকটিকে জীবিত করবেন। তখন [দাজ্জাল] খবীস তাহাকে বলবে, তোমার রব কে? সে বলবে, আমার রব আল্লাহ। আর তুই তো আল্লাহর দুশমন। তুই তো দাজ্জাল। আল্লাহর শপথ! আজ আমি তোর সম্পর্কে প্রত্যক্ষভাবে বুঝতে পারছি [যে, তুই-ই দাজ্জাল]।
<আবুল হাসান আত-তানাফিসী>< [আবদুর রহমান বিন মুহাম্মাদ বিন যিয়াদ] আল-মুহারিবী >< উবায়দুল্লাহ ইবনিল ওয়ালীদ আস সওওয়াফ [দঈফ বা দুর্বল]>< আতিয়্যাহ [বিন সাদ] [তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় অধিক ভুল করেন]>< আবু সাঈদ আল-খুদরী [রাদি.]> বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আমার উম্মাতের মধ্যে জান্নাতেই সে ব্যক্তির সর্বাধিক মর্যাদা হইবে। রাবী বলেন, আবু সাঈদ [রাদি.] বলেন, আল্লাহর শপথ! আমরা ধারণা করতাম যে, এ ব্যক্তি উমার ইবনিল খাত্তাব, এমনকি তিনি শাহাদাত বরণ করেন। মুহারিবী [রাদি.] বলেন, এরপর আমরা আবু রাফে [রাদি.]-র সূত্রে বর্ণিত হাদীসে ফিরে যাচ্ছি। তিনি বলেন, দাজ্জালের আরেকটি অনাচার এই যে, সে আসমানকে বৃষ্টি বর্ষাতে নির্দেশ দিলে বৃষ্টি হইবে এবং যমীনকে ফসল উৎপাদনের নির্দেশ দিলে ফসল উৎপাদিত হইবে।
দাজ্জালের আরেকটি অনাচার এই যে, সে একটি জনপদ অতিক্রমকালে তাহারা তাহাকে মিথ্যাবাদী সাব্যস্ত করিবে, ফলে তাহাদের গবাদি পশু সমুলে ধ্বংস হয়ে যাবে।
দাজ্জালের আরেকটি অনাচার এই যে, সে আরেকটি জনপদ অতিক্রমকালে তাহারা তাহাকে সত্য বলে মেনে নিবে। সে আসমানকে বৃষ্টি বর্ষণের নির্দেশ দিলে বৃষ্টি বর্ষিত হইবে। অতঃপর সে যমীনকে শস্য উৎপাদনের নির্দেশ দিলে যমীন শস্য উৎপাদন করিবে। যমীন পর্যাপ্ত ফসলাদি, ঘাসপাতা ও তৃণলতা উদগত করিবে, এমনকি তাহাদের গবাদি পশু সেদিন সন্ধ্যায় মোটাতাজা ও উদর পূর্তি করে দুধে স্তন ফুলিয়ে ফিরে আসবে।
অবস্থা এই হইবে যে, সে গোটা দুনিয়া চষে বেড়াবে এবং তা তাহার পদানত হইবে, মক্কা ও মদীনা ব্যতীত। এই দু শহরের প্রবেশদ্বারে উন্মুক্ত তরবারিসহ সশস্ত্র অবস্থায় ফেরেশতা মোতায়েন থাকিবেন। শেষে সে একটি ক্ষুদ্র লাল পাহাড়ের পাদদেশে অবতরণ করিবে যা হইবে তৃণলতা শূন্য স্থানের শেষভাগ।
এরপর মদীনা তাহার অধিবাসীসহ তিনবার প্রকম্পিত হইবে। ফলে মুনাফিক নারী-পুরুষ মদীনা থেকে বের হয়ে দাজ্জালের সাথে যোগ দিবে। এভাবে মদীনা তাহার ভেতরকার নিকৃষ্ট ময়লা বিদূরিত করিবে, যেমনিভাবে হাপর লোহার মরিচা দূর করে। সে দিনের নাম হইবে “নাজাত দিন”।
আবুল আকর এর কন্যা উম্মু শুরাইক [রাদি.] বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আরবের লোকেরা তৎকালে কোথায় থাকিবে? তিনি বলেনঃ তৎকালে তাহাদের সংখ্যা হইবে খুবই নগণ্য। তাহাদের অধিকাংশ [ঈমানদার] বান্দা তখন বাইতুল মুকাদ্দাসে অবস্থান করিবে। তাহাদের ঈমাম হইবেন একজন নিষ্ঠাবান সৎকর্মপরায়ণ ব্যক্তি।
এমতাবস্থায় একদিন তাহাদের ঈমাম তাহাদের নিয়ে ফজরের নামায পড়বেন। ঈসা বিন মরিয়ম [আঃ] সেই সকালবেলা অবতরণ করবেন। তখন ঈমাম পেছন দিকে সরে আসবেন যাতে ঈসা বিন মরিয়ম [আঃ] সামনে অগ্রসর হয়ে লোকেদের নামাযে ঈমামতি করিতে পারেন। ঈসা [আঃ] তাহাঁর হাত ইমামের দু কাঁধের উপর রেখে বলবেনঃ আপনি অগ্রবর্তী হয়ে নামাযে ঈমামতি করুন। কেননা এই নামায আপনার জন্যই কায়েম [শুরু] হইয়াছে। অতএব তাহাদের ঈমাম তাহাদেরকে নিয়ে নামায পড়বেন।
তিনি নামায থেকে অবসর হলে ঈসা [আঃ] বলবেন , দরজা খুলে দাও। তখন দরজা খুলে দেয়া হইবে এবং দরজার পেছনে দাজ্জাল অবস্থানরত থাকিবে। তাহার সাথে থাকিবে সত্তর হাজার ইহূদী কারুকার্য খচিত ও খাপবদ্ধ তরবারিসহ। দাজ্জাল ঈসা [আঃ]-কে দেখামাত্র পানিতে লবণ বিগলিত হওয়ার ন্যায় বিগলিত হইতে থাকিবে এবং ভেগে পলায়ন করিতে থাকিবে। তখন ঈসা [আঃ] বলবেনঃ তোর উপর আমার একটা আঘাত আছে, যা থেকে তোর বাঁচার কোন উপায় নাই। তিনি লুদ্দ–এর পূর্ব ফটকে তাহার নাগাল পেয়ে যাবেন এবং তাহাকে হত্যা করবেন। অতঃপর আল্লাহ তাআলা ইহূদীদের পরাজিত করবেন। আল্লাহর সৃষ্টি যে কোন বস্তু– পাথর, গাছপালা, দেয়াল অথবা প্রাণী, যাহার আড়ালেই কোন ইহূদী লুকিয়ে থাকিবে, আল্লাহ তাহাকে বাকশক্তি দান করবেন এবং সে ডেকে বলবে, হে আল্লাহর মুসলমান বান্দা! এই যে এক ইহূদী, এদিকে এসো এবং তাহাকে হত্যা করো। তবে গারকাদ নামক গাছ কথা বলবে না। কারণ সেটা ইহূদীদের গাছ।
রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ দাজ্জাল চল্লিশ বছর বিপর্যয় ছড়াবে। তাহার এক বছর হইবে অর্ধ বছরের সমান, এক বছর হইবে এক মাসের সমান, এক মাস এক সপ্তাহের সমান এবং অবশিষ্ট কাল অগ্নিস্ফুলিঙ্গ বায়ুমণ্ডলে উড়ে যাওয়ার মত দ্রুত অতিক্রান্ত হইবে। তোমাদের কেউ সকালবেলা মদীনার এক ফটকে [প্রান্তে] থাকলে তাহার অপর ফটকে পৌঁছতে সন্ধ্যা হয়ে যাবে। জিজ্ঞাসা করা হলো, হে আল্লাহর রাসূল! এতো ক্ষুদ্র দিনে আমরা কিভাবে নামায পড়বো? তিনি বলেনঃ তোমরা অনুমান করে সলাতের সময় নির্ধারণ করিবে, যেমন তোমরা লম্বা দিনে অনুমান করে সলাতের সময় নির্ধারণ করে থাক এবং এভাবে নামায আদায় করিবে।
রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ ঈসা বিন মরিয়ম [আঃ] আমার উম্মাতের একজন ন্যায়পরায়ণ শাসক ও ইনসাফগার ঈমাম হইবেন। তিনি ক্রুশ ভেঙ্গে ফেলবেন, এমনভাবে শূকর হত্যা করবেন যে, তাহার একটিও অবশিষ্ট থাকিবে না। সম্পদের প্রাচুর্যের কারণে তিনি জিয্য়া মওকুফ করবেন, যাকাত আদায় বন্ধ করবেন এবং না বকরীর উপর যাকাত ধার্য করা হইবে, আর না উটের উপর। লোকেদের মাঝে পারস্পরিক হিংসা-বিদ্বেষ ও শত্রুতাহার অবসান হইবে। প্রত্যেক বিষাক্ত প্রাণী বিষশূন্য হয়ে যাবে। এমনকি দুগ্ধপোষ্য শিশু তাহার হাত সাপের মুখের ভিতর ঢুকিয়ে দিবে কিন্তু তা তাহার কোন ক্ষতি করিবে না। এক ক্ষুদ্র মানব শিশু সিংহকে তাড়া করিবে, তাও তাহার কোন ক্ষতি করিবে না। নেকড়ে বাঘ মেষ পালের সাথে এমনভাবে অবস্হান করিবে যেন তা তাহার পাহারায় রত কুকুর। পানিতে পাত্র পরিপূর্ণ হওয়ার মত পৃথিবী শান্তিতে পূর্ণ হয়ে যাবে। সকলের কলেমা এক হয়ে যাবে। আল্লাহ ব্যতীত কারো ইবাদত করা হইবে না। যুদ্ধ-বিগ্রহ তাহার সাজসরঞ্জাম রেখে দিবে। কুরাইশদের রাজত্বের অবসান হইবে। পৃথিবী রুপার পাত্রের ন্যায় স্বচ্ছ হয়ে যাবে। তাতে এমন সব ফলমূল উৎপন্ন হইবে যেমনটি আদম [আঃ]-এর যুগে উৎপাদিত হতো। এমনকি কয়েকজন লোক একটি আঙ্গুরের থোকার মধ্যে একত্র হইতে পারবে এবং তা সকলকে পরিতৃপ্ত করিবে। অনেক লোক একটি ডালিমের জন্য একত্র হইবে এবং তা সকলকে পরিতৃপ্ত করিবে। তাহাদের বলদ গরু হইবে এই এই [উচ্চ] মূল্যের এবং ঘোড়া স্বল্পমূল্যে বিক্রয় হইবে। লোকজন বলিলেন, হে আল্লাহর রাসূল! ঘোড়া সস্তা হইবে কেন? তিনি বলেনঃ কারণ যুদ্ধের জন্য কখনো কেউ অশ্বারোহী হইবে না। তাহাঁকে জিজ্ঞাসা করা হলো, গরু অতি মূল্যবান হইবে কেন? তিনি বলেনঃ সারা পৃথিবীতে কৃষিকাজ সম্প্রসারিত হইবে।
দাজ্জালের আবির্ভাবের তিন বছর পূর্বে দুর্ভিক্ষ দেখা দিবে, তখন মানুষ চরমভাবে অন্নকষ্ট ভোগ করিবে। প্রথম বছর আল্লাহ তাআলা আসমানকে তিন ভাগের এক ভাগ বৃষ্টি আটকে রাখার নির্দেশ দিবেন এবং যমীনকে নির্দেশ দিলে তা এক– তৃতীয়াংশ ফসল কম উৎপাদন করিবে। এরপর তিনি আসমানকে দ্বিতীয় বছর একই নির্দেশ দিলে, তা দু –তৃতীয়াংশ কম বৃষ্টি বর্ষণ করিবে এবং যমীনকে হুকুম দিলে তাও দু –তৃতীয়াংশ কম ফসল উৎপন্ন করিবে। এরপর আল্লাহ তাআলা আকাশকে তৃতীয় বছরে একই নির্দেশ দিলে তা সম্পূর্ণভাবে বৃষ্টিপাত বন্ধ করে দিবে। ফলে এক ফোঁটা বৃষ্টিও বর্ষিত হইবে না। আর তিনি যমীনকে নির্দেশ দিলে তা শস্য উৎপাদন সম্পূর্ণ বন্ধ রাখবে। ফলে যমীনে কোন ঘাস জন্মাবে না, কোন সবজি অবশিষ্ট থাকিবে না, বরং তা ধ্বংস হয়ে যাবে, তবে আল্লাহ যা চাইবেন। জিজ্ঞাসা করা হলো, এ সময় লোকেরা কিরূপে বেঁচে থাকিবে? তিনি বলেনঃ যারা তাহলীল [লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ], তাকবীর [আল্লাহু আকবার], তাসবীহ [সুবহানাল্লাহ] ও তাহমীদ [আলহামদু লিল্লাহ] বলিতে থাকিবে এগুলো তাহাদের খাদ্যনালিতে প্রবাহিত করা হইবে।
আবু আবদুল্লাহ ইবনি মাজাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, আমি আবুল হাসান আত-তানাফিসী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] থেকে শুনিয়াছি। তিনি বলেছেন, আমি আবদুর রহমান আল-মুহারিবী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-কে বলিতে শুনিয়াছি যে, এই হাদিসখানি মকতবের উস্তাদগণের কাছে পৌঁছানো প্রয়োজন, যাতে তাহারা বাচ্চাদের এটা শিক্ষা দিতে পারেন। {৩৪০৯}
{৩৪০৯} { আবু দাউদ ৪৩২১। মিশকাত ৬০৪৪,আয যিলাল ৩৯১ ,দঈফ আল-জামি ৬৩৮৪।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৪০৭৮ আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নবী [সাঃআঃ] বলেনঃ ঈসা বিন মরিয়ম [আঃ] ন্যায়পরায়ণ শাসক ও ইনসাফগার ঈমাম হিসাবে অবতরণ না করা পর্যন্ত কিয়ামত সংঘটিত হইবে না। তিনি ক্রুশ ভেঙ্গে ফেলবেন, শূকর হত্যা করবেন, জিযয়া মওকুফ করবেন এবং ধন-সম্পদের প্রাচুর্য হইবে, এমনকি তা কেউ গ্রহণ করিবে না। {৩৪১০}
{৩৪১০} সহীহুল বূখারী ২২২২, ২৪৭৬, ৩৪৪৮, মুসলিম ১৫৫, তিরমিজি ২২৩৩, আবু দাঊদ ৪৩২৪, আহমাদ ১০০৩২, ১০৫৬১। সহীহাহ ২৪৫৭।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪০৭৯ আবু সাঈদ আল-খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ ইয়াজূজ-মাজূজকে ছেড়ে দেয়া হইবে, অতঃপর তাহারা বের হইবে, যেমন আল্লাহ তাআলা বলেছেনঃ “তাহারা প্রত্যেক উচ্চভূমি থেকে ছুটে আসবে” [সূরা আম্বিয়াঃ ৯৬] এবং তাহারা সর্বত্র ছড়িয়ে পড়বে। মুসলমানগণ তাহাদের থেকে পৃথক হয়ে যাবে এবং অবশিষ্ট মুসলমানরা তাহাদের শহরে ও দূর্গে আশ্রয় নিবে। সেখানে তাহারা তাহাদের গবাদি পশুও সাথে করে নিয়ে যাবে। ইয়াজূজ ও মাজূজের অবস্থা এই হইবে যে, তাহাদের লোকগুলো একটি নহরের পাশ দিয়ে অতিক্রম করিবে এবং তাহার পানি পান করে নিঃশেষ করে ফেলবে, এক ফোঁটা পানিও অবশিষ্ট থাকিবে না। এরপর এদের দলের অবশিষ্টরা তাহাদের অনুসরণ করিবে। তখন তাহাদের মধ্যে কেউ বলবে, এখানে হয়তো কখনো পানি ছিলো। পৃথিবীতে তাহারা আধিপত্য বিস্তার করিবে। অতঃপর তাহাদের কেউ বলবে, আমরা তো পৃথিবীবাসীদের থেকে অবসর হয়েছি। এবার আমরা আসমানবাসীদের বিরুদ্ধে লড়বো। শেষে এদের কেউ আকাশের দিকে বর্শা নিক্ষেপ করিবে। তা রক্তে রঞ্জিত হয়ে ফিরে আসবে। তখন তাহারা বলবে, আমরা আসমানবাসীদেরও হত্যা করেছি। তাহাদের এ অবস্থায় থাকতে আল্লাহ তাআলা টিড্ডি বাহিনী পাঠাবেন এবং সেগুলো ঘাড়ে প্রবেশ করার ফলে এরা সকলে ধ্বংস হয়ে একে অপরের উপর পড়ে মরে থাকিবে। মুসলমানগণ সকালবেলা উঠে তাহাদের বীভৎস চীৎকার শুনতে না পেয়ে বলবে, এমন কে আছে যে তাহার নিজের জীবনকে বিক্রয় করিবে এবং ইয়াজূজ-মাজূজেরা কী করছে তা দেখে আসবে? তখন তাহাদের মধ্যকার এক ব্যক্তি ইয়াজূজ-মাজূজ কর্তৃক নিহত হওয়ার পূর্ণ ঝুঁকি নিয়ে বের হয়ে এসে এদেরকে মৃত অবস্থায় দেখিতে পেয়ে মুসলমানদের ডেকে বলবে, তোমরা সুসংবাদ গ্রহণ করো, তোমাদের শত্রুরা ধ্বংস হইয়াছে। লোকজন [তাহার ডাক শুনে] বের হয়ে আসবে এবং তাহাদের গবাদি পশু চারণভূমিতে ছেড়ে দিবে। সেগুলোর চারণভূমিতে ইয়াজূজ-মাজূজের গোশত ছাড়া আর কিছুই থাকিবে না। ওরা তাহাদের গোশত খেয়ে বেশ মোটাতাজা হইবে, যেমন কখনো ঘাস– পাতা খেয়ে মোটা তাজা হয়। {৩৪১১}
{৩৪১১} { আহমাদ ১১৩২৩ । সহীহাহ ১৭৯৩ ।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহীহ
৪০৮০ আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ নিশ্চয় ইয়াজূজ-মাজূজ প্রতিদিন সুড়ঙ্গ পথ খনন করিতে থাকে। এমনকি যখন তাহারা সূর্যের আলোকরশ্মি দেখার মতো অবস্থায় পৌঁছে যায় তখন তাহাদের নেতা বলে, তোমরা ফিরে চলো, আগামী কাল এসে আমরা খনন কাজ শেষ করিব। অতঃপর আল্লাহ তাআলা [রাতের মধ্যে] সেই প্রাচীরকে আগের চেয়ে মজবুত অবস্থায় ফিরিয়ে দেন। যখন তাহাদের আবির্ভাবের সময় হইবে এবং আল্লাহ তাআলা তাহাদেরকে মানবকুলের মধ্যে পাঠাতে চাইবেন, তখন তাহারা খনন কাজ করিতে থাকিবে। শেষে যখন তাহারা সূর্যরশ্মি দেখার মত অবস্থায় পৌঁছবে তখন তাহাদের নেতা বলবে, এবার ফিরে চলো, ইনশাআল্লাহ আগামী কাল অবশিষ্ট খনন কাজ সম্পন্ন করিব। তাহারা ইনশাআল্লাহ শব্দ ব্যবহার করিবে। সেদিন তাহারা ফিরে যাবে এবং প্রাচীর তাহাদের রেখে যাওয়া ক্ষীণ অবস্থায় থেকে যাবে। এ অবস্থায় তাহারা খনন কাজ শেষ করে লোকালয়ে বের হয়ে আসবে এবং সমুদ্রের পানি পান করে শেষ করিবে। মানুষ তাহাদের ভয়ে পালিয়ে দূর্গে মধ্যে আশ্রয় নিবে। তাহারা আকাশপানে তাহাদের তীর নিক্ষেপ করিবে। রক্তে রঞ্জিত হয়ে তা তাহাদের দিকে ফিরে আসবে। তখন তাহারা বলবে, আমরা পৃথিবীবাসীদের চরমভাবে পরাভূত করেছি এবং আসমানবাসীদের উপরও বিজয়ী হয়েছি। অতঃপর আল্লাহ তাহাদের ঘাড়ে এক ধরনের কীট সৃষ্টি করবেন। কীটগুলো তাহাদের হত্যা করিবে। রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ সেই মহান সত্তার শপথ যাঁর হাতে আমার প্রাণ! ভূপৃষ্ঠের গবাদি পশুগুলো সেগুলোর গোশত খেয়ে মোটাতাজা হয়ে মাংসল হইবে।{৩৪১২}
{৩৪১২} তিরমিজি ৩১৫৩। সহীহাহ ১৭৩৫৮।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪০৮১আবদুল্লাহ বিন মাসঊদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] মিরাজ গমনের রাতে ইবরাহীম [আঃ], মূসা ও ঈসা [আঃ]-এর সাক্ষাত লাভ করেন। তাঁরা পরস্পর কিয়ামত সম্পর্কে আলোচনায় প্রবৃত্ত হন। তাঁরা প্রথমে ইবরাহীম [আঃ]-এর কাছে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে কিয়ামত সম্পর্কিত কোন জ্ঞান তাহাঁর ছিলো না। অতঃপর তাঁরা মূসা [আঃ- কে জিজ্ঞেস করিলে তাহাঁরও এ সম্পর্কে কোন জ্ঞান ছিলো না। অতঃপর বিষয়টি ঈসা বিন মরিয়ম [আঃ]–এর নিকট পেশ করা হলে তিনি বলেনঃ আমার থেকে কিয়ামতের নিকটবর্তী সময়ে দুনিয়াতে প্রত্যাবর্তনের প্রতিশ্রুতি নেয়া হইয়াছে। কিন্তু কিয়ামতের সঠিক জ্ঞান আল্লাহ ব্যতীত কারো কাছে নেই। অতঃপর তিনি দাজ্জালের আবির্ভাবের কথা উল্লেখ করে বলেনঃ আমি দুনিয়াতে অবতরণ করিব এবং দাজ্জালকে হত্যা করিব। অতঃপর লোকেরা তাহাদের নিজ নিজ দেশে ফিরে যাবে। ইত্যবসরে তাহাদের নিকট ইয়াজূজ-মাজূজ আত্মপ্রকাশ করিবে। তাহারা প্রতিটি উচুঁ ভূমি থেকে ছুটে আসবে। তাহারা যে পানির উৎসের নিকট দিয়ে অতিক্রম করিবে তা পান করে শেষ করিবে। এরা যে বস্তুর নিকট দিয়ে যাবে তা নষ্ট করে ফেলবে। তখন লোকেরা তাহাদেরকে মেরে ফেলার জন্য আল্লাহর নিকট চীৎকার করে ফরিয়াদ করিবে এবং আমিও দুআ করিব। ফলে পৃথিবী তাহাদের [গলিত লাশের] গন্ধে দুর্গন্ধময় হয়ে যাবে। ফলে আল্লাহ আসমান থেকে বৃষ্টি বর্ষণ করবেন, যা তাহাদের ভাসিয়ে নিয়ে সমুদ্রে নিক্ষেপ করিবে। অতঃপর পাহাড় –পর্বত উৎপাটিত করা হইবে, পৃথিবীকে প্রশস্ত করা হইবে, যেমন চামড়া প্রশস্ত করা হয়। তাহারপর আমাকে বলা হলোঃ যখন এসব বিষয় প্রকাশিত হইবে তখন কিয়ামত মানুষের এতো নিকটবর্তী হইবে যেমন গর্ভবতী নারী, যাহার পরিবারের লোকজন জানেনা যে, কোন মুহুর্তে সে সন্তান প্রসব করিবে। আওয়াম [রাদি.] বলেন, এ ঘটনার সত্যতা আল্লাহর কিতাবে বিদ্যমান আছেঃ “এমনকি যখন ইয়াজূজ ও মাজূজকে মুক্তি দেয়া হইবে এবং এরা প্রতিটি উচ্চভূমি থেকে ছুটে আসবে” [সূরা আম্বিয়াঃ ৯৬]। {৩৪১৩}
{৩৪১৩} { আহমাদ ৩৫৪৬ ,দঈফাহ ৪৩১৮ ।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৩৪. অধ্যায়ঃ ঈমাম মাহদী [আঃ] এর আবির্ভাব
৪০৮২ আবদুল্লাহ[রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, একদা আমরা যখন রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর নিকটে বসা ছিলাম, তখন হাশিম বংশীয় কতক যুবক তাহাঁর নিকট উপস্থিত হলো। তাহাদের দেখিতে পেয়ে নবী [সাঃআঃ] এর চক্ষুদ্বয় অশ্রুসিক্ত হলো এবং তাহাঁর চেহারা বিবর্ণ হয়ে গেলো। রাবী বলেন, আমি বললাম, আমরা সবসময় আপনার চেহারায় দুশ্চিন্তার ছাপ লক্ষ্য করি। তিনি বলেনঃ আমাদের আহলে বাইতের জন্য আল্লাহ তাআলা পার্থিব জীবনে পরিবর্তে আখিরাতের জীবনকে পছন্দ করিয়াছেন। আমার আহলে বাইত আমার পরে অচিরেই কঠিন বিপদে লিপ্ত হইবে, কষ্ট-কাঠিন্যের শিকার হইবে এবং দেশান্তরিত হইবে। প্রাচ্যদেশ থেকে কালো পতাকাধারী কতক লোক তাহাদের সাহায্যার্থে এগিয়ে আসবে। তাহারা কল্যাণ[গুপ্তধন] কামনা করিবে, কিন্তু তা তাহাদের দেওয়া হইবে না। তাহারা লড়াই করিবে এবং বিজয়ী হইবে। শেষে তাহাদেরকে তা দেয়া হইবে, যা তাহারা চেয়েছিল। কিন্তু তাহারা তা গ্রহণ করিবে না। অবশেষে আমার আহলে বাইতের একজন লোকের নিকট তা সোপর্দ করা হইবে। সে পৃ্থিবীকে ইনসাফে পরিপূর্ণ করিবে, যেমনিভাবে লোকেরা একে যুলুমে পূর্ণ করেছিল। তোমাদের মধ্যে যারা সে যুগ পাবে, তাহারা যেন বরফের উপর হামাগুড়ি দিয়ে হলেও তাহাদের নিকট চলে যায়। {৩৪১৪}
{৩৪১৪} { হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। রাওদুন নাদীর ৬৪৭।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৪০৮৩ আবু সাঈদ আল-খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
, নবী [সাঃআঃ] বলেন, মাহদী আমার উম্মাত থেকেই আবির্ভুত হইবে। তিনি কমপক্ষে সাত বছর অন্যথায় নয় বছর দুনিয়াতে অবস্থান করবেন। তাহার যুগে আমার উম্মাত অযাচিত প্রাচুর্যের অধিকারী হইবে ইতোপূর্বে কখনো তদ্রুপ হয়নি। পৃথিবী তাহার সর্ব প্রকার খাদ্যসম্ভার পর্যাপ্ত উৎপন্ন করিবে এবং কিছুই প্রতিরোধ করে রাখবে না। সম্পদের স্তুপ গড়ে উঠবে। লোকে দাঁড়িয়ে বলবে, হে মাহদী, আমাকে দান করুন। তিনি বলবেন, তোমার যতো প্রয়োজন নিয়ে যাও। {৩৪১৫}
{৩৪১৫} {তিরমিজি ২২৩২, আবু দাউদ ৪২৮৫। রাওদুন নাদীর ৬৪৭।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
৪০৮৪ সাওবান [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমাদের একটি খনিজ সম্পদের নিকট পরপর তিনজন খলীফার পুত্র নিহত হইবে। তাহাদের কেউ সেই খনিজ সম্পদ দখল করিতে পারবে না। অতঃপর প্রাচ্যদেশ থেকে কালো পতাকা উড্ডীন করা হইবে। তাহারা তোমাদেরকে এত ব্যাপক ভাবে হত্যা করিবে যে, ইতোপূর্বে কোন জাতি তদ্রুপ করে নি। অতঃপর রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আরো কিছু বলেছেনঃ যা আমার মনে নেই। তিনি আরো বলেনঃ তাহাকে আত্মপ্রকাশ করিতে দেখলে তোমরা বরফের উপর হামাগুড়ি দিয়ে হলেও তাহার সাথে যোগদান করো। কারণ সে আল্লাহর খলীফা মাহদী। {৩৪১৬}
{৩৪১৬} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন।দঈফাহ ৮৫।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৪০৮৫ আলী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, মাহদী আমাদের আহলে বাইত থেকে হইবে। আল্লাহ তাআলা তাহাকে একরাতে খিলাফতের যোগ্য করবেন। {৩৪১৭}
{৩৪১৭} আহমাদ ৬৪৬ সহীহাহ ২৩৭১ রাওদুন নাদীর ২/৫৩। কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
৪০৮৬ সাঈদ ইবনিল মুস্যায়ব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
আমরা উম্মু সালামাহ [রাদি.] এর নিকট বসা ছিলাম। আমরা পরস্পর মাহদী সম্পকে আলোচনা করছিলাম। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে বলিতে শুনিয়াছি, মাহদী ফাতেমার বংশধর। {৩৪১৮}
{৩৪১৮} আবু দাঊদ ৪২৮৪। দঈফাহ ১/১০৮, রাওদুন নাদীর ২/৫৪।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪০৮৭ আনাস বিন মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বলেছেন, আমরা আব্দুল মুত্তালিবের বংশধর এবং জান্নাতবাসীর নেতাঃ আমি, হামযা, আলী, জাফর, হাসান, হুসাইন ও মাহ্দী। {৩৪১৯}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ বানোয়াট।{৩৪১৯} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। দঈফাহ ৪৬৮৮, দঈফ আল-জামি ৫৯৫৫।উক্ত হাদিসের রাবি হাদিয়্যাহ বিন আব্দুল ওয়াহ্হাব সম্পর্কে আবু হাতিম বিন হিব্বান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় কখনো কখনো ভুল করেন। ইবনি আবু আসিম বলেন, তিনি সিকাহ। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় কখনো কখনো সন্দেহ করেন। ঈমাম যাহাবী বলেন, তিনি সিকাহ। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৬৫৫৪, ৩০/১৫৮ নং পৃষ্ঠা] ২. সাঈদ বিন আব্দুল হামীদ বিন জাফার সম্পর্কে ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ করেন। যাকারিয়্যা বিন ইয়াহইয়া আস সাজী বলেন, তাহার হাদিসের ব্যাপারে সমালোচনা রয়েছে। সালিহ বিন মুহাম্মাদ বলেন, তাহার স্মৃতিশক্তি দুর্বল।[তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ২২১৮, ১০/২৮৫নং পৃষ্ঠা] ৩. আলী বিন যিয়াদ আল-ইয়ামামী সম্পর্কে আবু জাফার আল-উকায়লী তাহাকে দুর্বল হিসেবে উল্লেখ করিয়াছেন। আবু হাতিম বিন হিব্বান বলেন, তিনি সিকাহ। ঈমাম বুখারী বলেন তিনি কুফরী নয় এমন কওলী বা আমালী কোন ফিসক এর সাথে জড়িত।[তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৪০৬৯, ২০/৪৩৩ নং পৃষ্ঠা] ৪. ইকরিমাহ বিন আম্মার সম্পর্কে আবু হাতিম আর রাযী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় কখনো কখনো সন্দেহ করেন। আহমাদ বিন সালিহ আল-জায়লী বলেন, তিনি সিকাহ। আবনু হাজার আল আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ করেন।[তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৪০০৮, ২০/২৫৬ নং পৃষ্ঠা]কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ জাল হাদিস
৪০৮৮ আব্দুল্লাহ ইবনিল হারিস বিন জাষই আয-যাবীদী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ প্রাচ্য দেশে থেকে কতক লোকের উত্থান হইবে এবং তাহারা মাহ্দীর রাজত্ব প্রতিষ্ঠিত করিবে। {৩৪২০}
{৩৪২০} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। দঈফাহ ৪৮২৬, দঈফ আল-জামি ৬৪২১।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৩৫. অধ্যায়ঃ ভয়ংকর যুদ্ধ-সংঘর্ষ সম্পর্কে
৪০৮৯ জুবায়র বিন নুফায়র হইতে বর্ণীতঃ
রাসূল [সাঃআঃ] এর কোন এক সাহাবী যী মিখমার [রাদি.] [হাস্সান] বলেন, মাকহূল, বিন যাকারিয়্যা এবং তাহাদের সাথে আমিও খালিদ বিন মাদান [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] এর নিকট গেলাম। তিনি জুবাইর বিন নূফাইর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] এর সুত্রে আমাদের নিকট হাদিস বর্ণনা করে বলেন, জুবাইর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] আমাকে বলেন, তুমি আমাদের সাথে যু মিখমারের নিকট চলো। তিনি ছিলেন নবী [সাঃআঃ] এর সাহাবী। আমিও তাহাদের দুজনের সাথে গেলাম। তিনি তাহাকে সন্ধি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেন। উত্তরে তিনি বলেন, আমি নবী [সাঃআঃ] কে বলিতে শুনেছিঃ অচিরেই রোমকরা আমাদের সাথে শান্তি চুক্তি করিবে। অতঃপর তোমরা [তাহাদের বিরুদ্ধে] যুদ্ধ করিবে এবং তোমরা ও তাহারা [পরস্পরের] শত্রু হইবে। এরপর তোমরা বিজয়ী হইবে এবং গনীমতের মাল লাভ করিবে। তোমরা নিরাপদ থাকিবে এবং [যুদ্ধ থেকে] ফিরে আসবে। এমনকি তোমরা সুবজ-শ্যামল উচ্চ স্থানে অবতরণ করিবে। তখন ক্রুশধারীদের মধ্যকার এক ব্যক্তি[ক্রুশ] উত্তোলন করে বলবে, সালীব [ক্রুশ] বিজয়ী হইয়াছে। তখন এক মুসলমান ক্রোধান্বিত হয়ে ক্রুশের নিকট গিয়ে তা চুর্ণ-বিচুর্ণ করিবে। তখন রোমকরা সন্ধি ভঙ্গ করিবে এবং তাহাদের সকলে যুদ্ধের জন্য ঐক্যবদ্ধ হইবে।
[উপরোক্ত হাদীসে মোট ২টি সানাদের ১টি বর্ণিত হইয়াছে, অপর সানাদটি হলো।ঃ] ২/৪০৮৯[১]. রাসূল [সাঃআঃ] এর কোন এক সাহাবী যী মিখমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ তবে তাহার বর্ণনায় আরো আছেঃ তাহারা যুদ্ধের জন্য ঐক্যবদ্ধ হইবে এবং আশিটি পতাকার অধীনে যুদ্ধক্ষেত্রে অবতীর্ণ হইবে। প্রতিটি পতাকার অধীনে থাকিবে বারো হাজার সৈন্য। {৩৪২১}{৩৪২১} আবু দাঊদ ২৭৬৭, ৪২৯২, আহমাদ ১৬৩৮৪, ২২৬৪৬, ২২৯৬৬। সহীহ আবু দাঊদ ২৪৭২, মিশকাত ৫৪২৮।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪০৯০ আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যখন বড় বড় যুদ্ধ সংঘটিত হইবে, তখন আল্লাহ্ তাআলা মাওয়ালীদের সমন্বয়ে গঠিত একটি সেনাবাহিনী পাঠাবেন। তাহারা হইবে সমগ্র আরবে সর্বাধিক দক্ষ অশ্বারোহী এবং উন্নততর সমরাস্ত্রে সজ্জিত। আল্লাহ্ তাআলা তাহাদের দ্বারা দ্বীন ইসলামের সাহায্য করবেন। {৩৪২২}
{৩৪২২} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। তাখরীজু ফাদাইলুশ শাম ২৮, সহীহাহ ২৭৭৭।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
৪০৯১ নাফি বিন উতবাহ বিন আবু ওয়াক্কাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নবী [সাঃআঃ] বলেনঃ তোমরা আরব উপদ্বীপে যুদ্ধ করিবে। আল্লাহ্ তা তোমাদের অধীনে করে দিবেন। অতঃপর তোমরা রোমকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করিবে। আল্লাহ্ সেখানেও তোমাদের বিজয়ী করবেন। অতঃপর তোমরা দাজ্জালের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করিবে। আল্লাহ্ তাহার বিরুদ্ধেও তোমাদের জয়যুক্ত করবেন। জাবির [রাদি.] বলেন, রোম বিজিত না হওয়া পর্যন্ত দাজ্জাল আবির্ভূত হইবে না।{৩৪২৩}
{৩৪২৩} মুসলিম ২৯০০, আহমাদ ১৮৪৯৩। কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪০৯২ মুআয বিন জাবাল [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
বর্ণিতঃ নবী [সাঃআঃ] বলেনঃ ঘোরতর যুদ্ধ, কনস্টান্টিনোপল বিজয় এবং দাজ্জালের আবির্ভাব সাত মাসের মধ্যে হইবে। {৩৪২৪}
{৩৪২৪} তিরমিজি ২২৩৮, আবু দাউদ ৪২৯৫। মিশকাত ৫৪৫২, দঈফ আল-জামি ৫৯৪৫।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৪০৯৩ আব্দুল্লাহ বিন বুসর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যুদ্ধ ও মদীনা [কনস্টান্টিনোপল] বিজয়ের মাঝখানে সময়ের ব্যবধান হইবে ছয় বছর এবং সপ্তম বর্ষে দাজ্জালের আবির্ভাব হইবে। {৩৪২৫}
{৩৪২৫} আবু দাউদ ৪২৯৬। মিশকাত ৫৪২৬।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৪০৯৪ আমর বিন আওফ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ নিকটবর্তী বাওনা নামক স্থান অস্ত্র সজ্জিত মুসলমানদের পদানত না হওয়া পর্যন্ত কিয়ামত সংঘটিত হইবে না। অতঃপর তিনি বলেনঃ হে আলী! হে আলী! হে আলী! আলী [রাদি.] বলেন, আমার পিতা-মাতা আপনার জন্য উৎসর্গিত হোক। তিনি বলেনঃ অচিরেই বনু আসফারের [রোমকদের] বিরুদ্ধে যুদ্ধ করিবে। তাহাদের বিরুদ্ধে তোমাদের পরবর্তী হিজাযের মুসলমানগণ ও যারা আল্লাহ্র ব্যাপারে কোন নিন্দুকের নিন্দায় কর্ণপাত করে না, যুদ্ধে অবতীর্ণ হইবে, যতক্ষণ না তাহাদের কাছে ইসলামের শাশ্বত বিধান বিকশিত হয়। অতঃপর তাহারা তাসবীহ ও তাকবীর ধ্বনি দিয়ে কনস্টান্টিনোপল জয় করিবে। ফলে এতো অধিক পরিমাণে গনীমতের মাল তাহাদের হস্তগত হইবে যতোটা ইতোপূর্বে কখনো তাহাদের হস্তগত হয়নি। এমনকি তাহারা খাঞ্চা ভর্তি করে নিজেদের মধ্যে বন্টন করিবে। অতঃপর এক আগন্তুক এসে বলবে, তোমাদের শহরে মসীহ দাজ্জালের আবির্ভাব ঘটেছে। সাবধান! সে খবরটি হইবে মিথ্যা। সুতরাং এর গ্রহীতাও লজ্জিত হইবে এবং আগ্রাহ্যকারীও লজ্জিত হইবে। {৩৪২৬}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ বানোয়াট।{৩৪২৬} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। দঈফাহ ৪৭৯০, দঈফ আল-জামি ৭৬২৬।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ জাল হাদিস
৪০৯৫ আওফ বিন মালিক আল-আশজাঈ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ অচিরেই তোমাদের ও বনু আসফারের [রোমক] মধ্যে চুক্তি হইবে। অতঃপর তাহারা তোমাদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করিবে। তাহারা তোমাদের বিরুদ্ধে [যুদ্ধের জন্য] আশিটি পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ হইবে। প্রতিটি পতাকার অধীনে থাকিবে বারো হাজার সৈন্য। {৩৪২৭}
{৩৪২৭} সহীহুল বূখারী ৩১৭৬, আবু দাঊদ ৫০০০, আহমাদ ২৩৪৫১, ২৩৪৫৯, ২৩৪৬৫, ২৩৪৭৬। সহীহ আল-জামি ২৯৯১।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩৬. অধ্যায়ঃ তুর্কীজাতি
৪০৯৬ আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কিয়াতম সংঘটিত হইবে না, যাবত না তোমরা এমন এক জাতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করিবে, যারা পশমী পাদুকা পরিধান করে। কিয়ামত সংঘটিত হইবে না, যাবত না তোমরা এমন এক জাতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করিবে যারা হইবে ক্ষুদ্র চোখ বিশিষ্ট।{৩৪২৮}
{৩৪২৮} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ২৯২৮, ২৯২৯, মুসলিম ২৯১্ তিরমিজি ২২১৫, আবু দাউদ ৪২০৩, ৪৩০৪, আহমাদ ৭২২২, ৭৬১৯, ৭৯২৭, ২৭৪৬০, ৮৯২১, ৯৭৯৬, ১০০২৪, ১০৪৭৬।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪০৯৭ আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমরা ক্ষুদ্র চোখ এবং উন্নত ও চপ্টা নাকবিশিষ্ট এক জাতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ না করা পর্যন্ত কিয়ামত সংঘটিত হইবে না। তাহাদের চেহারা হইবে রক্তিম বর্ণ। তোমরা এমন এক জাতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ না করা পর্যন্ত কিয়ামত সংঘটিত হইবে না, যাদের পাদুকা হইবে পশমযুক্ত।{৩৪২৯}
{৩৪২৯} সহীহুল বূখারী ২৯২৮, ২৯২৯, মুসলিম ২৯১২, তিরমিজি ২২১৫, আবু দাঊদ ৪২০৩, ৪৩০৪, আহমাদ ৭২২২, ৭৬১৯, ৭৯২৭, ২৭৪৬০, ৮৯২১, ৯৭৯৬, ১০০২৪, ১০৪৭৬।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪০৯৮ আমর বিন তাগলিব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি নবী [সাঃআঃ] কে বলিতে শুনেছিঃ কিয়ামতের নিদর্শনসমূহের মধ্যে একটি এই যে, তোমরা এমন এক জাতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করিবে যাদের মুখাবয়ব হইবে চওড়া ও রক্তিমাভ। কিয়ামতের আরেকটি নিদর্শন এই যে, তোমরা এমন এক জাতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করিবে, যারা পশমী জুতা পরিধান করে। {৩৪৩০}
{৩৪৩০} সহীহুল বূখারী ২৯২৭, আহমাদ ২০১৫১, ২০১৫৩। কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪০৯৯ আবু সাঈদ আল-খূদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কিয়ামত সংঘটিত হইবে না, যাবত না তোমরা ক্ষুদ্র চোখ এবং চেপ্টা মুখাবয়ববিশিষ্ট এমন এক জাতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করিবে, যাদের চোখ হইবে ফড়িং-এর চোখের মত। তাহাদের চেহারাগুলো হইবে রক্তিমাভ। তাহারা পশমী জুতা পরিধান করিবে এবং আত্মরক্ষার্থে চামড়ার ঢাল ব্যবহার করিবে। তাহারা তাহাদের ঘোড়াগুলো খেজুর গাছের সাথে বেঁধে রাখবে। {৩৪৩১}
{৩৪৩১} আহমাদ ১০৮৬৮। সাহীহাহ ২৪২৯।কিয়ামতের আলামত ইয়াজূজ মাজূজ ঈসা মাহদী তুর্কীজাতি হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহীহ
Leave a Reply