যবেহ করা । আকীকা ও আল্লাহর নাম উচ্চারণ করা

যবেহ করা । আকীকা ও আল্লাহর নাম উচ্চারণ করা

যবেহ করা । আকীকা ও আল্লাহর নাম উচ্চারণ করা , এই অধ্যায়ে মোট =৩৮ টি হাদীস (৩১৬২ – ৩১৯৯) >> সুনানে ইবনে মাজাহ হাদিস এর মুল সুচিপত্র পড়ুন

পর্বঃ ২৭-যবেহ করা, অধ্যায়ঃ (১-১৫)=১৫টি, হাদীস (৩১৬২ – ৩১৯৯)

২১/১. অধ্যায়ঃ আকীকা
২১/২. অধ্যায়ঃ ফারাআ ও আতীরা
২১/৩. অধ্যায়ঃ যবেহ করার সময় তোমরা উত্তমরূপে যবেহ করো
২১/৪. অধ্যায়ঃ যবেহ করার সময় আল্লাহর নাম উচ্চারণ করা
২১/৫. অধ্যায়ঃ যে অস্ত্র দিয়ে যবেহ করা যায়
২১/৬. অধ্যায়ঃ চামড়া ছাড়ানো
২১/৭. অধ্যায়ঃ দুগ্ধবতী পশু যবেহ করা নিষেধ
২১/৮. অধ্যায়ঃ স্ত্রীলোকের যবেহকৃত পশুর বিধান
২১/৯. অধ্যায়ঃ পলায়নপর পশু যবেহ করার বর্ণনা
২১/১০. অধ্যায়ঃ কোন প্রাণীকে চাঁদমারির লক্ষ্যবস্তু বানানো বা তাহার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কর্তন করা নিষেধ
২১/১১. অধ্যায়ঃ বিষ্ঠা খাওয়ায় অভ্যস্ত [হালাল] পশু-পাখি খাওয়া নিষেধ
২১/১২. অধ্যায়ঃ ঘোড়ার গোশ্‌ত
২১/১৩. অধ্যায়ঃ বন্য গাধার গোশ্‌ত
২১/১৪. অধ্যায়ঃ খচ্চরের গোশ্‌ত
২১/১৫. অধ্যায়ঃ পেটের বাচ্চার জন্য তাহার মায়ের যবেহ-ই যথেষ্ট

২১/১. অধ্যায়ঃ আকীকা

৩১৬২ উম্মু কুরয [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি নবী [সাঃআঃ] কে বলিতে শুনেছিঃ পুত্র সন্তানের পক্ষ থেকে দুটি বকরী এবং কন্যা সন্তানের পক্ষ থেকে একটি বকরী [আকীকাস্বরূপ যবেহ করা] যথেষ্ট। {৩১৬২}

{৩১৬২} তিরমিজি ১৫১৬, নাসাঈ ৪২১৫, ৪২১৬, ৪২১৭, ৪২১৮, আবু দাউদ ২৮৩৪, ২৮৩৫, ২৮৩৬, দারেমী ১৯৬৬। ইরওয়া ৪/৩৯০, ৩৯১, সহীহ আবু দাউদ ২৫২৩-২৫২৬।যবেহ করা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩১৬৩ আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদেরকে পুত্র সন্তানের পক্ষ থেকে দুটি বকরী এবং কন্যা সন্তানের পক্ষ থেকে একটি বকরী দিয়ে আকীকা করার জন্য নির্দেশ দিয়াছিছেন। {৩১৬৩}

{৩১৬৩} তিরমিজি ১৫১৩, ইরওয়া ১১৬৬। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।যবেহ করা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩১৬৪ সালামান বিন আমির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি নবী [সাঃআঃ] কে বলিতে শুনেছেনঃ শিশুর পক্ষ থেকে আকীকা করিতে হইবে অতএব তোমরা তাহার পক্ষ থেকে রক্ত প্রবাহিত করো [পশু যবেহ করো] এবং তাহার থেকে কষ্টদায়ক বস্তু দূর করো। {৩১৬৪}

{৩১৬৪} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ৫৪৭১, তিরমিজি ১৫১৫, নাসাঈ ৪২১৪, আবু দাউদ ২৮৩৯, আহমাদ ২৭৫৪২, ১৫৭৯৭, ১৭৪১৫, ১৭৪২৯, দারেমী ১৯৬৭, ইরওয়া ১১৭১, সহীহ আবু দাউদ ২৫২৯। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।যবেহ করা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩১৬৫ সামুরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] বলেনঃ প্রত্যেক শিশু তাহার আকীকার সাথে দায়বদ্ধ থাকে। তাহার জন্মের সপ্তম দিনে তাহার পক্ষ থেকে পশু যবেহ করিতে হয়, তাহার মাথা কামাতে হয় এবং নাম রাখতে হয়। {৩১৬৫}

{৩১৬৫} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ৫৪৭২, তিরমিজি ১৫৪৪, নাসাঈ ৪২২০, আবু দাউদ ২৮৩৭, ২৮৩৮, আহমাদ ১৯৫৭৯, ২৭৭০৯, ১৯৬৭৬, ১৯৭৪৩, দারেমী ১৯৬৯, ইরওয়া ১১৬৫, মিশকাত ৪১৫৩। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।যবেহ করা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩১৬৬ ইয়াযীদ বিন আবদ আল-মুযানী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] বলেনঃ শিশুর পক্ষ থেকে রক্ত প্রবাহিত করিতে হইবে [আকীকা করিতে হইবে] এবং তাহার মাথা পশুর রক্তে রঞ্জিত করা যাবে না। {৩১৬৬}

{৩১৬৬} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। ইরওয়া ৪/৩৮৮, ৩৮৯, সহীহাহ ২৪৫২। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি ১. ইয়াকুব বিন হুমায়দ বিন কাসিব সম্পর্কে আবু জাফার আল-উকায়লী বলেন, তাহার হাদিসের অনুসরণ করা যাবে না। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৭০৮৬, ৩২/৩১৮ নং পৃষ্ঠা] ২. ইয়াযীদ বিন আবদ আল-মুযানী সম্পর্কে ঈমাম যাহাবী বলেন, তিনি সিকাহ। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তাহার অবস্থা সম্পর্কে অজ্ঞাত। তাহরীরু তাকরীবুত তাহযীব এর লেখক বলেন, তাহার অবস্থা সম্পর্কে জানা যায়নি। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৭০২৬, ৩২/২০০ নং পৃষ্ঠা]উক্ত হাদিসটি সহীহ কিন্তু ইয়াযীদ বিন আবদ আল-মুযানী এর কারণে সানাদটি দুর্বল। সানাদে ইয়াকুব বিন হুমায়দ বিন কাসিব যদিও দুর্বল তবে তাহার মুতাবি রয়েছে। হাদিসটির ২২৯ টি শাহিদ হাদিস রয়েছে। ১ টি জাল, ১৭ টি খুবই দুর্বল, ১২৬ টি দুর্বল, ৭২ টি হাসান, ১৩ টি সহীহ হাদিস পাওয়া যায়। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলঃ তিরমিজি ১৫১৩, ১৫১৬, আবু দাউদ ২৮৩৪, ২৮৩৫, ২৮৩৬, ২৮৩৬, ২৮৪২, দারেমী ১৯৯৬, ১৯৬৮, মুয়াত্তা মালিক ১০৮২, আহমাদ ৬৬৯৮, ৬৭৮৩, ২২৬২৩, মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক ৭৯৫৩, ৭৯৫৪, ৭৯৫৫।যবেহ করা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২১/২. অধ্যায়ঃ ফারাআ ও আতীরা

৩১৬৭ নুবায়শাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে ডাক দিয়ে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা জাহিলী যুগে রজব মাসে আতীরা করতাম। এখন আপনি আমাদের কী হুকুম করেন? তিনি বলেনঃ তোমরা যে কোন মাসে মহামহিম আল্লাহর জন্য পশু যবেহ করো, আল্লাহর সন্তোষ লাভের উদ্দেশ্যে কোন কাজ করো এবং [দরিদ্রদের] আহার করাও। সাহাবীগণ বলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমরা জাহিলী যুগে ফারাআ করতাম। এখন এ সম্পর্কে আপনি আমাদের কী বলেন? তিনি বলেনঃ প্রতিটি চরে বেড়ানো পশুতে ফারাআ রয়েছে, তাহাকে তোমরা ইচ্ছা অনুযায়ী আহার করাও এবং যখন ভারবোঝা বহনের উপযুক্ত হইবে তখন তা যবেহ করে তাহার গোশ্‌ত পথিকদের মধ্যে দান-খয়রাত করিলে তা তোমার জন্য কল্যাণকর। {৩১৬৭}

{৩১৬৭} নাসাঈ ৪২২৮, ৪২২৯, ৪২৩০, ৪২৩১, ৪২৩২, আবু দাউদ ২৮৩০, আহমাদ ২০১৯৮, ২০২০২, ইরওয়া ৪/৪১২, সহীহ আবু দাউদ ২৫১৯। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।যবেহ করা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩১৬৮ আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] বলেনঃ এখন আর ফারাআ নাই, আতীরাও নাই। হিশাম [রাদি.] তাহার বর্ণনায় বলেন, ফারাআ হলো উট বা ছাগল-ভেড়ার প্রথম বাচ্চা। আর আতীরা হলো কোন পরিবারের লোকেরা রজব মাসে যে বকরী যবেহ করে তা। {৩১৬৮}

{৩১৬৮} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ৫৪৭৩, ৫৪৭৪, মুসলিম ১৯৭৬, তিরমিজি ১৫১২, নাসাঈ ৪২২২, ৪২২৩, আবু দাউদ ২৮৩১, আহমাদ ৭০৯৫, ৭২১৫, ৭৬৯৩, ৯৯৮৩, দারেমী ১৯৬৪, ইরওয়া ১১৮০, আস-সহীহ ২৫২০, ২৫২১। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।যবেহ করা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩১৬৯ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] বলেনঃ এখন আর ফারাআও নাই, আতীরাও নাই। ইব্‌ন মাজাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, এটা কেবলমাত্র আল-আদানী কর্তৃক বর্ণিত হাদিস। {৩১৬৯}

{৩১৬৯} তিরমিজি ৯৪৪। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।যবেহ করা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২১/৩. অধ্যায়ঃ যবেহ করার সময় তোমরা উত্তমরূপে যবেহ করো

৩১৭০ শাদ্দাদ বিন আওস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ মহান আল্লাহ প্রতিটি জিনিসের জন্য দয়া ও অনুগ্রহ নির্ধারণ করিয়াছেন। অতএব যখন তোমরা হত্যা [যুদ্ধ] করো, তা উত্তম পন্থায় করো, যখন যবেহ করো, তাও উত্তম পন্থায় করো। তোমাদের প্রত্যেকে যেন নিজ নিজ চাক ধারালো করে নেয় এবং নিজের যবেহকৃত পশুকে আরাম দেয়। {৩১৭০}

{৩১৭০} মুসলিম ১৯৫৫, তিরমিজি ১৪০৯, নাসাঈ ৪৪০৫, ৪৪১১, ৪৪১২, ৪৪১৩, ৪৪১৪, আবু দাউদ ২৮১৫, আহমাদ ১৬৬৬৪, ১৬৬৭৯, ১৬৬৮৯, দারেমী ১৯৭০, ইরওয়া ২২৩১, রাওদুন নাদীর ৩৫৫, সহীহ আবু দাউদ ২৫০৬। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।যবেহ করা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩১৭১ আবু সাঈদ আল-খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] এক ব্যক্তির নিকট দিয়ে যাচ্ছিলেন। লোকটি তখন একটি বকরীর কান ধরে হেঁচড়ে টেনে নিয়ে যাচ্ছিল। তিনি বলেনঃ তুমি এর কান ছেড়ে দাও এবং ঘাড় ধরো। {৩১৭১}

{৩১৭১} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি মুসা বিন মুহাম্মাদ বিন ইবরাহিম আত-তায়মী সম্পর্কে আবু বাকর আল-বায়হাকী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। আবু জাফার আল-উকায়লী বলেন, তাহার হাদিসের অনুসরণ করা যাবে না। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, তাহার থেকে হাদিস গ্রহন করা যাবে না। আহমাদ বিন হাম্বল তাহাকে দুর্বল বলিতেন। ঈমাম দারাকুতনী বলেন, তিনি প্রত্যাখ্যানযোগ্য। ঈমাম যাহাবী বলেন, তিনি দুর্বল। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৬২৯৬, ২৯/১৩৯ নং পৃষ্ঠা] যবেহ করা হাদিসের তাহকিকঃ খুবই দুর্বল

৩১৭২ আবদুল্লাহ বিন উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ছুরি ধারালো করিতে এবং তা পশুর দৃষ্টির অগোচরে রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি আরও বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যবেহ করার সময় যেন দ্রুত যবেহ করে।

{উপরোক্ত হাদীসে মোট ২টি সানাদের ১টি বর্ণিত হইয়াছে, অপর সানাদটি হলোঃ}৪/৩১৭২ [১]. আবদুল্লাহ বিন উমার [রাদি.], নবী [সাঃআঃ] সূত্রে উপরোক্ত হাদিসের অনুরূপ বর্ণিত আছে। {৩১৭২}তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ দুর্বল।{৩১৭২} আহমাদ ৫৮৩০। গায়তুল মারাম ৩৯, আত তালীকুর রাগীব ২/১০৪।উক্ত হাদিসের রাবি ১. ইবনি লাহীআহ সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তাহার হাদিসের ব্যাপারে কোন সমস্যা নেই। আমর বিন ফাল্লাস বলেন, তাহার কিতাব সমূহ পুড়ে যাওয়ায় হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ করেন, কিতাবসমূহ পুড়ে যাওয়ার যে হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন তা দুর্বল। আবুল কাসিম বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ করেন। আবু বাক্‌র আল-বায়হাকী বলেন, তাহার হাদিস দলীল হিসেবে গ্রহণযোগ্য নয়। আবু হাতিম আর-রাযী তাহাকে দুর্বল বলেছেন। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে তাহার কিতাবসমূহ পুড়ে যাওয়ার পর হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ করেন। বিশর ইবনিস সারী বলেন, যদি তাহার সাথে আমার সাক্ষাৎ হতো তবে আমি তাহার থেকে কোন হাদিস গ্রহণ করতাম না। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৩৫১৩, ১৫/৪৮৭ নং পৃষ্ঠা] ২. জাফার বিন মুসাফির সম্পর্কে আবু হাতিম বিন হিব্বান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় কখনো কখনো ভুল করেন। আহমাদ বিন শুআয়ব আন নাসাঈ বলেন, তিনি সালিহ। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় কখনো কখনো ভুল করেন। ঈমাম যাহাবী বলেন, তিনি সত্যবাদী। [তাইযীবুল কামালঃ রাবী নং ৯৫৫, ৫/১০৮ নং পৃষ্ঠা]যবেহ করা হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

২১/৪. অধ্যায়ঃ যবেহ করার সময় আল্লাহর নাম উচ্চারণ করা

৩১৭৩ ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি “শয়তানেরা নিজেদের বন্ধুদের প্ররোচনা দেয়” [সূরা আনআমঃ২১] শীর্ষক আয়াত উল্লেখপূর্বক বলেন, শয়তানেরা বলে যে, যা আল্লাহর নাম নিয়ে যবেহ করা হইয়াছে তা ভক্ষণ করো না এবং যা আল্লাহর নাম বাদ দিয়ে যবেহ করা হইয়াছে তা খাও। অতএব মহামহিমান্বিত আল্লাহ বলেনঃ “যাতে আল্লাহর নাম নেয়া হয়নি তাহার কিছুই আহার করো না” [সূরা আনআমঃ ১২১]। {৩১৭৩}

৩১৭৩.নাসাঈ ৪৪৩৭, আবু দাউদ ২৮১৭, ২৮১৮, ২৮১৯, সহীহ আবু দাউদ ২৫০৯। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি সিমাক বিন হারব সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তিনি সিকাহ। ইয়াকুব বিন শায়বাহ বলেন, তাহার পূর্বে বর্ণিত হাদিস যারা শ্রবন করিয়াছেন তা সহীহ। ইবনি হিব্বান বলেন, তিনি সিকাহ তবে হাদিস বর্ণনায় অধিক ভুল করেন। আবদুল্লাহ ইবনিল মুবারাক বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ২৫৭৯, ১২/১১৫ নং পৃষ্ঠা]যবেহ করা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩১৭৪ উম্মুল মুমিনীন আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

একদল লোক বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! কতক লোক আমাদের নিকট গোশ্‌ত নিয়ে আসে। জানি না, [তা যবেহ করার সময়] আল্লাহর নাম নেয়া হইয়াছে কি না? তিনি বলেনঃ তোমরা আল্লাহর নাম উচ্চারণ করো এবং তা খাও। এটা ছিল তাহাদের কুফর পরিত্যাগের নিকটবর্তী কালের বিষয়। {৩১৭৪}

{৩১৭৪} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ২০৫৭, ৫৫০৭, ৭৩৯৮, নাসাঈ ৪৪৩৬, আবু দাউদ ২৮২৯, মুয়াত্তা মালিক ১০৫৪, দারেমী ১৯৭৬, গায়াতুল মারাম ৩৭, সহীহ আবু দাউদ ২৫১৮। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।যবেহ করা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২১/৫. অধ্যায়ঃ যে অস্ত্র দিয়ে যবেহ করা যায়

৩১৭৫ মুহাম্মাদ বিন সয়ফী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

আমি ধারালো সাদা পাথর দিয়ে দুটি খরগোশ যবেহ করে তা নিয়ে নবী [সাঃআঃ] এর নিকট আসলাম। তিনি আমাকে তা আহারের নির্দেশ দিলেন। {৩১৭৫}

{৩১৭৫} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। সহীহ আবু দাউদ ২৫১৩। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।যবেহ করা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩১৭৬ যায়দ বিন সাবিত [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

একটি নেকড়ে বাঘ একটি বকরীকে কামড় দিলে লোকেরা তা ধারালো সাদা পাথর দ্বারা যবেহ করে। রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাদের তা খাওয়ার অনুমতি দেন। {৩১৭৬}

{৩১৭৬} নাসাঈ ৪৪০০, ৪৪০৭, সহীহ আবু দাউদ ২৫১৩। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।যবেহ করা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩১৭৭ আদী বিন হাতিম [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমরা শিকার ধরে থাকি এবং কখনও আমাদের সাথে ধারালো পাথর বা ধারালো লাঠি ব্যতীত ছুরি থাকে না। তিনি বলেনঃ যা দিয়ে কারো রক্ত প্রবাহিত করো এবং যবেহ করার সময় আল্লাহর নাম লও। {৩১৭৭}

{৩১৭৭} নাসাঈ ৪৩০৪, ৪৪০১, আবু দাউদ ২৮২৪, আহমাদ ১৭৭৮১, ইরওয়া ৮/১৬৬, গায়াতুল মারাম ৩৪, সহীহ আবু দাউদ ২৫১৫। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি সিমাক বিন হারব সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তিনি সিকাহ। ইয়াকুব বিন শায়বাহ বলেন, তাহার পূর্বে বর্ণিত হাদিস যারা শ্রবন করিয়াছেন তা সহীহ। ইবনি হিব্বান বলেন, তিনি সিকাহ তবে হাদিস বর্ণনায় অধিক ভুল করেন। আবদুল্লাহ ইবনিল মুবারাক বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ২৫৭৯, ১২/১১৫ নং পৃষ্ঠা]যবেহ করা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩১৭৮ রাফিবিন খাদীজ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

আমরা এক সফরে রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর সাথে ছিলাম। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা যুদ্ধক্ষেত্রে থাকাকালে আমাদের সাথে ছুরি থাকে না। তিনি বলেনঃ দাঁত ও নখ ব্যতীত যা দিয়ে রক্ত প্রবাহিত করা যায় [তা দিয়ে যবেহ করো] এবং তা যবেহকালে আল্লাহর নাম স্মরণ করো, অতঃপর খাও। কারণ দাঁত হলো হাড় এবং নখ হলো হাবশাবাসীদের ছুরি। {৩১৭৮}

{৩১৭৮} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ২৪৮৮, মুসলিম ১৯৬৮, তিরমিজি ১৪৯১, নাসাঈ ৪৪০৩, ৪৪০৪, ৪৪০৯, ৪৪১০, আবু দাউদ ২৮২১, আহমাদ ১৬৮১০, ১৬৮৩২। উক্ত হাদিসটির পুর্নাঙ্গ হাদিস ৩১৮৩ নং হাদিসে, ইরওয়া ২৫২২, সহীহ আবু দাউদ ২৫১২। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।যবেহ করা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২১/৬. অধ্যায়ঃ চামড়া ছাড়ানো

৩১৭৯ আবু সাঈদ আল-খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এক যুবকের নিকট দিয়ে যাচ্ছিলেন। সে তখন একটি বকরীর চামড়া ছাড়াচ্ছিল। রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাকে বলেনঃ তুমি সরে দাঁড়াও, আমি তোমাকে দেখিয়ে দিবো। রাসূলুল্লাহ চামড়া ও গোশতের মাঝখান দিয়ে নিজের হাত ঢুকালেন, এমনকি বগল পর্যন্ত তাহাঁর হাত আন্তর্হিত হয়ে গেলো। অতঃপর তিনি বলেনঃ হে বৎস! এভাবে চামড়া ছাড়াও। অতঃপর তিনি সেখান থেকে চলে গেলেন এবং লোকেদের সাথে সলাত আদায় করিলেন কিন্তু উযু করেননি। {৩১৭৯}

{৩১৭৯} আবু দাউদ ১৮৫, সহীহ আবু দাউদ ১৭৮, ১৭৯। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।যবেহ করা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২১/৭. অধ্যায়ঃ দুগ্ধবতী পশু যবেহ করা নিষেধ

৩১৮০ আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এক আনসার ব্যক্তির নিকট এলেন। সে রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর জন্য পশু যবেহ করিতে ছুরি নিলো। রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাকে বলেনঃ সাবধান! দুগ্ধবতী পশু যবেহ করো না। {৩৭৮০}

{৩১৮০} মুসলিম ২০৩৮, তিরমিজি ২৩৬৯, যইফাহ ৪৭১৯ নং হাদিসের অনুরূপ। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি খালফ বিন খালিফাহ সম্পর্কে আবু আহমাদ বিন আদী আল-জুরজানী বলেন, আমি আশা করি তাহার মাঝে কোন সমস্যা নেই। তিনি কিছু কিছু রেওয়ায়াতে ভুল করিয়াছেন। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি সত্যবাদী। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে শেষ বয়সে হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ করিয়াছেন। ঈমাম যাহাবী বলেন, তিনি সত্যবাদী। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ১৭০৭, ৮/২৮৪ নং পৃষ্ঠা] ২. ইয়াযীদ বিন কায়সান সম্পর্কে আবু আহমাদ আল-হাকিম বলেন, তিনি আহলে ইলমের নিকট হাফিয নয়। আবু আহমাদ বিন আদী আল-জুরজানী বলেন, আমি আশা করি তাহার হাদিস বর্ণনায় কোন সমস্যা নেই। আহমাদ বিন শুআয়ব আন-নাসাঈ বলেন, তিনি সিকাহ। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৭০৪১, ৩২/৩২০ নং পৃষ্ঠা] যবেহ করা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩১৮১ আবু বাক্‌র বিন আবু কুহাফা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাকে ও উমার [রাদি.] কে বলেনঃ তোমরা উভয়ে আমাদের সাথে আল-ওয়াকিফীর নিকট চলো। রাবী বলেন, আমরা চাঁদনি রাতে রওয়ানা হলাম এবং শেষে [আল-ওয়াকিফীর] বাগানে গিয়ে পৌঁছলাম। আল-ওয়াকিফী বলেন, সাদর সম্ভাষণ। অতঃপর তিনি একটি ছুরিসহ মেষ পালের মধ্যে চক্কর দিলেন। রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাকে বলেনঃ সাবধান! দুগ্ধবতী পশু যবেহ করো না। {৩১৮১}

{৩১৮১} মুসলিম ২০৩৮, তিরমিজি ২৩৬৯, যইফাহ ৪৭১৯ নং হাদিসের অনুরূপ। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি ইয়াহইয়া বিন উবায়দুল্লাহ সম্পর্কে আবু আহমাদ বিন আদী আল-জুরজানী বলেন, তাহার কিছু হাদিসের অনুসরণ করা যাবে না। আবু বাকর বিন আবু শায়বাহ বলেন, তিনি হাদিসের ক্ষেত্রে গায়র সিকাহ। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি সিকাহ নয়। আহমাদ বিন শুআয়ব আন-নাসাঈ বলেন, তিনি দুর্বল তাহার থেকে কোন হাদিস গ্রহন করা যাবে না। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি প্রত্যাখ্যানযোগ্য। ঈমাম দারাকুতনী ও ঈমাম যাহাবী তাহাকে দুর্বল বলেছেন। সুফইয়ান বিন উয়াইনাহ বলেন, তিনি দুর্বল ছিলেন। ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তাহার থেকে কোন হাদিস গ্রহন করা যাবে না। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৬৮৭৬, ৩১/৪৪৯ নং পৃষ্ঠা] যবেহ করা হাদিসের তাহকিকঃ খুবই দুর্বল

২১/৮. অধ্যায়ঃ স্ত্রীলোকের যবেহকৃত পশুর বিধান

৩১৮২ কাব বিন মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

এক স্ত্রীলোক ধারালো পাথরের সাহায্যে একটি বকরী যবেহ করিল। তা রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে জানানো হলে তিনি তা দূষণীয় মনে করেননি। {৩১৮২}

৩১৮২. সহিহুল বুখারি হাদিস নং ২৩০৪, ৫৫০১, ৫৫০২, ৫৫০৪, ৫৫০৫। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।যবেহ করা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২১/৯. অধ্যায়ঃ পলায়নপর পশু যবেহ করার বর্ণনা

৩১৮৩ রাফিবিন খাদীজ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

আমরা এক সফরে নবী [সাঃআঃ] এর সাথে ছিলাম। একটি উট পলায়নে তৎপর হলে এক ব্যক্তি সেটিকে লক্ষ করে তীর নিক্ষেপ করিল। মহানবী [সাঃআঃ] বলেনঃ এই চতুষ্পদ জন্তুর মধ্যেও কোনটি জংলী পশুর ন্যায় বন্য হয়ে যায়। অতএব তোমরা অন্যভাবে কাবু করিতে না পারলে একে এভাবেই কাবু করিবে। {৩১৮৩}

{৩১৮৩} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ২৪৮৮, ২৪০৭, ৩০৭৫, ৫৪৯৮, ৫৫০৩, ৫৫৪৩, ৫৫৪৪, মুসলিম ১৯৬৮, তিরমিজি ১৪৯২, নাসাঈ ৪২৯৭, ৪৪০৯, ৪৪১০আবু দাউদ ২৮২১, আহমাদ ১৫৩৭৯, ১৫৬৮৬, ১৬৮১০, ১৬৮৩২, দারেমী ১৯৭৭। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।যবেহ করা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩১৮৪ মালিক বিন কাহতাম [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! কণ্ঠনালী ও বুকের উপরিভাগের মাঝখান ছাড়া কি যবেহ হয় না? তিনি বলেনঃ তুমি যদি তাহার উরুতে বর্শা ঢুকিয়ে দিতে পারো তবে তা তোমার জন্য যথেষ্ট হইবে। {৩১৮৪}

{৩১৮৪} তিরমিজি ১৪৮১, নাসাঈ ৪৪০১, আবু দাউদ ২৮২৫, আহমাদ ১৮৪৬৮, দারেমী ১৯৭২, ইরওয়া ২৫৩৫, জইফ আবু দাউদ ৪৯০। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি আবুল উশরা সম্পর্কে ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি একজন অপরিচিত গ্রাম্য লোক। আল-মিযযী ও মুহাম্মাদ বিন সাদ বলেন, তিনি মাজহুল বা অপরিচিত। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৭৫১৪, ৩৪/৮৫ নং পৃষ্ঠা] যবেহ করা হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

২১/১০. অধ্যায়ঃ কোন প্রাণীকে চাঁদমারির লক্ষ্যবস্তু বানানো বা তাহার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কর্তন করা নিষেধ

৩১৮৫ আবু সাঈদ আল-খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] পশুর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কর্তন করিতে নিষেধ করিয়াছেন। {৩১৮৫}

{৩১৮৫} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ খুবই দুর্বল। উক্ত হাদিসের রাবি মুসা বিন মুহাম্মাদ বিন ইবরাহিম আত-তায়মী সম্পর্কে আবু বাকর আল-বায়হাকী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। আবু জাফার আল-উকায়লী বলেন, তাহার হাদিসের অনুসরণ করা যাবে না। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, তাহার থেকে হাদিস গ্রহন করা যাবে না। আহমাদ বিন হাম্বল তাহাকে দুর্বল বলিতেন। ঈমাম দারাকুতনী বলেন, তিনি প্রত্যাখ্যানযোগ্য। ঈমাম যাহাবী বলেন, তিনি দুর্বল। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৬২৯৬, ২৯/১৩৯ নং পৃষ্ঠা]যবেহ করা হাদিসের তাহকিকঃ খুবই দুর্বল

৩১৮৬ আনাস বিন মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] পশুকে চাঁদমারির লক্ষ্যবস্তু বানাতে নিষেধ করিয়াছেন। {৩১৮৬}

{৩১৮৬} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ৫৫১৩, মুসলিম ১৯৫৬, নাসাঈ ৪৪৩৯, আবু দাউদ ২৮১৬, আহমাদ ১১৭৫১, ১২৩৩৫, ১২৪৫১, ১২৫৭০, সহীহ আবু দাউদ ২৫০৭। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।যবেহ করা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩১৮৭ ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমরা কোন জীবন্ত প্রাণীকে চাঁদমারির লক্ষ্যবস্তু বানিও না। {৩১৮৭}

{৩১৮৭} মুসলিম ১৯৫৭, তিরমিজি ১৪৭৫, নাসাঈ ৪৪৪৩, ৪৪৪৪, আহমাদ ১৮৬৬, ২৪৭০, ২৪৭৬, ২৫২৮, ২৫৮১, ২৭০০, ৩১৪৫, ৩২০৫, গায়াতুল মারাম ৩৮২। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি সিমাক বিন হারব সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তিনি সিকাহ। ইয়াকুব বিন শায়বাহ বলেন, তাহার পূর্বে বর্ণিত হাদিস যারা শ্রবন করিয়াছেন তা সহীহ। ইবনি হিব্বান বলেন, তিনি সিকাহ তবে হাদিস বর্ণনায় অধিক ভুল করেন। আবদুল্লাহ ইবনিল মুবারাক বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ২৫৭৯, ১২/১১৫ নং পৃষ্ঠা]যবেহ করা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩১৮৮ জাবির বিন আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কোন প্রাণীকে চাঁদমারির লক্ষ্যবস্তু বানিয়ে হত্যা করিতে নিষেধ করিয়াছেন। {৩১৮৮}

{৩১৮৮} মুসলিম ১৯৫৯, আহমাদ ১৪০১৪, ১৪০৩৯, ১৪২৩৬, সহীহ আবু দাউদ ২৫০৭। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।যবেহ করা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২১/১১. অধ্যায়ঃ বিষ্ঠা খাওয়ায় অভ্যস্ত [হালাল] পশু-পাখি খাওয়া নিষেধ

৩১৮৯ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বিষ্ঠা ভক্ষণে অভ্যস্ত পশুর গোশ্‌ত খেতে ও তাহার দুধ পান করিতে নিষেধ করিয়াছেন। {৩১৮৯}

{৩১৮৯} তিরমিজি ১৮২৪, আবু দাউদ ৩৭৮৫, ৩৭৮৭, ইরওয়া ২৫০৩, ২৫০৪। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি মুহাম্মাদ বিন ইসহাক সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন ও আজালী বলেন, তিনি সিকাহ। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি হাসানুল হাদিস। আলী ইবনিল মাদানী বলেন, তিনি সালিহ। সুলায়মান বিন তাহারখান ও সুলায়মান বিন মিহরান বলেন, তিনি মিথ্যুক। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি আমার নিকট হাদিস বর্ণনায় নির্ভরযোগ্য নয়, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৫০৫৭, ২৪/৪০৫ নং পৃষ্ঠা]যবেহ করা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২১/১২. অধ্যায়ঃ ঘোড়ার গোশ্‌ত

৩১৯০ আসমা বিনতু আবু বাক্‌র [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর যুগে একটি ঘোড়া যবেহ করে তাহার গোশ্‌ত খেয়েছি। {৩১৯০}

{৩১৯০} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ৫৫১০, ৫৫১১, ৫৫১২, ৫৫১৯, মুসলিম ১৯৪২, নাসাঈ ৪৪০৬, ৪৪২০, ৪৪২১, আহমাদ ২৬৩৭৯,২৬৩৯০, ২৬৩৭০, ২৬৪৩৮, দারেমী ১৯৯২, ইরওয়া ২৪৯৩, সহীহাহ ৩৫৯। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।যবেহ করা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩১৯১ জাবির বিন আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

খায়বারের যুদ্ধকালে আমরা ঘোড়া ও বন্য গাধার গোশ্‌ত খেয়েছি। {৩১৯১}

{৩১৯১} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ৪২১৯, ৫৫২০, ৫৫২৪, মুসলিম ১৯৪১, তিরমিজি ১৭৯৩, নাসাঈ ৪৩২৭, ৪৩২৮, ৪৩৩৯, ৪৩৩০, ৪৩৪৩, আবু দাউদ ৩৭৮৮, ৩৭৮৯, ৩৮০৮, আহমাদ ১৪০৪১, ১৪৪২৬, ১৪৪৭৪, ১৪৪৮৬, ১৪৭১৫, দারেমী ১৯৯৩, ইরওয়া ৮/১৩৮। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।যবেহ করা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২১/১৩. অধ্যায়ঃ বন্য গাধার গোশ্‌ত

৩১৯২ আবদুল্লাহ বিন আবু আওফা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

আবদুল্লাহ বিন আবু আওফা [রাদি.] এর নিকট গৃহপালিত গাধার গোশত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বলেন, খায়বারের যুদ্ধকালে আমরা দুর্ভিক্ষে পতিত হই। আমরা নবী [সাঃআঃ] এর সাথে ছিলাম। লোকেরা মদীনার [শহরের] বাইরে কিছু গাধা পেলো। আমরা তা যবেহ করলাম। আমাদের হাঁড়িতে গোশত টগবগ করে ফুটছিল। ইতোমধ্যে মহানবী [সাঃআঃ] এর ঘোষক ঘোষণা করিল যে, গোশতের পাতিলগুলোকে উল্টে ফেলে দাও এবং গাধার গোশত থেকে মোটেও খেও না। অতএব আমরা পাতিলগুলো উল্টে ফেলে দিলাম। আমি আবদুল্লাহ বিন আবু আওফা [রাদি.] কে জিজ্ঞেস করলাম, তিনি কি তা চূড়ান্তভাবে হারাম করিয়াছেন? রাবী বলেন, আপনি আমাদের জানিয়ে দিন রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তা কি বিষ্ঠা খাওয়ার কারণে হারাম করিয়াছেন? {৩১৯২}

{৩১৯২} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ৩১৫৫, ৪২২০, ৪২২২, ৪২২৫, ৫৫২৬, মুসলিম ১৯৩৭, ১৯৩৮, নাসাঈ ৪৩৩৯, আহমাদ ১৮৬৩৭, ১৮৬৪৮, ১৮৬৫৯, ১৮৯২৫, রাওদুন নাদীর ৩৭২। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।যবেহ করা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩১৯৩ আল-মিকদাম বিন মাদীকারিব আল-কিন্দী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কতগুলো জিনিস হারাম ঘোষণা করেন, তাহার মধ্যে গৃহপালিত গাধার কথাও উল্লেখ করেন। {৩১৯৩}

{৩১৯৩} আহমাদ ১৬৭৪২, রাওদুন নাদীর ৩৭২। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি যায়দ ইবনিল হুবাব সম্পর্কে আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি সত্যবাদী কিন্তু হাদিস বর্ণনায় অধিক ভুল করেন। আলী ইবনিল মাদানী ও উসমান বিন আবু শায়বাহ তাহাকে সিকাহ বলেছেন। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় ভুল করিয়াছেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ২০৯৫, ১০/৪০ নং পৃষ্ঠা] ২. মুআবিয়াহ বিন সালিহ সম্পর্কে আবু আহমাদ বিন আদী আল-জুরজানী বলেন, তাহার হাদিসের মাঝে আমি কোন সমস্যা দেখি না। আবু বাকর আল-বাযযাহার বলেন, তিনি সিকাহ। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় সন্দেহ করেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৬০৫৮, ২৮/১৮৬ নং পৃষ্ঠা]যবেহ করা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩১৯৪ বারা বিন আযিব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদেরকে গৃহপালিত গাধার কাঁচা গোশ্‌ত ও রান্না করা গোশ্‌ত সব ফেলে দেয়ার নির্দেশ দেন। পরবর্তী কালে তিনি আর তা [খাওয়ার] হুকুম দেননি। {৩১৯৪}

{৩১৯৪} মুসলিম ১৯৩৭, নাসাঈ ৪৩৩৮, আহমাদ ১৮৬৩৭, ১৮৬৬৬। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।যবেহ করা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩১৯৫ সালামা ইবনিল আকওয়া[রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর সাথে খায়বারের যুদ্ধ করেছি। সন্ধ্যা হলে লোকেরা চুলায় আগুন ধরালো। নবী [সাঃআঃ] জিজ্ঞেস করিলেনঃ তোমরা কী রান্না করছো? তাহারা বলেন, গৃহপালিত গাধার গোশ্‌ত। তিনি বলেন, হাঁড়িতে যা আছে তা ফেলে দাও এবং হাঁড়িগুলো ভেঙ্গে ফেলো। দলের মধ্যকার এক ব্যক্তি বলল, হাঁড়ির মধ্যে যা আছে আমরা কি তা ফেলে দিয়ে হাঁড়ি ধুয়ে নিতে পারি? নবী [সাঃআঃ] বলেনঃ আচ্ছা! তাই করো। {৩১৯৫}

{৩১৯৫} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ২৪৭৭, ৪১৯৬, ৬১৪৮, মুসলিম ১৮০২, আহমাদ ১৬০৭৮, ১৬০৯০। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি ১. ইয়াকুব বিন হুমায়দ বিন কাসিব সম্পর্কে আবু জাফার আল-উকায়লী বলেন, তাহার হাদিসের অনুসরণ করা যাবে না। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৭০৮৬, ৩২/৩১৮ নং পৃষ্ঠা] ২. আল-মুগীরাহ বিন আবদুর রহমান সম্পর্কে আবু হাতিম বিন হিব্বান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় কখনো কখনো ভুল করেন। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, তিনি দুর্বল। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় সন্দেহ করেন। মুহাম্মাদ বিন সাদ বলেন, তিনি সিকাহ। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৬১৩৫, ২৮/৩৮১ নং পৃষ্ঠা]যবেহ করা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩১৯৬ আনাস মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নবী [সাঃআঃ] -এর ঘোষক ঘোষণা করিলেনঃ নিশ্চিতভাবে আল্লাহ ও তাহাঁর রাসূল তোমাদেরকে গৃহপালিত গাধার গোশ্‌ত খেতে নিষেধ করিয়াছেন। কারণ তা নাপাক। {৩১৯৬}

{৩১৯৬} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ২৯৯১, ৪১৯৮, ৪১৯৯, ৫৫২৮, মুসলিম ১৯৪০, নাসাঈ ৬৯, ৪৩৪০, আহমাদ ১১৬৭৬, ১১৭৩০, ১১৮০৭, ১২২৬০, দারেমী ১৯৯১, ইরওয়া ২৪৮৯, রাওদুন নাদীর ৩৭২। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।যবেহ করা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

২১/১৪. অধ্যায়ঃ খচ্চরের গোশ্‌ত

৩১৯৭ জাবির বিন আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমরা ঘোড়ার গোশ্‌ত আহার করতাম। আমি [আতা] বললাম, খচ্চরের গোশ্‌ত? তিনি বলেন, না। {৩১৯৭}

{৩১৯৭} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ৪২১৯, ৫৫২০, ৫৫২৪, মুসলিম ১৯৪১, তিরমিজি ১৭৯৩, নাসাঈ ৪৩২৭, ৪৩২৮, ৪৩৩৯, ৪৩৩০, ৪৩৪৩, আবু দাউদ ৩৭৮৮, ৩৭৮৯, ৩৮০৮, আহমাদ ১৪০৪১, ১৪৪২৬, ১৪৪৭৪, ১৪৪৮৬, ১৪৭১৫, দারেমী ১৯৯৩। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।যবেহ করা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৩১৯৮ খালিদ ইবনিল ওয়ালীদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ঘোড়ার গোশ্‌ত, খচ্চরের গোশ্‌ত ও গাধার গোশ্‌ত খেতে নিষেধ করিয়াছেন। {৩১৯৮}

{৩১৯৮} নাসাঈ ৪৩৩১, ৪৩৩২, আবু দাউদ ৩৭৯০, যইফাহ ১১৪৯। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি ১. মুহাম্মাদ ইবনিল মুসাফফা আল-হিমসী সম্পর্কে আবু হাতিম আর-রাযী ও ঈমাম নাসাঈ বলেন, তিনি সত্যবাদী। ইবনি হিব্বান তাহাকে সিকাহ বললেও অন্যত্র বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় সন্দেহ ও তাদলীস করেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৫৬১৩, ২৬/৪৬৫ নং পৃষ্ঠা] ২. সালিহ বিন ইয়াহইয়া ইবনিল মিকদাম বিন মাদীকারিব সম্পর্কে আবু হাতিম বিন হিব্বান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। আবু মুহাম্মাদ বিন হাযম বলেন, তিনি মাজহুল বা অপরিচিত। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি যাচাই-বাচাই ছাড়া হাদিস গ্রহন করেন ও তা বর্ণনা করেন। ঈমাম বুখারী বলেন, তাহার ব্যাপারে সমালোচনা রয়েছে। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ২৮৪৪, ১৩/১০৫ নং পৃষ্ঠা] ৩. ইয়াহইয়া ইবনিল মিকদাম সম্পর্কে ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তাহার অবস্থা সম্পর্কে অজ্ঞাত। ঈমাম যাহাবী তাহাকে সিকাহ বলেছেন। তাহরীরু তাকরীবুত তাহযীব এর লেখক বলেন, তিনি মাজহুল বা অপরিচিত। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৬৯২৮, ১৩/৫৭০ নং পৃষ্ঠা]যবেহ করা হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

২১/১৫. অধ্যায়ঃ পেটের বাচ্চার জন্য তাহার মায়ের যবেহ-ই যথেষ্ট

৩১৯৯ আবু সাঈদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর নিকট গর্ভবতী পশুর পেটের বাচ্চা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বলেনঃ তোমরা ইচ্ছা করিলে তা খেতে পারো। কেননা তাহার মায়ের যবেহ তাহার যবাহ–এর জন্য যথেষ্ট। {৩১৯৯}

{৩১৯৯} তিরমিজি ১৪৭৬, আবু দাউদ ২৮২৭, রাওদুন নাদীর ৫১৪, ৫১৫, সহীহ আবু দাউদ ২৫১৬, ইরওয়া ২৫৩৯। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি ১. আবু খালিদ আল আহমার সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তিনি সত্যবাদী কিন্তু তাহার হাদিস দলীলযোগ্য নয়। আলী ইবনিল মাদানী বলেন, তিনি সিকাহ। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি সত্যবাদী। ঈমাম নাসাঈ বলেন, কোন সমস্যা নেই। ইবনি আদী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় সালেহ কিন্তু হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ ও ভুল করেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ২৫০৪, ১১/৩৯৪ নং পৃষ্ঠা] ২. মুজালিদ বিন সাঈদ সম্পর্কে ঈমাম বুখারী ও ইয়াকুব বিন সুফইয়ান বলেন, তিনি সত্যবাদী। ঈমাম নাসাঈ বলেন, তিনি সিকাহ। ইয়াহইয়া বিন সাঈদ আল-কাত্তান বলেন, তিনি জইফ বা দুর্বল। ইবনি মাঈন বলেন, তাহার হাদিস দ্বারা দলীল গ্রহন করা যাবে না। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৫৭৮০, ২৭/২১৯ নং পৃষ্ঠা]উক্ত হজাদিসের সানাদ মুজালিদ বিন সাঈদ এর কারণে দুর্বল। হাদিসটির ১৫৯ টি শাহিদ হাদিস রয়েছে। ১ টি জাল, ১১ টি খুবই দুর্বল, ৭৪ টি দুর্বল, ৩৫ টি হাসান, ৩৮ টি সহীহ হাদিস পাওয়া যায়। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলঃ তিরমিজি ১৪৭৬, আবু দাউদ ২৮২৭, ২৮২৮, দারেমী ১৯৭৯, আহমাদ ১০৮৬৭, ১০৯৫০, ১১০২২, ১১১০৩, দারাকুতনী ৪৬৮৬, ৪৬৯০, ৪৬৯১, ৪৬৯২, ৪৬৯৩, ৪৬৯৪, ৪৬৯৫, ৪৬৯৬, মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক ৮৬৪৯, ৮৬৫০, মুজামুল আওসাত ৩৬০৬, ৩৭১১, ৬৭২১, ৭৮৫৬, ৮০৯৯, ৮২৩৪, ৯৪৫৩, শারহুস সুন্নাহ ২৭৮৯।যবেহ করা হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস


Posted

in

by

Comments

One response to “যবেহ করা । আকীকা ও আল্লাহর নাম উচ্চারণ করা”

Leave a Reply