বন্ধক সম্পর্কে হাদিস । শ্রমিক জমি ভাড়া ভাগচাষ ইত্যাদি
বন্ধক সম্পর্কে হাদিস ,এই অধ্যায়ে মোট =৫৬টি হাদীস (২৪৩৬ – ২৪৯১) >> সুনানে ইবনে মাজাহ হাদিস এর মুল সুচিপত্র পড়ুন
পর্বঃ ১৬- বন্ধক, অধ্যায়ঃ (৭১-৮৫)=১৫টি, হাদীস (২৪৩৬ – ২৪৯১)
১৩/৭১. অধ্যায়ঃ ভাগচাষে যা অপছন্দনীয়
১৩/৭২. অধ্যায়ঃ এক-তৃতীয়াংশ বা এক-চতুর্থাংশ ফসলের শর্তে জমি বর্গা দেয়া জায়েয
১৩/৭৩. অধ্যায়ঃ খাদ্যশস্যের বিনিময়ে জমি বর্গা দেয়া
১৩/৭৪. অধ্যায়ঃ কেউ বিনা অনুমতিতে অপরের জমি চাষাবাদ করিলে
১৩/৭৫. অধ্যায়ঃ উৎপন্ন খেজুর ও আঙ্গুরের ভাগ দেয়ার শর্তে চাষাবাদ করিতে দেয়া
১৩/৭৬. অধ্যায়ঃ খেজুর গাছে [পুরুষ ও মাদীর মধ্যে] সংযোগ লাগানো
১৩/৭৭. অধ্যায়ঃ মুসলমানগণ তিনটি বিষয়ে যৌথ অংশীদার
১৩/৭৮ অধ্যায়ঃ সরকারীভাবে নদী-নালা ও পানির প্রস্রবণ জায়গিররূপে দান করা
১৩/৭৯. অধ্যায়ঃ পানি বিক্রয় করা নিষেধ
১৩/৮০. অধ্যায়ঃ চতুষ্পদ জন্তুকে ঘাস খেতে বাধা দেয়ার উদ্দেশ্যে উদ্বৃত্ত পানি ব্যবহারে বাধা দেয়া নিষেধ
১৩/৮১. অধ্যায়ঃ উপত্যকা থেকে পানিসেচ এবং যে পরিমাণ পানি আটকে রাখা যাবে
১৩/৮২. অধ্যায়ঃ পানি বন্টন
১৩/৮৩. অধ্যায়ঃ কূপের সীমানা
১৩/৮৪. অধ্যায়ঃ গাছের সীমানা
১৩/৮৫. অধ্যায়ঃ কোন ব্যক্তি বাড়ি-ঘর ও জায়গা-জমির বিক্রয়লব্ধ মূল্য দ্বারা অনুরূপ সম্পদ ক্রয় না করিলে।
১৩/৬২. অধ্যায়ঃ আবু বকর বিন আবু শায়বাহ।
২৪৩৬ আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নবী [সাঃআঃ] এক ইহূদীর নিকট থেকে [বাকীতে] কিছু খাদ্যশস্য ক্রয় করেন এবং তাহার কাছে নিজের লৌহবর্মটি বন্ধক রাখেন। {২৪৩৬}
{২৪৩৬} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ২০৬৮, মুসলিম ১৬০৩, নাসাঈ ৪৬০৯, ৪৬৫০, আহমাদ ২৪৭৪৬, ২৫৪০৩, ২৫৪৬৭, ইরওয়া ১৩৯৩। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।বন্ধক সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২৪৩৭ আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] মদীনার এক ইহূদীর নিকট তাহাঁর লৌহবর্মটি বন্ধক রেখে তাহার থেকে নিজ পরিবারের জন্য কিছু বার্লি ক্রয় করেন। {২৪৩৭}
{২৪৩৭} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ২০৬৯, তিরমিজি ১২১৫, নাসাঈ ৪৬১০, আহমাদ ১১৯৫২, ইরওয়া ৫/২৩১, মুখতাসার শামাইল ২৮৭। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। বন্ধক সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২৪৩৮ আসমা বিনতু ইয়াযীদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নবী [সাঃআঃ] ইনতিকাল করেন এবং তখন তাহাঁর লৌহবর্মটি এক ইহূদীর নিকট কিছু খাদ্যশস্যের বিনিময়ে বন্ধক ছিল। {২৪৩৮}
{২৪৩৮} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। ইরওয়া ৫/২৩২, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি শাহর বিন হাওশাব সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন ও ইয়াকুব বিন সুফইয়ান এবং আল-আজালী বলেন, তিনি সিকাহ। শুবাহ ইবনিল হাজ্জাজ তাহাকে বর্জন করিয়াছেন। আহমাদ বিন হাম্বল ও আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, কোন সমস্যা নেই। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ২৭৮১, ১২/৫৭৮ নং পৃষ্ঠা] বন্ধক সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২৪৩৯ ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যখন ইনতিকাল করেন, তখন তাহাঁর লৌহবর্মটি এক ইহূদীর নিকট তিরিশ সা বার্লির বিনিময়ে বন্ধক ছিল। {২৪৩৯}
{২৪৩৯} তিরমিজি ১২১৪, নাসাঈ ৪৬৫১, আহমাদ ২১১০, ২৭১৯, ২৭৩৮, ৩৩৯৯, দারেমী ২৫৮২, ইরওয়া ৫/২৩১। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি হিলাল বিন খাব্বাব সম্পর্কে আবু আহুমাদ আল-হাকিম বলেন, শেষ বয়সে তাহার স্মৃতিশক্তি লোপ পেয়েছিল। আবু আহমাদ বিন আদী আল-জুরজানী বলেন, আমি আশা করি তাহার মাঝে কোন সমস্যা নেই। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে শেষ বয়সে তাহার স্মৃতিশক্তি দুর্বল ছিল। ঈমাম যাহাবী বলেন, তিনি সিকাহ। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৬৬১৬, ৩০/৩৩০ নং পৃষ্ঠা]বন্ধক সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান সহীহ
১৩/৬৩. অধ্যায়ঃ বন্ধকী জন্তুতে আরোহণ এবং তাহার দুধ পান করা
২৪৪০ আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ বন্ধককৃত পশুতে আরোহন করা যাবে এবং বন্ধকী পশুর দুধও পান করা যাবে। তবে যে ব্যাক্তি পশুটিকে বাহনরূপে ব্যবহার করিবে বা তাহার দুধ পান করিবে সে-ই তাহার আহার ও সেবাযত্নের ব্যবস্থা করিবে। {২৪৪০}
{২৪৪০} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ২৫১১, ২৫১২, তিরমিজি ১২৪৫, আবু দাউদ ৩৫২৬, আহমাদ ৭০৮৫, ৯৭৬০, ইরওয়া ১৪০৯। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।বন্ধক সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৩/৬৪. অধ্যায়ঃ বন্ধকী জিনিস বাজেয়াপ্ত করা যাবে না
২৪৪১ আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, বন্ধকী জিনিস বাজেয়াপ্ত করা যাবে না। {২৪৪১}
{২৪৪১} মুয়াত্তা মালিক ১৪৩৭, ইরওয়া ৫/২৪২, ১৪০৮। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি ১. মুহাম্মাদ বিন হুমায়দ সম্পর্কে আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি খুবই দুর্বল, তিনি মিথ্যুক। আবু যুরআহ আর-রাযী তাহার হাদিস বর্জন করিয়াছেন। আহমাদ বিন শুআয়ব আন-নাসাঈ বলেন, তিনি সিকাহ নয়, তিনি দুর্বল। আবদুর রহমান বিন ইউসুফ বলেন, আল্লাহর শপথ তিনি মিথ্যা বলিতেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৫১৬৭, ২৫/৯৭ নং পৃষ্ঠা] ২. ইবরাহীম ইবনিল মুখতাহার সম্পর্কে আবু আহমাদ বিন আদী আল-জুরজানী বলেন, যাদের নিকট থেকে হাদিস গ্রহন করা যায় তিনি তাহাদের একজন। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, তাহার মাঝে কোন সমস্যা নেই। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে তাহার হিফয শক্তি দুর্বল। ঈমাম বুখারী বলেন, তাহার ব্যাপারে সমালোচনা রয়েছে। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ২৪০, ২/১৯৪ নং পৃষ্ঠা]।বন্ধক সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১৩/৬৫. অধ্যায়ঃ শ্রমিকদের মজুরী সম্পর্কে
২৪৪২ আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কিয়ামতের দিন আমি তিন শ্রেণীর লোকের বিরুদ্ধে বাদী হবো। আর আমি যাহার বিরুদ্ধে বাদী হবো, তাহার বিরুদ্ধে জয়ী হবো। কিয়ামতের দিন আমি যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করিব তাহারা হলোঃ যে ব্যক্তি আমার নামে অঙ্গীকার করে, পরে সে অঙ্গীকার ভঙ্গ করে, যে ব্যক্তি অর্থ উপার্জনের জন্য স্বাধীন মানুষ বিক্রয় করে এবং যে ব্যক্তি শ্রমিক নিয়োগ করে তাহার থেকে পূর্ণরূপে কাজ আদায় করে নেয়, কিন্তু তাহার পূর্ণ মজুরী দেয় না। {২৪৪২}
{২৪৪২} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ২২২৭, ইরওয়া ১/১৪৮৯, রাওদুন নাদীর ১১০২। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি ইয়াহইয়া বিন সুলায়ম আত-তায়ফী তিনি আহলে ইলমের নিকট নির্ভরযোগ্য নয়। আবু বিশর আদ-দাওলানী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। আবু হাতিম বিন হিব্বান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে তাহার স্মৃতিশক্তি দুর্বল। যাকারিয়্যা বিন ইয়াহইয়া আস-সাজী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় সন্দেহ করেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৬৮৪১, ৩১/৩৬৫ নং পৃষ্ঠা] ।বন্ধক সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
২৪৪৩ আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ শ্রমিকের দেহের ঘাম শুকাবার পূর্বে তোমরা তাহার মজুরী দাও। {২৪৪৩}
{২৪৪৩} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। ইরওয়া ১৪৯৮, মিশকাত ২৯৮৭, রাওদুন নাদীর ১৯৩, আত-তালীকুর রাগীব ৩/৫৮। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি আবদুর রহমান বিন যায়দ বিন আসলাম সম্পর্কে আবুল ফারাজ ইবনিল জাওযী বলেন, তাহার দুর্বলতাহার ব্যাপারে সকলে একমত। আবু বাকর আল-বায়হাকী বলেন, তিনি দুর্বল। উক্ত হাদিসটি সহীহ কিন্তু আবদুর রহমান বিন যায়দ এর কারণে সানাদটি দুর্বল। হাদিসটির ৩৬ টি শাহিদ হাদিস রয়েছে, তন্মধ্যে ৭ টি খুবই দুর্বল, ১১ টি দুর্বল, ৯ টি হাসান, ৯ টি সহীহ হাদিস পাওয়া যায়। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলঃ আল-ফাওয়াইদ ৪৪, ১৪১২। বন্ধক সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৩/৬৬. অধ্যায়ঃ পেটে-ভাতে শ্রমিক নিয়োগ
২৪৪৪ উতবাহ ইবনিল নুদ্দার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
আমি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর নিকট উপস্থিত থাকা অবস্থায় তিনি সূরা তা-সীন-মীম পাঠ করিলেন। শেষে মূসা [আঃ] -এর ঘটনা পর্যন্ত পৌঁছে তিনি বলেনঃ মূসা [আঃ] আট অথবা দশ বছর যাবত নিজেকে শ্রমিকরূপে নিয়োজিত রেখেছিলেন নিজের লজ্জাস্থান হেফাজতের [বিবাহ] ও পেটের আহারের বিনিময়ে। {২৪৪৪}
{২৪৪৪} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। ইরওয়া ১৪৮৮। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ খুবই দুর্বল। উক্ত হাদিসের রাবি মুহাম্মাদ ইবনিল মুসাফফা আল-হিমসী সম্পর্কে আবু হাতিম আর-রাযী ও ঈমাম নাসাঈ বলেন, তিনি সত্যবাদী। ইবনি হিব্বান তাহাকে সিকাহ বললেও অন্যত্র বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় সন্দেহ ও তাদলীস করেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৫৬১৩, ২৬/৪৬৫ নং পৃষ্ঠা] ২. মাসলামাহ বিন আলী সম্পর্কে আবু আহমাদ আল-হাকিম বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। আবুল ফাতহ আল-আযদী বলেন, তিনি প্রত্যাখ্যানযোগ্য। আবুল ফারাজ ইবনিল জাওযী বলেন, তাহার বিরুদ্ধে জাল [বানিয়ে] হাদিস বর্ণনার অভিযোগ রয়েছে। আবু বকর আল-বুরকানী বলেন, তিনি মিথ্যার সাথে অভিযুক্ত। ঈমাম যাহাবী তাহার হাদিস বর্জন করিয়াছেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৫৯৫৮, ২৭/৫৬৭ নং পৃষ্ঠা]বন্ধক সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ খুবই দুর্বল
২৪৪৫ আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
আমি ইয়াতীমরূপে লালিত-পালিত হয়েছি এবং মিসকীনরূপে হিজরত করেছি। আমার পেটের আহার ও পালাক্রমে বাহনে আরোহনের শর্তে আমি গাযওয়ান-কন্যার শ্রমিকরূপে নিয়োজিত হই। আমি লোকদের জন্য কাঠ সংগ্রহ করতাম। তাহারা জন্তুযান থেকে অবতরণ করিলে আমি আরোহণ করতাম এবং তাহারা জন্তুযানে আরোহণ করিলে আমি তা হাঁকিয়ে নিতাম। সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর যিনি তাহাঁর দ্বীনকে শক্তিশালী করিয়াছেন এবং আবু হুরাইরাকে ঈমাম [শাসক] বানিয়েছেন। {২৪৪৫}
{২৪৪৫} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি হায়ান বিন বিসতাম সম্পর্কে ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি মাকবুল। তাহরীরু তাকরীবুত তাহযীব এর লেখক বলেন, তিনি মাজহুল বা অপরিচিত, তাহার ছেলে ব্যাতিত কেউ তাহার থেকে হাদিস বর্ণনা করেনি, ইবনি হিব্বান ছাড়া কেউ তাহাকে সিকাহ বলে উল্লেখ করেনি। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ১৫৭৪, ৭/৪৭১ নং পৃষ্ঠা]।বন্ধক সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১৩/৬৭. অধ্যায়ঃ এক একটি খেজুরের বিনিময়ে এক বালতি করে পানি উত্তোলন এবং উত্তম খেজুরের শর্তারোপ।
২৪৪৬।ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নবী [সাঃআঃ] খাদ্যাভাবে পতিত হলেন। আলী [রাদি.] তা জানতে পেরে কাজের সন্ধানে বের হলেন, যাতে কিছু রোজগার করে রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর খাদ্যাভাব দূর করিতে পারেন। তিনি এক ইহূদীর খেজুর বাগানে পৌঁছে প্রতি বালতি পানির বিনিময়ে একটি করে খেজুরের শর্তে [কূপ থেকে] সতের বালতি পানি উঠালেন। ইহূদী তাহাকে সতেরটি উত্তম খেজুর বেছে নেয়ার এখতিয়ার দিলো। তিনি খেজুরসহ নবী [সাঃআঃ] নিকট উপস্থিত হলেন। {২৪৪৬}
{২৪৪৬} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। ইরওয়া ৫/৩১৪। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ খুবই দুর্বল। উক্ত হাদিসের রাবি হানাশ সম্পর্কে আবু আহমাদ আল-হাকিম বলেন, তিনি আহলে ইলমের নিকট নির্ভরযোগ্য নয়। আবু বাকর আল-বাযযাহার বলেন, তিনি যাচাই-বাচাই ছাড়া হাদিস গ্রহন করেন ও তা বর্ণনা করেন। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। আবু যুরআহ আর-রাযী তাহাকে দুর্বল বলেছেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ১৩৩০, ৬/৪৬৫ নং পৃষ্ঠা]।বন্ধক সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ খুবই দুর্বল
২৪৪৭ আলী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
আমি এক একটি উত্তম খেজুর প্রদানের শর্তে [কূপ থেকে] এক বালতি করে পানি উত্তোলন করেছি। {২৪৪৭}
{২৪৪৭} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। ইরওয়া ৫/৩১৫। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান।বন্ধক সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান হাদিস
২৪৪৮ আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
আনসার সম্প্রদায়ের এক সাহাবী এসে বলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! কী ব্যাপার, আমি আপনাকে বিবর্ণ দেখছি। তিনি বলেনঃ ক্ষুধার কারণে। অতএব আনসারী নিজ বাড়িতে ফিরে গেলেন, কিন্তু বাড়িতে কিছু না পেয়ে কাজের খোঁজে বেরিয়ে পড়লেন। তিনি এক ইহূদীকে খেজুর বাগানে পানি সেচ করিতে দেখলেন। আনসারী ইহূদীকে বলিলেন, আমি কি তোমার বাগানে পানি সেচে দিবো? সে বলল, হাঁ। তিনি বলিলেন, প্রতি বালতির বিনিময়ে একটি করে খেজুর। আনসারী আরও শর্ত লাগান যে, কালো খেজুর, শুষ্ক খেজুর ও নিকৃষ্ট খেজুর নিবো না, বরং উত্তম খেজুর নিবো। অতঃপর তিনি পানি সেচ করে দু সা পরিমাণ খেজুর পেলেন এবং তা নিয়ে নবী [সাঃআঃ] এর নিকট এসে হাজির হলেন। {২৪৪৮}
{২৪৪৮} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। ইরওয়া ৫/১৩৫। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ খুবই দুর্বল। উক্ত হাদিসের রাবি আলী ইবনিল মুনযির সম্পর্কে আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি সত্যবাদী ও সিকাহ। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী ও শীয়া মতাবলম্বী। ইবনি হিব্বান তাহার সিকাহ গ্রন্থে তাহার নাম উল্লেখ করিয়াছেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৪১৪০, ২১/১৪৫ নং পৃষ্ঠা] ২. মুহাম্মাদ বিন ফুদায়ল সম্পর্কে ইবনি মাঈন তাহাকে সিকাহ বলেছেন। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি সত্যবাদী। ঈমাম নাসাঈ বলেন, কোন সমস্যা নেই। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি শীয়া মতাবলম্বী। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৫৫৪৮, ২৬/২৯৩ নং পৃষ্ঠা] ৩. আবদুল্লাহ বিন সাঈদ সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন সাঈদ আল-কাত্তান বলেন, আমি তাহার মজলিসে বসে জানতে পেরেছি যে, তাহার মাঝে মিথ্যাবাদীতা রয়েছে। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তাহার হাদিস প্রত্যাখ্যানযোগ্য। ইবনি মাঈন বলেন, তিনি সিকাহ নন। ঈমাম বুখারী তাহাকে প্রত্যাখ্যান করিয়াছেন। আবু যুরআহ তাহাকে দুর্বল সাব্যস্ত করিয়াছেন। আমর ইবনিল ফাল্লাস তাহাকে প্রত্যাখ্যান করিয়াছেন। উক্ত হাদিসটি শাহিদ এর ভিত্তিতে সহীহ। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৩৩০৫, ১৫/৩১ নং পৃষ্ঠা] বন্ধক সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ খুবই দুর্বল
১৩/৬৮. অধ্যায়ঃ এক-তৃতীয়াংশ বা এক-চতুর্থাংশের চুক্তিতে ভাগচাষ
২৪৪৯ রাফি বিন খাদিজ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] মুহাকালা ও মুযাবানা পদ্ধতির লেনদেন করিতে নিষেধ করিয়াছেন এবং বলেছেনঃ তিন ব্যাক্তি জমি চাষাবাদ করিবে। [১] যাহার জমি আছে সে তা চাষাবাদ করিবে, [২] যাকে ধারে জমি দান করা হইয়াছে সে তাহার চাষাবাদ করিবে এবং [৩] যে ব্যক্তি নগদ অর্থে জমি ভাড়া নেয়। {২৪৪৯}
{২৪৪৯} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১২৮৬, ২৩২৭, ২৩৩৯, ২৩৪৪, ২৩৪৫, ২৩৪৭, ২৩৮৪, ২৭২২, ৪০১৩, মুসলিম ১৫৪৭, ১৫৪৮, তিরমিজি ১৩০৩, ১৩৮৪, নাসাঈ ৩৮৬৩, ৩৮৬৪, ৩৮৬৫, ৩৮৬৬, ৩৮৬৭, ৩৮৬৮, ৩৮৬৯, ৩৮৭০, ৩৮৭১, ৩৮৮৬, ৩৮৮৭, ৩৮৮৮, ৩৮৯০, ৩৮৯৫, ৩৮৯৬, ৩৮৯৭, ৩৮৯৯, ৩৯০০, ৩৯০৪, ৩৯০৫, ৩৯০৬, ৩৯০৭, ৩৯০৮, ৩৯০৯, ৩৯১০, ৩৯১১, ৩৯১২, ৩৯১৩, ৩৯১৪, ৩৯১৫, ৩৯১৬, ৩৯১৭, ৩৯১৮, ৩৯১৯, ৩৯২২, ৩৯২৩, ৩৯২৪, ৩৯২৫, ৩৯২৬, আবু দাউদ ৩৩৮৯, ৩৩৯১, ৩৩৯২, ৩৩৯৩, ৩৩৯৪, ৩৩৯৫, ৩৩৯৭, ৩৪০২, আহমাদ ২০৮৮, ৪৪৯০, ৪৫৭২, ৫২৯৭, ১৫৩৭৬, ১৫৩৮৪, ১৫৩৯৭, ১৬৮০৫, ১৬৮২৭, ১৬৮৩৬, ১৪১৫, সহীহাহ ১৭১৫। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান সহীহ।উক্ত হাদিসের রাবি তারিক বিন আব্দুর রহমান সম্পর্কে আবু আহমাদ বিন আদী আল-জুরজানী বলেন, আমি আশা করি তাহার মাঝে কোন সমস্যা নেই। আহমাদ বিন শুআয়ব আন-নাসাঈ বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় সন্দেহ করেন। ঈমাম যাহাবী ও ঈমাম ঈমাম দারাকুতনী তাহাকে সিকাহ বলেছেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ২৯৫২, ১৩/৩৪৫ নং পৃষ্ঠা]বন্ধক সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান সহীহ
২৪৫০ রাফি বিন খাদীজ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
[ইবনি উমার] বলেন, আমরা মুখাবারা [ভাগচাষ] করতাম এবং তা দূষণীয় মনে করতাম না। এক পর্যা্য়ে আমরা রাফি বিন খাদীজ [রাদি.] -কে বলিতে শুনলান, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ভাগচাষ নিষেধ করিয়াছেন। তখন আমরা তাহার কথায় এটা ত্যাগ করলাম। {২৪৫০}
{২৪৫০} মুসলিম ১৫৫০। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।বন্ধক সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২৪৫১ জাবির বিন আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমাদের মধ্যে কতক লোকের উদ্ধৃত্ত জমি ছিল। তাহারা তা এক-তৃতীয়াংশ ও এক-চতুর্থাংশ ফসলের চুক্তিতে বর্গা দিতো। নবী [সাঃআঃ] বলেনঃ যাহার উদ্ধৃত্ত জমি আছে সে যেন নিজে তা চাষাবাদ করে অথবা তাহার ভাইকে চাষাবাদ করিতে দেয়। সে তাতে সম্মত না হলে তাহার জমি পতিত রাখুক। {২৪৫১}
{২৪৫১} ইবনি মাজাহ ২৪৫৪, সহিহুল বুখারি হাদিস নং ২৩৪১, ২৬৩৩, মুসলিম ১৫৩৬, ৩৮৭৪, ৩৮৭৫, ৩৮৭৬, ৩৮৭৭, ৩৮৭৮, ৩৮৮০, ৩৮৮১, ৩৯২১০, আহমাদ ১৩৮৩০, ১৩৮৫৭, ১৩৮৮০, ১৩৯৪২, ১৪৩৯৯, ২৭৫৫৬, ১৪৫৫০, ১৪৫৮৮, ১৪৭৮৯, ১৪৮৫৯, ২৬১৫, গায়াতুল মারাম ৩৬১। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।বন্ধক সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২৪৫২ আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যাহার জমি আছে সে যেন তা নিজে চাষাবাদ করে অথবা তাহার অপর ভাইকে কোনরূপ বিনিময় ছাড়াই চাষাবাদ করিতে দেয়। সে তাতে সম্মত না হলে তাহার জমি পতিত রাখুক। {২৪৫২}
{২৪৫২} মুসলিম ১৫৪৪, বায়হাকী ফিস সুনান ৬/১৩৪, আল-গায়াহ ৩৬০। বন্ধক সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ নির্ণীত নয়
১৩/৬৯. অধ্যায়ঃ জমি ভাড়া নেয়া
২৪৫৩ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি তাহার জমি বর্গা পদ্ধতিতে ভাড়া দিতেন। তাহার নিকট এক ব্যক্তি এসে তাহাকে বিন খাদীজ [রাদি.] -এর বরাতে বলল, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] জমি বর্গা দিতে নিষেধ করিয়াছেন। তখন বিন উমর [রাদি.] তাহার কাছে গেলেন এবং আমিও তাহার সাথে গেলাম। বালাত নামক স্থানে তিনি তাহার সাক্ষাত পেয়ে এ সম্পর্কে তাহাকে জিজ্ঞেস করিলেন। তিনি তাহাকে অবহিত করেন যে, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বর্গাচাষ নিষিদ্ধ করিয়াছেন। অতঃপর আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাদি.] জমি বর্গা দেয়া ত্যাগ করেন। {২৪৫৩}
{২৪৫৩} ইবনি মাজাহ ২৪৪৯, ২২৬৭, ২৪৫৮, ২৪৫৯, ২৪৬০, ২৪৬৫, সহিহুল বুখারি হাদিস নং ২২৮৬, ২৩২৭, ২৩৩২, ২৩৩৯, ২৩৪৪, ২৩৪৫, ২৩৪৭, ২৩৮৪, ২৭২২, ৪০১৩, মুসলিম ১৫৪৭, ১৫৮৪, তিরমিজি ১৩০৩, ১৩৮৪, নাসাঈ ৩৮৬৩, ৩৮৬৪, ৩৮৬৫, ৩৮৬৬, ৩৮৬৭, ৩৮৬৮, ৩৮৬৯, ৩৮৭০, ৩৮৭১, ৩৮৮৭, ৩৮৮৮, ৩৮৯০, ৩৮৯৫, ৩৮৯৬, ৩৮৯৭, ৩৮৯৯, ৩৯০০, ৩৯০৪, ৩৯০৫, ৩৯০৬, ৩৯০৭, ৩৯০৮, ৩৯০৯, ৩৯১০, ৩৯১১, ৩৯১২, ৩৯১৩, ৩৯১৪, ৩৯১৫, ৩৯১৬, ৩৯১৭, ৩৯১৮, ৩৯১৯, ৩৯২২, ৩৯২৩, ৩৯২৪, ৩৯২৫, ৩৯২৬, আবু দাউদ ৩৩৮৯, ৩৩৯১, ৩৩৯২,৩৩৯৩,৩৩৯৪, ৩৩৯৫, ৩৩৯৭, ৩৩৯৯, ৩৪০০, ৩৪০১, ৩৪০২, আহমাদ ৪৪৯০, ৪৫৭২, ৫২৯৭, ১৫৩৭৬, ১৫৩৮৪, ১৫৩৯৭, ১৬৮০৫, ১৬৮২৭, ১৬৮৩৬, মুয়াত্তা মালিক ১৪১৫, ইরওয়া ১৪৭৮। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।বন্ধক সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২৪৫৪ জাবির বিন আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদের উদ্দেশে ভাষণ দিলেন এবং বললেনঃ যাহার জমি আছে সে যেন তা নিজে চাষাবাদ করে অথবা অন্যকে চাষাবাদ করিতে ধার দেয়, কিন্তু যেন ইজারা [বর্গা] না দেয়। {২৪৫৪}
{২৪৫৪} ইবনি মাজাহ ২৪৫১, সহিহুল বুখারি হাদিস নং ২৩৪১, ২৬৩৩, মুসলিম ১৫৩৬, ৩৮৭৪, ৩৮৭৫, ৩৮৭৬, ৩৮৭৭, ৩৮৭৮, ৩৮৮০, ৩৮৮১, ৩৯২১০, আহমাদ ১৩৮৩০, ১৩৮৫৭, ১৩৮৮০, ১৩৯৪২, ১৪৩৯৯, ২৭৫৫৬, ১৪৫৫০, ১৪৫৮৮, ১৪৭৮৯, ১৪৮৫৯, ২৬১৫, আল-গায়াত ৩৬১। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি ১. দামরাহ বিন রাবীআহ সম্পর্কে আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি সালিহ। আবু সাঈদ বিন ইউনুস আল-মিসরী বলেন, তিনি তাহাদের যুগে একজন ফকিহ ছিলেন। আহমাদ বিন শুআয়ব আন-নাসাঈ ও আহমাদ বিন সালিহ আল-জায়লী বলেন, তিনি সিকাহ। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় কিছু সন্দেহ করেন। যাকারিয়্যা বিন ইয়াহইয়া আস-সাজী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় সন্দেহ করেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ২৯৩৮, ১৩/৩১৬ নং পৃষ্ঠা] ২. মাতাহার সম্পর্কে আবু বাকর আল-বাযযাহার বলেন, তাহার হাদিস কেউ বর্জন করিয়াছেন এ মর্মে আমার জানা নেই। আবু জাফার আল-উকায়লী বলেন, এই সানাদে তাহার হাদিসের অনুসরণ করা যাবে না। আবু হাতিম বিন হিব্বান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় কখনো কখনো ভুল করেন। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস অধিক ভুল করেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৫৯৯৪, ২৮/৫১ নং পৃষ্ঠা]বন্ধক সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২৪৫৫ আবু সাঈদ আল-খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] মুহাকালা নিষিদ্ধ করিয়াছেন। মুহাকালা হলো, জমি কেরায়া [বর্গা] দেয়া। {২৪৫৫}
{২৪৫৫} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ২১৮৬, মুসলিম ১৫৪৬, আহমাদ ১০৬৩৮, ১০৬৬৮, ১১১৮৩, ১১২৪৪, মুয়াত্তা মালিক ১৩১৮, দারেমী ২৫৫৭। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।বন্ধক সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৩/৭০. অধ্যায়ঃ খালি জমি নগদ বিক্রয় করা অনুমোদিত
২৪৫৬ ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বহু লোককে জমি কেরায়া দেয়া সম্পর্কে সমালোচনা করিতে শুনে বলিতেনঃ সুবহানাল্লাহ! রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তো বলেছেনঃ তোমাদের কেউ তাহার জমি তাহার অপর ভাইকে বিনা লাভে কেন চাষাবাদ করিতে দেয় না? তিনি তা কেরায়া [বর্গা] দিতে নিষেধ করেননি। {২৪৫৬}
{২৪৫৬} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ২৩৩০, ২৩৪২, ২৬৩৪, মুসলিম ১৫৫০, তিরমিজি ১৩৮৫, তিরমিজি ৩৮৭৩, আবু দাউদ ৩৩৮৯, আহমাদ ২০৮৮। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। বন্ধক সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২৪৫৭ ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, তোমাদের কারো জমি তাহার ভাইকে বিনা লাভে চাষাবাদ করিতে দেয়া, এই এই পরিমাণ নির্ধারিত কিছু গ্রহণ করে চাষাবাদ করিতে দেয়ার চাইতে তাহার জন্য অধিক কল্যাণকর। ইবনি আব্বাস [রাদি.] বলেন, এটাই হলো হাকল এবং আনসারদের ভাষায় তা হলো মুহাকালাহ [বর্গাচাষ]। {২৪৫৭}
{২৪৫৭} ইবনি মাজাহ ২৪৫৬, সহিহুল বুখারি হাদিস নং ২৩৩০, ২৩৪২, ২৬৩৪, মুসলিম ১৫৫০, তিরমিজি ১৩৮৫, নাসাঈ ৩৮৭৩, আবু দাউদ ৩৩৮৯, আহমাদ ২০৮৮। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।বন্ধক সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২৪৫৮ হানযালাহ বিন কায়স হইতে বর্ণীতঃ
রাফিবিন খাদীজ [রাদি.], কে জিজ্ঞেস করিলে তিনি বলেন, আমরা এই শর্তে জমি বর্গা দিতাম যে, এই জমিতে যা উৎপন্ন হইবে তা তোমার এবং এই জমিতে যা উৎপন্ন হইবে তা আমার। অতঃপর আমাদেরকে উৎপন্ন শস্যের অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে জমি বর্গা দিতে নিষেধ করা হয়। অবশ্য আমাদেরকে নগদ অর্থে জমি ইজারা দিতে নিষেধ করা হয়নি। {২৪৫৮}
{২৪৫৮} ইবনি মাজাহ ২৪৪৯, ২২৬৭, ২৪৫৩, ২৪৫৯, ২৪৬০, ২৪৬৫, সহিহুল বুখারি হাদিস নং ২২৮৬, ২৩২৭, ২৩৩২, ২৩৩৯, ২৩৪৪, ২৩৪৫, ২৩৪৭, ২৩৮৪, ২৭২২, ৪০১৩, মুসলিম ১৫৪৭, ১৫৮৪, তিরমিজি ১৩০৩, ১৩৮৪, নাসাঈ ৩৮৬৩, ৩৮৬৪, ৩৮৬৫, ৩৮৬৬, ৩৮৬৭, ৩৮৬৮, ৩৮৬৯, ৩৮৭০, ৩৮৭১, ৩৮৮৭, ৩৮৮৮, ৩৮৯০, ৩৮৯৫, ৩৮৯৬, ৩৮৯৭, ৩৮৯৯, ৩৯০০, ৩৯০৪, ৩৯০৫, ৩৯০৬, ৩৯০৭, ৩৯০৮, ৩৯০৯, ৩৯১০, ৩৯১১, ৩৯১২, ৩৯১৩, ৩৯১৪, ৩৯১৫, ৩৯১৬, ৩৯১৭, ৩৯১৮, ৩৯১৯, ৩৯২২, ৩৯২৩, ৩৯২৪, ৩৯২৫, ৩৯২৬, আবু দাউদ ৩৩৮৯, ৩৩৯১, ৩৩৯২,৩৩৯৩,৩৩৯৪, ৩৩৯৫, ৩৩৯৭, ৩৩৯৯, ৩৪০০, ৩৪০১, ৩৪০২, আহমাদ ৪৪৯০, ৪৫৭২, ৫২৯৭, ১৫৩৭৬, ১৫৩৮৪, ১৫৩৯৭, ১৬৮০৫, ১৬৮২৭, ১৬৮৩৬, মুয়াত্তা মালিক ১৬১৫, ইরওয়া ৫/২৯৯। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।বন্ধক সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৩/৭১. অধ্যায়ঃ ভাগচাষে যা অপছন্দনীয়
২৪৫৯ জুহায়র বিন রাফি[রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদেরকে এমন একটি কাজ থেকে বিরত থাকতে বলেন, যা ছিল আমাদের জন্য উপকারী। আমি বললাম, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যা বলেছেন সেটাই যথার্থ। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] জিজ্ঞেস করিলেনঃ তোমরা তোমাদের জমি চাষাবাদের ব্যাপারে কী করো? আমরা বললাম, আমরা তা এক-তৃতীয়াংশ, এক-চতুর্থাংশ শস্য বা কয়েক ওয়াসাক যব বা গমের বিনিময়ে বর্গা দেই। তিনি বলেনঃ তোমরা তা করো না। হয় তোমরা নিজেরা তা চাষাবাদ করো অথবা অন্যকে চাষাবাদ করিতে [ধার] দাও। {২৪৫৯}
{২৪৫৯} ইবনি মাজাহ ২৪৪৯, ২২৬৭, ২৪৫৮, ২৪৫৩, ২৪৬০, ২৪৬৫, সহিহুল বুখারি হাদিস নং ২২৮৬, ২৩২৭, ২৩৩২, ২৩৩৯, ২৩৪৪, ২৩৪৫, ২৩৪৭, ২৩৮৪, ২৭২২, ৪০১৩, মুসলিম ১৫৪৭, ১৫৮৪, তিরমিজি ১৩০৩, ১৩৮৪, নাসাঈ ৩৮৬৩, ৩৮৬৪, ৩৮৬৫, ৩৮৬৬, ৩৮৬৭, ৩৮৬৮, ৩৮৬৯, ৩৮৭০, ৩৮৭১, ৩৮৮৭, ৩৮৮৮, ৩৮৯০, ৩৮৯৫, ৩৮৯৬, ৩৮৯৭, ৩৮৯৯, ৩৯০০, ৩৯০৪, ৩৯০৫, ৩৯০৬, ৩৯০৭, ৩৯০৮, ৩৯০৯, ৩৯১০, ৩৯১১, ৩৯১২, ৩৯১৩, ৩৯১৪, ৩৯১৫, ৩৯১৬, ৩৯১৭, ৩৯১৮, ৩৯১৯, ৩৯২২, ৩৯২৩, ৩৯২৪, ৩৯২৫, ৩৯২৬, আবু দাউদ ৩৩৮৯, ৩৩৯১, ৩৩৯২,৩৩৯৩,৩৩৯৪, ৩৩৯৫, ৩৩৯৭, ৩৩৯৯, ৩৪০০, ৩৪০১, ৩৪০২, আহমাদ ৪৪৯০, ৪৫৭২, ৫২৯৭, ১৫৩৭৬, ১৫৩৮৪, ১৫৩৯৭, ১৬৮০৫, ১৬৮২৭, ১৬৮৩৬, মুয়াত্তা মালিক ১৪১৫, ইরওয়া ৫/৩০০। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। বন্ধক সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২৪৬০ রাফিবিন খাদীজ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
আমাদের কেউ তাহার জমির মুখাপেক্ষী না হলে সে তা এক-তৃতীয়াংশ বা এক-চতুর্থাংশ বা অর্ধেক ফসলের শর্তে বর্গা দিতো এবং তিনটি নালার শর্ত করতো [এভাবে যে, সেখানকার ফসল আমি নেবো] , আরও শর্ত লাগাতো ভূষি এবং বসন্তকালের পানি থেকে উৎপাদিত ফসল নেয়ার। তখনকার জীবনযাত্রা ছিল খুবই কষ্টকর। তখন জমিতে চাষাবাদ করা হতো লোহা এবং আল্লাহর মর্জিতে অন্যান্য জিনিস দিয়ে, অতঃপর তা থেকে লাভ আসতো। অতঃপর রাফি বিন খাদীজ [রাদি.] আমাদের নিকট এসে বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তোমাদের এমন একটি কাজ থেকে বিরত থাকতে বলেছেন যা ছিল তোমাদের জন্য উপকারী। অবশ্য আল্লাহর আনুগত্য ও তাহাঁর রাসূলের আনুগত্য তোমাদের জন্য অধিক উপকারী। রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তোমাদের জন্য ভাগচাষ নিষিদ্ধ করিয়াছেন এবং বলেছেনঃ যে ব্যক্তি তাহার জমির মুখাপেক্ষী নয়, সে যেন তা তাহার ভাইকে চাষাবাদ করিতে ধার দেয় অন্যথায় তা পতিত রাখে। {২৪৬০}
{২৪৬০} ইবনি মাজাহ ২৪৪৯, ২২৬৭, ২৪৫৮, ২৪৫৯, ২৪৬৫, সহিহুল বুখারি হাদিস নং ২২৮৬, ২৩২৭, ২৩৩২, ২৩৩৯, ২৩৪৪, ২৩৪৫, ২৩৪৭, ২৩৮৪, ২৭২২, ৪০১৩, মুসলিম ১৫৪৭, ১৫৮৪, তিরমিজি ১৩০৩, ১৩৮৪, নাসাঈ ৩৮৬৩, ৩৮৬৪, ৩৮৬৫, ৩৮৬৬, ৩৮৬৭, ৩৮৬৮, ৩৮৬৯, ৩৮৭০, ৩৮৭১, ৩৮৮৭, ৩৮৮৮, ৩৮৯০, ৩৮৯৫, ৩৮৯৬, ৩৮৯৭, ৩৮৯৯, ৩৯০০, ৩৯০৪, ৩৯০৫, ৩৯০৬, ৩৯০৭, ৩৯০৮, ৩৯০৯, ৩৯১০, ৩৯১১, ৩৯১২, ৩৯১৩, ৩৯১৪, ৩৯১৫, ৩৯১৬, ৩৯১৭, ৩৯১৮, ৩৯১৯, ৩৯২২, ৩৯২৩, ৩৯২৪, ৩৯২৫, ৩৯২৬, আবু দাউদ ৩৩৮৯, ৩৩৯১, ৩৩৯২,৩৩৯৩,৩৩৯৪, ৩৩৯৫, ৩৩৯৭, ৩৩৯৯, ৩৪০০, ৩৪০১, ৩৪০২, আহমাদ ৪৪৯০, ৪৫৭২, ৫২৯৭, ১৫৩৭৬, ১৫৩৮৪, ১৫৩৯৭, ১৬৮০৫, ১৬৮২৭, ১৬৮৩৬, মুয়াত্তা মালিক ১৪১৫, ইরওয়া ৫/৩০০। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।বন্ধক সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২৪৬১ যায়দ বিন সাবিত [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
আল্লাহ রাফি বিন খাদীজ [রাদি.] কে ক্ষমা করুন। আল্লাহর শপথ! সেই হাদিসটি সম্পর্কে আমি তাহার চেয়ে বেশি অবগত। একদা দু ব্যক্তি ঝগড়া করিতে করিতে নবী [সাঃআঃ] –এর কাছে এসে উপস্থিত হলো। তখন তিনি বললেনঃ এই যদি হয় তোমাদের অবস্থা, তাহলে তোমরা জমি বর্গা দিও না। রাফি [রাদি.] তাহার কথার শুধু এটুকুই শুনলেনঃ “তাহলে তোমরা জমি বর্গা দিওনা”। {২৪৬১}
{২৪৬১} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ২৩২৭, ২৩৩২, ২৩৩৯, ২৩৪৪, ২৩৪৭, ২৩৮৪, ২৭২২, ১০১৩, নাসাঈ ৩৯২৭, আবু দাউদ ৩৩৯০, আহমাদ ২১০৭৮, ২১১১৮, গায়াতুক মারাম ৩৬৬। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি ১. আব্দুর রহমান বিন ইসহাক সম্পর্কে আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তাহার হাদিস গ্রহন করা যায় তবে তা দলীলযোগ্য হইবে না। আহমাদ বিন সালিহ আল-জায়লী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে তাহার কাদারিয়্যা মতাবলম্বী হওয়ার ব্যাপারে অভিযোগ রয়েছে। ঈমাম দারাকুতনী বলেন, তিনি দুর্বল। সুফইয়ান বিন উয়াইনাহ বলেন, তিনি কাদারিয়্যা মতাবলম্বী। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৩৭৫৫, ১৬/৫১৯ নং পৃষ্ঠা] ২. আল-ওয়ালীদ বিন আবুল ওয়ালীদ সম্পর্কে আবু হাতিম বিন হিব্বান বলেন, তিনি কখনো কখনো কিছু রাবীর বিপরীত হাদিস বর্ণনা করেন। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি সিকাহ। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি যাচাই-বাচাই ছাড়া হাদিস গ্রহন করেন ও তা বর্ণনা করেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৬৭৪৫, ৩১/১০৭ নং পৃষ্ঠা] বন্ধক সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১৩/৭২. অধ্যায়ঃ এক-তৃতীয়াংশ বা এক-চতুর্থাংশ ফসলের শর্তে জমি বর্গা দেয়া জায়েয
২৪৬২ আবদুল্লাহ বিন আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
[আমর বিন দীনার] বলেন, আমি তাঊস [রাদি.] কে বললাম, হে আবু আবদুর রহমান! আপনি যদি জমি বর্গা দেয়া ত্যাগ করিতেন! কারণ লোকেরা বলাবলি করে যে, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ভাগচাষ নিষিদ্ধ করিয়াছেন। তিনি বলেন, হে আমর! আমি লোকেদের সাহায্য করি এবং তাহাদের দান করি। মু আয বিন জাবাল [রাদি.] আমাদের উপস্থিতিতে লোকেদের সাথে এরূপ লেনদেন করিয়াছেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ভাগচাষ নিষেধ করেননি। বরং তিনি বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যদি তাহার ভাইকে বিনা লাভে জমি দিতো তবে সেটা তাহার জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ বিনিময় গ্রহণ করে দেয়ার চেয়ে অধিক কল্যাণকর হতো। {২৪৬২}
{২৪৬২} ইবনি মাজাহ, ২৪৫৬, ২৪৫৭,২৪৬৪, সহিহুল বুখারি হাদিস নং ২৩৩০, ২৩৪২, ২৬৩৪, মুসলিম ১৫৫০, তিরমিজি ১৩৮৫, নাসাঈ ৩৮৭৩, আবু দাউদ ৩৩৮৯, আহমাদ ২০৮৮, গায়াতুল মারাম ৩৬২। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। বন্ধক সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২৪৬৩ মুআয বিন জাবাল [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর যুগে এবং আবু বকর [রাদি.] , উমার [রাদি.] ও উসমান [রাদি.] – এর যুগে এক-তৃতীয়াংশ ও এক-চতুর্থাংশ ফসল প্রদানের শর্তে জমি বর্গা দিতেন এবং তোমার এই কালেও তিনি তাই করছেন। {২৪৬৩}
{২৪৬৩} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। বায়হাকী ফিস সুনান ৬/১৫০। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। বন্ধক সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২৪৬৪ ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] অবশ্যই বলেছেনঃ তোমাদের কেউ তাহার ভাইকে নিঃস্বার্থভাবে চাষাবাদের জন্য জমি দান করিলে সেটা নির্দিষ্ট পরিমাণ উৎপাদিত ফসল প্রদানের শর্তে দেয়ার চেয়ে তাহার জন্য অধিক কল্যাণকর। {২৪৬৪}
{২৪৬৪} ইবনি মাজাহ, ২৪৫৬, ২৪৫৭,২৪৬২, সহিহুল বুখারি হাদিস নং ২৩৩০, ২৩৪২, ২৬৩৪, মুসলিম ১৫৫০, তিরমিজি ১৩৮৫, নাসাঈ ৩৮৭৩, আবু দাউদ ৩৩৮৯, আহমাদ ২০৮৮, আল-গায়াহ ৩৬২। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। বন্ধক সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৩/৭৩. অধ্যায়ঃ খাদ্যশস্যের বিনিময়ে জমি বর্গা দেয়া
২৪৬৫ রাফিবিন খাদীজ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
আমরা রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর যুগে জমি বর্গাচাষে দিতাম। আমার কোন এক চাচা আমাদের নিকট এসে বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যাহার জমি আছে, সে যেন তা নির্দিষ্ট পরিমাণ খাদ্যশস্য [উৎপন্ন ফসল] প্রদানের শর্তে চাষাবাদ করিতে না দেয়। {২৪৬৫}
{২৪৬৫} ইবনি মাজাহ ২৪৪৯, ২২৬৭, ২৪৫৮, ২৪৫৩, ২৪৬০, ২৪৬৫, সহিহুল বুখারি হাদিস নং ২২৮৬, ২৩২৭, ২৩৩২, ২৩৩৯, ২৩৪৪, ২৩৪৫, ২৩৪৭, ২৩৮৪, ২৭২২, ৪০১৩, মুসলিম ১৫৪৭, ১৫৮৪, তিরমিজি ১৩০৩, ১৩৮৪, নাসাঈ ৩৮৬৩, ৩৮৬৪, ৩৮৬৫, ৩৮৬৬, ৩৮৬৭, ৩৮৬৮, ৩৮৬৯, ৩৮৭০, ৩৮৭১, ৩৮৮৭, ৩৮৮৮, ৩৮৯০, ৩৮৯৫, ৩৮৯৬, ৩৮৯৭, ৩৮৯৯, ৩৯০০, ৩৯০৪, ৩৯০৫, ৩৯০৬, ৩৯০৭, ৩৯০৮, ৩৯০৯, ৩৯১০, ৩৯১১, ৩৯১২, ৩৯১৩, ৩৯১৪, ৩৯১৫, ৩৯১৬, ৩৯১৭, ৩৯১৮, ৩৯১৯, ৩৯২২, ৩৯২৩, ৩৯২৪, ৩৯২৫, ৩৯২৬, আবু দাউদ ৩৩৮৯, ৩৩৯১, ৩৩৯২,৩৩৯৩,৩৩৯৪, ৩৩৯৫, ৩৩৯৭, ৩৩৯৯, ৩৪০০, ৩৪০১, ৩৪০২, আহমাদ ৪৪৯০, ৪৫৭২, ৫২৯৭, ১৫৩৭৬, ১৫৩৮৪, ১৫৩৯৭, ১৬৮০৫, ১৬৮২৭, ১৬৮৩৬, মুয়াত্তা মালিক ১৪১৫। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। বন্ধক সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৩/৭৪. অধ্যায়ঃ কেউ বিনা অনুমতিতে অপরের জমি চাষাবাদ করিলে
২৪৬৬ রাফিবিন খাদীজ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, কোন ব্যক্তি অন্য সম্প্রদায়ের জমি তাহাদের অনুমতি ছাড়া চাষাবাদ করিলে সে উৎপন্ন ফসলের কিছুই পাবে না, তবে সে তাহার চাষাবাদের খরচপত্র ফেরত পাবে। {২৪৬৬}
{২৪৬৬} তিরমিজি ১৩৬৬, আবু দাউদ ৩৪০৩, ইরওয়া ১৫১৯, যইফাহ ১/১৪১। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।বন্ধক সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৩/৭৫. অধ্যায়ঃ উৎপন্ন খেজুর ও আঙ্গুরের ভাগ দেয়ার শর্তে চাষাবাদ করিতে দেয়া
২৪৬৭ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] খায়বারবাসীদেরকে উৎপন্ন ফল বা ফসলের অর্ধেক প্রদানের শর্তে তথাকার বাগানের কাজে নিয়োজিত করেন। {২৪৬৭}
{২৪৬৭} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ২২৮৬, ২৩২৮, ২৩২৯, ২৩৩১, ২৩৩৮, ২৪৯৯, ২৭২০, ৪২৪৮, মুসলিম ১৫৫১, তিরমিজি ১৩৮৩, নাসাঈ ৩৯২৯, ৩৯৩০, আবু দাউদ ৩০০৮, ৩৪০৮, ৩৪০৯, আহমাদ ৪৬৪৯, ৪৭১৮, ৪৯২৭, দারেমী ২৬১৪, ইরওয়া ১৪৭১, রাওদুন নাদীর ৪৮৭। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।বন্ধক সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২৪৬৮ ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] খায়বার এর খেজুর বাগান ও জমি তথাকার বাসিন্দাদের [উৎপন্ন খেজুর ও শস্যের] অর্ধেক প্রদানের শর্তে চাষাবাদ করিতে দেন। {২৪৬৮}
{২৪৬৮} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি ইবনি আবু লায়লা সম্পর্কে ইয়াকুব বিন সুফইয়ান বলেন, তিনি সিকাহ। শুবাহ ইবনিল হাজ্জাজ বলেন, আমি তাহার চেয়ে দুর্বল স্মৃতিশক্তি সম্পন্ন আর কাউকে দেখিনি। ইয়াহইয়া বিন সাঈদ আল-কাত্তান বলেন, তিনি জইফ বা দুর্বল। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তাহার স্মৃতিশক্তি খুবই দুর্বল। ইবনি মাঈন বলেন, সমস্যা নেই। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৫৪০৬, ২৫/৬২২ নং পৃষ্ঠা]।বন্ধক সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২৪৬৯ আনাস বিন মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] খায়বার এলাকা জয় করার পর তা উৎপন্ন শস্যের অর্ধেক প্রদানের শর্তে চাষাবাদ করিতে দেন। {২৪৬৯}
{২৪৬৯} আহমাদ ১২০০১। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি আলী ইবনিল মুনযির সম্পর্কে আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি সত্যবাদী ও সিকাহ। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে শীয়া মতাবলম্বী। ইবনি হিব্বান তাহার সিকাহ গ্রন্থে তাহার নাম উল্লেখ করিয়াছেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৪১৪০, ২১/১৪৫ নং পৃষ্ঠা] ২. মুহাম্মাদ বিন ফুদায়ল সম্পর্কে ইবনি মাঈন তাহাকে সিকাহ বলেছেন। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি সত্যবাদী। ঈমাম নাসাঈ বলেন, কোন সমস্যা নেই। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি শীয়া মতাবলম্বী। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৫৫৪৮, ২৬/২৯৩ নং পৃষ্ঠা] ।বন্ধক সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৩/৭৬. অধ্যায়ঃ খেজুর গাছে [পুরুষ ও মাদীর মধ্যে] সংযোগ লাগানো
২৪৭০ তালহাহ বিন উবায়দুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
আমি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর সাথে একটি খেজুর বাগান অতিক্রম করছিলাম। তিনি লোকদেরকে দেখলেন যে, তাহারা নর খেজুর গাছের কেশর মাদী খেজুর গাছের কেশরের সাথে সংযোজন করছে। তিনি লোকদেরকে জিজ্ঞাসা করিলেনঃ এরা কী করছে? তালহা [রাদি.] বলেন, তাহারা নর গাছের কেশর নিয়ে মাদী গাছের কেশরের সাথে সংযোজন করছে। তিনি বলেনঃ এটা কোন উপকারে আসবে বলে মনে হয় না। লোকজন তাহাঁর মন্তব্য অবহিত হয়ে উক্ত প্রক্রিয়া ত্যাগ করিল। ফলে খেজুরের উৎপাদন হ্রাস পেলো। নবী [সাঃআঃ] বিষয়টি অবহিত হয়ে বলেনঃ এটা তো ছিল একটা ধারণা মাত্র। ঐ প্রক্রিয়ায় কোন উপকার হলে তোমরা তা করো। আমি [এ বিষয়ে] তোমাদের মতই একজন মানুষ। ধারণা কখনো ভুলও হয়, কখনো ঠিকও হয়। কিন্তু আমি তোমাদের এভাবে যা বলি “আল্লাহ বলেছেন”, সেক্ষেত্রে আমি কখনো আল্লাহ্র উপর মিথ্যা আরোপ করিব না। {২৪৭০}
{২৪৭০} মুসলিম ২৩৬১, আহমাদ ১৩৯৮। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি সিমাক বিন হারব সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তিনি সিকাহ। ইয়াকুব বিন শায়বাহ বলেন, তাহার পূর্বে বর্ণিত হাদিস যারা শ্রবন করিয়াছেন তা সহীহ। ইবনি হিব্বান বলেন, তিনি সিকাহ তবে হাদিস বর্ণনায় অধিক ভুল করেন। আবদুল্লাহ ইবনিল মুবারাক বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ২৫৭৯, ১২/১১৫ নং পৃষ্ঠা]।বন্ধক সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২৪৭১ আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নবী [সাঃআঃ] কিছু শোরগোল শুনতে পেয়ে জিজ্ঞেস করেন, এটা কিসের শোরগোল? সাহাবীগণ বলেন, লোকজন নর খেজুর গাছের কেশর মাদী খেজুর গাছের কেশরের সাথে সংযোগ করছে। তিনি বলেনঃ তাহারা এরূপ না করিলেই ঠিক হতো। অতএব তাহারা সে বছর উক্ত প্রক্রিয়া ত্যাগ করিল। এতে খেজুরের ফলন হ্রাস পেলো। তাহারা বিষয়টি নবী [সাঃআঃ] কে জানালে তিনি বলেনঃ তোমাদের একান্তই পার্থিব কোন বিষয় হলে সেটা তোমাদের নিজস্ব ব্যাপার এবং তোমাদের দ্বীনের কোন বিষয় হলে তা আমার কাছে রুজু করিবে। {২৪৭১}
{২৪৭১} মুসলিম ২৩৬৩, আহমাদ ২৪৩৯৯, বায়হাকী ফিস সুনান ৬/১৫৪। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।বন্ধক সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৩/৭৭. অধ্যায়ঃ মুসলমানগণ তিনটি বিষয়ে যৌথ অংশীদার
২৪৭২ ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, মুসলমানগণ তিনটি বিষয়ে যৌথ অংশীদার- পানি, ঘাস ও আগুনে, এগুলোর মূল্য নেয়া হারাম। আবু সাঈদ [রাদি.] বলেন, অর্থাৎ প্রবাহমান পানি। {২৪৭২}
তাহকিক আলবানিঃ [আরবি] অর্থাৎ তাহার মূল্য নেয়া হারাম – কথাটি ব্যতীত সহীহ{২৪৭২} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। ইরওয়া ১৫৫২, মিশকাত ৩০০১, আত-তালীকুর রাগীব ২/২৫৫। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ وَثَمَنُهُ حَرَامٌ [তাহার মূল্য নেয়া হারাম] কথাটি ব্যাতিত সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি আবদুল্লাহ বিন খিরাশ বিন হাওশাব আশ-শায়বানী সম্পর্কে আবু আহমাদ বিন আদী আল-জুরজানী বলেন, তিনি আওওয়াম ছাড়া অন্য কারো নিকট থেকে হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন এ মর্মে আমার জানা নেই। আমভাবে বলা যায় তাহার হাদিস রক্ষিত নয়। আবু হাতিম বিন হিব্বান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় কখনো কখনো ভুল করেন। আহমাদ বিন শুআয়ব আন-নাসাঈ বলেন, তিনি সিকাহ নয়। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৩২৪৪, ১৪/৪৫৩ নং পৃষ্ঠা]।বন্ধক সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২৪৭৩ আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, তিনটি জিনিস সংগ্রহে [কাউকে] বাধা দেয়া যাবে না- পানি, ঘাস ও আগুন। {২৪৭৩}
{২৪৭৩} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। ইরওয়া ৬/৮,৯। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।বন্ধক সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২৪৭৪ আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ! এমন কী জিনিস আছে যা সংগ্রহে বাধা দেয়া হালাল নয়? তিনি বলেনঃ পানি, লবণ ও আগুন। আয়েশা [রাদি.] বলেন, আমি বললাম, ইয়া রাসূলুল্লাহ! এই পানি সম্পর্কে তো আমরা জানি কিন্তু লবণ ও আগুনের ব্যাপারে কেন বাধা দেয়া যাবে না? তিনি বলেনঃ হে হুমায়রা! যে ব্যক্তি আগুন দান করিল, সে যেন ঐ আগুন দিয়ে রান্না করা যাবতীয় খাদ্যই দান করিল। যে ব্যক্তি লবণ দান করিল, ঐ লবণে খাদ্য যতোটা সুস্বাদু হলো তা সবই যেন সে দান করিল। যে ব্যক্তি কোন মুসলমানকে এমন স্থানে পানি পান করালো, যেখানে তা সহজলভ্য, সে যেন একটি গোলামকে দাসত্বমুক্ত করিল এবং যে ব্যক্তি কোন মুসলমানকে এমন স্থানে পানি পান করালো, যেখানে তা দুষ্প্রাপ্য, সে যেন তাহাকে জীবন দান করিল। {২৪৭৪}
{২৪৭৪} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। মিশকাত ৩০০৭, যইফাহ ১২০। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি আলি বিন গুরাব সম্পর্কে আবু জাফার আল-উকায়লী তাহার হাদিস উল্লেখ করে বলেন, তাহার হাদিসের অনুসরণ করা যাবে না। এই হাদিস ব্যাতিত তাহার সম্পর্কে কোথাও জানা যায়না। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, তিনি দুর্বল মানুষ তাহার হাদিস বর্জন করেছে। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি সত্যবাদী। আবু সাঈদ বিন ইউনুস বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় তাদলীস করেন, তাহার শীয়া মতাবলম্বী হওয়ার ব্যাপারে অভিযোগ রয়েছে। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৪১২০, ২১/৯০ নং পৃষ্ঠা] ২. যুহায়র বিন মারযুক সম্পর্কে আবু আহমাদ বিন আদী আল-জুরজানী বলেন, তাহার একটিই হাদিস মুদাল। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি মাজহুল বা অপরিচিত। ঈমাম যাহাবী বলেন, তিনি দুর্বল। ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, আমি তাহাকে চিনি না। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ২০১৮, ৯/৪১৯ নং পৃষ্ঠা] ৩. আলী বিন যায়দ বিন জুদআন সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন সাঈদ আল-কাত্তান বলেন, তাহার হাদিস প্রত্যাখ্যানযোগ্য। আহমাদ বিন হাম্বল ও ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। ইয়াকুব বিন শায়বাহ বলেন, তিনি সিকাহ সালিহ। আল-আজালী বলেন, কোন সমস্যা নেই। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৪০৭০, ২০/৪৩৪ নং পৃষ্ঠা] বন্ধক সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১৩/৭৮ অধ্যায়ঃ সরকারীভাবে নদী-নালা ও পানির প্রস্রবণ জায়গিররূপে দান করা
২৪৭৫ আবয়াদ বিন হাম্মাল [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি সাদ্দ মারিব নামক লবণ খনিটি জায়গিররূপে প্রার্থনা করিলেন। নবী [সাঃআঃ] তাহাকে সেটি জায়গিররূপে দান করিলেন। অতঃপর আকরা বিন হাবিস আত-তামীমী [রাদি.] রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর নিকট এসে বলেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ! জাহিলী যুগে আমি লবণের খনিতে গিয়েছিলাম। ঐ এলাকায় কোন পানি নাই। যে ব্যক্তিই সেখানে যায় সে-ই কিছু লবণ সংগ্রহ করে নেয়। তা প্রবাহিত পানির মতই পর্যাপ্ত। [এ কথা শুনে] রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আবয়াদ বিন হাম্মালের নিকট লবণের চুক্তির প্রত্যাহার চাইলেন। আব্য়াদ বিন হাম্মাল বলেন, আমি আপনার সাথে চুক্তি রদ করিতে প্রস্তুত এই শর্তে যে, সেটিকে আপনি আমার পক্ষ থেকে দানরূপে গণ্য করবেন। রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ তা তোমার পক্ষ থেকে দান হিসেবেই গণ্য হইবে। আর তা প্রবাহমান পানির ন্যায়, যে-ই সেখানে যাবে তা নিতে পারবে। অধস্তন রাবী ফারাজ ইবনিসাঈদ [রাদি.] বলেন, সেটা বর্তমানেও সেভাবেই আছে। যে-ই সেখানে যায়, সে তা থেকে সংগ্রহ করে। তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] তাহার থেকে সেটি ফেরত নেয়ার বিনিময়ে তাহাকে জুরুফ মুরাদ নামক স্থানের এক খণ্ড কৃষিভূমি ও একটি খেজুর বাগান জায়গিররূপে দান করেন। {২৪৭৫}
{২৪৭৫} তিরমিজি ১৩৮০, আবু দাউদ ৩০৬৪, দারেমী ২৬০৮, আত-তালীকু আলার রাওদাতিন নাদিয়্যাহ ২/১৩৭। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান।বন্ধক সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান হাদিস
১৩/৭৯. অধ্যায়ঃ পানি বিক্রয় করা নিষেধ
২৪৭৬ ইয়াস বিন আবদুল মুযানী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি কিছু লোককে পানি বিক্রয় করিতে দেখে বলেন, তোমরা পানি বিক্রয় করো না। আমি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে পানি বিক্রয় করিতে নিষেধ করিতে শুনিয়াছি। {২৪৭৬}
{২৪৭৬} তিরমিজি ১২৭১, নাসাঈ ৪৬৬১, ৪৬৬২, ৪৬৬৩, আবু দাউদ ৩৪৭৮, আহমাদ ১৫০১৮, ১৬৭৮৫, দারেমী ২৬১২। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। বন্ধক সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২৪৭৭ জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] উদ্বৃত্ত পানি বিক্রয় করিতে নিষেধ করিয়াছেন। {২৪৭৭}
{২৪৭৭} মুসলিম ১৫৬৫, নাসাঈ ৪৬৬০, ৪৬৭০, আহমাদ ১৪২২৯, ১৪২৩৪। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।বন্ধক সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৩/৮০. অধ্যায়ঃ চতুষ্পদ জন্তুকে ঘাস খেতে বাধা দেয়ার উদ্দেশ্যে উদ্বৃত্ত পানি ব্যবহারে বাধা দেয়া নিষেধ
২৪৭৮ ।আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নবী [সাঃআঃ] বলেনঃ তোমাদের কেউ যেন [অপরকে উদ্বৃত্ত পানি ব্যবহারে বাধা না দেয়, যাতে চতুষ্পদ জন্তুর ঘাস খাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। {২৪৭৮}
{২৪৭৮} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ২৩৫৩, ২৩৫৪, ৬৯৬২, মুসলিম ১৫৬৬, তিরমিজি ১২৭২, আবু দাউদ ৩৪৭৩, আহমাদ ৭২৮০, ৭৬৪০, ৮০২৩, ৮৫০৮, ২৭২৮২, ১০১৯৩, দারেমী ১৪৫৯। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।বন্ধক সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২৪৭৯ আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, উদ্বৃত্ত পানি ব্যবহারে বাধা দেয়া যাবে না এবং কূপের উদ্বৃত্ত পানি ব্যবহারেও বাধা দেয়া যাবে না। {২৪৭৯}
{২৪৭৯} আহমাদ ২৪২৯০, ২৪৫৬৪, ২৪৬১৬, ২৫৭৭৯। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি হারিসাহ সম্পর্কে আহমাদ বিন হাম্বল তাহাকে দুর্বল বলেছেন। ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তিনি সিকাহ নন। ঈমাম বুখারী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় মুনকার। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় মুনকার ও দুর্বল। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, কোন সমস্যা নেই। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ১০৫৭, ৫/৩১৩ নং পৃষ্ঠা] উক্ত হাদিসটি সহীহ কিন্তু হারিসাহ এর কারণে সানাদটি দুর্বল। হাদিসটির ২৫৭ টি শাহিদ হাদিস রয়েছে, তন্মধ্যে ৩২ টি খুবই দুর্বল, ৭৯ টি দুর্বল, ৯০ টি হাসান, ৫৮ টি সহীহ হাদিস পাওয়া যায়। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলঃ বুখারী ২৩৫৩, ২৩৫৪, মুসলিম ১৫৬৬, ১৫৬৭, ১৫৬৮, তিরমিজি ১২৭১, ১২৭২, আবু দাউদ ৩৪৭৩, ৩৪৭৮, দারেমী ২৬১২, আহমাদ ৬৬৩৫, ৬৬৮৩, ৭০৭১, ৭২৮০, ৭৬৪০, ৮০২৩, ২৭৯৩০, ৯১৬২, ৯৬৫৫, ১০১১৬, ১০১৯৩, ১৪২২৯, ১৪২৩৪, ১৪৪২৮, ১৫০১৮।বন্ধক সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৩/৮১. অধ্যায়ঃ উপত্যকা থেকে পানিসেচ এবং যে পরিমাণ পানি আটকে রাখা যাবে
২৪৮০ আব্দুল্লাহ ইবনিয যুবায়র [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
হাররাহ থেকে প্রবাহিত নালার পানি বন্টনকে কেন্দ্র করে এক আনসারী ব্যক্তি যুবায়র [রাদি.] – এর বিরুদ্ধে রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর নিকট অভিযোগ দায়ের করে। এ নালা তাহার খেজুর বাগানে সিঞ্চন করতো। আনসারী বলল, পানি প্রবাহিত হইতে দাও। কিন্তু যুবায়র [রাদি.] তা অস্বীকার করেন। তাহারা রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর কাছে এই বিবাদ পেশ করিলেন। রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন হে জুবায়র, তোমার জমিতে পানি সিঞ্চন কর, অতঃপর তো তোমার প্রতিবেশীর জন্য ছেড়ে দাও। তাতে আনসারী রাগান্বিত হল, এবং বলিল হে আল্লাহর রাসূল সে আপনার ফুফুর ছেলে বলে [আপনি এরকম ফয়সালা করিলেন] রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর চেহারা রক্তিমাভ হয়ে গেলো। তিনি বলেনঃ হে যুবায়র ! তোমার ক্ষেতে পানি দাও, তাহারপর তা আটকে রাখো যাতে আইল পর্যন্ত উঠতে পারে। আব্দুল্লাহ ইবনিয যুবায়র [রাদি.] বলেন, আল্লাহর শপথ ! আমার ধারণামতে এ সম্পর্কেই নিম্নোক্ত আয়াত নাযিল হয় [অনুবাদ] ঃ
“হে মুহাম্মদ ! তোমার প্রতিপালকের শপথ ! এরা কিছুতেই মুমিন হইতে পারে না, যতক্ষণ পর্যন্ত তাহাদের পারস্পরিক মতভেদের ব্যাপারসমূহে তোমাকে বিচারকরূপে মেনে না নিবে, অতঃপর তুমি যে ফয়সালা করিবে, সেই সম্পর্কে তাহারা নিজেদের মনে কিছুমাত্র কুন্ঠাবোধ করিবে না। বরং এর সামনে নিজেদেরকে পূর্ণরূপে সোপর্দ করে দিবে”।
[সূরা নিসাঃ ৬৫]। {২৪৮০}{২৪৮০} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ২৩৬০, মুসলিম ২৩৫৭, তিরমিজি ১৩৬৩, ৩০২৭, নাসাঈ ৫৪০৭, ৫৪১৬, আবু দাউদ ৩৬৩৭, আহমাদ ১৪২২, ৬/১৫৩, ১০/১০৬, আল-হাকিম ফিল মুসতাদরাক ৩/৩৬৪, ইবনি হিব্বান ৪২, ইবনিল জারুদ ১০২১। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।বন্ধক সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২৪৮১ সালাবাহ বিন আবু মালিক হইতে বর্ণীতঃ
রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] মাহযূর নামক উপত্যকার পানি প্রবাহ সম্পর্কে ফয়সালা দেন যে, উঁচু ভূমি নিচু ভূমির উপর অগ্রাধিকার পাবে। উঁচু ভূমিতে পানি জমে তা পায়ের গোছা পর্যন্ত পৌঁছার পর তা নিচু ভূমির দিকে ছেড়ে দিতে হইবে। {২৪৮১}
{২৪৮১} আবু দাউদ ৩৬৩৮, বায়হাকী ফিস সুনান ৬/১০৫। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি ১. যাকারিয়্যা মানযুর বিন সালাবাহ বিন আবু মালিক সম্পর্কে আবু আহমাদ আল-হাকিম বলেন, তিনি আহলে ইলমের নিকট নির্ভরযোগ্য নয়। আবু আহমাদ আল-আসকারী বলেন, তাহার ব্যাপারে সমালোচনা রয়েছে। আবু বিশর আদ-দাওলাবী বলেন, তিনি সিকাহ নয়। আহমাদ বিন শুআয়ব আন-নাসাঈ ও ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি দুর্বল। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ১৯৯৬, ৯/৩৬৯ নং পৃষ্ঠা] ২. মুহাম্মাদ বিন উকবাহ বিন আবু মালিক সম্পর্কে ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তাহার সম্পর্কে কিছু জানা যায়না। ঈমাম বুখারী তাহার তারিখুল কাবীর এর মাঝে উল্লেখ করিয়াছেন। তিনি ঐ দিকে ইশারা করিয়াছেন যে, তাহার চাচা সালাবাহ বিন আবু মালিক ও ইবনি আব্বাস [রাদি.] থেকে হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন এবং তাহার থেকে যারিয়্যা বিন মানসুর ও মুহাম্মাদ বিন রিফাআহ হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৫৪৬৮, ২৬/১২১ নং পৃষ্ঠা] উক্ত হাদিসটি সহীহ কিন্তু যাকারিয়্যা মানযুর বিন সালাবাহ বিন আবু মালিক ও তাহার উসতায মুহাম্মাদ বিন উকবাহ বিন আবু মালিক এর কারণে সানাদটি দুর্বল। হাদিসটির ২৪৩ টি শাহিদ হাদিস রয়েছে, তন্মধ্যে ৪ টি খুবই দুর্বল, ৩৫ টি দুর্বল, ৭৮ টি হাসান, ১২৬ টি সহীহ হাদিস পাওয়া যায়, তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল, বুখারী ২৩৬০, ২৩৬১, ২৩৬২, ২৭০৮, ৪৫৮৫, মুসলিম, ২৩৫৮, তিরমিজি ১৩৬৩, ৩০২৭, আবু দাউদ ৩৬৩৭, ৩৬৩৮, ৩৬৩৯, আহমাদ ১৪২২, ১৫৬৮৪, ২২২৭২, শারহুস সুন্নাহ ২১৯৪।বন্ধক সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২৪৮২ আব্দুল্লাহ বিন আমর ইবনিল আস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] মাহযূর উপত্যকার পানি প্রবাহ সম্পর্কে ফয়সালা দেন যে, পানি পায়ের গোছা পরিমাণ না জমা পর্যন্ত আটকে রাখা যাবে, অতঃপর [তাহার নিম্নের জমিতে] ছেড়ে দিতে হইবে। {২৪৮২}
{২৪৮২} আবু দাউদ ৩৬৩৯, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি আল-মুগীরাহ বিন আব্দুর রহমান সম্পর্কে আবুল কাসিম বিন বিশকাওয়াল বলেন, তাহার ব্যাপারে কোন সমস্যা নেই। আবু হাতিম বিন হিব্বান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় কখনো কখনো ভুল করেন। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, তিনি দুর্বল। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী ও ফকীহ তবে হাদিস বর্ণনায় সন্দেহ করেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৬১৩৫, ২৮/৩৮১ নং পৃষ্ঠা] ২. আবদুর রহমান সম্পর্কে আহমাদ বিন হাম্বল তাহাকে দুর্বল বলেছেন, অন্যত্র বলেন, তিনি প্রত্যাখ্যানযোগ্য। আহমাদ বিন শুআয়ব আন-নাসাঈ বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়, তিনি দুর্বল। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় সন্দেহ করেন। আলী ইবনিল মাদানী তাহাকে দুর্বল বলেছেন। মুহাম্মাদ বিন সাদ বলেন, তিনি সিকাহ। ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তাহার মাঝে কোন সমস্যা নেই। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৩৭৮৭, ১৭/৩৭ নং পৃষ্ঠা] বন্ধক সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২৪৮৩ উবাদাহ ইবনিস সামিত [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] নালা থেকে খেজুর বাগানে পানি সেচ সম্পর্কে ফয়সালা দেন যে, নিম্ন ভূমির আগে উচ্চভূমি পানিসেচে অগ্রাধিকার পাবে, যাবত না গোছা পর্যন্ত পানি জমে। তাহারপর পূর্বোক্ত নিয়মে সংলগ্ন নিচু ভূমির দিকে পানি ছেড়ে দিতে হইবে। বাগানসমূহের বিলুপ্তি অথবা পানি নিঃশেষ না হওয়া পর্যন্ত এভাবে চলবে। {২৪৮৩}
{২৪৮৩} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি ফুদায়ল বিন সুলায়মান সম্পর্কে আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তাহার থেকে হাদিস গ্রহন করা যায় তবে তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। আবু হাতিম বিন হিব্বান তাহার সিকাহ গ্রন্থে তাহার নাম উল্লেখ করিয়াছেন। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি যাচাই-বাচাই ছাড়া হাদিস গ্রহন করেন ও তা বর্ণনা করেন। আহমাদ বিন শুআয়ব আন-নাসাঈ বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় অধিক ভুল করেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৪৭৫৯, ২৩/২৭১ নং পৃষ্ঠা] ২. ইসহাক বিন ইয়াহইয়া ইবনিল ওয়ালীদ সম্পর্কে ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তাহার অবস্থা অজ্ঞাত। ঈমাম দারাকুতনী বলেন, তিনি তাহার পিতা থেকে হাদিস শ্রবন করেননি। আবু আহমাদ বিন আদী আল-জুরজানী বলেন, তাহার একাধিক হাদিস অরক্ষিত। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৩৯১, ২/৪৯৩ নং পৃষ্ঠা] উক্ত হাদিসটি সহীহ কিন্তু ফুদায়ল বিন সুলায়মান ও ইসহাক বিন ইয়াহইয়া ইবনিল ওয়ালীদ এর কারণে সানাদটি দুর্বল। হাদিসটির ২৪৩ টি শাহিদ হাদিস রয়েছে, তন্মধ্যে ৪ টি খুবই দুর্বল, ৩৫ টি দুর্বল, ৭৮ টি হাসান, ১২৬ টি সহীহ হাদিস পাওয়া যায়। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলঃ বুখারী ২৩৬০, ২৩৬১, ২৩৬২, ২৭০৮, ৪৫৮৫, মুসলিম ২৩৫৮, তিরমিজি ১৩৬৩, ৩০২৭, আবু দাউদ ৩৬৩৭, ৩৬৩৮, ৩৬৩৯, আহমাদ ১৪২২, ১৫৬৮৪, ২২২৭২, শারহুস সুন্নাহ ২১৯৪। বন্ধক সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৩/৮২. অধ্যায়ঃ পানি বন্টন
২৪৮৪ আমর বিন আওফ আল-মুযানী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ গবাদি পশুর পানি পান করানোর দিন প্রথমে ঘোড়াকে পানি পান করিতে দিতে হইবে। {২৪৮৪}
{২৪৮৪} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ খুবই দুর্বল। কাসীর বিন আবদুল্লাহ বিন আমর বিন আওফ সম্পর্কে আবু আহমাদ বিন আদী আল-জুরজানী বলেন, আমভাবে তাহার হাদিসের অনুসরণ করা যাবে না। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন,তিনি মিথ্যুকদের একজন। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৪৯৪৮, ২৪/১৩৬ নং পৃষ্ঠা] বন্ধক সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ খুবই দুর্বল
২৪৮৫ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ
জাহিলী যুগে যে জিনিস যেভাবে ভাগ-বাটোয়ারা হয়েছিল, তা সেভাবেই বহাল থাকিবে। আর যে সব জিনিসের ভাগ-বাঁটোয়ারা ইসলামী যুগে পড়েছে তা ইসলামের বন্টন নীতি অনুসারে ভাগ-বাঁটোয়ারা হইবে। {২৪৮৫}
{২৪৮৫} আবু দাউদ ২৯১৪, ইরওয়া ১৭১৭। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি মুসা বিন দাউদ সম্পর্কে আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ইদতিরাব করেন। আবু হাতিম বিন হিব্বান তাহার সিকাহ গ্রন্থে তাহার নাম উল্লেখ করিয়াছেন। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় সন্দেহ করেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৬২৫১, ২৯/৫৭ নং পৃষ্ঠা] ২. মুহাম্মাদ বিন মুসলিম আত-তায়ফী সম্পর্কে আবু আহমাদ বিন আদী আল-জুরজানী বলেন, তিনি সালিহ। আবু হাতিম বিন হিব্বান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি প্রত্যেক অবস্থায় দুর্বল। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে মুখস্ত হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৫৬০৪, ২৬/৪১২ নং পৃষ্ঠা]।বন্ধক সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৩/৮৩. অধ্যায়ঃ কূপের সীমানা
২৪৮৬ আবদুল্লাহ বিন মুগাফ্ফাল [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নবী [সাঃআঃ] বলেনঃ যে ব্যক্তি কূপ খনন করেছে সে তাহার গবাদী পশুর পানি পান করানোর সুবিধার্থে কূপের চারপাশে চল্লিশ হাত জায়গা পাবে। {২৪৮৬}
{২৪৮৬} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। সহীহাহ ২৫১। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান। উক্ত হাদিসের রাবি ইসমাইল আল-মাক্কী সম্পর্কে আবু আহমাদ আল-হাকিম বলেন, তিনি আহলে ইলমের নিকট নির্ভরযোগ্য নয়। আবু বাকর আল-বাযযাহার বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। আবু বাকর আল-বায়হাকী বলেন, আমরা তাহার হাদিস দ্বারা দলীল পেশ করি না। আবু হাতিম আর-রাযী ও আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৪৮৩, ৩/১৯৮ নং পৃষ্ঠা] ২. আবদুল ওয়াহহাহ বিন আতা সম্পর্কে আবু বাকর আল-মারওয়াযী বলেন, তিনি সিকাহ। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তাহার থেকে হাদিস গ্রহন করা যায়। আহমাদ বিন শুআয়ব আন-নাসাঈ বলেন, তিনি সিকাহ নয়। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় কখনো কখনো ভুল করেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৩৬০৫, ১৮/৫০৯ নং পৃষ্ঠা]বন্ধক সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান হাদিস
২৪৮৭ আবু সাইদ আল-খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কূপের চতুঃসীমা হইবে কূপ থেকে পানি তোলার রশির দৈর্ঘের সমপরিমাপ। {২৪৮৭}
{২৪৮৭} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। বায়হাকী ফিস সুনান ৬/১০৫, দারাকুতনী ৪/২২৪। যইফাহ ৩৪৮৫, জইফ আল-জামি ২৭০৮। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি মানসুর বিন সুকায়র সম্পর্কে আবু জাফার আল-উকায়লী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় কিছু সন্দেহ করেন। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়, তিনি হাদিস বর্ণনায় ইদতিরাব করেন। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি দুর্বল। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৬১৯৬, ২৮/৫৩৩ নং পৃষ্ঠা] ২. সাবিত বিন মুহাম্মাদ সম্পর্কে আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি সত্যবাদী। আবু আবদুল্লাহ আল-হাকিম আন নায়সাবুরী বলেন, তিনি দাবিত নয়। ঈমাম দারাকুতনী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য ও দাবিত নয়, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৮৩০, ৪/৩৭৪ নং পৃষ্ঠা] ।বন্ধক সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১৩/৮৪. অধ্যায়ঃ গাছের সীমানা
২৪৮৮ উবাদাহ ইবনিস সামিত [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ফয়সালা দিয়েছেন যে, একটি, দুটি বা তিনটি খেজুর গাছের স্বত্ব নিয়ে লোকেদের মধ্যে মতবিরোধ হলে, প্রতিটি গাছের ডালপালা যতদূর বিস্তৃত, ততোটা হইবে এর সীমা। {২৪৮৮}
তাহক্কিক আলবানিঃ [আরবি]
{২৪৮৮} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি ফুদায়ল বিন সুলায়মান সম্পর্কে আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তাহার থেকে হাদিস গ্রহন করা যায় তবে তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। আবু হাতিম বিন হিব্বান তাহার সিকাহ গ্রন্থে তাহার নাম উল্লেখ করিয়াছেন। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি যাচাই-বাচাই ছাড়া হাদিস গ্রহন করেন ও তা বর্ণনা করেন। আহমাদ বিন শুআয়ব আন-নাসাঈ বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় অধিক ভুল করেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৪৭৫৯, ২৩/২৭১ নং পৃষ্ঠা] ২. ইসহাক বিন ইয়াহইয়া ইবনিল ওয়ালীদ সম্পর্কে ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তাহার অবস্থা অজ্ঞাত। ঈমাম দারাকুতনী বলেন, তিনি তাহার পিতা থেকে হাদিস শ্রবন করেননি। আবু আহমাদ বিন আদী আল-জুরজানী বলেন, তাহার একাধিক হাদিস অরক্ষিত। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৩৯১, ২/৪৯৩ নং পৃষ্ঠা] উক্ত হাদিসটি সহীহ কিন্তু ফুদায়ল বিন সুলায়মান এর দুর্বলতা ও ইসহাক বিন ইয়াহইয়া ইবনিল ওয়ালীদ এর জাহালাতের কারণে সানাদটি দুর্বল। হাদিসটির ১৮ টি শাহিদ হাদিস রয়েছে, তন্মধ্যে ৩ টি খুবই দুর্বল, ৫ টি দুর্বল, ৫ টি হাসান, ৫ টি সহীহ হাদিস পাওয়া যায়। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলঃ আহমাদ ২২২৭২।বন্ধক সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ অন্যান্য
২৪৮৯ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ খেজুর গাছের শাখা চারদিকে যতদূর বিস্তৃত হইবে ততদূর তাহার সীমা। {২৪৮৯}
তাহক্কিক আলবানিঃ [আরবি]{২৪৮৯} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি মানসুর বিন সুকায়র সম্পর্কে আবু জাফার আল-উকায়লী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় কিছু সন্দেহ করেন। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়, তিনি হাদিস বর্ণনায় ইদতিরাব করেন। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি দুর্বল। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৬১৯৬, ২৮/৫৩৩ নং পৃষ্ঠা] ২. সাবিত বিন মুহাম্মাদ সম্পর্কে আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি সত্যবাদী। আবু আবদুল্লাহ আল-হাকিম আন নায়সাবুরী বলেন, তিনি দাবিত নয়। ঈমাম দারাকুতনী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য ও দাবিত নয়, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৮৩০, ৪/৩৭৪ নং পৃষ্ঠা] উক্ত হাদিসটি সহীহ কিন্তু মানসুর বিন সুকায়র ও সাবিত বিন মুহাম্মাদ এর কারণে সানাদটি দুর্বল। হাদিসটির ১৮ টি শাহিদ হাদিস রয়েছে, তন্মধ্যে ৩ টি খুবই দুর্বল, ৫ টি দুর্বল, ৫ টি হাসান, ৫ টি সহীহ হাদিস পাওয়া যায়। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলঃ আহমাদ ২২২৭২।বন্ধক সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ অন্যান্য
১৩/৮৫. অধ্যায়ঃ কোন ব্যক্তি বাড়ি-ঘর ও জায়গা-জমির বিক্রয়লব্ধ মূল্য দ্বারা অনুরূপ সম্পদ ক্রয় না করিলে।
২৪৯০ সাঈদ হুরায়স [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে বলিতে শুনেছিঃ কোন ব্যক্তি বাড়িঘর অথবা স্থাবর সম্পত্তি বিক্রয় করার পর তাহার বিক্রয়লব্ধ মূল্য দ্বারা অনুরূপ সম্পত্তি ক্রয় না করিলে তাহাকে কখনো তাতে বরকত দান করা হয় না।
{উপরোক্ত হাদীসে মোট ২টি সানাদের ১টি বর্ণিত হইয়াছে, অপর সানাদটি হলোঃ} ।২/২৪৯০ [১] . সাঈদ বিন হুরায়স [রাদি.]। {২৪৯০}।
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান।{২৪৯০} আহমাদ ১৫৪১৫, ১৮২৬৪, দারেমী ২৬২৫, দারেমী ২৬২৫, বায়হাকী ফিস সুনান ১/২৩২, সহিহাহ ২৩২৭, মিশকাত ২৯৬৬। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান। উক্ত হাদিসের রাবি ইসমাইল বিন ইবরাহীম বিন মুহাজির সম্পর্কে আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তাহার থেকে হাদিস গ্রহন করা যায় তবে তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, তিনি দুর্বল, আমি তাহার থেকে হাদিস গ্রহন করিনি। আবু নুমায়র আল-আসবাহানী বলেন, তিনি সিকাহ নয়। আহমাদ বিন শুআয়ব আন-নাসাঈ, ইবনিল জারদ ও ইবনি হাজার আল-আসকালনী তাহারা সকলে বলেন, তিনি দুর্বল। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৪১৮, ৩/৩৩ নং পৃষ্ঠা]বন্ধক সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান হাদিস
২৪৯১ হিযায়ফাহ ইবনিল ইয়ামান [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, কোন ব্যক্তি বাড়িঘর বিক্রয় করার পর তাহার বিক্রয়লব্ধ মূল্য দ্বারা অনুরূপ সম্পত্তি ক্রয় না করিলে তাহাকে কখনো বরকত দান করা হয় না। {২৪৯১}
{২৪৯১} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান। উক্ত হাদিসের রাবি আবদুল মালিক বিন হুসায়ন আবু মালিক আন-নাখঈ সম্পর্কে আবু হাতিম আর-রাযী ও আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী ও ঈমাম দারাকুতনী বলেন, তিনি দুর্বল। আহমাদ বিন শুআয়ব আন-নাসাঈ বলেন, তিনি সিকাহ নয় তাহার হাদিস গ্রহন করা যাবে না। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি মিথ্যার সাথে অভিযুক্ত। ঈমাম যাহাবী তাহাকে দুর্বল বলেছেন। আমর বিন আলী আল-ফাল্লাস বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৭৫৯৯, ৩৪/২৪৭ নং পৃষ্ঠা] ২. ইউসুফ বিন মায়মুন সম্পর্কে আহমাদ বিন আদী আল-জুরজানী বলেন, আমি তাহার হাদিসের মাঝে কোন সমস্যা দেখি না। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। আহমাদ বিন শুআয়ব আন-নাসাঈ বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি দুর্বল। বন্ধক সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান হাদিস
Leave a Reply