তালাক দেওয়ার নিয়ম । ইদ্দত ক্রীতদাস লিআন ঈলা গর্ভবতী
তালাক দেওয়ার নিয়ম । ইদ্দত ক্রীতদাস লিআন ঈলা গর্ভবতী , এই অধ্যায়ে মোট =৭৪ টি হাদীস (২০১৬ – ২০৮৯) >> সুনানে ইবনে মাজাহ হাদিস এর মুল সুচিপত্র পড়ুন
পর্বঃ ১০-তালাক, অধ্যায় (১-৩৬)=৩৬
১০/১. অধ্যায়ঃ ঘৃণ্য বৈধ বিষয়।
১০/২. অধ্যায়ঃ যথার্থ নিয়মে তালাক।
১০/৩. অধ্যায়ঃ গর্ভবতী মহিলাকে তালাক প্রদান।
১০/৪. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি একই মজলিসে তিন তালাক দেয়।
১০/৫. অধ্যায়ঃ তালাক দেয়ার পর স্ত্রীকে ফিরিয়ে নেয়া [রাজআত] ।
১০/৬. অধ্যায়ঃ গর্ভাবস্থায় তালাকপ্রাপ্তা নারীর সন্তান প্রসবের সাথে সাথে বিবাহ বন্ধন ছিন্ন হয়ে যায়।
১০/৭. অধ্যায়ঃ গর্ভবতী মহিলার স্বামী মারা গেলে,সন্তান প্রসবের পরপরই সে অন্য স্বামী গ্রহণ করিতে পারে।
১০/৮. অধ্যায়ঃ বিধবা স্ত্রী যেখানে ইদ্দাত পালন করিবে।
১০/৯. অধ্যায়ঃ ইদ্দাত পালনরত অবস্থায় নারীরা কি বাইরে যেতে পারে?
১০/১০ অধ্যায়ঃ তিন তালাকপ্রাপ্তা নারী কি বাসস্থান ও খোরপোষ পাবে?
১০/১১ অধ্যায়ঃ তালাকের উপঢৌকন [মুতআ]।
১০/১২. অধ্যায়ঃ স্বামী তালাক অস্বীকার করলে।
১০/১৩. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি উপহাসোচ্ছলে তালাক দিলো, বিবাহ করলো অথবা তালাক প্রত্যাহার করলো।
১০/১৪ অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি মনে মনে তালাক দিয়ে মুখে সে সম্পর্কে কিছু বলেনি।
১০/১৫. অধ্যায়ঃ জড়বুদ্ধিসম্পন্ন ব্যক্তি,নাবালেগ ও ঘুমন্ত ব্যক্তির তালাক।
১০/১৬. অধ্যায়ঃ বল প্রয়োগে বাধ্য হয়ে অথবা ভুলবশত প্রদত্ত তালাক।
১০/১৭. অধ্যায়ঃ বিবাহের পূর্বে কোন তালাক নেই।
১০/১৮. অধ্যায়ঃ যেসব বাক্যে তালাক সংঘটিত হয়।
১০/১৯. অধ্যায়ঃ চূড়ান্ত [বাত্তা] তালাক।
১০/২০. অধ্যায়ঃ স্বামী তার স্ত্রীকে তালাকের এখতিয়ার প্রদান করলে।
১০/২১. অধ্যায়ঃ না নারীর জন্য খোলা তালাক নিন্দনীয়।
১০/২২. অধ্যায়ঃ খোলা তালাক দাবিকারিনী স্ত্রীকে প্রদত্ত সম্পদ ফেরত নেয়া প্রসঙ্গে।
১০/২৩. অধ্যায়ঃ খোলাকারিনী মহিলার ইদ্দাত।
১০/২৪. অধ্যায়ঃ ঈলা [স্ত্রীসহবাস না করার শপথ] ।
১০/২৬. অধ্যায়ঃ যিহারকারী কাফফারা আদায়ের পূর্বে সহবাসে লিপ্ত হলে।
১০/২৭. অধ্যায়ঃ লিআন [ অভিশাপযুক্ত শপথ ]।
১০/২৮. অধ্যায়ঃ কোন বৈধ বিষয় হারাম করা সম্পর্কে।
১০/২৯. অধ্যায়ঃ দাসী দাসত্বমুক্ত হওয়ার সাথে সাথে বিবাহ রদের এখতিয়ার লাভ করে।
১০/৩০. অধ্যায়ঃ দাসীর তালাক ও তার ইদ্দতকাল।
১০/৩১. অধ্যায়ঃ ক্রীতদাসের তালাক।
১০/৩২. অধ্যায়ঃ কেউ দাসীকে দু তালাক দেয়ার পর তাহাকে ক্রয় করলে।
১০/৩৩. অধ্যায়ঃ উম উম্মুল ওয়ালাদ এর উদ্দাত।
১০/৩৪. অধ্যায়ঃ যে মহিলার স্বামী মারা গেছে ইদ্দাত চলাকালে তার রূপচর্চা করা মাকরূহ।
১০/৩৫. অধ্যায়ঃ স্বামী ব্যতীত অপরের মৃত্যুতে কি মহিলারা রূপচর্চা বর্জন করিবে?
১০/৩৬. অধ্যায়ঃ পিতা পুত্রকে তার স্ত্রীকে তালাক দিতে নির্দেশ দিলে।
১০/১. অধ্যায়ঃ ঘৃণ্য বৈধ বিষয়।
২০১৬ উমার ইবনিল খাত্তাব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] হাফসাহ [রাদি.] কে তালাক দেন, অতঃপর তাহাকে ফিরিয়ে নেন। {২০১৬}
{২০১৬} আবু দাউদ ২২৮৩, দারেমী ২২৬৪, ইরওয়া ২০৭৭। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ। উক্ত হাদিসের রাবী মাসরুক ইবনিল মারযুবান সম্পর্কে আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তার থেকে হাদিস গ্রহন করা যায় তবে তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। ইবনি হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় সন্দেহ করেন। সালিহ বিন মুহাম্মাদ বলেন, তিনি সত্যবাদী। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৫৯০৪, ২৭/৪৫৮ নং পৃষ্ঠা] তালাক দেওয়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২০১৭ আবু মুসা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেন, লোকদের কি হলো যে, তারা আল্লাহর বিধান নিয়ে ছিনি মিনি খেলছে? তোমাদের কেউ বলে, তোমাকে তালাক দিলাম, তোমাকে আবার ফিরিয়ে নিলাম, তোমাকে আবার তালাক দিলাম। {২২১৭}
{২২১৭} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন। যঈফাহ ৪৪৩১। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ যয়ীফ। উক্ত হাদিসের রাবী মুআম্মাল [বিন ইসমাইল] সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন ও ইসহাক বিন রাহওয়াহ বলেন, তিনি সিকাহ। মুহাম্মাদ বিন সাঈদ বলেন, তিনি সিকাহ তবে হাদিস বর্ণনায় অধিক ভুল করেন। ইবনি হিব্বান বলেন, তিনি সিকাহ কিন্তু হাদিস বর্ণনায় কখনো কখনো ভুল করেন। আস-সাজী বলেন, তিনি সত্যবাদী কিন্তু হাদিস বর্ণনায় অধিক ভুল ও সন্দেহ করেন। ইবনি কানি বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। ইবনি হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে তার স্মৃতিশক্তি দুর্বল। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৬৩১৯, ২৯/১৭৬ নং পৃষ্ঠা] তালাক দেওয়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
২০১৮ আবদুল্লাহ বিন উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ আল্লাহর নিকট সর্বাধিক ঘৃণ্য কাজ হচ্ছে তালাক। {২০১৮}
{২০১৮} আবু দাউদ ২১৭৮, ইরওয়া ২০৪০, যইফ আবু দাউদ ৩৭৩-৩৭৪, আর-রাদ্দু আলাল বালীক ১১৩। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ যয়ীফ। উক্ত হাদিসের রাবী উবায়দুল্লাহ ইবনিল ওয়ালীদ আল-ওয়াসসাফী সম্পর্কে আবু আহমাদ আল-হাকিম বলেন, তিনি আহলে ইলমের নিকট নির্ভরযোগ্য নয়। আবু আহমাদ বিন আদী আল-জুরজানী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় অধিক দুর্বল। আবু জাফার আল-উকায়লী বলেন, তার হাদিসের অনুসরণ করা যাবে না। আবু হাতিম আর-রাযী, আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। আবু হাতিম বিন হিব্বান ও ঈমাম দারাকুতনী বলেন, তিনি প্রত্যাখ্যানযোগ্য। আহমাদ বিন শুআয়ব আন-নাসায়ী বলেন, তিনি মিথ্যার সাথে অভিযুক্ত। ঈমাম যাহাবী তাহাকে দুর্বল বলিয়াছেন। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৩৬৯৪, ১৯/১৭৩ নং পৃষ্ঠা] তালাক দেওয়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১০/২. অধ্যায়ঃ যথার্থ নিয়মে তালাক।
২০১৯ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি আমার স্ত্রীকে তার হায়িদ অবস্থায় তালাক দিলে পর উমার [রাদি.] বিষয়টা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর গোচরে আনেন। তিনি বলেনঃ তাহাকে নির্দেশ দাও, সে যেন তার স্ত্রীকে ফিরিয়ে নেয়, যাবত না সে পবিত্রাবস্থায় ফিরে আসে, অতঃপর পুনরায় তার মাসিক ঋতু হয়, অতঃপর পবিত্রাবস্থায় ফিরে আসে। অতঃপর সে চাইলে তাহাকে তালাক দিতে পারে তার সাথে সহবাস করার পূর্বে। আর চাইলে সে তাহাকে স্ত্রী হিসাবে রেখেও দিতে পারে। এই হলো সেই উদ্দাত যা পালনের জন্য আল্লাহ নির্দেশ দিয়েছেন। {২০১৯}
{২০১৯} সহীহুল বুখারী ৪৯০৮, ৫২৫২, ৫২৫৩, ৫২৫৮, ৫৩৩২, ৬০৩৩, ৭১৬০, মুসলিম ১৪৭১, তিরমিজি ১১৭৫, ১১৭৬, নাসায়ী ৩৩৮৯, ৩৩৯০, ৩৩৯১, ৩৩৯২, ৩৩৯৬, ৩৩৯৭, ৩৩৯৮, ৩৩৯৯, ৩৪০০, ৩৫৫৫, ৩৪৪৫, ৩৫৫৬, ৩৫৫৭, ৩৫৫৮, ৩৫৫৯, আবু দাউদ ২১৭৯, ২১৮১, ২১৮২, ২১৮৪, ২১৮৫, আহমাদ ৪৪৮৬, ৪৭৭৪, ৫০০৫, ৫১০০, ৫১৫২, ৫২০৬, ৫২৪৬, ৫২৭৭, ৫২৯৯, ৫৪১০, ৫৪৬৫, ৫৪৮০, ৫৪৯৯, ৫৫০০, ৫৭০৮, ৬০২৫, ৬০৮৪, ৬১০৬, ৬২৯৩, মুয়াত্তা মালেক ১২২০, ২২৬২, ২২৬৩, ইরওয়াহ ২০৫৯, সহিহ আবী দাউদ ১৮৯২, ১৮৯৫। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ। তালাক দেওয়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২০২০ আবদুল্লাহ [বিন মাসউদ] [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, সহবাসমুক্ত পবিত্র অবস্থায় [তুহরে] তালাক প্রদান হচ্ছে যথার্থ নিয়মের [সুন্নাত] তালাক। {২০২০}
{২০২০} ইবনি মাজাহ ২০২১, নাসায়ী ৩৩৯৪, ৩৩৯৫, ইরওয়াহ ২০৫১। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ।তালাক দেওয়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২০২১ আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি সুন্নাত [যথার্থ নিয়মের] তালাক সম্পর্কে বলেন, স্বামী স্ত্রীকে তার [সহবাসমুক্ত] প্রতি তুহরে এক তালাক দিবে এবং সে তৃতীয় তুহরে পৌঁছলে তাহাকে শেষ তালাক দিবে। এরপর সে এক হায়িদ কাল ইদ্দাত পালন করিবে। {২০২১}
{২০২১} ইবনি মাজাহ ২০২০, নাসায়ী ৩৩৯৪, ৩৩৯৫, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ্। তালাক দেওয়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২০২২ য়ূনুস হইতে বর্ণীতঃ
আমি ইবনি উমার [রাদি.] কে এক ব্যক্তি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম যে তার স্ত্রীকে তার হায়িদ অবস্থায় তালাক দিয়েছে। তিনি বলেন, তুমি আবদুল্লাহ বিন উমারকে চিন? সে তার স্ত্রীকে তার মাসিক ঋতু চলাকালে তালাক দিয়েছিল। উমার [রাদি.] নাবী [সাঃআঃ] এর কাছে আসলে তিনি তাহাকে নির্দেশ দেনঃ সে যেন তার স্ত্রীকে ফিরিয়ে নেয়। আমি জিজ্ঞেস করলাম, এটা কি তালাক হিসেবে গণনায় ধরা হইবে? তিনি বলেন, তুমি কি মনে কর, সে যদি অক্ষম হয়ে থাকে, আর আহম্মকী করে [তাহলে কে দায়ী?]! {২০২২}
{২০২২} সহীহুল বুখারী ৪৯০৮, ৫২৫২, ৫২৫৩, ৫২৫৮, ৫৩৩২, ৬০৩৩, ৭১৬০, মুসলিম ১৪৭১, তিরমিজি ১১৭৫, ১১৭৬, নাসায়ী ৩৩৮৯, ৩৩৯০, ৩৩৯১, ৩৩৯২, ৩৩৯৬, ৩৩৯৭, ৩৩৯৮, ৩৩৯৯, ৩৪০০, ৩৫৫৫, ৩৪৪৫, ৩৫৫৬, ৩৫৫৭, ৩৫৫৮, ৩৫৫৯, আবু দাউদ ২১৭৯, ২১৮১, ২১৮২, ২১৮৪, ২১৮৫, আহমাদ ৪৪৮৬, ৪৭৭৪, ৫০০৫, ৫১০০, ৫১৫২, ৫২০৬, ৫২৪৬, ৫২৭৭, ৫২৯৯, ৫৪১০, ৫৪৬৫, ৫৪৮০, ৫৪৯৯, ৫৫০০, ৫৭০৮, ৬০২৫, ৬০৮৪, ৬১০৬, ৬২৯৩, মুয়াত্তা মালেক ১২২০, ২২৬২, ২২৬৩, ইরওয়াহ ৭/১৭। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ। তালাক দেওয়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১০/৩. অধ্যায়ঃ গর্ভবতী মহিলাকে তালাক প্রদান।
২০২৩ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি তার স্ত্রীকে হায়য অবস্থায় তালাক দিয়েছিলেন। উমার [রাদি.] বিষয়টি নাবী [সাঃআঃ] এর নিকট উত্থাপন করলে তিনি বলেনঃ তাহাকে বলো, সে যেন তার স্ত্রীকে ফিরিয়ে নেয়, এরপর সে চাইলে তাহাকে তুহর অথবা গর্ভবতী অবস্থায় তালাক দেয়। {২০২৩}
{২০২৩} সহীহুল বুখারী ৪৯০৮, ৫২৫২, ৫২৫৩, ৫২৫৮, ৫৩৩২, ৬০৩৩, ৭১৬০, মুসলিম ১৪৭১, তিরমিজি ১১৭৫, ১১৭৬, নাসায়ী ৩৩৮৯, ৩৩৯০, ৩৩৯১, ৩৩৯২, ৩৩৯৬, ৩৩৯৭, ৩৩৯৮, ৩৩৯৯, ৩৪০০, ৩৫৫৫, ৩৪৪৫, ৩৫৫৬, ৩৫৫৭, ৩৫৫৮, ৩৫৫৯, আবু দাউদ ২১৭৯, ২১৮১, ২১৮২, ২১৮৪, ২১৮৫, আহমাদ ৪৪৮৬, ৪৭৭৪, ৫০০৫, ৫১০০, ৫১৫২, ৫২০৬, ৫২৪৬, ৫২৭৭, ৫২৯৯, ৫৪১০, ৫৪৬৫, ৫৪৮০, ৫৪৯৯, ৫৫০০, ৫৭০৮, ৬০২৫, ৬০৮৪, ৬১০৬, ৬২৯৩, মুয়াত্তা মালেক ১২২০, ২২৬২, ২২৬৩, ইরওয়াহ ৭/১২৬, ১৩০, সহিহ, আবী দাউদ ১৮৯৪। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ। তালাক দেওয়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১০/৪. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি একই মজলিসে তিন তালাক দেয়।
২০২৪ আমির হইতে বর্ণীতঃ
আমি ফাতিমাহ্ বিনতু কায়স [রাদি.] কে বলিলাম, আপনার তালাকের ঘটনাটি আমাকে বলুন। তিনি বলেন, আমার স্বামী ইয়ামানে থাকা অবস্থায় আমাকে তিন তালাক দেয়। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এটিকে জায়িয বলে গণ্য করেন। {২০২৪}
{২০২৪} ইবনি মাজাহ ২০৩২, ২০৩৩, মুসলিম ১৪৮০, সহিহ আবী দাউদ ১৯৭৬-১৯৮২, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ। উক্ত হাদিসের রাবী ইসহাক বিন আবদুল্লাহ সম্পর্কে আবু আহমাদ বিন আদী আল জুরজানী বলেন, তার সনদ মা মাতান কোনটিরই কেউ অনুসরণ করেননি। আবু বকর আল বুরকানী ও আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি মাতরুক বা প্রত্যাখ্যানযোগ্য। আবু বকর আল-বাযযার বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। আবু বকর আল-বায়হাকী বলেন, তিনি দুর্বল। আবু ইয়ালা আল খালীলী বলেন, তিনি খুবই দুর্বল। ঈমাম দারাকুতনী বলেন, তিনি প্রত্যাখ্যানযোগ্য। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৩৬৭, ২/৪৪৬ নং পৃষ্ঠা] উক্ত হাদিসটি সহিহ কিন্তু ইসহাক বিন আবদুল্লাহ এর কারণে সনদটি দুর্বল। হাদিসটির ৯ টি শাহিদ হাদিস পাওয়া যায়। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলঃ দারাকুতনী ৩৮৭২, ৩৮৭৭। তালাক দেওয়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১০/৫. অধ্যায়ঃ তালাক দেয়ার পর স্ত্রীকে ফিরিয়ে নেয়া [রাজআত] ।
২০২৫ ইমরান বিন হুসায়ন [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তাহাকে এক ব্যক্তি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলো যে তার স্ত্রীকে তালাক দেয়ার পর তার সাথে সহবাস করেছে, কিন্তু তাহাকে তালাক দেয়া এবং ফিরিয়ে নেয়ার বিষয়ে কোন স্বাক্ষী রাখেনি। ইমরান [রাদি.] বলেন, তুমি সুন্নাত নিয়মের বহির্ভূত তালাক দিয়েছো এবং সুন্নাত নিয়মের বহির্ভূত ফিরিয়ে নিয়েছো। তুমি তাহাকে তালাক দেয়া ও ফিরিয়ে নেয়ার বিষয়ে সাক্ষী রাখো। {২০২৫}
{২০২৫} আবু দাউদ ২১৮৬, ইরওয়াহ ২০৭৮, সহিহ আবী দাউদ ১৮৯৯। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ।তালাক দেওয়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১০/৬. অধ্যায়ঃ গর্ভাবস্থায় তালাকপ্রাপ্তা নারীর সন্তান প্রসবের সাথে সাথে বিবাহ বন্ধন ছিন্ন হয়ে যায়।
২০২৬ যুবায়র ইবনিল আওওয়াম হইতে বর্ণীতঃ
উম্মু কুলসুম বিনতু উকবাহ [রাদি.] ছিলেন তার স্ত্রী। তিনি তার গর্ভাবস্থায় যুবায়র [রাদি.] কে বলেন, আমাকে এক তালাক দিয়ে সন্তুষ্ট করুন। তিনি তাহাকে এক তালাক দিলেন, অতঃপর সলাত পড়তে চলে গেলেন। তিনি ফিরে এসে দেখেন যে, তার স্ত্রী একটি সন্তান প্রসব করেছে। যুবায়র [রাদি.] বলিলেন, সে কেন আমাকে প্রতারিত করলো! আল্লাহ যেন তাহাকেও প্রতারিত করেন। এরপর তিনি নাবী [সাঃআঃ] এর নিকট উপস্থিত হলে তিনি বলেনঃ আল্লাহর কিতাবে বর্ণিত তার ইদ্দাত পূর্ণ হয়ে গেছে। তাহাকে বিবাহের প্রস্তাব দাও।
হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন। ইরওয়াহ ২১১৭। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ। উক্ত হাদিসের রাবী কাবিসাহ বিন উকবাহ সম্পর্কে আবু বাকর আল-বায়হাকী বলেন, তিনি সিকাহ। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি সত্যবাদী। ইবনি হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় সিকাহ রাবীর বিপরীত হাদিস বর্ণনা করেন। আব্দুর রহমান বিন ইউসুফ বলেন, তিনি সত্যবাদী। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৪৮৪৩, ২৩/৪৮১ নং পৃষ্ঠা]।তালাক দেওয়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১০/৭. অধ্যায়ঃ গর্ভবতী মহিলার স্বামী মারা গেলে,সন্তান প্রসবের পরপরই সে অন্য স্বামী গ্রহণ করিতে পারে।
২০২৭ আবুস সানাবিল [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আসলাম গোত্রের হারিসের কন্যা সুবায়আহ তার স্বামীর মৃত্যুর বিশাধিক দিন পর একটি সন্তান প্রসব করেন। তিনি নিফাস [সন্তান প্রসবজনিত ঋতু] হওয়ার পর নতুন পরিচ্ছদ পরতে লাগলেন। [অর্থাৎ সাজগোজ করিতে লাগলেন]। এতে তার প্রতি দোষারোপ হইতে থাকলে বিষয়টি নাবী [সাঃআঃ] কে অবহিত করা হয়। তিনি বলেনঃ সে তা করিতে পারে, কারণ তার ইদ্দাতকাল পূর্ণ হয়েছে। {২০২৭}
{২০২৭} তিরমিজি ১১৯৩, আহমাদ ১৮২৩৮, ১৮২৩৯, দারেমী ২২৮১, সহিহ আবী দাউদ ১৯৯৬। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ।তালাক দেওয়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২০২৮ বর্ণনাকারী হইতে বর্ণীতঃ
সুবায়আহ [রাদি.] কে উত্তরে তাহাদের নিকট লেখে পাঠান যে, তিনি তার স্বামীর মৃত্যুর ২৫ দিন পর সন্তান প্রসব করেন এবং পুনর্বিবাহের জন্য প্রস্তুতি নেন। আবুস সানাবিল বিন বাকাক তার নিকট দিয়ে গমনকালে বলেন, তুমি খুব তাড়াহুড়া করে ফেললে। ইদ্দাতের দু মেয়াদকালের মধ্যে দীর্ঘতর মেয়াদ অর্থাৎ চার মাস দশ দিন অতিবাহিত করো। অতএব আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর নিকট এসে বলিলাম, হে আল্লাহর রসূল! আমার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করুন। তিনি বলেনঃ তা কী ব্যপারে? আমি তাঁকে ঘটনাটি খুলে বলিলাম। তিনি বলেন সৎকর্মপরায়ণ স্বামী পেয়ে গেলে বিবাহ করো। {২০২৮}
{২০২৮} সহীহুল বুখারী ৫৩১৯, মুসলিম ১৪৮৪, নাসায়ী ৩৫১৮, ৩৫১৯, ৩৫২০, আবু দাউদ ২৩০৬, ২৬৮৮৯, সহিহাহ ২৭২২। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ।তালাক দেওয়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২০২৯ মিসওয়ার বিন মাখরামাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] সুবায়আহ [রাদি.] কে তার নিফাস থেকে পবিত্র হওয়ার পরপরই বিবাহ করার অনুমতি দেন।{২০২৯}
{২০২৯} সহীহুল বুখারী ৫৩২০, নাসায়ী ৫৩০৬, ৫৩০৭, আহমাদ ১৮৪৩৮, মুয়াত্তা মালেক ১২৫২, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ।তালাক দেওয়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২০৩০ আবদুল্লাহ বিন মাসউদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর শপথ! কেউ ইচ্ছা করলে আমার থেকে লিআন জাতীয় শপথ গ্রহণ করাতে পারে যে, নিশ্চই এই ক্ষুদ্র সূরা নিসা [অর্থ্যাৎ সূরা তালাক] “চার মাস দশ দিন” সম্বলিত আয়াত [সূরা বাকারা] নাযিল হওয়ার পরে নাযিল হয়েছে। {২০৩০}
{২০৩০} আবু দাউদ ২৩০৭, সহিহ আবী দাউদ ১৯৯৭, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ। তালাক দেওয়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১০/৮. অধ্যায়ঃ বিধবা স্ত্রী যেখানে ইদ্দাত পালন করিবে।
২০৩১ ফুরায়আহ বিনতু মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমার স্বামী তার [পলাতক] গোলামের খোঁজে রওয়ানা হয়ে কাদুম নামক স্থানে তাহাদের ধরে ফেলেন। তারা আমার স্বামীকে হত্যা করে। যখন আমার স্বামীর মৃত্যুসংবাদ আসে, তখন আমি আমার পরিবার-পরিজন থেকে অনেক দূরে আনসারদের বসতিতে অবস্থান করছিলাম। আমি নাবী [সাঃআঃ] এর নিকট এসে বলিলাম, হে আল্লাহর রাসূল! যখন আমার স্বামীর মৃত্যুর সংবাদ এলো তখন আমি আমার পরিজন ও ভাইদের বাড়ি থেকে দূরে বসবাস করছিলাম। তিনি আমার ভরণপোষনের জন্যে কোন মাল রেখে যাননি এবং তার এমন কোন মালও নেই, আমি যার ওয়ারিস হইতে পারি, এমনকি তার মালিকানাভুক্ত কোন ঘরও নেই। আপনি আমাকে অনুমতি দিলে আমি আমার পরিবার ও ভাইদের বাড়িতে উঠতে পারি। আর এটা আমার জন্যে অধিক প্রিয় এবং বিভিন্ন দিক দিয়ে সুবিধাজনক। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ তুমি চাইলে তা করিতে পারো। মহিলাটি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর মুখে আমার জন্যে আল্লাহর এই ফায়সালা শুনে খুশি মনে ফিরে যেতে লাগলাম। আমি মাসজিদে অথবা তাহাঁর কোন এক হুজরার নিকট পৌঁছতেই ,তিনি আমাকে ডেকে বলেনঃ তুমি জানি কি বলেছিলে? মহিলাটি বললো, আমি পুনরায় তাহাকে আমার বিবরণ শুনালাম। তিনি বলেনঃ তুমি ঐ ঘরেই অবস্থান করো, যেখানে তোমার স্বামীর মৃত্যুসংবাদ পেয়েছো, যতক্ষণ না তোমার ইদ্দাত পূর্ণ হয়। ফুরায়আহ [রাদি.] বলেন, এরপর আমি সেখানেই চার মাস দশ দিন ইদ্দাত পালন করলাম।{২০৩১}
{২০৩১} তিরমিজি ১২০৪, নাসায়ী ৩৫২৮, ৩৫২৯, ৩৫৩০, ৩৫৩২, আবু দাউদ ২৩০০, আহমাদ ২৬৫৪৭, ২৬৮১৭, মুয়াত্তা মালেক ১২৫৪, দারেমী ২২৮৭, ইরওয়াহ ২১৩১। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ। উক্ত হাদিসের রাবী আবু খালিদ আল-আহমার সম্পর্কে আবু আহমাদ বিন আদী আল-জুরজানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হুজ্জাহ নয়। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি সত্যবাদী। ইবনি হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় সন্দেহ করেন। আলী ইবনিল মাদীনী বলেন, তিনি সিকাহ। তাহরীরু তাকরীবুত তাহযীব এর লেখক বলেন, তিনি সত্যবাদী ও সিকাহ রাবীর সদৃশ। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ২৫০৪, ১১/৩৯৪ নং পৃষ্ঠা]।তালাক দেওয়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১০/৯. অধ্যায়ঃ ইদ্দাত পালনরত অবস্থায় নারীরা কি বাইরে যেতে পারে?
২০৩২ ফাতিমাহ [বিনতু কায়স] ও আয়িশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
উরওয়াহ বলেন, আমি মারওয়ানের নিকট প্রবেশ করে তাহাকে বলিলাম, আপনার পরিবারের এক মহিলাকে তালাক দেওয়া হয়েছে। আমি তার ওখান দিয়ে যাওয়ার সময় দেখলাম যে, সে বাড়ি ছেড়ে যাচ্ছে। সে বললো, ফাতিমাহ বিনতু কায়স [রাদি.] আমাদের এরূপ নির্দেশ দিয়েছেন এবং তিনি আমাদের বলিয়াছেন যে, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাকে [ইদ্দাত পালনকালে] স্থানান্তর এর অনুমতি দিয়েছেন। মারওয়ান বলেন, ফাতিমাহ বিনতু কায়স [রাদি.] তাহাদের এরূপ নির্দেশ দিয়েছেন। উরওয়া [রাদি.] বলেন, আমি বলিলাম, আল্লাহর শপথ! আয়িশা [রাদি.] তা আপত্তিকর বলিয়াছেন। আয়িশা [রাদি.] বলেন, ফাতিমাহ হিংশ্র পশুর উৎপাতের এলাকায় বাস করিতেন বলে তার জানমালের ক্ষতির আশংকা ছিলো। আর এ কারণেই রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তার বেলায় এরূপ অনুমতি দিয়েছিলেন। {২০৩২}
{২০৩২} ইবনি মাজাহ ২০২৪, ২০৩৩,মুসলিম ১৪৮০, সহিহ আবী দাউদ ১৯৮৪। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান। উক্ত হাদিসের রাবী আবু যিনাদ সম্পর্কে আবু আহমাদ আল-হাকিম বলেন, তিনি আহলে ইলমের নিকট হাফিয নয়। আবুল কাসিম বিন বিশকাওয়াল বলেন, তিনি দুর্বল। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তার থেকে হাদিস গ্রহন করা যায় তবে তা দলীলযোগ্য হইবে না। আবু যুরআহ আর-রাযী তাহাকে দুর্বল বলিয়াছেন। আহমাদ বিন শুআয়ব আন-নাসায়ী বলেন, তার হাদিস দলীলযোগ্য নয়, তিনি দুর্বল। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৩৮১৬, ১৭/৯৫ নং পৃষ্ঠা]তালাক দেওয়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
২০৩৩ ফাতিমাহ বিনতু কায়স [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলিলেন, হে আল্লাহর রসূল! আমার আশংকা হয় যে, কেউ হয়তো আমার ঘরে জোরপূর্বক ঢূকে আমার ক্ষতি করিবে। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাকে অন্য স্থানে চলে যাওয়ার অনুমতি দেন। {২০৩৩}
{২০৩৩} ইবনি মাজাহ ২০৩২, ২০২৪, মুসলিম ১৪৮০, সহিহ আবী দাউদ ১৯৮১। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ।তালাক দেওয়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২০৩৪ জাবির বিন আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমার খালা তালাকপ্রাপ্তা হওয়ার পর তিনি তার খেজুর বাগানে গিয়ে ফল কাটতে চেয়েছিলেন। এক ব্যক্তি তাহাকে এই উদ্দ্যেশ্যে বের হইতে কঠোরভাবে নিষেধ করে। তিনি নাবী [সাঃআঃ] এর নিকট আসলে তিনি বলেন, হ্যাঁ তুমি তোমার বাগানের খেজুর সংগ্রহ করো। হয়তো তুমি দান-খয়রাত করিবে অথবা অন্য কোন সৎকাজ করিবে। {২০৩৪}
{২০৩৪} মুসলিম ১৪৮৩, নাসায়ী ৩৫৫০, আবু দাউদ ২২৯৭, আহমাদ ১৪০৩৫, নাসায়ী ২২৮৮, ইরওয়াহ ২১৩৪, সহিহাহ ৭২৩। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ।তালাক দেওয়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১০/১০ অধ্যায়ঃ তিন তালাকপ্রাপ্তা নারী কি বাসস্থান ও খোরপোষ পাবে?
২০৩৫ ফাতিমা বিনতু কায়স [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
[আবু বকর] বলেন, আমি ফাতিমা বিনতু কায়স [রাদি.] কে বলিতে শুনিয়াছি যে, তার স্বামী তাহাকে তিন তালাক দিলে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তার জন্যে বাসস্থান ও খোরপোষের নির্দেশ দেন নি। {২০৩৫}
{২০৩৫} ইবনি মাজাহ ২০৩২, ২০৩৩, মুসলিম ১৪৮০, আবী দাউদ ১৯৭৬-১৯৮০,১৯৮২। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ।তালাক দেওয়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২০৩৬ ফাতিমাহ বিনতু কায়স [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর সময় আমার স্বামী আমাকে তিন তালাক দেয়। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, তোমার জন্য বাসস্থান ও খোরপোষ নাই। {২০৩৬}
{২০৩৬} ইবনি মাজাহ ২০৩২, ২০৩৩, মুসলিম ১৪৮০, বায়হাকী ১০/৬১, আল হাকিম ফিল-মুসতাদরাক ২/১৯৮। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ্।তালাক দেওয়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১০/১১ অধ্যায়ঃ তালাকের উপঢৌকন [মুতআ]।
২০৩৭ আয়িশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
জাওন কন্যা আমরাকে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর নিকট পেশ করা হলে সে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] থেকে [আল্লাহর] আশ্রয় প্রার্থনা করে। তিনি বলেনঃ তুমি এক মহান সত্তার নিকটই আশ্রয় প্রার্থনা করেছো। অতঃপর তিনি তাহাকে তিন তালাক দিলেন এবং উসামাহ অথবা আনাস [রাদি.] কে নির্দেশ দিলে তদুনযায়ী তিনি তাহাকে [উপঢৌকনস্বরূপ] তিনখানা সাদা লম্বা কাপড় দেন। {২০৩৭}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ আবু উসাইদ নির্দেশ দেওয়ার শব্দে সহিহ এবং উসামাহ ও আনাস উল্লেখের সাথে মুনকার।
{২০৩৭} সহীহুল বুখারী ৫২৫৪, নাসায়ী ৩৪১৭, বায়হাকী ৭/৩১৮, ইরওয়াহ ৭/১৪৬। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ আবু উসাইদ নির্দেশ দেওয়ার শব্দে সহিহ এবং উসামাহ ও আনাস উল্লেখের সাথে মুনকার। উক্ত হাদিসের রাবী উবায়দ ইবনিল কাসিম সম্পর্কে আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, তার ব্যাপারে জাল [বানিয়ে] হাদিস বর্ণনার অভিযোগ রয়েছে। আবু নুয়ায়ম আল-আসবাহানী বলেন, তিনি প্রত্যাখ্যানযোগ্য। আহমাদ বিন শুআয়ব আন-নাসায়ী ও ইবনি হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি মিথ্যার সাথে অভিযুক্ত। ঈমাম দারাকুতনী বলেন, তিনি দুর্বল। সালিহ বিন মুহাম্মাদ বলেন, তিনি মিথ্যুক। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৩৭৩৩, ১৯/২২৯ নং পৃষ্ঠা]তালাক দেওয়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য
১০/১২. অধ্যায়ঃ স্বামী তালাক অস্বীকার করলে।
২০৩৮ আবদুল্লাহ বিন আমর ইবনিল আস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, স্ত্রী তার স্বামী তাহাকে তালাক দিয়েছে বলে দাবি করলে এবং এর স্বপক্ষে একজন ন্যাপরায়ণ সাক্ষী উপস্থিত করলে তার স্বামীকে শপথ করানো হইবে। সে শপথ করলে সাক্ষীর সাক্ষ্য বাতিল হয়ে যাবে। আর সে [স্বামী] শপথ করিতে অস্বীকৃত হলে তার এ অস্বীকৃতি আরেকজন সাক্ষী স্থানীয় গণ্য হইবে এবং তার তালাক কার্যকর হইবে। {২০৩৮}
{২০৩৮} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন। বায়হাকী ৭/৩১৯, যঈফাহ ২২১০। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ যয়ীফ। উক্ত হাদিসের রাবী আমর বিন আবু সালামাহ সম্পর্কে আবু জাফার আল-উকায়লী বলেন, তার হাদিস বর্ণনায় সন্দেহ করেন। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তার হাদিস গ্রহন করা যায় তবে তা দলীলযোগ্য নয়। ইবনি হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় সন্দেহ করেন। যাকারিয়্যা বিন ইয়াহইয়া আস-সাজী ও ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তিনি দুর্বল। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৪৩৭৮, ২২/৫১ নং পৃষ্ঠা] ২. যুহায়র সম্পর্কে আবু হাতিম বিন হিব্বান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল ও সিকাহ রাবীর বিপরীত হাদিস বর্ণনা করেন। আহমাদ বিন শুআয়ব আন-নাসায়ী বলেন, তিনি দুর্বল। ইবনি আবদুল বার আল-আন্দালাসী বলেন, তিনি সকলের নিকট দুর্বল। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ২০১৭, ৯/৪১৪ নং পৃষ্ঠা]।তালাক দেওয়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১০/১৩. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি উপহাসোচ্ছলে তালাক দিলো, বিবাহ করলো অথবা তালাক প্রত্যাহার করলো।
২০৩৯ আবু হুরায়রা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেন, তিনটি বিষয়ে বাস্তবিকই বলা হলেও যথার্থ বিবেচিত হইবে অথবা উপহাসোচ্ছলে বলা হলেও যথার্থ গণ্য হবেঃ বিবাহ, তালাক ও প্রত্যাহার। {২০৩৯}
{২০৩৯} তিরমিজি ১১৮৪, বায়হাকী ৩১৮, ইরওয়াহ ১৮২৬, সহিহ আবী দাউদ ১৯০৪, মিশকাত ৩২৮৪। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান। উক্ত হাদিসের রাবী আব্দুর রহমান বিন হাবীব বিন আরদাক সম্পর্কে আহমাদ বিন শুআয়ব আন-নাসায়ী বলেন, তিনি মুনকার অর্থাৎ কুফুরী নয় এমন কোন কওলী বা আমলী ফিসক এর সাথে জড়িত। ইবনি হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি যাচাই-বাচাই ছাড়া হাদিস গ্রহন করেন ও তা বর্ণনা করেন। ঈমাম যাহাবী বলেন, তার মাঝে দুর্বলতা রয়েছে। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৩৭৯২, ১৭/৫২ নং পৃষ্ঠা] উক্ত হাদিসটি হাসান কিন্তু আব্দুর রহমান বিন হাবীব বিন আরদাক এর কারণে সনদটি দুর্বল। হাদিসটির ৫৬ টি শাহিদ হাদিস রয়েছে, তন্মধ্যে ৯ টি অধিক দুর্বল, ২৭ টি দুর্বল, ১৩ টি হাসান, ৭ টি সহিহ হাদিস পাওয়া যায়। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলঃ তিরমিযি ১১৮৪, আবু দাউদ ২১৯৪, দারাকুতনী ৩৫৯৩, ৩৫৯৫, ৩৫৯৬, ৩৮৯৫, মুসান্নাফ আব্দুর রাযযাক ১০২৪৯, ১০২৫০ শারহুস সুন্নাহ ২৩৫৬। তালাক দেওয়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
১০/১৪ অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি মনে মনে তালাক দিয়ে মুখে সে সম্পর্কে কিছু বলেনি।
২০৪০ আবু হুরায়রা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেন, আল্লাহ আমার উম্মাতের মনে মনে বলা কথা উপেক্ষা [ক্ষমা] করেছেন, যাবত না সে তদুনুযায়ী কাজ করে অথবা মুখে উচ্চারণ করে।{২০৪০}
{২০৪০} সহীহুল বুখারী ২৫২৮, ৫২৬৯, ৬৬৬৪, মুসলিম ১২৭, তিরমিজি ১১৮৩, নাসায়ী ৩৪৩৩, ৩৪৩৪, ৩৪৩৫, আবু দাউদ ২২০৯, আহমাদ ৮৮৬৪, ৯২১৪, ৯৭৮৬, ৯৮৭৮, ৯৯৯০, সহিহ আবী দাউদ ১৯১৫, ইরওয়াহ ২০৬২। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ।তালাক দেওয়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১০/১৫. অধ্যায়ঃ জড়বুদ্ধিসম্পন্ন ব্যক্তি,নাবালেগ ও ঘুমন্ত ব্যক্তির তালাক।
২০৪১ আয়িশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ তিন ব্যক্তি থেকে কলম উঠিয়ে রাখা হয়েছেঃ ঘুমন্ত ব্যক্তি যতক্ষন না সে জাগ্রত হয়, নাবালেগ যতক্ষন না সে বালেগ হয় এবং পাগল, যতক্ষন না সে জ্ঞান ফিরে পায় বা সুস্থ হয়। অধস্তন রাবী আবু বাকর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] এর বর্ণনায় আছেঃ বেহুঁশ ব্যক্তি যতক্ষণ না সে হুঁশ ফিরে পায়। {২০৪১}
{২০৪১} নাসায়ী ৩৪৩২, আবু দাউদ ৪৩৯৮, আহমাদ ২৪১৭৩, ২৪১৮২, ২৪৫৯০, দারেমী ২২৯৬, ইরওয়াহ ২৯৭, মিশকাত ৩২৮৭-৩২৮৮। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ। উক্ত হাদিসের রাবী হাম্মাদ সম্পর্কে আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে তার হাদিস দ্বারা দলীল গ্রহনযোগ্য নয়। আবু হাতিম বিন হিব্বান বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে মুরজিয়া মতাবলম্বী। ঈমাম দারাকুতনী বলেন, তিনি দুর্বল। মুহাম্মাদ বিন ইয়াহইয়া বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় অধিক ভুল ও সন্দেহ করেন। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ১৪৮৩, ৭/২৬৯ নং পৃষ্ঠা] তালাক দেওয়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২০৪২ আলী বিন আবু তালিব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, নাবালেগ, পাগল ও ঘুমন্ত ব্যক্তি থেকে কলম তুলে নেয়া হয়েছে।{২০৪২}
{২০৪২} তিরমিজি ১৪২৩, ইরওয়া ২৯৭। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ্। উক্ত হাদিসের রাবী কাসিম বিন ইয়াযীদ সম্পর্কে ইবনি হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি মাজহুল বা অপরিচিত। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৪৮৩৬, ২৩/৪৬৫ নং পৃষ্ঠা] উক্ত হাদিসটি সহিহ কিন্তু কাসিম বিন ইয়াযীদ এর কারণে সনদটি দুর্বল। হাদিসটির ৯১ টি শাহিদ হাদিস পাওয়া যায়। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলঃ তিরমিযি ১৪২৩, আবু দাউদ ৪৩৯৮, ৪৪০২, ৪৪০৩, দারিমী ২২৯৬, আহমাদ ৯৪৩, ৯৫৯, ১১৮৭, ১৩৩০, ১৩৬৬, ২৪১৭২, ২৪১৮১, ২৪৫৮৯, দারাকুতনী ৩২৪০, মুজামুল আওসাত ৩৪০৩। তালাক দেওয়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১০/১৬. অধ্যায়ঃ বল প্রয়োগে বাধ্য হয়ে অথবা ভুলবশত প্রদত্ত তালাক।
২০৪৩ আবু যার আল-গিফারী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ আল্লাহ আমার উম্মাতের ভুল , বিস্মৃতি ও বলপূর্বক যা করিয়ে নেয়া হয় তা ক্ষমা করে দিয়েছেন। {২০৪৩}
{২০৪৩} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন। মিশকাত ৬২৮৪, ইরওয়া ৮২। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ। উক্ত হাদিসের রাবী ১. আয়্যুব বিন সুওয়ায়দ সম্পর্কে আবু বকর আল-ইসমাইলী বলেন, তার ব্যাপারে সমালোচনা রয়েছে। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি যাচাই-বাচাই ছাড়া হাদিস গ্রহন করেন ও তা বর্ণনা করেন। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, তিনি দুর্বল। আহমাদ বিন শুআয়ব আন-নাসায়ী বলেন, তিনি সিকাহ নয়। ইবনি হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। যাকারিয়্যা বিন ইয়াহইয়া আস-সাজী বলেন, তিনি দুর্বল। ঈমাম বুখারী বলেন, তার ব্যাপারে সমালোচনা রয়েছে। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৬১৬, ৩/৪৭৪ নং পৃষ্ঠা] ২. আবু বাকর আল-হুযালী সম্পর্কে আবু আহমাদ আল-হাকিম বলেন, তিনি আহলে ইলমের নিকট নির্ভরযোগ্য নয় তার থেকে হাদিস গ্রহন করা যায় তবে তা দলীলযোগ্য হইবে না। আবু যুরআহ আর-রাযী ও আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি দুর্বল। মুহাম্মাদ বিন জাফার বলেন, তিনি মিথ্যা কথা বলিতেন। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৭২৬৮, ৩৩/১৫৯ নং পৃষ্ঠা] ৩. শাহর বিন হাওশাব সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন ও ইয়াকুব বিন সুফইয়ান এবং আল-আজালী বলেন, তিনি সিকাহ। শুবাহ ইবনিল হাজ্জাজ তাহাকে বর্জন করেছেন। আহমাদ বিন হাম্বল ও আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, কোন সমস্যা নেই। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ২৭৮১, ১২/৫৭৮ নং পৃষ্ঠা] উক্ত হাদিসটি সহিহ কিন্তু আয়্যুব বিন সুওয়ায়দ ও আবু বাকর আল-হুযালী এবং শাহর বিন হাওশাব এর কারণে সনদটি দুর্বল। হাদিসটির ৫৯ টি শাহিদ হাদিস পাওয়া যায়। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলঃ দারাকুতনী ৪৩০৬, মুসান্নাফ আব্দুর রাযযাক ১১৪১৬, মুজামুল আওসাত ২১৩৭, ৮২৭৩।তালাক দেওয়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২০৪৪ আবু হুরায়রা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ নিশ্চই আল্লাহ আমার উম্মাতের মনের মন্দ কল্পনা যতক্ষন না সে তা কার্যকর করে অথবা মুখে উচ্চারণ করে এবং তার উপর বলপ্রয়োগে কৃত কর্ম উপেক্ষা করেছেন। {২০৪৪}
{২০৪৪} সহীহুল বুখারী ২৫২৮, ৫২৬৯, ৬৬৬৪, মুসলিম ১২৭, বুখারী, মুসলিম বল প্রয়োগের কথা ব্যতীত। তিরমিজি ১১৮৩, নাসায়ী ৩৪৩৩, ৩৪৩৪, ৩৪৩৫, আবু দাউদ ২২০৯, আহমাদ ৮৮৬৪, ৯২১৪, ৯৭৮৬, ৯৮৭৮, ৯৯৯০, সহিহ আবী দাউদ ১৯১৫। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ।তালাক দেওয়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২০৪৫ ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ আল্লাহ আমার উম্মাতকে ভুল ,বিস্মৃতি ও জোরপূর্বক কৃত কাজের দায় থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন। {২০৪৫}
{২০৪৫} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন। মিশকাত ৬২৮৪, রাওদুন নাদীর ৪০৪, ইরওয়াহ ৮২। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ। উক্ত হাদিসের রাবী মুহাম্মাদ ইবনিল মুসাফফা আল-হিমসী সম্পর্কে আবু হাতিম আর-রাযী ও ঈমাম নাসাঈ বলেন, তিনি সত্যবাদী। ইবনি হিব্বান তাহাকে সিকাহ বললেও অন্যত্র বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। ইবনি হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় সন্দেহ ও তাদলীস করেন। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৫৬১৩, ২৬/৪৬৫ নং পৃষ্ঠা]।তালাক দেওয়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২০৪৬ আয়িশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ জোরপূর্বক আদায়কৃত তালাক ও দাসমুক্তি কার্যকর হইবে না।{২০৪৬}
{২০৪৬} আবু দাউদ ২১৯৩, আহমাদ ২৫৮২৮, ইরওয়াহ ২০৪৭, সহিহ আবী দাউদ ১৯০৩। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান। উক্ত হাদিসের রাবী মুহাম্মাদ বিন ইসহাক সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন ও আজালী বলেন, তিনি সিকাহ। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি হাসানুল হাদিস। আলী ইবনিল মাদীনী বলেন, তিনি সালিহ। সুলায়মান বিন তারখান ও সুলায়মান বিন মিহরান বলেন, তিনি মিথ্যুক। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি আমার নিকট হাদিস বর্ণনায় নির্ভরযোগ্য নয়, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৫০৫৭, ২৪/৪০৫ নং পৃষ্ঠা] ২. উবায়দ বিন আবু সালিহ সম্পর্কে আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। ইবনি হিব্বান তার সিকাহ গ্রন্থে তার নাম উল্লেখ করেছেন। ইবনি হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি দুর্বল। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৫৪৪২, ২৬/৬২ নং পৃষ্ঠা] উক্ত হাদিসটি সহিহ কিন্তু উবায়দ বিন আবু সালিহ এর কারণে কারণে সনদটি দুর্বল। তবে সঠিক নামটি হলঃ মুহাম্মাদ বিন উবায়দ বিন আবু সালিহ। হাদিসটির ২০০ টি শাহিদ হাদিস রয়েছে, তন্মধ্যে ২ টি জাল, ২৩ টি অধিক দুর্বল, ৫১ টি দুর্বল, ৬৬ টি হাসান, ৫৮ টি সহিহ হাদিস পাওয়া যায়। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলঃ আবু দাউদ ২১৯৩, আহমাদ ২৫৮২৭, দারাকুতনী ৩৮৯১, ৩৮৯২, ৩৮৯৪, ৩৯৪২, ৩৯৪৩, ৩৯৪৪, ৪৩২২, মুসান্নাফ আব্দুর রাযযাক ১১৪৫০, ১১৪৫৭, ১১৪৫৮, ১৩৮৯৭, ১৩৮৯৯, ১৫৯১৯।তালাক দেওয়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
১০/১৭. অধ্যায়ঃ বিবাহের পূর্বে কোন তালাক নেই।
২০৪৭ আবদুল্লাহ বিন আমর ইবনিন আস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ তালাক দেয়ার অধিকার জন্মানোর আগে প্রদত্ত তালাক কার্যকর হয় না। {২০৪৭}
{২০৪৭} তিরমিজি ১১৮১, আবু দাউদ ২১৯০, সহিহ, ইরওয়াহ ১৭৫১, ২০৬৯, সহিহ আবী দাউদ ১৯০০, রাওদুন নাদীর ৫৭১, আত-তালীকু আলাত তানকীল ২/৬২। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান। উক্ত হাদিসের রাবী ১. আমির আল-আহওয়াল সম্পর্কে আবু আহমাদ বিন আদী আল-জুরজানী বলেন, তার রেওয়াত বর্ণনায় আম কোন অসুবিধা দেখি না। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। আহমাদ বিন শুআয়ব আন-নাসায়ী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। ইবনি হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৩০৫৪, ১৪/৬৫ নং পৃষ্ঠা] ২. আব্দুর রহমান ইবনিল হারিস সম্পর্কে আহমাদ বিন হাম্বল তাহাকে দুর্বল বলিয়াছেন, অন্যত্র বলেন, তিনি প্রত্যাখ্যানযোগ্য। আহমাদ বিন শুআয়ব আন-নাসায়ী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়, তিনি দুর্বল। ইবনি হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় সন্দেহ করেন। আলী ইবনিল মাদীনী তাহাকে দুর্বল বলিয়াছেন। মুহাম্মাদ বিন সাদ বলেন, তিনি সিকাহ। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৩৭৮৭, ১৭/৩৭ নং পৃষ্ঠা] তালাক দেওয়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ
২০৪৮ মিসওয়ার বিন মাখ্মারাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিন বলেন, নাবী [সাঃআঃ] বলেন, বিবাহের আগে তালাক নাই এবং মালিকানা লাভের আগে দাসমুক্তি নাই। {২০৪৮}
{২০৪৮} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন। বায়হাকী ৭/৩১৪, সহিহ ইরওয়াহ ৭/১৫২। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান সহিহ। আলী ইবনিল হুসায়ন বিন ওয়াকীদ সম্পর্কে আবু জাফার আল-উকায়লী বলেন, তার হাদিসের অনুসরণ করা যাবে না। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। ইবনি হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় সন্দেহ করেন। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৪০৫২, ২০/৪০৬ নং পৃষ্ঠা] ২. হিশাম বিন সাদ সম্পর্কে আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তার মুখস্তশক্তি দুর্বল। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তার হাদিস গ্রহন করা যায় কিন্তু দলীলযোগ্য নয়। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৬৫৭৭, ৩০/২০৪ নং পৃষ্ঠা]তালাক দেওয়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ
২০৪৯. আলী বিন আবু তালিব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] বলেন, বিবাহের পূর্বে তালাক নাই। {২০৪৯}
{২০৪৯} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ্। উক্ত হাদিসের রাবী জুওয়ায়বির [বিন সাঈদ] সম্পর্কে আবু আহমাদ আল-হাকিম বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। আবু বাকর আল-বায়হাকী বলেন, তিনি দুর্বল। আবু হাতিম আর-রাযী ও আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী তাহাকে দুর্বল বলিয়াছেন। আহমাদ বিন শুআয়ব আন-নাসায়ী বলেন, তিনি মিথ্যার সাথে অভিযুক্ত। ইবনি হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি খুবই দুর্বল। ঈমাম দারাকুতনী বলেন, তিনি প্রত্যাখ্যানযোগ্য। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৯৮৫, ৫/১৬৭ নং পৃষ্ঠা] উক্ত হাদিসটি সহিহ কিন্তু জুওয়ায়বির [বিন সাঈদ] এর কারণে সনদটি খুবই দুর্বল। হাদিসটির ২০০ টি শাহিদ হাদিস রয়েছে, তন্মধ্যে ২ টি জাল, ২৩ টি অধিক দুর্বল, ৫১ টি দুর্বল, ৬৬ টি হাসান, ৫৮ টি সহিহ হাদিস পাওয়া যায়। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলঃ আবু দাউদ ২১৯৩, আহমাদ ২৫৮২৭, দারাকুতনী ৩৮৯০, ৩৮৯২, ৩৮৯৪, ৩৯৪৩, ৩৯৪৪, ৪৩২২, মুসান্নাফ আব্দুর রাযযাক ১১৪৫০, ১১৪৫৭, ১১৪৫৮, ১৩৮৯৭, ১৩৮৯৯, ১৫৯১৯।তালাক দেওয়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১০/১৮. অধ্যায়ঃ যেসব বাক্যে তালাক সংঘটিত হয়।
২০৫০. আওযাঈ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
আমি যুহ্রী [রাদি.] কে জিজ্ঞেস করলাম নাবী [সাঃআঃ]-এর কোন স্ত্রী তাহাঁর থেকে আশ্রয় চেয়েছিলেন? তিনি বলেম, উরওয়া [রাদি.] আয়িশা [রাদি.]-এর বরাতে আমাকে অবহিত করেন যে, জাওন-এর কন্যা যখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট আসে এবং তিনি তাহাঁর সান্নিধ্যে যান তখন সে বলে, আমি আপনার থেকে আল্লাহ্র নিকট আশ্রয় চাই। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ তুমি এক সুমহান সত্তার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করেছ। অতএব তুমি তোমার পরিবারের সাথে গিয়ে মিলিত হও [চলে যাও]। {২০৫০}
{২০৫০} সহীহুল বুখারী ৫২৫৪, নাসায়ী ৩৪১৭, ইরওয়াহ ২০৬৪। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ।তালাক দেওয়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১০/১৯. অধ্যায়ঃ চূড়ান্ত [বাত্তা] তালাক।
২০৫১. ইয়াযীদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
ইয়াযীদ [রাদি.] তাহাঁর স্ত্রীকে চূড়ান্ত [বাত্তা] তালাক দিলেন। অতঃপর তিনি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট এসে তাঁকে [বিধান] জিজ্ঞেস করিলেন। তিনি বলেনঃ তুমি এর দ্বারা কী নিয়াত করেছিলে? ইয়াযিদ [রাদি.] বলেন, এক তালাকের। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ আল্লাহ্র শপথ! তুমি কি এক তালাকেরই নিয়াত করেছিলে? ইয়াযীদ [রাদি.] বলেন, আল্লাহ্র শপথ! আমি এক তালাকেরই ইচ্ছা করেছিলাম। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাঁকে তাহাঁর স্ত্রী ফেরত দিলেন। {২০৫১}
{২০৫১} তিরমিজি ১১৭৭, আবু দাউদ ২২০৬, ২২০৮, দারেমী ২২৭২, ইরওয়াহ ২০৬৩, মিশকাত ৩২৮২। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ যয়ীফ। উক্ত হাদিসের রাবী যুবায়র বিন সাঈদ সম্পর্কে আবু আহমাদ আল-হাকিম বলেন, তিনি আহলে ইলমের নিকট নির্ভরযোগ্য নয়। আবু জাফার আল-উকায়লী বলেন, তার হাদিসের অনুসরণ করা যাবে না। আহমাদ বিন শুআয়ব আন-নাসায়ী বলেন, তিনি দুর্বল। ইবনি হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি যাচাই-বাচাই ছাড়া হাদিস গ্রহন করেন ও তা বর্ণনা করেন। যাকারিয়্যা বিন ইয়াহইয়া আস-সাজী বলেন, তিনি দুর্বল। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ১৯৬৩, ৯/৩০৪ নং পৃষ্ঠা] ২. আবদুল্লাহ বিন আলী বিন ইয়াযীদ বিন রুকানাহ সম্পর্কে আবু জাফার আল-উকায়লী বলেন,তিনি হাদিস বর্ণনায় ইদতিরাব করেন, তার হাদিসের অনুসরণ করা যাবে না। ইবনি হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি যাচাই-বাচাই ছাড়া হাদিস গ্রহন করেন ও তা বর্ণনা করেন। ঈমাম যাহাবী তাহাকে সিকাহ বলিয়াছেন। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৩৬৩৪, ১৫/৩২৩ নং পৃষ্ঠা] ৩. আলী বিন ইয়াযীদ বিন রুকানাহ সম্পর্কে ইবনি হাজার আল-আসকালানী বলেন, তার কিছু বিষয় অজ্ঞাত। ঈমাম বুখারী বলেন, তার হাদিস বিশুদ্ধ নয়। তাহরীরু তাকরীবুত তাহযীব এর লেখক বলেন, তার অবস্থা সম্পর্কে অজ্ঞাত। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৪১৫২, ২১/১৭৪ নং পৃষ্ঠা]তালাক দেওয়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১০/২০. অধ্যায়ঃ স্বামী তার স্ত্রীকে তালাকের এখতিয়ার প্রদান করলে।
২০৫২. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদেরকে [তার স্ত্রীত্বে থাকা বা তাহাকে ত্যাগ করার] এখতিয়ার প্রদান করেন। আমরা তাঁকেই গ্রহণ করি। সুতরাং রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] একে তালাক গণ্য করেননি। {২০৫২}
{২০৫২} মাজাহ ২০৫৩, সহীহুল বুখারী ৪৭৮৬,৫২৬২, ৫২৬৪, মুসলিম ১৪৭৫, ১৪৭৭, তিরমিজি ১১৭৯, ৩২০৪, নাসায়ী ৩২০১, ৩২০২, ৩২০৩, ৩৪৩৯, ৩৪৪১, ৩৪৪২, ৩৪৪৩, ৩৪৪৪, ৩৪৪৫,আবু দাউদ ২২০৩, আহমাদ ২৩৬৬১, ২৩৭৮৮, ২৪২০০, ২৪৬৬৭, ২৪৭৭১, ২৪৮৪৮, ২৪৮৭৩, ২৪৯৯১, ২৫১৩৮, ২৫১৭৫, ২৫৪৯২, ২৫৫০৫, ২৫৫৭৭, ২৫৭৩৯, দারেমী ২২৬৯, সহিহ আবী দাউদ ১৯১৩। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ।তালাক দেওয়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২০৫৩. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, যখন এ আয়াতটি নাযিল হলো [অর্থানুবাদ]ঃ “যদি তোমার আল্লাহ্ ও তার রসূলের সন্তুষ্টি চাও” [সূরা আল-আহযাব ৩৩ঃ২৯], তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমার নিকট প্রবেশ করে বলেন, হে আয়িশা! আমি তোমাকে একটি কথা জিজ্ঞেস করবো। তুমি তোমার পিতা-মাতার সাথে পরামর্শ না করে সে সম্পর্কে তাড়াহুড়া করে কিছু বলবে না। আয়িশাহ্ [রাদি.] বলেন, আল্লাহ্র শপথ! তিনি জানতেন যে, নিশ্চয় আমার পিতা-মাতা কখনো তাহাঁর থেকে আমার বিচ্ছেদের পক্ষে মত দিবেন না। আয়িশাহ্ [রাদি.] বলেন, এরপর তিনি আমাকে এ আয়াতটি পড়ে শুনান [অনুবাদ]ঃ “হে নাবী [সাঃআঃ]! আপনি আপনার স্ত্রীদের বলুন, তোমরা যদি পার্থিব জীবন ও এর ভূষণ চাও… [সূরা আল-আহযাব ৩৩ ঃ ২৮]। তখন আমি বলিলাম, এ সম্পর্কে আমার পিতা-মাতার সাথে আমি আর কী পরামর্শ করবো! আমি আল্লাহ্ ও তার রসূলকেই গ্রহণ করলাম। {২০৫৩}
{২০৫৩} মাজাহ ২০৫২, সহীহুল বুখারী ৪৭৮৬,৫২৬২, ৫২৬৪, মুসলিম ১৪৭৫, ১৪৭৭, তিরমিজি ১১৭৯, ৩২০৪, নাসায়ী ৩২০১, ৩২০২, ৩২০৩, ৩৪৩৯, ৩৪৪১, ৩৪৪২, ৩৪৪৩, ৩৪৪৪, ৩৪৪৫,আবু দাউদ ২২০৩, আহমাদ ২৩৬৬১, ২৩৭৮৮, ২৪২০০, ২৪৬৬৭, ২৪৭৭১, ২৪৮৪৮, ২৪৮৭৩, ২৪৯৯১, ২৫১৩৮, ২৫১৭৫, ২৫৪৯২, ২৫৫০৫, ২৫৫৭৭, ২৫৭৩৯, দারেমী ২২৬৯, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ।তালাক দেওয়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১০/২১. অধ্যায়ঃ না নারীর জন্য খোলা তালাক নিন্দনীয়।
২০৫৪. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ যে স্ত্রীলোক একান্ত অনন্যোপায় অবস্থা ছাড়া, স্বামীর নিকট তালাক দাবি করে, সে জান্নাতের সুঘ্রাণও পাবে না। অথচ জান্নাতের সুঘ্রাণ চল্লিশ বছরের [পথের] দূরত্ব থেকে পাওয়া যাবে। {২০৫৪}
{২০৫৪} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন। ইরওয়াহ ৭/১০১, যঈফাহ ৪৭৭৭, যইফ আল-জামি ৬২১। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ যয়ীফ। উক্ত হাদিসের রাবী উমারাহ বিন সাওবান সম্পর্কে আবুল হাসান ইবনিল কাত্তান বলেন, তার অবস্থা সম্পর্কে অজ্ঞাত। ইবনি হাজার আল-আসকালানী বলেন, তার কিছু বিষয় অজ্ঞাত। তাহরীরু তাকরীবুত তাহযীব এর লেখক বলেন, তিনি মাজহুল বা অপরিচিত। আবদুল হাক বিন আব্দুর রহমান বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৪১৭৭, ২১/২৩১ নং পৃষ্ঠা]তালাক দেওয়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
২০৫৫. সাওবান [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন , রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেন, যে নারী তার স্বামীর কাছে একান্ত অসুবিধা ছাড়া তালাক দাবি করে, তার জন্য জান্নাতের সুঘ্রাণ হারাম। {২০৫৫}
{২০৫৫} তিরমিজি ১১৮৬, ১১৮৭, আবু দাউদ ২২২৬, আহমাদ ২১৮৭৪, ২১৯৩৪, দারেমী ২২৭০, ইরওয়াহ ২১৩৫, মিশকাত ৩২৭৯, সহিহ আবী দাউদ ১৯২৮। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ।তালাক দেওয়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১০/২২. অধ্যায়ঃ খোলা তালাক দাবিকারিনী স্ত্রীকে প্রদত্ত সম্পদ ফেরত নেয়া প্রসঙ্গে।
২০৫৬. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, সালূল-কন্যা জামীলা [রাদি.] নাবী [সাঃআঃ] এর নিকট এসে বলেন, আল্লাহ্র শপথ! আমি সাবিতের দ্বীনদারী ও চরিত্রের ব্যাপারে কোন ত্রুটির অভিযোগ করছি না। কিন্তু আমি দ্বীন ইসলামে [থেকে] কুফরি আচরণ অপছন্দ করি। আমি যে তাহাকে মনের দিক থেকে মোটেই বরদাশত করিতে পারছি না। নাবী [সাঃআঃ] তাহাকে বলেনঃ তুমি কি সাবিতের দেয়া বাগানটি ফেরত দিবে? তিনি বলেন, হাঁ। অতএব রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] সাবিত [রাদি.]-কে তার থেকে বাগানটি ফেরত নিতে বলেন এবং অতিরিক্ত কিছু নিতে বারণ করেন। {২০৫৬}
{২০৫৬} সহীহুল বুখারী ৫২৭৩, ৫২৭৫, ৫২৭৭, নাসায়ী ৩৪৬৩, ইরওয়াহ ২০৩৬, সহিহ আবী দাউদ, ১৯২৯। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ।তালাক দেওয়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২০৫৭. আবদুল্লাহ বিন আমর ইবনিল আস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, সাহল কন্যা হাবীবা [রাদি.] সাবিত বিন কায়স বিন সামমাস [রাদি.] এর স্ত্রী ছিলেন। সাবিত [রাদি.] ছিলেন কুৎসিত চেহারাবিশিষ্ট। হাবিবা [রাদি.] বলেন, হে আল্লাহ্র রসুল! আল্লাহ্র শপথ! আল্লাহর ভয় না থাকলে সাবিত যখন আমার নিকট আসে তখন অবশ্যই আমি তার মুখে থুথু নিক্ষেপ করতাম। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ তুমি কি তার বাগানটি ফেরত দিতে রাজি আছো? তিনি বলেন, হাঁ। রাবী বলেন, তিনি তার বাগানটি তাহাকে ফেরত দিলেন। অতঃপর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাদের দুজনকে পৃথক করে দিলেন। {২০৫৭}
{২০৫৭} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন। ইরওয়াহ ৭/১০৩/২০৩৭। সহিহ আবু দাউদ ১৯২৯। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ যয়ীফ। উক্ত হাদিসের রাবী ১.আবু খালিদ আল আহমার সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তিনি সত্যবাদী কিন্তু তার হাদিস দলীলযোগ্য নয়। আলী ইবনিল মাদীনী বলেন, তিনি সিকাহ। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি সত্যবাদী। ঈমাম নাসাঈ বলেন, কোন সমস্যা নেই। ইবনি আদী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় সালেহ কিন্তু হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ ও ভুল করেন। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ২৫০৪, ১১/৩৯৪ নং পৃষ্ঠা] ২. হাজ্জাজ বিন আরতা সম্পর্কে আবু আহমাদ আল-হাকিম বলেন, তিনি আহলে ইলমের নিকট নির্ভরযোগ্য নয়। আবু বকর আল বায়হাকী বলেন, তার হাদিস দ্বারা দলীল গ্রহনযোগ্য নয়, অন্যত্র তিনি তাহাকে দুর্বল বলিয়াছেন। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় তাদলীস করেন। মুহাম্মাদ বিন সাদ তাহাকে দুর্বল বলিয়াছেন। আহমাদ বিন শুআয়ব আন-নাসায়ী বলেন, তিনি দুর্বল তার হাদিস দ্বারা দলীল গ্রহনযোগ্য নয়। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ১১১২, ৫/৪২০ নং পৃষ্ঠা]তালাক দেওয়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১০/২৩. অধ্যায়ঃ খোলাকারিনী মহিলার ইদ্দাত।
২০৫৮. উবাদাহ হইতে বর্ণীতঃ
আমি মুআব্বিয বিন আফরার কন্যা রুবায় [রাদি.]-কে বলিলাম, তুমি তোমার ঘটনাটি আমাকে বলো তো। সে বললো, আমি আমার স্বামীর থেকে খোলা তালাক নিয়েছিলাম। অতঃপর আমি উসমান [রাদি.]-এর নিকট এসে তাহাকে জিজ্ঞেস করলাম, আমাকে কিরূপে ইদ্দাত পালন করিতে হইবে? তিনি বলেন, তোমাকে কোন ইদ্দাত পালন করিতে হইবে না। তবে তোমার স্বামী খুব কাছাকাছি সময়ে তোমার সাথে সহবাস করে থাকলে তোমাকে তার নিকট এক হায়িদ কাল থাকতে হইবে। রুবাই [রাদি.] বলেন, উসমান [রাদি.] রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর সেই সিদ্ধান্ত অনুসরণ করেছেন, যা তিনি মারইয়াম আল-মাগালিয়ার ব্যাপারে দিয়েছিলেন। তিনি ছিলেন সাবিত বিন কায়স [রাদি.] এর স্ত্রী এবং তিনি স্বামী থেকে খোলা তালাক নিয়েছিলেন। {২০৫৮}
{২০৫৮} নাসায়ী ৩৪৯৮, সহিহ আবী দাউদ ১৯৩১, বায়হাকী ৭/৩৩৭। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান সহিহ। উক্ত হাদিসের রাবী মুহাম্মাদ বিন ইসহাক সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন ও আজালী বলেন, তিনি সিকাহ। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি হাসানুল হাদিস। আলী ইবনিল মাদীনী বলেন, তিনি সালিহ। সুলায়মান বিন তারখান ও সুলায়মান বিন মিহরান বলেন, তিনি মিথ্যুক। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি আমার নিকট হাদিস বর্ণনায় নির্ভরযোগ্য নয়, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৫০৫৭, ২৪/৪০৫ নং পৃষ্ঠা]তালাক দেওয়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ
১০/২৪. অধ্যায়ঃ ঈলা [স্ত্রীসহবাস না করার শপথ] ।
২০৫৯. আয়িশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এই মর্মে শপথ করেন, একমাস যাবত তার স্ত্রীদের সংস্পর্শে যাবেন না। তিনি একাধারে উনত্রিশ দিন এভাবে কাটিয়ে দিলেন। অবশেষে তিরিশ দিনের সন্ধ্যা হলে তিনি আমার নিকট আসেন। আমি বলিলাম, আপনি তো শপথ করেছিলেন যে, আপনি একমাস আমাদের সংস্পর্শে আসবেন না। তিনি বলেনঃ মাস এভাবেও হয়। তিনি তাহাঁর দুহাতের আঙ্গুলসমূহ তিনবার সম্পূর্ণ উন্মুক্ত রেখে ইশারায় বলেনঃ মাস এভাবেও হয়, তিনি পুনরায় [দুবার পূর্বোক্ত নিয়মে দেখান] কিন্তু তিনি তৃতীয় বারে তিনি একটি আঙ্গুল মুষ্টিবদ্ধ রাখেন [অর্থাৎ মাস উনতিরিশ দিনেও হয়]। {২০৫৯}
{২০৫৯} আহমাদ ২৩৫৩০, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান সহিহ। উক্ত হাদিসের রাবী আব্দুর রহমান বিন আবু রিজাল সম্পর্কে আবু হাতিম বিন হিব্বান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় কখনো কখনো ভুল করেন। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি সিকাহ। ইবনি হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় কখনো কখনো ভুল করেন। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৩৮১৩, ১৯/৩৭৪ নং পৃষ্ঠা]তালাক দেওয়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ
২০৬০. আয়িশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, যায়নব [রাদি.] রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] প্রদত্ত উপঢৌকন তাঁকে ফেরত দেওয়ার কারনে তিনি ঈলা করেছিলেন। আয়িশা [রাদি.] বলেছিলেন, যায়নব তো আপনাকে আপমান করেছে! এতে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] অসুন্তুষ্ট হন এবং তাহাদের সংস্পর্শে না আশার শপথ [ঈলা] করেন। {২০৬০}
{২০৬০} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ যয়ীফ। তালীক, ইবনি মাজাহ। উক্ত হাদিসের রাবী হারিসাহ বিন মুহাম্মাদ সম্পর্কে আহমাদ বিন হাম্বল দুর্বল বলিয়াছেন। ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তিনি সিকাহ নন। ঈমাম বুখারী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় মুনকার। আবু যুরআহ আর-রাযী তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল ও মুনকার। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, কোন সমস্যা নেই।তালাক দেওয়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
২০৬১. উম্মু সালামাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর কতক স্ত্রীর সংস্পর্শে না আসার জন্য এক মাসের ঈলা করেছিলেন। উনতিরিশ দিন অতিবাহিত হওয়ার পর বিকালে অথবা সকালে তিনি [স্ত্রীদের নিকট] আসেন। বলা হলো, হে আল্লাহ্র রসূল! উনতিরিশ দিন তো অতিবাহিত হয়েছে? তিনি বলিলেন, মাস উনতিরিশ দিনেও হয়। {২০৬১}
{২০৬১} সহীহুল বুখারী ১৯১০, মুসলিম ১০৮৫, আহমাদ ২৬১৪৩, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ।তালাক দেওয়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস.
১০/২৫. অধায়ঃ যিহার প্রসঙ্গে।
২০৬২. সালামাহ বিন সাখর আল-বায়াদী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি নারীদের প্রতি অধিক আসক্ত ছিলাম। অন্য পুরুষের তুলনায় আমি তাহাদের সাথে বেশি সহবাসে লিপ্ত হতাম। রমাদান মাস শুরু হলে আমি আমার স্ত্রীর সাথে যিহার করলাম। রমাদান মাস প্রায় শেষ হইতে যাচ্ছে। একদা রাতের বেলা সে আমার সাথে কথাবার্তা বলছিল তখন তার দেহের একটি অংশ আমার সামনে উন্মক্ত হয়ে গেলো। আমি তার উপর ঝাপিয়ে পড়লাম এবং তার সাথে সহবাস করলাম। ভোর হলে আমি সকাল সকাল আমার সম্প্রদায়ের লোকদের নিকট উপস্থিত হয়ে তাহাদেরকে আমার ঘটনাটি জানালাম। আমি তাহাদের বলিলাম, তোমারা আমার ব্যাপারে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে জিজ্ঞেস করো। তারা বললো, আমরা তা করিতে পারবো না। হয়ত বা আল্লাহ্ আমাদের সম্পর্কে কিতাব [কুরআনের আয়াত] নাযিল করবেন অথবা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদেরকে এমন কিছু বলবেন, যা আমাদের জন্য লজ্জার কারন হয়ে থাকিবে। বরং আমরা তোমার অপরাধসহ তোমাকে সোপর্দ করবো। তুমি নিজেই গিয়ে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর নিকট তোমার ঘটনাটি বলো। রাবী বলেন, আমি রওয়ানা হয়ে তাহাঁর নিকট উপস্থিত হয়ে আমার বিষয়টি তাঁকে জানালাম। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, তুমি এটা করেছো? আমি বলিলাম, আমিই এটা করেছি। আমি এখানে আছি হে আল্লাহ্র রসূল! আমার প্রতি আল্লাহ্র যে হুকুম হয় তাতে আমি ধৈর্য ধারণ করবো। তিনি বলেন, একটি গোলামকে দাসত্বমুক্ত করো। আমি বলিলাম সেই সত্তার শপথ, যিনি আপনাকে সত্যসহ পাঠিয়েছেন! আমি আমার দেহটি ছাড়া আর কিছুর মালিক নই। তিনি বলেনঃ তাহলে একাধারে দুমাস সিয়াম রাখো। আমি বলিলাম, ইয়া রসূলুল্লাহ! আমার উপর যে বিপদ এসেছে তা তে এই রোযার কারণেই। তিনি বলেন, তাহলে দান-খয়রাত করো অথবা ষাটজন মিসকিনকে আহার করাও। রাবী বলেন, আমি বলিলাম, সেই সত্তার শপথ, যিনি আপনাকে সত্যসহ পাঠিয়েছেন! আমরা এ রাতটি নিরন্ন অবস্থায় অতিবাহিত করেছি। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, তুমি বনু যুরাইক-এর যাকাত বণ্টনকারীর নিকট যাও এবং তাঁকে বলো, সে যেন তোমাকে যাকাতের কিছু মাল দান করে। তা দিয়ে তুমি ষাটজন মিসকিনকে আহার করাও এবং অবশিষ্ট যা থাকে তা নিজের উপকারে লাগাও। {২০৬২}
{২০৬২} ইবনি মাজাহ ২০৬৪, তিরমিজি ১১৯৮, ১২০০, ৩২৯৯, আবু দাউদ ২২১৩, আহমাদ ২৩১৮৮, দারেমী ২২৭৩, ইরওয়াহ ২০৯১, সহিহআবী দাউদ ১৯১৭। উক্ত হাদিসের রাবী মুহাম্মাদ বিন ইসহাক সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন ও আজালী বলেন, তিনি সিকাহ। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি হাসানুল হাদিস। আলী ইবনিল মাদীনী বলেন, তিনি সালিহ। সুলায়মান বিন তারখান ও সুলায়মান বিন মিহরান বলেন, তিনি মিথ্যুক। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি আমার নিকট হাদিস বর্ণনায় নির্ভরযোগ্য নয়, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৫০৫৭, ২৪/৪০৫ নং পৃষ্ঠা]তালাক দেওয়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২০৬৩. আয়িশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
বরকতময় সেই সত্তা যার শ্রবণশক্তি সব কিছুতে পরিব্যাপ্ত হয়ে আছে। আমি সালাবার কন্যা খাওলা [রাদি.] এর কিছু কথা শুনলাম এবং কিছু কথা আমার অজ্ঞাত থেকে যায়। তিনি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর নিকট তার স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ পেশ করেন। তিনি বলেন, হে আল্লাহ্র রসূল! সে আমার যৌবন উপভোগ করেছে এবং আমি আমার পেট থেকে তাঁকে অনেক সন্তান উপহার দিয়েছি। অবশেষে আমি যখন বার্ধক্যে উপনীত হলাম এবং সন্তানদানে অক্ষম হলাম, তখন সে আমার সাথে যিহার করেছে। হে আল্লাহ্! আমি তোমার দরবারে আমার অভিযোগ পেশ করছি। অতঃপর বেশি সময় অতিবাহিত না হইতেই জিবরাঈল [আঃ] এ আয়াতগুলো নিয়ে অবতরণ করিলেন [অনুবাদ]ঃ “আল্লাহ্ অবশ্যই শুনেছেন সেই নারীর কথা, যে নিজের স্বামীর বিষয়ে তোমার সাথে বাদানুবাদ করছে এবং আল্লাহ্র নিকট ফরিয়াদ করছে…” [সুরা মজাদালাহঃ ১]{২০৬৩}
{২০৬৩} ইবনি মাজাহ ১৮৮, নাসায়ী ৩৪৬০, ইরওয়াহ ৭/১৭৫। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ।তালাক দেওয়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১০/২৬. অধ্যায়ঃ যিহারকারী কাফফারা আদায়ের পূর্বে সহবাসে লিপ্ত হলে।
২০৬৪. সালামাহ বিন সখর আল-বাদায়ী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
কাফফারা আদায়ের পূর্বে সহবাসে লিপ্ত হওয়া যিহারকারী সম্পর্কে নাবী [সাঃআঃ] বলেন, একই কাফফারা হইবে [অর্থাৎ সহবাসের জন্য স্বতন্ত্র কাফফারা হইবে না]। {২০৬৪}
{২০৬৪} ইবনি মাজাহ ২০৬২, তিরমিজি ১১৯৮, ১২০০, ৩২৯৯, আবু দাউদ ২২১৩, আহমাদ ২৩১৮৮, দারেমী ২২৭৩, মুখতাসারুল হাদিস [২০৬২]। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ। উক্ত হাদিসের রাবী মুহাম্মাদ বিন ইসহাক সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন ও আজালী বলেন, তিনি সিকাহ। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি হাসানুল হাদিস। আলী ইবনিল মাদীনী বলেন, তিনি সালিহ। সুলায়মান বিন তারখান ও সুলায়মান বিন মিহরান বলেন, তিনি মিথ্যুক। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি আমার নিকট হাদিস বর্ণনায় নির্ভরযোগ্য নয়, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৫০৫৭, ২৪/৪০৫ নং পৃষ্ঠা]. তালাক দেওয়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২০৬৫. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, এক ব্যক্তি তার স্ত্রীর সাথে যিহার করে এবং কাফফারা আদায়ের পূর্বে তার সাথে সহবাস করে। অতপর সে নাবী [সাঃআঃ] এর নিকট উপস্থিত হয়ে বিষয়টি তাঁকে অবহিত করে। তিনি বলেন, এরূপ করিতে তোমাকে কিসে প্ররোচিত করলো! সে বললো, হে আল্লাহ্র রসূল! চাঁদের আলোতে আমি তার পদদ্বয়ের মলের উজ্জ্বল্য দেখে ফেলি এবং নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে তার সাথে সহবাস করে বসি। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তার বর্ণনা শুনে হাসলেন এবং তাঁকে কাফফারা আদায় না করা পর্যন্ত স্ত্রীর সাথে সহবাস না করার নির্দেশ দিলেন। {২০৬৫}
{২০৬৫} তিরমিজি ১১৯৯, নাসায়ী ৩৪৫৭, ৩৪৫৮, ৩৪৫৯, আবু দাউদ ২২২১, ২২২২, ইরওয়াহ ৭/১৭৯। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান। উক্ত হাদিসের রাবী ১. আব্বাস বিন ইয়াযীদ সম্পর্কে আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি সত্যবাদী। আবু হাতিম বিন হিব্বান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় কখনো কখনো ভুল করেন। ইবনি হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। মাসলামাহ ইবনিল কাসিম বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। ঈমাম যাহাবী বলেন, তিনি সত্যবাদী। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৩১৪৬, ১৪/২৬১ নং পৃষ্ঠা] ২. হাকাম বিন আবান সম্পর্কে আবু আহমাদ বিন আদী আল-জুরজানী বলেন, তার মাঝে দুর্বলতা রয়েছে। আবু হাতিম বিন হিব্বান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় কখনো কখনো ভুল করেন। আবু আবদুল্লাহ আল-হাকিম আন-নায়সাবুরী বলেন, তিনি সত্যবাদী। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি সিকাহ। ইবনি হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় সন্দেহ করেন। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ১৪২২, ৭/৮৬ নং পৃষ্ঠা] তালাক দেওয়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
১০/২৭. অধ্যায়ঃ লিআন [ অভিশাপযুক্ত শপথ ]।
২০৬৬. উয়ায়মির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
উয়ায়মির [রাদি.], আসিম বিন আদী [রাদি.]-এর নিকট এসে বলেন, আপনি আমার পক্ষ থেকে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে জিজ্ঞেস করুন যে, কোন ব্যক্তি যদি তার স্ত্রীর সাথে অপর কোন পুরুষ লোককে পেয়ে তাঁকে হত্যা করে, তাহলে কি এই প্রতিশোধে তাহাকেও হত্যা করা হইবে অথবা কী করা হইবে? আসিম [রাদি.] এ ব্যাপারে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে জিজ্ঞেস করেন। কিন্তু রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] প্রশ্নকারির প্রশ্ন অপছন্দ করেন। উয়াইমির [রাদি.] আসিম [রাদি.] এর সাথে সাক্ষাৎ করে তাঁকে জিজ্ঞেস করেন, আপনি কি করেছেন? আসিম [রাদি.] বলেন, আমি জিজ্ঞেস করেছি। তুমি কোন শুভ বিষয় আমার নিকট পৌছাওনি। আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে জিজ্ঞেস করলে তিনি তা অপছন্দ করেন। উয়াইমির [রাদি.] বলেন, আল্লাহ্র শপথ! আমি অবশ্যই রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর নিকট উপস্থিত হয়ে বিষয়টি সম্পর্কে তাঁকে জিজ্ঞেস করবো। অতএব তিনি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর নিকট পৌছে দেখেন যে, এইমাত্র তাহাদের ব্যাপারে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর উপর ওহি নাযিল হয়েছে। তিনি তাহাদের উভয়কে লিআন করান। উয়াইমির [রাদি.] বলেন, আল্লাহ্র শপথ, হে আল্লাহ্র রসূল! আমি যদি তাঁকে নিয়ে [স্ত্রী হিসেবে] বাড়ি যাই, তাহলে আমি তার ওপর যেনার মিথ্যা অভিযোগ আরোপকারী সাব্যস্ত হব। এই বলে তিনি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর নির্দেশ দানের আগেই তাহাকে তালাক দেন। পরবর্তীতে লিআনকারীদ্বয়ের ব্যাপারে এটাই বিধানরূপে ধার্য হয়। এরপর নাবী [সাঃআঃ] বলেন, তোমরা এই নারীর প্রতি লক্ষ্য রাখো। সে যদি কৃষ্ণকায়, বড় চোখবিশিষ্ট ও মোটা নিতম্ববিশিষ্ট সন্তান প্রসব করে, তবে আমি মনে করবো যে, উয়াইমির সত্যবাদী। আর যদি সে এমন লাল বর্ণের সন্তান প্রসব করে, যা মনে হয় লাল রঙের কীট, তবে আমি মনে করবো যে, উয়াইমির মিথ্যাবাদী। রাবী বলেন, সেই নারী একটি কৃষ্ণকায় সন্তান প্রসব করেছিল।{২০৬৬}
{২০৬৬} সহীহুল বুখারী ৪২৩, ৪৭৪৫, ৪৭৪৬, ৫২৫৯, ৫৩০৮, ৫৩০৯, ৬৮৫৪, ৭১৬৬, ৭৩০৪, মুসলিম ১৪৯২, নাসায়ী ৩৪০২, ৩৪৬৬, আবু দাউদ ২২৪৫, ২২৪৮, ২২৫১, আহমাদ ২২৩২০, ২২৩৩০, ২২৩৪৪, ২২৩৪৬, মুয়াত্তা মালেক ১২০১, দারেমী ২২২৯, ইরওয়া ২১০০ সহিহ, আবী দাউদ ১৯৪২-১৯৪৯। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ। উক্ত হাদিসের রাবী মারওয়ান মুহাম্মাদ বিন উসমান আল-উসমানী সম্পর্কে আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি সিকাহ। আবু হাতিম বিন হিব্বান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন ও সিকাহ রাবীর বিপরীত হাদিস বর্ণনা করেন। ইবনি হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। ঈমাম বুখারী তাহাকে সত্যবাদী বলিয়াছেন। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৫৪৫৪, ২৬/৮১ নং পৃষ্ঠা] তালাক দেওয়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২০৬৭. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, হিলাল বিন উমাইয়্যা [রাদি.] তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে নাবী [সাঃআঃ] এর নিকট শরীক বিন সাহমার সাথে যেনায় লিপ্ত হওয়ার অভিযোগ দায়ের করেন। নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ প্রমাণ পেশ করো অন্যথায় তোমার পিঠে হদ্দ কার্যকর হইবে। হেলাল বিন উমাইয়্যা [রাদি.] বলেন, সেই সত্তার শপথ, যিনি আপনাকে সত্য দীনসহ পাঠিয়েছেন। আমি অবশ্যই সত্যবাদী এবং আল্লাহ্ আমার অভিযোগের ব্যাপারে এমন বিধান নাযিল করবেন, যা আমার পিঠকে হদ্দ থেকে রক্ষা করিবে। তখন এই আয়াত নাযিল হলো [অনুবাদ] “ আর যারা নিজেদের স্ত্রীর প্রতি যেনার অপবাদ আরোপ করে অথচ নিজেরা ব্যতীত তাহাদের কোন সাক্ষী নাই, তাহাদের প্রত্যেকের সাক্ষ্য এই হইবে যে, সে আল্লাহ্র নামে চারবার শপথ করে বলবে যে, সে অবশ্যই সত্যবাদী এবং পঞ্চমবারে বলবে, সে মিথ্যাবাদী হলে তার উপর নেমে আসবে আল্লাহ্র লানত” [সূরা নূরঃ ৬৭]। নাবী [সাঃআঃ] মুখ ফিরিয়ে তাহাদের দুজনকে ডেকে পাঠান। তারা উপস্থিত হলে প্রথমে হেলাল বিন উমাইয়্যা [রাদি.] দাড়িয়ে শপথ করেন এবং নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ আল্লাহ অবশ্যই জানেন যে, তোমাদের মধ্যে একজন মিথ্যাবাদী। অতএব কেও তওবা করিবে কি? অতঃপর স্ত্রীলোক দাঁড়িয়ে সাক্ষ্য দিলো। পঞ্চমবারে সে যখন বলিতে যাচ্ছিল যে, সে [স্বামী] সত্যবাদী হলে তার নিজের উপর আল্লাহ্র গযব পতিত হোক, তখন লোকেরা তাহাকে বলিল, এটি কিন্তু অবধারিতকারী বাক্য। বিন আব্বাস [রাদি.] বলেন, সেই নারী তখন আর কিছু না বলে থেমে গিয়ে পিছনে হটে গেলো। শেষে আমরা মনে করলাম সে হয়তো ফিরে যাবে [বিরত থাকিবে]। কিন্তু সে বললো, আল্লাহ্র শপথ! আমি আমার সম্প্রদায়কে চিরদিনের জন্য কালিমালিপ্ত করিতে পারি না। নাবী [সাঃআঃ] বলেন, তোমরা তার প্রতি লক্ষ্য রেখো। সে যদি সুরমাদীপ্ত চোখ, মাংসল নিতম্ব ও মাংসল পদযুগলবিশিষ্ট সন্তান প্রসব করে তবে এটি শরীক বিন সাহমার। অতঃপর সে এই ধরণের সন্তানই প্রসব করলো। তখন নাবী [সাঃআঃ] বলেন, আল্লাহ্র কিতাবে আগেই যদি [লিআনকারীর] বিধান না দেয়া থাকতো, তাহলে তার ও আমার মধ্যে কিছু একটা ঘটে যেতো [তাহাকে শাস্তি দিতাম]। {২০৬৭}
{২০৬৭} সহীহুল বুখারী ২৬৭১, ৪৭৪৭, ৫৩০৭,তিরমিজি ৩১৭৯, আবু দাউদ ২২৫৪, ২২৫৫, ২২৫৬, আহমাদ ২৪৬৪, ইরওয়াহ ২০৯৮, সহিহ আবী দাউদ ১৯৫১। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ।তালাক দেওয়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২০৬৮. আবদুল্লাহ বিন মাসউদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমরা জুমুআহর রাতে মাসজিদে অবস্থানরত ছিলাম। তখন এক ব্যক্তি বললো, কোন ব্যক্তি যদি তার স্ত্রীর সাথে অপর কোন ব্যক্তিকে [অপকর্মে লিপ্ত] পেয়ে তাহাকে হত্যা করে, তাহলে তোমরা তাহাকে হত্যা করিবে! আর যদি যেনার অপবাদ দেয়, তাহলে তোমরা তাহাকে অবশ্যি বেত্রাঘাতে জর্জরিত করিবে। আল্লাহ্র শপথ! আমি নাবী [সাঃআঃ] এর সামনে বিষয়টি তুলে ধরবো। অতএব সে তা নাবী [সাঃআঃ] সামনে পেশ করলে আল্লাহ তাআলা লিআন সংক্রান্ত আয়াত নাযিল করেন। অতঃপর লোকটি তার স্ত্রীর প্রতি যেনার অপবাদসহ হাযির হলে নাবী [সাঃআঃ] তাহাদের উভয়কে লিআন করান এবং সাথে সাথে আরও বলেনঃ হয়তো সে একটি কৃষ্ণকায় সন্তান প্রসব করিবে। পরে সে একটি কৃষ্ণকায় ও কোঁকড়ানো চুলবিশিষ্ট একটি বাচ্চা প্রসব করে। {২০৬৮}
{২০৬৮} মুসলিম ১৪৯৫, আবু দাউদ ২২৫৩, সহিহ আবী দাউদ ১৯৫০। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ। তালাক দেওয়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২০৬৯. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, এক ব্যক্তি তার স্ত্রীকে লিআন করায় এবং তার গর্ভের সন্তানকে অস্বীকার করে। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাদের দুজনের মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটিয়ে দেন এবং সন্তানটি উক্ত নারীর সাথে যুক্ত করেন। {২০৬৯}
{২০৬৯} সহীহুল বুখারী ৪৭৪৮, ৫৩০৬, ৫৩১১, ৫৩১২, ৫৩১৩, ৫৩১৪, ৫৩১৫, ৫৩৪৯, ৬৭৪৮, মুসলিম ১৪৯৩, ১৪৯৪, তিরমিজি ১২০৩, নাসায়ী ৩৪৭৩, ৩৪৭৪, ৩৪৭৫, ৩৪৭৬, ৩৪৭৭, আবু দাউদ ২২৫৮, ২২৫৯, আহমাদ ৪৪৬৩, ৪৫১৩, ৪৫৮৯, ৪৬৭৯, ৪৯২৬, ৪৯৮৯, ৫১৮০, ৫২৯০,৬০৬৩ মুয়াত্তা মালেক ১২০২, দারেমী ২২৩২, সহিহ আবী দাউদ ১৯৫৫, ইরওয়াহ ৭/১৮৭। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ।তালাক দেওয়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২০৭০. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আনসার সম্প্রদায়ের এক ব্যক্তি বালইজলান গোত্রের এক নারীকে বিবাহ করে। অতঃপর সে তার ঘরে প্রবেশ করে তার সাথে রাত কাটায়। ভোর হলে সে বললো, আমি তাহাকে কুমারী পাইনি। তার বিষয়টি নাবী [সাঃআঃ] এর দরবারে পেশ করা হলে তিনি যুবতীকে ডেকে পাঠান। তিনি তাহাকে জিজ্ঞেশ করলে সে বললো, হাঁ, অবশ্যই আমি কুমারী ছিলাম। তিনি তাহাদেরকে নির্দেশ দিলে তারা উভয়ে লিআন করে। তিনি তাহাকে মোহরানা প্রদানের ব্যবস্থা করেন। {২০৭০}
{২০৭০} আহমাদ ২৩৬৩, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ যয়ীফ। উক্ত হাদিসের রাবী মুহাম্মাদ বিন ইসহাক সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন ও আজালী বলেন, তিনি সিকাহ। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি হাসানুল হাদিস। আলী ইবনিল মাদীনী বলেন, তিনি সালিহ। সুলায়মান বিন তারখান ও সুলায়মান বিন মিহরান বলেন, তিনি মিথ্যুক। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি আমার নিকট হাদিস বর্ণনায় নির্ভরযোগ্য নয়, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৫০৫৭, ২৪/৪০৫ নং পৃষ্ঠা]তালাক দেওয়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
২০৭১. আবদুল্লাহ বিন আমর ইবনিল আস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেন, চার ধরণের দম্পতির মধ্যে লিআনের বিধান প্রযোজ্য নয়ঃ মুসলিম ব্যক্তির বিবাহাধীন খ্রিস্টান নারী, মুসলিম ব্যক্তির বিবাহাধীন ইহূদী নারী, ক্রিতদাসের বিবাহাধীন স্বাধীনা নারী এবং স্বাধীন পুরুষের বিবাহাধীন ক্রীতদাসী। {২০৭১}
{২০৭১} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন। যইফাহ ৪১২৭। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ যইফ। উক্ত হাদিসের রাবী ১. দমারাহ বিন রাবীআহ সম্পর্কে আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি সালিহ। আবু সাঈদ বিন ইয়ুনুস আল-মিসরী বলেন, তিনি তাহাদের যুগে একজন ফকিহ ছিলেন। আহমাদ বিন শুআয়ব আন-নাসায়ী ও আহমাদ বিন সালেহ আল-জায়লী বলেন, তিনি সিকাহ। ইবনি হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় কিছু সন্দেহ করেন। যাকারিয়্যা বিন ইয়াহইয়া আস-সাজী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় সন্দেহ করেন। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ২৯৩৮, ১৩/৩১৬ নং পৃষ্ঠা] ২. [উসমান] ইবনি আতা সম্পর্কে আবু আহমাদ আল-হাকিম বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। আবু বাকর আল-বায়হাকী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়, তিনি দুর্বল। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তার থেকে হাদিস গ্রহন করা যায় তবে তা দলীলযোগ্য নয়। আহমাদ বিন শুআয়ব আন-নাসায়ী বলেন, তিনি সিকাহ নয়। ইবনি হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি দুর্বল। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৩৮৪৬, ১৯/৪৪১ নং পৃষ্ঠা] ৩. আতা বিন আবু মুসলিম সম্পর্কে আবু বাকর আল-বায়হাকী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। শুবাহ ইবনিল হাজ্জাজ বলেন, তিনি হাদিস ভুলে যেয়েন। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তার হাদিস প্রত্যাখ্যানযোগ্য নয়। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৩৯৪১, ২০/১০৬ নং পৃষ্ঠা]তালাক দেওয়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১০/২৮. অধ্যায়ঃ কোন বৈধ বিষয় হারাম করা সম্পর্কে।
২০৭২. আয়িশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর স্ত্রীদের সংস্পর্শে না আসার শপথ [ঈলা] করে হালালকে হারাম করেন। ফলে তিনি [তাহাঁর জন্য] হালাল বিষয়টি হারাম করিলেন এবং শপথ ভঙ্গের জন্য কাফফারা প্রদানের ব্যবস্থা করেন। {২০৭২}
{২০৭২} তিরমিজি ১২০১, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ। তালীক ইবনি মাজাহ্। উক্ত হাদিসের রাবী মুসলিম বিন আলকামাহ সম্পর্কে আহমাদ বিন শুআয়ব আন-নাসায়ী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। ইবনি হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় সন্দেহ করেন। আব্দুর রহমান বিন মাহদী তার হাদিস বর্জন করেছেন। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৫৯৫৭, ২৭/৫৬৫ নং পৃষ্ঠা] তালাক দেওয়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২০৭৩. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
হালাল বস্তু [নিজের উপর] হারাম করা শপথরূপে গণ্য হইবে। ইবনি আব্বাস [রাদি.] বলিতেনঃ “তোমাদের জন্য আল্লাহ্র রসূলের মধ্যে রয়েছে অনুসরণীয় আদর্শ “[সূরা আহযাবঃ ২১]। {২০৭৩}
{২০৭৩} সহীহুল বুখারী ৪৯১১, মুসলিম ১৪৭৩, নাসায়ী ৩৪২০, ইরওয়াহ ২০৮৮। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ।তালাক দেওয়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১০/২৯. অধ্যায়ঃ দাসী দাসত্বমুক্ত হওয়ার সাথে সাথে বিবাহ রদের এখতিয়ার লাভ করে।
২০৭৪. আয়িশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বারীরাকে দাসত্বমুক্ত করে দিলে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাকে [তার বিবাহ বন্ধন রাখা বা না রাখার] এখতিয়ার দেন। তার স্বামী ছিল স্বাধীন পুরুষ। {২০৭৪}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ স্বাধীন শব্দ ব্যতীত সহিহ, কিন্তু আবদ বা দাস শব্দে মাহফূয।{২০৭৪} ইবনি মাজাহ ২০৭৬,সহীহুল বুখারী ৪৫৬, ১৪৯৩, ২১৫৫, ২১৫৬, ২১৬৮, ২১৬৯, ২৫৩৬, ২৫৬১, ২৫৬৩, ২৫৬৪, ২৫৬৫, ২৫৭৮, ২৭১৭, ২৭২৬, ২৭২৯, ২৭৩৫, ৫০৯৭, ৫২৭৯, ৫২৮৪, ৫৪৩০, ৬৭১৭, ৬৭৫১, ৬৭৫৪, ৬৭৫৮, ৬৭৬০, মুসলিম ১০৭৫, ১৫০৪, তিরমিজি ১১৫৪, ১১৫৫, ২১২৪, ২১২৫, নাসায়ী ২৬১৪, ৩৪৪৭, ৩৪৪৮, ৩৪৪৯, ৩৪৫১, ৩৪৫২,৩৪৫৩, ৩৪৫৪, ৪৬৪২, ৪৪৪৬, ৪৬৫৫, ৪৪৫৬,আবু দাউদ ২২৩৩, ২২৩৬, ২৯১৬, ৩৯২৯, আহমাদ ২৩৫৩৩, ২৩৬৩০, ২৩৬৬৭, ২৪০০১, ২৪৩১৮, ২৪৩৭৫, ২৪৩৯৮, ২৪৫১০, ২৪৬৪৪, ২৪৭৫৬, ২৪৮৩৮, ২৪৮৬৫, ২৪৮৯৮, ২৪৯২৪, ২৪৯৪০, ২৫০০৬, ২৫০৩৬, ২৫০৫৭, ২৫১৯৮, ২৫২২৭, ২৫২৫৮, ২৫৭৮৫, ২৫৮০৩, মুয়াত্তা মালেক ১১৯২, ১৫১৯, দারেমী ২২৮৯, ইরওয়াহ ৭/২৭৬, সহিহ আবী দাউদ ১৯৩৭। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ স্বাধীন শব্দ ব্যতীত সহিহ, এ শব্দে শায, কিন্তু আবদ বা দাস শব্দে মাহফূয।তালাক দেওয়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য
২০৭৫. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, বারীরার স্বামী মুগীস ছিল ক্রীতদাস। আমি যেন তাহাকে দেখছি যে, সে বারীরার পিছে ছুটছে আর কাঁদছে এবং তার অশ্রু তার গাল বেয়ে পড়ছে। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আব্বাস [রাদি.] কে বলেনঃ হে আব্বাস! বারীরার প্রতি মুগীছের ভালবাসা এবং মুগীছের প্রতি বারীরার ঘৃণাতে কি আপনি আশ্চার্যান্বিত হচ্ছেন না! নাবী [সাঃআঃ] বারীরাকে বলিলেনঃ তুমি যদি তার কাছে ফিরে যেতে। কেননা সে তোমার সন্তানের পিতা। সে বললো, হে আল্লাহ্র রসূল! আপনি কি আমাকে নির্দেশ করছেন? তিনি বলেনঃ আমি কেবল সুপারিশ করছি। সে বলিল, তাহাকে আমার প্রয়োজন নাই। {২০৭৫}
{২০৭৫} সহীহুল বুখারী ৫২৮০, ৫২৮১, ৫২৮২, ৫২৮৩, তিরমিজি ১১৫৬, নাসায়ী ৫৪১৭, আবু দাউদ ২২৩১, ২২৩২, আহমাদ ১৮৪৭, ২৫৩৮, ৩৩৯৫, দারেমী ২২৯২, সহিহ আবী দউদ ১৯৩৩-১৯৩৪। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ।তালাক দেওয়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২০৭৬. আয়িশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
বারীরার প্রসঙ্গ থেকে শরীয়াতের তিনটি বিধান জারী হয়েছে। তাহাকে দাসত্বমুক্ত করার পর তাহাকে তার ক্রীতদাস স্বামীর বিবাহাধীনে থাকা বা না থাকার এখতিয়ার দেয়া হয়। লোকেরা তাহাকে পর্যাপ্ত দান-খয়রাত করতো। সে তা থেকে নাবী [সাঃআঃ] কে উপঢৌকন দিতো। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিতেনঃ তা তার জন্য সদাকা [দান] কিন্তু আমাদের বেলায় উপঢৌকন। তার প্রসঙ্গে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, আযাদকারী ব্যক্তিই ওয়ালাআর [অভিভাবকত্বের] অধিকারী। {২০৭৬}
{২০৭৬} মাজাহ ২০৭৪, সহীহুল বুখারী ৪৫৬, ১৪৯৩, ২১৫৫, ২১৫৬, ২১৬৮, ২১৬৯, ২৫৩৬, ২৫৬১, ২৫৬৩, ২৫৬৪, ২৫৬৫, ২৫৭৮, ২৭১৭, ২৭২৬, ২৭২৯, ২৭৩৫, ৫০৯৭, ৫২৭৯, ৫২৮৪, ৫৪৩০, ৬৭১৭, ৬৭৫১, ৬৭৫৪, ৬৭৫৮, ৬৭৬০, মুসলিম ১০৭৫, ১৫০৪, তিরমিজি ১১৫৪, ১১৫৫, ২১২৪, ২১২৫, নাসায়ী ২৬১৪, ২৪৪৭, ২৪৪৮, ২৪৪৯, ২৪৫৪, ৪৬৪২, ৪৪৪৬, ৪৬৫৫, ৪৪৫৬,আবু দাউদ ২২৩৩, ২২৩৬, ২৯১৬, ৩৯২৯, আহমাদ ২৩৫৩৩, ২৩৬৩০, ২৩৬৬৭, ২৪০০১, ২৪৩১৮, ২৪৩৭৫, ২৪৩৯৮, ২৪৫১০, ২৪৬৪৪, ২৪৭৫৬, ২৪৮৩৮, ২৪৮৬৫, ২৪৮৯৮, ২৪৯২৪, ২৪৯৪০, ২৫০০৬, ২৫০৩৬, ২৫০৫৭, ২৫১৯৮, ২৫২২৭, ২৫২৫৮, ২৫৭৮৫, ২৫৮০৩, মুয়াত্তা মালেক ১১৯২, ১৫১৯, দারেমী ২২৮৯, ইরওয়াহ ২/২৭৪, সহিহ আবী দাউদ ১৪৫৯, ২৪৮৯। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান সহিহ।উক্ত হাদিসের রাবী উসামাহ বিন যায়দ সম্পর্কে ইবনি হিব্বান তাহাকে সিকাহ উল্লেখ করে বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। আল-আজলী তাহাকে সিকাহ বলিয়াছেন। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তার থেকে হাদিস গ্রহন করা যায় তবে তা দলীল হিসেবে নয়। ঈমাম নাসাঈ বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৩১৭, ২/৩৪৭ নং পৃষ্ঠা]তালাক দেওয়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ
২০৭৭. আয়িশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, বারীরাকে তিন হায়িদকাল ইদ্দাত পালনের নির্দেশ দেয়া হয়। {২০৭৭}
{২০৭৭} তিরমিজি ১১৮২, আবু দাউদ ২১৮৯, দারেমী ২২৯৪, ইরওয়াহ ২১২০, সহিহ, আবী দাউদ ১৯৩৭। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ।তালাক দেওয়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২০৭৮. আবু হুরায়রা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বারীরাকে [বৈবাহিক সম্পর্ক বহাল রাখা বা না রাখার] ইখতিয়ার প্রদান করেন। {২০৭৮}
{২০৭৮} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন। বায়হাকী ১/১৮৩। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ, তালীক ইবনি মাজাহ। উক্ত হাদিসের রাবী ইয়াহইয়া বিন আবু ইসহাক সম্পর্কে আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তার হাদিস বর্ণনায় কোন অসুবিধা নেই। আবু হাতিম বিন হিব্বান তার সিকাহ গ্রন্থে তার নাম উল্লেখ করেছেন। ইবনি হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় কখনো কখনো ভুল করেন। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৬৭৮৩, ৩১/১৯৯ নং পৃষ্ঠা]. তালাক দেওয়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১০/৩০. অধ্যায়ঃ দাসীর তালাক ও তার ইদ্দতকাল।
২০৭৯. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ ক্রীতদাসীর তালাক হচ্ছে দুবার এবং তার ইদ্দাতকাল দুহায়িদকাল। {২০৭৯}
{২০৭৯} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন। ইরওয়াহ ৭/১৫০। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ যয়ীফ। উক্ত হাদিসের রাবী ১. আমর বিন শুআয়ব আল-মুসলী সম্পর্কে আবু বাকর আল-বায়হাকী বলেন, তিনি দুর্বল, তার হাদিস দ্বারা দলীল গ্রহণযোগ্য নয়। আবু জাফার আল-উকায়লী বলেন, তার হাদিসের অনুসরণ করা যাবে না। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তার থেকে হাদিস গ্রহন করা যায় তবে তা দলীলযোগ্য হইবে না। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি যাচাই-বাচাই ছাড়া হাদিস গ্রহন করেন ও তা বর্ণনা করেন। ইবনি হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি দুর্বল। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৪২৫৬, ২১/৩৯০ নং পৃষ্ঠা] ২. আতিয়্যাহ [বিন সাদ] সম্পর্কে আবু বকর আল-বায়হাকী বলেন, তিনি দুর্বল, তার হাদিস দ্বারা দলীল গ্রহনযোগ্য হইবে না। আবু হাতিম বিন হিব্বান বলেন, তার হাদিস দ্বারা দলীল পেশ করা সঠিক নয়। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস গ্রহনে শিথিল। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। ইবনি হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় অধিক ভুল করেন। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৩৯৫৬, ২০/১৪৫ নং পৃষ্ঠা]তালাক দেওয়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
২০৮০. আয়িশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণনা করেন, “দাসীর তালাক হলো দুটি এবং তার ইদ্দাত কাল দু হায়িদ”। {উপরোক্ত হাদিসে মোট ২টি সনদের ১টি বর্ণিত হয়েছে, অপর সনদটি হলঃ}
২/২০৮০[১]. আয়িশা [রাদি.], তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ ক্রীতদাসীর তালাক হচ্ছে দুটি এবং তার ইদ্দাত দু হায়িদকাল। {২০৮০}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ দঈফ।{২০৮০} তিরমিযি ১১৮৫২, আবু দাউদ ২১৮৯, দারেমী ২২৮৯, ইরওয়াহ ২০৬৬, যয়ীফ আবী দাউদ ৩৭৭। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ যয়ীফ। উক্ত হাদিসের রাবী মুযাহির বিন আসলাম সম্পর্কে আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, তিনি একজন অপরিচিত ব্যাক্তি। আহমাদ বিন শুআয়ব ও ইবনি হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি দুর্বল। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৬০১৬, ২৮/৯৬ নং পৃষ্ঠা]তালাক দেওয়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১০/৩১. অধ্যায়ঃ ক্রীতদাসের তালাক।
২০৮১. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নাবী [সাঃআঃ] এর নিকটে এসে বললো, হে আল্লাহ্র রসূল! আমার মনিব তাহাঁর বাদীকে আমার সাথে বিবাহ দিয়েছে। এখন সে আমার আর আমার স্ত্রীর মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাতে চায়। রাবী বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] মিম্বারে আরোহণ করিলেন, অতঃপর বলিলেন, হে লোকসকল! তোমাদের কারো এরূপ আচরণ কেন করো যে, সে তার গোলামের সাথে তার বাদীর বিবাহ দেয়, অতঃপর তাহাদের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাতে চায়? নারীর উরু স্পর্শ করা যার জন্য বৈধ, তালাকের অধিকার তার। {২০৮১}
{২০৮১} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন। বায়হাকী ৯/১৫৭, ইরওয়াহ ২০৪১। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান। উক্ত হাদিসের রাবী ইবনি লাহীআহ সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তার হাদিসের ব্যাপারে কোন সমস্যা নেই। আমর বিন ফাল্লাস বলেন, তার কিতাব সমূহ পুড়ে যাওয়ায় হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ করেন। কিতাব সমূহ পুড়ে যাওয়ায় যে হাদিস বর্ণনা করেছেন তা দুর্বল। আবু কাসিম বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ করেন। আবু বকর আল-বায়হাকী বলেন, তার হাদিস দলীল হিসেবে গ্রহণযোগ্য নয়। আবু হাতিম আর-রাযী তাহাকে দুর্বল বলিয়াছেন। ইবনি হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে তার কিতাব সমূহ পুড়ে যাওয়ার পর হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ করেন। বিশর ইবনিস সারী বলেন, যদি তার সাথে আমার সাক্ষাৎ হত তবে আমি তার থেকে কোন হাদিস গ্রহন করতাম না। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৩৫১৩, ১৫/৪৮৭ নং পৃষ্ঠা]তালাক দেওয়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
১০/৩২. অধ্যায়ঃ কেউ দাসীকে দু তালাক দেয়ার পর তাহাকে ক্রয় করলে।
২০৮২. বানূ নাওফালের মুক্ত দাস আবুল হাসান [মাকবুল] হইতে বর্ণীতঃ
ইবনি আব্বাস [রাদি.] কে একটি গোলাম সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হল যে, সে তার স্ত্রীকে দুতালাক দিয়েছে, পরে তাহাদের উভয়কে দাসত্বমুক্ত করা হয়েছে, সে কি তাহাকে বিবাহ করিতে পারে? তিনি বলেন, হাঁ। অতঃপর তাহাকে জিজ্ঞেস করা হল আপনি কার বরাতে বলছেন? তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] অনুরূপ ফয়সালা দিয়েছেন। আব্দুর রাযযাক বলেন, আবদুল্লাহ বিন মুবারাক বলিয়াছেন, আবুল হাসান যে মস্তবড় পাথর তার গর্দানে চাপিয়ে নিয়েছে। {২০৮২}
{২০৮২} নাসায়ী ৩৪২৮, আবু দাউদ ২১৮৭, যয়ীফ আবী দাউদ ৩৭৫-৩৭৬। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ যয়ীফ। উক্ত হাদিসের রাবী উমার বিন মুআত্তিব সম্পর্কে আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, আমরা তাহাকে চিনি না। ইবনি হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি দুর্বল। আহমাদ বিন শুআয়ব আন-নাসায়ী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়, তিনি তার দুআফা গ্রন্থে তার নাম উল্লেখ করেছেন। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৪৩০৯, ২১/৫০৮ নং পৃষ্ঠা]তালাক দেওয়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১০/৩৩. অধ্যায়ঃ উম উম্মুল ওয়ালাদ এর উদ্দাত।
২০৮৩. আমর ইবনিল আস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, তোমরা আমাদের সামনে আমাদের নাবী [সাঃআঃ] মুহাম্মাদ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর সুন্নাতকে বিপর্যস্ত করো না। উম্মুল ওয়ালাদের ইদ্দত চারমাস দশ দিন। {২০৮৩}
{২০৮৩} আবু দাউদ ২৩০৮, ইরওয়াহ ২১৪১, সহিহ আবী দাউদ ১৯৯৮। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ। উক্ত হাদিসের রাবী মাতারিল ওয়াররাক সম্পর্কে আবু বকর আল-বাযযার বলেন, তার হাদিস কেউ বর্জন করেছেন এ মর্মে আমার জানা নেই। আবু জাফার আল-উকায়লী বলেন, এই সানাদে তার হাদিসের অনুসরণ করা যাবে না। আবু হাতিম বিন হিব্বান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় কখনো কখনো ভুল করেন। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। ইবনি হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৫৯৯৪, ২৮/৫১ নং পৃষ্ঠা] তালাক দেওয়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১০/৩৪. অধ্যায়ঃ যে মহিলার স্বামী মারা গেছে ইদ্দাত চলাকালে তার রূপচর্চা করা মাকরূহ।
২০৮৪. যায়নাব বিনতু উম্মু সালামাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি উম্মু সালামাহ ও উম্মু হাবিবা [রাদি.] কে বলিতে শুনেছেন, এক স্ত্রীলোক রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর নিকট এসে বলিল, আমার মেয়ের স্বামী মারা গেছে। এখন তার চোখে অসুখ দেখা দিয়েছে, তাই সে তার চোখে সুরমা লাগাতে চায়। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ তোমাদের অবস্থা এরূপ ছিল যে, কোন নারী এক বছর পূর্ণ হলে পর গোবর ছিটিয়ে ইদ্দত সমাপ্ত করতো। এখন তা কেবল চার মাস দশ দিন। {২০৮৪}
{২০৮৪} সহীহুল বুখারী ১২৮০, ১২৮২, ৫৩৩৪, ৫৩৩৭, ৫৩৩৯, ৫৩৪৫, ৫৭০৭, মুসলিম ১৪৮৬, ১৪৮৯, ১৪৮৮, ১৪৮৬, তিরমিজি ১১৯৫, ১১৯৭, নাসায়ী ৩৫০০, ৩৫০১,৩৫০২, ৩৫০৪, ৩৫২৭, ৩৫৩৩, ৩৫৩৫, ৩৫৩৮, ৩৫৩৯, ৩৫৪০, ৩৫৪১, আবু দাউদ ২২৯৯,আহমাদ ২৫৯৬২, ২৬১১২, ২৬২২৫, ২৬২২৬, আহমাদ ২৬৮৫২, মুয়াত্তা মালেক ১২৬৮, ১২৭০, দারেমী ২২৮৪, সহিহ আবী দাউদ ১৯৯২, ইরওয়াহ ২১১৪। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ। তালাক দেওয়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১০/৩৫. অধ্যায়ঃ স্বামী ব্যতীত অপরের মৃত্যুতে কি মহিলারা রূপচর্চা বর্জন করিবে?
২০৮৫. আয়িশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] বলেন, কোন নারীর জন্য স্বামী ব্যতীত অপর কারো মৃত্যুতে তিন দিনের অধিক রূপচর্চা বর্জন [বা শোক পালন] করা বৈধ নয়। {২০৮৫}
{২০৮৫} মুসলিম ১৪৯০, আবু দাউদ ২৩৫৭২, ২৪৯৮৬, ২৫৫৯০, ২৫৮৭২, ২৫৯১৩, ২৫৯১৭, মুয়াত্তা মালেক ১২৭১, দারেমী ২২৮৩, ইরওয়াহ ৭./১৯৪। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ।তালাক দেওয়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২০৮৬. নাবী [সাঃআঃ] এর স্ত্রী হাফসা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ যে নারী আল্লাহ ও আখিরাতের দিনের উপর ঈমান রাখে, তার জন্য স্বামী ব্যতীত অন্য কারো মৃত্যুতে তিন দিনের অধিক রূপচর্চা বর্জন করা [বা শোক পালন করা] বৈধ নয়। {২০৮৬}
{২০৮৬} মুসলিম ১৪৯০, নাসায়ী ৩৫০৩, আবু দাউদ ২৪৯৮৬, আহমাদ ২৫৯১৩, ২৫৯১৭, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ। তালাক দেওয়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
২০৮৭. উম্মু আতিয়্যাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিয়াছেনঃ কোন নারী মৃত ব্যক্তির জন্য তিন দিনের অধিক শোক পালন করিবে না। তবে স্বামীর মৃত্যুতে স্ত্রী চার মাস দশ দিন শোক পালন করিবে। সে রঙ্গিন বস্ত্র পরিধান করিবে না, তবে ইয়ামানের বিশেষ ধরনের রঙ্গীন চাদর পরতে পারবে। সুরমা ও সুগন্ধি ব্যবহার করিবে না, তবে হায়িদ থেকে পবিত্র হওয়ার সময় গোসলের বেলায় সামান্য কস্তূরী ও চন্দন ব্যবহার করিতে পারবে। {২০৮৭}
{২০৮৭} সহীহুল বুখারী ৩১৩, ১২৭৯, ৫৩৪০, ৫৩৪১, ৫৩৪৩, মুসলিম ৯৩৮, নাসায়ী ৩৫৩৪, ৩৫৩৬, আবু দাউদ ২৩০২, আহমাদ ২০২৭০, ২৬৭৫৯, দারেমী ২২৮৬, ইরওয়াহ ৭/১৯৪-১৯৫, সহিহ আবী দাউদ ১৯৯৪। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ।তালাক দেওয়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১০/৩৬. অধ্যায়ঃ পিতা পুত্রকে তার স্ত্রীকে তালাক দিতে নির্দেশ দিলে।
২০৮৮. আবদুল্লাহ বিন উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমার এক স্ত্রী ছিল। তাহাকে আমি খুব ভালবাসতাম। কিন্তু আমার পিতা তার প্রতি অসন্তুষ্ট ছিলেন। উমার [রাদি.] বিষয়টি নাবী [সাঃআঃ] এর কাছে উল্লেখ করেন। তিনি তাহাকে তাহাকে তালাক দেওয়ার জন্য আমাকে নির্দেশ দেন। অতএব আমি তাহাকে তালাক দিলাম। {২০৮৮}
{২০৮৮} তিরমিজি ১১৮৯, আবু দাউদ ৫১৩৮, সহিহাহ ৯১৩। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান।তালাক দেওয়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
২০৮৯. আবুদ দারদা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
এক ব্যক্তিকে তার পিতা অথবা তার মা তার স্ত্রীকে তালাক দেয়ার নির্দেশ দেয়। এদিকে সে শপথ করে বললো যে, সে তার স্ত্রীকে তালাক দিলে তাহাকে এক শত গোলাম দাসত্বমুক্ত করিতে হইবে। এমতাবস্থায় সে আবু দারদা [রাদি.] এর নিকট হাযির হল। তখন তিনি চাশতের সালাত পড়ছিলেন এবং তিনি তা দীর্ঘায়িত করেন। আর যোহর ও আসরের মাঝে ও তিনি সালাত পড়তেন। লোকটি তাহাকে তার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে আবু দারদা [রাদি.] বলেন, তোমার মানত পূর্ণ করো এবং তোমার পিতা-মাতার হুকুমও পালন করো। আবু দারদা [রাদি.] আরও বলিলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছিঃ পিতা হচ্ছে জান্নাতের উত্তম দরজা। অতএব তুমি তোমার পিতা-মাতার অধিকার সংক্ষণ করো কিংবা ত্যাগ করো। {২০৮৯}
{২০৮৯} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন। সহিহাহ ৯১৪। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহিহ। উক্ত হাদিসের রাবী আতা ইবনিস সায়িব সম্পর্কে আবু আহমাদ বিন আদী আল-জুরজানী বলেন, তিনি শেষ বয়সে হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ করেছেন। আবু আবদুল্লাহ আল-হাকিম আন-নায়সাবুরী বলেন, তিনি শেষ বয়সে হাদিস বর্ণনায় পরিবর্তন করেছেন। আয়্যুব বিন আবু তামিমাহ আস-সাখতিয়ানী বলেন, তিনি সিকাহ। ইবনি হাজার আল-আসকালানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে শেষ বয়সে হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ করেছেন। [তাহযীবুল কামালঃ রাবী নং ৩৯৩৪, ২০/৮৬ নং পৃষ্ঠা] তালাক দেওয়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
Leave a Reply