বিবাহ সম্পর্কে হাদিস
বিবাহ সম্পর্কে হাদিস । বিবাহের পূর্বে পাত্রী দেখা , এই অধ্যায়ে মোট =১৭১ টি হাদীস (১৮৪৫ – ২০১৫) >> সুনানে ইবনে মাজাহ হাদিস এর মুল সুচিপত্র পড়ুন
পর্বঃ ৯, অধ্যায় (১১-২৫)=১৫
৯/১. অধ্যায়ঃ বিবাহ করার ফযীলাত
৯/২. অধ্যায়ঃ স্ত্রীসঙ্গ ত্যাগ নিষিদ্ধ।
৯/৩. অধ্যায়ঃ স্বামীর উপর স্ত্রীর অধিকার।
৯/৪. অধ্যায়ঃ স্ত্রীর উপর স্বামীর অধিকার।
৯/৫. অধ্যায়ঃ সর্বোত্তম মহিলা।
৯/৬. অধ্যায়ঃ ধর্মপরায়ণা নারীকে বিবাহ করা।
৯/৭. অধ্যায়ঃ কুমারী মহিলা বিবাহ করা।
৯/৮. অধ্যায়ঃ স্বাধীন ও অধিক সন্তানদানে সক্ষম নারী বিবাহ করা।
৯/৯. অধ্যায়ঃ বিবাহের পূর্বে পাত্রী দেখা।
৯/১০. অধ্যায়ঃ কোন ব্যক্তি যেন তাহার ভাইয়ের বিবাহের প্রস্তাবের উপর প্রস্তাব না দেয়।
৯/১১. অধ্যায়ঃ কুমারী ও বিধবা মেয়ের মত গ্রহণ প্রসঙ্গে।
৯/১২. অধ্যায়ঃ কেউ নিজের মেয়েকে তাহার অমতে বিবাহ দিলে।
৯/১৩. অধ্যায়ঃ নাবালেগ মেয়েকে তাহার পিতা বিবাহ দিলে।
৯/১৪. অধ্যায়ঃ পিতা ব্যতীত অপর কেউ নাবালেগ মেয়েকে বিবাহ দিলে।
৯/১৫. অধ্যায়ঃ অভিভাবক ছাড়া বিবাহ হয় না।
৯/১৬ অধ্যায়ঃ শিগার বিবাহ নিষিদ্ধ
৯/১৭. অধ্যায়ঃ মহিলাদের মাহর [মোহরানা]
৯/১৮. অধ্যায়ঃ কোন ব্যক্তি বিবাহ করার পর মাহর ধার্য করার পূর্বে মারা গেলে।
৯/১৯. অধ্যায়ঃ বিবাহের খুতবাহ [ভাষণ]
৯/২০. অধ্যায়ঃ বিবাহের ঘোষণা।
৯/২১. অধ্যায়ঃ গান গাওয়া এবং ঢোল বাজানো।
৯/২২. অধ্যায়ঃ নপুংসকদের প্রসঙ্গে।
৯/২৩. অধ্যায়ঃ নব দম্পতিকে মুবারকবাদ জানানো।
৯/২৪. অধ্যায়ঃ ওলীমা [বিবাহ ভোজ] প্রসঙ্গে।
৯/২৫. অধ্যায়ঃ দাওয়াতকারীর দাওয়াত কবুল করা।
৯/১. অধ্যায়ঃ বিবাহ করার ফযীলাত
১৮৪৫. আলকামাহ বিন কায়স হইতে বর্ণীতঃ
আমি আবদুল্লাহ বিন মাসঊদ [রাদি.] -এর সাথে মিনায় উপস্থিত ছিলাম। উসমান [রাদি.] এসে তাহাঁর সাথে একান্তে কথা বলেন। আমিও তাহাঁর নিকটেই বসলাম। উসমান [রাদি.] তাহাঁকে বলেন, আমি কি তোমার সাথে এক কুমারী মেয়ের বিবাহ দিবো, যে তোমার অতীত যৌবনের কথা স্মরণ করিয়ে দিবে? আবদুল্লাহ [রাদি.] যখন দেখলেন যে, তাহার উদ্দেশ্য কেবল বিবাহ করার উৎসাহ প্রদান করা, তখন তিনি আমাকে হাতের ইশারায় ডাকলেন। আমি তাহার নিকটে গেলাম এবং তিনি তখন বলছিলেন, তুমি যদি এ কথায় রাযী হয়ে যেতে। কেননা রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, হে যুব সম্প্রদায়! তোমাদের মধ্যে যাহার বিবাহ করার সামর্থ্য আছে, সে যেন বিবাহ করে। কেননা তা দৃষ্টিশক্তিকে সংযতকারী এবং লজ্জাস্থানের হেফাজতকারী। আর যাহার এ সামর্থ্য নেই, সে যেন সিয়াম রাখে। কেননা এটি তাহার জন্য জৈবিক উত্তেজনা প্রশমনকারী। {১৮৪৫}
{১৮৪৫} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৯০৫, ৫০৬৫, ৫০৬৬, মুসলিম ১৪০০, তিরমিজি ১০৮১, নাসাঈ ২২৩৯, ২২৪০, ২২৪১, ২২৪২, ২২৪৩, ৩২০৬, ৩২০৭, ৩২০৮, ৩২০৯, ৩২১১, আবু দাউদ ২০৪৬, আহমাদ ৩৫৮১, ৪১০১, দারেমী ২১৬৫, ২১৬৬, ইরওয়াহ ১৭৮১, সহীহ আবু দাউদ ১৭৮৫, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।বিবাহ সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৮৪৬. আয়িশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, বিবাহ করা আমার সুন্নাত। যে ব্যক্তি আমার সুন্নাত মুতাবিক কাজ করিল না সে আমার নয়। তোমরা বিবাহ কর, কেননা আমি তোমাদের সংখ্যাধিক্য নিয়ে অন্যান্য উম্মতের সামনে গর্ব করিব। অতএব যাহার সামর্থ্য আছে সে যেন বিবাহ করে এবং যাহার সামর্থ্য নেই সে যেন সিয়াম রাখে। কারন সাওম তাহার জন্য জৈবিক উত্তেজনা প্রশমনকারী। {১৮৪৬}
{১৮৪৬} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। সহীহাহ ২৩৮৩। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান। উক্ত হাদিসের রাবি ঈসা বিন মায়মুন সম্পর্কে আবু বকর আল বায়হাকী বলেন, তিনি দুর্বল। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি মিথ্যার সাথে অভিযুক্ত। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। ঈমাম তিরমিজি বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল ছিলেন। ইবনি হাজার আল-আসকালনী ও ঈমাম যাহাবী তিনি দুর্বল। ঈমাম বুখারী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল, তিনি মুনকার। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৪৬৬৭, ২৩/৪৮ নং পৃষ্ঠা] উক্ত হাদিসটি শাহিদ এর ভিত্তিতে সহীহ।বিবাহ সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান হাদিস
১৮৪৭. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, দুজনের পারস্পরিক ভালবাসা স্থাপনের জন্য বিবাহের বিকল্প নেই। {১৮৪৭}
{১৮৪৭} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। সহীহাহ ৬২৪। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি মুহাম্মাদ বিন মুসলিম সম্পর্কে আবু আহমাদ বিন আলী আল-জুরজানী বলেন, তিনি সালিহ। আবু হাতিম বিন হিব্বান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি প্রত্যেক অবস্থায় দুর্বল। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে মুখস্ত হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৫৬০৪, ২৬/৪১২ নং পৃষ্ঠা] বিবাহ সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৯/২. অধ্যায়ঃ স্ত্রীসঙ্গ ত্যাগ নিষিদ্ধ।
১৮৪৮. সাদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] উসমান বিন মাযঊন [রাদি.] -এর স্ত্রী সংসর্গ ত্যাগ করার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। তিনি তাহাকে অনুমতি দিলে আমরা অবশ্যই নপুংসক হয়ে যেতাম। {১৮৪৮}
{১৮৪৮} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ৫০৭৪, মুসলিম ৪০০২, তিরমিজি ১০৮৩, নাসাঈ ৩২১২, আহমাদ ১৫১৭, ১৫২৮, ১৫৯১, দারেমী ২১৬৭, ২১৬৯, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি আবু মারওয়ান মুহাম্মাদ বিন উসমানী সম্পর্কেআবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি সিকাহ। আবু হাতিম বিন হিব্বান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন ও সিকাহ রাবীর বিপরীত হাদিস বর্ণনা করেন। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। ঈমাম বুখারী তাহাকে সত্যবাদী বলেছেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৫৪৫৪, ২৬/৮১ নং পৃষ্ঠা] বিবাহ সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৮৪৯. সামুরাহ [বিন জুনদুব] [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] স্ত্রী সংসর্গ ত্যাগ করিতে নিষেধ করিয়াছেন। যায়দ বিন আখযামের বর্ণনায় আরো আছেঃ কাতাদাহ [রাদি.] এ আয়াত তিলাওয়াত করেন [অনুবাদ] ঃ “আর আমি তোমার আগে রসূল পাঠিয়েছিলাম এবং তাহাদেরকে স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততি দিয়াছিলাম” [সূরা রাদঃ ৩৮]। {১৮৪৯}
{১৮৪৯} তিরমিজি ১০৮২, নাসাঈ ৩২১৪, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ্। উক্ত হাদিসের রাবি ১. বিশর বিন আদাম সম্পর্কে ঈমাম যাহাবী বলেন, তিনি সত্যবাদী। আবু হাতিম আর-রাযী ও ঈমাম দারাকুতনী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় নির্ভরযোগ্য নয়। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে তিনি যাচাই-বাচাই ছাড়া হাদিস গ্রহন করেন ও তা বর্ণনা করেন। ঈমাম দারাকুতনী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৬৭৭, ৪/৯০ নং পৃষ্ঠা] ২. মুআয বিন হিশাম সম্পর্কে আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, আমি তাহার একটি মজলিসে ১৭ টি হাদিস ব্যাতিত তাহার থেকে কোন হাদিস গ্রহন করিনি। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় কখনো কখনো সন্দেহ করেন। ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হুজ্জাহ নয়। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৬০৩৮, ২৮/১৩৯ নং পৃষ্ঠা] বিবাহ সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৯/৩. অধ্যায়ঃ স্বামীর উপর স্ত্রীর অধিকার।
১৮৫০. মুআবিয়াহ [বিন হায়দার] [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
এক ব্যক্তি নবী [সাঃআঃ]-কে জিজ্ঞেস করিল, স্বামীর উপর স্ত্রীর কি অধিকার রয়েছে? তিনি বলেন, সে আহার করিলে তাহাকেও [একই মানের] আহার করাবে, সে পরিধান করিলে তাহাকেও একই মানের পোষাক পরিধান করাবে [অথবা তোমাদের ভরণপোষণের সাথে তাহাদের ভরণপোষণের ব্যবস্থা করিবে এবং তোমাদের পোষাক-পরিচ্ছদের ব্যবস্থা করার সাথে তাহাদের পোষাক-পরিচ্ছদের ও ব্যবস্থা করিবে]। কখন ও তাহার মুখমণ্ডলে আঘাত করিবে না, অশ্লীল গালমন্দ করিবে না এবং নিজ বাড়ী ছাড়া অন্যত্র তাহাকে একাকী ত্যাগ করিবে না। {১৮৫০}
{১৮৫০} আবু দাউদ ২১৪২, ইরওয়াহ ২০৩, মিশকাত ৩২২৯, সহীহ আবু দাউদ ১৮৫৮-১৮৬১। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।বিবাহ সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৮৫১. আমর ইবনিল আহওয়াস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বিদায় হাজ্জে রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর সাথে উপস্থিত ছিলেন। রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] আল্লাহর প্রশংসা ও গুনগান করেন এবং ওয়াজ-নসীহত করেন। এরপর তিনি বলেন, তোমরা নারীদের সাথে উত্তম ব্যবহারের উপদেশ শুনে নাও। কেননা তাহারা তোমাদের নিকট আবদ্ধ আছে। এর অধিক তাহাদের উপর তোমাদের কর্তৃত্ব নাই যে, তাহারা যদি প্রকাশ্য অশ্লীলতায় লিপ্ত হয়, সত্যিই যদি তাহারা তাই করে, তবে তোমরা তাহাদেরকে পৃথক বিছানায় রাখবে এবং আহত হয় না এরূপ হালকা মারধর করিবে। অতঃপর তাহারা তোমাদের অনুগত হয়ে গেলে তাহাদের উপর আর বাড়াবাড়ি করো না। স্ত্রীদের উপর তোমাদের যেমন অধিকার রয়েছে, তোমাদের উপর ও তাহাদের অধিকার আছে। তোমাদের স্ত্রীদের উপর তোমাদের অধিকার এই যে, তাহারা তোমাদের শয্যা তোমাদের অপছন্দনীয় লোকেদের দ্বারা মাড়াবে না এবং তোমাদের অপছন্দনীয় লোকেদেরকে তোমাদের ঘরে প্রবেশানুমতি দিবে না। সাবধান! তোমাদের উপর তাহাদের অধিকার এই যে, তাহাদের ভরণপোষণ, পোশাক-পরিচ্ছদ ও সজ্জার ব্যাপারে তোমরা তাহাদের প্রতি শোভনীয় আচরণ করিবে। {১৮৫১}
{১৮৫১} তিরমিজি ১১৬৩, ৩০৮৭, ইরওয়াহ ১৯৯৭-২০২০। আদাবুয যিফাফ ১৫৬ তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান।বিবাহ সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান হাদিস
৯/৪. অধ্যায়ঃ স্ত্রীর উপর স্বামীর অধিকার।
১৮৫২. আয়িশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, আমি যদি কোন ব্যক্তিকে অপর কাউকে সিজদা করার নির্দেশ দিতাম, তাহলে অবশ্যই স্ত্রীকে নির্দেশ দিতাম তাহার স্বামীকে সিজদা করিতে। কোন পুরুষ তাহার স্ত্রীকে লাল পাহাড় থেকে কালো পাহাড়ে অথবা কালো পাহাড় থেকে লাল পাহাড়ে পাথর স্থানান্তরের নির্দেশ দিলে তা পালন করা তাহার জন্য অপরিহার্য হতো। {১৮৫২}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ দঈফ, কিন্তু প্রথম অংশ তাহাকে স্বামীর জন্য সাজদার নির্দেশের সম্ভাবনার কথা সহীহ।{১৮৫২} আহমাদ ২৩৯৫০, ইরওয়াহ ৭/৫৮, সহীহ আবু দাউদ ১৮৫৭, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ জইফ, কিন্তু প্রথম অংশ তাহাকে স্বামীর জন্য সাজদার নির্দেশের সম্ভাবনার কথা সহীহ্। উক্ত হাদিসের রাবি আলী বিন যায়দ বিন জুদআন সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন সাঈদ আল কাত্তান বলেন, তাহার হাদিস প্রত্যাখ্যানযোগ্য। আহমাদ বিন হাম্বল ও ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নন। ইয়াকুব বিন শায়বাহ বলেন, তিনি সিকাহ সালিহ। আল-আজালী বলেন, কোন সমস্যা নেই। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৪০৭০, ২০/৪৩৪ নং পৃষ্ঠা] হাদিসটির ২ টি শাহিদ হাদিস রয়েছে, প্রথমটি তলক বিন আলী হইতে তিরমিজি ও নাসাঈতে ও অপরটি উম্মু সালামাহ থেকে তিরমিজিতে।বিবাহ সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ অন্যান্য
১৮৫৩. আবদুল্লাহ বিন আবু আওফা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, মুআয [রাদি.] সিরিয়া থেকে ফিরে এসে নবী [সাঃআঃ]-কে সিজদা করেন। নবী [সাঃআঃ] বলেন, হে মুআয! এ কী? তিনি বলেন, আমি সিরিয়ায় গিয়ে দেখিতে পাই যে, তথাকার লোকেরা তাহাদের ধর্মীয় নেতা ও শাসকদেরকে সিজদা করে। তাই আমি মনে মনে আশা পোষণ করলাম যে, আমি আপনার সামনে তাই করিব। রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, তোমরা তা করো না। কেননা আমি যদি কোন ব্যক্তিকে আল্লাহ ছাড়া অপর কাউকে সিজদা করার নির্দেশ দিতাম, তাহলে স্ত্রীকে নির্দেশ দিতাম তাহার স্বামীকে সিজদা করিতে। সেই স্বত্তার শপথ, যাঁর হাতে মুহাম্মাদের প্রাণ! স্ত্রী তাহার স্বামীর প্রাপ্য অধিকার আদায় না করা পর্যন্ত তাহার প্রভুর প্রাপ্য অধিকার আদায় করিতে সক্ষম হইবে না। স্ত্রী শিবিকার মধ্যে থাকা অবস্থায় স্বামী তাহার সাথে জৈবিক চাহিদা পূরণ করিতে চাইলে স্ত্রীর তা প্রত্যাখ্যান করা অনুচিত। {১৮৫৩}
{১৮৫৩} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। ইরওয়াহ ৭/৫৫-৫৬, আদাবুয যিফাফ ১৭৮, সহিহাহ ১২০৩। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি কাসিম আশ-শায়বানী সম্পর্কে ইবনি হিব্বান বলেন, তিনি সিকাহ। শুবাহ ইবনিল হাজ্জাজ তাহাকে দুর্বল হিসেবে উল্লেখ করিয়াছেন। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ইদতিরাব করেন। ঈমাম নাসাঈ বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। ইবনি আদী বলেন, তাহার থেকে হাদিস গ্রহন করা যায়। ঈমাম যাহাবী বলেন, তাহার অবস্থা সম্পর্কে মতানৈক্য রয়েছে। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৪৮০৫, ২৩/৩৯৯ নং পৃষ্ঠা] বিবাহ সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান সহীহ
১৮৫৪. মুসাবির আল-হিমাইয়ারী [মাজহুল বা অপরিচিত] হইতে বর্ণীতঃ
তাহার মাতা [ইসমু মুবহাব বা নাম অজ্ঞাত] , বলেন, আমি উম্মু সালামাহকে [রাদি.] , বলিতে শুনিয়াছি, স্বামী খুশি থাকা অবস্থায় কোন স্ত্রীলোক মারা গেলে সে জান্নাতি। {১৮৫৪}
{১৮৫৪} তিরমিজি ১১৬১, আত-তালীকুর রাগীব ৩/৭৩, যাইফাহ ১৪২৬, জইফ আল-জামি ২২২৭। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি ১. মুহাম্মাদ বিন ফুদায়ল সম্পর্কে ইবনি মাঈন তাহাকে সিকাহ বলেছেন। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি সত্যবাদী। ঈমাম নাসাঈ বলেন, কোন সমস্যা নেই। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি শীয়া মতাবলম্বী। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৫৫৪৮, ২৬/২৯৩ নং পৃষ্ঠা] ২. মুসা বিন আল-হিমইয়ারী সম্পর্কে ইবনি হাজার আল-আসকালনী ও ঈমাম যাহাবী বলেন, তিনি মাজহুল বা অপরিচিত। ঈমাম যাহাবী অন্যত্র বলেন, তাহার সংবাদটি মুনকার। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৫৮৮৮, ২৭/৪২৫ নং পৃষ্ঠা] বিবাহ সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৯/৫. অধ্যায়ঃ সর্বোত্তম মহিলা।
১৮৫৫. আবদুল্লাহ বিন আমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, গোটা দুনিয়াই হলো সম্পদ। আর দুনিয়ার মধ্যে পুণ্যবতী স্ত্রীলোকের চেয়ে অধিক উত্তম কোন সম্পদ নাই। {১৮৫৫}
{১৮৫৫} মুসলিম ১৪৬৭, নাসাঈ ৩২৩২, আহমাদ ৬৫৩১, যঈফাহ ৫১৭৭, মুসলিম অনুরূপ। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি আব্দুর রহমান বিন যিয়াদ বিন আনউম সম্পর্কে আবু আহমাদ আল হাকিম বলেন, তিনি আহলে ইলমগনের নিকট নির্ভরযোগ্য নয়। আবুল কাসিম বিন বিশকাওাল বলেন, তিনি দুর্বল। আবু বকর আল বায়হাকী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তাহার থেকে হাদিস গ্রহন করা যায় তবে তা দলীলযোগ্য হইবে না। আহমাদ বিন শুআয়ব আন-নাসাঈ বলেন, তিনি দুর্বল। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি একজন সালিহ ব্যাক্তি তবে তাহার স্মৃতিশক্তি দুর্বল। ঈমাম যাহাবী তাহাকে দুর্বল বলেছেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৩৮১৭, ১৭/১০২ নং পৃষ্ঠা]বিবাহ সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৮৫৬. সাওবান [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, সোনা-রূপা [মূল্যবান সম্পদ] পুঞ্জীভূত করে রাখার সমালোচনায় কুরআনের আয়াত নাযিল হলে সাহাবায়ে কিরাম বলেন, তাহলে আমরা কোন সম্পদ ধরে রাখবো? উমার [রাদি.] বলেন, আমি তা জেনে তোমাদের বলে দিবো। অতঃপর তিনি তাহাঁর উটকে দ্রুত হাঁকিয়ে রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর সাক্ষাত পেয়ে গেলেন। আমিও তাহার পিছনে পিছনে গেলাম। তিনি বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমরা কোন সম্পদ সঞ্চয় করিব? নবী [সাঃআঃ] বলেন, তোমাদের প্রত্যেকেই যেন অর্জন করে কৃতজ্ঞ অন্তর, যিকিরকারী জিহবা এবং আখরাতের কাজে তাহাকে সহায়তাকারী ঈমানদার স্ত্রী। {১৮৫৬}
{১৮৫৬} তিরমিজি ৩০৯৪, রওযা ১৭৯, যঈফাহ ২১৭৬, তালীকুর রগীব ৩/৬৮। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি আবদুল্লাহ বিন আমর বিন মুররাহ সম্পর্কে আহমাদ বিন শুআয়ব আন-নাসাঈ বলেন, তিনি দুর্বল। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তাহার থেকে হাদিস বর্ণনায় কোন দোষ নেই, তিনি তাহার পিতা থেকে হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। ঈমাম যাহাবী তাহাকে সত্যবাদী বলেছেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৩৪৫৬, ১৫/৩৭০ নং পৃষ্ঠা] বিবাহ সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৮৫৭. আবু উমামাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নবী [সাঃআঃ] বললেনঃ ” কোন মুমিন ব্যক্তি আল্লাহভীতির পর উত্তম যা লাভ করে তা হলো পূণ্যময়ী স্ত্রী। স্বামী তাহাকে কোন নির্দেশ দিলে সে তা পালন করে; সে তাহার দিকে তাকালে [তাহার হাস্যোজ্জ্বল চেহারা ও প্রফুল্লতা] তাহাকে আনন্দিত করে এবং সে তাহাকে শপথ করে কিছু বললে সে তা পূর্ণ করে। আর স্বামীর অনুপস্হিতিতে সে তাহার সম্ভ্রম ও সম্পদের হেফাযত করে। ” {১৮৫৭}
{১৮৫৭} মিশকাত দ্বিতীয় তাহকীক ৩০৯৫, আত-তা-লীকুর রাগীব ৩/৬৭, যঈফাহ ৪৪২১। আর-রাদ্দু আলা বালীক ১০৬, জইফ আল জামি ৪৯৯৯ তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি আলী বিন ইয়াযীদ সম্পর্কে আবু আহমাদ আল হাকিম বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। আবুল ফাতহ আল আযদী ও আবু বকর আল-বুরকানী বলেন, তিনি প্রত্যাখ্যানযোগ্য। আবু বকর আল বায়হাকী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। ঈমাম তিরমিজি বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল ছিলেন। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি দুর্বল। ঈমাম দারাকুতনী বলেন, তিনি প্রত্যাখ্যানযোগ্য। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৪১৫৪, ২১/১৭৮ নং পৃষ্ঠা] তবে তাহার শাহিদ একটি হাদিস রয়েছে, যা আবদুল্লাহ বিন উমার [রাদি.] বর্ণনা করিয়াছেন। বিবাহ সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৯/৬. অধ্যায়ঃ ধর্মপরায়ণা নারীকে বিবাহ করা।
১৮৫৮. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ “চারটি বিষয় বিবেচনায় রেখে মহিলার বিবাহ করা হয়। তাহার সম্পদ, তাহার বংশ-মর্যাদা, তাহার রূপ-সৌন্দর্য্য এবং তাহার ধর্ম-পরায়ণতা। অতএব তুমি ধর্ম-পরায়ণা নারীর সন্ধান করো। অন্যথায় তোমার দুহাত ধূলি ধুসরিত হোক। ” {১৮৫৮}
{১৮৫৮} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ৫০৯০, মুসলিম ১৪৬৬, নাসাঈ ৩২৩০, আবু দাউদ ২০৪৭, আহমাদ ৯২৩৭ দারেমী ২১৭০, ইরওয়াহ ১৭৮৩, গায়াতুল মারাম ২২, সহীহ আবু দাউদ ১৮৮৬, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। বিবাহ সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৮৫৯. আব্দুল্লাহ্ বিন আম্র [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ “তোমরা শুধু রুপ-সৌন্দর্য্যে মুগ্ধ হয়ে মহিলাদের বিবাহ করো না। এ রুপ-সৌন্দর্য্য হয়তো তাহাদের ধ্বংসের কারণও হইতে পারে। হয়তো এই সম্পদই তাহাদের অপকর্মে লিপ্ত হওয়ার কারণ হইতে পারে। অতএব ধর্মপরায়ণতা বিবেচনায় তোমরা তাহাদের বিবাহ করো। চেপ্টা নাকবিশিষ্ট কুৎসিৎ দাসীও অধিক উত্তম যদি সে হয় ধর্ম-পরায়ণা। ” {১৮৫৯}
তাহক্বীক আলবানীঃ অত্যন্ত দঈফ। তবে ইবনি হিব্বান তাহার সহীহায় হাদিসটি ভিন্ন একটি সানাদে সহীহ হিসেবে উল্লেখ করিয়াছেন।{১৮৫৯} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। আত-তালীকুর রাগীব ৩/৭০, যঈফাহ ১০৬০। জইফ আল জামি ৬২১৬। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ অত্যন্ত জইফ। তবে ইবনি হিব্বান তাহার সহিহায় হাদিসটি ভিন্ন একটি সানাদে সহীহ হিসেবে উল্লেখ করিয়াছেন। উক্ত হাদিসের রাবি আব্দুর রহমান বিন যিয়াদ বিন আনউম সম্পর্কে আবু আহমাদ আল-হাকিম বলেন, তিনি আহলে ইলমগনের নিকট নির্ভরযোগ্য নয়। আবুল কাসিম বিন বিশাকাওয়াল বলেন, তিনি দুর্বল। আবু বকর আল বায়হাকী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তাহার থেকে হাদিস গ্রহন করা যায় তবে তা দলীলযোগ্য হইবে না। আহমাদ বিন শুআয়ব আন-নাসাঈ বলেন, তিনি দুর্বল। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি একজন সালিহ ব্যাক্তি তবে তাহার স্মৃতিশক্তি দুর্বল। ঈমাম যাহাবী তাহাকে দুর্বল বলেছেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৩৮১৭, ১৭/১০২ নং পৃষ্ঠা] বিবাহ সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ খুবই দুর্বল
৯/৭. অধ্যায়ঃ কুমারী মহিলা বিবাহ করা।
১৮৬০. জাবির বিন আবদুল্লাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর যুগে এক মহিলাকে বিবাহ করলাম। অতঃপর আমি রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর সাথে সাক্ষাত করিলে তিনি বলেনঃ “হে জাবির! তুমি কি বিবাহ করেছো?” আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি বলিলেন, “কুমারী না বিধবা?” আমি বললাম, বিধবা। তিনি বলেন, “কেন তুমি কুমারী মেয়ে বিবাহ করিলে না, তাহলে তাহার সাথে তুমি রসিকতা ও কৌতুক করিতে পারতে?” আমি বললাম, আমার কয়েকটি বোন আছে। তাই আমি আমার ও আমার বোনদের মধ্যে একটি কুমারী মেয়ের প্রবেশ করাকে সংকটজনক বোধ করলাম। তিনি বলেনঃ “তাতো ভালো কথা”। {১৮৬০}
{১৮৬০} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ২০৯৭, ২৩০৯, ২৯৬৭, ৪০৫২, ৫০৭৯, ৫০৮০, ৫২৪৫, ৫২৪৭, ৫৩৬৭, ৬৩৮৭, মুসলিম ৭১৫, তিরমিজি ১১০০, নাসাঈ ৩২১৯, ৩২২০, ৩২২৬, আবু দাউদ ২০৪৮,আহমাদ ১৩৮২২,১৩৮৯৪, ১৩৯৬৭, ১৪৪৪৭, ১৪৪৮০, ১৪৫৪৪, ১৪৭৭১, দারেমী ২২১৬, সহীহ আবু দাউদ ১৭৮, ইরওয়াহ ১৭৮৫, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।বিবাহ সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৮৬১. উতবাহ বিন উওয়ায়ম আল-আনসারী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ “তোমাদের কুমারী মেয়ে বিবাহ করা উচিত। কেননা তাহারা মিষ্টমুখী, নির্মল জরায়ুধারী এবং অল্পতেই তুষ্ট হয়। ” {১৮৬১}
{১৮৬১} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। সহীহাহ ৬২৩। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান। উক্ত হাদিসের রাবি ১. মুহাম্মাদ বিন তালহাহ আত তায়মী সম্পর্কে আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তাহার থেকে হাদিস গ্রহন করা যায় তবে তা দলীল হিসেবে গ্রহণযোগ্য হইবে না। আবু হাতিম বিন হিব্বান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় কখনো কখনো ভুল করেন। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৫৩১২, ২৫/৪১৪ নং পৃষ্ঠা] ২. আব্দুর রহমান বিন সালিম বিন উতবাহ বিন উওয়ায়ম বিন সাইদাহ আল-আনসারী সম্পর্কে আবু হাতিম আর-রাযী ও ঈমাম বুখারী বলেন, তাহার হাদিস বিশুদ্ধ নয়। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি মাজহুল বা অপরিচিত। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৩৮২৩, ১৭/১২৭ নং পৃষ্ঠা] উক্ত হাদিসটি সহীহ কিন্তু মুহাম্মাদ বিন তালহাহ আত তায়মী ও আব্দুর রহমান বিন সালিম এর কারণে সানাদটি দুর্বল। হাদিসটির ৪৪ টি শাহিদ হাদিস রয়েছে, তন্মধ্যে ৯ টি অধিক দুর্বল, ১৩ টি দুর্বল, ১০ টি হাসান, ১২ টি সহীহ হাদিস পাওয়া যায়। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলঃ মুসান্নাফ আব্দুর রাযযাক ১০৩৪১, ১০৩৪২, মুজামুল আওসাত ৪৫৫, ৭৬৭৭, শারহুস সুন্নাহ ২২৪৬ ইত্যাদি। বিবাহ সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান হাদিস
৯/৮. অধ্যায়ঃ স্বাধীন ও অধিক সন্তানদানে সক্ষম নারী বিবাহ করা।
১৮৬২. আনাস বিন মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
আমি রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছিঃ “যে ব্যক্তি পাক-পবিত্র অবস্হায় আল্লাহর সাথে সাক্ষাত করিতে চায় সে যেন স্বাধীন নারী বিবাহ করে। ” {১৮৬২}
{১৮৬২} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। যঈফাহ ১৪১৭। জইফ আল-জামি ৫৩৮৮। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি সাল্লাম বিন সাওওয়ার সম্পর্কে আবু আহমাদ বিন আদী আল জুরজানী বলেন, আমার নিকট তিনি মুনকার অর্থাৎ কুফুরী নয় এমন কওলী বা আমলী ফিসক এর সাথে জড়িত। আবু জাফার আল উকায়লী বলেন, তাহার হাদিসের অনুসরণ করা যাবে না। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। আহমাদ বিন শুআয়ব আন নাসাঈ তাহাকে সিকাহ বললেও ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি দুর্বল। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ২৬৫৬, ১২/২৮৬ নং পৃষ্ঠা] ২. কাসীর বিন সুলায়ম সম্পর্কে আবুল ফাতহ আল আযদী বলেন, তিনি মিথ্যার সাথে জড়িত। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় খুবই দুর্বল। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, তিনি দুর্বল। আহমাদ বিন শুআয়ব আন নাসাঈ বলেন, তিনি প্রত্যাখ্যানযোগ্য। ইবনি হাজার আল-আসকালনী ও ঈমাম দারাকুতনী বলেন, তিনি দুর্বল। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৪৯৪৪, ২৪/১২১ নং পৃষ্ঠা] বিবাহ সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১৮৬৩. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ “তোমরা বিবাহ করো, আমি তোমাদের সংখ্যাধিক্য নিয়ে গৌরব করিব। ” {১৮৬৩}
{১৮৬৩} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। সহীহ আবু দাউদ ১৭৮৯, আদবুয যিফাফ ১৬, ৫৩, ইরওয়াহ ১৭৮৪, যঈফাহ ২৯৬০। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি ১. ইয়াকুব বিন হুমায়দ বিন কাসিব সম্পর্কে আবু জাফার আল উকায়লী বলেন, তাহার হাদিসের অনুসরণ করা যাবে না। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৭০৮৬, ৩২/৩১৮ নং পৃষ্ঠা] ২. তালহাহ [বিন আমর বিন উসমান] সম্পর্কে আবু আহমাদ আল-হাকিম বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। আবু বাকার আল বাযযাহার বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী ও আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি দুর্বল। আহমাদ বিন হাম্বল ও আহমাদ বিন শুআয়ব আন-নাসাঈ বলেন, তিনি মিথ্যার সাথে অভিযুক্ত। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি মিথ্যার সাথে অভিযুক্ত ও দুর্বল। ঈমাম যাহাবী তাহাকে দুর্বল হিসেবে উল্লেখ করিয়াছেন। আলী ইবনিল জুনায়দ আর রাযী বলেন, তিনি প্রত্যাখ্যানযোগ্য। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ২৯৭৮, ১৩/৪২৭ নং পৃষ্ঠা] উক্ত হাদিসটি সহীহ কিন্তু ইয়াকুব বিন হুমায়দ ও তালহাহ বিন আমর এর কারণে সানাদটি দুর্বল। হাদিসটির ৯৯ টি শাহিদ হাদিস পাওয়া যায়। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলঃ আবু দাউদ ২০৫০, আহমাদ ১২২০২, ১৩১৫৭, মুসান্নাফ আব্দুর রাযযাক ১০৩৪৩, ১০৩৪৪, মুজামুল আওসাত ৫০৯৯,৫৭৪৬ ইত্যাদি। বিবাহ সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৯/৯. অধ্যায়ঃ বিবাহের পূর্বে পাত্রী দেখা।
১৮৬৪. মুহাম্মাদ বিন সালামাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি এক মহিলাকে বিবাহের পয়গাম পাঠালাম। আমি তাহাকে দেখার জন্যে চুপিসারে তাহার বাগানে যাতায়াত করতাম এবং সেখানে তাহাকে দেখে ফেললাম। তাহাকে বলা হলো, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর সাহাবী হয়ে তুমি এই কাজ করিলে? তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছিঃ “যখন আল্লাহ কারো অন্তরে কোন মহিলাকে বিবাহ করার প্রস্তাব দানের আগ্রহ পয়দা করেন, তখন তাহাকে দেখে নেয়াতে দোষের কিছু নেই। ” {১৮৬৪}
{১৮৬৪} আহমাদ ১৫৫৯৮, সহীহাহ ৯৮। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ্। উক্ত হাদিসের রাবি হাজ্জাজ বিন আরতা সম্পর্কে আবু আহমাদ আল-হাকিম বলেন, তিনি আহলে ইলমদের নিকট নির্ভরযোগ্য নয়। আবু বাকর আল বায়হাকী বলেন, তাহার হাদিস দ্বারা দলীল গ্রহনযোগ্য নয়। অন্যত্র তিনি তাহাকে দুর্বল বলেছেন। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় তাদলীস করেন। মুহাম্মাদ বিন সাদ তাহাকে দুর্বল বলেছেন। আহমাদ বিন শুআয়ব আন নাসাঈ বলেন, তিনি দুর্বল তাহার হাদিস দ্বারা দলীল গ্রহণযোগ্য নয়। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ১১১২, ৫/৪২০ নং পৃষ্ঠা] বিবাহ সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৮৬৫. আনাস বিন মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
মুগীরাহ বিন শুবাহ [রাদি.] এক মহিলাকে বিবাহ করার ইচ্ছা করিলে রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাকে বলেন, “তুমি গিয়ে তাহাকে দেখে নাও। কেননা তা তোমাদের মধ্যে ভালোবাসা সৃষ্টিতে সহায়ক হইবে। ” অতঃপর তিনি তাই করিলেন এবং তাহাকে বিবাহ করিলেন। পরে তাহাঁর নিকট তাহাদের দাম্পত্য সম্প্রীতির কথা উল্লেখ করা হয়। {১৮৬৫}
{১৮৬৫} তিরমিজি ১০৮৭, নাসাঈ ৩২৩৫, দারেমী ২১৭২, সহীহাহ ১/১৫১-১৫২। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।বিবাহ সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৮৬৬. মুগীরাহ বিন শুবাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি নবী [সাঃআঃ] -এর নিকট এসে এক মহিলাকে বিবাহ করার ব্যাপারে তাহাঁর সাথে আলাপ করলাম। তিনি বলেনঃ ” তুমি যাও এবং তাহাকে দেখে নাও। হয়তো তাতে উভয়ের মধ্যে ভালোবাসার সৃষ্টি হইবে। ” অতএব আমি এক আনসার মহিলার নিকটে এসে তাহার পিতা-মাতাহার নিকট তাহাকে বিবাহ করার প্রস্তাব দিলাম এবং সাথে সাথে নবী [সাঃআঃ] -এর হাদিসও তাহাদের অবহিত করলাম। কিন্তু মনে হলো তাহার পিতা-মাতা এটা অপছন্দ করিল। রাবী বলেন, মেয়েটি পর্দার আড়াল থেকে উক্ত হাদিস শুনে বললোঃ রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] আপনাকে পাত্রী দেখার আদেশ দিয়ে থাকলে আপনি দেখে নিন। অন্যথায় আমি আপনাকে শপথ দিচ্ছি [না দেখার জন্যে]। সে যেন ব্যাপারটিকে অভিনব মনে করিল। রাবী বলেন, আমি তাহাকে দেখে নিলাম এবং তাহাকে বিবাহ করলাম। পরে মুগীরাহ [রাদি.] তাহার সাথে সুসম্পর্কের কথা উল্লেখ করেন। {১৮৬৬}
{১৮৬৬} তিরমিজি ১০৮৭, নাসাঈ ৩২৩৫, দারেমী ২১৭২, মিশকাত ৩১০৭, সহীহাহ ৯৬। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। বিবাহ সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৯/১০. অধ্যায়ঃ কোন ব্যক্তি যেন তাহার ভাইয়ের বিবাহের প্রস্তাবের উপর প্রস্তাব না দেয়।
১৮৬৭. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ “কোন ব্যক্তি যেন তাহার ভাইয়ের বিবাহের প্রস্তাবের উপর প্রস্তাব না দেয়। ” {১৮৬৭}
{১৮৬৭} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ২১৪০, ২৭২৩, ৫১৪৪, মুসলিম ১৪১৩, তিরমিজি ১১৩৪, নাসাঈ ৩২৩৯, ৩২৪০, ৩২৪১, ৩২৪২, ৪৫০২, আবু দাউদ ২০৮০, আহমাদ ৭৬৪৩, ৮০৩৯, ২৭৪৪৭, ৮৮৭৬, ২৭৪৯৩, ৯২৩৪, ৯৫৮৫, ৯৬৩৫, ৯৯৭৩, ১০২২৭, ১০৩১১, ১০৪৬৩, মুয়াত্তা মালিক ১১১১, দারেমী ২১৭৫, সহীহাহ ১০৩০, সহীহ আবু দাউদ ১৮১৪, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। বিবাহ সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৮৬৮. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, “কোন ব্যক্তি যেন তাহার ভাইয়ের বিবাহের প্রস্তাবের উপর প্রস্তাব না দেয়। ” {১৮৬৮}
{১৮৬৮} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ৫১৪২, মুসলিম ১৪১২, তিরমিজি ১২৯২, নাসাঈ ৩২৩৮, ৩২৪৩, আবু দাউদ ২০৮১, আহমাদ ৪৭০৮, ৪৯৯০, ৪৯৯৮, ৬০২৪, ৬০৫২, ৬১০০, ৬২৪০, ৬৩৭৫, মুয়াত্তা মালিক ১১১২, দারেমী ২১৭৬, সহীহ আবু দাউদ ১৮১৫, সহিহাহ ১০৩০। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। বিবাহ সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৮৬৯. ফাতিমাহ বিনতু কায়স [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাকে বলেন, “তোমার ইদ্দত পূর্ণ হলে আমাকে জানাবে। ” ইদ্দত শেষ হলে আমি তাহাঁকে অবহিত করলাম। এরপর মুআবিয়া, আবুল জাহম বিন সুখায়র ও উসামাহ বিন যায়দ [রাদি.] তাহাকে বিবাহের প্রস্তাব দেন। রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] [তাহাকে] বলেনঃ ” মুআবিয়া গরীব লোক, তাহার কোন সম্পদ নেই। আর আবুল জাহম স্ত্রীদের অধিক মারধর করে। তবে উসামাহ। ফাতিমাহ [রাদি.] দুবার হাত দিয়ে এভাবে ইশারা করে বলেন, উসামাহ, উসামাহ। রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাকে বলেনঃ “আল্লাহ্ ও তাহাঁর রাসূলের আনুগত্যই তোমার জন্যে কল্যাণকর। “ফাতিমাহ [রাদি.] বলেন, আমি তাহাকে বিবাহ করলাম এবং তাহার নেক আমল আমার জন্যে ঈর্ষণীয় ছিলে। ” {১৮৬৯}
{১৮৬৯} মুসলিম ১৪৮০, তিরমিজি ১১৩৫, নাসাঈ ৩২২২, ৩২৩৭, ৩২৪৪, ৩২৪৫, ৩৫৪৫, ৩৫৫২, আবু দাউদ ২২৮৪, ২২৯০, আহমাদ ২৬৫৬০, ২৬৭৭৫, ২৬৭৮৭, ২৬৭৯১, ২৬৭৯৭, মুয়াত্তা মালিক ১২৩৪, দারেমী ২১৭৭, বায়হাকী ৭/১১১, মুসতাদরাক ৪/১৭৩। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। বিবাহ সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৯/১১. অধ্যায়ঃ কুমারী ও বিধবা মেয়ের মত গ্রহণ প্রসঙ্গে।
১৮৭০. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ “বিধবা নারী নিজের ব্যাপারে তাহার অভিভাবক অপেক্ষা অধিক কর্তৃত্বশীল এবং কুমারী মেয়ের বিবাহের ব্যাপারে তাহার সম্মতি গ্রহণ করিতে হইবে। ” বলা হলো, ইয়া রাসুলুল্লাহ! কুমারী তো বিবাহের ব্যাপারে কথা বলিতে লজ্জাবোধ করে। তিনি বলেন, “তাহার নীরবতাই তাহার সম্মতি। ” {১৮৭০}
{১৮৭০} মুসলিম ১৪২১, তিরমিজি ১১০৮, নাসাঈ ৩২৬০, ৩২৬১, ৩২৬২, ৩২৬৩, ৩২৬৪, আবু দাউদ ২০৯৮, ২১০০, আহমাদ ১৮৯১, ২১৬৪, ২৩৬১, ২৪৭৭, ৩০৭৭, ৩২১২, ৩৩৩৩, ৩৪১১, মুয়াত্তা মালিক ১১১৪, দারেমী ২১৮৮, ২১৮৯, ২১৯০, ইরওয়াহ ১৮৩৩, সহীহাহ ১২১৬, সহীহ আবু দাউদ ১৮২৮-১৮৩০, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি ইসমাইল বিন মুসা সম্পর্কে আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে শীয়া মতাবলম্বী। ইবনি হিব্বান বলেন, তিনি সিকাহ তবে হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন ও তাহার রাফিদী মতাবলম্বী হওয়ার ব্যাপারে অভিযোগ রয়েছে। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৪৯১, ৩/২১০ নং পৃষ্ঠা] বিবাহ সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৮৭১. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নবী [সাঃআঃ] বলেনঃ “বিধবাকে তাহার নির্দেশ গ্রহণ ব্যতীত বিবাহ দেয়া যাবে না এবং কুমারী মেয়েকেও তাহার সম্মতি গ্রহণ ব্যতীত বিবাহ দেয়া যাবে না। নীরবতাই তাহার সম্মতির লক্ষণ। ” {১৮৭১}
{১৮৭১} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ৫১৩৬, ৬৯৬৮, ৬৯৭০, মুসলিম ১৪১৯, তিরমিজি ১১০৭, নাসাঈ ৩২৬৫, ৩২৬৭, ৩২৭০, আবু দাউদ ২০৯২, ২০৯৩, আহমাদ ৭৩৫৬, ৭৪৬৫, ৭৭০১, ৯২০৭, ৯৩২২, ২৭২৭২, দারেমী ২১৮৬, ইরওয়াহ ১৮২৮, সহীহ আবু দাউদ ১৯২৪৫, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। বিবাহ সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৮৭২. আদী বিন উমায়রাহ আল কিন্দী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ ” বিধবা মহিলা তাহার ব্যাপারে সুস্পষ্ট মত প্রকাশ করিবে। আর কুমারী মেয়ের নীরবতা তাহার সম্মতির লক্ষণ। ” {১৮৭২}
{১৮৭২} আহমাদ ১৭২৬৯, বায়হাকী ৭/১১০, ইরওয়াহ ১৮৩৬। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।বিবাহ সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৯/১২. অধ্যায়ঃ কেউ নিজের মেয়েকে তাহার অমতে বিবাহ দিলে।
১৮৭৩. আবদুর রহমান বিন ইয়াযীদ ও মুজাম্মি বিন ইয়াযীদ আল-আনসারী [রঃ] হইতে বর্ণীতঃ
সংবাদ দেন যে, খিযাম নামক এক ব্যক্তি তাহার মেয়েকে বিবাহ দেন। সে তাহার পিতাহার এই বিবাহ অপছন্দ করে। মেয়েটি রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর নিকট উপস্হিত হয়ে বিষয়টি তাহাঁকে অবহিত করে। রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহার পিতাহার দেয়া এই বিবাহ রদ করে দেন। পরে সেই মেয়ে আবু লুবাবা বিন আব্দুল মুনযির [রাদি.]-কে বিবাহ করে। ইয়াহহিয়া [রঃ] বলেন, সে ছিল সায়্যিবা [বিধবা]। {১৮৭৩}
{১৮৭৩} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ৫১৩৯, ৬৯৪৫, ৬৯৬৯, নাসাঈ ৩২৬৮, আবু দাউদ ২১০১, আহমাদ ২৬২৪৬, ২৬২৫১, মুয়াত্তা মালিক ১১৩৫, দারেমী ২১৯১ ২১৯২, বায়হাকী ৭/২০০, ইরওয়াহ ১৩৮০, রওদুন নাদীর ৪২৩। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। বিবাহ সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৮৭৪. বুরায়দাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, এক যুবতী নবী [সাঃআঃ] -এর নিকট উপস্হিত হয়ে বলল, আমার পিতা তাহার ভ্রাতুষ্পুত্রকে তাহার দুর্দশাগ্রস্ত অবস্হা থেকে উদ্ধারের জন্য আমাকে তাহার সাথে বিবাহ দিয়েছেন। রাবী বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বিষয়টি মেয়েটির এখতিয়ারে ছেড়ে দেন। মেয়েটি বলল, আমার পিতা যা করিয়াছেন তা আমি বহাল রাখলাম। আমার উদ্দেশ্য ছিলো, মেয়েরা জেনে নিক যে, বিবাহের ব্যাপারে পিতাহাদের কোন এখতিয়ার নেই। {১৮৭৪}
তাহক্বীক আলবানীঃ দঈফ শায।{১৮৭৪} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। বায়হাকী ৭/২০০। গায়াতুল মারাম ২১৭। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ জইফ শায। বিবাহ সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল শায
১৮৭৫. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
একটি কুমারী মেয়ে নবী [সাঃআঃ] -এর নিকট এসে তাহাঁকে জানায় যে, তাহার পিতা তাহার অমতে তাহাকে বিবাহ দিয়েছে। নবী [সাঃআঃ] তাহাকে [বিবাহ রদের] এখতিয়ার দিলেন। {১৮৭৫}
৩/১৮৭৫ [১]. <মুহাম্মাদ ইবনিস সাব্বাহ><মুআম্মার বিন সুলায়মান আর-রাক্কী><যায়দ বিন হিব্বান [তিনি সত্যবাদী কিন্তু হাদিস বর্ণনায় অধিক ভুল করেন] ><আয়্যূব সাখতিয়ানী><ইকরিমাহ><ইবনি আব্বাস [রাদি.] > {১৮৭৫}
তাহক্বীক আলবানীঃ সহীহ।{১৮৭৫} আবু দাউদ ২০৯৬, আহমাদ ২৪৬৫, বায়হাকী ৭/২০০। রাওদুন নাদীর ৪২২। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ্। উক্ত হাদিসের রাবি যায়দ বিন হিব্বান সম্পর্কে আবু আহমাদ বিন আদী আল-জুরজানী বলেন, আমি তাহার বর্ণনায় কোন সমস্যা দেখি না। আবু হাতিম বিন হিব্বান বলেন, যারা হাদিস বর্ণনায় অধিক ভুল করেন তিনি তাহাদের একজন এমনকি তিনি এককভাবে হাদিস বর্ণনা করিলে তা দলীল হিসেবে গ্রহনযোগ্যতা থেকে বের হয়ে যায়। আবু নুআয়ম আল-ফাদল তাহার হাদিস বর্জন করিয়াছেন। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, আমরা সকলে তাহার হাদিস বর্জন করেছি। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় অধিক ভুল করেন। ঈমাম দারাকুতনী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ২০৯৬, ১০/৪৭ নং পৃষ্ঠা] বিবাহ সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৯/১৩. অধ্যায়ঃ নাবালেগ মেয়েকে তাহার পিতা বিবাহ দিলে।
১৮৭৬. আয়িশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমার ছয় বছর বয়সে আমাকে বিবাহ করেন। অতঃপর আমরা [হিজরত করে] মাদীনায় চলে এলাম এবং হারিস ইবনিল খাযরাজ গোত্রে আশ্রয় নিলাম। এখানে আমি জ্বরে আক্রান্ত হলে আমার মাথার চুল উঠে যায় এবং অল্প কিছু চুল অবশিষ্ট থাকে। আমি আমার বান্ধবীদের সাথে দোলনায় দোল খাচ্ছিলাম, তখন আমার মা উম্মু রুমান এসে আমাকে উচ্চৈঃস্বরে ডাকলেন। আমি তাহার নিকট আসলাম, কিন্তু আমি তাহার উদ্দেশ্য বুঝতে পারলাম না। তিনি আমার হাত ধরে আমাকে ঘরের দরজায় দাঁড় করিয়ে দেন। আমি তখন সজোরে নিঃশ্বাস নিচ্ছিলাম। তিনি পানি নিয়ে তা দ্বারা আমার মুখ ও মাথা মুছে দিলেন, অতঃপর আমাকে ঘরের ভিতরে নিয়ে যান, তখন ঘরের মধ্যে কিছু সংখ্যক আনসারী মহিলা ছিলেন। তাহারা বলিলেন, কল্যাণ ও বরকত হোক, ভাগ্য প্রসন্ন হোক। তিনি আমাকে তাহাদের নিকট সোপর্দ করিলেন। তাহারা আমাকে সুসজ্জিত করেন। দুপুর বেলা হঠাৎ রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর উপস্হিতি আমাকে সচকিত করে। আমার মা আমাকে তাহাঁর নিকট অর্পণ করেন। তখন আমার বয়স ছিল নয় বছর। ” {১৮৭৬}
{১৮৭৬} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ৩৮৯৪, ৩৮৯৬, ৫১৩৩, ৫১৩৪, ৫১৫৬, ৫১৫৮, ৫১৬০, মুসলিম ৪০২২, নাসাঈ ৩২৫৫, ৩২৫৬, ৩২৫৭, ৩২৫৮, ৩৩৭৮, ৩৩৭৯, আবু দাউদ ২১২১, ৪৯৩৩, ৪৯৩৫, আহমাদ ২৫২৪১, ২৫৮৬৫, দারেমী ২২৬১, ইরওয়াহ ১৮৩১, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। বিবাহ সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৮৭৭. আবদুল্লাহ [বিন মাসউদ] [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] আয়িশাহ [রাদি.] কে তাহার সাত বছর বয়সে বিবাহ করেন এবং তাহার সাথে তাহার নয় বছর বয়সে বাসর যাপন করেন। রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর ইন্তিকালের সময় তাহার বয়স ছিল আঠার বছর।”
{১৮৭৭} নাসাঈ ৩২৫৫, ইরওয়াহ ৬/২৩০, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। বিবাহ সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৯/১৪. অধ্যায়ঃ পিতা ব্যতীত অপর কেউ নাবালেগ মেয়েকে বিবাহ দিলে।
১৮৭৮. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
উনসান বিন মাযউন [রাদি.] ইন্তিকালের সময় তাহার একটি কন্যা সন্তান রেখে যান। ইবনি উমার [রাদি.] বলেন, আমার মামা এবং ঐ মেয়ের চাচা কুদামাহ মেয়েটির পিতাহার মৃত্যুর পর মেয়েটির সাথে পরামর্শ না করেই তাহাকে আমার সাথে বিবাহ দেন। সে তাহার দেয়া এ বিবাহ অপছন্দ করে এবং মুগীরাহ বিন শুবাহর সাথে বিবাহিত হইতে পছন্দ করে। অতএব কুদামাহ মুগীরার সাথে তাহার বিবাহ দেন।” {১৮৭৮}
{১৮৭৮} আহমাদ ৬১০১, ইরওয়াহ ১৮৩৫। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান। বিবাহ সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান হাদিস
৯/১৫. অধ্যায়ঃ অভিভাবক ছাড়া বিবাহ হয় না।
১৮৭৯. আয়েশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে নারীকে তাহার অভিভাবক বিবাহ দেয়নি তাহার বিবাহ বাতিল, তাহার বিবাহ বাতিল, তাহার বিবাহ বাতিল। স্বামী তাহার সাথে সহবাস করিলে তাতে সে মাহরের অধিকারী হইবে। তাহাদের মধ্যে মতবিরোধ হলে সে ক্ষেত্রে যাহার অভিভাবক নাই, শাসক তাহার অভিভাবক। {১৮৭৯}
{১৮৭৯} তিরমিজি ১১০২, আবু দাউদ ২০৮৩, আহমাদ ২৩৮৫১, ২৪৭৯৮, দারেমী ২১৮৪, ইরওয়াহ ১৮৪০, মিশকাত ১৩৩১, সহীহ আবু দাউদ ১৮১৭। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি সুলায়মান বিন মুসা সম্পর্কে আবু আহমাদ বিন আদী আল-জুরজানী বলেন, তিনি আমার নিকট সত্যবাদী। আবু হাতিম বিন হিব্বান বলেন, তিনি একজন ফকিহ। আহমাদ বিন শুআয়ব আন-নাসাঈ বলেন, তিনি ফকিহদের একজন তবে হাদিস বর্ণনায় নির্ভরযোগ্য নয়। আল-মিযযী বলেন, তিনি তাহার যুগে শামের একজন ফকিহ ছিলেন। আতা বিন আবু রাবাহ বলেন, তিনি শামের যুবকদের নেতা ছিলেন। মুহাম্মাদ বিন সাদ বলেন, তিনি সিকাহ। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ২৫৭১, ১২/৯২ নং পৃষ্ঠা] বিবাহ সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৮৮০. আয়িশাহ [রাদি.] ও ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তাহারা বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ অভিভাবক ছাড়া বিবাহ হয় না। আয়িশাহ [রাদি.] বর্ণিত হাদীসে আরও আছেঃ যাহার অভিভাবক নাই, শাসক তাহার অভিভাবক”। {১৮৮০}
{১৮৮০} তিরমিজি ১১০২, ১১০৩, আবু দাউদ ২০৮৩, আহমাদ ২২৬০, ২৩৬৮৫, ২৩৮৫১, ২৪৭৯৮, ২৫৭০৩, দারেমী ২১৮৪, ইরওয়াহ ৬/২৩৮, ২৪৭। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি হাজ্জাজ বিন আরতা সম্পর্কে আবু আহমাদ আল-হাকিম বলেন, তিনি আহলে ইলমের নিকট নির্ভরযোগ্য নয়। আবু বকর আল বায়হাকী বলেন, তাহার হাদিস দ্বারা দলীল গ্রহনযোগ্য নয়, অন্যত্র তিনি তাহাকে দুর্বল বলেছেন। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় তাদলীস করেন। মুহাম্মাদ বিন সাদ তাহাকে দুর্বল বলেছেন। আহমাদ বিন শুআয়ব আন-নাসাঈ বলেন, তিনি দুর্বল তাহার হাদিস দ্বারা দলীল গ্রহনযোগ্য নয়। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ১১১২, ৫/৪২০ নং পৃষ্ঠা বিবাহ সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৮৮১. আবু মূসা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ অভিভাবক ছাড়া বিবাহ হয় না। {১৮৮১}
{১৮৮১} তিরমিজি ১১০১, আবু দাউদ ২০৮৫, আহমাদ ১৯০২৪, ১৯২১১, ১৯২৪৭, দারেমী ২১৮২, ২১৮৩, ইরওয়াহ ১৮৩৯, মিশকাত ১৩৩০, আর-রাদ্দু আলা বালীক ১১০, সহীহ আবু দাউদ ১৮১৮। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। বিবাহ সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৮৮২. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কোন মহিলা অপর কোন মহিলাকে বিবাহ দিবে না এবং কোন মহিলা নিজেকেও বিবাহ দিবে না। কেননা যে নারী স্বউদ্যোগে বিবাহ করে সে যেনাকারিণী। {১৮৮২}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ যিনার বাক্য ব্যতীত সহীহ।{১৮৮২} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। ইরওয়াহ ১৮৪১। জইফ আল জামি ৬২১৪, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ যেনার বাক্য ব্যতীত সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি ১. জামীল ইবনিল হাসান আল-আতাকী সম্পর্কে আবু আহমাদ বিন আদী আল জুরজানী বলেন, আমি আশা করি তাহার মাঝে কোন সমস্যা নেই। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, আমরা তাহার সাক্ষাৎ পেয়েছিলাম কিন্তু তাহার থেকে কোন হাদিস গ্রহন করিনি। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। মাসলামাহ ইবনি কাসিম বলেন, তিনি সিকাহ। তাহরীরু তাকরীবুত তাহযীব এর লেখক বলেন, তিনি দুর্বল। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৯৬৮, ৫/১২৮ নং পৃষ্ঠা] ২. মুহাম্মাদ বিন মারওয়ান আল-উকায়লী সম্পর্কে আবু জাফার আল উকায়লী বলেন, তাহার হাদিসের অনুসরণ করা যাবে না। আবু হাতিম বিন হিব্বান তাহার সিকাহ গ্রন্থে তাহার নাম উল্লেখ করিয়াছেন। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, তিনি সত্যবাদী। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় সন্দেহ করেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৫৫৯৫, ২৬/৩৮৭ নং পৃষ্ঠা] বিবাহ সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৯/১৬ অধ্যায়ঃ শিগার বিবাহ নিষিদ্ধ
১৮৮৩. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] শিগার বিবাহ নিষিদ্ধ করিয়াছেন। রাবী বলেন, শিগার বিবাহ এই যে, এক ব্যক্তি অপর ব্যক্তিকে প্রস্তাব দিলো, তুমি আমার সাথে তোমার মেয়েকে অথবা বোনকে বিবাহ দাও এবং তাহার পরিবর্তে আমি আমার মেয়েকে অথবা বোনকে তোমার সাথে বিবাহ দিবো, আর এতে কোন মাহর থাকে না। {১৮৮৩}
{১৮৮৩} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ৫১১২, ৬৯২০, মুসলিম ১৪১৫, তিরমিজি ১১২৪, নাসাঈ ৩৩৩৪, ৩৩৩৭, ৩৩৩৮, আবু দাউদ ২০৭৪, আহমাদ ৪৫১২, ৪৬৭৮, ৫২৬৭, মুয়াত্তা মালিক ১১৩৪, দারেমী ২১৮০, ইরওয়াহ ১৮৯৫, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। বিবাহ সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৮৮৪. আবু হুরাইরাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] শিগার বিবাহ নিষিদ্ধ করিয়াছেন। {১৮৮৪}
{১৮৮৪} মুসলিম ১৪১৬, নাসাঈ ৩৩৩৮, আহমাদ ৭৭৮৪, ৯৩৭৫, ১০০৬২, ইরওয়াহ ৬/৩০, রওদুন নাদীর ১১৬৫। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। বিবাহ সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৮৮৫. আনাস বিন মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ ইসলামে শিগার বিবাহের কোন সুযোগ নাই। {১৮৮৫}
{১৮৮৫} আহমাদ ১২২৪৭, ১২২৭৫, ১২৬২০, বায়হাকী ৩/২০৯। ইরওয়া ৬/৩৬০। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।বিবাহ সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৯/১৭. অধ্যায়ঃ মহিলাদের মাহর [মোহরানা]
১৮৮৬. আবু সালামাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি আয়েশা [রাদি.]-কে জিজ্ঞেস করলাম, নবী [সাঃআঃ]-এর স্ত্রীদের মাহর কতো ছিলো? তিনি বলেন, তাহার স্ত্রীদের মাহরের পরিমাণ ছিলো বার উকিয়া ও এক নাশ। তুমি কি জানো, নাশ কী? তাহলো অর্ধ উকিয়া। আর তাহলো পাঁচশত দিরহামের সমান। {১৮৮৬}
{১৮৮৬} মুসলিম ১৪২৬, নাসাঈ ৩৩৪৭, আবু দাউদ ২১০৫, দারেমী ২১৯৯, বায়হাকী ৭/২৮৯, মুসতাদরাক ৪/৫৩৭, সহীহ আবু দাউদ, ১৮৩৩, সহিহাহ ১৮৩৩, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি আবদুল আযীয বিন মুহাম্মাদ সম্পর্কে মুহাম্মাদ বিন সাদ বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ করেন। ইবনি হিব্বান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। মালিক বিন আনাস তাহাকে সিকাহ বলেছেন। আহমাদ বিন শুআয়ব আন নাসাঈ বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে নিজ কিতাব ছাড়া অন্যত্র থেকে হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৩৪৭০, ১৮/১৮৭ নং পৃষ্ঠা] বিবাহ সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৮৮৭. উমার ইবনিল খাত্তাব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেছেন, মহিলাদের মাহরের ব্যাপারে তোমরা বাড়াবাড়ি করো না। কেননা তা যদি পার্থিব জীবনে সম্মান অথবা আল্লাহর কাছে তাকওয়ার প্রতীক হতো, তাহলে তোমাদের মধ্যে মুহাম্মাদ রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] এ ব্যাপারে অধিক যোগ্য ও অগ্রগণ্য ছিলেন। তিনি তাহার স্ত্রী ও কন্যাদের মাহর বারো উকিয়ার বেশি ধার্য করেননি। কখনও অধিক মাহর স্বামীর উপর বোঝা হয়ে দাড়ায়। ফলে স্ত্রীর প্রতি স্বামীর মনে শক্রতা সৃষ্টি হয়, এমনকি সে বলিতে থাকে, আমি তোমার জন্য পানির মশক বহনে বাধ্য হয়েছি অথবা তোমার জন্য ঘর্মাক্ত হয়ে পড়েছি। [রাবী বলেন], আমি একজন বেদুইন অতএব আমি “আলাকাল কিরবা” বা “আলাকাল কিরবা”-এর অর্থ কি তা জানি না।”{১৮৮৭}
{১৮৮৭} তিরমিজি ১১১৪, নাসাঈ ৩৩৪৯, আবু দাউদ ২১০৬, ২৮৭, দারেমী ২২০০, মিশকাত ৩২০৪, সহীহ আবু দাউদ ১৮৩৪, ইরওয়াহ ১৯২৭। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান সহীহ। বিবাহ সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান সহীহ
১৮৮৮. আমির বিন রাবীআহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
ফাযারাহ গোত্রের এক ব্যাক্তি এক জোড়া পাদুকার বিনিময়ে বিবাহ করে। রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহার বিবাহ অনুমোদন করেন। {১৮৮৮}
{১৮৮৮} তিরমিজি ১১১৩, আহমাদ ১৫২৪৯, ১৫২৬৪, ইরওয়াহ ১৯২৬। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি আসিম বিন উবায়দুল্লাহ সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তাহার হাদিস দলীলযোগ্য নয় এবং তিনি দুর্বল। ঈমাম বুখারী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। মুহাম্মাদ বিন সাদ বলেন, তাহার দ্বারা দলীল সাব্যস্ত করা যাবে না। আবু বকর আল বায়হাকী বলেন, তিনি দুর্বল। আবু বকর আল বাযযাহার বলেন, তিনি যাচাই-বাচাই ছাড়া হাদিস গ্রহন করেন ও তা বর্ণনা করেন। আবু হাতিম বিন হিব্বান বলেন, তাহার স্মৃতিশক্তি দুর্বল। তিনি হাদিস বর্ণনায় অধিক সন্দেহ করেন। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, তাহার হাদিস গ্রহন করাও যাবে না দলীল হিসেবেও গ্রহন করা যাবে না। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি দুর্বল। ইবরাহীম বিন ইয়াকুব আল-জাওযুজানী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৩০১৪, ১৩/৫০০ নং পৃষ্ঠা] বিবাহ সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১৮৮৯. সাহল বিন সাদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, এক মহিলা রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট উপস্থিত হলে তিনি বলেনঃ কে তাহাকে বিবাহ করিবে? এক ব্যক্তি বলল, আমি। নবী [সাঃআঃ] বলেন, তাহাকে একটি লোহার আংটি হলেও তা [মাহরস্বরূপ] দাও। সে বলল, আমার কাছে কিছুই নাই। তিনি বলেনঃ তোমার কাছে কুরআনের যে আছে, তাহার বিনিময়ে আমি তাহাকে তোমার সাথে বিবাহ দিলাম।” {১৮৮৯}
{১৮৮৯} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ২৩১১, ৫০২৯, ৫০৩০, ৫০৮৭, ৫১২১, ৫১২৬, ৫১৩২, ৫১৩৫, ৫১৪১, ৫১৪৯, ৫৮৭১, মুসলিম ১৪১৫, নাসাঈ ৩২০০, ৩২৮০, ৩৩৫৯, আবু দাউদ ২১১১, আহমাদ ২২২৯২, ২২৩২০, ২২৩৪৩, মুয়াত্তা মালিক ১১১৮, দারেমী ২২০১, ইরওয়াহ ১৮২৩, ১৯২৫, সহীহ আবু দাউদ ১৯৩৮, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।বিবাহ সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৮৯০. আবু সাঈদ আল-খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নবী [সাঃআঃ] আয়িশাহ [রাদি.]-কে একটি ঘরের আসবাবপত্রের বিনিময়ে বিবাহ করেন, যাহার মূল্য ছিল পঞ্চাশ দিরহাম। {১৮৯০}
{১৮৯০} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। বায়হাকী ৭/২৮৯। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি ১. আবু হাশিম আর-রিফঈ মুহাম্মাদ বিন ইয়াযীদ সম্পর্কে আবু আহমাদ আল-হাকিম বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। আবু বকর আল বুরকানী বলেন, তিনি সিকাহ। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি দুর্বল, তাহার ব্যাপারে সমালোচনা রয়েছে। আবু হাতিম বিন হিব্বান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন ও সিকাহ রাবীর বিপরীত হাদিস বর্ণনা করেন। আহমাদ বিন শুআয়ব আন-নাসাঈ বলেন, তিনি দুর্বল। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। তাহরীরু তাকরীবুত তাহযীব এর লেখক বলেন, তিনি দুর্বল। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৫৭২, ২৭/২৪ নং পৃষ্ঠা] ২. ইয়াহইয়া বিন ইয়ামান সম্পর্কে আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ইদতিরাব করেন। আবু হাতিম বিন হিব্বান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় কখনো কখনো ভুল করেন। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি হুজ্জাহ ছিলেন না, তিনি দুর্বল। আহমাদ বিন শুআয়ব আন-নাসাঈ বলেন, তাহার হাদিস দ্বারা দলীল গ্রহণযোগ্য হইবে না। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় অধিক ভুল করেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৬৯৫৩, ৩২৫৫ নং পৃষ্ঠা] ৩. আল-আগাররু আর-রাক্কাশী সম্পর্কে হাদিস বিশারদগণ বলেন, তিনি মাজহুল বা অপরিচিত। ৪. আতিইয়্যাহ আল-আওফী সম্পর্কে আবু বকর আল-বায়হাকী বলেন, তিনি দুর্বল, তাহার হাদিস দলীলযোগ্য নয়। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি দুর্বল। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি যাচাই-বাচাই ছাড়া হাদিস গ্রহন করেন ও তা বর্ণনা করেন। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। আহমাদ বিন শুআয়ব আন-নাসাঈ বলেন, তিনি দুর্বল। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় অধিক ভুল করেন। ঈমাম যাহাবী ও ঈমাম দারাকুতনী বলেন, তিনি দুর্বল। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৩৯৫৬, ২০/১৪৫ নং পৃষ্ঠা] বিবাহ সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৯/১৮. অধ্যায়ঃ কোন ব্যক্তি বিবাহ করার পর মাহর ধার্য করার পূর্বে মারা গেলে।
১৮৯১. আবদুল্লাহ বিন মাসউদ [রাদি.] ও মাকিল বিন সিনান [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
[আবদুল্লাহ্] তাহাকে এক ব্যক্তি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলো যে, সে এক মহিলাকে বিবাহ করার পর তাহার সাথে সহবাস ও মাহর ধার্য কার পূর্বে মারা গেছে। রাবী বলেন, আবদুল্লাহ্ [রাদি.] বলিলেন, সেই মহিলা মাহর পাবে, মীরাসও পাবে এবং তাহাকে ইদ্দাতও পালন করিতে হইবে। মাকিল বিন সিনান আল-আশজাঈ [রাদি.] বলিলেন, আমি রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]- সম্পর্কে সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, তিনি বিরওয়াবিনতু ওয়াশিকের ক্ষেত্রেও এরূপ ফয়সালা দিয়েছেন। {১৮৯১}
{১৮৯১} নাসাঈ ৩৩৫৪, ৩৩৫৫, ৩৩৫৬, ৩৩৫৮, ৩৫২৪, আবু দাউদ ২১১৪, দারেমী ২২৪৬, ইরওয়াহ ১৯৩৯, সহীহ, আবু দাউদ ১৮৩৯। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি ফিরাস সম্পর্কে আহমাদ বিন হাম্বল ও আহমাদ বিন শুআয়ব আন-নাসাঈ বলেন, তিনি সিকাহ। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় কখনো কখনো সন্দেহ করেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৪৭১২, ২৩/১৫২ নং পৃষ্ঠা] বিবাহ সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৯/১৯. অধ্যায়ঃ বিবাহের খুতবাহ [ভাষণ]
১৮৯২. আবদুল্লাহ্ বিন মাসউদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে কল্যাণসমূহের উৎস, তাহার সমষ্টি এবং তাহার সমাপ্তি দান করা হয়েছে। তিনি আমাদের সলাতের খুত্বা এবং প্রয়োজনের [বিবাহের] খুত্বা শিক্ষা দিয়েছেন। সলাতের খুতবা [তাশাহহুদ] হলোঃ সমস্ত সম্মান, ইবাদাত ও পবিত্রতা আল্লাহর জন্য। হে নাবী! আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক, আল্লাহর রাহমাত ও বারাকাতও। আমাদের উপর এবং আল্লাহর নেক বান্দাহদের উপরও শান্তি বর্ষিত হোক। আমি সাক্ষ্য দেই যে, আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই। আমি আরো সাক্ষ্য দেই যে, মুহাম্মাদ আল্লাহর বান্দাহ ও তাহার রসূল। আর বিবাহের খুত্বা হলোঃ
“সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য। আমরা তাহাঁর প্রশংসা করি, তাহাঁর সাহায্য প্রার্থনা করি, তাহাঁর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করি। আমরা আমাদের প্রবৃত্তির অনিষ্ট ও আমাদের কাজের নিকৃষ্টতা থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাই। আল্লাহ যাকে সৎপথে পরিচালিত করেন তাহাকে কেউ পথভ্রষ্ট করিতে পারে না এবং যাকে পথভ্রষ্ট করেন তাহার কোন পথপ্রদর্শক নাই। আমি সাক্ষ্য দেই যে, আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নাই, তিনি এক এবং তাহার কোন শরীক নাই। আমি আরো সাক্ষ্য দেই যে, মুহাম্মাদ [সাঃআঃ] তাহার বান্দা ও রসূল”।
এরপর তোমরা তোমাদের খুতবার সাথে কুরআনের এ তিনটি আয়াত যোগ করবেঃ
“হে ঈমানদারগণ। আল্লাহকে যেরূপ ভয় করা উচিত তোমরা তাহাকে তদ্রুপ ভয় করো এবং মুসলমান না হয়ে মৃত্যুবরণ করো না” [সূরা আল ইমরানঃ ১০২]।
“হে মানবজাতি! তোমরা তোমাদের প্রভুকে ভয় করো, যিনি তোমাদেরকে এক ব্যক্তি থেকে সৃষ্টি করিয়াছেন এবং যিনি তাহার থেকে তাহার সঙ্গিণীকে সৃষ্টি করিয়াছেন এবং তাহাদের দুজন থেকে অসংখ্য পুরুষ ও নারী ছড়িয়ে দিয়েছেন। অতএব তোমরা আল্লাহকে ভয় করো যাহার নামে তোমরা একে অপরের নিকট যাচঞা করে থাকো এবং জ্ঞাতিদের ব্যাপারে সতর্কতা অবলম্বন করো। নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের উপর পর্যবেক্ষক” [সূরা নিসাঃ ১]।
“হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং সঠিক কথা বলো। তিনি তোমাদের কার্যাবলি সংশোধন করে দিবেন এবং তোমাদের গুনাহসমূহ ক্ষমা করবেন। যে কেউ আল্লাহ ও তাহার রসূলের আনুগত্য করে সে অবশ্যই মহাসাফল্য অর্জন করিবে” [সূরা আহ্যাবঃ ৭০-৭১]। {১৮৯২}
{১৮৯২} তিরমিজি ১১০৫, ১৪০৪, আবু দাউদ ২১১৮, আহমাদ ৪১০৪, দারেমী ২২০২, মিশকাত ৩১৪৯, সহিহাহ ১৪৮৩, খুতবাতুল হাজাহ ১৯-২৯, আল-কালিমুত তাইয়্যিব ২০৫, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি ইউনুস সম্পর্কে আবু আহমাদ আল-হাকিম বলেন, তিনি তাহার রেওয়াতে হাদিস বর্ণনায় সন্দেহ করেন। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে তাহার হাদিস দ্বারা দলীল গ্রহণযোগ্য নয়। আবু হাতিম বিন হিব্বান তাহার সিকাহ গ্রন্থে তাহার নাম উল্লেখ করিয়াছেন। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় কিছু সন্দেহ করেন। যাকারিয়্যা বিন ইয়াহইয়া আস-সাজী বলেন, তিনি সত্যবাদী। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৭১৭০, ৩২/৪৮৮ নং পৃষ্ঠা] বিবাহ সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৮৯৩. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নবী [সাঃআঃ] নিম্নোক্ত খুতবাহ পড়েছেনঃ “সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য। আমরা তাহার প্রশংসা করি এবং তাহার কাছে সাহায্য চাই। আমরা আল্লাহর কাছে আমাদের অনিষ্ট হইতে এবং আমাদের কার্যকলাপের নিকৃষ্টতা হইতে আশ্রয় চাই। আল্লাহ যাকে সৎপথে পরিচালিত করেন, কেউ তাহাকে পথভ্রষ্ট করিতে পারে না এবং তিনি যাকে পথভ্রষ্ট করেন, তাহার কোন পথপ্রদর্শক নাই। আমি সাক্ষ্য দেই যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ নাই, তিনি এক, তাহার কোন শরীক নাই এবং মুহাম্মাদ [সাঃআঃ] তাহাঁর বান্দা ও তাহাঁর রসূল। অতঃপর…” {১৮৯৩}
{১৮৯৩} মুসলিম ৮৬৮, নাসাঈ ৩২৭৮, আহমাদ ২৭৪৪, ৩২৬৫, খুতবাতুল হাজাহ ৩১ নং পৃষ্ঠা। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। বিবাহ সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৮৯৪. আবু হুরায়রাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ প্রতিটি কাজ গুরুত্বপূর্ণ। আল্লাহর প্রশংসা ছাড়া শুরু করা হলে, তা হয় বরকতশূন্য। {১৮৯৪}
{১৮৯৪} আবু দাউদ ৪৮৪০, ইরওয়াহ ২, মিশকাত ৩১৫১। জইফ আল জামি ৪২১৬। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি কুররাহ সম্পর্কে আবুল কাসিম বিন বিশকাওয়াল বলেন, তিনি দুর্বল। আবু হাতিম আর-রাযী ও আহমাদ বিন শুআয়ব আন-নাসাঈ বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৪৮৭১, ২৩/৫৮১ নং পৃষ্ঠা] বিবাহ সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৯/২০. অধ্যায়ঃ বিবাহের ঘোষণা।
১৮৯৫. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নবী [সাঃআঃ] বলেনঃ তোমরা এই বিবাহের ঘোষণা দাও এবং তাতে ঢোল [দফ] বাজাও। {১৮৯৫}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ প্রথম অংশ, হাসান, দ্বিতীয় অংশ, মুনকার।{১৮৯৫} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। ইরওয়াহ ১৯৯৩, যঈফাহ ৯৮২। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ প্রথম অংশ, হাসান, দ্বিতীয় অংশ, মুনকার। উক্ত হাদিসের রাবি খালিদ ইবনিল ইয়াস সম্পর্কে আবু বকর আল-বাযযাহার বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি দুর্বল। ঈমাম তিরমিজি বলেন, তিনি আহলে ইলমদের নিকট দুর্বল। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি মিথ্যার সাথে অভিযুক্ত। আহমাদ বিন শুআয়ব আন-নাসাঈ বলেন, তিনি সিকাহ নয়, তাহার থেকে হাদিস গ্রহন করা যাবে না। ঈমাম যাহাবী ও মুহাম্মাদ বিন আম্মার তাহাকে দুর্বল বলেছেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ১৫৯৬, ৮/২৯ নং পৃষ্ঠা] বিবাহ সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ অন্যান্য
১৮৯৬. মুহাম্মাদ বিন হাতিব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ হালাল ও হারাম বিবাহের মধ্যে পার্থক্য হলো- ঢোল [দফ] বাজানো এবং শব্দ করা বা ঘোষণা প্রচার। {১৮৯৬}
{১৮৯৬} তিরমিজি ১০৮৮, ইরওয়াহ ১৯৯৪, মিশকাত ৩১৫৩। আল-আদাব ৯৬-৯৭, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান। উক্ত হাদিসের রাবি আবু বালজ [ইয়াহইয়া বিন সুলায়ম] সম্পর্কে আবুল ফাতহ আল-আযদী বলেন, তিনি সিকাহ। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। আহমাদ বিন শুআয়ব আন-নাসাঈ বলেন, তিনি সিকাহ। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় কখনো কখনো ভুল করেন। ঈমাম বুখারী বলেন, তাহার ব্যাপারে সমালোচনা রয়েছে। ইয়াহইয়া বিন মাঈন তাহাকে দুর্বল বলেছেন। মুহাম্মাদ বিন সাদ বলেন, তিনি সিকাহ। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৭২৬৯, ৩৩/১৬২ নং পৃষ্ঠা] বিবাহ সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান হাদিস
৯/২১. অধ্যায়ঃ গান গাওয়া এবং ঢোল বাজানো।
১৮৯৭. রাবীবিনতু মুআব্বিয বিন আফরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
[খালিদ] বলেন, আমরা এক আশূরার দিন মদিনায় ছিলাম। বালিকারা দফ বাজাচ্ছিল এবং গান গাচ্ছিল। এরপর আমরা রুবায়বিনতু মুআব্বিয [রাদি.]-এর নিকট উপস্তিত হলাম এবং ঘটনাটি তাহাকে জানালাম। তিনি বলেন, আমার বিবাহ বেলা রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]- আমার নিকট আসেন। তখন আমার নিকট দুটি বালিকা গান গাচ্ছিল। এবং বদর যুদ্ধে নিহত আমার পিতৃপুরুষদের কীর্তিগাঁথা গাইছিল। তাহারা এও বলছিল, আমাদের মধ্যে এমন একজন নবী [সাঃআঃ] আছেন, যিনি আগামী কালের খবরও জানেন। তখন রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ তোমরা একথা বলো না। আগামীকালের খবর আল্লাহ ছাড়া আর কেউ জানে না।” {১৮৯৭}
{১৮৯৭} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ৪০০১, ৫১৪৭, তিরমিজি ১০৯০, আবু দাউদ ৪৯২২, আহমাদ ২৬৪৮১, ২৬৪৮৭, রওদুন নাদীর ৮৩০, আল-আদাব ৯৩-৯৪। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। বিবাহ সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৮৯৮. আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আবু বাকর [রাদি.] আমার নিকট আসেন। তখন আমার নিকট দুটি আনসার বালিকা উপস্থিত ছিল। তাহারা বুআস যুদ্ধে আনসারদের মুখে উচ্চারিত কবিতাগুলো গানের সুরে আবৃত্তি করছিল। আয়িশাহ্ [রাদি.] বলেন, তাহারা পেশাদার গায়িকা ছিল না। আবু বাকর [রাদি.] বলিলেন, শায়তানের বাঁশী [বাদ্যযন্ত্র] নবী [সাঃআঃ] এর ঘরে? এ ঘটনাটি ছিল ঈদুল ফিতরের দিনের। নবী [সাঃআঃ] বলেনঃ হে আবু বাক্র! প্রত্যেক জাতিরই ঈদ [আনন্দ উৎসব] রহিয়াছে। আর এটাই হচ্ছে আমাদের ঈদ। {১৮৯৮}
{১৮৯৮} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ৯৫০, ৯৫২, ৯৮৮, ২৯০৮, ৩৫৩০, ৩৯৩১, ৫১৯০, মুসলিম ৮৯২, নাসাঈ ১৫৯৭, বায়হাকী ৭/২৫৮, মুকাদ্দামাতুল আয়াতুল বায়্যিনাত ৪৫-৪৬। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।বিবাহ সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৮৯৯. আনাস বিন মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নবী [সাঃআঃ] মদীনাহ্র গলিপথ দিয়ে যাচ্ছিলেন। কয়েকটি বালিকা দফ বাজিয়ে গান গেয়ে বলছিল, “আমরা বনু নাজ্জারের বালিকার দল। কত খোশনসীব! মুহাম্মাদ রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদের মহৎ প্রতিবেশী”। তখন নবী [সাঃআঃ] বলেনঃ আল্লাহ্ অবগত আছেন, আমি তো তোমাদের ভালোবাসি। {১৮৯৯}
{১৮৯৯} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। ইরওয়া ১৯৯৪, মিশকাত ৩১৫৩, দিফাউন আনিল হাদিস ২৪ পৃষ্ঠা। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান। বিবাহ সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান হাদিস
১৯০০. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আয়িশাহ্ [রাদি.] তাহার এক আত্মীয়ের এক আনসার মেয়ের সাথে বিবাহ দেন। রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] এসে বলেনঃ তোমরা কি মেয়েটিকে স্বামীর বাড়ি] পাঠিয়ে দিয়েছ? তাহারা বলেন, হাঁ। তিনি বলেনঃ তোমরা কি তাহার সাথে এমন কাউকে পাঠিয়েছ, যে গান গাইতে পারে? আয়িশাহ্ [রাদি.]বলেন, না। রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ আনসার সম্প্রদায় গানের ভক্ত। অতএব তোমরা যদি তাহার সাথে কাউকে পাঠাতে, যে গিয়ে এরূপ বলতোঃ “আমরা এসেছি তোমাদের কাছে, আমরা এসেছি তোমাদের কাছে, আল্লাহ আমাদের দীর্ঘজীবী করুন এবং দীর্ঘজীবী করুন তোমাদের। {১৯০০}
{১৯০০} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। ইরওয়াহ ১৯৯৫, যঈফাহ ২৯৮১। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি আল-আজালাহ সম্পর্কে আবুল ফারাজ ইবনিল জাওযী বলেন, তাহার জাল [বানিয়ে] হাদিস বর্ণনার অভিযোগ রয়েছে। আবু জাফার আল-উকায়লী বলেন, তিনি শাবী থেকে হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন। তবে তিনি হাদিস বর্ণনায় ইদতিরাব করিয়াছেন। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়, তাহার থেকে হাদিস গ্রহন করা যায় তবে তা দলীলযোগ্য হইবে না। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, তিনি দুর্বল। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে শীয়া মতাবলম্বী। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ২৮২, ২/২৭৫ নং পৃষ্ঠা] বিবাহ সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১৯০১. মুজাহিদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি ইবনি উমার [রাদি.] এর সাথে ছিলাম। হঠাৎ তিনি তবলার আওয়াজ শুনতে পান। তিনি তাহার উভয় কানে তাহার দু আঙ্গুল ঢুকিয়ে সরে পড়েন। তিনি তিনবার এরূপ করিলেন। অতঃপর তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] এরূপ করিয়াছেন। {১৯০১}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ তবলার কথা মুনকার তবে রাখালের যামারাহ বাশীর শব্দে সহীহ।{১৯০১} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। রওদুন নাদীর ৫৬৮। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ তবলার কথা মুনকার তবে রাখালের যামারাহ বাশীর শব্দে সহীহ, রওয ৫৬৮। উক্ত হাদিসের রাবি লায়স সম্পর্কে ঈমাম বুখারী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় সন্দেহ করেন। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, মুদতাহারাবুল হাদিস। ইয়াহইয়া বিন মাঈন, আবু যুরআহ ও আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি দুর্বল। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৫০১৭, ২৪/২৭৯ নং পৃষ্ঠা] বিবাহ সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ অন্যান্য
৯/২২. অধ্যায়ঃ নপুংসকদের প্রসঙ্গে।
১৯০২. যায়নাব বিনতু উম্মু সালামাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
উম্মু সালামাহ [রাদি.] নবী [সাঃআঃ] তাহাঁর ঘরে প্রবেশ করে এক নুপুংসককে আবদুল্লাহ বিন আবু উমাইয়্যাকে লক্ষ্য করে বলিতে শুনলেনঃ আগামীকাল যদি আল্লাহ তায়িফ বিজয় দান করেন, তাহলে আমি তোমাকে এমন এক নারীর সন্ধান দিবো, যে চার ভাঁজে আগমন করে এবং আট ভাঁজে প্রস্থান করে। রাসুলুল্লাহ [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেনঃ একে তোমাদের ঘর থেকে বের করে দাও।” {১৯০২}
{১৯০২} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ৪৩২৪, ৫৮৮৭, মুসলিম ২১৮০, আবু দাউদ ৪৯২৯, আহমাদ ২৫৯৫১, ২৬১৫৯, মুয়াত্তা মালিক ১৪৯৮, ইরওয়াহ ১৭৯৭, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। বিবাহ সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৯০৩. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] পুরুষের বেশধারিণী নারীকে এবং নারীর বেশধারী পুরুষদেরকে অভিসম্পাত করিয়াছেন। {১৯০৩}
{১৯০৩} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। আদাবুয যিফাফ ১২২১, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি ১. ইয়াকুব বিন হুমায়দ বিন কাসিব সম্পর্কে আবু জাফার আল উকায়লী বলেন, তাহার হাদিসের অনুসরণ করা যাবে না। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৭০৮৬, ৩২/৩১৮ নং পৃষ্ঠা] ২. সুহায়ল বিন আবু সালিহ সম্পর্কে মুহাম্মাদ বিন সাঈদ বলেন, তিনি সিকাহ। সুফইয়ান বিন উয়াইনাহ বলেন, সাবত। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তাহার বর্ণিত হাদিস সহীহ নয়। ঈমাম নাসাঈ বলেন, কোন সমস্যা নেই। ইবনি আদী বলেন, তাহার খবর মাকবুল বা গ্রহণযোগ্য। ইবনি হিব্বান বলেন, তিনি সিকাহ তবে অন্যত্র বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ২৬২৯, ১২/২২৩ নং পৃষ্ঠা] বিবাহ সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান সহীহ
১৯০৪. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নবী [সাঃআঃ] অভিসম্পাত করিয়াছেন নারীর বেশধারী পুরুষদেরকে এবং পুরুষের বেশধারিণী নারীদেরকে”। {১৯০৪}
{১৯০৪} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ৫৮৮৫, ৫৮৮৬, ৬৮৩৪, তিরমিজি ২৭৮৪, ২৭৮৫,আবু দাউদ ৪০৯৭, ৪৯৩০, আহমাদ ১৯৮৩, ২০০৮, ২১২৪, ৩৪৪৮, দারেমী ২৬৪৯, রওয ৪৪৭, আল-আদাব ৪৪৭, হিজাবুল মারআহ ৬৭, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।বিবাহ সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৯/২৩. অধ্যায়ঃ নব দম্পতিকে মুবারকবাদ জানানো।
১৯০৫. আবু হুরায়রাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বিবাহ উপলক্ষে কাউকে মুবারকবাদ জানিয়ে বলিতেনঃ [আরবী] “আল্লাহ তোমাদের বরকত দান করুন, তোমাদের উপর বরকত নাযিল করুন এবং কল্যাণের সাথে তোমাদের একত্র করুন। {১৯০৫}
{১৯০৫} তিরমিজি ১০৯১, আবু দাউদ ২১৩০, আহমাদ ৮৭৩৩, দারেমী ২১৭৪, বায়হাকী ৭/২৬০, আদাবুয যিফাফ ৮৯, তাখরিজু কালিমুত তায়্যিব ২০৬ সহীহ আবু দাউদ ১৮৫০। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি ১. আবদুল আযীয বিন মুহাম্মাদ সম্পর্কে মুহাম্মাদ বিন সাদ বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ করেন। ইবনি হিব্বান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। মালিক বিন আনাস তাহাকে সিকাহ বলেছেন। আহমাদ বিন শুআয়ব আন নাসাঈ বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে নিজ কিতাব ছাড়া অন্যত্র থেকে হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৩৪৭০, ১৮/১৮৭ নং পৃষ্ঠা] ২. সুহায়ল বিন আবু সালিহ সম্পর্কে মুহাম্মাদ বিন সাঈদ বলেন, তিনি সিকাহ। সুফইয়ান বিন উয়াইনাহ বলেন, সাবত। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তাহার বর্ণিত হাদিস সহীহ নয়। ঈমাম নাসাঈ বলেন, কোন সমস্যা নেই। ইবনি আদী বলেন, তাহার খবর মাকবুল বা গ্রহণযোগ্য। ইবনি হিব্বান বলেন, তিনি সিকাহ তবে অন্যত্রে বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ২৬২৯, ১২/২২৩ নং পৃষ্ঠা] বিবাহ সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৯০৬. আকীল বিন আবু তালিব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বনু জুশম গোত্রের এক মহিলাকে বিবাহ করিলে লোকেরা [মুবারকবাদ দিয়ে] বলল, সুখী হও এবং অধিক সন্তান হোক। তিনি বলেন, তোমরা এরূপ বলো না, বরং যেরূপ রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন তদ্রুপ বলোঃ
اللهُمَّ بارك لَهُمْ وَبَارك عليهم
“হে আল্লাহ! তাহাদেরকে বরকত দান করুন এবং তাহাদের উপর বরকত নাযিল করুন।” {১৯০৬}
{১৯০৬} নাসাঈ ৩৩৭১, আহমাদ ১৭৪০, ১৫৩১৩, দারেমী ২১৭৩, আল-আদাব ৯০, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। বিবাহ সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৯/২৪. অধ্যায়ঃ ওলীমা [বিবাহ ভোজ] প্রসঙ্গে।
১৯০৭. আনাস বিন মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নবী [সাঃআঃ] আবদুর রহমান বিন আওফ [রাদি.] -এর চেহারায় হলুদের রং দেখে তাহাকে বলেনঃ একী? আবদুর রহমান [রাদি.] বলেন, হে আল্লাহর রসূল! আমি এক মহিলাকে সামান্য সোনার বিনিময়ে বিবাহ করেছি। তিনি বলেনঃ আল্লাহ্ তোমাকে বরকত দান করুন। একটি বকরী দিয়ে হলেও বিবাহ ভোজের আয়োজন করো। {১৯০৭}
{১৯০৭} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ২০৪৯, ৩৭৮১, ৩৯৩৭, ৫০৭২, ৫১৪৮, ৫১৫৩, ৫১৫৫, ৫১৬৭, ৬০৮২, ৬৩৮৬, মুসলিম ১৪২৭, তিরমিজি ১০৯৪, ১৯৩৩, নাসাঈ ৩৩৫১, ৩৩৫২, ৩৩৭২, ৩৩৭৩, ৩৩৭৪, ৩৩৮৮, আবু দাউদ ২১০৯, আহমাদ ১২২৭৪, ১২৫৬৪, ১২৭১০, ১২৯৫৭, ১৩৪৫১, ১৩৪৯১, ১৩৫৫০, মুয়াত্তা মালিক ১১৫৭, দারেমী ০৬৪, ২২০৪, ইরওয়াহ ১৯২৩, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। বিবাহ সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৯০৮. আনাস বিন মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে তাহাঁর কোন স্ত্রীর বেলায় এমন বিবাহ ভোজের আয়োজন করিতে দেখিনি, যেরূপ তিনি যায়নব [রাদি.] -এর বিবাহ ভোজের আয়োজন করেন। তিনি তাতে একটি বকরী যবহ করেছিলেন। {১৯০৮}
{১৯০৮} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ৫১৬৮, ৫১৭১, মুসলিম ১৪২৮, আবু দাউদ ৩৭৪৩, ইরওয়াহ ১৯৪৫, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। বিবাহ সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৯০৯. আনাস বিন মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নবী [সাঃআঃ] সাফিয়্যা [রাদি.] -এর বিবাহে ছাতু ও খোরমা দিয়ে বিবাহ ভোজের আয়োজন করেন। {১৯০৯}
{১৯০৯} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ৩৭১, ৫০৮৫, ৫১৫৯, ৫১৬৯, ৫৩৮৭, তিরমিজি ১০৯৫, নাসাঈ ৩৩৮০, ৩৩৮২, আবু দাউদ ৩৭৪৪, আহমাদ ১২২০৫, ১৩১৬৩, আল-আদাব ৬৯-৭১, মুখতাসারুস শামাইল ১৫০, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। বিবাহ সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৯১০. আনাস বিন মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি নবী [সাঃআঃ] -এর এক বিবাহ ভোজের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলাম। এতে না গোশত ছিল, না রুটি। {১৯১০}
{১৯১০} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ৫১৫৯, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি আলী বিন যায়দ বিন জুদআন সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন সাঈদ আল কাত্তান বলেন, তাহার হাদিস প্রত্যাখ্যানযোগ্য। আহমাদ বিন হাম্বল ও ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। ইয়াবুব বিন শায়বাহ বলেন, তিনি সিকাহ সালিহ। আল-আজলী বলেন, কোন সমস্যা নেই। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৪০৭০, ২০/৪৩৪ নং পৃষ্ঠা] বিবাহ সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৯১১. আয়িশা ও উম্মু সালামাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তাহারা বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদেরকে ফাতিমাহকে আলীর নিকট পৌছানোর জন্য তাহাকে সাজসজ্জা করিয়ে তৈরি করার নির্দেশ দেন। আমরা [আলীর] ঘরে বাতহা উপত্যকার নরম মাটি বিছিয়ে দিলাম, অতঃপর দুটি বালিশে খেজুর গাছের ছাল ভরে তা পরিষ্কার করে রেখে দিলাম। এরপর আমরা খোরমা, কিশমিশ ও মিঠা পানির দ্বারা পানাহারের ব্যবস্থা করলাম, কাপড় ও পানির মশক ঝুলিয়ে রাখার জন্য একটি কাঠের খুঁটি ঘরের কোণে দাঁড় করিয়ে দিলাম। আমরা ফাতিমাহর বিবাহের চেয়ে অধিক পরিপাটি ব্যবস্থা আর দেখিনি। {১৯১১}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ দঈফ, তালীক ইবনি মাজাহ্।{১৯১১} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। বায়হাকী ৭/১৯৩। তালীক ইবনি মাজাহ্। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি মুফাদ্দাল বিন আবদুল্লাহ সম্পর্কে আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। আবু হাতিম বিন হিব্বান তাহার সিকাহ গ্রন্থে তাহার নাম উল্লেখ করিয়াছেন। ইবনি হাজার আল-আসকালনী ও ঈমাম যাহাবী বলেন, তিনি দুর্বল। ঈমাম বুখারী বলেন, তিনি মুনকার। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৬১৪৮, ২৮/৪১০ নং পৃষ্ঠা] ২. জাবির [বিন ইয়াযীদ] সম্পর্কে শুবাহ ইবনিল হাজ্জাজ বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় সত্যবাদী। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি মিথ্যা কথা বলেন। ইয়াহইয়া বিন মাঈন ও আল জাওযুজানী তাহাকে মিথ্যুক বলেছেন। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় নির্ভরযোগ্য নয়। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৮৭৯, ৪/৪৬৫ নং পৃষ্ঠা] বিবাহ সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১৯১২. সাহল বিন সাদ আস-সাইদী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আবু উসাইদ আস-সাইদী [রাদি.] তাহার বিবাহ ভোজে রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে দাওয়াত করেন। কনেই তাঁদের আহার পরিবেশন করেন। তিনি [কনে] বলেন, তুমি কি জানো রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে কী পান করিয়েছিলাম? তিনি বলেন, আমি রাতে কিছু শুকনো খেজুর পানিতে ভিজিয়ে রেখেছিলাম, সকালবেলা এগুলো নিংড়িয়ে তাহাঁকে শরবত পান করিয়েছিলাম। {১৯১২}
{১৯১২} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ৫১৭৬, মুসলিম ২০০৬, আহমাদ ১৫৬৩২, আদাবুয যিফাফ ৯২। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।বিবাহ সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৯/২৫. অধ্যায়ঃ দাওয়াতকারীর দাওয়াত কবুল করা।
১৯১৩. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, যে বিবাহ ভোজে ধনীদের দাওয়াত দেয়া হয় এবং গরীবদের উপেক্ষা করা হয় তা হলো সর্বাধিক নিকৃষ্ট ভোজ। যে ব্যক্তি দাওয়াত গ্রহণ করে না, সে আল্লাহ্ ও তাহাঁর রসূলের অবাধ্যাচারণ করিল। {১৯১৩}
{১৯১৩} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ৫১৭৭, মুসলিম ১৪৩২, আবু দাউদ ৩৭৪২, আহমাদ ৭২৩৭, ৭৫৬৯, ৯০০৮, ১০০৪০, মুয়াত্তা মালিক ১১৬০, দারেমী ২০৬৬, ইরওয়াহ ১৯৪৭, বুখারী, মাওকুফরূপে এবং মুসলিম মারফূরূপে। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। বিবাহ সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৯১৪. ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, তোমাদের কাউকে বিবাহ ভোজের দাওয়াত দেয়া হলে সে যেন তা কবুল করে। {১৯১৪}
{১৯১৪} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ৫১৭৩, ৫১৭৯, মুসলিম ১৪২৯, তিরমিজি ১০৯৮, আবু দাউদ ৩৭৩৬, ৩৭৩৮, ৩৭৪১, আহমাদ ৪৬৯৮, ৪৭১৬, ৪৯৩০, ৫৭৩২, ৬০৭১, ৬৩০১, মুয়াত্তা মালিক ১১৫৯, দারেমী ২০৮২, ২২০৫, আল-আদাব ৭২, ইরওয়াহ ১৯৪৮, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। বিবাহ সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৯১৫. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, প্রথম দিনের ওলীমা [বিবাহ ভোজ] আয়োজন করা কর্তব্য, দ্বিতীয় দিনের ওলীমাও ভালো এবং তৃতীয় দিনের ওলীমা হলো প্রদর্শনী এবং যশের জন্য। {১৯১৫}
{১৯১৫} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। ইরওয়াহ ১৯৫৯। জইফ আল জামি ৬১৬৭। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি আবদুল মালিক বিন হুসায়ন আবু মালিক আন-নাখঈ সম্পর্কে আবু হাতিম আর-রাযী ও আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী ও ঈমাম দারাকুতনী বলেন, তিনি দুর্বল। আহমাদ বিন শুআয়ব আন-নাসাঈ বলেন, তিনি সিকাহ নয়, তাহার হাদিস গ্রহন করা যাবে না। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি মিথ্যার সাথে অভিযুক্ত। ঈমাম যাহাবী তাহাকে দুর্বল বলেছেন। আমর বিন আলী আল-ফাল্লাস বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৭৫৯৯, ৩৪/২৪৭ নং পৃষ্ঠা] বিবাহ সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
Leave a Reply