যাকাত হিসাব করার নিয়ম
যাকাত হিসাব করার নিয়ম জেনে নিন ইবনে মাজাহ শরীফ থেকে , এই অধ্যায়ে মোট =৬২ টি হাদীস (১৭৮৩ – ১৮৪৪) >> সুনানে ইবনে মাজাহ হাদিস এর মুল সুচিপত্র পড়ুন
পর্বঃ ৭-যাকাত, অধ্যায় (১-২৮)=২৮, হাদীস (১৭৮৩ – ১৮৪৪)
৮/১. অধ্যায়ঃ যাকাত পরিশোধ করা ফরয্।
৮/২. অধ্যায়ঃ যাকাত পরিশোধ না করার পরিণতি।
৮/৩. অধ্যায়ঃ যে মালের যাকাত আদায় করা হয় তা পুঞ্জীভূত সম্পদ নয়।
৮/৪. অধ্যায়ঃ সোনা-রূপার যাকাত।
৮/৫. অধ্যায়ঃ কেউ বছরের মাঝখানে কোন সম্পদের মালিক হলে।
৮/৬. অধ্যায়ঃ যেসব মালের উপর যাকাত ধার্য হয়।
৮/৭. অধ্যায়ঃ বর্ষপূর্তির পূর্বে দ্রুত যাকাত আদায় করা।
৮/৮. অধ্যায়ঃ যাকাত আদায় করার সময় যে দুআ পড়বে।
৮/৯. অধ্যায়ঃ উটের যাকাত।
৮/১০. অধ্যায়ঃ যাকাত আদায়কারী কম বয়সী অথবা বেশি বয়সী পশু গ্রহণ করিলে। {আবু বাক্র সিদ্দীক [রাদি.]-এর পত্র}।
৮/১১. অধ্যায়ঃ যাকাত আদায়কারী যে ধরনের উট গ্রহণ করিবে।
৮/১২. অধ্যায়ঃ গরু-মহিষের যাকাত।
৮/১৩. অধ্যায়ঃ ছাগল-ভেড়ার যাকাত।
৮/১৪. অধ্যায়ঃ যাকাত আদায়কারী কর্মচারির আচরণ।
৮/১৫. অধ্যায়ঃ ঘোড়া ও গোলামের যাকাত।
৮/১৬. অধ্যায়ঃ যেসব মালের যাকাত প্রদান বাধ্যতামূলক।
৮/১৭. অধ্যায়ঃ কৃষিজাত ফসল ও ফসলের যাকাত।
৮/১৮. অধ্যায়ঃ অনুমানে খেজুর ও আঙ্গুরের পরিমাণ নির্ধারণ।
৮/১৯. অধ্যায়ঃ যাকাত বাবদ নিকৃষ্ট মাল দেয়া নিষেধ ।
৮/২০. অধ্যায়ঃ মধুর যাকাত ।
৮/২১. অধ্যায়ঃ সদাকাতুল ফিতর [ফিতরা]।
৮/২২. অধ্যায়ঃ উশর ও খাজনা।
৮/২৩. অধ্যায়ঃ ষাট সা-এ এক ওয়াস্ক।
৮/২৪. অধ্যায়ঃ নিকটাত্মীয়কে দান-খয়রাত করা।
৮/২৫. অধ্যায়ঃ অপরের নিকট যাচ্ঞা করা নিন্দনীয়।
৮/২৬. অধ্যায়ঃ স্বচ্ছল হওয়া সত্ত্বেও যে ব্যক্তি যাচ্ঞা করে।
৮/২৭. অধ্যায়ঃ যাহার জন্য যাকাত গ্রহণ করা হালাল।
৮/২৮. অধ্যায়ঃ যাকাত দানের ফাদীলাত।
৮/১. অধ্যায়ঃ যাকাত পরিশোধ করা ফরয্।
১৭৮৩ ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নবী [সাঃআঃ], মুআয বিন জাবাল [রাদি.]-কে ইয়ামানে পাঠাবার প্রাক্কালে বলেন, নিশ্চয়ই তুমি এমন একটি সম্প্রদায়ের কাছে যাচ্ছো যারা আহলে কিতাব। তুমি সর্বপ্রথম তাহাদেরকে “আল্লাহ্ ব্যতীত কোন ইলাহ নাই এবং আমি আল্লাহ্র রসূল” এ কথার সাক্ষ্য দেয়ার আহ্বান জানাবে। তাহারা তা মেনে নিলে তুমি তাহাদের জানিয়ে দিবে যে, আল্লাহ্ তাহাদের উপর দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত সলাত ফরয করিয়াছেন। তাহারা যদি এ কথাও মেনে নেয়, তবে তাহাদের আরও জানিয়ে দিবে যে, আল্লাহ্ তাহাদের সম্পদের উপর যাকাত ফরয করিয়াছেন, যা তাহাদের ধনীদের নিকট থেকে আদায় করা হইবে এবং তাহাদের গরীবদের মধ্যে বিতরণ করা হইবে। তাহারা যদিও এটিও মেনে নেয় তবে তাহাদের উত্তম সম্পদ [গ্রহণ] থেকে নিজেদের বিরত রাখবে। তুমি মযলুমের বদদোয়াকে ভয় করো। কেননা মযলুমের আহাজারি ও আল্লাহ্র মাঝে কোন পর্দা [প্রতিবন্ধক] নেই। {১৭৮৩}
{১৭৮৩} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৩৯৫, ১৪৯৬,২৪৪৮, ১৪৪৮, ৪৩৪৭, ৭৩৭১, ৭৩৭২, মুসলিম ১৯, তিরমিজি ৬২৫, নাসাঈ ২৪৩৫, আবু দাউদ ১৫৮৪, আহমাদ ২০৭২, দারেমী ১৬১৪, ইরওয়া ৭৮২, সহীহ আবু দাউদ ১৪১২, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।যাকাত হিসাব করার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৮/২. অধ্যায়ঃ যাকাত পরিশোধ না করার পরিণতি।
১৭৮৪ আবদুল্লাহ্ বিন মাসঊদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, যে ব্যক্তি তাহার মালের যাকাত আদায় করে না, তাহার মালকে কিয়ামাতের দিন বিষধর সাপে পরিণত করা হইবে, এমনকি তা তাহার গলায় পেঁচিয়ে দেয়া হইবে। এরপর রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সমর্থনে আল্লাহ্র কিতাবের নিম্নোক্ত আয়াত আমাদের তিলাওয়াত করে শুনান [অনুবাদ]ঃ
وَلَا يَحْسَبَنَّ الَّذِينَ يَبْخَلُونَ بِمَا آتَاهُمْ اللهُ مِنْ فَضْلِهِ
“আর আল্লাহ্ নিজ অনুগ্রহে যা তোমাদের দিয়েছেন, এতে যারা কৃপণতা করে, তাহাদের জন্য তা মঙ্গলজনক একথা যেন তাহারা মনে না করে…” [৩ঃ ১৮০]। {১৭৮৪}
{১৭৮৪} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। বায়হাকী ৭/৫। সহীহ তাহারগীব ১/৭৫৪। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।যাকাত হিসাব করার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৭৮৫ আবু যাহার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কোন উট, ছাগল ও গরুর মালিক যদি এর যাকাত আদায় না করে, তবে এগুলো কিয়ামাতের দিন বিরাটকায় ও মোটাতাজা হয়ে উপস্থিত হইবে এবং মালিককে এদের শিং ও ক্ষুর দিয়ে আঘাত করিতে থাকিবে। শেষটির পালা শেষ হলে আবার প্রথমটি থেকে শুরু হইবে এবং এভাবেই চলতে থাকিবে, যে পর্যন্ত না বিচারকার্য শেষ হয়। {১৭৮৫}
{১৭৮৫} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৪৬০,মুসলিম ৯৯০, তিরমিজি ৬১৭, নাসাঈ ২৪৪০, ২৪৫৬, আহমাদ ২০৮৪৪, ২০৮৯০, ২০৯৮০, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। যাকাত হিসাব করার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৭৮৬ আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, যে উটের যাকাত দেয়া হয়নি, তা কিয়ামাতের দিন তাহার মালিককে তাহার ক্ষুর দিয়ে মাড়াতে থাকিবে। তদ্রূপ গরু ও ছাগল এসে এদের ক্ষুর ও শিং দিয়ে এদের মালিককে আঘাত করিতে থাকিবে। তাহার সঞ্চিত সম্পদও বিষধর সাপে পরিণত হয়ে তাহার মালিকের সামনে হাজির হইবে। মালিক দুবার তা দেখে পালাবে, কিন্তু সে আবার মালিকের সামনে এসে দাঁড়াবে। তখন মালিক পালাতে চেষ্টা করিবে এবং বলবে, তোমার সাথে আমার কি সম্পর্ক? সে বলবে, আমি তোমার গচ্ছিত সম্পদ, আমি তোমার রক্ষিত ধন। মালিক তাহার হাত দিয়ে সাপ থেকে আত্মরক্ষার চেষ্টা করিলে সে তাহার হাতটি গিলে ফেলবে। {১৭৮৬}
{১৭৮৬} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৪০২, ১৪০৩, ৪৫৬৫, ৪৬৫৯, ৬৯৫৮, মুসলিম ৯৮৭, নাসাঈ ২৪৪৮, ২৪৮২, আবু দাউদ ১৬৫৮, আহমাদ ৭৫০৯, ৭৬৬৩, ৭৬৯৮, ২৭৪০১, ৮৪৪৭, ২৭৪৩৩, ৮৭৫৪, ৯৯৭১, ১০৪৭৪, মুয়াত্তা মালিক ৫৯৬, সহীহ আবু দাউদ ১৪৬২, বুখারী, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি ১. আবু মারওয়ান মুহাম্মাদ বিন উসমান আল-উসমানী সম্পর্কে আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি সিকাহ। আবু হাতিম বিন হিব্বান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন ও সিকাহ রাবীর বিপরীত হাদিস বর্ণনা করেন। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। ঈমাম বুখারী তাহাকে সত্যবাদী বলেছেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৫৪৫৪, ২৬/৮১ নং পৃষ্ঠা] ২. আলা বিন আব্দুর রহমান সম্পর্কে আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি সিকাহ তাহার খারাপি সম্পর্কে কারো থেকে কিছু শুনিনি। ঈমাম তিরমিজি বলেন, হাদিস বিশারদদের নিকট তিনি সিকাহ। ঈমাম নাসাঈ বলেন, কোন সমস্যা নেই। ইবনি আদী বলেন, আমি কোন সমস্যা দেখি না। ইবনি হিব্বান তাহাকে সিকাহ বলেছেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৪৫৭৭, ২২/৫২০ নং পৃষ্ঠা]।যাকাত হিসাব করার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহীহ
৮/৩. অধ্যায়ঃ যে মালের যাকাত আদায় করা হয় তা পুঞ্জীভূত সম্পদ নয়।
১৭৮৭ উমার ইবনিল খাত্তাব [রাদি.] এর মুক্ত দাস খালিদ বিন আসলাম হইতে বর্ণীতঃ
আমি আবদুল্লাহ্ বিন উমার [রাদি.] এর সাথে বের হলাম। এক বেদুঈন এসে তাহাঁকে আল্লাহ্র বাণী সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলোঃ
وَالَّذِينَ يَكْنِزُونَ الذَّهَبَ وَالْفِضَّةَ وَلَا يُنْفِقُونَهَا فِي سَبِيلِ اللهِ
“যারা সোনা-রূপা পুঞ্জীভূত করে এবং তা আল্লাহ্র পথে ব্যয় করে না…”[সূরা তওবাঃ ৩৪]।
ইবনি উমার [রাদি.] তাহাকে বলেন, যে ব্যক্তি সোনা-রূপা পুঞ্জীভূত করে রাখে, অথচ এর যাকাত আদায় করে না, তাহার জন্য ধ্বংস অনিবার্য। এ অবস্থা ছিল যাকাতের বিধান নাযিল হওয়ার আগের। পরবর্তীতে যাকাতের বিধান নাযিল হলে যাকাতকেই আল্লাহ্ মালের পবিত্রতাকারী সাব্যস্ত করেন। অতঃপর ইবনি উমার [রাদি.] লোকটির দিকে তাকিয়ে বলেন, এ ব্যাপারে আমার পরোয়া নেই যে, উহুদ পাহাড় পরিমাণ সোনাও যদি আমার হাতে আসে, তবে আমি তাহার পরিমাণ নিরূপণ করে এর যাকাত পরিশোধ করিব এবং মহান আল্লাহ্র হুকুম পালনে তা ব্যয় করিব। {১৭৮৭}
{১৭৮৭} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৪০৪, সহীহাহ ২/৯৬-৯৭। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি ইবনি লাহীআহ সম্পর্কে আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তাহার থেকে যে ব্যাক্তি অনেক পূর্বে হাদিস গ্রহন করিয়াছেন তাহার হাদিস সহীহ। আমর বিন আল-ফাল্লাস বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি দুর্বল। আবু হাফস উমার বিন শাহীন বলেন, তিনি সিকাহ। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। ঈমাম নাসাঈ বলেন, তিনি দুর্বল, তিনি সিকাহ নন। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তাহার কিতাব সমূহ পুড়ে যাওয়ার পর তিনি হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ করেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৩৫১৩, ১৫/৪৮৭ নং পৃষ্ঠা]।যাকাত হিসাব করার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৭৮৮ আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ যখন তুমি তোমার মালের যাকাত আদায় করিলে, তখন তুমি তোমার দায়িত্ব সম্পন্ন করে ফেললে। {১৭৮৮}
{১৭৮৮} তিরমিজি ৬১৮, যঈফাহ ২২১৮। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি দাররাজ আবুস সামহ সম্পর্কে আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, তিনি সত্যবাদী কিন্তু আবুল হায়সাম থেকে হাদিস বর্ণনায় তাহার দুর্বলতা প্রকাশ পেয়েছে। আহমাদ বিন হাম্বল তাহাকে মুনকার বলেছেন। আবু বিশর আদ-দাওলানী বলেন, তিনি কুফুরী নয় এমন কোন কওলী বা আমলী ফিসক এর সাথে জড়িত। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। ঈমাম নাসাঈ বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। ঈমাম দারাকুতনী তাহাকে দুর্বল বলেছেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ১৭৯৭, ৮/৪৭৭ নং পৃষ্ঠা] যাকাত হিসাব করার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১৭৮৯ ফাতিমাহ বিনতু কায়স [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি নবী [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছেনঃ যাকাত ব্যতীত সম্পদের উপর অন্য কোন দাবী নেই। {১৭৮৯}
{১৭৮৯} তিরমিজি ৬৫৯, ৬৬০, দারেমী ১৬৩৭, মিশকাত দ্বিতীয় তাহকীক ১৯১৪, যঈফাহ ৪৩৮৩। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ জইফ মুনকার। উক্ত হাদিসের রাবি আবু হামযাহ [মায়মুন] সম্পর্কে আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল, তাহার হাদিস প্রত্যাখ্যানযোগ্য। ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তাহার হাদিস গ্রহণযোগ্য নয়। ইয়াকুব বিন সুফইয়ান বলেন, তাহার হাদিস প্রত্যাখ্যানযোগ্যও নয় আবার দলীলযোগ্যও নয়। ঈমাম বুখারী তাহাকে দুর্বল বলেছেন। ঈমাম তিরমিজি বলেন, তাহার ব্যাপারে সমালোচনা রয়েছে। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তাহার হাদিস গ্রহন করা যায় তবে তিনি সিকাহ নন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৬৩৪৬, ২৬/২৩৭ নং পৃষ্ঠা]।যাকাত হিসাব করার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল মুনকার
৮/৪. অধ্যায়ঃ সোনা-রূপার যাকাত।
১৭৯০ আলী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আমি ঘোড়া ও গোলামের যাকাত থেকে তোমাদের নিষ্কৃত দিলাম। তবে তোমরা প্রতি চল্লিশ দিরহামে এক দিরহাম [যাকাত] দিবে। {১৭৯০}
{১৭৯০} তিরমিজি ৬২০, নাসাঈ ২৪৭৭, ২৪৭৮, আবু দাউদ ১৫৭৪, আহমাদ ৭১৩, ৯১৫, ৯৮৭, ১১০০, ১২৩৭, ১২৪৭, ১২৮০, দারেমী ১৬২৯, সহীহ আবু দাউদ ১৪০৪, ১৪০৬। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি হারিস বিন [আবদুল্লাহ] সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন ও আহমাদ বিন সালিহ আল-মিসরী বলেন, তিনি সিকাহ। ঈমাম নাসাঈ বলেন, কোন সমস্যা নেই। আলী ইবনিল মাদানী তাহাকে মিথ্যুক বলেছেন। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তাহার হাদিস গ্রহনযোগ্য নয়। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, হাদিস বর্ণনায় নির্ভরযোগ্য নয়। উক্ত হাদিসটি শাহিদ এর ভিত্তিতে সহীহ। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ১০২৪, ৫/২৩৯ নং পৃষ্ঠা] উক্ত হাদিসটি সহীহ কিন্তু হারিস বিন [আবদুল্লাহ] এর কারণে সানাদটি দুর্বল। হাদিসটির ৩৭০ টি শাহিদ হাদিস রয়েছে। তন্মধ্যে ১ টি জাল, ১৩ টি অধিক দুর্বল, ২০৩ টি দুর্বল, ১২২ টি হাসান, ২৫ টি সহীহ হাদিস পাওয়া যায়। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলঃ বুখারী ১৪৬৩, ১৪৬৪, মুসলিম ৯৮৩, ৯৮৪, তিরমিজি ৬২০, ৬২৮, আবু দাউদ ১৫৭৪, ১৫৯৪, ১৫৯৫, দারেমী ১৬৩২, আহমাদ ৭১৩, ৯১৫, ৯৮৭, ১১০০, ১২৩৭, ১২৪৭, ১২৭০, ১২৭২, ৭২৫৩, ৭৩৪৯, ৭৪০৫, ৭৬৯৯, ৯০২৮, ৯০৫৯, ৯১৫৯, ৯২৯৫, দারাকুতনী ১৯০৭, ২০০৩, ২০০৪, ২০০৫, ২০০৬, ২০০৭ ইত্যাদি।যাকাত হিসাব করার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৭৯১ ইবনি উমার [রাদি.] ও আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নবী [সাঃআঃ] প্রতি বিশ দিনার বা তাহার চেয়ে কিছু বেশি হলে অর্ধ দিনার এবং চল্লিশ দিনারে এক দিনার [যাকাত] গ্রহণ করিতেন। {১৭৯১}
{১৭৯১} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। ইরওয়াহ ৮১৩। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি ইবরাহীম বিন ইসমাঈল সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন,তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। ঈমাম বুখারী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় অধিক সন্দেহ করেন। ঈমাম নাসাঈ তাহাকে দুর্বল বলেছেন। ইবনি আদী বলেন, তাহার থেকে হাদিস গ্রহন করা যায় তবে তিনি দুর্বল। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি সিকাহ নন বরং হাদিস বর্ণনায় অধিক সন্দেহ করেন। উক্ত হাদিসটি শাহিদ এর ভিত্তিতে সহীহ। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ১৪৮, ২/৪৫ নং পৃষ্ঠা] উক্ত হাদিসটি সহীহ কিন্তু ইবরাহীম বিন ইসমাঈল এর কারণে সানাদটি দুর্বল। হাদিসটির ১২ টি শাহিদ হাদিস রয়েছে, তন্মধ্যে ১ টি দুর্বল, ৬ টি হাসান, ৫ টি সহীহ হাদিস পাওয়া যায়। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলঃ দারাকুতনী ১৮৭৯, ১৮৯২ ইত্যাদি।যাকাত হিসাব করার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৮/৫. অধ্যায়ঃ কেউ বছরের মাঝখানে কোন সম্পদের মালিক হলে।
১৭৯২ আয়িশাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
আমি রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছিঃ বছর পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত কোন মালের যাকাত নেই। {১৭৯২}
{১৭৯২} ইরওয়াহ ৭৮৭, সহীহ আবু দাউদ ১৪০৩। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি ১. শুজা ইবনিল ওয়ালীদ সম্পর্কে আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি সত্যবাদী। আহমাদ বিন সালিহ আল-জায়লী বলেন, তাহার থেকে হাদিস বর্ণনায় কোন সমস্যা নেই। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় সন্দেহ করেন। মুহাম্মাদ বিন আবদুল্লাহ ইবনি নুমায়র তাহাকে সিকাহ বলেছেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ২৭০২, ১২/৩৮২ নং পৃষ্ঠা] ২. হারিসাহ বিন মুহাম্মাদ সম্পর্কে আহমাদ বিন হাম্বল দুর্বল বলেছেন। ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তিনি সিকাহ নন। ঈমাম বুখারী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় মুনকার। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় মুনকার ও দুর্বল। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, কোন সমস্যা নেই। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ১০৫৭, ৫/৩১৩ নং পৃষ্ঠা] উক্ত হাদিসটি শাহিদ এর ভিত্তিতে সহীহ। উক্ত হাদিসটি সহীহ কিন্তু শুজা ইবনিল ওয়ালী ও হারিসাহ বিন মুহাম্মাদ এর কারণে সানাদটি দুর্বল। হাদিসটির ২০ টি শাহিদ রয়েছে, তন্মধ্যে ৩ টি জাল, ৬ টি অধিক দুর্বল, ৬ টি দুর্বল, ৫ টি হাসান হাদিস পাওয়া যায়। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলঃ দারাকুতনী ১৮৭০, ১৮৭২, ১৮৭৪ ইত্যাদি।যাকাত হিসাব করার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৮/৬. অধ্যায়ঃ যেসব মালের উপর যাকাত ধার্য হয়।
১৭৯৩ আবু সাঈদ আল-খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নবী [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছেনঃ পাঁচ ওয়াসাক –এর কম পরিমাণ খেজুরে, পাঁচ উকিয়া -এর কম পরিমাণ মুদ্রায় এবং পাঁচের কম সংখ্যক উটে যাকাত নেই। {১৭৯৩}
{১৭৯৩} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৪০৫, ১৪৪৭, ১৪৫৯, ১৪৮৪, মুসলিম ৯৭৯, তিরমিজি ৬২৬, নাসাঈ ২৪৪৫, ২৪৪৬, ২৪৭৩, ২৪৭৪, ২৪৭৫, ২৪৭৬, ২৪৮৩,২৪৮৪, ২৪৮৫, ২৪৮৬, ২৪৮৭, আবু দাউদ ১৫৫৮, ১৫৫৯, আহমাদ ১০৬৪৭, ১০৮৬০, ১১০১২, ১১১৭০, ১১১৮১, ১১৩০০, ১১৩১০, ১১৩৩৮, ১১৪০৪, ১১৫২০, মুয়াত্তা মালিক ৫৭৫, ৫৭৬, দারেমী ১৬৩৩, ১৬৩৪, ইরওয়াহ ৮০১, সহীহ, আবু দাউদ ১৩৯০, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।যাকাত হিসাব করার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৭৯৪ জাবির বিন আবদুল্লাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ উটের সংখ্যা পাঁচ এর কম হলে তাতে যাকাত নেই, পাঁচ উকিয়া-এর কম মুদ্রায় যাকাত নেই এবং পাঁচ ওয়াসাক -এর কম ফসলে যাকাত নেই। {১৭৯৪}
{১৭৯৪} মুসলিম ৯৮০, আহমাদ ১৩৭৪৮, সহীহ আবু দাউদ ১৩৯৪, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি মুহাম্মাদ বিন মুসলিম সম্পর্কে আবু আহমাদ বিন আদী আল-জুরজানী বলেন, তিনি সালিহ। আবু হাতিম বিন হিব্বান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি প্রত্যেক অবস্থায় দুর্বল। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে মুখস্ত হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৫৬০৪, ২৬/৪১২ নং পৃষ্ঠা] যাকাত হিসাব করার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৮/৭. অধ্যায়ঃ বর্ষপূর্তির পূর্বে দ্রুত যাকাত আদায় করা।
১৭৯৫ আলী বিন আবু তালিব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
আব্বাস [রাদি.] তাহার মালের বর্ষপূর্তির পূর্বে যাকাত প্রদানের ব্যাপারে নবী [সাঃআঃ]-কে জিজ্ঞেস করেন। তিনি তাহাকে এ ব্যাপারে অনুমতি দেন। {১৭৯৫}
{১৭৯৫} তিরমিজি ৬৭৮, আবু দাউদ ১৬২৪, আহমাদ ৮২৪, দারেমী ১৬৩৬, সহীহ আবু দাউদ ১৪৩৬। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান। উক্ত হাদিসের রাবি ইসমাইল বিন যাকারিয়্যা সম্পর্কে আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি সিকাহ। ইবনি খিরাশ তাহাকে সত্যবাদী বলেছেন। আহমাদ বিন সালিহ আল-জায়লী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় কিছু ভুক করেন করেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৪৪৫, ৩/৯২ নং পৃষ্ঠা] ২. হুজায়্যাহ বিন আদী সম্পর্কে আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তাহার হাদিস থেকে দলীল গ্রহণযোগ্য নয়। আহমাদ বিন সালিহ আল-জায়লী তাহাকে সিকাহ বলেছেন। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। তাহরীরু তাকরীবুত তাহযীব এর লেখক বলেন, তিনি দুর্বল। ঈমাম যাহাবী তাহাকে সত্যবাদী বলেছেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ১১৪১, ৫/৪৮৫ নং পৃষ্ঠা]যাকাত হিসাব করার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
৮/৮. অধ্যায়ঃ যাকাত আদায় করার সময় যে দুআ পড়বে।
১৭৯৬ আবদুল্লাহ্ বিন আবু আওফা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
কোন ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট তাহার মালের যাকাত নিয়ে উপস্থিত হলে তিনি তাহার জন্য দুআ করিলেনঃ
اللّٰهُمَّ صَلِّ عَلَى آلِ أَبِي أَوْفَى
“হে আল্লাহ্! আপনি আবু আওফার পরিবারের প্রতি দয়া করুন”। {১৭৯৬}
{১৭৯৬} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৪৯৮, ৪১৬৬, ৬৩৩২, ৬৩৫৯, মুসলিম ১০৭৮, নাসাঈ ২৪৫৯, আবু দাউদ ১৫৯০, আহমাদ ১৮৬৩২, ১৮৬৫৪, ১৮৯১৫, ১৮৯২৪, সহীহ আবু দাউদ, ১৪১৫, ইরওয়াহ ৮৫৩, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।যাকাত হিসাব করার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৭৯৭ আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমরা যখন যাকাত দিবে তখন তাহার সওয়াবের কথা ভুলে যেও না এবং এ দুআ করোঃ
اللّٰهُمَّ اجْعَلْهَا مَغْنَمًا وَلَا تَجْعَلْهَا مَغْرَمًا
“হে আল্লাহ্! আপনি এই যাকাতকে তওবা কবুলের উসীলা বানিয়ে দিন এবং একে ঋণ পরিশোধের [বা জরিমানার] পর্যায়ভুক্ত না করুন”। {১৭৯৭}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ বানোয়াট।{১৭৯৭} ইরওয়াহ ৮৫২, যঈফাহ ১০৯৬। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ বানোয়াট। উক্ত হাদিসের রাবি বাখতারী বিন উবায়দ সম্পর্কে আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। ইয়াকুব বিন শায়বাহ তাহাকে অপরিচিত বলেছেন। ইবনি আদী তাহাকে মুনকার হিসেবে উল্লেখ করিয়াছেন। দারাকুতনী বলেন, তিনি দুর্বল। ইবনি হিব্বান বলেন, তাহার নুসখায় তিনি আশ্চর্য আশ্চর্য হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৬৪৪, ৪/২৪ নং পৃষ্ঠা] ২. উবায়দ সম্পর্কে আবু হাতিম আর-রাযী, ইবনি হাজার আল-আসকালনী ও ঈমাম দারাকুতনী তাহারা সকলে বলেন, তিনি মাজহুল বা অপরিচিত। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৩৭১৯, ১৯/২১১ নং পৃষ্ঠা] যাকাত হিসাব করার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ জাল হাদিস
৮/৯. অধ্যায়ঃ উটের যাকাত।
১৭৯৮ আবদুল্লাহ্ বিন উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
ইবনি শিহাব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, সালেম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] আমাকে একটি পত্র পড়ে শোনান, যা নবী [সাঃআঃ] তাহার ইনতিকালের পূর্বে যাকাত সম্পর্কে লিখেছিলেন। আমি তাতে যে তথ্য পাই তা হলোঃ পাঁচ উটের যাকাত একটি বকরী, দশ উটে দুটি বকরী, পনের উটে তিনটি বকরী, বিশ উটে চারটি বকরী এবং পচিশ থেকে পঁয়ত্রিশ উটে একটি “বিনতু মাখাদ” [পূর্ণ এক বছর বয়সের উষ্ট্রী], আর “বিনতু মাখাদ” না পাওয়া গেলে একটি “বিন লাবূন” [পূর্ণ দু বছর বয়সের উট]। উটের সংখ্যা পঁয়ত্রিশ থেকে একটি বেশি হলে পঁয়তাল্লিশ সংখ্যক পর্যন্ত একটি “বিনতু লাবূন”। উটের সংখ্যা পঁয়তাল্লিশ-এর একটি বেশি হলে ষাট সংখ্যক পর্যন্ত একটি “হিক্কাহ” [পূর্ণ তিন বছর বয়সের উষ্ট্রী]। উটের সংখ্যা ষাট-এর একটি বেশি হলে পঁচাত্তর সংখ্যক পর্যন্ত একটি “জাযাআহ” [পূর্ণ চার বছর বয়সের উষ্ট্রী]। উটের সংখ্যা পঁচাত্তরের চেয়ে একটি বেশি হলে, নব্বই সংখ্যক পর্যন্ত দুটি “বিনতু লাবূন”। উটের সংখ্যা নব্বই থেকে একটি বেশি হলে এক শত বিশ সংখ্যক পর্যন্ত দুটি হিক্কাহ্ যাকাত স্বরূপ দিতে হইবে। এক শত বিশের অধিক প্রতি পঞ্চাশ উটে একটি হিক্কাহ এবং প্রতি চল্লিশ উটে একটি “বিনতু লাবূন”। {১৭৯৮}
{১৭৯৮} তিরমিজি ৬২১, আবু দাউদ ১৫৬৮, আহমাদ ৪৬১৮, ৪৬২০, দারেমী ১৬২০, ১৬২৬, সহীহ আবু দাউদ ১৪০০-১৪০২, ইরওয়াহ ৩/২৬৬-২৬৭। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।যাকাত হিসাব করার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৭৯৯ আবু সাঈদ আল-খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ উটের সংখ্যা পাঁচ-এর কম হলে কোন যাকাত নাই। পাঁচ থেকে নয় পর্যন্ত উটে একটি বকরী, দশ থেকে চৌদ্দ পর্যন্ত উটে দুটি বকরী, পনের থেকে উনিশ পর্যন্ত উটে তিনটি বকরী, বিশ থেকে চব্বিশ পর্যন্ত উটে চারটি বকরী, পঁচিশ থেকে পঁয়ত্রিশ পর্যন্ত উটে একটি বিনতু মাখাদ। যদি বিনতু মাখাদ না পাওয়া যায়, তবে একটি বিন লাবূন আদায় করিতে হইবে। উটের সংখ্যা বেড়ে পঁয়তাল্লিশ পর্যন্ত পৌঁছলে এতে একটি বিনতু লাবূন। উটের সংখ্যা বেড়ে পঁচাত্তর পৌঁছলে এতে দুটি বিনতু লাবূন। উটের সংখ্যা বেড়ে এক শত বিশ পর্যন্ত পৌঁছলে এতে দুটি হিক্কাহ। উটের সংখ্যা বেড়ে একশত বিশের অধিক হলে প্রতি পঞ্চাশ উটে একটি হিক্কাহ এবং প্রতি চল্লিশ উটে একটি বিনতু লাবূন আদায় করিতে হইবে। {১৭৯৯}
{১৭৯৯} আহমাদ ১০৬৪৭, ১১১৭০, ১১৪০৪, সহীহাহ, ২১৯২। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান। উক্ত হাদিসের রাবি মুহাম্মাদ বিন আকীল বিন খুওয়ায়লীদ আন-নায়সাবুরী সম্পর্কে আহমাদ বিন শুআয়ব আন-নাসাঈ বলেন, তিনি সিকাহ। আবু আহমাদ আল-হাকিম বলেন, তিনি হাফস বিন আবদুল্লাহ থেকে দুটি হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন যাহার অনুসরণ করা যাবে না। আবু হাতিম বিন হিব্বান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় কখনো কখনো ভুল করেন। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে তিনি তাহার হিফয থেকে একাধিক হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন যা মাঝে তিনি ভুল করিয়াছেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৫৪৭৩, ২৬/১২৮ নং পৃষ্ঠা]যাকাত হিসাব করার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
৮/১০. অধ্যায়ঃ যাকাত আদায়কারী কম বয়সী অথবা বেশি বয়সী পশু গ্রহণ করিলে। {আবু বাক্র সিদ্দীক [রাদি.]-এর পত্র}।
১৮০০ আনাস বিন মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
আবু বকর [রাদি.] তাহাকে লিখে পাঠানঃ বিসমিল্লাহির রহ্মানির রাহীম। এটি যাকাতের বিধান, যা রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] আল্লাহ্র নির্দেশে মুসলমানদের জন্য ফরয করিয়াছেন। উটের যত সংখ্যকে [যাকাত বাবদ] বকরী প্রদান করিতে হয়, তাহারপর থেকে তাহার নিকট একটি জাযাআহ যাকাত বাবদ প্রদানের সম-সংখ্যক উট আছে, কিন্তু জাযাআহ নাই, তবে হিক্কাহ্ আছে, তাহার নিকট থেকে হিক্কাহ্ গ্রহণ করা হইবে, উপরন্তু সহজলভ্য্ হলে তাহার থেকে দুটি বকরী অথবা বিশ দিরহাম নেয়া হইবে। যাহার উটের সংখ্যা একটি হিক্কাহ্ প্রদানের পর্যায়ে পৌঁছেছে, কিন্তু তাহার নিকট হিক্কাহ্ নাই, তবে বিনতু লাবূন আছে, তাহার নিকট থেকে [যাকাত স্বরূপ] বিনতু লাবূন গ্রহণ করা হইবে, উপরন্তু তাহার থেকে সহজলভ্য হলে দুটি বকরী অথবা বিশ দিরহাম আদায় করা হইবে। যাহার উটের সংখ্যা একটি বিনতু লাবূন প্রদানের পর্যায়ে পৌঁছেছে, কিন্তু তাহার নিকট বিনতু লাবূন নাই, তবে হিক্কাহ্ আছে, তাহার নিকট থেকে হিক্কাহ্ গ্রহণ করা হইবে এবং যাকাত উসূলকারী তাহাকে দুটি বকরী অথবা বিশ দিরহাম প্রদান করিবে। যাহার যাকাত বিনতু লাবূন প্রদানের পর্যায়ে পৌঁছেছে কিন্তু তাহার নিকট বিনতু লাবূন নাই, তবে বিনতু মাখাদ আছে, তাহার থেকে বিনতু মাখাদ গ্রহণ করা হইবে, উপরন্তু তাহার থেকে দুটি বকরী অথবা বিশ দিরহাম উসূল করা হইবে। যাহার যাকাত বিনতু মাখাদ প্রদানের পর্যায়ে পৌঁছেছে, কিন্তু তাহার নিকট বিনতু মাখাদ নাই, তবে বিনতু লাবূন আছে, তাহার থেকে বিনতু লাবূন গ্রহণ করা হইবে এবং যাকাত উসূলকারী তাহাকে দুটি বকরী অথবা বিশ দিরহাম ফেরত দিবে। বিনতু মাখাদ ফরয হওয়ার ক্ষেত্রে তা না থাকলে এবং বিনতু লাবূন থাকলে তাই গ্রহণ করা হইবে এবং যাকাতদাতাহাকে অতিরিক্ত কিছু দিতে হইবে না। {১৮০০}
{১৮০০} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৪৪৮, ১৪৫০, ১৪৫৩, ১৪৫৪, ২৪৮৭, তিরমিজি ১৭৪৭, নাসাঈ ২৪৪৭, ২৪৫৫, আবু দাউদ ১৫৬৭, আহমাদ ৭৩, ইরওয়াহ ৭৯২, সহীহ আবু দাউদ ১৩৯৯, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি মুহাম্মাদ বিন মুহাম্মাদ বিন মারযুক সম্পর্কে আবু আহমাদ বিন আদী আল-জুরজানী বলেন, তিনি যাচাই-বাছাই ছাড়া হাদিস গ্রহন করেন ও তা বর্ণনা করেন। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি সত্যবাদী। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় সন্দেহ করেন। ঈমাম দারাকুতনী তাহাকে সিকাহ বলেছেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৫৫৮৬, ২৬/২৩৭ নং পৃষ্ঠা]যাকাত হিসাব করার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৮/১১. অধ্যায়ঃ যাকাত আদায়কারী যে ধরনের উট গ্রহণ করিবে।
১৮০১ ইসমু মুবহাম বা নাম অজ্ঞাত হইতে বর্ণীতঃ
যাকাত আদায়কারী কর্মচারী আমাদের নিকট আসলে আমি তাহার হাত ধরে রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর এই নির্দেশ পাঠ করে শুনালামঃ “যাকাতের ভয়ে বিচ্ছিন্ন মালকে একত্র করা এবং একত্রিত মালকে বিচ্ছিন্ন করা যাবে না”। ইতোমধ্যে এক ব্যক্তি তাহার একটি বিরাট ও মোটাতাজা উষ্ট্রী নিয়ে আসলে তিনি তা গ্রহণ করিতে অস্বীকার করেন। এরপর লোকটি আগেরটির চাইতে কম হৃষ্টপুষ্ট উট নিয়ে আসলে তিনি তা গ্রহণ করেন এবং বলেন, কোন্ মাটি আমাকে বহন করিবে এবং কোন্ আকাশ আমাকে ছায়া দান করিবে, যখন আমি রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট কোন মুসলিম ব্যক্তির উৎকৃষ্ট উট নিয়ে হাজির হবো। {১৮০১}
{১৮০১} নাসাঈ ২৪৫৭, আবু দাউদ ১৫৭৯, ১৫৮০, আহমাদ ১৮৩৫৮, দারেমী ১৬৩০, সহীহ আবু দাউদ ১৪০৯। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।যাকাত হিসাব করার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৮০২ জারীর বিন আবদুল্লাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যাকাত আদায়কারী যেন সন্তুষ্ট চিত্তে ফিরে আসে। {১৮০২}
{১৮০২} মুসলিম ৯৮৯, তিরমিজি ৬৪৭, আবু দাউদ ১৫৮৯, আহমাদ ১৮৭২৪, দারেমী ১৬৭০, সহীহ আবু দাউদ ১৪১৪, মুসিলম অনুরূপ। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি জাবির [বিন ইয়াযীদ] সম্পর্কে শুবাহ ইবনিল হাজ্জাজ বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় সত্যবাদী। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি মিথ্যা কথা বলেন। ইয়াহইয়া বিন মাঈন ও জাওযুজানী তাহাকে মিথ্যুক বলেছেন। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় নির্ভরযোগ্য নয়। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৮৭৯, ৪/৪৬৫ নং পৃষ্ঠা] উক্ত হাদিসটি শাহিদ এর ভিত্তিতে সহীহ। হাদিসটির ৭০ টি শাহিদ হাদিস রয়েছে, তন্মধ্যে ১ টি অধিক দুর্বল, ১৪ টি দুর্বল, ২৪ টি হাসান, ৩১ টি সহীহ হাদিস পাওয়া যায়। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলঃ মুসলিম, ৯৪, ১০৮০, তিরমিজি ৬৪৭, আবু দাউদ ১৫৮৯, দারেমী ১৬৭০, আহমাদ ১৮৭০৪, ১৮৭১৫, ১৮৭২৪, ১৮৭২৪, ১৮৭৪৫, ১৮৭৬০, মুজামুল আওসাত ৫৮০৭, শারহুস সুন্নাহ ১৫৬৪ ইত্যাদি।যাকাত হিসাব করার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৮/১২. অধ্যায়ঃ গরু-মহিষের যাকাত।
১৮০৩ মুআয বিন জাবাল [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাকে ইয়ামন পাঠালেন এবং আমাকে নির্দেশ দেন যে, আমি যেন প্রতি চল্লিশ গরুতে পূর্ণ দু বছর বয়সের একটি মাদী বাছুর এবং প্রতি ত্রিশ গরুতে একটি নর বা মাদী বাছুর গ্রহণ করি। {১৮০৩}
{১৮০৩} তিরমিজি ৬২৩, নাসাঈ ২৪৫০, ২৪৫১, ২৪৫২, ২৪৫৩, আবু দাউদ ১৫৭৬, ১৫৯৯, আহমাদ ২১৫০৫, ২১৫৩২, ২১৫৭৯, ২১৬২৪, মুয়াত্তা মালিক ৫৯৮, দারেমী ১৬২৩, ১৬২৪, সহীহ আবু দাউদ, ১৪০৮, ইরওয়াহ ৭৯৫। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।যাকাত হিসাব করার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৮০৪ আবদুল্লাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নবী [সাঃআঃ] বলেন, প্রতি ত্রিশ গরুতে পূর্ণ এক বছর বয়সের একটি নর বা মাদী এবং প্রতি চল্লিশটিতে পূর্ণ দু বছর বয়সের একটি মাদী বাছুর [যাকাত বাবদ আদায় করিতে হইবে]। {১৮০৪}
১৮০৪} তিরমিজি ৬২২, ইরওয়াহ ৩/২৭১। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি সুফইয়ান বিন ওয়াকী সম্পর্কে ঈমাম বুখারী মন্তব্য করিয়াছেন। ঈমাম নাসাঈ বলেন, তিনি নয়। ইবনি হিব্বান বলেন, তিনি সত্যবাদী। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি যাচাই-বাচাই ছাড়া হাদিস গ্রহন করেন ও তা বর্ণনা করেন। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী তাহার হাদিস বর্জন করিয়াছেন। ঈমাম যাহাবী তাহাকে দুর্বল বলেছেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ২৪১৮, ১১/২০০ নং পৃষ্ঠা] উক্ত হাদিসটি সহীহ কিন্তু সুফইয়ান বিন ওয়াকী এর কারণে সানাদটি দুর্বল। হাদিসটির ৪৬৯ টি শাহিদ হাদিস রয়েছে, তন্মধ্যে ২ টি জাল, ৬৯ টি অধিক দুর্বল, ২০২ টি দুর্বল, ১৫০ টি হাসান, ৪৬ টি সহীহ হাদিস পাওয়া যায়। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলঃ বুখারী ১৪০৫, ১৪৪৭, ১৪৪৮, ১৪৫৩, ১৪৫৪, ১৪৫৯, ১৪৮৪, মুসলিম ৯৭৯, ৯৮০, ৯৮১, ৯৮২, তিরমিজি ৬২১, ৬২২, ৬২৬, আবু দাউদ ১৫৫৮, ১৫৫৯, ১৫৬১, ১৫৬৭, ১৫৬৮, ১৫৭২, ১৫৭৫, ১৫৭৬, ২৮৩৩ দারেমী ১৬২০, ১৬২১, ১৬২৮, ১৬৩৩, ১৬৩৪, ১৬৩৫, ১৬৭৭, আহমাদ ৭৩, ৩৮৯৫, ৪৬১৮, ৪৬২০ ইত্যাদি। যাকাত হিসাব করার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৮/১৩. অধ্যায়ঃ ছাগল-ভেড়ার যাকাত।
১৮০৫ আবদুল্লাহ্ বিন উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
অধস্তন রাবী ইবনি শিহাব বলেন, সালিম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] কর্তৃক তাহাঁর ইন্তিকালের আগে যাকাত সম্পর্কে লিখিত পত্র আমাকে পড়ে শুনান। এতে আমি দেখিতে পেলাম যে, চল্লিশ থেকে এক শত বিশ পর্যন্ত বকরীর যাকাত একটি বকরী। এক শত একুশ থেকে দু শত পর্যন্ত বকরীর যাকাত দুটি বকরী। দু শত এক থেকে তিন শত পর্যন্ত বকরীর যাকাত তিনটি বকরী। বকরীর সংখ্যা এর চেয়ে অধিক হলে প্রতি এক শত বকরীতে একটি বকরী। আমি উক্ত পত্রে আরো দেখিতে পেলাম যে, বিচ্ছিন্নকে একত্র এবং একত্রকে বিচ্ছিন্ন করা যাবে না। আমি এতে আরও দেখিতে পেলাম যে, পাঁঠা, অতি বৃদ্ধ ও ক্রুটিযুক্ত পশু যাকাত বাবদ গ্রহণ করা যাবে না। {১৮০৫}
{১৮০৫} তিরমিজি ৬২১, আবু দাউদ ১৫৬৮, আহমাদ ৪৬১৮, ৪৬২০, দারেমী ১৬২০, ১৬২৬, সহীহ আবু দাউদ ১৪০০-১৪০২। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।যাকাত হিসাব করার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৮০৬ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ মুসলমানদের পশুর যাকাত তাহাদের পানি পানের স্থান থেকে গ্রহণ করিতে হইবে। {১৮০৬}
{১৮০৬} সহীহাহ ১৭৭৯, সহীহাহ ১৭৭৯। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি উসামাহ বিন যায়দ সম্পর্কে ইবনি হিব্বান তাহাকে সিকাহ উল্লেখ করে বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। আল-আজলী তাহাকে সিকাহ বলেছেন। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তাহার থেকে হাদিস গ্রহন করা যাবে তবে দলীল হিসেবে নয়। ঈমাম নাসাঈ বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৩১৫, ২/৩৩৪ নং পৃষ্ঠা] যাকাত হিসাব করার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহীহ
১৮০৭ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নবী [সাঃআঃ] বলেন, চল্লিশ থেকে এক শত বিশ পর্যন্ত বকরীর যাকাত একটি বকরী। এক শত একুশ থেকে দু শত পর্যন্ত বকরীর যাকাত দু টি বকরী এবং দু শত এক থেকে তিন শত পর্যন্ত বকরীর যাকাত তিনটি বকরী। বকরীর সংখ্যা তাহার অধিক হলে প্রতি এক শত বকরীতে একটি বকরী যাকাত ধার্য হইবে। যাকাত ফরয হওয়ার আশঙ্কায় একত্রকে বিচ্ছিন্ন এবং বিচ্ছিন্নকে একত্র করা যাবে না। শরীকানা মালের যাকাত আদায়ের বেলায় কারো অংশ থেকে অতিরিক্ত গ্রহণ করা হলে, সে অপর শরীকের অংশ থেকে তা ফেরত পাবে। যাকাত আদায়কারীকে অতি বৃদ্ধ, ত্রুটিযুক্ত বা অন্ধ ও নর পশু দেয়া যাবে না, তবে যাকাত আদায়কারী ইচ্ছা করিলে তা গ্রহণ করিতে পারে। {১৮০৭}
{১৮০৭} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। বায়হাকী ৪/১৩০। ইরওয়াহ ৩/২৬৬। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। ১. ইয়াযীদ বিন আব্দুর রহমান সম্পর্কে আবু আহমাদ আল-হাকিম বলেন, তাহার কিছু হাদিসের ব্যাপারে অনুসরণ করা যাবে না। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি সত্যবাদী। আবু হাতিম বিন হিব্বান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় অধিক ভুল করেন। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় ভুল ও তাদলীস করেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৭৩৩৬, ৩৩/২৭৩ নং পৃষ্ঠা] ২. আবু হিন্দ সম্পর্কে ঈমাম যাহাবী ও ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি মাজহুল বা অপরিচিত। আল-মিযযী বলেন, তিনি অজ্ঞদের একজন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৭৬৮৩, ৩৪/৩৮১ নং পৃষ্ঠা] উক্ত হাদিসটি সহীহ কিন্তু ইয়াযীদ বিন আব্দুর রহমান ও আবু হিন্দ এর কারণে সানাদটি দুর্বল। হাদিসটির শতাধিক শাহিদ হাদিস রয়েছে, তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলঃ বুখারী ১৪০৫, ১৪৪৭, ১৪৪৮, ১৪৫৩, ১৪৫৪, ১৪৫৯, ১৪৮৪, মুসলিম ৯৭৯, ৯৮০, ৯৮১, ৯৮২, তিরমিজি ৬২১, ৬২২, ৬২৬, আবু দাউদ ১৫৫৮, ১৫৫৯, ১৫৬১, ১৫৬৭, ১৫৬৮, ১৫৭২, ১৫৭৫, ১৫৭৬, ২৮৩৩, দারেমী ১৬২০, ১৬২১, ১৬২৬, ১৬২৮, ১৬৩৩, ১৬৩৪, ১৬৩৫, ১৬৭৭, আহমাদ ৭৩, ৩৮৯৫, ৪৬১৮, ৪৬২০, ১০৮৬০, ১১০১২ ইত্যাদি। যাকাত হিসাব করার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৮/১৪. অধ্যায়ঃ যাকাত আদায়কারী কর্মচারির আচরণ।
১৮০৮ আনাস বিন মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যাকাত আদায়ে বা প্রদানে অন্যায় পন্থা অবলম্বনকারী যাকাত বারণকারীর সমতুল্য। {১৮০৮}
{১৮০৮} তিরমিজি ৬৪৬, আবু দাউদ ১৫৮৫, সহীহ আবু দাউদ ১৪১৩, মিশকাত ১৮০১। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান। যাকাত হিসাব করার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
১৮০৯ রাফিবিন খাদীজ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
আমি রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছিঃ ন্যায়নিষ্ঠার সাথে যাকাত আদায়কারী আল্লাহ্র পথে জিহাদকারীর সমতুল্য যাবত না সে নিজ বাড়িতে ফিরে আসে। {১৮০৯}
{১৮০৯} তিরমিজি ৬৪৫, আবু দাউদ ২৯৩৬, আহমাদ ১৫৩৯৯, ১৬৮৩৪, সহীহ মিশকাত, দ্বিতীয় তাহকীক ১৭৮৪, সহীহ আবু দাউদ ২৬০৪। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান সহীহ। ১. মুহাম্মাদ বিন ফুদায়ল সম্পর্কে ইবনি মাঈন তাহাকে সিকাহ বলেছেন। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি সত্যবাদী। ঈমাম নাসাঈ বলেন, কোন সমস্যা নেই। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি শীয়া মতাবলম্বী। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৫৫৪৮, ২৬/২৯৩ নং পৃষ্ঠা] ২. ইউনুস বিন বুকায়র সম্পর্কে আবু বকর বিন আবু শায়বাহ বলেন, তিনি যাচাই-বাচাই ছাড়া হাদিস গ্রহন করেন ও তা বর্ণনা করেন। আবু হাতিম বিন হিব্বান তাহার সিকাহ গ্রন্থে তাহার নাম উল্লেখ করিয়াছেন। আহমাদ বিন শুআয়ব আন-নাসাঈ বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৭১৭১, ৩২/৪৯৩ নং পৃষ্ঠা] যাকাত হিসাব করার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহীহ
১৮১০ আবদুল্লাহ্ বিন উনাইস [রাদি.] ও উমার ইবনিল খাওাব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
আবদুল্লাহ্ বিন উনাইস [রাদি.] ও উমার ইবনিল খাওাব [রাদি.] একদিন যাকাত সম্পর্কে আলোচনা করেন। উমার [রাদি.] বলেন, তুমি কি রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে যাকাতের মাল আত্মসাৎ সম্পর্কে আলোচনা প্রসঙ্গে বলিতে শুনোনিঃ কেউ যদি যাকাতের একটি উট বা একটি ছাগল আত্মসাৎ করে, তবে তাহাকে ক্বিয়ামতের দিন তা বহনরত অবস্থায় হাযির করা হইবে। রাবী বলেন, আবদুল্লাহ্ বিন উনাইস [রাদি.] বলিলেন, হাঁ শুনিয়াছি। {১৮১০}
{১৮১০} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। সহীহাহ ২৩৫৪। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি মুসা বিন জুবায়র সম্পর্কে ইবনি হিব্বান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন ও সিকাহ রাবীর বিপরীত হাদিস বর্ণনা করেন। ঈমাম যাহাবী তাহাকে সিকাহ বললেও ইবনিল কাত্তান বলেন, তাহার অবস্থা সম্পর্কে অজ্ঞাত। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৬২৪৪, ২৯/৪০ নং পৃষ্ঠা] উক্ত হাদিসটি শাহিদ এর ভিত্তিতে সহীহ। উক্ত হাদিসটি সহীহ কিন্তু মুসা বিন জুবায়র এর কারণে সানাদটি দুর্বল। হাদিসটির ১৩৭ টি শাহিদ হাদিস রয়েছে, তন্মধ্যে ২ টি জাল, ১৬ টি অধিক দুর্বল, ৪২ টি দুর্বল, ৪২ টি হাসান, ৩৫ টি সহীহ হাদিস পাওয়া যায়। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলঃ বুখারী ৩০৭৩, মুসলিম ১৮৩৩, আহমাদ ৯২১৯, ১৫৬৩৩, ২৭৯১০, ২১৪৭০, ২১৪৭৩, ২১৯৫৪, মুসান্নাফ আব্দুর রাযযাক ৬৯৪৯, ৬৯৫১, ৬৯৫৩, ৯৪৯৩, ১৮৯২৬, মুজামুল আওসাত ৬৮০১ ইত্যাদি। যাকাত হিসাব করার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৮১১ বর্ণনাকারী হইতে বর্ণীতঃ
ইমরান ইবনিল হুসায়ন [রাদি.] কে যাকাত আদায়কারী হিসেবে নিয়োগ করা হলো। তিনি ফিরে আসলে জিজ্ঞেস করা হলো, যাকাতের মাল কোথায়? তিনি বলেন, মাল নিয়ে আসার জন্য কি আপনি আমাকে পাঠিয়েছিলেন? রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর যুগে আমরা যেখান থেকে যাকাত আদায় করার সেখান থেকেই যাকাত আদায় করতাম এবং যেখানে তা ব্যয় করার সেখানেই তা ব্যয় করতাম। {১৮১১}
{১৮১১} আবু দাউদ ১৫৬১, ১৬২৫, আল হাকিম ফিল মুসতাদরাক ৪/৪২৫। সহীহ আবু দাউদ ১৪৩৭। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। যাকাত হিসাব করার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৮/১৫. অধ্যায়ঃ ঘোড়া ও গোলামের যাকাত।
১৮১২ আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, মুসলমানদের উপর তাহাদের গোলাম ও ঘোড়ার জন্য যাকাত ধার্য হইবে না। {১৮১২}
{১৮১২} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৪৬৩, ১৪৬৪, মুসলিম ৯৮২, তিরমিজি ৬২৮, নাসাঈ ২৪৬৭, ২৪৬৮, ২৪৬৯, ২৪৭০, ২৪৭১, ২৪৭২, আবু দাউদ ১৫৯৪, ১৫৯৫, আহমাদ ৭২৫৩, ৭৩৪৯, ৭৪০৫, ৭৬৯৯, ৯০২৮, ৯০৫৯, ৯১৫৯, ৯২৯৫, ৯৭১২, ৯৭২৫, ৯৮৩০, মুয়াত্তা মালিক ৬১২, দারেমী ১৬৩২, বায়হাকী ৭/২৩৪ তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। যাকাত হিসাব করার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৮১৩ আলী [রাদি.], হইতে বর্ণীতঃ
নবী [সাঃআঃ] বলেন, আমি ঘোড়া ও গোলামের যাকাত থেকে তোমাদের অব্যাহতি দিলাম। {১৮১৩}
{১৮১৩} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। আবু দাউদ ১৫৭৪, বায়হাকী ৪/১২৬ তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ্। হারিস বিন [আবদুল্লাহ] সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন ও আহমাদ বিন সালিহ আল-মিসরী বলেন, তিনি সিকাহ। ঈমাম নাসাঈ বলেন, কোন সমস্যা নেই। আলী ইবনিল মাদানী তাহাকে মিথ্যুক বলেছেন। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তাহার হাদিস গ্রহনযোগ্য নয়। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, হাদিস বর্ণনায় নির্ভরযোগ্য নয়। উক্ত হাদিসটি শাহিদ এর ভিত্তিতে সহীহ। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ১০২৪, ৫/২৩৯ নং পৃষ্ঠা] উক্ত হাদিসটি সহীহ কিন্তু হারিস [বিন আবদুল্লাহ] এর কারণে সানাদটি দুর্বল। হাদিসটির ৩৭০ টি শাহিদ হাদিস রয়েছে। তন্মধ্যে ১ টি জাল, ১৯ টি অধিক দুর্বল, ২০৩ টি দুর্বল, ১২২ টি হাসান, ২৫ টি সহীহ হাদিস পাওয়া যায়। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলঃ বুখারী ১৪৬৩, ১৪৬৪, মুসলিম ৯৮৩, ৯৮৪, তিরমিজি ৬২০, ৬২৮, আবু দাউদ ১৫৭৪, ১৫৯৪, ১৫৯৫, দারেমী ১৬২৯, ১৬৩২ আহমাদ ১১৪, ৭১৩, ৯১৫, ৯৮৭, ১১০০, ১২৩৭, ১২৪৭, দারাকুতনী ১৯০৭, ২০০৩, ২০০৪, ২০০৫, ২০০৬, ২০০৭ ইত্যাদি। যাকাত হিসাব করার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৮/১৬. অধ্যায়ঃ যেসব মালের যাকাত প্রদান বাধ্যতামূলক।
১৮১৪ মুআয বিন জাবাল [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাকে ইয়ামানে পাঠান এবং বলেন, ফসলের যাকাত বাবদ ফসল, ছাগলের যাকাত বাবদ ছাগল, উটের যাকাত বাবদ উট এবং গরুর যাকাত বাবদ গরু আদায় করিবে। {১৮১৪}
{১৮১৪} তিরমিজি ৬২৩, নাসাঈ ২৪৫০, ২৪৫১, ২৪৫২, ২৪৫৩, আবু দাউদ ১৫৭৬, ১৫৯৯, আহমাদ ২১৫০৫, ২১৫৩২, ২১৫৭৯, ২১৬২৪, মুয়াত্তা মালিক ৫৯৮, দারেমী ১৬২৩, ১৬২৪, যঈফাহ ৩৫৪৪। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি শারীক বিন আবু নামির সম্পর্কে আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, তিনি সিকাহ। তবে ইবনিল জারুদ বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় নির্ভরযোগ্য নয়। ইবনি আদী বলেন, তিনি সিকাহ রাবী থেকে হাদিস বর্ণনা করিলে তখন তাহার ঐ হাদিসে কোন সমস্যা নেই। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ২৭৩৭, ১২/৪৭৫ নং পৃষ্ঠা]
যাকাত হিসাব করার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১৮১৫ আম্র বিন শুআয়ব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] এই পাঁচটি ফসলের উপর যাকাত আরোপ করিয়াছেন, যব, গম, খেজুর, কিশমিশ ও ভুট্টা। {১৮১৫}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ অত্যন্ত দুর্বল, চারটির কথা সহীহ ভুট্টা ব্যতীত, ভুট্টার কথা মুনকার।
{১৮১৫} ইরওয়াহ ৮০১। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ অত্যন্ত দুর্বল, চারটির কথা সহীহ ভূট্টা ব্যতীত, ভুট্টার কথা মুনকার। উক্ত হাদিসের রাবি ১. ইসমাঈল বিন আয়্যাশ সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, আহলে শাম থেকে হাদিস বর্ণনায় কোন সমস্যা নেই। আলী ইবনিল মাদানী, ইবনি আবু শায়বাহ, আমর ইবনিল ফাল্লাস ও দুহায়ম বলেন, শাম শহর থেকে হাদিস বর্ণনায় তিনি সিকাহ কিন্তু অন্য শহর থেকে হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৪৭২, ৩/১৬৩ নং পৃষ্ঠা] ২. মুহাম্মাদ বিন উবায়দুল্লাহ সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, কোন সমস্যা নেই। ঈমাম বুখারী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় মুনকার। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল ও তাহার মাঝে একাধিক মুনকার হাদিস পাওয়া যায়। ঈমাম দারাকুতনী বলেন, তিনি প্রত্যাখ্যানযোগ্য। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৫৪৩৪, ২৬/৪১৪ নং পৃষ্ঠা] যাকাত হিসাব করার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য
৮/১৭. অধ্যায়ঃ কৃষিজাত ফসল ও ফসলের যাকাত।
১৮১৬ আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ বৃষ্টির পানি অথবা ঝর্ণার পানি সিক্ত জমিনের উৎপন্ন ফসলের এক-দশমাংশ এবং পানি সেচ দ্বারা সিক্ত জমিনের উৎপন্ন ফসলের এক-বিংশতি অংশ যাকাত দিতে হইবে। {১৮১৬}
{১৮১৬} তিরমিজি ৬৩৯, রওয ৫২৭। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি ১. আসিম বিন আবদুল আযীয বিন আসিম সম্পর্কে আবু বকর আল বায়হাকী বলেন, তাহার মাঝে দুর্বলতা রয়েছে। আবু যুরআহ আর-রাযী, ঈমাম দারাকুতনী ও আহমাদ বিন শুয়াব আন নাসাঈ তাহারা সকলে বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় সন্দেহ করেন। ঈমাম বুখারী বলেন, তাহার ব্যাপারে সমালোচনা রয়েছে। মুহাম্মাদ ইবনিল মুসান্না তাহাকে সিকাহ বলেছেন। তাহরীরু তাকরীবুত তাহযীব এর লেখক বলেন, তিনি দুর্বল। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৩০১৩, ১৩/৪৯৯ নং পৃষ্ঠা] ২. হারিস বিন আব্দুর রহমান বিন আবদুল্লাহ বিন সাদ বিন আবু যুবাব সম্পর্কে আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয় তবে তাহার থেকে হাদিস গ্রহন করা যায়। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তাহার থেকে হাদিস বর্ণনা করায় কোন দোষ নেই। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় সন্দেহ করেন। ঈমাম যাহাবী তাহাকে সিকাহ বলেছেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ১০২৫, ৫/২৪৪ নং পৃষ্ঠা] উক্ত হাদিসটি সহীহ কিন্তু আসিম বিন আবদুল আযীয বিন আসিম ও হারিস বিন আব্দুর রহমান বিন আবদুল্লাহ বিন সাদ বিন আবু যুবাব এর কারণে সানাদটি দুর্বল। হাদিসটির ২১৭ টি শাহিদ হাদিস রয়েছে, তন্মধ্যে ১ টি জাল, ১ টি অধিক দুর্বল, ১৮ টি দুর্বল, ৫৬ টি হাসান, ১৪১ টি সহীহ হাদিস পাওয়া যায়। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলঃ বুখারী ১৪৮৩, মুসলিম ৯৮২, তিরমিজি ৬৩৯, ৬৪০, আবু দাউদ ১৫৯৬, ১৫৯৮, আহমাদ ১২৪৪, ১৪২৫৬, ১৪২৫৭, ১৪৩৮৯, দারাকুতনী ১৮৯৮, ২০১৩, ২০১৪, ২০১৭, ২০১৮, মুসান্নাফ আব্দুর রাযযাক ৭২৩৯, ৭২৪০, ১৪৩৩১, মুজামুল আওসাত ৩১২, ৩৩৯, ৪৯৪৩ ইত্যাদি। যাকাত হিসাব করার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৮১৭ আবদুল্লাহ বিন উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
আমি রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছিঃ বৃষ্টি, নদী ও ঝর্ণার পানিতে সিক্ত জমিনের ফসলের উশর [এক-দশমাংশ] এবং পানিসেচ দ্বারা সিক্ত জমিনের উৎপন্ন ফসলে অর্ধ-উশর [বিশ ভাগের এক ভাগ] যাকাত দিতে হইবে। {১৮১৭}
{১৮১৭} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৪৮৩, তিরমিজি ৬৪০, নাসাঈ ২৪৮৮, আবু দাউদ ১৫৯৬, ইরওয়াহ ৭৯৯, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।যাকাত হিসাব করার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৮১৮ মুআয বিন জাবাল [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাকে ইয়ামানে পাঠান এবং নির্দেশ দেন যে, আমি যেন বৃষ্টি এবং ঝর্ণার পানির সাহায্যে উৎপন্ন ফসলে উশর [এক-দশমাংশ] এবং সেচ ব্যবস্থার মাধ্যমে সিক্ত যমীনের ফসলের অর্ধ-উশর যাকাত হিসেবে গ্রহণ করি।
ইয়াহ্ইয়া বিন আদাম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] এ হাদীসে উল্লিখিত কয়েকটি শব্দের ব্যাখ্যায় বলেন, যে যমীন বৃষ্টির পানিতে সিক্ত হয়। যে যমীনে বিশেষভাবে মেঘ ও বৃষ্টির পানির সাহায্যে ফসল উৎপাদন করা হয়। বৃষ্টির পানি ব্যতীত অন্য কোন পানি তাতে পৌঁছে না। আঙ্গুর বা অনুরূপ শিকড় জাতীয় গাছ, যাহার শিকড় ভূগর্ভস্থ পানি পর্যন্ত পৌঁছে যায় এবং পাঁচ-ছয় বছর পর্যন্ত বাঁচার জন্য তাতে পানি সেচের প্রয়োজন হয় না। [আরবী] হলো মাঠের পানি যা ঢলের রূপ ধারণ করে। [আরবী] হলো ঢলের পানির চেয়ে পরিমাণে কম বেগে আসা পানি। {১৮১৮}
{১৮১৮} নাসাঈ ২৪৯০, আহমাদ ২১৫৩২, দারেমী ১৬৬৭, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি আসিম বিন আবুন নাজুদ সম্পর্কে আবু বকর আল বাযযাহার বলেন, তিনি হাফিয ছিলেন না, তাহার হাদিস কেউ বর্জন করেছে এ মর্মে আমাদের জানা নেই। আবু জাফার আল উকায়লী বলেন, তাহার স্মৃতিশক্তি দুর্বল ছাড়া অন্য কোন দোষ নেই। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি একজন সালিহ ব্যাক্তি। ঈমাম বুখারী বলেন, তাহার ব্যাপারে সমালোচনা রয়েছে। তাহার স্মৃতিশক্তি দুর্বল। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় সন্দেহ করেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৩০০২, ১৩/৪৭৩ নং পৃষ্ঠা] যাকাত হিসাব করার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহীহ
৮/১৮. অধ্যায়ঃ অনুমানে খেজুর ও আঙ্গুরের পরিমাণ নির্ধারণ।
১৮১৯ আত্তাব বিন আসীদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নবী [সাঃআঃ] লোকেদের আঙ্গুর ও অন্যান্য ফলের পরিমাণ অনুমান করে নির্ধারণের জন্য লোক পাঠাতেন। {১৮১৯}
{১৮১৯} তিরমিজি ৬৪৪ নাসাঈ ২৬১৮, আবু দাউদ ১৬০৩, বায়হাকী ৪/১৬৪ গয়াতুল মারাম ৩৬৪ পৃষ্ঠা। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি মুহাম্মাদ বিন সালিহ আত-তাম্মার সম্পর্কে আবু দাউদ আস-সাজিসতানী তাহাকে সিকাহ বললেও ঈমাম দারাকুতনী তাহাকে মাতরুক হিসেবে উল্লেখ করিয়াছেন। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় নির্ভরযোগ্য নয়। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৫২৯৩, ২৫/৩৭৭ নং পৃষ্ঠা] যাকাত হিসাব করার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১৮২০ ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নবী [সাঃআঃ] খায়বার জয় করে তথাকার [ইহূদী] আদিবাসীদের সাথে এ চুক্তি করেন যে, খায়বারের ভূমি ও সোনা-রূপা তাহাঁর {রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]} সরকারের মালিকানাভুক্ত থাকিবে। খায়বারবাসীগণ তাহাঁকে বলল, আমরা জমাজমি [কৃষিকার্য] সম্পর্কে অধিক জ্ঞাত। অতএব আপনি ভূমি [চাষাবাদের জন্য] এ শর্তে আমাদেরকে ছেড়ে দিন যে, ফল ও ফসলের অর্ধেক আমাদের এবং অর্ধেক আপনাদের। রাবী বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] উক্ত শর্তে খায়বারের ভূমি তাহাদেরকে [চাষাবাদের জন্য] দিলেন। খেজুর গাছের ফল কাটার সময় হলে তিনি আবদুল্লাহ্ বিন রাওয়াহা [রাদি.]-কে তাহাদের নিকট পাঠান। তিনি গিয়ে অনুমানে ফলের পরিমাণ নিরূপণ করিলেন। মদীনাবাসীর নিকট এ অনুমানের পরিভাষা হলো খারস। তিনি বলেন, বাগানে এই এই পরিমাণ ফল হইবে। ইহূদীরা বলল, হে বিন রাওয়াহা! আপনি আমাদের উপর অধিক ধার্য করিয়াছেন। বিন রাওয়াহা [রাদি.] বলেন, আমি তো অনুমান করছি এবং যা ধার্য করছি তাহার অর্ধেকই তো তোমাদের দিবো। তাহারা বলল, এটাই সঠিক [ইনসাফ] এবং এ কারণেই আসমান-যমীন প্রতিষ্ঠিত আছে। অতঃপর তাহারা বলল, আপনি যা বলেছেন, আমরা তাতে সম্মত হলাম। {১৮২০}
{১৮২০} আবু দাউদ ৩৪১০, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান। উক্ত হাদিসের রাবি উমার বিন আয়্যুব সম্পর্কে আবু বকর বিন আবু শায়বাহ বলেন, তিনি সিকাহ। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি সালিহ। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় সন্দেহ করেন। ঈমাম দারাকুতনী বলেন, তিনি দুর্বল। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৪২০৪, ২১/২৭৮ নং পৃষ্ঠা] ।যাকাত হিসাব করার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
৮/১৯. অধ্যায়ঃ যাকাত বাবদ নিকৃষ্ট মাল দেয়া নিষেধ ।
১৮২১ আওফ বিন মালিক আল-আশজাঈ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বাইরে এসে দেখেন যে, এক ব্যক্তি মাসজিদে কয়েকটি খেজুরের ছড়া ঝুলিয়ে রেখেছে। তাহাঁর হাতে ছিল একটি ছড়ি। তিনি ছড়ি দিয়ে এগুলোতে টোকা দিলেন এবং বললেনঃ ইচ্ছা করিলে এই দানকারী আরও উৎকৃষ্টগুলো দান করিতে পারতো। এই দানের মালিক কিয়ামাতের দিন তাহার নিকৃষ্ট মালই খেতে পাবে। {১৮২১}
{১৮২১} নাসাঈ ২৪৯৩, আবু দাউদ ১৬০৮, আহমাদ ২৩৪৫৬, সহীহ আবু দাউদ ১৪২৬। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান। উক্ত হাদিসের রাবি আবদুল হামিদ বিন জাফার সম্পর্কে ইবনি হিব্বান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় কখনো কখনো ভুল করেন। আহমাদ বিন শুআয়ব আন-নাসাঈ বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় কখনো কখনো সন্দেহ করেন, তাহার শীয়া মতাবলম্বী হওয়ার ব্যাপারে অভিযোগ রয়েছে। সুফইয়ান আস-সাওরী বলেন, তাহার মাঝে দুর্বলতা রয়েছে। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৩৭০৯, ১৬/৪১৬ নং পৃষ্ঠা] যাকাত হিসাব করার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
১৮২২ বারা বিন আযিব [রাদি.], হইতে বর্ণীতঃ
মহান আল্লাহ্র বাণী
وَمِمَّا أَخْرَجْنَا لَكُمْ مِنْ الْأَرْضِ وَلَا تَيَمَّمُوا الْخَبِيثَ مِنْهُ تُنْفِقُونَ
[অনুবাদ]ঃ “এবং আমি যা ভূমি থেকে উৎপাদন করে দেই তাহার মধ্যে যা উৎকৃষ্ট তা ব্যয় করো এবং তা থেকে নিকৃষ্ট অংশ ব্যয় করার সংকল্প করো না” [২ঃ২৬৭] সম্পর্কে বর্ণিত। তিনি বলেন, এ আয়াত আনসারদের সম্পর্কে নাযিল হইয়াছে। কেননা তাহাদের বাগানে উৎপন্ন খেজুর আধাপাকা হলে তাহারা খেজুরের কিছু ছড়া রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর মাসজিদের দু খুঁটির মাঝখানে বাঁধা রশিতে ঝুলিয়ে রাখতেন। গরীব মুহাজিরগণ উক্ত ছড়া থেকে খেজুর খেতেন। দানকারীদের ধারণা ছিলো যে, ভালো খেজুরের সাথে নিম্ন মানের খেজুরও থাকলে দোষের কিছু নেই। যারা এরূপ করতো তাহাদের সম্পর্কে এ আয়া-ত. নাযীল হয়
وَلَا تَيَمَّمُوا الْخَبِيثَ مِنْهُ تُنْفِقُونَ
[অনুবাদ]ঃ “তোমরা তা থেকে নিকৃষ্ট অংশ ব্যয় করার সংকল্প করো না। কেননা তোমরাও সন্তুষ্টচিত্তে এমন মাল গ্রহণ করিবে না।” অর্থাৎ কেউ যদি তোমাদেরকে এমন নিকৃষ্ট জিনিস উপহারস্বরূপ দেয় তবে হয়তো তোমরা দাতাহার প্রতি চক্ষুলজ্জায় অসন্তুষ্ট চিত্তে তা গ্রহণ করিবে আর বলবে, তোমাদের এরূপ উপহারের প্রয়োজন ছিল না। তোমরা জেনে রাখো! আল্লাহ্ তোমাদের দান-খয়রাত থেকে মুখাপেক্ষীহীন। [আল্লাহ্ তায়ালা প্রয়োজনের উর্ধ্বে, তিনি প্রশংসিত]। {১৮২২}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ, তালীক ইবনি মাজাহ।{১৮২২} তিরমিজি ২৯৮৭, তালীক ইবনি মাজাহ। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি আবসাত বিন নসর সম্পর্কে মুসা বিন হারুন বলেন, তেমন কোন সমস্যা নেই। ঈমাম বুখারী বলেন, তিনি সত্যবাদী। আহমাদ বিন শুআয়ব আন নাসাঈ বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় অধিক ভুল করেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৩২১, ২/৩৫৭ নং পৃষ্ঠা] ২. সুদ্দী সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন সাইদ আল কাত্তান বলেন, কোন সমস্যা নেই। আহমাদ বিন হাম্বল ও আল আজালী তাহাকে সিকাহ বললেও ইবনি আদী বলেন, হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। ইয়াহইয়া ইবনি মাঈন বলেন তাহার হাদিস দুর্বল। আবু জাফার আল-উকায়লী বলেন, তিনি দুর্বল। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি যাচাই-বাচাই ছাড়া হাদিস গ্রহন করেন ও তা বর্ণনা করেন। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তাহার থেকে হাদিস গ্রহন করা যায় তবে তা দলীলযোগ্য হইবে না। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৪৬২, ৩/১৩২ নং পৃষ্ঠা] ।যাকাত হিসাব করার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৮/২০. অধ্যায়ঃ মধুর যাকাত ।
১৮২৩ আবু সায়্যারাহ আল-মুতা-ঈ-য়্যু [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
আমি বললাম, হে আল্লাহ্র রসূল! আমার মধু আছে। তিনি বলেন, এক-দশমাংশ [উশর] আদায় করো। আমি বললাম, হে আল্লাহ্র রসূল! ভূমিটি আমাকে খাস জমি হিসাবে দান করুন। অতএব তিনি আমাকে তা খাস হিসাবে দান করিলেন। {১৮২৩}
{১৮২৩} আহমাদ ১৬৬০৩, বায়হাকী ৪/১২১ তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান। উক্ত হাদিসের রাবি সুলায়মান বিব মুসা সম্পর্কে আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, তিনি সিকাহ। আবু হাতিম বিন হিব্বান বলেন, তিনি একজন ফকিহ ছিলেন। আতা বিন আবু রাবাহ বলেন, তিনি শামের যুককদের নেতা ছিলেন। ঈমাম বুখারী তাহাকে মুনকার বলেছেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ২৫৭১, ২৩/৯২ নং পৃষ্ঠা] যাকাত হিসাব করার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
১৮২৪ আবদুল্লাহ্ বিন আম্র [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নবী [সাঃআঃ] মধুর এক-দশমাংশ [উশর] আদায় করিয়াছেন। {১৮২৪}
{১৮২৪} নাসাঈ ২৪৯৯, আবু দাউদ ১৬০০, ইরওয়াহ ৮১০, সহীহ আবু দাউদ ১৪২৪। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি নুআয়ম বিন হাম্মাদ সম্পর্কে আল আজালী সিকাহ বলেছেন। ইবনি হিব্বান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় কখনো কখনো সন্দেহ ও ভুল করেন। মুসলিম বিন কাসিম বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় অধিক ভুল করেন। আবু আহমাদ আল হাকিম বলেন, তিনি কিছু হাদিসের ব্যাপারে বিপরীত হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন। আবু বিশর আদ দাওলানী বলেন, তিনি দুর্বল। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, তিনি হাদিস গ্রহনের ব্যাপারে শিথিল। আহমাদ বিন সালেহ আল জায়লী বলেন, তিনি সিকাহ। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় অধিক ভুল করেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৬৪৫১, ২৯/৪৬৬ নং পৃষ্ঠা] ২. উসামাহ বিন যায়দ সম্পর্কে ইবনি হিব্বান তাহাকে সিকাহ উল্লেখ করে বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। আল-আজলী তাহাকে সিকাহ বলেছেন। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তাহার থেকে হাদিস গ্রহন করা যাবে তবে দলীল হিসেবে নয়। ঈমাম নাসাঈ বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৩১৭, ২/৩৪৭ নং পৃষ্ঠা] যাকাত হিসাব করার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহীহ
৮/২১. অধ্যায়ঃ সদাকাতুল ফিতর [ফিতরা]।
১৮২৫ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] সদকাতুল ফিতর [ফিতরা] বাবদ এক সা খেজুর অথবা এক সাযব দান করার নির্দেশ দিয়েছেন। আবদুল্লাহ্ [রাদি.] বলেন, পরবর্তীতে লোকেরা দু মুদ্দ গমকে এক সার সমান ধরে নিয়েছে। {১৮২৫}
{১৮২৫} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৫০৩, ১৫০৪, ১৫০৭, ১৫১১, ১৫১২, মুসলিম ৯৮৪, তিরমিজি ৬৭৫, ৬৭৬, নাসাঈ ২৫০০, ২৫০১, ২৫০২, ২৫০৩, ২৫০৪, ২৫০৫, ২৫১৬, আবু দাউদ ১৬১১, ১৬১৩, ১৬১৪, আহমাদ ৪৪৭২, ৫১৫২, ৫২৮১, ৫৩১৭, ৫৭৪৭, ৫৯০৬, ৬১৭৯, মুয়াত্তা মালিক ৬২৭, দারেমী ১৬৬১, ১৬৬২, সহীহ আবু দাউদ ১৪৩২, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। যাকাত হিসাব করার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৮২৬ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] প্রত্যেক স্বাধীন-পরাধীন [দাস] এবং পুরুষ ও নারীর উপর সদাকাতুল ফিতর হিসাবে এক সাযব অথবা এক সাখেজুর নির্ধারণ করিয়াছেন। {১৮২৬}
{১৮২৬} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৫০৩, ১৫০৪, ১৫০৭, ১৫১১, ১৫১২, মুসলিম ৯৮৪, তিরমিজি ৬৭৫, ৬৭৬, নাসাঈ ২৫০০, ২৫০১, ২৫০২, ২৫০৩, ২৫০৪, ২৫০৫, ২৫১৬, আবু দাউদ ১৬১১, ১৬১৩, ১৬১৪, আহমাদ ৪৪৭২, ৫১৫২, ৫২৮১, ৫৩১৭, ৫৭৪৭, ৫৯০৬, ৬১৭৯, মুয়াত্তা মালিক ৬২৭, দারেমী ১৬৬১, ১৬৬২, সহীহ আবু দাউদ ১৪২৮-১৪৩২, ইরওয়াহ ৮৩২, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।
যাকাত হিসাব করার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৮২৭ ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] রোযাদারের অনর্থক কথাবার্তা ও অশালীন আচরণের কাফ্ফারাস্বরূপ এবং গরীব-মিসকীনদের আহারের সংস্থান করার জন্য সদাকাতুল ফিতর [ফিতরা] নির্ধারণ করিয়াছেন। যে ব্যক্তি ঈদের সলাতের পূর্বে তা পরিশোধ করে [আল্লাহ্র নিকট]-তা গ্রহণীয় দান। আর যে ব্যক্তি ঈদের সলাতের পর তা পরিশোধ করে, তাও দানসমূহের অন্তর্ভুক্ত একটি দান। {১৮২৭}
{১৮২৭} আবু দাউদ ১৬০৯, বায়হাকী ৪/১৯৭, ইরওয়াহ ৮৪৩, সহীহ আবু দাউদ ১৪২৭।তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান।
যাকাত হিসাব করার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
১৮২৮ কায়স বিন সাদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] যাকাতের বিধান নাযিল হওয়ার পূর্বে আমাদেরকে সদাকাতুল ফিতর আদায় করার নির্দেশ দেন। পরে যাকাতের হুকুম নাযিল হলে এ ব্যাপারে আমাদেরকে নির্দেশও দেননি এবং নিষেধও করেননি। তবে আমরা পূর্বোক্ত নির্দেশ পালন করে যাচ্ছি। {১৮২৮}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। তালীক ইবনি মাজাহ। {১৮২৮} নাসাঈ ২৫০৭, আহমাদ ২৩৩২৮, তালীক ইবনি মাজাহ্। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।যাকাত হিসাব করার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৮২৯ আবু সাঈদ আল-খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদের মাঝে বর্তমান থাকা অবস্থায় আমরা সাদকাতুল ফিতর বাবদ এক সাখাদ্য [গম] বা এক সাখেজুর বা এক সাযব বা এক সাপনির অথবা এক সাকিসমিস দান করতাম। আমরা অব্যাহতভাবে এ নিয়মই পালন করে আসছিলাম। অবশেষে মুআবিয়াহ [রাদি.] মদিনায় আমাদের নিকট আসেন এবং লোকেদের সাথে আলোচনা প্রসঙ্গে বলেন, আমি শাম দেশের উত্তম গমের দু মুদ্দ পরিমাণকে এখানকার এক সার সমান মনে করি। তখন থেকে লোকেরা এ কথাটিকেই গ্রহণ করে নিলো। আবু সাঈদ [রাদি.] বলেন, আমি কিন্তু সারা জীবন ঐ হিসাবেই সদকাতুল ফিতর পরিশোধ করে যাবো, যে হিসাবে আমি রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর যুগে তা পরিশোধ করতাম। {১৮২৯}
{১৮২৯} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৫০৫, ১৫০৬, ১৫০৮, ১৫১০, মুসলিম ৯৮৫, তিরমিজি ৬৭৩, নাসাঈ ২৫১১, ২৫১২, ২৫১৩, ২৫১৪, ২৫১৭, ২৫১৮, আবু দাউদ ১৬১৬, ১৬১৮, আহমাদ ১০৭৯৮, ১১৩০১, ১১৫২২, দারেমী ১৬৬৩, ১৬৬৪, সহীহ আবু দাউদ ১৪৩৩, ইরওয়াহ ৩/৩৩৭, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ্।যাকাত হিসাব করার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৮৩০ রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর মুআয্যিন উমার বিন সাদ [মাকবূল] হইতে বর্ণীতঃ
রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] সদাকাতুল ফিতর হিসাবে এক সাখেজুর বা এক সাযব বা এক সাসাদা যব আদায় করার নির্দেশ দেন। {১৮৩০}
{১৮৩০} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। বায়হাকী ৭/২৪, আল-হাকিম ফিল মুসতাদরাক ১/৪০৭, তালীক ইবনি মাজাহ জইফ আবু দাউদ ২৮৩। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি ১. আব্দুর রহমান বিন সাদ বিন আম্মার বিন সাদ আল-মুআযযিন সম্পর্কে ইবনি হিব্বান তাহাকে সিকাহ বললেও ইয়াহইয়া বিন মাঈন তাহাকে দুর্বল বলেছেন। ঈমাম বুখারী বলেন, তাহার ব্যাপারে সমালোচনা রয়েছে। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি দুর্বল। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৩৮২৮, ১৭/১৩২ নং পৃষ্ঠা] ২. আমর বিন হাফস সম্পর্কে ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি যাচাই-বাচাই ছাড়া হাদিস গ্রহন করেন ও তা বর্ণনা করেন। তাহরীরু তাকরীবুত তাহযীব এর লেখক বলেন, তিনি দুর্বল। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৪২১৫, ২১/২০৩ নং পৃষ্ঠা] উক্ত হাদিসটি সহীহ কিন্তু আব্দুর রহমান বিন সাদ বিন আম্মার বিন সাদ আল-মুআযযিন ও আমর বিন হাফস এর কারণে সানাদটি দুর্বল। হাদিসটির ৭০৪ টি শাহিদ হাদিস রয়েছে, তন্মধ্যে ১ টি জাল, ১৫ টি অধিক দুর্বল, ১২২ টি দুর্বল, ২৩৬ টি হাসান, ৩৩০ টি সহীহ হাদসি পাওয়া যায়। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলঃ বুখারী ১৫০৩, ১৫০৪, ১৫০৫, ১৫০৭, ১৫০৮, ১৫০৯, ১৫১১, ১৫১২, মুসলিম ৯৮৪, ৯৮৫, ৯৮৬, ৯৮৭, তিরমিজি ৬৭৪, ৬৭৫, ৬৭৬, আবু দাউদ ১৬১১, ১৬১৩, ১৬১৯, ১৬২০, ১৬২২, দারেমী ১৬৬১, ১৬৬২, ১৬৬৩, ১৬৬৪, আহমাদ ৩২৮১, ৪৪৭২, ৫১৫২, ৫২৮১, ৫৩১৭, ৫৭৪৭, ৫৯০৬, ৬১৭৯, ১১৫২২ ইত্যাদি।যাকাত হিসাব করার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৮/২২. অধ্যায়ঃ উশর ও খাজনা।
১৮৩১ আলা ইবনিল হাদরামী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুলাহ [সাঃআঃ] আমাকে বাহরায়ন বা হাজার এলাকায় পাঠান। আমি দু সহোদর মুসলমান ও মুশরিক ভাইয়ের শরীকানা বাগানে পৌঁছে মুসলমান ভাইয়ের নিকট থেকে উশর এবং মুশরিক ভাইয়ের নিকট থেকে খাজনা আদায় করতাম। {১৮৩১}
{১৮৩১} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। আহমাদ ২০০৪, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি মুগিরাহ আল-আযদী সম্পর্কে আল্লামাহ আল-বুসায়রী তাহার যাওয়ায়িদ গ্রন্থে বলেছেন, তিনি অজ্ঞাত। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, আমি তাহার মাঝে কোন সমস্যা দেখি না। আহমাদ বিন সালিহ আল-জায়লী বলেন, তিনি সিকাহ। ইবনি হাজার আল-আসকালনী তাহাকে সত্যবাদী বলেছেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৬১৪২, ২৮/৩৯৫ নং পৃষ্ঠা] ২. মুহাম্মাদ বিন যায়দ সম্পর্কে আল্লামাহ বুসায়রী তাহার যাওয়ায়িদ গ্রন্থে বলেছেন, তিনি অজ্ঞাত। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তাহার থেকে হাদিস গ্রহনে কোন দোষ নেই। আবু হাতিম বিন হিব্বান তাহার সিকাহ গ্রন্থে তাহার নাম উল্লেখ করিয়াছেন। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি মাকবুল। ঈমাম দারাকুতনী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। ঈমাম যাহাবী তাহাকে সত্যবাদী বলেছেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৫২২৬, ২৫/২২৮ নং পৃষ্ঠা] ৩. হায়্যান আরাজ সম্পর্কে যদিও ইবনি মাঈন তাহাকে নির্ভরযোগ্য বলেছেন। এবং ইবনি মাঈন তাহাকে সিকাহ বলে গণ্য করিয়াছেন কিন্তু আল্লামা মিযযী তাহার আত-তাহযীব গ্রন্থে উল্লেখ করিয়াছেন যে, আলা সুত্রে তাহার বর্ণনাটি মুরসাল। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ১৫৭৮, ৭/৪৭৬ নং পৃষ্ঠা] যাকাত হিসাব করার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৮/২৩. অধ্যায়ঃ ষাট সা-এ এক ওয়াস্ক।
১৮৩২ আবু সাঈদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, ষাট সাএ এক ওয়াস্ক। {১৮৩২}
{১৮৩২} আহমাদ ১১১৭০, ইরওয়াহ ৩/২৭৫, জইফ আবু দাউদ ২৭৩। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি আবুল বাখতারী সম্পর্কে আবু আহমাদ আল-হাকিম বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি সিকাহ। আহমাদ বিন সালিহ আল জায়লী বলেন, তিনি সিকাহ তবে শীয়া মতাবলম্বী। সুলায়মান বিন দাউদ আত-তায়লাসী বলেন, আবুল বাখতারী আবু সাঈদ থেকে হাদিস শ্রবন করেন নি। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ২৩৪২, ১১/৩২ নং পৃষ্ঠা] যাকাত হিসাব করার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১৮৩৩ জাবির বিন আবদুল্লাহ্ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ ষাট সা-এ এক ওয়াস্ক। {১৮৩৩}
{১৮৩৩} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। বায়হাকী ৪/১৭৬। জইফ আবু দাউদ ২৭৩। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ অত্যন্ত দুর্বল। উক্ত হাদিসের রাবি ১. আলী ইবনিল মুনযীর সম্পর্কে আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি সত্যবাদী। ইবনি হাজার আল-আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে শিয়া মতাবলম্বী। মাসলামাহ বিন কাসিম বলেন, তাহার হাদিস বর্ণনায় কোন সমস্যা নেই তবে তিনি শিয়া মতাবলম্বী। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৪১৪০, ১২/১৪৫ নং পৃষ্ঠা] ২. মুহাম্মাদ বিন উবায়দুল্লাহ সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, কোন সমস্যা নেই। ঈমাম বুখারী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় মুনকার। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল ও তাহার মাঝে একাধিক মুনকার হাদিস পাওয়া যায়। ঈমাম দারাকুতনী বলেন, তিনি প্রত্যাখ্যানযোগ্য। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৫৪৩৪, ২৬/৪১ নং পৃষ্ঠা] যাকাত হিসাব করার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ খুবই দুর্বল
৮/২৪. অধ্যায়ঃ নিকটাত্মীয়কে দান-খয়রাত করা।
১৮৩৪ আবদুল্লাহ্ [রাদি.]-এর স্ত্রী যায়নাব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
আমি রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট জিজ্ঞেস করলাম, আমার যাকাত আমার স্বামী ও আমার তত্ত্বাবধানাধীন ইয়াতীমদের ভরণ-পোষণের জন্য দান করিলে তা যথেষ্ট হইবে কি?
১/১৮৩৪ [১]. হাসান বিন মুহাম্মাদ ইবনিস-সাব্বাহ, আবু মুয়াবিয়াহ, আমাশ, শাকীক, আবদুল্লাহ্র স্ত্রী যায়নাব এর ভাতিজা আমর ইবনিল হারিস, আবদুল্লাহ্ [রাদি.] এর স্ত্রী যায়নাব [রাদি.]। {১৮৩৪}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।{১৮৩৪} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৪৬৬, মুসলিম ১০০০, তিরমিজি ৬৩৫, নাসাঈ ২৫৮৩, ১৫৬৫২, ২৬৫০৮, দারেমী ১৬৫৪, ইরওয়া ৮৭৮,৮৮৪। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।যাকাত হিসাব করার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৮৩৫ উম্মু সালামাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদেরকে দান-খয়রাত করার নির্দেশ দিলেন। আবদুল্লাহ্ [রাদি.]-এর স্ত্রী যায়নাব [রাদি.] বলিলেন, আমার দরিদ্র স্বামী এবং আমার ভাইয়ের কয়েকটি ইয়াতীম সন্তান রয়েছে। আমি সব সময় তাহাদের জন্য আমার এই এই পরিমাণ সম্পদ ব্যয় করে আসছি। তাহাদেরকে আমার যাকাত দেয়া যাবে কি? তিনি বলেন, হাঁ। রাবী বলেন, যায়নাব [রাদি.] কুটিরশিল্প উৎপাদন করে উপার্জন করিতেন। {১৮৩৫}
তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ ভিন্ন একটি সানাদে হাদিসটি সহীহ।{১৮৩৫} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৪৬৭, ৫৩৬৯, মুসলিম ১০০১, আহমাদ ২৫৯৭০, ২৬১৩১, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ ভিন্ন একটি সানাদে হাদিসটি সহীহ।যাকাত হিসাব করার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য
৮/২৫. অধ্যায়ঃ অপরের নিকট যাচ্ঞা করা নিন্দনীয়।
১৮৩৬ যুবায়র ইবনিল আওয়াম [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, তোমাদের কেউ যদি রশি নিয়ে পাহাড়ে গিয়ে এক বোঝা কাঠ সংগ্রহ করে তা নিজে পিঠে বহন করে নিয়ে এসে বিক্রয় করে তাহার মূল্য দ্বারা সামর্থ্যবান হয়, তবে তা তাহার জন্য লোকের কাছে হাত পেতে বেড়ানোর চেয়ে অবশ্যই উত্তম। লোকেরা তাহাকে দিতেও পারে, নাও দিতে পারে। {১৮৩৬}
{১৮৩৬} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৪৭১, ১৪১০, ১৪৩২, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। যাকাত হিসাব করার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৮৩৭ সাওবান [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ কে আমার একটি কথা কবুল করিবে, তাহলে আমি তাহার জান্নাতের জামিন হবো। আমি বললাম, আমি। তিনি বললেনঃ তুমি লোকদের নিকট কিছু প্রার্থনা করিবে না। রাবী বলেন, সাওবান [রাদি.]-এর চাবুক আরোহিত অবস্থায় নিচে পড়ে যেতো, কিন্তু তিনি কাউকে বলিতেন না, এটি আমাকে তুলে দাও। তিনি বাহন থেকে নেমে তা তুলে নিতেন। {১৮৩৭}
{১৮৩৭} নাসাঈ ২৫৯০, আবু দাউদ ১৬৪৩, মিশকাত ১৮৫৭, সহীহ আবু দাউদ ১৪৫৯-১৪৫১। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।যাকাত হিসাব করার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৮/২৬. অধ্যায়ঃ স্বচ্ছল হওয়া সত্ত্বেও যে ব্যক্তি যাচ্ঞা করে।
১৮৩৮ আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, যে ব্যক্তি নিজের সম্পদ বৃদ্ধির লক্ষ্যে মানুষের মাল চেয়ে বেড়ায়, সে মূলত জাহান্নামের অঙ্গার চেয়ে বেড়ায়। অতএব সে তা কম সংগ্রহ করুক বা বেশী সংগ্রহ করুক। {১৮৩৮}
{১৮৩৮} মুসলিম ১০৪১, আহমাদ ৭১২৩, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি মুহাম্মাদ বিন ফুদায়ল সম্পর্কে ইবনি মাঈন তাহাকে সিকাহ বলেছেন। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি সত্যবাদী। ঈমাম নাসাঈ বলেন, কোন সমস্যা নেই। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি শীয়া মতাবলম্বী। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৫৫৪৮, ২৬/২৯৩ নং পৃষ্ঠা] যাকাত হিসাব করার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৮৩৯ আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ সচ্ছল ও সুস্থ-সবল ব্যক্তির জন্য যাকাত গ্রহণ করা হালাল নয়। {১৮৩৯}
{১৮৩৯} নাসাঈ ২৫৯৭, আহমাদ ৮৮১৮, ইরওয়াহ ৮৭৬-৮৭৯। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। যাকাত হিসাব করার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৮৪০ আবদুল্লাহ্ বিন মাসঊদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, যাহার স্বনির্ভর থাকার মত সম্পদ থাকা সত্ত্বেও [অন্যের কাছে কিছু] চায়, সে কিয়ামাতের দিন আহত মুখমন্ডলসহ হাজির হইবে। জিজ্ঞেস করা হলো, হে আল্লাহ্র রসূল! সচ্ছলতাহার সীমা কতটুকু? তিনি বলেন, পঞ্চাশ দিরহাম অথবা তাহার সমমূল্যের সোনা। এক ব্যক্তি সুফ্ইয়ানকে বলল, শুবাহ তো হাকীম বিন জুবায়রের সূত্রে হাদিস বর্ণনা করেন না। তখন সুফ্ইয়ান বলিলেন, আমার নিকট এ হাদিস যায়দ [রাদি.] মুহাম্মাদ বিন আবদুর রহমানের সূত্রে বর্ণনা করিয়াছেন। {১৮৪০}
{১৮৪০} তিরমিজি ৬৫০, নাসাঈ ২৫৯২, আবু দাউদ ১৬২৬, আহমাদ ৩৬৬৬, ৪১৯৫, ৪৪২৬, দারেমী ১৬৪০, সহীহাহ ৪৯৯। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি হাকিম বিন জুবায়র সম্পর্কে আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল ও ইদতিরাব করেন। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল ও মুনকার। ঈমাম নাসাঈ বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, কোন সমস্যা নেই। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ১৪৫২, ৭/১৬৫ নং পৃষ্ঠা] উক্ত হাদিসটি সহীহ কিন্তু হাকিম বিন জুবায়র এর কারণে সানাদটি দুর্বল। হাদিসটির ৩৩২ টি শাহিদ হাদিস রয়েছে, তন্মধ্যে ৩৩ টি জাল, ৪৯ টি অধিক দুর্বল, ৭৮ টি দুর্বল, ৮৬ টি হাসান, ৮৬ টি সহীহ হাদিস পাওয়া যায়। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলঃ বুখারী ১৪৭৫, মুসলিম ১০৪২, ১০৪৩, তিরমিজি ৬৫০, আবু দাউদ ১৬২৬, ১৬২৭, ১৬২৯, দারেমী ১৬৪০, ১৬৪৫, আহমাদ ১২৫৬, ৩৬৬৬, ৪১৯৫, ৪৪২৬, ৪৬২৪, ৫৫৮৪, দারাকুতনী ১৯৮০, ১৯৮১, ১৯৮২, ১৯৮৩, ১৯৮৫ ইত্যাদি।যাকাত হিসাব করার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৮/২৭. অধ্যায়ঃ যাহার জন্য যাকাত গ্রহণ করা হালাল।
১৮৪১ আবু সাঈদ আল-খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, সচ্ছল ব্যক্তির জন্য যাকাত গ্রহণ করা হালাল নয়। তবে পাঁচজন ধনী ব্যক্তির জন্য তা হালালঃ যাকাত আদায়কারী কর্মচারী [বেতন বাবদ], আল্লাহ্র পথে জিহাদরত ব্যক্তি, যে ব্যক্তি তাহার নিজস্ব মাল দ্বারা যাকাতের মাল ক্রয় করে, কোন গরীব ব্যক্তি তাহার প্রাপ্ত যাকাত কোন সচ্ছল ব্যক্তিকে উপহারস্বরূপ দিলে এবং ঋণগ্রস্ত ব্যক্তি।
রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, সচ্ছল ব্যক্তির জন্য যাকাত গ্রহণ করা হালাল নয়। তবে পাঁচজন ধনী ব্যক্তির জন্য তা হালালঃ যাকাত আদায়কারী কর্মচারী [বেতন বাবদ], আল্লাহ্র পথে জিহাদরত ব্যক্তি, যে ব্যক্তি তাহার নিজস্ব মাল দ্বারা যাকাতের মাল ক্রয় করে, কোন গরীব ব্যক্তি তাহার প্রাপ্ত যাকাত কোন সচ্ছল ব্যক্তিকে উপহারস্বরূপ দিলে এবং ঋণগ্রস্ত ব্যক্তি। {১৮৪১}
{১৮৪১} আবু দাউদ ১৬৩৫, ১৬৩৭, আহমাদ ১১১৪৪, মুয়াত্তা মালিক ৬০৪, ইরওয়াহ ৮৭০, তালীক ইবনি মাজাহ ২৩৬৮-২৩৭৩। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।যাকাত হিসাব করার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৮/২৮. অধ্যায়ঃ যাকাত দানের ফাদীলাত।
১৮৪২ আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, কেউ যদি কোন পবিত্র মাল দান করে, আর আল্লাহ্ পবিত্র মাল ছাড়া অন্য কিছু গ্রহণ করেন না, তবে দয়াময় আল্লাহ্ তা তাহাঁর ডান হাতে গ্রহণ করেন, যদিও তা একটি খেজুর হয়। আল্লাহ্র হাতে তা বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়ে পাহাড়ের চেয়েও বড় হয়ে ওঠে। আল্লাহ্ তা সে ব্যক্তির জন্য বৃদ্ধি করিতে থাকেন, যেমন তোমাদের কেউ ঘোড়া অথবা উটের বাচ্চাকে লালন-পালন করে বড় করে। {১৮৪২}
{১৮৪২} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৪১০, মুসলিম ১০১৪, তিরমিজি ৬৬১, ৬৬২, নাসাঈ ২৫২৫, আহমাদ ৭৫৭৮, ৮১৮১, ৮৭৩৮, ৮৯৯২, ৯১৪২, ৯১৪৯, ৯২৮১, ৯৭৩৮, ১০৫৬২, ১০৫৯৬, দারেমী ১৬৭৫, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।যাকাত হিসাব করার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৮৪৩ আদী বিন হাতিম [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমাদের সাথেই তোমাদের রব কোন দোভাষীর মধ্যস্থতা ছাড়াই কথা বলবেন। সে তাহার সামনের দিকে তাকিয়ে কেবল আগুনই দেখিতে পাবে। সে তাহার ডান দিকে তাকিয়ে কেবল তাহার পূর্বকৃত কার্যকলাপই দেখিতে পাবে। সে তাহার বাম দিকে তাকিয়ে কেবল তাহার পূর্বকৃত কার্যকলাপই দেখবে। অতএব তোমাদের কেউ যদি আগুন থেকে বাঁচতে চায়, সে যেন এক টুকরা খেজুর দান করে হলেও তাই করে। {১৮৪৩}
{১৮৪৩} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৪১৩, ১৪১৭, ৩৫৯৫, ৬০২৩, ৬৫৩৯, ৬৫৬৩, ৭৪৪৩, ৭৫১২, মুসলিম ১০১৬, তিরমিজি ২৪১৫, নাসাঈ ২৫৫২, ২৫৫৩, আহমাদ ১৭৭৮২, বায়হাকী ৭/২৯২ তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। যাকাত হিসাব করার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৮৪৪ সালমান বিন আমির আদ-দাব্বী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, [অনাত্নীয়] গরীব-মিসকিনকে যাকাত দান করিলে তা যাকাতই [যাকাতের সওয়াব পাওয়া যায়]। আর আত্নীয়-স্বজনকে যাকাত দিলে দ্বিগুন [যাকাতের সওয়াব এবং আত্নীয়তা সম্পর্ক রক্ষার সওয়াব] হয়। {১৮৪৪}
{১৮৪৪} নাসাঈ ২৫৮২, আহমাদ ১৫৭৯৪, ২৭৫৪৪, ২৭৭৪৮, দারেমী ১৬৮০,মিশকাত ১৯৩৯, ইরওয়াহ ৮৮৩। আল হাকিম ফিল মুসতাদরাক ৪/২৮৮, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি উম্মু রায়িহ বিন্তু সুলায় সম্পর্কে ঈমাম যাহাবী বলেন, তিনি অজ্ঞাত ব্যাক্তি। তাহার থেকে হাফসাহ ব্যাতিত কেউ হাদিস বর্ণনা করেনি। আল্লামা আলবানী সানাদের বর্ণনাকারী রাবাব সম্পর্কে আপত্তি তুলেছেন এবং যারা হাদিসটিকে সহীহ বলেছেন, রাবাব থাকার কারণে তিনি তা সমালোচনা করিয়াছেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৭৮৩৬, ৩৫/১৭১ নং পৃষ্ঠা] উক্ত হাদিসটি শাহিদ এর ভিত্তিতে সহীহ। যাকাত হিসাব করার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
Leave a Reply