রোযা ও রমজান মাসের ফযিলত – নতুন চাঁদ দেখার সাক্ষ্য প্রদান
রোযা ও রমজান মাসের ফযিলত – নতুন চাঁদ দেখার সাক্ষ্য প্রদান
রোযা বা রোজা
রোযা রমজান কদর চাঁদ ঈদ সেহরি ইফতার ইতিকাফ দুয়া ইঃ>> সুনানে ইবনে মাজাহ হাদিস এর মুল সুচিপত্র পড়ুন
পর্বঃ ৭, অধ্যায়ঃ (১-১২)=১২টি
৭/১. অধ্যায়ঃ রোযা বা রোযাহার ফযিলত।
৭/২. অধ্যায়ঃ রমজান মাসের ফযিলত
৭/৩. অধ্যায়ঃ সন্দেহের দিনের [ইয়াওমুশ-শাক্ক] রোযা।
৭/৪. অধ্যায়ঃ শাবান মাসে রোযা রাখতে রাখতে রমজান মাসে পৌছা।
৭/৫. অধ্যায়ঃ রমজান মাস শুরু হওয়ার আগের দিন রোযা রাখা নিষেধ, কিন্তু কারো নিয়মিত রোযা রাখতে রাখতে সেদিন পৌঁছলে তাহার জন্য নয়।
৭/৬. অধ্যায়ঃ নতুন চাঁদ দেখার সাক্ষ্য প্রদান।
৭/৭. অধ্যায়ঃ চাঁদ দেখে রোযা রাখো এবং চাঁদ দেখে ইফতাহার [ঈদ] করো।
৭/৮. অধ্যায়ঃ ঊনত্রিশ দিনেও মাস হয়।
৭/৯. অধ্যায়ঃ ঈদের দু মাস
৭/১০. অধ্যায়ঃ সফররত অবস্থায় রোযা রাখা।
৭/১১. অধ্যায়ঃ সফররত অবস্থায় রোযা না রাখা।
৭/১২. অধ্যায়ঃ গর্ভবতী নারী ও দুগ্ধপোষ্য শিশুর মায়ের রোযা না রাখার সুযোগ।
৭/১. অধ্যায়ঃ রোযা বা রোযাহার ফযিলত।
১৬৩৮আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আল্লাহ্র মর্জি হলে আদম সন্তানের প্রতিটি সৎকাজের প্রতিদান দশ গুণ থেকে সাত শত গুণ পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়। আল্লাহ্ বলেন, তবে রোযা ব্যতীত, তা আমার জন্যই [রাখা হয়] এবং আমিই তাহার প্রতিদান দিবো। সে তাহার প্রবৃত্তি ও পানাহার আমার জন্যই ত্যাগ করে। রোযাদারের জন্য দুটি আনন্দঃ একটি আনন্দ তাহার ইফতারের সময় এবং আরেকটি আনন্দ রয়েছে তাহার প্রভু আল্লাহ্র সাথে তাহার সাক্ষাতের সময়। রোযাদার ব্যক্তির মুখের গন্ধ আল্লাহ্র নিকট কস্তুরীর ঘ্রাণের চেয়েও অধিক সুগন্ধময়। {১৬৩৮}
{১৬৩৮} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৮৯৪, ১৯০৪, মুসলিম ১১৫১, তিরমিজি ৭৬৪, নাসাঈ ২২১৪, ৬৬১৬, ২২১৭, ২২১৮, ২২১৯, ৭১৩৪, ৭১৫৪, ৭৫৫২, ৭৬৩৬, ৭৭৩০, ৮৮৬৮, ৮৮৯৩, ৯০২২, ৯০৬৭, ৯০৯৯, ৯৪২১, ২৭২৫৫, ২৭২৭১, ৯৮১৯, ৯৯১৮, ১০১২৭, ১০১৭৬, ১০৩১৩, মুয়াত্তা মালিক ৬৯০, দারেমী ১৭৬৯, ১৭৭০ সহীহ আত তাহারগীব, ৯৬৮, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৬৩৯ উসমান [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছিঃ যুদ্ধের মাঠে ঢাল যেমন তোমাদের রক্ষাকারী, রোযাও তদ্রূপ জাহান্নাম থেকে রক্ষা পাওয়ার ঢাল। {১৬৩৯}
{১৬৩৯} নাসাঈ ২২৩০, ২২৩১, আহমাদ ১৫৮৩৯, ১৫৮৪৪, ১৭৪৪৫, সহীহ তাহারগীব ৯৭১। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৬৪০ সাহ্ল বিন সাদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নবী [সাঃআঃ] বলেন, জান্নাতের একটি দরজার নাম রায়্যান। কিয়ামাতের দিন সেখান থেকে আহ্বান করা হবেঃ রোযাদারগণ কোথায়? যে ব্যক্তি রোযাদার হইবে, সে উক্ত দরজা দিয়ে প্রবেশ করিবে এবং যে উক্ত দরজা দিয়ে প্রবেশ করিবে, সে কখনও পিপাসার্ত হইবে না। {১৬৪০}
{১৬৪০} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৮৯৬, ৩২৫৭, মুসলিম ১১৫২, তিরমিজি ৭৬৫, নাসাঈ ২২৩৬, ২২৩৭, আহমাদ ২২৩১১, ২২৩৩৫ সহীহ তাহারগীব ৯৬৯, বুখারী, মুসলিম পিপাসার কথা ব্যতীত। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি হিশাম বিন সাদ সম্পর্কে আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তাহার মুখস্তশক্তি দুর্বল। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তাহার হাদিস গ্রহন করা যায় কিন্তু দলীলযোগ্য নয়। ইবনি হাজার আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় সন্দেহ করেন। তাহার শিয়া মতাবলম্বী হওয়ার ব্যাপারে অভিযোগ আছে। [তাহজিবুল কামাল রাবী নং ৬৫৭৭, ৩০/২০৪ নং পৃষ্ঠা] হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৭/২. অধ্যায়ঃ রমজান মাসের ফযিলত
১৬৪১ আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে ও সাওয়াবের আশায় রমজান মাসের রোযা রাখলো, তাহার পূর্বের গুণাহরাশি মাফ করা হলো। {১৬৪১}
{১৬৪১} ১৩২৬ এর অনুরূপ, সহীহ তাহারগীব ৯৮২, ইরওয়াহ ৯০৬, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি মুহাম্মাদ বিন ফুদায়ল সম্পর্কে ইবনি মাঈন তাহাকে সিকাহ বলেছেন। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি সত্যবাদী। ঈমাম নাসাঈ বলেন, কোন সমস্যা নেই। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি শীয়া মতাবলম্বী। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৫৫৪৮, ২৬/২৯৩ পৃষ্ঠা]।হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৬৪২ আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, যখন রমজান মাসের প্রথম রাত আসে, তখন শয়তান ও অভিশপ্ত জিনদের শৃংখলিত করা হয়, জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়, তাহার একটি দরজাও খোলা হয় না, জান্নাতের দরজাসমূহ খুলে দেয়া হয়, এর একটি দরজাও বন্ধ হয় না এবং একজন ঘোষক ডেকে বলেন, হে সৎকর্মপরায়ণ ব্যক্তি! অগ্রসর হও, হে অসৎকর্মপরায়ণ! থেমে যাও। আল্লাহ্ [রমযানের] প্রতিটি রাতে অসংখ্য লোককে জাহান্নাম থেকে নাজাত দেন। {১৬৪২}
{১৬৪২} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৮৯৮, ১৮৯৯, ৩২৭৭, মুসলিম ১০৭৯, তিরমিজি ৬৮২, নাসাঈ ২০৯৭, ২০৯৮, ২০৯৯, ২১০০, ২১০১, ২১০২, ২১০৪, ২১০৫, ২১০৬, আহমাদ ৭১০৮, ৭৭২৩, ৭৮৫৭, ৮৪৬৯, ৮৬৯৭, ৮৭৬৫, ৮৯৫১, ৯২১৩, দারেমী ১৭৭৫ তালীকুর রগীব ২/৬৮। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৬৪৩ জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আল্লাহ্ তাআলা প্রতি ইফতারের অর্থাৎ প্রতি রাতে বেশ সংখ্যক লোককে [জাহান্নাম থেকে] মুক্তি দেন। {১৬৪৩}
{১৬৪৩} তাহারগীব ৯৯১, ৯৯২। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান সহীহ।হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহীহ
১৬৪৪ আনাস বিন মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রমজান মাস শুরু হলে রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ তোমাদের নিকট এ মাস সমুপস্থিত। এতে রয়েছে এমন এক রাত, যা হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম। এ থেকে যে ব্যক্তি বঞ্চিত হলো সে সমস্ত কল্যাণ থেকেই বঞ্চিত হলো। কেবল বঞ্চিত ব্যক্তিরাই তা থেকে বঞ্চিত হয়। {১৬৪৪}
{১৬৪৪} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন, সহীহ তাহারগীব ৯৮৯, ৯৯০। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি মুহাম্মাদ বিন বিলাল সম্পর্কে আবু জাফার আল-উকায়লী বলেন, আমার দৃষ্টিতে তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় সন্দেহ করেন। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, আমি তাহার ব্যাপারে ভাল ছাড়া খারাফ কিছু শুনিনি। ঈমাম যাহাবী বলেন, মানুষ যেভাবে ভুল করে তিনিও সেরকম ভুল করেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৫০৯৯, ২৪/৫৪৫ নং পৃষ্ঠা] হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহীহ
৭/৩. অধ্যায়ঃ সন্দেহের দিনের [ইয়াওমুশ-শাক্ক] রোযা।
১৬৪৫ সিলাহ বিন যুফার [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
সন্দেহের দিনে আমরা আম্মার [রাদি.] এর নিকট উপস্থিত ছিলাম। তখন একটি [ভুনা] বকরী পেশ করা হলো। কতক লোক পিছনে সরে গেলো। আম্মার [রাদি.] বলেন, যে ব্যক্তি আজ রোযা রাখলো সে তো অবশ্যই আবুল কাসিম রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]–এর অবাধ্যাচরণ করিল। {১৬৪৫}
{১৬৪৫}তিরমিজি ৬৮৬, নাসাঈ ২১৮৮, আবু দাউদ ২৩৩৪, দারেমী ১৬৮২ তালীক ইবনি খুযাইমাহ ১৯১৪, ইরওয়াহ ৯৬১, সহীহ আবু দাউদ ২০২২। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি আবু খালিদ আল আহমার সম্পর্কে আবু আহমাদ বিন আলী জুরজানী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হুজ্জাহ নয়। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি সত্যবাদী। ইবনি হাজার আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। আলী ইবনিল মাদানী বলেন, তিনি সিকাহ। তাহরীরু তাকরীবুত তাহযীব এর লেখক বলেন, তিনি সত্যবাদী ও সিকাহ রাবীর সদৃস্য। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ২৫০৪, ১১/৩৯৪ নং পৃষ্ঠা] হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৬৪৬ আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
চাঁদ দেখার একদিন আগে থেকে রোযা রাখতে রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] নিষেধ করিয়াছেন। {১৬৪৬}
{১৬৪৬} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। সহীহ আবু দাউদ ২০১৫। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি আবদুল্লাহ বিন সাঈদ সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন সাঈদ আল কাত্তান বলেন, আমি তাহার মজলিসে বসে জানতে পেরেছি যে, তাহার মাঝে মিথ্যা রয়েছে। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তাহার হাদিস প্রত্যাখ্যানযোগ্য। ইবনি মাঈন বলেন, তিনি সিকাহ নন। ঈমাম বুখারী ও আমর বিন আলী আল-ফাল্লাস তাহাকে প্রত্যাখ্যান করিয়াছেন। আবু যুরআহ তাহাকে দুর্বল সাব্যস্ত করিয়াছেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৩৩০৫, ৩৫/৩১ নং পৃষ্ঠা]। উক্ত হাদিসটি সহীহ কিন্তু আবদুল্লাহ বিন সাঈদ এর কারণে দুর্বল। হাদিসটির ৭৫১ টি শাহিদ হাদিস রয়েছে, তন্মধ্যে ৩৭ টি অধিক দুর্বল। ১৯৫ টি দুর্বল, ১৯৩ টি হাসান, ৩২৬ টি সহীহ হাদিস পাওয়া যায়। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলঃ বুখারী ১৯০০, ১৯০৬, ১৯০৭, ১৯০৯, মুসলিম ১০৮০, তিরমিজি ৬৮৪, ৬৮৫, ৬৮৮, আবু দাউদ ২৩২৬, ২৩২৭, ২৩৩৫, ২৩৪২, দারেমী ১৬৮৪, ১৬৮৫, ১৬৮৯, ১৬৯০, ১৬৯১ ইত্যাদি। হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৬৪৭ কাসিম আবু আবদুর রহমান [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি মুআবিয়া বিন আবু সুফ্ইয়ান [রাদি.] কে মিম্বারের উপর বলিতে শুনেছেন, রমজান মাস শুরু হওয়ার পূর্বে রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিতেনঃ রোযা অমুক অমুক দিন। আমরা আগেই সেই রোযা রাখবো। অতএব যাহার ইচ্ছা সে আগে রোযা রাখুক, আর যাহার ইচ্ছা পরে রাখুক। {১৬৪৭}
{১৬৪৭} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি হায়সাম বিন হুমায়দ সম্পর্কে আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, আমি তাহার ভাল ছাড়া খারাফ কিছু জানি না। ঈমাম নাসাঈ বলেন, কোন সমস্যা নেই। ইবনি হিব্বান তাহাকে সিকাহ বলেছেন। আবু মুসহির বলেন, তিনি দুর্বল ও কাদিরিয়া মতাবলম্বী ছিলেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৬৬৪৩, ৩০/৩৭০ নং পৃষ্ঠা] ২. আলা ইবনিল হারিস সম্পর্কে আলী ইবনিল মাদানী বলেন, তিনি সিকাহ। ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তিনি সিকাহ তবে কাদিরিয়া মতাবলম্বী। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৪৫৬০, ২২/৪৭৮ নং পৃষ্ঠা] ৩. কাসিম আবু আব্দুর রহমান সম্পর্কে আল আজালী বলেন, তাহার থেকে হাদিস গ্রহন করা যায় তবে তিনি সিকাহ নন। ঈমাম তিরমিজি তাহাকে সিকাহ বলেছেন। ইবনি হাজার আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনার ক্ষেত্রে অপরিচিত। মুফাদদাল বিন গাসসান বলেন, তিনি কুফুরী নয় এমন কওলী বা আমলীগত ফিসক এর সাথে জড়িত। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৪৮০০, ২৩/৩৮৩ নং পৃষ্ঠা]।হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৭/৪. অধ্যায়ঃ শাবান মাসে রোযা রাখতে রাখতে রমজান মাসে পৌছা।
১৬৪৮ উম্মু সালামাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] শাবান মাসে রোযা রাখতে রাখতে রমাদানে পৌঁছতেন। {১৬৪৮}
{১৬৪৮} তিরমিজি ৭৩৬, নাসাঈ ২১৭৫, ২১৭৬, ২৩৫২, ২৩৫৩, আবু দাউদ ২৩৩৬, আহমাদ ২৬০২২, ২৬১১৩, দারেমী ১৭৩৯ সহীহ আবু দাউদ ২০২৪। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি যায়দ ইবনিল হুবাব সম্পর্কে আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি সত্যবাদী কিন্তু হাদিস বর্ণনায় অধিক ভুল করেন। আলী ইবনিল মাদানী ও উসমান বিন আবু শায়বাহ তাহাকে সিকাহ বলেছেন। ইবনি হাজার আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে সাওরীর হাদিস বর্ণনায় ভুল করিয়াছেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ২০৯৫, ১০/৪০ নং পৃষ্ঠা] হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৬৪৯ রবীআহ ইবনিল গায [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি আয়িশা [রাদি.] এর নিকট রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর রোযা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেন। তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] প্রায় গোটা শাবান মাস রোযা রাখতেন, এমনকি এভাবে রমজান মাসে উপনীত হইতেন। {১৬৪৯}
{১৬৪৯} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৯৬৯, মুসলিম ৭৪৬, আবু দাউদ ১৩৪২, ২৪৩৪, আহমাদ ২৪৭৮৯, ২৫৫২২, ২৫৭৭৮, মুয়াত্তা মালিক ৬৮৮, সহীহ আবু দাউদ ২১০১। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান সহীহ। হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহীহ
৭/৫. অধ্যায়ঃ রমজান মাস শুরু হওয়ার আগের দিন রোযা রাখা নিষেধ, কিন্তু কারো নিয়মিত রোযা রাখতে রাখতে সেদিন পৌঁছলে তাহার জন্য নয়।
১৬৫০ আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যেন রমজান মাসের এক দিন বা দুদিন আগে রোযা রাখা শুরু না করে। তবে যে ব্যক্তি অনবরত রোযা রাখতে অভ্যস্ত, সে ঐ দিন রোযা রাখতে পারে। {১৬৫০}
{১৬৫০} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৯১৪, মুসলিম ১০৮২, তিরমিজি ৬৮৪, ৬৮৫, নাসাঈ ২১৭২, ২১৭৩, আবু দাউদ ২৩৩৫, আহমাদ ২৭২১১, ২৭৩১৭, দারেমী ১৬৮৯ সহীহাহ ২৩৯৮, সহীহ আবু দাউদ ২০২৩, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি আবদুল হামিদ বিন হাবীব বিন আবুল ঈশরীন সম্পর্কে ঈমাম দারাকুতনী ও আবু হাতিম আর-রাযী সিকাহ বললেও ইবনি হিব্বান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় কখনো কখনো ভুল করেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৩৭১০, ১৬/৪২০ নং পৃষ্ঠা]।হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৬৫১ আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ শাবান মাসের অর্ধেক অতিবাহিত হওয়ার পর থেকে রমজান মাস না আসা পর্যন্ত কোন রোযা নাই। {১৬৫১}
{১৬৫১} তিরমিজি ৭৩৮; আবু দাউদ ২৩৩৭; আহমাদ ৯৪১৪; দারেমী ১৭৪০ মিশকাত ১৯৭৪, সহীহ আবু দাউদ ২০২৫। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি আবদুল আযীয বিন মুহাম্মাদ সম্পর্কে মুহাম্মাদ বিন সাদ বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ করেন। ইবনি হিব্বান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। মালিক বিন আনাস তাহাকে সিকাহ বলেছেন। আহমাদ বিন শুআয়ব আন নাসাঈ বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। ইবনি হাজার আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে তাহার নিজ কিতাব ছাড়া অন্যত্র থেকে হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৩৪৭০, ১৮/১৮৭ নং পৃষ্ঠা] হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৭/৬. অধ্যায়ঃ নতুন চাঁদ দেখার সাক্ষ্য প্রদান।
১৬৫২ ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
এক বেদুইন নবী [সাঃআঃ]-এর নিকট এসে বলল, আমি আজ রাতে [সন্ধ্যায়] নতুন চাঁদ দেখেছি। তিনি বলেন, তুমি কি সাক্ষ্য দাও যে,
أَتَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ وَأَنَّ مُحَمَّدًا رَسُولُ اللهِ
আশহাদু আন লা ইলাহা ইল্লাললাহু ওয়া আন্না মুহাম্মাদান রসুলুহ “আল্লাহ্ ব্যতীত কোন ইলাহ নেই এবং মুহাম্মাদ আল্লাহ্র রসূল”?
সে বলল, হাঁ। তিনি বলেন, হে বিলাল! ওঠো এবং লোকদের মধ্যে ঘোষণা দাও যে, তাহারা যেন আগামীকাল থেকে রোযা রাখে। {১৬৫২}
{১৬৫২} তিরমিজি ৬৯১; নাসাঈ ২১১২, ২১১৩; আবু দাউদ ২৩৪০; দারেমী ১৬৯২ ইরওয়াহ, ৯০৭, জইফ আবু দাউদ ৪০২-৪০৩। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি সিমাক বিন হারব সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তিনি সিকাহ। ইয়াকুব বিন শায়বাহ বলেন, তাহার পূর্বে বর্ণিত হাদিস যারা শ্রবন করিয়াছেন তা সহীহ। ইবনি হিব্বান বলেন, তিনি সিকাহ তবে হাদিস বর্ণনায় অধিক ভুল করেন। আবদুল্লাহ ইবনিল মুবারাক বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ২৫৭৯, ১২/১১৫ নং পৃষ্ঠা]হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১৬৫৩ আবু উয়ায়মির বিন আনাস বিন মালিক [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সহাবী এবং আনসার সম্প্রদায়ভুক্ত আমার এক চাচা [ইসমু মুবহাম বা নাম অজ্ঞাত] আমার নিকট বর্ণনা করেন, মেঘের কারণে আমরা শাওয়ালের নতুন চাঁদ দেখিতে পাইনি। আমরা [পরের দিন] রোযা রাখলাম। দিনের শেষভাগে একটি কাফেলা রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট এসে গতকাল চাঁদ দেখার সাক্ষ্য দিলো। রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] লোকেদেরকে ইফতাহার [রোযা ভঙ্গ] করার এবং পরের দিন ঈদগাহে যাওয়ার নির্দেশ দেন। {১৬৫৩}
{১৬৫৩} নাসাঈ ১৫৫৭, আবু দাউদ ১১৫৭ ইরওয়াহ ৬৩৪, সহীহ আবু দাউদ ১০৫০। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৭/৭. অধ্যায়ঃ চাঁদ দেখে রোযা রাখো এবং চাঁদ দেখে ইফতাহার [ঈদ] করো।
১৬৫৪ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমরা চাঁদ দেখে রোযা রাখা শুরু করিবে এবং চাঁদ দেখে ইফতাহার [রোযাহার সমাপ্তি] করিবে। তোমাদের আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকলে [ত্রিশ দিন] পূর্ণ করিবে। ইবনি উমার [রাদি.] নতুন চাঁদ দেখার একদিন আগেও রোযা রাখতেন। {১৬৫৪}
{১৬৫৪} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৯০০, ১৯০৬, ১৯০৭, মুসলিম ১০৮০, নাসাঈ ২১২০, ২১২১, ২১২২, আবু দাউদ ২৩২০, আহমাদ ৪৪৭৪, ৪৫৯৭, ৫২৭২, ৬২৮৭, মুয়াত্তা মালিক ৬৩৩, ৬৩৪, দারেমী ১৬৮৪ ইরওয়াহ ৪/১০০, সহীহ আবু দাউদ ২০০৯। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি আবু মারওয়ান মুহাম্মাদ বিন উসমান আল উসমানী সম্পর্কে আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি সিকাহ। আবু হাতিম বিন হিব্বান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন ও সিকাহ রাবীর বিপরীত হাদিস বর্ণনা করেন। ইবনি হাজার আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। ঈমাম বুখারী তাহাকে সত্যবাদী বলেছেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৫৪৫৪, ২৬/৮১ নং পৃষ্ঠা] হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৬৫৫ আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমরা নতুন চাঁদ দেখে রোযা রাখা শুরু করিবে এবং [শাওয়ালের] নতুন চাঁদ দেখে ইফতাহার [ঈদ] করিবে। তোমাদের আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকলে তোমরা ৩০ দিন রোযা রাখবে। {১৬৫৫}
{১৬৫৫} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৯০৯, মুসলিম ১০৮১, তিরমিজি ৬৮৪, নাসাঈ ২১১৭, ২১১৮, ২১১৯, ২১২৩, আহমাদ ৭৪৬৪, ৭৫২৭, ৭৭২১, ৭৮০৪, ৯১১২, ৯২৭১, ২৭২১১, ২১৩১৭, দারেমী ১৬৮৫ ইরওয়াহ ৯০২, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি আবু মারওয়ান মুহাম্মাদ বিন উসমান আল উসমানী সম্পর্কে আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি সিকাহ। আবু হাতিম বিন হিব্বান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন ও সিকাহ রাবীর বিপরীত হাদিস বর্ণনা করেন। ইবনি হাজার আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। ঈমাম বুখারী তাহাকে সত্যবাদী বলেছেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৫৪৫৪, ২৬/৮১ নং পৃষ্ঠা] হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৭/৮. অধ্যায়ঃ ঊনত্রিশ দিনেও মাস হয়।
১৬৫৬ আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] জিজ্ঞেস করেনঃ মাসের কত দিন গত হইয়াছে? রাবী বলেন, আমরা বললাম, বাইশ দিন এবং আট দিন বাকী আছে। রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ মাস এত দিনে হয়, মাস এত দিনে হয় এবং মাস এত দিনেও হয়। তৃতীয়বার তিনি এক আঙ্গুল বন্ধ রাখেন। {১৬৫৬}
{১৬৫৬} আহমাদ ৭৩৭৫ সহীহ আবু দাউদ ২০০৮, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৬৫৭ সাদ বিন আবু ওয়াক্কাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ মাস এত দিনে হয়, মাস এত দিনে হয়, মাস এত দিনেও হয় এবং তৃতীয়বারে তিনি একটি আঙ্গুল বন্ধ করে রাখেন। {১৬৫৭}{১৬৫৭} মুসলিম ১০৮৬, নাসাঈ ২১৩৫, ২১৩৬ আহমাদ ১৫৯৭, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৬৫৮ আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
আমরা রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর যুগে ঊনত্রিশ দিনের চেয়ে বেশির ভাগ ত্রিশ দিনই [রমাদানের রোযা] রেখেছি। {১৬৫৮}
{১৬৫৮} সহীহ আবু দাউদ ২০১১। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান সহীহ। হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহীহ
৭/৯. অধ্যায়ঃ ঈদের দু মাস
১৬৫৯ আবু বাক্রাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
নবী [সাঃআঃ] বলেন, ঈদের দুমাস রমজান এবং যুল-হিজ্জা [সাধারণত] একই বছরে কম [ঊনত্রিশ দিনে] হয় না। {১৬৫৯}
{১৬৫৯} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৯১২, মুসলিম ১০৮৯, তিরমিজি ৬৯২, আবু দাউদ ২৩২৩, আহমাদ ১৯৮৮৬, সহীহ আবু দাউদ ২০১২। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৬৬০ আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে দিন তোমরা ইফতাহার [রোযা শেষ] করো সেদিন ঈদুল ফিতর এবং যেদিন তোমরা কুরবানী করো সেদিন ঈদুল আদহা। {১৬৬০}
{১৬৬০} তিরমিজি ৬৯৭, আবু দাউদ ২৩২৪, ইরওয়াহ ৯০৫, সহীহাহ ২২৪। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি মুহাম্মাদ বিন উমার বিন আবু উমার আল-মুকরী সম্পর্কে ইবনি হাজার আসকালনী বলেন, তাহার পরিচয় সম্পর্কে অজ্ঞাত। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৫৪৯৮, ২৬/১৭৬ নং পৃষ্ঠা]। উক্ত হাদিসটি সহীহ কিন্তু মুহাম্মাদ বিন উমার বিন আবু উমার আল-মুকরী এর কারণে সানাদটি দুর্বল। হাদিসটির ৬২ টি শাহিদ হাদিস রয়েছে, তন্মধ্যে ১৬ টি দুর্বল, ২৬ টি হাসান, ২০ টি সহীহ হাদিস পাওয়া যায়। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলঃ তিরমিজি ৬৯৭, ৮০২, সুনান আদ দারাকুতনী ২১৬০, ২১৬১, ২৪২৪, শারহুস সুন্নাহ ১৭২৫, ১৭২৬, মুজামুল আওসাত ৩৩১৫ ইত্যাদি। হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৭/১০. অধ্যায়ঃ সফররত অবস্থায় রোযা রাখা।
১৬৬১ ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] কখনো সফররত অবস্থায় রোযা রাখতেন এবং কখনো রাখতেন না। {১৬৬১}
{১৬৬১} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৯৪৪, ১৯৪৮, ২৯৫৪, ৪২৭৫, ৪২৭৬, ৪২৭৮, ৪২৭৯, মুসলিম ১১১৩, নাসাঈ ২২৮৬, ২২৮৮, ২২৮৯, ২২৯০, ২২৯১, ২৩১৩, ২৩১৪, আবু দাউদ ২৪০৪, আহমাদ ১৮৯৫, ২১৮৬, ২৩৫৯, ২৩৮৮, ৩০৭৯, ৩১৯৯, ২৩৪৮, ৩২৬৯, ২৪৫০, মুয়াত্তা মালিক ৬৫৩, দারেমী ১৭০৮ সহীহ আবু দাউদ ২০৮০। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৬৬২ আয়িশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
হামযাহ আল-আসলামী [রাদি.] রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে জিজ্ঞেস করে বলেন, আমি রোযা রাখি। আমি কি সফররত অবস্থায়ও রোযা রাখবো? রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, তুমি চাইলে রোযা রাখো, আর যদি চাও না রাখো। {১৬৬২}
{১৬৬২} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৯৪২, ১৯৪৩, মুসলিম ১১২১, তিরমিজি ৭১১, নাসাঈ ২৩০৫, ২৩০৭, ২৩০৬, ২৩০৮, ২৩৮৪, আবু দাউদ ২৪০২, আহমাদ ২৩৬৭৬, ২৫০৭৯, ২৫১৩৭, ২৫২০২, ১৭০৭ রওয়াহ ৯২৭, সহীহাহ ১৯৪, সহীহ আবু দাউদ ২০৭৯। ইরওয়াহ ৯২৭, সহীহাহ ১৯৪, সহীহ আবু দাউদ ২০৭৯। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৬৬৩ আবু দারদা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
আমরা প্রচণ্ড গরমের মৌসুমে রসূলূল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সাথে এক সফরে প্রচণ্ড খরতাপের শিকার হলাম। গরমের তীব্রতাহার কারণে লোকেরা তাহাদের হাত মাথার উপর রাখছিল। রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] এবং আবদুল্লাহ বিন রাওয়াহাহ [রাদি.] ব্যতীত দলের মধ্যে আর কেউ রোযাদার ছিলো না। {১৬৬৩}
{১৬৬৩} সহিহুল বুখারি হাদিস নং ১৯৪৫, মুসলিম ১১২২, আবু দাউদ ২৪০৯, আহমাদ ২১১৮৯ সহীহাহ ১৯১, সহীহ আবু দাউদ ২০৮৪। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি হিশাম বিন সাদ সম্পর্কে আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তাহার মুখস্তশক্তি দুর্বল। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তাহার হাদিস গ্রহন করা যায় কিন্তু দলীলযোগ্য নয়। ইবনি হাজার আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় সন্দেহ করেন। তাহার শীয়া মতাবলম্বী হওয়ার ব্যাপারে অভিযোগ রয়েছে। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৬৫৭৭, ৩০/২০৪ নং পৃষ্ঠা] ২. উসমান বিন হায়্যান আদ-দিমাশকী সম্পর্কে ইবনি হাজার আসকালনী বলেন, তিনি আল-ওয়ালীদ বিন আবদুল মালিক এর কর্মচারী। ইবনি হিব্বান তাহার সিকাহ গ্রন্থে তাহার নাম উল্লেখ করিয়াছেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৩৮০৬, ১৯/৩৬০ নং পৃষ্ঠা] ।হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৭/১১. অধ্যায়ঃ সফররত অবস্থায় রোযা না রাখা।
১৬৬৪ কাব বিন আসিম [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ সফরে রোযা রাখা সাওয়াবের কাজ নয়। {১৬৬৪}
{১৬৬৪} নাসাঈ ২২৫৫, আহমাদ ২৩১৬৭, ২৩১৬৮, ২৩১৬৯, দারেমী ১৭১০, ১৭১১, ইরওয়া ৪/৫৮, ৯২৫, তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৬৬৫ ইবনি উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলূল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ সফরে রোযা রাখা সাওয়াবের কাজ নয়। {১৬৬৫}
{১৬৬৫} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। ইরওয়াহ ৪/৫৯। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি মুহাম্মাদ বিন মুসাফফা আল-হিমসী সম্পর্কে আবু হাতিম আর-রাযী ও ঈমাম নাসাঈ বলেন, তিনি সত্যবাদী। ইবনি হিব্বান তাহাকে সিকাহ বললেও অন্যত্র বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। ইবনি হাজার আসকালনী বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় সন্দেহ ও তাদলীস করেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৫৬১৩, ২৬/৪৬৫ নং পৃষ্ঠা]।হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৬৬৬ আবদুর রহমান বিন আওফ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি সফরে রোযা রাখে সে আবাসে উপস্থিত রোযা ভঙ্গকারী ব্যক্তির অনুরূপ। আবু ইসহাক [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, হাদিসটি নির্ভরযোগ্য নয়। {১৬৬৬}
{১৬৬৬} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। যঈফাহ ৪৯৮, তালীকুর রগীব ২/৯১। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি আবদুল্লাহ বিন মুসা আত-তায়মী সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তিনি সত্যবাদী তবে হাদিস বর্ণনায় অধিক ভুল করেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৩৫৯৭, ১৬/১৮৪ নং পৃষ্ঠা] ২. উসামাহ বিন যায়দ সম্পর্কে ইবনি হিব্বান তাহাকে সিকাহ উল্লেখ করে বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। আল-আজলী তাহাকে সিকাহ বলেছেন। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তাহার থেকে হাদিস গ্রহন করা যায় তবে দলীল হিসেবে নয়। ঈমাম নাসাঈ বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৩১৭, ২/৩৪৭ নং পৃষ্ঠা] হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৭/১২. অধ্যায়ঃ গর্ভবতী নারী ও দুগ্ধপোষ্য শিশুর মায়ের রোযা না রাখার সুযোগ।
১৬৬৭ আনাস বিন মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
আবদুল আশহাল গোত্রের এবং আলী বিন মুহাম্মাদের মতে আবদুল্লাহ বিন কাব গোত্রের এক ব্যক্তি বলিলেন, রসূলু্ল্লাহ [সাঃআঃ] -এর অশ্বারোহী বাহিনী আমাদের উপর হামলা করিল। আমি রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর নিকট উপস্থিত হয়ে দেখলাম যে, তিনি সকালের নাস্তা করছেন। তিনি বলেন, কাছে এসো এবং আহার করো। আমি বললাম, আমি রোযাদার। তিনি বলেন, বসো, আমি তোমার সাথে রোযা সম্পর্কে আলোচনা করিব। মহান আল্লাহ্ মুসাফির থেকে অর্ধেক সলাত হ্রাস করিয়াছেন এবং মুসাফির, গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারিণীকে রোযা রাখার ব্যাপারে অবকাশ দিয়েছেন। আল্লাহ্র শপথ! নবী [সাঃআঃ] আমাদের দুটি অথবা একটির কথা বলেছেন। আমার নিজের জন্য দুঃখ হয়, আমি কেন রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর সাথে আহার করলাম না! {১৬৬৭}
{১৬৬৭} তিরমিজি ৭১৫, নাসাঈ ২২৭৪, ২২৭৬, ২৩১৫, আবু দাউদ ২৪০৮, আহমাদ ১৮৫৬৮, ১৯৮১৪, মিশকাত ২০২৫, সহীহ আবু দাউদ ২০৮৩। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ হাসান সহীহ। উক্ত হাদিসের রাবি আবু হিলাল সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তিনি সত্যবাদী। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, তিনি সিকাহ। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ইদতিরাব করেন। ঈমাম নাসাঈ বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। মুহাম্মাদ বিন সাদ বলেন, তাহার মাঝে দুর্বলতা রয়েছে। বাযযাহার বলেন, তিনি গায়র হাফিয। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ৫২৫৬, ২৫/২৯২ নং পৃষ্ঠা] হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহীহ
১৬৬৮ আনাস বিন মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
যে গর্ভবতী নারী নিজ জীবনের ক্ষতির আশঙ্কা করে এবং যে স্তন্যদায়িনী মা তাহার সন্তানের ক্ষতির আশঙ্কা করে, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাদেরকে রোযা না রাখার অনুমতি দিয়েছেন। {১৬৬৮}
{১৬৬৮} হাদিসটি ঈমাম ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। রওযুন নাদীর ৭৪। তাহকিক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ অত্যন্ত জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি রাবী বিন বাদর সম্পর্কে ঈমাম দারাকুতনী বলেন, মুনকারুল হাদিস। ইয়াহইয়া বিন সাঈদ ও উসমান বিন আবু শায়বাহ তাহাকে দুর্বল বলেছেন। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। ইয়াকুব বিন সুফইয়ান তাহাকে প্রত্যাখ্যান করিয়াছেন। [তাহজিবুল কামালঃ রাবী নং ১৮৫৪, ৯/৬৩ নং পৃষ্ঠা] হাদিসের তাহকিকঃ খুবই দুর্বল
Leave a Reply