ইমান ইসলাম আমল ফিতনা মুনাফিক ও মুমিনের পরিচয়
ইমান ইসলাম আমল ফিতনা মুনাফিক ও মুমিনের পরিচয় >> সুনানে নাসাই শরিফের মুল সুচিপত্র দেখুন
পর্বঃ ৪৮, ঈমান এবং এর বিধানাবলী, হাদীস (৪৯৮৫ – ৫০৩৯)
১.পরিচ্ছেদঃ উত্তম আমলের বর্ণনা
২.পরিচ্ছেদঃ ঈমানের স্বাদ
৩.পরিচ্ছেদঃ ঈমানের মিষ্টতা
৪.পরিচ্ছেদঃ ইসলামের স্বাদ
৫.পরিচ্ছেদঃ ইসলামের পরিচয়
৬.পরিচ্ছেদঃ ঈমান ও ইসলামের বিবরণ
৭.পরিচ্ছেদঃ আল্লাহর বাণী -এর ব্যাখা
৮.পরিচ্ছেদঃ মুমিনের পরিচয়
৯.পরিচ্ছেদঃ মুসলিমের পরিচয়
১০.পরিচ্ছেদঃ ব্যক্তির ইসলামের উৎকৃষ্টতা {১}
১১.পরিচ্ছেদঃ কোন্ ইসলাম উত্তম
১২.পরিচ্ছেদঃ কোন্ ইসলাম ভাল
১৩.পরিচ্ছেদঃ ইসলামের বুনিয়াদ কয়টি
১৪.পরিচ্ছেদঃ ইসলামের উপর বায়আত গ্রহণ করা
১৫.পরিচ্ছেদঃ কখন লোকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা হইবে
১৬.পরিচ্ছেদঃ ঈমানের শাখা-প্রশাখার বর্ণনা
১৭.পরিচ্ছেদঃ ঈমানদারদের মধ্যে শ্রেণী বিভাগ
১৮.পরিচ্ছেদঃ ঈমান বৃদ্ধি পাওয়া
১৯.পরিচ্ছেদঃ ঈমানের আলামত
২০.পরিচ্ছেদঃ মুনাফিকের আলামত
২১.পরিচ্ছেদঃ রমযানে রাত জাগরণ
২২.পরিচ্ছেদঃ শবে কদরে জাগরণ
২৩.পরিচ্ছেদঃ যাকাত
২৪.পরিচ্ছেদঃ জিহাদ
২৫.পরিচ্ছেদঃ খুমুস আদায় করা
২৬.পরিচ্ছেদঃ জানাযায় উপস্থিত হওয়া
২৭.পরিচ্ছেদঃ দ্বীন সহজ
২৮.পরিচ্ছেদঃ আল্লাহ তাআলার নিকট পছন্দনীয় দীন
২৯.পরিচ্ছেদঃ ফিতনা থেকে দ্বীন রক্ষার্থে পলায়ন করা
৩০.পরিচ্ছেদঃ মুনাফিকের উদাহরণ
৩১.পরিচ্ছেদঃ কুরআন তিলাওয়াতকারী মুমিন ও মুনাফিক
৩২.পরিচ্ছেদঃ মুমিনের আলামত
১.পরিচ্ছেদঃ উত্তম আমলের বর্ণনা
৪৯৮৫. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]–কে প্রশ্ন করা হলোঃ কোন্ আমল উত্তম? তিনি বলিলেনঃ আল্লাহ এবং তাহাঁর রাসূলের উপর ঈমান আনা।
ইমান ইসলাম আমল ফিতনা মুনাফিক ও মুমিনের পরিচয় হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৪৯৮৬. আবদুল্লাহ ইবনি হাবাশী খাসআমী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]–কে প্রশ্ন করা হলোঃ কোন্ আমল উত্তম? তিনি বলিলেনঃ এমন ঈমান, যাতে কোন সন্দেহ নেই এবং এমন জিহাদ, যাতে কোন খিয়ানত নেই, আর মকবুল হজ্জ।
ইমান ইসলাম আমল ফিতনা মুনাফিক ও মুমিনের পরিচয় হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২.পরিচ্ছেদঃ ঈমানের স্বাদ
৪৯৮৭. নাস ইবনি মালিক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যাহার মধ্যে তিনটি গুণ থাকে সে ঈমানের স্বাদ ও মিষ্টতা পেয়ে যায়; [১] যাহার নিকট আল্লাহ এবং তাহাঁর রাসূল অন্য সব কিছু অপেক্ষা বেশি প্রিয়; [২] যে আল্লাহর জন্য ভালবাসা রাখে এবং আল্লাহর জন্য শত্রুতা পোষণ করে; [৩] আর যদি ভয়াবহ আগুন প্রজ্জ্বলিত করা হয়, তবে তাতে প্রবেশ করা তার নিকট আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করা অপেক্ষা বেশি পছন্দনীয় হয়।
ইমান ইসলাম আমল ফিতনা মুনাফিক ও মুমিনের পরিচয় হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩.পরিচ্ছেদঃ ঈমানের মিষ্টতা
৪৯৮৮. আনাস ইবনি মালিক [রাঃআঃ] রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] থেকে হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ যাহার মধ্যে তিনটি গুণ থাকিবে; সে ঈমানের মিষ্টতা পাবে; ১. যে কাউকে ভালবাসলে কেবল আল্লাহর সন্তূষ্টির জন্যই তাকে ভালবাসবে; ২. আল্লাহ এবং আল্লাহর রাসূল তার কাছে অন্য সবকিছুর চাইতে বেশি প্রিয় হইবে এবং ৩. আল্লাহ তাকে কুফর হইতে পরিত্রাণ করার পর পুনঃ কুফরীতে ফিরে যাওয়ার চেয়ে অগ্নিতে নিক্ষিপ্ত হওয়া তার নিকট পছন্দনীয় হইবে।
ইমান ইসলাম আমল ফিতনা মুনাফিক ও মুমিনের পরিচয় হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৪.পরিচ্ছেদঃ ইসলামের স্বাদ
৪৯৮৯. আনাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যাহার মধ্যে তিনটি গুণ থাকিবে, সে ইসলামের মিষ্টতা উপলব্ধি করিবে; ১. আল্লাহ এবং আল্লাহর রাসুল তার নিকট অন্য সমস্ত কিছু হইতে প্রিয় হইবে; ২. সে কাউকে ভালবাসলে তাকে আল্লাহর সন্তূষ্টির জন্যই ভালবাসবে; ৩. আর সে কুফরীতে ফিরে যাওয়াকে ঐরূপই ঘৃণা করিবে, যেরূপ সে অগ্নিতে নিক্ষিপ্ত হওয়াকে ঘৃণা করে।
ইমান ইসলাম আমল ফিতনা মুনাফিক ও মুমিনের পরিচয় হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫.পরিচ্ছেদঃ ইসলামের পরিচয়
৪৯৯০. উমার ইবনি খাত্তাব [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদিন আমরা রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]–এর নিকট উপস্থিত ছিলাম, এমন সময় এক ব্যক্তি আগমন করিলেন, যাহার কাপড় অত্যধিক সাদা ছিল এবং চুল অধিক কাল ছিল। বুঝা যাচ্ছিল না যে, তিনি সফর হইতে এসেছেন; আর আমাদের মধ্যে কেউ তাঁকে চিনতে পারছিল না। তিনি নিজ হাঁটুদ্বয় তাহাঁর হাঁটুদ্বয়ের সাথে লাগিয়ে বসলেন, তাহাঁর হস্তদ্বয় তাহাঁর উভয় উরুর উপর রাখলেন এবং বলিলেনঃ হে মুহাম্মদ! আমাকে বলুনঃ ইসলাম কি? তিনি বলিলেনঃ এ কথার সাক্ষ্য প্রদান করা যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ নেই, আর মুহাম্মদ আল্লাহর বাসুল এবং নামাজ আদায় করা, যাকাত দেওয়া, রমযানের রোজা রাখা ও পথ খরচের সামর্থ্য থাকলে হজ্জ করা। সে লোকটি বললোঃ আপনি সত্যই বলেছেন। আমরা আশ্চর্যান্বিত হলাম যে, তিনি প্রশ্ন করিলেন এবং বলিলেনঃ আপনি সত্য বলেছেন। এরপর তিনি বলিলেনঃ ঈমান কি, আমাকে বলুন? তিনি বলিলেনঃ বিশ্বাস স্থাপন করা আল্লাহর উপর, ফিরিশতাগণ, তাহাঁর কিতাবসমূহ, তাহাঁর রাসুলগণ, কিয়ামত দিবস এবং নিয়তির ভাল-মন্দের উপর বিশ্বাস। তিনি বলিলেনঃ আপনি সত্য বলেছেন। তারপর বলিলেনঃ ইহসান কি? তিনি বলিলেনঃ এমনভাবে আল্লাহর ইবাদত করিবে, যেন তুমি আল্লাহকে দেখছো, যদি তুমি তাঁকে না দেখিতে পাও, তবে তিনি তো তোমাকে দেখছেন। তারপর বলিলেনঃ কিয়ামত কখন হইবে? তিনি বলিলেনঃ যাহার নিকট প্রশ্ন করা হচ্ছে তিনি প্রশ্নকারী হইতে অধিক জ্ঞাত নন। সে ব্যক্তি বললোঃ কিয়ামতের নিদর্শনসমূহ বর্ণনা করুন। তিনি বলিলেনঃ দাসী তার মুনিবকে প্রসব করিবে, নগ্ন পদ, বিবস্ত্র, গরীব, বকরীর রাখালরা বড় বড় প্রাসাদ নির্মাণে প্রতিযোগিতা করিবে। উমার [রাঃআঃ] বলেন, আমি তিন দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করলাম, পরে রাসুলূল্লাহ [সাঃআঃ] আমাকে বলিলেনঃ হে উমার! তুমি কি অবগত আছ, এই প্রশ্নকারী ব্যক্তি কে? আমি বললামঃ আল্লাহ এবং আল্লাহর রাসুলই সমধিক অবগত। তিনি বলিলেনঃ তিনি ছিলেন জিব্রাঈল [আঃ], তিনি তোমাদেরকে তোমাদের দ্বীন শিক্ষা দিতে এসেছিলেন।
ইমান ইসলাম আমল ফিতনা মুনাফিক ও মুমিনের পরিচয় হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৬.পরিচ্ছেদঃ ঈমান ও ইসলামের বিবরণ
৪৯৯১. আবু হুরাইরা এবং আবু যর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] তার সাহাবায়ে কেরামের মধ্যে বসতেনঃ নবাগত লোক এসে তাঁকে চিনতে পারত না যতক্ষন না জিজ্ঞাসা করতো। আমরা রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] –এর নিকট তাহাঁর জন্য একটি বসার স্থান নির্মাণের জন্য অনুমতি চাইলাম। যাতে নবাগত লোক তাঁকে সহজে চিনতে পারে। আমরা তাহাঁর জন্য মাটির একটি উঁচু স্থান তৈরী করলাম। তিনি তার উপর উপবেশন করিতেন। একদা আমরা বসা ছিলাম, আর রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] তাহাঁর স্থানে উপবিষ্ট ছিলেন। এমন সময় এক নবাগত ব্যক্তির আগমন হলো, যাহার মুখমণ্ডল সকলের চেয়ে সুন্দর ছিল এবং যাহার শরীরের সুগন্ধি ছিল সকলের চেয়ে উত্তম। তাহাঁর বস্ত্রে একটু ময়লাও ছিল না। সে ব্যক্তি বিছানার কিনারা হইতে সালাম করে বলিলেনঃ হে মুহাম্মদ! আপনাকে সালাম। তিনি তাহাঁর সালামের উত্তর দিলে তিনি বলিলেনঃ আমি কি নিকটে আসবো? তিনি বলিলেনঃ আস! এভাবে কয়েকবার বলিলেন, তিনিও কয়েকবার উত্তরে বলিলেন, হ্যাঁ, নিকটে আস। এমনকি তিনি নিকটে এসে নিজ হাত রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]–এর হাঁটুর উপর রাখলেন এবং বলিলেনঃ হে মুহাম্মদ! আমাকে ইসলাম সম্বন্ধে বলুন। তিনি বলিলেনঃ ইসলাম হলো তুমি আল্লাহ তাআলার ইবাদত করিবে এবং তাহাঁর সাথে কাউকে শরীক করিবে না, নামাজ কায়েম করিবে এবং যাকাত আদায় করিবে, কাবা শরীফের হজ্জ করিবে এবং রমজানের রোজা রাখবে। তিনি বলিলেনঃ আমি যদি এটা করি, তবে কি আমি মুসলমান হইয়া যাব? তিনি বলিলেন, হ্যাঁ। সে ব্যক্তি বলিলেন, আপনি সত্যই বলেছেন। ঐ ব্যক্তির আপনি সত্য বলেছেন বাক্য শুনে আমাদের বিস্ময় জাগল। এরপর বলিলেনঃ হে মুহাম্মদ! আমাকে বলুন, ঈমান কি? তিনি বলিলেনঃ আল্লাহর প্রতি, তাহাঁর ফেরেশতাগণের, নাবীগণের এবং কিতাবের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা এবং কদরে বিশ্বাস করা। তিনি বলিলেনঃ আমি যদি এরূপ করি, তবে কি আমি মুমিন হইয়া যাব? রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বলিলেন; হ্যাঁ। তখন সে ব্যক্তি বলিলেনঃ আপনি সত্যই বলেছেন। এরপর তিনি বলিলেনঃ হে মুহাম্মদ! আমাকে বলুন, ইহসান কি? তিনি বলিলেনঃ তুমি এমনভাবে ইবাদত করিবে, যেন তুমি আল্লাহ তাআলাকে দেখছো। কেননা যদিও তুমি তাঁকে দেখছো না, তিনি তো তোমাকে দেখছেন। তিনি বলিলেনঃ আপনি সত্যই বলেছেন। তিনি আবার বলিলেনঃ হে মুহাম্মদ! কিয়ামত কবে হইবে? তিনি কিছু বলিলেন না, বরং মাথা নিচু করিলেন। লোকটি আবারও সেই প্রশ্ন করিলেন কিন্তু তিনি তাকে কোন উত্তর দিলেন না। আবারও প্রশ্ন করিলেন কিন্তু এবারও তিনি তাকে কোন উত্তর দিলেন না, অতঃপর তিনি মাথা উঠিয়ে বলিলেনঃ তুমি যাহার নিকট জিজ্ঞাসা করছো, তিনি প্রশ্নকারী হইতে অধিক জ্ঞাত নন। কিন্তু এর অনেক আলামত রয়েছে। তুমি তা জানিতে পার। যখন তুমি দেখবে পশুপালের রাখালরা সুউচ্চ প্রাসাদ নির্মাণ করিবে, আর তুমি দেখবে, নগ্ন পদ ও নগ্ন দেহ লোকেরা ভুখণ্ডের বাদশাহ হইবে, আরো তুমি দেখবে যে, দাসী তার মালিককে প্রসব করিবে, তখন মনে করিবে যে, কিয়ামত নিকটবর্তী। পাঁচটি বস্তু আল্লাহ ব্যতীত কেউ অবগত নয়। এরপর তিনি [আরবী] হইতে [আরবী] পর্যন্ত পাঠ করিলেন {১}। এরপর তিনি বলিলেনঃ ঐ সত্তার কসম! যিনি মুহাম্মদকে সত্য সহকারে পথ প্রদর্শক ও সুসংবাদদাতা রূপে প্রেরণ করিয়াছেন, আমি তাঁকে তোমাদের চাইতে অধিক জানি না। তিনি ছিলেন, জিব্রাঈল [আঃ] যিনি দিহ্ইয়া কালবীর রূপে অবতীর্ণ হইয়াছিলেন।
{১} অর্থঃ “নিশ্চয়ই আল্লাহ, তাহাঁর কাছে রয়েছে কিয়ামতের জ্ঞান, তিনি নাযিল করেন বৃষ্টি এবং তিনি জানেন যা রয়েছে মাতৃগর্ভে, কেউ জানে না সে আগামীকাল কি কামাই করিবে আর কেউ জানে না কোন্ মাটিতে সে মারা যাবে, নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্বজ্ঞানী ও সর্ব বিষয়ে অবহিত” [লুকমান ঃ ৩৪]।
ইমান ইসলাম আমল ফিতনা মুনাফিক ও মুমিনের পরিচয় হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৭.পরিচ্ছেদঃ আল্লাহর বাণী -এর ব্যাখা
৪৯৯২. সাদ ইবনি আবু ওয়াক্কাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] কতিপয় লোককে কিছু দান করিলেন; আর তাহাদের মধ্যে এক লোককে কিছুই দিলেন না। সাদ [রাঃআঃ] বলিলেনঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ্। আপনি অমুক, অমুককে দান করিলেন কিন্তু অমুককে দান করিলেন না, অথচ সে মুমিন। রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বলিলেনঃ অথবা সে মুসলিম। সাদ [রাঃআঃ] কথাটি তিনবার পুনরাবৃত্তি করিলেন। আর রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] তিনবারই বলিলেন, অথবা সে মুসলিম। পরে তিনি বলিলেনঃ আমি কোন কোন লোককে দান করি, আর কাউকে দান করি না, অথচ সে আমার নিকট তাহাদের চেয়ে অধিক প্রিয়, এই ভয়ে যে, তাহাদেরকে উপুর করে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হইবে।
ইমান ইসলাম আমল ফিতনা মুনাফিক ও মুমিনের পরিচয় হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৪৯৯৩. সাদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] কিছু মাল বন্টন করিলেন। তিনি কতিপয় লোককে দিলেন, আর অপর কতককে দিলেন না। আমি জিজ্ঞাসা করলামঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ্। আপনি অমুক অমুককে দান করিলেন, অমুককে দান করিলেন না, অথচ সেও মুমিন। তখন রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বলিলেনঃ মুমিন বলো না, বরং বলো মুসলিম। এরপর রাবী ইবনি শিহাব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] এই আয়াত [আরবী] {১} তিলাওয়াত করিলেন।
{১} অর্থঃ “বেদুঈনগণ বলে, আমরা ঈমান এনেছি। বল, তোমরা ঈমান আননি; বরং তোমরা বল, আমরা ইসলাম গ্রহণ [বাহ্যিক আনুগত্য প্রকাশ] করেছি” [হুজরাত ঃ ১৪]
ইমান ইসলাম আমল ফিতনা মুনাফিক ও মুমিনের পরিচয় হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৪৯৯৪. বিশ্র ইবনি সুহায়ম [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] তাঁকে আইয়্যামে তাশরীকে এই কথা ঘোষণা করিতে বলিলেন যে, জান্নাতে শুধু মুমিনই প্রবেশ করিবে।
ইমান ইসলাম আমল ফিতনা মুনাফিক ও মুমিনের পরিচয় হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৮.পরিচ্ছেদঃ মুমিনের পরিচয়
৪৯৯৫. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ মুসলিম ঐ ব্যক্তি যাহার হাত ও রসনা হইতে অন্য মুসলমান নিরাপদ থাকে। আর মুমিন ঐ ব্যাক্তি যাহার থেকে অন্য লোক নিজের জান ও মালকে নিরাপদ মনে করে।
ইমান ইসলাম আমল ফিতনা মুনাফিক ও মুমিনের পরিচয় হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহীহ
৯.পরিচ্ছেদঃ মুসলিমের পরিচয়
৪৯৯৬. আবদুল্লাহ্ ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]–কে বলিতে শুনিয়াছিঃ মুসলিম ঐ ব্যক্তি, যাহার হাত ও রসনা হইতে অন্য মুসলিম নিরাপদ থাকে, আর মুহাজির ঐ ব্যক্তি, যে আল্লাহর নিষিদ্ধ বস্তু থেকে দূরে থাকে।
ইমান ইসলাম আমল ফিতনা মুনাফিক ও মুমিনের পরিচয় হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৪৯৯৭. আনাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে আমাদের ন্যায় নামাজ আদায় করে, আর আমাদের কিবলার দিকে মুখ করে এবং আমাদের যবেহকৃত পশু খায় সে মুসলিম।
ইমান ইসলাম আমল ফিতনা মুনাফিক ও মুমিনের পরিচয় হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১০.পরিচ্ছেদঃ ব্যক্তির ইসলামের উৎকৃষ্টতা {১}
৪৯৯৮. আবু সাইদ খুদরী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যখন কোন ব্যক্তি উত্তমরূপে ইসলাম গ্রহণ করে, তখন আল্লাহ তাআলা তার ঐ সকল নেকী লিখে নেন, যা সে পূর্বে করেছিল আর তার সেই সকল পাপ মুছে ফেলেন যাতে অতীতে লিপ্ত হইয়াছিল। এরপর তার হিসাব এইভাবে লিখিত হয় যে, তার প্রত্যেক নেকীর পরিবর্তে দশ হইতে সাতশত গুণ পর্যন্ত সওয়াব লেখা হয়। আর প্রত্যেক পাপ শুধু অতটুকুই লেখা হয়, যা সে করে যদি না আল্লাহ তাআলা ক্ষমা করেন।
{১} ইসলামের উৎকৃষ্টতা অর্থ। আকিদা-বিশ্বাস নিখুঁত ও অকৃত্রিম হওয়া এবং বাহ্যিক কাজ-কর্ম আন্তরিক বিশ্বাসের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ হওয়া।
ইমান ইসলাম আমল ফিতনা মুনাফিক ও মুমিনের পরিচয় হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১১.পরিচ্ছেদঃ কোন্ ইসলাম উত্তম
৪৯৯৯. আবু মূসা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি বললামঃ ইয়া রসূলুল্লাহ্! কোন্ ইসলাম উত্তম? তিনি বললেনঃ যাহার রসনা ও হাত হইতে অন্য মুসলমানগণ নিরাপদ থাকে।
ইমান ইসলাম আমল ফিতনা মুনাফিক ও মুমিনের পরিচয় হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১২.পরিচ্ছেদঃ কোন্ ইসলাম ভাল
৫০০০. আব্দুল্লাহ ইবনি আমর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
এক ব্যক্তি রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-কে জিজ্ঞাসা করলোঃ কোন্ ইসলাম [অর্থাৎ ইসলামের কোন কর্ম] ভাল? তিনি বললেনঃ খাদ্য দান করা, পরিচিত অপরিচিত সকলকে সালাম করা।
ইমান ইসলাম আমল ফিতনা মুনাফিক ও মুমিনের পরিচয় হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৩.পরিচ্ছেদঃ ইসলামের বুনিয়াদ কয়টি
৫০০১. ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
এক ব্যক্তি তাঁকে বললোঃ আপনি কি যুদ্ধ করেন না? তিনি বললেনঃ আমি রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]–কে বলিতে শুনেছিঃ ইসলাম পাঁচটি বস্তুর উপর প্রতিষ্ঠিত, এই কথার সাক্ষ্য দান করা যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ নেই, নামাজ আদায় করা, যাকাত দেওয়া, রমযানের রোজা রাখা এবং হজ্জ করা।
ইমান ইসলাম আমল ফিতনা মুনাফিক ও মুমিনের পরিচয় হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৪.পরিচ্ছেদঃ ইসলামের উপর বায়আত গ্রহণ করা
৫০০২. উবাদা ইবনি সামিত [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা এক মজলিসে রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]–এর নিকট ছিলাম। তিনি বললেনঃ তোমরা আমার নিকট একথার উপর বায়আত কর যে, তোমরা আল্লাহ তাআলার সাথে কাউকে শরীক করিবে না, চুরি করিবে না, ব্যভিচার করিবে না। তিনি তাহাদের সামনে এতদসংক্রান্ত পূর্ণ আয়াতটি {১} তিলাওয়াত করলেনঃ তারপর বলিলেন, তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি এটা রক্ষা করিবে, আল্লাহর নিকট তার প্রতিদান রয়েছে। আর যদি কেউ এর কোনও একটি অপরাধ করে ফেলে, আর আল্লাহ তাআলা পৃথিবীতে তা ঢেকে রাখেন, তবে আখিরাতে তা আল্লাহর ইচ্ছা উপর নির্ভরশীল। তিনি ইচ্ছা করলে ক্ষমা করবেন, আর ইচ্ছা করলে শাস্তি দেবেন।
{১} অর্থঃ “তারা আল্লাহর সাথে কোন শরীক স্থির করিবে না, চুরি করিবে না, ব্যভিচার করিবে না, নিজেদের সন্তানকে হত্যা করিবে না; তারা সজ্ঞানে কোন অপবাদ রচনা করে রটাবে না এবং সৎকাজে তোমাকে অমান্য করিবে না” [মুযতাহিনাঃ ১২]
ইমান ইসলাম আমল ফিতনা মুনাফিক ও মুমিনের পরিচয় হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৫.পরিচ্ছেদঃ কখন লোকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা হইবে
৫০০৩. আনাস ইবনি মালিক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আমাকে লোকের বিরুদ্ধে জিহাদ করার আদেশ করা হইয়াছে, যতক্ষণ না তারা এ কথার সাক্ষ্য প্রদান করে যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ্ নেই, আর মুহাম্মদ [সাঃআঃ] আল্লাহর রাসূল। যদি তারা এই সাক্ষ্য দেয় এবং আমাদের কিবলার দিকে মুখ করে, আমাদের যবাহকৃত পশু খায়, আমাদের ন্যায় নামাজ আদায় করে, তখন তাহাদের জান মাল আমাদের উপর হারাম হইয়া যাবে, তবে এর হক ব্যতীত। অন্যান্য মুসলমানের যে প্রাপ্য রয়েছে তাহাদের জন্যও তা রয়েছে। আর এদের উপর যে দায়-দায়িত্ব বর্তায় তাহাদের উপরও তা বর্তাবে।
ইমান ইসলাম আমল ফিতনা মুনাফিক ও মুমিনের পরিচয় হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৬.পরিচ্ছেদঃ ঈমানের শাখা-প্রশাখার বর্ণনা
৫০০৪. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ ঈমানের শাখা সত্তর হইতেও অধিক, লজ্জা-শরমও ঈমানের একটি শাখা।
ইমান ইসলাম আমল ফিতনা মুনাফিক ও মুমিনের পরিচয় হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫০০৫. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ ঈমানের সত্তরটির উপরে শাখা রয়েছে। এর সর্বোত্তমটি হলো, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্ বলা, আর এর সর্বনিম্নটি হলো রাস্তা হইতে কষ্টদায়ক বস্তু দূর করা, আর লজ্জাও ঈমানের একটি শাখা।
ইমান ইসলাম আমল ফিতনা মুনাফিক ও মুমিনের পরিচয় হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫০০৬. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ লজ্জা ঈমানের একটি শাখা।
ইমান ইসলাম আমল ফিতনা মুনাফিক ও মুমিনের পরিচয় হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৭.পরিচ্ছেদঃ ঈমানদারদের মধ্যে শ্রেণী বিভাগ
৫০০৭. নাবী করিম [সাঃআঃ]–এর এক সাহাবী থেকে হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আম্মারের অস্থিমজ্জা ঈমানে পরিপূর্ণ।
ইমান ইসলাম আমল ফিতনা মুনাফিক ও মুমিনের পরিচয় হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫০০৮. আবু সাইদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছিঃ যখন তোমাদের কেউ কোন অপকর্ম দেখিতে পায়, তখন সে যেন তা নিজ হাতে প্রতিহত করে, যদি ততটুকু শক্তি তার না থাকে, তবে সে যেন মুখে তা দূর করিতে তৎপর হয়, যদি এই শক্তিও তার না থাকে, তবে সে যেন উক্ত মন্দ কাজকে মনে মনে ঘৃণা করে। আর এ হলো ঈমানের নিম্নতম পর্যায়।
ইমান ইসলাম আমল ফিতনা মুনাফিক ও মুমিনের পরিচয় হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫০০৯. আবু সাইদ খুদরী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনিয়াছি; তোমাদের মধ্যে কেউ যদি কোন মন্দ কাজ দেখিতে পায় আর সে তা নিজ হাতে প্রতিহত করে, তবে সে দায়িত্বমুক্ত হল। যদি তার হাতে বাধা দেওার ক্ষমতা না থাকে, তাই মুখে এর বিরোধিতা করে, তবে সেও দায়িত্বমুক্ত হল। আর যে ব্যক্তি মুখে এর বিরোধিতা করার ক্ষমতা না রাখে, আর সে মনে মনে এর বিরুদ্ধাচরণ করে, সেও দায়িত্বমুক্ত হল; আর এ হলো দুর্বলতর ঈমান।
ইমান ইসলাম আমল ফিতনা মুনাফিক ও মুমিনের পরিচয় হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৮.পরিচ্ছেদঃ ঈমান বৃদ্ধি পাওয়া
৫০১০. আবু সাইদ খুদরী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমাদের পার্থিব কোন স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ঝগড়া এত তীব্র হয় না, যা মুমিন তার দোযখী ভাইদের জন্য আল্লাহ তাআলার সাথে করিবে। তিনি বলেন, তারা বলবেঃ ইয়া আল্লাহ! আমাদের ভাইগণ আমাদের সাথে নামাজ আদায় করতো, আমাদের সাথে রোজা রাখতো এবং আমাদের সাথে হজ্জ করতো, আর আপনি তাহাদেরকে দোযখে দাখিল করিয়াছেন। তখন আল্লাহ তাআলা বলবেনঃ তোমরা গিয়ে যাকে চিনতে পার তাকে বের করে নাও। তিনি বললেনঃ তারা এসে তাহাদেরকে চিনতে পারবে তাহাদের চেহারা দেখে। তাহাদের মধ্যে এমন লোক হইবে, যাকে আগুন তার পায়ের গোছার অর্ধেক পর্যন্ত ধরেছে, কাউকে হাঁটু পর্যন্ত, তারা তাহাদেরকে বের করিবে এবং বলবেঃ হে আমাদের রব! আপনি যাদেরকে বের করার আদেশ দিয়েছেন, আমরা তাহাদেরকে বের করেছি। আল্লাহ তাআলা বলবেনঃ তাহাদেরকেও বের কর যাদের অন্তরে এক দীনার পরিমাণ ঈমান রয়েছে। এরপর বলবেনঃ ঐ সকল লোকদেরকেও বের কর যাদের অন্তরে অর্ধ দীনার পরিমাণ ঈমান রয়েছে এবং শেষ পর্যন্ত বলবেনঃ এমন লোকদেরকেও বের কর যাদের অন্তরে অণু পরিমাণ ঈমান রয়েছে। আবু সাইদ [রাঃআঃ] বলেনঃ যাহার বিশ্বাস না হয়, সে এই আয়াতঃ [আরবী] হইতে শেষ পর্যন্ত পাঠ করিতে পারে {১}।
{১} “আল্লাহ তার শরীক করার অপরাধ ক্ষমা করেন না। এছাড়া অন্যান্য অপরাধ যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেন এবং যে কেউ আল্লাহর শরীক করে, সে এক মহাপাপ করে” [নিসাঃ ৪৮]
ইমান ইসলাম আমল ফিতনা মুনাফিক ও মুমিনের পরিচয় হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫০১১. আবু সাইদ খুদরী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আমি নিদ্রিত অবস্থায় দেখলাম, কোন কোন লোককে আমার নিকট উপস্থিত করা হচ্ছে এবং তারা সকলেই জামা পরিহিত। কারো জামা বুক পর্যন্ত, আর কারো তা অপেক্ষা নীচে। এরপর আমার নিকট উমার ইবনি খাত্তাবকে আনা হল আর তার গায়ে এমন একটা জামা, যা সে মাটিতে হেঁচড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছে। তারা বললোঃ ইয়া রসূলুল্লাহ্! আপনি এর কি ব্যাখ্যা করিলেন? তিনি বললেনঃ দ্বীন।
ইমান ইসলাম আমল ফিতনা মুনাফিক ও মুমিনের পরিচয় হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫০১২. তারিক ইবনি শিহাব [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক ইহুদী উমার ইবনি খাত্তাবের নিকট এসে বললোঃ হে আমীরুল মুমিনীন! আপনাদের কুরআনে একটি আয়াত আছে, যা আপনারা পাঠ করে থাকেন, যদি ঐ আয়াতটি ইয়াহূদীদের উপর নাযিল হতো, তবে আমরা ঐ দিনকে ঈদের দিন হিসাবে ধার্য করতাম। তিনি বললেনঃ তা কোন আয়াত? সে বললোঃ তা হলো [আরবী]। উমার [রাঃআঃ] বললেনঃ যে স্থানে, যে সময় ঐ আয়াত নাযিল হইয়াছে, তা আমার জানা আছে। ঐ আয়াত রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]–এর উপর আরাফাতে শুক্রবারে নাযিল হয়।
ইমান ইসলাম আমল ফিতনা মুনাফিক ও মুমিনের পরিচয় হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
১৯.পরিচ্ছেদঃ ঈমানের আলামত
৫০১৩. আনাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমাদের মধ্যে কেউই পূর্ণ মুমিন হইবে না, যতক্ষণ না আমি তার সন্তান-সন্ততি, মাতা-পিতা এবং সকল লোক হইতে তার নিকট অধিক প্রিয় হই।
ইমান ইসলাম আমল ফিতনা মুনাফিক ও মুমিনের পরিচয় হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫০১৪. আনাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমাদের কেউ পূর্ণ মুমিন হইবে না, যে পর্যন্ত না আমি তার নিকট তার পরিবার-পরিজন এবং মাল-সম্পদ এবং সকল লোক হইতে অধিক প্রিয় হই।
ইমান ইসলাম আমল ফিতনা মুনাফিক ও মুমিনের পরিচয় হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫০১৫. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ ঐ সত্তার শপথ! যাঁহার হাতে আমার প্রাণ! তোমাদের মধ্যে কেউ পূর্ণ ঈমানদার হইবে না, যে পর্যন্ত না আমি তার নিকট তার সন্তান ও পিতা হইতে অধিক প্রিয় হই।
ইমান ইসলাম আমল ফিতনা মুনাফিক ও মুমিনের পরিচয় হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫০১৬. আনাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমাদের কেউ পূর্ণ মুমিন হইবে না, যে পর্যন্ত না সে স্বীয় ভাইয়ের জন্য তা পছন্দ করে, যা সে নিজের জন্য পছন্দ করে।
ইমান ইসলাম আমল ফিতনা মুনাফিক ও মুমিনের পরিচয় হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫০১৭. আনাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ মুহাম্মদ [সাঃআঃ]-এর প্রাণ যাঁহার হাতে তাহাঁর কসম! তোমাদের কেউ পূর্ণ মুমিন হইবে না, যে পর্যন্ত না সে নিজের ভাইয়ের জন্য তা পছন্দ না করে, যা সে নিজের জন্য পছন্দ করে থাকে।
ইমান ইসলাম আমল ফিতনা মুনাফিক ও মুমিনের পরিচয় হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫০১৮. যিরর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
আলী [রাঃআঃ] বলেছেনঃ আমার নিকট উম্মী নাবী [সাঃআঃ] অঙ্গীকার হচ্ছে, কেবল মুমিনই তোমাকে ভালবাসবে, আর মুনাফিকই তোমার প্রতি শত্রুতা পোষণ করিবে।
ইমান ইসলাম আমল ফিতনা মুনাফিক ও মুমিনের পরিচয় হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫০১৯. আনাস [রাঃআঃ] সূত্রে নাবী [সাঃআঃ] থেকে হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ আনসারের প্রতি ভালবাসা ঈমানের আলামত আর আনসারের প্রতি শত্রুতা নিফাকের আলামত।
ইমান ইসলাম আমল ফিতনা মুনাফিক ও মুমিনের পরিচয় হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২০.পরিচ্ছেদঃ মুনাফিকের আলামত
৫০২০. আব্দুল্লাহ ইবনি আমর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তির মধ্যে চারটি অভ্যাস থাকিবে, সে মুনাফিক। আর যদি ঐ চারটি অভ্যাসের একটি অভ্যাস থাকে, তবে তার মধ্যে একটি নিফাকের অভ্যাস হলো, যতক্ষণ না তা পরিত্যাগ করেঃ সে যখন কথা বলে, মিথ্যা বলে, কোন ওয়াদা করলে তা খেলাফ করে, যখন কোন অঙ্গীকার করে তা ভঙ্গ করে এবং করো সাথে ঝগড়া করার সময় গালি দেয়।
ইমান ইসলাম আমল ফিতনা মুনাফিক ও মুমিনের পরিচয় হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫০২১. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ মুনাফিকের চিহ্ন তিনটিঃ সে যখন কথা বলে মিথ্যা বলে, যখন ওয়াদা করে তা পূর্ণ করে না এবং তার নিকট আমানত রাখা হলে তার খিয়ানত করে।
ইমান ইসলাম আমল ফিতনা মুনাফিক ও মুমিনের পরিচয় হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫০২২. যির ইবনি হুবায়শ [র] হইতে বর্ণিতঃ
আলী [রা] বলেছেন, রাসূলুল্লাহু [সাঃ] আমার নিকট অঙ্গীকার করে বলেছেন ঃ কেবল মুমিনই আমার সাথে মহব্বত রাখবে, আর মুনাফিকই আমার প্রতি শক্ৰতা পোষণ করিবে।
ইমান ইসলাম আমল ফিতনা মুনাফিক ও মুমিনের পরিচয় হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫০২৩. আবু ওয়ায়ল [রা] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আবদুল্লাহ [রা] বলেছেন ; যাহার মধ্যে তিনটি অভ্যাস থাকিবে, সে মুনাফিক ঃ যখন সে কথা বলে, তখন মিথ্যা বলে, কেউ আমানত রাখলে, খিয়ানত করে এবং যখন কোন অঙ্গীকার করে, তা ভঙ্গ করে। আর যাহার মধ্যে এর একটি অভ্যাস থাকিবে, তার মধ্যে মুনাফিকের একটি অভ্যাস থাকিবে, তা পরিত্যাগ না করা পর্যন্ত।
ইমান ইসলাম আমল ফিতনা মুনাফিক ও মুমিনের পরিচয় হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ মাওকুফ
২১.পরিচ্ছেদঃ রমযানে রাত জাগরণ
৫০২৪. আবু হুরায়রা [রা] হইতে বর্ণিতঃ
নাবী [সাঃ] বলেছেন ঃ যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে সওয়াবের আশায় রমযান মাসে রাত্রি জাগরণ করিবে, তার পূর্ববর্তী সকল গুনাহ ক্ষমা করা হইবে।
ইমান ইসলাম আমল ফিতনা মুনাফিক ও মুমিনের পরিচয় হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫০২৫. আবু হুরায়রা [রা] হইতে বর্ণিতঃ
নাবী [সাঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে সওয়াবের আশায় রমযান মাসে রাত্রি জাগরণ করিবে, তার পূর্ববতী সকল পাপ ক্ষমা করা হইবে।
ইমান ইসলাম আমল ফিতনা মুনাফিক ও মুমিনের পরিচয় হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫০২৬. আবু হুরায়রা [রা] হইতে বর্ণিতঃ
নাবী [সাঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি রমযান মাসে ঈমানের সাথে সওয়াবের আশায় রাত্রি জাগরণ করিবে, তার পূর্ববতী সকল পাপ ক্ষমা করা হইবে।
ইমান ইসলাম আমল ফিতনা মুনাফিক ও মুমিনের পরিচয় হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২২.পরিচ্ছেদঃ শবে কদরে জাগরণ
৫০২৭. আবু হুরায়রা [রা] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি রমযানে ঈমানের সাথে সওয়াব লাভের আশায় রাত্রি জাগরণ করিবে, তার পূর্বকৃত সকল গুনাহ ক্ষমা করা হইবে। আর যে ব্যক্তি কদরের রাত্রে ঈমানের সাথে সওয়াব লাভের আশায় জাগরণ করিবে, তার পূর্ববর্তী সকল পাপ ক্ষমা করা হইবে।
ইমান ইসলাম আমল ফিতনা মুনাফিক ও মুমিনের পরিচয় হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৩.যাকাত
৫০২৮. আবু সুহায়ল তাহাঁর পিতা হইতে বর্ণিতঃ
আবু সুহায়ল তাহাঁর পিতা হইতে বর্ণনা করেন যে, তিনি তালহা ইবনি উবায়দুল্লাহকে বলিতে শুনেছেনঃ এলোমেলো চুলবিশিষ্ট নজ্দবাসী এক ব্যক্তি রসূলুল্লাহ [সাঃ]-এর নিকট উপস্থিত হলো। গুণগুণ শব্দ ব্যতীত তার কথার কিছুই শুনা যাচ্ছিল না, বুঝাও যাচ্ছিল না। সে নিকটে আসলে বুঝা গেল যে, সে ইসলাম সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করছে। রসূলুল্লাহ [সাঃ] তাকে বলিলেন ঃ দিবারাত্রির মধ্যে পাঁচ ওয়াক্ত নামায। সে জিজ্ঞাসা করলো, এটা ছাড়া আমার আরও কিছু করণীয় আছে ? তিনি বলিলেন ঃ না, কিন্তু ইচ্ছা করলে নফল পড়তে পারো। রসূলুল্লাহ [সাঃ] বলিলেনঃ আর রমযান মাসের রোজা। সে বললো ঃ এটা ছাড়াও কি আমার কিছু করণীয় আছে ? তিনি বলিলেন ঃ না, তবে চাইলে নফল রোজা রাখতে পারো। এরপর রসূলুল্লাহ সময়ঃ তাকে যাকাতের কথা বলিলেন, সে বললো ঃ এটা ছাড়াও কি আমার কিছু করণীয় আছে ? তিনি বলিলেন ঃ না, তবে তুমি নফল সাদকা করিতে পার। তারপর ঐ ব্যক্তি এই বলিতে বলিতে চলে গেল যে, আমি এতে কিছু বাড়াবও না এবং এর থেকে কিছু কমাবও না, তখন রসূলুল্লাহ [সাঃ] বলিলেনঃ যদি এই ব্যক্তি সত্য বলে থাকে, তবে সে কৃতকার্য হয়ে গেল।
ইমান ইসলাম আমল ফিতনা মুনাফিক ও মুমিনের পরিচয় হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৪.পরিচ্ছেদঃ জিহাদ
৫০২৯. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছিঃ যে ব্যক্তি আল্লাহর রাস্তায় বের হয়, আল্লাহ এই বলে তার জামিন হইয়া যান যে, তাকে আমার উপর ঈমান এবং আমার রাস্তায় জিহাদ করা ব্যতীত আর কিছুই বের করেনি। সুতরাং আমি তাকে জান্নাতে দাখিল করব তা দুয়ের যেভাবেই হোক। সে যুদ্ধক্ষেত্রে নিহত হোক অথবা স্বাভাবিকভাবে মৃত্যুবরণ করুক, অথবা তাকে ঐ ঘরে প্রত্যাবর্তন করান, যে ঘর হইতে সে বের হইয়াছিল; সওয়াব এবং যুদ্ধলব্ধ মালসহ।
ইমান ইসলাম আমল ফিতনা মুনাফিক ও মুমিনের পরিচয় হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৫০৩০. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আল্লাহ তাআলা ঐ ব্যক্তির যামিন হইয়া যান, যে ব্যক্তি তাহাঁর রাস্তায় বের হয়। আল্লাহ বলেনঃ তাকে আমার রাস্তায় জিহাদ, আমার উপর ঈমান এবং আমার রাসুলগনের উপর বিশ্বাস ছাড়া অন্য কিছু বের করেনি। আমি তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাব অথবা তাকে ঐ ঘরে প্রত্যাবর্তন করাব, যে ঘর হইতে সে বের হইয়াছিল, সে যে সওয়াব ও গনীমতপ্রাপ্ত হয়, তা সহ।
ইমান ইসলাম আমল ফিতনা মুনাফিক ও মুমিনের পরিচয় হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৫.পরিচ্ছেদঃ খুমুস আদায় করা
৫০৩১. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
আবদুল কায়স গোত্রের এক প্রতিনিধি দল রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট এসে বলিল, আমরা রবীআ গোত্রের লোক। আর আমরা নিষিদ্ধ মাস ব্যতীত আপনার নিকট উপস্থিত হইতে পারি না। অতএব আমাদেরকে এমন কিছু শিক্ষা দিন, যা আমরা আপনার নিকট হইতে শিখে যেতে পারি এবং আমাদের অন্যান্য লোককে এর প্রতি আহবান করিতে পারি। তিনি বললেনঃ আমি তোমাদেরকে চারটি বস্তুর প্রতি আদেশ করছি এবং চারটি বস্তু হইতে নিষেধ করছি। যে চার বস্তুর আদেশ করছি তা হল আল্লাহর প্রতি ঈমান। এরপর তিনি তাহাদের জন্য এর ব্যাখ্যা দিলেন যে, “আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ নেই এবং আমি মুহাম্মদ [সাঃআঃ] আল্লাহর রাসুল” এই সাক্ষ্য দেওয়া, নামাজ কায়েম করা, যাকাত আদায় করা, তোমরা যে গনীমতের মাল পাও, তার পঞ্চমাংশ আমার নিকট আদায় করা। আর আমি তোমাদেরকে নিষেধ করছিঃ দুববা [কদুর খোল দ্বারা প্রস্তুত পাত্র], হান্তম [মাটির সবুজ পাত্র বিশেষ], নাকীর [কাঠের পাত্রবিশেষ] এবং মুযাফফাত [তৈলাক্ত পাত্র বিশেষ] হইতে।
ইমান ইসলাম আমল ফিতনা মুনাফিক ও মুমিনের পরিচয় হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৬.পরিচ্ছেদঃ জানাযায় উপস্থিত হওয়া
৫০৩২. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে সওয়াব লাভের নিয়্যতে কোন মুসলমানের জানাযায় গমন করে এবং তার জানাযাহার নামাজ আদায় করে, এরপর তাকে কবরে রাখা পর্যন্ত অপেক্ষা করে, সে দুই কীরাত সওয়াব প্রাপ্ত হইবে। এক কীরাত হল উহুদ পাহাড়ের সমান। আর যে ব্যক্তি নামাজ আদায় করেই চলে আসে, সে এক কীরাত পাবে।
ইমান ইসলাম আমল ফিতনা মুনাফিক ও মুমিনের পরিচয় হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৭.পরিচ্ছেদঃ লজ্জা
৫০৩৩. সালিম [রাঃআঃ] তার পিতা {ইবনি উমার [রাঃআঃ]} থেকে হইতে বর্ণিতঃ
রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] এক ব্যক্তির নিকট দিয়ে যাচ্ছিলেন, যে তার ভাইকে লজ্জার ব্যাপারে উপদেশ দিচ্ছিল। তিনি বললেনঃ তাকে ছাড়, লজ্জা ঈমানের অংশ।
ইমান ইসলাম আমল ফিতনা মুনাফিক ও মুমিনের পরিচয় হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৮.পরিচ্ছেদঃ দ্বীন সহজ
৫০৩৪. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ এই দ্বীন সহজ, যে কেউ দ্বীনের ক্ষেত্রে কঠিন পন্থা অবলম্বন করিবে, সে দ্বীন পালনে ব্যর্থ হইয়া যাবে। অতএব তোমরা সোজা পথে চল, পরিপূর্ণতার কাছাকাছি থাকতে চেষ্টা কর, সুসংবাদ দাও, সহজ পন্থা অবলম্বন কর, সকাল সন্ধ্যা এবং কিছু রাত পর্যন্ত ইবাদতে থেকে সাহায্য প্রার্থনা কর।
ইমান ইসলাম আমল ফিতনা মুনাফিক ও মুমিনের পরিচয় হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
২৯.পরিচ্ছেদঃ আল্লাহ তাআলার নিকট পছন্দনীয় দীন
৫০৩৫. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর নিকট আসলেন, তখন তাহাঁর নিকট একজন মহিলা ছিল। তিনি জিজ্ঞাসা করলেনঃ এই মহিলা কে? তিনি বললেনঃ অমুক মহিলা। সে ঘুমায় না। তিনি তার নামাজ আদায়ের বিবরন দিলেন। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ এরূপ করো না, অতটুকু ইবাদত করিবে, যতটুকু তোমার শক্তিতে কুলায়। আল্লাহর শপথ! আল্লাহ তাআলা [ছওয়াব দিতে] বিমুখ হন না, যাবত না তোমরা অবসন্ন হইয়া পড়। আল্লাহর নিকট ঐ আমল সর্বোত্তম, যা সদা সর্বদা করা হয়।
ইমান ইসলাম আমল ফিতনা মুনাফিক ও মুমিনের পরিচয় হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩০.পরিচ্ছেদঃ ফিতনা থেকে দ্বীন রক্ষার্থে পলায়ন করা
৫০৩৬. আবু সাইদ খুদরী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ বেশী দিন দূরে নয়, যখন বকরী হইবে মানুষের উত্তম মাল, যা নিয়ে সে পাহাড়ের উপরে এবং যেখানে বৃষ্টির পানি জমে সেখানে চলে যাবে, আর নিজের দীনকে ফিতনা হইতে রক্ষা করিবে।
ইমান ইসলাম আমল ফিতনা মুনাফিক ও মুমিনের পরিচয় হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩১.পরিচ্ছেদঃ মুনাফিকের উদাহরণ
৫০৩৭. ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ মুনাফিকের উদাহরণ ঐ বকরীর ন্যায়, যে দুই বকরীর পালের মধ্যস্থলে থাকে। কখনও এই পালের দিকে আসে, কখনও ঐ পালের দিকে যায়, সে বুঝতে পারেনা সে কোন দলের সাথে থাকিবে।
ইমান ইসলাম আমল ফিতনা মুনাফিক ও মুমিনের পরিচয় হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩২.পরিচ্ছেদঃ কুরআন তিলাওয়াতকারী মুমিন ও মুনাফিক
৫০৩৮. আবু মুসা আশআরী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে মুমিন কুরআন তিলাওয়াত করে তার উদাহরণ যেন কমলালেবু, এর স্বাদ ও ঘ্রাণ উভয়ই উত্তম, আর যে মুমিন কুরআন পড়ে না, তার উদাহরণ যেন খুরমা, যাহার স্বাদ উত্তম, কিন্তু কোনও ঘ্রাণ নেই। আর যে মুনাফিক কুরআন পড়ে, সে যেন রায়হানা ফুল, যাহার ঘ্রাণ তো উত্তম, কিন্তু স্বাদ তিক্ত। আর যে মুনাফিক কুরআন পড়ে না সে যেন হানযালা ফল, এর স্বাদ তিক্ত আবার ঘ্রাণও নেই।
ইমান ইসলাম আমল ফিতনা মুনাফিক ও মুমিনের পরিচয় হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
৩৩.পরিচ্ছেদঃ মুমিনের আলামত
৫০৩৯. আনাস ইবনি মালিক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমাদের মধ্যে কেউ পূর্ণ মুমিন হইবে না, যতক্ষণ না সে তার ভাইয়ের জন্য তাই পছন্দ করে, যা সে নিজের জন্য পছন্দ করে।
ইমান ইসলাম আমল ফিতনা মুনাফিক ও মুমিনের পরিচয় হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস
Leave a Reply