হজ্জের বিধান ফজিলত মিকাত ইফরাদ কিরান ও তামাততু

হজ্জের বিধান ফজিলত মিকাত ইফরাদ কিরান ও তামাততু

হজ্জের বিধান ফজিলত মিকাত ইফরাদ কিরান ও তামাততু হজ্জের বিধান >> সুনানে নাসাই শরিফের মুল সুচিপত্র দেখুন

পর্বঃ ২৪ঃ হজ্জের বিধি-বিধানসমূহ (২৬১৯-২৭৩৯)

১.পরিচ্ছেদঃ হজ্জ ফরয হওয়া
২.পরিচ্ছেদঃ উমরা ওয়াজিব হওয়া
৩.পরিচ্ছেদঃ মাবরূর [মাকবূল] হজ্জের ফযীলত
৪.পরিচ্ছেদঃ হজ্জের ফযীলত
৫.পরিচ্ছেদঃ পরস্পর হজ্জ ও উমরা করার ফযীলত
৬.পরিচ্ছেদঃ হজ্জ মান্নত করে মৃত্যু বরণকারী ব্যক্তির পক্ষ থেকে হজ্জ করা
৭.পরিচ্ছেদঃ যে ব্যক্তি হজ্জ না করে মারা গেল তার পক্ষ থেকে হজ্জ করা
৮.পরিচ্ছেদঃ অসমর্থ ব্যক্তির পক্ষ হইতে উমরা করা
৯.পরিচ্ছেদঃ ঋণ পরিশোধের সাথে হজ্জ আদায়ের উপমা
১০.পরিচ্ছেদঃ পুরুষের পক্ষ থেকে নারীর হজ্জ করা
১১.পরিচ্ছেদঃ নারীর পক্ষ হইতে পুরুষের হজ্জ করা
১২.পরিচ্ছেদঃ শিশু সন্তান [অপ্রাপ্ত বয়স্ক ]-কে নিয়ে হজ্জ করা
১৩.পরিচ্ছেদঃ মদীনা হইতে হজ্জের জন্য নাবী [সাঃআঃ]-এর বের হওয়ার সময়
১৪.পরিচ্ছেদঃ মদীনাবাসীদের মীকাত [ইহ্‌রামের নির্ধারিত স্থান]
১৫.পরিচ্ছেদঃ শাম [ বৃহত্তর সিরিয়া] বাসীদের মীকাত
১৬.পরিচ্ছেদঃ মিসরবাসীদের মীকাত
১৭.পরিচ্ছেদঃ ইয়ামানবাসীদের মীকাত
১৮.পরিচ্ছেদঃ নজদবাসীদের মীকাত
১৯.পরিচ্ছেদঃ ইরাকবাসীদের মীকাত
২০.পরিচ্ছেদঃ যাদের পরিবার মীকাতের মধ্যে বসবাস করে
২১.পরিচ্ছেদঃ যুল-হুলায়কায় রাতযাপন
২২.পরিচ্ছেদঃ যুল হুলায়ফা বায়দা প্রসংগে
২৩.পরিচ্ছেদঃ ইহ্‌রাম বাঁধার জন্য গোসল করা
২৪.পরিচ্ছেদঃ মুহরিমের গোসল করা
২৫.পরিচ্ছেদঃ ইহ্‌রাম অবস্থায় যাফরান এবং ওয়ারস দ্বারা রঞ্জিত কাপড় ব্যবহার নিষিদ্ধ
২৬.পরিচ্ছেদঃ ইহ্‌রাম অবস্থায় জুব্বা পরিধান করা
২৭.পরিচ্ছেদঃ মুহ্‌রিম ব্যক্তির জন্য জামা পরিধান নিষিদ্ধ
২৮.পরিচ্ছেদঃ ইহ্‌রাম অবস্থায় পায়জামা পরা করা
২৯.পরিচ্ছেদঃ যে ব্যক্তি তহবন্দ [খোলা লুংগী] না পায় তার জন্য পায়জামা পরিধানের অনুমতি
৩০.পরিচ্ছেদঃ মুহ্‌রিম নারীর জন্য নিকাব পরিধান নিষিদ্ধ
৩১.পরিচ্ছেদঃ ইহ্‌রামে বুরনুস পরা নিষিদ্ধ
৩২.পরিচ্ছেদঃ ইহ্রাম অবস্থায় পাগড়ী পরা নিষেধ
৩৩.পরিচ্ছেদঃ ইহ্রাম অবস্থায় মোজা পরা নিষেধ।
৩৪.পরিচ্ছেদঃ যাহার জুতা নেই তার জন্য ইহ্‌রাম অবস্থায় মোজা পরার অনুমতি
৩৪.পরিচ্ছেদঃ মুহ্‌রিম মহিলার জন্য হাত মোজা পরা নিষিদ্ধ।
৩৬.পরিচ্ছেদঃ ইহ্রামের সময় তাল্‌বীদ করা। {১}
৩৭.পরিচ্ছেদঃ সুগন্ধির স্থান
৩৮.পরিচ্ছেদঃ মুহ্‌রিমের জন্য যাফরান ব্যবহার
৩৯.পরিচ্ছেদঃ মুহ্‌রিমের জন্য খালুক ব্যবহার
৪০.পরিচ্ছেদঃ মুহরিমের সুরমা ব্যবহার
৪১.পরিচ্ছেদঃ মুহরিম ব্যক্তির রঙ্গীন কাপড় ব্যবহার করা মাকরুহ
৪২.পরিচ্ছেদঃ মুহরিমের মাথা ও মুখমন্ডল ঢেকে রাখা
৪৩.পরিচ্ছেদঃ হজ্জে ইফরাদ
৪৪.পরিচ্ছেদঃ হজ্জে কিরান
৪৫.পরিচ্ছেদঃ হজ্জে তামাত্তু {১}

১.পরিচ্ছেদঃ হজ্জ ফরয হওয়া

২৬১৯. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] একবার লোকদের সামনে খুতবা দিলেন। তিনি বললেনঃ মহান মহিয়ান আল্লাহ্ তাআলা তোমাদের ওপর হজ্জ ফরয করিয়াছেন, তখন এক ব্যক্তি বললোঃ ইয়া রসূলুল্লাহ! [তা কি] প্রতি বছরে? তিনি [রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]] তার উত্তর দেয়া থেকে নীরব রইলেন। লোকটি তিনবার এর পুনরাবৃত্তি করলো। পরে তিনি [রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]] বললেনঃ যদি আমি বলতাম, হ্যাঁ, তা হলে অবশ্যই তা [প্রতি বছরের জন্য] ফরয হইয়া যেতো। আর যদি ফরয হইয়াই যেতো, তাহলে তোমরা তা আদায় করিতে পারতে না। আমি যা বলি তা বলিতে দাও, [প্রশ্ন করে সহজ কাজকে জটিল করো না।] কেননা তোমাদের পূর্বে যারা ছিল তারা অধিক প্রশ্ন করা এবং তাহাদের নাবীদের সাথে মতবিরোধের কারণে ধ্বংস হইয়াছে। আমি যখন তোমাদেরকে কোন কাজের আদেশ দেই তখন তা তোমরা সাধ্যানুযায়ী পালন করো। আর যখন কোন কাজ করিতে নিষেধ করি, তখন তা পরিত্যাগ করো।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৬২০. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

[একবার] রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] [ভাষণ দিতে] দাঁড়িয়ে বললেনঃ আল্লাহ্ তাআলা তোমাদের ওপর হজ্জ ফরয করিয়াছেন। তখন আকরা ইবনি হাবিস তামীমী [রাঃআঃ] বললেনঃ ইয়া রসূলুল্লাহ! [তা কি] প্রতি বছরের জন্য? [তিনি] রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] নীরব রইলেন। তারপর বললেনঃ আমি যদি বলতাম, হ্যাঁ, তবে তা ফরয হইয়া যেতো। তখন তোমরা তা শুনতেও না এবং মানতেও না। কিন্তু [তোমরা জেনে রাখ] হজ্জ তা একটিই, হজ্জ একবারই ফরয।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২.পরিচ্ছেদঃ উমরা ওয়াজিব হওয়া

২৬২১. আবু রুযাইন [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বললেনঃ ইয়া রসূলুল্লাহ! আমার পিতা একজন অতিবৃদ্ধ লোক, হজ্জ ও উমরা করার এবং বাহনে আরোহণেরও ক্ষমতা তাহাঁর নেই। তিনি [রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]] বললেনঃ তাহলে তুমি তোমার পিতার পক্ষ থেকে হজ্জ ও উমরা আদায় কর।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩.পরিচ্ছেদঃ মাবরূর [মাকবূল] হজ্জের ফযীলত

২৬২২. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ মাবরূর [কবুল হওয়া] হজ্জের জন্য জান্নাত ব্যতীত কোন প্রতিদান নেই। আর এক উমরা অন্য উমরার মধ্যবর্তী সময়ের জন্য গুনাহর কাফফারা হয়।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৬২৩. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

নাবী [সাঃআঃ] থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলছেনঃ মাবরূর হজ্জের প্রতিদান জান্নাত ব্যতীত আর কিছুই নয়।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৪.পরিচ্ছেদঃ হজ্জের ফযীলত

২৬২৪. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ এক ব্যক্তি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] –কে জিজ্ঞাসা করলেনঃ সে বলিল, ইয়া রসূলুল্লাহ! কোন্ আমল সর্বোত্তম? তিনি বললেনঃ আল্লাহর প্রতি ঈমান আনা। সে বললেনঃ এরপর কোনটি? তিনি বললেনঃ আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করা। ঐ ব্যক্তি আবার বললঃ তারপর কোনটি? তিনি বললেনঃ মাবরূর হজ্জ। {১}

{১} যে হজ্জের মধ্যে পাপ ও হজ্জ ক্ষুণ্ণকারী কোন কাজ সংঘটিত হয় না। মতান্তরে যে হজ্জ আল্লাহর নিকট কবূল হয়, তাকে মাবরূর হজ্জ বলে।হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৬২৫. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আল্লাহর প্রতিনিধি তিন ব্যক্তি; গাযী [মুজাহিদ], হাজী ও উমরা আদায়কারী।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৬২৬. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ বৃদ্ধ, অল্প বয়স্ক, দুর্বল এবং নারীদের জিহাদ হলো হজ্জ ও উমরা।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য

২৬২৭. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি এই ঘরের [বায়তুল্লাহর] হজ্জ করলো এবং অশ্লীল কথা বললো না ও কোন পাপ করলো না সে সদ্যজাত শিশুর মত [নিষ্পাপ] হইয়া প্রত্যাবর্তন করলো।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৬২৮. আয়েশা বিনত তালহা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ উম্মুল মুমিনীন আয়েশা [রাঃআঃ] আমাকে বলেছেন যে, আমি বললামঃ ইয়া রাসূ্লুল্লাহ্! আমরা কি আপনার সাথে জিহাদে যোগদান করবো না? আমি কুরআনে জিহাদ অপেক্ষা উত্তম কোন আমলই দেখছি না। তিনি [রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]] বললেনঃ না, বরং তোমাদের [নারীদের] জন্য অতি সুন্দর ও অতি উত্তম জিহাদ হলো বায়তুল্লাহর হজ্জ [অর্থাৎ] মাবরূর হজ্জ।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৬২৯. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ এক উমরা হইতে অন্য উমরা পর্যন্ত উভয়ের মধ্যবর্তী সময়ের জন্য কাফফারা। আর মাবরূর হজ্জের বিনিময় জান্নাত ব্যতীত আর কিছুই নয়।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৫.পরিচ্ছেদঃ পরস্পর হজ্জ ও উমরা করার ফযীলত

২৬৩০. আমর ইবনি দীনার [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] বলেছেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমরা হজ্জ ও উমরা পরস্পর পালন [হজ্জ সমাপনের পর উমরা এবং উমরার পর হজ্জ] করিবে, কেননা তা [এ দুটি] অভাব অনটন ও পাপকে দূর করে দেয় যেমন [কামারের] হাপর লোহার মরিচা দূর করে থাকে।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৬৩১. আবদুল্লাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমরা হজ্জ ও উমরা পরস্পর [হজ্জ সমাপনের পর উমরা এবং উমরার পর হজ্জ] আদায় করিবে, কেননা তা অভাব ও পাপ এরূপ দূর করে দেয়, যেরূপ হাপর লোহা, সোনা ও রুপার ময়লা দূর করে থাকে। আর মাবরূর হজ্জের বিনিময় জান্নাত ব্যতীত আর কিছুই নয়।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহীহ

৬.পরিচ্ছেদঃ হজ্জ মান্নত করে মৃত্যু বরণকারী ব্যক্তির পক্ষ থেকে হজ্জ করা

২৬৩২. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

একজন মহিলা হজ্জ মান্নত করেছিল। সে মৃত্যুবরণ করলো [হজ্জ করিতে পারলো না]। এরপর তার ভাই রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] –এর নিকট এসে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলো। তিনি বললেনঃ তুমি কি মনে কর, যদি তোমার বোনের দেনা থাকতো তুমি কি তা আদায় করিতে? সে বললঃ হ্যাঁ। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ তাহলে, আল্লাহর হকও আদায় কর; কেননা তা আদায় করার অধিক উপযোগী।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৭.পরিচ্ছেদঃ যে ব্যক্তি হজ্জ না করে মারা গেল তার পক্ষ থেকে হজ্জ করা

২৬৩৩. মূসা ইবনি সালামা হুযালী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] বলেন যে, সিনান ইবনি সালামা জুহানী [রাঃআঃ]-এর স্ত্রী তাকে বলিলেন, যেন তিনি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] –কে জিজ্ঞাসা করেন যে, তার মা হজ্জ না করেই ইনতিকাল করিয়াছেন। তার মায়ের পক্ষ থেকে সে হজ্জ করলে তা যথেষ্ট হইবে কি? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ, যদি তার মায়ের কোন দেনা থাকতো আর তার পক্ষ হইতে সে আদায় করতো, তা হলে কি তার মায়ের পক্ষ থেকে তা আদায় হতো না? অতএব সে যেন তার মায়ের পক্ষ থেকে হজ্জ আদায় করে।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৬৩৪. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ এক মহিলা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] –কে তাহাঁর পিতা সম্পর্কে প্রশ্ন করলো যে, তিনি হজ্জ না করে ইনতিকাল করিয়াছেন। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ তুমি তোমার পিতার পক্ষ হইতে হজ্জ আদায় কর।

বাহনে স্থির থাকতে অসমর্থ জীবিত ব্যক্তির পক্ষ হইতে হজ্জ করা

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৬৩৫. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

খাছআম গোত্রের একজন মহিলা মুযদালিফায় [১০ যিলহজ্জ] সকালে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] –কে জিজ্ঞাসা করলোঃ সে বলিল, ইয়া রসূলুল্লাহ! আমার পিতার অতি বৃদ্ধাবস্থায় তাহাঁর উপর হজ্জ ফরয হইয়াছে, কিন্তু তিনি বাহনের উপর স্থির থাকতে পারেন না, এমতাবস্থায় আমি কি তার পক্ষ থেকে হজ্জ করবো? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৬৩৬. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

অনুরূপ হাদীস বর্ণিত করিয়াছেন।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য

৮.পরিচ্ছেদঃ অসমর্থ ব্যক্তির পক্ষ হইতে উমরা করা

২৬৩৭. আবু রাযীন উকায়লী [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বললেনঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আমার পিতা একজন অতি বৃদ্ধ ব্যক্তি, হজ্জ ও উমরা করার এবং [বাহনে] আরোহণের মত ক্ষমতা নেই। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ তুমি তোমার পিতার পক্ষ হইতে হজ্জ এবং উমরা আদায় কর।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৯.পরিচ্ছেদঃ ঋণ পরিশোধের সাথে হজ্জ আদায়ের উপমা

২৬৩৮. আবদুল্লাহ ইবনি যুবায়র [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ খাছআম গোত্রের এক ব্যক্তি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] – এর নিকট এসে বললেনঃ আমার পিতা একজন বয়োবৃদ্ধ ব্যক্তি, তিনি বাহনের উপর আরোহণে অসমর্থ অথচ তার উপর হজ্জ ফরয হইয়াছে। তার পক্ষ হইতে আমি হজ্জ আদায় করলে তিনি দায়মুক্ত হইবে কি? রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ তুমি কি তার বড় ছেলে? সে বললঃ হ্যাঁ। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ তুমি বলো, যদি তার উপর ঋণ থাকতো তাহলে তুমি কি তা পরিশোধ করিতে? সে বললঃ হ্যাঁ। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ তবে তুমি তার পক্ষ হইতে হজ্জ আদায় কর।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ জইফ হাদীস

২৬৩৯. ইব্ন আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ এক ব্যক্তি বললেনঃ ইয়া রসূলুল্লাহ! আমার পিতা ইন্তিকাল করিয়াছেন, অথচ তিনি হজ্জ করেন নি। আমি কি তার পক্ষ হইতে হজ্জ করবো? তিনি বললেনঃ তুমি বলো _____ যদি তার উপর ঋণ থাকতো, তাহলে তুমি কি তা আদায় করে দিতে? সে বললঃ হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ আল্লাহর হক আদায় করা অধিক যুক্তিযুক্ত।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ জইফ হাদীস

২৬৪০. আবদুল্লাহ্‌ ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

এক ব্যক্তি রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] –কে জিজ্ঞাসা করলেনঃ আমার পিতার উপর হজ্জ ফরয হইয়াছে, অথচ তিনি অতি বৃদ্ধ লোক। তিনি বাহনের ওপর স্থির থাকতে পারেন না। যদি তাকে [বাহনের সংগে] বেঁধে দেই, তবে ভয় হয় যে, তার মৃত্যু ঘটবে। এমতাবস্থায় আমি কি তার পক্ষ হইতে হজ্জ করবো? রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বললেনঃ দেখ, যদি তার উপর ঋণ থাকতো, তবে তুমি তা আদায় করলে তার পক্ষ হইতে কি তা আদায় হতো? সে বললঃ হ্যাঁ। তিনি [রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]] বললেনঃ অতএব তোমার পিতার পক্ষ হইতে হজ্জ আদায় করো।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য

১০.পরিচ্ছেদঃ পুরুষের পক্ষ থেকে নারীর হজ্জ করা

২৬৪১. আবদুল্লাহ্‌ ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ [হজ্জের সফরে] ফযল ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর পেছনে বাহনের উপর উপবিষ্ট ছিলেন। এমন সময় খাছাআম গোত্রের এক মহিলা এক সমস্যার সমাধান জিজ্ঞাসা করার জন্য রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর নিকট আসলো। তখন ফযল ঐ মহিলার দিকে তাকাচ্ছিলেন। আর ঐ মহিলাও তার দিকে তাকাচ্ছিলো। রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] ফযলের চেহারা অন্য দিকে ফিরিয়ে দিলেন। তখন ঐ মহিলাটি বললঃ ইয়া রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]! আল্লাহ বান্দাদের উপর আল্লাহ্ তাআলার নির্ধারিত [ফরয] হজ্জ আমার পিতার উপর তাহাঁর অতি বৃদ্ধাবস্থায় সাব্যস্ত হইয়াছে। অথচ তিনি বাহনের ওপর স্থির থাকতে পারেন না। আমি কি তার পক্ষ হইতে হজ্জ আদায় করবো? তিনি [রসূলুল্লাহ] বললেনঃ হ্যাঁ। এঘটনাটি ছিল বিদায় হজ্জের।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৬৪২. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

বিদায় হজ্জের দিন খাছাআম গোত্রের এক মহিলা রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] এর নিকট ফাতাওয়া চাইল। তখন ফযল ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] এর বাহনে তাহাঁর পিছনে আরোহী ছিলেন। সে [মহিলা] বললঃ ইয়া রসূলুল্লাহ্ ! আল্লাহ বান্দাদের উপর আল্লাহ তাআলার নির্ধারিত [ফরয] হজ্জ আমার পিতার উপর তাহাঁর অতি বৃদ্ধাবস্থায় সাব্যস্ত হইয়াছে। অথচ তিনি বাহনের ওপর স্থির থাকতে পারেন না। আমি তার পক্ষ হইতে হজ্জ করলে তা কি আদায় হইবে? রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] তাকে বললেনঃ হ্যাঁ। তখন ফযল ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] ঐ মহিলার দিকে তাকাচ্ছিলেন, আর ঐ মহিলার ছিল সুন্দরী। রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] ফযল [রাঃআঃ]-কে ধরে তার চেহারা অন্যদিকে ফিরিয়ে দিলেন। {১}

{১} ফযল [রাঃআঃ] তখন কিশোর বয়েসের ছিলেন এবং কৈশোরের চপলতার এদিক সেদিক তাকাচ্ছিলেন।হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১১.পরিচ্ছেদঃ নারীর পক্ষ হইতে পুরুষের হজ্জ করা

২৬৪৩. ফযল ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বাহনের উপর রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] এর পেছনে উপবিষ্ট ছিলেন। এমন সময় এক ব্যক্তি তাহাঁর নিকট এসে বললেনঃ ইয়া রসূলুল্লাহ্! আমার মাতা অতি বৃদ্ধা, তাকে বাহনের উপর উঠালে তিনি স্থির থাকতে পারেন না, আর তাঁকে বেঁধে [বাহনে] বসিয়ে দিলে আশংকা হচ্ছে, আমি হয়ত তাকে খুন করেই ফেলব। তখন রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বললেনঃ বলত! যদি তোমার মাতার ঋণ থাকতো, তা হলে তুমি কি তা পরিশোধ করিতে? সে বললোঃ হ্যাঁ। তখন তিনি [রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]] বললেনঃ তাহলে তুমি তোমার মাতার পক্ষ হইতে হজ্জ আদায় কর।

কারো পক্ষ হইতে তার বড় ছেলের হজ্জ করা মুস্তাহাব

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ শায

২৬৪৪. ইবনি যুবায়র [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

নাবী [সাঃআঃ] ব্যক্তিকে বললেনঃ তুমি তোমার পিতার বড় ছেলে? অতএব তুমি তোমার পিতার পক্ষ হইতে হজ্জ আদায় কর।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ জইফ হাদীস

১২.পরিচ্ছেদঃ শিশু সন্তান [অপ্রাপ্ত বয়স্ক ]-কে নিয়ে হজ্জ করা

২৬৪৫. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

এক মহিলা তার শিশু সন্তানকে রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর দিকে তুলে ধরে বললেনঃ ইয়া রসূলুল্লাহ্! এর জন্যও কি হজ্জ রয়েছে? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ, এবং সওয়াব তোমারই।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৬৪৬. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ এক মহিলা হাওদা থেকে একটি শিশু সন্তানকে বের করে বললেনঃ ইয়া রসূলুল্লাহ্। এর জন্য কি হজ্জ রয়েছে ? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ, এবং তোমার জন্য সওয়াব।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৬৪৭. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ এক মহিলা একটি শিশু সন্তানকে নাবী [সাঃআঃ]-এর দিকে উঁচু করে ধরে বললেনঃ ইয়া রসূলুল্লাহ্ ! এর জন্যও কি হজ্জ রয়েছে ? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ, এবং তোমার জন্য সওয়াব।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৬৪৮. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] হজ্জ করে ফেরার পথে যখন রাওহা নামক স্থানে পৌছিলেন, তখন একদল লোকের সাথে তাহাঁর দেখা হলো। তিনি বললেনঃ তোমরা কারা? তারা বললোঃ আমরা মুসলমান। তারা জিজ্ঞাসা করলোঃ আপনারা কারা? [সাহাবায়ে কিরাম] বললেনঃ [ইনি] তাঁরা রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] ও সাহাবিগণ। রাবী বলেনঃ এমন সময় একজন মহিলা হাওদা থেকে একটি শিশুকে বের করে বললঃ এর জন্য কি হজ্জ আছে? রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বললেনঃ হ্যাঁ, এবং তোমার সওয়াব।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৬৪৯. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] এক মহিলার পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন, আর মহিলাটি ছিল [পর্দার মধ্যে] এবং তার সাথে একটি শিশু ছিল। তখন সে [শিশুটিকে দেখিয়ে] বললেনঃ এর জন্য কি হজ্জ আছে? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ, তবে সওয়াব তোমার জন্য।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য

১৩.পরিচ্ছেদঃ মদীনা হইতে হজ্জের জন্য নাবী [সাঃআঃ]-এর বের হওয়ার সময়

২৬৫০. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আমরা [হজ্জের উদ্দেশ্য] রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর সাথে যিলকাদ মাসের পাঁচ দিন অবশিষ্ট থাকতে বের হইয়াছিলাম। হজ্জ ছাড়া আমাদের অন্য কোন উদ্দেশ্য ছিল না। আমরা যখন মক্কার নিকটবর্তী হলাম, তখন রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] আদেশ করলেনঃ যাহার সাথে কুরবানীর পশু নেই, সে যেন বায়তুল্লাহ্‌র তাওয়াফ সমাপ্ত করে [উমরা করে] হজ্জের মীকাতসমুহ [ইহরামের নির্ধারিত স্থান ] হালাল হইয়া যায়।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৪.পরিচ্ছেদঃ মদীনাবাসীদের মীকাত [ইহ্‌রামের নির্ধারিত স্থান]

২৬৫১. আবদুল্লাহ্‌ ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ মদীনাবাসীরা তালবিয়া পাঠ করিবে [ইহ্‌রাম বাঁধবে] “যুলহুলায়ফা” থেকে, আর সিরিয়াবাসিগণ “জুহুফা” নামক স্থান থেকে, নজদবাসিগণ কারণ [নামক স্থান] হইতে এবং আমার নিকট বর্ণনা পৌঁছেছে যে, রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আর ইয়ামানবাসিগ্ণ ইহ্‌রাম বাঁধবে ইয়ালামলাম থেকে।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৫.পরিচ্ছেদঃ শাম [ বৃহত্তর সিরিয়া] বাসীদের মীকাত

২৬৫২. আবদুল্লাহ্‌ ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

এক ব্যক্তি মসজিদে দাঁড়িয়ে বললেনঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ্‌। আপনি কোন স্থান থেকে আমাদেরকে ইহ্‌রাম বাঁধার আদেশ করেন? রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বললেনঃ মদীনাবাসীগণ ইহ্‌রাম বাঁধবে যুলহুলায়ফা থেকে। আর সিরিয়াবাসিগণ জুহ্‌ফা থেকে আর নজদবাসিগণ কারন থেকে। ইবনি উমার [রাঃআঃ] বলেনঃ তাঁরা [সাহাবী [রাঃআঃ] বলেন যে, রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ ইয়ামানবাসীগণ ইয়ালামলাম থেকে তালবিয়া পাঠ [ইহ্‌রাম] করিবে। ইবনি উমার [রাঃআঃ] বলিতেনঃ এ কথাটি আমি রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] থেকে [স্পষ্ট শুনতে ও] বুঝতে পারিনি।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৬.পরিচ্ছেদঃ মিসরবাসীদের মীকাত

২৬৫৩. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] মদীনাবাসীদের জন্য যুল হুলায়ফা কে মীকাত নির্ধারণ করিয়াছেন এবং সিরিয়া ও মিসরবাসীদের জন্য জুহ্‌ফা, ইরাকীদের জন্য যাতু ইরক আর ইয়ামানবাসীদের জন্য ইয়ালামলাম কে।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৭.পরিচ্ছেদঃ ইয়ামানবাসীদের মীকাত

২৬৫৪. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] মদীনাবাসীদের জন্য যুল্‌হুলায়ফা সিরিয়াবাসীদের জন্য জুহ্‌ফা, নজদবাসীদের জন্য কারন, আর ইয়ামানবাসীদের জন্য ইয়ালামলাম-কে মীকাত নির্ধারণ করিয়াছেন। তিনি বলেছেনঃ এই সকল মীকাত তো ঐ সকল স্থানের অধিবাসীদের জন্য, আর ঐ সকল লোকের জন্যও যারা অন্য স্থানের বাসিন্দা, কিন্তু এসকল স্থান দিয়ে আগমন করে। আর যে ব্যক্তির পরিবার মীকাতের মধ্যে রয়েছে, তারা যে স্থান হইতে ইচ্ছা করে, আর এ বিধান মক্কাবাসীদের জন্য প্রযোজ্য।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৮.পরিচ্ছেদঃ নজদবাসীদের মীকাত

২৬৫৫. সালিম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ মদীনাবাসীগণ তালবিয়া পাঠ করিবে [ইহ্‌রাম বাঁধবে] যুলহুলায়ফা থেকে, সিরিয়াবাসীগণ জুহ্‌ফা থেকে, নজদবাসীগণ কারন থেকে। আর আমি [নিজে] শুনিনি, কিন্তু আমাকে বলা হইয়াছে যে, তিনি [রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]] বলেছেনঃ আর ইয়ামানবাসীগণ তালবিয়া পাঠ করিবে ইয়ালামলাম থেকে।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

১৯.পরিচ্ছেদঃ ইরাকবাসীদের মীকাত

২৬৫৬. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] মদীনাবাসীদের জন্য যুলহুলায়ফা,সিরিয়া ও মিসরবাসীদের জন্য জুহ্‌ফা, ইরাকবাসীগণ জন্য যাতু ইরক, নজদবাসীদের জন্য কারন এবং ইয়ামানবাসীদের জন্য ইয়ালামলামকে মীকাত নির্ধারণ করিয়াছেন।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২০.পরিচ্ছেদঃ যাদের পরিবার মীকাতের মধ্যে বসবাস করে

২৬৫৭. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] মদীনাবাসীদের জন্য যুলহুলায়ফা, সিরিয়াবাসীদের জন্য জুহ্‌ফা, নজদবাসীদের জন্য কারন এবং ইয়ামানবাসীদের জন্য ইয়ালামলাম কে মীকাত নির্ধারণ করিয়াছেন। তিনি বলেনঃ এ সকল [মীকাত] উল্লিখিতদের [দেশের অধিবাসীদের] জন্য এবং ঐ সকল লোকের জন্যও যারা হজ্জ ও উমরার উদ্দেশ্যে এ সকল স্থান দিয়ে আগমন করে। আর এছাড়া যারা এর ভেতরে রয়েছে তারা যে স্থান হইতে আরম্ভ করে; এমনকি মক্কাবাসীদের জন্যও ইহা [অর্থাৎ মক্কা]।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৬৫৮. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

নাবী [সাঃআঃ] মদীনাবাসীদের জন্য যুল হুলায়ফা, সিরিয়াবাসীদের জন্য জুহ্‌ফা, ইয়ামানবাসীদের জন্য ইয়ালামলাম, নজদবাসীদের জন্য কারন কে মীকাত নির্ধারণ করিয়াছেন। এ সকল স্থান ঐ সকল লোকদের এবং ঐ লোকদের জন্যও যারা এ সকল স্থান দিয়ে হজ্জ ও উমরার উদ্দেশ্যে আগমন করিবে। ঐ সকল স্থানের অধিবাসী ব্যতীত [ভেতরে যারা হজ্জ ও উমরার ইচ্ছা করে,] তারা নিজ নিজ পরিবার [বাসস্থান] থেকে [ইহ্‌রাম বাঁধবে]। এমনকি মক্কাবাসীরাও তালবিয়া পাঠ করিবে সেখান [মক্কা] থেকে। {১}

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২১.পরিচ্ছেদঃ যুল-হুলায়কায় রাতযাপন

২৬৫৯. ইবনি শিহাব [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আবদুল্লাহ্‌ ইবনি উমরের পুত্র উবায়দুল্লাহ্‌ আমাকে বলেছেন যে, তার পিতা বলেছেন, রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] যুল হুলায়ফার বায়দা নামক স্থানে রাতযাপন এবং সেখানকার মসজিদে নামাজ আদায় করেন।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৬৬০. আবদুল্লাহ্‌ ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি তখন যুলহুলায়ফার রাতযাপনের স্থানে ছিলেন। সে সময় তাহাঁর নিকট ওহী আসলো এবং তাঁকে বলা হলোঃ আপনি বরকতপূর্ণ প্রশস্ত উপত্যকায় আছেন।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৬৬১. ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] যুল হুলায়ফার ময়দানে [প্রশস্ত উপত্যকায়] উট বসালেন এবং সেখানে নামাজ আদায় করিলেন।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২২.পরিচ্ছেদঃ যুল হুলায়ফা বায়দা প্রসংগে

২৬৬২. আনাস ইবনি মালিক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বায়দা নামক স্থানে জুহরের নামাজ আদায় করিলেন। এরপর বাহনে সওয়ার হইয়া বায়দার পাহাড়ে আরহণ করিলেন এবং হজ্জ ও উমরার ইহ্‌রাম বাঁধলেন।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ জইফ হাদীস

২৩.পরিচ্ছেদঃ ইহ্‌রাম বাঁধার জন্য গোসল করা

২৬৬৩. আসমা বিন্‌ত উমায়স [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি মুহাম্মাদ ইবনি আবু বকর সিদ্দীককে বায়দায় প্রসব করেন। আবু বকর [রাঃআঃ] রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-কে এ সংবাদ জানালে তিনি বললেনঃ তাকে বল, যেন সে গোসল করে, এরপর ইহ্‌রাম বাঁধে।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৬৬৪. আবু বকর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বিদায় হজ্জে রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর সাথে হজ্জের উদ্দেশ্যে বের হলেন। তখন তাহাঁর সাথে তাহাঁর স্ত্রী আসমা [রাঃআঃ] বিন্‌ত উমায়স খাছআমীয়্যাও ছিলেন। যখন তাঁরা যুলহুলায়ফায় ছিলেন, তখন আসমা [রাঃআঃ] মুহাম্মাদ ইবনি আবু বকর [রাঃআঃ]-কে প্রসব করেন। আবু বকর [রাঃআঃ] নাবী [সাঃআঃ]- এর নিকট এ সংবাদ দিলে রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] তাঁকে [আবু বকরকে] আদেশ করিলেন যে, তিনি যেন তাকে [আসমাকে] গোসল করে হজ্জের ইহ্‌রাম বাঁধতে আদেশ করেন। এরপর অন্যান্য লোক [হজ্জের আমলরূপে] যা করে তা করিবে, কিন্তু সে বায়তুল্লাহ্‌র তওয়াফ করিবে না।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৪.পরিচ্ছেদঃ মুহরিমের গোসল করা

২৬৬৫. মিসওয়ার ইবনি মাখরামা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তাঁরা আবওয়া নামক স্থানে বিতর্কে লিপ্ত হইয়াছিলেন। ইবনি আব্বাস বললেনঃ মু্‌হ্‌রিম ব্যক্তি তার মাথা ধুবে, আর মিসওয়ার বললেনঃ সে মাথা ধুবে না। এরপর আবদুল্লাহ্‌ ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] আমাকে আবু আইয়ূব আনসারী [রাঃআঃ]-এর নিকট পাঠালেন, যেন আমি তাঁকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করি। আমি তাঁকে পেলাম, তিনি কূপের পাশে [পানি তোলার] দুটি কাঠের মধ্যস্থলে গোসল করছিলেন। আর তিনি ছিলেন একটি কাপড়ের পর্দার আড়ালে। আমি তাঁকে সালাম দিয়ে বললামঃ কিরূপে রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] ইহ্‌রাম অবস্থায় মাথা ধৌত করিতেন, তা আপনার নিকট জিজ্ঞাসা করার জন্য আবদুল্লাহ্‌ ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] আমাকে আপনার নিকট পাঠিয়েছেন। আমার কথা শুনে আবু আইয়ূব আনসারী [রাঃআঃ] কাপড়ের উপর হাত রেখে তা সরিয়ে দিলেন, তাতে তার মাথা দৃশ্যমান হলো। পরে তিনি একজন লোককে তার মাথায় পানি ঢালতে বলিলেন। তারপর দুহাত দ্বারা মাথা ঝাড়া দিলেন এবং দুই হাত একবার সামনের দিকে একবার পেছনের দিকে নিলেন। তারপর তিনি বললেনঃ এভাবে আমি রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-কে গোসল করিতে দেখেছি।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৫.পরিচ্ছেদঃ ইহ্‌রাম অবস্থায় যাফরান এবং ওয়ারস দ্বারা রঞ্জিত কাপড় ব্যবহার নিষিদ্ধ

২৬৬৬. ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] মুহ্‌রিমকে যাফরান ও ওয়ারস দ্বারা রঞ্জিত কাপড় পরিধান করিতে নিষেধ করিয়াছেন।

{১} বুরনুস টুপি সংযুক্ত জুব্বা বা ওভারকোট জাতীয় পোশাক।হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৬৬৭. সালিম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

সালিম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] তাহাঁর পিতা থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেনঃ রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর নিকট জিজ্ঞাসা করা হইয়াছিল, মুহ্‌রিম ব্যক্তি কিরূপে কাপড় পরিধান করিবে। তিনি বলেছিলেনঃ মুহরিম ব্যক্তি জামা, বুরনুস {১} পাজামা, পাগড়ী এবং ঐ সকল কাপড়, যা ওয়ারস বা জাফরান দ্বারা রং করা হইয়াছে তা পরিধান করিবে না। আর [পরিধান করিবে না] মোজা। কিন্তু ঐ ব্যক্তি ছাড়া, যাহার জুতা না থাকে। যদি জুতা না পায় তাহলে নিম্ন পর্যন্ত সে দুটি [মোজা] কেটে তা পরিধান করিবে।

{১} বুরনুস টুপি সংযুক্ত জুব্বা বা ওভারকোট জাতীয় পোশাক।হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৬.পরিচ্ছেদঃ ইহ্‌রাম অবস্থায় জুব্বা পরিধান করা

২৬৬৮. ইয়ালা ইবনি উমাইয়া [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বললেনঃ যদি ওহী অবতীর্ণ হওয়ার সময় আমি রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-কে দেখিতে পেতাম। এরপরে এক সময় আমরা জিইররানা নামক স্থানে ছিলাম, তখন নাবী [সাঃআঃ] তাঁবুর ভিতরে ছিলেন। এমতাবস্থায় তাহাঁর নিকট ওহী আসলে উমার [রাঃআঃ] আমার দিকে ইশারা করলেনঃ এদিকে এসো। আমি তাঁবুর ভিতরে আমার মাথা ঢুকালাম। এমন সময় তাহাঁর নিকট একজন লোক আগমন করলো। সে উমরার জন্য জুব্বা পরিহিত অবস্থায় ইহ্‌রাম বেঁধেছিল এবং সুগন্ধি ব্যবহার করেছিল। সে বললঃ ইয়া রসূলুল্লাহ্! ঐ ব্যক্তি সম্বন্ধে আপনি কি বলেন, যে জুব্বা পরিহিত অবস্থায় ইহ্‌রাম বেঁধেছে? হঠাৎ নাবী [সাঃআঃ]-এর ওপর ওহী অবতীর্ণ হইতে লাগলো। এজন্য নাক ডাকতে শুরু করিলেন। তারপর ওহী অবতীর্ণ হওয়ার অবস্থা কেটে গেলে তিনি বললেনঃ একটু পূর্বে যে ব্যক্তি আমাকে প্রশ্ন করেছিল, সে কোথায়? সে লোকটিকে আনা হলে তিনি বললেনঃ জুব্বা খুলে ফেল, আর সুগন্ধি ধুয়ে ফেল, তারপর নতুন করে ইহ্‌রাম বাঁধো। আবু আবদুর রহমান [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেনঃ “ নতুন করে ইহ্‌রাম বাঁধ” নূহ্‌ ইবনি হাবীব ব্যতীত অন্য কেউ এরূপ বলেছেন বলে আমি জানি না। আর এ বর্ণনাকে সুরক্ষিত [যথার্থ] বলেও মনে করি না। আল্লাহ সর্বজ্ঞ।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য

২৭.পরিচ্ছেদঃ মুহ্‌রিম ব্যক্তির জন্য জামা পরিধান নিষিদ্ধ

২৬৬৯. আবদুল্লাহ্‌ ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

এক ব্যক্তি রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বললেনঃ জামা, পাগড়ি, পায়জামা, বুরনুস, মোজা তোমরা পরিধান করিবে না। তবে যদি কেউ জুতা না পায়, তাহলে সে [মোটা] মোজা পরিধান করিতে পারবে; আর সে যেন তা গ্রন্থির নীচ পর্যন্ত কেটে নেবে। আর তোমরা ইহ্‌রাম অবস্থায় এমন কাপড় পরিধান করিবে না, যাতে জাফরান অথবা ওয়ারস [রঞ্জিত হইয়াছে] লেগেছে।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৮.পরিচ্ছেদঃ ইহ্‌রাম অবস্থায় পায়জামা পরা করা

২৬৭০. ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

[একদা] এক ব্যক্তি বললেনঃ ইয়া রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] আমরা যখন ইহ্‌রাম অবস্থায় থাকি তখন কোন্‌ কোন কাপড় পরিধান করবো? তিনি [রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]] বলেনঃ তোমরা কামীস [জামা] পরিধান করিবে না। আমর [একবার কামীস স্থলে কুসুম [বহুবচন] বলেছেন] বলিলেন, তোমরা জামা-পাগড়ী, পায়জামা পরিধান করিবে না এবং মোজা, ওড়না কিন্তু যদি তোমাদের কারো না থাকে, তাহলে তা গ্রন্থির নীচ থেকে কেটে নেবে। আর পরিধান করিবে না এমন কাপড় যাতে ওয়ারস ও যাফরান-এর রং লেগেছে।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৯.পরিচ্ছেদঃ যে ব্যক্তি তহবন্দ [খোলা লুংগী] না পায় তার জন্য পায়জামা পরিধানের অনুমতি

২৬৭১. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আমি নাবী [সাঃআঃ] –কে খুতবা দেয়ার সময় বলিতে শুনিয়াছি যে, [মুহ্‌রিম ব্যক্তিদের মধ্যে] যে তহ্‌বন্দ [খোলা লুংগী ] না পায়, সে পায়জামা পরিধান করিতে পারে যে ব্যক্তি জুতা না পায়, সে মোজা পরিধান করিতে পারে।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৬৭২. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]–কে বলিতে শুনেছিঃ যে ব্যক্তি তহ্‌বন্দ [খোলা লুংগী] না পায়, সে পায়জামা পরিধান করিতে পারে, আর যে ব্যক্তি জুতা না পায়, সে মোজা পরিধান করিতে পারে।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩০.পরিচ্ছেদঃ মুহ্‌রিম নারীর জন্য নিকাব পরিধান নিষিদ্ধ

২৬৭৩. ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বললেনঃ ইয়া রসূলুল্লাহ্। ইহ্‌রাম অবস্থায় আমাদেরকে কি কি কাপড় পরিধান করিতে আদেশ করেন? রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বলিলেন, তোমরা জামা, পায়জামা, পাগড়ী এবং বুরনুস পরবে না, আর মোজা পরিধান করিবে না। কিন্তু যদি কারো জুতা না থাকে, তবে সে পায়ের গ্রন্থির নিম্ন পর্যন্ত মোজা পরিধান করিতে পারে। আর যে কাপড়ে যাফরান বা ওয়ারস রং লেগেছে ঐ সকল কাপড় তোমরা পরিধান করিবে না, আর মুহ্‌রিম নারী নিকাব পরিধান করিবে না আর হাত মোজাও পরিধান করিবে না।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩১.পরিচ্ছেদঃ ইহ্‌রামে বুরনুস পরা নিষিদ্ধ

২৬৭৪. আবদুল্লাহ্‌ ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

এক ব্যক্তি রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] -কে জিজ্ঞাসা করলেনঃ ইয়া রসূলুল্লাহ্! মুহরিম ব্যক্তি কি কাপড় পরিধান করিবে? রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বললেনঃ জামা, পায়জামা, পাগড়ী , বুরনুস ও মোজা পরিধান করিবে না, কিন্তু যে ব্যক্তি জুতা না পায়, সে মোজা পরিধান করিবে, এবং সে দুটো [মোজা] পায়ের গ্রন্থির নীচ থেকে কেটে নেবে। আর ওয়ারস ও যাফরান মিশ্রিত [রঞ্জিত] কাপড় পরিধান করিবে না।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৬৭৫. ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

এক ব্যক্তি রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] –কে জিজ্ঞাসা করলো যে, আমর ইহ্‌রাম অবস্থায় কি কাপড় পরিধান করবো? তিনি বললেনঃ তোমরা জামা, পায়জামা, পাগড়ী, বুরনুস ও মোজা পরিধান করিবে না। তবে কারো যদি জুতা না থাকে, তাহলে সে গ্রন্থির নীচ পর্যন্ত মোজা পরিধান করিবে, আর যে কাপড়ে যাফরান কিংবা ওয়ারস –এর রং লেগেছে এমন কোন কাপড় পরিধান করিবে না।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩২.পরিচ্ছেদঃ ইহ্রাম অবস্থায় পাগড়ী পরা নিষেধ

২৬৭৬. ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ এক ব্যক্তি নাবী [সাঃআঃ] –কে সম্বোধন করে বললেনঃ ইয়া রসূলুল্লাহ! আমার ইহ্‌রাম অবস্থায় কি [কাপড়] পরিধান করবো? তিনি বললেনঃ তুমি জামা, পাগড়ী, পায়জামা আর বুরনুস ও মোজা পরিধান করিবে না, কিন্তু যদি জুতা না পাও, [তবে পরতে পার]। যদি জুতা না থাকে তাহলে গ্রন্থির নীচে পর্যন্ত [মোজা পরতে পার]।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৬৭৭. ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

এক ব্যক্তি নাবী [সাঃআঃ] কে ডাক দিয়ে জিজ্ঞাসা করলেনঃ আমরা ইহ্‌রাম অবস্থায় কি [কাপড়] পরিধান করবো? তিনি বললেনঃ জামা, পাগড়ী, বুরনুস, পায়জামা আর মোজা পরিধান করো না। কিন্তু যদি জুতা না থাকে তাহলে গ্রন্থির নীচ পর্যন্ত এক জোড়া মোজা [পরতে পার]। আর পরিধান করিবে না এমন কাপড় যা ওয়ারস ও যাফরান দ্বারা রঞ্জিত করা হইয়াছে। অথবা তিনি বলেছেন, এমন কাপড় যাতে ওয়ারস ও যাফরান লেগেছে।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩৩.পরিচ্ছেদঃ ইহ্রাম অবস্থায় মোজা পরা নিষেধ।

২৬৭৮. ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

আমি নাবী [সাঃআঃ] কে বলিতে শুনেছিঃ তোমরা ইহ্রাম অবস্থায়, জামা, পায়জামা, পাগড়ী, বুরনুস এবং মোজা পরিধান করিবে না।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩৪.পরিচ্ছেদঃ যাহার জুতা নেই তার জন্য ইহ্‌রাম অবস্থায় মোজা পরার অনুমতি

২৬৭৯. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে বলিতে শুনিয়াছি যে, যখন মুহরিমের তহবন্দ [ইযাহার খোলা লুংগী] না থাকে, তখন সে পায়জামা পরতে পারে, আর যখন জুতা না থাকে, তখন মোজা পরতে পারে। কিন্তু সে যেন সে দুটিকে গ্রন্থির নীচ পর্যন্ত কেটে নেয়।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য

২৬৮০. ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেছেনঃ যখন মুহ্রিম ব্যক্তি জুতা না পায় তখন সে মোজা পরতে পারে এবং সে দুটি [মোজা] যেন গ্রন্থির নীচ পর্যন্ত কেটে নেয়।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩৫.পরিচ্ছেদঃ মুহ্‌রিম মহিলার জন্য হাত মোজা পরা নিষিদ্ধ।

২৬৮১. ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

[একদা] এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বললেনঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ্! ইহ্‌রাম অবস্থায় আপনি আমাদেরকে কি কাপড় পরিধান করিতে আদেশ করেন? তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ তোমরা জামা, পায়জামা, মোজা পরিধান করিবে না। অবশ্য ঐ ব্যক্তি, যাহার জুতা নেই, সে মোজা পরতে পারবে গ্রন্থির নীচ পর্যন্ত। আর পরিধান করিবেনা না এমন কাপড়, যাতে যাফরান ও ওয়ারস লেগেছে। আর মুহ্রিম মহিলা নেকাব পরিধান করিবে না, আর হাত মোজাও পরিধান করিবে না।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩৬.পরিচ্ছেদঃ ইহ্রামের সময় তাল্‌বীদ করা। {১}

{১} মুহরিম দীর্ঘ সময় পর্যন্ত ইহরাম অবস্থায় থাকলে চুলে যাতে ধুলাবালি প্রবেশ না করে এবং চুলে যাতে উঁকুন না জন্মে সে উদ্দেশ্যে চুলে [আঠাল] তেল বা গাম জাতীয় জিনিষ ব্যবহার করাকে তাল্‌বীদ বলে।

২৬৮২. ইবনি উমার [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

তাহাঁর বোন হাফসা [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী [সাঃআঃ]-কে বললামঃ কী ব্যাপার? লোকেরা ইহরাম ছেড়ে হালাল হইয়া গেছে অথচ আপনি উমরা ইহরাম [থেকে] হালাল হননি। তিনি বললেনঃ আমি আমার মাথায় “তালবীদ” [আঠাল বস্তু ব্যবহার] করেছি এবং আমার কোরবানীর পশুর গলায় কালাদা বেঁধেছি। আমি হজ্জ [সম্পন্ন করে তা] থেকে হালাল না হওয়া পর্যন্ত হালাল হব না।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৬৮৩. সালিম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর পিতা হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে দেখেছি, তিনি [মাথায়] তালবীদ করা অবস্থায় তালবিয়া পাঠ করছেন।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৬৮৪. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যখন ইহ্‌রাম বাঁধার ইচ্ছা করিলেন, তখন তাহাঁর ইহ্‌রামের সময় আর যখন তিনি ইহ্‌রাম খুলছিলেন, তাহাঁর ইহ্‌রাম খোলার পূর্বে তাঁকে আমার নিজ হাতে সুগন্ধি মাখিয়েছি।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৬৮৫. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে তাহাঁর ইহ্‌রাম বাঁধার পূর্বে এবং তাহাঁর বায়তুল্লাহ্ তওয়াফ করার পূর্বে ইহ্রাম খোলার সময়ও তাঁকে সুগন্ধি লাগিয়েছি।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৬৮৬. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর গায়ে তাহাঁর ইহরামের সময়, তাহাঁর ইহ্‌রাম বাঁধার পূর্বে সুগন্ধি লাগিয়েছি। তাহাঁর ইহ্‌রাম খোলার সময়ও যখন তিনি ইহ্‌রাম খুললেন।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৬৮৭. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]- কে তাহাঁর ইহ্‌রামের সময় এবং তাহাঁর ইহ্‌রাম খোলার জন্যও, জামরাতুল আকাবায় [বড় শয়তানকে] কঙ্কর নিক্ষেপের পর এবং বায়তুল্লাহর তাওয়াফের পুর্বে সুগন্ধি লাগিয়েছি।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৬৮৮. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে তাহাঁর হালাল হওয়ার সময় সুগন্ধি লাগিয়েছি আর আমি তাঁকে তাহাঁর ইহ্‌রামের সময় সুগন্ধি লাগিয়েছি। এমন সুগন্ধি যা তোমাদের সুগন্ধির অনুরূপ নয়। তিনি এর দ্বারা বুঝাতে চেয়েছেন যে, তার স্থায়িত্ব ছিল না।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৬৮৯. উসমান ইবনি উরওয়া [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেছেন, আমি আয়েশা [রাঃআঃ]-কে বলেছিলামঃ আপনি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে কোন্‌ প্রকারের সুগন্ধি লাগিয়েছিলেন? তিনি বললেনঃ সর্বোৎকৃষ্ট সুগন্ধি, তাহাঁর ইহ্‌রামের সময় এবং হালাল হওয়ার সময়।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৬৯০. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে সুগন্ধি মাখিয়ে দিতাম তাহাঁর ইহ্রামের সময়, উত্তম সুগন্ধি দ্বারা যা আমি যোগাড় করিতে পারতাম।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৬৯১. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে উৎকৃষ্ট সুগন্ধি লাগাতাম তাহাঁর, ইহ্‌রাম-এর সময়, হালাল হওয়ার সময় আর যখন তিনি বায়তুল্লাহর যিয়ারতের [তাওয়াফের] ইচ্ছা করিতেন, যা [সুগন্ধি] আমি সংগ্রহ করিতে পারতাম।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৬৯২. কাসিম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আয়েশা [রাঃআঃ] বলেছেনঃ আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে সুগন্ধি লাগিয়েছি তাহাঁর ইহ্‌রাম বাঁধার পূর্বে, আর নহ্‌র এর দিন [১০ই যিলহাজ্জ] বায়তুল্লাহ তাওয়াফ করার পূর্বে এমন সুগন্ধি, যাতে কস্তুরী মিশ্রিত ছিল।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৬৯৩. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেছেনঃ যেন আমি এমনও দেখছি রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর মাথার সুগন্ধির দীপ্তি, যখন তিনি ছিলেন মুহরিম। আহমাদ ইবনি নাসর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] তাহাঁর বর্ণনায় বলেন, রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর মাথার সিঁথিতে কস্তুরীর দীপ্তি [দেখিতে পাচ্ছি]।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৬৯৪. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর মাথায় মধ্যস্থলে [সিঁথিতে] সুগন্ধির দীপ্তি ছিল, তখন তিনি মুহরিম [ইহরাম অবস্থায়] ছিলেন।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩৭.পরিচ্ছেদঃ সুগন্ধির স্থান

২৬৯৫. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

আমি যেন দেখছি রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর মাথায় সুগন্ধির দীপ্তি, তখন তিনি মুহ্‌রিম ছিলেন।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৬৯৬. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর মাথার চুলের মূলে সুগন্ধির দীপ্তি দেখছিলাম; অথচ তখন তিনি মুহ্‌রিম ছিলেন।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৬৯৭. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আমি যেন দেখছি রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর মাথার সিঁথিতে সুগন্ধির দীপ্তি, অথচ তিনি মুহরিম ছিলেন।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৬৯৮. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর মাথায় সুগন্ধির দীপ্তি দেখেছি তাহাঁর ইহ্‌রাম অবস্থায়।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৬৯৯. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর মাথায় সিঁথিতে সুগন্ধির দীপ্তি দেখছি, তিনি [ইহ্‌রামের] তাল্‌বিয়া পাঠ করছিলেন।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৭০০. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ নাবী [সাঃআঃ] যখন ইহ্‌রাম বাঁধার ইচ্ছা করিতেন, তখন উত্তম যে সুগন্ধি পেতেন, তা ব্যবহার করিতেন, এমনকি আমি তাহাঁর দাড়িতে ও মাথায় এর দীপ্তি দেখিতে পেতাম।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৭০১. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে তাহাঁর ইহ্‌রামের পূর্বে সর্বোৎকৃষ্ট সুগন্ধি মাখিয়ে দিতাম, যা আমি পেতাম। এমনকি তাহাঁর দাড়িতে এবং মাথায় আমি সুগন্ধির দীপ্তি দেখিতে পেতাম।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৭০২. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর মাথার সিঁথিতে সুগন্ধির ঔজ্জ্বল্য তিন দিন পরেও দেখিতে পেয়েছি।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৭০৩. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর মাথার সিঁথিতে তিন দিন পরেও সুগন্ধির দীপ্তি দেখিতে পেয়েছি।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ লিগাইরিহি

২৭০৪. ইবরাহীম ইবনি মুহাম্মাদ ইবনি মুনতাশির [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আমি ইবনি উমার [রাঃআঃ]-কে ইহরামের সময় সুগন্ধি ব্যবহার সম্মন্ধে জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বললেনঃ আমার নিকট এ থেকে [আলকাতরা] ব্যবহার করা অধিক পছন্দনীয়। আমি আয়েশা [রাঃআঃ]-এর নিকট এ ঘটনা ব্যক্ত করলে তিনি বললেনঃ আল্লাহ তাআলা আবু আবদুর রহমান-[ইবনি উমার]-কে রহম করুন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে সুগন্ধি লাগাতাম। তারপর তিনি তাহাঁর সকল স্ত্রীদের সাথে মিলিত হইতেন। পরে সকাল বেলায়ও এর সুগন্ধি তাহাঁর থেকে ছড়িয়ে পড়তো।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য

২৭০৫. ইবরাহীম ইবনি মুহাম্মাদ ইবনি মুনতাশির [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেছেনঃ আমি ইবনি উমার [রাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছিঃ ইহরাম অবস্থায় সুগন্ধি ব্যবহার করা অপেক্ষা জামার কাছে আলকাতরা ব্যবহার করা অধিক পছন্দনীয়। আমি আয়েশা [রাঃআঃ]-এর নিকট উপস্থিত হইয়া এ কথা জানালে তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে সুগন্ধি লাগিয়েছি; আর তিনি তাহাঁর স্ত্রীদের সাথে মিলিত হইতেন। তারপর সকালে তিনি ইহ্‌রাম বেঁধেছেন।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩৮.পরিচ্ছেদঃ মুহ্‌রিমের জন্য যাফরান ব্যবহার

২৭০৬. আনাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] পুরুষের জন্য যাফরান ব্যবহার নিষিদ্ধ করিয়াছেন।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৭০৭. আনাস ইবনি মালিক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] যাফরান ব্যবহার করিতে নিষেধ করিয়াছেন।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ লিগাইরিহি

২৭০৮. আনাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] যাফরান ব্যবহার করিতে নিষেধ করিয়াছেন, হাম্মাদ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেনঃ অর্থাৎ পুরুষদের জন্য।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৩৯.পরিচ্ছেদঃ মুহ্‌রিমের জন্য খালুক ব্যবহার

২৭০৯. সাফওয়ান ইবনি ইয়ালা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন, এক ব্যক্তি নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট উপস্থিত হলো। আর তখন সে উমরার ইহ্‌রাম বেঁধেছিল। তার গায়ে কয়েক টুকরা কাপড়ে তৈরি পোষাক ছিল। আর সে খালুক {১} মেখেছিল। সে বললোঃ আমি উমরার ইহ্‌রাম বেঁধেছি, এখন আমি কি করবো? নাবী [সাঃআঃ] তাকে বললেনঃ তুমি তোমার হজ্জে কি করিতে? সে বললোঃ আমি ইহা পরিত্যাগ করতাম এবং ধুয়ে ফেলতাম। রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বললেনঃ তুমি তোমার হজ্জে যা করিতে তোমার উমরাতেও তাই কর।

{১} যাফরান ইত্যাদি দিয়ে তৈরি মিশ্রিত সুগন্ধি দ্রব্য

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৭১০. সাফওয়ান ইবনি ইয়ালা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর নিকট এক ব্যক্তি আগমন করে। তিনি তখন জিইররানায় ছিলেন। তার [আগন্তুকের] গায়ে একটি জুব্বা ছিল, আর মাথা এবং দাড়িতে সুফরা সুগন্ধি লাগান ছিল। সে বললোঃ ইয়া রসূলুল্লাহ! আমি উমরার ইহ্‌রাম বেঁধেছি –আর আমার অবস্থা [হলদে বর্ণের] যেরুপ আপনি দেখছেন। তখন তিনি রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বললেনঃ তুমি তোমার জুব্বা খুলে ফেল, আর তোমার শরীর হইতে সুফরা [সুগন্ধি] ধুয়ে ফেল। আর তুমি হজ্জে যা করিতে উমরাতেও তা-ই কর।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৪০.পরিচ্ছেদঃ মুহরিমের সুরমা ব্যবহার

২৭১১. আবান ইবনি উসমান [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] মুহরিম সম্বন্ধে বলেছেনঃ যখন তার চোখে এবং মাথায় সমস্যা দেখা দিলে তখন সে ইলুয়া {২} দ্বারা সে দুস্থানে [মাথা ও চোখ] পালিশ করে।

{২} এক প্রকার গাছের রস।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৪১.পরিচ্ছেদঃ মুহরিম ব্যক্তির রঙ্গীন কাপড় ব্যবহার করা মাকরুহ

২৭১. জাফর ইবনি মুহাম্মাদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আমার পিতা আমার নিকট বর্ণনা করিয়াছেন। তিনি বলেছেনঃ আমরা জাবির [রাঃআঃ] এর নিকট এসে তাকে নাবী [সাঃআঃ] এর হজ্জ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বললেনঃ রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আমরা যা পরে বুঝতে পেরেছি, যদি তা পূর্বে বুঝতাম তা হলে আমি কুরবানীর জন্তু [হাদী] সংগে নিয়ে আসতাম না এবং আগে উমরার কাজ সম্পাদন করতাম। অতএব যাহার কাছে কুরবানীর জন্তু নেই, সে যেন ইহ্‌রাম থেকে হালাল এটিকে উমরা বানিয়ে নেয়। আলী [রাঃআঃ] ইয়ামান হইতে কুরবানীর পশু নিয়ে আগমন করেছিলেন। আর রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] মদীনা থেকে কুরবানীর পশু নিয়ে আসেন। হঠাৎ তিনি [আলী রাঃআঃ] দেখিতে পেলেন যে, ফাতিমা [রাঃআঃ] রঙ্গীন কাপড় পরিধান করিয়াছেন এবং সুরমা লাগিয়েছেন। আলী [রাঃআঃ] বলেনঃ আমি উত্তেজিত হইয়া এ ব্যপারে জিজ্ঞাসা করার জন্য রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর নিকট গেলাম। আমি বললামঃ ইয়া রসূলুল্লাহ! ফাতিমা রঙ্গীন কাপড় পরিধান করেছে এবং সুরমা লাগিয়েছে এবং সে বলছে আমার পিতা আমাকে এর আদেশ করিয়াছেন। শুনে রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বললেনঃ [ফাতিমা] সত্যই বলেছে, সে সত্যই বলেছে। আমি তাকে আদেশ করেছি।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৪২.পরিচ্ছেদঃ মুহরিমের মাথা ও মুখমন্ডল ঢেকে রাখা

২৭১৩. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

এক ব্যক্তি বাহন থেকে পড়ে যাওয়ায় তার ঘাড় ভেঙ্গে যায় [এবং মারা যায়] তখন রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বললেনঃ তাকে কুল পাতার পানি দ্বারা গোসল দাও, এবং তাকে এমনভাবে দুটি কাপড়ে কাফন দিতে হইবে, যেন তার মাথা এবং চেহারা বাহিরে থাকে। কেননা কিয়ামতের দিন তাকে তালবিয়া পাঠরত [মুহরিম] অবস্থায় উঠানো হইবে।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৭১৪. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ এক [মুহরিম] ব্যক্তি মারা গেল। তখন নাবী [সাঃআঃ] [সাহাবাদেরকে] বললেনঃ তাকে কুল পাতার পানি দ্বারা গোসল করাও এবং তার কাপড়েই তাকে কাফন দাও। তার মাথা ও মুখমন্ডল ঢাকবে না। কেননা তাকে কিয়ামতের দিন তালবিয়া পাঠরত অবস্থায় উঠানো হইবে।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৪৩.পরিচ্ছেদঃ হজ্জে ইফরাদ

২৭১৫. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] ইফরাদ {১} হজ্জ করিয়াছেন।

{১} শুধু হজ্জের ইহ্‌রাম বেঁধে তা সম্পন্ন করাকে ইফরাদ একই সংগে হজ্জ ও উমরার ইহ্‌রাম বেঁধে প্রথমে উমরা সম্পন্ন করে ইহ্‌রাম অবস্থায় থেকে [হালাল না হইয়া] যথাসময়ে হজ্জ সম্পন্ন করাকে কিরান এবং প্রথমে উমরার ইহ্‌রাম বেঁধে উমরা সম্পন্ন করার পরে হালাল হইয়া এবং পরে [হজ্জের কাছাকাছি সময়ে] নতুন করে হজ্জের ইহ্‌রাম বেঁধে হজ্জ সম্পন্ন করাকে তামাত্তু বলে।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য

২৭১৬. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] হজ্জের ইহ্‌রাম বাঁধেন।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৭১৭. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আমরা রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর সাথে [যিলকাদ মাস শেষে] যিলহিজ্জার চাঁদ সামনে রেখে বের হলাম। রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বললেনঃ যে হজ্জের ইহ্‌রাম বাঁধতে চায়, সে যেন [হজ্জের] ইহ্‌রাম বেঁধে। আর যে উমরার ইহ্‌রাম বাঁধতে চায়, সে যেন উমরার ইহ্‌রাম বাঁধে।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৭১৮. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর সাথে বের হইয়াছিলাম, তখন হজ্জ ছাড়া আামাদের আর কোন কিছুর ধারনা ছিল না।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৪৪.পরিচ্ছেদঃ হজ্জে কিরান

২৭১৯. আবু ওয়ায়িল [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ সুবায়্য ইবনি মাবাদ বলেছেনঃ আমি একজন খ্রিস্টান বেদুঈন ছিলাম। আমি ইসলাম গ্রহণ করলাম। তখন আমি জিহাদের জন্য [উদগ্রীব] ছিলাম। আবার দেখলাম, আমার উপর হজ্জ ও উমরা ফরয হইয়াছে। আমি আমার গোত্রের হুরায়ম নামক এক ব্যক্তির কাছে আসলাম এবং তাকে এ ব্যপারে জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বললেনঃ এ দুটি একত্রে আদায় কর। এরপর যে জন্তু তোমার পক্ষে সম্ভব হয় তা যবাই কর। আমি দুটির ইহ্‌রাম বাঁধলাম। যখন আমি উযায়র নামক স্থানে উপস্থিত হলাম, তখন সালমান ইবনি রাবীআ এবং যায়দ ইবনি সুহান এর সাথে আমার সাক্ষা‌ৎ হলো। তখনও আমি এ দুয়ের [হজ্জ ও উমরার] তাল্‌বিয়া পাঠ করছিলাম। তাহাদের একজন অন্য জনকে বললেনঃ এই ব্যক্তি তার উট অপেক্ষা অধিক ওয়াকিবহাল নয়। পরে আমি উমার [রাঃআঃ]-এর নিকট এসে বললামঃ হে আমিরুল মুমিনীন, আমি ইসলাম গ্রহণ করেছি এবং আমি জিহাদ করিতে উদগ্রীব। আর আমি দেখছি যে, হজ্জ ও উমরা ফরয হইয়াছে। তিনি আমাকে বললেনঃ হজ্জ ও উমরা একত্রে আদায় কর। তারপর যে জন্তু তোমার জন্য সহজলভ্য হয় তা যবাই [কুরবানী] কর। আমি এ দুয়ের নিয়্যাতে ইহ্‌রাম বাঁধলাম। যখন আমি উযায়র নামক স্থানে পৌছলাম, তখন সালমান ইবনি রবীআ এবং যায়েদ ইবনি সুহান-এর সাথে আমার সাক্ষাৎ হলো। তাহাদের একজন অন্যজনকে বললেনঃ এই ব্যক্তি তার উট অপেক্ষা অধিক অবহিত নয়। তখন উমার [রাঃআঃ] বললেনঃ তুমি তোমার নাবী [সাঃআঃ]-এর সুন্নাতের সঠিক নির্দেশনা লাভ করেছ।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৭২০. শাকীক [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ সুবায়া [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] আমাদের অবহিত করিয়াছেন—তিনি পূর্ব হাদিসের মত বর্ণনা করে বলেনঃ আমি উমার [রাঃআঃ]-এর নিকট এসে পূর্ব ঘটনা বর্ণনা করেছিলাম—[ইয়া হান্নাহ শব্দ ব্যাতীত]।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৭২১. ইরাক অধিবাসী এক ব্যক্তি যাকে শাকীক ইবনি সালাম আবু ওয়ায়িল বলা হয়, তিনি বর্ণনা করেন হইতে বর্ণিতঃ

সুবায়া ইবনি মাবাদ নামক বনী তাগলিবের এক ব্যক্তি যে খ্রিস্টান ছিল এবং ইসলাম গ্রহণ করলো। সে প্রথক হজ্জ করিতে গিয়ে হজ্জ এবং উমরার তাল্‌বিয়া পাঠ [ইহ্‌রাম] করলো। এভাবে সে হজ্জ ও উমরা উভয়ের তালবিয়া পাঠ করছিল। সে সালমান ইবনি রবীআ এবং যায়দ ইবনি সুহানের নিকট দিয়ে পথ অতিক্রম করিল। তখন তাহাদের একজন বললেনঃ তুমি তোমার এই উট হইতে অজ্ঞ। সুবায়া বলেনঃ আমার অন্তরে এই কথা দাগ কেটে থাকল এবং পরে আমি উমার ইবনি খাত্তাব [রাঃআঃ]-এর সাথে দেখা করলাম ও তাহাঁর কাছে এ ঘটনা বর্ণনা করলাম। তিনি বললেনঃ তুমি তোমার নাবীর সুন্নতের হিদায়াত প্রাপ্ত হইয়াছো। শাকীক [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেনঃ আমি এবং মসরূক ইবনি আজদা সুবায়্য ইবনি মাবাদের নিকট এ বিষয়ে আলোচনার জন্য বারবার যাতায়াত করেছি।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৭২২. মারওয়ান ইবনি হাকাম [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ [একদা] আমি উসমান [রাঃআঃ]-এর নিকট উপবিষ্ট ছিলাম। তিনি তখন আলী [রাঃআঃ]-কে [এক সংগে] হজ্জ এবং উমরার তালবিয়া পাঠ করিতে শুনতে পেলেন। তিনি বললেনঃ আমাদের কি এরূপ করিতে নিষেধ করা হত না ? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। কিন্তু আমি রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-কে এ দুয়ের জন্য একসাথে তালবিয়া পাঠ করিতে শুনিয়াছি। অতএব আমি তোমার কথায় রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর সুন্নত পরিত্যাগ করি না।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৭২৩. মারওয়ান [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তামাত্তু হজ্জে এবং কোন ব্যক্তির হজ্জ ও উমরা একত্রে করিতে নিষেধ করিলেন। তখন আলী [রাঃআঃ] বললেনঃ হজ্জ ও উমরার জন্য একসঙ্গে লাব্বায়কা। ত‌খন উসমান [রাঃআঃ] বললেনঃ আমি তা [হজ্জ ও উমরার ইহ্‌রাম একসঙ্গে করা] নিষেধ করা সত্ত্বেও কি তুমি তা করছো? আলী [রাঃআঃ] বললেনঃ কোন লোকের কথায় আমি রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর সুন্নত পরিত্যাগ করিতে পারি না।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৭২৪. শুবা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

সনদে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করিয়াছেন।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

২৭২৫. বারা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] যখন আলী ইবনি আবু তালিব [রাঃআঃ]-কে ইয়ামানে আমীর নিযুক্ত করে পাঠান তখন আমি তাহাঁর সাথে ছিলাম। যখন তিনি [সেখান হইতে] রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর নিকট আগমন করেন, আলী [রাঃআঃ] বলেনঃ তখন আমি রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর নিকট উপস্থিত হলে তিনি বললেনঃ কিরূপ [ইহ্‌রাম] করেছ? আমি বললামঃ আমি আপনার ইহ্‌রামের মত ইহ্‌রাম বেঁধেছি। রসূলুল্লাহ বললেনঃ আমি হাদী সঙ্গে [কুরবানীর জন্তু] নিয়ে এসেছি এবং কিরান [হজ্জ ও উমরা সংযুক্ত] নিয়্যত করেছি। বর্ণনাকারী বলেন— রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] তাহাঁর সাহাবীদের লক্ষ্য করে বলেনঃ আমার [কর্ম] বিষয়ে যা আমি পরে বুঝতে পেরেছি তা যদি আমি আগে বুঝতে পারতাম তাহলে তোমরা যা করেছ আমিও তা করতাম। উমরা করে হালাল হইয়া যেতাম। কিন্তু আমি হাদী [কুরবানির জন্তু] সাথে নিয়ে এসেছি এবং কিরান-এর নিয়্যত করেছি।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৭২৬. ইমরান ইবনি হুসায়ন [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] হজ্জ ও উমরা একত্রে সমাধা করেন। তারপর এ ধরনের হজ্জ হারাম হওয়া সম্পর্কে কুরআনের কোন আয়াত অবর্তির্ণ হওয়ার এবং এ ধরনের কাজ থেকে রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] নিষেধ করার পূর্বে তিনি ওফাত বরণ করেন।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৭২৭. ইমরান [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] হজ্জ ও উমরা একসাথে আদায় করেন। তারপর এ সম্পর্কে [নিষেধাজ্ঞায়] কুরআনের কোন আয়াত অবর্তীর্ণ হয়নি এবং নাবী [সাঃআঃ]-ও এর থেকে নিষেধ করেন নি। কেউ কেউ এ বিষয়ে তার নিজস্ব অভিমত ব্যক্ত করিয়াছেন।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৭২৮. আবু দাউদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আমাকে ইমরান ইবনি হুসায়ন [রাঃআঃ] বলেছেনঃ আমরা রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে তামাত্তু হজ্জ আদায় করেছি।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৭২৯. আনাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আমি রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছিঃ লাব্বায়কা উমরাতান ওয়া হাজ্জান, লাব্বায়কা উমরাতান ওয়া হাজ্জান। [লাব্বায়কা—হজ্জ ও উমরার……]

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৭৩০. আনাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

আমি রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-কে এ দুয়ের জন্য তালবিয়া পড়তে শুনিয়াছি।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৭৩১. বকর ইবনি আব্দুল্লাহ মুযানী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আমি আনাস [রাঃআঃ] বলিতে শুনিয়াছি। নাবী [সাঃআঃ]-কে হজ্জ ও উমরার একত্রে তালবিয়া পাঠ করিতে শুনিয়াছি। রাবী বলেন, আমি এ বিষয়ে [আনাস][রাঃআঃ]-এর কথা] ইবনি উমার [রাঃআঃ]-এর নিকট বর্ণনা করলে তিনি বললেনঃ নাবী [সাঃআঃ] কেবলমাত্র হজ্জের তালবিয়া পাঠ করিয়াছেন। এরপর আমি আনাসের সঙ্গে সাক্ষাত করেছি। ইবনি উমরের এই উক্তি তার নিকট ব্যক্ত করলে তিনি বলিলেন, তোমরা আমাদেরকে বালকই মনে কর? আমি রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ]-কে لبيك عمرة و حجا অর্থাৎ উমরা ও হজ্জের তালবিয়া একত্রে পড়তে শুনিয়াছি।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

৪৫.পরিচ্ছেদঃ হজ্জে তামাত্তু {১}

২৭৩২. সালিম ইবনি আবদুল্লাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাঃআঃ] বলেছেনঃ রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] হাজ্জাতুল বিদা বা বিদায় হজ্জের উমরা ও হজ্জ একত্রে [পর্যায়ক্রমে] আদায় করে তামাত্তু করেন। আর তিনি যুল হুলায়ফায় তাহাঁর সাথে হাদী কুরবানীর পশু নিয়ে আসেন এবং তা সংগে নিয়ে যান। রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] [ঐ দিনে] হজ্জের কাজ আরম্ভ করেন। তিনি প্রথমে উমরার ইহরাম বাঁধলেন, তারপর হজ্জের ইহ্‌রাম বাঁধলেন। আর অন্যান্য লোক তাহাঁর সাথে পর্যায়ক্রমে উমরা ও হজ্জের ইহ্‌রাম বাঁধলো। লোকদের মধ্যে কতিপয় ব্যাক্তি হাদী [কুরবানীর পশু] সাথে নিয়ে এসেছিল এবং তারা হাদী সাথে নিয়ে চলল, আর তাহাদের মধ্যে কতক এমন ছিল যারা হাদী [কুরবানীর পশু] নিয়ে আসেনি। তারপর যখন রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] মক্কায় আগমন করিলেন, তখন তিনি লোকদের বললেনঃ তোমাদের মধ্যে যে ব্যাক্তি হাদী [কুরবানীর পশু] এনেছে, সে হজ্জ আদায় করা পর্যন্ত তার জন্য যা যারাম করা হইয়াছে তা থেকে হালাল হইবে না। আর যে ব্যাক্তি হাদী [কুরবানীর পশু] আনে নি, সে যেন কাবার তওয়াফ করে এবং সাফা মারওয়ার সাঈ করে এবং মাথায় চুল ছাঁটে এবং হালাল হইয়া যায় [ইহ্‌রাম ভঙ্গ করে]। তারপর সে যেন [নতুন করে] হজ্জের ইহ্‌রাম বাঁধে এবং হাদী [কুরবানী] করে। আর যে ব্যাক্তি হাদী কুরবানী করিতে সমর্থ না হয়, সে যেন হজ্জের মাসে তিন দিন সিয়াম পালন করে, এবং পরিবার-পরিজনের নিকট ফিরে আসার পর সাতদিন সিয়াম পালন করে। রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] যখন মক্কায় আগমন করিলেন, সর্বপ্রথম তওয়াফ করিলেন এবং প্রথম রুকনে [ইয়ামানী] চু্ম্বন করিলেন, তারপর তিনি সাত তওয়াফের তিন তওয়াফে রমল করিলেন এবং চার তওয়াফে হাঁটলেন। তওয়াফ সমাপ্ত করে তিনি বায়তুল্লাহর নিকট মাকামে ইবরাহীমে দুরাকাত নামাজ আদায় করিলেন। তারপর তিনি সেখান হইতে সাফায় আগমন করিলেন এবং সাফা ও মারওয়ায় সাতবার সাঈ করিলেন। পরে হজ্জ আদায় করার পূর্ব পর্যন্ত যা তাহাঁর জন্য হারাম ছিল, তার কোনটি করে হালাল হননি [ইহ্‌রাম ভঙ্গ করেন নি]। এরপর কুরবানীর দিন হাদী কুরবানী করিলেন এবং সেখান হইতে প্রত্যাবর্তন করে বায়তুল্লাহ্‌র তওয়াফ করিলেন। তারপর তাহাঁর জন্য যা হারাম ছিল তার সব কিছু হইতে তিনি হালাল [বৈধতাসম্পন্ন] হলেন। পরে লোকদের মধ্যে যারা হাদী [কুরবানীর পশু] এনেছিল বা সাথে নিয়ে এসেছিল, তারা রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] যা করিলেন তদ্রুপ করলো।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য

২৭৩৩. আব্দুর রহমান ইবনি হারমালা [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

আমরা যখন পথিমধ্যে ছিলাম, তখন উসমান [রাঃআঃ] তামাত্তু করিতে নিষেধ করিলেন। তখন আলী [রাঃআঃ] বললেনঃ যখন তোমরা তাকে প্রস্থান করিতে দেখ তোমরাও প্রস্থান কর। পরে আলী [রাঃআঃ] এবং তাহাঁর অনুসারিগন উমরার তালবিয়া পড়লেন। আর উসমান তাহাদেরকে নিষেধ করেন নি। আলী [রাঃআঃ] বললেনঃ আমাকে কি অবহিত করা হয়নি যে, আপনি তামাত্তু করিতে নিষেধ করিয়াছেন? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। তখন আলী [রাঃআঃ] তাকে বললেনঃ আপনি কি শুনেন নি যে, রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] তামাত্তু করিয়াছেন ? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৭৩৪. মুহাম্মাদ ইবনি আবদুল্লাহ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

সাআদ ইবনি আবু ওয়াক্কাস এবং দাহ্‌হাক ইবনি কায়স [রাঃআঃ]-কে মুআবিয়া ইব্‌নু আবু সুফিয়ানের হজ্জের বছর বলিতে শুনেছেনঃ তারা হজ্জ ও উমরা সংযুক্ত করে তামাত্তু করার ব্যাপারে আলাপ করেছিলেন। দাহ্‌হাক [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেনঃ যে ব্যাক্তি আল্লাহর আদেশের ব্যাপারে অজ্ঞ, সে ব্যতীত কেউই এরূপ করিতে পারে না। সাদ [রাঃআঃ] বলেনঃ হে ভ্রাতুষ্পুত্র ! তুমি যা বললে তা অত্যন্ত মন্দ। তখন দাহ্‌হাক [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বললেনঃ উমার ইবনি খাত্তাব [রাঃআঃ] এরূপ করিতে নিষেধ করিয়াছেন। সাদ [রাঃআঃ] বলেনঃ রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] করিয়াছেন। আর আমরাও তাহাঁর সাথে এরুপ করেছি।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ জইফ হাদীস

২৭৩৫. আবু মূসা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি তামাত্তু হজ্জ-এর ফাতাওয়া দিতেন। তাকে এক ব্যাক্তি বললেনঃ আপনি এ ধরনের ফাতাওয়া দান থেকে বিরত থাকুন। কেননা আপনি জানেন না আমীরুল মুমিনীন হজ্জের আহকামে কি নতুন আদেশ করিয়াছেন। পরে আমি তাহাঁর সাথে সাক্ষাৎ করে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করি। উত্তরে উমার [রাঃআঃ] বলেনঃ আমি নিশ্চিতরূপে জানি রসূলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] তা করিয়াছেন। কিন্তু লোক আরাকে {১} স্ত্রী সহবাস করে হজ্জে গমন করিবে, আর তাহাদের মাথা থেকে পানি পড়তে থাকিবে তা আমার পছন্দনীয় নয়।

{১} আরাক বাবলা জাতীয় গাছ। এখানে উদ্দেশ্য বনভূমি ও জংগল।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৭৩৬. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আমি উমার [রাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছিঃ আল্লাহর শপথ। আমি তোমাদেরকে তামাত্তু থেকে নিষেধ করেছি। অথচ তা আল্লাহর কিতাবে বিদ্যমান রয়েছে এবং রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তা করিয়াছেন। আর্থাৎ তিনি হজ্জের সাথে উমরা করিয়াছেন।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৭৩৭. তাউস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ মুআবিয়া [রাঃআঃ] ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ]-কে বলিলেন, আপনি জানেন কি, আমি মারওয়ায় রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর মাথার চুল ছেঁটেছিলাম? তিনি বললেনঃ না, ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] বলেনঃ মুআবিয়া [রাঃআঃ] লোকদেরকে তামাত্তু করিতে নিষেধ করেন, অথচ নাবী করীম [সাঃআঃ] তামাত্তু করিয়াছেন।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য

২৭৩৮. আবু মূসা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আমি [ইয়ামান থেকে] রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট এলাম। তখন তিনি বাতহার ছিলেন। তিনি বললেনঃ কিসের ইহরাম করেছ? আমি বললামঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যাহার ইহরাম পাঠ করিয়াছেন, আমিও তার ইহরাম পাঠ করেছি। তিনি বললেনঃ তুমি কি হাদী [কুরবানীর পশু] সাথে নিয়ে এসেছ? আমি বললামঃ না। তিনি বললেনঃ তা হলে তুমি প্রথমে বায়তুল্লাহর তাওয়াফ ও সাফা মারওয়ার সাঈ কর, তারপর হালাল হইয়া যাও। [ইহরাম ভঙ্গ কর]। আমি বায়তুল্লাহর তওয়াফ এবং সাফা মারওয়ার সাঈ করলাম এরপর আমার বংশের একজন মহিলার নিকট গেলাম, সে আমার মাথা আঁচড়িয়ে ও মাথা মুইয়ে দিল। আমি লোকদেরকে আবু বকর ও উমরের খিলাফতের সময় এই ফাতাওয়াই দিতাম। আমি এক হাজ্জের মওসুমে দাঁড়িয়ে আছি, এমন সময় এক ব্যক্তি এসে বললেনঃ আমীরুল মুমিনীন হজ্জের ব্যাপারে যে নতুন কথা বলছেন, তা কি আপনি জানেন না? আমি বললামঃ হে লোকসকল! আমি যাকে কোন ফাতাওয়া দিয়েছি সে যেন তাড়াহুড়া না করে। কেননা তোমাদের নিকট আমীরুল মুমিনীন শীঘ্রই আসছেন, তাহাঁর অনুসরণ কর। যখন তিনি আগমন করিলেন, তখন আমি বললামঃ হে আমীরুল মুমিনীন! হজ্জের ব্যাপারে আপনি কি নতুন বিধান প্রবর্তন করিয়াছেন? তিনি বললেনঃ আমরা যদি আল্লাহর কিতাব অনুসরণ করিতে চাই তাহলে মহান মহিয়ান আল্লাহ তাআলা বলেছেনঃ “তোমরা আল্লাহর জন্য হজ্জ এবং উমরা পূর্ণ [সতন্ত্র আদায়] কর।” আর আমরা যদি আমাদের নাবী করীম [সাঃআঃ]-এর সুন্নত অনুযায়ী কাজ করি তবে তিনি তো কুরবানী করার পূর্বে হালাল হননি [ইহরাম ভঙ্গ করেননি]।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

২৭৩৯. মুতাররিফ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেনঃ আমাকে ইমরান ইবনি হুসায়ন [রাঃআঃ] বলেছেনঃ নাবী করীম [সাঃআঃ] তামাত্তু করিয়াছেন এবং তাহাঁর সাথে আমরাও তামাত্তু করেছি। এ ব্যাপারে কেউ কেউ তার [ব্যক্তিগত] মত ব্যক্ত করিয়াছেন।

হজ্জের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদীস


Posted

in

by

Comments

Leave a Reply