শামায়েলে তিরমিযী – রসূলুল্লাহ (সাঃ) এর পোশাক-পরিচ্ছদ

শামায়েলে তিরমিযী – রসূলুল্লাহ (সাঃ) এর পোশাক-পরিচ্ছদ

শামায়েলে তিরমিযী – রসূলুল্লাহ (সাঃ) এর পোশাক-পরিচ্ছদ , এই অধ্যায়ে হাদীস ১২ টি ( ৪৪-৫৫ পর্যন্ত ) << শামায়েলে তিরমিযী হাদীসের মুল সুচিপত্র দেখুন 

অধ্যায়-৮ঃ রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর পোশাক-পরিচ্ছদ

১।পরিচ্ছদঃ রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) এর প্রিয় পোষাক ছিল কামীস
২।পরিচ্ছদঃ তিনি ইয়ামেনী নকশী কাপড়ও পরিধান করিতেন
৩।পরিচ্ছদঃ তিনি নতুন কাপড় পরিধানকালে কাপড়ের নাম উচ্চারণ পূর্বক দুআ পাঠ করিতেন
৪।পরিচ্ছদঃ রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) এর একটি প্রিয় পোষাক ছিল হিবারা
৫।পরিচ্ছদঃ তিনি লাল রঙ্গের নকশী করা চাদরও পরিধান করিতেন
৬।পরিচ্ছদঃ তিনি সবুজ চাদরও পরিধান করিতেন
৭।পরিচ্ছদঃ তিনি সাহাবীদেরকে সাদা রঙের কাপড় পরিধান করিতে উপদেশ দিয়েছেন
৮।পরিচ্ছদঃ তিনি কালো রঙের পশমী চাদরও পরিধান করিতেন
৯।পরিচ্ছদঃ তিনি আঁটসাঁট আস্তিন বিশিষ্ট রুমী জুব্বা পরিধান করেছিলেন

১।পরিচ্ছদঃ রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) এর প্রিয় পোষাক ছিল কামীস

৪৪. উম্মে সালামা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] পোষাক হিসেবে কামীস বা জামা সর্বাধিক পছন্দ করিতেন। {৪৫}

ব্যাখ্যা ঃ বিভিন্ন হাদিসের ভিত্তিতে বুঝা যায়, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বিভিন্ন ধরনের জামা পরিধান করিতেন। তার কোনটির দৈর্ঘ্য ছিল টাখনু অবধি। কোনটি কিছুটা ছোট, যা হাটুর নিমভাগ পর্যন্ত ছিল। আবার কোনটির হাতা ছিল হাতের আঙ্গুলের প্রান্ত পর্যন্ত লম্বা। কোনটির হাতা কিছুটা ছোট, যা কব্জি পর্যন্ত ছিল।

পুরুষের পোশাক পরিধানের ব্যাপারে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]একটি বিশেষ দিক অত্যন্ত গুরুত্ব প্রদান করিয়াছেন। তিনি পুরুষের পোশাকের নিচের অংশ পায়ের গোড়ালী থেকে উপরে রাখার আদেশ করিয়াছেন এবং গোড়ালীর নিচে পাজামা, লুঙ্গি, জামা বা কোন পোশাক পরিধান করিতে হারাম ঘোষণা করিয়াছেন।

সর্বদা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর লুঙ্গি ও জামা টাখনুর উপরে থাকত। সাধারণত তিনি পোশাকের নিচের অংশ হাটু ও গোড়ালীর বরাবর বা নিসফে সাক পর্যন্ত পরিধান করিতেন। বিভিন্ন হাদীসে তিনি মুসলিম উম্মাহর পুরুষগণকে এভাবে পোশাক পরিধান করিতে আদেশ দিয়েছেন। সুতরাং মুসলিম পুরুষের জন্য স্বেচ্ছায় টাখনুর নিচে পোশাক পরিধান করা হারাম। আবু হুরায়রা, আবদুল্লাহ ইবনি উমর ও অন্যান্য সাহাবী কর্তৃক বর্ণিত হাদীসে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, যে ব্যাক্তি দাম্ভিকতার সাথে নিজের পোশাক ঝুলিয়ে পরিধান করিবে , আল্লাহ তাআলা কিয়ামতের দিন তার দিকে রহমতের দৃষ্টিতে তাকাবেন না। {৪৬}

{৪৫} ইবনি মাজাহ, হাদিস নং/৪০২৭। {৪৬} সহিহ বোখারী, হাদিস নং/৩৬৬৫; সহিহ মুসলিম, হাদিস নং/৫৫৭৮। শামায়েলে তিরমিযী হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৪৫. মুআবিয়া ইবনি কুররা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি মুযায়না গোত্রের একদল লোকের সাথে বায়আত গ্রহণ করার জন্য রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর কাছে উপস্থিত হলাম। এ সময় তার জামার বোতাম খোলা ছিল। আমি তখন [বরকত লাভ করার জন্য] জামার ফাঁক দিয়ে হাত ঢুকিয়ে মোহরে নবুওয়াত স্পর্শ করলাম {৪৭}

ব্যাখ্যা ঃ বিভিন্ন হাদিসের আলোকে মনে হয় যে, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর জামার বোতাম ছিল। তবে তিনি সাধারণত বোতাম লাগাতেন না। ফলে জামার ভেতর হাত প্রবেশ করিয়ে পিঠের মোহরে নবুওয়াত স্পর্শ করা সহজ ছিল। {৪৭} আবু দাউদ, হাদিস নং/৪০৮৪; মুসনাদে আহম্মদ, হাদিস নং/১৫৬১৯। শামায়েলে তিরমিযী হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

২।পরিচ্ছদঃ তিনি ইয়ামেনী নকশী কাপড়ও পরিধান করিতেন

৪৬. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

একদা নাবী [সাঃআঃ] উসামা ইবনি যায়েদ [রাদি.]-এর কাধে ভর করে বাইরে বের হলেন। এ সময় তার দেহে পরা ছিল একটি ইয়ামেনী নকশী কাপড়। তারপর তিনি লোকদের নামাযের ঈমামতি করেন। {৪৮}

ব্যাখ্যা ঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] অসুস্থতার কারণে উসামা [রাদি.] এর কাধে ভর করে এসেছিলেন। {৪৮} মুসনাদে আহম্মদ, হাদিস নং/১৩৭৮৭ ৷ শামায়েলে তিরমিযী হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৩।পরিচ্ছদঃ তিনি নতুন কাপড় পরিধানকালে কাপড়ের নাম উচ্চারণ পূর্বক দুআ পাঠ করিতেন

৪৭. আবু সাঈদ খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যখন নতুন কাপড় পরিধান করিতেন তখন কাপড়ের নাম পাগড়ি অথবা কামীস অথবা চাদর ইত্যাদি উচ্চারণ করিতেন। তারপর তিনি এ দুআ পড়তেনঃ

 اللَّهُمَّ لَكَ الْحَمْدُ كَمَا كَسَوْتَنِيهِ ، أَسْأَلُكَ خَيْرَهُ وَخَيْرَ مَا صُنِعَ لَهُ ، وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّهِ وَشَرِّ مَا صُنِعَ لَهُ

আল্লাহুম্মা লাকাল হামদু কামা কাসাওতানিহ, আসালুকা খয়রাহু ওয়া খয়রা মাষ সুনিয়া লাহু, ওয়া আউজুবিকা মিন সাররিহি ওয়া সাররি মা সুনিয়া লাহু, অর্থাৎ হে আল্লাহ! তোমারই জন্য যাবতীয় প্রশংসা। যেহেতু তুমিই আমাকে তা পরিধান করিয়েছ। আমি তোমার কাছে এর কল্যাণ প্রার্থনা করছি, আরো কল্যাণ চাচ্ছি যে উদ্দেশে এটা তৈরি করা হয়েছে তার। আর আমি তোমার স্মরণাপন্ন হচ্ছি এর যাবতীয় অনিষ্ট হতে এবং যে উদ্দেশে তৈরি করা হয়েছে তার অনিষ্ট হতে। {৪৯}

ব্যাখ্যা ঃ যখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কোন নতুন জামা পরিধান করিতেন, তখন আনন্দ প্রকাশার্থে তার নাম নির্ধারণ করিতেন। যেমন- বলিতেন, আল্লাহ তাআলা আমাকে এ জামাটি বা পাগড়িটি দান করিয়াছেন। তারপর দুআ পাঠ করে পরিধান করিতেন। {৪৯} আবু দাউদ, হাদিস নং/৪০২২ঃ মুসনাদে আহম্মদ, হাদিস নং/১১২৬৬, ইবনি হিব্বান, হাদিস নং/৪৫২০; সুনানে কুবরা লিন নাসাঈ, হাদিস নং/১০০৬৮ঃ মুস্তাদরাকে হাকিম, হাদিস নং/৭৪০৮। শামায়েলে তিরমিযী হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৪।পরিচ্ছদঃ রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) এর একটি প্রিয় পোষাক ছিল হিবারা

৪৮. আনাস ইবনি মালিক [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর নিকট সর্বাধিক প্রিয় কাপড় হলো [ইয়ামানে তৈরি চাদর] হিবারা। {৫০}

ব্যাখ্যা ঃ সে সময়ে পোশাকের বিখ্যাত স্থান ইয়ামানের তৈরি ডোরা ও কারুকার্য সম্বলিত সূতী বা কাতান প্রকৃতির চাদরকে হিবারা বলা হতো। এগুলো কখনো লাল, কখনো নীল, আবার কখনো সবুজ ডোরাকাটা হতো। {৫০} সহিহ বোখারী, হাদিস নং/৫৮১৩; সহিহ মুসলিম, হাদিস নং/৫৫৬২,নাসাঈ, হাদিস নং/৫৩১৫; মুসনাদে আহম্মদ, হাদিস নং/১৪১৪০; সুনানে কুবরা লিন নাসাঈ, হাদিস নং/৯৫৬৮। শামায়েলে তিরমিযী হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৫।পরিচ্ছদঃ তিনি লাল রঙ্গের নকশী করা চাদরও পরিধান করিতেন

৪৯. আবু জুহাইফা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি নাবী [সাঃআঃ] কে লাল নকশী চাদর পরা অবস্থায় দেখেছি। আজও যেন আমি তার উভয় গোড়ালীর ঔজ্জ্বল্য প্রত্যক্ষ করছি। {৫১}

{৫১} সহিহ মুসলিম, হাদিস নং/১১৪৭; মুসনাদে আহম্মদ, হাদিস নং/১৮৭৮১। শামায়েলে তিরমিযী হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৫০. বারা ইবনি আযিব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, লাল হুল্লা পরিহিত কাউকে আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এ এর চেয়ে অধিক সুদর্শন দেখিনি। আর তার কেশ [জুম্মা] উভয় কাঁধ স্পর্শ করছিল। {৫২}

ব্যাখ্যাঃ এখানে উদ্দেশ্য হচ্ছে সেলাই ছাড়া লুঙ্গি ও চাদর। এগুলো তৎকালীন আরব দেশের সর্বাধিক ব্যবহৃত পোশাক ছিল। এটি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]sঞ্জ সর্বাধিক ব্যবহার করিতেন। কেউ কেউ বলেছেন, চাদর ও লুঙ্গি একই প্রকারের একই রংয়ের প্রস্তুত হলে তাকে حُلَّةٌ বলে। {৫২} সহিহ বোখারী, হাদিস নং/৫৯০১; নাসাঈ, হাদিস নং/৫০৬২; মুসনাদে আহম্মদ, হাদিস নং/১৮৬৩৬ সুনানে কুবরা, হাদিস নং/৯২৭৫। শামায়েলে তিরমিযী হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৬।পরিচ্ছদঃ তিনি সবুজ চাদরও পরিধান করিতেন

৫১. আবু রিমছা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি নাবী [সাঃআঃ] ত্রকে দুটি সবুজ চাদর পরিহিত অবস্থায় দেখেছি। {৫৩}

ব্যাখ্যা ঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তৎকালীন সময়ে প্রচলিত বিভিন্ন রংয়ের পোশাক পরিধান করিয়াছেন। বিভিন্ন হাদিসের আলোকে প্রমাণিত হয় যে, তার মধ্যে সবুজ, সাদা ও মিশ্রিত রং তিনি পছন্দ করিতেন। {৫৩} নাসাঈ, হাদিস নং/১৫৭২; মুসনাদে আহম্মদ, হাদিস নং/ ৭১১৭ সালানুল কুবরা লিন নাসাঈ, হাদিস নং/১৭৯৪।শামায়েলে তিরমিযী হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৭।পরিচ্ছদঃ তিনি সাহাবীদেরকে সাদা রঙের কাপড় পরিধান করিতে উপদেশ দিয়েছেন

৫২. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, তোমরা সাদা রঙের কাপড় পরিধান করিবে। তোমাদের যেন সাদা কাপড় পরিধান করে এবং মুক্তদেরকে সাদা কাপড় দিয়ে দাফন দেয়। কেননা, সাদা কাপড় তোমাদের সর্বোত্তম পোশাক। {৫৪}

{৫৪} নাসাঈ, হাদিস নং/৫৩২৩; সুনানুল কুবরা লিন নাসাঈ, হাদিস নং/৯৫৬৬ ৷ শামায়েলে তিরমিযী হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৫৩. সামুরা ইবনি জুনদুব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, তোমরা সাদা কাপড় পরিধান করো। কারণ, তা সর্বাধিক পবিত্র ও উত্তম। আর তা দিয়েই তোমরা মৃতদের কাফন দাও। {৫৫}

{৫৫} মুজামুল কাবীর, হাদিস নং/৯৬৪; সহিহ তাহাঁরগীব ওয়াত তাহাঁরহীব, হাদিস নং/২০২৭। শামায়েলে তিরমিযী হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৮।পরিচ্ছদঃ তিনি কালো রঙের পশমী চাদরও পরিধান করিতেন

৫৪. আয়েশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, একবার রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] প্রত্যুষে বাইরে বের হন। তখন তার দেহে কালো পশমের একটি চাদর শোভা পাচ্ছিল। {৫৬}

{১} সহিহ মুসলিম, হাদিস নং/৫৫৬৬; আবু দাউদ, হাদিস নং/৪০৩৪; মুসনাদে আহম্মদ, হাদিস নং/২৫৩৩৪; সুনানের কুবরা লিল বাইহাকী, হাদিস নং/৪৩৫৩; মুস্তাদরাকে হাকিম, হাদিস নং/৪৭০৭।শামায়েলে তিরমিযী হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৯।পরিচ্ছদঃ তিনি আঁটসাঁট আস্তিন বিশিষ্ট রুমী জুব্বা পরিধান করেছিলেন

৫৫.মুগীরা ইবনি শুবা হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, একবার রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] আটসাঁট আস্তিন বিশিষ্ট একটি রুমী জুব্বা পরিধান করেন। {৫৭}

ব্যাখ্যা ঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যখন যে পোশাক পেয়েছেন তাই ব্যবহার করিয়াছেন। তিনি সুতি, পশমী ও কাতানের তৈরি প্রভৃতি পোশাক ব্যবহার করিয়াছেন। সবুজ, লাল, হলুদ, সাদা, কালো ও মিশ্রিত যখন যে রংয়ের পোশাক পেয়েছেন পরিধান করিয়াছেন। কারণ আরবে কোন পোশাক তৈরি হতো না। এগুলো মক্কা-মদিনার বাইরে সিরিয়া, ইয়ামান প্রভৃতি দেশে তৈরি হতো। তাই ব্যবসায়ীগণ যে পোশাক আনতেন তাই সাধ্যমতো ক্রয় করে বা উপহার হিসেবে যা পেতেন তাই ব্যবহার করিতেন । {৫৭} মুসনাদে আহম্মদ, হাদিস নং/১৮২৬৫,। শামায়েলে তিরমিযী হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

Comments

One response to “শামায়েলে তিরমিযী – রসূলুল্লাহ (সাঃ) এর পোশাক-পরিচ্ছদ”

Leave a Reply