মুর্তাদকে হত্যা করা ও অন্যায়কারীর সাথে লড়াই করা
মুর্তাদকে হত্যা করা ও অন্যায়কারীর সাথে লড়াই করা >> বুলুগুল মারাম এর মুল সুচিপত্র দেখুন
অধ্যায় – ৪ মুর্তাদকে হত্যা করা ও অন্যায়কারীর সাথে লড়াই করা
পরিচ্ছেদ ৩৫. সম্পদ রক্ষার্থে নিহত হওয়া ব্যক্তি প্রসঙ্গে
পরিচ্ছেদ ৩৬. কোন ব্যক্তিকে কামড় দেওয়ার পর দাঁত ভেঙ্গে যাওয়া প্রসঙ্গে
পরিচ্ছেদ ৩৭. যে ব্যক্তি কারো ঘরে উঁকি দেয় অতপর বাড়ির লোক কর্তৃক তার চোখ উপড়ানোর বিধান
পরিচ্ছেদ ৩৮. রাত্রিবেলায় গৃহপালিত পশুর দ্বারা ক্ষতি হওয়ার বিধান
পরিচ্ছেদ ৩৯. ধর্মত্যাগীদের হত্যা করা ও তাহাদের তাওবা করিতে বলা প্রসঙ্গে
পরিচ্ছেদ ৪০. নাবী [সাঃআঃ] এর নিন্দাকারীদেরকে হত্য করা আবশ্যক
পরিচ্ছেদ ৩৫. সম্পদ রক্ষার্থে নিহত হওয়া ব্যক্তি প্রসঙ্গে
১১৯৮. আবদুল্লাহ ইবনি আমর [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ যে ব্যক্তি সম্পদ রক্ষার্থে নিহত হইবে সে শহীদ ব্যক্তির সমতূল্য মর্যাদা পাবে। {১৩০৪}
{১৩০৪} মুসলিম ১৪১, তিরমিজি ১৪১৯, ১৪২০, নাসাঈ ৪০৮৪, ৪০৮৫, ৪০৮৬, আহম্মদ ৬৬৮৬, ৬৭৭৭, ৬৭৮৪, ৬৮৮৩, বোখারী। মুর্তাদকে হত্যা করা হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ৩৬. কোন ব্যক্তিকে কামড় দেওয়ার পর দাঁত ভেঙ্গে যাওয়া প্রসঙ্গে
১১৯৯.,ইমরান ইব্নু হুসায়ন [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
ইউলা বিন উমাইয়াহ এক ব্যক্তির সাথে ঝগড়া করলো। একে অন্যের হাত দাঁত দিয়ে কামড়ে ধরল। সে তার হাত ঐ লোকের মুখ থেকে টেনে বের করিল। ফলে তার দুটো দাঁত উপড়ে গেল। তারা নাবী [সাঃআঃ] এর নিকট তাহাদের মুকাদ্দমা হাজির করিল। তখন তিনি বললেনঃ তোমাদের কেউ তার ভাইকে কি কামড়াবে উট যেমন কামড়ায়? তোমার জন্য কোন রক্তপণ নেই। {১৩০৫}
{১৩০৫} মুসলিম ১৬৭৩, তিরমিজি ১৪১৬, নাসাঈ ৪৭৫৮, ৪৭৫৯, ৪৭৬০, ৪৭৬১, ৪৭৬২, ইবনি মাজাহ ২৬৫৭, আহম্মদ ১৯৩২৮, ১২০০। মুর্তাদকে হত্যা করা হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ৩৭. যে ব্যক্তি কারো ঘরে উঁকি দেয় অতপর বাড়ির লোক কর্তৃক তার চোখ উপড়ানোর বিধান
১২০০. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন আবুল কাসিম [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যদি কোন লোক কোন অনুমতি ছাড়াই তোমার দিকে উঁকি মারে আর তুমি তাকে কাঁকর ছুঁড়ে মার ও তার চক্ষু নষ্ট করে ফেল তবে তোমার কোন দোষ হইবে না।
আহম্মদ ও নাসাঈর শব্দে রয়েছে, এর জন্য কোন দিয়াত বা কিসাস নেই। ইবনি হিব্বান এ বর্ধিত অংশকে সহিহ বলেছেন। {১৩০৬}
{১৩০৬} বোখারী ৬৮৮৮, ৬৯০২, ২১৫৮, নাসাঈ ৪৮৬১, মুসলিম ২১৫৮ আবু দাঊদ ৫১৭২ আহম্মদ ৭৫৬১। মুর্তাদকে হত্যা করা হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ৩৮. রাত্রিবেলায় গৃহপালিত পশুর দ্বারা ক্ষতি হওয়ার বিধান
১২০১. বারা ইবনি আযিব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] [নিম্নরূপ] ফায়সালা প্রদান করেছিলেনঃ বাগ-বাগিচার দেখাশোনার দায়িত্ব দিনের বেলা তার মালিকের উপর [দিনের বেলা লোকসানের জন্য মালিক দায়ী থাকিবে]। গৃহপালিত জন্তুর রাতের বেলায় দেখাশোনার দায়িত্ব তার মালিকের উপর ন্যস্ত। রাত্রিবেলায় গৃহপালিত পশুর ক্ষতির জন্য পশুর মালিক দায়ী থাকিবে। {১৩০৭}
{১৩০৭} আবু দাঊদ ৩৫৬৯, ইবনি মাজাহ ২৩৩২। মুর্তাদকে হত্যা করা হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ৩৯. ধর্মত্যাগীদের হত্যা করা ও তাহাদের তাওবা করিতে বলা প্রসঙ্গে
১২০২. মুয়ায ইবনি জাবাল [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি একজন নব মুসলিমের পুণঃ ইয়াহুদী হয়ে যাওয়ার প্রসঙ্গে বলেছিলেনঃ আল্লাহর ও তার রাসূলের ফায়সালা অনুযায়ী তাকে হত্যা না করিয়ে আমি বসছি না। ফলে তাকে হত্যা করার আদেশ দেয়া হল ও তাকে হত্যা করা হল। {১৩০৮}
{১৩০৮} বোখারী ৬৯২৩, মুসলিম ১৮২৪।
আবু মূসা [রাদি.] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী [সাঃআঃ]-এর কাছে এলাম। আমার সঙ্গে আশআরী গোত্রের দুজন লোক ছিল। একজন আমার ডানদিকে, অপরজন আমার বামদিকে। আর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তখন মিস্ওয়াক করছিলেন। উভয়েই তাহাঁর কাছে আবদার জানাল। তখন তিনি বললেনঃ হে আবু মূসা! অথবা বলিলেন, হে আবদুল্লাহ ইবনি কায়স! রাবী বলেন, আমি বললামঃ ঐ সত্তার কসম! যিনি আপনাকে সত্য দীনসহ পাঠিয়েছেন, তারা তাহাদের অন্তরে কী আছে তা আমাকে জানায়নি এবং তারা যে চাকরি প্রার্থনা করিবে তা আমি বুঝতে পারিনি। আমি যেন তখন তাহাঁর ঠোঁটের নিচে মিস্ওয়াকের প্রতি লক্ষ্য করছিলাম যে তা এক কোণে সরে গেছে। তখন তিনি বলিলেন, আমরা আমাদের কাজে এমন কাউকে নিযুক্ত করব না বা করি না যে নিজেই তা চায়। বরং হে আবু মূসা! অথবা বলিলেন, হে আবদুল্লাহ ইব্নু কায়স! তুমি ইয়ামানে যাও। এরপর তিনি তার পেছনে মুআয ইব্নু জাবাল [রাদি.]-কে পাঠালেন। যখন তিনি সেখানে পৌঁছলেন, তখন আবু মূসা [রাদি.] তার জন্য একটি গদি বিছালেন আর বলিলেন, নেমে আসুন। ঘটনাক্রমে তার কাছে একজন লোক শেকলে বাঁধা ছিল। তিনি জিজ্ঞেস করিলেন, ঐ লোকটি কে? আবু মূসা [রাদি.] বলিলেন, বসুন। মুআয [রাদি.] বলিলেন, না বসব না, যতক্ষণ না তাকে হত্যা করা হইবে। এটাই আল্লাহ ও ত াঁর রাসূলের ফায়সালা। কথাটি তিনি তিনবার বলিলেন। এরপর তার ব্যাপারে নির্দেশ দেয়া হল এবং তাকে হত্যা করা হল। তারপর তাঁরা উভয়েই কিয়ামুল্ লায়ল [রাত্রি জাগরণ] সম্পর্কে আলোচনা করলৈ। তখন একজন বলিলেন, আমি কিন্তু ইবাদাতও করি, নিদ্রাও যাই। আর নিদ্রার অবস্থায় ঐ আশা রাখি যা ইবাদাত অবস্থায় রাখি।
আবু দাঊদের বর্ণনায় আছে, হত্যা করার আগে তাওবাহ করে ইসলাম ধর্মে ফিরে আসার আহবান করা হয়েছিল। {১৩০৯}. {১৩০৯} বোখারী ২২৬১, ৭১৫৬, নাসাঈ ৪, ৫৩৮২, আবু দাঊদ ২৯৩০, ৩৫৭৯, ৪৩৫৪, আহম্মদ ১৯১৬৭, ১৯১৮৮। মুর্তাদকে হত্যা করা হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১২০৩. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, যে কেউ তার দ্বীন বদলে ফেলে তাকে তোমরা হত্যা কর। {১৩১০}
{১৩১০} বোখারী ৩০১৭, তিরমিজি ১৪৫৮, নাসাঈ ৪০৫৯, ৪০৬০, আবু দাঊদ ৪৩৫১, ইবনি মাজাহ ২৫৩৫, আহম্মদ ১৮৭৪, ১৯০৪, ২৫৪৭। মুর্তাদকে হত্যা করা হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ৪০. নাবী [সাঃআঃ] এর নিন্দাকারীদেরকে হত্য করা আবশ্যক
১২০৪. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
কোন এক অন্ধ সাহাবীর একটা সন্তানের মাতা দাসী ছিল, সে নাবী [সাঃআঃ] কে গালি দিত এবং তাহাঁর প্রসঙ্গে অশোভনীয় মন্তব্য করত। সাহাবী তাকে নিষেধ করিতেন কিন্তু সে বিরত হত না। এক রাত্রে অন্ধ সাহাবী [তার এরূপ দূর্ব্যবহারে অতিষ্ঠ হয়ে] কুড়ালি জাতীয় এক অস্ত্র দিয়ে ঐ দাসীর পেটে বসিয়ে দেন ও তার উপর বসে যান ও তাকে হত্যা করে ফেললেন। এ সংবাদ নাবী [সাঃআঃ] এর নিকটে পৌঁছালে তিনি বলেনঃ তোমরা সাক্ষী থাক, এ খুন বাতিল এ জন্য কোন খেসারত দিতে হইবে না। {১৩১১}
{১৩১১} আবু দাঊদ ৪৩৬১, নাসাঈ ৪০৭০।
ইকরিমাহ [রহঃ] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আলী [রাদি.]-এর কাছে একদল যিন্দীককে [নাস্তিক ও ধর্মত্যাগীকে] আনা হল। তিনি তাহাদেরকে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিলেন। এ ঘটনা ইব্নু আব্বাস [রাদি.]-এর কাছে পৌঁছলে তিনি বলিলেন, আমি কিন্তু তাহাদেরকে পুড়িয়ে ফেলতাম না। কেননা, রসূলু্ল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিষেধাজ্ঞা আছে যে, তোমরা আল্লাহর শাস্তি দ্বারা শাস্তি দিও না। বরং আমি তাহাদেরকে হত্যা করতাম। কারণ, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর নির্দেশ আছে…… অতঃপর উপরোক্ত হাদিসটি বর্ণনা করেন।
মুর্তাদকে হত্যা করা হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
Leave a Reply