আর্থিক দন্ডের বিধান । হত্যা করা জঘণ্যতম মহা অপরাধ

আর্থিক দন্ডের বিধান । হত্যা করা জঘণ্যতম মহা অপরাধ

[দিয়াতের] আর্থিক দন্ডের বিধান >> বুলুগুল মারাম এর মুল সুচিপত্র দেখুন

অধ্যায় – ১ঃ আর্থিক দন্ডের বিধান

পরিচ্ছেদ ১৬. দিয়াতের পরিমাণসমূহ
পরিচ্ছেদ ১৭. অনিচ্ছাকৃত হত্যার ক্ষতিপূরণে উটের বয়স
পরিচ্ছেদ ১৮. ইচ্ছাকৃত হত্যার ক্ষতিপূরণে উটের বয়স
পরিচ্ছেদ ১৯. যে সকল অবস্থায় হত্যা করা জঘণ্যতম মহা অপরাধ
পরিচ্ছেদ ২০. “শিবহে আমাদ” [ইচ্ছাকৃত হত্যার মত হত্যা] এর দিয়াত কঠিনকরণ করা
পরিচ্ছেদ ২১. দাঁত এবং আঙ্গুল সমূহের দিয়াত প্রসঙ্গে
পরিচ্ছেদ ২২. চিকিৎসায় পারদর্শী না হয়ে যদি কোন ব্যক্তি কারও চিকিৎসা করার পর ক্ষতি করে তাহলে এর জন্য তাকে দায়ী হতে হইবে
পরিচ্ছেদ ২৩. যে সমস্ত আঘাতের ফলে হাড় দৃশ্যমান হয়ে ওঠে – এর ক্ষতিপূরণ
পরিচ্ছেদ ২৪. যিম্মী কাফির এবং মহিলার দিয়াত প্রসঙ্গে
পরিচ্ছেদ ২৫. শিবহে আমাদ [ইচ্ছাকৃত হত্যার মত হত্যা] এর বিধান
পরিচ্ছেদ ২৬. ক্ষতিপূরণের ক্ষেত্রে রৌপ্যমুদ্রার পরিমাণ
পরিচ্ছেদ ২৭. কোন ব্যক্তির অপরাধের কারণে ওপর কাউকে দায়ী করা যাবে না

পরিচ্ছেদ ১৬. দিয়াতের পরিমাণসমূহ

১১৭৭. দাদা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ] ইয়ামান প্রদেশের অধিবাসীবৃন্দকে লিখেছিলেন ঐ হাদীসে [ঐ পত্রে] এটাও লিখেছিলেন- এটা নিশ্চিত যে, কেউ যদি কোন মুমিন মুসলিমকে বিনা অপরাধে হত্যা করে এবং ঐ হত্যা প্রমাণিত হয় তবে তাতে প্রাণদন্ড হইবে; কিন্তু নিহত ব্যক্তির ওয়ারিসগণ যদি অন্য কোনভাবে [ক্ষমা করিতে বা ক্ষতিপূরণ নিতে] রাজি হয় তবে তার প্রাণদন্ড হইবে না। প্রাণের ক্ষতিপূরণ হিসেবে একশত উট দেয়া হইবে। নাক যদি সম্পূর্ণরূপে কেটে ফেলা হয় তবে তাতে একশত উট দেয়া হইবে; জিহ্বা কেটে ফেলা হলে পূর্ণ দিয়াত [১০০ উট] দেয়া হইবে; উভয় ঠোঁট কেটে ফেলা হলে পূর্ণ দিয়াত দিতে হইবে; পুরুষাঙ্গ কাটা হলে পূর্ণ খেসারত [১০০ উট] দেয়া হইবে; উভয় অন্ডকোষ নষ্ট করা হলে পূর্ণ দিয়াত লাগবে; এবং মেরুদন্ড ভেঙ্গে ফেললে পূর্ণ দিয়াত লাগবে। [একটা অন্ডকোষের জন্য ৫০ টি উট দেয়া।] উভয় চক্ষু নষ্ট করা হলে একশত উট দেয়া হইবে।

তারপর এক পায়ের জন্য অর্ধেক এবং অর্ধেক মাথার আঘাত প্রাপ্ত হলে এক তৃতীয়াংশ দিয়াত দিতে হইবে; পেটে কিছু বিদ্ধ করা হলে [যদি পেটের ভিতরে গিয়ে পৌছে] তবে এক তৃতীয়াংশ দিয়েত দিতে হইবে, হাত পায়ের আঙ্গুলগুলোর যে কোন ১ টির জন্য ১০টি উট, একটি দাতের জন্য ৫টি উট, যে আঘাতের ফলে মাথা ও মুখ ছাড়া হাড় ঠেলে উঠে বা অন্য কোন কারণে দৃশ্যমান হয়ে উঠে তাতে ৫টি উট দেয়া হইবে।

তারপর এটাও নিশ্চিত যে, [কোন পুরুষ কোন রমণীকে হত্যা করে তবে] নিহত স্ত্রীলোকের কারণে হত্যাকারী অপরাধী পুরুষকে হত্যা করা হইবে। হত্যাকারীর যদি স্বর্ণমুদ্রা থাকে তবে সে একহাজার দিনার [স্বর্ণমুদ্রা] নিহতের ওয়ারিসকে প্রদান করিবে।

হাদিসটি আবু দাউদ তার মুরসাল সনদের হাদিসগুলোর মধ্যে রিওয়ায়াত করিয়াছেন। নাসাঈ, ইবনি খুযাইমাহ, ইবনিল হিব্বান, আহমদ এ হাদিসটি বর্ণনা করিয়াছেন। এর সহিহ হওয়া প্রসঙ্গে মুহাদ্দিসগণের মতভেদ রয়েছে। [মুরসাল সনদ প্রসঙ্গে এরূপ অভিমত, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে হাদিসটি ফুকাহাগণের নিকটে স্বীকৃতি লাভ করেছে ও এ হাদিসের উপর আমল হয়ে আসছে।] {১২৮০}

{১২৮০} ঈমাম শওক্বানী তাহাঁর আস সাইলুল জাররার ৪/৪৪৩ গ্রন্থে বলেন, ঈমামগণ তাকে গ্রহণকরিয়াছেন। শাইখ আলবানী জঈফ নাসাঈ ৪৮৬৮ গ্রন্থে একে জঈফ উল্লেখ করে বলেন, এর অধিকাংশের শাহিদ রয়েছে। আর তিনি তাখরীজ মিশকাতুল মাসাবীহ ৩৪২১ গ্রন্থে বলেন, এর সনদেঃ সনদটি মুরসালের দোষে দুষ্ট। ইবনি উসাইমীন তাহাঁর শরহে বুলুগুল মারাম ৫/২৬১ গ্রন্থে বলেন, হাদিসটি মুরসাল। আর্থিক দন্ডের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ ১৭. অনিচ্ছাকৃত হত্যার ক্ষতিপূরণে উটের বয়স

১১৭৮. ইবনি মাসউদ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ অনিচ্ছাকৃত হত্যার ক্ষতিপূরণ [দিয়াত] পাঁচ প্রকার উটে সমান ভাগে বিভক্ত করে আদায় করিতে হইবে। [যথা] চতুর্থ বছর বয়সে পদার্পণকারিণী উটনি ২০টি, ৫ম বছর বয়সে পদার্পণকারিণী উটনি ২০ টি ২য় বছরে পদার্পণকারিণী উট ২০ টি।

সুনানে আরবাআর [৪ জনের] সংকলনের শব্দে বানী লাবুন [৩য় বছরে উপনীত নর উট] এর বদলে বানী মাখায [২য় বছরে উপনীত নর উটের] কথা রয়েছে তবে আগে বর্ণিত দারাকুনতীর সনদটি অধিক মজবুত। অন্যসূত্রে ইবনি আবী শাইবাহ মাওকুফ সনদে বর্ণনা করিয়াছেন, এ সনদটি মারফু সনদের থেকে অধিক সহিহ। {১২৮১}

{১২৮১} ইবনি আবী শায়বা [৯৩৪]। আর্থিক দন্ডের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য

পরিচ্ছেদ ১৮. ইচ্ছাকৃত হত্যার ক্ষতিপূরণে উটের বয়স

১১৭৯. আমর ইবনি শুয়াআইব- হইতে বর্ণীতঃ

হাদিসটি আবু দাউদ ও তিরমিযি মারফুরূপে বর্ণনা করিয়াছেন, তাতে আছে দিয়াত ৪র্থ বছর বয়সে উপনীত উটনী ৩০টি, ৫ম বছরে পদার্পণকারিণী ৩০টি, এবং ৪০টি গর্ভধারিনী উটনী যাদের পেটে বাচ্চা রয়েছে [দিতে হইবে]। [২০টি করে ৫ ভাগ আর ৩০ ও ৪০টির তিন ভাগ-গড়ে একই মূল্য দাঁড়াবে।] {১২৮২}

{১২৮২} আবু দাঊদ ৪৫৪১, তিরমিজি ১৩৮৭। আর্থিক দন্ডের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

পরিচ্ছেদ ১৯. যে সকল অবস্থায় হত্যা করা জঘণ্যতম মহা অপরাধ

১১৮০. ইবনি আমর {১২৮৩} [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ আল্লাহর দরবারে তিন প্রকারের লোক সর্বাপেক্ষা অবাধ্য। [ক] যে হত্যাকান্ড ঘটায় হারাম শরীফের [বাইতুল্লাহর] মধ্যে, [খ] এমন লোককে হত্যা করে যে তার হত্যাকারী নয়, [অর্থ্যাৎ যে তাকে হত্যা করার জন্য উদ্যৎ ছিল না।] [গ] যে জাহিলী যুগের সঞ্চিত আক্রোশ ও বিদ্বেষ বশতঃ মানুষকে হত্যা করে।

{১২৮৩} আহমদ ২৭৯। ইবনি আমরকে বিকৃতি ঘটিয়ে ইবনি উমার করা হয়েছে। যেহেতু হাদিসটি আবদুল্লাহ বিন আমরের। হাফিয ইবনি হাজার নিজেও তাহাঁর তালখীস গ্রন্থে এর বর্ণনাকারী হিসেবে ইবনি আমরই উল্লেখ করিয়াছেন, ইবনি উমার নয়। অনুবাদকদের অধিকাংশই এর অনুবাদে ইবনি আমরের পরিবর্তে ইবনি উমারই উল্লেখ করিয়াছেন। আর্থিক দন্ডের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১১৮১. বর্ণনাকারী হইতে বর্ণীতঃ

এ হাদিসের মূল বোখারীতে রয়েছে যা ইবনি আব্বাস হইতে বর্ণীত। {১২৮৪}

{১২৮৪} মূল হাদিসটি হচ্ছেঃ ইবনি আব্বাস [রাদি.] হতে বর্ণিত। নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আল্লাহর কাছে সবচেয়ে ঘৃণিত লোক হচ্ছে তিনজন। যে লোক হারাম শরীফে অন্যায় ও অপকর্মে লিপ্ত হয়। যে লোক ইসলামী যুগে জাহিলী যুগের রেওয়াজ অন্বেষণ করে। যে লোক ন্যায়সঙ্গত কারণ ছাড়া কারো রক্তপাত দাবি করে। [বোখারী ৬৮৮২] আর্থিক দন্ডের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ ২০. “শিবহে আমাদ” [ইচ্ছাকৃত হত্যার মত হত্যা] এর দিয়াত কঠিনকরণ করা

১১৮২. আব্দুল্লাহ ইবনি আমর ইবনিল আস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ মনে রাখবে, ভূলবশত নরহত্তা আর ইচ্ছাকৃত হত্যার মত হত্যা যেমন ছড়ি বা লাঠির আঘাতে হঠাৎ হত্যাকাণ্ড ঘটে যায়-এরুপ নরহত্যার অপরাধের জন্য এমন উটের দিয়াত [খুনের বদলা] হইবে, একেশত উত-যার মধ্যে চল্লিশটি গর্ভবতী উটনী থাকিবে। ইবনি হিব্বান ে হাদিসকে সহিহ বলেছেন। {১২৮৫}

{১২৮৫} আবু দাউদ ৪৫৪৭, ৪৫৮৮, নাসাঈ ৪৭৯১, ৪৭৯৩, ইবনি মাজাহ ২৬২৭, দারিমী ২৩৮৩। আব্দুল্লাহ বিন উমার [রাদি.] হইতে বর্ণীত, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] মাক্কাহ বিজয়ের দিন মাক্কায় খুতবা দিলেন, তিনি তিনবার তাকবীর দিয়ে বলিলেন, আল্লাহ্‌ ছাড়া প্রকৃতপক্ষে কোন ইলাহ নেই। তিনি তাহাঁর অঙ্গীকার পূর্ণ করিলেন, তাহাঁর বান্দাহকে সাহায্য করিলেন এবং নিজেই শত্রুদের ধংস করিলেন। আর্থিক দন্ডের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ ২১. দাঁত এবং আঙ্গুল সমূহের দিয়াত প্রসঙ্গে

১১৮৩. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ এটা ও এটা অর্থাৎ কনিষ্ঠাংগুলি ও বৃদ্ধাংগুলিদ্বয় সমমূল্যের আংগুল। {১২৮৬}

আবু দাউদ ও তিরমিজিতে আছে, আংগুলসমূহের দিয়াত [নষ্টের ক্ষতিপূরণ] সমান সমান। সব দাঁতের দিয়াত একই সমান, সামনের ও চোয়ালের দাঁত সমান মুল্যের। {১২৮৭}

ইবনি হিব্বানে আছে, দু হাত ও দু পায়ের আঙ্গুলসমূহের দিয়াত সমান। প্রত্যেক আঙ্গুলের জন্য দশ্তি করে উট দিয়াত স্বরূপ দিতে হইবে। {১২৮৮}

{১২৮৬} [বোখারী ৬৮৯৫, তিরমিজি ১৩৯২, নাসাঈ ৪৮৪৭, ৪৮৪৮, আবু দাউদ ৪৫৫৮, ইবনি মাজাহ ২৬৫২, আহ্মাদ ২০০০, ২৬১৬, ৩১৪০, মালিক ১৬১৫।{১২৮৭} আবু দাউদ ৪৫৫৯।{১২৮৮} ইবনি হিব্বান ৫৯৮০। আর্থিক দন্ডের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ ২২. চিকিৎসায় পারদর্শী না হয়ে যদি কোন ব্যক্তি কারও চিকিৎসা করার পর ক্ষতি করে তাহলে এর জন্য তাকে দায়ী হতে হইবে

১১৮৪. আমর ইবনি শুআইব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

স্বীয় সনদে মারফূ রূপে বর্ণনা করিয়াছেন, যে ব্যক্তি চিকিৎসায় খ্যতিসম্পন্ন না হয়ে চিকিৎসা করিতে গিয়ে কোন প্রাণহানি করিবে বা তার থেকে কম ক্ষতি করিবে তাকে ঐ ক্ষতির জন্য দায়ী হতে হইবে। [ক্ষতিপূরণ করিতে হইবে]।

হাদিসটি আবু দাউদ, নাসাঈ ইত্যাদিতেও আছে, কিন্তু মাওসূল বা যুক্ত সনদ হতে ঐগুলোর মুরসাল সনদই অধিক শক্তিশালী। {১২৮৯}

{১২৮৯} আবু দাউদ ৪৫৮৬, নাসাঈ ৪৮৩০, ইবনি মাজাহ ৩৪৬৬। ঈমাম দারাকুতনী তাহাঁর সুনানে ৩/১১৭ গ্রন্থে বলেন, ইবনি জুরাইজ থেকে ওয়ালিদ বিন মুসলিম ব্যতীত অন্য কেউ সনদ সহ বর্ণনা করেনি। ওয়ালিদ বিন মুসলিম ইবনি জুরাইজ থেকে, তিনি আমর ইবনি শুআইব থেকে, তিইনি মুসলমানরূপে নাবী [সাঃআঃ] থেকে বর্ণনা করিয়াছেন। শাইখ আলবানী তাখরীজ মিশকাতুল মাসাবীহ ৩৪৩৪, সহিহ নাসাঈ ৪৮৪৫, সহীহুল জামে ৬১৫৩ গ্রন্থত্রয়ে একে হাসান বলেছেন। তিনি সহিহ ইবনি মাজাহ ২৮০৮ গ্রন্থে একে সহিহ লিগাইরিহী বলেছেন, আর সিলসিলা সহিহাহ ৬৩৫ গ্রন্থে হাসান লিগাইরিহী বলেছেন। তবে তিনি তাহাঁর আত তালীকাতুর রাযিয়্যাহ ২/৪৫৫ গ্রন্থে বলেন, এর সনদে ইবনি জুরাইজ রয়েছে যিনি মুদাল্লিস, তিনি আন আন শব্দে বর্ণনা করিয়াছেন। আর্থিক দন্ডের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য

পরিচ্ছেদ ২৩. যে সমস্ত আঘাতের ফলে হাড় দৃশ্যমান হয়ে ওঠে – এর ক্ষতিপূরণ

১১৮৫. আমর ইবনি শুআইব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ যে সকল আঘাতের ফলে হাড় দৃশ্যমান হয়ে উঠে তার দিয়াত [খেসারত] পাঁচটি উট দিতে হইবে। সবগুলো আঙ্গুলের দিয়াত দশটি করে উট। {১২৯০}

{১২৯০} আবু দাউদ ৪৫৬৬, তিরমিজি ১৩৯০, নাসাঈ ৪৮৫২, ইবনি মাজাহ ২৬৫৫, আহম্মদ ৬৬৪৩, ৬৭৩৩, ৬৯৭৩, দারিমী ২৩৭২। আর্থিক দন্ডের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

পরিচ্ছেদ ২৪. যিম্মী কাফির এবং মহিলার দিয়াত প্রসঙ্গে

১১৮৬. আমর ইবনি শুআইব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ যিম্মী কাফিরের দিয়াত মুসলমানের দিয়াতের অর্ধেক। {১২৯১}

আবু দাউদের শব্দগুলোতে আছে, আশ্রয়ের অঙ্গীকারপ্রাপ্ত অমুসলিমদের হত্যার দিয়াত একজন স্বাধীন মুসলিমের দিয়াতের অর্ধেক। {১২৯২}

নাসাঈতে আছে, স্ত্রীলোকের অঙ্গহানির জন্য দিয়াত, পূর্ণ দিয়াতের [১০০ উটের] এক তৃতীয়াংশের সমপরিমাণ হওয়া অবধি পুরুষের দিয়াতের সমপরিমাণ দিয়াত দিতে হইবে। {১২৯৩}

{১২৯১} নাসাঈ ৪৮০৬, তিরমিজি ১৪১৩। {১২৯২} আবু দাউদ ৪৫৮৩। {১২৯৩} দারাকুতনী ৩য় খণ্ড ৯৫ পৃষ্ঠা। নাসাঈতে [৪৮০৭] আছে [আরবী] আমুসলিমের পণ হচ্ছে মুমিনের পণের অর্ধেক। আর্থিক দন্ডের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

পরিচ্ছেদ ২৫. শিবহে আমাদ [ইচ্ছাকৃত হত্যার মত হত্যা] এর বিধান

১১৮৭. আমর ইবনি শুআইব [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

যে হত্যা ইচ্ছাকৃত হত্যার অনুরূপ, তাতে হত্যাকারীকে হত্যা করা হইবে না, তবে দিয়াতের ক্ষেত্রে ইচ্ছাকৃত হত্যার মতই তা কঠিন হইবে। দিয়াতের ব্যবস্থা গ্রহণ এজন্য যে, কোন প্রকার আক্রোশ ও অস্ত্র ধারন ছাড়াই কেবল শাইতানের প্ররোচনমূলে যাতে মানুষের মধ্যে রক্তপাত না ঘটে। {১২৯৪}

{১২৯৪} আবু দাউদ ৪৫৬৫, দারাকুতনী ৩য় খণ্ড ৯৫ পৃষ্ঠা। আর্থিক দন্ডের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

পরিচ্ছেদ ২৬. ক্ষতিপূরণের ক্ষেত্রে রৌপ্যমুদ্রার পরিমাণ

১১৮৮. ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ] এর যুগে একটি লোক অন্য একজনকে হত্যা করে। নাবী [সাঃআঃ] এ খুনের দিয়াত ১২ হাজার রৌপ্যমুদ্রা ধার্য করেন। {১২৯৫}

{১২৯৫} আবু দাউদ ৪৫৪৬, তিরমিজি ১৩৮৮, নাসাঈ ৪৮০৩, ৪৮০৪, ইবনি মাজাহ ২৬২৯, ২৬৩৫, দারিমী ২৩৬৩। শাইখ মুহাম্মদ বিন আব্দুল ওয়াহহাব তাহাঁর আল হাদিস গ্রন্থের ৪/২০৫ গ্রন্থে একে মুরসাল বলেছেন, শাইখ আলবানী জঈফ নাসাঈ ৪৮১৭, জঈফ আবু দাউদ ৪৫৪৬, আত তালীকাতুর রাযীয়্যাহ ৩/৩৭২ গ্রন্থে একে দুর্বল বলেছেন। ঈমাম নাসাঈ তাহাঁর সুনান আল কুবরা গ্রন্থে বলেন, এর মধ্যে ইবনি মাইমূন নামক এক বর্ণনাকারী আছে সে শক্তিশালী নয়। ইবনি হাজার আসকালানী তাহাঁর মাওয়াফিকাতু আলখবরুল খবর ১/১৮৬ গ্রন্থে একে গরবী ও ইবনি কাসীর তাহাঁর জামে আল মাসানীদ ওয়াস সুনান ৮/৩৫৮ গ্রন্থে হাদিসটি মুরসাল হিসেবে বর্ণনার কথা উল্লেখ করিয়াছেন। তবে শুধুমাত্র ঈমাম শওকানী ভিন্নমত পোষণ করে তাহাঁর নাইলুল আওত্বার ৭/২৪০ গ্রন্থে বলেন, আনেকগুলো সনদ থাকার কারণে হাদিসটি সহিহ। আর্থিক দন্ডের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য

পরিচ্ছেদ ২৭. কোন ব্যক্তির অপরাধের কারণে ওপর কাউকে দায়ী করা যাবে না

১১৮৯. আবু রিমসাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেনঃ আমি নাবী [সাঃআঃ] এর নিকত হাজির হলাম, আর আমার সঙ্গে ছিল আমার পুত্র। তিনি [সাঃআঃ] বলিলেন “এ কে?” আমি বললাম, “আমার পুত্র” আপনি এ ব্যাপারে সাক্ষী থাকুন।“ অতঃপর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ সাবধান হও, অবশ্য তার অপরাধের জন্য তোমাকে ও তোমার অপরাধের জন্য তাকে দায়ী করা হইবে না। {১২৯৬}

{১২৯৬} নাসাঈ ৪৮৩২, তিরমিজি ২৮১২, আবু দাউদ ৪২০৮,৪৪৯৫, আহম্মদ ৭০৬৪,৭০৭১,৭০৭৭, দারিমী ২৩৮৮। আবু দাউদের বর্ণনায় আরো রয়েছে, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] পাঠ করিলেন [আরবী] অর্থাৎ কোন বোঝা বহনকারী অন্নের বোঝা বহন করিবে না। আলবানি হাদিসটি সহিহ বলেছেন, দেখুন তাহকিক নাসাঈ/ আর্থিক দন্ডের বিধান হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস


by

Comments

One response to “আর্থিক দন্ডের বিধান । হত্যা করা জঘণ্যতম মহা অপরাধ”

Leave a Reply