আত তারগীব ওয়াত তারহীব pdf কাপড়ে পেশাব লেগে যাওয়া
<< সহীহ আত তারগীব ওয়াত তারহীব হাদীস বই এর মুল সুচিপত্র << আত তারগীব ওয়াত তারহীব pdf কাপড়ে পেশাব লেগে যাওয়া
পরিচ্ছেদঃ কাপড় ইত্যাদিতে পেশাব লেগে যাওয়া এবং তা থেকে মুক্ত না হওয়ার ব্যাপারে ভীতি প্ৰদৰ্শনঃ
১৫৭ -ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] একদা দুটি কবরের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। এমন সময় তিনি বলিলেন, এদের দুজনকে আযাব দেয়া হচ্ছে। খুব বড় কোন পাপের কারণে আযাব হচ্ছে না; বরং তা বড় পাপই তো। তাহাদের একজন চুগোলখোরি {১} করত। অন্যজন পেশাব থেকে সতর্ক থাকত না।”
[হাদীসটি বর্ণনা করিয়াছেন বোখারী, মুসলিম, আবু দাউদ, তিরমিজি, নাসাঈ ও ইবনি মাজাহ] বোখারীর অপর বর্ণনায় ও ইবনি খুযায়মার [সহিহ] গ্রন্থে এসেছেঃ নাবী [সাঃআঃ] মক্কা বা মদীনার কোন একটি গোরস্থানের নিকট দিয়ে যাচ্ছিলেন। এমন সময় তিনি দুজন মানুষের কবর থেকে আযাবের আওয়াজ শুনতে পেলেন। তখন নাবী [সাঃআঃ] বললেনঃ “এদের দুজনকে আযাব দেয়া হচ্ছে। খুব বড় কারণে তাহাদেরকে আযাব দেয়া হচ্ছে না। অতঃপর তিনি বললেনঃ হাঁ, তাহাদের একজন পেশাব থেকে সতর্ক হত না, অপরজন চুগোলখেরি করত।”
[ঈমাম বোখারী অনুচ্ছেদ রচনা করিয়াছেন পেশাব থেকে সতর্ক না থাকা কবীরা গুনাহের অন্তৰ্গত]
ঈমাম খাত্তাবী বলেন, অর্থাৎ- যে কারণে তাহাদেরকে আযাব দেয়া হচ্ছে সেগুলো তাহাদের দৃষ্টিতে খুব বড় মনে হয়নি। অথবা একাজগুলো এমন বড় ধরণের নয় যে, তা থেকে বেঁচে থাকা তাহাদের জন্য কঠিন ছিল। আর তা হচ্ছে পেশাব থেকে সতর্ক থাকা ও চুগোলখোরী ছেড়ে দেয়া। ধর্মীয় দৃষ্টিতে কাজগুলো বড় পাপ নয়, এমন নয়; বরং মুলতঃ তা বড় পাপের কাজ। হাফেয মুনযেরী বলেন, এজন্যেই নাবী [সাঃ] পরক্ষণেই বলেছেন “বরং তা বড় পাপই তো।” [আল্লাহই অধিক জানেন]
{১} মানুষের পরস্পরের মাঝে ঝগড়া-বিবাদ সৃষ্টির লক্ষ্যে একজনের কথা অন্য জনকে লাগানোকে চুগলী বা চোগলখোরী বলা হয়। {দ্রঃ ফাতহুল বারী ২০৯ নং হাদীছের ব্যাখ্যা} আত তারগীব ওয়াত তারহীব pdf হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৫৮ -ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ “অধিকাংশ কবরের আযাব পেশাবের কারণে হয়ে থাকে। সুতরাং তোমরা পেশাব থেকে সতর্ক থাক।”
[বাযযার, ত্বাবরানী {কাবীর গ্রন্থে}, হাকেম ও দারাকুতনী হাদীসটি বর্ণনা করিয়াছেন] আত তারগীব ওয়াত তারহীব pdf হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ লিগাইরিহি
১৫৯ -আনাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ “তোমরা পেশাব থকে পবিত্র থাক। কেননা পেশাবের কারণেই অধিকাংশ কবরের আযাব হয়ে থাকে।”
[হাদীসটি বর্ণনা করিয়াছেন দারাকুতনী] হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ লিগাইরিহি
১৬০ -আবু বাকরা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] একদা জনৈক ব্যক্তি ও আমার মাঝখান দিয়ে হাটছিলেন। এমন সময় তিনি আসলেন দুটি কবরের নিকট। অতঃপর বলিলেন, এ দুকবরের অধিবাসীকে আযাব দেয়া হচ্ছে। তোমরা আমাকে একটি খেজুরের ডাল এনে দাও। আবু বাকরা [রাদি.] বলেন, ডাল আনার জন্য আমি এবং আমার সাখী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলাম। শেষে আমিই
একটি ডাল নিয়ে এলাম। নাবী [সাঃআঃ] ডালটিকে দুভাগে ভাগ করিলেন। অতঃপর একভাগ রাখলেন এই কবরে আর এক ভাগ রাখলেন ঐ কবরে। আর বললেনঃ “ডাল দুটি যতক্ষণ তাজা থাকিবে ততক্ষণ আশা করা যায় তাহাদের কবর আযাব হালকা করা হইবে। খুব বড় কারণে তাহাদের আযাব হচ্ছে না। কারণ হল, একজন গীবত করত ও অপরজনের পেশাব [থেকে সতর্ক থাকত না]।”
[আহম্মদ, ত্বাবরানী আওসাত গ্রন্থে ও ইবনি মাজহ সংক্ষিপ্তভাবে হাদীসটি বর্ণনা করিয়াছেন, এ হাদীছের বাক্য ত্বাবরানীর] আত তারগীব ওয়াত তারহীব pdf হাদিসের তাহকিকঃ হাসান লিগাইরিহি
১৬১ -আবু হুরায়রা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ
“বেশীরভাগ কবরের আযাব পেশাবের কারণে হয়ে থাকে।”
[হাদীসটি বর্ণনা করিয়াছেন আহম্মদ, ইবনি মাজাহ ও হাকেম। হাদীছের বাক্য ইবনি মাজাহর এবং হাকেম বলেন, শায়খানের শর্তানুযায়ী হাদীসটি সহিহ] আত তারগীব ওয়াত তারহীব pdf হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৬২ -আবদুর রহমান বিন হাসানাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] একদা আমাদের নিকট বের হয়ে এলেন। তার হাতে ছিল চামড়া নির্মিত একটি ঢাল। তিনি মানুষ থেকে পর্দা করার জন্য উহা তার সামনে রাখলেন এবং তার আড়ালে পেশাব করিলেন। কোন এক লোক বললঃ তাকে দেখা মহিলা যেভাবে পেশাব করে সেভাবে পেশাব করছে। একথা শুনে নাবী [সাঃআঃ] বললেনঃ “আফসোস তোমার জন্য!, তুমি কি জাননা বনী-ইসরাঈলের সেই লোকটির কথা? [নিয়ম ছিল] তাহাদের শরীরে যখন পেশাবা লাগত, তখন পবিত্র হওয়ার জন্য শরীরের ঐ অংশটুকু তারা কেঁচি দিয়ে কেটে ফেলত। তাহাদেরকে ঐ লোকটি একাজ করিতে নিষেধ করিল। একারণে কবরে তাকে আযাব দেয়া হয়েছে।”
[হাদীসটি বর্ণনা করিয়াছেন ইবনি মাজাহ ও ইবনি হিব্বান] {১} {১} শায়খ আলবানী বলে, হাদীসটি আরো বর্ণনা করিয়াছেন আবু দাউদ ও নাসাঈ। আত তারগীব ওয়াত তারহীব pdf হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১৬৩ -আবু হুরায়রা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, একদা আমরা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর সাথে চলছিলাম। এসময় আমরা দুটি কবরের নিকট দিয়ে যাচ্ছিলাম। তিনি সেখানে দাঁড়িয়ে গেলেন। আমরাও তাহাঁর সাথে দাঁড়ালাম। তাহাঁর চেহারার রং পাল্টে যেতে লাগল এমনকি তাহাঁর জামার আস্তিন কেঁপে উঠল। আমরা জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রাসূল কি হয়েছে আপনার? তিনি বলিলেন, “আমি যা শুনতে পাচ্ছি তোমরা কি তা শুনতে পাচ্ছ না?” আমরা বললাম, কি তা হে আল্লাহর নাবী? তিনি বলিলেন, এখানে দুজন ব্যক্তিকে তাহাদের কবরে খুব কঠিন আযাব দেয়া হচ্ছে [তাহাদের ধারণানুযায়ী] পাপ দুটি খুবই সাধারণ।” আমরা আরয করলাম, কি সে পাপ? তিনি বলিলেন, তাহাদের একজন পেশাব থেকে সতর্ক হত না, অপরজন যবান দ্বারা মানুষকে কষ্ট দিত, মানুষের মাঝে চুগোলখোরি করত। তিনি খেজুরের দুটি ডাল নিয়ে আসতে বলিলেন, অতঃপর প্রত্যেক কবরে একটি করে ডাল রেখে দিলেন। আমরা বললাম, এটা কি তাহাদের কোন উপকারে আসবে? তিনি বলিলেন, “হাঁ, যতক্ষণ ডাল দুটি তাজা থাকিবে, তাহাদের থেকে আযাব হালকা করা হইবে।”
[ইবনি হিব্বান স্বীয় সহিহ গ্রন্থে হাদীসটি বর্ণনা করিয়াছেন] আত তারগীব ওয়াত তারহীব pdf হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
Leave a Reply