অনুমতি প্রার্থনা ও সালাম এর বিধান
আল-আদাবুল মুফরাদ বই , এই অধ্যায়ে হাদীস = ৬৬ টি হাদীস (১০৬১ – ১১২৬) << আদাবুল মুফরাদ হাদীস কিতাবের মুল সুচিপত্র দেখুন
অধ্যায় – ১৬ দেখা-সাক্ষাতের জন্য অনুমতি প্রার্থনা
৪৮২. অনুচ্ছেদঃ পর্দা সংক্রান্ত আয়াত কিভাবে নাযিল হয়েছে?
৪৮৩. অনুচ্ছেদঃ পর্দার তিন সময়।
৪৮৪. অনুচ্ছেদঃ স্ত্রীর সাথে স্বামীর আহার গ্রহণ।
৪৮৫. অনুচ্ছেদঃ কেউ বসতিহীন ধরে প্রবেশ করিল।
৪৮৬. অনুচ্ছেদঃ “তোমাদের ক্রীতদাসেরা যেন তোমাদের নিকট অনুমতি প্রার্থনা করে” [২৪ : ৫৮]।
৪৮৭. অনুচ্ছেদঃ আল্লাহর বাণী, “যখন তোমাদের শিশুরা বালেগ হয়” [২৪ : ৫৯]।
৪৮৮. অনুচ্ছেদঃ মায়ের [ঘরে প্রবেশ করিতেও] অনুমতি প্রার্থনা করিবে।
৪৮৯. অনুচ্ছেদঃ পিতার নিকটও [প্রবেশের] অনুমতি চাইবে।
৪৯০. অনুচ্ছেদঃ পিতা ও সন্তানের নিকটও [প্রবেশের] অনুমতি চাইবে।
৪৯১. অনুচ্ছেদঃ নিজের বোনের নিকটও প্রবেশানুমতি চাইবে।
৪৯২. অনুচ্ছেদঃ নিজের ভাইয়ের কাছেও অনুমতি প্রার্থনা করিবে।
৪৯৩. অনুচ্ছেদঃ তিনবার অনুমতি প্রার্থনা করিবে।
৪৯৪. অনুচ্ছেদঃ সালাম না দিয়ে অনুমতি প্রার্থনা করলে।
৪৯৫. অনুচ্ছেদঃ বিনা অনুমতিতে কেউ ভেতর বাড়িতে তাকালে তার চোখ ফুটো করে দেয়া হইবে।
৪৯৭. অনুচ্ছেদঃ কোন ব্যক্তি অপর ব্যক্তিকে তার ঘরে সালাম করলে।
৪৯৮. অনুচ্ছেদঃ কোন ব্যক্তির ডাকাও অনুমতি হিসাবে গণ্য।
৪৯৯. অনুচ্ছেদঃ দরজার সামনে কিভাবে দাঁড়াবে।
৫০০. অনুচ্ছেদঃ কেউ অনুমতি চাইলে [ভেতর থেকে] বললো, আমি যতক্ষণ না বের হয়ে আসি৷ সাক্ষাতপ্রার্থী কোথায় বসবে?
৫০১. অনুচ্ছেদঃ দরজা খটখট করা।
৫০২. অনুচ্ছেদঃ কেউ অনুমতি না নিয়েই প্রবেশ করলে।
৫০৩. অনুচ্ছেদঃ কেউ সালাম না দিয়ে অনুমতি প্রার্থনা করলে।
৫০৪. অনুচ্ছেদঃ অনুমতি প্রার্থনার পদ্ধতি।
৫০৫. অনুচ্ছেদঃ একজন বললো, কে? অপরজন বললো, আমি।
৫০৬. অনুচ্ছেদঃ কেউ অনুমতি চাইলো এবং অপরজন বললো, নিরাপদে প্রবেশ করুন।
৫০৭. অনুচ্ছেদঃ ঘরের মধ্যে দৃষ্টিপাত করা।
৫০৮. অনুচ্ছেদঃ যে ব্যক্তি নিজ ঘরে সালাম দিয়ে প্রবেশ করে তার ফযীলাত।
৫০৯. অনুচ্ছেদঃ ঘরে প্রবেশকালে কেউ আল্লাহকে স্মরণ না করলে সেই ঘরে শয়তান রাত যাপন করে।
৫১০. অনুচ্ছেদঃ যেখানে প্রবেশানুমতি চাওয়ার প্রয়োজন নাই।
৫১১. অনুচ্ছেদঃ বাজারের বিপণী বিতানে প্রবেশের অনুমতি প্রার্থনা।
৫১২. অনুচ্ছেদঃ পারস্যবাসীদের নিকট কিভাবে অনুমতি প্রার্থনা করিবে?
৫১৩. অনুচ্ছেদঃ যিম্মী পত্র মারফত সালাম দিলে তার উত্তর দিতে হইবে।
৫১৪. অনুচ্ছেদঃ যিম্মীকে প্রথমে সালাম দিবে না।
৫১৫. অনুচ্ছেদঃ যে ব্যক্তি ইংগিতে যিম্মীকে সালাম দেয়।
৫১৬. অনুচ্ছেদঃ যিম্মীদের সালামের উত্তর কিভাবে দিবে?
৫১৭. অনুচ্ছেদঃ মুসলমান ও মুশরিকদের সম্মিলিত সভায় সালাম দেয়া।
৫১৮. অনুচ্ছেদঃ আহলে কিতাব সম্প্রদায়কে কিভাবে চিঠিপত্র লিখবে?
৫১৯. অনুচ্ছেদঃ আহলে কিতাব সম্প্রদায় “তোদের মরণ হোক” বললে।
৫২০. অনুচ্ছেদঃ আহলে কিতাবদের রাস্তার সংকীর্ণ পাশ দিয়ে হাটতে বাধ্য করা।
৫২১. অনুচ্ছেদঃ যিম্মীর জন্য কিভাবে দোয়া করিবে?
৫২২. অনুচ্ছেদঃ অজান্তে কোন খৃষ্টানকে সালাম দিলে।
৫২৩. অনুচ্ছেদঃ যখন কেউ বলে, অমুক আপনাকে সালাম দিয়েছে।
৪৮২. অনুচ্ছেদঃ পর্দা সংক্রান্ত আয়াত কিভাবে নাযিল হয়েছে?
১০৬১. আনাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যখন মদীনায় আসেন তখন আনাস [রাঃআঃ] দশ বছরের বালক। আমার মা-খালা তাহাঁর খেদমত করার জন্য আমাকে তাগিদ দিতেন। অতএব আমি দশ বছর যাবত তাহাঁর খেদমতে নিয়োজিত থাকি। তিনি যখন ইনতিকাল করেন তখন আমার বয়স বিশ বছর। তাই আমি পর্দার বিধান সম্পর্কে অন্যদের চেয়ে অধিক জ্ঞাত। অতএব রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যয়নব বিনতে জাহাশ [রাঃআঃ]-কে বিবাহ করলে পর সর্বপ্রথম পর্দার বিধান সংক্রান্ত আয়াত নাযিল হয়। নববধূর সাথে রাত যাপনের পর তিনি ভোরে উপনীত হয়ে লোকজনকে আহারের দাওয়াত করেন। [ঐ দিন রাতে] তারা আহার সেড়ে চলে গেলো এবং কতক লোক মহানাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট থেকে গেলো। তারা দীর্ঘক্ষণ বসে থাকলো। তাই তিনি একবার বাইরে যান আবার ভেতরে আসেন। আমিও তাহাঁর সাথে বাইরে গেলাম যাতে তারা চলে যায়। তিনি পায়চারি করিতে থাকলেন, আমিও তাহাঁর সাথে পায়চারি করিতে থাকলাম। এভাবে তিনি আয়েশা [রাঃআঃ]-র ঘরের দরজার চৌকাঠ পর্যন্ত পৌঁছলেন। অতঃপর তিনি ধারণা করিলেন যে, হয়তো তারা চলে গেছে। তাই তিনি ফিরে এলেন এবং আমিও ফিরে এলাম। তিনি যয়নব [রাঃআঃ]-র ঘরে পৌঁছে দেখলেন যে, তারা বসেই আছে। অতএব তিনি আবার ফিরে এলেন এবং আমিও ফিরে এলাম। তিনি আয়েশা [রাঃআঃ]-র ঘরের চৌকাঠ পর্যন্ত পৌঁছলেন। তিনি মনে করিলেন যে, এবার তারা হয়তো চলে গেছে। তাই তিনি ফিরে এলেন এবং আমিও ফিরে এলাম। দেখা গেলো যে, তারা চলে গেছে। মহানাবী [সাঃআঃ] তাহাঁর ও আমার মাঝখানে পর্দা টানিয়ে দিলেন এবং পর্দা সংক্রান্ত বিধান নাযিল করা হলো।
[বোখারী, মুসলিম, তিরমিজী] আল-আদাবুল মুফরাদ বই হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪৮৩. অনুচ্ছেদঃ পর্দার তিন সময়।
১০৬২. সালাবা ইবনি আবু মালেক আল-কুরাযী [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
তিনি “পর্দার তিন সময়” সম্পর্কে জিজ্ঞেস করার জন্য জন্তুযানে আরোহণ করে বনু হারিসা ইবনুল হারিস-এর সদস্য আবদুল্লাহ ইবনি সুয়াইদ [রাঃআঃ]-র নিকট গেলেন। কারণ তিনি এই তিন সময়ের নিয়ম মেনে চলতেন। তিনি বলেন, তুমি কী জানতে চাও? আমি বললাম, আমি ঐ তিন সময়ের বিধান মেনে চলতে চাই। তিনি বলেন, দুপুরের সময় যখন আমি আমার পোশাকাদি খুলে রাখি তখন আমার পরিবারের কোন বালেগ সদস্য আমার অনুমতি ব্যতীত আমার নিকট প্রবেশ করিতে পারে না। অবশ্য আমি যদি তাকে ডাকি, তবে এটাও তার জন্য অনুমতি। আর যখন ফজরের ওয়াক্ত হয় এবং লোকজনকে চেনা যায়, তখন থেকে ফজরের নামায পড়া পর্যন্ত সময়ও [কেউ অনুমতি ব্যতীত প্রবেশ করিতে পারে নাসায়ী]। আর যখন আমি এশার নামায পড়ার পর পোশাক খুলে রেখে ঘুমানো পর্যন্ত
[অনুমতি ব্যতীত প্রবেশ করে নাসায়ী] [ইসতীআব ও উসদুল গা বাযযার]। আল-আদাবুল মুফরাদ বই হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪৮৪. অনুচ্ছেদঃ স্ত্রীর সাথে স্বামীর আহার গ্রহণ।
১০৬৩. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
আমি নাবী [সাঃআঃ]-এর সাথে হায়স [এক প্রকার মিষ্টি খাদ্য] খাচ্ছিলাম। তখন উমার [রাঃআঃ] এলে তিনি তাকে ডাকলেন এবং তিনিও আহার করিলেন। তার হাত আমার আঙ্গুল স্পর্শ করলে তিনি বলেন, তোমাদের ব্যাপারে বোধশক্তি কাজ করলে কোন চোখ তোমাদের দেখিতে পেতো না। তখন পর্দার বিধান নাযিল হয়।
[নাসায়ী] আল-আদাবুল মুফরাদ বই হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১০৬৪. সালেম ইবনি সারজ [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
তিনি উম্মু হাবীব বিনতে কায়েস [রাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছেন, একই পাত্রে [আহারের সময়] রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর হাত আমার হাতে লেগে যায়।
-[আবু দাউদ, ইবনি মাজাহ, আহমাদ, ইবনি আবু শায়বাহ, তাবারানি] আল-আদাবুল মুফরাদ বই হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪৮৫. অনুচ্ছেদঃ কেউ বসতিহীন ঘরে প্রবেশ করিল।
১০৬৫. নাফে [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাঃআঃ] বলেন, কেউ বসতিহীন ঘরে প্রবেশ করলে যেনো বলে,
السَّلَامُ عَلَيْنَا وَعَلَى عِبَادِ اللَّهِ الصَّالِحِينَ
“আসসালামু আলাইনা ওয়া আলা ইবাদিল্লাহিস সালিহীন” [আমাদের উপর এবং আল্লাহর সৎকর্মপরায়ণ বান্দাদের উপর শান্তি বর্ষিত হোক]।
-[ইবনি আবু শায়বাহ] আল-আদাবুল মুফরাদ বই হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান হাদিস
১০৬৬. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
[মহান আল্লাহর বাণী]ঃ “তোমরা নিজেদের ঘর ব্যতীত অন্য ঘরে প্রবেশ করো নাসায়ী, যতক্ষণ না তোমরা অনুমতি গ্রহণ করো এবং ঘরবাসীদের সালাম দাও” [সূরা নূর : ২৭]। মহান আল্লাহর বাণীঃ “বসতিহীন যে ঘরে তোমাদের জিনিসপত্র রহিয়াছে তাতে তোমাদের প্রবেশ করায় কোন আপত্তি নাই। তোমরা যা প্রকাশ করো এবং যা গোপন করো তা আল্লাহ জানেন” [সূরা নূর : ২৯]। ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] বলেন, এই শেষোক্ত আয়াতের নির্দেশ পূর্বোক্ত আয়া-ত. নির্দেশের ব্যতিক্রম।
[তাবারী] আল-আদাবুল মুফরাদ বই হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪৮৬. অনুচ্ছেদঃ “তোমাদের ক্রীতদাসেরা যেন তোমাদের নিকট অনুমতি প্রার্থনা করে” [২৪ : ৫৮]।
১০৬৭. ইবনি উমার [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
[আল্লাহর বাণী]
لِيَسْتَأْذِنْكُمُ الَّذِينَ مَلَكَتْ أَيْمَانُكُمْ [النور: 58]
“তোমাদের ডান হাত যাদের মালিক হয়েছে তারা যেন তোমাদের অনুমতি প্রার্থনা করে” [সূরা নূর : ৫৮] । তিনি বলেন, এই নির্দেশ পুরুষদের জন্য, নারীদের জন্য নয়।
আল-আদাবুল মুফরাদ বই হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল মাওকুফ
৪৮৭. অনুচ্ছেদঃ আল্লাহর বাণী, “যখন তোমাদের শিশুরা বালেগ হয়” [২৪ : ৫৯]।
১০৬৮. ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তার কোন সন্তান বালা হলেই তিনি তাহাঁকে পৃথক [বিছা নাসায়ী] করে দিতেন। সে অনুমতি ব্যতীত তার নিকট প্রবেশ করিতে পারতো না।
আল-আদাবুল মুফরাদ বই হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪৮৮. অনুচ্ছেদঃ মায়ের [ঘরে প্রবেশ করিতেও] অনুমতি প্রার্থনা করিবে।
১০৬৯. আলকামা [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
এক ব্যক্তি আবদুল্লাহ [রাঃআঃ]-র নিকট এসে জিজ্ঞেস করলো, আমি কি আমার মায়ের নিকট [প্রবেশ করিতেও] অনুমতি চাইবো? তিনি বলেন, প্রতিটি মুহুর্তে তুমি তাকে দেখিতে পছন্দ করিবে না।
আল-আদাবুল মুফরাদ বই হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১০৭০. মুসলিম ইবনি নায়ীর [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
এক ব্যক্তি হুযায়ফা [রাঃআঃ]-কে জিজ্ঞেস করে বললো, আমি কি আমার মায়ের নিকটও অনুমতি প্রার্থনা করবো? তিনি বলেন, তুমি তার অনুমতি না চাইলে তাকে এমন অবস্থায় দেখে ফেলবে যা তুমি পছন্দ করো না।
আল-আদাবুল মুফরাদ বই হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান হাদিস
৪৮৯. অনুচ্ছেদঃ পিতার নিকটও [প্রবেশের] অনুমতি চাইবে।
১০৭১. মূসা ইবনি তালহা [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
আমি আমার পিতার সাথে আমার মায়ের ঘরে প্রবেশ করলাম। তিনি ভেতরে প্রবেশ করলে আমিও তার অনুসরণ করলাম। তিনি পেছনে ফিরে আমার বুকে সজোরে আঘাত করে আমাকে আমার নিতম্বের উপর বসিয়ে দিলেন, অতঃপর বলেন, অনুমতি না নিয়েই তুমি প্রবেশ করলে?
আল-আদাবুল মুফরাদ বই হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল মাওকুফ
৪৯০. অনুচ্ছেদঃ পিতা ও সন্তানের নিকটও [প্রবেশের] অনুমতি চাইবে।
১০৭২. জাবের [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
যে কোন ব্যক্তি তার সন্তানের নিকট এবং মায়ের নিকট অনুমতি চাইবে, তিনি বৃদ্ধা হলেও, ভাই, বোন ও পিতার নিকটও প্রবেশানুমতি চাইবে।
আল-আদাবুল মুফরাদ বই হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল মাওকুফ
৪৯১. অনুচ্ছেদঃ নিজের বোনের নিকটও প্রবেশানুমতি চাইবে।
১০৭৩. আতা [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
আমি ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ]-কে জিজ্ঞেস করে বললাম, আমি কি আমার বোনের নিকটও প্রবেশানুতি প্রার্থনা করবো? তিনি বলেন, হাঁ। আমি পুনরায় জিজ্ঞেস করে বললাম, আমার প্রতিপালনাধীনে আমার দু’টি বোন আছে, আমিই তাহাদের পৃষ্ঠপোষক [নিরাপত্তা দানকারী] এবং আমিই তাহাদের ভরণপোষণ করি, আমি কি তাহাদের নিকটও প্রবেশানুমতি চাইবো? তিনি বলেন, হাঁ। তুমি কি তাহাদেরকে উলঙ্গ দেখিতে পছন্দ করিবে? অতঃপর তিনি নিম্নোক্ত আয়াত পড়েন [অনুবা-দ. ] : “হে ঈমানদারগণ! তোমাদের মালিকনাধীন দাস-দাসী এবং তোমাদের অপ্রাপ্তবয়স্ক সন্তানেরা তিনটি সময়ে যেন তোমাদের নিকট প্রবেশানুমতি প্রার্থনা করেঃ
ফজরের নামাযের পূর্বে, দুপুরের সময় যখন তোমরা পোশাক খুলে রেখে দাও এবং এশার নামাযের পর। তোমাদের তিনটি পর্দা করার সময়” [সূরা নূর : ৫৮]।
ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] বলেন, পর্দার এই তিন সময়ই তাহাদেরকে অনুমতি প্রার্থনার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। মহান আল্লাহ বলেন, “তোমাদের শিশুরা প্রাপ্তবয়সে পৌছলে অবশ্যই [সব সময়] অনুমতি নিয়ে প্রবেশ করিবে, যেমন তাহাদের প্রবীণরা অনুমতি নিয়ে আসে” [সূরা নূর : ৫৯]। ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] বলেন, অতএব অনুমতি প্রার্থনা করা বাধ্যতামূলক। ইবনি জুরাইজের বর্ণনায় আরো আছে, সকল লোকের জন্য।
[তাফসীর ইবনি কাসীর] আল-আদাবুল মুফরাদ বই হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪৯২. অনুচ্ছেদঃ নিজের ভাইয়ের কাছেও অনুমতি প্রার্থনা করিবে।
১০৭৪. আবদুল্লাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
মানুষ তার পিতা-মাতা ও ভাই-বোনের নিকট প্রবেশানুমতি চাইবে।
[তাবারী] আল-আদাবুল মুফরাদ বই হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল মাওকুফ
৪৯৩. অনুচ্ছেদঃ তিনবার অনুমতি প্রার্থনা করিবে।
১০৭৫. উবাইদ ইবনি উমাইর [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
আবু মূসা আশআরী [রাঃআঃ] উমার ইবনুল খাত্তাব [রাঃআঃ]-র নিকট প্রবেশানুমতি প্রার্থনা করিলেন। কিন্তু তাকে অনুমতি দেয়া হয়নি। উমার [রাঃআঃ] হয়তো কোন কাজে মশগুল ছিলেন। তাই আবু মূসা [রাঃআঃ] ফিরে এলেন। উমার [রাঃআঃ] অবসর হয়ে বলেন, আমি কি আবদুল্লাহ ইবনি কায়েস [রাঃআঃ]-র আওয়াজ শুনিনি? তোমরা তাকে আমার অনুমতি দাও। বলা হলো, তিনি ফিরে গেছেন। তিনি তাকে ডেকে পাঠালেন। আবু মূসা [রাঃআঃ] বলিলেন, আমাদেরকে এরূপই নির্দেশ দেয়া হয়েছে। উমার [রাঃআঃ] বলেন, আপনি আমার সামনে এর অনুকূলে প্রমাণ পেশ করুন। অতএব তিনি আনসারদের মজলিসে এসে তাহাদেরকে জিজ্ঞেস করেন। তারা বলেন, আমাদের মধ্যকার কনিষ্ঠতর আবু সাঈদ আল-খুদরীই এর অনুকূলে সাক্ষ্য দিবে। অতএব তিনি আবু সাঈদ [রাঃআঃ]-কে নিয়ে গেলেন। উমার [রাঃআঃ] বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর একটি নির্দেশ আমার অজ্ঞাত থেকে গেলো? বাজারে ব্যবসাই আমাকে ব্যতিব্যস্ত রেখেছে অর্থাৎ ব্যবসায়ের উদ্দেশ্যে বাইরের যাতায়াত।
-[বোখারী, মুসলিম, আদ-দুররুল মানসুর, তিরমিজী, ইবনি মাজাহ] আল-আদাবুল মুফরাদ বই হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪৯৪. অনুচ্ছেদঃ সালাম না দিয়ে অনুমতি প্রার্থনা করলে।
১০৭৬. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
যে ব্যক্তি সালাম না দিয়ে অনুমতি প্রার্থনা করে তিনি তার সম্পর্কে বলেন, সে সালাম না দেয়া পর্যন্ত তাকে প্রবেশানুমতি দেয়া যাবে না।
আল-আদাবুল মুফরাদ বই হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১০৭৭. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
কেউ সালাম না দিয়ে প্রবেশ করলে তুমি বলো, সে চাবি নিয়ে না আসা পর্যন্ত অর্থাৎ সালাম না দেয়া পর্যন্ত।
[খোলা যাবে নাসায়ী] আল-আদাবুল মুফরাদ বই হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪৯৫. অনুচ্ছেদঃ বিনা অনুমতিতে কেউ ভেতর বাড়িতে তাকালে তার চোখ ফুটো করে দেয়া হইবে।
১০৭৮. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ যদি কোন লোক তোমার ঘরের মধ্যে উঁকি মেরে দেখে এবং তুমি তার প্রতি কংকর নিক্ষেপ করো, তা তার চোখে বিদ্ধ হলে তাতে তোমার কোন দোষ হইবে না।
-[বোখারী, মুসলিম, আবু দাউদ, নাসায়ী, আহমাদ] আল-আদাবুল মুফরাদ বই হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১০৭৯. আনাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
নাবী [সাঃআঃ] দাঁড়িয়ে নামায পড়ছিলেন। তখন এক ব্যক্তি তাহাঁর ঘরের মধ্যে উঁকি মেরে তাকায়। তিনি তাহাঁর তুণীর থেকে তীর তুলে নিয়ে তার দুই চোখ বরাবর তাক করেন।
[বোখারী, মুসলিম, তিরমিজী, নাসায়ী, আবু দাউদ] আল-আদাবুল মুফরাদ বই হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস৪৯৬. অনুচ্ছেদঃ চোখের কারণেই অনুমতি প্রার্থনা করিতে হয়।
১০৮০. সাহল ইবনি সাদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
এক ব্যক্তি নাবী [সাঃআঃ]-এর ঘরের দরজা দিয়ে ভেতরে উঁকি দিলো। নাবী [সাঃআঃ] তখন লোহার একটি চিরুনী দিয়ে তাহাঁর মাথা আচড়াচ্ছিলেন। নাবী [সাঃআঃ] তাকে দেখে বলেনঃ আমি যদি জানতে পারতাম যে, তুমি [উঁকি মেরে] আমাকে দেখছো, তাহলে আমি এই চিরুনী দিয়ে তোমার চোখে আঘাত করতাম
। [বোখারী, মুসলিম, তিরমিজী, নাসায়ী] আল-আদাবুল মুফরাদ বই হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১০৮১. মহানাবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
চোখের কারণেই অনুমতি প্রার্থনার বিধান দেয়া হয়েছে।
[আবু দাউদ] আল-আদাবুল মুফরাদ বই হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১০৮২. আনাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
এক ব্যক্তি নাবী [সাঃআঃ]-এর ঘরের দরজা দিয়ে ভেতরে উঁকি মারে।
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তীরের ফলা দিয়ে দরজা বন্ধ করে দেন। লোকটি তার মাথা টেনে বের করে নেয়।
আল-আদাবুল মুফরাদ বই হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪৯৭. অনুচ্ছেদঃ কোন ব্যক্তি অপর ব্যক্তিকে তার ঘরে সালাম করলে।
১০৮৩. আবু মূসা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
আমি উমার [রাঃআঃ]-র নিকট তিনবার প্রবেশানুমতি প্রার্থনা করলাম, কিন্তু আমাকে অনুমতি দেয়া হয়নি। তাই আমি ফিরে এলাম। তিনি আমার নিকট লোক পাঠিয়ে বলেন, হে আবদুল্লাহ! তোমার কতো কষ্ট হলো যে, তুমি আমার ঘরের দরজায় অবরুদ্ধ হলে। বুঝে নাও! তোমার ঘরের দরজায়ও লোকজন এভাবে অবরুদ্ধ হয়ে কষ্ট ভোগ করে। আমি বললাম, আমি আপনার নিকট তিনবার অনুমতি প্রার্থনা করেছি, কিন্তু আমাকে অনুমতি দেয়া হয়নি। তাই আমি ফিরে এসেছি। আর আমাদেরকে অনুরূপ নির্দেশই দেয়া হয়েছে। উমার [রাঃআঃ] বলেন, আপনি তা কার নিকট শুনেছেন? তিনি বলেন, আমি তা নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট শুনিয়াছি। উমার [রাঃআঃ] বলেন, সত্যিই কি আপনি নাবী [সাঃআঃ]-এর কাছে শুনেছেন, যা আমি শুনিনি? আপনি যদি একথার প্রমাণ নিয়ে আসতে ব্যর্থ হন তবে আমি আপনাকে উচিৎ শাস্তি দিবো। অতএব আমি রওয়ানা হয়ে মসজিদে [নববীতে] উপবিষ্ট একদল আনসারীর নিকট গিয়ে পৌঁছলাম এবং তাহাদের নিকট প্রমাণ প্রার্থনা করলাম। তারা বলেন, এই বিষয়ে কি কেউ সন্দেহ করিতে পারে? অতএব উমার [রাঃআঃ] যা বলেছেন আমি তাহাদেরকে তা অবহিত করলাম। তারা বলেন, আমাদের মধ্যকার কনিষ্ঠতর ব্যক্তিই তোমার সাথে দাঁড়াবে। অতএব আবু সাঈদ খুদরী [রাঃআঃ] অথবা আবু মাসউদ [রাঃআঃ] আমার সাথে উমার [রাঃআঃ]-র নিকট যেতে দাঁড়ালেন। তিনি বলেন, আমরা নাবী [সাঃআঃ]-এর সাথে রওয়ানা হলাম। তিনি সাদ ইবনি উবাদা [রাঃআঃ]-কে দেখিতে যাওয়ার মনস্থ করিলেন। তিনি তার বাড়িতে পৌছে সালাম দিলেন, কিন্তু তাহাঁকে অনুমতি দেয়া হলো না। এভাবে তিনি দ্বিতীয় ও তৃতীয়বার সালাম দিলেন, কিন্তু তাকে অনুমতি দেয়া হলো না। তিনি বলেনঃ আমাদের দায়িত্ব আমরা পালন করেছি। অতঃপর তিনি ফিরে চললেন। ইতিমধ্যে সাদ [রাঃআঃ] [বের হয়ে এসে] তার সাথে সাক্ষাত করে বলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ! সেই মহান সত্তার শপথ, যিনি আপনাকে সত্য দীনসহ পাঠিয়েছেন! আপনি যতবারই সালাম দিয়েছেন তা আমি শুনতে পেয়েছি এবং আপনার সালামের উত্তর দিয়েছি। কিন্তু আমার প্রতি ও আমার পরিবার-পরিজনের প্রতি আপনার অধিক সালাম আশা করছিলাম [তাই সাড়া দেইনি]। আবু মূসা [রাঃআঃ] এবার উমার [রাঃআঃ]-কে বলেন, আল্লাহর শপথ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর হাদিসের ব্যাপারে অবশ্যই আমি বিশ্বস্ত আমানতদার। তিনি বলেন, অবশ্যই, কিন্তু আমি এর অনুকূলে আরো প্রমাণ আশা করছিলাম।
[বোখারী, মুসলিম] আল-আদাবুল মুফরাদ বই হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪৯৮. অনুচ্ছেদঃ কোন ব্যক্তির ডাকাও অনুমতি হিসাবে গণ্য।
১০৮৪. আবদুল্লাহ [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
কোন ব্যক্তিকে ডাকা হলে তাকে অনুমতি দেওয়া হলো।
-[ইবনি আবু শায়বাহ] আল-আদাবুল মুফরাদ বই হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ মাওকুফ
১০৮৫. আবু হুরাইরা [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ তোমাদের কাউকে ডাকা হলে এবং সে বার্তাবাহকের সাথে আগমন করলে সেটাই তার জন্য অনুমতি।
-[বোখারী, আবু দাউদ, বাযযার, ইবনি হিব্বান] আল-আদাবুল মুফরাদ বই হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১০৮৬. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ কোন ব্যক্তির নিকট অপর ব্যক্তির বার্তাবাহক পাঠানোই তার অনুমতি গণ্য হইবে।
[আবু দাউদ] আল-আদাবুল মুফরাদ বই হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১০৮৭. আবুল আলানিয়া [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
আমি আবু সাঈদ আল-খুদরী [রাঃআঃ]-র বাড়িতে এসে সালাম দিলাম। কিন্তু আমাকে অনুমতি দেয়া হয়নি। আমি পুনরায় সালাম দিলাম, কিন্তু অনুমতি প্রাপ্ত হলাম না। আমি তৃতীয়বার উচ্চস্বরে বললাম,
السَّلَامُ عَلَيْكُمْ يَا أَهْلَ الدَّارِ
আসসালামু আলাইকুম ইয়া আহলাদ দার। এবারও আমি অনুমতি প্রাপ্ত হলাম না। অতএব আমি একপাশে সরে গিয়ে বসে থাকলাম। আমার নিকট একটি গোলাম বের হয়ে এসে বললো, প্রবেশ করুন। আমি প্রবেশ করলে আবু সাঈদ [রাঃআঃ] আমাকে বলেন, তুমি আরো অধিকবার অনুমতি প্রার্থনা করলে তোমাকে অনুমতি দেয়া হতো না। আমি তার নিকট বিভিন্ন পাত্র সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। আর আমি যে জিনিস সম্পর্কেই তাকে জিজ্ঞেস করলাম, তিনি বলেন, হারাম। শেষে আমি তাকে চামড়ার পাত্র সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, হারাম। মুহাম্মাদ [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, ‘জাফ’ অর্থ মাথায় চামড়া জড়িয়ে দেহে জ্বর উঠানো।
[নাসায়ীর ওলীমা] আল-আদাবুল মুফরাদ বই হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪৯৯. অনুচ্ছেদঃ দরজার সামনে কিভাবে দাঁড়াবে।
১০৮৮. মহানাবী [সাঃআঃ]-এর সাহাবী আবদুল্লাহ ইবনি বুসর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
কেউ প্রবেশানুমতি প্রার্থনার অভিপ্রায়ে আগমন করলে সে যেন দরজার মুখামুখি না দাঁড়ায়, বরং একটু ডানে বা বাঁয়ে সরে দাঁড়াবে। তাকে অনুমতি দেয়া হলে তো ভালো, অন্যথায় সে ফিরে যাবে।
[আবু দাউদ, আহমাদ] আল-আদাবুল মুফরাদ বই হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান সহীহ
৫০০. অনুচ্ছেদঃ কেউ অনুমতি চাইলে [ভেতর থেকে] বললো, আমি যতক্ষণ না বের হয়ে আসি৷ সাক্ষাতপ্রার্থী কোথায় বসবে?
১০৮৯. আবদুর রহমান ইবনি মুআবিয়া ইবনি হুদাইজ [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, আমি উমার ইবনুল খাত্তাব [রাঃআঃ]-র নিকট এসে তার সাক্ষাতের অনুমতি প্রার্থনা করলাম। লোকজন আমাকে বললো, তিনি বের হয়ে না আসা পর্যন্ত স্বস্থানে অপেক্ষা করুন। আমি তার ঘরের দরজার কাছাকাছি বসে থাকলাম। রাবী বলেন, তিনি আমার নিকট বের হয়ে এসে পানি নিয়ে ডাকলেন। তিনি উযু করিলেন, অতঃপর তার মোজাদ্বয়ের উপর মাসেহ করিলেন। আমি বললাম, হে আমীরুল মুমিনীন! পেশাবের পর এই উযু? তিনি বলেন, পেশাব ইত্যাদির পর এই উযু [করা ভালো]।
আল-আদাবুল মুফরাদ বই হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান হাদিস
৫০১. অনুচ্ছেদঃ দরজা খটখট করা।
১০৯০. আনাস ইবনি মালেক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
নাবী [সাঃআঃ]-এর দরজাসমূহ [অনুমতি চেয়ে] নখ দ্বারা খটখট করা হতো।
[আবু নাঈমের তারীখ ইসবাহান] আল-আদাবুল মুফরাদ বই হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৫০২. অনুচ্ছেদঃ কেউ অনুমতি না নিয়েই প্রবেশ করলে।
১০৯১. কালদা ইবনি হাম্বল [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
মক্কা বিজয়ের পর নাবী [সাঃআঃ] মক্কার উচ্চভূমিতে অবস্থান করছিলেন। সাফওয়ান ইবনি উমাইয়্যা [রাঃআঃ] আমাকে দুধ, ছাগলের বাচ্চা ও তরকারীসহ তাহাঁর নিকট পাঠান। আমি [তথায় পৌঁছে] সালামও দেইনি, অনুমতিও প্রার্থনা করিনি। নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ তুমি ফিরে যাও এবং বলো, আসসালামু আলাইকুম, আমি কি প্রবেশ করিতে পারি? এটা সাফওয়ান [রাঃআঃ]-র ইসলাম গ্রহণের পরের ঘটনা।
[দারিমি, তিরমিজী] আল-আদাবুল মুফরাদ বই হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১০৯২. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ কারো দৃষ্টি [ভেতরে] চলে গেলে তার জন্য অনুমতি নাই।
[আবু দাউদ, তিরমিজী, আহমাদ] আল-আদাবুল মুফরাদ বই হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৫০৩. অনুচ্ছেদঃ কেউ সালাম না দিয়ে অনুমতি প্রার্থনা করলে।
১০৯৩. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
কেউ সালাম না দিয়ে যদি বলে, “প্রবেশ করিতে পারি কি”, তবে তুমি বলো, “নাসায়ী, যতক্ষণ না তুমি চাবি নিয়ে আসো”। আমি বললাম, সালাম? তিনি বলেন, হাঁ।
আল-আদাবুল মুফরাদ বই হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১০৯৪. রিবঈ ইবনি হিরাশ [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
আমের গোত্রের এক ব্যক্তি আমার নিকট বর্ণনা করেন, যিনি নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট গিয়ে বলিলেন, আমি কি ভিতরে প্রবেশ করিতে পারি? নাবী [সাঃআঃ] বাদীকে বলেনঃ তুমি বাইরে গিয়ে তাকে বলে, “তুমি বলো,
السَّلَامُ عَلَيْكُمْ
আসসালামু আলাইকুম, আমি কি প্রবেশ করিতে পারি”?
কারণ সে সুন্দরভাবে প্রবেশানুমতি প্রার্থনা করিতে পারেনি। রাবী বলেন, বাদী বের হয়ে আসার পূর্বেই আমি ঐকথা শুনে ফেললাম এবং বললাম, আসসালামু আলাইকুম, আমি কি প্রবেশ করিতে পারি? তিনি বলেনঃ তোমাকেও [সালাম], প্রবেশ করো। রাবী বলেন, আমি প্রবেশ করে বললাম, আপনি কি জিনিস নিয়ে এসেছেন? তিনি বলেনঃ আমি তোমাদের নিকট কল্যাণকর জিনিস নিয়েই এসেছি। আমি তোমাদের নিকট যা নিয়ে এসেছি তা হলো, তোমরা এক আল্লাহর ইবাদত করিবে যাঁর কোন শরীক নাই এবং লাত ও উযযার ইবাদত ত্যাগ করিবে, প্রতি দিন-রাতে পাঁচ ওয়াক্ত নামায পড়বে, বছরে এক মাস রোযা রাখবে এবং এই ঘরের হজ্জ করিবে। তোমরা তোমাদের ধনীদের মাল থেকে [যাকাত] গ্রহণ করে তা তোমাদের মধ্যকার দরিদ্রজনদের মধ্যে বিতরণ করিবে। রাবী বলেন, আমি তাহাঁকে বললাম, এমন কিছু জ্ঞানও আছে কি যা আপনি জ্ঞাত নন? তিনি বলেনঃ আল্লাহ সব কিছু জানেন। তবে এমন পাঁচটি জ্ঞান আছে যা আল্লাহ ব্যতীত আর কেউ জানে না।
“কিয়ামতের জ্ঞান কেবল আল্লাহর নিকটই আছে। তিনি বৃষ্টি বর্ষণ করেন এবং জরায়ুতে যা আছে তা তিনিই জানেন। কেউই জানে না যে, সে আগামী কাল কি উপার্জন করিবে। কেউ জানে না যে, সে কোন স্থানে মারা যাবে”।
[সূরা লোকমান : ৩৪] [আবু দাউদ, আহমাদ, ইবনি শায়বাহ, ইবনুস সুন্নী] আল-আদাবুল মুফরাদ বই হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৫০৪. অনুচ্ছেদঃ অনুমতি প্রার্থনার পদ্ধতি।
১০৯৫. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
উমার [রাঃআঃ] নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট অনুমতি প্রার্থনা করে বলেন,
السَّلَامُ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ، السَّلَامُ عَلَيْكُمْ
আসসালামু আলা রাসূলিল্লাহ, আসসালামু আলাইকুম,
উমার কি ভেতরে প্রবেশ করিতে পারে?
আল-আদাবুল মুফরাদ বই হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৫০৫. অনুচ্ছেদঃ একজন বললো, কে? অপরজন বললো, আমি।
১০৯৬. মুহাম্মদ ইবনুল মুনকাদির [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
আমি জাবের [রাহিমাহুল্লাহ]-কে বলিতে শুনিয়াছি, আমার পিতার রেখে যাওয়া কিছু ঋণের ব্যাপারে আলোচনার জন্য আমি নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট এলাম। আমি দরজায় করাঘাত করলে তিনি জিজ্ঞেস করেনঃ কে? আমি বললাম, আমি। তিনি বলেনঃ আমি, আমি। তিনি যেন জবাবটি অপছন্দ করিলেন।]
[বোখারী, মুসলিম] আল-আদাবুল মুফরাদ বই হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১০৯৭.n আবদুল্লাহ ইবনি বুরায়দা [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] মসজিদের উদ্দেশে বের হলেন। তখন আবু মূসা [রাঃআঃ] কুরআন পড়ছিলেন। তিনি জিজ্ঞেস করলেনঃ কে? আমি বললাম, আমি বুরায়দা, আপনার জন্য উৎসর্গপ্রাণ। তিনি বলেনঃ তাকে দাউদ [আঃ] পরিবারের সুমধুর কণ্ঠস্বর থেকে একটি কণ্ঠস্বর দান করা হয়েছে।
[মুসলিম, হাকিম] আল-আদাবুল মুফরাদ বই হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৫০৬. অনুচ্ছেদঃ কেউ অনুমতি চাইলো এবং অপরজন বললো, নিরাপদে প্রবেশ করুন।
১০৯৮. আবদুর রহমান ইবনি জুদআন [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
আমি আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাঃআঃ]-র সাথে ছিলাম। তিনি এক পরিবারের নিকট প্রবেশানুমতি চাইলেন। বলা হলো, নিরাপদে প্রবেশ করুন। কিন্তু তিনি তাহাদের ঘরে প্রবেশে অসম্মতি জ্ঞাপন করিলেন।
আল-আদাবুল মুফরাদ বই হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৫০৭. অনুচ্ছেদঃ ঘরের মধ্যে দৃষ্টিপাত করা।
১০৯৯. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কারো দৃষ্টি ভেতরে চলে গেলে তার জন্য অনুমতি নাই।
[আবু দাউদ, তিরমিজী, আহমাদ] আল-আদাবুল মুফরাদ বই হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১১০০. মুসলিম ইবনি নায়ীর [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
এক ব্যক্তি হুযায়ফা [রাঃআঃ]-র নিকট প্রবেশানুমতি চেয়ে ভেতর বাড়িতে উঁকি মারলো এবং বললো, আমি কি প্রবেশ করিতে পারি? হুযায়ফা [রাঃআঃ] বলেন, তোমার চোখ তো প্রবেশ করেছে, বাকি আছে তোমার [দেহের] নিম্নাংশ। অতএব তুমি প্রবেশ করো না। এক ব্যক্তি বললো, আমাকে কি আমার মায়ের অনুমতি নিতে হইবে? হুযায়ফা [রাঃআঃ] বলেন, তুমি যদি অনুমতি না নিয়ে প্রবেশ করে তবে হয়তো অবাঞ্ছিত কিছু দেখবে।
আল-আদাবুল মুফরাদ বই হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১১০১. আনাস ইবনি মালেক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
এক বেদুইন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর বাড়িতে এসে দরজার ফাঁক দিয়ে উঁকি মারলো। তিনি একটি তীর বা সুচালো কাঠ তুলে নিলেন এবং বেদুইনের চোখ ফুঁড়ে দেয়ার জন্য তা তার দিকে তাক করিলেন। অতএব সে চলে গেলো। তিনি বলেনঃ তুমি যদি স্থির থাকতে তবে আমি তোমার চোখ ফুড়ে দিতাম।
[নাসায়ী,তাহাকিম] আল-আদাবুল মুফরাদ বই হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১১০২. আম্মার ইবনি সাদ আত-তুজীবী [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
উমার ইবনুল খাত্তাব [রাঃআঃ] বলেছেন, কোন ব্যক্তিকে অনুমতি দেয়ার পূর্বেই তার চক্ষুদ্বয় ঘরের কামরায় প্রবেশ করালে সে পাপাচারে লিপ্ত হলো।
আল-আদাবুল মুফরাদ বই হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল মাওকুফ
১১০৩. রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর মুক্তদাস সাওবান [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ কোন মুসলমান ব্যক্তির জন্য অনুমতি না নিয়ে কারো ঘরের অভ্যন্তরে তাকানো হালাল নয়। তাই করলে সে যেন ঘরে প্রবেশ করলো। যে ব্যক্তি কোন সম্প্রদায়ের ঈমামতি করে, তার জন্য তাহাদেরকে বাদ দিয়ে বিশেষভাবে শুধু নিজের জন্য দোয়া করে শেষ করা সমীচীন নয়। কোন ব্যক্তির জন্য প্রাকৃতিক প্রয়োজন চেপে রেখে এবং তা থেকে মুক্ত না হয়ে নামায পড়া হালাল নয়।
[আবু দাউদ, তিরমিজী, আহমাদ] আল-আদাবুল মুফরাদ বই হাদিস এর তাহকিকঃ নির্ণীত নয়
৫০৮. অনুচ্ছেদঃ যে ব্যক্তি নিজ ঘরে সালাম দিয়ে প্রবেশ করে তার ফযীলাত।
১১০৪. আবু উমামা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তিন ব্যক্তির প্রত্যেকে সম্পূর্ণরূপে আল্লাহর যিম্মায় থাকে। সে বেঁচে থাকলে আল্লাহই তার জন্য যথেষ্ট এবং মারা গেলে বেহেশতে প্রবেশ করিবে। যে ব্যক্তি নিজের ঘরে সালাম দিয়ে প্রবেশ করে তার জন্য মহামহিম আল্লাহ যামিন হন। যে ব্যক্তি মসজিদে যাওয়ার উদ্দেশে রওয়ানা হলো তার জন্যও আল্লাহ যামিন হন। যে ব্যক্তি আল্লাহর পথে [জিহাদে] রওয়ানা হলো তার জন্যও আল্লাহ যামিন হন।
-[আবু দাউদ, হাকিম, ইবনি হিব্বান] আল-আদাবুল মুফরাদ বই হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১১০৫. আবু যুবাইর [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
তিনি জাবের [রাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছেন, তুমি তোমার ঘরে প্রবেশকালে তোমার পরিজনদের সালাম দিও। এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে কল্যাণ কামনার দোয়া, যা খুবই বরকতপূর্ণ ও পবিত্র। রাবী বলেন, আমার মতে এটা আল্লাহর বাণীর ব্যাখ্যাঃ
وَإِذَا حُيِّيتُمْ بِتَحِيَّةٍ فَحَيُّوا بِأَحْسَنَ مِنْهَا أَوْ رُدُّوهَا [النساء: 86]
“আর যখন তোমাদেরকে সাদর সম্ভাষণ জ্ঞাপন করা হয় তখন তোমরা তদপেক্ষা উত্তম বাক্যে সাদর সম্ভাষণ জ্ঞাপন করো অথবা অন্তত তদনুরূপ উত্তর দাও”। [সূরা নিসা : ৮৬]
আল-আদাবুল মুফরাদ বই হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৫০৯. অনুচ্ছেদঃ ঘরে প্রবেশকালে কেউ আল্লাহকে স্মরণ না করলে সেই ঘরে শয়তান রাত যাপন করে।
১১০৬. জাবের [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি নাবী [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছেনঃ কোন লোক তার ঘরে প্রবেশকালে এবং তার আহার গ্রহণকালে মহামহিম আল্লাহকে স্মরণ করলে, শয়তান [তার সাঙ্গপাঙ্গকে] বলে, তোমরা রাত যাপনের স্থান ও রাতের আহার থেকে বঞ্চিত হলে। সে তার ঘরে প্রবেশকালে আল্লাহকে স্মরণ না করলে শয়তান বলে, তোমরা রাত কাটানোর জায়গা পেয়ে গেলে। সে তার আহার গ্রহণকালে আল্লাহকে স্মরণ না করলে শয়তান বলে, তোমাদের রাত কাটানোর জায়গা এবং রাতের আহার উভয়ের ব্যবস্থা হয়ে গেলো।
-[মুসলিম, হাকিম, ইবনি হিব্বান, আবু আওয়া নাসায়ী] আল-আদাবুল মুফরাদ বই হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৫১০. অনুচ্ছেদঃ যেখানে প্রবেশানুমতি চাওয়ার প্রয়োজন নাই।
১১০৭. আইয়ান আল-খাওয়ারিযমী [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
আমরা আনাস ইবনি মালেক [রাঃআঃ]-র নিকট আসলাম। তিনি নিঃসঙ্গভাবে তার দহলিজে বসা ছিলেন। আমার সঙ্গী তাকে সালাম দিয়ে বলেন, আমি কি প্রবেশ করিতে পারি? আনাস [রাঃআঃ] বলেন, প্রবেশ করো। এটা এমন জায়গা যেখানে কারো প্রবেশানুমতি চাওয়ার প্রয়োজন নাই। আমাদের জন্য খাদ্য পরিবেশন করা হলে আমরা তা আহার করলাম। পরিবেশক মিষ্টি নাবীযের [খেজুরের শরবত] বিরাট পাত্র নিয়ে এলো। তিনি তা পান করিলেন এবং আমাদেরও পান করালেন ।
আল-আদাবুল মুফরাদ বই হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৫১১. অনুচ্ছেদঃ বাজারের বিপণী বিতানে প্রবেশের অনুমতি প্রার্থনা।
১১০৮. মুজাহিদ [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
ইবনি উমার [রাঃআঃ] বিপণী বিতানে প্রবেশের জন্য অনুমতি চাইতেন না।
আল-আদাবুল মুফরাদ বই হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১১০৯. আতা [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
ইবনি উমার [রাঃআঃ] বস্ত্র ব্যবসায়ীদের শামিয়ানায় প্রবেশের জন্য অনুমতি চাইতেন।
আল-আদাবুল মুফরাদ বই হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৫১২. অনুচ্ছেদঃ পারস্যবাসীদের নিকট কিভাবে অনুমতি প্রার্থনা করিবে?
১১১০., উমার ইবনুল খাত্তাব [রাঃআঃ]-র পুত্র আসেম [রাহিমাহুল্লাহ]-এর নাতনি উম্মু মিসকীন বিনতে উমার [রাহিমাহুল্লাহ]-এর মুক্তদাস আবু আবদুল মালেক [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
আমার মনিব আমাকে আবু হুরাইরা [রাঃআঃ]-র নিকট পাঠান। তিনি আমার সাথেই চলে আসেন। তিনি দরজায় দাঁড়িয়ে বলেন, ভেতরে প্রবেশ করিতে পারি কি? উম্মু মিসকীন [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, প্রবেশ করুন। তিনি বলেন, হে আবু হুরাইরা! সে রাতের আহারশেষে আমার নিকট কাঁচাপাকা কথা নিয়ে আসে, আমি কি তার সাথে [তখন] কথাবার্তা বলিতে পারি? আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] বলেন, বিতরের নামায না পড়া পর্যন্ত কথাবার্তা বলিতে পারো। কিন্তু তুমি বিতর পড়ার পর আর কথাবার্তা বলো না।
আল-আদাবুল মুফরাদ বই হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল মাওকুফ
৫১৩. অনুচ্ছেদঃ যিম্মী পত্র মারফত সালাম দিলে তার উত্তর দিতে হইবে।
১১১১. আবু উসমান আন-নাহদী [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
আবু মূসা [রাঃআঃ] রাহবানকে চিঠি লিখলেন এবং তাকে সালাম জানালেন। তাকে বলা হলো, সে তো কাফের, তাকে আপনি সালাম দিলেন? তিনি বলেন, সে আমাকে চিঠি লিখেছে এবং আমাকে সালাম দিয়েছে। আমি এর জবাব দিয়েছি।
আল-আদাবুল মুফরাদ বই হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৫১৪. অনুচ্ছেদঃ যিম্মীকে প্রথমে সালাম দিবে না।
১১১২. আবু বাসরা আল-গিফারী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ আমি আগামী কাল সকালে ইহুদীদের এলাকায় যাচ্ছি। অতএব তোমরা তাহাদেরকে প্রথমে সালাম দিবে না। তারা তোমাদের সালাম দিলে তোমরা বলবে, তোমাদের প্রতিও।
আল-আদাবুল মুফরাদ বই হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১১১৩. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ আহলে কিতাব সম্প্রদায়কে তোমরা আগে সালাম দিবে না। তোমরা তাহাদেরকে রাস্তার সংকীর্ণ দিকে পথ চলতে বাধ্য করো
। -[মুসলিম, তিরমিজী, আবু দাউদ, আবু আওয়ানাসায়ী, তাহাবী, ইবনি হিব্বান] আল-আদাবুল মুফরাদ বই হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৫১৫. অনুচ্ছেদঃ যে ব্যক্তি ইংগিতে যিম্মীকে সালাম দেয়।
১১১৪. আলকামা [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
আবদুল্লাহ [রাঃআঃ] গ্রামবাসী কৃষকদেরকে ইশারায় সালাম দেন।
আল-আদাবুল মুফরাদ বই হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১১১৫. আনাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
এক ইহুদী নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট দিয়ে যাওয়ার সময় বলে,
السَّامُ عَلَيْكُمْ
আলাইকুম [তোদের মরণ হোক]। তাহাঁর সাহাবীগণ সালামের উত্তর দিলে তিনি বলেনঃ সে তো বলেছে, তোদের মরণ হোক। ইহুদীকে গ্রেপ্তার করা হলে সে স্বীকারোক্তি করে। তিনি বলেনঃ সে যেভাবে বলেছে তোমরা তদনুরূপ উত্তর দাও।
-[মুসলিম, আবু দাউদ, নাসায়ী, আবু আওয়া নাসায়ী] আল-আদাবুল মুফরাদ বই হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৫১৬. অনুচ্ছেদঃ যিম্মীদের সালামের উত্তর কিভাবে দিবে?
১১১৬.আবদুল্লাহ ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ ইহুদী সম্প্রদায়ের কেউ তোমাদের কখনো সালাম দিলে অবশ্যই সে বলে,
السَّامُ عَلَيْكَ
তোর মরণ হোক। অতএব তোমরাও বলো,
وَعَلَيْكَ
তোরই মরণ হোক।
[বোখারী, মুসলিম, দারিমি, নাসায়ী] আল-আদাবুল মুফরাদ বই হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১১১৭. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তোমরা ইহুদী, খৃষ্টান বা অগ্নি উপাসকদের সালামের উত্তর দিও। কেননা আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَإِذَا حُيِّيتُمْ بِتَحِيَّةٍ فَحَيُّوا بِأَحْسَنَ مِنْهَا أَوْ رُدُّوهَا [النساء: 86]
“তোমাদের যখন অভিবাদন বাক্যে স্বাগত জানানো হয় তখন তোমরাও তদপেক্ষা উত্তম বাক্যে স্বাগত জানাও অথবা [অন্তত] তাই প্রত্যপণ করো”। [সূরা নিসা : ৮৬]।
আল-আদাবুল মুফরাদ বই হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান হাদিস
৫১৭. অনুচ্ছেদঃ মুসলমান ও মুশরিকদের সম্মিলিত সভায় সালাম দেয়া।
১১১৮. উসামা ইবনি যায়েদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
নাবী [সাঃআঃ] জিনপোষের উপর ফাদাকের তৈরী চাদর বিছানো গাধার পিঠে সওয়ার হয়ে এবং উসামা ইবনি যায়েদ [রাঃআঃ]-কে তার পেছনে বসিয়ে অসুস্থ সাদ ইবনি উবাদা [রাঃআঃ]-কে দেখিতে গেলেন। তিনি এক জনসমাবেশের নিকট গিয়ে পৌছলেন, যেখানে আবদুল্লাহ ইবনি উবাই ইবনি সালুলও উপস্থিত ছিল। এটা আল্লাহর এই দুশমনের ইসলাম গ্রহণের আগেকার ঘটনা। উক্ত জনসভায় মুসলমান, মুশরিক ও মূর্তিপূজক সকলেই উপস্থিত ছিল। তিনি তাহাদের সালাম দেন।
[বোখারী, মুসলিম, তিরমিজী] আল-আদাবুল মুফরাদ বই হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৫১৮. অনুচ্ছেদঃ আহলে কিতাব সম্প্রদায়কে কিভাবে চিঠিপত্র লিখবে?
১১১৯. আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
রোমের বাদশা হিরাকল [হিরাক্লিয়াস] আবু সুফিয়ান ইবনি হারবের নিকট লোক পাঠান। অতঃপর তিনি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর চিঠি নিয়ে ডাকেন যা নিয়ে তিনি দিহইয়া আল-কালবী [রাঃআঃ]-কে বুসরার শাসকের নিকট পাঠিয়েছিলেন। তিনি চিঠিখানি হিরাকলের নিকট অর্পণ করেন। তিনি তা পাঠ করেন। তাতে ছিলঃ
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ، مِنْ مُحَمَّدٍ عَبْدِ اللَّهِ وَرَسُولِهِ إِلَى هِرَقْلَ عَظِيمِ الرُّومِ، سَلَّامٌ عَلَى مَنِ اتَّبَعَ الْهُدَى، أَمَّا بَعْدُ، فَإِنِّي أَدْعُوكَ بِدِعَايَةِ الْإِسْلَامِ، أَسْلِمْ تَسْلَمْ، يُؤْتِكَ اللَّهُ أَجْرَكَ مَرَّتَيْنِ، فَإِنْ تَوَلَّيْتَ فَإِنَّ عَلَيْكَ إِثْمَ الْأَرِيسِيِّينَ
“বিসমিল্লাহির রহমানির রাহীম। আল্লাহর বান্দা ও রাসূল মুহাম্মাদের পক্ষ থেকে রোমের শাসক হিরাকলকে। যে ব্যক্তি হেদায়াতের অনুসরণ করে তার প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক। অতঃপর, আমি আপনাকে ইসলাম গ্রহণের দাওয়াত দিচ্ছি। ইসলাম গ্রহণ করুন নিরাপদ থাকুন। আল্লাহ আপনাকে দ্বিগুণ সওয়াব দান করবেন। যদি আপনি পশ্চাতে ফিরে যান তাহলে প্রজাদের সমস্ত পাপের বোঝা আপনাকে বহন করিতে হইবে”।
يَا أَهْلَ الْكِتَابِ تَعَالَوْا إِلَى كَلِمَةٍ سَوَاءٍ بَيْنَنَا وَبَيْنَكُمْ [آل عمران: 64]
“হে আহলে কিতাব! তোমরা এমন এক কথায় আসো যা আমাদের মধ্যে ও তোমাদের মধ্যে সমান। …তোমরা সাক্ষী থাকো যে, আমরা মুসলমান” [সূরা আল ইমরান : ৬৪]।
[বোখারী, মুসলিম, দারিমি] আল-আদাবুল মুফরাদ বই হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৫১৯. অনুচ্ছেদঃ আহলে কিতাব সম্প্রদায় “তোদের মরণ হোক” বললে।
১১২০. জাবের [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
ইহুদীদের একদল লোক নাবী [সাঃআঃ]-কে সালাম দিতে গিয়ে বলে,
السَّامُ عَلَيْكُمْ
তোমার মরণ হোক। তিনি বলেনঃ
وَعَلَيْكُمْ
তোমাদেরও। আয়েশা [রাঃআঃ] ক্রোধান্বিত হয়ে বলেন, আপনি কি শুনতে পাননি, তারা কি বলেছে? তিনি বলেনঃ হাঁ, অবশ্যই। আমার বিরুদ্ধে তাহাদের তাহাদের দোয়া কবুল হইবে না।
[মুসলিম] আল-আদাবুল মুফরাদ বই হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৫২০. অনুচ্ছেদঃ আহলে কিতাবদের রাস্তার সংকীর্ণ পাশ দিয়ে হাটতে বাধ্য করা।
১১২১. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ চলার পথে মুশরিকদের সাথে তোমাদের সাক্ষাত হলে তোমরা আগে তাহাদেরকে সালাম দিবে না এবং তাহাদেরকে রাস্তার সংকীর্ণ পথে চলতে বাধ্য করো।
-[মুসলিম, তিরমিজী, আবু দাউদ, তাহাবী, আবু আওয়ানাসায়ী, ইবনি হিব্বান] আল-আদাবুল মুফরাদ বই হাদিস এর তাহকিকঃ অন্যান্য
৫২১. অনুচ্ছেদঃ যিম্মীর জন্য কিভাবে দোয়া করিবে?
১১২২. উকবা ইবনি আমের আল-জুহানী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি মুসলমানদের বেশভূষাধারী এক ব্যক্তির নিকট দিয়ে যেতে সে তাকে সালাম দিলো এবং তিনিও উত্তরে বলেন, তোমার প্রতিও এবং আল্লাহর অনুগ্রহ ও প্রাচুর্যও। সাথের যুবক তাকে বললো, সে তো খৃস্টান। উকবা [রাঃআঃ] দাঁড়ালেন, অতঃপর লোকটির পিছে পিছে অগ্রসর হয়ে তাকে পেয়ে গেলেন। তিনি বলেন, নিশ্চয় আল্লাহর রহমাত ও তাহাঁর প্রাচুর্য মুমিনদের উপর বর্ষিত হয়। কিন্তু আল্লাহ তোমাকে দীর্ঘজীবি করুন এবং তোমার ধন-সম্পত্তি ও সন্তানাদি বাড়িয়ে দিন।
আল-আদাবুল মুফরাদ বই হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান হাদিস
১১২৩. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
ফিরাউনও যদি আমাকে বলতো, আল্লাহ তোমাকে বরকত দান করুন, তবে আমিও বলতাম, তোমাকেও, যদিও ফেরাউন ধ্বংস হয়েছে।
আল-আদাবুল মুফরাদ বই হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১১২৪. আবু মূসা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
ইহুদীরা নাবী [সাঃআঃ]-এর সামনে হাঁচি দিয়ে আশা করতো যে, তিনি তাহাদের [হাঁচির জবাবে] বলবেন, আল্লাহ তোমাদের প্রতি সদয় হোন। কিন্তু তিনি বলিতেনঃ আল্লাহ তোমাদের হেদায়াত দান করুন এবং তোমাদের অবস্থা সংশোধন করুন।
-[আবু দাউদ, তিরমিজী, আবু দাউদ, হাকিম, তাহাবী] আল-আদাবুল মুফরাদ বই হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৫২২. অনুচ্ছেদঃ অজান্তে কোন খৃষ্টানকে সালাম দিলে।
১১২৫. আবদুর রহমান [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
ইবনি উমার [রাঃআঃ] এক খৃস্টান ব্যক্তির নিকট দিয়ে যেতে তাকে সালাম দেন। সেও তার সালামের জবাব দেয়। পরে তাকে অবহিত করা হলো যে, সে খৃষ্টান। তিনি তা জানতে পেরে ফিরে গিয়ে বলেন, আমার সালাম ফেরত দাও।
আল-আদাবুল মুফরাদ বই হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান হাদিস
৫২৩. অনুচ্ছেদঃ যখন কেউ বলে, অমুক আপনাকে সালাম দিয়েছে।
১১২৬. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
নাবী [সাঃআঃ] তাকে বলেন, জিবরীল [আঃ] তোমাকে সালাম দিয়েছেন। তিনি বলেন, তাকেও সালাম এবং আল্লাহর রাহমাত।
[বোখারী, মুসলিম] আল-আদাবুল মুফরাদ বই হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
Leave a Reply