অলসতা ও গান বাজনা সম্পর্কে হাদিস
অলসতা ও গান বাজনা সম্পর্কে হাদিস , এই অধ্যায়ে মোট = ৩৩ টি হাদীস (৭৮৮ – ৮২০) << আদাবুল মুফরাদ হাদীস কিতাবের মুল সুচিপত্র দেখুন
অধ্যায় – ১১ গান-বাজনা ও অলসতা
৩৩৯. অনুচ্ছেদঃ কারো বক্তব্য, আল্লাহর মর্জি ও আপনার মর্জি।
৩৪০. অনুচ্ছেদঃ গান-বাজনা ও তামাশা।
৩৪১. অনুচ্ছেদঃ উত্তম চালচলন ও জীবনপ্রণালী।
৩৪২. অনুচ্ছেদঃ যাকে তুমি দাওনি পাথেয়, সে তোমার নিকট আনবে বয়ে বার্তা।
৩৪৩. অনুচ্ছেদঃ অবাঞ্ছিত আকাঙ্ক্ষা।
৩৪৪. অনুচ্ছেদঃ তোমরা আঙ্গুরকে কারম নামকরণ করো না।
৩৪৫. অনুচ্ছেদঃ কারো এরূপ বলা, তোমার অকল্যাণ হোক।
৩৪৬. অনুচ্ছেদঃ কারো কথা, হে শালিকা, হে পাগলী।
৩৪৭. অনুচ্ছেদঃ কারো কথা, আমি ক্লান্ত-শ্রান্ত।
৩৪৮. অনুচ্ছেদঃ ব্যক্তি অলসতা থেকে পানাহ চায়।
৩৪৯. অনুচ্ছেদঃ কারো কথা, আমার জান আপনার জন্য উৎসর্গিত।
৩৫০. অনুচ্ছেদঃ কারো বলা, আপনার জন্য আমার পিতা-মাতা উৎসর্গিত হোক ।
৩৫১. অনুচ্ছেদঃ কারো অমুসলিমদের শিশু সন্তানকে “হে বৎস” বলে সম্বোধন করা।
৩৫২. অনুচ্ছেদঃ কেউ যেন না বলে, আমার আত্মা নাপাক হয়ে গেছে।
৩৫৩. অনুচ্ছেদঃ আবুল হাকাম উপনাম।
৩৫৪. অনুচ্ছেদঃ নাবী [সাঃআঃ]-এর পছন্দনীয় নাম “হাসান”।
৩৫৫. অনুচ্ছেদঃ তাড়াহুড়া করে হাঁটা।
৩৩৯. অনুচ্ছেদঃ কারো বক্তব্য, আল্লাহর মর্জি ও আপনার মর্জি।
৭৮৮. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
এক ব্যক্তি নাবী [সাঃআঃ]-কে বললো, আল্লাহর মর্জি এবং আপনার মর্জি। তিনি বলেনঃ তুমি আল্লাহর সাথে শরীক করলে। বলো, একমাত্র আল্লাহর মর্জি।
-[আহমাদ, ইবনি মাজাহ, নাসায়ী, দারিমি, তাহাবী] অলসতা ও গান বাজনা সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩৪০. অনুচ্ছেদঃ গান-বাজনা ও তামাশা।
৭৮৯. আবদুল্লাহ ইবনি দীনার [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
আমি আবদুল্লাহ ইবনি উমার সাথে বাজারে গেলাম। তিনি সঙ্গীতরত একটি বালিকাকে অতিক্রম করিতে করিতে বলেন, শয়তান যদি কাউকেও ত্যাগ করতো তবে একেও ত্যাগ করতো
[বাযযার, দারাওয়ারদী]। অলসতা ও গান বাজনা সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান হাদিস
৭৯০. আনাস ইবনি মালেক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আমি খেল-তামাশা পছন্দ করি না এবং খেল-তামাশারও আমার সাথে আমার কোন সম্পর্ক নাই। অর্থাৎ আমার সাথে বাতিলের কোন সম্পর্ক নাই।
অলসতা ও গান বাজনা সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৭৯১. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
وَمِنَ النَّاسِ مَنْ يَشْتَرِي لَهْوَ الْحَدِيثِ [لقمان: 6]
“এমন কতক লোক আছে যারা মানুষকে আল্লাহর পথ থেকে ভ্ৰষ্ট করার লক্ষ্যে অবান্তর কথাবার্তা সংগ্রহ করে” [সূরা লোকমান : ৬]। তা হচ্ছে গান-বাজনা ও অনুরূপ বস্তুসমূহ।
[তাবারী] অলসতা ও গান বাজনা সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৭৯২. বারাআ ইবনি আযেব [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমরা সালামের বহুল প্রচলন করো, শান্তিতে থাকতে পারবে। অনর্থক কথাবার্তা ক্ষতিকর।
[মুসনাদে আবু ইয়ালা, ইবনি হিব্বান, মুখতারাত] অলসতা ও গান বাজনা সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান হাদিস
৭৯৩. ফাদালা ইবনি উবাইদ [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
তিনি কোন এক মজলিসে বসা ছিলেন। তখন তিনি জানতে পারলেন যে, কতক লোক দাবা খেলায় মত্ত আছে। তিনি ক্রোধান্বিত অবস্থায় তৎক্ষণাৎ উঠে গিয়ে তাহাদেরকে কঠোরভাবে নিষেধ করিলেন, অতঃপর বলিলেন, সাবধান! যারা পাশা খেলে এবং তার ফল [উপার্জন] খায় তারা শূকরের গোশত ভক্ষণকারী এবং রক্ত দিয়ে উযুকারীর সমতুল্য।
অলসতা ও গান বাজনা সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৩৪১. অনুচ্ছেদঃ উত্তম চালচলন ও জীবনপ্রণালী।
৭৯৪. ইবনি মাসউদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তোমরা এমন একটি যুগে আছো যে সময় ফকীহগণের সংখ্যা অধিক, বক্তাগণের সংখ্যা কম, যাঞ্চাকারীর সংখ্যা কম, দাতার সংখ্যা অধিক এবং আমল হচ্ছে প্রবৃত্তির পরিচালক। কিন্তু তোমাদের পর অচিরেই এমন এক যুগ আসবে যখন ফকীহগণের সংখ্যা হইবে কম, বক্তার সংখ্যা হইবে প্রচুর, যাঞ্চাকারীর সংখ্যা হইবে অধিক, দাতার সংখ্যা হইবে অল্প এবং
প্রবৃত্তিই হইবে আমলের পরিচালক। জেনে রাখো! আখেরী যমানায় উত্তম স্বভাব হইবে কোন কোন আমলের চেয়েও উত্তম।
-[মুয়াত্তা মালিক] অলসতা ও গান বাজনা সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান হাদিস
৭৯৫. আল-জুরাইরী [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
আমি আবুত তুফাইল [রাঃআঃ]-কে জিজ্ঞেস করলাম, আপনি কি নাবী [সাঃআঃ]-কে দেখেছেন? তিনি বলেন, হাঁ। আমার জানামতে যারা তাহাঁকে দেখেছেন আমি ছাড়া তাহাদের কেউ ভূপৃষ্ঠে বেঁচে নাই। তিনি ছিলেন ফর্সা ও লাবণ্যময় চেহারার অধিকারী
[মুসলিম, হা/৫৮৬২]। অলসতা ও গান বাজনা সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৭৯৬. আল-জুরাইরী [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
আমি ও আবুত তুফাইল আমের ইবনি ওয়াসেলা আল-কানানী [রাঃআঃ] আল্লাহর ঘর তাওয়াফ করছিলাম। তখন আবুত তুফাইল [রাঃআঃ] বলেন, নাবী [সাঃআঃ]-কে দেখেছেন, আমি ছাড়া এমন কেউ আর বেঁচে নাই। আমি বললাম, আপনি কি তাহাঁকে দেখেছেন? তিনি বলেন, হাঁ। আমি বললাম, তিনি কেমন ছিলেন? তিনি বলেন, তিনি ছিলেন ফর্সা, লাবণ্যময়, মধ্যম আকৃতির।
[মুসলিম, আবু দাউদ] আবুত তুফাইল [রাঃআঃ] ১০০ হিজরীতে ইনতিকাল করেন। মহানাবী [সাঃআঃ]-এর সাহাবীগণের মধ্যে তিনিই সবশেষে মৃত্যুবরণ করেন [মুসলিম, কিতাবুল ফাদাইল, হাদিস নং ৬০৭১ [৯৮]-[অনুবাদক]। অলসতা ও গান বাজনা সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৭৯৭. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ উত্তম চালচলন, উত্তম স্বভাব, উত্তম আচরণ এবং মিতাচার নবুয়াতের পঁচিশ ভাগের এক ভাগ।
-[মুয়াত্তা মালিক, আবু দাউদ, আহমাদ] অলসতা ও গান বাজনা সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ হাসান হাদিস
৭৯৮. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ উত্তম চালচলন উত্তম আচরণ ও মিতাচার নবুয়াতের সত্তর ভাগের এক ভাগ।
[আবু দাউদ] অলসতা ও গান বাজনা সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৩৪২. অনুচ্ছেদঃ যাকে তুমি দাওনি পাথেয়, সে তোমার নিকট আনবে বয়ে বার্তা।
৭৯৯. ইকরিমা [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
আমি আয়েশা [রাঃআঃ]-কে জিজ্ঞেস করলাম, আপনি কি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে কখনো কবিতা দ্বারা উপমা দিতে শুনেছেন? তিনি বলেন, কখনো কখনো তিনি ঘরে প্রবেশকালে আবৃত্তি করিতেনঃ “যাকে তুমি দাওনি তোশা, আনবে খবর সে নিশ্চয়”।
[তিরমিজী, তাহাবী, নাসায়ী] অলসতা ও গান বাজনা সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৮০০. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
“যাকে তুমি দাওনি তোশা, আনবে খবর সে নিশ্চয়” একজন নাবীর কথা [অর্থাৎ নাবী [সাঃআঃ]-ও একথা বলেছেন]।
অলসতা ও গান বাজনা সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩৪৩. অনুচ্ছেদঃ অবাঞ্ছিত আকাঙ্ক্ষা।
৮০১. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন ঃ তোমাদের কেউ যখন কিছু
আকাঙ্ক্ষা করে তখন তার লক্ষ্য করা উচিত যে, সে কি আকাঙ্ক্ষা করছে। কেননা সে তো জানে না যে, তাকে কি দেয়া হইবে?
[আহমাদ, বাযযার] অলসতা ও গান বাজনা সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৩৪৪. অনুচ্ছেদঃ তোমরা আঙ্গুরকে কারম নামকরণ করো না।
৮০২. আলকামা ইবনি ওয়াইল [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
নাবী [সাঃআঃ] বলেন তোমাদের কেউ যেন আঙ্গুরকে ‘কারম’ না বলে, বরং তোমরা হাবালা [আঙ্গুর] বলো।
-[মুসলিম, দারিমি, আবু আওয়ানাসায়ী, ইবনি হিব্বান] অলসতা ও গান বাজনা সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩৪৫. অনুচ্ছেদঃ কারো এরূপ বলা, তোমার অকল্যাণ হোক।
৮০৩. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
নাবী [সাঃআঃ] এক ব্যক্তিকে অতিক্রম করে যাচ্ছিলেন, যে তার কোরবানীর উট হাকিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল। তিনি বলেনঃ তুমি তাতে আরোহণ করো। সে বললো, ইয়া রসূলাল্লাহ! তা কোরবানীর উট। তিনি পুনরায় বলেনঃ তুমি তাতে আরোহণ করো। সে বললো, তা কোরবানীর উট। তিনি তৃতীয় বা চতুর্থবারে বলেনঃ তোমার জন্য দুঃখ হয়! তুমি তাতে আরোহণ করো।
-[বোখারী, মুসলিম, আবু দাউদ, তাহাবী] অলসতা ও গান বাজনা সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩৪৬. অনুচ্ছেদঃ কারো কথা, হে শালিকা, হে পাগলী।
৮০৪. হামনা বিনতে জাহাশ [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
নাবী [সাঃআঃ] বললেনঃ হে শ্যালিকা [বা পাগলী]! এটা কি?
-[আবু দাউদ, ইবনি মাজাহ, তিরমিজী] অলসতা ও গান বাজনা সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৮০৫. হাবীব ইবনি সাহ্বান আল-আসাদী [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
আমি আম্মার [রাঃআঃ]-কে ফরয নামায পড়তে দেখলাম। অতঃপর তিনি তার পাশের লোকটিকে বলেন, হে পাগলা! অতঃপর [আবার নামাযে] দাঁড়ালেন।
[হাকিম] অলসতা ও গান বাজনা সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৮০৬. আমর ইবনুশ শারীদ [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর বাহনে পেছন দিকে আমাকে তুলে নিলেন। তিনি বলেনঃ তোমার স্মৃতিতে [কবি] উমাইয়্যা ইবনি আবুস সালত-এর কবিতার কোন কিছু আছে কি? আমি বললাম, হাঁ। আমি তাকে একটি পংক্তি আবৃত্তি করে শুনালাম। তিনি বলেনঃ আরও আবৃত্তি করো। শেষ পর্যন্ত আমি তাকে এক শত পংক্তি আবৃত্তি করে শুনলাম। [মুসলিম]
অলসতা ও গান সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩৪৭. অনুচ্ছেদঃ কারো কথা, আমি ক্লান্ত-শ্রান্ত।
৮০৭. আবদুল্লাহ ইবনি আবু মূসা [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
আয়েশা [রাঃআঃ] বলিলেন, রাতে দাঁড়ানো [নফল নামায পড়া] কখনো ত্যাগ করো না। কেননা নাবী [সাঃআঃ] কখনো তা ত্যাগ করেননি। তিনি অসুস্থ থাকলে বা ক্লান্তি বোধ করলে বসে বসে নামায পড়তেন।
[আবু দাউদ] অলসতা ও গান সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩৪৮. অনুচ্ছেদঃ ব্যক্তি অলসতা থেকে পানাহ চায়।
৮০৮. আনাস ইবনি মালেক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
নাবী [সাঃআঃ] অধিক পরিমাণে বলিতেনঃ
اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْهَمِّ وَالْحَزَنِ، وَالْعَجْزِ وَالْكَسَلِ، وَالْجُبْنِ وَالْبُخْلِ، وَضَلَعِ الدَّيْنِ، وَغَلَبَةِ الرِّجَالِ
“হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে আশ্রয় চাই দুশ্চিন্তা ও দুঃখজনক অবস্থা থেকে, অক্ষমতা ও অলসতা থেকে, ভীরুতা ও কৃপণতা থেকে এবং ঋণভার ও লোকের [শত্রুর] আধিপত্য থেকে”
। -[বোখারী, আবু দাউদ, নাসায়ী, তিরমিজী] অলসতা ও গান সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩৪৯. অনুচ্ছেদঃ কারো কথা, আমার জান আপনার জন্য উৎসর্গিত।
৮০৯. আনাস ইবনি মালেক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
আবু তালহা [রাঃআঃ] রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সামনে হাঁটু গেড়ে বসতেন এবং তার তীরগুলো ছড়িয়ে দিয়ে বলিতেন, হে প্রিয় নাবী! আমার মুখমণ্ডল আপনার মুখমণ্ডলের ঢালস্বরূপ। আমার জান আপনার জন্য উৎসর্গ হোক।
[ইবনুস সুন্নী] অলসতা ও গান বাজনা সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৮১০. আবু যার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
নাবী [সাঃআঃ] ‘আল-বাকী’ নামক কবরস্থানের দিকে গেলেন। আমিও তাহাঁর অনুগামী হলাম। তিনি পিছনে ফিরে আমাকে দেখিতে পেয়ে বলেনঃ হে আবু যার! আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমি আপনার সৌভাগ্যময় দরবারে হাযির। আপনার জন্য আমি উৎসর্গিত। তিনি বলেনঃ সম্পদশালীরাই হইবে কিয়ামতের দিন দরিদ্র, তবে যারা এরূপ এরূপ [দান-খয়রাত] করিবে তারা ব্যতীত। আমি বললাম, আল্লাহ ও তাহাঁর রাসূলই সমধিক জ্ঞাত। তিনি এরূপ তিনবার বলেন। অতঃপর উহুদ পাহাড় আমাদের সামনে পড়লো। তিনি বলেনঃ হে আবু যার! আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমি আপনার সৌভাগ্যময় দরবারে হাযির। আপনার জন্য আমি উৎসর্গিত। তিনি বলেনঃ “এই উহুদ পাহাড় যদি মুহাম্মাদের পরিবারের জন্য সোনায় পরিণত হয়, তবে রাত আসা অবধি তাহাদের নিকট এক দীনার বা এক মিসকাল পরিমাণ সোনা অবশিষ্ট থাকলেও তাতে আমি খুশি হবো না”। অতঃপর আমরা একটি উন্মুক্ত মাঠে উপনীত হলাম। তিনি মাঠের এক প্রান্তে চলে গেলেন। আমি ভাবলাম, তিনি হয়তো প্রাকৃতিক প্রয়োজন সাড়তে গেছেন। তাই আমি একপাশে বসে থাকলাম। আমার কাছে ফিরে আসতে তাহাঁর বিলম্ব হলে তাহাঁর সম্পর্কে আমার [বিপদের] আশংকা হলো। অতঃপর আমি এক ব্যক্তির সাথে ফিস ফিস করে তাহাঁর কথা বলার আওয়াজ শুনতে পেলাম। অতঃপর তিনি একাকী আমার নিকট ফিরে এলেন। আমি জিজ্ঞেস করলাম, ইয়া রসূলাল্লাহ! আপনি কার সাথে গোপনে কথা বলিলেন? তিনি জিজ্ঞেস করলেনঃ তুমি কি তা শুনতে পেয়েছো? আমি বললাম, হাঁ। তিনি বলেনঃ তিনি জিবরাঈল [আঃ]। তিনি আমার নিকট এসে আমাকে এই সুসংবাদ দিলেন যে, আমার উম্মাতের যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে কোন কিছু শরীক না করে মারা যাবে সে বেহেশতে প্রবেশ করিবে। আমি বললাম, যদি সে যেনা করে থাকে, যদি সে চুরি করে থাকে তবুও? তিনি বলেনঃ হাঁ তবুও।
[বোখারী, মুসলিম] অলসতা ও গান সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩৫০. অনুচ্ছেদঃ কারো বলা, আপনার জন্য আমার পিতা-মাতা উৎসর্গিত হোক ।
৮১১. আলী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে সাদ [রাঃআঃ] ছাড়া আর কারো জন্য ‘ফিদা’ [উৎসর্গ] শব্দ ব্যবহার করিতে দেখিনি। আমি তাহাঁকে বলিতে শুনেছিঃ তীর নিক্ষেপ করো, আমার পিতা-মাতা তোমার জন্য উৎসর্গিত হোন।
[বোখারী, মুসলিম, তিরমিজী, আবু দাউদ] গান বাজনা সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৮১২. আবদুল্লাহ ইবনি বুরাইদা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
নাবী [সাঃআঃ] মসজিদের দিকে গেলেন। তখন আবু মূসা [রাঃআঃ] কুরআন মাজীদ পড়ছিলেন। তিনি জিজ্ঞেস করেনঃ এ কে? আমি বললাম, আমি বুরায়দা, আমি আপনার জন্য নিজেকে উৎসর্গ করলাম। তিনি বলেনঃ একে দাউদ [আঃ]-এর পরিবারের সুরসমূহের একটি সুর দান করা হয়েছে।
[মুসলিম] অলসতা ও গান বাজনা সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩৫১. অনুচ্ছেদঃ কারো অমুসলিমদের শিশু সন্তানকে “হে বৎস” বলে সম্বোধন করা।
৮১৩. সাব ইবনি হাকীম [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, আমি উমার ইবনুল খাত্তাব [রাঃআঃ]-এর নিকট এলে তিনি বলিতে লাগলেন, হে ভ্রাতুষ্পুত্র, হে ভ্রাতুষ্পুত্র! অতঃপর তিনি আমার বংশপরিচয় জিজ্ঞেস করলে আমি তাকে আমার বংশপরিচয় দিলাম। তাতে তিনি বুঝতে পারলেন যে, আমার পিতা ইসলামী যুগ পাননি। তিনি আমাকে ‘হে বৎস’ ‘হে বৎস’ বলে সম্বোধন করিতে লাগলেন।
[মুসান্নাফ ইবনি শায়বাহ, তারীখুল কাবীর] অলসতা ও গান সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল মাওকুফ
৮১৪. আনাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
আমি নাবী [সাঃআঃ]-এর খাদেম ছিলাম। আমি অনুমতি না নিয়েই ঘরে প্রবেশ করতাম। এক দিন আমি এলে তিনি বলেনঃ বৎস! থেমে যাও। তোমার অনুপস্থিতিতে একটি ব্যাপার ঘটেছে। এখন থেকে বিনা অনুমতিতে ঘরে প্রবেশ করো না।
[তিরমিজী, তাহাবী] অলসতা ও গান বাজনা সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৮১৫. আবু সাসাআ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
আবু সাঈদ খুদরী [রাঃআঃ] তাকে ‘হে বৎস’ বলে সম্বোধন করিয়াছেন।
-[বোখারী, নাসায়ী, ইবনি খুজাইমাহ] অলসতা ও গান সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ মাওকুফ
৩৫২. অনুচ্ছেদঃ কেউ যেন না বলে, আমার আত্মা নাপাক হয়ে গেছে।
৮১৬. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ অবশ্যই তোমাদের কেউ যেন না বলে, আমার আত্মা নাপাক হয়ে গেছে। বরং সে বলিতে পারে, আমার আত্মা নাফরমানি করেছে।
-[বোখারী, মুসলিম] অলসতা ও গান সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৮১৭. সাহল [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ তোমাদের কেউ যেন এরূপ না বলে, আমার মন-মানসিকতা কলুষিত হয়ে গেছে। [বলিতেই যদি হয় তাহলে] যেন বলে, আমার মন-মানসিকতা খারাপ হয়ে গেছে।
[বোখারী, মুসলিম, দারিমি] অলসতা ও গান বাজনা সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩৫৩. অনুচ্ছেদঃ আবুল হাকাম উপনাম।
৮১৮. হানী ইবনি ইয়াযীদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি তার সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি দলের সাথে নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট গেলেন। নাবী [সাঃআঃ] তাহাদের কাছে শুনলেন যে, তারা তাকে “আবুল হিকাম” ডাকনাম দিয়েছে। নাবী [সাঃআঃ] তাকে ডেকে এনে বলেনঃ আল্লাহই হলেন হিকাম [হুকুমের মালিক] এবং তিনিই কেবল হুকুম দিতে পারেন। অতএব তুমি নিজের জন্য আবুল হিকাম উপনাম রাখলে কী করে? তিনি বলেন, ব্যাপারটি তা নয়, বরং আমার সম্প্রদায়ের মধ্যে কোন ব্যাপারে মতানৈক্য হলে তারা আমার কাছে আসে এবং আমি তাহাদের মধ্যে মীমাংসা করে দেই। উভয় পক্ষই আমার মীমাংসা মেনে নেয়। তিনি বলেনঃ তা তো খুবই উত্তম। তিনি পুনরায় জিজ্ঞেস করেনঃ তোমার কি কোন সন্তান আছে? আমি বললাম, শুরায়হ, আবদুল্লাহ ও মুসলিম নামে আমার তিন সন্তান আছে। তিনি বলেনঃ তাহাদের মধ্যে বয়জ্যেষ্ঠ কে? আমি বললাম, শুরায়হ। তিনি বলেনঃ তাহলে তুমি আবু শুরায়হ। অতঃপর তিনি তার জন্য এবং তার সন্তানদের জন্য দোয়া করিলেন। নাবী [সাঃআঃ] শুনতে পেলেন যে, প্রতিনিধি দল তাহাদের একজনকে “আবদুল হাজার” [পাথরের দাস] নামে ডাকে। নাবী [সাঃআঃ] জিজ্ঞেস করেনঃ তোমার নাম কি? সে বললো, আবদুল হাজার। তিনি বলেনঃ নাসায়ী, তোমার নাম আবদুল্লাহ। শুরায়হ [রাঃআঃ] বলেন, স্বদেশে ফেরার সময় হলে হানী [রাঃআঃ] নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট উপস্থিত হয়ে বলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ! আমাকে বলুন, কোন জিনিস আমার জন্য জান্নাত অবধারিত করিবে। তিনি বলেনঃ তুমি সর্বদা উত্তম কথা বলবে এবং আহার্য দান করিবে।
-[আবু দাউদ, তিরমিজী, ইবনি হিব্বান, হাকিম] অলসতা ও গান সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩৫৪. অনুচ্ছেদঃ নাবী [সাঃআঃ]-এর পছন্দনীয় নাম “হাসান”।
৮১৯. আবু হাদরাদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
নাবী [সাঃআঃ] বললেনঃ আমাদের এই উটগুলোকে কে চরাতে নিয়ে যাবে বা [চারণভূমিতে] পৌঁছিয়ে দিবে? এক ব্যক্তি বললো, আমি। তিনি জিজ্ঞেস করেনঃ তোমার নাম কি? সে বললো, অমুক। তিনি বলেনঃ তুমি বসো। অতঃপর আর এক ব্যক্তি উঠে দাঁড়ালে তিনি বলেনঃ তোমার নাম কি? সে বললো, অমুক। তিনি বলেনঃ তুমিও বসো। অতঃপর আরেক ব্যক্তি দাঁড়ালে তিনি বলেনঃ তোমার নাম কি? সে বললো, নাজিয়া [মুক্তিপ্রাপ্ত]। তিনি বলেনঃ তুমিই তার যোগ্য। তুমি তা [চরাতে] নিয়ে যাও।
[হাকিম] অলসতা ও গান সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
৩৫৫. অনুচ্ছেদঃ তাড়াহুড়া করে হাঁটা।
৮২০. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
নাবী [সাঃআঃ] দ্রুত গতিতে এসে উপস্থিত হলেন। আমরা তখন বসা অবস্থায় ছিলাম। আমাদের দিকে তাহাঁর দ্রুত আসায় আমরা শংকিত হলাম। তিনি আমাদের কাছে পৌঁছে সালাম দিলেন, অতঃপর বলেনঃ আমি তোমাদেরকে লাইলাতুল কদর সম্পর্কে অবহিত করার জন্য তোমাদের দিকে দ্রুতপদে এসেছি, কিন্তু তোমাদের কাছে পৌঁছতে পৌঁছতে তা ভুলে গিয়েছি। অতএব তোমরা তা রমযানের শেষ দশকে খোঁজ করো।
[আহমাদ] অলসতা ও গান বাজনা সম্পর্কে হাদিস এর তাহকিকঃ নির্ণীত নয়
Leave a Reply