সন্তানের প্রতি বাবা মায়ের কর্তব্য এবং মমতা

সন্তানের প্রতি বাবা মায়ের কর্তব্য ( সন্তানের প্রতি মমতা )

সন্তানের প্রতি বাবা মায়ের কর্তব্য , এই অধ্যায়ে মোট = ২৪ টি হাদীস (৭৬ – ৯৯) << আদাবুল মুফরাদ হাদীস কিতাবের মুল সুচিপত্র দেখুন

অধ্যায় – ৩ সন্তানের প্রতি মমতা

৪১. অনুচ্ছেদঃ যে ব্যক্তি দুইটি বা একটি কন্যা সন্তান পোষে।
৪২. অনুচ্ছেদঃ যে ব্যক্তি তিন বোনকে লালন-পালন করলো।
৪৩. অনুচ্ছেদঃ যে ব্যক্তি নিজের তালাকপ্রাপ্তা [বা বিধ বাযযার] কন্যার প্রতিপালন করে তার ফযীলাত।
৪৪. অনুচ্ছেদঃ যে ব্যক্তি কন্যা সন্তানদের মৃত্যু কামনা অপছন্দ করে।
৪৫. অনুচ্ছেদঃ মানুষ সন্তানের কারণে কৃপণ ও কাপুরুষ হয়।
৪৬. অনুচ্ছেদঃ শিশুকে কাঁধে উঠানো।
৪৭. অনুচ্ছেদঃ সন্তান হলো নয়ন প্রীতিকর।
৪৮. অনুচ্ছেদঃ যে ব্যক্তি তার সঙ্গীর ধন ও সন্তান বৃদ্ধির দোয়া করে।
৫০. অনুচ্ছেদঃ শিশুদের চুমা দেয়া
৫১. অনুচ্ছেদঃ সন্তানের সাথে পিতার সদাচরণ এবং তাকে ভদ্র আচরণ শিখানো।
৫২. অনুচ্ছেদঃ নিজ সন্তানের সাথে পিতার সদাচার।
৫৩. অনুচ্ছেদঃ যে দয়া করে না, সে দয়া প্রাপ্ত হয় না।
৫৪. অনুচ্ছেদঃ আল্লাহর রহমাত শত ভাগে বিভক্ত।

৪১. অনুচ্ছেদঃ যে ব্যক্তি দুইটি বা একটি কন্যা সন্তান পোষে।

৭৬. উকবা ইবনি আমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছিঃ যার তিনটি কন্যাসন্তান আছে এবং সে তাহাদের ব্যাপারে ধৈর্য ধারণ করে এবং তাহাদেরকে যথাসাধ্য উত্তম পোশাকাদি দেয়, তারা তার জন্য দোযখ থেকে রক্ষাকারী প্রতিবন্ধক হইবে।

[আবু দাউদ, ইবনি মাজাহ]। সন্তানের প্রতি বাবা মায়ের কর্তব্য হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৭৭. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

নাবী [সাঃআঃ] বলেন, যে মুসলমানের দুইটি কন্যা সন্তান আছে এবং সে তাহাদেরকে উত্তম সাহচর্য দান করে তারা তাকে বেহেশতে দাখিল করিবে

[ইবনি মাজাহ, হাকিম]। সন্তানের প্রতি বাবা মায়ের কর্তব্য হাদিসের তাহকিকঃ হাসান লিগাইরিহি

৭৮. জাবের ইবনি আবদুল্লাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যার তিনটি কন্যা সন্তান আছে এবং সে তাহাদেরকে আশ্রয় দিয়ে তাহাদের ব্যয়ভার বহন করে এবং তাহাদের সাথে দয়ার্দ্র ব্যবহার করে, তার জন্য বেহেশত অবধারিত হয়ে যায়। লোকজনের মধ্য থেকে একজন বললো, ইয়া রসূলাল্লাহ! কারো যদি দুটি কন্যা সন্তান থাকে? তিনি বলেনঃ দুইটি কন্যা সন্তান হলেও

[আবু দাউদ, তাবারানি, বাযযার]। সন্তানের প্রতি বাবা মায়ের কর্তব্য হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

৪২. অনুচ্ছেদঃ যে ব্যক্তি তিন বোনকে লালন-পালন করলো।

৭৯. আবু সাঈদ খুদরী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন ; যে ব্যক্তির তিনটি কন্যা সন্তান বা তিনটি বোন আছে এবং সে তাহাদের সাথে মমতাপূর্ণ ব্যবহার করে, সে বেহেশতে প্রবেশ করিবে

[দারিমি, তিরমিজী, আবু দাউদ, হিব্বান]। সন্তানের প্রতি বাবা মায়ের কর্তব্য হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

৪৩. অনুচ্ছেদঃ যে ব্যক্তি নিজের তালাকপ্রাপ্তা [বা বিধ বাযযার] কন্যার প্রতিপালন করে তার ফযীলাত।

৮০. মূসা ইবনি উলায়্যি [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত

নাবী [সাঃআঃ] সুরাকা ইবনি জুশুম [রাঃআঃ]-কে বলেনঃ আমি কি তোমাকে শ্রেষ্ঠতম বা অতীব শ্রেষ্ঠ দান-খয়রাত সম্পর্কে অবহিত করবো না? তিনি বলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ! অবশ্যই। তিনি বলেনঃ তোমার নিকট ফিরে আসা তোমার [স্বামী পরিত্যক্ত] কন্যার ব্যয়ভার বহন করা, তুমি ছাড়া যার জন্য উপার্জনকারী আর কেউ নাই

[ইবনি মাজাহ, আবু দাউদ, নাসায়ী]। সন্তানের প্রতি বাবা মায়ের কর্তব্য হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৮১. মিকদাম ইবনি মাদীকারিব [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

তিনি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছেনঃ তুমি নিজেকে যা খাওয়াও তা তোমার জন্য সদাকা। তোমার সন্তানকে তুমি যা খাওয়াও তাও তোমার জন্য সদাকা, তোমার স্ত্রীকে তুমি যা খাওয়াও তাও তোমার জন্য সদকা এবং তোমার খাদেমকে যা খাওয়াও তাও তোমার জন্য সদাকা

[আবু দাউদ]। সন্তানের প্রতি বাবা মায়ের কর্তব্য হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৪৪. অনুচ্ছেদঃ যে ব্যক্তি কন্যা সন্তানদের মৃত্যু কামনা অপছন্দ করে।

৮২. ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

এক ব্যক্তি তার সাথে থাকতো। তার কয়েকটি কন্যা সন্তান ছিল। সে তাহাদের মৃত্যু কামনা করলো। ইবনি উমার [রাঃআঃ] ক্রুদ্ধ হয়ে বলেন, তুমি কি তাহাদের রিজিক দাও?

সন্তানের প্রতি বাবা মায়ের কর্তব্য হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৪৫. অনুচ্ছেদঃ মানুষ সন্তানের কারণে কৃপণ ও কাপুরুষ হয়।

৮৩. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

একদিন আবু বাকর [রাঃআঃ] বলিলেন, আল্লাহর শপথ পৃথিবীর বুকে উমারের চেয়ে অধিক প্রিয় আমার কাছে আর কেউ নাই। তিনি চলে যাবার পর পুনরায় ফিরে এসে বলেন, হে বৎস! আমি কিভাবে শপথ করেছি? আমি তাকে তা বললাম। তিনি বলেন, [উমার] আমার নিকট অধিক প্রিয়। আর সন্তান তো অন্তরের সাথে লেগে থাকে

[তারীখ ইবনি আসাকির]। সন্তানের প্রতি বাবা মায়ের কর্তব্য হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস৮৪

ইবনি আবু নুম [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত

আমি ইবনি উমার [রাঃআঃ]-এর নিকট উপস্থিত ছিলাম। তখন এক ব্যক্তি তাকে মশার রক্ত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে। তিনি বলেন, তুমি কোথাকার লোক? সে বললো, ইরাকের। তিনি বলেন, দেখো তাকে! সে আমাকে মশার রক্ত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে। অথচ এরা নাবী [সাঃআঃ]-এর নাতিকে হত্যা করেছে। আমি নাবী [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছিঃ এরা দুজন পৃথিবীতে আমার দু’টি ফুল

[তিরমিজী, আবু দাউদ, হাকিম]। সন্তানের প্রতি বাবা মায়ের কর্তব্য হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৪৬. অনুচ্ছেদঃ শিশুকে কাঁধে উঠানো।

৮৫. বারাআ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

আমি নাবী [সাঃআঃ]-কে দেখেছি যে, হাসান তাহাঁর কাঁধের উপর আসীন অবস্থায় তিনি বলছেনঃ হে আল্লাহ! আমি একে ভালোবাসি। অতএব তুমিও একে ভালোবাস

[বোখারী, মুসলিম, তিরমিজী, নাসায়ী]। ন্তানের প্রতি বাবা মায়ের কর্তব্য হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৪৭. অনুচ্ছেদঃ সন্তান হলো নয়ন প্রীতিকর।

৮৬. জুবায়ের ইবনি নুফায়ের [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত

একদিন আমরা মিকদাদ ইবনুল আসওয়াদ [রাঃআঃ]-র নিকট বসলাম। এক ব্যক্তি তাকে অতিক্রম করিতে করিতে বললো, ধন্য এই চক্ষুদ্বয়, যা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে দর্শন করেছে। আল্লাহর শপথ! আমরা কামনা করতাম আপনি যা দেখেছেন যদি আমরাও তা দেখতাম এবং আপনি যেখানে উপস্থিত ছিলেন, আমরাও যদি তথায় উপস্থিত থাকতাম। এতে মিকদাদ [রাঃআঃ] অসন্তুষ্ট হলেন। তাতে আমি অবাক হলাম যে, সে তো ভালো কথাই বলেছে। অতঃপর তিনি তার মুখোমুখি হয়ে বলেন, লোকটিকে এমন স্থানে উপস্থিতির আকাঙ্ক্ষা করিতে কিসে উদ্বুদ্ধ করলো, যেখান থেকে আল্লাহ তাকে অনুপস্থিত রেখেছেন? কি জানি যদি সে সেখানে উপস্থিত থাকতো তবে সে কি করতো। আল্লাহর শপথ বহু লোক রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে দেখেছে কিন্তু আল্লাহ তাহাদেরকে অধঃমুখে জাহান্নামে নিক্ষেপ করিয়াছেন। কারণ তারা তাহাঁর আহবানে সাড়া দেয়নি এবং তাহাঁকে বিশ্বাসও করেনি। তোমরা কি মহামহিম আল্লাহর প্রশংসা করিবে না যে, তিনি তোমাদের যখন সৃষ্টি করিয়াছেন তখন তোমরা তোমাদের প্রতিপালক ছাড়া আর কাউকে চেনো না। তোমাদের নাবী [সাঃআঃ] যা নিয়ে এসেছেন তাকে তোমরা সত্য বলে মেনে নিয়েছো। আল্লাহর শপথ! নাবী [সাঃআঃ] আবির্ভূত হন কঠিন প্রতিকূল পরিস্থিতিতে, এরূপ কঠিন পরিস্থিতিতে আর কোন নাবী আসেননি। নাবী আসার পূর্বেকার সেই জাহিলিয়াতের দিনগুলিতে তারা প্রতিমা পূজার চেয়ে উত্তম কোন ধর্ম আছে বলে মনে করতো না। এই পরিস্থিতিতে তিনি ফুরকানসহ আবির্ভূত হন। তিনি তাহাঁর দ্বারা সত্য ও মিথ্যার মধ্যে পার্থক্য করেন, পার্থক্য সূচিত করেন পিতা ও তার পুত্রের মধ্যে। শেষে অবস্থা এই দাঁড়ায় যে, কোন ব্যক্তি তার পিতা বা পুত্র বা ভাইকে কাফের অবস্থায় দেখতো, অপরদিকে ঈমান আনার জন্য তার অন্তরের তালা আল্লাহ খুলে দিতেন, তখন সে ভাবতো, এই অবস্থায় তার আপনজন মারা গেলে নিশ্চয় সে দোযখে যাবে। এতে কারো চোখ জুড়াতো না। এই প্রসঙ্গে মহামহিম আল্লাহ বলেন, “এবং যারা বলে, আমাদের প্রভু! আমাদের স্ত্রীদের ও আমাদের সন্তানদের দ্বারা আমাদেরকে চোখের শীতলতা দান করো” [২৫ : ৭৪

] [আবু দাউদ]। হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৪৮. অনুচ্ছেদঃ যে ব্যক্তি তার সঙ্গীর ধন ও সন্তান বৃদ্ধির দোয়া করে।

৮৭. আনাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

একদিন আমি নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট গেলাম। আমি, আমার মা ও খালা উম্মু হারাম [রাঃআঃ] ছাড়া আর কেউ ছিলেন না। তখন নাবী [সাঃআঃ] আমাদের নিকট এসে বলেনঃ আমি কি তোমাদের সাথে নামায পড়বো না? তখন কোন নামাযের ওয়াক্ত ছিলো না। লোকজনের মধ্যে একজন বললো, আনাসকে কোথায় দাঁড় করানো হয়েছিলো? রাবী বলেন, ডান দিকে। তিনি আমাদের নিয়ে নামায পড়লেন, অতঃপর আমাদের তথা ঘরের সকলের জন্য দোয়া করিলেন দুনিয়া ও আখেরাতের সার্বিক কল্যাণের জন্য। আমার মা বলিলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ! আপনার এই ক্ষুদে খাদেম, তার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করুন। অতএব তিনি আমার সার্বিক কল্যাণের জন্য দোয়া করিলেন। তার দোয়ার শেষ ছিলঃ হে আল্লাহ! “তাকে অধিক ধন ও সন্তান দান করুন এবং তাকে বরকত দান করুন”

[বোখারী, মুসলিম, তিরমিজী]। সন্তানের প্রতি বাবা মায়ের কর্তব্য হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস৪৯. অনুচ্ছেদঃ মমতাময়ী মা।

৮৮. আনাস ইবনি মালেক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

এক মহিলা আয়েশা [রাঃআঃ]-এর কাছে এলে তিনি তাকে তিনটি খেজুর দেন। সে তার ছেলে দু’টিকে একটি করে খেজুর দেয় এবং নিজের জন্য একটি রেখে দেয়। তারা খেজুর দু’টি খেয়ে তাহাদের মায়ের দিকে তাকালো এবং অবশিষ্ট খেজুরটি পেতে চাইলো। সে খেজুরটি দুই টুকরা করে প্রত্যেককে অর্ধেক অর্ধেক দিলো। নাবী [সাঃআঃ] ঘরে আসলে আয়েশা [রাঃআঃ] তাকে বিষয়টি অবহিত করেন। তিনি বলেনঃ এতে তোমার বিস্মিত হওয়ার কি আছে। সে তার ছেলে দুইটির প্রতি দয়াপরবশ হওয়ার কারণে আল্লাহ তার প্রতি দয়াপরবশ হয়েছেন

[বোখারী, মুসলিম, তিরমিজী, ইবনি মাজাহ]। সন্তানের প্রতি বাবা মায়ের কর্তব্য হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৫০. অনুচ্ছেদঃ শিশুদের চুমা দেয়া

৮৯. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

এক বেদুইন নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট এসে বললো, আপনারা কি শিশুদের চুমা দেন? আমরা শিশুদের চুমা দেই না। নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ আল্লাহ যদি তোমার অন্তর থেকে দয়ামায়া তুলে নেন, তবে তোমার জন্য আমার কি করার আছে?

[বোখারী, মুসলিম, ইবনি মাজাহ] সন্তানের প্রতি বাবা মায়ের কর্তব্য হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৯০. আবু হুরাইরা [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আলী [রাহিমাহুল্লাহ]-এর পুত্র হাসানকে চুমা দিলেন। তখন আকরা ইবনি হাবিস আত-তামীমী তাহাঁর নিকট বসা ছিলেন। আকরা বলেন, আমার দশটি সন্তান আছে, কিন্তু আমি তাহাদের কাউকে চুমা দেইনি। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তার দিকে তাকালেন, অতঃপর বললেনঃ যে ব্যক্তি দয়া করে না সে দয়া পায় না

[বোখারী, মুসলিম]। সন্তানের প্রতি বাবা মায়ের কর্তব্য হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৫১. অনুচ্ছেদঃ সন্তানের সাথে পিতার সদাচরণ এবং তাকে ভদ্র আচরণ শিখানো।

৯১. নুমাইর ইবনি আওস [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত

প্রবীণ সাহাবীগণ বলিতেন, সততা ও যোগ্যতা আল্লাহর দান এবং শিষ্টাচার পিতৃপুরুষের দান।

হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৯২. নোমান ইবনি বশীর [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত

তার পিতা তাকে বহন করে বাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট গেলেন এবং বলিলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ! আমি আপনাকে সাক্ষী রাখছি যে, আমি নোমানকে এই এই জিনিস দান করেছি। তিনি বলেনঃ তোমার সব সন্তানকে কি দান করেছো? তিনি বলেন, না। তিনি বলেনঃ তাহলে আমি ভিন্ন অন্যকে সাক্ষী রাখো। অতঃপর তিনি বলেনঃ তুমি কি কামনা করো না যে, তোমার সকল সন্তান তোমার সাথে সমানভাবে সদ্ব্যবহার করুক? তিনি বলেন, হাঁ। তিনি বলেনঃ তাহলে এরূপ করো না

[বোখারী, মুসলিম, আবু দাউদ, তিরমিজী, নাসায়ী, ইবনি মাজাহ]। ঈমাম বোখারী [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন, মহানাবী [সাঃআঃ]-এর বক্তব্যে বশীর [রাঃআঃ]-কে অপর কোন ব্যক্তিকে সাক্ষী রাখার অনুমতি ব্যক্ত করা হয়নি। সন্তানের প্রতি বাবা মায়ের কর্তব্য হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৫২. অনুচ্ছেদঃ নিজ সন্তানের সাথে পিতার সদাচার।

৯৩. ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

আল্লাহ তাহাদের [সাহাবীদের] নাম রেখেছেন আবরার [সদাচারী]। কেননা তারা তাহাদের পিতা ও সন্তানদের সাথে সদাচার করিয়াছেন। তোমার উপর তোমার পিতার যেমন অধিকার আছে তদ্রুপ তোমার সন্তানের উপর তোমার অধিকার রহিয়াছে

[তাবারানি]। হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৫৩. অনুচ্ছেদঃ যে দয়া করে না, সে দয়া প্রাপ্ত হয় না।

৯৪. আবু সাঈদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ যে দয়া করে না সে দয়া প্রাপ্ত হয় না।

[তিরমিজী]। সন্তানের প্রতি বাবা মায়ের কর্তব্য হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৯৫. জারীর ইবনি আবদুল্লাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে লোক মানুষের প্রতি দয়া করে নাসায়ী, আল্লাহ তার প্রতি দয়ার্দ্র হন না

[বোখারী, মুসলিম, তিরমিজী]। হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৯৬. জারীর ইবনি আবদুল্লাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি মানুষের প্রতি দয়া করে নাসায়ী, আল্লাহ তার প্রতি দয়ার্দ্র হন না

[পূর্বোক্ত বরাত]। সন্তানের প্রতি বাবা মায়ের কর্তব্য হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৯৭. আয়েশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

একদল বেদুইন নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট উপস্থিত হলো। তাহাদের মধ্যকার এক ব্যক্তি বললো, ইয়া রসূলাল্লাহ। আপনারা কি শিশুদের চুমা দেন? আল্লাহর শপথ! আমরা তাহাদেরকে চুমা দেই না। নাবী [সাঃআঃ] বলেনঃ মহামহিম আল্লাহ যদি তোমার অন্তর থেকে দয়ামায়া তুলে নেন, তাহলে আমি আর কি করিতে পারি

[বোখারী, মুসলিম, ইবনি মাজাহ]! হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

৯৮. আবু উসমান [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত

উমার [রাঃআঃ] এক ব্যক্তিকে কর্মে নিয়োগ করিলেন। সেই কর্মচারী বললো, আমার এতোগুলো সন্তান আছে, আমি তাহাদের একটিকেও চুমা দেইনি। উমার [রাঃআঃ] মন্তব্য করিলেন অথবা বলিলেন, আল্লাহ তাহাঁর বান্দাদের মধ্য থেকে সদাচারীদেরকেই দয়া করেন।

সন্তানের প্রতি বাবা মায়ের কর্তব্য হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

৫৪. অনুচ্ছেদঃ আল্লাহর রহমাত শত ভাগে বিভক্ত।

৯৯. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত

আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছিঃ মহামহিম আল্লাহ দয়াকে শত ভাগে বিভক্ত করিয়াছেন। তিনি [এর] নিরানব্বই ভাগ নিজের কাছে রেখেছেন এবং মাত্র এক ভাগ পৃথিবীতে অবতীর্ণ করিয়াছেন। এই এক ভাগের কারণে সৃষ্টিকুলের একে অপরের প্রতি দয়াপরবশ হয়, এমনকি ঘোড়া তার পায়ের খুর এই আশংকায় তার শাবকের উপর থেকে তুলে নেয় যাতে সে ব্যথা না পায়

[বোখারী, মুসলিম, ইবনি মাজাহ, দারিমি]। সন্তানের প্রতি বাবা মায়ের কর্তব্য হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস