উভয় ইদের নামাজ পড়ার নিয়ম
ইদের নামাজ পড়ার নিয়ম । নাসায়ী শরীফ এর হাদীস >> সুনানে নাসাই শরিফের মুল সুচিপত্র দেখুন
পর্বঃ ১৯, উভয় ইদের নামাজ, হাদীস (১৫৫৬ – ১৫৯৭)
১.পরিচ্ছেদঃ উভয় ইদের নামাজ
২.পরিচ্ছেদঃ চাঁদ দেখার পরবর্তী দিন ইদের নামাজের জন্য বের হওয়া
৩.পরিচ্ছেদঃ কিশোরী এবং যুবতী নারীদের উভয় ইদের নামাজে বের হওয়া
৪.পরিচ্ছেদঃ মানুষের নামাজের স্থান থেকে ঋতুমতিদের দূরত্বে অবস্থান করা
৫.পরিচ্ছেদঃ উভয় ইদের সাজ-সজ্জা
৬.পরিচ্ছেদঃ উভয় ইদের সাজ-সজ্জা
৭.পরিচ্ছেদঃ উভয় ইদের নামাজের জন্য আযান পরিত্যাগ করা
৮.পরিচ্ছেদঃ ইদের দিনে খুৎবা পাঠ করা
৯.পরিচ্ছেদঃ উভয় ইদের খুৎবার পূর্বে নামাজ আদায় করা
১০.পরিচ্ছেদঃ লাঠি সম্মুখে রেখে উভয় ইদের নামাজ আদায় করা
১১.পরিচ্ছেদঃ উভয় ইদের নামাজে রাকআতের সংখ্যা
১২.পরিচ্ছেদঃ উভয় ইদের নামাজে সূরা “ক্বাফ” এবং “ইকতারাবাত” পাঠ করা
১৩.পরিচ্ছেদঃ উভয় ইদের নামাজে সূরা “سَبِّحِ اسْمَ رَبِّكَ الْأَعْلَى” এবং “هَلْ أَتَاكَ حَدِيثُ الْغَاشِيَةِ” তিলাওয়াত করা
১৪.পরিচ্ছেদঃ উভয় ঈদে নামাজের পর খুৎবা দেওয়া
১৫.পরিচ্ছেদঃ উভয় ইদের নামাজের খুৎবা শুনার জন্য বসা ও না বসার ইখতিয়ার
১৬.পরিচ্ছেদঃ উভয় ইদের খুৎবা দেওয়ার জন্য সাজ-সজ্জা করা
১৭.পরিচ্ছেদঃ উটের পৃষ্ঠে বসা থাকা অবস্থায় খুৎবা দেওয়া
১৮.পরিচ্ছেদঃ ইমামের দাঁড়িয়ে খুৎবা দেওয়া
১৯.পরিচ্ছেদঃ ইমামের খুৎবা দেওয়াকালীন কোন মানুষের উপর ভর করে দাঁড়ানো
২০.পরিচ্ছেদঃ খুৎবা পাঠকালীন ইমামের মানুষের দিকে মুখ করে দাঁড়ানো
২১.পরিচ্ছেদঃ খুৎবা দেওয়ার সময় নীরব থাকা
২২.পরিচ্ছেদঃ খুৎবা কিরুপ?
২৩.পরিচ্ছেদঃ ইমামের খুৎবায় সদকার প্রতি উদ্বুদ্ধ কর
২৪.পরিচ্ছেদঃ পরিমিতরুপে খুৎবা পাঠ করা
২৫.পরিচ্ছেদঃ খুৎবার মাঝখানে বসা এবং তাতে নীরব থাকা
২৬.পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় খুৎবায় আয়াত পাঠ করা এবং তাতে যিক্র করা
২৭.পরিচ্ছেদঃ ইমামের খুৎবা থেকে অবসর হওয়ার পূর্বে মিম্বার থেকে অবতরণ করা
২৮.পরিচ্ছেদঃ ইমামের খুৎবা থেকে অবসর হওয়ার পর মহিলাদের নসীহত করা এবং তাহাদের সদকার জন্য উদ্বুদ্ধ করা
২৯.পরিচ্ছেদঃ উভয় ইদের নামাজের পূর্বে এবং পরে নামাজ আদায় করা
৩০.পরিচ্ছেদঃ ইদের দিন ইমামের যবেহ করা এবং যবেহ করা পশুর সংখ্যা
৩১.পরিচ্ছেদঃ দুই ঈদ একত্রিত হয়ে যাওয়া এবং দুই ঈদ পাওয়া
৩২.পরিচ্ছেদঃ যে ব্যক্তি ইদের নামাজে উপস্থিত থেকেছে তার জন্য জুমুআর নামাজে উপস্থিত না থাকার অনুমতি
৩৩.পরিচ্ছেদঃ ইদের দিনে দফ্ বাজানো
৩৪.পরিচ্ছেদঃ ইদের দিনে ইমামের সম্মুখে খেলাধূলা করা
৩৫.পরিচ্ছেদঃ ইদের দিনে মসজিদে খেলাধূলা করা এবং মহিলাদের সেদিকে দৃষ্টি দেওয়া
৩৬.পরিচ্ছেদঃ ইদের দিন কবিতা শ্রবণ এবং দফ বাজানোর অনুমতি
১.পরিচ্ছেদঃ উভয় ইদের নামাজ
১৫৫৬. আনাস ইবনি মালিক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, জাহিলিয়াত যুগের অধিবাসীদের জন্য প্রত্যেক বৎসরে দুটি দিন ছিল, যাতে তারা খেল-তামাশা করত। যখন নাবী [সাঃআঃ] মদীনায় আগমন করিলেন তখন তিনি বলিলেন, তোমাদের জন্য দুটি দিন ছিল, যাতে তোমরা খেল-তামাশা করিতে। এখন আল্লাহ তাআলা তোমাদের জন্য উক্ত দুদিনের পরিবর্তে তার চেয়েও অধিকতর উত্তম দুটি দিন নিদির্ষ্ট করে দিয়েছেন, ঈদুল ফিত্রের দিন এবং কুরবানীর দিন।
ইদের নামাজ পড়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২.পরিচ্ছেদঃ চাঁদ দেখার পরবর্তী দিন ইদের নামাজের জন্য বের হওয়া
১৫৫৭. আমর ইবনি আলী [রহঃ] হইতে বর্ণীত
একদল লোক রমযানের ত্রিংশতম দিনে চাঁদ দেখে নাবী [সাঃআঃ]-এর কাছে আসল। তিনি তাহাদেরকে পরবর্তী দিনে, দিন উজ্জ্বল হওয়ার পর ইফতার করার এবং ঈদগাহে গমনের নির্দেশ দিলেন।
ইদের নামাজ পড়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩.পরিচ্ছেদঃ কিশোরী এবং যুবতী নারীদের উভয় ইদের নামাজে বের হওয়া
১৫৫৮. হাফসা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, উম্মে আতিয়্যা [রাঃআঃ] আমার মাতা-পিতা আপনার উপর কুরবান হোক, বলা ব্যতীত রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে স্মরণ করিতেন না। একবার আমি তাকে বললাম, তুমি কি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে এরূপ এরূপ বলিতে শুনেছ ? সে বলিল, হ্যাঁ; তাহাঁর উপর আমার মাতা-পিতা কুরবান হোক। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছিলেন, কিশোরী, যুবতী এবং ঋতুমতিগণ যেন বের হয়। এবং তারা যেন ঈদগাহ এবং মুসলমানদের দোয়ায় উপস্থিত থাকে আর ঋতুমতিগণ যেন নামাজের স্থান থেকে দূরত্বে অবস্থান করে।
ইদের নামাজ পড়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪.পরিচ্ছেদঃ মানুষের নামাজের স্থান থেকে ঋতুমতিদের দূরত্বে অবস্থান করা
১৫৫৯. মুহাম্মাদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, আমি উম্মে আতিয়্যা [রাঃআঃ]-এর সাথে সাক্ষাত করে তাঁকে বললাম, আপনি কি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] থেকে শুনেছেন? তিনি যখনই রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে স্মরণ করিতেন, বলিতেন, “আমার মাতা-পিতা আপনার উপর কুরবান হোক। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, তোমরা কিশোরী এবং যুবতীদেরকে রওয়ানা করে দেবে যাতে তারা ইদের নামাজে এবং মুসলমানদের দোয়ায় উপস্থিত থাকতে পারে। আর ঋতুমতিগণ যেন মানুষের নামাজের স্থান থেকে দূরত্বে অবস্থান করে।
ইদের নামাজ পড়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৫.পরিচ্ছেদঃ উভয় ইদের সাজ-সজ্জা
১৫৬০. সালিমের পিতা [আব্দুল্লাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, উমর ইবনি খাত্তাব [রাঃআঃ] একবার বাজারে একজোড়া মোটা রেশমী পোষাক পেলেন। তিনি তা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সমীপে নিয়ে আসলেন এবং বলিলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনি এটা ক্রয় করে নিন, যাতে ঈদে এবং কোন প্রতিনিধি দল আসলে আপনি তা পরিধান করিতে পারেন। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, রেশমী পোষাক তাহাদেরই পোষাক যাদের ভাগ্যে পরকালে রেশমের কোন অংশ নেই অথবা [তিনি বলেছেন] রেশমী পোষাক তারাই পরিধান করিবে, যাদের ভাগ্যে পরকালে রেশমের কোন অংশ নেই। উমর [রাঃআঃ] আল্লাহ তাআলার যতদিন ইচ্ছা ছিল অপেক্ষা করিলেন। তারপর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] একদিন উমর [রাঃআঃ]-এর কাছে একটি রেশমী জুব্বা পাঠালেন। তিনি তা গ্রহণ করিলেন, এবং রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর কাছে এসে বলিলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আপনি বলেছিলেন, রেশমী পোষাক তাহাদেরই পোষাক যাদের ভাগ্যে পরকালে রেশমের কোন অংশ নেই। তা-ই আবার আমার কাছে পাঠালেন? রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, তুমি তা বিক্রি করে দাও এবং বিক্রয় লব্ধ অর্থ দ্বারা স্বীয় প্রয়োজন মিটাও।
ইদের নামাজ পড়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৬.পরিচ্ছেদঃ ইদের দিন ইমামের পূর্বে নামাজ আদায় করা
১৫৬১. ছালাবা ইবনি যাহ্দাম [রহঃ] হইতে বর্ণীত
আলী [রাঃআঃ] আবু মাসঊদ [রাঃআঃ]-কে জনসাধারণের প্রতিনিধি নির্বাচিত করে ইদের দিন বের হয়ে গেলেন এবং বলিলেন, হে লোক সকল! ইমামের পূর্বে নামাজ আদায় করা সুন্নাতে নববীতে আওতাভুক্ত নয়।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৭.পরিচ্ছেদঃ উভয় ইদের নামাজের জন্য আযান পরিত্যাগ করা
১৫৬২. জাবির [রহঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদের নিয়ে ইদের দিনে নামাজ আদায় করিলেন খুৎবার পূর্বে আযান এবং ইকামাত ব্যতীত।
ইদের নামাজ পড়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৮.পরিচ্ছেদঃ ইদের দিনে খুৎবা পাঠ করা
১৫৬৩. বারা ইবনি আযিব [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] কুরবানীর দিন খুৎবা দিলেন। তিনি বলিলেন, আজকের এ দিন আমরা যে কাজ দ্বারা প্রথমে শুরু করব তা হল আমরা নামাজ আদায় করব তারপর কুরবানী করব। অতএব যারা অনুরূপ করিবে তারা আমাদের সুন্নাত অনুযায়ী করিবে। আর যারা নামাজের পূর্বে কুরবানী করিবে তা শুধু গোস্তই হইবে, যা তাহাদের পরিবারবর্গের জন্য পূর্বেই যবেহ করে ফেলল [কুরবানী হইবে না]। আবু বুরদাহ ইবনি দীনার [রাঃআঃ] নামাজের পূর্বেই যবেহ করে ফেললেন এবং বলিলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আমার কাছে একটি এক বছর বয়সের ছাগলের বাচ্চা আছে যা বাহ্যিক দৃষ্টিতে দুবছর বয়সের বাচ্চা অপেক্ষাও বেশী হৃষ্টপুষ্ট। তিনি বলিলেন, তুমি তাই কুরবানী করে দাও। কিন্তু তোমার পরে আর কারো জন্য তা যথেষ্ট হইবে না।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৯.পরিচ্ছেদঃ উভয় ইদের খুৎবার পূর্বে নামাজ আদায় করা
১৫৬৪. ইবনি উমর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
রাসূলাল্লাহ্ [সাঃআঃ] আবু বকর এবং উমর [রাঃআঃ] উভয় ইদের নামাজ খুৎবার পূর্বে আদায় করিতেন।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১০.পরিচ্ছেদঃ লাঠি সম্মুখে রেখে উভয় ইদের নামাজ আদায় করা
১৫৬৫. ইবনি উমর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ঈদুল ফিত্র এবং ঈদুল আযহার দিনে একটি লাঠি বের করিতেন। তা মাটিতে পুঁতে দিতেন এবং তা সম্মুখে রেখে নামাজ আদায় করিতেন।
ইদের নামাজ পড়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১১.পরিচ্ছেদঃ উভয় ইদের নামাজে রাকআতের সংখ্যা
১৫৬৬. উমর ইবনি খাত্তাব [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, ঈদুল আযহার নামাজ দুরাকআত, ঈদুল ফিত্রের নামাজ দুরাকআত, মুসাফিরের নামাজ দুরাকআত এবং জুমুআর নামাজ দুরাকআতই পরিপূর্ণ; অসম্পূর্ণ নয়, নাবী [সাঃআঃ]-এর ভাষ্য মতে।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১২.পরিচ্ছেদঃ উভয় ইদের নামাজে সূরা “ক্বাফ” এবং “ইকতারাবাত” পাঠ করা
১৫৬৭. উবায়দুল্লাহ্ ইবনি আব্দুল্লাহ্ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, একবার উমর [রাঃআঃ] ইদের দিনে বের হলেন এবং আবু ওয়াকিদ লায়ছী [রাঃআঃ]-কে জিজ্ঞাসা করিলেন যে, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আজকের দিনে কি কোন সূরা নামাজে তিলাওয়াত করিতেন? তিনি বলিলেন, সুরা “ক্বাফ” এবং “ইকতারাবাত”।
ইদের নামাজ পড়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৩.পরিচ্ছেদঃ উভয় ইদের নামাজে সূরা “سَبِّحِ اسْمَ رَبِّكَ الْأَعْلَى” এবং “هَلْ أَتَاكَ حَدِيثُ الْغَاشِيَةِ” তিলাওয়াত করা
১৫৬৮. নুমান ইবনি বাশীর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] উভয় ঈদ এবং জুমুআর নামাজে “সাব্বি হিসমা রাব্বিকাল আলা” এবং “হাল আতাকা হাদীছুল গাশিয়া” পাঠ করিতেন। কখনো কখনো ঈদ এবং জুমুআ একই দিনে হয়ে যেত। তখনও তিনি উপরোক্ত সূরা দুটি তিলাওয়াত করিতেন।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৪.পরিচ্ছেদঃ উভয় ঈদে নামাজের পর খুৎবা দেওয়া
১৫৬৯. আতা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, আমি ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছিঃ “আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আমি এক ইদের নামাজে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সাথে উপস্থিত ছিলাম। তিনি খুৎবার পূর্বেই নামাজ শুরু করে দিলেন, অতঃপর খুৎবা দিলেন।”
ইদের নামাজ পড়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৫৭০. বারা ইবনি আযিব [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কুরবানীর দিন নামাজ আদায়ের পরে আমাদের খুৎবা দিয়েছিলেন।
হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৫.পরিচ্ছেদঃ উভয় ইদের নামাজের খুৎবা শুনার জন্য বসা ও না বসার ইখতিয়ার
১৫৭১. আব্দুল্লাহ ইবনি সায়িব [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
নাবী [সাঃআঃ] ইদের নামাজ আদায় শেষে বলিলেন, যে চলে যাওয়া ভাল মনে করে সে যেন চলে যায়, আর যে খুৎবা শ্রবণের জন্য অপেক্ষা করা ভাল মনে করে সে যেন অপেক্ষা করে।
ইদের নামাজ পড়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৬.পরিচ্ছেদঃ উভয় ইদের খুৎবা দেওয়ার জন্য সাজ-সজ্জা করা
১৫৭২. আবু রিমছা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে একবার দেখলাম যে, তিনি খুৎবা দিচ্ছেন সবুজ চাদর পরিহিত অবস্থায়।
ইদের নামাজ পড়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৭.পরিচ্ছেদঃ উটের পৃষ্ঠে বসা থাকা অবস্থায় খুৎবা দেওয়া
১৫৭৩. আবু কাহেল আহমাসী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, আমি নাবী [সাঃআঃ]-কে উষ্ট্রির পিঠে বসা অবস্থায় খুৎবা দিতে দেখেছি আর এক হাবশী {বিলাল [রাঃআঃ]} উষ্ট্রীর লাগাম ধরে রেখেছিলেন।
ইদের নামাজ পড়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
১৮.পরিচ্ছেদঃ ইমামের দাঁড়িয়ে খুৎবা দেওয়া
১৫৭৪. সিমাক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, আমি জাবির [রাঃআঃ] জিজ্ঞাসা করলাম যে, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কি দাঁড়িয়ে খুৎবা দিতেন? তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] দাঁড়িয়ে খুৎবা দিতেন। অতঃপর ক্ষনিকের তরে বসতেন, পুনরায় দাঁড়িয়ে যেতেন।
ইদের নামাজ পড়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৯.পরিচ্ছেদঃ ইমামের খুৎবা দেওয়াকালীন কোন মানুষের উপর ভর করে দাঁড়ানো
১৫৭৫. জাবির [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, এক ইদের দিন আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সাথে নামাজে উপস্থিত ছিলাম। তিনি আযান ইকামাত ব্যতীতই খুৎবা দেওয়ার পূর্বে নামাজ শুরু করে দিলেন। যখন নামাজ শেষ করিলেন, বিলাল [রাঃআঃ]-এর উপর ভর করে দাঁড়িয়ে গেলেন, আল্লাহর প্রশংসা এবং গুণ বর্ণনা করিলেন, লোকদের ওয়াজ করিলেন, তাহাদের নসীহত করিলেন এবং আল্লাহর ইবাদতের প্রতি উদ্বুদ্ধ করিলেন। অতঃপর চেহারা ফিরিয়ে নিলেন এবং নারীদের দিকে গেলেন। তাহাঁর সাথে বিলাল [রাঃআঃ]-ও ছিলেন। তিনি তাহাদেরকে আদেশ দিলেন আল্লাহকে ভয় করিতে, ওয়াজ করিলেন, নসীহত করিলেন, আল্লাহর প্রশংসা ও গুণ বর্ণনা করিলেন এবং তাহাদেরকে আল্লাহর ইবাদতের প্রতি উদ্বুদ্ধ করিলেন এবং বলিলেন, তোমরা দান-খয়রাত করিবে, যেহেতু তোমাদের অধিকাংশই জাহান্নামের ইন্ধন। তখন নিম্ন শ্রেণীর একজন মহিলা বলে উঠল যার গণ্ডদ্বয়ে হালকা কাল দাগ ছিল, কেন ইয়া রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]? তিনি বলিলেন, তোমরা অত্যধিক গীবত কর এবং স্বামীর নাফরমানী কর। তখন তারা নিজেদের হার, কানের বালী এবং আংটি টেনে টেনে খুলে ফেলতে শুরু করিল, যা বিলালের [রা] কাপড়ে ছুঁড়ে মারতে শুরু করিল সদকা স্বরূপ।
ইদের নামাজ পড়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২০.পরিচ্ছেদঃ খুৎবা পাঠকালীন ইমামের মানুষের দিকে মুখ করে দাঁড়ানো
১৫৭৬. আবু সাঈদ খুদরী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ঈদুল ফিত্র এবং ঈদুল আযহার দিনে ঈদগাহের দিকে বের হইতেন এবং মানুষদের নিয়ে নামাজ আদায় করিতেন। যখন দ্বিতীয় রাকআতে বসতেন এবং সালাম ফিরাতেন। তখন দাঁড়িয়ে যেতেন ও মানুষের দিকে মুখ করে নিতেন আর লোকজন বসা থাকত। যদি তাহাঁর কোথাও কোন সৈন্য বাহিনী প্রেরনের প্রয়োজন দেখা দিত, তিনি তা মানুষের সামনে প্রকাশ করিতেন। অন্যথায় তাহাদেরকে দান খয়রাতের আদেশ দিতেন। তিনি তিনবার বলিতেন, তোমরা দান খয়রাত কর। অধিকাংশ দান খয়রাতকারিণী হত মহিলাগণ।
ইদের নামাজ পড়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২১.পরিচ্ছেদঃ খুৎবা দেওয়ার সময় নীরব থাকা
১৫৭৭. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, তুমি যদি ইমামের খুৎবা দেয়াকালীন তোমরা সাথীকে বল, “নীরব থাক” তা হলে তুমি একটি অনর্থক কাজ করিবে।
ইদের নামাজ পড়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২২.পরিচ্ছেদঃ খুৎবা কিরুপ?
১৫৭৮. জাবির ইবনি আব্দুল্লাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর খুৎবায় বলিতেন। তিনি আল্লাহ তায়ালার যথাযোগ্য প্রশংসা এবং গুণ বর্ণনা করিতেন। অতঃপর বলিতেন [আরবি] [অতঃপর বলিতেনঃ [আমি প্রেরিত হয়েছি এমন অবস্থায় যে, আমি ও কিয়ামত এ দুটি আঙ্গুল তর্জনী ও মধ্যমার মত।] অর্থাৎ আমার পরে প্রেরিত রুপে আর কোন নাবী আসবে না। এইভাবে আমি কিয়ামতের নিকটবর্তী নাবীরূপে প্রেরিত হয়েছি। আর যখন তিনি কিয়ামতের উল্লেখ করিতেন, তাহাঁর গণ্ডদ্বয়ের উপরিভাগ লাল হয়ে যেত এবং আওয়াজ উচ্চ হয়ে যেত, তাহাঁর রাগ বেড়ে যেত যেন তিনি কোন সৈন্য বাহিনীকে সতর্ক করে দিচ্ছেন। তিনি বলিতেন, শত্রুবাহিনী তোমাদের উপর সকালে অথবা সন্ধ্যায় আক্রমণ করিতে পারে। তারপর বলিতেন, যে ব্যক্তি কোন সম্পত্তি ছেড়ে মারা যাবে তা তার পরিবারবর্গের জন্য আর যে ব্যক্তি কোন ঋণ অথবা নিঃসম্বল সন্তান-সন্ততি রেখে মারা যাবে তার সমুদয় দায়-দায়িত্ব আমার উপর বর্তাবে, আর আমিই মুমিনদের জন্য উত্তম অভিভাবক।
ইদের নামাজ পড়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২৩.পরিচ্ছেদঃ ইমামের খুৎবায় সদকার প্রতি উদ্বুদ্ধ কর
১৫৭৯. আবু সাঈদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ইদের দিনে বের হইতেন এবং দুরাকআত নামাজ আদায় করিতেন। অতঃপর খুৎবা দিতেন আর সাদকার আদেশ করিতেন, অধিকাংশ সাদকাকারিণী হত মহিলা। যদি তাহাঁর কোন প্রয়োজন হত অথবা কোথাও কোন সৈন্যবাহিনী প্রেরনের প্রয়োজন দেখা দিত, তাহলে তিনি কথা বলিতেন, অন্যথায় ফিরে যেতেন।
ইদের নামাজ পড়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৫৮০. হাসান [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] একবার বসরায় খুৎবা দিচ্ছিলেন, তিনি বলিলেন, তোমরা স্বীয় সাওমের যাকাত আদায় কর। তখন লোকেরা একে অন্যের দিকে তাকাতে লাগল। তিনি বলিলেন, এখানে মদীনার অধিবাসী কে কে আছ? তোমরা তোমাদের ভাইদের কাছে যাও এবং তাহাদের দীনী ইলম শিক্ষা দাও। যেহেতু তারা জানে না যে, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ছোট, বড়, আযাদ, গোলাম, পুরুষ এবং মহিলা সবার উপর অর্ধ সা গম বা এক সা খেজুর এবং যব ফরয করিয়াছেন।
ইদের নামাজ পড়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ মারফু
১৫৮১. বারা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কুরবানীর দিনে আমাদের সামনে নামাজের পরে খুৎবা দিলেন। তারপর বলিলেন, যে আমাদের নামাজের ন্যায় নামাজ আদায় করিবে এবং আমাদের কুরবানীর ন্যায় কুরবানী দেবে সেই সঠিকভাবে কুরবানী দেবে। আর যে ব্যক্তি নামাজের পূর্বে কুরবানী করিবে সেটা বকরীর গোশত হইবে। আবু বুরদাহ ইবনি নিয়ার [রাঃআঃ] বলিলেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ! আমি নামাজের জন্য বের হওয়ার পূর্বেই কুরবানী করে ফেলেছি। আমি জানতাম যে, আজ পানাহারের দিন। তাই আমি তাড়াতাড়ি যবেহ করে ফেলেছি এবং আমি নিজে খেয়ে নিলাম এবং আমার পরিবারবর্গ এবং প্রতিবেশীকেও খাওয়ায়ে দিলাম। রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, সেটাতো বকরীর গোশত। আবু বুরদাহ [রাঃআঃ] বলিলেন, আমার কাছে একটি এক বছর বয়সের ভেড়া আছে যাতে দুটি বকরীর গোশত অপেক্ষাও বেশী গোশত হইবে। তা কি আমার পক্ষ থেকে যথেষ্ট হইবে? তিনি বলিলেন, হ্যাঁ; কিন্তু তোমার পরে আর কারো পক্ষ থেকে যথেষ্ট হইবে না।
ইদের নামাজ পড়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২৪.পরিচ্ছেদঃ পরিমিতরুপে খুৎবা পাঠ করা
১৫৮২. জাবির ইবনি সামুরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, আমি নাবী [সাঃআঃ]-এর সাথে নামাজ আদায় করতাম, তাহাঁর নামাজ ছিল পরিমিত, তাহাঁর খুৎবা ছিল পরিমিত।
ইদের নামাজ পড়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
২৫.পরিচ্ছেদঃ খুৎবার মাঝখানে বসা এবং তাতে নীরব থাকা
১৫৮৩. জাবির ইবনি সামুরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে দেখলাম যে, তিনি দাঁড়িয়ে খুৎবা দিচ্ছেন। অতঃপর ক্ষণিকের তরে নীরব হয়ে বসলেন। পুনরায় দাঁড়ালেন ও দ্বিতীয় খুৎবা দিলেন। অতএব, যে ব্যক্তি তোমাকে সংবাদ দেয় যে, নাবী [সাঃআঃ] বসে খুৎবা দিয়েছেন তুমি তাকে সত্যবাদী মনে করিবে না।
ইদের নামাজ পড়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
২৬.পরিচ্ছেদঃ দ্বিতীয় খুৎবায় আয়াত পাঠ করা এবং তাতে যিক্র করা
১৫৮৪. জাবির ইবনি সামুরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] দাঁড়িয়ে খুৎবা দিতেন, অতঃপর বসতেন, আবার দাঁড়াতেন এবং কিছু আয়াত পাঠ করিতেন এবং আল্লাহ্র যিকর করিতেন। আর তাহাঁর খুৎবা ছিল পরিমিত এবং তাহাঁর নামাজও ছিল পরিমিত।
ইদের নামাজ পড়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস
২৭.পরিচ্ছেদঃ ইমামের খুৎবা থেকে অবসর হওয়ার পূর্বে মিম্বার থেকে অবতরণ করা
১৫৮৫. বুরাইদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] মিম্বারের উপর দাঁড়িয়ে খুৎবা দিচ্ছিলেন, ইত্যবসরে হাসান ও হুসায়ন [রাঃআঃ] আসলেন, তাঁদের পরিধানে দুটি লাল জামা ছিল। তাঁরা চলছিলেন এবং জামায় আটকে আটকে হুমড়ি খেয়ে পড়ে যাচ্ছিলেন। তিনি নীচে নেমে আসলেন এবং উভয়কে উঠিয়ে নিলেন আর বলিলেন, আল্লাহ্ তায়ালা সত্যই বলেছেন, “নিশ্চয় তোমাদের সম্পদ এবং তোমাদের সন্তান-সন্ততি পরীক্ষা স্বরূপ; আমি এদের দেখলাম যে, এরা চলছিল এবং হুমড়ি খেয়ে পড়ে যাচ্ছিল জামায় আটকে আটকে। তখন আমি ধৈর্যধারণ করিতে পারলাম না। অবশেষে নীচে নেমে আসলাম এবং তাহাদের উঠিয়ে নিলাম।
ইদের নামাজ পড়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২৮.পরিচ্ছেদঃ ইমামের খুৎবা থেকে অবসর হওয়ার পর মহিলাদের নসীহত করা এবং তাহাদের সদকার জন্য উদ্বুদ্ধ করা
১৫৮৬. আব্দুর রহমান ইবনি আবিস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, আমি ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] থেকে শুনিয়াছি যে, তাঁকে এক ব্যক্তি বলিল, আপনি কি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বের হওয়ার সময় তাহাঁর সাথে উপস্থিত ছিলেন? তিনি বলিলেন, হ্যাঁ; যদি তাহাঁর কাছে আমার কোন মর্যাদা না থাকত, আমি তাহাঁর কাছে উপস্থিত থাকতে পারতাম না। অর্থাৎ তাহাঁর অল্প বয়স্ক হওয়ার দরুন। তিনি কাছীর ইবনি সাল্ত-এর বাড়ীর নিকটস্থ চিহ্নিত স্থানে আসলেন এবং নামাজ আদায় করিলেন ও খুৎবা দিলেন। অতঃপর মহিলাদের কাছে এসে তাহাদের ওয়াজ নসীহত করিলেন এবং সাদকার আদেশ দিলেন। তখন মহিলারা তাহাদের হস্তসমূহ স্বীয় অলংকারাদির দিকে নিয়ে গেল তারা তা বিলাল [রাঃআঃ] – এর কাপড়ে ছুঁড়ে মারতে লাগল।
ইদের নামাজ পড়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২৯.পরিচ্ছেদঃ উভয় ইদের নামাজের পূর্বে এবং পরে নামাজ আদায় করা
১৫৮৭. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
যে, নাবী [সাঃআঃ] ইদের দিনে বের হলেন এবং দুরাকআত নামাজ আদায় করিলেন। তার পূর্বে কোন নামাজ আদায় করেন নি এবং তার পরেও [ঈদগাহে] কোন নামাজ আদায় করেন নি।
ইদের নামাজ পড়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩০.পরিচ্ছেদঃ ইদের দিন ইমামের যবেহ করা এবং যবেহ করা পশুর সংখ্যা
১৫৮৮. আনাস ইবনি মালিক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, একবার রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কুরবানীর দিনে আমাদের সামনে খুৎবা দিলেন এবং দুটি সুন্দর [সাদা] ভেড়ার কাছে গিয়ে সেগুলোকে যবেহ করিলেন।
ইদের নামাজ পড়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৫৮৯. নাফি [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
আব্দুল্লাহ ইবনি উমর [রাঃআঃ] তাকে সংবাদ দিয়েছেন যে, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ঈদগাহে যবেহ অথবা নহর করিতেন।
ইদের নামাজ পড়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩১.পরিচ্ছেদঃ দুই ঈদ একত্রিত হয়ে যাওয়া এবং দুই ঈদ পাওয়া
১৫৯০. নুমান ইবনি বশীর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] জুমুআ এবং ইদের নামাজে “সাব্বিহিসমা রাব্বিকাল আলা” এবং “হাল আতাকা হাদীছুল গাশিয়াহ” পড়তেন আর যখন জুমুআ এবং ঈদ একই দিনে হয়ে যেত তখন জুমুআ এবং ইদের নামাজ উক্ত সূরা দুটি দ্বারা আদায় করিতেন।
ইদের নামাজ পড়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩২.পরিচ্ছেদঃ যে ব্যক্তি ইদের নামাজে উপস্থিত থেকেছে তার জন্য জুমুআর নামাজে উপস্থিত না থাকার অনুমতি
১৫৯১ইয়াস ইবনি আবু রমলা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, আমি মুআবিয়া [রাঃআঃ]-কে যায়দ ইবনি আরকাম [রাঃআঃ]-কে প্রশ্ন করিতে শুনিয়াছি, “আপনি কি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর সাথে ঈদ এবং জুমুআর নামাজে শরীক ছিলেন?” তিনি বলিলেন, হ্যাঁ; তিনি ইদের নামাজ দিনের শুরুতে আদায় করে ফেলেছিলেন। অতঃপর [গ্রামের অধিবাসীদেরকে] জুমুআর নামাজে উপস্থিত না হওয়ার অনুমতি দিয়েছিলেন।
ইদের নামাজ পড়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৫৯২. ওয়াহাব ইবনি কায়সান [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
ইবনি যুবায়র [রাঃআঃ]-এর যুগে একবার ঈদ এবং জুমুআ একত্রিত হয়ে গিয়েছিল। তিনি সূর্য উপরে না উঠা পর্যন্ত ইদের নামাজ আদায় করার জন্য বের হইতে বিলম্ব করিলেন। অতঃপর বের হলেন এবং খুৎবা দিলেন এবং খুৎবাকে দীর্ঘ করিলেন, তারপর নীচে অবতরণ করিলেন এবং নামাজ আদায় করিলেন। আর সেদিন লোকদের নিয়ে জুমুআর নামাজ আদায় করিলেন না। এ ঘটনা ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ]-এর সমীপে উল্লেখ করা হলে তিনি বলিলেন, তিনি সুন্নাত মতই করিয়াছেন।
ইদের নামাজ পড়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩৩.পরিচ্ছেদঃ ইদের দিনে দফ্ বাজানো
১৫৯৩. আয়িশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] একদিন তাহাঁর কাছে গেলেন, তখন তাহাঁর সামনে দুইটি বালিকা দফ্ বাজাচ্ছিল। আবু বকর [রাঃআঃ] তাহাদের নিষেধ করিলেন। নাবী [সাঃআঃ] বলিলেন, তাহাদের নিষেধ করো না। কেননা প্রত্যেক জাতির জন্যই একটি আনন্দ স্ফূর্তির দিন থাকে।
ইদের নামাজ পড়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩৪.পরিচ্ছেদঃ ইদের দিনে ইমামের সম্মুখে খেলাধূলা করা
১৫৯৪. আয়িশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, কয়েকজন হাবশী এসে ইদের দিনে নাবী [সাঃআঃ]-এর সম্মুখে খেলাধূলা করিতে লাগল। তিনি আমাকে ডাকলেন। আমি নাবী [সাঃআঃ]-এর কাঁধের দিয়ে তাহাদের দিকে দেখিতে লাগলাম। আমি তাহাদের দিকে নিজে ফিরে না যাওয়া পর্যন্ত দেখিতেই ছিলাম।
ইদের নামাজ পড়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩৫.পরিচ্ছেদঃ ইদের দিনে মসজিদে খেলাধূলা করা এবং মহিলাদের সেদিকে দৃষ্টি দেওয়া
১৫৯৫. আয়িশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে দেখেছি তিনি আমাকে তাহাঁর চাদর দ্বারা ঢেকে রাখতেন যখন আমি হাবশীদের [নিগ্রো] দিকে নিজে ক্লান্ত না হওয়া পর্যন্ত দেখিতে থাকতাম। তারা মসজিদে খেলাধূলা করত। এখন তোমরা, রসূলুল্লাহ[সাঃআঃ]-এর কাছে খেলাধূলায় আগ্রহী অল্প বয়স্কা বালিকাদের কতটুকু মর্যাদা ছিল তা আন্দাজ করিতে পারো।
ইদের নামাজ পড়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৫৯৬. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন, উমর [রাঃআঃ] মসজিদে প্রবেশ করিলেন, তখন হাবশীরা [নিগ্রো] মসজিদে খেলাধূলা করছিল। তিনি তাহাদের ধমকালে রাসুলুল্লাহ্ [সাঃআঃ] বলিলেন, হে উমর [রাঃআঃ]! তাহাদের ছেড়ে দাও, কেননা তারা আরফিদার বংশধর [হাবশী]। [আরফিদা তাহাদের উর্ধ্বতন পুরুষের নাম]।
ইদের নামাজ পড়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩৬.পরিচ্ছেদঃ ইদের দিন কবিতা শ্রবণ এবং দফ বাজানোর অনুমতি
১৫৯৭. উরওয়া [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
আয়িশাহ [রাঃআঃ] তাঁকে বর্ণনা করিয়াছেন যে, আবু বকর সিদ্দীক [রাঃআঃ] একবার তাহাঁর কাছে গেলেন, তখন তাহাঁর কাছে দুটি বালিকা দফ্ বাজাচ্ছিল এবং উচ্চস্বরে কবিতা আবৃত্তি করছিল। তখন রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কাপড় মুড়ি দিয়ে ছিলেন। আর একবার বর্ণনা করিয়াছেন, কাপড় আবৃত ছিলেন। তিনি আপন চেহারা থেকে কাপড় সরিয়ে নিয়ে বলিলেন, হে আবু বকর [রাঃআঃ]! তাহাদের ছেড়ে দাও, আর তা ছিল ঈদুল আযহার দিন। আর রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ছিলেন সে দিন মদীনায়।
ইদের নামাজ পড়ার নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
Leave a Reply