নাসাঈ হাদীস কিবলা
নাসাঈ হাদীস – কিবলা সুতরা ও বিভিন্ন রকমের কাপরে নামাজ >> সুনানে নাসাই শরিফের মুল সুচিপত্র দেখুন
পর্বঃ ৯, কিব্লা, হাদীস (৭৪২ – ৭৭৬)
১.পরিচ্ছেদঃ কিবলার দিকে মুখ করা
২.পরিচ্ছেদঃ যে অবস্থায় কিবলা ছাড়া অন্যদিকে মুখ করা বৈধ
৩.পরিচ্ছেদঃ ইজতিহাদের পর ভুলের প্রকাশ
৪.পরিচ্ছেদঃ মুসল্লীর সুতরা ব্যবহার করা
৫.পরিচ্ছেদঃ সুতরার নিকটবর্তী হওয়ার আদেশ
৬.পরিচ্ছেদঃ এর পরিমাণ
৭.পরিচ্ছেদঃ নামাজ আদায়কারীর সামনে সুতরা না থাকলে, যাতে নামাজ নষ্ট হয় আর যাতে নষ্ট হয় না
৮.পরিচ্ছেদঃ মুসল্লী ও তার সুতরার মাঝখান দিয়ে যাওয়া সম্পর্কে কঠোর বাণী
৯.পরিচ্ছেদঃ এর অনুমতি
১০.পরিচ্ছেদঃ নিদ্রিত ব্যক্তির পেছনে নামাজ আদায় করার অনুমতি
১১.পরিচ্ছেদঃ কবরের দিকে নামাজ আদায় করার নিষেধাজ্ঞা
১২.পরিচ্ছেদঃ ছবিওয়ালা কাপড়ের দিকে নামাজ আদায় করা
১৩.পরিচ্ছেদঃ মুসল্লি এবং ইমামের মধ্যে আড়াল
১৪.পরিচ্ছেদঃ এক বস্ত্রে নামাজ
১৫.পরিচ্ছেদঃ এক জামায় নামাজ আদায় করা
১৬.পরিচ্ছেদঃ ইযার পরিধান করে নামাজ আদায় করা
১৭.পরিচ্ছেদঃ কোন পুরুষের এমন কাপড়ে নামাজ আদায় করা যার কিছু অংশ রয়েছে তার স্ত্রীর উপর
১৮.পরিচ্ছেদঃ পুরুষের এমন এক বস্ত্রে নামাজ আদায় করা যার কোন অংশ স্কন্ধের উপর না থাকে
১৯.পরিচ্ছেদঃ বস্ত্রে নামাজ
২০.পরিচ্ছেদঃ নকশা করা কাপড়ে নামাজ
২১.পরিচ্ছেদঃ লাল কাপড়ে নামাজ
২২.পরিচ্ছেদঃ চাদরে নামাজ
২৩.পরিচ্ছেদঃ চামড়ার পরিধান করে নামাজ আদায় করা
২৪.পরিচ্ছেদঃ জুতা পরিধান করে নামাজ আদায় করা
১.পরিচ্ছেদঃ কিবলার দিকে মুখ করা
৭৪২. বারা ইবনি আযিব [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন ঃরসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] মদীনায় আগমনের পর ষোল মাস বায়তুল মুকাদ্দাসের দিকে মুখ করে নামাজ আদায় করেন। তারপর তাঁকে কাবার দিকে মুখ করার নির্দেশ দেয়া হলো। এরপর এক ব্যক্তি, যিনি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর সঙ্গে নামাজ আদায় করেছিলেন, আনসার সম্প্রদায়ের একদল লোকের নিকট গিয়ে বলিলেন যে, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে কাবা অভিমুখী করা হয়েছে। ফলে তাঁরা কাবার দিকে মুখ ফিরিয়ে নিলেন।
নাসাঈ হাদীস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২.পরিচ্ছেদঃ যে অবস্থায় কিবলা ছাড়া অন্যদিকে মুখ করা বৈধ
৭৪৩. ইবনি উমর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন ঃরসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] সফরে তাহাঁর সওয়ারীর উপর সওয়ারী যেদিকেই মুখ করত সেদিকেই মুখ করে নামাজ আদায় করিতেন। মালিক [রহঃ] বলেন ঃআবদুল্লাহ ইবনি দীনার বলেছেন, ইবনি উমরও এরূপই করিতেন।
নাসাঈ হাদীস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৭৪৪. আবদুল্লাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন ঃরসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সওয়ারী তাঁকে নিয়ে যেদিকে মুখ করতো সেদিকে ফিরেই তিনি নামাজ আদায় করিতেন। তারপর বিতর আদায় করিতেন কিন্তু তিনি এর ওপর ফরয নামাজ আদায় করিতেন না।
নাসাঈ হাদীস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৩.পরিচ্ছেদঃ ইজতিহাদের পর ভুলের প্রকাশ
৭৪৫. ইবনি উমর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন ঃলোক কুবায় ফজরের নামাজে ছিলেন। তখন এক ব্যক্তি এসে বলিল, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর উপর এই রাতে কুরআন অবতীর্ণ হয়েছে। তাতে তাঁকে কিবলার দিকে মুখ করার আদেশ করা হয়েছে। অতএব আপনারা কিবলার দিকে মুখ করুন। তখন তাহাদের চেহারা ছিল সিরিয়ার দিকে, পরে তারা কাবার দিকে ঘুরে গেলেন।
নাসাঈ হাদীস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৪.পরিচ্ছেদঃ মুসল্লীর সুতরা ব্যবহার করা
৭৪৬. আয়িশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন ঃতবুক যুদ্ধে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে নামাজ আদায়কারীর সুতরা সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলিলেন ঃতা হাওদার পেছনের হেলান-কাঠের ন্যায়। {১}
{১} খোলা জায়গায় নামাজ আদায় করার সময় মুসল্লীর সামনে কিছু সুতরা [আড়াল] থাকা উচিত। সুতরা অন্তত এক হাত লম্বা ও আঙ্গুল পরিমিত মোটা হলেই চলে। জামাআতের নামাজে ইমামের সুতরা মুসল্লীদের জন্য যথেষ্ট।
নাসাঈ হাদীস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৭৪৭. ইবনি উমর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
নাবী [সাঃআঃ] থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন ঃতিনি বর্শার ফলা পুঁতে তার দিকে মুখ করে নামাজ আদায় করিতেন।
নাসাঈ হাদীস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৫.পরিচ্ছেদঃ সুতরার নিকটবর্তী হওয়ার আদেশ
৭৪৮. সাহল ইবনি আবু হাসমা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন ঃরসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন ঃযখন তোমাদের কেউ সুতরার দিকে মুখ করে নামাজ আদায় করে, তখন সে যেন তার নিকটবর্তী হয়। তাহলে শয়তান তার নামাজ ভঙ্গ করিতে পারবে না।
নাসাঈ হাদীস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৬.পরিচ্ছেদঃ এর পরিমাণ
৭৪৯. আবদুল্লাহ ইবনি উমর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] উসামা ইবনি যায়দ, বিলাল ও উসমান ইবনি তালহা হাজাবী কাবায় প্রবেশ করিলেন এবং দরজা বন্ধ করে দিলেন। আবদুল্লাহ ইবনি উমর বলেন ঃবিলাল যখন বের হলেন তখন আমি তাঁকে জিজ্ঞাসা করলাম, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] সেখানে কি করিলেন? তিনি বলিলেন, তিনি একটি খুঁটি তাহাঁর বামদিকে, দুটি খুঁটি তাহাঁর ডানদিকে রাখলেন আর তিনটি খুঁটি তাহাঁর পেছনে রাখলেন। আর বায়তুল্লাহ তৎকালে ছয়টি খুঁটির উপর ছিল, তারপর তিনি নামাজ আদায় করিলেন। তিনি তাহাঁর এবং দেয়ালের মধ্যস্থলে প্রায় তিন হাত ব্যবধান রাখলেন।
নাসাঈ হাদীস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৭.পরিচ্ছেদঃ নামাজ আদায়কারীর সামনে সুতরা না থাকলে, যাতে নামাজ নষ্ট হয় আর যাতে নষ্ট হয় না
৭৫০. আবু যর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন ঃরসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন ঃতোমাদের কেউ যখন নামাজ আদায় করার জন্য দাঁড়ায়, তখন সে নিজেকে আড়াল করে নেবে যদি তার সামনে হাওদার হেলান কাঠের মত কিছু থাকে। যদি তার সামনে হাওদার কাঠের মত কিছু না থাকে, তাহলে তার নামাজ নষ্ট করিবে নারী, গাধা এবং কাল কুকুর। আমি বললাম, লাল ও হলদে কুকুরের তুলনায় কালো কুকুরের অবস্থা কি ? তিনি বলিলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে প্রশ্ন করেছিলাম, যেমন তুমি আমাকে প্রশ্ন করেছ। তখন তিনি বলিলেন ঃকাল কুকুর শয়তান। {১}
{১} স্ত্রীলোক দৃষ্টি আকর্ষণকারিণী, গাধার স্বর কর্কশ এবং কুকুর ভীতির কারণ। এজন্য বলা হয়েছে যে, এগুলো নামাজ বিনষ্টকারী। নামাজ বিনষ্ট দ্বারা নামাজের একাগ্রতা নষ্ট হওয়া বুঝানো হয়েছে।নাসাঈ হাদীস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৭৫১. কাতাদা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন ঃআমি জাবির [রাঃআঃ]-কে জিজ্ঞাসা করলাম, কোন বস্তু নামাজ নষ্ট করে ? তিনি বলিলেন, ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] বলিতেন ঃঋতুমতী নারী, কুকুর। ইয়াহ্ইয়া বলেন ঃশুবা একে মরফূ করিয়াছেন [অর্থাৎ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] পর্যন্ত সনদের ধারা পৌঁছিয়েছেন]।
নাসাঈ হাদীস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৭৫২. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন ঃআমি এবং ফযল আমাদের এক গর্দভীর উপর সওয়ার হয়ে আসলাম, তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আরাফায় লোকদের নিয়ে নামাজ আদায় করছিলেন। তারপর তিনি কিছু বলিলেন, যার অর্থ হচ্ছে, আমরা কোন এক কাতারের মধ্যে ঢুকে পড়লাম এবং তা থেকে নামলাম এবং ওটাকে ঘাস খেতে ছেড়ে দিলাম। কিন্তু রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদের কিছুই বলিলেন না।
নাসাঈ হাদীস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৭৫৩. ফযল ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন ঃরসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদের এক বাগানে আব্বাস [রাঃআঃ]-এর সাথে সাক্ষাত করিলেন, সেখানে আমাদের ছোট কুকুর ছিল আর গর্দভী ঘাস খাচ্ছিল। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] সেখানে আসরের নামাজ আদায় করিলেন। তখন যে দুটি তাহাঁর সামনে ছিল, না এ দুটিকে ধমক দেওয়া হয়েছিল, না পেছনে সরানো হয়েছিল।
নাসাঈ হাদীস এর তাহকিকঃ দুর্বল মুনকার
৭৫৪. সুহায়ব [রহঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন ঃআমি ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ]-কে বর্ণনা করিতে শুনিয়াছি যে, তিনি এবং বনূ হাশিমের এক বালক রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সামনে দিয়ে গাধার উপর সওয়ার হয়ে গেলেন। তখন তিনি নামাজ আদায় করছিলেন। তখন তারা অবতরণ করে তাহাঁর সাথে নামাজ আদায় করিলেন। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] নামাজ সমাপ্ত না করিতেই বনূ আবদুল মুত্তালিবের দুটি বালিকা দৌড়ে আসল। তারা এসে তাহাঁর হাঁটুদ্বয় ধরল। তিনি তাহাদের উভয়কে পৃথক করে দিলেন। তখনও তিনি নামাজ শেষ করেন নি।
নাসাঈ হাদীস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৭৫৫. আয়িশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন ঃআমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সামনে ছিলাম আর তিনি নামাজ আদায় করছিলেন। আমি যখন উঠে যেতে চাইলাম, তখন আমি দাঁড়িয়ে তাহাঁর সম্মুখ দিয়ে যাওয়াটাকে খারাপ মনে করে আস্তে আস্তে [চাদরের নিচ থেকে] বের হয়ে গেলাম।
নাসাঈ হাদীস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৮.পরিচ্ছেদঃ মুসল্লী ও তার সুতরার মাঝখান দিয়ে যাওয়া সম্পর্কে কঠোর বাণী
৭৫৬. বুসর ইবনি সাঈদ [রহঃ] হইতে বর্ণীত
যে, যায়দ ইবনি খালিদ তাঁকে আবু জুহায়মের নিকট মুসল্লীর সামনে দিয়ে গমনকারী সম্বন্ধে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে তিনি কি বলিতে শুনেছেন তা জিজ্ঞাসা করার জন্য পাঠালেন। তখন আবু জুহায়ম [রাঃআঃ] বলিলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন। মুসল্লীর সামনে দিয়ে গমনকারী যদি জানত তার কি [ক্ষতি ও পাপ] হইবে, তাহলে মুসল্লীর সম্মুখ দিয়ে গমন করার চাইতে চল্লিশ [বছর] দাঁড়িয়ে থাকা সে উত্তম মনে করতো।
নাসাঈ হাদীস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৭৫৭. আবু সাঈদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, তোমাদের কেউ যখন নামাজ আদায় করিতে থাকে তাহলে সে যেন কাউকে তার সামনে দিয়ে যেতে না দেয়, যদি সে না মানে, তাহলে সে যেন শক্তি প্রয়োগ করে বাধা দেয়।
নাসাঈ হাদীস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৯.পরিচ্ছেদঃ এর অনুমতি
৭৫৮. কাছীর [রহঃ]-এর দাদা হইতে বর্ণীত
তিনি বলেছেন ঃআমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে দেখলাম তিনি সাতবার কাবার তাওয়াফ করিলেন। তারপর মাকামে ইবরাহীমের নিকট বায়তুল্লাহর বরাবর দু রাকাআত নামাজ আদায় করিলেন। তখন তাহাঁর ও তাওয়াফকারীদের মধ্যে কেউ ছিল না।
নাসাঈ হাদীস এর তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
১০.পরিচ্ছেদঃ নিদ্রিত ব্যক্তির পেছনে নামাজ আদায় করার অনুমতি
৭৫৯. আয়িশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন ঃরসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] [তাহাজ্জুদের] নামাজ আদায় করিতেন, তখন আমি তাহাঁর ও কিবলার মধ্যস্থলে নিদ্রিত অবস্থায় তাহাঁর বিছানায় শুয়ে থাকতাম। যখন তিনি বিতরের নামাজ আদায় করিতে ইচ্ছা করিতেন, তখন আমাকে জাগিয়ে দিতেন এবং আমি বিতরের নামাজ আদায় করতাম।
নাসাঈ হাদীস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১১.পরিচ্ছেদঃ কবরের দিকে নামাজ আদায় করার নিষেধাজ্ঞা
৭৬০. আবু মারসাদ গানাবী [রহঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন ঃরসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃতোমরা কবরের দিকে মুখ করে নামাজ আদায় করিবে না এবং তার উপর উপবেশন করিবে না।
নাসাঈ হাদীস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১২.পরিচ্ছেদঃ ছবিওয়ালা কাপড়ের দিকে নামাজ আদায় করা
৭৬১. আয়িশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন ঃআমার ঘরে একখানা কাপড় ছিল যাতে ছবি ছিল। আমি তা ঘরের তাকের দিকে রাখলাম। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তার দিকে নামাজ আদায় করিতেন। তারপর তিনি বলেছিলেন ঃহে আয়িশাহ ! ওটা আমার সম্মুখ থেকে সরাও। আমি সরিয়ে ফেললাম এবং তা দ্বারা বালিশ বানালাম।
নাসাঈ হাদীস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৩.পরিচ্ছেদঃ মুসল্লি এবং ইমামের মধ্যে আড়াল
৭৬২. আয়িশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেনঃ রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর একখানা মাদুর ছিল। তিনি দিনের বেলা তা বিছাতেন এবং রাতের বেলায় তা দ্বারা কুঠুরির মতো বানাতেন এবং তার ভেতর নামাজ আদায় করিতেন। লোক তা জানতে পেরে তাহাঁর সঙ্গে নামাজে শরীক হইতেন, তখন তাহাঁর মধ্যে এবং তাহাদের মধ্যে থাকত ঐ মাদুর। তিনি বলিলেন, যতক্ষন সামর্থ্য হয়, খুশিমনে আমল করিতে থাক। তোমরা যতক্ষণ ক্লান্ত না হও ততক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহ তাআলাও তোমাদের থেকে অনুগ্রহের ধারা বন্ধ করেন না। আর আল্লাহর নিকট ঐ আমলই সবচেয়ে অধিক পছন্দনীয় যা স্থায়ীভাবে করা হয়। যদিও তা স্বল্প হয়। তারপর তিনি তাহাঁর এই নামাজের স্থান ত্যাগ করিলেন। আল্লাহ তাআলা তাঁকে তুলে নেয়ার পূর্ব পর্যন্ত তিনি আর সেখানে ফিরে আসেন নি। তিনি যখন কোন কাজ আরম্ভ করিতেন, তা সবসময় আদায় করিতেন।
নাসাঈ হাদীস এর তাহকিকঃ হাসান সহীহ
১৪.পরিচ্ছেদঃ এক বস্ত্রে নামাজ
৭৬৩. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
যে, এক প্রশ্নকারী রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে এক বস্ত্রে নামাজ আদায় করা সম্বন্ধে প্রশ্ন করলে তিনি বলিলেন ঃতোমাদের প্রত্যেকের কি দুখানা কাপড় রয়েছে ? {১}
{১} এতে বুঝা যায় যে, দুকাপড়ে অর্থাৎ তহবন্দ ও চাদর কিংবা তহবন্দ ও জামায় নামাজ আদায় উত্তম হলেও এক কাপড়েও তা জায়েয।নাসাঈ হাদীস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৭৬৪. উমর ইবনি আবু সালামা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে এক বস্ত্রে তার দুদিক তাহাঁর দুই কাধের উপর রেখে উম্মে সালামার ঘরে নামাজ আদায় করিতে দেখেছেন।
নাসাঈ হাদীস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৫.পরিচ্ছেদঃ এক জামায় নামাজ আদায় করা
৭৬৫
সালামা ইবনি আক্ওয়া [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন ঃআমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ ! আমি শিকার করিতে যাই তখন জামা ছাড়া আমার গায়ে আর কিছু থাকে না। আমি কি তাতেই নামাজ আদায় করব ? তিনি বলিলেন ঃতার গেরেবান বন্ধ করে নেবে কাঁটা দ্বারা হলেও। {২}
{২} গেরেবান জামার গলার বা বুকের দিকে উন্মুক্ত অংশ। গেরেবান বন্ধ করার উদ্দেশ্য এই যে, এতে ভেতরের দিকে সতর দেখা যাবে না।নাসাঈ হাদীস এর তাহকিকঃ হাসান হাদিস
১৬.পরিচ্ছেদঃ ইযার পরিধান করে নামাজ আদায় করা
৭৬৬. সাহল ইবনি সাদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন ঃকিছু লোক রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে শিশুদের মত ইযারে গিরা দিয়ে নামাজ আদায় করিতেন। মহিলাদের বলা হতো, পুরুষেরা সোজা হয়ে বসার পূর্বে তোমরা তোমাদের মাথা সিজদা থেকে ওঠাবে না।
নাসাঈ হাদীস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৭৬৭. আমর ইবনি সালামা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন ঃযখন আমার সম্প্রদায় রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট থেকে প্রত্যাবর্তন করিল, তখন তারা বলিল যে, তিনি বলেছেন ঃতোমাদের ঈমামতি করিবে সে-ই, যে তোমাদের মধ্যে কুরআন বেশি পড়তে পারে। তিনি আরো বলেন ঃতখন তারা আমাকে ডাকল এবং আমাকে রুকূ-সিজদা শিখিয়ে দিল। তারপর আমি তাহাদের নিয়ে নামাজ আদায় করতাম। তখন আমার গায়ে থাকত একখানা কাটা চাদর। তারা আমার পিতাকে বলতো, আপনি কি আমাদের থেকে আপনার ছেলের নিতম্ব ঢাকবেন না ?
নাসাঈ হাদীস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৭.পরিচ্ছেদঃ কোন পুরুষের এমন কাপড়ে নামাজ আদায় করা যার কিছু অংশ রয়েছে তার স্ত্রীর উপর
৭৬৮. আয়িশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন ঃরসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] রাতে নামাজ আদায় করিতেন তখন আমি তাহাঁর পাশে ঋতুমতি অবস্থায় থাকতাম। তখন আমার গায়ে একখানা চাদর থাকত যার কিয়দংশ থাকত রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর গায়ে।
নাসাঈ হাদীস এর তাহকিকঃ হাসান সহীহ
১৮.পরিচ্ছেদঃ পুরুষের এমন এক বস্ত্রে নামাজ আদায় করা যার কোন অংশ স্কন্ধের উপর না থাকে
৭৬৯. আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন ঃরসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন ঃতোমাদের কেউ যেন এমন এক কাপড়ে নামাজ আদায় না করে যার কিছু অংশ তার স্কন্ধে না থাকে।
নাসাঈ হাদীস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
১৯.পরিচ্ছেদঃ বস্ত্রে নামাজ
৭৭০. উকবা ইবনি আমির [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন ঃরসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে একটি রেশমী কাবা [আর-বী] হাদিয়া দেয়া হয়েছিল। তিনি তা পরিধান করে নামাজ আদায় করিলেন। তিনি নামাজ আদায় করে অতি তাড়াতাড়ি অপছন্দকারীর ন্যায় তা খুলে ফেললেন। তারপর তিনি বলিলেন ঃএটা মুত্তকীদের জন্য উপযুক্ত নয়। {১}
তিনি বলেন ঃরসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে একটি রেশমী কাবা [আর-বী] হাদিয়া দেয়া হয়েছিল। তিনি তা পরিধান করে নামাজ আদায় করিলেন। তিনি নামাজ আদায় করে অতি তাড়াতাড়ি অপছন্দকারীর ন্যায় তা খুলে ফেললেন। তারপর তিনি বলিলেন ঃএটা মুত্তকীদের জন্য উপযুক্ত নয়। {১}
নাসাঈ হাদীস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২০.পরিচ্ছেদঃ নকশা করা কাপড়ে নামাজ
৭৭১. আয়িশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] নকশা করা কাপড়ে নামাজ আদায় করিলেন। তারপর বলিলেন ঃএর নকশা আমাকে অন্যমনষ্ক করে দিয়েছে। এটা আবু জাহমের নিকট নিয়ে যাও এবং আমার জন্য নকশাবিহীন মোটা চাদর আন।
নাসাঈ হাদীস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২১.পরিচ্ছেদঃ লাল কাপড়ে নামাজ
৭৭২. আবু জুহায়ফা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] লাল ডোরাযুক্ত জুব্বা পরিধান করে বের হলেন এবং একটি তীর পুঁতে তার দিকে নামাজ আদায় করিলেন যার অপরদিক দিয়ে কুকুর, নারী এবং গাধা চলাচল করছিল।
নাসাঈ হাদীস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২২.পরিচ্ছেদঃ চাদরে নামাজ
৭৭৩. খিলাস ইবনি আমর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন ঃআমি আয়িশাহ [রাঃআঃ]-কে বলিতে শুনিয়াছি যে, আমি এবং আবুল কাসেম [রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]] একই চাদরে থাকতাম আর তখন আমি অধিক হায়েযগ্রস্তা ছিলাম, যদি আমা হইতে কিছু তাহাঁর গায়ে লাগত তাহলে তিনি তা ধুয়ে ফেলতেন, এর অতিরিক্ত ধুতেন না এবং তাতেই নামাজ আদায় করিতেন। তারপর আবার আমার সাথে অবস্থান করিতেন। যদি আমা হইতে কিছু তাহাঁর শরীরে লাগত, তিনি তা-ই ধুতেন, তাছাড়া আর কোন অংশ ধুতেন না।
নাসাঈ হাদীস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২৩.পরিচ্ছেদঃ চামড়ার পরিধান করে নামাজ আদায় করা
৭৭৪. হাম্মাম [রহঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেনঃআমি জারীর [রাঃআঃ]-কে দেখলাম যে, তিনি পেশাব করিলেন, তারপর পানি আনিয়ে উযূ করিলেন এবং মোজার উপর মসেহ করিলেন, পরে উঠে নামাজ আদায় করিলেন। এ ব্যাপারে তাঁকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলিলেন ঃআমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে এরূপ করিতে দেখেছি।
নাসাঈ হাদীস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
২৪.পরিচ্ছেদঃ জুতা পরিধান করে নামাজ আদায় করা
৭৭৫আবু সালামা সাঈদ ইবনি ইয়াযীদ বাসরী [রহঃ] হইতে বর্ণীত
তিনি বলেন ঃআমি আনাস ইবনি মালিক [রাঃআঃ]-কে জিজ্ঞাসা করলাম ঃরসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] জুতা পরিধান করে নামাজ আদায় করিতেন কি ? তিনি বলিলেন, হ্যাঁ।
নাসাঈ হাদীস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
৭৭৬আবদুল্লাহ্ ইবনি সায়িব [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] মক্কা বিজয়ের দিন নামাজ আদায় করিলেন। তিনি তাহাঁর জুতা তাহাঁর বাম দিকে রাখলেন।
নাসাঈ হাদীস এর তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
Leave a Reply