বেতের নামাজের নিয়ম । রাকাত সংখ্যা কিরাত ও দোয়া কুনুত

বেতের নামাজের নিয়ম

বেতের নামাজের নিয়ম । রাকাত সংখ্যা কিরাত ও দোয়া কুনুত , এই অধ্যায়ে মোট হাদীস ১৪০ টি (১৪১৬ – ১৫৫৫)>>আবুদ দাউদ শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন

এ বিষয়ে আরও পড়ুন >> মুয়াত্তা মালিক >> সহীহ বুখারী >> সহীহ মুসলিম >> ইবনে মাজাহ >> তিরমিজি >> নাসাঈ >> মিশকাত >> বুলুগুল মারাম হাদীস শরীফ হতে

অধ্যায়ঃ ৮, অনুচ্ছেদঃ ৩৩৬-৩৬৭=৩২টি, হাদীসঃ (১৪১৬-১৫৫৫)=১৪০টি

অনুচ্ছেদ-৩৩৬ বেতের নামাজ মুস্তাহাব
অনুচ্ছেদ-৩৩৭ যে ব্যক্তি বেতের নামাজ আদায় করেনি
অনুচ্ছেদ-৩৩৮ বেতের নামাজের রাকআত সংখ্যা
অনুচ্ছেদ-৩৩৯ বেতের নামাজের ক্বিরাআত
অনুচ্ছেদ-৩৪০ বেতের নামাজের দুআ কুনুত
অনুচ্ছেদ-৩৪১ বিতরের পরে দুআ পাঠ
অনুচ্ছেদ-৩৪২ ঘুমানোর পূর্বে বেতের নামাজ আদায় করা
অনুচ্ছেদ-৩৪৩ বেতের নামাজের ওয়াক্ত
অনুচ্ছেদ-৩৪৪ বেতের নামাজ দুইবার আদায় করিবে না
অনুচ্ছেদ-৩৪৫ অন্যান্য নামাজে কুনূত পাঠ সম্পর্কে
অনুচ্ছেদ-৩৪৬ নফল নামাজ ঘরে আদায়ের ফাযীলাত
অনুচ্ছেদ-৩৪৭ নামাজে দীর্ঘ ক্বিয়াম
অনুচ্ছেদ-৩৪৮ ক্বিয়ামুল লাইল করতে উৎসাহ প্রদান
অনুচ্ছেদ-৩৪৯ কুরআন তিলাওয়াতের সওয়াব
অনুচ্ছেদ-৩৫০ সূরাহ আ্ল-ফাতিহা
অনুচ্ছেদ-৩৫১ যিনি বলেন, সূরাহ ফাতিহা দীর্ঘ সূরাহসমূহের অন্তর্ভূক্ত
অনুচ্ছেদ-৩৫২ আয়াতুল কুরসী সম্পর্কে
অনুচ্ছেদ-৩৫৩ সূরাহ আস-সমাদ (আল-ইখলাস) সম্পর্কে
অনুচ্ছেদ-৩৫৪ সূরাহ আল-ফালাক্ব ও সূরাহ আন-নাস সম্পর্কে
অনুচ্ছেদ-৩৫৫ তারতীলের সাথে কুরআন তিলাওয়াত পছন্দনীয়
অনুচ্ছেদ-৩৫৬ কুরআন হিফয করার পর তা ভুলে যাওয়ার পরিণাম
অনুচ্ছেদ-৩৫৭ কুরআন সাত হরফে অবতীর্ণ হয়েছে

অনুচ্ছেদ-৩৩৬ বেতের নামাজ মুস্তাহাব

১৪১৬. আলী (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ হে কুরআনের ধারকগণ! তোমরা বেতের নামাজ আদায় করো। কেননা আল্লাহ বেজোড়, তাই তিনি বেজোড়কে ভালবাসেন।

বেতের নামাজের নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১৪১৭. আবদুল্লা (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

আবদুল্লা (রাঃআঃ) হইতে মারফুভাবে বর্ণিত। পূর্বোক্ত হাদিসের অনুরূপ বর্ণিত। তাতে রয়েছেঃ এক বেদুঈন জিজ্ঞেস করলো, আপনি কি বলেছেন? তিনি বলিলেন, এটা তোমার ও তোমার সাথীদের জন্য প্রযোজ্য নয়।

বেতের নামাজের নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১৪১৮. খারিজাহ ইবনি হুযাফা আল-আদাবী (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একদা রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) আমাদের কাছে এসে বললেনঃ মহা মহীয়ান আল্লাহ তোমাদেরকে একটি অতিরিক্ত নামাজ দিয়েছেন, সেটা তোমাদের জন্য লাল উটের চেয়েও উত্তম। তা হলো বেতের। তোমাদের জন্য এ নামাজ আদায়ের সময় হচ্ছে ইশা নামাজের পর হইতে ফাজ্‌র উদয় হওয়া পর্যন্ত। {১৪১৮}

দুর্বলঃ মিশকাত (১২৬৭)। {১৪১৮} তিরমিযী (অধ্যায়ঃ নামাজ, অনুঃ বেতের নামাজের ফাযীলত, হাঃ ৪৫২), ইবনি মাজাহ (অধ্যায়ঃ নামাজ ক্বায়িম, অনুঃ বেতের নামাজ, হাঃ ১১৬৮), দারিমী (হাঃ ১৫৭৬), হাকিম (১/৩০৬) ঈমাম হাকিম বলেনঃ সানাদ সহিহ, তবে বোখারি ও মুসলিম এটি বর্ণনা করেননি। যাহাবী তার সাথে একমত পোষণ করিয়াছেন। আলবানী একে দুর্বল বলেছেন। বেতের নামাজের নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

অনুচ্ছেদ-৩৩৭ যে ব্যক্তি বেতের নামাজ আদায় করেনি

১৪১৯. আবদুল্লা ইবনি বুরাইদাহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে তার পিতা হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ)-কে বলিতে শুনেছিঃ বেতের নামাজ সত্য। যে ব্যক্তি বেতের আদায় করে না সে আমার দলভুক্ত নয়। বেতের নামাজ সত্য। যে ব্যক্তি বেতের আদায় করে না সে আমার দলভুক্ত নয়। বেতের নামাজ সত্য। যে ব্যক্তি বেতের আদায় করে না সে আমার দলভুক্ত নয়। {১৪১৯}

দুর্বলঃ মিশকাত (১২৭৮)। {১৪১৯} তিরমিযী (অধ্যায়ঃ নামাজ, অনুঃ বেতের নামাজের ফাযীলাত, হাঃ ৪৫২), ইবনি মাজাহ (অধ্যায়ঃ নামাজ ক্বায়িম, অনুঃ বেতের নামাজ, হাঃ ১১৬৮), দারিমী (হাঃ ১৫৭৬), হাকিম (১/৩০৬) ঈমাম হাকিম বলেনঃ সানাদ সহিহ, তবে বোখারি ও মুসলিম এটি বর্ণনা করেননি। যাহাবী তার সাথে একমত পোষণ করিয়াছেন। আলবানী একে দুর্বল বলেছেন। বেতের নামাজের নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

১৪২০. ইবনি মুহাইরীয (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

বনু কিনানাহ্‌র আল-মুখদাজী সিরিয়াতে আবু মুহাম্মাদ নামক এক ব্যক্তিকে বলিতে শুনেছেন, বেতের ওয়াজিব। মুখদাজী বলেন, আমিউবাদাহ ইবনিস সামিতের (রাঃআঃ) কাছে গিয়ে বিষয়টি অবহিত করলে তিনি বলিলেন, আবু মুহাম্মাদ মিথ্যা বলেছে। আমি রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ)-কে বলিতে শুনেছিঃ আল্লাহ তাহাঁর বান্দাদের উপর পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরয করিয়াছেন। যে ব্যক্তি তা যথাযথভাবে পালন করিবে, আর অবহেলাহেতু এর কোনটি পরিত্যাগ করিবে না, মহান আল্লাহ তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানোর অঙ্গীকার করিয়াছেন। আর যে ব্যক্তি তা (যথাযথভাবে) আদায় করিবে না, তার জন্য আল্লাহর কাছে কোন প্রতিশ্রুতি নেই। তিনি ইচ্ছা করলে তাকে শাস্তি দিবেন কিংবা জান্নাতে প্রবেশ করাবেন।

বেতের নামাজের নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-৩৩৮ বেতের নামাজের রাকআত সংখ্যা

১৪২১. ইবনি উমার (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

একদা এক বেদুঈন নাবী (সাঃআঃ)-কে রাতের নামাজ সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করলে তিনি তাহাঁর দুই আঙ্গুল দিয়ে ইশারা করে বলেনঃ দু দু রাকআত এবং রাতের শেষভাগে বেতের এক রাকআত

সহীহঃ মুসলিম। বেতের নামাজের নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১৪২২. আবু আইয়ূব আল-আনসারী (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ প্রত্যেক মুসলিমের উপর বেতের নামাজ অপরিহার্য। সুতরাং কেউ ইচ্ছে হলে পাঁচ রাকআত আদায় করিবে, কেউ তিন রাকআত আদায় করতে চাইলে সে তাই করিবে এবং কেউ এক রাকআত বেতের আদায় করতে চাইলে সে এক রাকআত আদায় করিবে।

বেতের নামাজের নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-৩৩৯ বেতের নামাজের ক্বিরাআত

১৪২৩. উবাই ইবনি কাব (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলু্ল্লাহ (সাঃআঃ) বেতের নামাজে

সূরাহ সাব্বিহিসমা রব্বিকাল আলা,

ক্বুল ইয়া-আইয়্যুহাল কাফিরূন এবং

ক্বুল হুওয়াল্লাহু আহাদ আল্লাহুস সমাদ তিলাওয়াত করতেন।

বেতের নামাজের নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১৪২৪. আবদুল আযীয ইবনি জুরাইজ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি উম্মুল মুমিনীনআয়েশা (রাঃআঃ)-কে বেতের নামাজে রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) কোন কোন সূরাহ তিলাওয়াত করতেন তা জিজ্ঞেস করি। এরপর উপরোক্ত হাদিসের অনুরূপ। বর্ণনাকারী বলেন, তিনি তৃতীয় রাকআতে

কুল হুওয়াল্লাহু আহাদ,

কুল আঊযু বিরাব্বিল ফালাক্ব এবং

কুল আঊযু বিরাব্বিন নাস সূরাহ তিনটি তিলাওয়াত করতেন।

বেতের নামাজের নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-৩৪০ বেতের নামাজের দুআ কুনুত

১৪২৫. আবুল হাওরা (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল-হাসান ইবনি আলী (রাঃআঃ) বলেছেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) আমাকে এমন কতগুলো বাক্য শিখিয়েছেন, যা আমি বেতের নামাজে পাঠ করে থাকি। তা হলোঃ

اللَّهُمَّ اهْدِنِي فِيمَنْ هَدَيْتَ وَعَافِنِي فِيمَنْ عَافَيْتَ وَتَوَلَّنِي فِيمَنْ تَوَلَّيْتَ وَبَارِكْ لِي فِيمَا أَعْطَيْتَ وَقِنِي شَرَّ مَا قَضَيْتَ إِنَّكَ تَقْضِي وَلاَ يُقْضَى عَلَيْكَ وَإِنَّهُ لاَ يَذِلُّ مَنْ وَالَيْتَ وَلاَ يَعِزُّ مَنْ عَادَيْتَ تَبَارَكْتَ رَبَّنَا وَتَعَالَيْتَ

“আল্লাহুম্মা ইহদিনী ফীমান হাদাইতা ওয়াআ-ফিনী ফীমানআ-ফাইতা ওয়া তাওয়াল্লানী ফীমান তাওয়াল্লাইতা ওয়া বা-রিক লী ফীমা আতাইতা ওয়াক্বিনী শাররা মা ক্বাদাইতা, ইন্নাকা তাক্বদী ওয়ালা ইউক্‌দাআলাইকা ওয়া ইন্নাহু লা ইয়াযিল্লু মান ওয়ালাইতা ওয়ালা ইয়াইয্‌যু মানআ-দাইতা তাবা-রাকতা র ব্বানা ওয়া তাআলাইতা। “হে আল্লাহ! যাদেরকে তুমি হিদায়াত করেছো আমাকেও তাহাদের সাথে হিদায়াত কর, যাদের প্রতি উদারতা দেখিয়েছ তুমি তাহাদের সাথে আমার প্রতিও উদারতা দেখাও। তুমি যাদের অভিভাবকত্ব গ্রহণ করেছ তাহাদের সাথে আমার অভিভাবকত্বও গ্রহণ কর। তুমি আমাকে যা দান করেছ তার মধ্যে বারকাত দাও। তোমার নির্ধারিত খারাবি হইতে আমাকে রক্ষা কর। কেননা তুমিই নির্দেশ দিতে পার, তোমার উপর কারো নির্দেশ চলে না। যাকে তুমি বন্ধু ভেবেছ সে কখনও অপমানিত হয় না। তুমি কল্যাণময়, তুমি সুউচ্চ”

বেতের নামাজের নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১৪২৬. আবু ইসহাক হইতে বর্ণিতঃ

উপরোক্ত সানাদ ও অর্থে বর্ণিত। তাতে শেষাংশে রয়েছেঃ এগুলো বিতরের কুনূতে বলেছেন। কিন্তু এ কথা উল্লেখ নেই যে,আমি এগুলো বিতরে বলেছি।

বেতের নামাজের নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১৪২৭. আলী ইবনি আবু তালিব (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) তাহাঁর বেতের নামাজ শেষে বলিতেনঃ

 اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِرِضَاكَ مِنْ سَخَطِكَ وَبِمُعَافَاتِكَ مِنْ عُقُوبَتِكَ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْكَ لاَ أُحْصِي ثَنَاءً عَلَيْكَ أَنْتَ كَمَا أَثْنَيْتَ عَلَى نَفْسِكَ

আল্লাহুম্মা ইন্নী আউযু বিরিদাকা মিন সাখাতিকা ওয়া বিমুআফাতিকা মিনউকুবাতিকা ওয়া আউযুবিকা মিনকা লা উহসী সানাআলাইকা আনতা কামা আসনাইতাআলানাফসিকা। (অর্থ ঃ হে আল্লাহ! আমি আপনার সন্তুষ্টির মাধ্যমে আপনার ক্রোধ হইতে আশ্রয় চাই। আপনার শাস্তি হইতে আপনার ক্ষমার মাধ্যমে আশ্রয় চাই।

আমি আপনার থেকে সর্বপ্রকারের আশ্রয় চাই। আমি আপনার প্রশংসা গণনা করে শেষ করতে পারবো না, বরং আপনি আপনার নিজের যেরূপ প্রশংসা করিয়াছেন, ঠিক সেরূপই।”

ঈমাম আবু দাউদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, হিশাম হাম্মাদের প্রাক্তন শায়খ এবং ইয়াহইয়া ইবনি মাঈন হইতে আমার কাছে এ হাদিস পৌঁছে যে, তার থেকে হাম্মাদ ইবনি সালামাহ ছাড়া অন্য কেউ এ হাদিস বর্ণনা করেননি। উবাই ইবনি কাব (রাঃআঃ) সূত্রে বর্ণিত। রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বেতের নামাজে রুকূর আগে কুনূত পাঠ করিয়াছেন। ঈমাম আবু দাউদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, সাঈদ ইবনিআবদুর রহমান ইবনি আবযা হইতে তার পিতা থেকে নাবী (সাঃআঃ) এর সূত্রে বর্ণনা করিয়াছেন। তবে এ হাদীসে কুনূতের কথা এবং উবাইয়ের নাম উল্লেখ নেই। অনুরূপ ভাবেআবদুল আলা এবং মুহাম্মাদ ইবনি বিশর আল-আবদী বর্ণনা করিয়াছেন। কিন্তু তিনি এ হাদিসটি ঈসা ইবনি ইউনুসের সাথে কুফাতে শুনেছেন। তবে কুনূতের কথা উল্লেখ করেননি। একইভাবে হিশাম আদ-দাসতাওয়াঈ এবং শুবাহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) ক্বাতাদাহ (রাঃআঃ) সূত্রে বর্ণনা করিয়াছেন। এখানেও কুনূতের কথা উল্লেখ নেই। যুবাইদী সূত্রে বর্ণিত হাদীসে তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) রুকূর পূর্বে কুনূত পাঠ করিয়াছেন। ঈমাম আবু দাউদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, এরূপও বর্ণিত হয়েছে যে, উবাই (রাঃআঃ) রমাযানের অর্ধ মাস কুনূত পাঠ করতেন। বেতের নামাজের নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১৪২৮. মুহাম্মাদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে তার এক সাথীর সূত্র হইতে বর্ণিতঃ

উবাই ইবনি কাব (রাঃআঃ) রমাযানে তাহাঁদের ঈমামতি করিয়াছেন এবং রমাযানের শেষ দিকে কুনূত পড়েছেন। {১৪২৮}

{১৪২৮} আবু দাউদ এটি এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন । এর সানাদ দুর্বল । সানাদটি মুনকাতি। বেতের নামাজের নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

১৪২৯. হাসান বাসরী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

উমার ইবনিল খাত্তাব (রাঃআঃ) (তারাবীহ নামাজের জন্য) উবাই ইবনি কাবের পিছনে লোকদের জামাআতবদ্ধ করিলেন। তিনি তাহাঁদেরকে নিয়ে বিশ রাত নামাজ আদায় করিলেন। কিন্তু তিনি রামাযান মাসের অর্ধেক পর্যন্ত কুনূত পাঠ করেননি। অতঃপর যখন রমাযানের শেষ দশকে তিনি মাসজিদ ছেড়ে নিজ ঘরে নামাজ আদায় করিলেন। লোকেরা বলাবলি করতে লাগলো, উবাই পালিয়ে গেছে। {১৪২৯}

দুর্বল। ঈমাম আবু দাউদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, এ হাদিস এটাই প্রমাণ করে যে, কুনূত সংক্রান্ত যা কিছু উল্লেখ হয়েছে তা অনির্ভরযোগ্য এবং উল্লেখিত হাদিসদ্বয় দ্বারা এটা স্পষ্ট যে, নাবী (সাঃআঃ) বিতরে কুনূত পড়েছেন এ মর্মে উবাইর বর্ণনা দুর্বল।

{১৪২৯} আবু দাউদ এটি এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন । এর সানাদ দুর্বল । তাবরীযী একে মিশকাত গ্রন্থে উল্লেখ করিয়াছেন (হাঃ ১২৯৩) হাসান হইতেউমার সূত্রে। এর সানাদ মুনকাতি। হাসানউমার ইবনিল খাত্তবকে পাননি । যেমন আত-তাহযীব গ্রন্থে এসেছে। বেতের নামাজের নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

অনুচ্ছেদ-৩৪১ বিতরের পরে দুআ পাঠ

১৪৩০.উবাই ইবনি কাব (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) বেতের নামাজের সালাম ফিরিয়ে বলিতেনঃ

‏ سُبْحَانَ الْمَلِكِ الْقُدُّوسِ

সুব্‌হানাল মালিকিন কুদ্দুস।

বেতের নামাজের নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১৪৩১. আবু সাঈদ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি বেতের নামাজ আদায় না করেই ঘুমায় অথবা আদায় করতে ভুলে যায়, পরে স্মরণ হওয়া মাত্রই সে যেন তা আদায় করে নেয়।

বেতের নামাজের নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-৩৪২ ঘুমানোর পূর্বে বেতের নামাজ আদায় করা

১৪৩২. আবু হুরাইরাহ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমার বন্ধু (সাঃআঃ) আমাকে তিনটি কাজের ওয়াসিয়াত করিয়াছেন, যা আমি সফরে কিংবা বাড়িতে থাকাকালেও পরিহার করি না। তা হলো ঃ চাশতের দু রাকাআত নামাজ, প্রতি মাসে তিন দিন (১৩,১৪ ও ১৫ আওয়ামে বিযের) সওম পালন এবং বেতের আদায় না করা পর্যন্ত না ঘুমানো।

সহিহ ঃ বোখারি ও মুসলিম, এ কথা বাদে ঃ সফরে কিংবা বাড়িতেও নয়। বেতের নামাজের নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১৪৩৩. আবু দারদা (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমার বন্ধু (সাঃআঃ) আমাকে তিনটি কাজের ওয়াসিয়াত করিয়াছেন যা আমি কখনো বর্জন করি না। তিনি আমাকে ওয়াসিয়াত করিয়াছেন প্রতি মাসে তিন দিন সওম পালন করতে, বেতের নামাজ আদায়ের পূর্বে নিদ্রা না যেতে এবং বাড়িতে ও সফরে প্রত্যেক অবস্থায় চাশতের নামাজ আদায় করতে।

সহিহ ঃ তার এ কথা বাদে ঃ মুকীম অবস্থায় ও সফর অবস্থায়ও নয়।বেতের নামাজের নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১৪৩৪. আবু ক্বাতাদাহ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

একদা নাবী (সাঃআঃ) আবু বকর (রাঃআঃ)-কে জিজ্ঞেস করিলেনঃ বেতের নামাজ তুমি কোন সময়ে আদায় করো? তিনি বলিলেন, আমি রাতের প্রথমাংশে বেতের আদায় করি। তিনি উমার (রাঃআঃ)-কে জিজ্ঞেস করিলেন, তুমি বেতের কোন সময়ে আদায় করো? তিনি বলিলেন, আমি বেতের শেষ রাতে আদায় করি।

অতঃপর তিনি আবু বকর (রাঃআঃ) সম্পর্কে বলেনঃ সে সতর্কতা অবলম্বন করেছে এবং উমার (রাঃআঃ) সম্পর্কে বলেনঃ সে শক্তভাবে ধারণ করেছে।

বেতের নামাজের নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-৩৪৩ বেতের নামাজের ওয়াক্ত

১৪৩৫. মাসরূক (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একদা আমিআয়েশা (রাঃআঃ)-কে জিজ্ঞেস করি, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বেতের কোন সময়ে আদায় করতেন? তিনি বলেন, রাতের প্রথমভাগে, মধ্যভাগে এবং শেষভাগে-এগুলোর প্রত্যেক সময়েই বেতের আদায় করিয়াছেন। তবে তিনি ইন্তিকালের পূর্বে বেতের নামাজ সাহারীর শেষ সময়ে আদায় করিয়াছেন।

সহিহ ঃ বোখারি ও মুসলিম। বেতের নামাজের নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১৪৩৬. ইবনি উমার (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী (সাঃআঃ) বলেনঃ তোমরা সুবহি সাদিকের আগেই বেতের আদায় করে নিবে।

বেতের নামাজের নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১৪৩৭. আবদুল্লা ইবনি ক্বায়িস (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একদা আমিআয়েশা (রাঃআঃ)-কে রসূলুল্লাহর (সাঃআঃ) বেতের নামাজ সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, তিনি বেতের নামাজ কখনো রাতের প্রথমাংশে আবার কখনো শেষাংশে আদায় করিয়াছেন। আমি জিজ্ঞেস করি, নাবী (সাঃআঃ) কিভাবে ক্বিরাআত করিয়াছেন? তিনি কি নিঃশব্দে পড়তেন নাকি সশব্দে? তিনি বলেন, তিনি কখনো আস্তে এবং কখনো জোরে-উভয় ভাবেই পড়েছেন। তিনি কখনো গোসল করে ঘুমিয়েছেন এবং কখনো উযু করে ঘুমিয়েছেন।

সহিহ ঃ মুসলিম। ঈমাম আবু দাউদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, কুতাইবাহ ছাড়া অন্যরাস্ত্রী সহবাসের গোসল বলেছেন। বেতের নামাজের নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১৪৩৮. ইবনি উমার (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ বেতেরকে তোমাদের রাতের শেষ নামাজে পরিণত করিবে।

সহিহ ঃ বোখারি ও মুসলিম। বেতের নামাজের নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-৩৪৪ বেতের নামাজ দুইবার আদায় করিবে না

১৪৩৯. ক্বায়িস ইবনি ত্বালক্ব (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একদা রমযান মাসে ত্বালক্ব ইবনিআলী (রাঃআঃ) আমাদের সাথে দেখা করতে এসে এখানে সন্ধ্যা অতিবাহিত করেন এবং এখানেই ইফতার করেন। অতঃপর রাতে আমাদেরকে নিয়ে তারাবীহ ও বেতের নামাজ আদায় করেন। অতঃপর তিনি নিজেদের মাসজিদে গিয়ে তার সাথীদেরকে নিয়েও নামাজ আদায় করেন। অতঃপর বেতের নামাজের জন্য এক ব্যক্তিকে সম্মুখে এগিয়ে দিয়ে বলেন, তোমার সাথীদেরকে বেতের পড়াও। কেননা আমি রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ)-কে বলিতে শুনছি ঃ একই রাতে দুইবার বেতের হয় না।

বেতের নামাজের নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-৩৪৫ অন্যান্য নামাজে কুনূত পাঠ সম্পর্কে

১৪৪০. আবু হুরাইরাহ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহর শপথ! আমি অবশ্যই তোমাদেরকে রসূলুল্লাহর (সাঃআঃ) নামাজের নিকটবর্তী করবো। আবু হুরাইরা (রাঃআঃ) যুহর,ইশা এবং ফাজ্‌রের নামাজের শেষ রাকাআতে দুআ কুনূত পাঠ করতেন। এতে মুমিনদের জন্য দুআ এবং কাফিরদের জন্য বদদুআ করতেন।

সহিহ ঃ বোখারি ও মুসলিম। বেতের নামাজের নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১৪৪১. আল-বারাআ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী (সাঃআঃ) ফাজ্‌রের নামাজে দুআ কুনূত পাঠ করতেন। ইবনি মুয়াযের বর্ণনায় মাগরিবের নামাজেও কুনূত পড়ার কথা রহিয়াছে।

সহিহ ঃ মুসলিম। বেতের নামাজের নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১৪৪২. আবু হুরাইরাহ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) এক মাস পর্যন্তইশার নামাজে দুআ কুনূত পাঠ করিয়াছেন। তিনি কুনূতে বলেছেনঃ হে আল্লাহ! “ওয়ালীদ ইবনি ওয়ালীদকে মুক্ত করুন! হে আল্লাহ! সালামহ ইবনি হিশামকে মুক্ত করুন! হে আল্লাহ! দুর্বল মুমিনদেরকে মুক্তি দিন। হে আল্লাহ! মুদার গোত্রের উপর আপনি কঠোর হোন! হে আল্লাহ! তাহাঁদের উপর এমন দুর্ভিক্ষ দিন যেমন দুর্ভিক্ষ দিয়েছিলেন ইউসুফ (আ)-এর যুগে।” আবু হুরাইরা (রাঃআঃ) বলেন, একদিন ভোরে রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) আর দুর্বল ও নির্যাতিত মুমিনদের জন্য দুআ না করায় আমি তাকে তা স্মরণ করিয়ে দিলে তিনি বলেনঃ তুমি কি তাহাঁদেরকে (নির্যাতিত মুসলিমদের) দেখছ না যে তারা মদিনায় ফিরে এসেছে?

সহিহ ঃ মুসলিম। বোখারিতে এ কথা বাদে ঃ “আমি তাকে তা স্মরণ করিয়ে দিলে…।” বেতের নামাজের নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১৪৪৩. ইবনি আব্বাস  (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) পুরো এক মাস যুহর,আসর মাগরিব,ইশা ও ফাজ্‌রের নামাজে শেষ রাকাআতে

سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ

“সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ”

বলার পর কুনূত পাঠ করিয়াছেন। এ সময় তিনি বনু সুলাইমের কয়েকটি গোত্র, যেমন রিল, যাকওয়ান ও উসাইয়্যার উপর বদদুআ করিয়াছেন এবং তাহাঁর পিছনের মুক্তাদীরা আমীন আমীন বলেছেন।

বেতের নামাজের নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

১৪৪৪. আনাস ইবনি মালিক (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী (সাঃআঃ) ফাজ্‌রের নামাজে কুনূত পড়েছেন কিনা এ সম্পর্কে তাকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, হাঁ। তাঁকে জিজ্ঞেস করা হলো, রুকূর পূর্বে নাকি পরে? তিনি বলেন, রুকূর পরে। মুসাদ্দাদ বলেন, ছোট কুনূত পড়েছেন।

সহিহ ঃ বোখারি ও মুসলিম। বেতের নামাজের নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১৪৪৫. আনাস ইবনি মালিক (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী (সাঃআঃ) পুরো এক মাস কুনূত পড়েছেন। অতঃপর তা ছেড়ে দিয়েছেন।

বেতের নামাজের নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১৪৪৬. মুহাম্মাদ ইবনি সীরীন (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) এর সাথে ফাজ্‌রের নামাজ আদায়কারী এক সাহাবী আমাকে বর্ণনা করেন যে, নাবী (সাঃআঃ) দ্বিতীয় রাকাআতে (রুকূ) হইতে মাথা উঠিয়ে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকেছেন।

বেতের নামাজের নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-৩৪৬ নফল নামাজ ঘরে আদায়ের ফাযীলাত

১৪৪৭. যায়িদ ইবনি সাবিত (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) মাসজিদে একটি হুজরাহ বানিয়ে নিলেন। রাতে সেখানে গিয়ে রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) নামাজ আদায় করতেন। বর্ণনাকারী বলেন, লোকেরাও তাহাঁর সাথে নামাজ আদায় করতো এবং তারা প্রতি রাতে সেখানে একত্র হতো। এক রাতে রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) তাহাঁদের নিকট (মাসজিদে) না আসায় তারা গলা খাকাড়ি ও উচ্চস্বরে কথাবার্তা বললো, এমনকি তাহাঁর দরজায় কংকর নিক্ষেপ করলো। বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) অসন্তুষ্ট মনে তাহাঁদের নিকট এসে বললেনঃ হে লোকেরা! তোমাদের কি হলো যে, তোমরা (নফল নামাজ জামাআতে আদায়ের জন্য) ব্যতিব্যস্ত হচ্ছো? আমি আশংকা করছি, তোমরা এভাবে এলে রাতের নফল নামাজ তোমাদের উপর ফরয করা হইতে পারে? কাজেই নফল নামাজ তোমাদের নিজ নিজ ঘরে আদায় করা উচিত। কেননা ফরয নামাজ ছাড়া প্রত্যেক ব্যক্তির নফল নামাজ নিজ ঘরে আদায় করাই উত্তম।

সহিহ ঃ বোখারি ও মুসলিম। বেতের নামাজের নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১৪৪৮. ইবনি উমার (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ তোমরা তোমাদের কিছু নামাজ নিজ নিজ ঘরে আদায় করিবে এবং তোমাদের ঘরগুলোকে ক্ববরস্থানে পরিণত করিবে না।

সহিহ ঃ বোখারি ও মুসলিম। এটি গত হয়েছে (১০৪৩)। বেতের নামাজের নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-৩৪৭ নামাজে দীর্ঘ ক্বিয়াম

১৪৪৯. আবদুল্লা ইবনি হুবশী আল-খাসআমী (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

একদা নাবী (সাঃআঃ)-কে সর্বোত্তম কাজ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করা। তাঁকে জিজ্ঞেস করা হলো কোন সদাক্বাহ উত্তম? তিনি বলেনঃ নিজ শ্রমে উপার্জির্ত সামান্য সম্পদ হইতে যে দান করা হয় সেটা। তাকে জিজ্ঞেস করা হলো কোন হিজরাত উত্তম? তিনি বলেনঃ আল্লাহর নিষিদ্ধ বস্তু হইতে দূরে থাকা। জিজ্ঞেস করা হলো কোন জিহাদ উত্তম? তিনি বলেনঃ যে ব্যক্তি নিজের জান ও মাল দ্বারা মুশরিকদের বিরুদ্ধে জিহাদ করে। জিজ্ঞেস করা হলো কোন ধরণের হত্যা মর্যাদা সম্পন্ন? তিনি বলেনঃ যে ব্যক্তি (যুদ্ধের ময়দানে) নিজের ঘোড়া সহ নিহত হয়।

সহিহ ঃ এ শব্দে ঃ (কোন নামাজ?)। বেতের নামাজের নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-৩৪৮ ক্বিয়ামুল লাইল করতে উৎসাহ প্রদান

১৪৫০. আবু হুরাইরাহ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ আল্লাহ এমন ব্যক্তিকে দয়া করুন, যে রাতে উঠে নিজেও নামাজ আদায় করে এবং তার স্ত্রীকেও জাগায় এবং সেও নামাজ আদায় করে। সে উঠতে না চাইলে তার মুখমণ্ডলে পানি ছিটিয়ে দেয়। আল্লাহ এমন নারীর প্রতিও অনুগ্রহ করুন, যে রাতে উঠে নিজে নামাজ আদায় করে এবং তার স্বামীকেও জাগায়। সে উঠতে না চাইলে তার মুখমণ্ডলে পানি ছিটিয়ে দেয়। {১৪৫০}

হাসান সহিহ ঃ এটি গত হয়েছে (১৩০৮)। বেতের নামাজের নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ

১৪৫১. আবু সাঈদ আল-খুদরী ও আবু হুরাইরাহ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তারা বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি রাতে নিজে সজাগ হলো এবং তার স্ত্রীকেও জাগিয়ে দিলো। অতঃপর উভয়েই একত্রে দু রাকাআত নামাজ আদায় করলো। তাহাঁদের দুজনকেই (আল্লাহর) অধিক যিকিরকারী ও যিকিরকারিণীর তালিকায় লিপিবদ্ধ করা হয়।

সহিহ ঃ এটি গত হয়েছে (১৩০৯)। বেতের নামাজের নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-৩৪৯ কুরআন তিলাওয়াতের সওয়াব

১৪৫২. উসমান (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী (সাঃআঃ) বলেছেন, তোমাদের মধ্যে সবচেয়ে উত্তম ঐ ব্যক্তি, যে ব্যক্তি কুরআন নিজে শিখে এবং অপরকে শিক্ষা দেয়।

সহিহ ঃ বোখারি। বেতের নামাজের নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১৪৫৩. সাহল ইবনি মুআয আল-জুহানী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে তার পিতা হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি কুরআন পাঠ করে এবং তদনুযায়ী আমল করে, ক্বিয়ামতের দিন তার পিতা-মাতাকে এমন মুকুট পরানো হইবে যার আলো সূর্যের আলোর চাইতেও উজ্জ্বল হইবে। ধরে নাও, যদি সূর্য তোমাদের ঘরে বিদ্যমান থাকে (তাহলে তার আলো কিরূপ হইবে?)। তাহলে যে ব্যক্তি কুরআন অনুযায়ী আমল করে তার ব্যাপারটি কেমন হইবে, তোমরা ধারণা করো তো! {১৪৫৩}

{১৪৫৩} আহমাদ (৩/৪৪০) যাব্বান ইবনি ফায়িদ হইতে । এর সানাদ দুর্বল । সানাদের যাব্বান ইবনি ফায়িদ সম্পর্কে হাফিজ ইবনি হাজারআত তাক্ববীর গ্রন্থে বলেন ঃ তিনি সৎ এবং ইবাদাতগুজারী হওয়া সত্ত্বেও জঈফ । বেতের নামাজের নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

১৪৫৪. আয়েশা (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ কুরাআন পাঠে দক্ষ ব্যাক্তি উচ্চ মযাদা সম্পন্ন ফেরেশতাহাঁদের সঙ্গী হইবে। আর যে ব্যাক্তি কুরাআন পড়ার সময় আটকে যায় এবং কষ্ট করে তিলাওয়াত করে তার জন্য রহিয়াছে দ্বিগুণ সওয়াব।

সহিহ ঃ বোখারি ও মুসলিম। বেতের নামাজের নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১৪৫৫. আবু হুরাইরাহ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী (সাঃআঃ) বলেছেন, যখন কোন সম্প্রদায় আল্লাহর কোন ঘরে সমবেত হয়ে আল্লাহর কিতাব তিলাওয়াত করে এবং পরস্পরে তা নিয়ে আলোচনা করে, তখন তাহাঁদের উপর শান্তি বর্ষিত হয়, তাহাঁদেরকে রহমাত ঢেকে নেয়, ফেরেশতাগণ তাহাঁদেরকে ঘিরে রাখে, এবং আল্লাহ তাহাঁর নিকটবর্তী ফেরেশতাহাঁদের কাছে তাহাঁদের প্রশংসা করেন।

সহিহ ঃ মুসলিম। বেতের নামাজের নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১৪৫৬. উক্ববাহ ইবনিআমির আল-জুহানী (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একদা আমরা সুফ্‌ফাতে (মাসজিদে নাববীর আঙ্গিনায়) অবস্থান করছিলাম এমন সময় রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) আমাদের কাছে এসে বললেনঃতোমাদের মধ্যে কে পছন্দ করিবে যে, ভোরে বুতহান অথবা আক্বীক্ব উপত্যকায় গিয়ে সেখান থেকে আল্লাহর সাথে কোনরূপ অন্যায় না করে ও আত্নীয়তা ছিন্ন না করে উঁচু কুঁজবিশিষ্ট উজ্জ্বল বর্ণের সুন্দর দুটি উটনী নিয়ে আসবে? তারা বলিলেন, হে আল্লাহর রসূল! আমরা সবাই। তিনি বললেনঃ অবশ্য তোমাদের কেউ ভোরে মাসজিদে এসে আল্লাহর কিতাব হইতে দুটি আয়াত শিক্ষা করা এরূপ দুটি উটনীর চেয়েও উত্তম এবং তিনটি আয়াত শিক্ষা করা এরূপ তিনটি উটের চেয়েও উত্তম। আয়াতের সংখ্যা যত বেশি হইবে তা তত সংখ্যক উটের চেয়ে উত্তম হইবে।

সহিহ ঃ মুসলিম। বেতের নামাজের নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-৩৫০ সূরাহ আ্ল-ফাতিহা

১৪৫৭. আবু হুরাইরাহ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ সূরাহ “আলহামদু লিল্লাহি রব্বিল আলামীন” হচ্ছে উম্মুল কিতাব, উম্মুল কুরআন এবং বারবার পঠিতব্য সাতটি আয়াত।

বেতের নামাজের নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১৪৫৮. আবু সাঈদ ইবনিল মুআল্লা (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

একদা তিনি নামাজে রত থাকাবস্থায় নাবী (সাঃআঃ) তার পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় তাকে ডাকলেন। বর্ণনাকারী বলেন, আমি নামাজ আদায় শেষে তাহাঁর নিকট এলে তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করলেনঃ আমার ডাকে সাড়া দিতে কিসে তোমাকে বাধা দিয়েছে? তিনি বলিলেন, আমি নামাজ রত ছিলাম। তিনি বললেনঃ মহান আল্লাহ কি বলেননিঃ “হে মুমিনগণ! যখন আল্লাহ ও তাহাঁর রসূল তোমাদেরকে এমন কিছুর দিকে ডাকে যা তোমাদেরকে প্রাণবন্তকরে। (সূরাহ আল-আনফালঃ ২৪) আমি মাসজিদ থেকে বের হবার পূর্বেই তোমাকে কুরআনের অত্যধিক মর্যাদা সম্পন্ন একটি সূরাহ শিক্ষা দিবো। আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আমি আপনার কথাটি স্মরণ রাখবো। তিনি (সাঃআঃ) বললেনঃ “আলহামদু লিল্লাহি রব্বিলআলামীন”, এটি হচ্ছে সাত আয়াতবিশিষ্ট সূরাহ। আমাকে এটি এবং কুরআনুলআযীম প্রদান করা হয়েছে।

সহীহঃ বোখারি। বেতের নামাজের নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-৩৫১ যিনি বলেন, সূরাহ ফাতিহা দীর্ঘ সূরাহসমূহের অন্তর্ভূক্ত

১৪৫৯. ইবনি আব্বাস  (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ)-কে সাবউ মাসানী (সাত আয়াতবিশিষ্ট) নামক দীর্ঘ সূরাহ দেয়া হয়েছে এবং মূসা (আ)-কে দেয়া হয়েছিল ছয়টি। অতঃপর তিনি তাওরাতের লিখিত ফলকগুলো ছুড়ে ফেলায় দুটি উঠিয়ে নেয়া হয় এবং চারটি অবশিষ্ট থাকে।

বেতের নামাজের নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-৩৫২ আয়াতুল কুরসী সম্পর্কে

১৪৬০. উবাই ইবনি কাব (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেনঃ হে আবুল মুনযির! তোমার কাছে আল্লাহর কিতাবের কোন আয়াতটি সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ? আমি বললাম, আল্লাহ ও তাহাঁর রসূলই অধিক জ্ঞাত। তিনি আবার বলেন, হে আবুল মুনযির! তোমার কাছে আল্লাহর কিতাবের কোন আয়াতটি সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ? আমি বললাম,

هُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ هُوَ الْحَىُّ الْقَيُّومُ

“আল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা হুয়াল হাইয়্যুল ক্বাইয়্যুম” (আয়াতুল কুরসী)।

তখন তিনি আমার বুকে (হালকা) আঘাত করে বলেনঃ হে আবুল মুনযির! তোমার জ্ঞান আনন্দদায়ক হোক।

সহীহঃ মুসলিম। বেতের নামাজের নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-৩৫৩ সূরাহ আস-সমাদ (আল-ইখলাস) সম্পর্কে

১৪৬১. আবু সাঈদ আল-খুদরী (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

একদা এক ব্যক্তি আরেক ব্যক্তিকে বারবার সূরাহকুল হুওয়াল্লাহু আহাদ পাঠ করতে শুনে ঘটনাটি ভোর বেলায় রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) এর নিকট এসে উল্লেখ করলো। লোকটি যেন এ সূরাহ বারবার পাঠ করাকে তুষ্ট মনে করলো। নাবী (সাঃআঃ) বললেনঃ ঐ সত্তার শপথ, যার হাতে আমার প্রাণ! এ সূরাহটি পুরো কুরআনের এক-তৃতীয়াংশের সমান।

সহীহঃ বোখারি। বেতের নামাজের নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-৩৫৪ সূরাহ আল-ফালাক্ব ও সূরাহ আন-নাস সম্পর্কে

১৪৬২. উক্ববাহ ইবনিআমির (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি সফরকালে রসূলুল্লাহর (সাঃআঃ) উষ্ট্রীর লাগাম টেনে নিয়ে যেতাম। একদা তিনি আমাকে বললেনঃ হেউক্ববাহ! আমি কি তোমাকে পঠিতব্য দুটি সূরাহ শিক্ষা দিবো না? অতঃপর তিনি আমাকে সূরাহকুল আঊযু বিরব্বিল ফালাক্ব এবং কুল আঊযু বিরব্বিন নাস শিখালেন। এতে তিনি আমাকে তেমন খুশী হইতে দেখেননি। অতঃপর তিনি নামাজের জন্য অবতরণ করে লওকদেরকে নিয়ে ফাজর নামাজে এ দুটি সূরাহ পাঠ করিলেন। নামাজ শেষে রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) আমাকে লক্ষ্য করে বললেনঃ কেমন দেখলে, হেউক্ববাহ!

বেতের নামাজের নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১৪৬৩. উক্ববাহ ইবনিআমির (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একদা রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর সাথে আল-জুহফা ও আল-আবওয়ার মধ্যবর্তী এলাকায় সফরকালে আমরা হঠাৎ প্রবল বাতাস ও ঘোর অন্ধকারের কবলে পড়ি। তখন রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) কুল আঊযু বিরব্বিল ফালাক্ব এবং কুল আঊযু বিরব্বিন নাস সূরাহ দুটি পাঠ করে আশ্রয় প্রার্থনা করতে লাগলেন এবং বললেনঃ হেউকবাহ! এ সূরাহ দুটি দ্বারা পানাহ চাও। কেননা পানাহ চাওয়ার জন্য এরূপ সূরাহ নেই। বর্ণনাকারী বলেন, আমি নাবী (সাঃআঃ)-কে এ দুটি সূরাহ দ্বারা নামাজের ঈমামতি করতেও শুনিয়াছি।

বেতের নামাজের নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-৩৫৫ তারতীলের সাথে কুরআন তিলাওয়াত পছন্দনীয়

১৪৬৪. আবদুল্লা ইবনি আমর (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ (ক্বিয়ামাতে) কুরআন অধ্যয়নকারীকে বলা হইবে, কুরআন পাঠ করতে করতে উপরে উঠতে থাকো। তুমি দুনিয়াতে যেভাবে ধীরেসুস্থে পাঠ করতে সেভাবে পাঠ করো। কেননা তোমার তিলাওয়াতের শেষ আয়াতেই (জান্নাতে) তোমার বাসস্থান হইবে।

বেতের নামাজের নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ

১৪৬৫. ক্বাতাদাহ (রঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি আনাস (রাঃআঃ)-কে নাবী (সাঃআঃ) এর ক্বিরাআত সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, তিনি যেখানে যতটুকু দীর্ঘ করা প্রয়োজন, সেখানে ততটুকু দীর্ঘ করে টেনে পাঠ করতেন।

সহীহঃ বোখারি। বেতের নামাজের নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১৪৬৬. ইয়ালা ইবনি মামলাক (রঃ) হইতে বর্ণিতঃ

একদা তিনি উম্মু সালামাহ (রাঃআঃ)-কে রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর নামাজ ও ক্বিরাআত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, তাহাঁর নামাজ সম্পর্কে জেনে তোমাদের কি দরকার? তিনি নামাজ আদায় করতেন এবং নামাজ আদায়ের সমপরিমান সময় ঘুমাতেন, আবার যেটুকু সময় ঘুমাতেন সে পরিমাণ সময় নামাজ আদায় করতেন। আবারো নামাজ আদায়ের সমপরিমান সময় ঘুমাতেন। এভাবেই ভোর হয়ে যেতো। তিনি তাহাঁর ক্বিরাআতের বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, তিনি ক্বিরাআতে এক একটি হরফ স্পষ্ট উচ্চারণ করতেন।

বেতের নামাজের নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

১৪৬৭. আবদুল্লা ইবনি মুগাফফাল (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি মাক্কাহ বিজয়ের দিন রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ)-কে তাহাঁর উষ্ট্রীতে আরোহিত অবস্থায় সূরাহআল-ফাতহ পাঠ করতে শুনিয়াছি এবং প্রতিটি আয়াত পুনরাবৃত্তিসহ।

সহীহঃ বোখারি ও মুসলিম। বেতের নামাজের নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১৪৬৮. আল-বারাআ ইবনিআযিব (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ তোমরা সুললিত কন্ঠে কুরআনকে সুসজ্জিত করো।

বেতের নামাজের নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১৪৬৯. আবুল ওয়ালীদ, কুতাইবাহ ইবনি সাঈদ ও ইয়াযীদ ইবনি খালিদ হইতে বর্ণিতঃ

পুর্বোক্ত হাদিসের অনুরূপ অর্থবোধক হাদিস বর্ণিত আছে। সাঈদ ইবনি আবু সাঈদ (রাঃআঃ) বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি মধুর সূরে কুরআন পাঠ করে না, সে আমাদের দলভুক্ত নয়।

বেতের নামাজের নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১৪৭০. সাদ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) সূত্রে পূর্বোক্ত হাদিসের অনুরূপ বর্ণিত।

বেতের নামাজের নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ নির্ণীত নয়

১৪৭১. উবায়দুল্লাহ ইবনি আবু ইয়াযীদ (রঃ) হইতে বর্ণিতঃ

একদা আবু লুবাবাহ (রাঃআঃ) আমাদের পাশ দিয়ে অতিক্রম করলে আমরা তার অনুসরণ করি। যখন তিনি তার ঘরে ঢুকলেন, আমরাও তাতে ঢুকে পড়ি এবং দেখি, তিনি এমন লোক যার ঘরটি একেবারে জীর্ণ-শীর্ণ এবং অবস্থাও অসচ্ছল। আমি তাকে বলিতে শুনি, আমি রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ)-কে বলিতে শুনিয়াছি, যে কুরআনকে মধুর সূরে পাঠ করে না সে আমাদের দলভুক্ত নয়। বর্ণনাকারী বলেন, আমি ইবনি আবু মুলায়কাহকে বলি, হে আবু মুহাম্মাদ! যদি কারো স্বরই শ্রুতিমধুর না হয়? তিনি বলিলেন, সাধ্যমত সুন্দরভাবে পড়ার চেষ্টা করিবে।

বেতের নামাজের নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ

১৪৭২. ওয়াকী ও ইবনিউয়াইনাহ (রঃ) হইতে বর্ণিতঃ

মান লাম ইতাগান্না এর অর্থ হচ্ছেমধুর সূরে স্পষ্ট আওয়াযে কুরআন পড়ার চেষ্টা করা।

সহিহ মাক্বতূঃ বোখারি। বেতের নামাজের নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ মাকতু

১৪৭৩. আবু হুরাইরাহ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ মহান আল্লাহ অন্য কিছু এতো মনোযোগ দিয়ে শুনেন না, যেভাবে তিনি নাবীর সুমধুর কন্ঠে স্পষ্ট উচ্চারণে কুরআন পাঠ শুনেন।

সহীহঃ বোখারি ও মুসলিম। বেতের নামাজের নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-৩৫৬ কুরআন হিফয করার পর তা ভুলে যাওয়ার পরিণাম

১৪৭৪. সাদ ইবনিউবাদাহ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি কুরআন পাঠ (মুখস্ত) করার পর তা ভুলে যায়, সে ক্বিয়াময়াতের দিন আল্লাহর সাথে পঙ্গু অবস্থায় (বা খালি হাতে) সাক্ষাত করিবে।

বেতের নামাজের নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

অনুচ্ছেদ-৩৫৭ কুরআন সাত হরফে অবতীর্ণ হয়েছে

১৪৭৫. উমার ইবনিল খাত্তাব (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি হিশাম ইবনি হাকীম ইবনি হিযামকে সূরাহ আল-ফুরক্বান আমার পড়ার নিয়মের ব্যতিক্রম পড়তে শুনিয়াছি। অথচ রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) নিজে আমাকে তা পড়িয়েছেন। আমি তার উপর ঝাপিয়ে পড়তে চাইলাম। কিন্তু আমি তাকে পড়া শেষ করতে সুযোগ দিলাম। তার নামাজ শেষ হলে আমি আমার চাদর দিয়ে তার গলা পেঁচিয়ে ধরে তাঁকে টেনে রসূলুল্লাহর (সাঃআঃ) কাছে নিয়ে এসে বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আমি তাকে সূরাহ আল-ফুরক্বান পড়তে শুনিয়াছি আপনি আমাকে যেভাবে পড়িয়েছেন তার বিপরীতভাবে। রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) তাকে বললেনঃ আচ্ছা পাঠ করো তো! তখন সে ঐরূপে পড়লো যেভাবে আমি তাকে পড়তে শুনিয়াছি। রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বললেনঃ তা এভাবেই অবতীর্ণ হয়েছে। অতঃপর তিনি আমাকে বললেনঃ আচ্ছা তুমি পড়ো তো। তখন আমিও পাঠ করলাম। তিনি বললেনঃ এভাবেই অবতীর্ণ হয়েছে। অতঃপর তিনি বললেনঃ এ কুরআন সাত হরফে অবতীর্ণ হয়েছে। সুতরাং যেভাবে পড়তে সহজ হয় পড়ো।

সহীহঃ বোখারি ও মুসলিম। বেতের নামাজের নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১৪৭৬. মামার (রঃ) হইতে বর্ণিতঃ

ঈমাম যুহরী (রঃ) বলেছেন, উল্লেখিত বর্ণের পার্থক্য এক একটি বর্ণে সীমিত (অর্থাৎ তা কেবল অক্ষরিক পার্থক্য), এখানে হালাল-হারাম সম্পর্কে কোন বিভেদ নেই।

সহিহ মাক্বতূঃ মুসলিম। বেতের নামাজের নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ মাকতু

১৪৭৭. উবাই ইবনি কাব (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ হে উবাই! আমাকে কুরআন শিখানো হয়েছে। আমাকে বলা হলো, এক হরফে নাকি দু হরফে? তখন আমার সঙ্গী ফেরেশতা বলিলেন, বলুন, দু হরফে। আমি বললাম, দু হরফে। অতঃপর আমাকে বলা হলো, দু হরফে নাকি তিন হরফে? আমার সঙ্গী ফেরেশতা বলিলেন,বলুন, তিন হরফে। তখন আমি বললামঃ আমি তিন হরফে (রীতিতে) পাঠ করতে চাই। এভাবে পর্যায়ক্রমে সাত হরফে পৌঁছে। অতঃপর ফেরেশতা বলিলেন, এর যে কোনো রীতিতে পাঠ করা মুর্খতার নিরাময় এবং নামাজের জন্য যথেষ্ট। অতঃপর বলিলেন, আপনি সামীআন,আলীমান,আযীযান, হাকীমান- এর স্থলে অন্য কোনো সিফাত পরিবর্তন করে পাঠ করলে দোষ নেই, যতক্ষণ পর্যন্তআযাবের আয়াতকে রহমত দিয়ে এবং রহমাতের আয়াতকেআযাবের আয়াত দিয়ে পরিবর্তন না করা হয়।

বেতের নামাজের নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১৪৭৮. উবাই ইবনি কাব (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

একদা নাবী (সাঃআঃ) বনু গিফারের কূপ বা ঝর্ণার নিকট অবস্থানকালে জিবরাঈল (আঃ) এসে বলিলেন, আল্লাহ আপনার উম্মাতকে এক হরফে (রীতিতে) কুরআন পড়ানোর জন্য আপনাকে আদেশ করিয়াছেন। তিনি বলেন, আমি আল্লাহর কাছে তাহাঁর ক্ষমা ও উদারতা কামনা করি যে, আমার উম্মাত (ভাষা ও আঞ্চলিকতার বিভিন্নতার দরুন) এই এক হরফে পাঠ করতে সক্ষম হইবে না। অতঃপর জিবরাঈল দ্বিতীয়বার এসে আগের মতই বলিলেন। অবশেষে সাত হরফ পর্যন্ত পৌঁছে বলিলেন, আল্লাহ আপনার উম্মাতকে সাত হরফে কুরআন পড়াতে আপনাকে আদেশ করিয়াছেন। আপনার উম্মাত এর যে কোনো হরফে পড়লেই তাঁদের পড়া নির্ভুল হইবে।

বেতের নামাজের নিয়ম হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

Comments

Leave a Reply