রমযান ও শবে কদর এর রাত সম্পর্কে হাদিস সমূহ বর্ণনা

রমযান ও শবে কদর এর রাত সম্পর্কে হাদিস সমূহ বর্ণনা

রমযান ও শবে কদর এর রাত সম্পর্কে হাদিস সমূহ বর্ণনা , এই অধ্যায়ে মোট হাদীস ৩০ টি (১৩৭১ – ১৪০০) >>আবুদ দাউদ শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন, রমযান

অধ্যায়ঃ ৬, অনুচ্ছেদঃ ৩১৮-৩২৭=১০টি, হাদীসঃ (১৩৭১-১৪০০)=৩০টি

অনুচ্ছেদ-৩১৮ রমযান মাসের ক্বিয়াম
অনুচ্ছেদ-৩১৯ সবে কদর এর রাত সম্পর্কে
অনুচ্ছেদ-৩২০ যারা বলেন, লাইলাতুল ক্বদর একুশ তারিখের রাতে
অনুচ্ছেদ-৩২১ যিনি বর্ণনা করেন ক্বদরের রাত সতের তারিখে
অনুচ্ছেদ-৩২২ যিনি বর্ণনা করেন, (ক্বদরের রাত রমাযানের) শেষ সপ্তাহে
অনুচ্ছেদ-৩২৩ যিনি বালেন, সাতাশের রাত শবে ক্বদর
অনুচ্ছেদ-৩২৪ যিনি বলেন, রমাযানের যে কোন রাতে শবে ক্বদর অনুষ্ঠিত হয়
অনুচ্ছেদ-৩২৫ কুরআন কত দিনে খতম করতে হয়
অনুচ্ছেদ-৩২৬ কুরআন নির্ধারিত অংশে ভাগ করে তিলাওয়াত করা
অনুচ্ছেদ-৩২৭ আয়াতের সংখ্যা সম্পর্কে

অনুচ্ছেদ-৩১৮ রমযান মাসের ক্বিয়াম

১৩৭১. আবু হুরাইরাহ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) রমযান মাসের ক্বিয়ামে খুবই উৎসাহী ছিলেন। তবে তিনি এ ব্যাপারে লোকদের প্রতি কঠোর নির্দেশ দিতেন না। তিনি বলিতেনঃ যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে সওয়াবের আশায় রমযানের রাতে নামাজে দাঁড়ায়, তার অতীতের গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হয়। রসূলুল্লাহর (সাঃআঃ) ইন্তিকাল পর্যন্ত এর বিধান এরূপই থাকলো। অতঃপর আবু বাকর (রাঃআঃ) এর পূর্ণ খিলাফাত ওউমার (রাঃআঃ) এর খিলাফাতের প্রথম দিকেও এ নিয়ম চালূ থাকে।

সহীহঃ বোখারি ও মুসলিম। কিন্তু বোখারিতে “রসূলুল্লাহর ইন্তিকাল পর্যন্ত…” অংশটুকু যুহরীর বক্তব্য হিসেবে এসেছে। ঈমাম আবু দাউদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, অনুরূপ বর্ণনা করিয়াছেনউক্বাইল, ইউনুস ও আবু উওয়ায়স। তবে তাতে রহিয়াছে,যে ব্যক্তি রমযানের সওম পালন ও ক্বিয়াম করে। হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১৩৭২. আবু হুরাইরাহ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি এ হাদিস নাবী (সাঃআঃ) এর সুত্রে বর্ণনা করেনঃ যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে সওয়াবের আশায় রমযানে সওম পালন করে তার পূর্বের গুনাহ ক্ষমা করা হয় এবং যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে সওয়াবের আশায় কদরের রাতে ক্বিয়াম করে তারও পূর্বের গুনাহ ক্ষমা করা হয়।

সহীহঃ বোখারি ও মুসলিম। রমযান হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১৩৭৩. আয়েশা (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী (সাঃআঃ) মাসজিদে (তারাবীহ) নামাজ আদায় করলে লোকেরাও তাহাঁর সাথে নামাজ আদায় করলো। পরবর্তী রাতেও তিনি নামাজ আদায় করেন এবং তাতে অনেক লোকের সমাগম হয়। অতঃপর পরবর্তী (তৃতীয়) রাতেও লোকজন সমবেত হলো, কিন্তু রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বেরিয়ে তাহাঁদের কাছে এলেন না। অতঃপর ভোর হলে তিনি বললেনঃ তোমরা কি করেছো আমি তা দেখেছি। তবে তোমাদের উপর ফারয করে দেয়া হইতে পারে, এ আশংকায় আমি তোমাদের কছে আসিনি। এটি রমযান মাসের ঘটনা।

সহীহঃ বোখারি ও মুসলিম। রমযান হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১৩৭৪. আয়েশা (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, লোকেরা রমযান মাসে মাসজিদে বিচ্ছিন্নভাবে নামাজ আদায় করতো। আমার প্রতি রসূলুল্লাহর (সাঃআঃ) নির্দেশ মোতাবেক আমি তাহাঁর জন্য একটা মাদুর বিছিয়ে দিলে তিনি তার উপর নামাজ আদায় করিলেন। অতঃপর বর্ণনাকারী ঘটনাটি বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, অতঃপর নাবী (সাঃআঃ) বললেনঃ হে লোক সকল! আল্লাহর শপথ! আল্লাহর প্রশংসা, আমার রাতটি আমি গাফিলভাবে অতিবাহিত করি নাই এবং তোমাদের অবস্থাও আমার নিকট গোপন থাকেনি। {১৩৭৪}

হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ

১৩৭৫. আবু যার (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) এর সাথে রমযান মাসের সওম পালন করতাম। তিনি এ মাসে (প্রথম দিকের অধিকাংশ দিনই) আমাদেরকে নিয়ে (তারাবীহ) নামাজ আদায় করেননি। অতঃপর রমযানের সাত দিন বাকী থাকতে তিনি আমদেরকে নিয়ে নামাজ আদায় করিলেন রাতের এক-তৃতীয়াংশ পর্যন্ত। তিনি পরবর্তী রাতে আমাদেরকে নিয়ে (মাসজিদে) নামাজ আদায় করিলেন না। অতঃপর পঞ্চম রাতে তিনি আমাদেরকে নিয়ে নামাজে দাঁড়িয়ে অর্ধেক রাত অতিবাহিত করেন। আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! যদি আপনি এ পুরো রাতটি আমাদেরকে নিয়ে নামাজে দাঁড়িয়ে থাকতেন। বর্ণনাকারী বলেন, তিনি বললেনঃ কোন ব্যক্তি ইমামের সাথে (ঈশার) নামাজ আদায় করে প্রত্যাবর্তন করলে তাকে পুরো রাতের নামাজ আদায়কারী হিসেবে গণ্য করা হয়। তিনি বলেন, অতঃপর পরবর্তী চতুর্থ রাতে তিনি (মাসজিদে) নামাজ আদায় করেননি। যখন তৃতীয় রাত এলো তিনি তার পরিবার-পরিজন, স্ত্রী ও অন্য লোকদের একত্র করিলেন এবং আমাদেরকে নিয়ে এত দীর্ঘক্ষণ নামাজ আদায় করিলেন যে, আমরাফালাহ ছুটে যাওয়ার আশংকা করলাম। জুবাইর ইবনি নুফাইর বলেন, আমি জিজ্ঞসা করলাম,ফালাহ কি? তিনি বলিলেন, সাহারী খাওয়া। অতঃপর তিনি এ মাসের অবশিষ্ট রাতে আমাদেরকে নিয়ে নামাজ আদায় করতে দাঁড়াননি।

রমযান হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১৩৭৬. আয়েশা (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

রমাযানের শেষ দশক এলে নাবী (সাঃআঃ) সারা রাতই জাগ্রত থাকতেন, (ইবাদতের উদ্দেশে) শক্তভাবে কোমড় বাঁধতেন এবং পরিবারের লোকদের জাগাতেন।

সহীহঃ বোখারি ও মুসলিম। হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১৩৭৭. আবু হুরাইরাহ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একদা রমযান মাসে রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বেরিয়ে দেখলেন যে, মাসজিদের একপাশে কতিপয় লোক নামাজ আদায় করছে। তিনি জিজ্ঞেস করলেনঃ এরা কারা? বলা হলো, এরা কুরআন মুখস্ত না জানার কারণে উবাই ইবনি কাব (রাঃআঃ) এর ঈমামতিতে (তারাবীহ) নামাজ আদায় করছে। নাবী (সাঃআঃ) বললেনঃ এরা ঠিকই করছে এবং চমৎকার কাজই করছে! {১৩৭৭}

দুর্বল। ঈমাম আবু দাউদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, এ হাদিস শক্তিশালী নয়। মুসলিম ইবনি খালিদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) দুর্বল বর্ণনাকারী। {১৩৭৭} সুনান বায়হাকী (২/১৯৫) মুসলিম ইবনি খালিদ হইতে। সানাদের মুসলিম ইবনি খালিদকে ঈমাম আবু দাউদ দুর্বল বলেছেন। অনুরূপ বলেছেন হাফিযআত-ত্বাকরীব গ্রন্থে।n হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

অনুচ্ছেদ-৩১৯ সবে কদর এর রাত সম্পর্কে

১৩৭৮. যির ইবনি হুবাইশ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি উবাই ইবনি কাব (রাঃআঃ)-কে বললাম, হে আবুল মুনযির! আমাকে লাইলাতুল ক্বদর সম্পর্কে বলুন। কেননা আমাদের সাথী (ইবনি মাসউদ)-কে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন,কেউ সারা বছর ক্বিয়ামুল লাইল করলে সে তা পেয়ে যাবে। এ কথা শুনে উবাই বলিলেন, আল্লাহ আবুআবদুর রহমানের প্রতি দয়া করুন। আল্লাহর শপথ! তিনি তো জানেন, ক্বদর রাত রমযান মাসেই রহিয়াছে। {১৩৭৮}

বর্ণনাকারী মুসাদ্দাদ আরো বলেন, তিনি (ইবনি মাসউদ) এজন্যই তা প্রকাশে অপছন্দ করিয়াছেন, যেন লোকেরা কোন নির্দ্দিষ্ট একটি রাতের উপর নির্ভর না করে। অতঃপর উভয় বর্ণনাকারীর বর্ণনা একই রকম। আল্লাহর শপথ! তা হচ্ছে রমাযানের সাতাশ তারিখ। আমি বললাম, হে আবুল মুনযির! আপনি তা কিভাবে জানলেন? তিনি বলিলেন, আমাদের নিকট রসূলুল্লাহর (সাঃআঃ) বর্ণনাকৃত নিদর্শন দ্বারা।আসিম (রাঃআঃ) বলেন, আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম, কি নিদর্শন? তিনি বলিলেন, ঐ রাতের ভোরের সূর্য উপরে না উঠা পর্যন্ত নিস্প্রভ থাকিবে, যেন একটি থালার মত। হাসান সহীহঃ মুসলিম। হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ

১৩৭৯. দামরাহ ইবনি আবদুল্লা ইবনি উনাইস (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে তার পিতার সূত্র হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একবার আমি বনু সালামাহ্র মাজলিসে উপস্থিত হই এবং সেখানে আমিই ছিলাম বয়সে ছোট। তারা বলিলেন, আমাদের মাঝে রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ)-কে ক্বদর রাত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করার মত কেউ আছে কি? ঘটনাটি রমাযানের একুশ তারিখ সকাল বেলার। বর্ণনাকারী বলেন, তখন আমি এ উদ্দেশে বের হই এবং মাগরিবের নামাজে রসূলুল্লাহর (সাঃআঃ) সাক্ষাত লাভ করি। আমি তাহাঁর ঘরের দরজায় দাঁড়িয়ে থাকলাম। তিনি আমার পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় আমাকে ভিতরে প্রবেশ করতে বললে আমি প্রবেশ করি। এ সময় তাহাঁর রাতের খাবার আনা হলো। খাবার কম থাকায় আমি সামান্য খেয়েছি। তিনি খাওয়া শেষ করে বললেনঃ আমার জুতা দাও। এরপর তিনি উঠলে আমিও তাহাঁর সাথে উঠি। তিনি জিজ্ঞেস করিলেন, তোমার কোনো প্রয়োজন আছে কি? আমি বললাম, হাঁ, বনু সালামাহ্র লোকেরা আপনার নিকটলাইলাতুল ক্বদর সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করার জন্যে আমাকে পাঠিয়েছেন। তিনি বললেনঃ আজ কত তারিখ? আমি বললাম, বাইশ। তিনি বললেনঃ তা আজ রাতেই। তিনি তেইশ তারিখের রাতের দিকে ইংগিত করেন।

হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ

১৩৮০. ইবনিআবদুল্লা ইবনি উনাইস আল-জুহানী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে তার পিতার সূত্র হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আমার একটি খামার রহিয়াছে, আমি ওখানেই অবস্থান করি এবং আল্লাহর প্রশংসা যে, আমি ওখানেই নামাজ আদায় করি। কাজেই আমাকে এমন একটি রাতের নির্দেশ দিন, যে রাতে আমি এ মাসজিদে (ইবাদতের উদ্দেশ্যে) অবস্থান করবো। তিনি বললেনঃ তেইশ তারিখের রাতে অবস্থান করো।

বর্ণনাকারী মুহাম্মদ ইবনি ইবরাহীম বলেন, আমি তার ছেলেকে জিজ্ঞেস করি, তোমার পিতা কেমন করতেন? তিনি বলেন, তিনি আসরের নামাজ আদায় করে মসজিদে প্রবেশ করে ফজরের নামাজ পর্যন্ত অবস্থান করতেন, কোন প্রয়োজনেই তিনি সেখান থেকে বের হইতেন না। অতঃপর ফজরের নামাজ আদায়ের পর মাসজিদের দ্বারে রক্ষিত তাহাঁর সওয়ারীর উপর চরে নিজের খামারে যেতেন।

হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ

১৩৮১.ইবনি আব্বাস (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী (সাঃআঃ) বলেনঃ তোমরা রমাযানের শেষ দশকেলাইলাতুল ক্বদর অন্বেষণ করো। রমাযানের নয় দিন বাকী থাকতে, সাত দিন বাকী থাকতে এবং পাঁচদিন বাকী থাকতে।

হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-৩২০ যারা বলেন, লাইলাতুল ক্বদর একুশ তারিখের রাতে

১৩৮২. আবু সাঈদ আল-খুদরী (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) রমাযানের মধ্যম দশকে ইতিকাফ করতেন। একবছর তিনি এভাবে ইতিকাফ করাকালে একুশ তারিখে তিনি ইতিকাফ হইতে বেরিয়ে বললেনঃ যে ব্যক্তি (মধ্যম দশকে) আমার সাথে ইতিকাফে শরীক হয়েছে, সে যেন শেষ দশ দিনও ইতিকাফ করে। আমি লাইলাতুল ক্বদর প্রত্যক্ষ করেছি কিন্তু আমাকে তা ভুলিয়ে দেয়া হয়েছে। আমি নিজেকে ক্বদরের রাতের সকালে পানি ও কাদায় সাজদাহ্‌ করতে দেখেছি। কাজেই তোমরা শেষ দশকে এবং প্রত্যেক বেজোড় রাতে তা অন্বেষণ করো। আবু সাঈদ (রাঃআঃ) বলেন, ঐ রাতে আকাশ থেকে বৃষ্টি বর্ষিত হলো, তখনকার মাসজিদ খেজুর পাতার চালনীর হওয়াতে ছাদ থেকে পানি পড়ছিলো। আবু সাঈদ (রাঃআঃ) বলেন, একুশ তারিখ সকালে আমার চোখ দিয়ে আমি রসূলুল্লাহর (সাঃআঃ) কপালে ও নাকে কাদামাটি লেগে থাকতে দেখেছি।

সহীহঃ বোখারি ও মুসলিম। হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১৩৮৩. আবু সাঈদ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ তোমরা রমাযানের শেষ দশকে লাইলাতুল ক্বদর অন্বেষণ করো এবং তা অন্বেষণ করো নয়, সাত এবং পাঁচের মধ্যে।

আবু নাদরাহ বলেন, আমি বললাম, হে আবু সাঈদ! গণনার ব্যাপারে আপনারা আমাদের চেয়ে অধিক জ্ঞাত। তিনি বলিলেন, তাতো বটেই! আমি জিজ্ঞেস করলাম, নয়, সাত এবং পাঁচ কি? তিনি বলিলেন, নয় হচ্ছে রমাযানের একুশ তারিখের রাত, সাত হলো তেইশের রাত এবং পাঁচ হলো পঁচিশ তারিখের রাত।

সহীহঃ মুসলিম। ঈমাম আবু দাউদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, এ হাদিসের কোন অংশ আমার নিকট অস্পষ্ট কিনা আমি তা অবহিত নই। হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-৩২১ যিনি বর্ণনা করেন ক্বদরের রাত সতের তারিখে

১৩৮৪. ইবনি মাসউদ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) আমাদেরকে বলেছেনঃ তোমরা লাইলাতুল ক্বদর অন্বেষণ করো রমাযানের সতের, একুশ ও তেইশ তারিখের রাতে। অতঃপর তিনি চুপ থাকলেন। {১৩৮৪}

{১৩৮৪} বায়হাক্বীসুনানুল কুবরা (৪/৩১০) আবু দাউদের সূত্রে এবং সানাদে সহিহ। হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

অনুচ্ছেদ-৩২২ যিনি বর্ণনা করেন, (ক্বদরের রাত রমাযানের) শেষ সপ্তাহে

১৩৮৫. ইবনি উমার (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ তোমরা লাইলাতুল ক্বদর রমাযানের শেষ সাত দিনে অন্বেষণ করো।১৩৮৫

সহীহঃ বোখারি ও মুসলিম। হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-৩২৩ যিনি বালেন, সাতাশের রাত শবে ক্বদর

১৩৮৬. মুআবিয়াহ ইবনি আবু সুফিয়ান (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী (সাঃআঃ) লাইলাতুল ক্বদর সম্পর্কে বলেছেনঃ লাইলাতুল ক্বদর সাতাইশের রাতে।

হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

অনুচ্ছেদ-৩২৪ যিনি বলেন, রমাযানের যে কোন রাতে শবে ক্বদর অনুষ্ঠিত হয়

১৩৮৭. আবদুল্লাহ্‌ ইবনি উমার (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ)-কেলাইলাতুল ক্বদর সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করা হলে তা আমি শুনি। তিনি বলেছেনঃ তা পুরো রমাযানেই নিহিত আছে। ঈমাম আবু দাউদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, সুফয়ান ও শুবাহ এ হাদিসটি আবু ইসহাক্ব হইতে ইবনিউমারের নিজস্ব বক্তব্য রূপে বর্ণনা করিয়াছেন, তাঁরা এর সানাদ নাবী (সাঃআঃ) পর্যন্ত পৌঁছাননি। {১৩৮৭}

দুর্বলঃ সহীহ্‌ হচ্ছে মাওকূফ। ১৩৮৭} বায়হাক্বীসুনানুল কুবরা (৪/৩০৭)। এর সানাদ দুর্বল। ক্বদর রাত বিষয়ক (১৩৭৮-১৩৮৭ নং) হাদিসসমূহ হইতে শিক্ষা ঃ ১। ক্বদরের রাত রমযান মাসেই নিহিত। ২। এটি খুবই ফাযীলাতপূর্ণ রাত। ৩। এ রাত রমাযানের শেষ দশকের বিজোড় রাত সমূহে নিহিত। ৪। প্রতি বছর ক্বদর রাত একই তারিখে অনুষ্ঠিত হয় না। বরং তা পরিবর্তন হয়। কাজেই বিজোড় রাতগুলোর মধ্যে কোনটিকে নির্দিষ্ট না করে রমাযানের ২১, ২৩, ২৫, ২৭ ও ২৯ এগুলোর প্রতিটি রাতেই ক্বদর অনুসন্ধান করতে হইবে। হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

অনুচ্ছেদ-৩২৫ কুরআন কত দিনে খতম করতে হয়

১৩৮৮. আবদুল্লাহ্‌ ইবনি আমর (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী (সাঃআঃ) তাকে বলেছেনঃ তুমি কুরআন এক মাসে খতম করিবে। তিনি বলিলেন, আমি এর চাইতে অধিক সামর্থ্ রাখি। তিনি (সাঃআঃ) বললেনঃ তাহলে বিশ দিনে খতম করিবে। তিনি বলিলেন, আমি এর চাইতে বেশি সামর্থ্ রাখি। তিনি (সাঃআঃ) বললেনঃ তাহলে পনের দিনে খতম করিবে। তিনি বলিলেন, আমি এর চেয়েও অধিক শক্তি রাখি। তিনি (সাঃআঃ) বললেনঃ তাহলে দশ দিনে খতম করিবে। তিনি বলিলেন, আমি আরো সামর্থ রাখি। তিনি (সাঃআঃ) বললেনঃ তাহলে সাত দিনে, কিন্তু এর চেয়ে অধিক করিবে না।

সহিহ ঃ বোখারি ও মুসলিম। মাম আবু দাউদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, মুসলিমের বর্ণনাটি পরিপূর্ণ। হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১৩৮৯. আবদুল্লাহ্‌ ইবনি আমর (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একদা রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) আমাকে বলেনঃ তুমি প্রত্যেক মাসে তিন দিন সওম পালন করিবে এবং কুরআন এক মাসে খতম করিবে। তারপর তিনি কুরআন খতমের সময় কমাতে থাকলে আমিও কমাতে থাকি। অতঃপর তিনি বললেনঃ তুমি একদিন সওম পালন করিবে এবং একদিন বিরতি দিবে।

সহিহ। আত্বা বলেন, আমরা আমার পিতার বর্ণনাতে মতভেদ করি, কেউ সাত দিন এবং কেউ পাঁচ দিনের কথা বর্ণনা করেন। হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১৩৯০. আবদুল্লাহ্‌ ইবনি আমর (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আমি কয়দিনে কুরআন খতম করবো? তিনি (সাঃআঃ) বললেনঃ এক মাসে। তিনি বলিলেন, আমি এর চেয়ে অধিক শক্তি রাখি। আবু মূসার বর্ণনায় রহিয়াছে অতঃপর আলোচনার মাধ্যমে সময়ের ব্যবধান কমিয়ে অবশেষে বলিলেন, সাত দিনে খতম করিবে। তিনি বলিলেন, আমি এর চেয়েও বেশি শক্তি রাখি। তিনি বললেনঃ যে ব্যক্তি তিন দিনের কমে কুরআন খতম করে, সে কুরআনকে হৃদয়ঙ্গম করতে পারেনি।

হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১৩৯১. আবদুল্লাহ্‌ ইবনি আমর (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) আমাকে বললেনঃ তুমি কুরআন এক মাসে খতম করিবে। তিনি বলেন, আমার এর চেয়ে অধিক শক্তি আছে। তিনি (সাঃআঃ) বললেনঃ তাহলে তিন দিনে খতম করিবে।

হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ

অনুচ্ছেদ-৩২৬ কুরআন নির্ধারিত অংশে ভাগ করে তিলাওয়াত করা

১৩৯২. ইবনিল হাদ্‌ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাফি ইবুন জুবাইর মুত্ব‌ইম (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) আমাকে জিজ্ঞেস করে বলিলেন, আপনি কুরআন মাজীদ কতটুকু পাঠ করেন? আমি বললাম, আমি কুরআন নির্দিষ্ট অংশে ভাগ করে পড়ি না। নাফি (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) আমাকে বলিলেন, নির্দিষ্ট অংশে ভাগ করে পড়ি না- এরূপ বলো না। কেননা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহিআলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃআমি কুরআনের একাংশ পাঠ করেছি। তিনি (ইবনিল হাদ্‌) বলেন, আমার ধারণা, এ হাদিস তিনি মুগীরাহ্‌ ইবনি শুবাহ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণনা করিয়াছেন।

হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১৩৯৩. আওস ইবনি হুযাইফাহ্ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একদা বনু সাক্বীফ গোত্রের একটি প্রতিনিধি দল সহ আমরা রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর কাছে যাই। তিনি বলেন, মুগীরাহ ইবনি শুবাহর সাথে চুক্তিবদ্ধ লোকেরা তার মেহমান হলো। রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বনু মালিককে তাহাঁর এক তাঁবুতে স্থান দিলেন। মুসাদ্দাদের বর্ণনায় রহিয়াছে ঃ বনু সাক্বীফের যে প্রতিনিধি দল রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ)- এর কাছে এসেছিল তাহাঁদের মধ্যে আওস ইবনি হুযাইফাহ্‌ও ছিলেন। তিনি বলেন, তিনি (সাঃআঃ) প্রত্যেক রাতেইশার নামাজের পর আমাদের কাছে এসে আমাদের সাথে কথাবার্তা বলিতেন। আবু সাঈদের বর্ণনায় আছে ঃ তিনি (সাঃআঃ) দাঁড়ানো অবস্থায় কথাবার্তা বলিতেন এবং (দীর্ঘক্ষণ) দাঁড়ানোর কারণে কখনো এক পায়ের উপর দাঁড়াতেন এবং কখনো আরেক পায়ের উপর। তিনি (সাঃআঃ) অধিকাংশ সময় আমাদেরকে তাহাঁর কুরাইশ সম্প্রদায়ের পক্ষ হইতে তাহাঁর উপর চালানো নির্যাতনের কথা শুনাতেন এবং বলিতেন ঃ আমরা ও তারা সমপর্যায়ের ছিলাম না, বরং মক্কায় আমরা ছিলাম অসহায় ও দূর্বল। অতঃপর আমরা মদিনায় চলে আসার পর যুদ্ধের পাল্লা কখনো আমাদের ও কখনো তাহাঁদের মধ্যে পরিবর্তিত হইতে থাকে। কখনো আমরা তাহাঁদের উপর বিজয়ী হতাম আবার কখনো তারা আমাদের উপর বিজয়ী হতো। এক রাতে তিনি (সাঃআঃ) আমাদের কাছে তাহাঁর আসার নির্দিষ্ট সময় থেকে অনেক দেরীতে আসলেন। আমরা বললাম, আপনি তো আজ রাতে আমাদের কাছে আসতে অনেক দেরী করিয়াছেন। তিনি বললেনঃ কুরআনের যে নির্ধারিত অংশ আমি নিয়মিত তিলাওয়াত করি, তা শেষ না করে এখানে আসা আমি পছন্দ করিনি। আওস (রাঃআঃ) বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ)- এর সাথীদের জিজ্ঞেস করি, প্রতিদিন আপনারা কিভাবে কুরআনকে ভাগ করে পড়েন? তারা বলিলেন, তিন সূরাহ, পাঁচ সূরাহ্‌, সাত সূরাহ্‌, নয় সূরাহ, এগার সূরাহ, তের সূরাহ এবং এককভাবে মুফাস্‌সাল সূরাহ্‌ সমূহ (অর্থাৎ সাত দিনে কুরআন খতম করি)। ঈমাম আবু দাউদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, আবু সাঈদের হাদিস পরিপূর্ণ। {১৩৯৩}

{১৩৯৩} ইবনি মাজাহ্ (অধ্যায় ঃ নামাজ ক্বায়িম, অনুঃ কতদিনে কুরআন খতম করা মুস্তাহাব, হাঃ ১৩৪৫), আহমাদ (৪/৯)উসমান ইবনিআবদুল্লাহ্‌ ইবনি আওস হইতে।উসমান ইবনিআবদুল্লাহ্‌ ইবনি আওস সম্পর্কে হাফিয বলেন ঃ মাক্ববুল। যা জাহালাতের একটি স্তর বিশেষ।হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

১৩৯৪. আবদুল্লাহ্‌ ইবনি আমর (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি তিন দিনের কম সময়ে কুরআন খতম করেছে, সে কিছুই হৃদয়ঙ্গম করতে পারেনি।

হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১৩৯৫. আবদুল্লাহ্‌ ইবনি আমর (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি নাবী (সাঃআঃ)-কে কুরআন খতমের সময়সীমা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি (সাঃআঃ) বলেনঃ চল্লিশ দিনে। অতঃপর বলেনঃ এক মাসে, অতঃপর বলেনঃ বিশ দিনে, অতঃপর বলেনঃ পনের দিনে, অতঃপর বলেনঃ দশ দিনে, সর্বশেষে বলেন, সাত দিনে। আর তিনি সাত দিনের কম উল্লেখ করেননি।

সহীহ্‌ ঃ তবে “সাত দিনের কমে” কথাটি শায। পূর্বের (১৩৯১ নং) হাদিসের এ কথাটির কারণে ঃ “তাহলে তিন দিনে খতম করিবে।” হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১৩৯৬. আলক্বামাহ ও আল-আসওয়াদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

তারা উভয়ে বলেন, এক ব্যক্তি ইবনি মাসউদ (রাঃআঃ)-এর নিকটে এসে বললো, আমি মুফাস্‌সাল সূরাহগুলো (সূরাহ হুজরাত থেকে সূরাহ নাস পর্যন্ত) এক রাকআতেই পাঠ করে থাকি। তিনি বলিলেন, এটা তো (খুবই দ্রুত তিলাওয়াত) কবিতা পাঠের অনুরূপ কিংবা গাছ থেকে শুকনো পাতা ঝরে পড়ার মতই। অথচ নাবী (সাঃআঃ) সমান দৈর্ঘ্যের দুটি সূরাহ একত্রে এক রাকআতে তিলাওয়াত করতেন। যেমন, সূরাহ আন-নাজ্‌ম ও আর-রাহমান এক রাকআতে এবং ওয়াকতারাবাত ও আল-হাক্কাহ আরেক রাকআতে। সূরাহ আত-তূর ও ওয়ায্-যারিয়াত এক রাকআতে এবং সূরাহ ইযা ওয়াক্বআত ও সূরাহ নূন অপর রাকআতে। সাআলা সায়িলুন ও ওয়ান-নাযিআতি এক রাকআতে, ওয়াইলুল্লিল মুতাফ্‌ফিফিন ওআবাসা আরেক রাকআতে। আল-মুদ্দাসির ও আল-মুয্‌যাম্মিল এক রাকআতে এবং হাল আতা ও লা উক্বসিমু বি-ইয়াওমিল ক্বিয়ামাহ্ অপর রাকআতে,আম্মা ইয়াতাসাআলুন ও ওয়াল-মুরসিলাত এক রাকআতে এবং আদ্‌-দুখান ও ইযাশ-শামসু কুব্বিরাত অপর রাকআতে। ঈমাম আবু দাউদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, কুরআনের সূরাহগুলোর এ তারতীবআবদুল্লাহ্‌ ইবনি মাসউদ (রাঃআঃ)-এর।

সহিহ ঃ বোখারি ও মুসলিম। হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১৩৯৭. আবদুর রহমান ইবনি ইয়াযীদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ

একদা আবু মাসঊদ (রাঃআঃ) বায়তুল্লাহ তাওয়াফ করছিলেন, এমন সময় আমি তাকে কুরআন পাঠ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি রাতে সূরাহ বাক্বারাহর শেষ আয়াত দুটি পাঠ করিবে, সেটা তার জন্য যথেষ্ট হইবে।

সহিহ ঃ বোখারি ও মুসলিম। হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১৩৯৮. আবদুল্লা ইবনি আমর ইবনিলআস (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি রাতের নামাজে দশটি আয়াত তিলাওয়াত করিবে, তার নাম গাফিলদের তালিকায় লিপিবদ্ধ করা হইবে না। আর যে ব্যক্তি (রাতের) নামাজে এক শত আয়াত পাঠ করিবে, তার নাম অনুগত বান্দাদের তালিকায় লিপিবদ্ধ করা হইবে। যে ব্যক্তি নামাজে দাঁড়িয়ে এক হাজার আয়াত তিলাওয়াত করিবে, তাকে অফুরন্ত পুরস্কার প্রাপ্তদের তালিকায় লিপিবদ্ধ করা হইবে।

রমযান হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১৩৯৯, আবদুল্লা ইবনি আমর হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, এক ব্যক্তি রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) এর নিকট এসে বললো, হে আল্লাহর রসূল! আমাকে কুরআন পড়া শিখান। তিনি বলিলেন,আলিফ-লাম-রা বিশিষ্ট তিনটি সূরাহ পাঠ করো। সে বললো, আমি বৃদ্ধ হয়ে গেছি, আমার অন্তর শক্ত হয়ে গেছে এবং আমার জিহ্বা ভারী হয়ে গেছে। তিনি বললেনঃ তাহলেহা-মীম বিশিষ্ট তিনটি সূরাহ পাঠ করো। সে পূর্বের ন্যায় উক্তি করলো। অতঃপর তিনি বললেনঃ এমন তিনটি সূরাহ পাঠ করো যেগুলোর শুরুতেসাব্বাহা বাইউসাব্বিহু আছে। সে এবারও অনুরুপ উক্তি করে বললো, হে আল্লাহর রসূল! আমাকে এমন একটি সূরাহ শিক্ষা দিন যা সর্বদিক হইতে পরিপূর্ণ। সুতরাং নাবী (সাঃআঃ) তাকে সূরাহ “ইযা যুলযিলাতিল আরদু যিলযালাহা” শেষ পর্যন্ত পাঠ করালেন। লোকটি বললো, ঐ সত্ত্বার শপথ! যিনি আপনাকে সত্যসহ পাঠিয়েছেন! আমি এর অতিরিক্ত করবো না। অতঃপর লোকটি চলে গেলে নাবী (সাঃআঃ) বললেনঃ লোকটি সফলকাম হয়েছে, লোকটি কামিয়াব হয়েছে। {১৩৯৯}

{১৩৯৯} আহমাদ (হাঃ ৬৫৭৫) শায়খ আহমাদ শাকির বলেন, হাদিসটি হাসান সহিহ, নাসায়ীআমালুল ইয়াওমি ওয়াল লাইলা (হাঃ ৭১৬), হাকিম (২/৫৩২) ঈমাম হাকিম বলেন ঃ বোখারি ও মুসলিমের শর্তে সহিহ। ঈমাম যাহাবী বলেন ঃ বরং কেবল সহিহ। আলবানী বলেন ঃ দুর্বল। হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

অনুচ্ছেদ-৩২৭ আয়াতের সংখ্যা সম্পর্কে

১৪০০. আবু হুরাইরাহ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ

নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ কুরআনে তিরিশ আয়াতবিশিষ্ট একটি সূরাহ রহিয়াছে। সূরাহটি তার পাঠকের জন্য সুপারিশ করিবে, শেষ পর্যন্ত তাকে ক্ষমা করে দেয়া হইবে। সূরাহটি হচ্ছে তাবারকাল্লাযী বিয়াদিহিল মুল্‌ক। {১৪০০}

রমযান হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস


Posted

in

by

Comments

Leave a Reply