মসজিদ ও জামাআত। জামাতে নামাজ পড়ার ফাদীলাত।

মসজিদ ও জামাআত

মসজিদ ও জামাআত। জামাতে নামাজ পড়ার ফাদীলাত , এই অধ্যায়ে মোট =৬৮ টি হাদীস (৭৩৫ – ৮০২) >> সুনানে ইবনে মাজাহ হাদিস এর মুল সুচিপত্র পড়ুন

পর্বঃ ৪ – মসজিদ ও জামাআত, অধ্যায়ঃ (১-১৯) = ১৯ টি

১. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি আল্লাহ্‌র জন্য একটি মসজিদ নির্মাণ করলো ।
২. অধ্যায়ঃ মসজিদ সমূহ সৌন্দর্যমণ্ডিত করা।
৩. অধ্যায়ঃ মসজিদ সমূহ নির্মাণের বৈধ স্থান।
৪. অধ্যায়ঃ যেসব স্থানে নামাজ পড়া মাকরূহ।
৫. অধ্যায়ঃ মসজিদ সমূহে যেসব কাজ করা মাকরূহ।
৬. অধ্যায়ঃ মসজিদে ঘুমানো।
৭. অধ্যায়ঃ সর্বপ্রথম যে মসজিদ নির্মিত হয়েছে।
৮. অধ্যায়ঃ গোত্রের এলাকায় বা মহল্লায় নির্মিত মসজিদেসমূহ।
৯. অধ্যায়ঃ মসজিদসমূহ পবিত্র ও পরিচ্ছন্ন রাখা এবং তাকে সুগন্ধিযুক্ত করা।
১০. অধ্যায়ঃ মসজিদে থুথু ফেলা মাকরূহ
১১. অধ্যায়ঃ মসজিদে হারানো জিনিস খুঁজে বেড়ানো নিষেধ।
১২. অধ্যায়ঃ উট ও বকরীর খোঁয়াড়ে নামাজ পড়া।
১৩. অধ্যায়ঃ মসজিদে প্রবেশের দুআ
১৪. অধ্যায়ঃ পদব্রজে নামাজ আদায় করিতে যাওয়া।
১৫. অধ্যায়ঃ মসজিদ থেকে দূরে আরো দূরে বসবাসকারীর জন্য মহা পুরস্কার রয়েছে।
১৬. অধ্যায়ঃ জামাআতে নামাজ পড়ার ফাদীলাত।
১৭. অধ্যায়ঃ সালাতের জামাআত ত্যাগ করার ব্যাপারে কঠোর হুঁশিয়ারি।
১৮. অধ্যায়ঃ ইশা ও ফজরের নামাজ জামাআতে পড়ার ফাদীলাত।
৪/১৯. অধ্যায়ঃ মসজিদসমূহে যাতায়াত বাধ্যতামূলক করে নেয়া এবং সালাতের জন্য অপেক্ষারত থাকা।

১. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি আল্লাহ্‌র জন্য একটি মসজিদ নির্মাণ করলো ।

৭৩৫ ঃ উমার ইবনিল খাত্তাব [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে বলিতে শুনিয়াছিঃ  যে ব্যক্তি আল্লাহ্‌র নামের যিকিরের জন্য একটি মসজিদ নির্মাণ করে, আল্লাহ তার জন্য জান্নাতে একটি প্রাসাদ তৈরি করেন। {৭৩৩}

{৭৩৩} আহমাদ ১২৭, ৩৭৮। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। উক্ত হাদিসের রাবি ওয়ালীদ বিন আবুল ওয়ালীদ সম্পর্কে ইমাম যাহাবী আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি সিকাহ। ইবনি হিব্বান বলেন, তিনি তিনি হাদিস বর্ণনায় কখনো কখনো সিকাহ রাবির বিপরীত বর্ণনা করেন। হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৭৩৬ ঃ উসমান বিন আফ্‌ফান [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে বলিতে শুনিয়াছিঃ  যে ব্যক্তি আল্লাহ্‌র জন্য একটি মসজিদ নির্মাণ করে, আল্লাহ অনুরূপভাবে তার জন্য জান্নাতে একটি ঘর তৈরি করেন। {৭৩৪}

{৭৩৪} বোখারি ৪৫০, মুসলিম ৫৩১-২, তিরমিজি ৩১৮, আহমাদ ৪৩৬, দারিমি ১৩৯২। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৭৩৭ ঃ আলী বিন আবু তালিব [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, যে ব্যক্তি নিজ সম্পদ ব্যয়ে আল্লাহ্‌র জন্য একটি মসজিদ নির্মাণ করে, আল্লাহ তার জন্য জান্নাতে একটি ঘর তৈরি করেন। {৭৩৫}

{৭৩৫} যইফ। তাখরিজ আলবানিঃ রওযুন পাঠীর ৮৮৬। উক্ত হাদিসের রাবি ১. আব্বাস বিন উসমান দিমাশকী সম্পর্কে ইমাম যাহাবী সিকাহ বললেও ইবনি হিব্বান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় কখনো কখনো সিকাহ রাবির বিপরীত বর্ণনা করেন। ২. ইবনি লাহীআহ সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তার হাদিসের ব্যাপারে কোন সমস্যা নেই। আমর বিন ফাল্লাস বলেন, তার কিতাবসমূহ পুড়ে যাওয়ায় হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ করেন, কিতাবসমুহ পুড়ে যাওয়ায় যে হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন তা দুর্বল। হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৭৩৮ ঃ জাবির বিন আবদুল্লাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, যে ব্যক্তি আল্লাহ্‌র জন্য টিড্ডির ঢিবির ন্যায় বা তার চাইতেও ক্ষুদ্র একটি মসজিদ নির্মাণ করে, আল্লাহ তার জন্য জান্নাতে একটি ঘর নির্মাণ করেন। {৭৩৬}

{৭৩৬} সহিহ। হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

২. অধ্যায়ঃ মসজিদ সমূহ সৌন্দর্যমণ্ডিত করা।

৭৩৯ আনাস বিন মালিক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, যতক্ষণ পর্যন্ত লোকেরা মসজিদ এর সৌন্দর্য ও সুসজ্জিতকরণ নিয়ে পরস্পর গর্ব না করিবে ততক্ষণ কিয়ামাত সংঘটিত হইবে না। {৭৩৭}

{৭৩৭} নাসায়ি ৬৮৯, আবু দাউদ ৪৪৯, আহমাদ ১১৯৭১, ১২০৬৪, ১২১২৮, ১২৯৯১, ১৩৬০৬; দারিমি ১৪০৮। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ মিশকাত ৭১৯, সহিহ আবু দাউদ ৪৭৫।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৭৪০ ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, আমার মনে হয়, তোমরা আমার পরে তোমাদের মসজিদসমূহকে ইহুদীদের সেনাগণ ও নাসারাদের গির্যার ন্যায় বিশালাকার প্রাসাদরূপে তৈরি করিবে। {৭৩৮}

{৭৩৮} আবু দাউদ ৪৪৮, যঈফাহ ২৭৩ তাহকিক আলবানিঃ জইফ। তাখরিজ আলবানিঃ জামি সগীর ৭৪৩ জইফ, যঈফা ২৭৩৩ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি জুবারাহ ইবনিল মুগাল্লিস সম্পর্কে মুসলিম বিন কায়স বলেন, ইনশাআল্লাহ্‌ [আল্লাহ্‌ চায়তো] তিনি সিকাহ। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি মিথ্যুক ও হাদিস বানিয়ে বর্ণনা করেন। ইমাম বোখারি বলেন, তিনি মুদতারাবভাবে হাদিস বর্ণনা করেন। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, তার একাধিক মুনকার হাদিস রয়েছে।হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৭৪১ উমার ইবনিল খাত্তাব [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, কোন জাতির মসজিদসমূহকে সোনা-রূপা খচিত করা কত মন্দ কাজ! {৭৩৯}

তাহকিক আলবানিঃ দঈফ জিদ্দান।{৭৩৯} জইফ জিদ্দান। তাখরিজ আলবানিঃ জামি সগীর ৫০৭৫ জইফ জিদ্দান, যঈফা ৪৪৪৭ জইফ।হাদিসের তাহকিকঃ খুবই দুর্বল

৩. অধ্যায়ঃ মসজিদ সমূহ নির্মাণের বৈধ স্থান।

৭৪২ আনাস বিন মালিক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসসাল্লাম]-এর মসজিদ এর স্থানটি ছিল নাজ্জার গোত্রের, সেখানে কিছু সংখ্যক খেজুর গাছ এবং মুশরিকদের কবর ছিল। নবী [সাঃআঃ] তাহাদের বলেন, তোমরা এই জমিখণ্ড আমার নিকট বিক্রয় করো। তারা বলেন, আমরা কখনো এর বিনিময় মূল্য গ্রহন করবো না। রাবি বলেন, নবী [সাঃআঃ] মসজিদ নির্মাণের কাজ শুরু করেন এবং সাহাবীগণ তাঁকে মাটি ও কাদা দিতে থাকেন। আর নবী [সাঃআঃ] বলিতে থাকেনঃ “আখেরাতের জীবনই প্রকৃত জীবন। আপনি আনসার ও মুজাহিদদের ক্ষমা করুন”। ইতোপূর্বে যেখানেই সালাতের ওয়াক্ত হয়ে যেতো, নবী [সাঃআঃ] সেখানেই নামাজ আদায় করিতেন। {৭৪০}

{৭৪০} বোখারি ২৮৩৪, ৩৭৯৫, ৬৪১৩; মুসলিম ১৮০১-৪, আহমাদ ১১৭৬৮, ১২৩১১, ১২৩২১, ১২৩৪৬, ১২৪৩৯, ১২৫৩৯, ১২৭১৪, ১২৭৭৯, ১২৭৯৬, ১২৮৪৬, ১৩১৪৯, ১৩২৩৪, ১৩৫০৯, ১৩৫৪৩, ১৩৬৫৪। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ৪৭৭-৪৭৮। হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৭৪৩ উসমান বিন আবুল আস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাকে তায়েফবাসীদের জন্য তাহাদের মূর্তির পাদপিঠে মসজিদ নির্মাণের নির্দেশ দেন। {৭৪১}

{৭৪১} আবু দাউদ ৪৫০ তাহকিক আলবানিঃ জইফ। তাখরিজ আলবানিঃ আবু দাউদ ৪৫০ জইফ।হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৭৪৪ ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তাকে ময়লা-আবর্জনা ফেলার স্থান সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলো। তিনি নবী [সাঃআঃ]-এর বরাতে বলেন, কয়েকবার পানি ঢেলে দেয়ার পর তথায় নামাজ পড়া যাবে। {৭৪২}

{৭৪২} জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি আমর বিন উসমান সম্পর্কে আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তার ব্যপারে সমালোচনা রয়েছে। ইবনি আদী বলেন, তার থেকে হাদিস গ্রহন করা যায়। ইমাম নাসাঈ বলেন, তার হাদিস প্রত্যাখ্যানযোগ্য। আল উকায়লী বলেন, তিনি দুর্বল। আল আযদী বলেন, তিনি দুর্বল।হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৪. অধ্যায়ঃ যেসব স্থানে নামাজ পড়া মাকরূহ।

৭৪৫ আবু সাঈদ আল-খুদরী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, কবরস্থান ও গোসলখানা ব্যতীত সকল [পবিত্র] জায়গাই মসজিদ। {৭৪৩}

{৭৪৩} তিরমিজি ৩১৭, আবু দাউদ ৪৯২, দারিমি ১৩৯০। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ৩২০, সহিহ আবু দাউদ ৫০৭, মিশকাত ৭৩৭।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৭৪৬ ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] সাত স্থানে নামাজ আদায় করিতে নিষেধ করেছেনঃ ময়লা-আবর্জনাপূর্ণ স্থানে, কসাইখানায়, কবরস্থানে, রাস্তার মাঝখানে, গোসলখানায়, উটের খোঁয়াড়ে এবং কাবার ঘরের ছাদে। {৭৪৪}

{৭৪৪} তিরমিজি ৩৪৬ তাহকিক আলবানিঃ জইফ। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়া ২৮৭ জইফ, মিশকাত ৭৩৮ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি মুহাম্মাদ বিন ইবরাহীম আদ-দিমাশকী সম্পর্কে ইবনি আদি বলেন, মুনকারুল হাদিস ও তার নিকট হাদিস সংরক্ষিত নয়। ইবনি হিব্বান বলেন, তিনি বানিয়ে হাদিস বর্ণনা করেন। ইমাম দারাকুতনী বলেন, তিনি মিথ্যুক। হাকিম বলেন, তিনি একাধিক হাদিস বানিয়ে হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন। ২. যায়দ বিন জাবীরাহ সম্পর্কে ইমাম বুখারি বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় মুনকার। ইয়াকুব বিন সুফইয়ান বলেন, তিনি দুর্বল। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় খুবই দুর্বল। ইমাম নাসাঈ বলেন তিনি সিকাহ নন। হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৭৪৭ উমার ইবনিল খাত্তাব [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, সাত জায়গায় নামাজ পড়া জায়েয নয়ঃ কাবা ঘরের ছাদে, কবরস্থানে, ময়লা ফেলার স্থানে, কসাই খানায়, গোসলখানায়, উঁটের খোঁয়াড়ে ও রাস্তার মাঝখানে। {৭৪৫}

{৭৪৫} তিরমিজি ৩৪৬ তাহকিক আলবানিঃ জইফ। তাখরিজ আলবানিঃ যঈফাহ ৩২৩৫, ইরওয়াহ ২৮৭, মিশকাত ৭৩৮। উক্ত হাদিসের রাবি আবু সালিহ সম্পর্কে ইবনিল কাত্তান বলেন, তিনি সত্যবাদী। ইমাম নাসাঈ বলেন, তিনি সিকাহ নন। ইবনি আদী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ করেন। আবদুল মালিক বিন শুআয়ব তাকে সিকাহ বলেছেন।হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৫. অধ্যায়ঃ মসজিদ সমূহে যেসব কাজ করা মাকরূহ।

৭৪৮ ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, কতিপয় আচরণ মসজিদে নিষিদ্ধ। মসজিদকে চলাচলের পথ বানানো যাবে না, সেখানে অস্ত্রশস্ত্রের প্রদর্শনী করা যাবে না, তীর, বর্শা বা কামান বহন করা যাবে না, কাঁচা গোশত নেয়া যাবে না, হদ্দ কার্যকর করা যাবে না, কারো কিসাস কার্যকর করা যাবে না এবং একে বাজারে পরিণত করা যাবে না। {৭৪৬}

তাহকিক আলবানিঃ দঈফ, তবে মসজিদকে চলাচলের পথ করা যাবে না-এ অংশ সহিহ। {৭৪৬} নাই তাহকিক আলবানিঃ জইফ, তবে মাসজিদকে চলাচলের পথ করা যাবে না-এ অংশ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ জামি সগীর ২৮৩০ জইফ, যঈফা ১৪৯, জইফ জিদ্দান, সহিহা ১০০১। উক্ত হাদিসের রাবি যায়দ বিন জাবীরাহ সম্পর্কে ইমাম বোখারি বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় মুনকার। ইয়াকুব বিন সুফইয়ান বলেন, তিনি দুর্বল। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় খুবই দুর্বল। ইমাম নাসাঈ বলেন, তিনি সিকাহ নন।হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য

৭৪৯ আবদুল্লাহ বিন আমর ইবনিল আস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] মসজিদসমূহে ক্রয়-বিক্রয় করিতে এবং কবিতা আবৃত্তি করিতে নিষেধ করিয়াছেন। {৭৪৭}

{৭৪৭} তিরমিজি ৩২২, নাসায়ি ৭১৫, আবু দাউদ ১০৭৯। তাহকিক আলবানিঃ হাসান। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ৩৬৩, সহিহ আবু দাউদ ৯৯১।হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

৭৫০ ওয়াসিলা ইবনিল আসকা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

নবী [সাঃআঃ] বলেন, তোমরা তোমাদের মসজিদসমূহকে শিশু, পাগল, ক্রয়-বিক্রয়, ঝগড়া-বিবাদ, হৈ-চৈ, হদ্দ কার্যকরকরণ ও উন্মুক্ত অস্ত্র বহন থেকে হেফাযত করো। তোমরা তার দরজাসমূহের কাছে শৌচকর্মের জন্য ঢিলা রাখো এবং জুমুআহ্‌র দিন তাকে সুগন্ধময় করো। {৭৪৮}

{৭৪৮} নাই তাহকিক আলবানিঃ জইফ। তাখরিজ আলবানিঃ জইফ তারগিব ১৮৬ জইফ জিদ্দান, তালাকুর রগীব ১২০-১২১, ইরওয়াহ ৩৬২। উক্ত হাদিসের রাবি ১. হাদিস বিন নহাবান সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তার থেকে হাদিস লিখা হয় না। আলী ইবনিল মাদীনী বলেন, তিনি দুর্বল। আহমাদ বিন হাম্বল ও ইমাম বোখারি বলেন, মুনকারুল হাদিস। ইমাম নাসাঈ বলেন, তার হাদিস প্রত্যাখ্যানযোগ্য। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, কোন সমস্যা নেই। ২. উতবাহ বিন ইয়াকযান সম্পর্কে ইমাম নাসাঈ বলেন, তিনি সিকাহ নন। ৩. আবু সাঈদ সম্পর্কে ইমামগন বলেন, তিনি মাজহুল বা অপরিচিত।হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৬. অধ্যায়ঃ মসজিদে ঘুমানো।

৭৫১ ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর যুগে মসজিদে ঘুমাতাম। {৭৪৯}

{৭৪৯} বোখারি ৪৪০, ১১২২, ৩৭৩৯, ৭০২৯, ৭০২১; মুসলিম ২৪৭৯, তিরমিজি ৩২১, নাসায়ি ৭২২, আহমাদ ৪৫৯৩, ৬২৯৪; দারিমি ১৪০০, ২১৫২, মাজাহ ৩৯১৯। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৭৫২ তিখফাহ বিন কায়স [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি আসহাবে সুফফার অন্যতম সদস্য। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদের বললেনঃ তোমরা যাও। অতএব আমরা আয়িশা [রাঃআঃ]-এর ঘরে গেলাম এবং পানাহার করলাম। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বললেনঃ তোমরা ইচ্ছা করলে এখানেও ঘুমাতে পারো, আর চাইলে মসজিদেও যেতে পারো। রাবি বলেন, আমরা বললাম, বরং আমরা মসজিদে চলে যাই। {৭৫০}

তাহকিক আলবানীঃ দঈফ মুযত্বরাব। মুযতারিব।{৭৫০} আবু দাউদ ৫০৪০ তাহকিক আলবানিঃ জইফ মুযবত্বরাব। তাখরিজ আলবানিঃ মুযতারিব।হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য

৭. অধ্যায়ঃ সর্বপ্রথম যে মসজিদ নির্মিত হয়েছে।

৭৫৩ আবু যার আল-গিফারী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! সর্বপ্রথম কোন মসজিদটি নির্মিত হয়েছে? তিনি বলেন, মাসজিদুল হারাম। রাবি বলেন, আমি আবার বললাম, তারপর কোনটি? তিনি বলেন, তারপর মাসজিদুল আকসা। আমি জিজ্ঞেস করলাম, উভয়ের মধ্যে ব্যবধান কত বছরের? তিনি বলেন। চল্লিশ বছরের। এখন তোমার জন্য সমগ্র পৃথিবীই মসজিদ। অতএব যেখানেই তোমার সালাতের ওয়াক্‌ত হয়, সেখানেই তুমি নামাজ আদায় করিতে পারো। {৭৫১}

{৭৫১} বোখারি ৩৩৬৬, ৩৪২৫; মুসলিম ৫২০, নাসায়ি ৬৯০, আহমাদ ২০৮২৬, ২০৮৭৫, ২০৯১২, ২০৯৫৭। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৮. অধ্যায়ঃ গোত্রের এলাকায় বা মহল্লায় নির্মিত মসজিদেসমূহ।

৭৫৪ ইতবান বিন মালিক আস-সালিমী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি ছিলেন তাহাঁর গোত্র বনু সালিমের মসজিদ এর ইমাম এবং তিনি [রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম]-এর সাথে বদরের যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তিনি বলেন, আমি [রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম]-এর নিকট এসে বললাম, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আমার দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ হয়ে আসছে এবং সয়লাবের কারণে আমার ঘর ও আমার গোত্রের মসজিদ এর মধ্যকার নালাটি পরিপূর্ণ হয়ে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়। তা পার হয়ে আসা-যাওয়া আমার জন্য বেশি কষ্টকর। আপনি যদি মনে করেন, আমার বাড়িতে এসে আপনি একটা স্থানে নামাজ পড়বেন, যাকে আমি সালাতের স্থান বানাতে পারি, তাহলে তাই করুন। তিনি বলেন, আচ্ছা! তাই করবো। পরের দিন দুপুরের পূর্বে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ও আবু বকর [রাঃআঃ] আমার বাড়িতে আসেন এবং ভিতরে আসার অনুমতি চান। আমি তাঁকে ভিতর বাড়িতে আসার অনুমতি দিলাম। কিন্তু তিনি না বসে জিজ্ঞেস করলেনঃ তোমার ঘরের কোন জায়গায় তোমার আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী আমার নামাজ পড়া তুমি পছন্দ করো? আমি ঘরের যে স্থানে আমার নামাজ পড়া পছন্দ করি সেই জায়গাটি তাঁকে ইশারায় দেখিয়ে দিলাম। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] সালাতে দাঁড়ালেন এবং আমরাও তাহাঁর পিছনে সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়ালাম। তিনি আমাদের নিয়ে দুরাকআত নামাজ পড়েন। এরপর আমি তাঁকে খাযীরা [এক প্রকার খাদ্য] খাওয়ানোর জন্য অপেক্ষা করালাম, যা তাঁদের জন্য তৈরি করা হয়েছিল। {৭৫২}

{৭৫২} বোখারি ৭৭, ৪২৪-২৫, ৬৬৭, ৬৮৬, ৮৩৮, ৮৪০, ৪০১০, ৫৪০১; মুসলিম ৩৩, নাসায়ি ৭৮৮, ৮৪৪, ১৩২৭; আহমাদ ২৩১২৬, মুওয়াত্ত্বা মালিক ৪১৭; মাজাহ ৬৬০। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৭৫৫ আবু হুরাইরাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

এক আনসারী রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট লোক পাঠিয়ে তাঁকে অনুরোধ করেন, আপনি এসে আমার বাড়ির একটি স্থান আমার সালাতের জন্য নির্দিষ্ট করে দিন। যাতে সেখানে আমি নামাজ আদায় করিতে পারি। ঘটনাটি ছিল তার অন্ধ হয়ে যাওয়ার পরের। অতএব তিনি এসে তাই করিলেন। {৭৫৩}

{৭৫৩} সহিহ।

হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৭৫৬ আনাস বিন মালিক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমার কোন এক ফুফু নবী [সাঃআঃ] -এর জন্য খাবার তৈরি করেন। তিনি নবী [সাঃআঃ] কে বলেন, আমার একান্ত ইচ্ছা যে, আপনি আমার ঘরে এসে পানাহার করুন এবং তাতে নামাজ পড়ুন। অতএব তিনি এলেন। ঘরে একটি কালো চাটাই ছিল। তিনি ঘরের এক কোণের দিকে ইশারা করেন। আমার চাটাইয়ে পানি ছিটিয়ে [তা পরিষ্কার করে রেখে] দিলাম। তিনি নামাজ পড়লেন এবং আমরাও তাহাঁর সাথে নামাজ পড়লাম। আবু আবদুল্লাহ বিন মাজা [রহঃ] বলেন, যে চাটাই পুরানো হয়ে কালো হয়ে যায় তাকে ফাহ্‌ল বলে। {৭৫৪}

{৭৫৪} সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ৬৬৪।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৯. অধ্যায়ঃ মসজিদসমূহ পবিত্র ও পরিচ্ছন্ন রাখা এবং তাকে সুগন্ধিযুক্ত করা।

৭৫৭ আবু সাঈদ আল-খুদরী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, যে ব্যক্তি মসজিদ থেকে ময়লা দূর করে, আল্লাহ তার জন্য জান্নাতে একটি বাড়ি নির্মাণ করেন। {৭৫৫}

{৭৫৫} নাই তাহকিক আলবানিঃ জইফ। তাখরিজ আলবানিঃ জইফ ৫৩৬৭ জইফ, জইফ তারগিব ১৮৫, তালীকুর রগীব ১১৯।হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৭৫৮ আয়িশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] মহল্লায় মহল্লায় মসজিদ নির্মাণ করিতে, তা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে এবং তাতে খোশবু ছড়াতে নির্দেশ দিয়েছেন। {৭৫৬}

{৭৫৬} তিরমিজি ৫৯৪, আবু দাউদ ৪৫৫, মাজাহ ৭৫৯। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ মিশকাত ৭১৭, সহিহ আবু দাউদ ৪৭৯।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৭৫৯ আয়িশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] মহল্লায় মহল্লায় মসজিদ নির্মাণ করিতে, তা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করিতে এবং সুগন্ধি ছড়াতে নির্দেশ দিয়েছেন। {৭৫৭}

{৭৫৭} তিরমিজি ৫৯৪, আবু দাউদ ৪৫৫, মাজাহ ৭৫৮। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৭৬০ আবু সাঈদ আল-খুদরী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন তামিম আদ-দারী [রাঃআঃ]-ই প্রথম ব্যক্তি যিনি মসজিদে আলো-বাতির ব্যবস্থা করেন। {৭৫৮}

তাহকিক আলবানিঃ দঈফ জিদ্দান।{৭৫৮} জইফ জিদ্দান। উক্ত হাদিসের রাবি খালিদ বিন ইয়াস সম্পর্কে আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তার হাদিস প্রত্যাখ্যানযোগ্য। ইমাম বোখারি বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় মুনকার। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন তিনি নির্ভরযোগ্য নন বরং তিনি দুর্বল। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল এবং মুনকার। ইমাম নাসাঈ বলেন, তার হাদিস প্রত্যাখ্যানযোগ্য।হাদিসের তাহকিকঃ খুবই দুর্বল

১০. অধ্যায়ঃ মসজিদে থুথু ফেলা মাকরূহ

৭৬১ আবু হুরাইরাহ ও আবু সাঈদ আল-খুদরী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তারা উভয়ে বর্ণনা করেন যে, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] মসজিদ এর দেয়ালে থুথু বা কফ দেখিতে পেলেন তিনি একটি কাঁকর তুলে নিয়ে তা দিয়ে থুথু [কফ] মুছে ফেলেন, অতঃপর বলেন, তোমাদের কেউ থুথু ফেলতে চাইলে সে যেন তা তার সামনের দিকে এবং তার ডান দিকে না ফেলে, বরং তার বাম দিকে বা তার বাম পায়ের নিচে ফেলে। {৭৫৯}

{৭৫৯} বোখারি ৪০৯, ৪১১, ৪১৪, ৪১৬; মুসলিম ৫৪৮-৫০, নাসায়ি ৩০৯, ৭২৫; আবু দাউদ ৪৭৭, ৪৮০; আহমাদ ৭৩৫৭, ৭৪৭৮, ৭৫৫৪, ২৭৪৫৩, ৮০৯৮, ৯১০২, ৯৭৪৬, ১০৫০৮, ১০৬৪২, ১০৬৮০, ১০৮০১, ১১১৫৬, ১১২৩০, ১১৪২৭, ১১৪৬৯; দারিমি ১৩৯৮, মাজাহ ১০২২। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহা ২৭৪, ইরওয়াহ ১৮৪।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৭৬২ আনাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

নবী [সাঃআঃ] মসজিদ এর কেবলার দিকে থুথু দেখিতে পেয়ে খুবই রাগান্বিত হন, এমনকি তাহাঁর চেহারা রক্তিম বর্ণ ধারণ করে। এক আনসারী মহিলা এসে তা মুছে ফেলে এবং সেই স্থানে সুগন্ধি লাগিয়ে দেয়। তখন রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, এটা কত উত্তম। {৭৬০}

{৭৬০} বোখারি ৪০৫, নাসায়ি ৭২৮। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহা ৩০৫০। হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৭৬৩ আবদুল্লাহ বিন উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] মসজিদ এর কিবলার দিকে থুথু দেখিতে পান। তখন তিনি লোকেদের নিয়ে নামাজ পড়ছিলেন তিনি তা মুছে ফেলেন। অতঃপর নামাজ শেষে তিনি বলেন, যখন তোমাদের কেউ সালাতে রত থাকে, তখন আল্লাহ তার সামনে থাকেন, অতএব তোমাদের কেউ যেন নামাজরত অবস্থায় তার সামনের দিকে থুথু না ফেলে। {৭৬১}

{৭৬১} বোখারি ৪০৬, ৭৫৩, ১২১৩, ৬১১১; মুসলিম ৫৪৭, নাসায়ি ৭২৪, আবু দাউদ ৭৭৯, আহমাদ ৪৪৯৫, ৪৬৭০, ৪৮২৬, ৪৮৬২, ৪৮৯০, ৫১৩০, ৫৩১৩, ৫৩৮৫, ৫৭১১, ৬২২৯, ৬২৭০; মুওয়াত্ত্বা মালিক ৪৫৬, দারিমি ১৩৯৭। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ৪৯৮।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৭৬৪ আয়িশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

নবী [সাঃআঃ] মসজিদ এর কিবলার দিকে [নিক্ষিপ্ত] থুথু মুছে ফেলেন। {৭৬২}

{৭৬২} বোখারি ৪০৭, মুসলিম ৫৪৯, আহমাদ ২৪৬৩০, ২৫৪০৬; মুওয়াত্ত্বা মালিক ৪৫৭। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১১. অধ্যায়ঃ মসজিদে হারানো জিনিস খুঁজে বেড়ানো নিষেধ।

৭৬৫ বুরায়দাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] নামাজ পড়লেন। এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বললো, কে লাল উটের খোঁজ দিতে পারে [আমার লাল উটটি হারিয়ে গেছে]। নবী [সাঃআঃ] বলেন, তুমি যেন তা না পাও। মসজিদ যে উদ্দেশ্যে নির্মাণ করা হয়েছে তা সেই উদ্দেশ্যেই ব্যবহৃত হইবে। {৭৬৩}

{৭৬৩} আহমাদ ৫৬৯, ২২৫৩৫। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ তারগিব ১৯০।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৭৬৬ আবদুল্লাহ বিন আমর ইবনিল আস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] মসজিদে হারানো জিনিস খোঁজার ঘোষণা দিতে নিষেধ করিয়াছেন। {৭৬৪}

{৭৬৪} তিরমিজি ৩২২, আবু দাউদ ১০৭৯, আহমাদ ৬৬৩৮। তাহকিক আলবানিঃ হাসান। হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

৭৬৭ আবু হুরাইরাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

আমি রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]- কে বলিতে শুনিয়াছিঃ  কোন ব্যক্তি অপর ব্যক্তিকে মসজিদে হারানো জিনিস খোঁজার ঘোষণা দিতে শুনলে সে যেন বলে, আল্লাহ তোমাকে যেন তা ফিরিয়ে না দেন, কারণ এজন্য মসজিদ নির্মাণ করা হয়নি। {৭৬৫}

{৭৬৫} মুসলিম ৫৬৮, তিরমিজি ১৩২১, আবু দাউদ ৪৭৩, আহমাদ ৮৩৮২, ৯১৬১; দারিমি ১৪০১। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ৪৯২।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১২. অধ্যায়ঃ উট ও বকরীর খোঁয়াড়ে নামাজ পড়া।

৭৬৮ আবু হুরাইরাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, তোমরা বকরী বা উটের খোঁয়াড় ব্যতীত নামাজ পড়ার জায়গা না পেলে, বকরীর খোঁয়াড়ে নামাজ আদায় করিতে পারো কিন্তু উটের খোঁয়াড়ে পড়বে না। {৭৬৬}

{৭৬৬} তিরমিজি ৩৪৮, দারিমি ১৩৯১। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ মিশকাত ৭৩৯।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৭৬৯ আবদুল্লাহ বিন মুগাফফাল আল-মুযানী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] বলেছেন, তোমরা বকরীর খোঁয়াড়ে নামাজ আদায় করিতে পারো, কিন্তু উটের খোঁয়াড়ে নামাজ পড়ো না। কেননা তা শয়তানের থেকে সৃষ্ট। {৭৬৭}

{৭৬৭} নাসায়ি ৭৩৫, আহমাদ ২৭৮৫২, ১৬৩৫৭, ২০০১৮, ২০০৩৩। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৭৭০ সাবরা বিন মাবাদ আল-জুহানী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ উটের খোঁয়াড়ে নামাজ পড়া যাবে না, তবে বকরীর খোঁয়াড়ে নামাজ পড়া যাবে। {৭৬৮}

{৭৬৮} আহমাদ ১৪৯১৭ তাহকিক আলবানিঃ হাসান সহিহ।হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ

১৩. অধ্যায়ঃ মসজিদে প্রবেশের দুআ

ফাতিমাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] মসজিদে প্রবেশকালে বলিতেনঃ

بِسْمِ اللَّهِ وَالسَّلاَمُ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي ذُنُوبِي وَافْتَحْ لِي أَبْوَابَ رَحْمَتِكَ

বিস্‌মিল্লা-হি ওয়াস্‌সালা-মু আলা রাসূলিল্লাহ, আল্লা-হুম্মাগফিরলি জুনুবি ওয়াফতাহলি আবওয়া রহ্কামাতিকা, “আল্লাহর নামে [প্রবেশ] এবং আল্লাহর রসূলকে সালাম। হে আল্লাহ ! আমার গুনাহসমূহ ক্ষমা করুন এবং আমার জন্য আপনার দয়ার দরজাসমূহ উন্মুক্ত করে দিন”।

তিনি [মসজিদ থেকে] বের হওয়ার সময় বলিতেনঃ

‏ بِسْمِ اللَّهِ وَالسَّلاَمُ عَلَى رَسُولِ اللَّهِ اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي ذُنُوبِي وَافْتَحْ لِي أَبْوَابَ فَضْلِكَ

বিস্‌মিল্লা-হি ওয়াস্‌সালা-মু আলা রাসূলিল্লাহ, আল্লা-হুম্মাগফিরলি জুনুবি ওয়াফতাহলি আবওয়া ফাদলিকা, “আল্লাহর নামে [প্রস্থান] এবং সালাম আল্লাহর রসূলকে। হে আল্লাহ! আমার গুনাহসমূহ ক্ষমা করুন এবং আমার জন্য আপনার অনুগ্রহের দরজাসমূহ উন্মুক্ত করে দিন।” {৭৬৯}

[ইবনি মাজাহ ৭৭১ , সহিহ হাদিস]

৭৭২ আবু হুমায়দ আস-সাইদী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, তোমাদের যে কেউ মসজিদে প্রবেশকালে যেন নবী [সাঃআঃ] -এর প্রতি সালাম পেশ করে, তারপর যেন বলেঃ

اللَّهُمَّ افْتَحْ لِي أَبْوَابَ رَحْمَتِكَ

আল্লাহুম্মাফ তাহলি আবওয়াবা রহমাতিকা, “হে আল্লাহ! আমার জন্য আপনার রহমতের দরজাসমূহ উন্মুক্ত করে দিন”

এবং বের হওয়ার সময় যেন বলেঃ

اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ مِنْ فَضْلِكَ

আল্লাহুম্মা ইন্নি আসালুকা মিন ফাদলিকা, “হে আল্লাহ ! আমি আপনার নিকট আপনার অনুগ্রহ প্রার্থনা করি”। {৭৭০}

{৭৭০} মুসলিম ৭১৩, নাসায়ি ৭২৯, আবু দাউদ ৪৬৫, আহমাদ ১৫৬২৭, ২৩০৯৬; দারিমি ১৩৯৪, ২৬৯১। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ৪৮৪। উক্ত হাদিসের রাবি আবদুল ওয়াহহাব বিন দাহহাক সম্পর্কে ইমাম বোখারি বলেন, তার নিকট আশ্চর্য হাদিস শ্রবন করা যায়। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি বানিয়ে হাদিস বর্ণনা করেন। সালিহ জাযারাহ বলেন, তার হাদিসে অনেক মিথ্যা পাওয়া যায়। ইমাম নাসাঈ বলেন, তিনি সিকাহ নন বরং তিনি প্রত্যাখ্যানযোগ্য। মুহাম্মাদ বিন আওফ বলেন, তিনি একাধিক হাদিস বানিয়ে বর্ণনা করিয়াছেন। ২. ইসমাঈল বিন আয়্যাশ সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, আহলে শাম থেকে হাদিস বর্ণনায় কোন সমস্যা নেই। আলী ইবনিল মাদীনী, ইবনি আবু শায়বাহ, আমর ইবনিল ফাল্লাস ও দুহায়ম বলেন, শাম শহর থেকে হাদিস বর্ণনায় তিনি সিকাহ কিন্তু অন্য শহর থেকে হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। উক্ত হাদিসটি শাহিদ এর ভিত্তিতে সহিহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৭৭৩ আবু হুরাইরাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ তোমাদের যে কেউ মসজিদে প্রবেশকালে যেন নবী [সাঃআঃ] এর প্রতি সালাম পেশ করে, অতঃপর বলেঃ

اللَّهُمَّ افْتَحْ لِي أَبْوَابَ رَحْمَتِكَ

আল্লাহুম্মাফ তাহলি আবওয়াবা রহমাতিকা, “হে আল্লাহ! আমার জন্য আপনার রহমতের দরজাসমূহ খুলে দিন”

এবং বের হওয়ার সময়ও যেন নবী [সাঃআঃ]-এর প্রতি সালাম পেশ করে, অতঃপর বলেঃ

 اللَّهُمَّ اعْصِمْنِي مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيمِ

“হে আল্লাহ! আপনি আমাকে বিতাড়িত শয়তান থেকে রক্ষা করুন। ”

সহিহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১৪. অধ্যায়ঃ পদব্রজে নামাজ আদায় করিতে যাওয়া।

৭৭৪ আবু হুরাইরাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, তোমাদের কেউ উত্তমরূপে উদূ করার পর কেবল নামাজ পড়ার উদ্দেশেই মসজিদে আসে, আল্লাহ তার প্রতি কদমের বিনিময়ে তার একটি ধাপ মর্যাদা বাড়িয়ে দেন এবং তার একটি গুনাহ মুছে দেন যাবত না সে মসজিদে প্রবেশ করে। মসজিদে প্রবেশ করার পর সে যতক্ষণ সালাতের জন্য সেখানে অবস্থান করে, ততক্ষণ নামাজরত হিসাবেই গণ্য হয়। {৭৭২}

{৭৭২} বোখারি ১৭৬, ৪৭৭; তিরমিজি ৬০৩, নাসায়ি ৭০৫, আবু দাউদ ৫৫৯, আহমাদ ৭৩৮২। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ৫৬৮।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৭৭৫ আবু হুরাইরাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, সালাতের ইকামাত শুরু হলে তোমরা তার জন্য দ্রুত বেগে আসবে না, বরং ধীরে সুস্থে হেঁটে আসবে। এরপর সালাতের যতটুকু পাও তা পড়ো এবং যতটুকু ছুটে যায় তা পূর্ণ করো। {৭৭৩}

{৭৭৩} বোখারি ৬৩৬, ৯০৮; মুসলিম ৬০১-৪, তিরমিজি ৩২৭, নাসায়ি ৮৬১, আবু দাউদ ৫৭২-৭৩, আহমাদ ৭১৮৯, ৭২০৯, ৭২১১, ৭৬০৬, ২৭৪৪৫, ৮৭৪০, ৮৭৮৪, ৮৭৯৪, ৯২৩০, ৯৫২৫, ৯৬১৪, ৯৭৫৩, ৯৯৬৭, ১০৪৬৬, ১০৫১২; মুওয়াত্ত্বা মালিক ১৫২, দারিমি ১২৮২। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ৫৮০।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৭৭৬ আবু সাঈদ আল-খুদরী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে বলিতে শুনেছেনঃ আমি কি তোমাদের এমন জিনিসের কথা বলে দিবো না, যার দ্বারা আল্লাহ তাআলা তোমাদের গুনাহরাশি ক্ষমা করবেন এবং নেকীর পরিধিও বাড়ীয়ে দিবেন? তারা বলেন, হাঁ, হে আল্লাহর রাসূল! তিনি বলেন, কষ্টের সময় পূর্ণরূপে উদূ করা, মসজিদসমূহের দিকে বেশি বেশি কদম রাখা এবং এক সালাতের পর অপর সালাতের অপেক্ষায় থাকা। {৭৭৪}

{৭৭৪} আহমাদ ১০৬১১ তাহকিক আলবানিঃ হাসান সহিহ।হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ

৭৭৭ আবদুল্লাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

যে ব্যক্তি আগামীতে [কিয়ামাতে] মুসলিম হিসেবে আল্লাহ্‌র সাথে সাক্ষাত করে আনন্দিত হইতে চায়, সে যেন এই পাঁচ ওয়াক্‌ত সালাতের প্রতি যত্নবান হয়, যেখানে তার জন্য আযান দেয়া হয়। কেননা এটাই হল হেদায়াতের উত্তম পন্থা। আর আল্লাহ তোমাদের নবী [সাঃআঃ]-এর জন্য হেদায়াতের পন্থা নির্ধারণ করে দিয়েছেন। আমার জীবনের শপথ! তোমাদের সকলে যদি নিজ নিজ বাড়িতে নামাজ পড়ো, তবে তোমরা অবশ্যই তোমাদের নবীর সুন্নাত ত্যাগ করলে। আর তোমরা তোমাদের নবীর সুন্নাত ত্যাগ করলে অবশ্যই পথভ্রষ্ট হয়ে গেলে। অবশ্যই আমরা প্রকাশ্য মুনাফিক ব্যাতীত অপর কাউকে সালাতের জামাআত ত্যাগ করিতে দেখতাম না। আমি এমন ব্যাক্তিকেও দেখেছি, যিনি দুব্যাক্তির কাঁধে ভর করে জামাআতের কাতারে শারীক হইতেন। যে ব্যাক্তি উত্তমরূপে ওযু করে মসজিদে উপস্থিত হয়ে নামাজ পড়ে, তার প্রতিটি কদমের বিনিময়ে আল্লাহ তার এক ধাপ মর্যাদা বৃদ্ধি করেন এবং তার একটি গুনাহ মুছে দেন। {৭৭৫}

{৭৭৫} মুসলিম ৬৫৪, আবু দাউদ ৫৫০, আহমাদ ৩৫৫৪, দারিমি ১২৭৭। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ৩৮৮, সহিহ আবু দাউদ ৫৫৯। উক্ত হাদিসের রাবি ইবরাহীম আল হাজারী সম্পর্কে আল আযদী বলেন, তিনি সত্যবাদী কিন্তু হাদিস বর্ণনায় অধিক সন্দেহ করেন। ইবনি মাঈন, আবু যুরআহ আর-রাযী ও মুহাম্মাদ বিন সাদ তাকে দুর্বল বলেছেন। ইমাম বোখারি বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় মুনকার। ইয়াকুব বিন সুফইয়ান বলেন, তার হাদিস বর্ণনায় কোন সমস্যা নেই।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৭৭৮ আবু সাঈদ আল-খুদরী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, যে ব্যক্তি সালাতের উদ্দেশ্যে তার ঘর থেকে বের হয়ে যেতে যেতে বলেঃ “হে আল্লাহ! তোমার নিকট প্রার্থনাকারীদের যে অধিকার আছে তার উসীলায় তোমার নিকট প্রার্থনা করছি, এই পদব্রজের অধিকারের উসীলায় তোমার নিকট প্রার্থনা করছি। কেননা গৌরব, অহংকার, প্রদর্শনেচ্ছা প্রসিদ্ধি লাভ ইত্যাদির জন্য আমি মোটেই বের হইনি। আমি বের হয়েছি তোমার অসন্তোষের ভয়ে এবং তোমার সন্তুষ্টির অন্বেষায়। অতএব আমি তোমার নিকট প্রার্থনা করি যে, তুমি আগুন থেকে আমাকে বাঁচাবে এবং আমার গুনাহসমুহ ক্ষমা করিবে। কারন তুমি ছাড়া গুনাহ মাফ করার কেউ নেই, আল্লাহ তার প্রতি রহমতের দৃষ্টি দেন এবং সত্তর হাজার ফেরেশতা তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন। {৭৭৬}

{৭৭৬} আহমাদ ১০৮৭২ তাহকিক আলবানিঃ জইফ। তাখরিজ আলবানিঃ জামি সগীর ৫৫৭১ জইফ, জইফ তারগিব ২০১ জইফ-৯৯৬ মুনকার, যঈফা ২৪। উক্ত হাদিসের রাবি ফাদল বিন মুয়াফফাক আবুল জাহম সম্পর্কে আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। ২. আতিয়্যাহ সম্পর্কে মুহাম্মাদ বিন সাদ সিকাহ বললেও আহমাদ বিন হাম্বল তাকে দুর্বল বলেছেন। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তার হাদিস গ্রহন করা যায় কিন্তু তিনি দুর্বল। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, তার উপর নির্ভর করা যায় না।হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৭৭৯ আবু হুরাইরাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, রাতের অন্ধকারে মসজিদসমুহে যাতায়াতকারীদেরকে কিয়ামাতের দিনের পরিপূর্ণ নূরের সুসংবাদ দেওয়া হোক। {৭৭৭}

{৭৭৭} জইফ। তাখরিজ আলবানিঃ জামি সগীর ৫৯৩৬ জইফ, মিশকাত ৭২১, ৭২২; সহিহ, আবু দাউদ ৫৭০। উক্ত হাদিসের রাবি আবু রাফি ইসমাইল বিন রাফি সম্পর্কে আহমাদ বিন হাম্বল ও ইয়াহইয়া বিন মাঈন তাকে দুর্বল বলেছেন। আমর বিন ফাল্লাস বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল ও মুনকার।হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৭৮০ সাহল বিন সাদ আস-সাইদী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, রাতের অন্ধকারে মসজিদসমুহে যাতায়াতকারীদেরকে কিয়ামাতের দিনের পরিপূর্ণ নূরের সুসংবাদ দেওয়া হোক। {৭৭৮}

{৭৭৮} সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ মিশকাত ৭২১, ৭২২; সহিহ আবু দাউদ ৫৭০।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৭৮১ আনাস বিন মালিক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, রাতের অন্ধকারে মসজিদসমুহে যাতায়াতকারীদেরকে কিয়ামাতের দিনের পরিপূর্ণ নূরের সুসংবাদ দাও। {৭৭৯}

সহিহ। উক্ত হাদিসের রাবি সুলায়মান বিন দাউদ আস সায়িগ সম্পর্কে আল উকায়লী বলেন, তার হাদিসের অনুসরণ কেউ করিবে না। হাকিম বলেন, তিনি অপরিচিত। এ হাদিসটির ৮৩ টি শাহিদ হাদিস রয়েছে, তন্মধ্যে তিরমিযি ১ টি, আবু দাউদ ১ টি, ইবনি মাজাহ ২ টি, ইবনি খুযায়মাহ ২ টি, মুজামুল আওসাত ৫ টি ও বাকীগুলো অন্যান্য কিতাবে রয়েছে।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১৫. অধ্যায়ঃ মসজিদ থেকে দূরে আরো দূরে বসবাসকারীর জন্য মহা পুরস্কার রয়েছে।

৭৮২ আবু হুরাইরাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, মসজিদ থেকে দূরে আরও দূরে বসবাসকারীর জন্য রয়েছে মহা পুরস্কার। {৭৮০}

{৭৮০} আবু দাউদ ৫৫৬ তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ৫৬৫। উক্ত হাদিসের রাবি আব্দুর রহমান বিন মিহরান সম্পর্কে আল আযদী বলেন, তার ব্যাপারে সমালোচনা রয়েছে। ইবনি হিব্বান বলেন, তিনি সিকাহ। উক্ত হাদিসটি শাহিদ এর ভিত্তিতে সহিহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৭৮৩ উবাই বিন কাব [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, এক আনসারী ব্যক্তির বাড়ি ছিল মাদীনাহর শেষ প্রান্তে। সে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সাথে সালাতে উপস্থিত হইতে কখনো ভুল করতো না। রাবি বলেন, তার জন্য আমার মনে কষ্ট অনুভব করলাম। তাই আমি বললাম, হে অমুক! একটি গাধা কিনে নিলে তা তোমাকে গরম থেকে, পথের কষ্ট–কাঠিন্য থেকে এবং মাটির কীট-পতঙ্গ থেকে রেহাই দিত। লোকটি বলল, আল্লাহ্‌র শপথ! মুহাম্মাদ [সাঃআঃ]-এর ঘরের লাগোয়া আমার ঘর হোক, এটাও আমার পছন্দনীয় নয়। রাবি বলেন, আমি তার কষ্টে ব্যথিত হলাম, অবশেষে আমি নবী [সাঃআঃ]-এর বাড়িতে উপস্থিত হয়ে তাহাঁর নিকট বিষয়টি উপস্থাপন করলাম। তিনি তাকে ডেকে জিজ্ঞেস করলে সে নবী [সাঃআঃ]-এর নিকট একই কথা ব্যক্ত করে। সে আরো উল্লেখ করে যে, সে তার পদক্ষেপসমূহের নেকী আশা করে। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, তুমি যেরূপ আশা করছো তদ্রূপই পাবে। {৭৮১}

{৭৮১} মুসলিম ৬৬১-২, আবু দাউদ ৫৫৭, আহমাদ ২০৭০৭, ২০৭০৯; দারিমি ১২৮৪। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ৫৬৬।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৭৮৪ আনাস বিন মালিক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, বনূ সালিমার লোকেরা তাহাদের বাড়িঘর মসজিদে নববীর নিকটে স্থানান্তরিত করার ইচ্ছা করলো। কিন্তু নবী [সাঃআঃ] মাদীনাহর প্রান্ত এলাকা জনশূন্য হওয়া অপছন্দ করিলেন। তাই তিনি বলেন, হে বনূ সালিমা! তোমরা কি তোমাদের পদক্ষেপের নেকী আশা করো না? অতএব তারা স্বস্থানেই থেকে গেল। {৭৮২}

{৭৮২} বোখারি ৬৫৬, আহমাদ ১১৬২২, ১২৪৬৫, ১৩৩৫৯। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ৫৬৬। হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৭৮৫ ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আনসারদের বসতি মসজিদে নববী থেকে দূরে ছিল। তারা মসজিদ এর কাছাকাছি স্থানান্তরিত করিতে চাইলে এ আয়াত নাযিল হয়

وَنَكْتُبُ مَا قَدَّمُوا وَآثَارَهُمْ

[অনুবাদ] ঃ “আমি লিখে রাখি যা তারা অগ্রে পাঠায় এবং যা তারা পিছনে রেখে যায়” [সূরাহ ইয়াসীনঃ ১২]। রাবি বলেন, তখন তারা তাহাদের অবস্থানে বহাল থাকেন। {৭৮৩}

সহিহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১৬. অধ্যায়ঃ জামাআতে নামাজ পড়ার ফাদীলাত।

৭৮৬ আবু হুরাইরাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ], বলেছেন, কোন ব্যক্তির জামাআতে নামাজ তার ঘরে বা বাজারে পড়া নামাজ অপেক্ষা বিশ গুণের অধিক মর্যাদাপূর্ণ। {৭৮৪}

{৭৮৪} বোখারি ৪৭৭, ৬৪৭, ৬৪৯, ২১১৯, ৪৭১৭; মুসলিম ৬৪১-৫, তিরমিজি ২১৬, নাসায়ি ৪৮৬, ৮৩৮; আবু দাউদ ৫৫৯, আহমাদ ৭৩৮২, ৭৫৩০, ৭৫৫৭, ৮১৪৯, ৮৯০৫, ৯৫৫১, ৯৭৬২, ৯৭৯৯, ৯৯২৬, ১০১২৬, ১০৪১৯; মুওয়াত্ত্বা মালিক ২৯১, দারিমি ১২৭৬, মাজাহ ৭৮৭। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ৫৬৮।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৭৮৭ আবু হুরাইরাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ জামাআতের ফাদীলাত তোমাদের কারো একাকী নামাজ পড়ার তুলনায় পঁচিশ গুণ বেশি। {৭৮৫}

{৭৮৫} বোখারি ৪৭৭, ৬৪৭, ৬৪৯, ২১১৯, ৪৭১৭; মুসলিম ৬৪১-৫, তিরমিজি ২১৬, নাসায়ি ৪৮৬, ৮৩৮; আবু দাউদ ৫৫৯, আহমাদ ৭৩৮২, ৭৫৩০, ৭৫৫৭, ৮১৪৯, ৮৯০৫, ৯৫৫১, ৯৭৬২, ৯৭৯৯, ৯৯২৬, ১০১২৬, ১০৪১৯; মুওয়াত্ত্বা মালিক ২৯১, দারিমি ১২৭৬, মাজাহ ৭৮৬। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৭৮৮ আবু সাঈদ আল-খুদরী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, কোন ব্যক্তির জামাআতের নামাজ তার বাড়িতে পরা নামাজ অপেক্ষা পঁচিশ গুণ বেশি মর্যাদাপূর্ণ। {৭৮৬}

{৭৮৬} বোখারি ৬৪৬, আবু দাউদ ৫৬০, আহমাদ ১১১২৯। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ৫৬৯।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৭৮৯ ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, কোন ব্যক্তির জামাআতের নামাজ তার একাকী পড়া নামাজ অপেক্ষা সাতাশ গুণ বেশি মর্যাদাপূর্ণ। {৭৮৭}

{৭৮৭} বোখারি ৬৪৫, মুসলিম ৬৫০/১-২, তিরমিজি ২১৫, নাসায়ি ৮৩৭, আহমাদ ৪৬৫৬, ৫৩১০, ৫৭৪৫, ৫৮৮৫, ৬৪১৯; মুওয়াত্ত্বা মালিক ২৯০, দারিমি ১২৭৭। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৭৯০ উবাই বিন কাব [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, কোন ব্যক্তির জামাআতে নামাজ তার একাকী পড়া নামাজ অপেক্ষা চব্বিশ কিংবা পঁচিশ গুণ বেশি মর্যাদাপূর্ণ। {৭৮৮}

তাহকিক আলবানিঃ [আরবি] কথাটি ছাড়া সহিহ। সহিহ আবু দাউদ।أَرْبَعًا وَعِشْرِينَকথাটি ছাড়া সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ।হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য

১৭. অধ্যায়ঃ সালাতের জামাআত ত্যাগ করার ব্যাপারে কঠোর হুঁশিয়ারি।

৭৯১ আবু হুরাইরাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, আমার ইচ্ছা হয় যে, আমি নামাজ কায়েমের নির্দেশ দেই এবং এক ব্যক্তিকে লোকেদের নিয়ে নামাজ আদায় করিতে আদেশ করি। অতঃপর আমি লাকড়িসহ একদল লোককে নিয়ে বেরিয়ে যাই সেইসব লোকের নিকট যারা জাআমাতে উপস্থিত হয়নি, অতঃপর তাহাদেরসহ তাহাদের বসতি আগুন দিয়ে ভস্মীভূত করে দেই। {৭৮৯}

{৭৮৯} বোখারি ৬৪৪, ৬৫৭, ২৪২০, ৭২২৪; মুসলিম ৬৫১-৩, তিরমিজি ২১৭, নাসায়ি ৮৪৮, আবু দাউদ ৫৪৮-৪৯, আহমাদ ৭২৮৪, ৭৮৫৬, ২৭৩৬৬, ২৭৪৭৫, ৮৫৭৮, ৮৬৭৩, ৮৬৮৩, ৯১১৯, ৯১৯২, ৯৭৫০, ৯৮৬০, ১০৪২৩, ১০৪৮৯, ১০৪৫২, ১০৫৭৯; মুওয়াত্ত্বা মালিক ২৯২, দারিমি ১২১২, ১২৭৪। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ৪৮৬।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৭৯২ আবদুল্লাহ বিন উম্মু মাকতূম [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি নবী [সাঃআঃ], কে বললাম, আমি বৃদ্ধ ও অন্ধ, আমার বসতিও দূরে এবং আমার সাহায্যকারী কোন পরিচালকও নেই। সুতরাং আপনি কি [আমাকে জামাআতে হাযির না হওয়ার ব্যাপারে] অবকাশ [অনুমতি] দিবেন? তিনি বলেন, তুমি কি আযান শুনতে পাও? আমি বললাম, হাঁ। তিনি বলেন, আমি তোমার জন্য অবকাশ পাচ্ছি না। {৭৯০}

{৭৯০} নাসায়ি ৮৫১, আবু দাউদ ৫৫২। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ৫৬১, ৫৬২, ইরওয়াহ ২৪৭।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৭৯৩ ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

নবী [সাঃআঃ] বলেন, যে ব্যক্তি আযান শুনল এবং তার কোন ওযর না থাকা সত্ত্বেও জামাআতে উপস্থিত হলো না, তার নামাজ নাই। {৭৯১}

{৭৯১} আবু দাউদ ৫৫১ তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ৩৩৭, সহিহ আবু দাউদ ৫৬০।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৭৯৪ ইবনি আব্বাস ও ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তারা উভয়ে নবী [সাঃআঃ] কে তাহাঁর কাঠের মিম্বারের উপর থেকে বলিতে শুনেছেনঃ লোকেরা অবশ্যই যেন জামাআত ত্যাগ করা থেকে বিরত থাকে। অন্যথায় আল্লাহ অবশ্যই তাহাদের অন্তরে সীলমোহর মেরে দিবেন, অতঃপর তারা বিস্মৃতদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে পড়বে। {৭৯২}

{৭৯২} মুসলিম ৮৬৫, নাসায়ি ১৩৭০, আহমাদ ২১৩৩, ২২৯০, ৩০৮৯, ৫৫৩৫; দারিমি ১৫৭০। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহা ২৯৬৭।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৭৯৫ উসামাহ বিন যায়দ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, লোকজনকে অবশ্যই জামাআত ত্যাগ করা থেকে বিরত থাকতে হইবে, অন্যথায় আমি তাহাদের ঘরবাড়ি ভস্মীভূত করে দিবো। {৭৯৩}

{৭৯৩} আহমাদ ২১২৮৫ তাহকিক আলবানিঃ সহিহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

১৮. অধ্যায়ঃ ইশা ও ফজরের নামাজ জামাআতে পড়ার ফাদীলাত।

৭৯৬ আয়িশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, যদি লোকেরা ইশা ও ফজরের সালাতের যে কত ফাদীলাত তা জানতো, তাহলে অবশ্যই তারা এই দুসালাতে হামাগুড়ি দিয়ে হলেও উপস্থিত হত। {৭৯৪}

{৭৯৪} আহমাদ ২৩৯৮৫ তাহকিক আলবানিঃ সহিহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৭৯৭ আবু হুরাইরাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন রসূলুল্লাহ [সাল্ললাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছেন, মুনাফিকদের সবচেয়ে ভারবহ [কষ্টকর] হচ্ছে ইশা এবং ফজরের নামাজ। তারা যদি এই দুসালাতের ফাদীলাত সম্পর্কে অবহিত থাকতো, তাহলে অবশ্যই তারা হামাগুড়ি দিয়ে হলেও তাতে হাযির হতো। {৭৯৫}

{৭৯৫} বোখারি ৬১৫, ৬৫৪, ৬৫৭, ৭২১, ২৬৮৯; মুসলিম ৪৩৭, ৬৫১; নাসায়ি ৫৪০, ৬৭১; আহমাদ ৭১৮৫, ৭৬৮০, ৭৯৬২, ৮৬৫৫, ৯২০২, ৯৭৫০, ১০৪৯৬, ২৭৩৩০; মুওয়াত্ত্বা মালিক ১৫১, ২৯৫; দারিমি ১২৭৩। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ৪৮৬।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৭৯৮ উমার ইবনিল খাত্তাব [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

নবী [সাঃআঃ] বলিতেনঃ যে ব্যাক্তি মসজিদে এসে জামাআতের সাথে চল্লিশ রাত তাকবীরে ঊলাসহ ইশার নামাজ পড়বে, তার বিনিময়ে আল্লাহ জাহান্নাম থেকে তার মুক্তির সনদ লিখে দেন। {৭৯৬}

তাহকিক আলবানিঃ ইশার প্রথম তাকবীর ছুটবে না-একথা ছাড়া হাসান।{৭৯৬} এশার প্রথম তাকবীর ছুটবে না- কথাটি ছাড়া হাসান। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহা ২৬৫২, যঈফাহ ৩৬৪। উক্ত হাদিসের রাবি ইসমাঈল বিন আয়্যাশ সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, আহলে শাম থেকে হাদিস বর্ণনায় কোন সমস্যা নেই। আলী ইবনিল মাদীনী, ইবনি আবু শায়বাহ, আমর ইবনিল ফাল্লাস ও দুহায়ম বলেন, শাম শহর থেকে হাদিস বর্ণনায় তিনি সিকাহ কিন্তু অন্য শহর থেকে হাদিস বর্ণনায় দুর্বল।হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

৪/১৯. অধ্যায়ঃ মসজিদসমূহে যাতায়াত বাধ্যতামূলক করে নেয়া এবং সালাতের জন্য অপেক্ষারত থাকা।

৭৯৯ আবু হুরায়রা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, [রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যখন মসজিদে প্রবেশ করে এবং যতক্ষণ নামাজ তাকে আটক রাখে, ততক্ষণ সে সালাতের মধ্যে থাকে। তোমাদের কেউ যে মজলিসে নামাজ পড়েছে তাতে যতক্ষণ সে অবস্থান করে ততক্ষণ ফেরেশতারা তার জন্য দুআ করিতে থাকেন। তারা বলেন, (আর-বি. )

اللَّهُمَّ اغْفِرْ لَهُ اللَّهُمَّ ارْحَمْهُ اللَّهُمَّ تُبْ عَلَيْهِ مَا لَمْ يُحْدِثْ فِيهِ مَا لَمْ يُؤْذِ فِيهِ 

“হে আল্লাহ্! তাকে ক্ষমা করুন। হে আল্লাহ্! তাকে অনুগ্রহ করুন। হে আল্লাহ্! তার তওবা কবূল করুন।” যতক্ষণ না তার উদূ ছুটে যায়, যতক্ষণ না সে কাউকে কষ্ট দেয় [ততক্ষণ এ দুআ চলতে থাকে]। {৭৯৭}

{৭৯৭} তিরমিজি ৩৩০, ৪৯১; নাসায়ি ১৪৩০, আবু দাউদ ১০৪৬, মুওয়াত্ত্বা মালিক ২৪৩। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ তারগিব ৪৪২, সহিহ আবু দাউদ ৪৮৯।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৮০০ আবু হুরাইরাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

নাবী [সাল্ললাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেন, কোন মুসলিম ব্যক্তি যতক্ষণ মসজিদে নামাজ ও যিকিরে রত থাকে ততক্ষণ আল্লাহ তাহাঁর প্রতি এতটা আনন্দিত হন, প্রবাসী ব্যক্তি তাহাঁর পরিবারে ফিরে এলে তারা তাকে পেয়ে যেরূপ আনন্দিত হয়। {৭৯৮}

{৭৯৮} আহমাদ ৮০০৪, ৮১৫০, ৮২৮২, ৯৫৩১। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ তারগিব ৩২৫।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৮০১ আব্দুল্লাহ বিন আমর [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ [সাল্ললাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] এর সাথে মাগরিবের নামাজ পড়লাম। তারপর যার চলে যাওয়ার চলে গেলেন এবং যার থেকে যাওয়ার থেকে গেলেন। রসূলুল্লাহ [সাল্ললাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম] এত দ্রুতবেগে এলেন যে, তাহাঁর দীর্ঘ নিঃশ্বাস বের হইতে লাগলো। তিনি তাহাঁর দু হাঁটুর উপর ভর করে বসে বলেন, তোমরা সুসংবাদ গ্রহণ করো। তোমাদের প্রতিপালক আসমানের একটি দরজা খুলে দিয়েছেন এবং ফেরেশতাহাদের নিকট তোমারদের সম্পর্কে গর্ব করে বলছেনঃ তোমরা আমার বান্দাদের দিকে তাকিয়ে দেখো, তারা এক ফার্‌দ আদায়ের পর পরবর্তী ফার্‌দ আদায়ের অপেক্ষা করছে। {৭৯৯}

{৭৯৯} আহমাদ ৬৭১১-১২, ৬৯০৭। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ তারগিব ৪৪৫, সহিহা ৬৬১।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৮০২ আবু সাঈদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ [সাল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেন, তোমরা কোন ব্যক্তিকে মসজিদে যাতায়াত করিতে দেখলে তার ঈমানের পক্ষে সাক্ষ্য দিও। মহান আল্লাহ বলেন,

إِنَّمَا يَعْمُرُ مَسَاجِدَ اللَّهِ مَنْ آمَنَ بِاللَّ

“তারাই তো আল্লাহর মসজিদসমূহের রক্ষণাবেক্ষণ করে যারা আল্লাহর উপর ঈমান আনে…”[সূরাহ তাওবাঃ ১৮]। {৮০০}

{৮০০} তিরমিজি ২৬১৭, ৩০৯৩; আহমাদ ২৭৩০৮, ২৭৩২৫; দারিমি ১২২৩। তাহকিক আলবানিঃ জইফ। তাখরিজ আলবানিঃ জামি সগীর ৫০৯ জইফ, জইফ তারগিব ২০৩ জইফ, রিয়াদুস সলিহীন ১০৬৭ জইফ, মিশকাত ৭২৩। উক্ত হাদিসের রাবি রিশদীন বিন সাদ সম্পর্কে আহমাদ বিন হাম্বল তাকে দুর্বল বলেছেন। ইয়াহইয়া বিন মাঈন তার থেকে হাদিস লিপিবদ্ধ করেন নি। আমর ইবনিল ফাল্লাস ও আবু যুরআহ আর-রাযী তাকে দুর্বল বলেছেন। আবু হাতিম আর-রাযী মুনকারুল হাদিস ও তার মাঝে অমনোযোগিতার কথা উল্লেখ করিয়াছেন।
হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

Comments

One response to “মসজিদ ও জামাআত। জামাতে নামাজ পড়ার ফাদীলাত।”

Leave a Reply