সন্তানকে দুধ খাওয়ান প্রসঙ্গ। দুই চুমুক দুধ পান করা প্রসঙ্গে
সন্তানকে দুধ খাওয়ান প্রসঙ্গ >> বুলুগুল মারাম এর মুল সুচিপত্র দেখুন
অধ্যায় – ১২ঃ সন্তানকে দুধ খাওয়ান প্রসঙ্গ
পরিচ্ছেদ ০১. এক চুমুক অথবা দুই চুমুক দুধ পান করা প্রসঙ্গে
পরিচ্ছেদ ০২. ক্ষুধা নিবারণের দুধ পান বৈবাহিক সম্পর্ককে হারাম করে
পরিচ্ছেদ ০৩. বড়দেরকে দুধ পান করানোর বিধান
পরিচ্ছেদ ০৪. দুধপানকারিনীর স্বামী এবং তার নিকট আত্মীয়ের বিধান
পরিচ্ছেদ ০৫. যতটুকু দুধ পান করলে বৈবাহিক সম্পর্ক হারাম হয়
পরিচ্ছেদ ০৬. বংশ সম্পর্কের কারণে যাদেরকে বিবাহ করা হারাম, দুধ সম্পর্কের কারণেও তাহাদেরকে বিবাহ করা হারাম
পরিচ্ছেদ ০৭. কী পরিমাণ এবং কত সময় দুধ পান করলে হারাম সাব্যস্ত হইবে
পরিচ্ছেদ ০৮. স্তন্যদানকারীনীর সাক্ষ্যদানের বিধান
পরিচ্ছেদ ০৯. নির্বোধ মেয়েদের দুধ পান করানো নিষেধ
পরিচ্ছেদ ০১. এক চুমুক অথবা দুই চুমুক দুধ পান করা প্রসঙ্গে
১১২৭ – আয়িশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, এক ঢোক অথবা দু`ঢোক পান করাতে বৈবাহিক সম্পর্ককে হারাম করে না। {১২৩০}
{১২৩০} মুসলিম ১৪৫০, তিরমিয়ী ১১৫০, নাসায়ী ৩৩১০, আর দাউদ ২০৬৩, ইবন মাজাহ ১৯৪১, আহমাদ ২৩৫০৬, ২৪১২৩, দারেমী ২২৫১ । হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ০২. ক্ষুধা নিবারণের দুধ পান বৈবাহিক সম্পর্ককে হারাম করে
১১২৮ – আয়িশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, নারীগণ, কে তোমার সত্যিকার দুধ ভাই তা যাচাই করে দেখে নিও। কেননা, ক্ষুধার কারণে দুধ পানের ফলেই শুধু দুধ সম্পর্ক স্থাপিত হয়। {১২৩১}
{১২৩১} বুখারি ২৬৪৭, ৫১০২, মুসলিম ১৪৫৫, নাসায়ী ৩৩১২, আর দাউদ ২০৫৮, ইবনু মাযাহ ১৯৪৫, দারেমী ২২৫৬। আয়িশাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] আমার নিকট আসলেন, তখন আমার নিকট জনৈক ব্যক্তি ছিল। তিনি জিজ্ঞেস করিলেন, হে `আয়িশাহ! এ কে? আমি বললাম, আমার দুধ ভাই। তিনি বলিলেন, হে `আয়িশাহ কে তোমার সত্যিকার দুধ ভাই তা যাচাই করে দেখে নিও। কেননা, ক্ষুধার কারণে দুধ পানের ফলেই শুধু দুধ সম্পর্ক স্থাপিত হয়। হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ০৩. বড়দেরকে দুধ পান করানোর বিধান
১১২৯ – আয়িশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, সাহলাহ বিনতে সুহাইল এসে বলিলেন, হে আল্লাহর রসূল! হুযাইফার আযাদকৃত দাস সালিম আমাদের সাথে আমাদের বাড়িতেই রহিয়াছে এবং সে পুরুষের যোগ্য পুরুষত্ব লাভ করেছে। নবী [সাঃআঃ] বলিলেন, তুমি তাকে তোমার দুধ পান করিয়ে দাও তুমি তার জন্য হারাম হয়ে যাবে। {১২৩২}
{১২৩২} বুখারি ৫০৮৮, মুসলিম ১৪৫৩, নাসায়ী ৩৩১৯, ৩৩২০, ৩৩২১, ৩৩২২, আবূ দাউদ ২০৬১, ইবনু মাযাহ ১৯৪৩, আহমাদ ২৩৫৮৮, ২৪৮৮৭, মালেক ১২৮৮, দারিমী ২২৫৭। হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ০৪. দুধপানকারিনীর স্বামী এবং তার নিকট আত্মীয়ের বিধান
১১৩০ – আয়িশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
বলেছেন, আমি তাকে অনুমতি দিতে অস্বীকার করলাম। অতঃপর যখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এলেন, তখন আমি যা করেছি তা তাঁকে জানালাম। তিনি তাকে আমার নিকটে প্রবেশের অনুমতি দেবার জন্য আমাকে আদেশ দিলেন। আর বলিলেন, তিনি তো তোমার দুধ চাচা হচ্ছেন। {১২৩৩}
{১২৩৩} বুখারি ৪৭৯৬, ৫১০৩, ৫২৩৯, ৬১৫৬, মুসলিম ১৪৪৫, তিরমিয়ী ১১৪৮, নাসায়ী ৩৩০১, ৩৩১৪, আর দাউদ ২০৫৭, মালেক-১২৭৮। হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ০৫. যতটুকু দুধ পান করলে বৈবাহিক সম্পর্ক হারাম হয়
১১৩১ – আয়িশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
কুরআন নাযিলকৃত আয়াতে এ বিধান ছিল যে, দশবার দুধ পান করলে বৈবাহিক সম্পর্ক হারাম হইবে। তারপর পাঁচবার দুধ পান করার বিধান দ্বারা দশবার পান করার বিধান বাতিল করা হয়। এরূপ অবস্থায় রাসূল [সাঃআঃ] এর ইন্তিকাল ঘটে এবং ঐ বিধানটি কুরআন হিসেবে পড়া হইতে থাকে। {১২৩৪}
{১২৩৪} মুসলিম ১৪৫২, তিরমিয়ী ১১৫০, নাসায়ী ৩৩০৭, আর দাউদ ২০৬২-ইবনু মাযাহ ১৯৪২, মালেক ১২৯৩ দারেমী ২২৫৩। হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ০৬. বংশ সম্পর্কের কারণে যাদেরকে বিবাহ করা হারাম, দুধ সম্পর্কের কারণেও তাহাদেরকে বিবাহ করা হারাম
১১৩২ – ইবনু আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
নবী [সাঃআঃ] হামযা [রাঃআঃ] এর কন্যার স্বামী হইবেন ভাবা হয়েছিল। রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ সে তো আমার জন্য হালাল নয়! কারণ সে তো আমার দুধ ভাইয়ের কন্যা। দুধ সম্পর্ক ঐগুলো হারাম হইবে যেগুলো বংশ সম্পর্কের জন্য হারাম হয়। {১২৩৫}
{১২৩৫} বুখারি ৫১০০, মুসলিম ১৪৪৭, নাসায়ী ৩৩০৫, ৩৩০৬, ইবনু মাযাহ ১৯৩৮, আহমাদ ১৯৫৩, ২৪৮৬। হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ০৭. কী পরিমাণ এবং কত সময় দুধ পান করলে হারাম সাব্যস্ত হইবে
১১৩৩ – উম্মু সালামাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ দুধ পান দ্বারা হারাম সাব্যস্ত তখন হইবে, যখন দুধ পান দ্বারা সন্তানদের পেট পূর্ণ হইবে, আর তা দুধ পানের উপযুক্ত সময়ে হইবে। {১২৩৬}
{১২৩৬} তিরমিজি ১১৫২৷ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
১১৩৪ – ইবনু আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ দু`বছর বয়সের মধ্যে দুধ পান করা ব্যতীত দুধ সম্পর্ক সাব্যস্ত হইবে না। {১২৩৭}
{১২৩৭} মাউকূফ হিসেবে সহিহ। দারাকুতনী [৪৭৪০] মারফু` হিসেবে বর্ণনা করিয়াছেন, ইবনু আদী তাহাঁর কামিল [৭৫৬২] গ্রন্থে হাদিসটি হাইসাম বিন জামীল থেকে, তিনি সুফইয়ান বিন উইয়াইনা থেকে, তিনি আমর বিন দীনার থেকে, তিনি ইবনু আব্বাস থেকে মারফু হিসেবে বর্ণনা করিয়াছেন। ইমাম দারাকুতনী বলেন, হাইসাম বিন জামীল ব্যতীত কেউ এটি ইবনু উইয়াইনাহ থেকে বর্ণনা করেনি। তার বিশ্বস্ততা প্রতিষ্ঠিত। সুমাইর আয যুহাইরী বলেন, ইমাম যদলী, আবদুল হক, ইবনু আবদুল হাদী, বাইহাকি প্রমুখ এটির মাউকূফ হওটাকেই প্রাধান্য দিয়েছেন। হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ মাওকুফ
১১৩৫ – ইবনু মাসউদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ যে দুধ পান দ্বারা হাড় বর্ধিত হয় এবং গোশত বৃদ্ধি পায় এমন দুধ পান করা ব্যতীত সম্পর্ক সাব্যস্ত হয় না। {১২৩৮}
{১২৩৮} আবূ দাউদ ২০৬০, আহমাদ ৪১০৩। ইমাম শওকানী তাহাঁর সাইলুল জাররার ২/৪৬৭ গ্রন্থে বলেন, এটি মারফু হিসেবে বর্ণিত হয়েছে। এর সনদে দুজন অপরিচিত রাবী রহিয়াছেন। শাইখ আলবানী জঈফ আল জামে ৬২৯০, ইরওয়াউল গালীল ২১৫৩ গ্রন্থদ্বয়ে একে দুর্বল বলেছেন। জঈফ আবূ দাউদে ২০৬০ বলেন, দুর্বল, তবে সঠিক হচ্ছে হাদিসটি মাওকূফ। এটি দুর্বল ইবুন উসাইমীন তার আশ শারহুল মুমতি ১৩/৪৩২ গ্রন্থে বলেন, এর মধ্যে দুজন অপরিচিত বৰ্ণনাকারী রহিয়াছে। হাফিয ইবনু হাজার আসকালানী তাহাঁর আত্তালখীসুল হাবীর ৪/১২৯৬ গ্রন্থে বলেন, আবূ মূসা ও তাহাঁর পিতাকে আবূ হাতিম অপরিচিত বর্ণনাকারী হিসেবে আখ্যায়িত করিয়াছেন। হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
পরিচ্ছেদ ০৮. স্তন্যদানকারীনীর সাক্ষ্যদানের বিধান
১১৩৬ – উক্ববাহ ইবনুল হারিস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি আবূ ইহাবের কন্যা উম্মু ইয়াহইয়াকে বিয়ে করেছিলেন । তারপর কোন এক রমণী এসে বললোঃ আমি তোমাদের [স্বামী-স্ত্রী] দুজনকে দুধ পান করিয়েছি। অতঃপর তিনি নবী [সাঃআঃ]-কে এ প্রসঙ্গে জিজ্ঞেস করিলেন, তিনি বললেনঃ এ কথার পর তুমি কিভাবে তার সঙ্গে সংসার করিবে? অতঃপর উকবাহ তাহাঁর স্ত্রীকে আলাদা করে দিলেন এবং সে মহিলা অন্য স্বামীর সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হল। {১২৩৯}
{১২৩৯} বুখারি ২০৫২, ২৬৪০, ২৬৫৯, ২৬৬০, ৫১০৫, তিরমিয়ী ১১৫১, নাসায়ী ৩৬০৩, আর দাউদ ৩৬০৩, আহমাদ ১৫৭১৫, ১৮৯৩০, দারেমী ২২৫৫ ৷ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ০৯. নির্বোধ মেয়েদের দুধ পান করানো নিষেধ
১১৩৭ – যিয়াদ `সাহমী[রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কম বুদ্ধির মেয়েদের দুধ পান করাতে নিষেধ করিয়াছেন। {১২৪০}
{১২৪০} ইমাম আবূ দাউদ তার আল মারাসীল [২৯৩] গ্রন্থে, ইমাম বাইহাকি তার আল কুবর [৭/৪৬৪ ও ৩/১৮০] গ্রন্থে, ইবনুল কাত্তান তার আল ওয়াহম ওয়াল ঈহাম [৩/৬৩] গ্রন্থে হাদিসটিকে মুরসাল বলেছেন যেমন বলেছেন ইবনু হাজার আসকালানী বুলুগুল মারামে, কারণ যিয়াদ সাহাবী নন। মুরসাল ও জঈফ, তাওযিহুল আহকাম ৬/৩০/ হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য
Leave a Reply