ইমাম মাহদীর আগমনের লক্ষণ
ইমাম মাহদীর আগমনের লক্ষণ বিসয়ক হাদিস গুলো একত্র করা হইয়াছে এই লেখায়। প্রকিত তথ্য জানতে সবগুলো হাদিস পড়ুন।
বিঃ দ্রঃ আপনার আরও বিভিন্ন নামে খুজতে পারেন যেমন , ইমাম মাহদী কে চেনার উপায়, ইমাম মাহদী (আ )-এর আত্মপ্রকাশ, ইমাম মাহদী দেখতে কেমন হবে, হাদিসের আলোকে ইমাম মাহদী, কুরআনে ইমাম মাহদী, ইমাম মাহদী আগমনের আলামত কয়টি, ইমাম মাহদীর চেহারা, ইমাম মাহদীর আগমনের লক্ষণ, ইমাম মাহদী ও দাজ্জাল, কুরআনে ইমাম মাহদী, ইমাম মাহদি কেন আসবেন, ইমাম মাহদী pdf, ইমাম মাহদী কে চেনার উপায়
হাদিসঃ সহিহুল বুখারি -২১১৮ ( আহমাদ ২৬৫০৬) (আধুনিক প্রঃ ১৯৭১ , ইঃ ফাঃ ১৯৮৬, হাদিস সম্ভার -154)
আয়িশাহ (রাযিআল্লাহু আঃ.) হইতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, (পরবর্তী যামানায়) একদল সৈন্য কাবা (ধ্বংসের উদ্দেশে) অভিযান চালাবে। যখন তারা বায়দা নামক স্থানে পৌঁছবে তখন তাহাদের আগের পিছের সকলকে জমিনে ধ্বসিয়ে দেয়া হইবে। আয়িশাহ (রাযিআল্লাহু আঃ.) বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! তাহাদের অগ্রবাহিনী ও পশ্চাৎবাহিনী সকলকে কিভাবে ধ্বসিয়ে দেয়া হইবে, অথচ সে সেনাবাহিনীতে তাহাদের বাজারের (পণ্য-সামগ্রী বহনকারী) লোকও থাকিবে এবং এমন লোকও থাকিবে যারা তাহাদের দলভুক্ত নয়, তিনি বলিলেন, তাহাদের আগের পিছের সকলকে ধ্বসিয়ে দেয়া হইবে। তারপরে (কিয়ামতের দিবসে) তাহাদের নিজেদের নিয়্যাত অনুযায়ী উত্থান করা হইবে।
ইমাম মাহদীর আগমনের লক্ষণ হাদিসঃ সহিহ মুসলিম -৭১৩২ (হাদিস এঃ), (ইঃ ফাঃ ৬৯৭৬, ইঃ সেঃ৭০৩৩)
কুতাইবাহ ইবনু সাঈদ, আবু বাকর ইবনু আবূ শাইবাহ ও ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) ….. উবাইদুল্লাহ ইবনু কিবতিয়্যাহ্ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হারিস ইবনু আবূ রাবী’আহ এবং আবদুল্লাহ ইবনু সুফইয়ান (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) দু’জনেই উম্মুল মুমিনীন উম্মু সালামাহ্ (রাযিআল্লাহু আ:) এর কাছে গেলেন। আমিও তাহাদের সঙ্গে ছিলাম। তারা তাকে ঐ বাহিনী সম্বন্ধে প্রশ্ন করলেন, যারা ভূমিতে ধ্বসে যাবে। তখন ইবনু যুবায়র (রাযিআল্লাহু আ:) এর খিলাফতকাল ছিল। উত্তরে তিনি বলিলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ জনৈক আশ্রয় গ্রহণকারী বাইতুল্লাহ শরীফে আশ্রয় গ্রহণ করিবে। তখন তার বিরুদ্ধে একটি বাহিনী প্রেরণ করা হইবে। তারা যখন “বাইদা” নামক এক মাঠে অবস্থান নিবে তখন তারা ভূমিতে ধ্বসে যাবে। এ কথা শুনে আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! ঐ লোকের ব্যাপারে এ কি করে প্রযোজ্য হইতে পারে যে অসন্তুষ্ট হৃদয়ে এ অভিযানে শামিল হয়েছে? উত্তরে তিনি বলিলেন, তাহাদের সঙ্গে তাকে সহ ধ্বসিয়ে দেয়া হইবে। তবে কিয়ামাতের দিন তার উত্থান হইবে স্বীয় নিয়াতের ভিত্তিতে। বর্ণনাকারী আবু জাফার (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, এ “বাইদা” হলো মাদীনার নিকটবর্তী স্থান।
হাদিসঃ সহিহ মুসলিম –৭১৩৩ (হাদিস এঃ) (ইঃ ফাঃ ৬৯৭৭, ইঃ সেঃ ৭০৩৪)
আবদুল আযীয ইবনু রুফাই’ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে এ সূত্র থেকে বর্ণিতঃ
অবিকল হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন। কিন্তু তাতে আছে, আমি আবূ জা’ফার (রহমাতুল্লাহি আলাইহি)-এর সঙ্গে দেখা করে বললাম, উম্মু সালামাহ্ (রাযিআল্লাহু আ:) তো “বাইদা” নামক এক ময়দানের কথা বলেছেন। আবূ জা’ফার (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলিলেন, কক্ষনো নয়, আল্লাহর শপথ! এতো মাদীনার “বাইদা” মাঠ।
হাদিসঃ সহিহ মুসলিম –৭১৩৪ (হাদিস এঃ) (ইঃ ফাঃ ৬৯৭৮, ইঃ সেঃ ৭০৩৫)
হাফসাহ্ (রাযিআল্লাহু আ:) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি নবী (সাঃ আঃ )-কে এ কথা বলিতে শুনেছেন যে, একটি বাহিনী এ কা’বা গৃহের বিপক্ষে যুদ্ধ করার ইচ্ছা করিবে। তারপর তারা যখন “বাইদা” নামক এক ময়দানে পদার্পণ করিবে তখন তাহাদের মাঝের অংশটি ভূমিতে ধ্বসে যাবে। এ সময় অগ্রভাগের সৈন্যরা পশ্চাতের সৈন্যদেরকে উচ্চৈঃস্বরে ডাকতে থাকিবে। অতঃপর প্রত্যেকেই ভূমিতে ধ্বসে যাবে। বেঁচে যাওয়া একটি ব্যক্তি ছাড়া তাহাদের কেউ আর বাকী থাকিবে না। সে-ই তাহাদের সম্বন্ধে অন্যদেরকে খবর দিবে। এ কথা শুনে এক লোক বলিল, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, তুমি হাফসাহ্ (রাযিআল্লাহু আ:)-এর উপর মিথ্যারোপ করনি এবং হাফসাহ্ (রাযিআল্লাহু আ:)-এর সম্বন্ধেও আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, তিনিও নবী (সাঃ আঃ )-এর উপর মিথ্যারোপ করেননি।
হাদিসঃ সহিহ মুসলিম –৭১৩৫ (হাদিস এঃ) (ইঃ ফাঃ ৬৯৭৯, ইঃ সেঃ ৭০৩৬)
উম্মুল মু’মিনীন হাফসাহ্ (রাযিআল্লাহু আ:) থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ
(সাঃ আঃ ) বলেছেনঃ এমন সম্প্রদায় এ
গৃহ তথা কাবার দায়িত্ব
গ্রহণ করিবে, যাদের প্রতিরোধ ক্ষমতা থাকিবে না, থাকিবে না
তার উল্লেখযোগ্য সৈন্য সংখ্যা এবং থাকিবে না
তাহাদের আসবাব-সামগ্রী। তাহাদের
বিপক্ষে একটি সৈন্যদল পাঠানো
হইবে। তারা
উদ্ভিদ শূন্য এক ময়দানে আসতেই
তাহাদেরকে ভূমিতে ধ্বসিয়ে দেয়া হইবে।
বর্ণনাকারী ইউসুফ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, এ সময় সিরিয়াবাসীরা
মাক্কাবাসীদের সাথে যুদ্ধ করার
জন্য আসছিল। আবদুল্লাহ
ইবনু সাফওয়ান (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, আল্লাহর শপথ! তারা এ
সৈন্যবাহিনী নয়।
বর্ণনাকারী যায়দ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) উম্মুল মু’মিনীন থেকে
ইউসুফ ইবনু মাহিক-এর
হাদীসের অবিকল বর্ণনা করিয়াছেন। তবে
আবদুল্লাহ ইবনু সাফ্ওয়ান (রহমাতুল্লাহি
আলাইহি) যে সৈন্যদলের কথা বর্ণনা করিয়াছেন
তিনি সে বাহিনীর কথা
বর্ণনা করেননি।
হাদিসঃ সহিহ মুসলিম –৭১৩৬ (হাদিস এঃ)
আয়িশাহ্ (রাযিআল্লাহু আ:) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একদা রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় রসূলুল্লাহ (সাঃ আঃ ) স্বীয় হাত পা নাড়ালেন। আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল (সাঃ আঃ )! আজ রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় আপনি এমন আচরণ করিয়াছেন, যা আগে আপনি কখনো করেননি। তিনি বললেনঃ আশ্চর্যের বিষয় এই যে, কুরায়শ বংশীয় জনৈক লোক বাইতুল্লাহ শরীফে আশ্রয় গ্রহণ করিবে। তার কারণে আমার উম্মাতের একদল লোক বাইতুল্লাহর উপর আক্রমণের ইচ্ছা করিবে। তারা রওনা হয়ে গাছপালাশূন্য মায়দানে আসতেই তাহাদের ভূমিতে ধ্বসিয়ে দেয়া হইবে। এ কথা শুনে আমরা বললাম, হে আল্লাহর রসূল (সাঃ আঃ ) বিভিন্ন ধরনের মানুষই তো রাস্তা দিয়ে চলে। উত্তরে তিনি বললেনঃ হ্যাঁ, তাহাদের মাঝে কেউ তা স্বেচ্ছায় আগমনকারী, কেউ অপারগ, আবার কেউ পথিক মুসাফির। তারা সবাই এক সঙ্গেই ধ্বংস হয়ে যাবে। তবে বিভিন্ন মিল্লাতের অনুসারী হিসেবে তাহাদেরকে পুনরুজ্জীবিত করা হইবে। আল্লাহ তাআলা তাহাদেরকে তাহাদের নিয়্যাতের ভিত্তিতে উত্থিত করবেন। (ইঃ ফাঃ ৬৯৮০, ইঃ সেঃ ৭০৩৭)
হাদিসঃ আবু দাউদ – ৪২৭৯ (আলবানি তাহকীককৃত)
জাবির ইবনু সামুরাহ (রাযিআল্লাহু আঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাঃ)-কে বলিতে শুনিয়াছিঃ এ দ্বীন ততদিন প্রতিষ্ঠিত থাকিবে, যতদিন তোমাদের শাসকরূপে বারজন প্রতিনিধির অবির্ভাব না হইবে। তাহাদের প্রত্যেক উম্মাতকে তার পাশে একত্র করিবে। অতঃপর আমি নাবী (সাঃ)-এর আরেকটি কথা শুনলাম, তবে তা বুঝতে পারিনি। পরে আমার পিতাকে এ ব্যাপারে প্রশ্ন করায় তিনি বলিলেন, তিনি বলেছেনঃ তাহাদের সবাই কুরাইশ বংশোদ্ভূত হইবে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
হাদিসঃ আবু দাউদ – ৪২৮০ (আলবানি তাহকীককৃত)
জাবির ইবনু সামুরাহ (রাযিআল্লাহু আঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাঃ)-কে বলিতে শুনিয়াছিঃ এ দ্বীন (ইসলাম) বারজন প্রতিনিধি আবির্ভাবের পূর্ব পর্যন্ত অটুট অবস্থায় বিজয়ী থাকিবে। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর একথা শুনে উপস্থিত লোকেরা অবাক হয়ে আল্লাহ আকবার ধ্বনি দিলো এবং চিৎকার করে উঠলো। অতঃপর তিনি নিম্নস্বরে একটি কথা বলিলেন। আমি আমার পিতাকে জিজ্ঞেস করলাম, তিনি (সাঃ) কি বলেছেন? তিনি বলিলেন যে, তিনি বলেছেনঃ তাহাদের সবাই কুরাইশ বংশোদ্ভূত হইবে। ( আহমাদ)
হাদিসঃ আবু দাউদ – ৪২৮১ (আলবানি তাহকীককৃত)
জাবির ইবনু সামুরাহ (রাযিআল্লাহু আঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তবে
এই বর্ণনায় আছেঃ পরে যখন
তিনি তাহাঁর ঘরে ফিরে যান,
কুরাইশদের কয়েকজন এসে তাহাঁকে প্রশ্ন
করলো, তার পরে কি
হইবে? তিনি বললেনঃ অতঃপর
বিপর্যয় সৃষ্টি হইবে।
সহীহ, তবে এ কথাটি
বাদেঃ “পরে যখন তিনি
তাহাঁর ঘরে ফিরে যান….।”
হাদিসঃ আবু দাউদ – ৪২৮২ (আলবানি তাহকীককৃত)
আবদুল্লাহ (রাযিআল্লাহু আঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ যদি দুনিয়ার মাত্র একদিনও অবশিষ্ট থাকে তবে আল্লাহ সেই দিনকে অত্যন্ত দীর্ঘায়িত করবেন এবং আমার হইতে অথবা আমার পরিজন হইতে একজন লোক আবির্ভূত করবেন, যার নাম ও তার পিতার নাম আমার ও আমার পিতার নামের সঙ্গে হুবহু মিল হইবে। সে পৃথিবীকে ইনসাফে পরিপূর্ণ করিবে যেরূপে তা যুলুমে পরিপূর্ণ ছিল। আর সুফিয়ান বর্ণিত হাদীসে বলেন, ততদিন দুনিয়া ধ্বংস হইবে না, যতদিন পর্যন্ত আমার পরিবারের এক ব্যক্তি আরবে রাজত্ব না করিবে, তার নাম হুবহু আমার নামই হইবে।
ইমাম তিরমিযী বলেনঃ হাদিসটি হাসান সহীহ।
ইমাম মাহদীর আগমনের লক্ষণ হাদিসের মানঃ হাসান সহিহ
হাদিসঃ আবু দাউদ – ৪২৮৩ (আলবানি তাহকীককৃত)
আলী (রাযিআল্লাহু আঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ যদি দুনিয়ার একদিনও অবশিষ্ট থাকে তবুও আল্লাহ আমার পরিজন হইতে অবশ্যই এক ব্যক্তিকে পাঠাবেন। তখনকার দুনিয়া যেরূপে অত্যাচারে ভরে যাবে, সে সেরূপেই তা ন্যায়-ইনসাফে ভরে দিবে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
হাদিসঃ আবু দাউদ – ৪২৮৪ (আলবানি তাহকীককৃত)
উম্মু সালামাহ (রাযিআল্লাহু আঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাঃ)-কে বলিতে শুনিয়াছিঃ মাহ্দী আমার পরিজন হইতে ফাতিমার সন্তানদের বংশ হইতে আবির্ভূত হইবে। আবদুল্লাহ ইবনু জাফার (রাযিআল্লাহু আঃ) বলেন, আমি আবুল মালীহকে আলী ইবনু নুফাইলের প্রশংসা করিতে এবং তার গুণাবলী বর্ণনা করিতে শুনিয়াছি।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
হাদিসঃ আবু দাউদ – ৪২৮৫ (আলবানি তাহকীককৃত)
আবূ সাঈদ আল-খুদরী (রাযিআল্লাহু আঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ আমার বংশ হইতে ইমাম মাহদি আবির্ভাব হইবে, সে হইবে প্রশস্ত ললাট ও উন্নত নাকবিশিষ্ট। তখনকার দুনিয়া যেরূপে যুলুমে ভরে যবে, সে তার বিপরীতে তা ইনসাফে ভরে দিবে, আর সে সাত বছর রাজত্ব করিবে। (৪২৮৪)
আবূ দাউদ এটি এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন।
ইমাম মাহদীর আগমনের লক্ষণ হাদিসের মানঃ হাসান হাদিস
হাদিসঃ আবু দাউদ – ৪২৮৬ (আলবানি তাহকীককৃত)
নাবী (সাঃ)-এর স্ত্রী উম্মু সালামাহ (রাযিআল্লাহু আঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃ) বলেনঃ জনৈক খলীফাহ্র মৃত্যুকালে মতনৈক্য সৃষ্টি হইবে। এ সময় মাদীনাহ্বাসী জনৈক ব্যক্তি পালিয়ে মাক্কাহ্য় চলে যাবে। মাক্কাহবাসীরা তার নিকট এসে তাকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে নিয়ে আসবে এবং তারা রুকন ও মাকামে ইবরাহীমের মাঝখানে তার হাতে বাইআত করিবে। অতঃপর তার বিরুদ্ধে সিরিয়া হইতে একটি সৈন্যবাহিনী পাঠানো হইবে। এদেরকে মাক্কাহ ও মদীনার মধ্যবর্তী স্থানে দেখিতে পাবে, তখন সিরিয়ার ধার্মিক ব্যক্তিগন ও ইরাকবাসীদের কয়েকটি দল তার নিকট এসে রুকন ও মাকামের মাঝখানে তার হাতে বাইআত করিবে। অতঃপর কুরাইশ বংশে জনৈক ব্যক্তির উদ্ভব হইবে, কাল্ব গোত্র হইবে তার মাতুল গোত্র। সে তাহাদের মুকাবিলায় একটি বাহিনী পাঠাবে। যুদ্ধে ইমাম মাহদি অনুসারীরা কাল্ব বাহিনীর উপর বিজয়ী হইবে। এ সময় যারা কাল্বের গনীমাত নিতে উপস্থিত হইবে না তাহাদের জন্য আফসোস। মাহ্দী গনীমাতের সম্পদ বন্টন করবেন এবং নাবী (সাঃ)-এর সুন্নাত অনুযায়ী মানুষের মাঝে কার্য পরিচালনা করবেন, আর ইসলাম সারা পৃথিবীতে প্রসারিত হইবে। অতঃপর তিনি সাত বছর অবস্থান করার পর মারা যাবেন। আর মুসলিমরা তার জানাযা সলাত পড়বে। ইমাম আবূ দাঊদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, কেউ কেউ হিশাম হইতে বর্ণনা করে বলেন, নয় বছর অবস্থান করবেন, আবার কেউ বলেন, সাত বছর। (৪২৮৫)
আহমাদ। এর সানাদে নাম উল্লেখহীন জনৈক ব্যক্তি রয়েছেন।
ইমাম মাহদীর আগমনের লক্ষণ হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
হাদিসঃ আবু দাউদ – ৪২৮৭ (আলবানি তাহকীককৃত)
ক্বাতাদাহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) থেকে বর্ণিতঃ
উপরে বর্ণিত হাদিস প্রসঙ্গে বলেন, তিনি নয় বছর অবস্থান করবেন। ইমাম আবূ দাউদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, মুআয ছাড়া অন্যরা হিশাম হইতে বর্ণনা করে বলেন, নয় বছর অবস্থান করবেন। (৮২৮৬)
হাদিসঃ আবু দাউদ – ৪২৮৮ (আলবানি তাহকীককৃত)
উম্মু সালামাহ (রাযিআল্লাহু আঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃ) হইতে উপরে বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেন। আর মুআযের হাদিসই পরিপূর্ণ। (৪২৮৭)
(৪২৮৭) এর পূর্বেরটি দেখুন।
হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
হাদিসঃ আবু দাউদ – ৪২৮৯ (আলবানি তাহকীককৃত)
উম্মু সালামাহ (রাযিআল্লাহু আঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী (সাঃ) ধ্বসে যাওয়া সেই বাহিনীর ঘটনা প্রসঙ্গে বর্ণনা করলেন। তখন আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! যারা অনিচ্ছা সত্ত্বেও অংশগ্রহণ করিতে বাধ্য হইবে, তাহাদের কি হইবে? তিনি বললেনঃ তাহাদেরও ধ্বসিয়ে দেয়া হইবে; কিন্তু তারা তাহাদের নিয়ত অনুযায়ী ক্বিয়ামাতের দিন পুনরুত্থিত হইবে।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
হাদিসঃ আবু দাউদ – ৪২৯০ (আলবানি তাহকীককৃত)
আবূ ইসহাক্ব (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আলী (রাযিআল্লাহু আঃ) বলেছেন, আর তিনি তার ছেলে হাসানের প্রতি দৃষ্টিপাত করে বলেছেন, নিশ্চয়ই আমার এই ছেলেকে নাবী (সাঃ) যেরূপ নেতা আখ্যায়িত করিয়াছেন, অচিরেই তার বংশ হইতে জনৈক ব্যক্তি আবির্ভূত হইবে। তোমাদের নাবী (সাঃ)-এর নামে তার নাম হইবে, স্বভাব-চরিত্রে তাহাঁর মত হইবে; কিন্তু গঠন আকৃতি অনুরূপ হইবে না। অতঃপর ঘটনা বর্ণনা করে বলেন, সে পৃথিবীকে ন্যায়বিচারে ভরে দিবে। হারুণ (রাযিআল্লাহু আঃ) বলেন, আমর ইবনু আবূ ক্বাইস পর্যায়ক্রমে মুতাররিফ ইবনু তরীফ, হাসান ও হিলাল ইবনু আমর হইতে বর্ননা করে বলেন, আমি আলী (রাযিআল্লাহু আঃ)-কে বলিতে শুনিয়াছি, নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ নদীর পেছন দিক থেকে জনৈক ব্যক্তি আবির্ভূত হইবে। তাকে হারিস ইবনুর হাররাস বলে ডাকা হইবে, তার আগে জনৈক ব্যক্তি আসবেন, যার নাম হইবে মানসূর। তিনি মুহাম্মাদ (সাঃ)-এর পরিজনকে আশ্রয় দিবেন, যেরূপ কুরাইশরা রসূলুল্লাহ (সাঃ)-কে স্থান দিয়েছিল। সুতরাং প্রত্যেক মুমিনের কর্তব্য হইবে তার সাহায্যে এগিয়ে আসা, তার ডাকে সাড়া দেয়া। (৪২৮৯)
(৪২৮৯) আবূ দাঊদ এটি একক ভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। তাবরীযী মিশকাত গ্রন্থে বলেনঃ এর সানাদ মুনকাতি।
ইমাম মাহদীর আগমনের লক্ষণ হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস
হাদিসঃ জামে তিরিমিজি – ২১৮৪ (আলবানি তাহকীককৃত)
সাফিয়্যা (রাযিআল্লাহু আ:) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি
বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ আঃ ) বলেছেনঃ আল্লাহ্ তা’আলার এই
ঘরের (কা’বা) বিরুদ্ধেও
যুদ্ধ করা হইতে মানুষ
বিরত থাকিবে না। অবশেষে
একটি বাহিনী লড়াইয়ে অবতীর্ণ হয়ে যখন বাইদা
নামক উপত্যকা অথবা উন্মুক্ত প্রান্তরে
হাজির হইবে তখন তাহাদের
সম্মুখ-পিছনের সবাইকে নিয়ে যমীন ধসে
যাবে। তাহাদের
মধ্যভাগের মানুষও মুক্তি পাবে না। আমি প্রশ্ন করলাম,
হে আল্লাহর রাসুল (সাঃ আঃ )! তাহাদের মধ্যে যেসব ব্যক্তি জোর-জবরদস্তির ফলে বাধ্য হয়ে
অংশগ্রহন করিবে তাহাদের কি হইবে? তিনি
বললেনঃ আল্লাহ্ তা’আলা তাহাদেরকে
তাহাদের অন্তরের নিয়্যাত অনুসারে পুনরুত্থান করবেন।
আবূ ঈসা বলেন, এ
হাদিসটি হাসান সহীহ্।
হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস
হাদিসঃ আল লু’লু ওয়াল মারজান জানাযা ৫৩৬
আবদুল্লাহ্ ইব্নু উবাইদুল্লাহ্ ইব্নু আবূ মুলাইকাহ (রাযিআল্লাহু আ:) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, মাক্কাহয় উসমান (রাযিআল্লাহু আ:)-এর জনৈকা কন্যার মৃত্যু হল। আমরা সেখানে (জানাযায়) অংশগ্রহণ করার জন্য গেলাম। ইব্নু উমার এবং ইব্নু আব্বাস (রাযিআল্লাহু আ:)-ও সেখানে উপস্থিত হলেন। আমি তাঁদের দু’জনের মধ্যে উপবিষ্ট ছিলাম, অথবা তিনি বলেছেন, আমি তাঁদের একজনের পার্শ্বে গিয়ে উপবেশন করলাম, পরে অন্যজন আগমন করে আমার পার্শ্বে উপবেশন করলেন। (ক্রন্দনের শব্দ শুনে) ইব্নু উমার (রাযিআল্লাহু আ:) আমর ইব্নু উসমানকে বলিলেন, তুমি কেন ক্রন্দন করিতে নিষেধ করছ না? কেননা, আল্লাহর রাসূল (সাঃ আঃ ) বলেছেনঃ মৃত ব্যক্তিকে তার পরিজনদের কান্নার কারণে আযাব দেয়া হয়।’ তখন ইব্নু আব্বাস(রাযিআল্লাহু আ:)বলিলেন, উমার(রাযিআল্লাহু আ:)ও এমন কিছু বলিতেন।
অতঃপর ইব্নু আব্বাস(রাযিআল্লাহু আ:)বর্ণনা করলেন, উমার(রাযিআল্লাহু আ:)-এর সাথে মাক্কাহ থেকে প্রত্যাবর্তন করছিলাম। আমরা বাইদা (নামক স্থানে) উপস্থিত হলে উমার(রাযিআল্লাহু আ:)বাবলা বৃক্ষের ছায়ায় একটি কাফিলা দর্শন করতঃ আমাকে বলিলেন, গিয়ে দেখো এ কাফিলা কার? ইব্নু আব্বাস(রাযিআল্লাহু আ:)বলেন, আমি গিয়ে দেখলাম সেখানে সুহাইব (রাযিআল্লাহু আ:)আছেন। আমি তাহাঁকে তা অবহিত করলাম। তিনি বলিলেন, তাহাঁকে আমার কাছে ডেকে নিয়ে এসো। আমি সুহাইব (রাযিআল্লাহু আ:)-এর নিকটে আবার গেলাম এবং বললাম, চলুন, আমীরুল মু’মিনীনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করুন। অতঃপর যখন উমার(রাযিআল্লাহু আ:)(ঘাতকের আঘাতে) আহত হলেন, তখন সুহাইব (রাযিআল্লাহু আ:)তাঁর কাছে আগমন করতঃ এ বলে ক্রন্দন করিতে লাগলেন, হায় আমার ভাই! হায় আমার বন্ধু! এতে উমার(রাযিআল্লাহু আ:)তাহাঁকে বলিলেন, তুমি আমার জন্য ক্রন্দন করছো? অথচ আল্লাহর রাসূল (সাঃ আঃ ) বলেছেনঃ মৃত ব্যক্তির জন্য তার আপন জনের কোন কোন কান্নার কারণে অবশ্যই তাকে আযাব দেয়া হয়। (বুখারী পর্ব ২৩ : /৩৩ হাঃ ১২৯০, মুসলিম ১১/৯, হাঃ ৯২৭)
ইব্নু আব্বাস (রাযিআল্লাহু আ:) বলেন, উমার (রাযিআল্লাহু আ:)-এর মৃত্যুর পর আয়িশাহ্ (রাযিআল্লাহু আ:)-এর নিকট আমি উমার (রাযিআল্লাহু আ:)-এর এ উক্তি উল্লেখ করলাম। তিনি বলিলেন, আল্লাহ্ উমার (রাযিআল্লাহু আ:)-কে রহম করুন। আল্লাহ্র কসম! আল্লাহর রাসূল (সাঃ আঃ ) এ কথা বলেননি যে, আল্লাহ্ ঈমানদার (মৃত) ব্যক্তিকে তার পরিজনের কান্নার কারণে আযাব দিবেন। তবে আল্লাহর রাসূল (সাঃ আঃ ) বলেছেনঃ আল্লাহ্ তাআলা কাফিরদের আযাব বাড়িয়ে দেন তার পরিজনের কান্নার কারণে। অতঃপর আয়িশাহ্ (রাযিআল্লাহু আ:) বলিলেন, (এ ব্যাপারে) আল্লাহ্র কুরআনই তোমাদের জন্য যথেষ্ট। (ইরশাদ হয়েছে): বোঝা বহনকারী কোন ব্যক্তি অপরের বোঝা বহন করিবে না’- (আনআমঃ ১৬৪)। তখন ইব্নু আব্বাস (রাযিআল্লাহু আ:) বলিলেন, আল্লাহ্ই (বান্দাকে) হাসান এবং কাঁদান।
রাবী ইব্নু আবূ মুলাইকাহ (রহ.) বলেন, আল্লাহ্র কসম! (এ কথা শুনে) ইব্নু উমার (রাযিআল্লাহু আ:) কোন মন্তব্য করলেন না। (বুখারী পর্ব ২৩ : /৩২ হাঃ ১২৮৬, ১২৮৭, ১২৮৮, মুসলিম ১১/৯, হাঃ ৯২৭, ৯২৮, ৯২৯)
বিঃ দ্রঃ আপনার আরও বিভিন্ন নামে খুজতে পারেন যেমন , ইমাম মাহদী কে চেনার উপায়, ইমাম মাহদী (আ )-এর আত্মপ্রকাশ, ইমাম মাহদী দেখতে কেমন হবে, হাদিসের আলোকে ইমাম মাহদী, কুরআনে ইমাম মাহদী, ইমাম মাহদী আগমনের আলামত কয়টি, ইমাম মাহদীর চেহারা, ইমাম মাহদীর আগমনের লক্ষণ, ইমাম মাহদী ও দাজ্জাল, কুরআনে ইমাম মাহদী, ইমাম মাহদি কেন আসবেন, ইমাম মাহদী pdf, ইমাম মাহদী কে চেনার উপায়
Leave a Reply