চোখের চিকিৎসা বিষয়ক আয়াত, দোয়া ও পদ্ধতি
পরিচ্ছেদঃ চোখের দৃষ্টি ফিরে পাওয়া বিসয়ক আয়াত
فَكَشَفْنَا عَنكَ غِطَاءَكَ فَبَصَرُكَ الْيَوْمَ حَدِيدٌ
লাক্বাদ কুংতা ফি গাফলাতিম মিন হাজা ফাকাশাফনা আংকা গিত্বাআকা ফাবাচারুকাল ইয়াওমা হাদিদ। (সুরা ক্বফ: আয়াত ২২)
এখন তোমার (চোখের সামনে) কাছ থেকে সে পরদা সরিয়ে দিয়েছি। ফলে আজ তোমার দৃষ্টি হবে অত্যন্ত প্রখর।
ফায়েদাঃ আয়াতের কারিমা টুকু ৭ বার এবং সাথে প্রত্যেকবার রসুলের উপর দরুদ শরীফ পরবে। তার পর আঙ্গুল দয়ের উপর হাল্কা থুথু ছিটিয়ে তা দিয়ে চোখ দুটোকে মুছবে। আল্লাহর হুকুমে কিতাবুল্লাহর বরকতে চোখ উঠা সহ বিভিন্ন চক্ষুরোগ থেকে নিরাপদ থাকবে আর দৃষ্টি সক্তি বৃদ্ধি পাবে।
পরিচ্ছেদঃ দৃষ্টি শক্তির সুস্থতার জন্য দুয়া
হাদিসঃ সুনান আবু দাউদ – ৩৮৮৩ঃ আবদুল্লাহ (রাদিআল্লাহু আঃ)-এর স্ত্রী যাইনাব (রাদিআল্লাহু আঃ) আবদুল্লাহ (রাদিআল্লাহু আঃ) সূত্র হতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলিতে শুনেছিঃ জাদু, তাবীয ও অবৈধ প্রেম ঘটানোর মন্ত্র শির্ক-এর অন্তর্ভুক্ত। তিনি (যাইনাব) বলেন, আমি বললাম, আপনি এসব কি বলেন? আল্লাহর কসম! আমার চোখ হইতে পানি পড়তো, আমি অমুক ইয়াহুদী কর্তৃক ঝাড়ফুঁক করাতাম। সে আমাকে ঝাড়ফুঁক করলে পানি পড়া বন্ধ হয়ে যেতো। আবদুল্লাহ (রাদিআল্লাহু আঃ) বলিলেন, এগুলো শয়তানের কাজ। সে নিজ হাতে চোখে যন্ত্রণা দেয়, যখন সে ঝাড়ফুঁক দেয় তখন সে বিরত থাকে। এর চেয়ে বরং তোমার জন্য এরূপ বললেই যথেষ্ট হতো, যেরূপ রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলিতেনঃ
أَذْهِبِ الْبَاسَ رَبَّ النَّاسِ اشْفِ أَنْتَ الشَّافِي لاَ شِفَاءَ إِلاَّ شِفَاؤُكَ شِفَاءً لاَ يُغَادِرُ سَقَمًا
আযহিবিল বাসা রব্বা নাসি আসফি আন্তাস সাফি লা সিফায়া ইল্লা সিফায়ুকা সিফায়ান লা ইউ গাদিরু সাক্কামা “হে মানব জাতির রব! যন্ত্রণা দূর করে দিন, আরোগ্য দান করুন, আপনিই আরোগ্যদাতা, আপনার দেয়া নিরাময়ই যথার্থ নিরাময়, যার পরে আর কোন রোগ বাকী থাকে না”।
হাদিস এর মানঃ সহিহ হাদিস
আবু দাউদ-১৫৫১ঃ আবু আহমাদ শাকাল ইবনি হুমাইদ (রাঃআঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আমাকে একটি দুআ শিক্ষা দিন। তিনি বললেনঃ তুমি বলোঃ
اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ سَمْعِي وَمِنْ شَرِّ بَصَرِي وَمِنْ شَرِّ لِسَانِي وَمِنْ شَرِّ قَلْبِي وَمِنْ شَرِّ مَنِيِّي
আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা মিন শাররি সাময়ি, ওয়া মিন শাররি বাসারি, ওয়া মিন সাররি লিসানি, ওয়া মিন সাররি ক্বালবি, ওয়া মিন সাররি মানিয়্যি। “হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে কান, চোখ, জিহবা, অন্তর ও লজ্জাস্থানের অনিষ্টতা হইতে আশ্রয় চাই। ”
أَعُوذُ بِكَ | إِنِّي | اللَّهُمَّ |
আপনার কাছে আশ্রয় চাই | আমি | হে আল্লাহ |
سَمْعِي | شَرِّ | مِنْ |
কান | অনিষ্টতা | হইতে |
بَصَرِي | شَرِّ | وَمِنْ |
চোখ | অনিষ্টতা | এবং হইতে |
لِسَانِي | شَرِّ | وَمِنْ |
জিহবা | অনিষ্টতা | এবং হইতে |
قَلْبِي | شَرِّ | وَمِنْ |
অন্তর | অনিষ্টতা | এবং হইতে |
مَنِيِّي | شَرِّ | وَمِنْ |
লজ্জাস্থানের | অনিষ্টতা | এবং হইতে |
দো‘আ হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
তিরমিজিঃ ৩৬০৪/৭. আবু হুরাইরা [রাদি.] হইতে বর্ণিত আছে,
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিতেনঃ
اللَّهُمَّ مَتِّعْنِي بِسَمْعِي وَبَصَرِي وَاجْعَلْهُمَا الْوَارِثَ مِنِّي وَانْصُرْنِي عَلَى مَنْ يَظْلِمُنِي وَخُذْ مِنْهُ بِثَأْرِي
আল্লাহুম্মা মাত্তিনি বিসামইয় ওয়া বাসারি, ওয়া জায়ালহুমাল ওয়া রিসা মিন্নি ওয়ানসুরনি আলা মান ইয়াজলিমুনি ওয়া খুজু মিনহু ছারিয়, “হে আল্লাহ! আমার কর্ণ ও চক্ষুর মাধ্যমে আমাকে উপকৃত কর এবং এ দুটোকে আমার উত্তরাধিকারী কর [মৃত্যু পর্যন্ত অটুট রাখ], যে লোক আমার উপর অত্যাচার করে তার বিরুদ্ধে আমায় তুমি সহযোগিতা কর এবং তার হইতে তুমি আমার প্রতিশোধ গ্রহণ কর”।
بِسَمْعِي | مَتِّعْنِي | اللَّهُمَّ |
কর্ণ | উপকৃত কর | হে আল্লাহ |
الْوَارِثَ | وَاجْعَلْهُمَا | وَبَصَرِي |
উত্তরাধিকারী | চক্ষু | |
عَلَى | وَانْصُرْنِي | مِنِّي |
উপর | সহযোগিতা কর | |
وَخُذْ | يَظْلِمُنِي | مَنْ |
গ্রহণ কর | অত্যাচার করে | থেকে |
بِثَأْرِي | مِنْهُ | |
প্রতিশোধ | তার হইতে |
হাসানঃ রাওযুন নাযীর [১৯০] আবু ঈসা বলেন, এ হাদীসটি উক্ত সনদসূত্রে হাসান গারীব।
তিরমিজি-৩৪৮০ : আইশা [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিতেনঃ
اللَّهُمَّ عَافِنِي فِي جَسَدِي وَعَافِنِي فِي بَصَرِي وَاجْعَلْهُ الْوَارِثَ مِنِّي لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ الْحَلِيمُ الْكَرِيمُ سُبْحَانَ اللَّهِ رَبِّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ وَالْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ
আল্লাহুম্মা আফিনিয় ফি জাসাদি ওয়া আফিনি ফি বাসারি ওয়াজআলহুল ওয়া রিসা মিন্নি লা ইলাহা ইল্লাল্লাহুল হালিমুল কারিমু সুবহানাল্লাহি রব্বিল আরসিল আজিম ওয়াল হামদুলিল্লাহি রব্বিল আলামিন। “হে আল্লাহ্! আমাকে দৈহিক সুস্থতা দান কর, আমার দৃষ্টি শক্তির সুস্থতা দান কর এবং উহাকে আমার উত্তরাধিকার বানিয়ে দাও। আল্লাহ্ ভিন্ন কোন ইলাহ্ নেই। তিনি অতি সহনশীল ও দয়ালু। মহান আরশের মালিক আল্লাহ্ তাআলা অতি পবিত্র। বিশ্বের রক্ষণাবেক্ষণকারী আল্লাহ্ তাআলার জন্য সকল প্রশংসা”।
فِي | عَافِنِي | اللَّهُمَّ |
কর | আমাকে সুস্থতা | হে আল্লাহ্! |
فِي | وَعَافِنِي | جَسَدِي |
কর | আমাকে সুস্থতা | দৈহিক |
الْوَارِثَ | وَاجْعَلْهُ | بَصَرِي |
উত্তরাধিকার | বানিয়ে দাও | দৃষ্টি শক্তির |
إِلَهَ | لاَ | مِنِّي |
ইলাহ্ | নেই | |
الْحَلِيمُ | اللَّهُ | إِلاَّ |
সহনশীল | আল্লাহ্ | ভিন্ন |
اللَّهِ | سُبْحَانَ | الْكَرِيمُ |
আল্লাহ্ তাআলা | অতি পবিত্র | দয়ালু |
الْعَظِيمِ | الْعَرْشِ | رَبِّ |
মহান | আরশের | আল্লাহ্ |
رَبِّ | لِلَّهِ | وَالْحَمْدُ |
আল্লাহ্ তাআলার | সকল প্রশংসা | |
الْعَالَمِينَ |
সনদ দুর্বল, আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান গারীব। তিনি আরও বলেনঃ আমি মুহাম্মাদ [ঈমাম বুখারী]–কে বলিতে শুনিয়াছি, হাবীব ইবনি আবু সাবিত উরওয়া ইবনিয যুবাইর [রঃ] হইতে কিছুই শুনেননি। এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস
পরিচ্ছেদঃ ছত্রাক চোখের আরোগ্যকারী ও প্রতিষেধক
সহিহুল বুখারি – ৫৭০৮ঃ সাঈদ ইবনু যায়দ (রাঃ) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নবী (সাঃআঃ) -কে বলিতে শুনেছিঃ ছত্রাক এক প্রকারের শিশির থেকে হয়ে থাকে। আর এর রস চোখের আরোগ্যকারী।
শু’বাহ (রহঃ) বলেনঃ হাকাম উতাইবা (রাঃ) নবী (সাঃআঃ) থেকে আমার কাছে এরূপ বর্ণনা করিয়াছেন। শুবাহ (রহঃ) বলেনঃ হাকাম যখন আমাকে হাদিসটি বর্ণনা করেন তখন আবদুল মালিক বর্ণিত হাদিসকে তিনি অগ্রাহ্য করেননি।
(আধুনিক প্রঃ- দ্বিতীয় অংশ নেই, ইঃ ফাঃ- ৫১৮৯)
৫২৩৭. সাঈদ ইবনি যায়দ ইবনি আম্র ইবনি নুফায়ল [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি নবী [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছি যে, কামআহ্ মান্না জাতীয়। আর এর নিগৃহীত রস চোখের জন্য উপশম।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫১৬৯, ইসলামিক সেন্টার- ৫১৮১]
৫২৩৮. সাঈদ ইবনি যায়দ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছি যে, কামআহ্ মান্না জাতীয় এবং এর রস চোখের জন্য উপশম।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫১৭০, ইসলামিক সেন্টার- ৫১৮২]
৫২৩৯. সাঈদ ইবনি যায়দ [রাদি.]-এর সনদ হইতে বর্ণীতঃ
নবী [সাঃআঃ] থেকে অবিকল বর্ণিত রয়েছে।
শুবাহ্ [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] বলেন, হাকাম [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] যখন আমার নিকট হাদীসটি রিওয়ায়াত করিলেন, তখন আমি আবদুল মালিক [রহমাতুল্লাহি আলাইহি]-এর হাদীসটিকে আর “গারীব” [অর্থাৎ- যে হাদীসের সনদে শুধুমাত্র কোন একজন বর্ণনাকারী থাকে] মনে করলাম না।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫১৭১, ইসলামিক সেন্টার- ৫১৮৩]
৫২৪০. সাঈদ ইবনি যায়দ ইবনি আম্র ইবনি নুফায়ল [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কামআহ্ মান্না জাতীয় [উদ্ভিদ] যা বানী ইস্রাঈলের উপর আল্লাহ নাযিল করেছিলেন এবং এটা হইতে নিগৃহীত রস চোখের উপশম।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫১৭২, ইসলামিক সেন্টার- ৫১৮৪]
৫২৪১. সাঈদ ইবনি যায়দ [রাদি.]-এর সনদ হইতে বর্ণীতঃ
নবী [সাঃআঃ] হইতে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, কামআহ্ মান্না জাতীয় [উদ্ভিদ] যা মহান আল্লাহ মূসা [আঃ]-এর উপর নাযিল করেছিলেন এবং এর রস চোখের জন্য নিরাময়।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫১৭৩, ইসলামিক সেন্টার- ৫১৮৫]
৫২৪২. সাঈদ ইবনি যায়দ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কাম্আহ্ এক প্রকারের মান্না জাতীয় [উদ্ভিদ] যা মহান আল্লাহ অবতীর্ণ করেছিলেন বানী ইস্রাঈলের উপর। আর এটির রস চোখের জন্য ঔষধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫১৭৪, ইসলামিক সেন্টার- ৫১৮৬]
৫২৪৩. সাঈদ ইবনি যায়দ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ কাম্আহ্ মান্না জাতীয় এক প্রকার উদ্ভিদ। এর রস চোখের জন্য এক প্রকার ঔষধ।
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫১৭৫, ইসলামিক সেন্টার- ৫১৮৭]
হাদিসঃ সুনান আত তিরমিজি – ২০৬৬ঃ আবূ হুরাইরা (রাদিআল্লাহু আঃ) হতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আজওয়া হচ্ছে জান্নাতের খেজুরবিশেষ এবং এর মধ্যে বিষের প্রতিষেধক রহিয়াছে। ছত্রাক হলো মান নামক আসমানী খাবারের অন্তর্ভূক্ত এবং এর পানি চক্ষুরোগের প্রতিষেধক।
হাসান সহীহ, মিশকাত, তাহকীক ছানী (৪২৩৫)। আবূ ঈসা বলেন, সাঈদ ইবনু যাইদ, আবূ সাঈদ ও জাবির (রাদিআল্লাহু আঃ) হইতেও এ অনুচ্ছেদে হাদিস বর্ণিত আছে । এ হাদিসটি হাসান গারীব । আমরা এ হাদিস সম্বন্ধে শুধুমাত্র সাঈদ ইবনু আমির-মুহাম্মদ ইবনু আমরের সূত্রেই জেনেছি । হাদিস এর মানঃ হাসান সহিহ
হাদিসঃ সুনান আত তিরমিজি – ২০৬৭ঃ সাঈদ ইবনু যাইদ (রাদিআল্লাহু আঃ) হতে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ছত্রাক’ মান্নের অন্তর্ভুক্ত। এর পানি চোখের জন্য নিরাময়।
সহীহ, রাওযুন নাযীর (৪৪৪), বুখারী, মুসলিম। আবূ ঈসা বলেন, এ হাদিসটি হাসান সহীহ্ । হাদিস এর মানঃ সহিহ হাদিস
হাদিসঃ সুনান আত তিরমিজি – ২০৬৮ঃ আবূ হুরাইরা (রাদিআল্লাহু আঃ) হতে বর্ণিতঃ
নবী করীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কিছু সাহাবী বলেন, ছত্রাক হলো যমীনের বসন্ত রোগ। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ ছত্রাক হলো মান্নের অন্তর্ভুক্ত এবং এর পানি চক্ষুরোগের প্রতিষেধক। আজওয়া হলো বেহেশতের খেজুরের অন্তর্ভুক্ত এবং এটা বিষের প্রতিষেধক।
পূর্বের হাদিসের সহায়তায় সহীহ। হাদিস এর মানঃ সহিহ হাদিস
হাদিস ইবনু মাজাহ – ৩৪৫৪ঃ সাঈদ বিন যায়দ বিন আমর বিন নুফায়ল (রাদিআল্লাহু আঃ) হতে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ ছত্রাক হলো মান্ন’-এর অন্তর্ভুক্ত, যা আল্লাহ বনী ইসরাঈলের আহারের জন্য নাযিল করেছিলেন। এর নির্যাস চক্ষুরোগের প্রতিষধক।
তাহকীক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। চোখের চিকিৎসা হাদিস এর মানঃ সহিহ হাদিস
হাদিস ইবনু মাজাহ – ৩৪৫৫ঃ আবু হুরায়রাহ (রাদিআল্লাহু আঃ), হতে বর্ণিতঃ
আমরা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সামনে আলোচনারত ছিলাম। আমরা ছত্রাকের উল্লেখ করলে কতক সাহাবী বলেন, ছত্রাক জমিনের বসন্তরোগ। কথাটা রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কর্ণগোচর হলে তিনি বলেনঃ ছত্রাক হলো মান্ন’-এর অন্তর্ভুক্ত। আজওয়া হলো জান্নাতের খেজুর এবং বিষের প্রতিষেধক।
তাহকীক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। চোখের চিকিৎসা হাদিস এর মানঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদঃ সুরমা ব্যবহার করে চোখের চিকিৎসা
সহিহুল বুখারি – ৫৭০৬ঃ উম্মু সালামা (রাঃ) হইতে বর্ণিতঃ
এক মহিলার স্বামী মারা গেলে তার চোখে অসুখ দেখা দেয়। লোকজন নবী (সাঃআঃ) -এর কাছে মহিলার কথা উল্লেখ করতঃ সুরমা ব্যাবহারের কথা আলোচনা করিল এবং তার চোখ সংকটাপন্ন বলে জানাল। তখন তিনি বললেনঃ তোমাদের একেকটি মহিলার অবস্থাতো এমন ছিল যে, তার ঘরে তার সবচেয়ে নিকৃষ্ট কাপড়ে সে থাকত কিংবা তিনি বলেছেনঃ সে তার কাপড়ে আচ্ছাদিত হয়ে তার সবচেয়ে নিকৃষ্ট ঘরে (বছরের পর বছর) অবস্থান করত। অতঃপর যখন কোন কুকুর হেঁটে যেত, তখন সে কুকুরটির দিকে উটের বিষ্ঠা নিক্ষেপ করে (বেরিয়ে আসার অনুমতি পেত)। অতএব, সে চোখে সুরমা লাগাবে না বরং চার মাস দশ দিন সে অপেক্ষা করিবে।
(আধুনিক প্রঃ- ৫২৯২, ইঃ ফাঃ- ৫১৮৮)
হাদিসঃ সুনান আত তিরমিজি – ২০৬৯ঃ কাতাদাহ (রহঃ) হতে বর্ণিতঃ তিনি বলেনঃ
আবূ হুরায়রা্ (রাদিআল্লাহু আঃ) হইতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেনঃ আমি তিনটি অথবা ৫টি অথবা ৭টি ছত্রাক নিয়ে এর রস বের করলাম, তারপর রস টুকু বোতলে রেখে দিলাম, তারপর উহাদ্বারা আমার এক দাসীর চোখে সুরমা লাগালে তার চোখ ভালো হয়ে গেল।
সনদ দুর্বল, মাওকূফ। হাদিস এর মানঃ দুর্বল মাওকুফ
হাদিস ইবনু মাজাহ – ৩৪৯৮ঃ আবূ হুরায়রাহ (রাদিআল্লাহু আঃ), হতে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ যে ব্যক্তি সুরমা লাগায়, সে যেন বেজোড় সংখ্যকবার লাগায়। যে তা করলো, সে ভালো করলো এবং যে তা করলো না, তার দোষ হইবে না।
তাহকীক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ দুর্বল। (৩৪৯৮) আবূ দাঊদ ৩৫ । মিশকাত ৩৫২, দঈফ আবূ দাঊদ ৯ । চোখের চিকিৎসা হাদিস এর মানঃ দুর্বল হাদিস
হাদিস ইবনু মাজাহ – ৩৪৯৯ঃ ইবনু আব্বাস (রাদিআল্লাহু আঃ), হতে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর একটি সুরমাদানি ছিল। তিনি তা থেকে প্রতি চোখে তিনবার করে সুরমা লাগাতেন।
(তিরমিযী ২০৪৮ । ইর’ওয়া ৭৬, মুখতারুশ শামাইল ৪২, মিশকাত ৪২৭২ ।তাহকীক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ দুর্বল। চোখের চিকিৎসা হাদিস এর মানঃ দুর্বল হাদিস
পরিচ্ছেদঃ ইসমিদ সুরমা চোখের দৃষ্টিশক্তি বাড়ায় এবং পাতার চুল গজায়
হাদিসঃ আবু দাউদ – ৩৮৭৮ঃ ইবনু আব্বাস (রাদিআল্লাহু আঃ) হতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা সাদা কাপড় পরিধান করো এবং তা দিয়ে তোমাদের মৃতদের কাফন পরাও; কেননা তা তোমাদের উত্তম পোশাক। আর তোমাদের জন্য উত্তম সুরমা হলো ইসমিদ’ সুরমা; কারণ তা দৃষ্টিশক্তি বাড়ায় এবং চোখের পাতার চুল গজায়।
হাদিস এর মানঃ সহিহ হাদিস
হাদিস ইবনু মাজাহ – ৩৪৯৫ঃ আবদুল্লাহ বিন উমার (রাদিআল্লাহু আঃ), হতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমরা অবশ্যই ইসমিদ সুরমা ব্যবহার করিবে। কেননা তা চোখের ময়লা দূর করে, দৃষ্টিশক্তি বাড়ায় এবং চোখের পাতায় লোম গজায়।
তাহকীক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। হাদিস এর মানঃ সহিহ হাদিস
হাদিস ইবনু মাজাহ – ৩৪৯৬ঃ জাবির (রাদিআল্লাহু আঃ) হতে বর্ণিতঃ
আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে বলিতে শুনেছিঃ তোমরা ঘুমানোর সময় অবশ্যই ইসমিদ সুরমা ব্যবহার করিবে। কেননা তা দৃষ্টিশক্তিকে প্রখর করে এবং চোখের পাতায় লোম গজায়।
তাহকীক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। হাদিস এর মানঃ সহিহ হাদিস
হাদিস ইবনু মাজাহ – ৩৪৯৭ ঃ ইবনু আব্বাস (রাদিআল্লাহু আঃ), হতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের জন্য উত্তম সুরমা হচ্ছে ইসমিদ। তা চোখের জ্যোতি বাড়ায় এবং চোখের পাতায় লোম গজায়।
তাহকীক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। হাদিস এর মানঃ সহিহ হাদিস
শামায়েলে তিরমিযী – ৪১ঃ ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] বলেছেন, তোমরা ইছমিদ সুরমা ব্যবহার করো। কারণ, তা চোখের জ্যোতি বৃদ্ধি করে ও পরিষ্কার রাখে এবং অধিক ভ্রু উৎপন্ন করে [ভ্র উদগত হয়]। ইবনি আব্বাস [রাদি.] আরো বলেন, নাবী [সাঃআঃ] এর একটি সুরমাদানী ছিল। প্রত্যেক রাত্রে [ঘুমানোর পূর্বে] ডান চোখে তিনবার এবং বাম চোখে তিনবার সুরমা লাগাতেন। {৪২}
ব্যাখ্যা ঃ সুরমা ব্যবহারের হুকুম ও পদ্ধতি ঃ নারী-পুরুষ সকলের জন্য চোখে সুরমা লাগানো ভালো। তবে সওয়াবের নিয়তে সুরমা লাগানো উচিত, যাতে চোখের উপকারের সাথে সাথে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] র এর সুন্নতের অনুসরণের সওয়াবও লাভ হয়। অত্র হাদীসে সুরমা ব্যবহারের তিনটি উপকারের কথা উল্লেখ করা হয়েছে, যা বর্তমান বিজ্ঞানে হুবহু প্রমাণিত। এছাড়াও গবেষণায় আরো উপকারিতা পাওয়া গেছে সেগুলো হলো ঃ ১. সর্বধরনের ছোয়াচে রোগ-জীবাণুকে ধ্বংস করে। ২. চোখের প্রবেশকৃত ধূলাবালী নিঃসরণে কার্যকর ভূমিকা পালন করে প্রভৃতি। ৩. অত্যন্ত কার্যকরী জীবাণুনাশক। ৪. চোখে জ্বালাপোড়া খুব কম হয়। {৪২} সুনানুল কুবর লিল ঈমাম বাইহাকী, হাদিস নং/৮৫১৬। হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
শামায়েলে তিরমিযী -৪২ঃ জাবির [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, তোমরা শোয়ার সময় অবশ্যই ইছমিদ সুরমা ব্যবহার করিবে। কারণ, তা চোখের জ্যোতি বৃদ্ধি করে এবং এর ফলে অধিক ভ্রূ জন্মায়। {৪৩}
{৪৩} ইবনি মাজাহ, হাদিস নং/৩৪৯৬; মুসনাদে আবু ইয়ালা, হাদিস নং/২০৫৮। হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
শামায়েলে তিরমিযী -৪৩ঃ ইবনি আব্বাস [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]বলেছেন, তোমাদের জন্য ইছমিদ সুরমা সর্বোৎকৃষ্ট। কারণ, তা দৃষ্টি বাড়ায় এবং এর ফলে অধিক ভ্রূ জন্মায় [উদগত হয়] {৪৪}
{৪৪} ইবনি মাজাহ, হাদিস নং/৩৪৯৭ ইবনি হিব্বান, হাদিস নং/ ৬০৭৩; মুস্তাদরাকে হাকিম, হাদিস নং/৮২৪৮। হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদঃ চক্ষুরোগ অব্যাহত থাকলে এবং তাতে সবর করলে যে সওয়াব পাওয়া যায়
আদাবুল মুফরাদ –৫৩৭ঃ আবু উমামা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
আল্লাহ তায়ালা বলেন, হে আদম সন্তান! আমি যখন তোমার প্রিয় জিনিস দু’টি নিয়ে নেই [চোখের জ্যোতি হরণ করি] এবং তুমি সে বিপদে ধৈর্য ধারণ করো ও সওয়াবের আশা করো, আমি তোমাকে সওয়াবের পরিবর্তে জান্নাত না দেয়া পর্যন্ত খুশি হই না।
[বোখারী, তিরমিজী, ইবনি মাজাহ, আহমাদ] হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহীহ
আদাবুল মুফরাদ –৫৩৪ঃ আবু ইসহাক [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
আমি যায়েদ ইবনি আরকাম [রাঃআঃ]-কে বলিতে শুনিয়াছি, আমার চক্ষুরোগ হলে নাবী [সাঃআঃ] আমাকে দেখিতে এলেন, অতঃপর বলেনঃ হে যায়েদ! এভাবে তোমার চক্ষুরোগ অব্যাহত থাকলে তুমি কি করিবে? তিনি বলেন, আমি সবর করবো এবং সওয়াবের আশা করবো। তিনি বলেনঃ তোমার চক্ষুরোগ অব্যাহত থাকলে এবং তুমি তাতে সবর করলে ও সওয়াবের আশা করলে তুমি তার বিনিময়ে জান্নাত লাভ করিবে [আবু দাউদ, আহমাদ]।
হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য
আদাবুল মুফরাদ –৫৩৫ঃ কাসিম ইবনি মুহাম্মাদ [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত
মুহাম্মাদ [সাঃআঃ]-এর এক সাহাবীর দৃষ্টিশক্তি লোপ পেলে একজন তাকে দেখিতে গেলো। তিনি বলেন, আমি তো চেয়েছিলাম যে, এই দুই চোখ ভরে আমি নাবী [সাঃআঃ]-কে অবশ্যই দেখবো। এখন যেহেতু নাবী [সাঃআঃ]-কে উঠিয়ে নেয়া হয়েছে, আল্লাহর শপথ! হরিণসমূহের মধ্যকার সৌন্দর্যময় হরিণ দেখেও আমি আর আনন্দিত হবো না।
হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস
আদাবুল মুফরাদ –৫৩৬ঃ আনাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণীত
আমি নাবী [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছিঃ মহামহিম আল্লাহ বলেছেন, যখন আমি আমার বান্দাকে তার প্রিয় বস্তু দুইটির পরীক্ষায় [চক্ষুদ্বয়ের জ্যোতিলোপ] ফেলেছি এবং সে ধৈর্য ধারণ করেছে, বিনিময়ে আমি তাকে জান্নাত দান করলাম।
[বোখারী, তিরমিজী, আহমাদ] হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস
পরিচ্ছেদঃ সাপ দৃষ্টিশক্তি নষ্ট করে দেয়
হাদিসঃ সুনানু ইবনু মাজাহ – ৩৫৩৪ঃআয়েশাহ (রাদিআল্লাহু আঃ), হতে বর্ণিতঃ
নবী (সাঃআঃ) দু’মুখো সাপ নিধনের নির্দেশ দিয়েছেন। কেননা এই নিকৃষ্ট সাপ দৃষ্টিশক্তি নষ্ট করে এবং গর্ভপাত ঘটায়।
তাহকীক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ । চোখের চিকিৎসা হাদিস এর মানঃ সহিহ হাদিস
হাদিসঃ সুনানু ইবনু মাজাহ – ৩৫৩৫ঃ আবদুল্লাহ বিন উমার (রাদিআল্লাহু আঃ) হতে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেনঃ তোমরা সাপ মেরে ফেলো, বিশেষত দু’মুখো সাপ এবং লেজবিহীন সাপ! কেননা এ দু’টি সাপ দৃষ্টিশক্তি নষ্ট করে এবং গর্ভপাত ঘটায়।
তাহকীক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ ১মঃ হাসান সহীহ, ২য়ঃ সহীহ। হাদিস এর মানঃ অন্যান্
=================
ঝাড়ফুঁক
হাদিসঃ সুনান আত তিরমিজি – ২০৬৫ঃ আবূ খিযামা (রহঃ) হইতে তার পিতা হতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে প্রশ্ন করলাম, হে আল্লাহ্র রাসূল! আমরা যে ঝাড়ফুঁক করি, ঔষধ ব্যবহার করি এবং বিভিন্ন রকম সাবধানতা অবলম্বন করে থাকি, এগুলো কি আল্লাহ্ তা’আলার নির্ধারিত ভাগ্যকে বাতিল করিতে পারে? এ ব্যাপারে আপনার কি মত? তিনি বললেনঃ এগুলোও আল্লাহ্ তা’আলার নির্ধারিত ভাগ্যের অন্তর্ভুক্ত।
যঈফ, ইবনু মাজাহ (৩৪৩৭) আবূ ঈসা বলেন, এ হাদিসটি হাসান সহীহ। চোখের চিকিৎসা হাদিস এর মানঃ দুর্বল হাদিস
Leave a Reply