বিষ ও মৃত্যু কামনা না করা এবং বিষের প্রতিষেধক গ্রহন

বিষ ও মৃত্যু কামনা

আপনারা আরও পড়তে পারেন আজওয়া খেজুর কি মহা ঔষধ? রুগীর খাবার গুলো কি কি

সহিহ বুখারি

হাদিসঃ সহিহুল বুখারি – ৫৬৬৫:কাসিম ইবনু মুহাম্মাদ (রহ:) হতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আয়িশা (রাদিআল্লাহু আঃ) বলেছিলেন হায় যন্ত্রণায় আমার মাথা গেল’। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ যদি এমনটি হয় আর আমি জীবিত থাকি তাহলে আমি তোমার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করব, তোমার জন্য দু’আ করব। আয়িশা (রাদিআল্লাহু আঃ) বললেনঃ হায় আফসোস, আল্লাহর শপথ। আমার ধারণা আপনি আমার মৃত্যুকে পছন্দ করেন। আর তা হলে আপনি পরের দিনই আপনার অন্যান্য স্ত্রীদের সঙ্গে রাত কাটাতে পারবেন। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ বরং আমি আমার মাথা গেল বলার অধিক যোগ্য। আমি তো ইচ্ছে করেছিলাম কিংবা বলেছেন, আমি ঠিক করেছিলামঃ আবূ বকর (রাদিআল্লাহু আঃ) ও তার ছেলের নিকট সংবাদ পাঠাব এবং অসীয়ত করে যাব, যেন লোকদের কিছু বলার অবকাশ না থাকে কিংবা আকাঙ্খাকারীদের কোন আকাঙ্খা করার অবকাশ না থাকে। তারপর ভাবলাম। আল্লাহ (আবূ বাক্‌র ছাড়া অন্যের খলীফা হওয়া) তা অপছন্দ করবেন, মু’মিনগণ তা বর্জন করবেন। কিংবা তিনি বলেছেনঃ আল্লাহ তা প্রতিহত করবেন এবং মু’মিনগণ তা অপছন্দ করবেন।

(আধুনিক প্রঃ- ৫২৫৫, ইঃ ফাঃ- ৫১৫১)

হাদিসঃ সহিহুল বুখারি – ৫৬৬৯: আব্বাস (রাদিআল্লাহু আঃ) হতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, যখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর ইন্তিকালের সময় আগত হল, তখন ঘরের মধ্যে অনেক মানুষের জমায়েত ছিল। যাঁদের মধ্যে উমার ইবনু খাত্তাব (রাদিআল্লাহু আঃ) -ও ছিলেন। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) (রোগ কাতর অবস্থায়) বললেনঃ লও, আমি তোমাদের জন্য কিছু লিখে দেব, যাতে পরবর্তীতে তোমরা পথভ্রষ্ট না হও। তখন উমার (রাদিআল্লাহু আঃ) বললেনঃ নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর উপর রোগ যন্ত্রণা তীব্র হয়ে উঠেছে, আর তোমাদের কাছে কুরআন মাওজুদ। আর আল্লাহ্‌র কিতাবই আমাদের জন্য যথেষ্ট। এ সময় আহলে বাইতের মধ্যে মতানৈক্যের সৃষ্টি হল। তাঁরা বাদানুবাদে প্রবৃত্ত হলেন, তন্মধ্যে কেউ কেউ বলিতে লাগলেনঃ নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর কাছে কাগজ পৌঁছে দাও এবং তিনি তোমাদের জন্য কিছু লিখে দেবেন, যাতে পরবর্তীতে তোমরা কখনো পথভ্রষ্ট না হও। আবার তাহাদের মধ্যে উমার (রাদিআল্লাহু আঃ) যা বলিলেন, তা বলে যেতে লাগলেন। এভাবে নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর কাছে তাঁদের বাকবিতন্ডা ও মতভেদ বেড়ে চলল। তখন রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ তোমরা উঠে যাও।
উবাইদুল্লাহ (রাদিআল্লাহু আঃ) বলেনঃ ইবনু আব্বাস (রাদিআল্লাহু আঃ) বলিতেন, বড় মুসীবত হল লোকজনের সেই মতভেদ ও তর্ক-বিতর্ক, যা নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও তাহাঁর সেই লিখে দেয়ার মধ্যে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল।

(আধুনিক প্রঃ- ৫২৫৮, ইঃ ফাঃ- ৫১৫৪)

হাদিসঃ সহিহুল বুখারি – ৫৬৭১আনাস ইবনু মালিক (রাদিআল্লাহু আঃ) হতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের কেউ দুঃখ কষ্টে পতিত হবার কারণে যেন মৃত্যু কামনা না করে। যদি কিছু করিতেই চায়, তা হলে সে যেন বলেঃ হে আল্লাহ! আমাকে জীবিত রাখ, যতদিন আমার জন্য বেঁচে থাকা কল্যাণকর হয় এবং আমাকে মৃত্যু দাও, যখন আমার জন্য মরে যাওয়া কল্যাণকর হয়।

সহিহুল বুখারি -৫৬৭৪ আয়িশা (রাদিআল্লাহু আঃ) হতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে আমার পায়ের উপর হেলান দেয়া অবস্থায় বলিতে শুনেছিঃ

اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي وَارْحَمْنِي وَأَلْحِقْنِي بِالرَّفِيقِ الأَعْلَى

আল্লাহুম্মাগ ফিরলি ওয়ার হামনি ওয়া আলহিকনি বির রাফিকিল আলা (হে আল্লাহ! আমাকে ক্ষমা কর, আমার প্রতি দয়া কর, আর আমাকে মহান বন্ধুর সঙ্গে মিলিত কর। )

ইমাম বুখারি ৫৬৭৪ নম্বর হাদিসটি সংকলন করেছেন, ৭৫/১৯. অধ্যায়ে – রোগী কর্তৃক মৃত্যু কামনা করা। (আধুনিক প্রঃ- ৫২৬৩, ইঃ ফাঃ- ৫১৫৯)

হাদিসঃ সহিহুল বুখারি – ৫৬৭৬জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাদিআল্লাহু আঃ) হতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমার কাছে প্রবেশ করিলেন, তখন আমি পীড়িত ছিলাম। তিনি অযূ করিলেন। অতঃপর আমার গায়ের উপর অযূর পানি ছিটিয়ে দিলেন। কিংবা বর্ণনাকারী বলেছেনঃ এরপর তিনি উপস্থিত লোকদের বলেছেনঃ তার গায়ে পানি ছিটিয়ে দাও। এতে আমি সংজ্ঞা ফিরে পেলাম। আমি বললামঃ কালালাহ্ (পিতাও নেই, সন্তানও নেই) ছাড়া আমার কোন ওয়ারিশ নেই। কাজেই আমার রেখে যাওয়া সম্পদ কীভাবে বন্টন করা হইবে? তখন ফারায়েয সম্বন্ধীয় আয়াত অবতীর্ণ হয়।

(আধুনিক প্রঃ- ৫২৬৫, ইঃ ফাঃ- ৫১৬১)

হাদিসঃ সহিহুল বুখারি – ৫৭৫৮ঃ আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) একবার হুযাইল গোত্রের দু’জন মহিলার মধ্যে বিচার করেন। তারা উভয়ে মারামারি করেছিল। তাহাদের একজন অন্যজনের উপর পাথর নিক্ষেপ করে। পাথর গিয়ে তার পেটে লাগে। সে ছিল গর্ভবতী। ফলে তার পেটের বাচ্চাকে সে হত্যা করে। তারপর তারা নবী (সাঃআঃ) -এর নিকট অভিযোগ দায়ের করে। তিনি ফায়সালা দেন যে, এর পেটের সন্তানের বদলে একটি পূর্ণ দাস অথবা দাসী দিতে হইবে। জরিমানা আরোপকৃত মহিলার অভিভাবক বলিলঃ হে আল্লাহর রসূল! এমন সন্তানের জন্য আমার উপর জরিমানা কেন হইবে, যে পান করেনি, খাদ্য খায়নি, কথা বলেনি এবং কান্নাকাটিও করেনি। এ অবস্থায় জরিমানা প্রত্যাখ্যানযোগ্য। তখন নবী (সাঃআঃ) বললেনঃ এ তো (দেখছি) গণকদের ভাই।

(৫৭৫৯, ৫৭৬০, ৬৭৪০, ৬৯০৪, ৬৯০৯, ৬৯১০; মুসলিম ২৮/১১, হাঃ ১৬৮১) আধুনিক প্রঃ- ৫৩৩৮, ইঃ ফাঃ- ৫২৩৪)

হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

হাদিসঃ সহিহুল বুখারি – ৫৭৫৯ঃ আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হইতে বর্ণিতঃ

দু’জন মহিলার একজন অন্যজনের প্রতি পাথর নিক্ষেপ করে। এতে সে তার গর্ভপাত ঘটায়। নবী (সাঃআঃ) এ ঘটনার বিচারে গর্ভস্থ শিশুর বদলে একটি দাস বা দাসী দেয়ার ফয়সালা দেন।

(আধুনিক প্রঃ- ৫৩৩৯, ইঃ ফাঃ- ৫২৩৫) হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

হাদিসঃ সহিহুল বুখারি – ৫৭৬০ঃ সাঈদ ইবনু মুসায়্যিব এর সূত্র হইতে বর্ণিতঃ

যে গর্ভস্থ শিশুকে মায়ের গর্ভে থাকা অবস্থায় হত্যা করা হয়, তার ক্ষতিপূরণ হিসেবে রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) একটি দাস বা দাসী প্রদানের ফয়সালা দেন। যার বিপক্ষে এ ফয়সালা দেয়া হয়, সে বলেঃ আমি কীভাবে এমন শিশুর জরিমানা আদায় করি, যে পানাহার করেনি, কথা বলেনি এবং কান্নাকাটিও করেনি। এ রকম হত্যার জরিমানা প্রত্যাখ্যানযোগ্য। তখন রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেনঃ এ তো দেখছি গণকদের ভাই।

(৫৭৫৮; মুসলিম ২৮/১১, হাঃ ১৬৮১) আধুনিক প্রঃ- ৫৩৩৯, ইঃ ফাঃ- ৫২৩৫)

হাদিসঃ সহিহুল বুখারি – ৫৭৭৭ঃ আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, খাইবার যখন বিজয় হয়, তখন রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) -এর নিকট হাদীয়া স্বরূপ একটি (ভুনা) বক্‌রী পাঠানো হয়। এর মধ্যে ছিল বিষ। তখন রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেনঃ এখানে যত ইয়াহূদী আছে আমার কাছে তাহাদের একত্রিত কর। তাহাঁর কাছে সকলকে একত্র করা হল। রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) তাহাদের উদ্দেশ্যে বললেনঃ আমি তোমাদের নিকট একটা ব্যাপার জানতে চাই, তোমরা কি সে বিষয়ে আমাকে সত্য কথা বলবে? তারা বলিলঃ হাঁ, হে আবুল কাসিম। রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বললেনঃ তোমাদের পিতা কে? তারা বলিলঃ আমাদের পিতা অমুক। রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বললেনঃ তোমরা মিথ্যা বলছ বরং তোমাদের পিতা অমুক। তারা বলিলঃ আপনি সত্য বলেছেন ও সঠিক বলেছেন। এরপর তিনি বললেনঃ আমি তোমাদের নিকট আর একটি প্রশ্ন করি, তাহলে কি তোমরা সেক্ষেত্রে আমাকে সত্য বলবে? তারা বলিলঃ হাঁ, হে আবুল কাসিম যদি আমরা মিথ্যা বলি তবে তো আপনি আমাদের মিথ্যা জেনে ফেলবেন, যেমনিভাবে জেনেছেন আমাদের পিতার ব্যাপারে। তখন রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) তাহাদের বললেনঃ জাহান্নামী কারা? তারা বলিলঃ আমরা সেখানে অল্প কয়েকদিনের জন্য থাকব। তারপর আপনারা আমাদের স্থানে যাবেন। রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বললেনঃ তোমরাই সেখানে অপমানিত হয়ে থাকিবে। আল্লাহ্‌র কসম! আমরা কখনও সেখানে তোমাদের স্থলাভিষিক্ত হবো না। এরপর তিনি তাহাদের বললেনঃ আমি যদি তোমাদের কাছে আর একটি বিষয়ে প্রশ্ন করি, তবে কি তোমরা সে বিষয়ে আমার কাছে সত্য কথা বলবে? তারা বলিলঃ হাঁ। তিনি বললেনঃ তোমরা কি এ ছাগলের মধ্যে বিষ মিশিয়েছ? তারা বলিলঃ হাঁ। তিনি বললেনঃ কিসে তোমাদের এ কাজে প্রেরণা যুগিয়েছে? তারা বলিলঃ আমরা চেয়েছি, যদি আপনি মিথ্যাচারী হন, তবে আমরা আপনার থেকে রেহাই পেয়ে যাব। আর যদি আপনি (সত্য) নবী হন, তবে এ বিষয় আপনার কোন ক্ষতি করিবে না।

(আধুনিক প্রঃ- ৫৩৫৩, ইঃ ফাঃ- ৫২৪৯)

হাদিসঃ সহিহুল বুখারি – ৫৭৭৮ঃ আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ যে লোক পাহাড়ের উপর থেকে লাফিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করে, সে জাহান্নামের আগুনে পুড়বে, চিরকাল সে জাহান্নামের ভিতর ঐভাবে লাফিয়ে পড়তে থাকিবে। যে লোক বিষপানে আত্মহত্যা করিবে, তার বিষ জাহান্নামের আগুনের মধ্যে তার হাতে থাকিবে, চিরকাল সে জাহান্নামের মধ্যে তা পান করিতে থাকিবে। যে লোক লোহার আঘাতে আত্মহত্যা করিবে, জাহান্নামের আগুনের ভিতর সে লোহা তার হাতে থাকিবে, চিরকাল সে তা দিয়ে নিজের পেটে আঘাত করিতে থাকিবে।

(১৩৬৫; মুসলিম ১/৪৭, হাঃ ১০৯, আহমাদ ১০৩৪১০) আধুনিক প্রঃ- ৫৩৫৪, ইঃ ফাঃ- ৫২৫০)

সুনান আত তিরমিজি

হাদিসঃ সুনান আত তিরমিজি -২০৪৩ঃ আবূ হুরাইরা (রাদিআল্লাহু আঃ) হতে বর্ণিতঃ

আবূ হুরাইরা (রাদিআল্লাহু আঃ) মারফূভাবে বর্ননা করেনঃ যে লোক লোহার অস্ত্র দ্বারা আত্মহত্যা করিবে, সে ঐ লৌহঅস্ত্র হাতে নিয়ে কিয়ামত দিবসে হাজির হইবে। সে নিজের পেটে এতা অবিরত ভাবে বিদ্ধ করিতে থাকিবে এবং সে চিরকাল জাহান্নামে থাকিবে। যে লোক বিষপান করে আত্মহত্যা করিবে, সে ঐ বিষ হাতে নিয়ে কিয়ামত দিবসে হাযির হইবে। সে চিরকাল জাহান্নামে থাকিবে এবং সর্বদা এই বিষ গলাধঃকরণ করিতে থাকিবে।

(সহীহ, ইবনু মা-জাহ (৩৪৬০) বুখারী, মুসলিম।)

হাদিসঃ সুনান আত তিরমিজি -২০৪৪ঃ আবূ হুরাইরা (রাদিআল্লাহু আঃ) হতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ লৌহ অস্ত্রের মাধ্যমে যে লোক আত্মহত্যা করিবে, সে ঐ অস্ত্র হাতে নিয়ে কিয়ামত দিবসে হাযির হইবে। জাহান্নামে সে এটা সর্বদাই তার পেটের মধ্যে বিদ্ধ করিতে থাকিবে এবং অনন্তকাল জাহান্নামে থাকিবে। যে লোক বিষপানে আত্মহত্যা করিবে, সে ঐ বিষ হাতে নিয়ে কিয়ামত দিবসে হাযির হইবে জাহান্নামে। সে উহা সর্বদা পান করিতে থাকিবে এবং অনন্তকাল জাহান্নামে থাকিবে। পাহাড়ের উপর থেকে ঝাঁপ দিয়ে যে লোক আত্মহত্যা করিবে, সে সর্বদাই জাহান্নামের মধ্যে ঝাঁপ দিয়ে পড়তে থাকিবে এবং চিরকাল জাহান্নামে থাকিবে।

সহীহ, দেখুন পূর্বের হাদিস।

উপরোক্ত হাদিসের মতো বর্ণনা করিয়াছেন মুহাম্মদ ইবনুল আলা-ওয়াকী হইতে, তিনি আবূ মুআবিয়া হইতে, তিনি আ’মাশ হইতে, তিনি আবূ সালিহ হইতে, তিনি আবূ হুরাইরা (রাদিআল্লাহু আঃ) হইতে, তিনি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হইতে। আবূ ঈসা বলেন, এই হাদিসটি সহিহ । প্রথমোক্ত হাদিসের তুলনায় এটি অনেক বেশি সহিহ । এই হাদিসটি আরো অনেকে আ’মাশ হইতে আবূ সালেহ এর বরাতে আবূ হুরাইরার সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হইতে বর্ণনা করিয়াছেন। আবূ হুরাইরা (রাদিআল্লাহু আঃ) হইতে একটি সূত্রে বর্ণিত আছে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ “বিষপানের মাধ্যমে যে লোক আত্মহত্যা করিবে তাকে জাহান্নামের আগুনে শাস্তি দেয়া হইবে।” এ সূত্রে, “অনন্তকাল জাহান্নামে থাকিবে” এ কথার উল্লেখ নেই। আবুয যিনাদ তার শিক্ষক আ’রাজের সূত্রে আবূ হুরাইরা (রাদিআল্লাহু আঃ) এর বরাতে রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) হইতে একইরকম বর্ণনা করিয়াছেন। সকল বর্ণনার মধ্যে এটাই অনেক বেশি সহীহ্। কেননা, অসংখ্য হাদীসে বর্ণিত আছেঃ তৌহীদের উপর বিশ্বাসী অপরাধীরা জাহান্নামের আজাব ভোগ করিবে । অবশেষে তারা জাহান্নাম থেকে মুক্তি পাবে । কিন্তু তাতে এ কথার উল্লেখ নেই যে, তারা অনন্তকাল জাহান্নামে থাকিবে।

হাদিস এর মানঃ সহিহ হাদিস

হাদিসঃ সুনান আত তিরমিজি -৩৮৬৯ঃ আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাদিআল্লাহু আঃ) হতে বর্ণিতঃ

আমি রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলিতে শুনেছিঃ আমি যদি বিষ প্রতিষেধক পান করি অথবা তাবীয লটকাই অথবা নিজের পক্ষ হইতে কোন কবিতা পাঠ করি তাহলে এতে আমার প্রভাবিত হওয়ার ভয় করি না। ইমাম আবূ দাঊদ (রহঃ) বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর ক্ষেত্রে বিশেষ ব্যতিক্রম ছিল যে, তিনি প্রতিষেধক গ্রহন করেননি। তবে তিনি উম্মাতের জন্য প্রতিষেধক গ্রহণের সুযোগ রেখেছেন।

দুর্বলঃ মিশকাত(৪৫৫৪) (৩৮৬৯) আহমাদ। সানাদের আবদুর রহমান ইবনু রাফি’ সম্পর্কে হাফিয বলেনঃ যঈফ। হাদিস এর মানঃ দুর্বল হাদিস

সুনান আবু দাউদ

হাদিসঃ সুনান আবু দাউদ -৩৮৭২ঃ আবূ হুরাইরাহ (রাদিআল্লাহু আঃ) হতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি বিষ পান করিবে সে নিজ হাতে দোযখের আগুনে বিষ পান করিবে এবং চিরকালের জন্য জাহান্নামে প্রবেশ করিবে।

হাদিস এর মানঃ সহিহ হাদিস

হাদিসঃ সুনান আবু দাউদ -৩৪৬০ঃ আবূ হুরায়রাহ (রাদিআল্লাহু আঃ), হতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি বিষপান করে আত্মহত্যা করলো, সে অনন্তকালের জন্য জাহান্নামী হয়ে এই বিষ গলাধঃকরণ করিতে থাকিবে।

তাহকীক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। হাদিস এর মানঃ সহিহ হাদিস

ইবনু মাজাহ

হাদিসঃ ইবনু মাজাহ -৩৪৩৬ঃ উসামাহ বিন শরীক (রাদিআল্লাহু আঃ) হতে বর্ণিতঃ

আমি উপস্থিত থাকা অবস্থায় বেদুইনরা নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে জিজ্ঞাসা করলো, এতে কি আমাদের গুনাহ হইবে, এতে কি আমাদের গুনাহ হইবে? তিনি বলেনঃ আল্লাহর বান্দাগণ! কোন কিছুতেই আল্লাহ গুনাহ রাখেননি, তবে যে ব্যক্তি তার ভাইয়ের ইজ্জতহানি করে তাতেই গুনাহ হইবে। তারা বললো, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমরা যদি (রোগীর) চিকিৎসা না করি তবে কি আমাদের গুনাহ হইবে? তিনি বলেনঃ আল্লাহর বান্দাগণ! তোমরা চিকিৎসা করো। কেননা মহান আল্লাহ বার্ধক্য ছাড়া এমন কোন রোগ সৃষ্টি করেননি যার সাথে প্রতিষেধকেরও ব্যবস্থা করেননি (রোগও রেখেছেন, নিরাময়ের ব্যবস্থাও রেখেছেন)। তারা বললো, ইয়া রাসূলাল্লাহ! বান্দাকে যা কিছু দেয়া হয় তার মধ্যে উত্তম জিনিস কী? তিনি বলেনঃ সচ্চরিত্র।

তাহকীক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। হাদিস এর মানঃ সহিহ হাদিস

ইবন মাজা – ৩৫৪৬ঃ ইবনু উমার (রাঃ), থেকে বর্ণিতঃ

উম্মু সালামা (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি যে বিষমিশ্রিত বকরীর গোশত আহার করেছিলেন তার ফলে প্রতি বছরই তো আপনি ব্যথা অনুভব করেন। তিনি বলেনঃ তাতে আমার যা ক্ষতি হয়েছে, তা আদম (আঃ) মাটির দলার মধ্যে থাকা অবস্থায়ই আমার তাকদীরে লেখা ছিল।

তাহকীক আলবানীঃ দূর্বল। [৩৫৪৬] হাদীসটি ইমাম ইবনু মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করেছেন। মিশকাত ১২৪৫, দঈফাহ ৪৪২২। হাদিসের মানঃ দুর্বল হাদিস

হাদিসঃ ইবনু মাজাহ -৩৪৩৭ঃ আবূ খিযামাহ (রাদিআল্লাহু আঃ), হতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে জিজ্ঞাসা করা হলো, যে সকল ঔষধ দ্বারা আমরা চিকিৎসা করি, যে ঝাড়ফুঁক করি এবং যে সকল প্রতিরোধমূলক বা সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করি, সে সম্পর্কে আপনার মতামত কী? সেগুলো কি আল্লাহ নির্ধারিত তাকদীর কিছুমাত্র রদ করিতে পারে? তিনি বলেনঃ সেগুলোও তাকদীরের অন্তর্ভুক্ত।

তাহকীক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ দুর্বল। ৩৪৩৭) তিরমিযী ২০৬৫। আলার রাওদাতুন নাদিয়্যাহ ২/২২৮ । হাদিস এর মানঃ দুর্বল হাদিস

হাদিসঃ ইবনু মাজাহ -৩৪৩৮ঃ আবদুল্লাহ (বিন মাসঊদ) (রাদিআল্লাহু আঃ), হতে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ আল্লাহ এমন কোন রোগ পাঠাননি, যার প্রতিষেধক পাঠাননি।

তাহকীক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। হাদিস এর মানঃ সহিহ হাদিস

হাদিসঃ ইবনু মাজাহ -৩৪৩৯ঃ আবু হুরায়রাহ (রাদিআল্লাহু আঃ) হতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ আল্লাহ এমন কোন রোগ পাঠাননি যার প্রতিষেধকের ব্যবস্থা করেননি।

তাহকীক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ। হাদিস এর মানঃ সহিহ হাদিস

হাদিসঃ সুনানু ইবনু মাজাহ – ৩৫৪৬ঃ ইবনু উমার (রাদিআল্লাহু আঃ), হতে বর্ণিতঃ

উম্মু সালামা (রাদিআল্লাহু আঃ) বলিলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি যে বিষমিশ্রিত বকরীর গোশত আহার করেছিলেন তার ফলে প্রতি বছরই তো আপনি ব্যথা অনুভব করেন। তিনি বলেনঃ তাতে আমার যা ক্ষতি হয়েছে, তা আদম (আঃ) মাটির দলার মধ্যে থাকা অবস্থায়ই আমার তাকদীরে লেখা ছিল। (৩৫৪৬)

তাহকীক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ দূর্বল। (৩৫৪৬) হাদিসটি ইমাম ইবনু মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। মিশকাত ১২৪৫, দঈফাহ ৪৪২২। হাদিস এর মানঃ দুর্বল হাদিস

আল আদাবুল মুফরাদ

আদাবুল মুফরাদ – ৫১১ঃ হিশাম [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণীত

তিনি বলেন, আমি এবং আবদুল্লাহ ইবনুয যুবাইর [রাঃআঃ] তার শাহাদাতের দশ দিন পূর্বে [তার মা] আসমা [রাঃআঃ]-এর নিকট উপস্থিত হলাম। আসমা [রাঃআঃ] তখন রোগাক্রান্ত। আবদুল্লাহ [রাঃআঃ] তাকে বলেন, আপনি কেমন বোধ করছেন? তিনি বলেন, অসুস্থ বোধ করছি। তিনি বলেন, আমি তো মৃত্যুর মুখে আছি। আসমা [রাঃআঃ] বলেন, হয়তো তুমি আমার মৃত্যু আশা করছে। তাই তুমি তোমার মৃত্যু কামনা করছো। তুমি তা করো না। আল্লাহর শপথ! তোমার একটা কুল-কিনারা না হওয়া পর্যন্ত আমি মরতে চাই না। হয় তুমি শহীদ হইবে এবং আমি তোমার জন্য সওয়াবের আশা করবো অথবা তুমি বিজয়ী হইবে এবং তাতে আমার চোখ জুড়াবে। খবরদার মৃত্যুভয়ে তুমি কোন অবাঞ্ছিত প্রস্তাবে সম্মত হয়ো না। ইবনুয যুবাইর [রাঃআঃ]-র আশংকা ছিল, তিনি শহীদ হলে তাতে তার মা শোকাকুল হয়ে পড়বেন।

হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস


Posted

in

by

Comments

One response to “বিষ ও মৃত্যু কামনা না করা এবং বিষের প্রতিষেধক গ্রহন”

Leave a Reply