সদাকাহ বন্টন পদ্ধতি। প্রয়োজনের সময় যাচঞা করা বৈধ
সদাকাহ বন্টন পদ্ধতি। প্রয়োজনের সময় যাচঞা করা বৈধ >> বুলুগুল মারাম এর মুল সুচিপত্র দেখুন
অধ্যায় ৩ঃ সদাকাহ বন্টন পদ্ধতি
পরিচ্ছেদ ০১. যে ধনীর জন্য যাচঞা করা বৈধ
পরিচ্ছেদ ০২. ধনী ও উপার্জনক্ষম ব্যক্তির জন্য যাকাত গ্রহণের বিধান
পরিচ্ছেদ ০৩. প্রয়োজনের সময় যাচঞা করা বৈধ
পরিচ্ছেদ ০৪. বনু হাশিম ও বনু মুত্তালিবের জন্য যাকাত গ্রহণের বিধান
পরিচ্ছেদ ০৫. বনু হাশীমের দাস-দাসীদের পক্ষে সাদাকা গ্রহণ করার বিধান
পরিচ্ছেদ ০৬. – চাওয়া বা কামনা ছাড়া যখন কেউ কিছু দিলে তা গ্রহণ করা বৈধ
পরিচ্ছেদ ০১. যে ধনীর জন্য যাচঞা করা বৈধ
৬৪৩ – আবু সাঈদ আল-খুদরী [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেনঃ সচ্ছল ব্যক্তির জন্য যাকাত গ্রহণ করা হালাল নয়। তবে পাচজন ধনী ব্যক্তির জন্য তা হালালঃ যাকাত আদায়কারী কর্মচারী [বেতন বাবদ], যে ব্যক্তি তার নিজস্ব মাল দ্বারা যাকাতের মাল ক্রয় করে এবং ঋণগ্রস্ত ব্যক্তি, আল্লাহর রাস্তায় লড়াইকারী, কোন গরীব ব্যক্তি তার প্রাপ্ত যাকাত কোন সচ্ছল ব্যক্তিকে উপহাস্বরূপ দিলে। আহমদ, আবু দাউদ ও ইবনু মাজা, হাকিম সহিহ বলেছেন আর মুরসাল হবার দোষও প্রকাশ করিয়াছেন। {৬৮৯}
{৬৮৯} ইবনু মাজাহ ১৮৪১, আবু দাউদ ১৬২৫, ১৬২৭, আহমাদ ১১১৪৪, মুওয়াত্তা মালেক ৬০৪। সদাকাহ বন্টন পদ্ধতি হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ০২. ধনী ও উপার্জনক্ষম ব্যক্তির জন্য যাকাত গ্রহণের বিধান
৬৪৪ – উবায়দুল্লাহ বিন আদী [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ
তাকে দুজন লোক বলেছেন, তারা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর খিদমতে কিছু সদাকাহ [যাকাতের মাল] চাইতে গেলে নাবী তাদের প্রতি লক্ষ্য করিলেন, তারা খুব হৃষ্টপুষ্ট, ফলে তিনি তাদের বলিলেন, তোমরা যদি চাও তাহলে আমি তোমাদের দিব তবে সদাকাহর মালে [সরকারী বায়তুলমালে] কোন ধনী ও উপার্জনে সক্ষম ব্যক্তির কোন অধিকার নেই। -নাসায়ী একে কাবি [দৃঢ়] সানাদের হাদিস বলে উল্লেখ করিয়াছেন। {৬৯০}
{৬৯০} আবু দাউদ ১৬৩৩, নাসায়ী ২৫৯৮ । হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ০৩. প্রয়োজনের সময় যাচঞা করা বৈধ
৬৪৫ – কাবীসাহ বিন মুখারিক আল হিলালী [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, তিন প্রকারের লোক ব্যতীত অন্য কারো যাচএঃা করা হালাল বা বৈধ নয়। যে ব্যক্তি কারো [ঋণ] পরিশোধের যামীন হয় তার জন্য ঐ পরিমাণ যাচঞা করা বৈধ যে পরিমাণের জন্য সে যামীন হয়েছে। তার পর তা বন্ধ করে দেবে। যে ব্যক্তির সম্পদ প্রাকৃতিক দুর্যোগে ধ্বংসপ্রাপ্ত হয় তার জীবন যাত্রাকে প্রতিষ্ঠিত করা পর্যন্ত যাচএঃা করিতে পারবে। আর ঐ অভাবী ব্যক্তি যার পক্ষে তার উক্ত গোত্রের তিনজন জ্ঞানী ব্যক্তি সাক্ষ্য দিবে। তার আর্থিক জীবন ধারণের জন্য যতটুকু প্রয়োজন ততটুকু যাচঞা করা তারপক্ষে বৈধ। হে কাবীসাহ, জেনে রাখ এছাড়া যে কোন প্রকার যাচএা হারাম। যে অবৈধ যাচঞা করিবে সে হারাম [রাঃআঃ] ভক্ষণ করিবে।” {৬৯১}
{৬৯১} মুসলিম ১০৪৪, নাসায়ী ২৫৭৯, ২৫৯১, আবূ দাউদ ১৬৪০, আহমাদ ১৫৮৪০, ২০০৭৮, দারেমী ১৬৭৮। সদাকাহ বন্টন পদ্ধতি হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ০৪. বনু হাশিম ও বনু মুত্তালিবের জন্য যাকাত গ্রহণের বিধান
৬৪৬ – আবদুল মুত্তালিব বিন রাবী’আহ [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন-নিশ্চয়ই সদাকাহ [যাকাত উত্তর]ও তার বংশধরের জন্য বাঞ্ছিত নয়। সদকা হচ্ছে জনগণের [দেহ থেকে বের হওয়া] ময়লা মাত্র। অপর বর্ণনায় আছে, মুহাম্মদ [সাঃআঃ] ও তাহাঁর বংশধরের জন্য বৈধ নয়। {৬৯২}
{৬৯২} মুসলিম ১০৭২, নাসায়ী ২৬০৯, আবু দাউদ ২৯৮৫, আহমাদ ১৭০৬৪। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস
৬৪৭ – জুবাইর ইবনু মুতঈম [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি এবং উসমান ইবনু আফফান [রাঃআঃ] আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]-এর নিকট গেলাম এবং বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আপনি বানু মুত্তালিবকে দিয়েছেন, আর আমাদের বাদ দিয়েছেন। অথচ আমরা এবং তারা আপনার সঙ্গে একই স্তরে সম্পর্কিত। তখন আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] বলিলেন, বানু মুত্তালিব ও বানু হাশিম একই স্তরের। {৬৯৩}
{৬৯৩} বুখারী ৩৫০৩, ৪২২৯, নাসায়ী ৪১২৬, ৪১২৭, আবূ দাউদ ২৯৭৮, ২৯৭৯, ২৯৮০, ইবনু মাজাহ ২৮৮১, আহমাদ ১৬২৯৯, ১৬২২৭, ১৬৩৪১। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ০৫. বনু হাশীমের দাস-দাসীদের পক্ষে সাদাকা গ্রহণ করার বিধান
৬৪৮ – আবু রাফি [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ
নাবী [সাঃআঃ] মাখযুম বংশের জনৈক ব্যক্তিকে সদাকাহর [যাকাতের] দায়িত্বে পাঠিয়েছিলেন। সে আবু রাফি’কে [রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর গোলাম] বললো, আপনি আমার সঙ্গে চলুন আপনি তা থেকে [যাকাত থেকে] কিছু পেয়ে যাবেন। আবু রাফি [রাঃআঃ] বলিলেন, না যতক্ষণ না নাবী [সাঃআঃ]-এর কাছে এসে তাকে জিজ্ঞেস করব ততক্ষণ [আমি তা গ্রহণ করব না]। তিনি তার নিকটে এসে জিজ্ঞেস করিলেন ঃ নাবী [সাঃআঃ] তাকে বলিলেন ঃ [এ ব্যাপারে] গোলাম তার মুনিবের সম্প্রদায়ভুক্ত বলে বিবেচিত হয়, আর আমাদের [বনু হাশেম গোত্রের] জন্য সদাকাহ [যাকাত] মোটেই বৈধ নয়। {৬৯৪}
{৬৯৪} আবু দাউদ ১৬৫০, তিরমিয়ী ৬৫৭, নাসায়ী ২৬১২, আহমাদ ২৬৬৪১। সদাকাহ বন্টন পদ্ধতি হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ০৬. – চাওয়া বা কামনা ছাড়া যখন কেউ কিছু দিলে তা গ্রহণ করা বৈধ
৬৪৯ – সালিম বিন আবদুল্লাহ বিন উমার থেকে বর্ণিতঃ
রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] উমর ইবনুল খাত্তাব [রাঃআঃ]”-কে কিছু দান করিতে চাইলেন। ফলে ‘উমার বলিলেন-যে আমার থেকে বেশি ফকীর তাকে দিন। নাবী [সাঃআঃ] তাকে বলিলেন- এটা লও। হয় তুমি একে নিজের সম্পদ করে নাও, নাহলে তুমি তা সদাকাহ করে দাও। নির্লো[রাঃআঃ] ও না চাইতেই যা এ সদাকাহর সম্পদ হতে পাবে তা তুমি গ্রহণ কর। [আর ঐরূপ না হলে] ঐ সম্পদের দিকে তোমার মনসংযোগ ঘটাবে না।” {৬৯৫}
{৬৯৫} মুসলিম ১০৪৫, বুখারী ১৪৭৩, ৭১৬৩, নাসায়ী ২৬০৫, ২৬০৬, ২৬০৭, আবূ দাউদ ১৬৪৮, আহমাদ ১০১, ১২৭, ২৮১, দারেমী ১৬৪৭। সদাকাহ বন্টন পদ্ধতি হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস
Leave a Reply