ভীতিকর অবস্থার সময় নামাজ। ভয়ের সালাতে সাহু সেজদাহ নেই
ভীতিকর অবস্থার সময় নামাজ। ভয়ের সালাতে সাহু সেজদাহ নেই >> বুলুগুল মারাম এর মুল সুচিপত্র দেখুন
অধ্যায় ১৩ঃ ভীতিকর অবস্থার সময় নামাজ
পরিচ্ছেদ ২২৬ঃ যখন শত্রুরা কিবলা ব্যতিত অন্য দিকে হইবে তখন সলাতুল খাওফ বা ভইয়-ভীতি অবস্থার নামাজ পাঠের পদ্ধতি
পরিচ্ছেদ ২২৭ঃ যখন শত্রুরা কিবলামুখী থাকিবে তখন সালাতুল খাওফ বা ভয়-ভীতি অবস্থার সালাত পাঠের পদ্ধতি
পরিচ্ছেদ ২২৮ঃ প্রত্যেক দলের সাথে ইমামের দু’ রাক’আত নামাজ প্রত্যেকের দলের জন্য স্বতন্ত্র নামাজ হিসেবে গণ্য হইবে
পরিচ্ছেদ ২২৯ঃ প্রত্যেক দলের জন্য এক রাক’আত করে ভয়ের সালাত সীমাবদ্ধ করা বৈধ
পরিচ্ছেদ ২৩০ঃ ভয়ের সালাতে সাহু সেজদাহ নেই
পরিচ্ছেদ ২২৬ঃ যখন শত্রুরা কিবলা ব্যতিত অন্য দিকে হইবে তখন সলাতুল খাওফ বা ভইয়-ভীতি অবস্থার নামাজ পাঠের পদ্ধতি
৪৭৫ – সালিহ ইবনু খাওয়াত [রাঃআঃ] এমন একজন সাহাবী থেকে বর্ণিতঃ
যিনি যাতুর রিকা’র যুদ্ধে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]–এর সঙ্গে সলাতুল খাওফ আদায় করিয়াছেন। তিনি বলেছেন, একদল লোক রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] –এর সঙ্গ কাতারে দাঁড়ালেন এবং অপর দলটি থাকলেন শত্রুর সম্মুখীন। এরপর তিনি তাহাঁর সঙ্গে দাঁড়ানো দলটি নিয়ে এক রাক’আত নামাজ আদায় করে স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে থাকলেন। মুক্তাদীগণ তাদের নামাজ পূর্ণ করে ফিরে গেলেন এবং শত্রুর সম্মুখে সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়ালেন। এরপর দ্বিতীয় দলটি এলে তিনি তাদেরকে নিয়ে অবশিষ্ট রাক’আত আদায় করে স্থির হয়ে বসে থাকলেন। এরপর মুক্তাদীগন তাদের নিজেদের নামাজ সম্পূর্ণ করলে তিনি তাদেরকে নিয়ে সালাম ফিরালেন। শব্দ বিন্যাস মুসলিমের। ইবনু মানদাহ –এর`মা’রিফা’ নামক গ্রন্থে`সালিহর পিতা [খাওয়াত] হতে হাদিসটি বর্ণিত হয়েছে। {৫১২}
{৫১২} বুখারী ৪১২৭, ৪১২৯; মুসলিম ৮৪১, ৮৪২, ৮৪৩; তিরমিজি ৫৬৫; নাসায়ি হাদিস ১৫৩৬, ১৫৩৭, ১৫৫২; আবূ দাউদ ১২৩৭, ১২৩৮, ১৭৩৯; ইবনু মাজাহ ১২৫৯; মুওয়াত্তা মালেক ৪৪০, ৪৪১।ব হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস
৪৭৬ – আবদুল্লাহ ইবনু`উমার [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রাসুল [সাঃআঃ] –এর সঙ্গে নাজ্দ এলাকায় যুদ্ধ করেছিলাম। সেখানে আমরা শত্রুর মুখোমুখি কাতারবন্দী হয়ে দাঁড়ালাম। অতঃপর আল্লাহর রাসূল [সাঃআঃ] আমাদের নিয়ে নামাজ আদায় করিলেন। একদল তাহাঁর সঙ্গে নামাজে দাঁড়ালেন এবং অন্য একটি দল শত্রুর মুখোমুখি অবস্থান করিলেন। আল্লাহর রাসুল [সাঃআঃ] তাহাঁর সঙ্গে যারা ছিলেন তাঁদের নিয়ে এক রুকু’ ও দু’টি সাজদাহ্ করিলেন। অতঃপর এ দলটি যারা নামাজ আদায় করেনি, তাঁদের স্থানে চলে গেলেন এবং তাঁরা আল্লাহর রাসুল [সাঃআঃ] –এর পিছনে এগিয়ে এলেন। তখন আল্লাহর রাসুল [সাঃআঃ] তাঁদের সঙ্গে এক রুকু’ ও দু’ সাজদাহ্ করিলেন এবং পরে সালাম ফিরালেন। অতঃপর তাঁদের প্রত্যেকে উঠে দাঁড়ালেন এবং নিজে নিজে একটি রুকু’ ও দু’টি সাজদাহ্ [সহ নামাজ] শেষ করিলেন। শব্দ বিন্যাস বুখারীর। {৫১৩}
{৫১৩} বুখারী ৯৪২, ৯৪৩, ৪১৩২, ৪১৩৪, ৪৫৩৫; মুসলিম ৮৩৯; তিরমিজি ৫৬৪; নাসায়ি হাদিস ১৫৩৯, ১৫৪০, ১৫৪২; আবূ দাউদ ১২৪৩; ইবনু মাজাহ ১২৫৮; আহমাদ ৪১২৪, ৬৩১৫, ৬৩৯৫; মুওয়াত্তা মালেক ৪৪২; দারেমী ১৫২১। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ২২৭ঃ যখন শত্রুরা কিবলামুখী থাকিবে তখন সালাতুল খাওফ বা ভয়-ভীতি অবস্থার সালাত পাঠের পদ্ধতি
৪৭৭ – জাবির [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর সঙ্গে ভীতিকর অবস্থার সালাতে উপস্থিত ছিলাম। আমরা দুটি সারিতে সারিবদ্ধ হলাম, একটি সারি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর পেছনে থাকলো, আর শত্রুসেনা দল আমাদের ও কিবলার মধ্যে রইলো। এ অবস্থায় নাবী [সাঃআঃ]`আল্লাহু আকবার’ বলিলেন। আমরাও সকলেই আল্লাহু আকবার বললাম। তারপর তিনি রুকূ করিলেন, আমরাও রুকূ করলাম। তারপর তিনি রুকূ থেকে মাথা উঠালেন, আমরাও একই সঙ্গে সকলেই মাথা ওঠালাম। তারপর তিনি তার নিকটতম সারিটিসহ সেজদায় অবনমিত হয়ে পড়লেন আর পেছনের সারিটি সেজদায় না গিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করার জন্য দাড়িয়ে রইল। তারপর তার সেজদাহ পূর্ণ হলে তার নিকটের সারিটি দাঁড়াল।
অতঃপর রাবী পূর্ণ হাদিস উল্লেখ করেন। তারপর তিনি সেজদাহ করিলেন ও তার সঙ্গে প্রথম সারিও সেজদাহ করিল। তারপর যখন তারা দাড়ালেন তখন দ্বিতীয় সারি সেজদাহ করিল। তারপর প্রথম সারি পিছিয়ে গেল ও দ্বিতীয় সারি অগ্রসর হল- এরপর পূর্ববর্তী হাদিসের অনুরূপ এতেও বর্ণিত হয়েছে। এরই বর্ণনার শেষাংশে আছে- তারপর নাবী [সাঃআঃ] সালাম ফিরালে আমরাও সকলেই সালাম ফিরালাম। {৫১৪}
{৫১৪} বুখারী ৪১৩৭, মুসলিম ৮৪০, নাসায়ি হাদিস ১৫৪৫, ১৫৩৬, ১৫৪৭, ইবনু মাজাহ ১২৬০, আহমাদ ১৪৫১১, ১৪৫০১। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস
৪৭৮ – আবূ আয়্য়াশ যুরাকী [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ
হাদিসটি বর্ণিত হয়েছে তাতে আছেঃ এ ঘটনাটি`উসফান’ নামক স্থানে সংঘঠিত হয়েছিল’। {৫১৫}
{৫১৫} আবূ দাউদ ১২৩৬, নাসায়ি হাদিস ১৫৪৯, ১৫৫০। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ২২৮ঃ প্রত্যেক দলের সাথে ইমামের দু’ রাক’আত নামাজ প্রত্যেকের দলের জন্য স্বতন্ত্র নামাজ হিসেবে গণ্য হইবে
৪৭৯ – জাবির [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ
নাবী [সাঃআঃ] তাহাঁর সাহাবীদের একদলকে দু’রাক’আত সালাত পড়িয়েছিলেন, তারপর সালাম ফিরালেন। তারপর অন্যদলকে দু’রাক’আত সালাত আদায় করালেন, তারপর সালাম ফিরালেন। {৫১৬}
{৫১৬} নাসায়ি হাদিস ১৫৫২, ১৫৫৪। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস
৪৮০ – বর্ণনাকারী থেকে বর্ণিতঃ
আবূ বাকরাহ [রাঃআঃ] হতে দাউদে অনুরূপ আরও একটা হাদিস রয়েছে।
হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ২২৯ঃ প্রত্যেক দলের জন্য এক রাক’আত করে ভয়ের সালাত সীমাবদ্ধ করা বৈধ
৪৮১ – হুযাইফাহ [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ
নাবী [সাঃআঃ] ভয়ের অবস্থায় [দু’দলের মধ্যে] একদলকে এক রাক’আত ও অপর দলকে এক রাক’আত পড়িয়েছিলেন। তারা ঐ সালাত [আর] পূর্ণ করেননি। – আহমাদ, আবূ দাউদ ও নাসায়ি হাদিস, ইবনু হিব্বান একে সহিহ বলেছেন। {৫১৭}
{৫১৭} আহমাদ আবূ দাউদ ১২৪৬, নাসায়ি হাদিস ১৫২৯, ১৫৩০। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস
৪৮২ – বর্ণনাকারী থেকে বর্ণিতঃ
ইবনু খুযাইমাহ হতে ইবনু`আব্বাস হতে অনুরূপ একটি হাদিস বর্ণিত আছে। {৫১৮}
{৫১৮} সহিহ ইবনু খুযাইমাহ ১৩৪৪। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস
৪৮৩ – ইবনু`উমার[রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন- যে কোন পদ্ধতিতে হোক না কেন ভয়ের সময়ের সালাত হচ্ছে এক রাক’আত। – বাযযার দুর্বল সানাদে। {৫১৯}
{৫১৯} মুনকারঃ বাযযার ৬৭৮। ইমাম শওকানী তাহাঁর নাইলুল আওত্বার [৪/৯] গ্রন্থে বলেন, এর সনদ দুর্বল। ইবনু উসাইমীন তাহাঁর শরহে বুলুগুল মারাম [২/৩৮৬] গ্রন্থে বলেন, [আরবী] হাদিসের মতন বা মূল কথা মুনকার, সহিহ নয়। হাদিসের তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস
পরিচ্ছেদ ২৩০ঃ ভয়ের সালাতে সাহু সেজদাহ নেই
৪৮৪ – ইবনু`উমার[রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ
ভয়ের সালাতে সাহু সেজদাহ নেই। দারাকুৎনী দুর্বল সানাদে। {৫২০}
{৫২০} দারাকুৎনী ২/৫৮/১ । ইবনু আদী তাহাঁর আল কামিল ফিয যুআফা [৭/১২] গ্রন্থে বলেন, এর সনদে আব্দুল হামিদ বিন আস সিররী রয়েছেন যিনি মাজহুল বর্ণনাকারিদের অন্তর্ভুক্ত । ইমাম যাহাবী তাহাঁর মীযানুল ই’তিলাদ [২/১১৮] গ্রন্থে বলেন, আস সিরী বিন আব্দুল হামিদ মাতরূকুল হাদিস। আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ থেকে একই হাদিস এসেছে যেটিকে তিনি একই গ্রন্থে [২/৫৪১] একে মুনকার বলেছেন। ইমাম সুয়ূতি তাহাঁর আল’জামেউস সগীর [৭৬৪৪] গ্রন্থে উক্ত দুটি বর্ণনাকেই দুর্বল বলেছেন। শাইখ আলবানী যইফুল জামে [৪৯১১], সিলসিলা যঈফা [৪৩৯৪] গ্রন্থে একে দুর্বল বলেছেন। হাদিসের তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস
Leave a Reply