জামাতে নামাজ সম্পাদন ফাযীলাত ও ইমামতি

জামাতে নামাজ সম্পাদন ফাযীলাত ও ইমামতি

জামাতে নামাজ সম্পাদন ফাযীলাত ও ইমামতি >> বুলুগুল মারাম এর মুল সুচিপত্র দেখুন

অধ্যায় ১০ঃ জামাতে নামাজ সম্পাদন ও ইমামতি

পরিচ্ছেদ ১৬৯ঃ জামাতে নামাজ আদায়ের ফাযীলাত
পরিচ্ছেদ ১৭০ঃ জামাতে নামাজ আদায়ের বিধান
পরিচ্ছেদ ১৭১ঃ ইশা ও ফজরের জামায়াত থেকে দূরে অবস্থানকারীর জন্য সতর্কবাণী
পরিচ্ছেদ ১৭২ঃ আযান শুনতে পায় এমন ব্যক্তির জামাতে উপস্থিতি ওয়াজিব
পরিচ্ছেদ ১৭৩ঃ আযান শ্রবণ করা সত্ত্বেও যে ব্যক্তি জামাতে উপস্থিত না হয় তার বিধান
পরিচ্ছেদ ১৭৪ঃ ফরয নামাজ আদায়ের পর মাসজিদে প্রবেশ করলে তার বিধান
পরিচ্ছেদ ১৭৫ঃ ইমাম নির্ধারণের মহত্ত্ব ও তাকে অনুসরণ পদ্ধতি
পরিচ্ছেদ ১৭৬ঃ ইমামের নিকটবর্তী হওয়া মুস্তাআব [পছন্দনীয়]
পরিচ্ছেদ ১৭৭ঃ নফল সালাতে জামা’আত করা বৈধ
পরিচ্ছেদ ১৭৮ঃ দাঁড়াতে অক্ষম ব্যক্তির পিছনে সালাত আদায় করার বিধান ও পদ্ধতি
পরিচ্ছেদ ১৭৯ঃ ইমামকে সালাত হালকা করার নির্দেশ
পরিচ্ছেদ ১৮০ঃ নাবালেগ বালেগের ইমামতি করিতে পারে
পরিচ্ছেদ ১৮১ঃ ইমামতির অধিক হক্বদার যিনি?
পরিচ্ছেদ ১৮২ঃ যে সমস্ত ব্যক্তিদের জন্য ইমামতি বৈধ নয়
পরিচ্ছেদ ১৮৩ঃ কাতার সোজা করার নির্দেশ এবং এর পদ্ধতি
পরিচ্ছেদ ১৮৪ঃ পুরুষ ও মেয়েদের জন্য উত্তম কাতারের বর্ণনা
পরিচ্ছেদ ১৮৫ঃ মুক্তাদী একজন হলে সে কোথায় দাঁড়াবে?
পরিচ্ছেদ ১৮৬ঃ একাধিক মুসল্লি হলে মুক্তাদী কোথায় দাঁড়াবে?
পরিচ্ছেদ ১৮৭ঃ কাতারের পিছনে একাকী নামাজ আদায়াকারীর বিধান
পরিচ্ছেদ ১৮৮ঃ মাজের উদ্দেশ্যে মসজিদে যাওয়ার আদবসমূহ
পরিচ্ছেদ ১৮৯ঃ জামাতে লোকসংখ্যা বেশি হওয়ার ফযীলত
পরিচ্ছেদ ১৯০ঃ মহিলাদের জন্য মহিলার ইমামতির বিধান
পরিচ্ছেদ ১৯১ঃ ন্ধ ব্যক্তির ইমামতির বিধান
পরিচ্ছেদ ১৯২ঃ ফাসিক ব্যক্তির ইমামতি বৈধ
পরিচ্ছেদ ১৯৩ঃ ইমাম যে অবস্থায় থাকিবে সে অবস্থায় ইমামের সাথে জামাতে অংশগ্রহণ করা শরীয়তসম্মত

পরিচ্ছেদ ১৬৯ঃ জামাতে নামাজ আদায়ের ফাযীলাত

৩৯৭ – ‘আবদুল্লাহ্‌ ইব্‌নু ‘উমার [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

আল্লাহর রাসূল [সাঃআঃ] বলেছেনঃ জামাতে নামাজের ফাযীলাত একাকী আদায়কৃত নামাজ অপেক্ষা সাতাশ গুণ বেশী । {৪৩৮}

{৪৩৮} বুখারী ৬৪৫, মুসলিম ৬৫০, তিরমিজি ২১৫, নাসায়ি হাদিস ৮৩৭, ইবনু মাজাহ ৭৮৯, আহমাদ ৪৬৫৬, ৫৩১০, মুওয়াত্তা মালেক ২৯০ [আরবী] শব্দের অর্থ হচ্ছে, [আরবী] অর্থাৎ একাকী । একাকী নামাযরত ব্যক্তিকে মুনফারিদ বলা হয় । হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস

৩৯৮ – আবূ হুরাইরা [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

পঁচিশ গুণ অধিক সওয়াব রাখে।” {৪৩৯}

{৪৩৯} বুখারী ১৭৬, ৪৪৫, ৪৭৭, ৬৪৮, মুসলিম ৬৪৯, তিরমিজি ২১৫, ২১৬, নাসায়ি হাদিস ৭৩১, ৮৩৭, আবূ দাউদ ৪৬৯, ৪৭০, ইবনু মাজাহ ৭৮৬, ৭৮৭, আহমাদ ৮১৪৫, ৭৩৬৭, মুওয়াত্তা মালেক ২৯১, ৩৮২, দারেমী ১২৭৬। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস

৩৯৯ – আবূ সা’ঈদ [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

বুখারীতেও অনুরূপ হাদিস বর্ণিত । কিন্তু তাতে জুয-এর স্থলে দার্‌জাহ শব্দ আছে । {৪৪০}

{৪৪০} বুখারী ৬৪৬, আবূ দাউদ ৫৬০, ইবনু মাজাহ ৭৮৮, আহমাদ ১১১২৯। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ ১৭০ঃ জামাতে নামাজ আদায়ের বিধান

৪০০ – আবূ হুরাইরা [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল [সাঃআঃ] বলেছেন ঃ যাঁর হাতে আমার প্রাণ, তাহাঁর শপথ! আমার ইচ্ছা হয়, জ্বালানী কাঠ সংগ্রহ করিতে আদেশ দেই, অতঃপর নামাজ কায়েমের আদেশ দেই, অতঃপর নামাজের আযান দেয়া হোক, অতঃপর এক ব্যক্তিকে লোকদের ইমামতি করার নির্দেশ দেই । অতঃপর আমি লোকদের নিকট যাই এবং [যারা নামাজে শামিল হয়নি] তাদের ঘর জ্বালিয়ে দেই । যে মহান সত্তার হাতে আমার প্রাণ, তাহাঁর কসম! যদি তাদের কেউ জানত যে, একটি গোশ্‌তহীন মোটা হাড় বা ছাগলের ভালো দু’টি পা পাবে তাহলে সে অবশ্যই ‘ইশা নামাজের জামাতেও হাযির হতো । শব্দ বিন্যাস বুখারীর । {৪৪১}

{৪৪১} বুখারী ৬৪৪, ৬৫৭, ২৪২০, ৭২২৪, মুসলিম ৬৫১, তিরমিজি ২১৭, নাসায়ি হাদিস ৮৪৮, আবূ দাউদ ৫৪৮, ৫৪৯, ইবনু মাজাহ ৭৯১, আহমাদ ৭২৬০, ৭৮৫৬, মুওয়াত্তা মালেক ২৯২, ,দারেমী ১২১২, ১২৭৪। [আরবী] বলা হয় ঐ হাড়কে যাতে গোশত রয়েছে, আর যে হাড়ে গোশত নেই তাকে [আরবী] তথা মাংসশূন্য হাড় বলা হয় । হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ ১৭১ঃ ইশা ও ফজরের জামায়াত থেকে দূরে অবস্থানকারীর জন্য সতর্কবাণী

৪০১ – আবূ হুরাইরা [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন যে, নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ মুনাফিকদের জন্য ফাজর ও ‘ইশার নামাজ অধিক ভারী । এ দু’ নামাজের কি ফাযীলাত, তা যদি তারা জানতো, তবে হামাগুড়ি দিয়ে হলেও তারা উপস্থিত হতো । {৪৪২}

{৪৪২} বুখারী ৬৪৪, ২৪২০, ৭২২৪, মুসলিম ৬৫১, তিরমিজি ২১৭, নাসায়ি হাদিস ৮৪৮, আবূ দাউদ ৫৪৮, ৫৪৯, ইবনু মাজাহ ৭৯১, আহমাদ ৭২৬০, ৭৮৫৬, মুওয়াত্তা মালেক ২৯২, ,দারেমী ১২১২, ১২৭৪ । হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ ১৭২ঃ আযান শুনতে পায় এমন ব্যক্তির জামাতে উপস্থিতি ওয়াজিব

৪০২ – আবূ হুরাইরা [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একজন অন্ধলোক [‘আবদুল্লাহ বিন উম্মু মাক্‌তুম] নাবী [সাঃআঃ] এর কাছে এসে বলিলেন – হে আল্লাহর রাসূল! মাসজিদে নিয়ে যাওয়ার মত আমার কোন লোক নেই । এটা শুনে তিনি তাকে [জামাতে হাজির হওয়া হতে] অব্যাহতি দিলেন । যখন লোকটি ফিরে গেল তখন তাকে ডেকে বলিলেন, তুমি কি নামাজের আযান শুনতে পাও ? লোকটি বলিলেন হ্যাঁ, নাবী [সাঃআঃ] বলিলেন, “তবে তুমি আযানে সাড়া দাও ।” [অর্থাৎ আযানের ডাকে জামাতে হাজির হও] । {৪৪৩}

{৪৪৩} মুসলিম ৬৫৩, নাসায়ি হাদিস ৮৫০। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ ১৭৩ঃ আযান শ্রবণ করা সত্ত্বেও যে ব্যক্তি জামাতে উপস্থিত না হয় তার বিধান

৪০৩ -ইবনু ‘আব্বাস [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

তিনি নাবী [সাঃআঃ] হতে বর্ণনা করেন, নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ আযান শুনার পরও যে জামাতে হাজির হয় না তার নামাজ [শুদ্ধ] হয় না তবে যদি ওযর [শারিয়াত সম্মত কোন কারণ] থাকে তাহলে তা স্বতন্ত্র ব্যাপার হইবে । ইবনু মাজা, দারাকুৎনী, ইবনু হিব্বান, হাকিম; এর সানাদ মুসলিমের সানাদের শর্তানুযায়ী । কিন্তু মুহাদ্দিসীনের কেউ কেউ ”মউকুফ” হাদিস বলেছেন । {৪৪৪}

{৪৪৪} আবূ দাউদ ৫৫১, ইবনু মাজাহ ৭৯৩, দারেমী ৪২০। হাদিসের তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস

পরিচ্ছেদ ১৭৪ঃ ফরয নামাজ আদায়ের পর মাসজিদে প্রবেশ করলে তার বিধান

৪০৪ – ইয়াযিদ্‌ বিন আসওয়াদ [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

তিনি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর সঙ্গে [মিনার খায়েফ নামক মাসজিদে] ফাজরের নামাজ আদায় করেছিলেন যখন তিনি নামাজ সমাধান করিলেন তখন দেখলেন যে, দু’টি লোক [জামাতে] নামাজ আদায় করে নাই। তাদের কে তিনি ডাকলেন । ফলে ঐ দু’জনকে যখন তাহাঁর নিকটে নিয়ে আসা হলো তাদের বাহুদ্বয়ের মাংশপেশী [ভয়ে] কাঁপছিল । তারপর তাদের তিনি বলিলেন, আমাদের সঙ্গে জামাতে নামাজ পড়তে কিসে বাধা দিলো? তারা বললো আমরা আমাদের বাড়ীতে নামাজ সমাধান করেছিলাম । তিনি তাদের বলিলেন, এরূপ করিবে না । যখন তোমরা বাড়িতে নামাজ আদায় করার পর ইমামকে নামাজ সমাধান করার পূর্বেই পাবে তখন তোমরা তার সঙ্গেও নামাজ আদায় করিবে। এ নামাজ তোমার জন্য নফল বলে গণ্য হইবে -“আহমাদ”, শব্দ বিন্যাস তারই -আর তিন জনে। তিরমিজি ও ইবনু হিব্বান্‌ সহীহ্‌ বলেছেন । {৪৪৫}

{৪৪৫} তিরমিজি ২১৯, আবূ দাউদ ৫৭৫, আহমাদ ১৭০২০। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ ১৭৫ঃ ইমাম নির্ধারণের মহত্ত্ব ও তাকে অনুসরণ পদ্ধতি

৪০৫ – আবূ হুরাইরা [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ ইমাম নির্ধারণ করা হয় তাহাঁর অনুসরনের জন্য । তাই যখন তিনি তাকবীর্‌ বলেন, তোমরাও তাকবীর্‌ বলবে, আর ইমাম তাকবীর না বলা পর্যন্ত তোমরা বলবে না । যখন তিনি রুকূ’ করেন তখন তোমরাও রুকূ’ করিবে । তিনি রুকূ’ না করা পর্যন্ত তোমার রুকূ’তে যাবে না। যখন

سَمِعَ اللَّهُ لِمَنْ حَمِدَهُ

বলেন তখন তোমরা

اللَّهُمَّ رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ

বলবে । আর তিনি যখন সাজদাহ্‌ করেন তখন তোমরাও সাজদাহ্‌ করিবে । আর সাজদায় তোমরা ততক্ষণ যাবে না , যতক্ষণ না তিনি সাজদাহ্‌তে যান । যখন তিনি দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করেন তখন তোমরাও দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় কর। আর যখন তিনি বসে নামাজ আদায় করেন তখন তোমরাও বসে নামাজ আদায় করিবে । আবূ দাউদ ঃ এটা তারই শব্দ । এ হাদিসের মূল বিষয় বুখারী, মুসলিমে রয়েছে । {৪৪৬}

{৪৪৬} মুসলিম ৪১৪, ৪১৭, বুখারী ৭২২, নাসায়ি হাদিস ৯২১, ইবনু মাজাহ ৮৪৬, ১২৩৯, আবূ দাউদ ৬০৩ আহমাদ ৭১০৪, ৮২৯৭, ৮৬৭২, ৯০৭৪, দারেমী ১৩১১ ।বুখারীর বর্ণণায় রয়েছে, নাবী [সাঃআঃ] বলেছেন ঃ ইমাম নির্ধারণ করা হয় তাহাঁর অনুসরণের জন্য । তাই যখন তিনি তাক্‌বীর বলেন, তখন তোমরাও তাক্‌বীর বলবে, যখন তিনি রুকূ’ করেন তখন তোমরাও রুকূ’ করিবে । যখন [আরবী] বলেন, তখন তোমরা বলবে [আরবী] আর তিনি যখন সাজদাহ্‌ করেন তখন তোমরাও সাজদাহ্‌ করিবে । যখন তিনি বসে নামাজ আদায় করেন তখন তোমরাও বসে নামাজ আদায় করিবে । হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ ১৭৬ঃ ইমামের নিকটবর্তী হওয়া মুস্তাআব [পছন্দনীয়]

৪০৬ – আবূ সা’ঈদ খুদরী [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর সাহাবীদেরকে তাহাঁর নিকট থেকে দূরে দাঁড়াতে দেখে বলিলেন, তোমরা আমার নিকট অগ্রসর হও এবং তোমরা আমার অনুসরণ কর আর তোমাদের পেছনে যারা থাকিবে তারা তোমাদের অনুসরণ করিবে। {৪৪৭}

{৪৪৭} মুসলিম ৪৩৮, নাসায়ি হাদিস ৭৯৫, আবূ দাউদ ৬৮০, ইবনু মাজাহ ৬৭৮, আহমাদ , ১০৮৯৯ পূর্ণাঙ্গ হাদিসটি হচ্ছে, যারা [নামাজের কাতারে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে ] পিছনে পড়ে থাকিবে আল্লাহ তাদেরকে পিছনেই করে দেবেন । হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ ১৭৭ঃ নফল সালাতে জামা’আত করা বৈধ

৪০৭ – যায়ন বিন সাবিত [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূল [সাঃআঃ] পাটি দিয়ে একটি ছোট কক্ষ তৈরী করেছিলেন আর সেখানে তিনি [নফল] সালাত আদায় করিতে লাগলেন। ফলে কিছু লোক [কামরার বাইরে] তাহাঁরই নামাজের অনুসরণ করিতে এসে তাহাঁর নামাজের সাথে নামাজ পড়তে লাগল। হাদিসটি দীর্ঘ। ফরয নামাজ ব্যতীত অন্য সব নামাজ বাড়িতে আদায় করা উত্তম। {৪৪৮}

{৪৪৮} বুখারী ৭৩১, মুসলিম ৭৮১, তিরমিজি ৪৫০, নাসায়ি হাদিস ১৫৯৯, আবূ দাউদ ১০৪৪, ১৪৪৭, আহমাদ ২১০৭২, ২১০৮৪, ২১১১৪, মুওয়াত্তা মালেক ২৯৩, দারেমী ১৩৬৬। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস

৪০৮ – জাবির বিন`আবদুল্লাহ [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন- সাহাবী মূ’আয্ [রাঃআঃ] তাহাঁর অধীনস্থ লোকেদের নিয়ে`ইশা সালাত আদায় করিলেন এবং ঐ সালাত তাদের পক্ষে খুব দীর্ঘ [কষ্টকর] হয়ে গেল। ফলে নাবী [সাঃআঃ] [এটা জানতে পেরে] তাঁকে বললেনঃ হে মূ’আয্! তুমি কি ফিতনাহ সৃষ্টি করিতে চাও? যখন তুমি লোকেদের ইমামতি করিবে তখন অশ্‌শাসমসি ওয়াযুহা’হা; সাব্বিহিসমা রব্বিকাল্ আ’লা, ইকরা বিসমি রব্বিকা ও ওয়াললাইলি ইযা ইয়াগশা [সূরাগুলো] পাঠ করিবে। শব্দ বিন্যাস মুসলিমের। {৪৪৯}

{৪৪৯} বুখারী ৭০৫, ৬১০, মুসলিম ৪৬৫, নাসায়ি হাদিস ৮৩৫, আবূ দাউদ ৭৯০, ইবনু মাজাহ ৮৩৬, ৯৮৬, ইবনু মাজাহ ১৩৭৭৮, ১৩৮৯৫। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ ১৭৮ঃ দাঁড়াতে অক্ষম ব্যক্তির পিছনে সালাত আদায় করার বিধান ও পদ্ধতি

৪০৯ – আয়িশা [রাঃআঃ] হতে নাবী [সাঃআঃ]- থেকে বর্ণিতঃ

রোগাক্রান্ত অবস্থায় লোকেদের ইমামতি করার ঘটনা সম্বন্ধে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ তিনি [সাঃআঃ] এসে আবূ বাক্‌রের বাম দিকে বসে গেলেন, বসে বসেই লোকদের সালাত আদায় করাতে লাগলেন আর আবু বাক্‌র দাঁড়িয়ে নাবী [সাঃআঃ]-এর ইকতিদা [অনুসরণ] করিতে লাগলেন আর লোকেরা আবূ বাক্‌রের ইকতিদা [অনুসরণ] করিতে লাগল। {৪৫০}

{৪৫০} বুখারী ৭১৩, মুসলিম ৪১৮, তিরমিজি ৩৬৭২, ইবনু মাজাহ ১২৩২, ১২৩৩, আহমাদ ৫১১৯, ২৩৫৮৩, মুওযাত্তা মালেক ৪১৪, দারেমী ১২৫৭। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ ১৭৯ঃ ইমামকে সালাত হালকা করার নির্দেশ

৪১০ – আবূ হুরাইরা [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

আল্লাহর রাসুল [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমদের কেউ যখন লোকেদের নিয়ে সালাত আদায়করে, তখন যেন সে সংক্ষেপ করে। কেননা, তাদের মধ্যে ছোট, বড়, দুর্বল ও কর্মব্যস্তরা রয়েছে। আর যদি কেউ একাকী সালাত আদায় করে, তখন ইচ্ছামত দীর্ঘ করিতে পারে। {৪৫১}

{৪৫১} বুখারী ৭০৩, মুসলিম ৪৬৭, তিরমিজি ২৩৬, নাসায়ি হাদিস ৮২৩, আবূ দাউদ ৭৯৪, আহমাদ ২৭৪৪, ৯৯৩৩, ১০১৪৪, মুওয়াত্তা মালেক ৩০৩। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ ১৮০ঃ নাবালেগ বালেগের ইমামতি করিতে পারে

৪১১ – আমর বিন সালিমাহ [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেছেন- আমার পিতা বলেছেন, সত্যই আমি তোমাদের নিকট নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট হতে এসেছি। নাবী [সাঃআঃ] বলেছেন-যখন সালাতের সময় হইবে তখন তোমাদের কেউ একজন আযান দিবে আর যে ব্যক্তি তেমাদের মধ্যে কুরআন সম্পর্কে অধিক অবগত সে তোমাদের ইমামতি করিবে। তিনি [রাবী আমর] বলেন, লোকেরা তাকাল কিন্তু আমার থেকে অধিক কুরআন পাঠকারী অনুসন্ধান করে পেল না। তখন তারা ইমামতি করার জন্য আমাকেই আগে বাড়িয়ে দিল। অথচ তখন আমার বয়স মাত্র ৬-৮ বছর। {৪৫২}

{৪৫২} বুখারী ৪৩০২, নাসায়ি হাদিস ৬৩৬, আবূ দাউদ ৫৮৫, আহমাদ ১৫৪৭২, ২০১৬২। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ ১৮১ঃ ইমামতির অধিক হক্বদার যিনি?

৪১২ – আবূ মাস’ঊদ [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন- তোমাদের মধ্যে সর্বাধিক কুরআন আয়ত্তকারী ব্যক্তি তোমাদের [নামাজে] ইমামতি করিবে। যদি তাদের মধ্যে একাধিক জন কুরআন পাঠে সমতুল্য হয় তবে যে ব্যক্তি আমার সুন্নাত অধিক জানে [সে ইমামতি করিবে]; সুন্নাতে সমতুল্য হলে যে হিজরতে অগ্রগামী, [সে ইমামতি করিবে] হিজরতে সমতুল্য হলে ইসলাম গ্রহণে অগ্রগামী, [সে ইমামতি করিবে] ভিন্ন একটি সিলমান এর স্থলে সিন্নান [শব্দটি] আছে-যার অর্থ হইবে বয়সে প্রবীণ ব্যক্তি। কেউ যেন কোন ব্যক্তির অধিকার স্থলে তার অনুমতি ব্যতীত ইমামতি না করে ও তার [কোন ব্যক্তির] বিছানায় তাহাঁর অনুমতি ব্যতীত না বসে। {৪৫৩}

{৪৫৩} মুসলিম ৬৭৩ তিরমিজি ২৩৫, নাসায়ি হাদিস ৭৮০, ৭৮৩, আবূ দাউদ ৫৮২, ইবনু মাজাহ ৯৮০, আহমাদ ১৬৬১৫, ১৬৬৪৩। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ ১৮২ঃ যে সমস্ত ব্যক্তিদের জন্য ইমামতি বৈধ নয়

৪১৩ – ইবনু মাজাহতে জাবির [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

কোন স্ত্রীলোক পুরুষের ইমামতি করিবে না এবং কোন অজ্ঞ লোক কোন মুহাজিরের এবং ফাজির [দুরাচারী] মুমিনের ইমামতি করিবে না। এর সানাদ অত্যন্ত দুর্বল [ওয়াহ]। {৪৫৪}

{৪৫৪} ইবনু মাজাহ ১০৮১। ইমাম সনআনী তাহাঁর সুবুলুস সালাম [২/৪৭] গ্রন্থে বলেন, এর সনদে আবদুল্লাহ বিন মুহাম্মাদ আল আদাবী রয়েছেন যিনি আলী বিন যায়দ বিন জাদআন থেকে বর্ণনা করিয়াছেন। আর আদাবীকে ওয়াকী হাদিস জালকারী হিসেবে আখ্যায়িত করিয়াছেন। আর শিক্ষকও দুর্বল বর্ণনাকারী। ইবনু উসাইমীনও তাহাঁর শরহে বুলুগুল মারাম [২/২৬৯] গ্রন্থে একে দুর্বল বলেছেন। শাইখ আলবানী ইরওয়াউল গালীল [৫২৪] গ্রন্থেও একে দুর্বল বলেছেন। ইমাম শওকানী তাহাঁর নাইলুল আওত্বার [৩/১৯৯] গ্রন্থে বলেন, এর সনদে আবদুল্লাহ বিন মুহাম্মাদ আত তামীমী রয়েছেন। আর তাকে সমর্থন করিয়াছেন আবদুল মালিক বিন হাবীব। কিন্তু তিনি হাদিস চুরি ও হাদিস ওলটপালটকারী হিসেবে অভিযু্ক্ত। আর এর সনদে আলী বিন যায়দ বিন যাদআন রয়েছেন, তিনিও দুর্বল। হাদিসের তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস

পরিচ্ছেদ ১৮৩ঃ কাতার সোজা করার নির্দেশ এবং এর পদ্ধতি

৪১৪ – আনাস [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

তিনি নাবী [সাঃআঃ] হতে বর্ণনা করিয়াছেন, নাবী [সাঃআঃ] বলেছেন- তোমাদের কাতার গুলোকে খুব ভালভাবে একে অপরের সাথে মিশিয়ে নাও এবং এক কাতারকে অন্য কাতারের কাছাকাছি করো এবং কাঁধগুলোকে পরস্পরের বরাবর রাখ। ইবনু হিব্বান সহিহ বলেছেন। {৪৫৫}

{৪৫৫} আবূ দাউদ ৬৬৭, ৬৬৮, ৬৬৯, বুখারী ৭২৩, ৭১৮, মুসলিম ৪৩৩, নাসায়ি হাদিস ৮১৪, ৮১৫, ৮৪৫, ইবনু মাজাহ ৯৯৩, আহমাদ ১২৪৭৩, ১৩২৫২, ১৩৩৬৬, দারেমী ১২৬৩। এই হাদীসে ওয়ালীদ বিন বুকাইর আবূ জান্নাব নামক কবি রয়েছে। ইমাম দারাকুতনি তবে মাতরূক বলেছেন। আরেক জন রয়েছে যার নাম আবদুল্লাহ বিন মুহম্মাদ আল আদারী নামক দুর্বল রাবী রয়েছে। তাকে ইবিনুল তাফে দুর্বল আখ্যায়িত করিয়াছেন। ইমাম বুখারী তাকে দুর্বল আখ্যায়িত করিয়াছেন। আবূ হাতিম আর রাযী ও অনুরূপ বলেছেন। দুরাকুতনী ও তাকে মাতরূক হিসাবে চিহ্ণিত করিয়াছেন। আরেক জন রাবী আছে [আরবী] বলেন তার হাদিস পরিত্যজ্য। ইমাম আহমাদ বিন হাম্বাল ও ইয়াহইয়া ইবনু মাঈন তারা বলেন, তিনি শক্তিশালী রাবীদের অন্তরভুক্ত নয়। সুতরাং হাদিস শাস্ত্রের মানদন্ডে হাদিসটি [আরবী] । হাদিসটি ইবনু মাজাতে এককভাবে বর্ণিত হয়েছে। ইবনু হিবাবানের বর্ণনায় [আরবী] এর স্থলে [আরবী]শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। এবং সকলেই [আবূ দাউদ, নাসাঈ, ইবনু হিব্বান] আরো বৃদ্ধি করিয়াছেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, [আরবী] সেই সত্ত্বার শপথ যাঁর হাতে আমার প্রাণ! নিশ্চয় আমি শায়ত্বানকে কাতারের ফাঁক দিয়ে প্রবেশ করিতে দেখছি, তাকে একটি ছোট কালো ছাগলের ন্যায় মনে হচ্ছিল। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ ১৮৪ঃ পুরুষ ও মেয়েদের জন্য উত্তম কাতারের বর্ণনা

৪১৫ – আবূ হুরাইরা [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, পুরূষদের উত্তম সারি [কাতার] হলো প্রথম সারি, আর নিকৃষ্ট সারি হচ্ছে পিছনের সারি এবং মেয়েদের সর্বোত্তম কাতার শেষেরটি আর নিকৃষ্ট হচ্ছে প্রথমটি। {৪৫৬}

{৪৫৬} মুসলিম ৪৪০, তিরমিজি ২৪৪, নাসায়ি হাদিস ৮২০, আবূ দাউদ ৬৭৮, ইবনু মাজাহ ১০০০, আহমাদ ৭৩১৫, ৮২২৩, ৮২৮১, দারেমী ১২৬৮। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ ১৮৫ঃ মুক্তাদী একজন হলে সে কোথায় দাঁড়াবে?

৪১৬ – ইবনু`আব্বাস [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, কোন এক রাতে আমি নাবী [সাঃআঃ]-এর সঙ্গে সালাত আদায় করিতে গিয়ে তাহাঁর বাম পাশে দাঁড়ালাম। তিনি আমার মাথার পিছনের দিক ধরে তাহাঁর ডান পাশে নিয়ে আসলেন। {৪৫৭}

{৪৫৭} বুখারী ১১৭, ১৩৮, ৬৯৭, ৬৯৮, ৬৯৯, ৭২৬, মুসলিম ৭৬৩, তিরমিজি ২৩২, নাসায়ি হাদিস ৪৪২, ৮০৬, আবূ দাউদ ৫৮, ৬১০, ১৩৫৩, ১৩৫৫, ১৩৫৬, ১৩৬৪, আহমাদ ২১৬৫, ২২৪৫, ২৩২১, মুওয়াত্তা মালেক ২৬৭, ১২৬২, দারেমী ১২৫৫। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ ১৮৬ঃ একাধিক মুসল্লি হলে মুক্তাদী কোথায় দাঁড়াবে?

৪১৭ – আনাস [ইবনু মালিক] [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] সালাত আদায় করেন। আমি এবং একটি ইয়াতীম তাহাঁর পিছনে দাঁড়ালাম আর উম্মু সুলাইম [রাঃআঃ] আমাদের পিছনে দাঁড়ালেন। শব্দ বিন্যাস বুখারীর। {৪৫৮}

{৪৫৮} বুখারী ৫৩, ৫২৩, ১৩৯৮, ৩০৯১, ৩৫১০, ৪৩৬৮, ৪৩৬৯, ৬১৭৭, ৭২৬৬, মুসলিম ১৭, তিরমিজি ১৫৯৯, ২৬১১, নাসায়ি হাদিস ৫০৩১, ৫৫৪৮, ৫৬৪৩, ৫৬৯২, আবূ দাউদ ৩৬৯০, ৩৬৯২, আহমাদ ২০১০, ২৪৭২, ২৪৯৫। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ ১৮৭ঃ কাতারের পিছনে একাকী নামাজ আদায়াকারীর বিধান

৪১৮ – আবূ বাক্‌রাহ [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

তিনি নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট এমন অবস্থায় পৌঁছলেন যে, নাবী [সাঃআঃ] তখন রুকূ’তে ছিলেন। তখন কাতার পর্যন্ত পৌছার পূর্বেই তিনি রুকূ’তে চলে যান। [এ ঘটনা নাবী [সাঃআঃ]-এর নিকট ব্যক্ত করা হলে] তিনি [সাঃআঃ] তাকে বলিলেন, আল্লাহ তা’আলা তোমার আগ্রহকে আরও বাড়িয়ে দিন। তবে এ রকম আর করিবে না।

আবূ দাউদ বৃদ্ধি করেছেনঃ তিনি নামাজের সারি পর্যন্ত না পৌঁছে রুকূ করেন, অতঃপর রুকূর অবস্থায় এগিয়ে গিয়ে সারিতে সামিল হন। {৪৫৯}

{৪৫৯} বুখারী ৭৮৩, নাসায়ী ৮৭১, আবূ দাউদ ৬৮৩, ৬৮৪, আহমাদ ১৯৮৯২, ১৯৯২২, ১৯৯৯৪। আবূ দাউদের বর্ণনায় রয়েছে, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, [আরবী] তোমাদের মধ্যে কে কাতারে না পৌঁছে রুকু আরম্ভ করে, অতঃপর এ অবস্থায় কাতারে শামিল হয়? হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস

৪১৯ – ওয়াসিবাহ বিন মা’বাদ জুহানী [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] একজন লোককে একাকী সারির পেছনে নামাজ আদায় করিতে দেখেছিলেন, ফলে তাকে তিনি পুনরায় নামাজ আদায় করার আদেশ দিলেন। আহমদ, আবূ দাউদ, তিরমিজি [তিনি হাদিসটিকে হাসানও বলেছেন] এবং ইবনু হিব্বান সহিহ বলেছেন। {৪৬০}

{৪৬০} আবূ দাউদ ৬৮২, তিরমিজি ২৩০, ২৩১, ইবনু মাজাহ ১০০৪, আহমাদ ১৭৫৩৯, দারেমী ১২৮৫। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস

৪২০ – বর্ণনাকারী থেকে বর্ণিতঃ

তুবারানীতে উক্ত ওয়াবিসাহ কর্তৃক বর্ণিত হাদীসে আরও আছে, কোন সারিতে ঢুকে যাওনি কেন বা একজন নামাজ আদায়কারীকে [পূর্বের সারি হতে] পেছনে টেনে নেওনি কেন? {৪৬১}

{৪৬১} আবু দাউদ ৬৮২, তিরমিজি ২৩০, ২৩১, ইবনু মাজাহ ১০০৪, আহমাদ ১৭৫৩৯, দারেমী ১২৮৫। হাদিসটি সহিহ তবে ত্ববারানির অতিরিক্ত অংশ জঈফ, তাওযিহুল আহকাম ২/৫০৬-৫০৭। হাদিসের তাহকীকঃ অন্যান্য

৪২১ – বর্ণনাকারী থেকে বর্ণিতঃ

ইবনু হিব্বান ত্বল্‌ক্‌ হতে অন্য এক হাদীসে বর্ণনা করিয়াছেন, “সারির পেছনে একাকী দাড়ানো ব্যক্তির নামাজ হয় না। {৪৬২}

{৪৬২} ইবনু হিব্বান ২২০২। ইবনু হিব্বানে রহিয়াছে, আলী বিন শাইবান [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা আমরা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর কাছে এসে তাহাঁর পিছনে সালাত আদায় করলাম। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যখন সালাত শেষ করিলেন তখন তিনি দেখলেন, একজন লোক পিছনের কাতারে একাকী নামাজ আদায় করছে। তখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর সালাত শেষ হওয়া পর্যন্ত দাঁড়িয়ে থাকলেন। অতঃপর নাবী [সাঃআঃ] তাকে বলিলেন, তুমি তোমার নামাজ পুনরায় পড়। কেননা কাতারের পিছনে একাকী নামাজ আদায়কারীর সালাত সিদ্ধ হয় না। হাদিসের তাহকীকঃ অন্যান্য

পরিচ্ছেদ ১৮৮ঃ মাজের উদ্দেশ্যে মসজিদে যাওয়ার আদবসমূহ

৪২২ – আবু হুরাইরা [রাঃআঃ] সূত্রে নাবী [সাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, যখন তোমরা ইকামাত শুনতে পাবে, তখন নামাজের দিকে চলে আসবে, তোমাদের উচিত স্থিরতা ও গাম্ভীর্য অবলম্বন করা। তাড়াহুড়া করিবে না। ইমামের সাথে যতটুকু পাও তা আদায় করিবে, আর যা ছুটে যায় তা পূর্ণ করিবে। -[শব্দ বিন্যাস বুখারী]। {৪৬৩}

{৪৬৩} বুখারী ৬৩৬, ৯০৮, মুসলিম ৬০২, তিরমিয়ী ৩২৭, নাসায়ী ৮৬১, আবূ দাউদ ৮৭২, ৮৭৩, ইবনু মাজাহ ৭৭৫, আহমাদ ৭১৮৯, ৭২০৯, ৭৬০৬, মুওয়াত্তা মালেক ১৫২, দারেমী ১২৮২। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ ১৮৯ঃ জামাতে লোকসংখ্যা বেশি হওয়ার ফযীলত

৪২৩ – উবাই বিন কা’ব [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আল্লাহ্‌র রাসূল [সাঃআঃ] বলেছেন-একা একা নামাজ আদায়ের চেয়ে অপর এক ব্যক্তির সাথে নামাজ আদায় করা উত্তম। আর দু জনের সঙ্গে জামা’আত করে নামাজ আদায় করা একাকী নামাজ আদায়ের চেয়ে উত্তম। তারপর যত অধিক [জামা’আত বড়] হইবে ততোধিক মহাপরাক্রমশালী আল্লাহর নিকট তা প্রিয়। -ইবনু হিব্বান একে সহিহ বলেছেন। {৪৬৪}

{৪৬৪} আবূ দাউদ ৫৯৫, ২৯৩১, আহমাদ ১১৯৪৫, ১২৫৮৮। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ ১৯০ঃ মহিলাদের জন্য মহিলার ইমামতির বিধান

৪২৪ – উম্মু ওয়ারাকাহ [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

নাবী [সাঃআঃ] তাকে [ওয়ারকার মাতাকে] হুকুম করেছিলেন যে, সে তার মহল্লাবাসীনীর ইমামতি করিবে। -ইবনু খুযাইমাহ একে সহিহ বলেছেন। {৪৬৫}

{৪৬৫} ইবনু খুযাইমা ১৬৭৬, আবূ দাউদ ৫৯১, আহমাদ ২৬৭৩৮৫। হাদিসের তাহকীকঃ হাসান হাদিস

পরিচ্ছেদ ১৯১ঃ ন্ধ ব্যক্তির ইমামতির বিধান

৪২৫ – আনাস [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

নাবী [সাঃআঃ] ইবনু উম্মু মাকতুম অন্ধ সাহাবীকে লোকেদের ইমামতি করার জন্য [মাদীনায়] তার স্থলাভিষিক্ত করেছিলেন। {৪৬৬}

{466} আবূ দাউদ এবং আহমাদ এর বর্ণনায় হাদিসটি হাসান সনদে বর্ণিত হলেও পরবর্তী শাহেদ হাদিস থাকার কারণে হাদিসটি সহিহ । হাদিসের তাহকীকঃ হাসান হাদিস

৪২৬ – বর্ণনাকারী থেকে বর্ণিতঃ

ইবনু হিব্বানেও আয়িশা [রাঃআঃ] হতে অনুরূপ একটি হাদিস বর্ণিত আছে। {৪৬৭}

{৪৬৭} ইবনু হিব্বান ২১৩৪, ২১৩৫। হাদিসটি সহিহ। ইবনু হিব্বান তা বর্ণনা করিয়াছেন । আয়েশা [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিত, নাবী [সাঃআঃ] লোকদের ইমামতি করার জন্য ইবনু উম্মি মাকতুমকে মদীনায় রেখে গিয়েছিলেন । হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস

পরিচ্ছেদ ১৯২ঃ ফাসিক ব্যক্তির ইমামতি বৈধ

৪২৭ – ইবনু`উমার [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, যে ব্যক্তি

لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ

“লা-ইলাহা ইল্লাল্‌লাহু”

কালিমা পাঠ করেছে তার জানাযার নামাজ আদায় কর। আর যে ব্যক্তি

لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ

“লা-ইলাহা ইল্লাহ্‌লাহু” কালিমা পাঠ করছে তার পেছনে [মুক্তাদী হয়ে] নামাজ আদায় করিবে।– দারাকুৎনী দুর্বল সানাদে। {৪৬৮}

{৪৬৮} দারাকুতনি ২/৫২। আল কামিল ফিয যূয়াফা [৩/৪৭৮] গ্রন্থে ইবনু আদী হাদিসটি বানোয়াট বলে আখ্যা দিয়েছেন। আল ওহম ওয়াল ইহাম [৫/৬৮৫] গ্রন্থে ইবনু কাত্তান বলেন সনদে একজন রাবী কাযযাব [মিথ্যাবাদী] রয়েছে। এ ছাড়া ফাতাওয়া মূর আলাদ্দার [১৪/৪৪] গ্রন্থে বিন বায আল আল জামিউস স্বাগীর [৫০৩০] গ্রন্থে ইমাম সুয়ূত্বী ইরওয়াউল গালীল [৭২০] ও যয়ীফুল জামে [৩৪৮৩] গ্রন্থে আলবানী দুর্বল আখ্যায়িত করিয়াছেন। হাদিসের তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস

পরিচ্ছেদ ১৯৩ঃ ইমাম যে অবস্থায় থাকিবে সে অবস্থায় ইমামের সাথে জামাতে অংশগ্রহণ করা শরীয়তসম্মত

৪২৮ – ‘আলী বিন আবূ তালিব [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন , নাবী [সাঃআঃ] বলেছেন, যখন তোমাদের কেউ নামাজ আদায়ের উদ্দেশ্যে আসে তখন ইমাম যে অবস্থায় থাকে তাহাঁর সঙ্গে সে অবস্থাতেই জামাতে শরীক হইবে ও তিনি যা করেন মুক্তাদীও তাই করিবে । তিরমিজি দুর্বল সানাদে। {৪৬৯}

{৪৬৯} তিরমিজি ৫৯১, হাদিসটি জঈফ, তবে তার অনেক শাহিদ থাকাতে এটি শক্তিশালী হয়েছে, তাওযিহুল আহকাম ২/৫২৪। হাদিসের তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস


by

Comments

Leave a Reply