কাযায়ে হাযাত বা প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেয়ার বর্ণনা
কাযায়ে হাযাত বা প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেয়ার বর্ণনা >> বুলুগুল মারাম এর মুল সুচিপত্র দেখুন
অধ্যায় -৭ঃ কাযায়ে হাযাত বা প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেয়ার বর্ণনা
পরিচ্ছেদ ৭১. যে বস্তুতে আল্লাহর নাম রহিয়াছে তা নিয়ে পায়খানাতে প্রবেশ করা মাকরূহ
পরিচ্ছেদ ৭২. টয়লেটে প্রবেশ করার সময় যা বলিতে হয়
পরিচ্ছেদ ৭৩. প্রশ্রাব ও পায়খানা করার পর পানি দ্বারা পবিত্রতা অর্জন করা
পরিচ্ছেদ ৭৪. প্রশ্রাব ও পায়খানার সময় নিজেকে আড়াল করা ও দূরর্বর্তী স্থানে যাওয়া মুস্তাহাব
পরিচ্ছেদ ৭৫. যে সকল স্থানে পেশাব-পায়খানা নিষিদ্ধ
পরিচ্ছেদ ৭৬. পেশাব বা পায়খানা সম্পাদনের অবস্থায় কথা বলা ও পায়খানার নির্দিষ্ট স্থানে বসার পূর্বে পরিধানের কাপড় খোলা নিষিদ্ধ
পরিচ্ছেদ ৭৭. পেশাব ও পায়খানার আদব
পরিচ্ছেদ ৭৮. পেশাব-পায়খানা করার সময় কেবলার দিকে মুখ করে বসার বিধান
পরিচ্ছেদ ৭৯. পেশাব পায়খানা করার সময় নিজেকে আড়াল করা আবশ্যক
পরিচ্ছেদ ৮০. পেশাব-পায়খানা থেকে বের হওয়ার সময় যা বলিতে হইবে
পরিচ্ছেদ ৮১. -কমপক্ষে তিনটি পাথর দ্বারা ইস্তঞ্জা করা আবশ্যক
পরিচ্ছেদ ৮২. যে বস্তু দ্বারা ইস্তিঞ্জা করা যাবে না
পরিচ্ছেদ ৮৩. পেশাবের ছিটা থেকে সতর্কতা অবলম্বন করা আবশ্যক, আর এর ছিটা কবরের আযাবের কারণ
পরিচ্ছেদ ৮৪. পেশাব পায়খানার সময় বাম পায়ের উপর ভর দেয়া
পরিচ্ছেদ ৮৫. পেশাবের পরে পুরুষাঙ্গকে টেনে নিংড়িয়ে নেওয়া মুস্তাহাব
পরিচ্ছেদ ৮৬. ইস্তিঞ্জা করার সময় পানি ও পাথর একত্রিত করার বিধান
পরিচ্ছেদ ৭১. যে বস্তুতে আল্লাহর নাম রহিয়াছে তা নিয়ে পায়খানাতে প্রবেশ করা মাকরূহ
৮৬ – আনাস বিন মালিক [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,`আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] যখন প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে [পায়খানায়] যেতেন [আল্লাহর নাম খোদিত] আংটি খুলে রাখতেন।’ -৪ জনে [আবূ দাউদ, নাসায়ী, তিরমিজি, ইবনু মাজাহ]। সানাদটি মা‘লুল [ক্ৰটিযুক্ত]। {১০৪}
{১০৪} মুনকার। আবূ দাউদ ১৯]; তিরমিজি ১৭৪৬]; নাসায়ী ১/১৭৮]; ইবনু মাজাহ ৩০৩], ইমাম সনআনী তাহাঁর সুবুলুস সালাম [১/১১৩] গ্রন্থে বলেন, এ হাদিসের বর্ণনাকারীগণ বিশ্বস্ত কিন্তু ইবনু জুরাইজ যুহরী থেকে শুনেননি বরং তিনি যিয়াদ বিন সা‘দ থেকে, আর তিনি যুহরী থেকে শুনেছেন। কিন্তু সেটি অন্য শব্দে। এখানে হুমামের ব্যাপারে সন্দেহ সৃষ্টি হয়েছে, কিন্তু তিনি বিশ্বস্ত। ইবনু উসাইমীন তাহাঁর আশ শারহুল মুমতি‘ [৬/১১২] গ্রন্থে হাদিসটিকে ত্রুটিপূর্ণ বলেছেন। ইবনুল কাইয়্যিম তাহাঁর তাহযীবুস সুনান [১/৩৫] গ্রন্থে বলেন, এর সনদ সহিহ হলেও ত্রুটিপূর্ণ। শাইখ আলবানী জঈফ আবূ দাউদ [১৯] গ্রন্থে একে মুনকার বলেছেন। আর জঈফ তিরমিজি [১৭৪৬] ও জঈফ নাসায়ী [৫২২৮] গ্রন্থে একে দুর্বল বলেছেন. হাদিসের তাহকীকঃ মুনকার
পরিচ্ছেদ ৭২. টয়লেটে প্রবেশ করার সময় যা বলিতে হয়
৮৭- আনাস [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] পায়খানায় ঢোকার সময় [নিম্নোক্ত দু‘আটি] বলিতেনঃ
اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْخُبُثِ وَالْخَبَائِثِ
আল্লাহুম্মা ইন্নী আ‘ঊযুবিকা মিনাল খুবুসি ওয়াল খাবাইস। অর্থঃ হে আল্লাহ! আমি মন্দ পুরুষ ও মহিলা জ্বিনের অনিষ্ট হতে আশ্রয় চাই। ৭ জনে। {১০৫}
{১০৫} বুখারী ১৪২]; মুসলিম ৩৭৫]; আবূ দাউদ ৪]; তিরমিজি ৫]; নাসায়ি হাদিস ১০]; ইবনু মাজাহ ২৯৬]; আহমাদ ৩/৯৯, ১০১, ২৮২], হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ৭৩. প্রশ্রাব ও পায়খানা করার পর পানি দ্বারা পবিত্রতা অর্জন করা
৮৮- আনাস [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যখন পায়খানায় যেতেন আমি ও আমার মত একটি ছেলে চামড়ার তৈরি পাত্র ও বর্ষা নিয়ে যেতাম। তিনি সে পানি দিয়ে সৌচ কার্য সমাধা করিতেন। {১০৬}
{১০৬} সহিহ বুখারী ১৫০]; মুসলিম ৭০,২৭১]; হাদিসের শব্দ ইমাম মুসলিমের। হাদিসের [আরবী] হচ্ছে বর্শা ও লাঠির মাঝামাঝি আকারে ছোট বর্শা। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ৭৪. প্রশ্রাব ও পায়খানার সময় নিজেকে আড়াল করা ও দূরর্বর্তী স্থানে যাওয়া মুস্তাহাব
৮৯- মুগীরাহ বিন্ শু‘বা [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহ্র রসূল [সাঃআঃ] আমাকে বলিলেন,`পানির পাত্রটি নাও, তারপর তিনি সামনে চলতে থাকলেন এবং আমার দৃষ্টির আড়ালে গিয়ে প্রয়োজন পূর্ণ করিলেন।’ {১০৭}
{১০৭} সহিহ বুখারী ৩৬৩]; মুসলিম ৭৭, ২৭৪], হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ৭৫. যে সকল স্থানে পেশাব-পায়খানা নিষিদ্ধ
৯০- আবূ হুরাইরা [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন,`দু’টি [লা‘নত] তথা অভিশাপ বর্ষণকারী কাজ থেকে নিজেদের মুক্ত রাখ-`[১] যে মানুষ চলাচলের রাস্তায় বা [২] [বিশ্রাম করার] ছায়াতে পায়খানা করা।’ {১০৮}
{১০৮} সহিহ মুসলিম ৩৬৯]। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস
৯১ – আবূ দাউদ মু‘আয [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ
“[পুকুর, নদীর]`ঘাটে’ শব্দটি অতিরিক্ত বর্ণনা করিয়াছেন। {১০৯}
{১০৯} জঈফ অর্থাৎ [আরবী] শব্দটি জঈফ। আর অবশিষ্ট অংশটুকু সহিহ। আবূ দাউদ ২৬]; আবূ দাঊদের শব্দগুলো হচ্ছেঃ “তিনটি অভিশাপের কাজ থেকে মুক্ত থাকঃ পানিতে নামার স্থানে [ঘাটে], জনসাধারণের চলাচলের রাস্তা ও ছায়ায় মলমূত্র ত্যাগ করা হতে।”হাদিসের তাহকীকঃ অন্যান্য
৯২ – আহমাদ ইবনু`আব্বাস [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ
‘পানি আবদ্ধ থাকে এমন ক্ষেত্রে [পায়খানা করা নিষেধ]।’ এ দু’টি সানাদের মধ্যেই দুর্বলতা আছে। {১১০}
{১১০} জঈফ, আহমাদ ২৭১৫, ইমাম সন্আনী তাহাঁর সুবুলুস সালাম [১/১১৭] গ্রন্থে বলেন, এর সনদে [প্রসিদ্ধ দুর্বল বর্ণনাকারী] ইবনু লাহিয়া রয়েছেন, আর ইবনু আব্বাস থেকে কোন বর্ণনাকারী বর্ণনা করিয়াছেন তা স্পষ্ট নয়। শাইখ আলবানী সহীহুল জামে [১১৩] গ্রন্থে একে হাসান বলেছেন। সহিহ তারগীব [১৪৭] একে হাসান লিগাইরিহী বলেছেন। ইরয়াউল গালীল [১/১১০] গ্রন্থে বলেন, এর সনদ হাসান হত যদি এর সনদে যার নাম উল্লেখ হয়নি, তিনি যদি না থাকতেন। ইমাম সুয়ূত্বী তাহাঁর আল জামেউস সগীর [১৪০] গ্রন্থে একে সহিহ বলেছেন। আহমাদ শাকের মুসনাদ আহমাদ [৪/২৫৩] গ্রন্থে একে দুর্বল বলেছেন। হাদিসের তাহকীকঃ অন্যান্য
৯৩- বর্ণনাকারী থেকে বর্ণিতঃ
আর তাবারানী বর্ণনা করেছেনঃ ফলদার গাছ-পালার নিচে ও প্রবাহমান নদী নালার কিনারায় পায়খানা করা নিষেধ। ইবনু`উমার [রাঃআঃ]- এর বর্ণিত এ হাদিসটির সানাদ য‘ঈফ। {১১১}
{১১১} মুনকার। পূর্ণ হাদিসটি তাবারানী তাহাঁর মুজামুল আওসাত্বে বর্ণনা করিয়াছেন। যেমনটি রয়েছে মাযমা‘আল বাহরাইন [৩৪৯]; আর মুজামুল কাবীরে এর শেষাংশ বর্ণীত হয়েছে; যেমন বর্ণিত হয়েছে মাযমা’উয যাওয়ায়েদে [১০৪], ইমাম সন্আনী তাহাঁর সুবুসুল সালাম [১/১১৭] গ্রন্থে বলেন, এর সনদে ফুরাত বিন সায়িব নামক একজন মাতরূক বর্ণনাকারী রয়েছেন। হাদিসের তাহকীকঃ মুনকার
পরিচ্ছেদ ৭৬. পেশাব বা পায়খানা সম্পাদনের অবস্থায় কথা বলা ও পায়খানার নির্দিষ্ট স্থানে বসার পূর্বে পরিধানের কাপড় খোলা নিষিদ্ধ
৯৪ -জাবির [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন,`দুব্যক্তি যখন একসঙ্গে পায়খানা করিতে বসবে তখন একে অপরকে দেখিতে না পাওয়া যায় সে জন্য আড়াল করে বসে। আর যেন তারা পরস্পর বাক্যআলাপ না করে। কেননা আল্লাহ তা‘আলা এতে অত্যন্ত নাখোশ হন ।’ আহমাদ আর ইবনু সাকান ও ইবনু কাত্তান একে সহীহ্ বলেছেন। হাদিসটি মা‘লূল [ত্রুটিপূর্ণ]। {১১২}
{১১২} জঈফ। ইবনুল কাত্তান তাহাঁর আল ওয়াহাম ওয়াল ঈহাম [৫/২৬০] গ্রন্থে বলেন, এর সনদ উত্তম। ইবনুল মুলকিন তাহাঁর তুহফাতুল মুহতায [১/১৬৪] গ্রন্থে বলেন, হাদিসটি সহিহ অথবা হাসান। শাইখ আলবানী সিলসিলা সহীহাহ [৩১২০] গ্রন্থে এর সনদকে হাসান বলেছেন। হাদিসের তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস
পরিচ্ছেদ ৭৭. পেশাব ও পায়খানার আদব
৯৫- আবূ কাতাদাহ [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন,`তোমাদের মধ্যে কোন ব্যক্তি যেন প্রসাব করার সময় তার লিঙ্গ কখনও ডান হাতে না ধরে। শৌচ করিতে সময় যেন ডান হাত ব্যবহার না করে আর পানি পান করার সময় যেন পানপাত্রে শ্বাস না ছাড়ে।” শব্দ মুসলিমের। {১১৩}
{১১৩} বুখারী ১৫৩]; মুসলিম ৬৩, ২৬৭], হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস
৯৬- সালমান [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন`আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] আমাদেরকে নিষেধ করেছেনঃ আমরা পায়খানা বা প্রসাব করার সময় যেন কেবলামুখী না হই, ডান হাতে সৌচ কর্ম না করি, তিন খানা পাথরের কমে ইস্তেঞ্জা না করি, আর গোবর ও হাড়ের ইস্তেঞ্জার কাজে যেন বব্যহার না করি ।’ {১১৪}
{১১৪} মুসলিম ২৬২; সালমান [রাঃআঃ] কে বলা হলো তোমাদের নবী তোমাদেরকে সবকিছুই শিক্ষা দেয় এমনকি পেশাব পায়খানার নিয়মও। তিনি বলিলেন, হ্যাঁ। তিনি আমাদের নিষেধ করিয়াছেন… । আল-হাদিস, হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ৭৮. পেশাব-পায়খানা করার সময় কেবলার দিকে মুখ করে বসার বিধান
৯৭- আবূ আইউব আনসারী [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ
‘তোমরা কিবলাহকে [কা’বা ঘরকে] পায়খানা বা প্রস্রাবের সময় সামনে পিছনে রাখবে না বরং পূর্ব বা পশ্চিম [ডান বা বাম] রাখবে।” [মদীনাবাসীদের কিবলাহ দক্ষিণে] । {১১৫}
{১১৫} বুখারী ১৪৪, ৩৯৪]; মুসলিম ২৬৪]; আবূ দাউদ ৯]; নাসায়ী ১২-২৩]; তিরমিজি ৮], ইবনু মাজাহ ৩১৮]; আহমাদ ৫/৪১৪, ৪১৬, ৪১৭, ৪২১]। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ৭৯. পেশাব পায়খানা করার সময় নিজেকে আড়াল করা আবশ্যক
৯৮- আয়িশা [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ
নাবী [সাঃআঃ] বলেছেন,`যে ব্যক্তি পায়খানায় যাবে সে নিজকে যেন পর্দা [আড়াল] করে নেয়।’ আবূ দাউদ। {১১৬}
{১১৬} জঈফ। শায়খ আলবানী তাহাঁর সিলসিলা যঈফাহ [১০২৮] গ্রন্থে হাদিসটিকে দুর্বল বলেছেন। ইবনু হাজার আসকালানী তাহাঁর আত-তালখীসুল হাবীর [১/১৪৯] গ্রন্থে এ হাদিসের বর্ণনাকারী আবূ সা‘দ আল-জিবরানী আল-হিমসীর ব্যাপারে বিতর্কের কথা বলেছেন। বলা হয়ে থাকে যে তিনি সাহাবী, কিন্তু কথাটি ঠিক নয়। ইমাম শাওকানী নাইলুল আওত্বার [১/৯৩] গ্রন্থে উক্ত রাবীর বিতর্কিত হওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে তাকে মাজহুল হিসেবে আখ্যায়িত করিয়াছেন। হাদিসের তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস
পরিচ্ছেদ ৮০. পেশাব-পায়খানা থেকে বের হওয়ার সময় যা বলিতে হইবে
৯৯ – আয়িশা [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ
নাবী [সাঃআঃ] যখন পায়খানা করে বের হওয়ার সময় বলিতেন,
غُفْرَانَكَ
গুফরানাকা [তোমার নিকট ক্ষমা চাইছি]
– আবূ হাতিম ও হাকিম একে সহিহ বলেছেন। {১১৭} পাঁচজনে বর্ণনা করিয়াছেন।
{১১৭}হাদিসটিকে আয়িশাহ [রাঃআঃ] এর সম্পর্কিত করে ইবনু হাজার ভুল করিয়াছেন। হাদিসটি মূলতঃ আবূ হুরাইরা হতে আবূ দাঊদে [৩৫] বর্ণিত। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ৮১. -কমপক্ষে তিনটি পাথর দ্বারা ইস্তঞ্জা করা আবশ্যক
১০০- ইবনু মাস‘উদ [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] পায়খানা করার স্থানে এসে আমাকে তিনটি পাথর আনতে বলিলেন। আমি দুটি পাথর পেলাম, তৃতীয়টি পেলাম না। তাই আমি তাঁকে [তৃতীয়টির স্থলে] এক টুকরো শুকনো গোবর দিলাম। তিনি পাথর দু’খানা নিয়ে গোবরখানা ফেলে দিলেন এবং বলিলেন,`এটি অপবিত্র।’ {১১৮} আহমাদ ও দারাকুৎনীঃ “এর বদলে অন্য কিছু নিয়ে এস।” কথাটি বৃদ্ধি করিয়াছেন {১১৯}
{১১৮} বুখারী ১৫৬, ৩৮৫৯, মুসলিম ৪৫০, তিরমিজি ১৭, নাসায়ী ৩৯, ইবনু মাজাহ ৩১৪ ।{১১৯} আহমাদ [৩৬৭৭]; দারাকুতনী [১/৫৫], হাদিসের শব্দ ইমাম দারাকুতনীর । আর ইমাম আহমাদ রহ. এর শব্দ হচ্ছেঃ [আরবী] এটা অতিরিক্ত এবং সহিহ। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ৮২. যে বস্তু দ্বারা ইস্তিঞ্জা করা যাবে না
১০১- আবূ হুরাইরা [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] হাড় ও গোবর দ্বারা ইস্তেঞ্জা করিতে নিষেধ করিয়াছেন এবং বলেছেন,`এ দুটি বস্তু [কোন কিছুকে] পবিত্র করিতে পারে না। দারাকুৎনী সহিহ বলেছেন। {১২০}
{১২০} দারাকুর্তনী ১৯৫৬ এবং তিনি বলেছেন হাদিসের সনদটি সহিহ। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ৮৩. পেশাবের ছিটা থেকে সতর্কতা অবলম্বন করা আবশ্যক, আর এর ছিটা কবরের আযাবের কারণ
১০২- আবূ হুরাইরা [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, “তোমরা প্রসাবের ছিটা হতে নিজেদের বাঁচিয়ে রাখো। কেননা, সাধারণতঃ কবরের`আযাব এর কারণেই হয়ে থাকে।” {১২১}
{১২১} দারাকুতনী ৭/১২৮, হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস
১০৩- বর্ণনাকারী থেকে বর্ণিতঃ
হাকিমে আছেঃ “অধিকাংশ কবরের`শাস্তি প্রসাবের ছিটা থেকে সতর্ক না থাকার কারণেই হয়।” এর সানাদটি সহিহ। {১২২}
{১২২} হাকিম ১৮৩ এবং তিনি বলেছেন হাদিসটি বুখারী মুসলিমের শর্তভিত্তিক সহিহ। আমি এর কোন ক্রটি জানি না। হাদিসটিকে বুখারী মুসলিম বর্ণনা করেননি। ইমাম জাহাবী বলেছেনঃ এ হাদিসের সমর্থক হাদিস রহিয়াছে। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ৮৪. পেশাব পায়খানার সময় বাম পায়ের উপর ভর দেয়া
১০৪ – সুরাকাহ বিন মালিক [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেনঃ`রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদেরকে পায়খানা করিতে বাম পায়ের উপর ভর দিয়ে ও ডান পা খাড়া রেখে বসার শিক্ষা দিয়েছেন।’ বায়হাকী’ য‘ঈফ সানাদে । {১২৩}
{১২৩} জঈফ। বায়হাকী ১/৯৬, শাইখ বিন বায তাহাঁর হাশিয়া বুলুগুল মারাম [১১৬] গ্রন্থে বলেন, এর মধ্যে দু’জন অস্পষ্ট বর্ণনাকারী রহিয়াছে। ইবনু উসাইমীন তাহাঁর শরহে বুলুগুল মারাম [১/৩১৩] গ্রন্থে হাদিসটিকে দুর্বল বলেছেন। ইমাম নববী তাহাঁর আল মাজমূ‘ [২/৮৯] ও আল খুলাসহ [১/১৬০] গ্রন্থে হাদিসটিকে দুর্বল বলেছেন। ইবনু দাকীক আল ঈদ তাহাঁর আল ইমাম [২/৫০৬] গ্রন্থে বলেন, হাদিসটির সনদ মুনকাতি‘ কেননা এর বর্ণনাকারী বানী মুদলাজ গোত্রের ব্যক্তির ও তার পিতার পরিচয় জানা যায়নি। ইমাম যাহাবী তাহাঁর আল মুহাযযাব [১/১০৫] গ্রন্থে বলেন, আবূ নাঈম এটি বর্ণনা করিয়াছেন। তিনি যামআহ থেকে, তিনি মুহাম্মাদ বিন আবূ আবদুর রহমান থেকে বর্ণনা করিয়াছেন। তিনি যেমন মাজহুল [হাদিস বর্ণনাকারী হিসেবে অপরিচিত] ঠিক তেমনি তাহাঁর শিক্ষকও মাজহুল। হাদিসের তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস
পরিচ্ছেদ ৮৫. পেশাবের পরে পুরুষাঙ্গকে টেনে নিংড়িয়ে নেওয়া মুস্তাহাব
১০৫ – ঈসা বিন ইয়াযদাদ [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ
তিনি তার পিতা হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] বলেন,`তোমাদের কেউ যখন প্রসাব করিবে তখন যেন সে তার লিঙ্গকে ৩ বার নিচড়ে বা ঝেড়ে নেয়। ইবনু মাজাহ দুর্বল সানাদে। {১২৪}
{১২৪} জঈফ। ইবনু মাজাহ ৩২৬, ইমাম হায়সামী তাহাঁর মাজমাউয যাওয়ায়েদ [১/২১২] গ্রন্থে বলেন, এর একজন বর্ণনাকারী ঈসা বিন ইয়াযদাদ সম্পর্কে বিতর্ক রহিয়াছে, কেননা, সে মাজহুল। যদিও ইবনু হিব্বান তাকে তাহাঁর বিশ্বস্ত রাবীদের অন্তর্ভুক্ত করিয়াছেন। ইবনু কাত্তান আল-ওয়াহম ওয়াল ঈহাম [৩/৩০৭] গ্রন্থে বলেন, হাদিসটি সহিহ নয়। ইবনু হাজার আত-তালখীসুল হাবীর [১/১৬১] গ্রন্থে বলেন, এর সনদে ইয়াযদাদ রহিয়াছে। আৰূ হাতিম বলেন, তার বর্ণিত হাদিস মুরসাল। ইমাম বুখারী বলেছেন, সে বিশ্বস্ত নয়। ইবনু মুঈন বলেন, ঈসা এবং তার পিতার পরিচয় জানা যায় না। উকাইলী বলেন, তার এ হাদিসটি ছাড়া আর অন্য কোন বর্ণনা নেই। বিন বায তাহাঁর হাশিয়া বুলুগুল মারাম [১১৭], মাজমু‘ ফাতাওয়া [২৯/২০, ২৬/২৯৬] গ্রন্থে হাদিসটি দুর্বল বলেছেন। শায়খ আলবানী জঈফ ইবনু মাজাহ ৬৮, সিলসিলা যঈফাহ ১৬২১ গ্রন্থে হাদিসটিকে দুর্বল বলেছেন। ইবনু উসাইমীনও শারহে বুলূগুল মারাম ১/৩১৪ গ্রন্থে দুর্বল বলেছেন। হাদিসের তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস
পরিচ্ছেদ ৮৬. ইস্তিঞ্জা করার সময় পানি ও পাথর একত্রিত করার বিধান
১০৬ – ইবনু`আব্বাস [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] কুবাবাসীকে প্রশ্ন করেন,`আল্লাহ তোমাদের সুনাম করেন কেন? “তারা বললো, আমরা সৌচ করার সময় পাথর ব্যবহার করার পর পানিও ব্যবহার করে থাকি।” বাযযার য‘ঈফ সানাদে। {১২৫}
{১২৫} জঈফ। হাদিসটিকে পাথর ও পানির একত্রিত করণের কারণে হাদিস জঈফ হয়েছে। বাজ্জার কাশফূল আসরার‘ এ বর্ণনা করিয়াছেন [২২৭/] । ইমাম হায়সামী মাজমাউয যাওয়ায়েদ [১/২১৭] গ্রন্থে বলেন, এর সনদে মুহাম্মাদ বিন আব্দুল আযীয বিন উমার আয-যুহরী রয়েছে যাকে ইমাম বুখারী, ইমাম নাসায়ি হাদিস ও অন্যান্যরা জঈফ বলেছেন। ইবনুল মুলকিন তুহফাতুল মুহতায [১/১৭০] গ্রন্থে উক্ত রাবী সম্পর্কে বলেন, সকলেই তাকে জঈফ বলেছেন। ইবনু হাজার আত্-তালখীসুল হাবীর [১/১৬৯] গ্রন্থে উক্ত রাবী সম্পর্কে বলেন, আবূ হাতিম অ আবদুল্লাহ বিন শাবীব তাকে দুর্বল বলেছেন। শায়খ আলবানী ইরওয়াউল গালীল [১/৮৩] গ্রন্থে হাদিসটি দুর্বল বলেছেন। হাদিসের তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস
১০৭- বর্ণনাকারী থেকে বর্ণিতঃ
এর মূল বক্তব্য আবূ দাউদ ও তিরমিজিতে রয়েছে এবং ইবনু খুযাইমাহ আবূ হুরাইরা [রাঃআঃ] কর্তৃক বর্ণিত হাদিসকে সহিহ বলেছেন। কিন্তু পাথরের কথা সেখানে উল্লেখ নেই। [শুধুমাত্র পানির কথা উল্লেখ আছে]। {১২৬}
{১২৬} আবূ দাউদ ৪৪]; তিরমিজি ৩১০০] আবূ হুরাইরা হতে তিনি নবী [সাঃআঃ] হতে। তিনি [সাঃআঃ] বলেনঃ এ আয়াতটি কুবা বাসীদের সম্পর্কে নাযিল হয়েছে। তাদের মধ্যে এমন কতক লোক ছিল যারা পবিত্রতা অর্জন করিতে অত্যন্ত পছন্দ করতো। রাবী বলেন, তারা পানির দ্বারা শৌচ কার্য করতো। তাদের ব্যাপারে এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয়। মুহাক্কিক সুমাইর আয-যুহাইরি বুলুগুল মারামের ব্যাখ্যা গ্রন্থে বলেনঃ যদিও এ হাদিসের সনদটি দুর্বল। কিন্তু এ হাদিসের কতক শাহেদ তথা সমর্থক হাদিস থাকার কারণে সেগুলো এ হাদিসকে সহিহ হাদীসে পরিনত করেছে। হাদিসের তাহকীকঃ অন্যান্য
Leave a Reply