উযু বিনষ্টকারী বিষয় সমূহ – Bulugul Maram Bangla
উযু বিনষ্টকারী বিষয় সমূহ – Bulugul Maram Bangla>> বুলুগুল মারাম এর মুল সুচিপত্র দেখুন
অধ্যায় -৬ঃ উযু বিনষ্টকারী বিষয় সমূহ
পরিচ্ছেদ ৫৬. ইস্তিহাযার রক্ত অযূকে ভেঙ্গে দেয়
পরিচ্ছেদ ৫৭. মযীর হুকুম
পরিচ্ছেদ ৫৮. স্ত্রীকে চুম্বন ও স্পর্শ করাতে অযূ ভঙ্গ হয় না
পরিচ্ছেদ ৫৯. পবিত্রতার দৃঢ়তা থাকা সত্ত্বেও নাপাকির ব্যাপারে সংশয়ের বিধান
পরিচ্ছেদ ৬০. পুরুষাংগ স্পর্শে অযূ বিনষ্ট হয় না
পরিচ্ছেদ ৬১. পুরুষাঙ্গ স্পর্শ করলে অযূ ভেংগে যায়
পরিচ্ছেদ ৬২. অযূ ভঙ্গের কতিপয় কারণসমুহের বর্ণনা
পরিচ্ছেদ ৬৩. উট ও বকরীর গোশ্ত ভক্ষণের ফলে অযু ভঙ্গ হওয়া , না হওয়ার বিধান
পরিচ্ছেদ ৬৪. মৃত ব্যক্তিকে গোসল দিলে গোসল করা ও তাকে বহন করলে অযূর বিধান
পরিচ্ছেদ ৬৫. কুরআন স্পর্শ করার জন্য পবিত্রতা অর্জন শর্ত
পরিচ্ছেদ ৬৬. যিকর করার জন্য অযূ শর্ত নয়
পরিচ্ছেদ ৬৭. পায়খানা ও পেশাবের রাস্তা ব্যতীত রক্ত নির্গত হলে অযূ নষ্ট হয় না
পরিচ্ছেদ ৬৮. ঘুম অযূ ভঙ্গের সম্ভাব্য কারণ
পরিচ্ছেদ ৬৯. চিত হয়ে ঘুমালে অযূ ভেঙ্গে যায়
পরিচ্ছেদ ৭০. বনী আদমের পবিত্রতার ব্যাপারে শয়তানের সন্দেহ সৃষ্টিকরণ প্রসঙ্গ
৬৭- আনাস [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] -এর যুগে তাহাঁর সাহাবাগন`ইশার সলাতের জামা‘আতের জন্য অপেক্ষায় থাকতেন আর নিদ্রায় তাঁদের মাথা ঝুঁকে ঝুঁকে হেলে পড়ত, তারপরও তাঁরা পুনরায় উযু না করেই সলাত আদায় করিতেন।” আবূ দাউদ এবং দারাকুৎনী একে সহীহ্ বলেছেন; {৮৩} মুসলিমে এর মূল বর্ণনা রয়েছে। {৮৪}
{৮৩} আবূ দাউদ [২০০]; দারাকুতনী [১/১৩১/৩]; দারাকুতনী সহিহ বলেছেন। {৮৪} মুসলিম [৩৭৬]; মুসলিমের শব্দ হচ্ছেঃ [আরবী] রাসূল [সাঃআঃ] এর সাহাবাগণ ঘুমাতেন অতঃপর সালাত আদায় করিতেন তবে ওযু করিতেন না। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ৫৬. ইস্তিহাযার রক্ত অযূকে ভেঙ্গে দেয়
৬৮- আয়িশা [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ফাতিমাহ বিনতে আবী হুবাইশ একদা নাবী [সাঃআঃ] -এর দরবারে উপস্থিত হয়ে আরয করিলেন,`হে আল্লাহর রসূল! আমি একজন রক্ত-প্রদর রোগগ্রস্তা [ইস্তি হাযাহ] মহিলা। আমি এখনো পবিত্র হতে পারি না। এমতবস্থায় আমি কি সলাত পরিত্যাগ করবো?’ আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] বললেনঃ না, এতো শিরা হতে নির্গত রক্ত, হায়য নয়। তাই যখন তোমার হায়য আসবে তখন সলাত ছেড়ে দিও। আর যখন তা বন্ধ হইবে তখন রক্ত ধুয়ে ফেলবে, তারপর সলাত আদায় করিবে। {৮৫}
বুখারীর ইবারতে আছে- “প্রতি ওয়াক্তের সলাত আদায়ের জন্য উযু কর নিবে”। {৮৬} ইমাম মুসলিম এ অংশটি স্বেচ্ছায় ছেড়ে দিয়েছেন বলে আভাস দিয়েছেন।
{৮৫} বুকারী [৩২৮] ; মুসলিম [৩৩৩], {৮৬} ফাতহুল বারি [১/৩৩২] হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ৫৭. মযীর হুকুম
৬৯- আলী [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন,`আমি এমন পুরুষ ছিলাম যে, আমার অত্যন্ত বেশি মাযী নিঃসরণ হতো। তাই সহাবী মিক্দাদ [রাঃআঃ] -কে বললামঃ আপনি নাবী [সাঃআঃ] -কে এ প্রসঙ্গে [মুযী বের হলে কি করিতে হইবে] জিজ্ঞাসা করে নিবেন। তিনি তাঁকে জিজ্ঞাসা করায় নাবী [সাঃআঃ] বলিলেন, তার জন্য ওযু করিতে হইবে। শব্দ বিন্যাস বুখারীর। {৮৮}
{৮৮} বুখারী [১৩২]; মুসলিম [৩০৩]; মুসলিমের বর্ণনায় [আরবী] শব্দের পরিবর্তে [আরবী] শব্দ আছে। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ৫৮. স্ত্রীকে চুম্বন ও স্পর্শ করাতে অযূ ভঙ্গ হয় না
৭০- আয়িশা [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ
নাবী [সাঃআঃ] তাহাঁর এক বিবিকে চুমা খেয়ে সলাত আদায় করিতে বের হয়ে গেলেন, এতে তিনি পুনঃ উযু করিলেন না। আহমাদ, ইমাম বুখারী এক য‘ঈফ বলেছেন। {৮৯}
{৮৯} আহমাদ [৬১০]; যদিও ইমাম বুখারী রহ জঈফ বলেছেন এবং তিনি ছাড়া অন্যান্যরা এর দোষ ধরেছেন তারপরও এখানে যারা হাদিসটিকে সহিহ বলেছেন তাদের কথাই ঠিক। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ৫৯. পবিত্রতার দৃঢ়তা থাকা সত্ত্বেও নাপাকির ব্যাপারে সংশয়ের বিধান
৭১- আবূ হুরাইরা [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] বলেছেন,`কোন মুসল্লী যখন তার পেটের মধ্যে কোন [গোলযোগ] অনুভব করিবে এবং এতে মনে সন্দেহের সৃষ্টি হইবে যে, পেট হতে কিছু [বায়ু] বের হলো কিনা; এমতবস্থায় যতক্ষণ না সে তার কোন শব্দ শোনে বা গন্ধ পায়। সে যেন মাসজিদ থেকে বের হয়ে না যায়।’ {৯০}
{৯০} মুসলিম [৩৬২] হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ৬০. পুরুষাংগ স্পর্শে অযূ বিনষ্ট হয় না
৭২- ত্বালক্ বিন্`আলী [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, কোন এক সাহাবী [রাঃআঃ] নাবী [সাঃআঃ] -কে বলিলেন,`আমি আমার লিঙ্গ স্পর্শ করে ফেলেছি অথবা বলিলেন,`যদি কেউ সলাতে তা স্পর্শ করে ফেলে, তবে এর কারণে কি তাকে উযু করিতে হইবে?’ নাবী [সাঃআঃ] বলিলেন,`না, এটা তো তোমারই [শরীরের] একটি অংশ বিশেষ। -৫জন। আর ইবনু হিব্বান একে সহীহ্ বলেছেন {৯১} এবং ইব্নুল্ মাদানী [বুখারীর উস্তাদ] বলেন, বুস্রার হাদিস হতে এটি অধিক উত্তম।
{৯১} আবূ দাউদ [১৮২, ১৮৩]; নাসায়ি হাদিস [১০১]; তিরমিজি [৮৫]; ইবনু মাজাহ [৪৮৩]; আহমাদ [৪৩]; ইবনু হিব্বান [২০৭ মাওয়ারেদ]। কিন্তু এ হাদিসটি স্পষ্টতঃ মানসূখ তথা রহিত হয়ে গেল। যখন ইবনু হাযম তাহাঁর`মুহাল্লা’য় [১৩৯] কত সুন্দর কথা বলেছেন যে, এ তালক রাবীর হাদিস সহিহ তবে তাদের কথার দুটি দিক দিয়ে সঠিক নয়। ১। এ হাদিসটি লজ্জাস্থান স্পর্শ করার নির্দেশ বর্ণিত হওয়ার পূর্বেকার সময়ের সাথে সামঞ্জ্যপূর্ণ। এতে কোন সন্দেহ নেই। বিষয় যদি এমনই হয়ে থাকে তবে এ হাদিস রহিত হওয়াতে কোন সন্দেহ নেই যখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] লজ্জাস্থান স্পর্শ করার কারণে ওযু করার নির্দেশ প্রদান করিয়াছেন। ফলে কোন বিষয়ের রহীতকারী হওয়ার দৃঢ় বিশ্বাস হতে তা বর্জন করা এবং যা মানসূখ বা রহিত হওয়ার ব্যাপারে দৃঢ় বিশ্বাস অর্জিত হয় তা গ্রহণ করা বৈধ নয়। ২। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর কথাঃ এটা তো তোমারই [শরীরের] একটি অংশ বিশেষ।” লজ্জাস্থান স্পর্শ করলে ওযূ করার বিধান দেয়ার পূর্বের উক্তি হওয়ার ব্যাপারে স্পষ্ট দলীল। কেননা তা পরবর্তীকালের বিষয় হতো তবে রাসূল [সাঃআঃ] এমন কথা বলিতেন না। বরং এ থেকে স্পষ্ট হয়ে যায় যে, এ কথাটি রহিত হয়ে গেছে। লজ্জাস্থান যে, “অন্যান্য অঙ্গের মত” কথার পূর্বে এ বিষয়ে মূলতঃ কোন হুকুমই বর্ণিত হয়নি। হাদিসের তাহকীকঃ অন্যান্য . হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ৬১. পুরুষাঙ্গ স্পর্শ করলে অযূ ভেংগে যায়
৭৩- বুস্রাহ বিনতে সাফ্ওয়ান [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] বলেছেন,`যে ব্যক্তি তাহাঁর পুরুষাঙ্গ স্পর্শ করিবে যে যেন উযু করে’। ৫ জনে [ আহমাদ, আবূ দাউদ, নাসায়ি হাদিস, তিরমিজি, ইবনু মাজাহ]। তিরমিজি ও ইবনু হিব্বান একে সহীহ্ বলেছেন। {৯২} আর ইমাম বুখারী বলেন,`এ বিষয়ে অধ্যায়ের হাদিসগুলোর মধ্যে এটিই সর্বাধিক সহীহ্।’
{৯২} আবূ দাউদ [১৮১]; নাসায়ি হাদিস; [১০০]; তিরমিজি [৮২]; ইবনু মাজাহ [৪৭৯],আহমাদ [৬/৪০৬]; ইবনু হিব্বান [২১২ মাওয়ারেদ], এ হাদিস কিছু দোষ ধরা হলেও ক্ষতিকর নয়। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ৬২. অযূ ভঙ্গের কতিপয় কারণসমুহের বর্ণনা
৭৪- আয়িশা [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রাসূল [সাঃআঃ] বলেছেন,`যে ব্যক্তির বমি হয়, নাক দিয়ে রক্ত পড়ে ও ভক্ষিত খাদ্য বস্তু মুখ পর্যন্ত চলে আসে কিংবা মাযী নির্গত হয় সে যেন [সলাত ছেড়ে ] ওযু করে নেয় এবং [এর মধ্যে কারো সাথে] কোন কথা না বলে; তাহলে সে সলাতের বাকী অংশ সমাধান করে নিবে।’ – ইবনু মাজাহ। {৯৩} আহমদ ও প্রমুখ এক য‘ঈফ বলেছেন।
{৯৩} জঈফ। ইবনু মাজাহ [১২২১] হাদিসের তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস
পরিচ্ছেদ ৬৩. উট ও বকরীর গোশ্ত ভক্ষণের ফলে অযু ভঙ্গ হওয়া , না হওয়ার বিধান
৭৫- জাবির বিন্ সামুরাহ [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ
কোন এক ব্যক্তি নাবী [সাঃআঃ]-কে জিজ্ঞেস করিল, মেষ ছাগলের গোশত খেয়ে কি ওযু করবো?’ তিনি [সাঃআঃ] বলিলেন,`যদি তুমি চাও’। জিজ্ঞেস করা হলো,`উটের গোশত খেয়ে কি ওযু করবো?’ তিনি [সাঃআঃ] বলিলেন,`হাঁ, করিবে’। {৯৪}
{৯৪} মুসলিম [৩৬০]। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ৬৪. মৃত ব্যক্তিকে গোসল দিলে গোসল করা ও তাকে বহন করলে অযূর বিধান
৭৬- আবূ হুরাইরা [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] বলেন,`যে ব্যক্তি কোন মৃতকে গোসল করায় যে নিজেও গোসল করে নিবে। আর যে ব্যক্তি কোন [মাইয়িতকে] বহন করিবে সে যেন ওযু করে।’ তিরমিজি একে হাসান বলেছেন। {৯৫} ইমাম আহমাদ বলেছেন,`এ বিষয়ে কোন সহীহ্ হাদিস নেই।’
{৯৫} আহমাদ [৭৬৭৫], তিরমিজি [৯৯৩]; একদল আয়ম্মায়ে কেরাম এ হাদিসকে দোষ বর্ণনা করিয়াছেন। যেমন ইমাম আহমাদ বিন হাম্বাল। যেমনটি বর্ণনা করিয়াছেন ইবনু হাজার আসকালানী [রহঃ] কিন্তু এ হাদিসের সনদ ও সর্মথক হাদিস এত বেশী যে এ হাদিসটির সহিহ হওয়ার ব্যাপারে কোন সন্দেহ থাকে না। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ৬৫. কুরআন স্পর্শ করার জন্য পবিত্রতা অর্জন শর্ত
৭৭- ‘আবদুল্লাহ বিন আবূ বাকর [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ]`আমর বিন হযমকে যে পত্র পাঠিয়েছিলেন তাতে ছিল- পবিত্র ব্যক্তি ছাড়া কেউ যেন কুরআন স্পর্শ না করে। ইমাম মালিক একে মুরসাল রূপে বর্ণনা করিয়াছেন। নাসায়ী ও ইবনু হিব্বান একে`মাওসুল’ বলেছেন। হাদিসটি মা‘লুল [দোষযুক্ত] । {৯৬}
{৯৬} মুহাদ্দিস আযীমাবাদী তাহাঁর গায়াতুল মাকসূদ [২/২৭৯] গ্রন্থে, আবদুর রহমান মুবারকপুরী তাহাঁর তুহফাতুল আহওয়াযী [১/৩৩৬] গ্রন্থে, আবূ দাউদ মারাসিল [১৯৬] গ্রন্থে এটিকে মুরসাল বলেছেন। ইবনু উসাইমীন তাহাঁর শরহে বুলুগুল মারাম [১/২৭১] গ্রন্থে একে সহিহ বলেছেন। হাদিসের তাহকীকঃ অন্যান্য
পরিচ্ছেদ ৬৬. যিকর করার জন্য অযূ শর্ত নয়
৭৮- আয়িশা [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ
‘রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] সবসময় আল্লাহর যিকরে মত্ত থাকতেন।’ বুখারী একে মুআল্লাক বা সানাদবিহীন বর্ণনা করিয়াছেন। {৯৭}
{৯৭} ইমাম বুখারী একে মুয়াল্লাক হিসেবে বর্ণনা করিয়াছেন [ফাতহুল বারি ২১৪]; আর ইমাম মুসলিম একে মুত্তাসিল সনদে বর্ণনা করিয়াছেন। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ৬৭. পায়খানা ও পেশাবের রাস্তা ব্যতীত রক্ত নির্গত হলে অযূ নষ্ট হয় না
৭৯- আনাস বিন মালিক [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ
‘নাবী [সাঃআঃ] সিঙ্গা লাগিয়ে পুনঃ ওযু না করেই সলাত আদায় করিয়াছেন। দারাকুৎসী বর্ণনা করিয়াছেন এবং তিনি একে দুর্বল বলেছেন। {৯৮}
{৯৮} জঈফ। দারাকুতনী [১৫১-১৫২], ইমাম শওকানী তাহাঁর আদ দিরারী আল মুযীয়া [৫২] গ্রন্থে বলেন, এর সনদে সালিহ বিন মুকাতিল রয়েছেন যিনি দুর্বল বর্ণনাকারী। ইমাম সনআনী তাহাঁর সুবুলুস সালাম [১/১০৯] গ্রন্থেও উক্ত বর্ণনাকারীকে`শক্তিশালী নয়’ বলেছেন। তাছাড়া ইমাম নববী তাহাঁর আল খুলাসা [১/১৪৩], ইবনু উসাইমীন তাহাঁর আশ শারহুল মুমতি‘ [১/২৭৪] গ্রন্থে, ও মাজমূ ফাতাওয়া লি উসাইমীন [১১/১৯৮] গ্রন্থে হাদিসটিকে দুর্বল বলেছেন। হাদিসের তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস
পরিচ্ছেদ ৬৮. ঘুম অযূ ভঙ্গের সম্ভাব্য কারণ
৮০- মু‘আবিয়াহ [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] বলেছেন,`চক্ষু মলদ্বারের বন্ধনস্বরূপ। চক্ষুদ্বয় ঘুমিয়ে পড়লে উক্ত বন্ধন খুলে যায়। [যার কারণে উযূ নষ্ট হয়ে যায়] -আহমাদ ও ত্বাবারানী। আর তাবারানী অতিরিক্ত শব্দ যোগ করেছেনঃ “যে ঘুমিয়ে পড়ে সে যেন ওযু করে।” এ অতিরিক্ত অংশটুকু আবূ দাঊদেও`আলী [রাঃআঃ] কর্তৃক বর্ণিত হয়েছে। “তবে এতে`বন্ধন খুলে যায়’ অংশটুকু নেই। উক্ত সানাদ দু’টিই দুর্বল। {৯৯}
{৯৯} হাসান। আহমাদ [৪/৯৭], আবূ দাউদ [২০৩] হাদিসের তাহকীকঃ হাসান হাদিস
পরিচ্ছেদ ৬৯. চিত হয়ে ঘুমালে অযূ ভেঙ্গে যায়
৮১- বর্ণনাকারী থেকে বর্ণিতঃ
আবূ দাঊদে ইবনু`আব্বাস [রাঃআঃ] থেকে আর একটি`মারফূ’ হাদিস বর্ণিত হয়েছে,`যে ব্যক্তি হাত পা বিছিয়ে শরীর এলিয়ে দিয়ে ঘুমিয়ে যাবে তাকে উযু করিতে হইবে।’ এ সানাদেও দুর্বলতা রহিয়াছে। {১০০}
{১০০} মুনকার। আবূ দাউদ [২০২], ইমাম নববী তাহাঁর আল মাজমূ [২/২০] গ্রন্থে বলেন, এ হাদিসটি মুনকার হওয়ার ব্যাপারে মুহাদ্দিসগণ ঐকমত্য পোষণ করিয়াছেন। ইবনু আবদুল বার তাহাঁর আত তামহীদ [১৮/২৪৩] গ্রন্থেও প্রায় একই কথা বলেছেন। হাকিম [১৩৪], ইবনু হিব্বান [২৬৬৬], শাইখ আলবানী তাহাঁর যঈফুল জামে‘ [৫৬৮] ও জঈফ আবূ দাউদ [১০২৯] গ্রন্থে হাদিসটিকে দুর্বল বলেছেন। হাদিসের তাহকীকঃ মুনকার
পরিচ্ছেদ ৭০. বনী আদমের পবিত্রতার ব্যাপারে শয়তানের সন্দেহ সৃষ্টিকরণ প্রসঙ্গ
৮২- ইবনু`আব্বাস [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রসূল [সাঃআঃ] বলেন,`শয়তান সলাতে তোমাদের কারও নিকট উপস্থিত হয়ে ওযু আছে কি নেই এ নিয়ে মনের মধ্যে সন্দেহ সৃষ্টি করে। যদি কারো এমন হয় তাহলে যেন সে তার বায়ু নির্গত হওয়ার শব্দ বা গন্ধ না পাওয়া পর্যন্ত সলাত ছেড়ে না দেয়।’ {১০১}
{১০১} বাজ্জার [২৮১] হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস
৮৩- বর্ণনাকারী থেকে বর্ণিতঃ
অত্র হাদিসের মূল বক্তব্য বুখারী ও মুসলিমে`আবদুল্লাহ বিন যায়দ [রাঃআঃ] কর্তৃক বর্ণিত রহিয়াছে। {১০২}
{১০২} হাদিসের শব্দ হচ্ছেঃ [আরবী] রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর নিকট অভিযোগ দেয়া হলো যে, কোন ব্যক্তি সলাতে এ ধারণা করে যে, তার কিছু হয়ে গেছে [তখন কী করিবে]? রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলিলেন, সে শব্দ পাওয়া বা গন্ধ না পাওয়া পর্যন্ত সলাত পরিত্যাগ করিবে না। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস
৮৪- বর্ণনাকারী থেকে বর্ণিতঃ
মুসলিমেও আবূ হুরাইরা [রাঃআঃ] হতে অনুরূপ হাদিস আছে।
হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস
৮৫. বর্ণনাকারী থেকে বর্ণিতঃ
আর হাকিমে আবূ সা‘ঈদ হতে`মারফু’ রূপে বর্ণিত আছে, “যখন শয়তান তোমাদের কারো নিকট এসে বলে যে, নিশ্চয় তুমি বায়ু নিঃস্বরণ করেছো তখন সে যেন বলে`নিশ্চয়ই তুমি মিথ্যা বলছ।” ইবনু হিব্বানে এই শব্দেঃ`তুমি মিথ্যে বললে’ কথাটা মনে মনে বলবে। {১০৩}
{১০৩} জঈফ। হাকিম [১৩৪], ইবনু হিব্বান [২৬৬৬], তাঁদের উভয়ের বর্ণনাতে পূর্ণ হাদিসটি রহিয়াছে [আরবী] যতক্ষণ না সে নিজ কানে এর আওয়াজ শুনে অথবা নাকে গন্ধ পায়। হাদিসের তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস
Leave a Reply