মোজার উপর মাসাহ করার বিদান – বুলুগুল মারাম
মোজার উপর মাসাহ করার বিদান – বুলুগুল মারাম >> বুলুগুল মারাম এর মুল সুচিপত্র দেখুন
অধ্যায় -৫ঃ মোজার উপর মাসাহ
পরিচ্ছেদ ৪৯. মোজার উপর মাসাহ করার বিদান
পরিচ্ছেদ ৫০. মোজার উপর মাসাহ করার পরিমান
পরিচ্ছেদ ৫১. মাসাহ এর সময়-সীমা। সেটা ছোট নাপাকীর সাথে নির্দিষ্ট
পরিচ্ছেদ ৫২. পাগড়ির উপর মাসাহ করা বৈধ
পরিচ্ছেদ ৫৩. সময় নির্ধারণ ব্যতীত মোজার উপর মাসাহ করা অস্পষ্টভাবে বর্ণিত হয়েছে
পরিচ্ছেদ ৫৪. মাসাহ করারা জন্য পবিত্র অবস্থায় মোজা পরিধান করা শর্ত
পরিচ্ছেদ ৫৫. সময় নির্ধারণ ব্যতীত মোজার উপর মাসাহ করার বিষয়ে সুস্পষ্ট বর্ণনা
পরিচ্ছেদ ৪৯. মোজার উপর মাসাহ করার বিদান
৫৮- মুগীরাহ বিন শু‘বাহ [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেন,`আমি নাবী [সাঃআঃ] -এর সাথে [তাবুকের যুদ্ধে] উপস্থিত ছিলাম। তিনি [ফজরের] সালাতের জন্য উযু করার সময় আমি তাহাঁর পায়ের মোজা দুটো খুলে নিতে চাইতাম।’ তখন তিনি আমাকে বলনেন,`ও দু’টি থাকতে দাও, আমি ওগুলা ওযুর অবস্থায় পরেছিলাম।’ অতঃপর তিনি ঐগুলোর উপর মাসাহ করিলেন। {৭৪}
{৭৪} বুখারী [২০৬]; মুসলিম [৭৯, ২৭৪], হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ৫০. মোজার উপর মাসাহ করার পরিমান
৫৯ – বর্ণনাকারী থেকে বর্ণিতঃ
নাসায়ি হাদিস ব্যতীত সুন্নান চতুষ্টয়ে [আবূ দাউদ, তিরমিজি ও ইবনু মাজাহ] বর্নিত আছে, নাবী [সাঃআঃ] চামড়ার মোজার উপরে ও নীচের দিকে মাসাহ করে নিলেন। এটার সানাদ দুর্বল। {৭৫}
{৭৫} জঈফ। আবূ দাউদ [১৬৫] তিরমিজি [৯৭], ইবনু মাজাহ [৫৫০]; এ হাদীসে কয়েকটি ত্রুটি আছে। সকল ইমাম এ হাদীটিকে দুর্বল বলেছেন। ইমাম তিরমিজি তাহাঁর সুনানে [৯৭] ইমাম বুখারী একে বিশুদ্ধ নয় বলেছেন। এবং ইমাম তিরমিজি এ হাদিসটিতে ত্রুটির কথা বলেছেন। ইমাম বাগাবী তাহাঁর আশ শারহুস সুন্নাহ [১/৩৩৩] গ্রন্থে বলেন, [আরবী] । ইবনু কাসীর তাহাঁর ইরশাদুল ফাকীহ [১/৪৬] গ্রন্থে বলেন, এর সনদে বিচ্ছিন্নতা রয়েছে, হাদিসটি মুরসালরূপে বর্নিত হয়েছে। মুহাদ্দিস আযীমাবাদী তাহাঁর গায়াতুল মাকসূদ [২/৫২]ও আওনুল মা‘বূদ [১/১৪০] গ্রন্থে বলেন, এর সনদ দুর্বল। আবদুর রহমান মুবারকপুরী তাহাঁর তুহফাতুল আহওয়াযী [১/২৩৫] গ্রন্থে বলেন, এ হাদিসটির ব্যাপারে মুহাদ্দিসগণের বিতর্ক রয়েছে। ইবনু উসাইমীন তাহাঁর শহরহে বুলুগুল মারাম [১/২২৪] গ্রন্থে, বিন বায তাহাঁর হাশিয়া বুলুগুল মারাম [৯০] গ্রন্থে, শাইখ আলবানী জঈফ তিরমিজি [৯৭] ও জঈফ ইবনু মাজাহ [১০৮] গ্রন্থে একে দুর্বল বলেছেন। ইমাম বুখারী তাহাঁর ইলালুল কাবীর [৫৬] গ্রন্থে বলেন, এ হাদিসটি সহিহ নয়। ইবনু আবদুল বার তাহাঁর আল ইসতিযকার [১/২৬৯] গ্রন্থে বলেন, এর বর্ণনাকারী সাত্তর বিন যায়দ তিনি রাজা বিন হুওয়াই থেকে হাদিসটি শুনেননি। vহাদিসের তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস,
৬০- আলী [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন-`দ্বীন যদি কিয়াস বা বুদ্ধির দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হতো তবে মাসাহ করার ক্ষেত্রে মোজার উপরি ভাগে মাসহ করার চেয়ে নীচের দিক মাসাহ করাই উত্তম [গন্য] হত অবশ্যই নাবী [সাঃআঃ] -কে আমি মোজার উপরিভাগে মাসহ করিতে দেখেছি। –আবূ দাউদ এটিকে হাসান সানাদে বর্ণনা করিয়াছেন। {৭৬}
{৭৬} সহীহ্ আবূ দাউদ [১৬২], হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ৫১. মাসাহ এর সময়-সীমা। সেটা ছোট নাপাকীর সাথে নির্দিষ্ট
৬১- সাফ্ওয়ান বিন্`আসসাল্ [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেছেন, নাবী [সাঃআঃ] আমাদের আদেশ দিতেন যে,`আমরা যেন সফরে থাকাবস্থায় তিন দিন তিন রাত জানাবত [ফরয গোসল কারণ] ব্যতীত মোজা না খুলি; এমনকি প্রস্রাব পায়খানা ও ঘুমের পরও নয়। শব্দগুলো তিরমিজি ও ইবনু খুযাইমাহ্র। দু’জনেই এটাকে সহীহ্ বলেছেন। {৭৭}
{৭৭} হাসান। নাসায়ি হাদিস [১/৮৩-৮৪]; তিরমিজি [৯৬]; ইবনু খুযাইমাহ [১৯৬]; ইমাম তিরমিজি বলেছেনঃ হাসান সহিহ, হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস
৬২- আলী বিন আবূ তালিব [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী [সাঃআঃ] মুসাফির ব্যক্তির পক্ষে তিন দিন তিন রাত ও মুকিম ব্যক্তির পক্ষে এক দিন এক রাত নির্ধারণ করিয়াছেন। অর্থাৎ মোজার উপর মাসাহ করার সময়কাল। {৭৮}
{৭৮} মুসলিম [২৭৬] শুরাইহ বিন হানীর সূত্রে। তিনি বলেন, আমি আয়িশাহ [রাঃআঃ] কে মোজার উপর মাসাহ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করিতে এলাম। তিনি বলিলেন, তুমি ইবনু আবী তালিবকে বল কেননা সে আল্লাহর রাসূলের সাথে সফর করতো। অতঃপর আমরা তাকে জিজ্ঞেস করলাম। তার উত্তরে উক্ত হাসীস বর্ণনা করেন। তাতে [আরবী] ব্যতীত বর্ণনা করেন। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ৫২. পাগড়ির উপর মাসাহ করা বৈধ
৬৩- সওবান [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূরুল্লাহ [সাঃআঃ] একটি ছোট্ট সৈন্য বাহিনী প্রেরণ করেন। তাদেরকে পাগড়ি ও চামড়ার মোজার উপর মাসাহ করিতে আদেশ করেন। হাকিম একে সহীহ্ বলেছেন। {৭৯}
{৭৯} আহমাদ [৫৭৭]; আবূ দাউদ [১৪৬]; হাকিম [১৬৯]; এ হাদিসের ত্রুটি বর্ণনা করা হলেও তা ক্ষতিকর নয়। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ৫৩. সময় নির্ধারণ ব্যতীত মোজার উপর মাসাহ করা অস্পষ্টভাবে বর্ণিত হয়েছে
৬৪- উমার [রাঃআঃ] এবং আনাস [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ
“তোমাদের কেউ যখন উযূ অবস্থায় মোজা পরবে সে ইচ্ছ করলে জানাবাত বা অপবিত্রতা ছাড়া মোজা না খুলে তার উপর মাসাহ করিবে ও সলাত আদায় করিবে; তবে গোসল করা হলে মোজা খুলতে হইবে।” – দারাকুৎনী, হাকিম এটিকে সহীহ্ বলেছেন। {৮০}
{৮০} দারাকুৎনী [১০৩-২০৪]; হাকিম [১৮২], হাদিসের তাহকীকঃ শায
পরিচ্ছেদ ৫৪. মাসাহ করারা জন্য পবিত্র অবস্থায় মোজা পরিধান করা শর্ত
৬৫- আবূ বাকরাহ [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ
তিনি নাবী [সাঃআঃ] হতে বর্ণনা করেন; “নাবী [সাঃআঃ] মুসাফির ব্যক্তিকে তিন দিন তিন রাত আর মুকীম [স্থানীয়] ব্যক্তিকে এক দিন এক রাত মোজার উপর মাসাহ করার অনুমতি প্রদান করিয়াছেন, যদি সে উযু অবস্থায় মোজা পরিধান করে থাকে।” – দারাকুৎনী, আর এক ইবনু খুযাইমাহ সহীহ্ বলেছেন। {৮১}
{৮১} হাসান। দারাকুৎনী; ইবনু কাযাইমাহ [১৯২]; এ হাদিসটি দুর্বল হলেও এর কয়েকটি সমর্থক হাদিস থাকার কারণে ইমাম বুখারী হাসান হলেছেন এবং ইমাম তিরমিজি তাহাঁর ইলাল গ্রন্থে অনুরূপ মন্তব্য করিয়াছেন। হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস
পরিচ্ছেদ ৫৫. সময় নির্ধারণ ব্যতীত মোজার উপর মাসাহ করার বিষয়ে সুস্পষ্ট বর্ণনা
৬৬- উবাই বিন্`ইমারাহ [রাঃআঃ] থেকে বর্ণিতঃ
তিনি [নাবী [সাঃআঃ] -কে] আরয করিলেন, “হে আল্লাহর রসূল! আমি কি মোজার উপর মাসাহ করিতে পারি? তিনি বলিলেন,`হাঁ;’ তিনি [সাহাবী] বলিলেন,`দু দিন পর্যন্ত করিতে পারি?’ তিনি বলিলেন,`হাঁ’ তিনি [সাহাবী] বলিলেন,`তিনদিন পর্যন্ত করিতে পারি?’ তিনি বলিলেন,`হাঁ’ আর তুমি যে কদিন ইচ্ছে কর।” আবূ দাঊদের এ বর্ণনা মজবুত নয়। {৮২}
{৮২} জঈফ। আবূ দাউদ [১৫৮], শাইখ নাসিরুদ্দীন আলবানী জঈফ আবূ দাউদ [১৫৮] গ্রন্থে একে দুর্বল বলেছেন। মুহাদ্দিস আযীমাবাদী তাহাঁর আওনুল মা‘বূদ [১/১৩৪] গ্রন্থে বলেন, বর্ণনার অজ্ঞতার কারণে এটি শক্তিশালী নয়। তাছাড়া ইয়াহইয়া বিন আইয়ূবকে নিয়ে অনেক বিতর্ক রয়েছে। ইবনুল কাইয্যিম তাহাঁর তাহযীবুস সুনান [১/২৬৬] গ্রন্থে বলেন, ইয়াহইয়া বিন আইয়ূবকে নিয়ে অনেক বিতর্ক রয়েছে। আর আবদুর রহমান, মাহাম্মাদ বিন ইয়াযীদ ও আইয্যূব বিন ক্বাতন সকলেই অপরিচিত বর্ণনাকারী্। হাদিসের তাহকীকঃ দুর্বল হাদিস
Leave a Reply