মুমূর্ষু রোগিকে দেখিতে গেলে ঝাড়ফুঁক দুয়া ও তালকিন

মুমূর্ষু রোগিকে দেখিতে গেলে ঝাড়ফুঁক দুয়া ও তালকিন

পরিচ্ছেদঃ ১ রোগিকে দেখিতে গেলে ঝাড়ফুঁক দুয়া
পরিচ্ছেদঃ ২ মুমূর্ষু রোগিকে দেখিতে গেলে ঝাড়ফুঁক দুয়া ও তালকিন দেয়া

পরিচ্ছেদঃ ১ রোগিকে দেখিতে গেলে ঝাড়ফুঁক দুয়া

সহিহুল বুখারি – ৫৭৪২ঃ মুসাদ্দাদ — আব্দুল ওয়ারিস — সাবিত — আনাস ইবনু মালিক –>> আবদুল আযীয (রহঃ) হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি ও সাবিত একবার আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) -এর নিকট গেলাম। সাবিত বলিলেন, হে আবূ হামযা! আমি অসুস্থ হয়ে পড়েছি। তখন আনাস (রাঃ) বললেনঃ আমি কি তোমাকে রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) যা দিয়ে ঝাড়-ফুঁক করেছিলেন তা দিয়ে ঝাড়-ফুঁক করে দেব? তিনি বললেনঃ হাঁ। তখন আনাস (রাঃ) পড়লেন-

اللَّهُمَّ رَبَّ النَّاسِ مُذْهِبَ الْبَاسِ اشْفِ أَنْتَ الشَّافِي لاَ شَافِيَ إِلاَّ أَنْتَ شِفَاءً لاَ يُغَادِرُ سَقَمً

উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা রব্বান্নাসি মুজহিবিল বাসি আসফি আন্তাস সাফি লা সাফিয়িয়া ইল্লা আন্তা সাফিয়িয়া লা ইউ গাদিরু সাক্কামা ,অর্থঃ (হে আল্লাহ! তুমি মানুষের রব, রোগ নিরাময়কারী, আরোগ্য দান কর, তুমি আরোগ্য দানকারী। তুমি ব্যতীত আর কেউ আরোগ্য দানকারী নেই। এমন আরোগ্য দাও, যা কোন রোগ অবশিষ্ট রাখে না। )

النَّاسِ رَبَّ اللَّهُمَّ
মানুষেরপ্রতিপালকহে আল্লাহ!
اشْفِهِ الْبَاسَمُذْهِبَ
আরোগ্য দান করকষ্ট কর
لاَ الشَّافِيأَنْتَ
নেইআরোগ্য দানকারী তুমিই
أَنْتَ إِلاَّ شِفَاءَ
তোমার তোমার আরোগ্য
يُغَادِرُ لاَ شِفَاءً
থাকে নাআরোগ্য
سَقَمًا
রোগ

ইমাম বুখারি এই হাদিস টি সংকলন করেছেন, “৭৬/৩৮. অধ্যায়ঃ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কর্তৃক ঝাড়-ফুঁক ।” ( আধুনিক প্রঃ- ৫৩২২, ইঃ ফাঃ- ৫২১৮)

হাদিসঃ সুনান আত তিরমিজি – ৯৭৩. কুতাইবাহ — আব্দুল ওয়ারিস ইবনু সাইদ — আব্দুল আজিজ ইবনু সুহায়িব — সাবিত আল বানানি — আনাস ইবনু মালিক –>>আবদুল আযীয ইবনি সুহাইব [রঃ] হইতে বর্ণীতঃ

-সহীহ, বুখারী। আনাস ও আইশা [রাদি.] হইতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবু সাঈদ [রাদি.] হইতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবু ঈসা হাসান সহিহ বলেছেন। তিনি বলেন, আবু যুরআকে আমি প্রশ্ন করলামঃ বেশি সহিহ কোনটি, আবদুল আযীয-আবু নাযরা হইতে তিনি আবু সাঈদ [রাদি.]-এর সূত্রে বর্ণিত রিওয়ায়াতটি না আবদুল আযীয-আনাস [রাদি.]-এর সূত্রে বর্ণিত হাদীসটি? তিনি উভয় হাদীসকেই সহিহ বলেছেন। আব্দুস সামাদ ইবনি আবদুল ওয়ারিস তার পিতা হইতে আবদুল আযীয ইবনি সুহাইব হইতে, তিনি আবু নাযরা হইতে, তিনি আবু সাঈদ হইতে এবং আব্দুল আযীয ইবনি সুহাইব হইতে, তিনি আনাস [রাদি.] হইতে হাদীসটি বর্ণনা করিয়াছেন। মৃত্যু যন্ত্রনা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

আবু দাঊদ -৩৮৯০ঃ মুসাদ্দাদ — আব্দুল ওয়ারিস — আব্দুল আজিজ ইবনু সুহায়িব — সাবিত আল বানানি — আনাস ইবনু মালিক –>> আবদুল আযীয ইবনু সুহাইব (রহঃ) হতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একদা আনাস (রাদিআল্লাহু আঃ) সাবিত (রাদিআল্লাহু আঃ)-কে বলিলেন, আমি কি তোমাকে রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর ঝাড়ফুঁকের বাক্য দ্বারা ঝাড়ফুঁক করবো না? তিনি বলিলেন, হাঁ। আনাস (রাদিআল্লাহু আঃ) বলেন,

اللَّهُمَّ رَبَّ النَّاسِ مُذْهِبَ الْبَاسِ اشْفِ أَنْتَ الشَّافِي لاَ شَافِيَ إِلاَّ أَنْتَ اشْفِهِ شِفَاءً لاَ يُغَادِرُ سَقَمًا

উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা রব্বান্নাসি মুজহিবিল বাসি আসফি আন্তাস সাফিয় লা সাফিয়িয়া ইল্লা আন্তাস ফিহি সিফায়ান লা ইউগাদিরু সাক্কামা অর্থঃ (হে আল্লাহ, মানুষের রব! যন্ত্রণা দূরকারী! রোগমুক্তি দিন, রোগমুক্তির মালিক একমাত্র আপনিই। এমন রোগমুক্তি দিন যাতে কোন রোগই অবশিষ্ট না থাকে।)

ইমাম আবু দাউদ এই হাদিসটি সংকলন করছেন, ” অনুচ্ছেদ-১৯ – ঝাড়ফুঁক করার পদ্ধতি” ।হাদিস এর মানঃ সহিহ হাদিস

তিরমিজি-৩৫৬৫ : সুফইয়ান ইবনু ওয়াকি — ইয়াহইয়া ইবনু আদাম — ইসরাইল — আবি ইসহাক — হারিস — আলী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ [সাঃআঃ] কোন রোগীকে দেখিতে গেলে বলিতেনঃ

 اللَّهُمَّ أَذْهِبِ الْبَأْسَ رَبَّ النَّاسِ وَاشْفِ فَأَنْتَ الشَّافِي لاَ شِفَاءَ إِلاَّ شِفَاؤُكَ شِفَاءً لاَ يُغَادِرُ سَقَمًا

উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা আযহিবিল বাসা রব্বা নাসি ওয়াসফি ফাআন্তাস সাফি লা সিফায়া ইল্লা সিফায়ুকা সিফায়া লা ইউ গাদিরু সাক্কামা , অর্থঃ (“হে মানুষের প্রভু! তুমি রোগ দূর কর, তুমি সুস্থতা দান কর, তুমিই সুস্থতা দানকারী। তোমার আরোগ্যদান ব্যতীত কোন আরোগ্য নেই। তুমি এমনভাবে সুস্থতা দান কর যাতে কোন রোগই বাকি না থাকে”)।

সহীহঃ বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফ আয়িশাহ [রাদি.] হইতে। এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

হাদিসঃ সহিহ মুসলিম- ৫৬০২ সায়বান ইবনু ফাররুজ — আবু আওয়ানাহ — মানসুর — ইব্রাহীম — মাসরুক — আয়েশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কোন রোগগ্রস্থ ব্যক্তিকে দেখিতে গেলে বলিতেনঃ

أَذْهِبِ الْبَاسَ رَبَّ النَّاسِ اشْفِهِ أَنْتَ الشَّافِي لاَ شِفَاءَ إِلاَّ شِفَاؤُكَ شِفَاءً لاَ يُغَادِرُ سَقَمًا

উচ্চারণঃ আযহিবিল বাসা রব্বা নাসি আসফি আন্তাস সাফি লা সিফায়া ইল্লা সিফায়ুকা সিফায়া লা ইউ গাদিরু সাক্কামা , অর্থঃ(“সমস্যা বিদূরিত করে দিন হে লোকেদের প্রতিপালনকারী! তাঁকে সুস্থ করে দিন, আপনিই সুস্থতা দানকারী। আপনার শিফা ব্যাতিত কোন শিফা নেই- এমন শিফা, যার পরে কোন রোগ-ব্যাধি বাকী থাকে না”)।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৫২১, ইসলামিক সেন্টার- ৫৫৪৬]

হাদিসঃ সহিহ মুসলিম- ৫৬০৩ আবু বকর ইবনু আবি সায়বাহ ও জুহাইর ইবনু হারব — জারির — মানসুর — আবি দুহা — মাসরুক — আয়েশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কোন রোগগ্রস্থ ব্যক্তির নিকট গেলে তার জন্য দুআ করিতেন। তিনি বলিতেনঃ

أَذْهِبِ الْبَاسَ رَبَّ النَّاسِ وَاشْفِ أَنْتَ الشَّافِي لاَ شِفَاءَ إِلاَّ شِفَاؤُكَ شِفَاءً لاَ يُغَادِرُ سَقَمًا

উচ্চারণঃ আযহিবিল বাসা রব্বা নাসি ওয়াসফি আন্তাস সাফি লা সিফায়া ইল্লা সিফায়ুকা সিফায়া লা ইউ গাদিরু সাক্কামা অর্থঃ (“বিপদাপদ সমস্যা বিদূরিত করে দিন হে মানুষের প্রতিপালক! আর আরোগ্য দান করুন। আপনিই আরোগ্য দানকারী, আপনার শিফা ছাড়া কোন শিফা নেই; এমন সুস্থতা দিন, যার পরে কোন রোগ-ব্যাধি বাকী না থাকে”)।

কিন্তু আবু বাক্‌র [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] সূত্রে বর্ণিত আছে- তার জন্যে দুআ করিতেন এবং বলিতেন [আরবী]। এছাড়া তিনি বলেছেন, আর আপনিই সুস্থতা দানকারী।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৫২২, ইসলামিক সেন্টার- ৫৫৪৭]

হাদিসঃ সহিহ মুসলিম- ৫৬০৪ঃ আল কাসিম ইবনু জাকারিয়া — উবাইদুল্লাহ ইবনু মুসা — ইসরাইল– মানসুর — ইব্রাহীম ও মুসলিম ইবনু সুবাহ — মাসরুক — আয়েশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর বর্ণনা [উপরোল্লিখিত] আবু আওয়ানাহ্‌ এবং জারীর [রহমাতুল্লাহি আলাইহি] -এর হাদীসের অবিকল।

হাদিসঃ সুনানু ইবনু মাজাহ – ৩৫২০ঃ আবু বকর ইবনু আবি সায়বাহ — জারির — মানসুর — আবি দুহা — মাসরুক — আয়েশাহ (রাদিআল্লাহু আঃ), হতে বর্ণিতঃ

ইবনু মাজাহ এই হাদিসটি সংকলন করেছেন, ” ২৫/৩৬. অধ্যায়ঃ মহানবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যে দুআ’ পড়ে ঝাড়ফুঁক করেছেন এবং তাঁকে যে দুআ’ পড়ে ঝাড়ফুঁক করা হয়েছে ” । তাহকীক নাসিরুদ্দিন আলবানীঃ সহীহ । হাদিস এর মানঃ সহিহ হাদিস

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৫২৩, ইসলামিক সেন্টার- ৫৫৪৮]

হাদিসঃ সহিহ মুসলিম- ৫৬০৫ঃ আবু বকর ইবনু আবি সায়বাহ ও আবু কুরাইব — >> ইবনু নুমাইর — হিসাম — আবিহ — আয়েশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এ দুআ দিয়ে ঝাড়ফুঁক করিতেন-

 أَذْهِبِ الْبَاسَ رَبَّ النَّاسِ بِيَدِكَ الشِّفَاءُ لاَ كَاشِفَ لَهُ إِلاَّ أَنْتَ

উচ্চারণঃ আযহিবিল বাসা রব্বা নাসি বিইয়াদিকাস সিফায়ু লা কা সিফা ইল্লা আনতা , অর্থঃ ( “হে জনগণের প্রতিপালক! বিপদাপদ সমস্যা বিদূরিত করুন; আপনার কাছেই রয়েছে উপশম। আপনি ছাড়া আর কেউ-ই [বিপদ] দূরকারী নেই”)।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৫২৪, ইসলামিক সেন্টার- ৫৫৪৯]

হাদিসঃ সুনান আত তিরমিজি – ২০৮৩ঃ মুহাম্মাদ ইবনু মুসান্না — মুহাম্মাদ ইবনু জাফর — সু,বাহ — ইয়াজিদ আবি খালিদ — মিনহাল ইবনু আমর –সাইদ ইবনু জুবাইর — ইবনু আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে,

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ  কোন লোক যদি কোন রোগীকে দেখতে যায় যার মৃত্যুক্ষণ আসেনি, সে তাকে সাতবার এই দুআ করলেঃ 

أَسْأَلُ اللَّهَ الْعَظِيمَ رَبَّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ أَنْ يَشْفِيَكَ

উচ্চারণঃ আসআলুল্লা-হাল ‘আযীম, রাব্বাল ‘আরশিল ‘আযীম আইঁ ইয়াশফিইয়াকা, অর্থঃ (আমি মহান আরশের রব (প্রভু) মহামহিম আল্লাহ্ তা’আলার নিকট দুআ প্রার্থনা করছি, তিনি তোমাকে রোগ হতে সুস্থতা দান করুন”, তাকে রোগমুক্ত করা হবে)

الْعَظِيمَ اللَّهَ أَسْأَلُ
মহান আল্লাহ্ প্রার্থনা করছি
الْعَظِيمِ الْعَرْشِ رَبَّ
মহান আরশের রব
يَشْفِيَكَأَنْ
রোগ হতে সুস্থতা দান করুনতোমাকে

(আমি মহান আরশের রব (প্রভু) মহামহিম আল্লাহ্ তা’আলার নিকট দুআ প্রার্থনা করছি, তিনি তোমাকে রোগ হতে সুস্থতা দান করুন”, তাকে রোগমুক্ত করা হবে)

আবূ ঈসা বলেন, এ হাদীসটি হাসান গারীব। আমরা এ হাদীসটি শুধুমাত্র আবূল মিনহালের সূত্রে জেনেছি।

আবু দাঊদ – ৩১০৬ঃ রাবিউ ইবনে ইয়াহইয়া — সু,বাহ — ইয়াজিদ আবি খালিদ — মিনহাল ইবনু আমর –সাইদ ইবনু জুবাইর — ইবনু আব্বাস (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত।

ইমাম আবু দাউদ এই হাদিস টি সংকলন করেছেন, “অনুচ্ছেদ-১২-রোগীকে দেখতে গিয়ে তার জন্য দু’আ করা” । সহিহ মিসকাত ১৫৫৩

সহীহ মিশকাত -১৫৫৩ঃ আবদুল্লাহ ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত।

সহীহ : আবূ দাঊদ ৩১০৬, আত্ তিরমিযী ২০৮৩, শারহুস্ সুন্নাহ্ ১৪১৯, আহমাদ ২১৩৭, সুনানুল কুবরা লিন নাসায়ী ১০৮২০, মুসতাদরাক লিল হাকিম ৭৪৮৯, শারহুস্ সুন্নাহ্ ১৪১৯, সহীহ আত্ তারগীব ৩৪৮০

আবু দাঊদ – ৩১০৭ঃ >> ইয়াজিদ আবি খালিদ — ইবনু ওহাব — হুইয়ায়্যি ইবনু আব্দিল্লাহ — আবি আব্দির রহমান >> আবদুল্লাহ ইবনু ‘আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ কেউ কোন রোগীকে দেখতে গেলে সে যেন বলেঃ

اللَّهُمَّ اشْفِ عَبْدَكَ يَنْكَأُ لَكَ عَدُوًّا أَوْ يَمْشِي لَكَ إِلَى جَنَازَةٍ

উচ্চারণঃ আল্লাহহুম্মা আসফি আবদাকা ইয়ানকায়ু লাকা আদুওওয়ান আও য়িআমসি লাকা ইলা যানাজতি, অর্থঃ( “হে আল্লাহ! আপনার বান্দাকে আরোগ্য দিন যাতে সে আপনার উদ্দেশ্যে শত্রুকে আঘাত হানতে পারে এবং আপনার জন্য জানাযায় বা সলাতে শরীক হতে পারে”)।

عَبْدَكَ اشْفِ اللَّهُمَّ
আপনার বান্দাকেআরোগ্য দিনহে আল্লাহ
عَدُوًّا لَكَ يَنْكَأُ
আপনার জন্য
لَكَ يَمْشِي أَوْ
আপনার জন্য
جَنَازَةٍإِلَى

ইমাম আবু দাউদ এই হাদিস টি সংকলন করেছেন, “অনুচ্ছেদ-১২-রোগীকে দেখতে গিয়ে তার জন্য দু’আ করা” । সহীহঃ সহীহাহ (১৫০৪)। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

৫৩৯. রাবী ইবনে আবদুল্লাহ (রঃ) হইতে বর্ণিতঃ

আমি হাসান (রাদি.)-এর সাথে অসুস্থ কাতাদা (রাদি.)-কে দেখতে গেলাম। তিনি তার মাথার নিকট বসে তার কুশলাদি জিজ্ঞেস করেন, অতঃপর তার জন্য দোয়া করেনঃ

اللَّهُمَّ اشْفِ قَلْبَهُ، وَاشْفِ سَقَمَهُ

উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা আসফি কলবিহি ওয়াসফি সাক্কামাহু, অর্থঃ (“হে আল্লাহ! তুমি তার অন্তরাত্মাকে আরোগ্য দান করো এবং তাকে রোগ মুক্ত করো”)।

قَلْبَهُاشْفِ اللَّهُمَّ
অন্তরাত্মাকেআরোগ্য দান করো হে আল্লাহ!
سَقَمَهُوَاشْفِ
রোগ মুক্ত

হাদিসের তাহকীকঃ সহিহ হাদিস

৪১০৭. সাদ [রাদি.]- এর তিন পুত্র তাঁদের পিতার থেকে হইতে বর্ণীতঃ

মক্কায় নবী [সাঃআঃ] সাদের অসুখ দেখার জন্যে তাহাঁর নিকট আসেন। সাদ [রাদি.] কেঁদে ফেলেন। নবী [সাঃআঃ] বলিলেন, তুমি কেন কাঁদছ? তিনি বলিলেন, আমি ভয় পাচ্ছি, যে স্থান থেকে হিজরত করেছি, সেথায় না আমি মারা যাই; যেমনিভাবে মারা গিয়েছেন সাদ ইবনি খাওলা [রাদি.]। নবী [সাঃআঃ] বলিলেন,

اللَّهُمَّ اشْفِ سَعْدًا اللَّهُمَّ اشْفِ سَعْدًا

ইয়া আল্লাহ! সাদকে সুস্থতা দান করুন

তিন বার বলিলেন। সাদ [রাদি.] বলিলেন, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আমার প্রচুর সম্পদ আছে। আর একমাত্র কন্যাই আমার উত্তরাধিকার হইবে। তবে কি আমার সমুদয় সম্পদ ওয়াসিয়্যাত করিতে পারি? তিনি বলিলেন, না। সাদ [রাদি.] বলিলেন, তবে কি দুই-তৃতীয়াংশ? তিনি বলিলেন, না। সাদ [রাদি.] বলিলেন, তা হলে অর্ধেক? তিনি বলিলেন, না। সাদ বলিলেন, তাহলে এক তৃতীয়াংশ? তিনি বলিলেন, হ্যাঁ, এক তৃতীয়াংশ আর এক তৃতীয়াংশই অনেক। তোমার সম্পদ থেকে তুমি যা সদাকাহ্‌ কর তা তো সদাকাহ্‌-ই এবং তোমার পরিবারের জন্যে যা খরচ কর তাও সদাকাহ্‌ আর তোমার মাল থেকে তোমার স্ত্রী যা খায় তাও সদাকাহ্‌। তোমার পরিবার-পরিজনকে যদি তুমি সম্পদশালী রেখে যাও, অথবা বলেছেন স্বাচ্ছন্দ্যে রেখে যাও, তবে তা তাদের মানুষের কাছে হাতপাতা অবস্থায় রেখে যাওয়ার তুলনায় ভাল। আর এ কথা বলিতে তিনি নিজ হাত দিয়ে ইশারা করিলেন।

[ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৪০৬৯, ইসলামিক সেন্টার-৪০৬৮]

পরিচ্ছেদঃ ২ মুমূর্ষু রোগিকে দেখিতে গেলে ঝাড়ফুঁক দুয়া ও তালকিন দেয়া

হাদিসঃ সুনান আত তিরমিজি – ৯৭৬. আবু সাঈদ খুদরী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

নাবী [সাঃআঃ] বলেছেনঃ তোমরা তোমাদের মাঝে অন্তিম সময়ের ব্যক্তিদের উদ্দেশ্যে

لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ

“লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” পাঠ করে শুনাও।

-সহীহ, ইবনি মা-জাহ [১৪৪৪, ১৪৪৫], মুসলিম। আবু হুরাইরা, উম্মু সালামা, আইশা, জাবির ও তালহা ইবনি উবাইদুল্লাহ [রাদি.]-এর স্ত্রী সুদা আল-মুরিয়্যা [রাদি.] হইতেও এই অনুচ্ছেদে হাদীস বর্ণিত আছে। আবু সাঈদ [রাদি.] হইতে বর্ণিত হাদীসটিকে আবু ঈসা হাসান গারীব সহিহ বলেছেন। মৃত্যু যন্ত্রনা – এই হাদীসটির তাহকিকঃ সহীহ হাদীস

আয়েশাহ [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমাদের কোন মানুষ পীড়িত হলে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর ডান হাত দ্বারা তাকে মুছে দিতেন, তারপর বলিতেনঃ

 أَذْهِبِ الْبَاسَ رَبَّ النَّاسِ وَاشْفِ أَنْتَ الشَّافِي لاَ شِفَاءَ إِلاَّ شِفَاؤُكَ شِفَاءً لاَ يُغَادِرُ سَقَمًا

উচ্চারণঃ আযহিবিল বাসা রব্বান নাসি ওয়াসফি আন্তাস সাফি লা সিফায়া ইল্লা সিফায়ুকা সিফায়ান লা ইউ গাদিরু সাক্কামা অর্থঃ (“সমস্যা বিদূরিত করে দিন, হে জনগণের পালনকর্তা! আর সুস্থতা দান করুন, আপনিই সুস্থতা দানকারী। আপনার সুস্থতা ও মুক্তি ছাড়া আর কোন [প্রকৃতপক্ষে নির্ভরযোগ্য] শিফা নেই। এমন নিরাময় করুন যার পর কোন রোগ-ব্যাধি বাকী না থাকে”)।

পরবর্তীতে যখন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] পীড়িত হলেন তখন অসুখে অতি দূর্বল হয়ে পড়লেন, সে সময় আমি তাহাঁর হাত তুলে ধরলাম- যাতে আমিও তেমন করে [মুছে] দিতে পারি তিঁনি [সাঃআঃ] যেমন করে [মুছে] দিতেন। কিন্তু তিঁনি আমার হাত থেকে তাহাঁর হাত টেনে [ছাড়িয়ে] নিলেন। অতঃপর বললেনঃ

اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي وَاجْعَلْنِي مَعَ الرَّفِيقِ الأَعْلَى

উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মাগ ফিরলি ওয়াজ আলনি মায়ার রাফিকিল আলা, অর্থঃ (হে আল্লাহ! আমাকে মাফ করুন এবং আমাকে মহান সঙ্গীর সাথে সাক্ষাৎ করিয়ে দিন!)

তিনি {আয়িশা [রাদি.] } বলেন, হঠাৎ আমি দেখলাম যে, তাকে উঠিয়ে নিয়েছেন [ইন্তেকাল করিয়াছেন]।

৫৬০০ [ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৫১৯, ইসলামিক সেন্টার- ৫৫৪৪]

Abu Daud- 3108: আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যেন বিপদে পড়ে মৃত্যু কামনা না করে। বরং সে যেন বলে,

لاَ يَدْعُوَنَّ أَحَدُكُمْ بِالْمَوْتِ لِضُرٍّ نَزَلَ بِهِ وَلَكِنْ لِيَقُلِ اللَّهُمَّ أَحْيِنِي مَا كَانَتِ الْحَيَاةُ خَيْرًا لِي وَتَوَفَّنِي إِذَا كَانَتِ الْوَفَاةُ خَيْرًا لِي

উচ্চারণঃ লা ইয়াদ উওয়ান্না আহাদুকুম বিল মাওতি লে দুররি নাজালা বিহি ওয়া লাকিন লিইয়াকুলিল লাহিইয় ঈয়ানিতুল হায়া অর্থঃ (“হে আল্লাহ! যে পর্যন্ত জীবিত থাকা আমার জন্য কল্যাণকর, আমাকে ততক্ষণ জীবিত রাখুন এবং যখন মৃত্যু আমার জন্য কল্যাণকর, তখন আমাকে মৃত্যু দিন”)।

ইমাম আবু দাউদ এই হাদিসটি সংকলন করেছেন, “অনুচ্ছেদ-১৩ – মৃত্যুর আকাঙ্ক্ষা করা অনুচিত”। হাদিসের মানঃ সহিহ হাদিস

Abu Daud- 3109: আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ

নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ তোমাদের কেউ যেন মৃত্যু কামনা না করে… হাদীসের বাকী অংশ উপরের হাদীসে অনুরূপ।

ইমাম আবু দাউদ এই হাদিসটি সংকলন করেছেন, “অনুচ্ছেদ-১৩ – মৃত্যুর আকাঙ্ক্ষা করা অনুচিত”। সহীহঃ এর পূর্বেরটি দেখুন।

তিরমিজি-৩৫৬৪ : আলী [রাদি.] হইতে বর্ণীতঃ

তিনি বলেন, আমি অফসুস্থ [রোগাক্রান্ত] ছিলাম। রাসূলূল্লাহ [সাঃআঃ] আমার নিকটে এলেন এবং তখন আমি বলছিলামঃ

اللَّهُمَّ إِنْ كَانَ أَجَلِي قَدْ حَضَرَ فَأَرِحْنِي وَإِنْ كَانَ مُتَأَخِّرًا فَأَرْفِغْنِي وَإِنْ كَانَ بَلاَءً فَصَبِّرْنِي

উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা ইন কানা আজালি কদ হাদারা ফাআরিহনি ওয়া ইন কানা মুতাআক্ষিরান ফারফিগনি ওয়া ইন কানা বালায়া ফাসাব্বেরনি অর্থঃ “হে আল্লাহ! যদি আমার শেষ মুহূর্ত হাযির হয়ে থাকে তবে আমাকে দয়া কর, তাতে যদি দেরী থাকে তবে আমাকে উঠিয়ে দাও [সুস্থ কর], আর যদি বিপদের পরীক্ষায় ফেল তাহলে সবর দান কর”।

রাসূলূল্লাহ [সাঃআঃ] বলেনঃ তুমি কিভাবে বললে? তিনি তার কথার পুনরাবৃত্তি করে তাঁকে শুনান। রাসূলূল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর পা দিয়ে তাকে আঘাত করেন এবং বলেনঃ

‏ اللَّهُمَّ عَافِهِ أَوِ اشْفِهِ ‏

উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা আফিহি আও ইশফিহি অর্থঃ(“হে আল্লাহ! তাকে আরোগ্য দান কর, অথবা তাকে নিরাময় দান কর”)।

عَافِهِ اللَّهُمَّ
তাকে আরোগ্য দান করহে আল্লাহ
اشْفِهِ أَوِ
তাকে নিরাময় দান করঅথবা

শুবার সন্দেহ [তার ঊর্দ্ধতন রাবী কোনটি বলেছেন]। আলী [রাদি.] বলেনঃ এরপর আমি ব্যথা অনুভব করি নাই।

যঈফ, মিশকাত[৬০৯৮], আবু ঈসা বলেনঃ এ হাদীসটি হাসান সহীহ। এই হাদীসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদীস

আদাবুল মুফরাদ – ৫০৬ঃ আবু নুহায়লা [রাহিমাহুল্লাহ] হইতে বর্ণী

তাকে বলা হলো, আল্লাহর নিকট দোয়া করুন।

اللَّهُمَّ انْقُصْ مِنَ الْمَرَضِ، وَلَا تَنْقُصْ مِنَ الْأَجْرِ، فَقِيلَ لَهُ

উচ্চারণঃ আল্লাহহুম্মা কুস্ন মিনাল মারাদি ওয়া লা তানকুস মিনাল আখরি ফাকিলা লাহু অর্থঃ ( হে আল্লাহ! রোগ কমিয়ে দিন, কিন্তু সওয়াব কমাবেন না।)

তাকে বলা হলো, আরো দোয়া করুন, আরো দোয়া করুন। তিনি বলেনঃ

اللَّهُمَّ اجْعَلْنِي مِنَ الْمُقَرَّبِينَ، وَاجْعَلْ أُمِّي مِنَ الْحُورِ الْعِين

উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফি মুদ্দিনা ওয়া সায়িনা অর্থঃ (হে আল্লাহ! আমাকে আপনার নৈকট্য লাভকারীদের অন্তর্ভুক্ত করুন এবং আমার মাকে আয়তলোচনা হূরদের অন্তর্ভুক্ত করুন)।

হাদিসের তাহকিকঃ সহীহ হাদিস

আবু দাঊদ – ৩৮৯২: আবূ দারদা (রাদিআল্লাহু আঃ) হতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাঃআঃ)-কে বলিতে শুনেছিঃ তোমাদের কেউ বা কারো ভাই যদি অসুস্থ হয় তবে সে যেন বলেঃ

رَبُّنَا اللَّهُ الَّذِي فِي السَّمَاءِ تَقَدَّسَ اسْمُكَ أَمْرُكَ فِي السَّمَاءِ وَالأَرْضِ كَمَا رَحْمَتُكَ فِي السَّمَاءِ فَاجْعَلْ رَحْمَتَكَ فِي الأَرْضِ اغْفِرْ لَنَا حُوبَنَا وَخَطَايَانَا أَنْتَ رَبُّ الطَّيِّبِينَ أَنْزِلْ رَحْمَةً مِنْ رَحْمَتِكَ وَشِفَاءً مِنْ شِفَائِكَ عَلَى هَذَا الْوَجَعِ فَيَبْرَأُ ‏

উচ্চারণঃ রব্বুনাল্লাহুল্লাজি ফিস সামায়ে তাকাদ্দাসাসমুকা আমরুকা ফিস সামায়ে ওয়াল আরদি কামা রহমাতুকা ফিস সামায়ে ফাজআল রহমাতাকা ফিল আরদিগ ফিরলানা হুবানা ওয়া খতাইয়ানা আন্তা রব্বুত তায়্যিবিনা আনজিল রহমাতান মিন রহমাতিকা ওয়া সিফায়ান মিন সিফায়িকা আলা হাজাল ওয়া জায়ি ফাইয়াবরাউ অর্থঃ (হে আমাদের আসমানের রব, আল্লাহ! তোমার পবিত্র নাম, তোমার যাবতীয় নির্দেশ আসমান-যমীনে কার্যকর। আপনার রহমাত যেমন আকাশে বিদ্যমান, তেমন যমীনেও রহমাত বর্ষণ করুন; আমাদের পাপ ও অপরাধসমূহ ক্ষমা করুন। আপনি পবিত্র বান্দাদের রব, আপনার দয়া থেকে দয়া বর্ষণ করুন এবং এ রোগের জন্য আপনার আরোগ্য ব্যবস্থা থেকে রোগমুক্তি দিন”। তাহলে সে আরোগ্য লাভ করিবে)।

দুর্বল, মিশকাত (১৫৫৫)। (৩৮৯২) নাসায়ীল আমালুল ইয়াওমি ওয়াল লায়লাহ, হাকিম, আহমাদ। ইমাম যাহাবী বলেনঃ সানাদের মুহাম্মাদ ইবনু যিয়াদ সম্পর্কে ইমাম বুখারী ও অন্যরা বলেনঃ মুনকারুল হাদিস। ইমাম আবু দাউদ এই হাদিসটি সংকলন করছেন, ” অনুচ্ছেদ-১৯ – ঝাড়ফুঁক করার পদ্ধতি” । হাদিস এর মানঃ দুর্বল হাদিস


Posted

in

by

Comments

2 responses to “মুমূর্ষু রোগিকে দেখিতে গেলে ঝাড়ফুঁক দুয়া ও তালকিন”

Leave a Reply