উযু বিসয়ক হাদীস সমুহের অধ্যায় সমূহ

উযু বিসয়ক হাদীস সমুহের অধ্যায় সমূহ

উযু বিসয়ক হাদীস সমুহের অধ্যায় সমূহ

পর্বঃ ১, অধ্যায় (৩২-৭৪)=৪৩ টি, হাদীস (৩৬৭-৫১৬)=১৫০ টি

৩২. অধ্যায়ঃ বিড়ালের উচ্ছিষ্ট পানি দিয়ে উযু করা এবং তা জায়িয
৩৩. অধ্যায়ঃ নারীর উযুর উদ্বৃত্ত পানি দিয়ে উযু করা জায়িয
৩৪. অধ্যায়ঃ এ বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা/নিষিদ্ধ বিষয়
৩৫. অধ্যায়ঃ স্বামী-স্ত্রীর একই পাত্রের পানি দিয়ে গোসল করা
৩৬. অধ্যায়ঃ স্বামী-স্ত্রীর একই পাত্রের পানিতে উযু করা
৩৭. অধ্যায়ঃ নাবীয নামক শরবত দিয়ে উযু করা
৩৮. অধ্যায়ঃ সমুদ্রের পানি দিয়ে উযু করা
৩৯. অধ্যায়ঃ উযু করিতে অপরের সাহায্য গ্রহণ এবং তার পানি ঢেলে দেয়া
৪০. অধ্যায়ঃ কোন ব্যক্তি ঘুম থেকে উঠে তার হাত না ধুয়ে তা পানির পাত্রে প্রবেশ করাবে না
৪২. অধ্যায়ঃ ডান থেকে উযু আরম্ভ করা
৪৩. অধ্যায়ঃ এক আঁজলা পানি দিয়ে কুলি করা ও নাক পরিস্কার করা
৪৪. অধ্যায়ঃ নাকের ভিতর পানি পৌঁছানো ও নাক উত্তমরূপে পরিষ্কার করা
৪৫. অধ্যায়ঃ একবার করে উযুর অঙ্গসমুহ ধৌত করা
৪৬. অধ্যায়ঃ উযুর অঙ্গসমূহ তিনবার করে ধৌত করা
৪৭. অধ্যায়ঃ উযুর অঙ্গসমূহ একবার দুবার বা তিনবার করে ধৌত করা
৪৮. অধ্যায়ঃ সঠিকভাবে উযু করা এবং তাতে সীমাতিরিক্ত কিছু করা মাকরুহ
৪৯. অধ্যায়ঃ পূর্ণাঙ্গভাবে উযু করা
৫০. অধ্যায়ঃ দাড়ি খিলাল করা
৫১. অধ্যায়ঃ মাথা মাসহ করা
৫২. অধ্যায়ঃ উভয় কান মাসহ করা
৫৩. অধ্যায়ঃ কর্ণদ্বয় মাথার অন্তর্ভুক্ত
৫৪. অধ্যায়ঃ আঙ্গুলসমূহ খিলাল করা
৫৫. অধ্যায়ঃ পায়ের গোড়ালি ধৌত করা
৫৬. অধ্যায়ঃ দু পায়ের পাতা ধৌত করা
৫৭. অধ্যায়ঃ আল্লাহ্‌র নির্দেশিত পন্থায় উযু করা
৫৮. অধ্যায়ঃ উযু করার পর পানি ছিটানো
৫৯. অধ্যায়ঃ উযু ও গোসলের পর রুমাল ব্যবহার করা
৬০. অধ্যায়ঃ উযু করার পর যে দুআ পড়বে
৬১. অধ্যায়ঃ পিতলের পাত্রে উযু করা
৬২. অধ্যায়ঃ ঘুম থেকে উঠে উযু করা
৬৩. অধ্যায়ঃ লিঙ্গ স্পর্শ করলে উযু করিতে হইবে কিনা
৬৪. অধ্যায়ঃ লিঙ্গ স্পর্শ করলে উযু করা জরুরী নয়
৬৫. অধ্যায়ঃ আগুনের তাপে পরিবর্তিত জিনিস আহারের পর উযু করা
৬৬. অধ্যায়ঃ আগুনে রান্না করা জিনিস খাওয়ার পর উযুর প্রয়োজন নেই
৬৭. অধ্যায়ঃ উটের গোশত খাওয়ার পর উযু করা
৬৮. অধ্যায়ঃ দুধপান করার পর কুলি করা
৬৯. অধ্যায়ঃ চুমা দেয়ার পর উযু করা
৭০. অধ্যায়ঃ
৭১. অধ্যায়ঃ ঘুমানোর পূর্বে উযু করা
৭২. অধ্যায়ঃ প্রতি ওয়াক্‌তের সলাতের জন্য উযু করা এবং একই উযুতে কয়েক ওয়াক্‌তের সলাত আদায় করা
৭৩. অধ্যায়ঃ উযু থাকা অবস্থায় পুনরায় উযু করা
৭৪. অধ্যায়ঃ উযু ভঙ্গ হলেই কেবল উযু করা জরুরি

৩২. অধ্যায়ঃ বিড়ালের উচ্ছিষ্ট পানি দিয়ে উযু করা এবং তা জায়িয

৩৬৭. কাবশাহ বিনতু কাব [রাঃআঃ], আবু কাতাদাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

[কাবশাহ ছিলেন আবু কাতাদাহ এর পুত্রবধু] তিনি আবু আবু কাতাদাহ [রাঃআঃ]-এর উযুর পানি ঢেলে দেন। তখন একটি বিড়াল এসে সেই পানি পান করে। আবু কাতাদাহ [রাঃআঃ] পানির পাত্রটি তার দিকে ঝুঁকিয়ে দিলেন এবং আমি তার দিকে তাকাতে লাগলাম। তিনি বলিলেন, হে ভাতিজি! তুমি কি বিস্ময়বোধ করছো! রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, বিড়াল অপবিত্র নয়। এটা তো তোমাদের আশেপাশে বিচরণকারী বা বিচরণকারিণী। {৩৬৫}

{৩৬৫} তিরমিজি ৯২, নাসায়ি ৬৮, আবু দাউদ ৭৫, আহমাদ ২২০২২, ২২০৭৪, ২২১৩০; মুওয়াত্ত্বা মালিক ৪৪, দারিমি ৭৩৬। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ১৭৩, মিশকাত ৪৮৩, সহিহ আবু দাউদ ৬৮।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৩৬৮. আয়িশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি ও রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] একই পাত্রের পানি দিয়ে উযু করেছি, যা থেকে ইতোপূর্বে বিড়াল পানি পান করেছিল। {৩৬৬}

{৩৬৬} সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ৬৯, ৭০। উক্ত হাদিসের রাবি হারিসাহ সম্পর্কে আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় নির্ভরযোগ্য নন। ইমাম বোখারি বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় মুনকার। আবু যুরআহ ও আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। উক্ত হাদিসটি শাহিদ এর ভিত্তিতে সহিহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৩৬৯. আবু হুরাইরাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, বিড়াল নামাজ বিনষ্ট করে না। কারণ তা ঘরের জিনিসপত্রের অন্তর্ভুক্ত। {৩৬৭}

{৩৬৭} জইফ। তাখরিজ আলবানিঃ জামি সগীর ৬১০৬ জইফ, যঈফা ১৫১২। উক্ত হাদিসের রাবি আব্দুর রহমান বিন আবু যিনাদ সম্পর্কে আলী ইবনিল মাদীনী বলেন, তিনি মদিনায় যে সকল হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন সেগুলো সহিহ তবে বাগদাদে আসার পর তার হাদিসে সমস্যা দেখা যায়। ইয়াকুব বিন শায়বাহ বলেন, তিনি সিকাহ কিন্তু তার হাদিস দুর্বল। ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তার হাদিস দ্বারা দলীল গ্রহণযোগ্য নয়। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, মুদতারাবুল হাদিস।হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৩৩. অধ্যায়ঃ নারীর উযুর উদ্বৃত্ত পানি দিয়ে উযু করা জায়িয

৩৭০. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ]-এর এক স্ত্রী একটি বড় পাত্রের পানি দিয়ে গোসল করেন। অতঃপর নবী [সাঃআঃ] গোসল অথবা উযু করিতে আসলে তিনি বলেন, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আমি অপবিত্র ছিলাম [এবং এই পাত্রের পানি দিয়ে গোসল করেছি]। তিনি বলেন, পানি অপবিত্র হয় না। {৩৬৮}

{৩৬৮} তিরমিজি ৬৫, নাসায়ি ৩২৫, আবু দাউদ ৬৮, আহমাদ ২১০১, ২৫৬২, ২৮০২, ৩১১০; দারিমি ৭৩৪, ইবনি মাজাহ ৩৭১। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ২৭, সহিহ আবু দাউদ ৬১।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৩৭১. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

নবী [সাঃআঃ]-এর এক স্ত্রী নাপাকির গোসল করেন। অতঃপর নবী [সাঃআঃ] তার গোসলের উদ্বৃত্ত পানি দিয়ে উযু ও গোসল করেন। {৩৬৯}

{৩৬৯} তিরমিজি ৬৫, নাসায়ি ৩২৫, আবু দাউদ ৬৮, আহমাদ ২১০১, ২৫৬২, ২৮০২, ৩১১০; দারিমি ৭৩৪, ইবনি মাজাহ ৩৭০। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৩৭২. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

নবী [সাঃআঃ]-এর স্ত্রী মায়মূনাহ [রাঃআঃ] , তার নাপাকির গোসলের উদ্বৃত্ত পানি দিয়ে নবী [সাঃআঃ] উযু করেন। {৩৭০}

{৩৭০} আহমাদ ২৬২৬১ তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ মিশকাত ৩৫৮।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৩৪. অধ্যায়ঃ বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা/নিষিদ্ধ বিষয়

৩৭৩. হাকাম বিন আম্‌র [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] পুরুষকে নারীর উযুর উদ্বৃত্ত পানি দিয়ে উযু করিতে নিষেধ করিয়াছেন। {৩৭১}

{৩৭১} তিরমিজি ৬৪, আবু দাউদ ৮২, আহমাদ ১৭৪০৭, ২০১৩২। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ১১, সহিহ আবু দাউদ ৭৫, মিশকাত ৪৭১।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৩৭৪. আবদুল্লাহ বিন সারজিস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] পুরুষকে নারীর উযুর উদ্বৃত্ত পানি দিয়ে এবং নারীকে পুরুষের উদ্বৃত্ত পানি দিয়ে উযু-গোসল করিতে নিষেধ করিয়াছেন। তবে তারা [স্বামী-স্ত্রী] একত্রে গোসল করিতে পারে। ইমাম আবু আবদুল্লাহ্‌ ইবনি মাজাহ [রহঃ] বলেন, প্রথমোক্ত বক্তব্যই সঠিক এবং শেষোক্ত বক্তব্য ধারণামাত্র। {৩৭২}

{৩৭২} সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ মিশকাত ৪৭৩।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৩৭৫. আলী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] ও তাহাঁর স্ত্রী এ পাত্রের পানি দিয়ে গোসল করিতেন। তবে তাহাদের একজন অপরজনের উদ্বৃত্ত পানি দিয়ে গোসল করিতেন না। {৩৭৩}

{৩৭৩} আহমাদ ৫৭৩ তাহকিক আলবানিঃ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি হারিস [বিন আবদুল্লাহ] সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন ও আহমাদ বিন সালেহ আল মিসরী বলেন, তিনি সিকাহ। ইমাম নাসাঈ বলেন, কোন সমস্যা নেই। আলী ইবনিল মাদীনী তাকে মিথ্যুক বলেছেন। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তার হাদিস থেকে দলীল গ্রহণযোগ্য নয়। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, হাদিস বর্ণনায় নির্ভরযোগ্য নয়।হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৩৫. অধ্যায়ঃ স্বামীস্ত্রীর একই পাত্রের পানি দিয়ে গোসল করা

৩৭৬. আয়িশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি ও রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] একই পাত্রের পানি দিয়ে গোসল করতাম। {৩৭৪}

{৩৭৪} বোখারি ২৫০, ২৬১, ২৬৩, ২৭৩, ৩০১; মুসলিম ৩২১/১-৫, ৩৩১; তিরমিজি ১৭৫৫, নাসায়ি ২২৮, ২৩১-২৩৫, ৪১০-৪১৪, ৪১৬; আবু দাউদ ৭৭, ২৩৮; আহমাদ ২৩৪৯৪, ২৩৫৬৯, ২৩৬৪০, ২৩৮২৮, ২৪০৭৮, ২৪১৯৮, ২৪৩৪৫, ২৪৩৯৪, ২৪৪৩২, ২৪৪৫৭, ২৪৪৭০, ২৪৭০৭, ২৪৭৪৯, ২৪৮২৫, ২৪৮৪১, ২৪৮৫২, ২৪৮৬১, ২৪৮৭৭, ২৫০৩৫, ২৫০৫৫, ২৫০৮০, ২৫১০৬, ২৫২৩৬, ২৫৩৯৪, ২৫৪১০, ২৫৪৪৯, ২৫৬৪৫, ২৫৭৫৬, ২৭৬৫৯; দারিমি ৭৪৯-৫০, ইবনি মাজাহ ৬০৪। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ৭০।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৩৭৭.মায়মূনাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি ও রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] একই পাত্রের পানি দিয়ে গোসল করতাম। {৩৭৫}

{৩৭৫} মুসলিম ৩২২, তিরমিজি ৬২, নাসায়ি ২৩৬, আহমাদ ২৬২৫৭। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৩৭৮. উম্মু হানী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

নবী [সাঃআঃ] ও মায়মূনাহ [রাঃআঃ] একই পাত্রের পানি দিয়ে গোসল করেন, যাতে আটার দাগ লেগেছিল। {৩৭৬}

{৩৭৬} নাসায়ি ২৪০, আহমাদ ২৬৩৫৬। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ১/৬৪, মিশকাত ৪৮৫।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৩৭৯. জাবির বিন আবদুল্লাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ও তাহাঁর স্ত্রীগণ একই পাত্রের পানি দিয়ে গোসল করিতেন। {৩৭৭}

সহিহ।

হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৩৮০. উম্মু সালামাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি ও রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] একই পাত্রের পানি দিয়ে গোসল করিতেন। {৩৭৮}

{৩৭৮} বোখারি ৩২২, মুসলিম ৩২৪, আহমাদ ২৬০২৬, ২৬১০৬, ২৬১৬৩, ২৬১৬৭; দারিমি ১০৪৫। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৩৬. অধ্যায়ঃ স্বামীস্ত্রীর একই পাত্রের পানিতে উযু করা

৩৮১. ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর যুগে নারী ও পুরুষেরা একই পাত্রের পানি দিয়ে উযু করতো। {৩৭৯}

{৩৭৯} বোখারি ১৯৩, নাসায়ি ৭১, আবু দাউদ ৭৯-৮০, আহমাদ ৪৪৬৭, ৫৭৬৫, ৫৮৯২, ৬২৪৭; মুওয়াত্ত্বা মালিক ৪৬। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ৭২।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৩৮২. উম্মু সুবায়্যাহ আল-জুহানিয়্যা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, একই পাত্রের পানি দিয়ে উযু করার কারণে কখনো কখনো আমার হাতের সাথে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর হাতের স্পর্শ লাগতো। ইমাম আবু আবদুল্লাহ ইবনি মাজাহ [রহঃ] বলেন, আমি মুহাম্মাদ বিন ইসমাঈল আল-বোখারি [রহঃ]-কে বলিতে শুনেছি যে, উম্মু সুবায়্যাহ হলেন খাওলা বিনতু কায়স [রাঃআঃ]। আমি বিষয়টি আবু যুরআহ [রহঃ]-এর নিকট উত্থাপন করলে তিনি বলেন, মুহাম্মাদ সত্য বলেছেন। {৩৮০}

{৩৮০} আবু দাউদ ৭৮ তাহকিক আলবানিঃ হাসান সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ৭১।হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ

৩৮৩. আয়িশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি ও নবী [সাঃআঃ] নামাজের জন্য একত্রে উযু করিতেন। {৩৮১}

সহিহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৩৭. অধ্যায়ঃ নাবীয নামক শরবত দিয়ে উযু করা

৩৮৪. আবদুল্লাহ বিন মাসঊদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] লাইলাতুল জিন্ন-এ তাঁকে জিজ্ঞেস করেন, তোমার সাথে উযুর পানি আছে কি? তিনি বলেন, না, তবে একটি পাত্রে কিছু নাবীয আছে। তিনি বলেন, খেজুরও পবিত্র এবং পানিও পবিত্র। অতঃপর তিনি উযু করিলেন। {৩৮২}

{৩৮২} তিরমিজি ৮৮, আহমাদ ৩৭৭৩, ৪২৮৪। তাহকিক আলবানিঃ জইফ। তাখরিজ আলবানিঃ জইফ আবু দাউদ ১০, মিশকাত ৪৮০। উক্ত হাদিসের রাবি আবু যায়দ সম্পর্কে আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি অপরিচিত, ইমাম বোখারি বলেন, তিনি অপরিচিত, তার হাদিস বিশুদ্ধ নয়। ইমাম তিরমিযি বলেন, হাদিস বিশারদদের নিকট তিনি মাজহুল বা অপরিচিত। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তার পরিচয় সম্পর্কে কিছু জানা যায় না, তিনি অপরিচিত। আবু আহমাদ আল হাকিম বলেন, তিনি অপরিচিত। ইবনি হিব্বান বলেন, তিনি কে? তা জানা যায় না।হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৩৮৫. আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বিন মাসঊদ [রাঃআঃ]-কে লাইলাতুল জিন্ন-এ বলেন, তোমার সাথে পানি আছে কি? তিনি বলেন, না, তবে একটি পাত্রে নাবীয আছে। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, খেজুরও পবিত্র এবং পানিও পবিত্র। আমাকে তা ঢেলে দাও। রাবি বলেন, আমি তাঁকে নাবীয ঢেলে দেই এবং তিনি তা দিয়ে উযু করেন। {৩৮৩}

{৩৮৩} জইফ। তাখরিজ আলবানিঃ আবু দাউদ ৮৪ জইফ, তিরমিজি ৮৮, মিশকাত ৪৮০ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি আবু লাহীআহ সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তার হাদিসের ব্যাপারে কোন সমস্যা নেই। আমর বিন ফাল্লাস বলেন, তার কিতাব সমূহ পুড়ে যাওয়ায় হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ করেন, কিতাব সমূহ পুড়ে যাওয়ায় যে হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন তা দুর্বল।হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৩৮. অধ্যায়ঃ সমুদ্রের পানি দিয়ে উযু করা

৩৮৬. আবু হুরাইরাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, এক ব্যক্তি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর নিকট এসে বললো, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আমরা সমুদ্রে যাতায়াত করে থাকি এবং আমাদের সাথে খুব কম পানি থাকে। যদি আমরা তা দিয়ে উযু করি, তাহলে পিপাসার্ত হবো। আমরা কি সমুদ্রের পানি দিয়ে উযু করিতে পারি? রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, সমুদ্রের পানি পবিত্র এবং তার মৃত প্রাণীও হালাল। {৩৮৪}

{৩৮৪} তিরমিজি ৬৯, নাসায়ি ৫৯, ৩৩২, ৪৩৫০; আবু দাউদ ৮৩, আহমাদ ৭১৯২, ৮৫১৮, ৮৬৯৫, ৮৮৫৫; মুওয়াত্ত্বা মালিক ৪৩, দারিমি ৭২৮-২৯। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ৭১, মিশকাত ৪৭৯, সহিহা ৪৮০।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৩৮৭. ইবনিল ফিরাসী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি শিকারে যেতাম এবং আমার একটি পানির মশক ছিল, তাতে [পানের] পানি নিতাম এবং সমুদ্রের পানি দ্বারা উযু করতাম। আমি বিষয়টি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]- এর কাছে উত্থাপন করলাম। তিনি বলেন, তার পানি পবিত্র এবং তার মৃত প্রাণীও হালাল। {৩৮৫}

সহিহ লিগাইরিহী।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ লিগাইরিহি

৩৮৮. জাবির [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

নবী [সাঃআঃ]-কে সমুদ্রের পানি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলো। তিনি বলেন, তার পানি পবিত্র এবং তার মৃত প্রাণীও হালাল। {৩৮৬}

হাসান সহিহ।হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ

৩৯. অধ্যায়ঃ উযু করিতে অপরের সাহায্য গ্রহণ এবং তার পানি ঢেলে দেয়া

৩৮৯. মুগীরাহ বিন শুবাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] তাহাঁর কোন প্রয়োজনে [পায়খানায়] বের হয়ে গেলেন। তিনি ফিরে এলে আমি পানির পাত্রসহ তাহাঁর কাছে গেলাম এবং তাঁকে পানি ঢেলে দিতে লাগলাম। তিনি তাহাঁর দু বাহু ধৌত করিলেন, তারপর মুখমন্ডল ধৌত করিলেন। তিনি তাহাঁর বাহুদ্বয় ধৌত করিতে চাইলে তাহাঁর জুব্বার হাত দুটো সংকীর্ণ হওয়াতে তাহাঁর দু হাত জুব্বার নিম্নভাগ দিয়ে বের করিলেন এবং তা ধুলেন, অতঃপর তাহাঁর মোজাদ্বয়ের উপরিভাগে মাসহ করিলেন, তারপর আমাদের সাথে নামাজ আদায় করিলেন। {৩৮৭}

{৩৮৭} বোখারি ১৮২, ২০৩, ৩৬৩, ৫৭৯৮; মুসলিম ২৭৪/১-৩, তিরমিজি ৯৭, ৯৮, ১০০; নাসায়ি ৭৯, ৮২, ১২৩-২৫; আবু দাউদ ১৪৯-৫১, আহমাদ ১৭৬৬৮, ১৭৬৭৫, ১৭৬৭৯, ১৭৬৯২, ১৭৭০৫, ১৭৭১০, ১৭৭২৫, ১৭৭২৮, ১৭৭৪১, ১৭৭৫৫, ১৭৭৬০; মুওয়াত্ত্বা মালিক ৭৩, দারিমি ৭১৭, ইবনি মাজাহ ৫৪৫। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ৯৭।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৩৯০. আর-রুবায় বিনতু মুআব্বিয [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি নবী [সাঃআঃ]-এর জন্য উযুর পানি নিয়ে এলাম। তিনি বলেন, পানি ঢালতে থাকো। আমি পানি ঢাললাম। তিনি তাহাঁর মুখমন্ডল ও দু হাতের কনুই পর্যন্ত ধৌত করিলেন। তিনি পুনরায় পানি নিয়ে তা দিয়ে তাহাঁর মাথা সম্মুখ ও পেছনভাগসহ মাসহ করিলেন এবং তাহাঁর উভয় পা তিনবার করে ধৌত করেন। {৩৮৮}

তাহকিক আলবানিঃ [আরবি]……. কথাটি ছাড়া হাসান।{৩৮৮} তিরমিজি ৩৩, ৩৪; আবু দাউদ ১২৬, ১২৯, ১৩১; আহমাদ ২৬৪৭৫, ইবনি মাজাহ ৪১৮, ৪৩৮, ৪৪০, ৪৪১। তাহকিক আলবানিঃ مَاءً جَدِيد কথাটি ছাড়া হাসান। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ১১৭-১২২।হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য

৩৯১. সফ্ওয়ান বিন আস্‌সাল [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] সফরে ও বাড়িতে থাকাকালে আমি তাহাঁর উযুর পানি ঢেলে দিয়েছি। {৩৮৯}

{৩৮৯} জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি ১. বিশর বিন আদাম সম্পর্কে ইমাম যাহাবী বলেন, তিনি সত্যবাদী। আবু হাতিম আর-রাযী ও ইমাম দারাকুতনী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় নির্ভরযোগ্য নয়। ২. যায়দ ইবনিল হুবাব সম্পর্কে আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি সত্যবাদী কিন্তু হাদিস বর্ণনায় অধিক ভুল করেন। আলী ইবনিল মাদীনী ও উসমান বিন আবু শায়বাহ তাকে সিকাহ বলেছেন। ৩. ওয়ালীদ বিন উকবাহ সম্পর্কে ইমাম যাহাবী বলেন, তিনি মাজহুল বা অপরিচিত।হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৩৯২. রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর কন্যা রুকাইয়াহ [রাঃআঃ]-এর দাসী উম্মু আইয়্যাশ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে উযু করাতাম। আমি দাঁড়িয়ে পানি ঢালতাম [এবং তিনি বসে উযু করিতেন]। {৩৯০}

{৩৯০} জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি ১. আবদুল কারীম বিন রাওয সম্পর্কে ইবনি হিব্বান সিকাহ বললেও অন্যত্র তিনি বলেন, তিনি সিকাহ রাবির বিপরীত বর্ণনা করেন ও হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি অপরিচিত, তার হাদিস প্রত্যাখ্যানযোগ্য। ইমাম দারাকুতনী ও ইমাম যাহাবী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। ২. রাওয বিন আম্বাসাহ বিন সাঈদ বিন আবু আয়্যাশ সম্পর্কে বলা হয়েছে তিনি অপরিচিত। ৩. আম্বাসাহ বিন সাইদ সম্পর্কে ইমাম যাহাবী বলেন, তার পরিচিতি সম্পর্কে কিছু জানা যায় না।হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৪০. অধ্যায়ঃ কোন ব্যক্তি ঘুম থেকে উঠে তার হাত না ধুয়ে তা পানির পাত্রে প্রবেশ করাবে না

৩৯৩. আবু হুরাইরাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, তোমাদের কেউ রাতের ঘুম থেকে জেগে তার হাত দু অথবা তিনবার না ধোয়া পর্যন্ত যেন পানির পাত্রে প্রবেশ না করায়। কেননা তোমাদের কেউ জানে না যে, তার হাত কোথায় রাত কাটিয়েছে। {৩৯১}

{৩৯১} বোখারি ১৬২, মুসলিম ২৭৮/১-২, তিরমিজি ২৪, নাসায়ি ১, ১৬১, ৪৪১; আবু দাউদ ১০৩, ১০৫; আহমাদ ৭২৪০, ৭৩৯০, ৭৪৬৫, ৭৫৪৬, ৭৬১৭, ৭৭৫৬, ২৭৩৯৯, ৮৩৮০, ৮৭৪১, ৮৮৯৪, ৮৯৮৫, ৯৫৫৯, ৯৬৭১, ৯৭৪১, ১০১১৯, ১০২১১; মুওয়াত্ত্বা মালিক ২৪, দারিমি ৭৬৬। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ১৬৪, সহীহ্ আবু দাউদ ৯২, ৯৩।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৩৯৪. আবদুল্লাহ বিন উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, তোমাদের কেউ তার ঘুম থেকে জাগ্রত হয়ে তার হাত ধোয়ার পূর্বে যেন পানির পাত্রে প্রবেশ না করায়। {৩৯২}

{৩৯২} সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ৯৩।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৩৯৫. জাবির [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ[সাঃআঃ] বলেছেন, তোমাদের কেউ ঘুম থেকে উঠে উযু করার ইচ্ছা করলে সে যেন তার হাত ধোয়ার আগে তা তার উযুর পানিতে প্রবেশ না করায়। কেননা সে জানে না যে, তার হাত কোথায় রাত কাটিয়েছে এবং সে তার হাত কিসের উপর রেখেছিল। {৩৯৩}

তাহকিক আলবানিঃ [আরবি]……….. মুসলিমে এ শব্দগুলো নেই। “সে তার হাত কিসের উপর রেখেছিল” এ অতিরিক্ত অংশ মুনকার বাকী সহিহ।{৩৯৩} وَلاَ عَلَى مَا وَضَعَهَاমুসলিমে এ শব্দগুলো নেই। সে তার হাত কিসের উপর রেখেছিল এ অতিরিক্ত অংশ মুনকার বাকী সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ। হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য

৩৯৬. আল-হারিস [বিন আবদুল্লাহ] [শাবী তাকে মিথ্যুক হিসেবে আখ্যায়িত করিয়াছেন] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আলী [রাঃআঃ] পানি নিয়ে ডাকলেন। তিনি তার দু হাত পাত্রে ঢুকানোর পূর্বেই ধুয়ে নিলেন। অতঃপর তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে এরূপ করিতে দেখেছি। {৩৯৪}

{৩৯৪} সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ৯৪-৯৭, ১০১, ১০৬, ১০৯, ১১১। উক্ত হাদিসের রাবি আল হারিস সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন সিকাহ বললেও আলী ইবনিল মাদীনী বলেন, তিনি মিথ্যুক। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তার হাদিস দলীলযোগ্য নয়। ইমাম নাসাঈ বলেন, কোন সমস্যা নেই। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নন, তার হাদিস দলীলযোগ্য নয়। উক্ত হাদিসটি শাহিদ এর ভিত্তিতে সহিহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৪১. অধ্যায়ঃ – উযু করার সময় বিসমিল্লাহ বলা

৩৯৭. আবু সাঈদ খূদরী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

নবী [সাঃআঃ] বলেন, যে ব্যক্তি উযুর সময় আল্লাহ্‌র নাম স্মরণ করেনি তার উযু হয়নি। {৩৯৫}

দারিমি ৬৯১ তাহকিক আলবানিঃ হাসান। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ৮১, মিশকাত ৪০৪, সহিহ আবু দাউদ ৯০। উক্ত হাদিসের রাবি যায়দ ইবনিল হুবাব সম্পর্কে আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি সত্যবাদী কিন্তু হাদিস বর্ণনায় অধিক ভুল করেন। আলী ইবনিল মাদীনী ও উসমান বিন আবু শায়বাহ তাকে সিকাহ বলেছেন। ৩. ওয়ালীদ বিন উকবাহ সম্পর্কে ইমাম যাহাবি বলেন, তিনি মাজহুল বা অপরিচিত।হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

৩৯৮. [আসমা] বিনতু সাঈদ বিন যায়দ, তিনি তার পিতা সাঈদ বিন যায়দ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, যার উযু হয়নি তার নামাজ হয়নি এবং যে ব্যক্তি উযুর সময় বিসমিল্লাহ বলেনি তার উযু হয়নি। {৩৯৬}

{৩৯৬} তিরমিজি ২৫ তাহকিক আলবানিঃ হাসান। উক্ত হাদিসের রাবি ইয়াযীদ বিন ইয়াদ সম্পর্কে মালিক বিন আনাস ইয়াহইয়া বিন মাঈন তাকে মিথ্যুক বলেছেন। আলী ইবনিল মাদীনী বলেন, তিনি দুর্বল। আমর বিন ফাল্লাস বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় অধিক দুর্বল। আহমাদ বিন সালিহ আল মিসরী বলেন, আমার ধারনা তিনি হাদিস বানিয়ে বর্ণনা করেন। ইমাম বোখারি, তিনি হাদিস বর্ণনায় মুনকার।হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

৩৯৯. আবু হুরাইরাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, যার উযু হয়নি তার নামাজ হয়নি এবং যে ব্যক্তি উযুর সময় বিসমিল্লাহ বলেনি তার উযু হয়নি। {৩৯৭}

{৩৯৭} আবু দাউদ ১০১ তাহকিক আলবানিঃ হাসান। উক্ত হাদিসের রাবি ইয়াকুব বিন সালামাহ আল-লায়সী সম্পর্কে ইমাম যাহাবী বলেন, তার হাদিস দলীল হিসেবে গ্রহণযোগ্য নয়।হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

৪০০. সাহল বিন সাদ আস-সাঈদী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

নবী [সাঃআঃ] বলেন, যার উযু হয়নি তার নামাজ হয়নি এবং যে ব্যক্তি উযুর সময় বিসমিল্লাহ বলেনি তার উযু হয়নি।

৪/৪০০[১]. সাহল বিন সাদ আস-সাঈদী [রাঃআঃ], যে ব্যক্তি নবী [সাঃআঃ]-এর প্রতি দরূদ পড়েনি তার নামাজ এবং যে ব্যক্তি আনসারদের ভালোবাসে না তার নামাজ হয় না। {৩৯৮}

তাহকিক আলবানিঃ দ্বিতীয় শর্তে মুনকার।{৩৯৮} দ্বিতীয় শর্তে মুনকার। তাখরিজ আলবানিঃ যঈফাহ ২১৬৬, ৪৮০৬। উক্ত হাদিসের রাবি ইয়াযীদ বিন ইয়াদ সম্পর্কে মালিক বিন আনাস ও ইয়াহইয়া বিন মাঈন তাকে মিত্তুক বলেছেন। আলী ইবনিল মাদীনী বলেন, তিনি দুর্বল। আমর বিন ফাল্লাস বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় অধিক দুর্বল। আহমাদ বিন সালিহ আল মিসরী বলেন, আমার ধারনা তিনি বানিয়ে হাদিস বর্ণনা করেন। ইমাম বোখারি বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় মুনকার।হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য

৪২. অধ্যায়ঃ ডান থেকে উযু আরম্ভ করা

৪০১. আয়িশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] উযু করাকালে ডানদিক থেকে আরম্ভ করা পছন্দ করিতেন। একইভাবে তিনি মাথার চুল আঁচড়ানো ও জুতা পরিধানও ডান থেকে শুরু করা পছন্দ করিতেন। {৩৯৯}

{৩৯৯} বোখারি ১৬৮, ৪২৬, ৫৩৮০, ৫৮৫৪, ৫৯২৬; মুসলিম ২৬৮/১-৩, নাসায়ি ১১২, ৪২১, ৫২৪০; আবু দাউদ ৪১৪০, আহমাদ ২৪১০৬, ২৪৪৬৯, ২৪৬২০, ২৪৭৯৩, ২৪৮৪৫, ২৫০১৮, ২৫১৩৬, ২৫২৩৫, ২৫৭৫১। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ৯৩।এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৪০২. আবু হুরাইরাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, তোমরা উযু করার সময় তোমাদের ডান থেকে শুরু করিবে। {৪০০}

{৪০০} আবু দাউদ ৪১৪১, আহমাদ ৮৪৩৮। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ মিশকাত ৪০১।এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৪৩. অধ্যায়ঃ এক আঁজলা পানি দিয়ে কুলি করা নাক পরিস্কার করা

৪০৩. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এক আঁজলা পানি দিয়ে কুলি করিতেন ও নাক পরিষ্কার করিতেন। {৪০১}

{৪০১} বোখারি ১৪০, নাসায়ি ১০১-২, আবু দাউদ ১৩৭, আহমাদ ২৪১২, দারিমি ৬৯৭। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ১২৬।এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৪০৪. আলী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] উযু করিলেন এবং এক আঁজলা পানি দিয়ে তিনবার কুলি করেন ও তিনবার নাক পরিষ্কার করেন। {৪০২}

নাসায়ি ৯১-৯৫ তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ১০০।এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৪০৫. আবদুল্লাহ্‌ বিন ইয়াযীদ আল-আনসারী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদের নিকট এসে উযুর পানি চান। আমি পানি নিয়ে তাহাঁর নিকট এলাম। তিনি এক আঁজলা পানি দিয়ে কুলি করিলেন এবং নাক পরিষ্কার করিলেন। {৪০৩}

{৪০৩} বোখারি ১৫৮, ১৮৫, ১৮৬, ১৯১, ১৯২, ১৯৭, ১৯৯; মুসলিম ২৩৫-৩৬, তিরমিজি ২৮, ৩২, ৩৫; নাসায়ি ৯৭, ৯৮; আবু দাউদ ১১৮, ১২০; আহমাদ ১৫৯৯৬, ১৬০০৩, ১৬০১৭, ১৬০২৪, ১৬০৩৭; মুওয়াত্ত্বা মালিক ৩২, দারিমি ৬৯৪, ৭০৯; ইবনি মাজাহ ৪৩৪। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ মিশকাত ১১২, সহিহ আবু দাউদ ১১০।এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৪৪. অধ্যায়ঃ নাকের ভিতর পানি পৌঁছানো নাক উত্তমরূপে পরিষ্কার করা

৪০৬. সালামাহ বিন কায়স [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাকে বললেনঃ তুমি যখন উযু করিবে তখন নাক ভালোভাবে পরিষ্কার করিবে। আর যখন তুমি ইসতিনজা করিবে, তখন বেজোড় সংখ্যক ঢিলা ব্যবহার করিবে। {৪০৪}

{৪০৪} তিরমিজি ২৭, আহমাদ ১৮৩৩৮, ১৮৫০৮ তাহকিক আলবানিঃ সহিহ।এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৪০৭. লাকীত বিন সবরাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহ্‌র রসূল! আমাকে উযু সম্পর্কে অবহিত করুন। তিনি বলেন, তুমি পরিপূর্ণরুপে উযু করো এবং নাকের ভেতর উত্তমরূপে পানি পোঁছাও। কিন্তু তুমি সায়িম হলে তা করিবেনা। {৪০৫}

{৪০৫} তিরমিজি ৩৭, ৭৮৮; নাসায়ি ৮৭, ১১৪; আবু দাউদ ১৪২, ২৩৬৬; আহমাদ ১৫৯৪৫, ১৫৯৪৬; দারিমি ৭০৫। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ১৩০, মিশকাত ৪১৫।এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৪০৮. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, তোমরা দুই বা তিনবার পানি দিয়ে উত্তমরূপে নাক পরিষ্কার করো। {৪০৬}

{৪০৬} আবু দাউদ ১৪১ তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ১২৯।এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৪০৯. আবু হুরাইরাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, যে ব্যাক্তি উযু করে, সে যেন উত্তমরূপে নাক পরিষ্কার করে এবং যে ব্যক্তি শৌচ করে, সে যেন বেজোড় সংখ্যক ঢিলা ব্যবহার করে। {৪০৭}

{৪০৭} বোখারি ১৬১-৬২, মুসলিম ২৩১-৩, নাসায়ি ৮৬, ৮৮; আবু দাউদ ৩৫, ১৪০; আহমাদ ৭১৮০, ৭৪০৩, ৭৬৭৩, ৭৬৮৮, ৮০১৬, ২৭৩৮২, ৮৩৯৯, ৮৪৬২, ৮৫০৮, ৮৬২১, ৮৭৯৬, ৮৯৫৭, ৯৬৫৩, ২৭২৮২; মুওয়াত্ত্বা মালিক ৩৩, ৩৪; দারিমি ৬৬২, ৭০৩। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহীদ আবু দাউদ ১২৮।এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৪৫. অধ্যায়ঃ একবার করে উযুর অঙ্গসমুহ ধৌত করা

৪১০. সাবিত বিন আবু সাফিয়্যাহ আস-সুমালী [দইফ বা দুর্বল ও রাফিযী] হইতে বর্ণিতঃ

আমি আবু জাফার … কে জিজ্ঞেস করে বললাম, আমার নিকট জাবির বিন আবদুল্লাহ [রাঃআঃ] থেকে হাদীস বর্ণনা করা হয়েছে যে, নবী [সাঃআঃ] একবার করে উযুর অঙ্গ ধৌত করিতেন? তিনি বলেন, হাঁ। আমি বললাম, তিনি কি দুবার অথবা তিনবার করে উযু অঙ্গ ধৌত করিয়াছেন? তিনি বলিলেন, হাঁ। {৪০৮}

{৪০৮} তিরমিজি ৪৫ তাহকিক আলবানিঃ জইফ। তাখরিজ আলবানিঃ মিশকাত ৪২২ জইফ, সহিহা ২১২২ সহিহ, মিশকাত ৪২২। উক্ত হাদিসের রাবি সাবিত বিন আবু সাফিয়্যাহ আস সুলামী সম্পর্কে আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। আবু যুরআহ ও আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি দুর্বল। ইমাম নাসাঈ বলেন, তিনি সিকাহ নন।এই হাদিসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৪১১. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে এক এক আঁজলা পানি দিয়ে উযুর এক একটি অঙ্গ ধৌত করিতে দেখেছি। {৪০৯}

{৪০৯} বোখারি ১৪০, ১৫৭; তিরমিজি ৪২, নাসায়ি ৮০, ১০১-২; আবু দাউদ ১৩৭-৩৮, আহমাদ ২৪১২, দারিমি ৬৯৬-৯৭। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ১২৭।এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৪১২. উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে তাবুক অভিযানকালে উযুর প্রতিটি অঙ্গ একবার করে ধৌত করিতে দেখেছি। {৪১০}

{৪১০} আহমাদ ১৫০ তাহকিক আলবানিঃ হাসান।এই হাদিসটির তাহকিকঃ হাসান হাদিস

৪৬. অধ্যায়ঃ উযুর অঙ্গসমূহ তিনবার করে ধৌত করা

৪১৩. শাকীক বিন সালামাহ হইতে বর্ণিতঃ

আমি উসমান [রাঃআঃ] ও আলী [রাঃআঃ]-কে তিনবার করে উযুর অঙ্গসমূহ ধৌত করিতে দেখেছি এবং তারা দুজন বলেছেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর উযু এরূপই ছিল। {৪১১}

{৪১১} তিরমিজি ৪৪, আবু দাউদ ১১১। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ৮৯।এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৪১৪. ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি তিনবার করে উযুর অঙ্গসমূহ ধৌত করেন এবং বলেন যে, এটি নবী [সাঃআঃ]-এর উযু। {৪১২}

{৪১২} নাসায়ি ৮১ তাহকিক আলবানিঃ সহিহ।এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৪১৫. আয়িশা ও আবু হুরাইরাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

নবী [সাঃআঃ] উযুর অঙ্গগুলো তিনবার করে ধৌত করিতেন। {৪১৩}

নাই তাহকিক আলবানিঃ সহিহ।এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৪১৬. আবদুল্লাহ বিন আবু আওফা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে উযুর অঙ্গসমূহ তিন তিনবার করে ধৌত করিতে দেখেছি এবং তিনি তাহাঁর মাথা একবার মাসহ করেন। {৪১৪}

{৪১৪} সহিহ আবু দাউদ ১০০।নাই তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ১০০। সুফইয়ান বিন ওয়াকী সম্পর্কে ইমাম বোখারি বলেন, তার ব্যাপারে অনেক সমালোচনা রয়েছে। ইবনি হিব্বান বলেন, তিনি সত্যবাদী। ইমাম নাসাঈ বলেন, তিনি সিকাহ নন। ২. ফায়িদ বিন আব্দুর রহমান সম্পর্কে আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তার হাদিস প্রত্যাখ্যানযোগ্য। ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তিনি সিকাহ নন বরং তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। ইমাম বোখারি বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় মুনকার। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তার হাদিসে মিথ্যা রয়েছে। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, কোন সমস্যা নেই। উক্ত হাদিসটি শাহিদ এর ভিত্তিতে সহিহ।এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৪১৭. আবু মালিক আল আশআরী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] উযুর অঙ্গগুলো তিন তিনবার করে ধৌত করিতেন। {৪১৫}

সহিহ।এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৪১৮. রুবায় বিনতু মুআব্বায বিন আফরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তিন তিনবার করে উযুর অঙ্গগুলো ধৌত করিতেন। {৪১৬}

{৪১৬} তিরমিজি ৩৩, ৩৪; আবু দাউদ ১২৬, ১২৯, ১৩১; আহমাদ ২৬৪৭৫, ইবনি মাজাহ ৩৯০, ৪৩৮, ৪৪০, ৪৪১। তাহকিক আলবানিঃ হাসান সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ১১৭।এই হাদিসটির তাহকিকঃ হাসান সহিহ

৪৭. অধ্যায়ঃ উযুর অঙ্গসমূহ একবার দুবার বা তিনবার করে ধৌত করা

৪১৯. ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] একবার করে উযুর অঙ্গগুলো ধৌত করার পর বলেন, এটা হলো সেই উযু, যা ছাড়া আল্লাহ কারো নামাজ কবুল করেন না। অতঃপর তিনি দুবার করে উযুর অঙ্গগুলো ধৌত করেন এবং বলেন, এই উযুই যথেষ্ট। অতঃপর তিনি তিনবার করে উযুর অঙ্গগুলো ধৌত করেন এবং বলেন, এটা হচ্ছে পূর্ণাঙ্গ উযু। এটা আমার উযু এবং আল্লাহ্‌র অন্তরঙ্গ বন্ধু ইবরাহীম [আঃ]-এর উযু। যে ব্যক্তি এভাবে উযু করলো এবং উযুর শেষে বললোঃ [কালিমা শাহাদাত] “ আমি সাক্ষ্য দেই যে, আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নাই এবং আমি আরো সাক্ষ্য দেই যে, মুহাম্মাদ [সাঃআঃ] তাহাঁর [প্রেরিত] বান্দা ও রসূল, তাহাঁর জন্য জান্নাতের আটটি দরজাই খুলে দেয়া হইবে এবং সে যে দরজা দিয়ে ইচ্ছা জান্নাতে প্রবেশ করিবে। {৪১৭}

{৪১৭} নাই তাহকিক আলবানিঃ অত্যন্ত দুর্বল। তাখরিজ আলবানিঃ যঈফাহ ৪৭৩৫, ইরওয়াহ ৮৫। উক্ত হাদিসের রাবি আব্দুর রহীম বিন যায়দ আল আম্মী সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তিনি জঘন্যতম মিথ্যাবাদী। আলী ইবনিল মাদীনী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। ইমাম বোখারি বলেন, তাকে সকল হাদিস বিশারদগণ প্রত্যাখ্যান করিয়াছেন। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তার হাদিস প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে এমনকি তিনি হাদিস বর্ণনায় মুনকার। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, তিনি দুর্বল। ২. যায়দ আল-আম্মী সম্পর্কে ইমাম দারাকুতনী সালিহ বললেও আলী ইবনিল মাদীনী বলেন, তিনি দুর্বল। ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তার থেকে হাদিস গ্রহন করা হলেও তিনি দুর্বল।এই হাদিসটির তাহকিকঃ খুবই দুর্বল

৪২০. উবাই বিন কাব [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] পানি নিয়ে ডাকলেন এবং উযুর অঙ্গসমূহ একবার করে ধৌত করিলেন, অতঃপর বলেন, এটা হচ্ছে উযুর আবশ্যকীয় রূপ অথবা তিনি বলেন, এটা হলো সেই ব্যক্তির উযু যে উযু করেনি এবং যা ব্যতীত আল্লাহ তার নামাজ কবুল করবেন না। অতঃপর তিনি উযুর অঙ্গগুলো দুবার করে ধৌত করে বলেন, এটা এমন উযু, যে ব্যক্তি এভাবে উযু করিবে আল্লাহ তাঁকে দ্বিগুণ পুরস্কার দিবেন। অতঃপর তিনি উযুর অঙ্গগুলো তিনবার করে ধৌত করেন এবং বলেন, এটা হল আমার উযু এবং আমার পূর্ববর্তী নবী রসুলগণের উযু। {৪১৮}

{৪১৮} জইফ। তাখরিজ আলবানিঃ যঈফাহ, ইরওয়াহ ৮৫। উক্ত হাদিসের রাবি আবদুল্লাহ বিন আরাদাহ আশ-শায়বানী সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তিনি দুর্বল। ইবনি হিব্বান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় মুনকার। ইমাম নাসাঈ বলেন, তিনি সিকাহ নন। ইবনি আদী বলেন, তার থেকে হাদিস গ্রহন ও তার হাদিসের অনুসরণ করা ঠিক নয়। আল-উকায়লী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় অধিক সন্দেহ করেন।এই হাদিসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৪৮. অধ্যায়ঃ সঠিকভাবে উযু করা এবং তাতে সীমাতিরিক্ত কিছু করা মাকরুহ

৪২১. উবাই বিন কাব [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, নিশ্চয় উযুর জন্য ওয়ালাহান নামের একটি শয়তান আছে। অতএব তোমরা পানি প্রসূত সন্দেহ থেকে দূরে থাকো। {৪১৯}

{৪১৯} তিরমিজি ৫৭ তাহকিক আলবানিঃ অত্যন্ত দুর্বল। তাখরিজ আলবানিঃ জামি সগীর ১৯৭০ জইফ জিদ্দান, সহীহা ২১২২ সহিহ, মিশকাত ৪১৯। উক্ত হাদিসের রাবি খারিজাহ বিন মুসআব সম্পর্কে আবু আহমাদ আল-হাকিম বলেন, তিনি প্রত্যাখ্যানযোগ্য। ইবনি আদী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় সংমিশ্রণ করেন, তবে ইচ্ছাকৃতভাবে মিথ্যা বলেন না। ইবনি হিব্বান বলেন, তিনি গিয়াস থেকে হাদিস তাদলিস করিয়াছেন এবং অন্যদের থেকে দুর্বলভাবে হাদিস বর্ণনা করিয়াছেন। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তার থেকে হাদিস গ্রহন করা যাবে না। ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তিনি সিকাহ নন। আলী ইবনিল মাদীনী বলেন, তিনি দুর্বল।এই হাদিসটির তাহকিকঃ খুবই দুর্বল

৪২২. আবদুল্লাহ বিন আম্‌র ইবনিল আস হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, এক বেদুঈন নবী [সাঃআঃ]-এর নিকট উপস্থিত হয়ে তাঁকে উযু সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেন। তিনি তাঁকে তিনবার করে উযুর অঙ্গগুলো ধৌত করে দেখান, তারপর বলেন, এই হল উযু। যে ব্যক্তি এর চেয়ে বেশি করিলসে অবশ্যই মন্দ কাজ করলো অথবা সীমালঙ্ঘন করলো অথবা যুল্‌ম করলো। {৪২০}

{৪২০} আবু দাউদ ১৩৫, আহমাদ ৬৬৪৬। তাহকিক আলবানিঃ হাসান সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ মিশকাত ৪১৯, সহিহ আবু দাউদ ১২৪।এই হাদিসটির তাহকিকঃ হাসান সহিহ

৪২৩. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

আমি আমার খালা মায়মূনাহ [রাঃআঃ]-এর ঘরে রাত কাটালাম। নবী [সাঃআঃ] [ঘুম থেকে উঠে] দাঁড়ান এবং মশক থেকে অল্প অল্প পানি নিয়ে উযু করেন। তখন আমিও উঠলাম এবং তিনি যেরূপ করিলেন আমিও তদ্রূপ করলাম। {৪২১}

{৪২১} বোখারি ১৩৮, মুসলিম ৭৬৩। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ৩০।এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৪২৪. ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এক ব্যক্তিকে উযু করিতে দেখে বলেন, অপচয় করো না, অপচয় করো না। {৪২২}

{৪২২} মউযূ। তাখরিজ আলবানিঃ যঈফাহ ৪৭৮২। উক্ত হাদিসের রাবি মুহাম্মাদ ইবনিল মুসাফফা আল হিমসী সম্পর্কে আবু হাতিম আর-রাযী ও ইমাম নাসাই বলেন, তিনি সত্যবাদী। ইবনি হিব্বান তাকে সিকাহ বললেও অন্যত্র বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। ২. মুহাম্মাদ ইবনিল ফাদল সম্পর্কে আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তার হাদিস মিথ্যুকদের হাদিসের মতই। ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তিনি মিথ্যুক কখনো সিকাহ হইতে পারে না। আলী ইবনিল মাদীনী বলেন, তার থেকে আশ্চর্য হাদিস বর্ণিত হয়েছে। আমর বিন ফাল্লাস বলেন, তার হাদিস প্রত্যাখ্যানযোগ্য ও তিনি মিথ্যুক। সালিহ জাযারাহ বলেন, তিনি হাদিস বানিয়ে বর্ণনা করেন। ইমাম বোখারি তার ব্যাপারে চুপ থেকেছেন অর্থাৎ কিছু বলেন নি।এই হাদিসটির তাহকিকঃ জাল হাদিস

৪২৫. আবদুল্লাহ্‌ বিন আম্‌র [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] সাদ [রাঃআঃ]-কে অতিক্রম করে যাচ্ছিলেন, তখন তিনি উযু করছিলেন। তিনি বলেন, এই অপচয় কেন? সাদ [রাঃআঃ] বলেন, উযুতেও কি অপচয় আছে? তিনি বলেন, হাঁ যদিও তুমি প্রবাহমান নদীতে থাকো। {৪২৩}

{৪২৩} আহমাদ ৭০২৫ তাহকিক আলবানিঃ জইফ। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়া ১৪০ জইফ, মিশকাত ৪২৭ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি ১. ইবনি লাহীআহ সম্পর্কে আমর বিন ফাল্লাস বলেন, তার কিতাবসমূহ পুড়ে যাওয়ার পর হাদিস বর্ণনায় দুর্বল ছিলেন। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তার পুরাতন হাদিসগুলো সহিহ। ২. হুইয়ার বিন আবদুল্লাহ আল-মুআফিরী সম্পর্কে ইমাম নাসাই বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় নির্ভরযোগ্য নন। ইমাম বোখারি বলেন, তার ব্যাপারে সমালোচনা রয়েছে। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি একাধিক হাদিস মুনকারভাবে বর্ণনা করিয়াছেন।এই হাদিসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৪৯. অধ্যায়ঃ পূর্ণাঙ্গভাবে উযু করা

৪২৬. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদের পূর্ণাঙ্গরূপে উযু করার নির্দেশ দিয়েছেন। {৪২৪}

{৪২৪} নাসায়ি ১৪১ তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ৭৬৯।এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৪২৭. আবু সাঈদ আল-খুদরী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনেছেনঃ আমি কি তোমাদের এমন জিনিসের পথ দেখাবো না যার দ্বারা আল্লাহ তোমাদের গুনাহসমূহ মুছে দিবেন এবং পূণ্যের পরিমান বাড়িয়ে দিবেন? তারা বলেন, হাঁ, হে আল্লাহ্‌র রসূল! তিনি বলেন, কষ্টের সময় পূর্ণাঙ্গভাবে উযু করা, মাসজিদের দিকে ঘন ঘন যাতায়াত করা এবং এক ওয়াক্‌তের নামাজ আদায়ের পর পরবর্তী ওয়াক্‌তের নামাজের অপেক্ষায় থাকা। {৪২৫}

{৪২৫} আহমাদ ১০৬১১ তাহকিক আলবানিঃ হাসান সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ তারগিব ১৮৮, ৩০৯।এই হাদিসটির তাহকিকঃ হাসান সহিহ

৪২৮. আবু হুরাইরাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

নবী [সাঃআঃ] বলেন, কষ্টের সময় পূর্ণাঙ্গভাবে উযু করা, মাসজিদে যাতায়াত করা এবং এক ওয়াক্‌তের নামাজ আদায়ের পর পরবর্তী ওয়াক্‌তের নামাজের জন্যে অপেক্ষারত থাকা [এই তিনটি কাজ] গুনাহসমূহের কাফফারাস্বরূপ। {৪২৬}

{৪২৬} মুসলিম ২৫১, তিরমিজি ৫১, নাসায়ি ১৪৩, আহমাদ ৭১৬৮, ৭৬৭২, ৭৯৩৫, ৭৯৬১, ৭৩৬১; মুওয়াত্ত্বা মালিক ৩৮৬। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ তারগিব ১৮৭, ৩০৮।এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৫০. অধ্যায়ঃ দাড়ি খিলাল করা

৪২৯. আম্মার বিন ইয়াসির [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে তাহাঁর দাড়ি খিলাল করিতে দেখেছি। {৪২৭}

{৪২৭} তিরমিজি ২৯ তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ রওয ৪৭৫। উক্ত হাদিসের রাবি আবদুল কারীম আবু উমায়্যাহ সম্পর্কে আয়্যুব আস-সাখতিয়ানী বলেন, তিনি সিকাহ নন। আহমাদ বিন হাম্বল ও ইয়াহইয়া বিন মাঈন তাকে দুর্বল বলেছেন। ইমাম বাসাঈ তাকে প্রত্যাখ্যান করিয়াছেন। ইবনি হিব্বান বলেন, হাদিস বর্ণনায় অধিক ভুল করেন। ইবনি আদি বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। উক্ত হাদিসটি শাহিদ এর ভিত্তিতে সহিহ।এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৪৩০. উসমান বিন আফ্‌ফান [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] উযু করিলেন এবং তাহাঁর দাড়ি খিলাল করিলেন। {৪২৮}

{৪২৮} তিরমিজি ৩১, দারিমি ৭০৪। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ৯৮।এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৪৩১. আনাস বিন মালিক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যখন উযু করিতেন, তখন তাহাঁর দাড়ি খিলাল করিতেন এবং তাহাঁর আঙ্গুলের ফাঁকসমূহও দুবার খিলাল করিতেন। {৪২৯}

তাহকিক আলবানিঃ দুবার শব্দ ছাড়া সহিহ।{৪২৯} আবু দাউদ ১৪৫ তাহকিক আলবানিঃ দুবার শব্দ ছাড়া সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ ইরওয়া ৯২, সহিহ আবু দাউদ ১৩৩। উক্ত হাদিসের রাবি ইয়াহইয়া বিন কাসীর আবু নাদর সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন ও আবু যুরআহ আর-রাযী তাকে দুর্বল বলেছেন। আমর বিন ফাল্লাস বলেন, তিনি ইচ্ছাকৃত মিথ্যা বলেন না। তবে হাদিস বর্ণনায় অধিক ভুল ও সন্দেহ করেন। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। আস-সাজী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় অধিক দুর্বল, তার হাদিস প্রত্যাখ্যানযোগ্য। ইমাম নাসাঈ বলেন, তিনি সিকাহ নন। ২. ইয়াযীদ আর-রাকশী সম্পর্কে আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, মুনকারুল হাদিস। শুবাহ ইবনিল হাজ্জাজ বলেন, তার থেকে হাদিস বর্ণনার চেয়ে রাস্তা কেটে বসে যাওয়া আমার নিকট অধিক পছন্দনীয়। আমর ইবনিল ফাল্লাস বলেন, হাদিস বর্ণনায় নির্ভরযোগ্য নয়। ইয়াকুব বিন সুফইয়ান বলেন, তার মাঝে দুর্বলতা রয়েছে। ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, কোন সমস্যা নেই।এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৪৩২. ইবনি উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যখন উযু করিতেন, তখন তাহাঁর কপালের দুপাশে আস্তে আস্তে মলতেন। অতঃপর তিনি তাহাঁর আঙ্গুল দিয়ে নিচের দিক থেকে তাহাঁর দাড়ি খিলাল করিতেন। {৪৩০}

{৪৩০} নাই তাহকিক আলবানিঃ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি আবদুল হামীদ সম্পর্কে আহমাদ বিন হাম্বল সিকাহ বললেও ইবনি হিব্বান বলেন, তিনি সিকাহ তবে হাদিস বর্ণনায় কখনো কখনো ভুল করেন।এই হাদিসটির তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৪৩৩. আবু আইয়ূব আল-আনসারী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে উযু করার সময় তাহাঁর দাড়ি খিলাল করিতে দেখেছি। {৪৩১}

{৪৩১} সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ জামি সগীর ৪৩৬৩ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি ১. ওয়ালীদ বিন সায়িব আর-রাকশী সম্পর্কে ইবনি আবু শায়বাহ বলেন, তিনি দুর্বল। ইমাম বোখারি, আবু হাতিম আর-রাযী ও ইয়াকুব বিন সুফইয়ান বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় মুনকার। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। ২. আবু সাওরাহ সম্পর্কে ইবনি হিব্বান সিকাহ বললেও ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তিনি খুবই দুর্বল। ইমাম বুখারি ও আস-সাজী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। ইমাম তিরমিযি তাকে হাদিস বর্ণনায় দুর্বল হিসেবে আখ্যায়িত করিয়াছেন। ইমাম দারাকুতনী বলেন, তিনি অপরিচিত। হাদিসটির শতাধিক শাহিদ রয়েছে, তন্মধ্যে সহিহ বোখারিতে ১৪ টি, সহিহ মুসলিমে ৬ টি, তিরমিযি ১৭ টি, আবু দাউদ ২৭ টি, ইবনি মাজাহ ১১ টি ও বাকিগুলো অন্যান্য কিতাবে রয়েছে।এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৫১. অধ্যায়ঃ মাথা মাসহ করা

৪৩৪. ইয়াহইয়া হইতে বর্ণিতঃ

তিনি আবদুল্লাহ বিন যায়দ [রাঃআঃ] কে বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কিভাবে উযু করিতেন তা আপনি আমাকে দেখাতে পারেন কি? আবদুল্লাহ বিন যায়দ [রাঃআঃ] বলেন, হাঁ। তিনি উযুর পানি নিয়ে ডাকলেন এবং তিনি তার হাতে পানি ঢেলে উভয় হাত দুবার ধৌত করিলেন, অতঃপর তিনবার কুলি করিলেন ও নাকে পানি দিলেন, অতঃপর মুখমণ্ডল তিনবার ধৌত করিলেন, অতঃপর দুহাত কনুইসহ দুবার করে ধৌত করিলেন। অতঃপর তিনি উভয় হাত দিয়ে সামনের দিক থেকে পেছনের দিক পর্যন্ত তাহাঁর মাথা মাসহ করিলেন। তিনি তাহাঁর মাথার সামনের দিক থেকে শুরু করিলেন এবং দু হাত ঘাড় পর্যন্ত নিলেন, অতঃপর পেছন দিক থেকে দুহাত যেখান থেকে মাসহ শুরু করেন সেখানে নিয়ে আসেন, অতঃপর তাহাঁর দু পা ধৌত করেন। {৪৩২}

{৪৩২} বোখারি ১৫৮, ১৮৫, ১৮৬, ১৯১, ১৯২, ১৯৭, ১৯৯; মুসলিম ২৩৫-৩৬, তিরমিজি ২৮, ৩২, ৩৫; নাসায়ি ৯৭, ৯৮; আবু দাউদ ১১৮, ১২০; আহমাদ ১৫৯৯৬, ১৬০০৩, ১৬০১৭, ১৬০২৪, ১৬০৩৭; মুওয়াত্ত্বা মালিক ৩২, দারিমি ৬৯৪, ৭০৯; ইবনি মাজাহ ৪০৫। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ১০৯।এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৪৩৫. উসমান বিন আফ্‌ফান [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে উযু করিতে দেখলাম এবং তিনি তাহাঁর মাথা একবার মাসহ করেন। {৪৩৩}

{৪৩৩} আবু দাউদ ১০৮ তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ৯৬।এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৪৩৬. আলী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর মাথা একবার মাসহ করেন। {৪৩৪}

{৪৩৪} নাসায়ি ৯৬, আবু দাউদ ১১৫ তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ১০৪।এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৪৩৭. সালামাহ ইবনিল আকওয়া [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে উযু করিতে দেখেছি। তিনি তাহাঁর মাথা একবার মাসহ করেন। {৪৩৫}

{৪৩৫} সহিহ লিগাইরিহী। উক্ত হাদিসের রাবি ১. মুহাম্মাদ ইবনিল হারিস আল-মিসরী সম্পর্কে ইবনি হিব্বান তাকে সিকাহ বললেও অন্যত্র বলেন তিনি অপরিচিত। ২. ইয়াহইয়া বিন রাশিদ আল-বাসরী ইবনি হিব্বান তাকে সিকাহ বললেও অন্যত্রে বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। আবু হাতিম আর-রাযী ও ইমাম নাসাঈ তাকে দুর্বল বলেছেন। উক্ত হাদিসটি শাহিদ এর ভিত্তিতে সহিহ।এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহিহ লিগাইরিহি

৪৩৮. আর-রুবায় বিনতু মুআব্বিয বিন আফরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] উযু করেন এবং তিনি তাহাঁর মাথা দুবার মাসহ করেন। {৪৩৬}

{৪৩৬} তিরমিজি ৩৩, ৩৪; আবু দাউদ ১২৬, ১২৯, ১৩১; আহমাদ ২৬৪৭৫, ইবনি মাজাহ ৩৯০, ৪১৮, ৪৪০, ৪৪১। তাহকিক আলবানিঃ হাসান। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ১২১।এই হাদিসটির তাহকিকঃ হাসান হাদিস

৫২. অধ্যায়ঃ উভয় কান মাসহ করা

৪৩৯. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] তাহাঁর উভয় কান মাসহ করেন। তিনি তাহাঁর তর্জনীদ্বয় তাহাঁর দু কানের ছিদ্রপথে প্রবেশ করান এবং তাহাঁর বুড়ো আঙ্গুলদ্বয় দু কানের বাইরের অংশে রাখেন। এভাবে তিনি দু কানের ভেতরের ও বাইরের অংশ মাসহ করেন। {৪৩৭}

{৪৩৭} তিরমিজি ৩৬, নাসায়ি ১০২, আবু দাউদ ১৩৭। তাহকিক আলবানিঃ হাসান সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ৯০।এই হাদিসটির তাহকিকঃ হাসান সহিহ

৪৪০. আর-রুবায় [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

নবী [সাঃআঃ] উযু করেন এবং তাহাঁর উভয় কানের ভেতর ও বাইরের অংশ মাসহ করেন। {৪৩৮}

{৪৩৮} তিরমিজি ৩৩, ৩৪; আবু দাউদ ১২৬, ১২৯, ১৩১; আহমাদ ২৬৪৭৫, ইবনি মাজাহ ৩৯০, ৪১৮, ৪৩৮, ৪৪১। তাহকিক আলবানিঃ হাসান। তাখরিজ আলবানিঃ আবু দাউদ ১১৭।এই হাদিসটির তাহকিকঃ হাসান হাদিস

৪৪১. আর-রুবায় বিনতু মুআব্বিয বিন আফরা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] উযু করেন এবং তাহাঁর দুটি আঙ্গুল তাহাঁর দু কানের ছিদ্রপথে প্রবেশ করান। {৪৩৯}

{৪৩৯} তিরমিজি ৩৩, ৩৪; আবু দাউদ ১২৬, ১২৯, ১৩১; আহমাদ ২৬৪৭৫, ইবনি মাজাহ ৩৯০, ৪১৮, ৪৩৮, ৪৪০। তাহকিক আলবানিঃ হাসান। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ১২২, মিশকাত ৪১৪।এই হাদিসটির তাহকিকঃ হাসান হাদিস

৪৪২. মিকদাম বিন মাদীকারিব [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] উযু করেন, তাহাঁর মাথা মাসহ করেন এবং দু কান ভেতর ও বাইরের অংশসহ মাসহ করেন। {৪৪০}

{৪৪০} আবু দাউদ ১২১ তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ১১২, ১১৪।এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৫৩. অধ্যায়ঃ কর্ণদ্বয় মাথার অন্তর্ভুক্ত

৪৪৩. আবদুল্লাহ বিন যায়দ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, কর্ণদ্বয় মাথার অন্তর্ভুক্ত। {৪৪১}

{৪৪১} নাই তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ৮৪, সহিহা ৩৬, সহিহ আবু দাউদ, ১৬৩।এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৪৪৪. আবু উমামাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, কর্ণদ্বয় মাথার অন্তর্ভুক্ত। তিনি তাহাঁর মাথা একবার মাসহ করিতেন এবং নাক সংলগ্ন চোখের কোটরদ্বয়ও মাসহ করিতেন। {৪৪২}

তাহকিক আলবানিঃ চোখের কোটরদ্বয় ব্যতীত সহিহ।{৪৪২} তিরমিজি ৩৭, আবু দাউদ ১৩৪। তাহকিক আলবানিঃ চোখের কোটরদ্বয় ব্যতীত সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ মিশকাত ৪১৬, সহিহ আবু দাউদ ১২৩, সহিহা ৩৬। উক্ত হাদিসের রাবি ১. মুহাম্মাদ বিন যিয়াদ সম্পর্কে ইবনি হিব্বান সিকাহ বললেও অন্যত্রে বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় কখনো কখনো ভুল করেন। ইমাম যাহাবী বলেন, তিনি সত্যবাদী। ইবনি মিনদাহ বলেন, তিনি দুর্বল। ২. শাহর বিন হাওশাব সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন ও ইয়াকুব বিন সুফইয়ান সিকাহ বলেছেন। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, কোন সমস্যা নেই। শুবাহ ইবনিল হাজ্জাজ বলেন, তিনি প্রত্যাখ্যানযোগ্য। এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৪৪৫. আবু হুরাইরাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, কর্ণদ্বয় মাথার অন্তর্ভুক্ত। {৪৪৩}

{৪৪৩} সহিহ। উক্ত হাদিসের রাবি আমর বিন হুসায়ন সম্পর্কে আল-আযাদী বলেন, তিনি খুবই দুর্বল। ইমাম দারাকুতনী বলেন, তিনি প্রত্যাখ্যানযোগ্য। উক্ত হাদিসটি শাহিদ এর ভিত্তিতে সহিহ।এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৫৪. অধ্যায়ঃ আঙ্গুলসমূহ খিলাল করা

৪৪৬. মুসতাওরিদ বিন শাদ্দাদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে উযু করিতে দেখেছি। তিনি তাহাঁর হাতের কনিষ্ঠ আঙ্গুল দিয়ে তাহাঁর পায়ের আঙ্গুলসমূহ খিলাল করেন। {৪৪৪}

তিরমিজি ৪০, আবু দাউদ ১৪৮, আহমাদ ১৭৫৪৯। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ১৩৫, মিশকাত ৪০৭।এই হাদিসটির তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৪৪৭. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, তুমি নামাজ আদায় করিতে দাঁড়াতে চাইলে পূর্ণরূপে উযু করিবে এবং তোমার হস্তদ্বয় ও পদদ্বয়ের আঙ্গুলসমূহের মাঝখানে পানি পৌঁছাবে। {৪৪৫}

{৪৪৫} তিরমিজি ৩৯ তাহকিক আলবানিঃ হাসান সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহা ১৩০৬, মিশকাত ৪০৬।এই হাদিসটির তাহকিকঃ হাসান সহিহ

৪৪৮. লাকীত বিন সাবরাহ হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেণ, তোমরা পূর্ণরূপে উযু করো এবং আঙ্গুলসমূহের মধ্যখান খিলাল করো। {৪৪৬}

{৪৪৬} তিরমিজি ৩৮, ৭৮৮; নাসায়ি ৮৭, ১১৪; আবু দাউদ ১৪২, ২৩৬৬; আহমাদ ১৫৯৪৫-৪৬, দারিমি ৭০৫। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ১৩০।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৪৪৯. রাসূল [সাঃআঃ] এর মাওলা আসলাম [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] উযু করার সময় তাহাঁর হাতের আংটি নাড়াচাড়া করিতেন। {৪৪৭}

{৪৪৭} নাই তাহকিক আলবানিঃ জইফ। তাখরিজ আলবানিঃ জামি সগীর ৪৩৬১ জইফ, মিশকাত ৪২৯ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি ১. আবদুল মালিক বিন মুহাম্মাদ আর-রাকশী সম্পর্কে ইবনি হিব্বান বলেন, তিনি সিকাহ। ইমাম দারাকুতনী বলেন, তিনি সত্যবাদী কিন্তু সানাদে অধিক ভুল করেন। ইমাম যাহাবী বলেন, তিনি সত্যবাদী কিন্তু হাদিস বর্ণনায়ভুল করেন। ২. মামার বিন মুহাম্মাদ বিন উবাউদুল্লাহ বিন আবু রাফি সম্পর্কে ইমাম বুখারি বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় মুনকার। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি দুর্বল। ৩. মুহাম্মাদ বিন উবায়দুল্লাহ সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, কোন সমস্যা নেই। ইমাম বোখারি বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় মুনকার। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল ও তার মাঝে একাধিক মুনকার হাদিস পাওয়া যায়। ইমাম দারাকুতনী বলেন, তিনি প্রত্যাখ্যানযোগ্য।হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৫৫. অধ্যায়ঃ পায়ের গোড়ালি ধৌত করা

৪৫০. আবদুল্লাহ বিন উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] একদল লোককে উযু করিতে দেখলেন, কিন্তু তাহাদের পায়ের গোড়ালি [না ভেজায়] চমকাচ্ছিল। তিনি বলেন, পায়ের গোড়ালিসমূহের জন্য জাহান্নামের শাস্তি রয়েছে। তোমরা পূর্ণাঙ্গরূপে উযু করো। {৪৪৮}

{৪৪৮} সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ৮৭।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৪৫১. আয়িশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, পায়ের গোড়ালিসমূহের জন্য জাহান্নামের শাস্তি রয়েছে। {৪৪৯}

{৪৪৯} আহমাদ ৬৪৯২, ইবনি মাজাহ ৪৫২। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৪৫২. আবু সালামাহ হইতে বর্ণিতঃ

আয়িশা [রাঃআঃ] আবদুল রহমান [রাঃআঃ] -কে উযু করিতে দেখে বলেন, পূর্ণাঙ্গরূপে উযু করুন। আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনিয়াছিঃ  পায়ের গোড়ালিসমূহের জন্য রয়েছে জাহান্নামের শাস্তি। {৪৫০}

{৪৫০} আহমাদ ৬৪৯২, ইবনি মাজাহ ৪৫১। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৪৫৩. আবু হুরাইরাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

নবী [সাঃআঃ] বলেন, পায়ের গোড়ালিসমূহের জন্য রয়েছে জাহান্নামের শাস্তি। {৪৫১}

{৪৫১} বোখারি ১৬৫, মুসলিম ২৪২, তিরমিজি ৪১, নাসায়ি ১১০, আহমাদ ৭০৮২, ৭৭৩২, ৭৭৫৭, ৯০১২, ৯০৩০, ৯০৪৯, ৯২৬৯, ২৭২৫৪, ৯৭৪২, ৯৮৮৮, ১০০৮১; দারিমি ৭০৭। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৪৫৪. জাবির বিন আবদুল্লাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনিয়াছিঃ  পায়ের গোড়ালিসমূহের জন্য রয়েছে জাহান্নামের শাস্তি। {৪৫২}

{৪৫২} আহমাদ ১৩৯৮৩, ১৪৫৪৮। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৪৫৫. খালিদ ইবনিল ওয়ালীদ হইতে বর্ণিতঃ

ইয়াযীদ বিন আবু সূফ্ইয়ান, শুরাহবীল বিন হাসানাহ ও আম্‌র ইবনিল আস [রাঃআঃ], তারা সকলে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -কে বলিতে শুনেছেনঃ তোমরা পূর্ণরূপে উযু করো। পায়ের গোড়ালিসমূহের জন্য রয়েছে জাহান্নামের শাস্তি। {৪৫৩}

{৪৫৩} দারিমি ৭০৬ তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহা ৮৭২।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৫৬. অধ্যায়ঃ দু পায়ের পাতা ধৌত করা

৪৫৬. আবু হাইয়্যাহ [মাকবূল] হইতে বর্ণিতঃ

আমি আলী [রাঃআঃ]-কে উযু করিতে দেখেছি। তিনি তার উভয় পায়ের পাতা গোছা পর্যন্ত ধৌত করেন; অতঃপর বলেন, আমি তোমাদেরকে তোমাদের নবী [সাঃআঃ]-এর উযু দেখাতে চাই। {৪৫৪}

{৪৫৪} আবু দাউদ ১১৬ তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ১০৫।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৪৫৭. মিকদাম বিন মাদীকারিব [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] উযু করেন এবং তাহাঁর দুপা তিনবার করে ধৌত করেন। {৪৫৫}

{৪৫৫} আহমাদ ১৬৭৩৭ তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ১১২।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৪৫৮. আর-রুবায় [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] আমার নিকটে এলেন এবং আমাকে এ হাদীস সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেন অর্থাৎ যে হাদীস আমি বর্ণনা করি যে, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] উযু করেন এবং তাহাঁর দুপা ধৌত করেন। ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] বলেন, লোকেরা তো পা ধৌত করা ব্যতীত অন্য কিছু মেনে নিতে অস্বীকার করে। কিন্তু আমি আল্লাহ্‌র কিতাবে মাসহ ব্যতীত কিছুই পাই না। {৪৫৬}

তাহকিক আলবানিঃ ইবনি আব্বাসের কথাটি ছাড়া হাসান, কেননা সেটি মুনকার।{৪৫৬} আহমাদ ২৬৪৭৫ তাহকিক আলবানিঃ ইবনি আব্বাসের কথাটি ছাড়া হাসান, কেননা সেটি মুনকার। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ১১৭।হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য

৫৭. অধ্যায়ঃ আল্লাহ্‌র নির্দেশিত পন্থায় উযু করা

৪৫৯. উসমান বিন আফফান [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

নবী [সাঃআঃ] বলেন, যে ব্যক্তি আল্লাহ্‌র নির্দেশমত পূর্ণরূপে উযু করিবে, তার ফরয নামাজসমূহ এগুলোর মধ্যবর্তী সময়ের গুনাহের কাফফারা হইবে। {৪৫৭}

{৪৫৭} মুসলিম ২২১-২, ২২৮, ২২৯, ২৩১-২; নাসায়ি ১৪৫-৪৬, আহমাদ ৫০৫। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৪৬০. রিফাআহ বিন রাফি [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি নবী [সাঃআঃ]-এর কাছে বসা ছিলেন। তখন তিনি বলেন, আল্লাহ্‌র নির্দেশ মত পূর্ণাঙ্গরূপে উযু না করলে কারো নামাজ পরিপূর্ণ হইবে না। সে তার মুখমন্ডল ও দুহাত কনুইসহ ধৌত করিবে, তার মাথা মাসহ করিবে এবং দুপা গোছা পর্যন্ত ধৌত করিবে। {৪৫৮}

{৪৫৮} তিরমিজি ৩০২, নাসায়ি ১০৫৩, ১১৩৬, ১৩১৩, ১৩১৪; আবু দাউদ ৮৫৬, দারিমি ১৩২৯। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ তারগিব ৯৩, সহিহ আবু দাউদ, ৮০৪।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৫৮. অধ্যায়ঃ উযু করার পর পানি ছিটানো

৪৬১. আল-হাকাম বিন সুফ্ইয়ান আস-সাকাফী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে উযু করিতে দেখেন। তিনি উযু শেষে এক আঁজলা পানি নিয়ে তা তাহাঁর লজ্জাস্থানে ছিটিয়ে দেন। {৪৫৯}

{৪৫৯} আবু দাউদ ১৬৬ তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ মিশকাত ৩৬১, সহিহ আবু দাউদ ১৫০।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৪৬২. উসামাহ বিন যায়দ ইবনিল হারিসাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, জিবরাঈল [আ.] আমাকে উযু করার পদ্ধতি শিখিয়েছেন। তিনি আমাকে আমার কাপড়ের নিচে পানি ছিটানোর নির্দেশ দিয়েছেন, উযু করার পর পেশাব বের হওয়ার সন্দেহ থেকে বাঁচার জন্য। {৪৬০}

তাহকিক আলবানিঃ নির্দেশ দেয়ার কথা ব্যতীত হাসান।{৪৬০} আহমাদ ২১২৬৪ তাহকিক আলবানিঃ নির্দেশ দেয়ার কথা ব্যতীত হাসান, তাখরিজ আলবানিঃ মিশকাত ৩৬৬, যঈফাহ ১৩১২, সহিহা ৮৪১, সহিহ আবু দাউদ ১৫৯, দ্বিতীয় বাক্য জইফ।হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

৪৬৩. হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, তুমি উযু করার পর [তোমার লজ্জাস্থানে] পানি ছিটিয়ে দিও। {৪৬১}

{৪৬১} তিরমিজি ৫০ তাহকিক আলবানিঃ জইফ। তাখরিজ আলবানিঃ জামি সগীর ৪৪৩, ২৬২২ জইফ, মিশকাত ৩৬৭ গবেষণা অসম্পূর্ণ, যঈফাহ ১৩১২ মুনকার, যঈফাহ ১৩১২, সহিহা ৫১৯, ৫২০। উক্ত হাদিসের রাবি হাসান বিন আলী আল হাশেমী সম্পর্কে ইমাম বোখারি বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় মুনকার। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয় ও হাদিস বর্ণনায় মুনকার। ইমাম নাসাঈ বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয়। ইমাম দারাকুতনী বলেন, তিনি দুর্বল।হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৪৬৪. জাবির [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলূল্লাহ [সাঃআঃ] উযু করার পর তাহাঁর লজ্জাস্থানে পানি ছিটিয়ে দেন। {৪৬২}

{৪৬২} সহিহ। উক্ত হাদিসের রাবি ইবনি আবু লায়লা সম্পর্কে আল-আজালী বলেন, তিনি সত্যবাদী। শুবাহ ইবনিল হাজ্জাজ বলেন, আমি তার চেয়ে অধিক দুর্বল স্মৃতিশক্তি সম্পন্ন ব্যাক্তি দেখি নি। ইয়াহইয়া বিন সাঈদ আল কাত্তান তাকে দুর্বল বলেছেন। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তার স্মৃতিশক্তি দুর্বল।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৫৯. অধ্যায়ঃ উযু গোসলের পর রুমাল ব্যবহার করা

৪৬৫. উম্মু হানী বিনতু আবু তালিব [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, মাক্কাহ বিজয়ের দিন রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] গোসল করিতে দাঁড়ালেন। ফাতিমাহ [রাঃআঃ] তাকে আড়াল করে রাখেন। অতঃপর তিনি তাহাঁর কাপড় নিয়ে তা শরীরে পেচান [গা মোছেন]। {৪৬৩}

{৪৬৩} বোখারি ২৮০, ৩৫৭, ১১০৪, ১১৭৬, ৩১৭১, ৪২৯২, ৬১৫৮; মুসলিম ৩৩১-৫, তিরমিজি ৪৭৪, ২৭৩৪; নাসায়ি ২২৫, ৪১৫; আবু দাউদ ১২৯০-৯১, আহমাদ ২৬৩৪৮, ২৬৩৫৬, ২৬৩৬৪, ২৬৮৩৩, ২৬৮৪০, ২৬৮৪২; মুওয়াত্ত্বা মালিক ৩৫৮-৫৯, দারিমি ১৪৫২-৫৩, মাজা ৬১৪,১৩২৩, ১৩৭৯। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৪৬৬. কায়স ইবন সাদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] আমাদের নিকট এলে আমরা তাহাঁর গোসলের পানি রাখলাম এবং তিনি গোসল করেন। অতঃপর আমি তাহাঁর জন্য একটি রঙ্গীন চাদর নিয়ে এলাম। তিনি তাহাঁর শরীরে সেটি পেচালেন। আমি যেন তাহাঁর পেটের উপর ওয়ারস ঘাসের বর্ণের চিহ্ন দেখিতে পাচ্ছি। {৪৬৪}

{৪৬৪} আবু দাউদ ৫১৮৫, আহমাদ ১৫০৫০, ২৩৩৩২। তাহকিক আলবানিঃ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি ১. ইবনি আবু লায়লা সম্পর্কে আল-আজালী বলেন, তিনি সত্যবাদী। শুবাহ ইবনিল হাজ্জাজ বলেন, আমি তার চেয়ে অধিক দুর্বল স্মৃতিসম্পন্ন ব্যাক্তি দেখি নি। ইয়াহইয়া বিন সাঈদ আল কাত্তান তাকে দুর্বল বলেছেন। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তার স্মিতিশক্তি দুর্বল। ২. মুহাম্মাদ বিন শুরাহবিল সম্পর্কে বলা হয়েছে, তিনি মাজহুল বা অপরিচিত।হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৪৬৭. মায়মূনাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট একটি কাপড় নিয়ে এলাম, তখন তিনি নাপাকির গোসল করছিলেন। তিনি সেটি ফেরত দেন এবং তাহাঁর শরীর থেকে পানি ঝাড়তে থাকেন। {৪৬৫}

{৪৬৫} বোখারি ২৪৯, ২৫৭, ২৫৯-৬০, ২৬৫-৬৬, ২৭৪, ২৭৬, ২৮১; মুসলিম ৩১১-৩, ৩৩৭; তিরমিজি ১০৩, নাসায়ি ৩৫৩, ৪১৮-১৯; আবু দাউদ ২৪৫, আহমাদ ২৬২৫৮, ২৬৩০২, ২৬০১৬; দারিমি ৭১২, ৭৪৭; ইবনি মাজাহ ৫৭৩। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ২৪৩।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৪৬৮. সালমান আল-ফারিসী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

৪/৪৬৮. সালমান আল-ফারিসী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিত। রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] উযু করেন এবং তাহাঁর পরিধানের পশমী জুব্বা উল্টিয়ে তা দিয়ে তাহাঁর মুখমন্ডল মাসহ করেন। {৪৬৬}

{৪৬৬} হাসান। তাখরিজ আলবানিঃ রওয ৩৪১।হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

৬০. অধ্যায়ঃ উযু করার পর যে দুআ পড়বে

৪৬৯. আনাস বিন মালিক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

নবী [সাঃআঃ] বলেছেন, যে কোন মুসলিম ব্যক্তি উত্তমরূপে উযু করার পর তিনবার বলে [কালিমা শাহাদাত]ঃ “আমি সাক্ষ্য দেই যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ নাই, তাহাঁর কোন শারীক নাই, তিনি একক এবং আমি আরো সাক্ষ্য দেই যে, মুহাম্মাদ [সাঃআঃ] তাহাঁর বান্দা ও রসূল, “তার জন্য জান্নাতের আটটি দরজা খুলে দেয়া হইবে। সে যে কোন দরজা দিয়ে ইচ্ছা তাতে প্রবেশ করিবে। {৪৬৭}

{৪৬৭} আহমাদ ১৩৩৮১ তাহকিক আলবানিঃ জইফ। তাখরিজ আলবানিঃ আবু দাউদ ১০৫০ সহিহ, জামি সগীর ৬১৬৮, মাজাহ ১০৯০ সহিহ, তিরমিজি ৪৯৮ সহিহ, মিশকাত ১৩৮৩ সহিহ, ইরওয়াহ ৯৬, সহিহ আবু দাউদ ১৬২, সহিহ তারগিব ২১৯। উক্ত হাদিসের রাবি যায়দ আল আম্মী সম্পর্কে ইমাম দারাকুতনী সালিহ বললেও ইয়াহইয়া বিন মাঈন ও আলী ইবনিল মাদীনী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল।হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৪৭০. উমার ইবনিল খাত্তাব [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, যে কোন মুসলিম ব্যক্তি উত্তমরূপে উযু করার পর বলে [কালিমা শাহাদাত] ঃ “আমি সাক্ষ্য দেই যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ নাই, তাহাঁর কোন শারীক নাই, তিনি একক এবং আমি আরো সাক্ষ্য দেই যে, মুহাম্মাদ [সাঃআঃ] তাহাঁর বান্দা ও রসূল, “তার জন্য জান্নাতের আটটি দরজা খুলে দেয়া হইবে। সে যে কোন দরজা দিয়ে ইচ্ছা তাতে প্রবেশ করিবে। {৪৬৮}

{৪৬৮} তিরমিজি ৫৫, নাসায়ি ১৪৮, আহমাদ ১৬৯৪২। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৬১. অধ্যায়ঃ পিতলের পাত্রে উযু করা

৪৭১. আবদুল্লাহ বিন যায়দ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদের নিকট এলেন। আমরা একটি পিতলের পাত্রে তাহাঁর জন্য পানি পেশ করি। তিনি তা দিয়ে উযু করেন। {৪৬৯}

{৪৬৯} বোখারি ১৯৭, আবু দাউদ ১০০, দারিমি ৬৯৪। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ২৮, সহিহ আবু দাউদ ৮৯।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৪৭২. যায়নাব বিনতু জাহ্‌শ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তার পিতলের একটি পাত্র ছিল। তিনি বলেন, আমি তাতে রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর চুল আঁচড়াতাম। {৪৭০}

{৪৭০} আহমাদ ২৬২১২ তাহকিক আলবানিঃ সহিহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৪৭৩. আবু হুরাইরাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

নবী [সাঃআঃ] পিতলের একটি পাত্রে উযু করেন। {৪৭১}

{৪৭১} আবু দাউদ ৪৫ তাহকিক আলবানিঃ হাসান।হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

৬২. অধ্যায়ঃ ঘুম থেকে উঠে উযু করা

৪৭৪. আয়িশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ঘুমিয়ে যেতেন, এমনকি তাহাঁর নাক ডাকতো। অতঃপর তিনি ঘুম থেকে উঠে নামাজ আদায় করিতেন এবং উযু করিতেন না। আত-তানাফিসী [রহঃ] বলেন, ওয়াক্বী [রহঃ] বলেছেন, অর্থাৎ তিনি সাজদাহরত অবস্থায় [কখনো] ঘুমিয়ে যেতেন। {৪৭২}

{৪৭২} আহমাদ ২৪৫১৫ তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহা ২৯২৫।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৪৭৫. আবদুল্লাহ বিন মাসঊদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] ঘুমাতেন, এমনকি তাহাঁর নাক ডাকতো। অতঃপর তিনি উঠে নামাজ আদায় করিতেন। {৪৭৩}

{৪৭৩} আহমাদ ৪০৪১ তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহা ২৯২৫।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৪৭৬. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ]-এর এ ঘুম ছিল বসা অবস্থায়। {৪৭৪}

{৪৭৪} মুনকার। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ১২২৯। উক্ত হাদিসের রাবি হুরায়স বিন আবু মাতার সম্পর্কে আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। ইমাম বোখারি বলেন, তার মাঝে দুর্বলতা রয়েছে। আমর বিন ফাল্লাস বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল ও দুইটি হাদিস মুনকারভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। ইমাম নাসাঈ বলেন, তিনি সিকাহ নন।হাদিসের তাহকিকঃ মুনকার

৪৭৭. আলী বিন আবু তালিব [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, চোখ হলো পশ্চাদদ্বারের বন্ধনস্বরূপ। অতএব যে ব্যক্তি ঘুমায় সে যেন উযু করে [যদি নামাজ আদায় করিতে চায়]। {৪৭৫}

{৪৭৫} আবু দাউদ ২০৩, আহমাদ ৮৮৯। তাহকিক আলবানিঃ হাসান। তাখরিজ আলবানিঃ মিশকাত ৩১৬, ইরওয়াহ ১১৩। সহীহ্ আবু, দাউদ ১৯৮। উক্ত হাদিসের রাবি মুহাম্মাদ ইবনিল মুসাফফা আল হিমশী সম্পর্কে আবু হাতিম আর-রাযী ও ইমাম নাসাঈ বলেন, তিনি সত্যবাদী। ইবনি হিব্বান তাকে সিকাহ বললেও অন্যত্র বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল।হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

৪৭৮. সাফওয়ান বিন আসসাল [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদেরকে নাপাকির গোসল ব্যতীত তিন দিন পর্যন্ত মোজা না খোলার নির্দেশ দিয়েছেন, পায়খানা, পেশাব হলেও এবং ঘুমালেও। {৪৭৬}

{৪৭৬} তিরমিজি ৯৬, ৩৫৩৫; নাসায়ি ১২৬-২৭, ১৫৮-৫৯; আহমাদ ১৭৬২৩, ১৭৬২৮। তাহকিক আলবানিঃ হাসান। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ১০৪। উক্ত হাদিসের রাবি আসিম সম্পর্কে মুহাম্মাদ বিন সাদ বলেন, তিনি সিকাহ তবে অধিক ভুল করেন। ইয়াকুব বিন সুফইয়ান তাকে সিকাহ বলেছেন। ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, কোন সমস্যা নেই।হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

৬৩. অধ্যায়ঃ লিঙ্গ স্পর্শ করলে উযু করিতে হইবে কিনা

৪৭৯. বুস্‌রাহ বিনতু সফ্ওয়ান [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, তোমাদের কেউ তার লিঙ্গ স্পর্শ করলে সে যেন উযু করে। {৪৭৭}

{৪৭৭} তিরমিজি ৮২, নাসায়ি ১৬৩-৬৪, আবু দাউদ ১৮১, আহমাদ ২৬৭৪৯, ২৭৭৪৬; মুওয়াত্ত্বা মালিক ৯১, দারিমি ৭২৪-২৫। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ মিশকাত ৩১৯, ইরওয়াহ ১১৬, সহিহ আবু দাউদ ১৭৪।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৪৮০. জাবির বিন আবদুল্লাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, তোমাদের কেউ তার লিঙ্গ স্পর্শ করলে সে যেন অবশ্যই উযু করে। {৪৭৮}

{৪৭৮} হাদিসটি ইবনি মাজাহ এককভাবে বর্ণনা করিয়াছেন। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ লিগাইরিহী। উক্ত হাদিসের রাবি উকবাহ বিন আব্দুর রহমান সম্পর্কে ইবনি হিব্বান সিকাহ বললেও আলী ইবনিল মাদীনী বলেন তিনি অপরিচিত। ইবনি আবদুল বার বলেন, ইলমিইয়াতের দিক থেকে প্রসিদ্ধ নন। উক্ত হাদিসটি শাহিদ এর ভিত্তিতে সহিহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ লিগাইরিহি

৪৮১. উম্মু হাবীবাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে শুনিয়াছিঃ  যে ব্যক্তি তার লজ্জাস্থান স্পর্শ করলো যে যেন উযু করে। {৪৭৯}

{৪৭৯} সহিহ লিগাইরিহী। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ১১৭।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ লিগাইরিহি

৪৮২. আবু আয়্যূব [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -কে বলিতে শুনিয়াছিঃ  যে ব্যক্তি তার লজ্জাস্থান স্পর্শ করলো সে যেন উযু করে। {৪৮০}

{৪৮০} সহিহ লিগাইরিহী। উক্ত হাদিসের রাবি ১. সুফইয়ান বিন ওয়াকী সম্পর্কে ইমাম বোখারি মন্তব্য করিয়াছেন। ইমাম নাসাঈ বলেন, তিনি সিকাহ নন। ইবনি হিব্বান তিনি সত্যবাদী। ২. ইসহাক বিন আবু ফারওয়াহ সম্পর্কে আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, আমার মতে তার থেকে হাদিস বর্ণনা করা বৈধ নয়। ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তিনি সিকাহ নন বরং তিনি মিথ্যুক। আলী ইবনিল মাদীনী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় মুনকার। আমর বিন ফাল্লাস বলেন, তার হাদিস প্রত্যাখ্যানযোগ্য। ইমাম বোখারি বলেন তাকে সকলে প্রত্যাখ্যান করিয়াছেন। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তার হাদিস প্রত্যাখ্যানযোগ্য। উক্ত হাদিসটি শাহিদ এর ভিত্তিতে সহিহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ লিগাইরিহি

৬৪. অধ্যায়ঃ লিঙ্গ স্পর্শ করলে উযু করা জরুরী নয়

৪৮৩. তালক আল-হানাফী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট পুরুষাঙ্গ স্পর্শ করার বিষয়ে জিজ্ঞেস করিতে শুনেছি। তিনি বলেন, তাতে উযুর প্রয়োজন নেই। কেননা তা তোমার দেহের একটি অঙ্গ। {৪৮১}

{৪৮১} তিরমিজি ৮৫, নাসায়ি ১৬৫, আবু দাউদ ১৮২, আহমাদ ১৫৮৫৭। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ মিশকাত ৩২০, সহিহ আবু দাউদ ১৭৫।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৪৮৪. আবু উমামাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে পুরুষাঙ্গ স্পর্শ করা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলো। তিনি বলেন, এটা তোমার শরীরের একটি অঙ্গমাত্র। {৪৮২}

{৪৮২} খুবই দুর্বল। উক্ত হাদিসের রাবি জাফর ইবনিয যুবায়র সম্পর্কে শুবাহ ইবনিল হাজ্জাজ বলেন, তিনি মানুষের মাঝে বড় মিত্তুক। আহমাদ বিন হাম্বল তাকে প্রত্যাখ্যান করিয়াছেন। ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তিনি সিকাহ নন। এমনকি তার থেকে কোন হাদিস বর্ণনা করেন নি। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তার হাদিস প্রত্যাখ্যানযোগ্য।হাদিসের তাহকিকঃ খুবই দুর্বল

৬৫. অধ্যায়ঃ আগুনের তাপে পরিবর্তিত জিনিস আহারের পর উযু করা

৪৮৫. আবু হুরাইরাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

নবী [সাঃআঃ] বলেন, আগুনে পাকানো জিনিস খাওয়ার পর তোমরা উযু করো। ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] [আবু হুরায়রাহ্‌কে] বলেন, আমরা কি গরম পানি পানের পরও উযু করবো? তিনি তাকে বলেন, হে ভ্রাতুষ্পুত্র! তুমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর হাদীস শুনলে তার সামনে দৃষ্টান্ত পেশ করো না। {৪৮৩}

তাহকিক আলবানিঃ [আরবি]…..শব্দটি ছাড়া হাসান।{৪৮৩} মুসলিম ৩৫২, তিরমিজি ৭৯, নাসায়ি ১৭১-৭৫, আবু দাউদ ১৯৪, আহমাদ ৭৫৫০, ৭৬১৮, ৯২৩৫, ৯৭২১। তাহকিক আলবানিঃ تَوَضَّئُوا শব্দটি ছাড়া হাসান। উক্ত হাদিসের রাবি মুহাম্মাদ বিন আমর সম্পর্কে ইবনি আদী বলেন, কোন সমস্যা নেই। ইবনি হিব্বান বলেন, তিনি সিকাহ তবে হাদিস বর্ণনায় ভুল করেন।হাদিসের তাহকিকঃ অন্যান্য

৪৮৬. আয়িশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, আগুন যাকে স্পর্শ করেছে তা খাওয়ার পর তোমরা উযু করো। {৪৮৪}

{৪৮৪} মুসলিম ৩৫৩, আহমাদ ২৪০৫৯। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ১৮৮।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৪৮৭. আনাস বিন মালিক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি তার দু কানে তার দু হাত রেখে বলিতেন, এই দুকান বধির হয়ে যাক! যদি আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে বলিতে না শুনে থাকি যে, “আগুনে পাকানো জিনিস খাওয়ার পর তোমরা উযু করো। {৪৮৫}

{৪৮৫} জইফ। তাখরিজ আলবানিঃ আবু দাউদ ১৯৫ সহিহ, নাসায়ি ১৭১, ১৭২, ১৭৪ সহিহ। উক্ত হাদিসের রাবি খালিদ বিন ইয়াযীদ বিন আবু মালিক সম্পর্কে আবু যুরআহ আদ দিমাশকী সিকাহ বললেও ইয়াহইয়া বিন মাঈন তাকে মিথ্যুক বলেছেন। আবু দাউদ আস-সাজিসতানী বলেন, তার হাদিস প্রত্যাখ্যানযোগ্য।হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৬৬. অধ্যায়ঃ আগুনে রান্না করা জিনিস খাওয়ার পর উযুর প্রয়োজন নেই

৪৮৮. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] বকরীর কাঁধের গোশত খাওয়ার পর তাহাঁর নিচে বিছানো কাপড়ে তাহাঁর উভয় হাত মোছেন, অতঃপর সলাতে দাঁড়ান এবং নামাজ আদায় করেন। {৪৮৬}

{৪৮৬} বোখারি ২০৭, ৫৪০৫; মুসলিম ৩৫১-২, ৩৫৯; নাসায়ি ১৮৪, আবু দাউদ ১৮৭, ১৮৯-৯০; আহমাদ ১৯৮৯, ২১৫৪, ২১৮৯, ২২৮৬, ২৩৩৫, ২৩৭৩, ২৪০২, ২৪৫৭, ২৪৬৩, ২৫২০, ২৫৪১, ২৯৩৩, ৩০০৫, ৩২৭৭, ৩৩৯৩, ৩৪৪৩, ৩৪৫৩; মুওয়াত্ত্বা মালিক ৫০। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ, ১৮১, ১৮৪।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৪৮৯. জাবির বিন আবদুল্লাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ], আবু বাক্‌র ও উমার [রাঃআঃ] রুটি ও গোশত খেলেন এবং তাঁরা উযু করেননি। {৪৮৭}

{৪৮৭} বোখারি ৫৪৫৭, তিরমিজি ৮০, আবু দাউদ ১৯১-৯২, আহমাদ ১৪০৪৪, ১৪৬০২। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ১৮৫।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৪৯০. যুহরী হইতে বর্ণিতঃ

আমি ওয়ালীদ অথবা আবদুল মালিকের সামনে রাতের খাবার পেশ করলাম। ইত্যবসরে নামাজের ওয়াক্ত হয়ে গেলে আমি উযু করিতে উঠে দাঁড়ালাম। তখন জাফার বিন আম্‌র বিন উমাইয়্যাহ বলেন, আমি আমার পিতা [আম্‌র বিন উমাইয়্যাহ] সম্পর্কে সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, তিনি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর নিকট উপস্থিত ছিলেন। নবী [সাঃআঃ] আগুনে পাকানো খাদ্য গ্রহণের পর নামাজ আদায় করেন কিন্তু উযু করেননি। আলী বিন আবদুল্লাহ ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] বলেন, আমিও আমার পিতার সম্পর্কে সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, তিনিও তাই করিয়াছেন। {৪৮৮}

{৪৮৮} বোখারি ২০৮, মুসলিম ৩৫১-২, তিরমিজি ১৮৩৬, আহমাদ ১৬৭৯৭, ১৭১৬১, ২১৯৭৩, ২১৯৭৮; দারিমি ৭২৭। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ১৯৬২।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৪৯১. উম্মু সালামাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-এর সামনে বকরীর রানের গোশত পরিবেশন করা হলো। তিনি তা থেকে খেলেন, অতঃপর নামাজ আদায় করিলেন, কিন্তু পানি স্পর্শ করেননি। {৪৮৯}

{৪৮৯} আহমাদ ২৫৯৬৩ তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ মিশকাত ৩২৫।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৪৯২. সুওয়াইদ বিন নুমান আল-আনসারী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তাহাঁর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] -এর সাথে খায়বারের উদ্দেশে রওয়ানা হলেন। তারা আস-সাহ্‌বা নামক স্থানে পৌঁছে আসরের নামাজ আদায় করেন। অতঃপর রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] খাবার নিয়ে ডাকলে ছাতু ছাড়া আর কিছুই পরিবেশন করা গেলো না। তাঁরা সকলে পানাহার করিলেন। অতঃপর তিনি পানি নিয়ে ডাকলেন এবং মুখে পানি নিয়ে কুলি করিলেন, তারপর দাঁড়িয়ে আমাদেরকে সাথে নিয়ে মাগরিবের নামাজ আদায় করেন। {৪৯০}

{৪৯০}বোখারি ২০৯, ২১৫, ২৯৮১, ৪১৭৫, ২১৯৫, ৫৩৮৪, ৫৩৯০, ৫৪৫৫; নাসায়ি ১৮৬, আহমাদ ১৫৩৭২, ১৫৫৬০; মুওয়াত্ত্বা মালিক ৫১। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৪৯৩. আবু হুরাইরাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বকরীর কাঁধের গোশত খেলেন, অতঃপর কুলি করেন এবং তাহাঁর উভয় হাত ধোয়ার পর নামাজ আদায় করেন। {৪৯১}

{৪৯১} আহমাদ ২৭৪৮৬ তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ মুখতাসার শামাইল ১৪৯।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৬৭. অধ্যায়ঃ উটের গোশত খাওয়ার পর উযু করা

৪৯৪. আল-বারা বিন আযিব [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ]-কে উটের গোশত খেয়ে উযু করা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলো। তিনি বললেনঃ তোমরা তা খেয়ে উযু করিবে। {৪৯২}

{৪৯২} তিরমিজি ৮১, আবু দাউদ ১৮৪, আহমাদ ১৮০৬৭। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ১৫২, সহীহ্ আবু দাউদ, ১৭৭।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৪৯৫. জাবির বিন সামুরাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] আমাদেরকে উটের গোশত খেয়ে উযু করার এবং ছাগলের গোশত খেয়ে উযু না করার নির্দেশ দিয়েছেন। {৪৯৩}

{৪৯৩} মুসলিম ৩৬০, আহমাদ ২০২৮৭, ২০৩০৪, ২০৩৫৬, ২০৩৬৪, ২০৪০৩, ২০৪৪৭, ২০৪৬৬, ২০৫০৪, ২০৫৩৯। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ১১৮।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৪৯৬. উসায়দ বিন হুদায়র [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, তোমরা বকরীর দুধ পান করার পর উযু করিবে না এবং উটের দুধ পান করার পর উযু করিবে। {৪৯৪}

{৪৯৪}আহমাদ ১৮৬১৭ তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ১৭৭।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৪৯৭. আবদুল্লাহ বিন উমার [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে বলিতে শুনিয়াছিঃ  তোমরা উটের গোশত খেয়ে উযু কর, বকরীর গোশত খেয়ে উযু করো না এবং ছাগলের দুধ পান করে উযু করো না। তোমরা বকরীর খোঁয়াড়ে নামাজ আদায় করিতে পারো কিন্তু উটের খোঁয়াড়ে নামাজ আদায় করোনা। {৪৯৫}

{৪৯৫}জইফ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ১৭৭। উক্ত হাদিসের রাবি খালিদ বিন ইয়াযীদ বিন উমার বিন হুবায়রাহ আল ফাযারী সম্পর্কে ইমাম যাহাবী বলেন, তার মাঝে জাহালত রয়েছে।হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৬৮. অধ্যায়ঃ দুধপান করার পর কুলি করা

৪৯৮. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

নবী [সাঃআঃ] বলেন, তোমরা দুধ পান করে কুলি করিবে। কেননা তাতে চর্বি আছে। {৪৯৬}

{৪৯৬} বুবোখারি ২১১, ৫৬১০; মুসলিম ৩৫৮, তিরমিজি ৮৯, নাসায়ি ১৮৭, আবু দাউদ ১৯৬, আহমাদ ১৯৫২, ২০০৮, ৩০৪২, ৩১১৩। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহা ১৩৬১।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৪৯৯। উম্মু সালামাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, তোমরা দুধ পান করার পর কুলি করিবে। কেননা তাতে চর্বি আছে। {৪৯৭}

হাসান সহিহ।হাদিসের তাহকিকঃ হাসান সহিহ

৫০০। সাহল বিন সাদ আস-সাঈদী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেন, তোমরা দুধ পান করার পর কুলি করিবে। কারণ তাতে চর্বি আছে। {৪৯৮}

{৪৯৮} সহিহ। উক্ত হাদিসের রাবি আবদুল মুহায়মিন ইবনি আব্বাস বিন সাহল বিন সাদ আস-সাঈদি সম্পর্কে ইমাম বোখারি ও আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় মুনকার। ইমাম নাসাঈ বলেন, তার হাদিস প্রত্যাখ্যানযোগ্য। ইবনিল জুনায়দ বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। ইবনিল বুরাকী তাকে দুর্বল বলে আখ্যায়িত করিয়াছেন। উক্ত হাদিসটি শাহিদ এর ভিত্তিতে সহিহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৫০১। আনাস বিন মালিক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] একটি বকরী দোহন করে দুধ পান করেন, অতঃপর পানি চেয়ে নিয়ে তা দিয়ে কুলি করেন এবং বলেন, তাতে চর্বি আছে। {৪৯৯}

{৪৯৯} আনাসের বর্ণিত হাদিস দঈফ, তার হইতে বিপরীত প্রমানিত রয়েছে কিন্তু ইবনি আব্বাসের বর্ণিত হাদিস সহিহ। সহিহাহ ৫০৩। উক্ত হাদিসের রাবি জামআহ বিন সালিহ সম্পর্কে ইবনি আলী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় কখনো কখনো ভুল করেন। আহমাদ বিন হাম্বল ও ইয়াহইয়া বিন মাইন বলেন,তিনি খুব দুর্বল। ইমাম বোখারি বলেন,তিনি সহিহ হাদিসের বিপরীত বর্ণনা করেন।হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৬৯. অধ্যায়ঃ চুমা দেয়ার পর উযু করা

৫০২. উরওয়াহ ইবনিয-যুবায়র হইতে বর্ণিতঃ

আয়িশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিত, রসূল [সাঃআঃ] তার এক স্ত্রী কে চুমা দিলেন, অতঃপর নামাজ আদায়ের জন্য বেরিয়ে গেলেন, কিন্তু উযু করেননি। আমি [উরওয়াহ] বললাম, আপনিই সেই ব্যক্তি। এতে তিনি [আয়িশা] হাসলেন। {৫০০}

{৫০০} তিরমিজি ৮৬, নাসায়ি ১৭০, আবু দাউদ ১৭৮-৭৯, আহমাদ ২৫২৩৮। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ মিশকাত ৩২৩, সহিহ আবু দাউদ ১৭১।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৫০৩. আয়িশা [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] উযু করার পর চুমা দিতেন, অতঃপর উযু না করেই নামাজ আদায় করিতেন। বহুবার তিনি আমার সাথে এরূপ করিয়াছেন। {৫০১}

{৫০১} আহমাদ ২৩৮০৮ তাহকিক আলবানিঃ জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি মুহাম্মাদ ইবনিল ফুদায়ল সম্পর্কে ইবনি মাঈন বলেন, তিনি সিকাহ। আবু যুরআহ বলেন তিনি সত্যবাদী। ইমাম নাসাঈ বলেন কোন সমস্যা নেই। ২. হাজ্জাজ সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তিনি সত্যবাদী কিন্তু নির্ভরযোগ্য নয়। তিনি আমর থেকে হাদিস বর্ণনায় তাদলীস করিয়াছেন। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি সত্যবাদী কিন্তু হাদিস বর্ণনায় তাদলীস করেন। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি সত্যবাদী কিন্তু হাদিস বর্ণনায় দুর্বলদের থেকে তাদলীস করেন। ৩. যায়নাব আস সাহমিয়্যাহ সম্পর্কে ইমাম দারাকুতনী ও ইবনি আবদুল বার বলেন, তিনি অপরিচিত।হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৭০. অধ্যায়ঃ

৫০৪. আলী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে মযী সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, তা নির্গত হলে উযু করিতে হইবে এবং বীর্য নির্গত হলে গোসল করিতে হইবে। {৫০২}

{৫০২} বোখারি ১২৩, ১৭৮, ২৬৯; মুসলিম ৩০১-৩, তিরমিজি ১১৪, নাসায়ি ১৫২-৫৪, ১৫৭, ১৯৩-৯৪, ৪৩৫-৩৯, আবু দাউদ ২০৬-৭, আহমাদ ৬০৭, ৬১৯, ৬৬৪, ৮৪৯, ৮৫৮, ৮৭০, ৮৭২, ৮৯২, ৯৮০, ১০১২, ১০২৯, ১০৭৪, ১২৪২। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ২০০ ইরওয়াহ ৪৭, ১২৫। উক্ত হাদিসের রাবি ইয়াযীদ বিন আবু যিয়াদ সম্পর্কে আহমাদ বিন সালেহ তাকে সিকাহ বললেও ইয়াহইয়া বিন মাঈন ও আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় নির্ভরযোগ্য নয়। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তার থেকে হাদিস গ্রহন করা যাবে কিন্তু দলীল হিসেবে গ্রহন করা গ্রহণযোগ্য নয়। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, কোন সমস্যা নেই। উক্ত হাদিসটি শাহিদ এর ভিত্তিতে সহিহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৫০৫. মিকদাদ ইবনিল আসওয়াদ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি নবী [সাঃআঃ] কে এমন ব্যক্তি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেন, যে তার স্ত্রীর নিকটবর্তী হয়েছে কিন্তু বীর্যপাত হয়নি। তিনি বললেনঃ তোমাদের মধ্যে কারো এরূপ হলে সে যেন তার লজ্জাস্থান ধৌত করে এবং উযু করে। {৫০৩}

{৫০৩} নাসায়ি ১৫৬, আহমাদ ১৬২৮৪, ২৩৩০৭, ২৩৩১৩; মুওয়াত্ত্বা মালিক ৮৬। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ২০১।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৫০৬. সাহল বিন হুনায়ফ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমার প্রচুর মযী নির্গত হতো, তাই বহুবার গোসল করতাম। আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, এতে তোমার জন্য উযুই যথেষ্ট। আমি বললাম, হে আল্লাহ্‌র রাসূল, তা আমার কাপড়ে লেগে গেলে কি করিতে হইবে? তিনি বলেন, তোমার কাপড়ের যে অংশে তা লাগে দেখবে সেই অংশ এক আজলা পানি দিয়ে ধৌত করাই তোমার জন্য যথেষ্ট। {৫০৪}

{৫০৪} তিরমিজি ১১৫, আবু দাউদ ২১০, আহমাদ ১৫৫৪৩, দারিমি ৭২৩। তাহকিক আলবানিঃ হাসান। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ২০৪। উক্ত হাদিসের রাবি মুহাম্মাদ বিন ইসহাক সম্পর্কে ইয়াহইয়া ইবনি মাঈন ও আজালী বলেন, তিনি সিকাহ। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, তিনি হাসানুল হাদিস। আলী ইবনিল মাদীনী বলেন, তিনি সালিহ।হাদিসের তাহকিকঃ হাসান হাদিস

৫০৭. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি উমার [রাঃআঃ] কে সাথে করে উবাই বিন কাব [রাঃআঃ] এর নিকট এলেন। তিনি তাহাদের সামনে বেরিয়ে এসে বলেন, আমার মযী নির্গত হয়েছিল, তাই আমার লজ্জাস্থান ধৌত করলাম এবং উযু করলাম। উমার [রাঃআঃ] বলিলেন, তাই কি যথেষ্ট? তিনি বলেন, হাঁ। উমার [রাঃআঃ] বলিলেন, আপনি কি তা রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] এর নিকট শুনেছেন? তিনি বলেন, হাঁ। {৫০৫}

{৫০৫} জইফ। উক্ত হাদিসের রাবি মুসআব বিন শায়বাহ কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন সিকাহ বললেও আহমাদ বিন হাম্বল বলেন তার থেকে একাধিক মুনকার হাদিস বর্ণিত হয়েছে। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নন। ইমাম নাসাঈ বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় মুনকার। ইমাম দারাকুতনী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নয় এবং স্মৃতিশক্তি দুর্বল। ২. আবু হাবীব বিন ইয়ালা বিন মুনইয়াহ সম্পর্কে বলা হয়েছে তিনি অপরিচিত।হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৭১. অধ্যায়ঃ ঘুমানোর পূর্বে উযু করা

৫০৮. ইবনি আব্বাস [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

নবী [সাঃআঃ] রাতে উঠলেন, অতঃপর পায়খানায় গেলেন, তারপর প্রয়োজন পূরণ করে মুখমন্ডল ও দুহাত ধৌত করে ঘুমালেন। {৫০৬}

{৫০৬} মুসলিম ৩০৪, ৭৬১-৩; আবু দাউদ ৫০৪৩। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৭২. অধ্যায়ঃ প্রতি ওয়াক্‌তের নামাজের জন্য উযু করা এবং একই উযুতে কয়েক ওয়াক্‌তের নামাজ আদায় করা

৫০৯. আনাস বিন মালিক [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] প্রতি ওয়াক্‌তের নামাজের জন্য উযু করিতেন এবং আমরা একই উযুতে কয়েক ওয়াক্‌তের নামাজ পড়তাম। {৫০৭}

{৫০৭} বোখারি ২১৪, তিরমিজি ৫৮৬০, নাসায়ি ১৩১, আবু দাউদ ১৭১, আহমাদ ১১৯৩৭, ১২১৫৫, ১৩৩২৩; দারিমি ৭২০। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ১৬৩।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৫১০. বুরায়দাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

নবী [সাঃআঃ] প্রতি ওয়াক্‌তের নামাজের জন্য উযু করিতেন। তবে মাক্কাহ বিজয়ের দিন তিনি একই উযুতে কয়েক ওয়াক্‌তের নামাজ আদায় করিয়াছেন। {৫০৮}

{৫০৮} মুসলিম ২৭৭, তিরমিজি ৬১, নাসায়ি ১৩৩, আবু দাউদ ১৭২, আহমাদ ২২৪৫৭, ২২৫২০; দারিমি ৬৫৯। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ সহিহ আবু দাউদ ১৬৪।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৫১১. ফাদল বিন মুবাশ্‌শির [তার মাঝে দুর্বলতা আছে] হইতে বর্ণিতঃ

আমি জাবির বিন আবদুল্লাহ [রাঃআঃ]-কে একই উযুতে কয়েক ওয়াক্‌তের নামাজ আদায় করিতে দেখেছি। আমি বললাম, একি ব্যাপার? তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে এরূপ করিতে দেখেছি। তাই রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] যেরূপ করিয়াছেন আমিও তদ্রুপ করলাম। {৫০৯}

{৫০৯} সহিহ লিগাইরিহী। উক্ত হাদিসের রাবি ফায্ল ইবনি মুবাশশির সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, কোন সমস্যা নেই। আবু যুরআহ আর-রাযী ও ইবনি মাঈন বলেন, তিনি দুর্বল। আবু হাতিম আর-রাযী বলেন, তিনি নির্ভরযোগ্য নন। এ হাদিসের ৭৯ টি শাহিদ হাদিস রয়েছে, তন্মধ্যে সহিহ মুসলিম ১ টি, তিরমিযি ২ টি, আবু দাউদ ২ টি, আহমাদ ৭ টি ও বাকিগুলো অন্যান্য কিতাবে বর্ণিত হয়েছে।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ লিগাইরিহি

৭৩. অধ্যায়ঃ উযু থাকা অবস্থায় পুনরায় উযু করা

৫১২. আবু গুতায়ফ আল-হুযালী [মাজহুল] হইতে বর্ণিতঃ

আমি আবদুল্লাহ বিন উমার ইবনিল খাত্তাব [রাঃআঃ] এর নিকট মাসজিদে তার বৈঠক শুনেছি ঃ যখন নামাজের সময় উপস্থিত হলো তিনি উঠে গিয়ে উযু করেন এবং নামাজ আদায় করেন, অতঃপর তার মাজলিসে ফিরে আসেন।অতঃপর আসরের নামাজ আদায়ের সময় হলে তিনি উঠে গিয়ে উযু করেন এবং নামাজ আদায় করেন, অতঃপর তার মাজলিসে ফিরে আসেন। পুনরায় মাগরিবের নামাজের সময় হলে তিনি উঠে গিয়ে উযু করেন এবং নামাজ আদায় করেন, অতঃপর তার মাজলিসে ফিরে আসেন। আমি বললাম, আল্লাহ আপনাকে সংশোধন করুন। প্রতি ওয়াক্ত নামাজের জন্য [ নতুনভাবে] উযু করা ফারয না সুন্নাত? তিনি বলেন, তুমি কি ধারণা করেছ যে, এটা আমার নিজের থেকে করছি? আমি বললাম, হাঁ। তিনি বলিলেন, না। যদি আমি ফাজরের নামাজের জন্য উযু করতাম, তাহলে অবশ্যই তা দিয়ে সকল ওয়াক্‌তের নামাজ আদায় করতাম, যাবত না আমার উযু ভঙ্গ হয়। কিন্তু আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে বলিতে শুনিয়াছিঃ  “যে ব্যক্তি উযু থাকা অবস্থায় প্রতি ওয়াক্ত নামাজের জন্য উযু করিবে, তার জন্য রয়েছে দশটি নেকী”। আমি নেকীর প্রতিই আগ্রহী। {৫১০}

{৫১০} তিরমিজি ৫৯, আবু দাউদ ৬২। তাহকিক আলবানিঃ জইফ। তাখরিজ আলবানিঃ মিশকাত ২৯৩, জইফ আবু দাউদ ৯। উক্ত হাদিসের রাবি আব্দুর রহমান বিন যিয়াদ সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন সাঈদ আল কাত্তান বলেন, তার থেকে হাদিস গ্রহন বর্জনীয়। ইবনি মাহদী বলেন, তার থেকে হাদিস বর্ণনা করা উচিত নয়। আহমাদ বিন হাম্বল বলেন, আমি তার থেকে হাদিস লিপিবদ্ধ করিনি। ২. আবু গুতায়ফ আল হুযালী সম্পর্কে ইমাম তিরমিযি তাকে দুর্বল হিসেবে আখ্যায়িত করিয়াছেন।হাদিসের তাহকিকঃ দুর্বল হাদিস

৭৪. অধ্যায়ঃ উযু ভঙ্গ হলেই কেবল উযু করা জরুরি

৫১৩. আবদুল্লাহ বিন যায়দ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

নবী [সাঃআঃ] এর কাছে অভিযোগ করা হলো যে, কোনো ব্যক্তি তার নামাজের মধ্যে কিছু পাওয়ার [বায়ু নির্গত হওয়ার] আশংকা করছে। তিনি বলেন, [উযু ভঙ্গ হয়না] যতক্ষণ না সে বায়ু নির্গত হওয়ার গন্ধ পায় অথবা শব্দ শোনে। {৫১১}

{৫১১} বোখারি ১৩৭, ১৭৭, ২০৫৬; মুসলিম ৩৬১, নাসায়ি ১৬০, আবু দাউদ ১৭৬। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ১০৭ সহিহ, আবু দাউদ ১৬৮।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৫১৪. আবু সাঈদ আল খুদরী [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, নবী [সাঃআঃ] কে নামাজের মধ্যে [বায়ু নির্গত হওয়ার] সন্দেহ হওয়া সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলো। তিনি বলেন, সে শব্দ না শোনা অথবা দুর্গন্ধ না পাওয়া পর্যন্ত নামাজ ত্যাগ করিবেনা। {৫১২}

সহিহ লিগাইরিহী।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ লিগাইরিহি

৫১৫. আবু হুরাইরাহ [রাঃআঃ] হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] বলেছেন, বায়ু নির্গত হওয়ার শব্দ কিংবা দুর্গন্ধ না পাওয়া পর্যন্ত উযু নষ্ট হয়না বা পুনরায় উযু করিতে হয়না। {৫১৩}

{৫১৩} তিরমিজি ৭৪, আহমাদ ৯০৫৭, ৯৩৩১, ৯৭৪৩। তাহকিক আলবানিঃ সহিহ। তাখরিজ আলবানিঃ ইরওয়াহ ১৪৫ মিশকাত ৩১০, সহিহ আবু দাউদ ১৬৯।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ হাদিস

৫১৬. মুহাম্মদ বিন আম্‌র বিন আতা হইতে বর্ণিতঃ

তিনি বলেন, আমি সায়িব বিন ইয়াযীদ [রাঃআঃ] কে তার কাপড় শুকতে দেখে জিজ্ঞেস করলাম, এরূপ করছেন কেন? তিনি বলিলেন, অবশ্যই আমি রসূলুল্লাহ [সাঃআঃ] কে বলিতে শুনিয়াছিঃ  বায়ুর দুর্গন্ধ পাওয়া বা আওয়াজ শোনা ব্যতিত [পুনরায়] উযু করিতে হইবে না। {৫১৪}

{৫১৪} আহমাদ ১৫০৮০ তাহকিক আলবানিঃ সহিহ লিগাইরিহী। উক্ত হাদিসের রাবি ১. ইসমাঈল বিন আয়্যাশ সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, আহলে শাম থেকে হাদিস বর্ণনায় কোন সমস্যা নেই। আলী ইবনিল মাদীনী, ইবনি আবু শায়বাহ, আমর ইবনিল ফাল্লাস ও দুহায়ম বলেন, শাম শহর থেকে হাদিস বর্ণনায় তিনি সিকাহ কিন্তু অন্য শহর থেকে হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। ২. আবদুল আযীয বিন উবায়দুল্লাহ সম্পর্কে ইয়াহইয়া বিন মাঈন বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় দুর্বল। আবু যুরআহ আর-রাযী বলেন, তিনি হাদিস বর্ণনায় মুদতারাব ও মুনকার। ইমাম নাসাঈ বলেন তিনি সিকাহ নন এবং তার থেকে কোন হাদিস গ্রহন করা যাবে না। ইমাম দারাকুতনী বলেন, তিনি প্রত্যাখ্যানযোগ্য। উক্ত হাদিসটি শাহিদ এর ভিত্তিতে সহিহ।হাদিসের তাহকিকঃ সহিহ লিগাইরিহি


Posted

in

by

Comments

Leave a Reply