আল লুলু ওয়াল মারজান হাদিছ শরীফ – নামাজ অধ্যায়
আল লুলু ওয়াল মারজান হাদিছ শরীফ – নামাজ অধ্যায়
৪/২. আযানের শব্দগুলো দুবার এবং ইক্বামাতের শব্দগুলো একবার উচ্চারণ করার নির্দেশ। ৪/৭. মুয়ায্যিনের অনুরূপ শব্দ বলা যে তা শ্রবণ করে, অতঃপর নবী [সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-এর উপর দরূদ পাঠ করা এরপর তার নিকট ওয়াসীলা চাওয়া।
৪/৮. আযানের ফাযীলাত এবং তা শুনে শয়তানের পলায়ন।
৪/৯. তাকবীরে তাহরীমা বলার সময়, রুকূতে যাওয়ার সময় এবং রুকূ থেকে মাথা উত্তোলনের সময় দুহাত কাঁধ বরাবর উঠানো মুস্তাহাব এবং সাজদাহ থেকে উঠার সময় হাত উঠাতে হইবে না। ৪/১০. নামাজের মধ্যে প্রত্যেক নিচু ও উঁচু হওয়ার সময় তাকবীর বলা শুধু রুকূ
থেকে মাথা উঠানোর সময় ব্যতীত, কেননা তখন সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ
বলবে।
৪/১১. প্রত্যেক রাকআতে সূরাহ ফাতিহা পাঠ করা ওয়াজিব এবং যে ব্যক্তি সূরাহ ফাতিহা সুন্দর করে পড়তে পারে না ও সেটা শেখাও সম্ভব না হলে অন্য যা সহজ তা পড়া। ৪/১৩. যে ব্যক্তি বলে উচ্চঃস্বরে
বিসমিল্লাহপড়তে হইবে না
তার দলীল।
৪/১৬. সলাতে তাশাহ্হুদ পড়া।
৪/১৭. তাশাহ্হুদ পড়ার পর নবী [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-এর উপর দরূদ পড়া। ৪/১৮. সলাতে
সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহও
রাব্বানা ওয়ালাকাল হাম্দএবং আমীন বলা। ৪/৯. মুক্তাদী ইমামের অনুসরণ করিবে। ৪/২১. অসুখের কারণে ও সফরে যাওয়ার কারণে বা অন্য যে কোন কারণে সঙ্গত ওযর উপস্থিত হলে সলাতে অন্যকে ইমামের স্থলাভিষিক্ত করা। ৪/২২. জামা
আতের পক্ষ থেকে কাউকে নামাজ পড়ানোর জন্য সামনে পাঠানো যখন ইমাম বিলম্ব করিবে এবং সামনে পাঠানোতে বিশৃংখলার ভয় না করিবে।
৪/২৪. নামাজ সুন্দরভাবে পূর্ণভাবে আদায় করার এবং সলাতে বিনয়ী হওয়ার নির্দেশ।
৪/২৫. রুকূসাজদাহ বা অনুরূপ কাজ মুক্তাদী ইমামের আগে করিবে না। ৪/২৮. কাতার সোজা ও ঠিক করা।* ৪/২৯ . পুরুষদের পিছনে নামাজরত মহিলাদের প্রতি নির্দেশ যেন তারা পুরুষদের সাজদাহ থেকে মাথা উঠানোর পূর্বে মাথা না উঠায়। ৪/৩০. ফিতনার ভয় না থাকলে মহিলাদের মাসজিদে গমন এবং মহিলারা সুগন্ধি মেখে বাইরে যাবে না। ৪/৩১. উচ্চঃস্বরে কিরাআত বিশিষ্ট সলাতে উঁচু ও নিচুর মধ্যম অবস্থা অবলম্বন করা যদি উচ্চ আওয়াজে পড়লে ফাসাদের ভয় থাকে। ৪/৩২. মনোযোগ সহকারে কিরাআত শ্রবণ। ৪/৩৩. ফাজ্রের সলাতে উচ্চৈঃস্বরে কিরাআত করা এবং জ্বিনদের উপর কিরাআত পাঠ করা। ৪/৩৪. যুহরের ও
আসরের সলাতে কিরাআত।
৪/৩৫. ফাজ্রের ও মাগরিবের সলাতে কিরাআত।
৪/৩৬. ইশার সলাতে উচ্চৈঃস্বরে কিরাআত। ৪/৩৭. ইমামদের প্রতি নামাজ সংক্ষিপ্ত করতঃ পূর্ণ করার নির্দেশ দেয়া। ৪/৩৮. নামাজের রূকনগুলো মধ্যম পন্থায় আদায় করা এবং তা সংক্ষিপ্ত করা ও পূর্ণ করা। ৪/৩৯. ইমামের অনুসরণ করা এবং প্রতিটি কাজ ইমামের পরে পরে করা। ৪/৪২. রুকূ
ও সাজদাহ্য় কী বলবে?
৪/৪৪. সাজদাহ্র অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ এবং চুল ও কাপড় গুটিয়ে না রাখা ও সলাতে চুল বেনি করা।
৪/৪৬. নামাজের বৈশিষ্ট্য এবং যা দ্বারা নামাজ আরম্ভ ও শেষ করা হয় তা একত্রিত করা হয়েছে।
৪/৪৭. নামাজ আদায়কারীর সুতরা বা [বেড়া দণ্ড] প্রসঙ্গে।
৪/৪৮. নামাজ আদায়কারীর সামনে দিয়ে অতিক্রম নিষিদ্ধ।
৪/৪৯. নামাজ আদায়কারীর সুতরার কাছাকাছি দাঁড়ানো।
৪/৫১. নামাজ আদায়কারীর সামনে আড়াআড়িভাবে শোয়া।
৪/৫২. একটি মাত্র কাপড়ে নামাজ আদায় করা এবং তা পরিধানে
আল লুলু ওয়াল মারজানঃ ২১৩ – হাদিসের তাহকিকঃসহীহ হাদিছ [বুখারী পর্ব ১০ : /১ হাদিছ ৬০৪, মুসলিম ৪/১, হাদিছ ৩৭৭]
নাফি` [রহ.] হতে বর্ণিতঃ
নাফি` [রহ.] হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, ইব্নু `উমার [রাঃআঃ] বলিতে ন যে, মুসলিমগণ যখন মাদীনায় আগমন করেন, তখন তাঁরা নামাজের সময় অনুমান করে সমবেত হতেন। এর জন্য কোন ঘোষণা দেয়া হতো না। একদা তাঁরা এ বিষয়ে আলোচনা করিলেন। কয়েকজন সাহাবী বলিলেন, নাসারাদের ন্যায় নাকূস বাজানোর ব্যবস্থা করা হোক। আর কয়েকজন বলিলেন, ইয়াহূদীদের শিঙ্গার ন্যায় শিঙ্গা ফোঁকানোর ব্যবস্থা করা হোক। `উমার [রাঃআঃ] বলিলেন, নামাজের ঘোষণা দেয়ার জন্য তোমরা কি একজন লোক পাঠাতে পার না? তখন আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বললেনঃ হে বিলাল, উঠ এবং নামাজের জন্য ঘোষণা দাও।
৪/২. আযানের শব্দগুলো দু`বার এবং ইক্বামাতের শব্দগুলো একবার উচ্চারণ করার নির্দেশ।
আল লুলু ওয়াল মারজানঃ ২১৪ – হাদিসের তাহকিকঃসহীহ হাদিছ [বুখারী পর্ব ১০ : /১ হাদিছ ৬০৩, মুসলিম ৪/২, হাদিছ ৩৭৮]
আনাস [রাঃআঃ] হতে বর্ণিতঃ
আনাস [রাঃআঃ] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, [জামা`আতে নামাজ আদায়ের জন্য] সাহাবা-ই কিরাম [রাঃআঃ] আগুন জ্বালানো অথবা নাকূস বাজানোর কথা আলোচনা করেন। আবার এগুলোকে [যথাক্রমে] ইয়াহুদী ও নাসারাদের প্রথা বলে উল্লেখ করা হয়। অতঃপর বিলাল [রাঃআঃ]-কে আযানের বাক্য দু`বার ক`রে ও ইকামাতের বাক্য বেজোড় ক`রে বলার নির্দেশ দেয়া হয়।*
৪/৭. মুয়ায্যিনের অনুরূপ শব্দ বলা যে তা শ্রবণ করে, অতঃপর নবী [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-এর উপর দরূদ পাঠ করা এরপর তার নিকট ওয়াসীলা চাওয়া।
আল লুলু ওয়াল মারজানঃ ২১৫ – হাদিসের তাহকিকঃসহীহ হাদিছ [বুখারী পর্ব ১০ : /৭ হাদিছ ৬১১, মুসলিম ৪/৭ হাদিছ ৩৮৩]
আবূ সাঈদ খুদরী [রাঃআঃ] হতে বর্ণিতঃ
আবূ সাঈদ খুদরী [রাঃআঃ] হতে বর্ণিত। আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছেনঃ যখন তোমরা আযান শুনতে পাও তখন মুয়ায্যিন যা বলে তোমরাও তার অনুরূপ বলবে।
৪/৮. আযানের ফাযীলাত এবং তা শুনে শয়তানের পলায়ন।
আল লুলু ওয়াল মারজানঃ ২১৬ – হাদিসের তাহকিকঃসহীহ হাদিছ [সহিহ বুখারী : পর্ব ১০ : /৪ হাদিছ ৬০৮, মুসলিম ৪/৮, হাদিছ ৩৮৯]
আবূ হুরাইরাহ্ [রাঃআঃ] হতে বর্ণিতঃ
আবূ হুরাইরাহ্ [রাঃআঃ] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছেনঃ যখন নামাজের জন্য আযান দেয়া হয়, তখন শয়তান হাওয়া ছেড়ে পলায়ন করে, যাতে সে আযানের শব্দ না শোনে। যখন আযান শেষ হয়ে যায়, তখন সে আবার ফিরে আসে। আবার যখন নামাজের জন্য ইক্বামাত বলা হয়, তখন আবার দূরে সরে যায়। ইক্বামাত শেষ হলে সে পুনরায় ফিরে এসে লোকের মনে কুমন্ত্রণা দেয় এবং বলে এটা স্মরণ কর, ওটা স্মরণ কর, বিস্মৃত বিষয়গুলো সে স্মরণ করিয়ে দেয়। এভাবে লোকটি এমন পর্যায়ে পৌঁছে যে, সে কয় রাক`আত নামাজ আদায় করেছে তা মনে করিতে পারে না।
৪/৯. তাকবীরে তাহরীমা বলার সময়, রুকূতে যাওয়ার সময় এবং রুকূ থেকে মাথা উত্তোলনের সময় দু` হাত কাঁধ বরাবর উঠানো মুস্তাহাব এবং সাজদাহ থেকে উঠার সময় হাত উঠাতে হইবে না।
আল লুলু ওয়াল মারজানঃ ২১৭ – হাদিসের তাহকিকঃসহীহ হাদিছ [সহিহ বুখারী : পর্ব ১০ : /৮৪ হাদিছ ৭৩৬, মুসলিম হাদিছ]
আবদুল্লাহ্ ইব্নু `উমার [রাঃআঃ] হতে বর্ণিতঃ
`আবদুল্লাহ্ ইব্নু `উমার [রাঃআঃ] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-কে দেখেছি, তিনি যখন নামাজের জন্য দাঁড়াতেন তখন উভয় হাত কাঁধ বরাবর উঠাতেন। এবং যখন তিনি রুকূ`র জন্য তাক্বীর বলিতে ন তখনও এরূপ করিতেন। আবার যখন রুকূ` হতে মাথা উঠাতেন তখনও এরূপ করিতেন এবং [আরবি] বলিতে ন। তবে সাজদাহ্র সময় এরূপ করিতেন না।
আল লুলু ওয়াল মারজানঃ ২১৮ – হাদিসের তাহকিকঃসহীহ হাদিছ [সহিহ বুখারী : পর্ব ১০ : /৮৪ হাদিছ ৭৩৭, মুসলিম ৪/৯ হাদিছ ৩৯১]
আবূ কিলাবাহ [রাঃআঃ] হতে বর্ণিতঃ
আবূ কিলাবাহ [রাঃআঃ] হতে বর্ণিত। তিনি মালিক ইব্নু হুওয়ায়রিস [রাঃআঃ]-কে দেখেছেন, তিনি যখন নামাজ আদায় করিতেন তখন তাক্বীর বলিতে ন এবং তাহাঁর দু` হাত উঠাতেন। আর যখন রুকূ` করার ইচ্ছে করিতেন তখনও তাহাঁর উভয় হাত উঠাতেন, আবার যখন রুকূ` হতে মাথা উঠাতেন তখনও তাহাঁর উভয় হাত উঠাতেন এবং তিনি বর্ণনা করেন যে, আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] এরূপ করিয়াছেন।*
৪/১০. নামাজের মধ্যে প্রত্যেক নিচু ও উঁচু হওয়ার সময় তাকবীর বলা শুধু রুকূ` থেকে মাথা উঠানোর সময় ব্যতীত, কেননা তখন `সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ` বলবে।
আল লুলু ওয়াল মারজানঃ ২১৯ – হাদিসের তাহকিকঃসহীহ হাদিছ
আবূ সালামা ও আবূ হুরাইরাহ্ [রাঃআঃ] হতে বর্ণিতঃ
আবূ সালামা ও আবূ হুরাইরাহ্ [রাঃআঃ] হতে বর্ণিত যে, তিনি তাহাদের সঙ্গে নামাজ আদায় করিতেন এবং প্রতিবার উঠা বসার সময় তাক্বীর বলিতে ন। নামাজ শেষ করে তিনি বলিলেন, তোমাদের মধ্যে আমার নামাজই আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-এর নামাজের সাথে অধিক সাদৃশ্যপূর্ণ।
[সহিহ বুখারী : পর্ব ১০ : /১১৫ হাদিছ ৭৮৫, মুসলিম ৪/১০, হাদিছ ৩৯২]
২১৯. আবূ হুরাইরাহ্ [রাঃআঃ] হতে বর্ণিত। তিনি তাহাদের সঙ্গে নামাজ আদায় করিতেন এবং প্রতিবার উঠা বসার সময় তাক্বীর বলিতে ন। নামাজ শেষ করে তিনি বলিলেন, তোমাদের মধ্যে আমার নামাজই আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-এর নামাজের সাথে অধিক সাদৃশ্যপূর্ণ।
[সহিহ বুখারী : পর্ব ১০ : /১১৫ হাদিছ ৭৮৫, মুসলিম ৪/১০, হাদিছ ৩৯২]
আল লুলু ওয়াল মারজানঃ ২২০ – হাদিসের তাহকিকঃসহীহ হাদিছ [সহিহ বুখারী : পর্ব ১০ : /১১৭ হাদিছ ৭৮৯, মুসলিম ৪/১০, হাদিছ ৩৯২]
আবূ হুরাইরাহ্ [রাঃআঃ] হতে বর্ণিতঃ
আবূ হুরাইরাহ্ [রাঃআঃ] হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] নামাজ আরম্ভ করার সময় দাঁড়িয়ে তাক্বীর বলিতে ন। অতঃপর রুকূ`তে যাওয়ার সময় তাক্বীর বলিতে ন, আবার যখন রুকূ` হতে পিঠ সোজা করে উঠতেন তখনঃ سَمِعَ اللهُ لِمَنْ حَمِدَهُ. বলিতে ন, অতঃপর দাঁড়িয়ে رَبَّنَا لَكَ الْحَمْدُ বলিতে ন। অতঃপর সাজদাহ্য় যাওয়ার সময় তাক্বীর বলিতে ন। এবং যখন মাথা উঠাতেন তখনও তাক্বীর বলিতে ন। আবার [দ্বিতীয়] সাজদাহ্য় যেতে তাক্বীর বলিতে ন এবং পুনরায় মাথা উঠাতেন তখনও তাক্বীর বলিতে ন। এভাবেই তিনি পুরো নামাজ শেষ করিতেন। আর দ্বিতীয় রাক`আতের বৈঠক শেষে যখন [তৃতীয় রাক`আতের জন্য] দাঁড়াতেন তখনও তাক্বীর বলিতে ন।
আল লুলু ওয়াল মারজানঃ ২২১ – হাদিসের তাহকিকঃসহীহ হাদিছ [সহিহ বুখারী : পর্ব ১০ : /১১৬ হাদিছ ৭৮৬, মুসলিম ৪/১০ হাদিছ ৩৯৩]
মুতার্রিফ ইব্নু `আবদুল্লাহ্ [রাঃআঃ] হতে বর্ণিতঃ
মুতার্রিফ ইব্নু `আবদুল্লাহ্ [রাঃআঃ] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি এবং ইমরান ইবনু হুসাইন [রাঃআঃ] `আলী ইব্নু তালিব [রাঃআঃ]-এর পিছনে নামাজ আদায় করলাম। তিনি যখন সাজদাহ্য় গেলেন তখন তাক্বীর বলিলেন, সাজদাহ্ হতে যখন মাথা উঠালেন তখনও তাক্বীর বলিলেন, আবার দু` রাকআতের পর যখন দাঁড়ালেন তখনও তাক্বীর বলিলেন। তিনি যখন নামাজ শেষ করিলেন তখন ইমরান ইব্নু হুসাইন [রাঃআঃ] আমার হাত ধরে বলিলেন, ইনি [আলী রা.] আমাকে মুহাম্মদ [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-এর নামাজ স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন বা তিনি বলেছিলেন, আমাদের নিয়ে মুহাম্মদ [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-এর নামাজের ন্যায় নামাজ আদায় করিয়াছেন।
৪/১১. প্রত্যেক রাক`আতে সূরাহ ফাতিহা পাঠ করা ওয়াজিব এবং যে ব্যক্তি সূরাহ ফাতিহা সুন্দর করে পড়তে পারে না ও সেটা শেখাও সম্ভব না হলে অন্য যা সহজ তা পড়া।
আল লুলু ওয়াল মারজানঃ ২২২ [সহিহ বুখারী : পর্ব ১০ : /৯৫ হাদিছ ৭৫৬, মুসলিম ৪/১১, হাদিছ ৩৯৪]
`উবাদাহ ইব্নু সামিত [রাঃআঃ] হতে বর্ণিতঃ – হাদিসের তাহকিকঃহাসান হাদিছ
`উবাদাহ ইব্নু সামিত [রাঃআঃ] হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছেনঃ যে ব্যক্তি সলাতে সূরাহ আল-ফাতিহা পড়ল না তার নামাজ হলো না।*
আল লুলু ওয়াল মারজানঃ ২২৩ – হাদিসের তাহকিকঃসহীহ হাদিছ [সহিহ বুখারী : পর্ব ১০ : /১০৪ হাদিছ ৭৭২, মুসলিম ৪/১১, হাদিছ ৩৯৬]
আবূ হুরাইরাহ্ [রাঃআঃ] হতে বর্ণিতঃ
আবূ হুরাইরাহ্ [রাঃআঃ] হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, প্রত্যেক সালাতেই কিরা`আত পড়া হয়। তবে যে সব নামাজ আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] আমাদের শুনিয়ে পড়েছেন, আমরাও তোমাদের শুনিয়ে পড়ব। আর যে সব সলাতে আমাদের না শুনিয়ে পড়েছেন, আমরাও তোমাদের না শুনিয়ে পড়ব। যদি তোমরা উম্মুল কুরআন [সূরাহ আল-ফাতিহা] -এর চেয়ে অধিক না পড়, নামাজ আদায় হয়ে যাবে। আর যদি অধিক পড় তা উত্তম।
আল লুলু ওয়াল মারজানঃ ২২৪ – হাদিসের তাহকিকঃসহীহ হাদিছ [সহিহ বুখারী : পর্ব ১০ : /১২২ হাদিছ ৭৫৭, মুসলিম ৪/১১, হাদিছ ৩৯৭]
আবূ হুরাইরাহ্ [রাঃআঃ] হতে বর্ণিতঃ
আবূ হুরাইরাহ্ [রাঃআঃ] হতে বর্ণিত। আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] মাসজিদে প্রবেশ করিলেন, তখন একজন সাহাবী এসে নামাজ আদায় করিলেন। অতঃপর তিনি নবী [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-কে সালাম করিলেন। তিনি সালামের জবাব দিয়ে বলিলেন, আবার গিয়ে নামাজ আদায় কর। কেননা, তুমিতো নামাজ আদায় করনি। তিনি ফিরে গিয়ে পূর্বের মত নামাজ আদায় করিলেন। অতঃপর এসে নবী [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-কে সালাম করিলেন। তিনি বললেনঃ ফিরে গিয়ে আবার নামাজ আদায় কর। কেননা, তুমি নামাজ আদায় করনি। এভাবে তিনবার বলিলেন। সাহাবী বলিলেন, সেই মহান সত্তার শপথ! যিনি আপনাকে সত্যসহ প্রেরণ করিয়াছেন, আমিতো এর চেয়ে সুন্দর করে নামাজ আদায় করিতে জানি না। কাজেই আপনি আমাকে শিখিয়ে দিন। তিনি বললেনঃ যখন তুমি নামাজের জন্য দাঁড়াবে, তখন তাক্বীর বলবে। অতঃপর কুরআন হতে যা তোমার পক্ষে সহজ তা পড়বে। অতঃপর রুকু`তে যাবে এবং ধীরস্থিরভাবে রুকূ` আদায় করিবে। অতঃপর সাজদাহ্ হতে উঠে স্থির হয়ে বসবে। আর এভাবেই পুরো নামাজ আদায় করিবে।
৪/১৩. যে ব্যক্তি বলে উচ্চঃস্বরে `বিসমিল্লাহ` পড়তে হইবে না` তার দলীল।
আল লুলু ওয়াল মারজানঃ ২২৫ – হাদিসের তাহকিকঃসহীহ হাদিছ [বুখারী পর্ব ১০ : /৮৯ হাদিছ ৭৪৩, মুসলিম ৪/১৩, হাদিছ ৩৯৯]
আনাস [রাঃআঃ] হতে বর্ণিতঃ
আনাস [রাঃআঃ] হতে বর্ণিত। নবী [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] আবূ বকর [রাঃআঃ] এবং `উমার [রাঃআঃ] [আরবি] দিয়ে নামাজ শুরু করিতেন।
৪/১৬. সলাতে তাশাহ্হুদ পড়া।
আল লুলু ওয়াল মারজানঃ ২২৬ – হাদিসের তাহকিকঃসহীহ হাদিছ [সহিহ বুখারী : পর্ব ৭৯ : /৩ হাদিছ ৬২৩০, মুসলিম ৪/১৬ হাদিছ ৪০২]
আবদুল্লাহ ইবনু মাস`ঊদ [রাঃআঃ] হতে বর্ণিতঃ
`আবদুল্লাহ ইবনু মাস`ঊদ [রাঃআঃ] হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ যখন আমরা নবী [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-এর সঙ্গে নামাজ আদায় করলাম, তখন [আসা অবস্থায়] আমরা আল্লাহ্র প্রতি তাহাঁর বান্দাদের পক্ষ থেকে সালাম, জিব্রীল [`আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-এর প্রতি সালাম, মীকাঈল [`আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-এর প্রতি সালাম এবং অমুকের প্রতি সালাম দিলাম। নবী [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] যখন নামাজ শেষ করিলেন, তখন আমাদের দিকে চেহারা মুবারক ফিরিয়ে বললেনঃ আল্লাহ তা`আলা নিজেই `সালাম`। অতএব যখন তোমাদের কেউ নামাজের মধ্যে বসবে, তখন বলবেঃ [আরবি] মুসল্লী যখন এ কথাটা বলবে, তখনই আসমান যমীনে সব নেক বান্দাদের নিকট এ সালাম পৌঁছে যাবে। অতঃপর বলবে [আরবি] অতঃপর সে তার পছন্দমত দু`আ নির্বাচন করে নেবে।
৪/১৭. তাশাহ্হুদ পড়ার পর নবী [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-এর উপর দরূদ পড়া।
আল লুলু ওয়াল মারজানঃ ২২৭ – হাদিসের তাহকিকঃসহীহ হাদিছ [সহিহ বুখারী : পর্ব ৬০ : /১০ হাদিছ ৩৩৭০, মুসলিম ৪/১৭ হাদিছ ৪০৬]
কা`ব ইবনু `উজরা [রাঃআঃ] হতে বর্ণিতঃ
কা`ব ইবনু `উজরা [রাঃআঃ] হতে বর্ণিত। তিনি `আবদুর রহমান ইবনু আবূ লাইলা [রহ.] হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, কা`ব ইবনু `উজরাহ [রাঃআঃ] আমার সঙ্গে দেখা করে বলিলেন, আমি কি আপনাকে এমন একটি হাদিয়া দেব না যা আমি নবী [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] হতে শুনিয়াছি? আমি বললাম, হাঁ, আপনি আমাকে সে হাদিয়া দিন। তিনি বলিলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-কে জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রাসূল! আপনাদের উপর অর্থাৎ আহলে বাইতের উপর কিভাবে দরূদ পাঠ করিতে হইবে? কেননা, আল্লাহ তো [কেবল] আমাদেরকে জানিয়ে দিয়েছেন, আমরা কিভাবে আপনার উপর সালাম করব। তিনি বলিলেন, তোমরা এভাবে বল, “হে আল্লাহ! আপনি মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-এর উপর এবং মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-এর বংশধরদের উপর রহমত বর্ষণ করুন, যেরূপ আপনি ইবরাহীম [`আলাইহি ওয়া সাল্লাম] এবং তাহাঁর বংশধরদের উপর রহমত বর্ষণ করিয়াছেন। নিশ্চয়ই আপনি অতি প্রশংসিত, অত্যন্ত মর্যাদার অধিকারী। হে আল্লাহ! মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] এবং মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-এর বংশধরদের উপর তেমনি বরকত দান করুন যেমনি আপনি বরকত দান করিয়াছেন ইবরাহীম [`আলাইহি ওয়া সাল্লাম] এবং ইবরাহীম [`আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-এর বংশধরদের উপর। নিশ্চয়ই আপনি অতি প্রশংসিত, অতি মর্যাদার অধিকারী।
আল লুলু ওয়াল মারজানঃ ২২৮ – হাদিসের তাহকিকঃসহীহ হাদিছ [সহিহ বুখারী : পর্ব ৬০ : /১০ হাদিছ ৩৩৬৯, মুসলিম ৪/১৭ হাদিছ ৪০৭]
আবূ হুমাইদ আস্-সা`ঈদী [রাঃআঃ] হতে বর্ণিতঃ
আবূ হুমাইদ আস্-সা`ঈদী [রাঃআঃ] হতে বর্ণিত। সাহাবীগণ বলিলেন, হে আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম]! আমরা কিভাবে আপনার উপর দরূদ পাঠ করব? তখন রাসূলুল্লাহ্ [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলিলেন, এভাবে পড়বে, হে আল্লাহ! আপনি মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-এর উপর, তাহাঁর স্ত্রীগণের উপর এবং তাহাঁর বংশধরদের উপর রহমত নাযিল করুন, যেরূপ আপনি রহমত নাযিল করিয়াছেন ইবরাহীম [`আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-এর বংশধরদের উপর। আর আপনি মুহাম্মাদ [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-এর উপর, তাহাঁর স্ত্রীগণের উপর এবং তাহাঁর বংশধরগণের উপর এমনিভাবে বরকত নাযিল করুন যেমনি আপনি বরকত নাযিল করিয়াছেন ইবরাহীম [`আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-এর বংশধরদের উপর। নিশ্চয় আপনি অতি প্রশংসিত এবং অত্যন্ত মর্যাদার অধিকারী।
৪/১৮. সলাতে `সামিআল্লাহু লিমান হামিদাহ` ও `রাব্বানা ওয়ালাকাল হাম্দ` এবং আমীন বলা।
আল লুলু ওয়াল মারজানঃ ২২৯ – হাদিসের তাহকিকঃসহীহ হাদিছ [সহিহ বুখারী : পর্ব ১০ : /১২৫ হাদিছ ৭৮১, মুসলিম ৪/১৮, হাদিছ ৪১০]
আবূ হুরাইরাহ্ [রাঃআঃ] হতে বর্ণিতঃ
আবূ হুরাইরাহ্ [রাঃআঃ] হতে বর্ণিত। আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছেনঃ ইমাম যখনঃ سَمِعَ اللهُ لِمَنْ حَمِدَهُ বলেন, তখন তোমরা اللَّهُمَّ رَبَّنَا وَلَكَ الْحَمْدُ বলবে। কেননা, যার এ উক্তি মালাইকার [ফেরেশতাগণের] উক্তির সঙ্গে একই সময়ে উচ্চারিত হয়, তার পূর্ববর্তী সকল গুনাহ মাফ করে দেয়া হয়।
আল লুলু ওয়াল মারজানঃ ২৩০ – হাদিসের তাহকিকঃসহীহ হাদিছ [সহিহ বুখারী : পর্ব ১০ : /১১২ হাদিছ ৭৮১, মুসলিম ৪/১৮ হাদিছ ৪১০]
আবূ হুরাইরাহ্ [রাঃআঃ] হতে বর্ণিতঃ
আবূ হুরাইরাহ্ [রাঃআঃ] হতে বর্ণিত। আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছেনঃ যখন তোমাদের কেউ [সলাতে] `আমীন` বলে, আর আসমানে ফেরেশ্তাগণ `আমীন` বলেন এবং উভয়ের `আমীন` একই সময় হলে, তার পূর্ববর্তী সব পাপসমূহ ক্ষমা করে দেয়া হয়।*
আল লুলু ওয়াল মারজানঃ ২৩১ – হাদিসের তাহকিকঃসহীহ হাদিছ [সহিহ বুখারী : পর্ব ১০ : /১১৩ হাদিছ ৭৮২, মুসলিম ৪/১৮ হাদিছ ৪১০]
আবূ হুরাইরাহ্ [রাঃআঃ] হতে বর্ণিতঃ
আবূ হুরাইরাহ্ [রাঃআঃ] হতে বর্ণিত যে, আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছেনঃ ইমাম [আরবি] পড়লে তোমরা `আমীন` বলো। কেননা, যার এ [আমীন] বলা ফেরেশ্তাহাদের [আমীন] বলার সাথে একই সময় হয়, তার পূর্বের সব গুনাহ মাফ করে দেয়া হয়। মুহাম্মদ ইব্নু `আমর [রহ.] আবূ সালামাহ [রহ.] সূত্রে আবূ হুরাইরাহ্ [রাঃআঃ]-এর মাধ্যমে নবী [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] হতে এবং নু`আইম- মুজমির [রহ.] আবূ হুরাইরাহ্ [রাঃআঃ] হতে হাদিছ বর্ণনায় সুমাই [রহ.]-এর অনুসরণ করিয়াছেন।
৪/৯. মুক্তাদী ইমামের অনুসরণ করিবে।
আল লুলু ওয়াল মারজানঃ ২৩২ – হাদিসের তাহকিকঃসহীহ হাদিছ [বুখারী পর্ব ১০ : /১২৮ হাদিছ ৮০৫, মুসলিম ৪/১৯ হাদিছ ৪১১]
আনাস ইব্নু মালিক [রাঃআঃ] হতে বর্ণিতঃ
আনাস ইব্নু মালিক [রাঃআঃ] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] ঘোড়া হতে পড়ে যান। ফলে তাহাঁর ডান পাঁজর আহত হয়ে পড়ে। আমরা তাহাঁর শুশ্রূষা করার জন্য সেখানে গেলাম। এ সময় নামাজের ওয়াক্ত হলো। তিনি আমাদের নিয়ে বসে নামাজ আদায় করিলেন, আমরাও বসেই আদায় করলাম। নামাজের পর নবী [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বললেনঃ ইমাম নির্ধারণ করা হয় তাঁকে ইক্তিদা করার জন্য। তিনি যখন তাক্বীর বলেন, তখন তোমরাও তাক্বীর বলবে, তিনি যখন রুকূ` করেন তখন তোমরাও রুকূ` করিবে। তিনি যখন রুকূ` হতে উঠেন তখন তোমরাও উঠবে, তিনি যখনঃ سَمِعَ اللهُ لِمَنْ حَمِدَهُ বলেন, তখন তোমরা رَبَّنَا وَلَكَ الْحَمْدُ বলবে। তিনি যখন সাজদাহ্ করেন, তখন তোমরাও সাজদাহ্ করিবে।
আল লুলু ওয়াল মারজানঃ ২৩৩ – হাদিসের তাহকিকঃসহীহ হাদিছ [সহিহ বুখারী : পর্ব ১০ : /৫১ হাদিছ ৬৮৮, মুসলিম ৪/১৯, ৪১২]
উম্মুল মু`মিনীন `আয়িশাহ্ [রাঃআঃ] হতে বর্ণিতঃ
উম্মুল মু`মিনীন `আয়িশাহ্ [রাঃআঃ] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা অসুস্থ থাকার কারণে আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] নিজ গৃহে নামাজ আদায় করেন এবং বসে নামাজ আদায় করছিলেন, একদল সাহাবী তাহাঁর পিছনে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করিতে লাগলেন। তিনি তাহাদের প্রতি ইঙ্গিত করিলেন যে, বসে যাও। নামাজ শেষ করার পর তিনি বলিলেন, ইমাম নির্ধারণ করা হয় তাহাঁর ইক্তিদা করার জন্য। কাজেই সে যখন রুকূ` করে তখন তোমরাও রুকূ` করিবে, এবং সে যখন রুকূ` হতে মাথা উঠায় তখন তোমরাও মাথা উঠাবে, আর সে যখন বসে নামাজ আদায় করে, তখন তোমরা সকলেই বসে নামাজ আদায় করিবে।
আল লুলু ওয়াল মারজানঃ ২৩৪ – হাদিসের তাহকিকঃসহীহ হাদিছ [সহিহ বুখারী : পর্ব ১০ : /৮২ হাদিছ ৭৩৪, মুসলিম ৪/১৯ হাদিছ ৪১৪]
আবূ হুরাইরাহ্ [রাঃআঃ] হতে বর্ণিতঃ
আবূ হুরাইরাহ্ [রাঃআঃ] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছেনঃ ইমাম নির্ধারণ করা হয় তাহাঁর অনুসরণের জন্য। তাই যখন তিনি তাক্বীর বলেন, তখন তোমরাও তাক্বীর বলবে, যখন তিনি রুকূ` করেন তখন তোমরাও রুকূ` করিবে। যখন سَمِعَ اللهُ لِمَنْ حَمِدَهُ বলেন, তখন তোমরা رَبَّنَا وَلَكَ الْحَمْدُ বলবে আর তিনি যখন সাজদাহ্ করেন তখন তোমরাও সাজদাহ্ করিবে। যখন তিনি বসে নামাজ আদায় করেন তখন তোমরাও বসে নামাজ আদায় করিবে।
৪/২১. অসুখের কারণে ও সফরে যাওয়ার কারণে বা অন্য যে কোন কারণে সঙ্গত ওযর উপস্থিত হলে সলাতে অন্যকে ইমামের স্থলাভিষিক্ত করা।
আল লুলু ওয়াল মারজানঃ ২৩৫ – হাদিসের তাহকিকঃসহীহ হাদিছ[সহিহ বুখারী : পর্ব ১০ : /৫১ হাদিছ ৬৮৭, মুসলিম ৪/২১, হাদিছ ৪১৮]
উবাইদুল্লাহ্ ইব্নু `আবদুল্লাহ্ ইব্নু উত্বাহ [রহ.] হতে বর্ণিতঃ
উবাইদুল্লাহ্ ইব্নু `আবদুল্লাহ্ ইব্নু উত্বাহ [রহ.] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি `আয়িশাহ্ [রাঃআঃ]-এর খিদমতে উপস্থিত হয়ে বললাম, আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-এর [অন্তিম কালের] অসুস্থতা সম্পর্কে কি আপনি আমাকে কিছু শুনাবেন? তিনি বলিলেন, অবশ্যই। নবী [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] মারাত্মকভাবে রোগাক্রান্ত হয়ে পড়লেন। আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] জিজ্ঞেস করিলেন, লোকেরা কি নামাজ আদায় করে ফেলেছে? আমরা বললাম, না, হে আল্লাহ্র রাসূল! তাঁরা আপনার জন্য অপেক্ষারত। তিনি বলিলেন, আমার জন্য গোসলের পাত্রে পানি দাও। `আয়িশাহ্ [রাঃআঃ] বলেন, আমরা তাই করলাম। তিনি গোসল করিলেন। অতঃপর একটু উঠতে চাইলেন, কিন্তু বেহুঁশ হয়ে পড়লেন। কিছুক্ষণ পর একটু হুঁশ ফিরে পেলে আবার তিনি জিজ্ঞেস করিলেন, লোকেরা কি নামাজ আদায় করে ফেলেছে? আমরা বললাম, না, হে আল্লাহ্র রাসূল! তাঁরা আপনার অপেক্ষায় আছেন। তিনি বলিলেন, আমার জন্য গোসলের পাত্রে পানি রাখ। `আয়িশাহ্ [রাঃআঃ] বলেন, আমরা তাই করলাম। তিনি গোসল করিলেন। আবার উঠতে চাইলেন, কিন্তু বেহুঁশ হয়ে পড়লেন। কিছুক্ষণ পর আবার হুঁশ ফিরে পেয়ে জিজ্ঞেস করিলেন, লোকেরা কি নামাজ আদায় করে ফেলেছে? আমরা বললাম, না, হে আল্লাহ্র রাসূল! তাঁরা আপনার অপেক্ষায় আছেন। তিনি বলিলেন, আমার জন্য গোসলের পাত্রে পানি রাখ। অতঃপর তিনি উঠে বসলেন, এবং গোসল করিলেন। এবং উঠতে গিয়ে বেহুঁশ হয়ে পড়লেন। কিছুক্ষণ পর আবার হুঁশ ফিরে পেলেন এবং জিজ্ঞেস করিলেন, লোকেরা কি নামাজ আদায় করে ফেলেছে? আমরা বললাম, না, হে আল্লাহ্র রাসূল! তাঁরা আপনার অপেক্ষায় আছেন। ওদিকে সাহাবীগণ `ইশার নামাজের জন্য নবী [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-এর অপেক্ষায় মাসজিদে বসে ছিলেন। নবী [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] আবূ বকর [রাঃআঃ]-এর নিকট এ মর্মে একজন লোক পাঠালেন যে, তিনি যেন লোকদের নিয়ে নামাজ আদায় করে নেন। সংবাদ বাহক আবূ বকর [রাঃআঃ]-এর নিকট উপস্থিত হয়ে বলিলেন যে, আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] আপনাকে লোকদের নিয়ে নামাজ আদায়ের নির্দেশ দিয়েছেন। আবূ বকর [রাঃআঃ] অত্যন্ত কোমল মনের লোক ছিলেন, তাই তিনি `উমার [রাঃআঃ]-কে বলিলেন, হে `উমার! আপনি সাহাবীগণকে নিয়ে নামাজ আদায় করে নিন। `উমার [রাঃআঃ] বলিলেন, আপনিই এর অধিক যোগ্য। তাই আবূ বকর [রাঃআঃ] সে কয়দিন নামাজ আদায় করিলেন। অতঃপর নবী [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] একটু নিজে হালকাবোধ করিলেন এবং দু`জন লোকের কাঁধে ভর করে যুহরের নামাজের জন্য বের হলেন। সে দু`জনের একজন ছিলেন `আব্বাস [রাঃআঃ]। আবূ বকর [রাঃআঃ] তখন সাহাবীগণকে নিয়ে নামাজ আদায় করছিলেন। তিনি যখন নবী [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-কে দেখিতে পেলেন, পিছনে সরে আসতে চাইলেন। নবী [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] তাঁকে পিছিয়ে না আসার জন্য ইঙ্গিত করিলেন এবং বলিলেন, তোমরা আমাকে তাহাঁর পাশে বসিয়ে দাও। তাঁরা তাঁকে আবূ বকর [রাঃআঃ]-এর পাশে বসিয়ে দিলেন। বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর আবূ বকর [রাঃআঃ] নবী [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-এর নামাজের ইক্তিদা করে নামাজ আদায় করিতে লাগলেন। আর সাহাবীগণ আবূ বকর [রাঃআঃ]-এর নামাজের ইক্তিদা করিতে লাগলেন। নবী [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] তখন উপবিষ্ট ছিলেন। উবায়দুল্লাহ্ বলেন, আমি `আবদুল্লাহ্ ইব্নু `আব্বাস [রাঃআঃ]-এর নিকট উপস্থিত হয়ে বললাম, নবী [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-এর অন্তিম কালের অসুস্থতা সম্পর্কে `আয়িশাহ্ [রাঃআঃ] আমাকে যে হাদিছ বর্ণনা করিয়াছেন, তা কি আমি আপনার নিকট বর্ণনা করব না? তিনি বলিলেন, করুন। তাই আমি তাঁকে সে হাদিছ শুনালাম। তিনি এ বর্ণনার কোন অংশেই আপত্তি করিলেন না, তবে তাঁকে তিনি জিজ্ঞেস করিলেন যে, `আব্বাস [রাঃআঃ]-এর সাথে যে অপর এক সাহাবী ছিলেন, `আয়িশাহ্ [রাঃআঃ] কি আপনার নিকট তাহাঁর নাম উল্লেখ করিয়াছেন? আমি বললাম, না। তিনি বলিলেন, তিনি হলেন, `আলী ইবনু আবূ তালিব [রাঃআঃ]।
আল লুলু ওয়াল মারজানঃ ২৩৬ – হাদিসের তাহকিকঃসহীহ হাদিছ [সহিহ বুখারী : পর্ব ৫১ : /১৪ হাদিছ ২৫৮৮, মুসলিম ৪/২১ হাদিছ ৪১৮]
`আয়িশাহ [রাঃআঃ] হতে বর্ণিতঃ
`আয়িশাহ [রাঃআঃ] হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] ভারী হয়ে পড়লেন এবং তাহাঁর কষ্ট বেড়ে গেল। তখন তিনি তাহাঁর স্ত্রীগণের নিকট আমার ঘরে শুশ্রূষা পাওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করিলেন। তারা তাঁকে সম্মতি দিলেন। অতঃপর একদা দু` ব্যক্তির উপর ভর করে বের হলেন, তখন তার উভয় পা মাটি স্পর্শ করছিল। তিনি `আব্বাস [রাঃআঃ] ও আরেক ব্যক্তির মাঝে ভর দিয়ে চলছিলেন। উবায়দুল্লাহ [রহ.] বলেন, `আয়িশাহ [রাঃআঃ] যা বলিলেন, তা আমি ইবনু `আব্বাস [রাঃআঃ]-এর নিকট আরয করলাম, তিনি তখন আমাকে বলিলেন, `আয়িশাহ [রাঃআঃ] যার নাম উল্লেখ করিলেন না, তিনি কে, তা জান কি? আমি বললাম, না। তিনি বলিলেন, তিনি হলেন `আলী ইবনু আবূ তালিব [রাঃআঃ]।
আল লুলু ওয়াল মারজানঃ ২৩৭ – হাদিসের তাহকিকঃসহীহ হাদিছ [সহিহ বুখারী : পর্ব ৬৪ : /৮৩ হাদিছ ৪৪৪৫, মুসলিম ৪/২১ হাদিছ ৪১৮]
`আয়িশাহ [রাঃআঃ] হতে বর্ণিতঃ
`আয়িশাহ [রাঃআঃ] বলেন, আমি আবূ বকর [রাঃআঃ]-এর ইমামতের ব্যাপার নবী [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-কে বারবার আপত্তি করেছি। আর আমার তাহাঁর কাছে বারবার আপত্তি করার কারণ ছিল এই, আমার অন্তরে এ কথা আসেনি যে, নবী [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-এর পরে তাহাঁর স্থলে কেউ দাঁড়ালে লোকেরা তাকে পছন্দ করিবে। বরং আমি মনে করতাম যে, কেউ তাহাঁর স্থলে দাঁড়ালে লোকেরা তাহাঁর প্রতি খারাপ ধারণা পোষণ করিবে, তাই আমি ইচ্ছে করলাম যে, নবী [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] এ দায়িত্ব আবূ বকর [রাঃআঃ]-এর পরিবর্তে অন্য কাউকে প্রদান করুন।
আল লুলু ওয়াল মারজানঃ ২৩৮ – হাদিসের তাহকিকঃসহীহ হাদিছ [সহিহ বুখারী : পর্ব ১০ : /৩৯ হাদিছ ৬৬৪, মুসলিম ৪/২১, হাদিছ ৪১৮]
আয়িশাহ [রাঃআঃ] হতে বর্ণিতঃ
আয়িশাহ [রাঃআঃ] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] যখন অন্তিম রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়লেন, তখন নামাজের সময় হলে আযান দেয়া হলো। তখন তিনি বলিলেন, আবূ বকরকে লোকদের নিয়ে নামাজ আদায় করিতে বল। তাঁকে বলা হলো যে, আবূ বকর [রাঃআঃ] অত্যন্ত কোমল হৃদয়ের লোক, তিনি যখন আপনার স্থানে দাঁড়াবেন তখন লোকদের নিয়ে নামাজ আদায় করা তাহাঁর পক্ষে সম্ভব হইবে না। আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] আবার সে কথা বলিলেন এবং তারাও আবার তা-ই বলিলেন। তৃতীয়বারও তিনি সে কথা বলিলেন, তোমরা ইউসুফের সাথীদের ন্যায়। আবূ বকরকে নির্দেশ দাও যেন লোকদের নিয়ে নামাজ আদায় করে নেয়। আবূ বকর [রাঃআঃ] এগিয়ে গিয়ে নামাজ শুরু করিলেন। এদিকে নবী [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] নিজেকে একটু হালকাবোধ করিলেন। দু`জন লোকের কাঁধে ভর দিয়ে বেরিয়ে এলেন। `আয়িশাহ্ [রাঃআঃ] বলেন, আমার চোখে এখনও স্পষ্ট ভাসছে। অসুস্থতার কারণে তাহাঁর দু`পা মাটির উপর দিয়ে হেঁচড়ে যাচ্ছিল। তখন আবূ বকর [রাঃআঃ] পিছনে সরে আসতে চাইলেন। নবী [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] তাকে স্বস্থানে থাকার জন্য ইঙ্গিত করিলেন। অতঃপর আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-কে আনা হলো, তিনি আবূ বকর [রাঃআঃ]-এর পাশে বসলেন।
আল লুলু ওয়াল মারজানঃ ২৩৯ – হাদিসের তাহকিকঃসহীহ হাদিছ [সহিহ বুখারী : পর্ব ১০ : /৬৮ হাদিছ ৭১৩, মুসলিম ৪/২১ হাদিছ ৪১৮]
আয়িশাহ্ [রাঃআঃ] হতে বর্ণিতঃ
`আয়িশাহ্ [রাঃআঃ] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] যখন [রোগে] পীড়িত হয়ে পড়েছিলেন, বিলাল [রাঃআঃ] এসে নামাজের কথা বলিলেন। নবী [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলিলেন, আবূ বক্রকে বল, লোকদের নিয়ে নামাজ আদায় করিতে। আমি বললাম, ইয়া রাসূলুল্লাহ্! আবূ বকর [রাঃআঃ] অত্যন্ত কোমল হৃদয়ের ব্যক্তি। তিনি যখন আপনার স্থানে দাঁড়াবেন, তখন সাহাবীগণকে কিছুই শুনাতে পারবেন না। যদি আপনি `উমার [রাঃআঃ]-কে এ নির্দেশ দেন [তবে ভাল হয়]। তিনি [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] আবার বললেনঃ লোকদের নিয়ে আবূ বকর [রাঃআঃ]-কে নামাজ আদায় করিতে বল। আমি হাফসা [রাঃআঃ]-কে বললাম, তুমি তাঁকে একটু বল যে, আবূ বকর [রাঃআঃ] অত্যন্ত কোমল হৃদয়ের ব্যক্তি। তিনি যখন আপনার পরিবর্তে সে স্থানে দাঁড়াবেন, তখন সাহাবীগণকে কিছুই শোনাতে পারবেন না। যদি আপনি `উমার [রাঃআঃ]-কে এ নির্দেশ দিতেন [তবে ভাল হতো]। এ শুনে আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বললেনঃ তোমরা ইউসুফের সাথী রমণীদেরই মতো। আবূ বকর [রাঃআঃ]-কে লোকদের নিয়ে নামাজ আদায় করিতে বল। আবূ বকর [রাঃআঃ] লোকদের নিয়ে নামাজ শুরু করিলেন। তখন আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] নিজে একটু সুস্থবোধ করিলেন এবং দু`জন সাহাবীর কাঁধে ভর দিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে মাসজিদে গেলেন। তাহাঁর দু` পা মাটির উপর দিয়ে হেঁচড়ে যাচ্ছিল। আবূ বকর [রাঃআঃ] যখন তাহাঁর আগমন আঁচ করিলেন, পিছনে সরে যেতে উদ্যত হলেন। আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] তার প্রতি ইঙ্গিত করিলেন [পিছিয়ে না যাওয়ার জন্য]। অতঃপর তিনি এসে আবূ বকর [রাঃআঃ]-এর বামপাশে বসে গেলেন, অবশেষে আবূ বকর [রাঃআঃ] দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করছিলেন। আর সাহাবীগণ আবূ বকর [রাঃআঃ]-এর নামাজের অনুসরণ করছিল।
আল লুলু ওয়াল মারজানঃ ২৪০ – হাদিসের তাহকিকঃসহীহ হাদিছ [সহিহ বুখারী : পর্ব ১০ : /৪৬ হাদিছ ৬৮০, মুসলিম ৪/২১ হাদিছ ৪১৯]
আনাস ইব্নু মালিক আনসারী [রাঃআঃ] হতে বর্ণিতঃ
আনাস ইব্নু মালিক আনসারী [রাঃআঃ] যিনি নবী [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-এর অনুসারী, খাদিম এবং সাহাবী ছিলেন। তিনি বর্ণনা করেন যে, আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] অন্তিম রোগে আক্রান্ত অবস্থায় আবূ বকর [রাঃআঃ] সাহাবীগণকে নিয়ে নামাজ আদায় করিতেন। অবশেষে যখন সোমবার এল এবং লোকেরা নামাজের জন্য কাতারে দাঁড়াল, তখন নবী [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] হুজরাহ্র পর্দা উঠিয়ে আমাদের দিকে তাকালেন। তিনি দাঁড়িয়ে ছিলেন, তাহাঁর চেহারা যেন কুরআনুল কারীমের পৃষ্ঠা [এর ন্যায় ঝলমল করছিল]। তিনি মুচকি হাসলেন। নবী [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-কে দেখিতে পেয়ে আমরা খুশীতে প্রায় আত্মহারা হয়ে গিয়েছিলাম এবং আবূ বকর [রাঃআঃ] কাতারে দাঁড়ানোর জন্য পিছন দিকে সরে আসছিলেন। তিনি ভেবেছিলেন, নবী [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] হয়তো সলাতে আসবেন। নবী [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] আমাদেরকে ইঙ্গিতে বলিলেন যে, তোমরা তোমাদের নামাজ পূর্ণ করে নাও। অতঃপর তিনি পর্দা ছেড়ে দিলেন। সে দিনই তিনি ওফাতপ্রাপ্ত হন।
আল লুলু ওয়াল মারজানঃ ২৪১ – হাদিসের তাহকিকঃসহীহ হাদিছ [সহিহ বুখারী : পর্ব ১০ : /৪৬ হাদিছ ৬৮১, মুসলিম হাদিছ]
আনাস [রাঃআঃ] হতে বর্ণিতঃ
আনাস [রাঃআঃ] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, [রোগশয্যায় থাকার কারণে] তিনদিন পর্যন্ত নবী [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বাইরে আসেন নি। এ সময় এক সময় নামাজের ইক্বামাত দেয়া হল। আবূ বকর [রাঃআঃ] ইমামত করার জন্য অগ্রসর হচ্ছিলেন। এমন সময় নবী [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] তাহাঁর ঘরের পর্দা ধরে উঠালেন। নবী [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-এর চেহারা যখন আমাদের সম্মুখে প্রকাশ পেল, তাহাঁর চেহারার চেয়ে সুন্দর দৃশ্য আমরা আর কখনো দেখিনি। যখন তাহাঁর চেহারা আমাদের সম্মুখে প্রকাশ পেল, তখন নবী [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] হাতের ইঙ্গিতে আবূ বকর [রাঃআঃ]-কে [ইমামতের জন্য] এগিয়ে যেতে বলিলেন এবং পর্দা ফেলে দিলেন। অতঃপর তাহাঁর মৃত্যুর পূর্বে তাঁকে আর দেখার সৌভাগ্য হয়নি।
আল লুলু ওয়াল মারজানঃ ২৪২ – হাদিসের তাহকিকঃসহীহ হাদিছ [বুখারী পর্ব ১০ : /৪৬ হাদিছ ৬৭৮, মুসলিম ৪/২১, হাদিছ ৪২০]
আবূ মূসা [রাঃআঃ] হতে বর্ণিতঃ
আবূ মূসা [রাঃআঃ] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] অসুস্থ হয়ে পড়লেন, ক্রমে তাহাঁর অসুস্থতা তীব্রতর হলে তিনি বলিলেন, আবূ বকরকে লোকদের নিয়ে নামাজ আদায় করিতে বল। `আয়িশাহ্ [রাঃআঃ] বলিলেন, তিনি তো কোমল হৃদয়ের লোক, যখন আপনার স্থানে দাঁড়াবেন, তখন তিনি লোকদের নিয়ে নামাজ আদায় করিতে পারবেন না। নবী [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] আবার বলিলেন, আবূ বকরকে বল, সে যেন লোকদের নিয়ে নামাজ আদায় করে। `আয়িশাহ্ [রাঃআঃ] আবার সে কথা বলিলেন। তখন তিনি আবার বলিলেন, আবূ বকরকে বল, সে যেন লোকদের নিয়ে নামাজ আদায় করে। তোমরা ইউসুফের [`আলাইহি ওয়া সাল্লাম] সাথী রমণীদেরই মতো। অতঃপর একজন সংবাদদাতা আবূ বকর [রাঃআঃ]-এর নিকট সংবাদ নিয়ে আসলেন এবং তিনি নবী [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-এর জীবদ্দশাতেই লোকদের নিয়ে নামাজ আদায় করিলেন।
৪/২২. জামা`আতের পক্ষ থেকে কাউকে নামাজ পড়ানোর জন্য সামনে পাঠানো যখন ইমাম বিলম্ব করিবে এবং সামনে পাঠানোতে বিশৃংখলার ভয় না করিবে।
আল লুলু ওয়াল মারজানঃ ২৪৩ – হাদিসের তাহকিকঃসহীহ হাদিছ [বুখারী পর্ব ১০ : /৪৮ হাদিছ ৬৮৪, মুসলিম ৪/২২, হাদিছ ৪২১]
সাহ্ল ইব্নু সা`দ সা`ঈদী [রাঃআঃ] হতে বর্ণিতঃ
সাহ্ল ইব্নু সা`দ সা`ঈদী [রাঃআঃ] হতে বর্ণিত। একদা আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] `আমর ইব্নু আওফ গোত্রের এক বিবাদ মীমাংসার জন্য সেখানে যান। ইতোমধ্যে [আসরের] নামাজের সময় হয়ে গেলে, মুয়ায্যিন আবূ বকর [রাঃআঃ]-এর নিকট এসে বলিলেন, আপনি কি লোকদের নিয়ে নামাজ আদায় করে নেবেন? তা হলে ইক্বামাত দেই? তিনি বলিলেন, হ্যাঁ, আবূ বকর [রাঃআঃ] নামাজ আরম্ভ করিলেন। লোকেরা সলাতে থাকতে থাকতেই আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] তাশরীফ আনলেন এবং তিনি সারিগুলো ভেদ করে প্রথম সারিতে গিয়ে দাঁড়ালেন। তখন সাহাবীগণ হাতে তালি দিতে লাগলেন। আবূ বকর [রাঃআঃ] সলাতে আর কোন দিকে তাকাতেন না। কিন্তু সাহাবীগণ যখন অধিক করে হাতে তালি দিতে লাগলেন, তখন তিনি তাকালেন এবং আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-কে দেখিতে পেলেন। আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] তাহাঁর প্রতি ইঙ্গিত করিলেন- নিজের জায়গায় থাক। তখন আবূ বকর [রাঃআঃ] দু`হাত উঠিয়ে আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম]-এর নির্দেশের জন্য আল্লাহ্র প্রশংসা করে পিছিয়ে গেলেন এবং কাতারের বরাবর দাঁড়ালেন। আর আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] সামনে এগিয়ে নামাজ আদায় করিলেন। নামাজ শেষ করে তিনি বলিলেন, হে আবূ বক্র! আমি তোমাকে নির্দেশ দেয়ার পর কিসে তোমাকে বাধা দিয়েছিল? আবূ বকর [রাঃআঃ] বলিলেন, আবূ কুহাফার পুত্রের জন্য আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] এর সামনে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করা শোভা পায় না। অতঃপর আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বললেনঃ আমি তোমাদের এক হাতে তালি দিতে দেখলাম। ব্যাপার কী? শোন! সলাতে কারো কিছু ঘটলে সুবহানাল্লাহ্ বলবে। সুবহানাল্লাহ্ বললেই তার প্রতি দৃষ্টি দেয়া হইবে। আর হাতে তালি দেয়া তো নারীদের জন্য।
আল লুলু ওয়াল মারজানঃ ৪/২৩. সলাতে কোন কিছু হলে পুরুষদের `সুবহানাল্লাহ` বলা ও মহিলাদের [হাত দিয়ে রানের উপর] তালি দেয়া।
আল লুলু ওয়াল মারজানঃ ২৪৪ – হাদিসের তাহকিকঃসহীহ হাদিছ [সহিহ বুখারী : পর্ব ২১ : /৫ হাদিছ ১২০৩, মুসলিম ৪/২৩ হাদিছ ৪২২]
আবূ হুরাইরাহ্ [রাঃআঃ] হতে বর্ণিতঃ
আবূ হুরাইরাহ্ [রাঃআঃ] হতে বর্ণিত। নবী [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] ইরশাদ করেছেনঃ [ইমামের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য] পুরুষদের বেলায় তাস্বীহ্-সুবহানাল্লাহ্ বলা। তবে মহিলাদের বেলায় `তাসফীক` [এক হাতের তালু দিয়ে অন্য হাতের তালুতে মারা]।
৪/২৪. নামাজ সুন্দরভাবে পূর্ণভাবে আদায় করার এবং সলাতে বিনয়ী হওয়ার নির্দেশ।
আল লুলু ওয়াল মারজানঃ ২৪৫ – হাদিসের তাহকিকঃসহীহ হাদিছ [সহিহ বুখারী : পর্ব ৮ : /৪০ হাদিছ ৪১৮, মুসলিম ৪/২৪, হাদিছ ৪২৪]
আবূ হুরাইরাহ্ [রাঃআঃ] হতে বর্ণিতঃ
আবূ হুরাইরাহ্ [রাঃআঃ] হতে বর্ণিত। আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছেনঃ তোমরা কি মনে কর যে, আমার দৃষ্টি [কেবল] কিবলাহর দিকে? আল্লাহ্র কসম! আমার নিকট তোমাদের খূশু` [বিনয়] ও রুকূ` কিছুই গোপন থাকে না। অবশ্যই আমি আমার পেছন হতেও তোমাদের দেখিতে পাই।
আল লুলু ওয়াল মারজানঃ ২৪৬ – হাদিসের তাহকিকঃসহীহ হাদিছ [সহিহ বুখারী : পর্ব ১০ : /৮৮ হাদিছ ৭৪২, মুসলিম ৪/২৪, হাদিছ ৪২৫]
আনাস ইব্নু মালিক [রাঃআঃ] হতে বর্ণিতঃ
আনাস ইব্নু মালিক [রাঃআঃ] হতে বর্ণিত। নবী [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছেনঃ তোমরা রুকূ` ও সাজদাহ্গুলো যথাযথভাবে আদায় করিবে। আল্লাহ্র শপথ! আমি আমার পিছনে হতে বা রাবী বলেন, আমার পিঠের পিছন হতে তোমাদের দেখিতে পাই, যখন তোমরা রুকূ` ও সাজদাহ্ কর।
৪/২৫. রুকূ` সাজদাহ বা অনুরূপ কাজ মুক্তাদী ইমামের আগে করিবে না।
আল লুলু ওয়াল মারজানঃ ২৪৭ – হাদিসের তাহকিকঃসহীহ হাদিছ [সহিহ বুখারী : পর্ব ১০ : /৫৩ হাদিছ ৬৯১, মুসলিম ৪/২৫, হাদিছ ৪২৭]
আবূ হুরাইরাহ্ [রাঃআঃ] হতে বর্ণিতঃ
আবূ হুরাইরাহ্ [রাঃআঃ] হতে বর্ণিত। নবী [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেন, তোমাদের কেউ যখন ইমামের পূর্বে মাথা উঠিয়ে ফেলে, তখন সে কি ভয় করে না যে, আল্লাহ্ তা`আলা তার মাথা গাধার মাথায় পরিণত করে দিবেন, তার আকৃতি গাধার আকৃতি করে দেবেন।
৪/২৮. কাতার সোজা ও ঠিক করা।*
আল লুলু ওয়াল মারজানঃ ২৪৮ – হাদিসের তাহকিকঃসহীহ হাদিছ [বুখারী পর্ব ১০ : /৭৪ হাদিছ ৭২৩, মুসলিম ৪/২৮, হাদিছ ৪৩৩]
আনাস [রাঃআঃ] হতে বর্ণিতঃ
আনাস [রাঃআঃ] হতে বর্ণিত। নবী [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেনঃ তোমরা তোমাদের কাতারগুলো সোজা করে নিবে, কেননা, কাতার সোজা করা নামাজের সৌন্দর্যের অন্তর্ভুক্ত।
আল লুলু ওয়াল মারজানঃ ২৪৯ – হাদিসের তাহকিকঃসহীহ হাদিছ [বুখারী পর্ব ১০ : /৭১ হাদিছ ৭১৮, মুসলিম ৪/২৮, হাদিছ ৪৩৪]
আনাস [রাঃআঃ] হতে বর্ণিতঃ
আনাস [রাঃআঃ] হতে বর্ণিত। নবী [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেনঃ তোমরা কাতার সোজা করে নিবে। কেননা, আমি আমার পিছনের দিক হতেও তোমাদের দেখিতে পাই।
আল লুলু ওয়াল মারজানঃ ২৫০ – হাদিসের তাহকিকঃসহীহ হাদিছ [বুখারী পর্ব ১০ : /৭১ হাদিছ ৭১৭, মুসলিম ৪/২৮, হাদিছ ৪৩৬]
নু`মান ইব্নু বশীর [রাঃআঃ] হতে বর্ণিতঃ
নু`মান ইব্নু বশীর [রাঃআঃ] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছেনঃ তোমরা অবশ্যই কাতার সোজা করে নিবে, তা না হলে আল্লাহ্ তা`আলা তোমাদের মাঝে বিরোধ সৃষ্টি করে দিবেন।
আল লুলু ওয়াল মারজানঃ ২৫১ – হাদিসের তাহকিকঃসহীহ হাদিছ [বুখারী পর্ব ১০ : /৯ হাদিছ ৬১৫, মুসলিম ৪/২৮, হাদিছ ৪৩৭]
আবূ হুরাইরাহ্ [রাঃআঃ] হতে বর্ণিতঃ
আবূ হুরাইরাহ্ [রাঃআঃ] হতে বর্ণিত। আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু `আলাইহি ওয়া সাল্লাম] বলেছেনঃ আযানে ও প্রথম কাতারে কী [ফযীলত] রয়েছে, তা যদি লোকেরা জানত, কুরআহ্র মাধ্যমে নির্বাচন ব্যতীত এ সুযোগ লাভ করা যদি সম্ভব না হত, তাহলে অবশ্যই তারা কুরআহর মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিত। যুহরের নামাজ আউয়াল ওয়াক্তে আদায় করার মধ্যে কী [ফাযীলত] রয়েছে, যদি তারা জানত, তাহলে তারা এর জন্য প্রতিযোগিতা করত। আর `ইশা ও ফাজরের নামাজ [জামা`আতে] আদায়ের কী ফযীলত তা যদি তারা জানত, তাহলে নিঃসন্দেহে হামাগুড়ি দিয়ে হলেও তারা উপস্থিত হত।
৪/২৯ . পুরুষদের পিছনে নামাজরত মহিলাদের প্রতি নির্দেশ যেন তারা পুরুষদের সাজদাহ থেকে মাথা উঠানোর পূর্বে মাথা না উঠায়।
আল লুলু ওয়াল মারজানঃ ২৫২ – হাদিসের তাহকিকঃসহীহ হাদিছ [বুখারী পর্ব ৮ : /৬ হাদিছ ৩৬২, মুসলিম ৪/২৯, হাদিছ ৪৪১]
সাহল ইবনু সা`দ [রাঃআঃ] হতে বর্ণিতঃ
সাহল ইবনু সা`দ [রাঃআঃ] হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, লোকেরা শিশুদের মত নিজেদের লুঙ্গি কাঁধে বেঁধে নামাজ আদায় করিতেন। আর মহিলাদের প্রতি নির্দেশ ছিল যে, তারা যেন পুরুষদের ঠিকমত বসে যাওয়ার পূর্বে সাজদাহ হতে মাথা না উঠায়।
Leave a Reply