আকাঙ্ক্ষা – কামনা করা
আকাঙ্ক্ষা – কামনা করা >> বুখারী শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন
পর্বঃ ৯৪, আকাঙ্ক্ষা, অধ্যায়ঃ (১-৯)=৯টি
৯৪/১. অধ্যায়ঃ কামনা করা এবং যিনি শাহাদাত কামনা করেন।
৯৪/২. অধ্যায়ঃকল্যাণ কামনা করা।
৯৪/৩. অধ্যায়ঃ নাবী (সাঃআঃ) এর কথাঃ কোন কাজ সম্পর্কে যদি আগে জানতে পারতাম যা পরে জানতে পেরেছি।
৯৪/৪. অধ্যায়ঃ [নাবী (সাঃআঃ)]-এর কথাঃ যদি এমন এমন হত।
৯৪/৫. অধ্যায়ঃ কুরআন (পাঠ) ও ইল্ম অর্জনের কামনা।
৯৪/৬. অধ্যায়ঃ যা কামনা করা নিষিদ্ধ।
৯৪/৭. অধ্যায়ঃ কোন এক ব্যক্তির উক্তিঃ আল্লাহ না করলে আমরা কেউ হিদায়াত পেতাম না।
৯৪/৮. অধ্যায়ঃ শত্রুর মুখোমুখী হবার কামনা নিষিদ্ধ।
৯৪/৯. অধ্যায়ঃ (আরবি) যদি শব্দটি কতটা বৈধ।
৯৪/১. অধ্যায়ঃ কামনা করা এবং যিনি শাহাদাত কামনা করেন।
৭২২৬
আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)-কে বলিতে শুনিয়াছি, সেই সত্তার শপথ, যাঁর হাতে আমার প্রাণ! যদি কিছু লোক আমার শরীক না হয়ে পিছনে থেকে যাওয়াটা অপছন্দ না করত, আর সকলকে (যুদ্ধে যাওয়ার) বাহন দিতে আমি অক্ষম না হতাম, তাহলে আমি কোন যুদ্ধ থেকেই পিছনে থাকতাম না। আমি অবশ্যই কামনা করি যে, আমাকে আল্লাহর পথে শহীদ করা হয়, আবার জীবিত করা হয়। আবার শহীদ করা হয় আবার জীবিত করা হয়। আবার শহীদ করা হয় আবার জীবিত করা হয়। আবার শহীদ করা হয়। [১৮৩](আঃপ্রঃ- ৬৬১৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৭৩২)
[১৮৩] আল্লাহকে নিজের জীবনের চাইতেও বেশি ভালবাসার প্রমাণ হচ্ছে জিহাদে অংশগ্রহণ করা ও শহীদ হওয়া। যারা আল্লাহকে যত বেশি ভালবাসেন তারা তত অধিকবার শহীদ হওয়ার আকাঙ্ক্ষা পোষণ করেন।
৭২২৭
আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
যে, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ যে সত্তার হাতে আমার প্রাণ তাহাঁর শপথ! আমি কামনা করি যেন আমি অবশ্যই আল্লাহর পথে যুদ্ধ করি। এতে আমাকে শহীদ করা হয়। আবার জীবিত করা হয়, আবার শহীদ করা হয়। আবার জীবিত করা হয়, আবার শহীদ করা হয়। আবু হুরাইরা (রাদি.) বলিলেন, কথাটি তিনি তিনবার বলেছেন। এ সম্পর্কে আমি আল্লাহর নামে সাক্ষ্য দিচ্ছি।(আঃপ্রঃ- ৬৭২০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৭৩৩)
৯৪/২. অধ্যায়ঃকল্যাণ কামনা করা।
নাবী (সাঃআঃ) এর বাণীঃ যদি ওহুদ পর্বত আমার জন্য স্বর্ণ হয়ে যেত।
৭২২৮
আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
আবু হুরাইরা (রাদি.) নাবী (সাঃআঃ) থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, যদি ওহুদ (পাহাড়) পরিমাণ সোনা আমার কাছে থাকত, তাহলে আমি অবশ্যই পছন্দ করতাম যে, তিন রাতও এ অবস্থায় অতিবাহিত না হোক যে ঋণ আদায় করার জন্য ছাড়া একটি দীনারও আমার কাছে থাকুক যা গ্রহণ করার মত লোক নেই।(আঃপ্রঃ- ৬৭২১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৭৩৪)
৯৪/৩. অধ্যায়ঃ নাবী (সাঃআঃ) এর কথাঃ কোন কাজ সম্পর্কে যদি আগে জানতে পারতাম যা পরে জানতে পেরেছি।
৭২২৯
আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ আমার কর্তব্য সম্পর্কে যদি আমি আগে জানতাম যা পরে জানতে পেরেছি, তাহলে আমি হাদী (অর্থাৎ কুরবানীর পশু) সঙ্গে নিয়ে আসতাম না এবং লোকেরা যখন (ইহরাম ছেড়ে) হালাল হয়েছে, তখন আমিও হালাল হয়ে যেতাম। (আঃপ্রঃ- ৬৭২২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৭৩৫)
৭২৩০
জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর সাথে ছিলাম এবং আমরা হজ্জের তালবিয়া পড়লাম। তারপর যিলহজ্জ মাসের চারদিন অতিক্রান্ত হবার পর আমরা মক্কায় এসে পৌঁছলাম। তখন নাবী (সাঃআঃ) আমাদের বাইতুল্লাহ তাওয়াফ করিতে এবং সাফা ও মারওয়ার সায়ী করিতে নির্দেশ দিলেন এবং এটাকে উমরায় পরিণত করে ইহরাম খুলে হালাল হওয়ার জন্য বলিলেন। যাদের সঙ্গে হাদী (কুরবানীর পশু) ছিল তাদের ছাড়া। জাবির (রাদি.) বলেন, নাবী (সাঃআঃ) ও তালহা (রাদি.) ব্যতীত আমাদের আর কারো সঙ্গে হাদী ছিল না। এসময় আলী (রাদি.) ইয়ামান হইতে আসলেন। তাহাঁর সঙ্গে হাদী ছিল। তিনি বলিলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) যেরূপ ইহরাম বেঁধেছেন, আমিও তেমন ইহরাম বেঁধেছি। সাহাবীগণ (রাদি.) বলিলেন, আমরা মিনার দিকে যাচ্ছি। অথচ আমাদের কারো কারো পুরুষাঙ্গ (স্ত্রী সহবাসের জন্য) উত্তেজিত হচ্ছে। তখন রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ বললেনঃ আমি আমার এ কাজে যদি আগে জানতাম যা আমি পরে জানতে পারলাম, তাহলে আমি হাদি সঙ্গে আনতাম না। আর আমার সঙ্গে যদি হাদি না থাকত তাহলে আমি অবশ্যই হালাল হয়ে যেতাম। রাবী বলেন, এমন সময় নাবী (সাঃআঃ) এর সঙ্গে সুরাকা ইবনু মালিক (রাদি.) সাক্ষাত করিলেন যখন নাবী (সাঃআঃ) জামরা-ই আকাবাতে কঙ্গর নিক্ষেপ করছিলেন। তখন তিনি বলিলেন, হে আল্লাহর রাসুল! এটা কি কেবল আমাদের জন্যই? তিনি বললেনঃ না, বরং এটা চিরদিনের জন্য। জাবির (রাদি.) বলেন, আয়েশা (রাদি.) ঋতুবতী হয়ে মক্কায় পৌঁছেছিলেন। তখন নাবী (সাঃআঃ) তাঁকে নির্দেশ করিলেন, হজ্জের যাবতীয় কার্য যথারীতি আদায় কর, তবে পবিত্র হবার পূর্ব পর্যন্ত বাইতুল্লাহ তাওয়াফ করো না এবং সালাত আদায় করো না। তারা যখন বাতহা নামক স্থানে নামলেন, আয়েশা (রাদি.) বলিলেন, হে আল্লাহর রাসুল! আপনারা একটি হজ্জ ও একটি উমরা নিয়ে ফিরলেন। আর আমি কেবল একটি হজ্জ নিয়ে ফিরছি? জাবির (রাদি.) বলেন, তখন রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) আবদুর রহমান ইবনু আবু বক্র সিদ্দীক (রাদি.) কে তাঁকে তানঈমে নিয়ে যাবার হুকুম করিলেন। পরে আয়েশা (রাদি.) যিলহজ্জ মাসে হজ্জের দিনগুলোর পরে একটি উমরা আদায় করেন। (আঃপ্রঃ- ৬৭২৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৭৩৬)
৯৪/৪. অধ্যায়ঃ [নাবী (সাঃআঃ)]-এর কথাঃ যদি এমন এমন হত।
৭২৩১
আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, এক রাতে নাবী (সাঃআঃ) জেগে রইলেন। পরে তিনি বললেনঃ যদি আমার সাহাবীদের কোন নেককার লোক আজ রাতে আমার পাহারা দিত। হঠাৎ আমরা অস্ত্রের শব্দ শুনলাম। তখন তিনি বললেনঃ এ কে? বলা হল, এ হচ্ছে সাদ, হে আল্লাহর রাসুল! আপনাকে পাহারা দিতে এসেছি। তখন নাবী (সাঃআঃ) ঘুমালেন, এমন কি আমরা তাহাঁর নাক ডাকার আওয়াজ শুনতে পেলাম। [১৮৪]
আয়েশা (রাদি.) বলেন, বিলাল (রাদি.) আওড়াচ্ছিলেন- হায়! আমার উপলব্ধি, আমি কি উপত্যকায় রাত কাটাতে পারব, যখন আমার পাশে থাকবে জালীর ও ইয্খির (ঘাস)। পরে আমি নাবী (সাঃআঃ) কে এ খবর পৌঁছিয়ে দিলাম।(আঃপ্রঃ- ৬৭২৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৭৩৭)
[১] মনে হয় {والله يعصمك من الناس} আয়াতটি হুনায়নের ঘটনার পর অবতীর্ণ হয়েছে। কেননা আয়াতটি যদি ইতঃপূর্বেই অবতীর্ণ হয়ে থাকে তবে এর পরে রাসুল (সাঃ) তাহাঁর প্রহরী নিযুক্ত করিতেন না।
যেমন বদর, উহুদ, খন্দক, খায়বার থেকে ফিরে আসার সময় কুরা উপত্যকায়, ওমরাতুল ক্বাযা, হুনায়নে প্রহরী নিযুক্তির সংবাদের বর্ণনা পাওয়া যায়।
আর এই হাদীসটিকে শক্তিশালী করেছে আবু সাঈদ (রাদি.)র হাদীস যা ইমাম ত্ববারানী তার সুপ্রসিদ্ধ সগীর গ্রন্থে বর্ণনা করেন : كان العباس فيمن يحرص النبي صلى الله عليه وسلم فلما نزلت هذه الأية ترك
নাবী (সাঃ) কে পাহারা দেয়ার মহান দায়িত্ব যারা পালন করিয়াছেন তারা হলেন : আববাস, সাদ ইবনু মুআয, মুহাম্মাদ ইবনু সামালামা, যুবাইর, আবু আইয়ূব আনসারী, যাকওয়ান ইবনু আবিল কায়েস, আদরা আস সুলামী মিহজান ইবনু আদরা, আববাস ইবনু বিশর, আবু রাইহানা প্রমুখ সাহাবী (রাযিয়াল্লাহু আনহুম আজমাঈন)। (ফাতহুল বারী)
৯৪/৫. অধ্যায়ঃ কুরআন (পাঠ) ও ইল্ম অর্জনের কামনা।
৭২৩২
আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ দুটি বিষয় ব্যতীত হিংসা করা যাবে না। এক ব্যক্তি, যাকে আল্লাহ কুরআন দান করিয়াছেন সে দিন রাত তিলাওয়াত করে। কেউ বলিল, একে যা দেয়া হয়েছে, যদি আমাকেও তা দেয়া হত, তবে সে যেমন করছে, আমিও তেমন করতাম। আর এক ব্যক্তি যাকে আল্লাহ মাল দিয়েছেন, সে তা যথোচিতভাবে খরচ করে। কেউ বলিল, তাকে যা দেয়া হয়েছে তা যদি আমাকে দেয়া হত, তাহলে আমি অবশ্যই তাই করতাম, সে যা করে।(আঃপ্রঃ- ৬৭২৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৭৩৮)
৯৪/৬. অধ্যায়ঃ যা কামনা করা নিষিদ্ধ।
আল্লাহর নির্দেশঃ তোমরা তা কামনা করো না যা দ্বারা আল্লাহ তোমাদের কাউকে কারো উপর মর্যাদা প্রদান করিয়াছেন। পুরুষেরা তাদের কৃতকার্যের অংশ পাবে, নারীরাও তাদের কৃতকর্মের অংশ পাবে এবং তোমরা আল্লাহর নিকট তাহাঁর অনুগ্রহ কামনা কর, নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্ববিষয়ে সর্বজ্ঞ। (সুরা আন্-নিসা ৪/৩২)
৭২৩৩
আনাস ইবনু মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, যদি আমি নাবী (সাঃআঃ)- কে একথা বলিতে না শোনতাম যে, তোমরা মৃত্যু কামনা করো না, তাহলে অবশ্যই আমি কামনা করতাম। [৫৬৭১; মুসলিম ৪৮/৪, হাদীস ২৬৮০] (আঃপ্রঃ- ৬৭২৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৭৩৯)
৭২৩৪
কায়স (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
কায়স (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) থেকে বর্ননা করেন। তিনি বলেন, আমরা খাব্বাব ইবনু আরাত (রাদি.) এর সেবা শুশ্রুষা করার জন্য এলাম। তিনি সাতটি দাগ লাগিয়েছিলেন। তিনি বলিলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) যদি আমাদের মৃত্যুর জন্য দুআ করিতে নিষেধ না করিতেন, তাহলে আমি অবশ্যই এজন্য দুআ করতাম। (আঃপ্রঃ- ৬৭২৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৭৪০)
৭২৩৫
আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
যে, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যেন মৃত্যু কামনা না করে। কারণ সে যদি সৎ হয় তবে (বেঁচে থাকলে) হয়ত সে নেক কাজ বৃদ্ধি করিবে। আর যদি পাপী হয়, তাহলে হয়ত সে তওবা করিবে।
আবু আবদুল্লাহ (বুখারী) (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, আবু উবায়দ-এর নাম হচ্ছে সাদ ইবনু উবায়দ আবদুর রহমান ইবনু আয্হার এর আযাদকৃত গোলাম।(আঃপ্রঃ- ৬৭২৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৭৪১)
৯৪/৭. অধ্যায়ঃ কোন এক ব্যক্তির উক্তিঃ আল্লাহ না করলে আমরা কেউ হিদায়াত পেতাম না।
৭২৩৬
বারাআ ইবনু আযিব (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, খন্দকের যুদ্ধে নাবী (সাঃআঃ) আমাদের সঙ্গে মাটি উঠাচ্ছিলেন। আমি তাঁকে দেখিতে পেলাম, মাটি তাহাঁর পেটের শুভ্রতাকে ঢেকে ফেলেছে। তিনি বলেছিলেনঃ
(হে আল্লাহ!) যদি আপনি না করিতেন তাহলে আমরা হিদায়াত পেতাম না এবং আমরা দান-সদকা করতাম না, আর আমরা সালাত ও পড়তাম না। অতএব আপনি আমাদের উপর শান্তি নাযিল করুন।— প্রথম দলটি, কখনো বলিতেন, একদল লোক আমাদের উপর যুল্ম করেছে।— যখন তারা ফিতনার ইচ্ছে করে আমরা তা প্রত্যখ্যান করি। প্রত্যাখ্যান করি- উচ্চৈঃস্বরে বলিতেন।(আঃপ্রঃ- ৬৭২৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৭৪২)
৯৪/৮. অধ্যায়ঃ শত্রুর মুখোমুখী হবার কামনা নিষিদ্ধ।
এটা আরাজ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) আবু হুরাইরা (রাদি.) নাবী (সাঃআঃ) থেকে বর্ণনা করিয়াছেন।
৭২৩৭
আবু নাযর সালিম (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
আবু নাযর সালিম (রাদি.) উমর ইবনু উবাইদুল্লাহ্র আযাদ করা গোলাম এবং তার কাতিব (সচিব) ছিলেন, বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, তার কাছে আবদুল্লাহ ইবনু আবু আওফা (রাদি.) চিঠি লিখলেন, আমি তা পড়লাম। তাতে লেখা ছিল, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ শত্রুর মুখোমুখী হওয়ার কামনা করো না বরং আল্লাহ তাআলার কাছে নিরাপত্তা কামনা কর। (আঃপ্রঃ- ৬৭৩০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৭৪৩)
৯৪/৯. অধ্যায়ঃ (আরবি) যদি শব্দটি কতটা বৈধ।
আল্লাহর বাণীঃ তোমাদেরকে দমন করার ক্ষমতা আমার যদি থাকত! (সুরা হূদ ১১/৮০)
৭২৩৮
কাসিম ইবনু মুহাম্মদ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, ইবনু আব্বাস (রাদি.) দুজন লিআনকারীর বিষয়ে বর্ণনা করিলেন। তখন আবদুল্লাহ ইবনু শাদ্দাদ বলিলেন, এটা কি সেই স্ত্রীলোক যার সম্পর্কে রাসুলল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছিলেন, বিনা প্রমাণে যদি কোন মহিলাকে রজম (প্রস্তরাঘাতে মৃত্যুদণ্ড দান) করতাম? তিনি বলিলেন, না, সে মহিলাটি প্রকাশ্যে অশ্লীল কাজ করেছিল।(আঃপ্রঃ- ৬৭৩১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৭৪৪)
৭২৩৯
আত্বা (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ)-এর এশার সালাত দেরি হল। তখন উমর (রাদি.) বের হয়ে বলিলেন, হে আল্লাহর রাসুল! সালাত, মহিলা ও শিশুরা ঘুমিয়ে যাচ্ছেন। তখন তিনি বের হয়ে এলেন, তাহাঁর মাথা থেকে পানি টপ টপ করে পড়ছে। তিনি বলেছিলেন, যদি আমার উম্মাতের জন্য কিংবা বলেছিলেন, লোকেদের জন্য, সুফিয়ানও বলেছেন, আমার উম্মাতের জন্য কষ্টকর মনে না করতাম, তাহলে অবশ্যই তাদেরকে এ সময়ে সালাত পড়ার হুকুম দিতাম।
ইবনু জুরায়জ আত্বার সূত্রে ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিত যে, নাবী (সাঃআঃ) এ সালাত বিলম্ব করিলেন। ফলে উমর (রাদি.) এসে বলিলেন, হে আল্লাহর রাসুল! মহিলা ও শিশুরা ঘুমিয়ে যাচ্ছে। তখন তিনি তাহাঁর মাথার পাশ থেকে পানি মুছতে মুছতে বের হয়ে এসে বললেনঃ আসলে এটাই সময়। এরপর বললেনঃ যদি আমি আমার উম্মাতের উপর কষ্টকর মনে না করতাম …..।
আমর এ হাদীসটি আত্বা থেকে বর্ণনা করেন, সে সূত্রে ইবনু আব্বাস (রাদি.)-এর নাম নেই। তবে আমর বলেছেন যে, তাহাঁর মাথা থেকে পানি টপ টপ করে পড়ছিল। আর ইবনু জুরায়জ বলেন, তিনি তাহাঁর মাথার এক পাশ থেকে পানি মুছছিলেন। আবার আমরের বরাতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, যদি আমি আমার উম্মাতের উপর কষ্টকর মনে না করতাম। আর ইবনু জুরায়জ বলেন, এটাই সময়। যদি আমি আমার উম্মাতের উপর কষ্টকর মনে না করতাম ……। তবে ইব্রাহীম ইবনু মুনযির ইবনু আব্বাস (রাদি.) সূত্রে নাবী (সাঃআঃ) থেকে হাদীসটি বর্ণনা আছে। (আঃপ্রঃ- ৬৭৩২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৭৪৫)
৭২৪০
আবু হুরায়য়া (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
যে, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ আমার উম্মাতের উপর যদি কষ্টকর মনে না করতাম, তাহলে আমি তাদেরকে মিস্ওয়াক করার হুকুম করতাম। (আঃপ্রঃ- ৬৭৩৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৭৪৬)
৭২৪১
আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
যে, (কোন এক) মাসের শেষভাগে নাবী বিরতিহীন সওম রাখলেন এবং আরো কতিপয় লোকও বিরতিহীনভাবে সওম রাখল। এ সংবাদ নাবী (সাঃআঃ)-এর কাছে পৌঁছলে তিনি বললেনঃ যদি আমার এ মাস প্রলম্বিত হত, তবুও আমি এভাবে বিরতিহীন সওম করতাম। যাতে অধিক কষ্টকারীরা তাদের কষ্ট করা ত্যাগ করে। আমি তো তোমাদের মত নই, আমার প্রতিপালক আমাকে আহার করান এবং পান করান। সুলায়মান ইবনু মুগীরা আনাস (রাদি.)- এর সূত্রে নাবী (সাঃআঃ) থেকে হুমায়দ-এর অনুসরণ করিয়াছেন। (আঃপ্রঃ- ৬৭৩৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৭৪৭)
৭২৪২
আবু হুরায়য়া (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বিরতিহীন সওম পালন করিতে নিষেধ করিলেন। সাহাবীগণ বলিলেন, আপনি বিরতিহীন সওম পালন করছেন? তিনি বললেনঃ তোমাদের কে আছ আমার মতো? আমি তো রাত কাটাই যাতে আমার প্রতিপালক আমাকে খাওয়ান ও পান করান। কিন্তু তারা যখন বিরতি থাকতে অস্বীকৃতি জানাল, তখন তিনি তাদেরসহ একদিন, তারপর আর একদিন সওম পালন করিলেন। তারপর তারা নতুন চাঁদ দেখিতে পেলেন। তখন রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বললেনঃ যদি চাঁদ আরো (কয়দিন) পরে উদিত হত, তাহলে আমি অবশ্যি তোমাদের (সওম) বাড়াতাম। তিনি যেন তাদেরকে শাসন করছিলেন।(আঃপ্রঃ- ৬৭৩৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৭৪৮)
৭২৪৩
আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি নাবী (সাঃআঃ)-কে কাবার বাইরের দেয়াল (হাতীম) সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম যে, সেটা কি কাবা ঘরের অংশ? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। আমি বললাম, তাহলে তারা এ অংশকে ঘরে শামিল করিল না কেন? তিনি বললেনঃ তোমার গোত্রের খরচে কমতি দেখা দিয়েছিল। আমি বললামঃ এর দরজাটা এত উঁচুতে বানানো হল কেন? তিনি বললেনঃ এটা তোমার কওম এ জন্য করেছিল, যাতে তারা যাকে ইচ্ছে ঢুকতে দেবে এবং যাকে ইচ্ছে বাধা দেবে। তোমার কওম যদি সবে জাহিলীয়্যাত মুক্ত না হত, অতঃপর তাদের অন্তর বিগড়ে যাবার আশঙ্কা না করতাম তাহলে দেয়ালটিকে ঘরের মাঝে শামিল করে দিতাম এবং এর দরজাকে ভূমি বরাবর করে দিতাম।(আঃপ্রঃ- ৬৭৩৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৭৪৯)
৭২৪৪
আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ যদি হিজরত (মহান আল্লাহ কর্তৃক ঘোষিত একটি মর্যাদাপূর্ণ পন্থা) না হত, তাহলে আমি আনসারদের একজন হতাম। আর যদি লোকেরা এক উপত্যকা দিয়ে চলত আর আনসাররা অন্য উপত্যকা দিয়ে কিংবা গিরিপথ দিয়ে চলত, তাহলে আমি আনসারদের উপত্যকা বা গিরিপথ দিয়েই চলতাম। (আঃপ্রঃ- ৬৭৩৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৭৫০)
৭২৪৫
আবদুল্লাহ ইবনু যায়দ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
আবদুল্লাহ ইবনু যায়দ (রাদি.) নাবী (সাঃআঃ) থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেছেনঃ যদি হিজরত না হত, তাহলে আমি আনসারদের একজন হতাম। আর লোকেরা যদি কোন এক উপত্যকা বা গিরিপথ দিয়ে চলত, তাহলে আমি আনসারদের উপত্যকা বা গিরিপথ দিয়েই চলতাম।
আবু তাইয়াহ (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) আনাস (রাদি.)-এর বরাতে নাবী (সাঃআঃ) থেকে এরকম হাদীস উপত্যকার কথা উল্লেখ করে আব্বাস ইবনু তামীম-এর অনুসরণ করিয়াছেন।(আঃপ্রঃ- ৬৭৩৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৭৫১)
Leave a Reply