বল প্রয়োগ বাধ্য করা
বল প্রয়োগ বাধ্য করা >> বুখারী শরীফ এর মুল সুচিপত্র পড়ুন
পর্বঃ ৮৯, পানীয় দ্রব্যসমূহ, অধ্যায়ঃ (১-৮)=৮টি
৮৯/১. অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণীঃ তবে তার জন্য নয় (যাকে সত্য অস্বীকার করিতে) বাধ্য করা হয়।
৮৯/২. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি কুফরী গ্রহণ করার বদলে দৈহিক নির্যাতন, নিহত ও লাঞ্ছিত হওয়াকে বেছে নেয়।
৮৯/৩. অধ্যায়ঃ জোর করে কাউকে দিয়ে তার নিজের সম্পদ বা অপরের সম্পদ বিক্রয় করানো।
৮৯/৪. অধ্যায়ঃ যার উপর বল প্রয়োগ করা হয়েছে এমন ব্যক্তির বিয়ে জায়েয হয় না।
৮৯/৫. অধ্যায়ঃ কাউকে যদি বাধ্য করা হয়, যার কারণে সে গোলাম দান করে ফেলে অথবা বিক্রি করে দেয় তবে তা কার্যকর হইবে না।
৮৯/৬. অধ্যায়ঃ ইকরাহ (বাধ্য করা) শব্দ থেকে কারহান ও কুরহান নির্গত, দুটি অর্থ একই।
৮৯/৭. অধ্যায়ঃ যখন কোন মহিলাকে ব্যভিচারে বাধ্য করা হয় তখন তার উপর কোন হদ আসে না। কেননা, আল্লাহ বলেনঃ তবে কেউ যদি তাদেরকে বাধ্য করে সে ক্ষেত্রে জবরদস্তির পর আল্লাহ তো তাদের প্রতি ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু। (সুরা আন-নূর ২৪/৩৩)
৮৯/৮. অধ্যায়ঃ যখন কোন লোক তার সঙ্গীর ব্যাপারে নিহত হওয়া বা তদ্রুপ কিছুর আশঙ্কা করে তখন (তার কল্যাণে) কসম করা যে, সে তার ভাই।
৮৯/১. অধ্যায়ঃ আল্লাহর বাণীঃ তবে তার জন্য নয় (যাকে সত্য অস্বীকার করিতে) বাধ্য করা হয়।
কিন্তু তার অন্তর বিশ্বাসে অবিচলিত। আর যে সত্য অস্বীকারে অন্তর উন্মুক্ত রাখল তার উপর পতিত হইবে আল্লাহর গযব … … (সুরা নাহল ১৬/১০৬)। আল্লাহ বলেন : তবে যদি তোমরা তাদের কাছ থেকে কোন ভয়ের আশংকা কর আর (আরবী) একই অর্থ (সুরা আল ইমরান ৩/২৮)। আল্লাহ আরো বলেনঃ যারা নিজেদের উপর জুল্ম করে, তাদের প্রাণ নেয়ার সময় ফেরেশতাগণ বলে, তোমরা কী অবস্থায় ছিলে। তারা বলে, দুনিয়ায় আমরা দুর্বল ছিলাম। তারা বলে, তোমরা নিজ দেশ ত্যাগ করে অন্য দেশে বসবাস করিতে পারতে আল্লাহর দুনিয়া কি এমন প্রশস্ত ছিল না? … … আল্লাহ পাপ মোচনকারী ও ক্ষমাশীল- (সুরা আন্-নিসা ৪/৯৭-৯৯)। আল্লাহ বলেনঃ এবং অসহায় নর-নারী ও শিশুদের জন্য? যারা বলে … সহায়-পর্যন্ত (সুরা আন্-নিসা ৪/৭৫)।
আবু আবদুল্লাহ (ইমাম বুখারী) (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন : আল্লাহ দুর্বলদেরকে ক্ষমার যোগ্য বলে চিহ্নিত করিয়াছেন যারা আল্লাহর নির্দেশসমূহ ত্যাগ করা থেকে বিরত থাকতে পারে না। আর বল প্রয়োগকৃত ব্যক্তি এমনই দুর্বল হয় যে, সে ঐ কাজ থেকে বিরত থাকতে পারে না, যার নির্দেশ তাকে দেয়া হয়েছে। হাসান (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন : তকিয়া কেয়ামত পর্যন্ত অবধারিত। ইবনু আব্বাস (রাদি.) ঐ ব্যক্তি সম্পর্কে বলেন, যাকে জালিমরা বাধ্য করার কারণে সে তালাক প্রদান করে ফেলে তা কিছুই নয়। ইবনু উমর (রাদি.), ইবনু যুবায়র (রাদি.) শাবী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) এবং হাসান (রহমাতুল্লাহি আলাইহি)-ও এ মত পোষণ করেন। আর নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ সকল কাজই নিয়তের সঙ্গে সম্পর্কিত।
৬৯৪০
আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
যে, নাবী (সাঃআঃ) সালাতে দুআ করিতেন। হে আল্লাহ! আইয়াশ ইবনু আবু রাবীআ, সালামা ইবনু হিশাম, ওয়ালীদ ইবনু ওয়ালীদকে মুক্তি দাও। হে আল্লাহ! দুর্বল মুমিনদেরকে মুক্তি দাও। হে আল্লাহ! মুযার গোত্রের উপর তোমার পাঞ্জা কঠোর করে দাও এবং তাদের ওপর ইউসুফের দুর্ভিক্ষের বছরগুলোর মত বছর পাঠিয়ে দাও। (আঃপ্রঃ- ৬৪৫৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৭১)
৮৯/২. অধ্যায়ঃ যে ব্যক্তি কুফরী গ্রহণ করার বদলে দৈহিক নির্যাতন, নিহত ও লাঞ্ছিত হওয়াকে বেছে নেয়।
৬৯৪১
আনাস ইবনু মালিক (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ তিনটি জিনিস এমন যার মধ্যে সেগুলো পাওয়া যাবে, সে ঈমানের স্বাদ পাবে। ১. আল্লাহ ও তাহাঁর রাসুল তার কাছে আর সবকিছুর চেয়ে প্রিয় হওয়া। ২. কাউকে কেবল আল্লাহর জন্য ভালবাসা। ৩. জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হওয়াকে যেভাবে অপছন্দ করে, তেমনি পুনরায় কুফরীর দিকে ফিরে যাওয়াকে অপছন্দ করে। (আঃপ্রঃ- ৬৪৫৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৭২)
৬৯৪২
কায়স (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি সাঈদ ইবনু যায়দ (রাদি.)-কে বলিতে শুনিয়াছি যে, আমি মনে করি উমর (রাদি.)-এর কঠোরতা আমাকে ইসলামের উপর সুদৃঢ় করে দিয়েছে। তোমরা উসমান (রাদি.)-এর সঙ্গে যা করেছ তাতে যদি উহুদ পর্বত ফেটে যেত তা হলে ফেটে যাওয়া ন্যায়সঙ্গতই হত। (আঃপ্রঃ- ৬৪৬০, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৭৩)
মুসলমানদের একটি দল চরম অন্যায়ভাবে ইসলামের মহান খলীফা ওসমান (রাদি.)-কে শহীদ করেছিল। মুসলমানদের মধ্যে সেই যে হত্যার সূত্রপাত হল, তা আর থামেনি, আজও চলছে।
৬৯৪৩
খাব্বাব ইবনু আরাত্ (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমরা রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ)-এর কাছে কোন বিষয়ে অভিযোগ পেশ করলাম। তখন তিনি কাবা ঘরের ছায়ায় তাহাঁর চাদরকে বালিশ বানিয়ে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। আমরা বললাম, (আমাদের জন্য কি) সাহায্য চাইবেন না? আমাদের জন্য কি দুআ করবেন না? তিনি বললেনঃ তোমাদের আগের লোকদের মাঝে এমন ব্যক্তিও ছিল, যাকে ধরে নিয়ে তার জন্য যমীনে গর্ত করা হত। তারপর করাত এনে মাথায় আঘাত হেনে দুটুক্রা করে ফেলা হত। লোহার শলাকা দিয়ে তার গোশত ও হাড্ডি খসানো হত। তা সত্বেও তাকে তার দ্বীন থেকে ফিরিয়ে রাখতে পারত না। আল্লাহর কসম! এ দ্বীন অবশ্যই পূর্ণতা লাভ করিবে। এমন হইবে যে সানআ থেকে হায্রামাওত পর্যন্ত ভ্রমণকারী ভ্রমণ করিবে। অথচ সে আল্লাহ ছাড়া কাউকে ভয় করিবে না এবং নিজের মেষ পালের জন্য বাঘের ভয় থাকবে, কিন্তু তোমরা তাড়াহুড়ো করছ।(আঃপ্রঃ- ৬৪৬১, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৭৪)
৮৯/৩. অধ্যায়ঃ জোর করে কাউকে দিয়ে তার নিজের সম্পদ বা অপরের সম্পদ বিক্রয় করানো।
৬৯৪৪
আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, একবার আমরা মসজিদে ছিলাম। হঠাৎ রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) আমাদের নিকট বেরিয়ে এসে বললেনঃ তোমরা ইয়াহূদীদের কাছে চল। আমি তাহাঁর সঙ্গে বের হয়ে গেলাম এবং বায়তুল-মিদরাস নামক শিক্ষাকেন্দ্রে গিয়ে পৌঁছলাম। তখন নাবী (সাঃআঃ) দাঁড়িয়ে তাদেরকে উদ্দেশ্য করে বললেনঃ হে ইয়াহূদী সম্প্রদায়! তোমরা মুসলিম হয়ে যাও, নিরাপদ থাকবে। তারা বলিল, হে আবুল কাসিম! আপনি (আপনার দায়িত্ব) পৌঁছে দিয়েছেন। তিনি বললেনঃ এটাই আমি চাই। তারপর দ্বিতীয়বার কথাটি বলিলেন। তারা বলিল, হে আবুল কাসিম! আপনি পৌঁছে দিয়েছেন। এরপর তিনি তৃতীয়বার তা আবার বলিলেন। আর বললেনঃ তোমরা জেনে রেখো যে, যমীন কেবল আল্লাহ ও তাহাঁর রাসূলের। আমি তোমাদেরকে দেশান্তর করিতে মনস্থ করেছি। তাই তোমাদের যার অস্থাবর সম্পত্তি রয়েছে, তা যেন সে বিক্রি করে ফেলে। তা না হলে জেনে রেখো, যমীন কেবল আল্লাহ ও তাহাঁর রসূলের। [১৩৪] [৩১৬৭; মুসলিম ৩২/২০, হাদীস ১৭৬৫, আহমাদ ৯৮৩৩] (আঃপ্রঃ- ৬৪৬২, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৭৫)
[১৩৪] মদীনা সনদ- তথা মুসলমান ও ইয়াহূদী সবাই মিলে একত্রিত শান্তিতে বসবাস করার চুক্তিতে স্বাক্ষর করার পরও ইয়াহূদীরা চুক্তি লঙ্ঘন করে মুসলমানদের বিরুদ্ধে নানামুখী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়ে পড়েছিল। সেই প্রেক্ষাপটে রাসুল (সাঃআঃ) তাদের কাছে গিয়েছিলেন।
৮৯/৪. অধ্যায়ঃ যার উপর বল প্রয়োগ করা হয়েছে এমন ব্যক্তির বিয়ে জায়েয হয় না।
আল্লাহ বলেন : তোমরা দাসীগণকে ব্যভিচারে বাধ্য করো না …. …. (সুরা আন্-নূর ২৪/৩৩)
৬৯৪৫
খানসা বিনত খিযাম আনসারী (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
যে, তাকে তার পিতা (অনুমতি ছাড়া) বিয়ে দিলেন। আর সে ছিল বিধবা। এ বিয়ে সে অপছন্দ করিল। তাই সে নাবী (সাঃআঃ)-এর কাছে এসে জানাল। ফলে তিনি তার এ বিয়ে বাতিল করে দিলেন। [১৩৫](আঃপ্রঃ- ৬৪৬৩, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৭৬)
[১৩৫] যে বিয়ে পুত্র কন্যার অসম্মতিতে হয়েছে তা বাতিলযোগ্য।
৬৯৪৬
আয়েশা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! মহিলাদের বিয়ে দেয়ার ক্ষেত্রে তাদের অনুমতি নিতে হইবে কি? তিনি বলিলেন, হ্যাঁ। আমি বললাম, কুমারীর কাছে অনুমতি চাইলে তো লজ্জাবোধ করে; ফলে সে নীরব। তিনি বললেনঃ তার নীরবতাই তার অনুমতি।[৫১৩৭; মুসলিম ১৬/৮, হাদীস ১৪২০, আহমাদ ২৪২৪০] (আঃপ্রঃ- ৬৪৬৪, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৭৭)
৮৯/৫. অধ্যায়ঃ কাউকে যদি বাধ্য করা হয়, যার কারণে সে গোলাম দান করে ফেলে অথবা বিক্রি করে দেয় তবে তা কার্যকর হইবে না।
কেউ কেউ সে রকমই রায় পোষণ করেন। অন্য পক্ষে তার মতে ক্রেতা যদি এতে কিছু মানত করে তাহলে তা কার্যকর হইবে। তদ্রুপ তাকে যদি মুদাব্বার বানিয়ে নেয় তাহলে তা কার্যকর হইবে।
৬৯৪৭
জাবির (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
এক আনসারী লোক তার এক গোলাম মুদাব্বার বানিয়ে দেয়। অথচ তার এছাড়া অন্য কোন মাল ছিল না। এ সংবাদ নাবী (সাঃআঃ)-এর নিকট পৌঁছলে তিনি বললেনঃ কে আমার নিকট হইতে এ গোলাম কিনে নিবে? নুআয়ম ইবনু নাহ্হাম (রাদি.) আটশ দিরহামে তাকে ক্রয় করিলেন। রাবী বলেন, আমি জাবির (রাদি.)-কে বলিতে শুনিয়াছি, ঐ গোলামটি কিব্তী গোলাম ছিল এবং (ক্রয়ের) প্রথম বছরই মারা যায়।(আঃপ্রঃ- ৬৪৬৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৭৮)
৮৯/৬. অধ্যায়ঃ ইকরাহ (বাধ্য করা) শব্দ থেকে কারহান ও কুরহান নির্গত, দুটি অর্থ একই।
৬৯৪৮
ইবনু আব্বাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি এ আয়াতঃ “হে মুমিনগণ! নারীদেরকে জোরপূর্বক তোমাদের উত্তরাধিকার মনে করা তোমাদের জন্য বৈধ নয়…..”- (সুরা আন্-নিসা ৪/১৯)। এর ব্যাখ্যায় বলেন, তাদের নিয়ম ছিল, যখন কোন লোক মারা যেত তখন তার অভিভাবকগণই তার স্ত্রীর ব্যাপারে অধিক হক্দার বলে মনে করত। ইচ্ছা করলে তাদের মধ্যে কেউ তাকে বিয়ে করত, ইচ্ছা করলে তাকে (অন্যত্র) বিয়ে দিত, আর ইচ্ছা করলে তাকে বিয়ে দিত না। স্ত্রীর অভিভাবকদের তুলনায় নিজেদেরকে অধিক হক্দার তারাই মনে করত। এ সম্পর্কেই উক্ত আয়াত অবতীর্ণ হয়। (আঃপ্রঃ- ৬৪৬৬, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৭৯)
৮৯/৭. অধ্যায়ঃ যখন কোন মহিলাকে ব্যভিচারে বাধ্য করা হয় তখন তার উপর কোন হদ আসে না। কেননা, আল্লাহ বলেনঃ তবে কেউ যদি তাদেরকে বাধ্য করে সে ক্ষেত্রে জবরদস্তির পর আল্লাহ তো তাদের প্রতি ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু। (সুরা আন-নূর ২৪/৩৩)
৬৯৪৯
লায়স (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) নাফি (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) হইতে বর্ণিতঃ
লায়স (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) নাফি (রহমাতুল্লাহি আলাইহি)-এর সূত্রে বর্ণনা করেন যে, সুফীয়্যাহ বিনত আবু উবায়দ তাকে সংবাদ দিয়েছেন যে, সরকারী মালিকানাধীন এক গোলাম গনীমতের পঞ্চমাংশে পাওয়া এক দাসীর সঙ্গে জবরদস্তি করে যিনা করে। তাতে তার কুমারীত্ব মুছে যায়। উমর (রাদি.) উক্ত গোলামকে কশাঘাত করিলেন ও নির্বাসন দিলেন। কিন্তু দাসীটিকে সে বাধ্য করেছিল বলে কশাঘাত করিলেন না। যুহরী (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) কুমারী দাসীর ব্যাপারে বলেন, যার কুমারীত্ব কোন আযাদ ব্যক্তি ছিন্ন করে ফেলল, বিচারক ঐ কুমারী দাসীর মূল্য অনুপাতে তার জন্য ঐ আযাদ ব্যক্তির নিকট হইতে কুমারীত্ব মুছে ফেলার দিয়াত গ্রহণ করবেন এবং ওকে কশাঘাত করবেন। আর বিবাহিতা দাসীর ক্ষেত্রে ইমামদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কোন জারিমানা নেই। কিন্তু তার উপর হদ জারি হইবে। [১৩৬](আঃপ্রঃ- অনুচ্ছেদ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- অনুচ্ছেদ)
[১৩৬] জোর জবরদস্তি করে যে সকল মহিলাকে ধর্ষণ করা হয় তাদের উপর হাদ্দ জারী না করার প্রতি হাদীসটিতে ইঙ্গিত বহন করছে। সুতরাং ধর্ষিতা নারীকে হেয় প্রতিপন্ন করা বা অসম্মানের দৃষ্টিতে না দেখাই ইসলামের শিক্ষা।
৬৯৫০
আবু হুরাইরা (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ ইব্রাহীম (আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সারা (আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে নিয়ে হিজরত করে এমন এক জনপদে আসলেন, যেখানে একজন স্বৈরাচারী বাদশাহ ছিল। সে তাঁকে বলে পাঠাল যে, যেন তিনি সারা কে তার নিকট পাঠিয়ে দেন। তিনি তাকে পাঠিয়ে দিলেন। সে সারার দিকে অগ্রসর হইতে লাগল। অপর দিকে সারা ওযূ করে সালাত আদায় করিতে লাগলেন। আর বলিলেন, হে আল্লাহ! আমি যদি তোমার ও তোমার রাসূলের প্রতি ঈমান এনে থাকি তাহলে আমার উপর ঐ কাফিরকে ক্ষমতা দিও না। ফলে সে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে (মাটিতে পড়ে) গোড়ালি দিয়ে ঘর্ষণ করিতে লাগল। (আঃপ্রঃ- ৬৪৬৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৮০)
৮৯/৮. অধ্যায়ঃ যখন কোন লোক তার সঙ্গীর ব্যাপারে নিহত হওয়া বা তদ্রুপ কিছুর আশঙ্কা করে তখন (তার কল্যাণে) কসম করা যে, সে তার ভাই।
তদ্রুপ যে কোন বল প্রয়োগকৃত লোকের ব্যাপারে যখন কোন প্রকার আশঙ্কা দেখা দেয়। কেননা, এক মুসলিম অন্য মুসলিমকে জালিমের হাত থেকে রক্ষা করিবে। তার জন্য লড়াই করিবে, তাকে লাঞ্ছিত করিবে না। যদি সে মজলুমের জন্যে লড়াই করে তাহলে তার উপর কোন হদ বা কিসাস নেই। যদি কাউকে বলা হয় তোমাকে অবশ্যই মদ পান করিতে হইবে, অথবা মৃতের গোশ্ত খেতে হইবে, অথবা তোমার দাসকে বিক্রি করিতে হইবে অথবা তোমাকে ঋণ স্বীকার করিতে হইবে অথবা কিছু দান করিতে হইবে বা তদ্রুপ যে কোন চুক্তির কথা বলা হয়, নইলে আমরা তোমার পিতাকে অথবা মুসলিম ভাইকে হত্যা করে ফেলব। তখন তার জন্য ঐসব কাজ করার অনুমতি আছে। কেননা, নাবী (সাঃআঃ) বলেছেনঃ এক মুসলিম অপর মুসলিমের ভাই। কেউ কেউ বলেন, যদি বলা হয়, তোমাকে অবশ্যই মদ পান করিতে হইবে, অথবা মৃতের গোশ্ত খেতে হইবে, অন্যথায় আমরা তোমার পুত্রকে বা তোমার পিতাকে বা তোমার কোন নিকট আত্মীয়কে হত্যা করে ফেলব, তখন তার জন্য এসব কাজ করার অনুমতি নেই। কেননা সে নিরুপায় নয়। কেউ কেউ এর বিপরীত রায় ব্যক্ত করে বলেন, যদি তাকে বলা হয়, আমরা অবশ্যই তোমার পিতাকে বা তোমার পুত্রকে হত্যা করে ফেলব, না হয় তোমাকে ঐ গোলামটি বিক্রি করিতে হইবে, অথবা তোমাকে ঋণ স্বীকার করিতে হইবে, অথবা হেবা স্বীকার করিতে হইবে, তাহলে কিয়াসের দৃষ্টিতে তার জন্য তা জরুরী হয়ে যায়। তবে ইস্তিহসানের প্রেক্ষিতে আমরা বলি যে, এ ক্ষেত্রে বিক্রি, দান বা যে কোন চুক্তি বাতিল বলে গণ্য হইবে। কাজেই তারা কিতাব (কুরআন), সুন্নাহ ছাড়াই নিকটাত্মীয় ও আত্মীয়দের মধ্যে প্রভেদ করে নিল। নাবী (সাঃআঃ) বলেনঃ ইবরাহীম (আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাহাঁর স্ত্রী সম্পর্কে বলেছেন, ইনি আমার বোন। আর তা ছিল আল্লাহর ব্যাপারে (দ্বীনের ভিত্তিতে)। নাখই (রহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, যে ব্যক্তি হলফ্ করায়, সে যদি অত্যাচারী হয় তাহলে হলফকারীর নিয়তই গ্রহণীয় হইবে। আর যদি সে মজলুম হয় তাহলে তার নিয়তই গ্রহণীয় হইবে।
৬৯৫১
আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
রাসূলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ এক মুসলিম অন্য মুসলিমের ভাই, না সে তার প্রতি জুলুম করিবে, না তাকে অন্যের হাওলা করিবে। যে কেউ তার ভাইয়ের প্রয়োজন পূরণ করিবে আল্লাহ তার প্রয়োজন পূরণ করবেন। (আঃপ্রঃ- ৬৪৬৮, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৮১)
৬৯৫২
আনাস (রাদি.) হইতে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃআঃ) বলেছেনঃ তোমার ভাইকে সাহায্য কর। সে জালিম হোক অথবা মজলুম হোক। এক লোক বলিল, হে আল্লাহর রাসুল! মজলুম হলে তাকে সাহায্য করব তা তো বুঝলাম। কিন্তু জালিম হলে তাকে কিভাবে সাহায্য করব? তিনি বললেনঃ তাকে অত্যাচার থেকে বিরত রাখবে। আর এটাই হল তার সাহায্য।(আঃপ্রঃ- ৬৪৬৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৪৮২)
Leave a Reply